25.12.23

পাগল

 পাগল

writer. moyej uddin
pasrt 1

-এই যে শুনছেন???(একটা মেয়ে)

শুভ বিকেল বেলা একটা রাস্তার পাশে দাড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলো। হঠাৎ একটা মেয়েলি কন্ঠ শুনতে পেয়ে শুভ পেছনে তাকায়
-জ্বি বলেন (শুভ)
-একটু সাহায্য করবেন??
-হ্যা বলেন
-আমার পায়ে কাটা ফুটেছে একটু কাটা টা বের করে দিন
-আচ্ছা। আগে বসতে হবে আপনাকে
-কোথায় বসা যায় বলুন তো
-ওই যে সামনে চলুন একটু (একটা জায়গা দেখিয়ে)
-হুমমমম
-আসুন
-আমি হাটতে পারছি না
-আচ্ছা এখানেই বসেন
-ওকে বসছি
(মেয়েটি রাস্তার উপরই বসে পড়লো।)
-পায়ে তো কয়েকটা কাটা ফুটছে। কিভাবে ফুটলো??
-কুকুর দেখে দৌড় দিয়ে ছিলাম পায়ের জুতা খুলে যায়। পাশেই কাটা গাছ ছিলো ওখানেই কাটা ফুটছে।(মেয়েটি)
- হা হা হা হা(শুভ)
-হাসবেন না। আপনার কাজ আপনি করুন (ধমকের শুরে)
-ইহহ মনে হয়ে বউ(মনে মনে)
-এই কি বললেন???
-কই নাতো
-না কিছু বলছেন
-আরে না সত্যি কিছু বলি নি
-হুমম
-আপনার কাজ শেষ
-হুমমম ধন্যবাদ। আর এই নিন দশ টাকা
-টাকা কি জন্য মজুরি
-লাগবে না
-কম হয়ে গেলো মনে হয় আর দশ টাকা এই নিন বিশ টাকা
-এই বেশি বেশি হচ্ছে কিন্তু
-না হচ্ছে না।
-আপনার বাসা কোথায়??
-কেনো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবেন নাকি???
-ধুরররররর(রাগ করেই শুভ ওখান থেকে সরে গেলো আর পেছনে তাকালো না)
শুভর বাড়িতে অনুষ্ঠান চলছে। তার বোনের বিয়ে। অনেক লোকের আয়োজন। বিয়ের আগের দিন সকাল বেলা শুভর কিছু চাচাতো ভাই এর সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো
-রূপের ঝলকে চোখের পলকে কেড়েছো মনটা আমার সুন্দরী গো দিওয়ানা আমি যে তোমার সুন্দরী গো...(শুভ)
-এই যে মিস্টার(একটা মেয়ে)
-জ্বি বলেন
-সুন্দরী মেয়ে দেখলেই দিওয়ানা তাই না।
-না। আপনাকে চেনা চেনা লাগছে।
-আমাকে?
-হ্যা। পেয়েছি পেয়েছি আপনার পায়ে কাটা ফুটছিলো কাল
-ওহহ হ্যা
-তা আপনি এখানে কেনো??
-আমি আমার বান্ধবীর বিয়ের দাওয়াত এ আসছি। আপনি এখানে কেনো??
-এটা আমার বাড়ি আমার
-তো আপনার বাড়ি তাই। না তোর বাড়ি আমি তাই কি করবো
-আপনার সাহস তো কম না আপনি আনাকে তুই করে বলছেন
-এএ আমি তোর বোনের বান্ধবী। আর তোকে দেখে দেখেই মনে হচ্ছে তুই ছোট আমার বান্ধবী র থেকে। আর তার মানে তুই আমার থেকে ছোট। তুই করেই বলব
-এহহহ আসছে
-এ বড় দের সম্মান করতে সেখ
-ওই জান্নাত কখন আসছিস আর ওখানে কি করিস???(আপু উপর থেকে)
-এই তোর বেয়াদপ ভাই কে একটু শাশন করি
-পড়ে শাশন কর। উপরে আয় কাজ আছে তোকে আসতে বলছি সেই কখন
-দাড়া আসতেছি। আর তোকে পড়ে দেখে নেবো
-এহহ আসছে দেখে নিতে (শুভ মনে মনে বলল)
মেয়েটা মানে জান্নাত চলে গেলো
-এই গানের একটু বাকি আছে (ভাই গুলো ল)
-চোপপপ তোর গানের জন্যই অন্য একটা মেয়ে আমাকে বকা দিয়ে গেলো ধুরররর
জান্নাত আর শুভর বোনের মধ্যে কথা.....
-তোর ভাই টা কিন্তু অনেক পেকে গেছে (জান্নাত)
-আরে তুই তাহলে ওকে চিনিস ই নাই। ও তেমন ভালো ভাবে কথা বলতে পারে না। তুই যদি ওর সাথে ধমকের সুরে কথা বলিস। ও মনে মনে কথা বলবে।
-নিজের ভাই দেখে বেশী বেশী বলছিস তাই না??
-আরে না। ওকে তো দেখিস নাই কখনো তাই এমনটা বলছিস
-আচ্ছা পরে দেখে নেবো।
-যা দেখার দেখিস। এখন কথা না বলে মেহেদী দিয়ে দে
-হুমমম
সেদিন দুপুর বেলা...শুভ বসে বসে ফোন টিপছিলো
-এই হাবলু(জান্নাত)
-আমাকে হাবলু বলছেন কেনো??(শুভ)
-তোকে দেখতে হাবলু হাবলু দেখা যায় তাই
-ভালো
-আচ্ছা তোর সাথে কথা বলা যাবে কিছুক্ষণ
-হ্যা যাবে তবে শর্ত আছে
-কি শর্ত??
-তুই করে বলতে পারবেন না
-কেনো??
-আমার তুই করে শুনতে ভালো লাগে না
-তাহলে তুমি করে বলি হাবলু
-জানি না হাবলু বলবেন না আমাকে
-ওলে বাবা হাবলু টা দেকি আবাল লাগ কলে
(শুভ রাগ করে উঠে যাচ্ছিলো। জান্নাত হাতটা টেনে ধরে বলল)
-বললাম না কথা আছে(জান্নাত)
-বলেন শুনতেছি
-তোমার নাম কি??
-শুভ
-কোন ক্লাসে পরো??
-অনার্স ফাস্ট ইয়ার
-হুমমম
-আপনার নাম কি??
-জান্নাত
-কোন ক্লাসে পড়েন???
-তোমার আপু যে ক্লাসে পড়ে সেই ক্লাসে
-ওহহ তার মানে থার্ড ইয়ার এ??
-হুমমম
-ভালো
-এই তুমি প্রেম করো??
-না
-পারবেও না। তুমি যে হাবলু তোমার সাথে কে আর প্রেম করবে
-আপনি আবারও কিন্তু হাবলু বলতেছেন
-ওকে ওকে সরি আর বলব না
-হুমমম
-তা কোনো মেয়েকে পছন্দ হয়??
