রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০১
.
ছোঁয়ার মা বাবা ছোঁয়াকে জোর করেই বিয়ে দিচ্ছে।ছোঁয়া মোটেও এখন বিয়ে করতে রাজি নয়।সবে মাত্র ছোঁয়া ইন্টার প্রথম বর্ষে পড়ে।আর এখনি ছোঁয়ার মা বাবা ছোঁয়াকে বিয়ে দিতে চাচ্ছে।আর আজকে ছোঁয়ার বিয়ে।ছোঁয়া মোটেও এই বিয়েতে খুশি নয়।শুধু মাত্র মা বাবার খুশি আর জেদের কাছে হার মেনে এই বিয়েটা করছে।
.
ছোঁয়াকে নিয়ে সবাই অনেক মজা করছে।ছোঁয়ার সেইটা মোটেও পছন্দ হচ্ছে না।উল্টে ছোঁয়ার মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গেছে।ছোঁয়া মনে মনে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: একে তো এত ভারি লেহেঙ্গা আর গহনা সামলে রাখতে পারছি না,,,,
তার উপর এদের বকবকানি আমি আর সহ্য করতে পারছি না,,,
হাই আল্লাহ এই শয়তানিগুলোর হাত থেকে তুমিই রক্ষা করতে পার,,,,
.
ছোঁয়া আর এদের কথা সহ্য করতে না পেরে একসময় বলেই ফেলল,,,
.
ছোঁয়া ::::: প্লিজ তোমরা চুপ করবে এখন,,,,
একে তো এত ভারি লেহেঙ্গা আর গহনা তার মধ্যে তোমরা,,,,
শোন এই বিয়েটা আমি মোটেও নিজের ইচ্ছায় করছি না তোমাদের খুশি আর জেদের জন্য করছি,,,,
প্লিজ তোমরা একটু চুপ কর আর যদি চুপ করে না থাকতে পার তাহলে আমার ঘর থেকে প্লিজ যাও,,,,
.
ছোঁয়ার খালা ::::: ঠিক আছে আমরা চুপ করছি,,,
.
সবাই একদম চুপ হয়ে গেছে।বিয়ের সময় হয়ে গেছে।ছোঁয়া খুব কান্না করছে।কারন ছোঁয়া অপরিচিত একটা মানুষের হয়ে যাচ্ছে।ছোঁয়া নিজেকে মানিয়ে তুলবে কিভাবে সে বাড়িতে।
.
বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে।এখন ছোঁয়ার বিদায় দেওয়ার পালা।ছোঁয়া খুব কান্না করছে ওর মা বাবাকে জড়িয়ে ধরে।ছোঁয়া চলে যাচ্ছে বলে সবাই কান্না করছে ছোঁয়াকে নিয়ে।
.
যে খালাত ভাইগুলো ছোঁয়াকে নিয়ে কোন চিন্তা করত না আজ সেই ভাইগুলো ছোঁয়ার জন্য কান্না করছে।ছোঁয়াও ওদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।ওরা ছোঁয়াকে গাড়িতে উঠিয়ে বসিয়ে দিল।এখনও ছোঁয়ার কান্না থামছে না।
.
এর ভিতরে ছোঁয়া এক মিনিটের জন্যও ছোঁয়া ও ওর স্বামীর দিকে তাকাল না।ছোঁয়ার চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝরছে।ছোঁয়া ও ওর শ্বশুরবাড়িতে পৌছে গেছে।গাড়ি থেকে নামলো।ছোঁয়ার শ্বাশুড়ি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।ছোঁয়ার ননদ আগেই চলে এসেছে।ছোঁয়ার ননদের নাম লাবন্য।লাবন্য বলছে,,
.
লাবন্য ::::: ভাইয়া ভাবিকে কোলে করে ঘরে নিয়ে আস,,,,
.
ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে এখনও।ছোঁয়ার স্বামী ছোঁয়াকে কোলে নিয়ে ভিতরে গেল।কিছু নিয়ম পালন করিয়ে লাবন্য আর আরও কিছু মেয়ে ছোঁয়াকে ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসল।
.
ছোঁয়া একলা একা ঘরে বসে রয়েছে।আর মনে মনে ভাবছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: যতই আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে এই বিয়েটা হোক না কেন যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে সে তো আমার স্বামী,,,,
তাকে তো আমি দূরে ঠেলে দিতে পারি না,,,,
আমাকে তো তার কাছে যেতেই হবে,,,,,
.
ছোঁয়া একটু পরে দরজা খোলার শব্দ পেল।ছোঁয়া আবারও চোখ বন্ধ করে নিল।কারন ছোঁয়ার খুব লজ্জা করছে ছোঁয়া যে তার স্বামীর দিকে তাকাতে পারছে না।অনেক কষ্টে তাকালও ছোঁয়া ওর স্বামীর দিকে।
.
ছোঁয়া তো ওর স্বামীর দিকে তাকিয়ে পুরাই অবাক।কারন এ কনক যে বিজনেসে সবার থেকে টপে আছে।তার সাথে ছোঁয়ার বিয়ে হয়েছে।সেটা ছোঁয়া কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না।ছোঁয়া বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে গেল।একটু পরে কনক রাগি গলায় বলে উঠল,,,
.
কনক ::::: আপনি এইখানে কি করছেন আমার ঘরে,,,,,
এখনি বের হন এইখান থেকে,,,
আর প্লিজ এই ন্যাকামো আমার সামনে দেখাবেন না,,,,
আর শুনন আপনি আমার সাথে এক বিছানায় থাকবেন না আপনি নিচে থাকবেন,,,,
ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড দ্যাট,,,,
.
ছোঁয়া কনকের এই কথাগুলো শুনে ভয়ে বিছানায় বসে পড়ল।বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ব্যাগ থেকে একটা শাড়ি বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে গেল।ওয়াশরুমে ঢুকেই বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: এত রাগ উনার এইরকম রাগি মানুষ জীবনেও দেখিনি,,,,
আল্লাহ এই রাক্ষসটাকে আমার কপালে লিখে রেখেছিলে,,,,
উনি যদি রাগি হয়ে থাকে আমি তার থেকেও দ্বিগুন রাগি,,,,
উনি আমাকে কি মনে করেন উনার রাগ সবসময় আমি সহ্য করব না না আমি সহ্য করব না,,,,
ওফফ সেই গরম লাগছে এখনি চেন্জ করতে হবে,,,,
এত ভারি যে এইগুলো,,,,
.
ছোঁয়া শাড়িটা পড়ে নিল।তারপর বাইরে চলে আসল।ছোঁয়া ওয়াশরুম থেকে বের হতেই না হতেই কনক ছোঁয়ার দিকে বালিশ আর কাঁথা ছুড়ে মারল।কনক ছোঁয়াকে বলছে,,,,
.
কনক ::::: নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়ুন,,,,,
ঘুমানোর আগে লাইটটা অফ করে দিয়ে আসুন,,,,
.
ছোঁয়া ::::: ঠিক আছে,,,,,
.
ছোঁয়া লাইটটা অফ করে দিয়ে এসে শুয়ে পড়ল নিচে।ছোঁয়া কোনদিন নিচে শোয়নি।আজ জীবনে প্রথম শোল।ছোঁয়ার খুব শীত করছে।এই সামান্য কাঁথায় ছোঁয়ার হচ্ছে না।ছোঁয়া মনে মনে বলছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: দেখ দেখ রাক্ষসটা কত আরামে ঘুমাচ্ছে আমাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে,,,,
উনার রাগকে আমি মোটেও ভয় পাই না,,,,
উনি উনার রাগ নিয়ে থাকুক আমি আমার মত থাকব,,,,
আজকেই আমাদের বিয়ে হয়েছে আর আজকের এই রাতেই উনি আমার সাথে এইরকম ব্যবহার করলেন,,,,,
.