-আপনাকে বলব কেনো??
-আমি জিঙ্গাস করতেছি তাই
-না বলব না
-বলো তো
-না হয় নাই
-হুমমম
-আপনি প্রেম করেন??
-না
-আপনার সাথেও কোনো ছেলে প্রেম করতে আসবে না। আপনি যে কল্লা
-কি বলল(শুভর চুল ধরে)
-আরে লাগছে তো ছাড়েন ছাড়েন
-আগে বলো কি বললা
-কল্লা বলছি
-আমাকে দেখে তাই মনে হয়??(আর জোড়ে ধরেছে)
-না না আপনি তো ফেরেশতা। লাগছে খুব ছাড়েন প্লিজ
-ছাড়তে পারি তবে শর্ত আছে
-আবার কি??
-আজ বিকেলে তেমন কোনো কাজ নেই। ঘুরতে যাবো
-না আমার কাজ আছে
-কি বললা
-সত্যি কাজ আছে আমি মিথ্যা বলছি না
-হুমমম তাহলে রাতে ঘুরতে যাবো
-আপনার মাথা ঠিক আছে??
-হ্যা আছে
-আচ্ছা দেখি কি করা যায়
-ওকে। যেতে কিন্তু হবেই
-হুমমম
-হাবলু হি হি হি
-আবার! যাবো না কিন্তু
-ওকে সরি সরি আর বলব না
-অনেক বার এই কথা বলছেন
-বললাম তো আর বলব না...
............................
পাগল
Part: 2
-হাবলু হি হি হি(জান্নাত)
-আবার! যাবো না কিন্তু(শুভ)
-ওকে সরি সরি আর বলব না
-অনেক বার এই কথা বলছেন
-বললাম তো আর বলব না...
-হুমমম
-এখন কি করবা???
-গোসল
-ওকে আমিও করবো
-ভালো
(শুভ চলে যাচ্ছে গোসল করতে। পেছন ফিরে দেখে জান্নাত পিছে পিছে আসছে)
-পেছন পেছন আসছেন কেনো??(শুভ)
-গোসল করবো(জান্নাত)
-তো আমার পেছনে কেনো??
-এমনি
-এহ এহ এহ এহ
-এই এই কান্না করছো কেনো??
-এহ এহ এহ
-হাইরে মানুষ ভাই। তোমার মতো এক পিচ ও দেখি নাই যাও গোসল করো(জান্নাত হাসতে হাসতে বলল)
শুভ চলে গেলো.....
জান্নাত ভাবছে ছেলেটা এমন বোকা টাইপের কেনো!
জান্নাত শুভ বোন এর কাছে চলে গেলো
-এই একটা কান্ড ঘটে গেছে(জান্নাত হাসতে হাসতে বললে)
-কি হইছে আর হাসছিস কেনো??(শুভর বোন)
-তোর ভাই একটা জিনিস রে
-কেনো কি হইছে
-.....(আগের সব কথা গুলো বলল)
-হাইরে ও অনেক ভিতু আর তুই ওকে এমন করছিস। দোস্ত আর এমন করিস না
-ওকে করবো না। তবে একটা কথা
-কি কথা??
-তোর ভাইকে খুব খুব পছন্দ হইছে আমার।
-ভালো হইছে। এখন....... (এটা কর)
-হুহহহহহ
বিকালবেলা.....
জান্নাত শুভ কে খুঁজতেছে। বেচারা কে সহজ সরল পেয়ে মেয়েটা যে কি করবে আল্লাই জানে....খুঁজতে খুঁজতে শুভকে পায় তার ঘরে।
-এই যে আসতে পারি(জান্নাত)
-না আপনি বাহিরে থাকেন আমি আসতেছি
-হুহহহ
-হুমম বলেন
-আগে বলো আমি ভেতরে গেলে সমস্যা কোথায়
-সমস্যা আছে
-কি সমস্যা বোঝানো যাবে না
-তাই না!
-দাড়াও দেখাচ্ছি। (জান্নাত শুভর পুরো মুখে হলুদ দিয়ে দিলো)
-কেমন লাগছে??
-আপনি এগুলো কি করলেন??
-হলুদ লাগিয়ে দিলাম
-আমিও কিন্তু পারি
-দেখি দাও
-.....(জান্নাত এর হাত থেকে হলুদ নিয়ে তার দুই গালে লাগিয়ে দিলো)
-হুমমম বোঝেন এখন
-জান্নাত থ হয়ে দাড়িয়ে আছে। কারন শুভ যখন তাকে হলুদ দিলো। তখন তার স্পর্শ তাকে স্তব্ধ করে দেয়...
-সরি সরি আমি জেদ করে দিয়েছি
-আর একটু দিয়ে দাও
-না আপনি রাগ করবেন
-না আমার ভালো লাগছে দিয়ে দাও। না দিয়ে দিলে রাগ করবো
-হুমমম
(শুভ আবার তার দুই গালে হলুদ লাগিয়ে দেয়)
-এখন হয়েছে??(শুভ)
-হুমম হয়েছে(জান্নাত মিটি মিটি হাসছে)
-হাসছেন কেনো??
-কই না তো
-আমি যে দেখলাম
-ভুল দেখেছো। আর হ্যা দুপুরে যে বললা আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবা
-হুমম যাবো তো
-কখন??
-আগে গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান টা শেষ হোক
-আচ্ছা। একটা কথা বলি
-হুমম বলেন
-আমি তোমার বন্ধু হতে পারি??
-আপনি তো আপু হন
-চুপপপ। আপু না বন্ধু
-কিন্তু কেনো??
-এমনি। হাত দাও
-কি করবেন??
-ধরবো
-কেনো??
-দাও বলছি
-হুমম নেন
-নিচে চলো(হাত টা ধরে নিয়ে যাচ্ছে)
-নিচে কেনো
-এখন হলুদ দিতে হবে
-আমি দিবো না
-আরে গাধা তোমাকে না তোমার বোনকে
-হুমমম। হাতটা ছেড়ে দেন আমি যাচ্ছি
-না হাত ধরেই নিয়ে যাবো
-সবাই দেখলে কি বলবে
-কিছুই বলবে না। আর কি বলবে আমি কি তোমাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছি হি হি হি
-কি বলেন এগুলা
-কিছু না চলো
-হুমম চলেন
তারপর দুজন হলুদ দিতে বোনের কাছে চলে গেলো। ওখানে ওনেক লোক ছিলো। সবাই তাকিয়ে দেখছে...আর সেই সাথে আবাক ও
-কিরে ওকে এভাবে আনলি কেনো??(শুভর বোন)
-আরে আসতে চাইছিলো না (জান্নাত)
-না আমি....(শুভকে কিছু বলতে দিলো না হাতে চিমটি কেটে আস্তে বলল)
-চুপপপপ
-হুমমমম
তারপর গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান শেষ হয়....। অনুষ্ঠান শেষ হতে সন্ধ্যা লেগে যায়....