ছোঁয়া কান্না করছে।কান্না করতে করতে বালিশ একদম ভিজিয়ে ফেলেছে।ছোঁয়া সারারাত ঘুমাতে পারল না।আযান দিয়ে দিয়েছে।ছোঁয়া উঠে ওয়াশরুমে যেয়ে ওযু করে এসে নামাজটা পড়ে নিল।ছোঁয়া মনে মনে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: কি রকম মানুষরে নামাজ পড়তেই উঠছে না।উনি কি সারাটা খন রাগ নিয়েই থাকেন নাকি,,,,
রাক্ষস একটা,,,,,
রাগ নিয়েই থাকুন আপনি আপনার কাছে আমার কিছু যাই আসেনা,,,,
.
সকাল হয়ে গেছে।লাবন্য বাইরে থেকে ডাক দিচ্ছে ছোঁয়া আর কনককে।ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে কাঁথা আর বালিশটা উপরে উঠিয়ে নিল।তারপর ছোঁয়া বলছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি খুলছি দরজাটা,,,
.
ছোঁয়া দরজাটা খুলে দিল।লাবন্য বলছে,,,
.
লাবন্য ::::: ভাইয়া কি উঠেছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: না এখনও উঠেনি ,,,,
.
লাবন্য ::::: তুমি তাড়াতাড়ি করে ফ্রেস হয়ে নিয়ে নিচে চলে এস,,,,
.
ছোঁয়া ::::: ওকে,,,,,
.
ছোঁয়া আবার ভিতরে ঢুকল।ইসস কেমন করে শুয়ে রয়েছে।একে কেউ দেখে মনে করবে এ একটা রাগি মানুষ।সব সময় রাগি রাগি ভাব নিয়ে থাকে।সব কিছু নিয়ে সিরিয়াস থাকে।ছোঁয়া শুধু তাকিয়ে দেখছে কনক।
/
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০২
.
ছোঁয়া শুধু কনকের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে।কনক ঘুম থেকে উঠে গেছে।ছোঁয়াকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাগি গলায় বলছে,,,
.
কনক ::::: এইভাবে তাকিয়ে দেখছেন টা কি,,,,
আর আমি আপনাকে বলেছি না আমার সামনে না আসতে আর আমি আপনাকে আমার স্ত্রী বলে স্বীকার করি না,,,,
আপনি এখন আমার চোখের সামনে থেকে দূর হন,,,,
.
ছোঁয়ার গলা শুকিয়ে গেছে।ছোঁয়া বিড়বিড়িয়ে বলছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: কালকে থেকে সেই যে রাগ দেখানো শুরু করেছে রাক্ষস একটা,,,,
.
কনক ::::: কিছু কি বললেন,,,(রাগ দেখিয়ে)
আপনি এখনও আমার সামনে রয়েছেন যান বাহিরে যান,,,,
.
ছোঁয়া ::::: যাচ্ছিই তো,,,,
রাক্ষসের মত ব্যবহার করেন কেন,,,(বিড়বিড়িয়ে)
.
এক দৌড়ে ছোঁয়া ঘরের বাইরে চলে আসল।আর সোজা নিচে চলে গেল পিছন ঘুরেই তাকালো না।লাবন্য ছোঁয়াকে ডাক দিল,,,,
.
লাবন্য ::::: ভাবি এইদিকে আস,,,,
মা তোমাকে ডাকছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আসছি,,,,
.
ছোঁয়া সেই ঘরে গেল লাবন্য যে করে রয়েছে।ছোঁয়া ঘরে যেয়ে দেখে ছোঁয়ার শ্বাশুড়ি আমেনা বেগম কত শাড়ি আর কত গহনা বের করে রেখেছে।ছোঁয়াকে বসিয়ে দিয়ে বলছে,,,,
.
আমেনা ::::: তোমায় কিছু দেওয়ার আছে মা,,,,
আর কিছু বলারও আছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আম্মু বলুন,,,
.
আমেনা ::::: এই শাড়ি আর এই গহনা আমার শ্বাশুড়ি আমাকে দিয়েছিল আর বলেছিল উনার ছেলেকে সবসময় শাড়ির আঁচলে বেঁধে রাখতে,,,,
আর আজকে আমি তোমাকে দিলাম এইগুলো আর আমি তোমাকেও বলছি আমার এই রাগি ছেলেটাকে সবসময় শাঁড়ির আঁচলে বেঁধে রাখবে,,,,
কথা দাও মা আমাকে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আম্মু কথা দিচ্ছি আমি সারাজীবন উনাকে আমার শাড়ির আঁচলে বেঁধে রাখব,,,,
.