-দোস্ত থাক তোর ভাইকে নিয়ে একটু ঘুরে আসি(জান্নাত)
-তুই ওর পিছে লাগছিস কেনো??(শুভর বোন)
-তোর ভাইকে খুব ভালো লাগে আর দেখলেই মনে হয়....
-কি??
-কিছু না
-এরকম করলে পাগল হয়ে যাবি
-পাগল তো আমি হয়েছি
-হুহহ
-থাক আসি
-যেখানেই যাস তাড়াতাড়ি ফিরবি কিন্তু
-ওক্কে
জান্নাত আবার শুভর রুমের কাছে গেলো আর বলল
-এই তোমার হইছে??(জান্নাত বলল রুমের বাইরে থেকে)
-কি হবে??(শুভ)
-উফফফ তোমার কিছুই মনে থাকে না। ঘুরতে যাওয়ার কথা তো
-ওহহহ এখন তো সন্ধ্যা
-তো কি হইছে। এখনই যাওয়ার সময় তো
-হুমমম
-হুমম কি চলো আর রেডি হও
-আমি এভাবেই যাবো
-ওকে চলো
দুজনই বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা রাস্তা ধরে হাটছে। হঠাৎ শুভ বলল
-একটা কথা বলি আপনাকে
-হুমম বলো
-আপনি আসার পর থেকেই আমার সাথে লেগে আছেন কেনো??
জান্নাত দাড়িয়ে গেলো। আর বলল
-ভালো লাগে
-হুমমম
(শুভ আর কিছু বলল না)
জান্নাত বলল
-আমাকে তোমার ভালো লাগে না???
-হুমম লাগে
-কেমন ভালো লাগে
-তেমন ভালো লাগে
-হা হা হা হা হা বোকা একটা
-হাসছেন কেনো??
-এমনি
-এমনি কেনো??
-কিছু না চুপচাপ হাটো তো।
জান্নাত শুভর হাতটা অনুমতি ছাড়াই ধরেছে এবার।
(এখন শুভ তাকে কিছুই বলছে না)
-আমি যে হাতটা ধরলাম কিছু বললে না কেনো??(জান্নাত)
-আপনি যদি ধমক দেন তাই
-এর জন্য?? অন্য কিছু না
-না অন্য কিছু না
হঠাৎ জান্নাত মন খারাপ করে দাড়িয়ে গেলো....
-দাড়িয়ে গেলেন কেনো??
-যাবো না আর
-আচ্ছা বাড়িতে চলেন??
-বাড়িতেও যাবো না
-কোথায় যাবেন??
-কোথাও না। এখানেই থাকবো
-আপনি আমার উপর রাগ করছেন??
-.......(এহহ এখন বুঝতে পারছে জান্নাত মনে মনে বলল)
-আমি কি করলাম
-কিছুই করো নাই
-বলবেন তো কি করছি
-আগে কোথাও বসার ব্যাবস্থা করো
-সামনে চলেন একটা বড় পুকুর আছে। ওখানে বসা যাবে
-ওকে চলো
।।
পাগল
Part: 3
-আমি কি করলাম
-কিছুই করো নাই
-বলবেন তো কি করছি
-আগে কোথাও বসার ব্যাবস্থা করো
-সামনে চলেন একটা বড় পুকুর আছে। ওখানে বসা যাবে
-ওকে চলো
তারা দুজনই পুকুর পাড়ে গিয়ে ঘাসের উপর বসল...
-রাত কিন্তু ধীরে ধীরে বাড়ছে(শুভ)
-তুমি না কি যে একটা (জান্নাত)
-আম্মু মাইর দিবে
-দিবে না। আমি আছিতো
-হুমমমম
-জানো আমি কারও জন্য কখনো পাগল হই নি। একজনের জন্য হয়েছি
-কার জন্য
-হাইরে কপাল আমার। তুমি বোঝো না কার জন্য পাগল হইছি??
-না
-বুঝতেও হবে না
-আচ্ছা
-আবার আচ্ছা বলে
-তো কি বলব
-কিছুই বলতে হবে না
দুজনই চুপচাপ বসে আছে। শুভ ঘাস ছিড়ছে একটা একটা করে। তার সময় যেনো পাড় ই হতে চাচ্ছে না। আর অন্যদিকে জান্নাত রাগে ফুলছে
-এই চলো চলো আমার ঘোরার সাধ মিটে গেছে (জান্নাত)
(শুভ বুঝতে পারলো জান্নাত তার উপর রাগ করছে। কি জন্য করেছে সেটা বুঝতে পারে না)
-আপনি আবার রাগ করছেন তাই না (শুভ)
-জ্বি না আমি ঠিক আছি
-আচ্ছা আর কিছুক্ষণ বসে থাকি তাহলে
-ঠিক আছে। তবে কথা বলতে হবে
-জ্বি বলেন
-আমাকেই তো বলতে হবে। তুমি তো আর বলতে পারবে না
-হুমমমম
-হুমমম ভালোবাসা বোঝো???
-হ্যা বুঝি তো
-প্রেম বোঝো প্রেম???
-না
-বুঝিয়ে দিবো??
-না থাক। আপনি তো প্রেম বোঝেন তাই না??
-হুমমমমম
-তাহলে বলেন কি করে হয়??
-ওটা সময় হলেই বুঝতে পারবে। এখন বাড়ি চলো
-হুমমম চলেন
তারা বাড়ি ফিরে এলো। বিয়ের প্রথম দিন জান্নাত শুভকে একটু স্বস্তি দেয় নি। সবসময় সাথে থেকেছে। সবাই তো ভেবে নিয়েছে তাদের মধ্যে কিছু চলছে। জান্নাত এর এমন অবস্থা হইছে যে। খেতে গেলে শুভর সাথে একসাথে খায় ওর সাথে দাড়িয়ে থাকে বসে থাকে। শুভরও এসব কিছু ভালো লাগে। কারন জান্নাত মেয়েটা অনেক সুন্দরি। শুভও তার কাছাকাছি থাকতে চায়....পরদিন সকাল বেলা ছেলের বাড়িতে যাবে তখন সবাই রেডি হচ্ছে বের হবার জন্য....তখন জান্নাত গেলো শুভর রুমে...
-এই তোমার হইছে???(জান্নাত)
-এই না না রুমে আসবেম না আমি শার্ট চেন্জ করতেছি (শুভ)
-হুমমম ওকে বাইরে ওয়েট করছি
-হুমমম
একটু পর
-হইছে??(জান্নাত)
-হ্যা(শুভ)
-ভেতরে আসবো???
-হ্যা আসেন
-হুহ একি কি সেজেছো এগুলা???
-খারাপ হইছে??
-হুমম একদম খারাপ
-তাহলে কিভাবে পড়বো??
-দাড়াও দেখাচ্ছি
এভাবে কেউ শার্ট পরে! চুল গুলোর অবস্থাও ভালো না। এগুলো বলছে আর ঠিক করে দিচ্ছে.....
-এইতো এখন সেই লাগছে (জান্নাত)
-থ্যাংকে ইউ (শুভ)
-থ্যাংক দিতে হবে না, এগুলো আমাকেই করতে হবে
-কি??
-কিছু না
-হুমম। একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-আপনাকে সেই লাগছে
-হুমম বাট সেই মানে কি??
-সেই মানে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে এখন
-আগে সুন্দর লাগতো না??
-হুমম আগেও সুন্দর লাগতো
-ওহহহ
-হুমম
-তো চলো এখন
-হ্যা চলেন
-হাতটা ধরতে পারি??
-না সবাই কি মনে করবে পরে ধইরেন
-পরে কখন??
-রাতে
-সত্যি তো! তখন তো আনার মানা করবে না??
-না মানা করবো না
-ওকে চলো
-হুমমম
শুভ আর জান্নাতকে একসাথে দেখে সবাই বলছে। ওয়াও ভালই মানিয়েছে তো দুজনকে। শুভর একটা বন্ধু একটু জোড়েই বলল
-সুপার মাম্মা সুপার।
এই কথা টা শুভর বাবা শুনতে পায়। উনি এসে দেখেন সত্যি তার ছেলেটা চেন্জ হয়ে গেছে একটু। আর সাথে মেয়েটাকে ভালই মানিয়েছে...এটা দেখে শুভর বাবা শুভ কে ডাকলো
-শুভ এই দিকে আসো(শুভর বাবা)
-হ্যা বাবা বলো
-তোমাকে এভাবে সাজিয়ে দিয়েছে কে??
-ওই যে উনি (জান্নাত কে দেখিয়ে দিলো)
-এই দিকে আসো তো(শুভর বাবা জান্নাত কে ডাকলো)
-হ্যা আংকেল বলেন
জান্নাতকে ডেকে সবকিছু জেনে নিলো। সবাই বাসে করে বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে..... শুভ আর জান্নাত পাশাপাশি বসেছে।
-চুপচাপ কেনো??(জান্নাত)
-কিছু না এমনি (শুভ)
-এমনিহহহ আসছে।
-রাগ করছেন কেনো??
-তো কি করবো সবাই কথা বলছে তুমি বলছো না কেনো??
-কথা বলতে পারবো না। একটা কাজ করতে পারি
-কি????
-আপনি হাতের উপর হাত রাখেন
-এহহহ পারবো না
-আচ্ছা
হঠাৎ জান্নাত হাতটা ধরে ফেলল।
-এই না বললেন পারবেন না(শুভ)
-চুপপ কোনো কথা না
-আচ্ছা
-পাগল একটা কিচ্ছু বোঝে না
-হুমম
-আবার হুমম বলে কথা যখন বলবে না হুমম ও বলতে পারবে না
-...............(শুভ আর কিছু বলল না)
এটা দেখে জান্নাত মুচকি হাসলো।
তারা বিয়ে বাড়ি থেকে শুভর বাড়িতে ফিরে আসলো....জান্নাত আর শুভ বাইরে দাড়িয়ে আছে। কারন হাটতে যাওয়ার কথা
-চলো হাটি (জান্নাত)
-হুমম চলেন(শুভ)
-একটা কথা
-হ্যা বলেন
-আমি কাল সকালে চলে যাবো
(শুভ দাড়িয়ে যায় কথা টা শুনে)
-কাল যাবেন কেনো??
-বিয়ে তো মোটামুটি শেষ বাসায় যেতে হবে তো
-কালকের দিনটা থাকেন
-নাহ অনেক থাকলাম আর থাকা যাবে না
-....(শুভ আর কিছু বলল না)
শুভ জান্নাত এর হাতটা জোড়ে চেপে ধরলো
-এত জোড়ে ধরছো কেন??(জান্নাত)
ভয়ে ছেড়ে দিয়ে বলল
-এমনি
-এমনি না কি জন্য ধরছো বলো
-ভালো লাগছিলো তাই
-হুমমম ধরে থাকো
-সত্যি কাল চলে যাবেন??
-হুমম একই প্রশ্ন বার বার করছো কেনো???
-না এমনি
-হুমম ওকে এখন বাড়ি চলো
-আর একটু হাটি
-না
-আজকেই তো শেষ আর একটু হাটি
-আচ্ছা
(শুভ জান্নাত এর চোখে পানি দেখলো)
-আপনার চোখে পানি কেনো??(শুভ)
-কই না। কিছু একটা পড়ছে মনে হয়(জান্নাত)
-তাহলে বের করে দেই
-না ঠিক আছি আমি।
-হুমমম
-বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে এখন বাড়ি চলো
-আচ্ছা চলেন.....
দুজনই বাড়িতে গিয়ে যে যার রুমে চলে গেলো....এদিকে জান্নাত কান্না করছে। কি জন্য কান্না করছে সে নিজেও যানে না। হয়তো হাবলুটার জন্য।
অন্যদিকে শুভও খুব অস্থির হয়ে আছে। জান্নাত এর যাওয়ার কথা শুনে সে ঘুমাতে পারছে না... রুমের মধ্যে না থাকতে পেরে শুভ জান্নাত এর রুমের কাছে যায়.....
জান্নাত যে রুমে থাকে তার দরজা টা লক। জানালা টা খোলা আছে।
শুভ গিয়ে জানালার ধারে দাড়ালো।
আর দেখলো জান্নাত ওপাশ হয়ে শুয়ে আছে.... শুভ তাকিয়ে দেখতেছিলো..
হঠাৎ জান্নাত এপাশ হওয়ায় শুভকে সে জানালার কাছে দেখতে পায়...
জান্নাত উঠে এসে দরজা খুলে দিয়ে বলে
-ভেতরে আসো(জান্নাত)
-না (শুভ)
-তাহলে আটকিয়ে দিলাম
-না
-এভাবে দাড়িয়ে থাকবে???
-হুমম
-কি জন্য আসছো
-আপনাকে দেখতে (এই কথা বলে শুভ জিভ এ কামড় দিলো)
-কি বললা??
-না কিছু না।
-ভেতরে আসবে??
-হুমম
(শুভ ভেতরে গিয়ে দাড়িয়ে আছে)
-বসো(জান্নাত)
-আচ্ছা (জান্নাত)
-কেউ যদি দেখে ফেলে তুমি আমার ঘরে আসছো তাহলে কি হবে
-কিছু হবে না
-ইহহ বললেই হলো

পাগল
Part: 4
-কেউ যদি দেখে ফেলে তুমি আমার ঘরে আসছো তাহলে কি হবে(জান্নাত)
-কিছু হবে না(শুভ)
-ইহহ বললেই হলো
-হুমম
-কি হুমম?? আমি কি তোমার বউ যে আমরা একরুমে থাকলে কেউ কিছু বলবে না??
-বউ ই তো
-হ্যা ব......এই কি বললা তুমি???
-........(শুভ হাসছে)
-এই হাসবা না। বউ বললা কেনো??
-আমি আপনাকে ভালবাসি(নরম হয়ে)
-তো কি হইছে???
-আমি আপনাকে যেতে দিবো না
-আচ্ছা এই কথা?? আমি তো তোমাকে ভালবাসি না
-না ভালবাসেন আপনি
-আরে না
-আপনাকে দেখলে বোঝা যায়
-তোমার ধারনা ভুল
-না ধারনা ঠিক আছে
-না শোনো। আমি তোমাকে ভালবাসি না। আমি তো তোমার বড়। এগু...(শুভ আর কিছু বলতে দিলো না)
তখন শুভ বলল
-আপনি ভালবাসেন আর নাই বাসেন। আমি আপনাকে ভালবেসে ফেলছি।
-হুহ
-সরি আপনার ঘুম এর ডিস্টার্ব করলাম
-হুমমম
-হুমমম
শুভ চলে যাচ্ছে এমন সময়। জান্নাত তার হাত টেনে ধরে। আর তাকে বুকের মধ্যে নিয়ে বলে
-ওই পাগল ভালবাসি তো
-তখন যে না করলেন
-তুমি বোঝো না ভালবাসি কি না??
-বুঝি তো
-তাহলে চলে যাচ্ছিলে কেনো??
-এমনি
-ঠ্যাঙ ভেঙ্গে ফেলবো
-হুমমম
-হুমম ছাড়ো এখন
-না ভালো লাগছে
-কেউ যদি দেখে ফেলে??
-দেখলে দেখবে। আমার বউ আমি জড়িয়ে ধরে আছি
-হুমম কিন্তু এখনো বউ হই নাই। এখন ছাড়ো
-আচ্ছা
শুভর চোখে পানি দেখে জান্নাত বলল
-এই কাদছো কেনো??
-কাল যে চলে যাবেন
-যেতে তো হবে
-তাহলে আমি কার সাথে হাটবো?? কার হাতে হাত রাখবে??
-আমার
-আপনি যে থাকবেন না
-আচ্ছা পাগল আসবো তো পড়ে
-সত্যি??
-হুমম আসতে হবে তো। আমার বর টা যে এখানে থাকবে। দেখতে আসতে হবে না! আর ফোনে তো কথা বলবই
-হুমমম ঠিক আছে
দুজনই কিছুক্ষণ চুপচাপ.....
-ঘুমাবে না??(জান্নাত)
-তোমাকে ছেড়ে যেতে। সরি আপনাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না
-আমার যে খুব ঘুম পাচ্ছে
-তুমি আমায় তুমি করে বললে??
-হুমম
-এখন থেকে তুমি করেই বলবে
-আচ্ছা
-হুমমমম
-থাক আজকে ঘুমাতে হবে না
-ইহহহ ঘুমাতে হবে
-না
-না কেনো?? জেগে থেকে কি করবে??
-তোমাকে দেখবো
-ভালই পেকে গেছো হুমম
-না আমার মন এখন যা চাচ্ছে তাই বলছি।
-হুমমম ভালই কিছু চাচ্ছে মন
-হ্যা
-আজকে ঘুমাও কাল সকালে দেখা হবে
অনেক জোড়াজুড়ির পর শুভকে তার রুমে পাঠিয়ে দিলো। জান্নাত ভাবছে ছেলেটা আমাকে ভালবেসে ফেলছে তাহলে। এ কথা ভাবছে আর মুচকি মুচকি হাসছে.....
পরদিন সকালে.....
-এই শুভ তোর বাবা তোকে ডাকছে(শুভর মা)
-কেনো ডাকছে???(শুভ)
-তোর বাবার কাছে যা আগে
-আচ্ছা
।।
-বাবা আপনি ডেকেছেন আমাকে??(শুভ)
-হ্যা তোমাকে একটু আমার সাথে বাজারে যেতে হবে
-কেনো??
-কাজ আছে
-বাবা আমি রেডি হয়ে আসি
-না এই অবস্থায়ই যেতে হবে
-বাবা আমি ফোনটা রেখে আসছি উপরে
-বাজারে ফোন নিয়ে কি করবে?? এভাবেই চলো।
-আচ্ছা
(শুভর এখন চিন্তা হচ্ছে জান্নাত কে সে দেখতে পারবে কি না?? তারপর শুভ বাবার সাথে চলে গেলো)
এদিকে জান্নাত শুভকে খুঁজছে পাচ্ছে না
-আন্টি শুভ কোথায় ওকে তো দেখতে পাচ্ছি না (জান্নাত)
-ও তো ওর বাবার সাথে একটু বাজারে গেছে (শুভর মা)
জান্নাত এর এখন খুব রাগ হচ্ছে, আর মনে মনে বলছে। ওকে বললাম কাল আমি চলে যাবো। আমার সাথে দেখা না করেই গেলো!
-কি ভাবছো??(শুভর মা)
-না মানে আন্টি এখনই আমি বাড়ি যাবো(জান্নাত)
-সে কি এখনই কেনো?? আজকের দিনটা থেকে যাও
-না আন্টি, বাবা ফোন দিয়েছিলো যেতে হবে(জান্নাত মিথ্যা বলল)
-হুমমম ঠিক আছে
(তারপর জান্নাত চলে গেলো তার বাড়ি)
দুপুরের দিকে শুভ বাড়িতে ফিরে জান্নাত কে খুঁজতে থাকে কিন্তু পায় না।
-মা (শুভ)
-হ্যা বল
-জান্নাত আপু কোথায়??
-ও তো চলে গেছে
-........
-তোর কথা বলল আমি বলছি বাজারে গেছে
-.........
-কিরে কি হলো তোর
-না কিছু না এমনি
-যা খেয়ে নে
-হুমমম
শুভ রুমে এসে ভাবতে থাকে...আমার সাথে না দেখা করে চলে গেলো??
সে খুব মিস করতেছে তার জান্নাত কে। এখন কিভাবে কথা বলবে??
শুভ ভাবছে তার আপুর কাছে গেলেই তো নাম্বার পাওয়া যাবে। কিন্তু আপু আবার কি মনে করবে!
ওই দিন বিকেলে তার আপুকে নিয়ে যাবে। সেই সময়
-কিরে তোর মন খারাপ কেনো??(শুভর বোন)
-না আপু ঠিক আছে(শুভ)
-আমি তো দেখছি ঠিক নেই
-না সব ঠিক আছে
-না মনে হচ্ছে তোর কিছু চুরি টুরি হইছে
-না আপু সব কিছু ঠিক আছে
-যদি বলি সব ঠিক নেই
-দেখি বলো
-তোর মন চুরি হয়ে গেছে
-..............
-কিরে চুপপ কেনো??
-............
-লজ্জা পেয়েছিস হুমমম
-............
-আমার রাক্ষসী বান্ধবী টা আমার ছোট্ট ভাইটার মন চুরি করে নিয়ে গেছে
-.....(শুভ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে)
-আরে কান্না করিস কেন??
-ও আমাকে না বলে চলে গেছে
-ওলে বাবা লে সোনা কাদে না কাদে না আমি ওকে বকা দিয়ে দিবো কান্না করে না
-আমি ওর সাথে কথা বলব
-ফোন দে
-নাম্বার নেই
-কি বলিস কি
-হুমমম
-এখন পর্যন্ত নাম্বার নিস নাই
-না
-ওকে নে...০১৭........
-ওকে
-হুমম ভালো থাকিস আর বাবা মার খেয়াল রাখিস
-আচ্ছা
-আর হ্যা আমারও খেয়াল রাখিস মানে মাঝে মাঝে ফোন দিস
-হ্যা অবশ্যই
-হুমম ভালো থাকিস
-তুমিও ভালো থেকো....
শুভর বোন কে বিদায় দিয়ে...তাড়িতাড়ি রুমে চলে এলো।
সে জান্নাত এর নাম্বারে ফোন দিতে চাচ্ছে। কিন্তু ভয় পাচ্ছে ফোন দিয়ে কি বলবে। তবুও সে ফোন দেয়....
-হ্যালো কে???(ওপাশ থেকে জান্নাত)
-আ আ আ(শুভ)
-কি আ আ আ করছেন??
-আ আমি শুভ
-সরি রং নাম্বার
-না আমি শু....(ফোনটা কেটে দিলো জান্নাত)
শুভ আবার ফোন দিলো
-হ্যালো আমি শুভ বলছি
-আশ্চর্য তো আমি কি করবো?? বলছি না রং নাম্বার(এটা বলে আবার ফোনটা কেটে দিলো। শুভ আর ফোন দিলো না)
জান্নাত ভাবছে..পাগলটার বুদ্ধি তাহলে আছে। বোনের কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে আমাকে কল করছে। তবে আমি সহজে ফোন দিবো না। দেখি কয়বার ফোন দেয়......
জান্নাত অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু শুভ আর ফোন দেয় না। তাই জান্নাতই ফোন দেয় শুভকে
-হ্যালো (জান্নাত)
-রং নাম্বার (শুভ)
-বাব্বাহ এত্ত কথা শিখে গেছো
-শিখি নাই আগে থেকেই জানি
-হুমম রং নাম্বার বললে কেনো?
-আপনি বললেন কেনো??
-আমার সাথে না দেখা করে তুমি বাজারে গিয়েছো তাই
-আমি তো দেখা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু বাবা
-থাক আর বলতে হবে না
-রাগ কইরেন না
-হুহহহ
-আপনি তো রাগ করছেন আমারও রাগ হইছে আপনার উপর
-কি জন্য
-আগেই চলে গেছেন কেনো??
-আমার ইচ্ছা হইছে তাই
।।

পাগল
Part : 5
................
-আপনি তো রাগ করছেন আমারও রাগ হইছে আপনার উপর(শুভ)
-কি জন্য(জান্নাত)
-আগেই চলে গেছেন কেনো??
-আমার ইচ্ছা হইছে তাই
-যাবেন ই তো
-আমার পাগল টা কি রাগ করছে???
-হুমমম
-আচ্ছা সরি।
-সরি বললে হবে না
-তো কি করতে হবে???
-আমার সাথে দেখা করতে হবে
-কখন
-কাল সকালেই
-আমি পারবো না।
-আচ্ছা ফোন রাখি তাহলে
-এই না না দাড়াও। রাগ করো কেন??
-দেখতে ইচ্ছা করছে
-ওকে কাল সকালেই, কিন্তু কোথায় দেখা করবে??
-ওই যে বড় পুকুর পাড় টায়
-ওকে
-হুমমম এখন কি করবেন??
-কিছু না তুমি??
-আমিও কিছু না.....
পরদিন সকালে...
-আপনি আমার আগেই এসে বসে আছেন???(শুভ)
-তো কি করবো?? খুব মিস করতেছিলাম আমার হাবলুর কথা বার্তা আর তার মুখখানা(জান্নাত)
-কথা নেই যান
-কেনো??
-হাবলু বলেন কেনো??
-এটা তো আদর করে ডাকি
-ভালো
-এই যে এত রাগ অভিমান করা ভালো না আমি কিন্তু চলে যাবো
-না রাগ করি নি। চলেন ওইখান টায় বসি
-হুমমমমম
-চুপ চাপ কেনো। আর এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো???
-দেখছি
-কি দেখছেন???
-তোমাকে দেখছি
-হুমমম
-কি হুমমম আমার দিকে তাকাও
-হুমমম বলেন
-একটা গান বলো
-পারি না তো
-পারবে বলো
-আচ্ছা দাড়ান মনে করি
-হুমমমমম
.........
-কি হলো বলছো না কেনো???(জান্নাত)
-মনে আসছে না(শুভ)
-এখন যদি না বলো আমি কিন্তু চলে যাবো
-ওকে বলছি
-হুমমম বলো
-কি জানি কেমন করে, বাধা পরে গেছি আমি পুরো টাই, চুপি চুপি মন বলে সারাক্ষণই আমি তোমাকে চাই, মনেরই অতল ছুয়ে ছুয়ে তুমি কি আমায় নেবে ধুয়ে, এ মন বোঝে না কি করি। আমার এ অবুঝপনা দেখে, তুমি কি যাবে মেঘে ঢেকে? নাকি তুমিও এমনই.....(গান বলল)
-ওয়াও ভালই তো গান গাও
-হুমম একটু একটু
-হুমমম
-আপনি একটা বলেন
-আমি পারি না
-না বলেন একটা
-আজ না অন্যদিন
-হুমম
-তাহলে আজকে চলি
-না আরেকটু থাকেন
-না যেতে হবে গো
-হুমমম
-মন খারাপ করো না ফোনে কথা হবে তো
-একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-আপনি অন্য কাউকে ভালবাসবেন না তো
-আরে না কি যে বলো। আমি তো আমার পাগলকে পেয়ে গেছি
-হুমমমম যাবেন না
-হুমম উঠি এখন
-হুমমম
-ও আরেকটা কথা
-জ্বি বলেন
-আর আপনি করে বলতে হবে না।
-আচ্ছা
যে যার বাড়ি চলে গেলো। তারপর ফোনে কথা হয় তাদের। সারাদিনই কথা হয়। তো একদিন জান্নাত শুভ কে ফোন দিয়ে বলে.....
-একটা কথা শুনো(জান্নাত)
-হুমম বলো(শুভ)
-আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
-না কি বলো তুমি তোমার বিয়ে হবে আমার সাথে
-কিভাবে হবে??? বিয়ে তো ঠিক হয়ে গেছে
-না তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না
-কিছু একটা করতে হবে
-কি করতে হবে বলো
-তুমি এক কাজ করো। তুমি আমাদের বাড়ি চলে আসো। বাবাকে বুঝিয়ে বলো। উনি নিশ্চয় মেনে নিবেন
-যদি মেনে না নেয়???
-তখন বোঝা যাবে
-না এখন বলো
-আরে না মেনে নিলে পালাবো
-আচ্ছা ঠিক আছে
হঠাৎ শুভর মা শুভর রুমে প্রবেশ করে।
-এই এই মা আসছে এখন ফোনটা রাখি(শুভ)
-আচ্ছা ঠিক আছে (জান্নাত)
-কিরে কার সাথে কথা বলতেছিস??(শুভর মা)
-এই মা মা
-কি মা মা করছিস??
-মাছুদ এর সাথে কথা বলি
-ওহহহ
-তুমি আসছো কেনো??
-খাবার টা নিয়ে এলাম খেয়ে নে
-আচ্ছা।
শুভর মা রুম থেকে যাওয়ার সময় মুচকি হাসে। শুভ সেটা বুঝতে পারে না। শুভ আবার জান্নাত কে ফোন দেয়..
-হ্যালো(শুভ)
-হুমম আন্টি এসে কি বলল(জান্নাত)
-খাবার দিয়ে গেলো
-হুমমম। তাহলে কাল সকাল সকাল আসবে কিন্তু। আর ওত টেনশন করতে হবে না। মেনে না নিলে পালিয়ে যাবো ঠিক আছে।
-হুমম ঠিক আছে
-এখন তাহলে ঘুমাও
-আচ্ছা গুড নাইট
-হুমম গুড নাইট
পরদিন সকাল বেলা। জান্নাত এর কথা মতো শুভ জান্নাত এর বাড়ি যায়...
-এই কি চাই(একটা মহিলা)
-জ্বি আন্টি জান্নাত এর সাথে দেখা করবো(শুভ)
-কেনো দেখা করবে???
-আমি ওর বন্ধু তো তাই
-কেমন বন্ধু আর ওর তো কোনো ছেলে বন্ধু নেই
-আসলে আন্টি.....
হঠাৎ একটা লোক বলল
-কি হয়েছে কি??(লোকটি)
-এই যে দেখো না। জান্নাত এর সাথে দেখা করতে আসছে
-আরে জামাই বাবাজি(লোকটি)
-কি বলছেন এগুলো
-আরে বসতে বসতে দাও বসতে দাও
-না আংকেল আমি জান্নাত এর আব্বুর সাথে দেখা করতে আসছি
-আরে জামাই বাবাজি আমিই জান্নাত এর বাবা। কি বলবে বলো
-আমি আসলে....
-পরে কথা বলো। আগে কিছু খেয়ে নাও.....আমি একটু আসছি
(জান্নাত এর বাবা সাইডে গিয়ে কাকে যেনো ফোন করছে। এদিকে শুভ এদিক ওদিক তাকিয়ে জান্নাত কে খুঁজতেছে)
-নাও ফোনে কথা বলো(জান্নাত এর বাবা শুভ কে বলল)
-কে কথা বলবে??(শুভ)
-কথা বলেই দেখো
-আচ্ছা দিন। হ্যালো
-........
-ওপাশ থেকে লাইনটা তো কেটে দিয়েছে
-ওহহহ ঠিক আছে আমি ফোন দিচ্ছি আবার
-না আংকেল আমার কথা আগে শুনেন। আমি আপনার মেয়ে কে ভালবাসি। আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। আমি তাকে ছারা বাচবো না
(জান্নাত শুভর কন্ঠ শুনে রুম থেকে চলে আসে)
-হা হা হা হা হা হা (জান্নাত এর আব্বু)
-হাসছেন কেনো???(শুভ)
-এমনি। এই জান্নাত এদিকে আয়
-হ্যা বাবা বলো
-তুই ছেলেটাকে ভালবাসিস??
-হুমমম
-যদি বিয়ে না দেই তাহলে কি করবি??
-........(কোনো কথা নেই)
-আংকেল অমন করবেন না। আপনি যদি প্রেমে পড়তেন তাহলে কি করতেন একবার ভাবুন
(শুভর এই কথা শুনে জান্নাত এর মা বাবা মুচকি হাসলো)
-জামাই বাবাজি আমাদের তো পালিয়ে বিয়ে হইছে
-আপনি বার বার জামাই জামাই করছেন কেনে??
-এতক্ষণে তাহলে কথা টা ধরতে পারলে। আরে বাবাজি তোমার সাথেই জান্নাত এর বিয়ে ঠিক হইছে
(জান্নাত আর শুভ দুজন দুজন এর দিকে তাকালো)
-আরে কি বলো এইটাই ছেলে??(জান্নাত এর মা)
-হ্যা এটাই আমাদের জান্নাত এর বর
-আরে আগে বলবা না। এখানে বসতে দিলাম কেনো ঘরে যাও আর হ্যা আমি একটু বাজারে যাই। একমাত্র মেয়ের জামাই আসছে একটা ব্যাপার আছল তো
(শুভ জান্নাত এর দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের মনে একই প্রশ্ন। এটা হলো কিভাবে??)


পাগল
END PART
(শুভ জান্নাত এর দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের মনে একই প্রশ্ন। এটা হলো কিভাবে??)
কিছুক্ষণ পর শুভর বাবা মা চলে আসলো...শুভ দেখে হা করে তাকিয়ে আছে....
-কিরে হা করে তাকিয়ে আছিস কেনো?? আর শ্বশুর বাড়ি আসছিস একবারও তো বললি না (শুভর মা)
-না মানে তোমরা জানলে কিভাব??(শুভ)
-চুপপ করো। আগে আমাদের বলতা তারপর আসতা(বাবা)
-বাবা আপনি জানলেন কিভাবে??আমি এখানে আছি?? আর এটা শ্বশুর বাড়ি সেটাও বা জানলেন কিভাবে?????(শুভ)
-শোনো তাহলে একদিন তোমার সামনে আমি জান্নাত কে ডেকে তার পরিচয় শুনি। ও তোমার সাথে যখন ছিলো। সবাই বলল তোমাদের দুজন কে খুব মানিয়েছে...তাই ভাবলাম ওর সাথেই তোমার বিয়ে হবে। পরে যখন জানতে পারলাম জান্নাত আর কেউ নয় আমার বান্ধবীর মেয়ে তখন তো আর কোনো কথাই নেই। সব মিটমাট করে ফেললাম.......(বাবা)
(জান্নাত দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব শুনছে)
শুভর মুখেও কোনো কথা নেই...
-কি বেয়ান কি রান্না করা হচ্ছে?? বেয়াই কই গেছে...(এটা বলতে বলতে রান্না ঘরে চলে গেলো)
এদিকে জান্নাত বলল...
-এই যে মিস্টার আমার সাথে আসেন তো(জান্নাত)
-কই যাবেন???(শুভ)
-আবার বলে কই যাবেন?? তুমি করে বলো
-নিজেই তো আপনি করে বলল
-আরে গাধা এটা এমনি বলছি
-হুমম চলো
জান্নাত শুভ কে তার রুমে নিয়ে গেলো
-তোমার রুমটা অনেক সুন্দর(শুভ)
-তাই??(জান্নাত)
-হুমমম
-সারাদিন কি রুম সাজাও নাকি??
-না তো
-তাহলে এত্ত সুন্দর কেনো??
-এমনি সুন্দর। আর হ্যা তোমার সাথে একটা গুরুত্বপূর্ন কথা আছে
-হুমম বলো
-আমি একজন কে ভালবাসি।
(শুভ বড় বড় চোখ করে তাকালো জান্নাত এর দিক)
-কি বলো এগুলা(শুভ)
-সত্যি বলছি। আমি একজনকে ভালবাসি। ও আমার সাথেই পড়ে। তোমার সাথে মিথ্যা ভালবাসার অভিনয় করছি কারন, ওর প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক সময় লাগবে। তাই বাবা মা যাতে অন্য কোথাও বিয়ে দিতে না পারে। সেই জন্য একটা প্লান খুজছিলাম। পরে তোমাকে পেয়ে গেলাম। তোমার সাথে বিয়ে হবে আমার, তবে পরে ডিভোর্স দিতে হবে।(একটানে কথা গুলো বলল জান্নাত)
শুভ এতক্ষণ কি শুনলো কিছুই বিশ্বাস করতে পারছিলো না। তাই বলে এভাবে অভিনয় করবে শুভ ভাবতেই পারে নি......
-কি হলো কিছু বলছো না যে(জান্নাত)
-না মানে ঠিক আছে তুমি যা বলবে তাই হবে।(শুভ ভাঙ্গা গলায় বলল)
(জান্নাত শুভর চোখে পানি দেখতে পেলো)
-আচ্ছা তুমি থাকো আমি বাইরে যাই(কান্না করে দিছে)
জান্নাত হা করে তাকিয়ে আছে শুভর কান্না দেখে। জান্নাত ভাবছে একটা ছেলে এভাবে কান্না করতে পার!!!!
শুভ রুম থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো। তখন জান্নাত দৌড়ে গিয়ে রুমের দরজা আটকে দিয়ে শুভর সামনে দাড়িয়ে পড়লো।
-কি হলো আবার!(শুভ)
-কান্না করছো কেনো??(জান্নাত)
-এমনি কান্না পাচ্ছে তাই। তোমাকে এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
-না চিন্তা করতে হবে। আর চোখের পানি মোছো
-............(শুভর মুখে কোনো কথা নেই)
-কি হলো মোছো
-.................
-বাব্বাহ এই রকম রাগ??(এটা বলে জান্নাত শুভর একদম কাছা কাছি চলে গেলো)
-এই পাগল আমি তো মিথ্যা বলছিলাম। আমি তো আমার শুভ পাগলটাকে ভালবাসি। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে যাবো কেনো??(জান্নাত শুভর চোখের পানি মুছতে মুছতে কথা গুলো বলছিলো)
-তাহলে তখন এই কথা বললে কেনো??(শুভ)
-বুঝবা না তুমি (জান্নাত)
-ইসসস পাগলটা যে আমাকে এত্ত ভালবাসে তা তো জানতাম না(জান্নাত)
-তা তো জানবে না(শুভ)
-এই পাগল এখনো কান্না করতেছো কেনো??
-তুমি যে চলে যাওয়ার কথা বললে তাই
-এই পাগল বললাম তো যাবো না
(দুজনই কান্না করে দিছে। শুভর কান্না করা দেখে জান্নাত ও কান্না করে দিছে)
-একটু মজা করতে গিয়ে কি যে করলাম(জান্নাত)
-না ভালই করছো(শুভ)
-হুমম একটা কথা
-কি কথা???
-এখন একটু ভালবাসা দাও
-হুমমম বাসি তো
-উফফফ আমি ভালবাসা দিতে বলছি
-কিভাবে দিবো
-জানো না তুমি??
-না
-ওকে আমি শিখিয়ে দিচ্ছি
-আচ্ছা...
-কাছে আসছো কেনো??(শুভ)
-তুমি তো মাত্রই বললা শিখিয়ে দিতে(জান্নাত)
-আচ্ছা
-হুমমম আমার হাতের আঙ্গুলের মধ্যে তোমার হাতের আঙ্গুল দাও
-হুমম দিলাম...
-তুমি আমার সামনে এগিয়ে এসো...
শুভ ধীরে ধীরে সামনে এগোতে থাকলে। একসময় জান্নাত এর পিঠ দরজার সাথে লেগে গেলো
-এখন কি করবো(শুভ)
-আরো সামনে আসো(জান্নাত)
-আরও যেতে হবে??
-হুমমম
-এই যে আসলাম
-হয় নাই। আরও কাছে
-এবার তো হয়েছে??
-হ্যা হয়েছে(শুভ জান্নাত এর একদম কাছাকাছি চলে আসছে)
-এখন কি করবো??(শুভ)
-কি করবে তাও জানো না গাধা একটা
-না
(জান্নাত ইশারা দিয়ে তার ঠোঁট দেখিয়ে দিলো)
আর শুভ সেখানে একটা কিস করলো।
-সারাজীবন এভাবে ভাল বাসবে তো??(জান্নাত)
-হুমমম বাসবো(শুভ)
-হুমমম
জান্নাত শুভকে জড়িয়ে ধরে বলল।
-আমার কিছু শর্ত আছে (জান্নাত)
-হুমম বলো(শুভ)
-প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। তবে গাড়িতে না হেটে হেটে
-আর??
-মাঝে মাঝে সারপ্রাইজ দিবা
-কেমন সারপ্রাইজ??
-সেটা জানি না
-ওহহ। আর কি??
-এখন যেভাবে আছি। প্রায়ই সময় এভাবেই থাকবো
-হুমমম
-কি হুমমম
-আমি রাজি
-হুমম। তোমার কিছু ইচ্ছা নেই??
-হুমম আছে তো
-বলো
-তোমার ইচ্ছেগুলো পূরণ করাই আমার ইচ্ছা
-হুমমম
-এই একটা কথা জানার ইচ্ছা আছে
-কি বলো
-তুমি আমাকে দেখে পছন্দ করলে কেনে???
-তোমার এই হাবলু মার্কা ভাবসাব দেখে
-................
-এই সরি সরি আর হাবলু বলব না
-ঠিক আছে আবার বললে কিন্তু খবর আছে
-আমার পাগল একটা
শুভও বলল.... পাগলি একটা
একসাথে দুজনই মুচকি হসালো....☺
.......
.................END...................
...

No comments:

Post a Comment

অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...