আমেনা ::::: আর একটা কথা বলার ছিল,,,,
তুমি কালকে থেকে কলেজে যাবে আর পড়ালেখা কন্টিনিউ করবে,,,
.
ছোঁয়া ::::: থেংক ইউ আম্মু,,,,
.
আমেনা ::::: লাবন্য যা তোর ভাবিকে এই শাড়ি আর গহনা পড়িয়ে দে,,,,
আজকে তো অনেকেই নতুন বউয়ের মুখ দেখতে আসবে,,,,
আর এমনিতেও অনুষ্ঠান করা হবে,,,,
.
লাবন্য ::::: জ্বি মা,,,,
চল ভাবি,,,,
.
লাবন্য আর ছোঁয়া এই ঘর থেকে বের হয়ে গেল।ছোঁয়া দেখল যে লাবন্য ছোঁয়াকে নিয়ে কনকের ঘরে নিয়ে যাচ্ছে।ছোঁয়া লাবন্যকে বাধা দিয়ে বলছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: একি তুমি উনার ঘরে নিয়ে যাচ্ছ কেন,,,,
এখন উনার ঘরে যাওয়া যাবে না,,,,
.
লাবন্য ::::: কেন ভাবি,,,
.
ছোঁয়া ::::: এখন উনি ব্যস্ত আছেন উনাকে ডিস্টার্ব করা ঠিক হবে না,,,,
আর তুমি জানই তো উনি সব কাজ নিয়ে অনেক সিরিয়াস থাকেন আর কেউ ডিস্টার্ব করলে প্রচুর রেগে যান,,,
আর পুরোই রাক্ষসদের মত লাগে উনাকে তারপর গলা শুকিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে যাই,,,,
.
লাবন্য ::::: হাহাহা,,,
বুঝতে পেরেছি,,,
চল ভাবি তুমি আমার ঘরে চল,,,,
আমার ঘরে নিয়ে যেয়েই তোমাকে সাজাই,,,,
.
ছোঁয়া ::::: হুম,,,
.
ওরা দুইজনে লাবন্যের ঘরে গেল।লাবন্য ছোঁয়াকে প্রথমে শাড়ি পড়িয়ে দিল হালকা একটু সাজিয়ে দিল আর গহনা গুলো পড়িয়ে দিল।লাবন্য আর ছোঁয়া দুইজনে মিলে গল্প করছে।লাবন্য ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করল,,,
.
লাবন্য ::::: তোমাদের বাসর রাত টা কেমন হল,,,,
.
ছোঁয়া ::::: মনে করিয়ে দিও না কালকে রাতের কথা,,,
মানছি যে উনি রাগি একটা মানুষ আর খুবই আনরোমান্টিক তাই বলে কি উনি কালকেও রাগ দেখাবেন,,,,
উনার মধ্যে কোন রোমান্টিকতা নেই পুরাই আনরোমান্টিক,,,,
রাক্ষস একটা,,,,
.
লাবন্য ::::: ভাবি তুমি মাইন্ড কর না ভাইয়া এইরকমই,,,
.
ছোঁয়া ::::: উনি কি ভেবেছেন আমি উনার রাগ সহ্য করে যাব উনি ভুল ভাবছেন,,,,
উনার যদি রাগ থাকে তাহলে আমারও রাগ আছে,,,,
.
লাবন্য ::::: আর রাগ দেখাতে হবে না ভাবি,,,,
তুমি এখন নিচে চল মা ডাকছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: হুম চল,,,,
.
ছোঁয়া আর লাবন্য নিচে চলে আসল।আমেনা ছোঁয়াকে নিয়ে যেয়ে খাবারের টেবিলে বসিয়ে দিল।ছোঁয়ার সামনে খাবার বেড়ে দিল।ছোঁয়ার হাতে অনেকগুলো গহনা দেখে আমেনা ছোঁয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে।
.
কনক ::::: উনার কি হাত নেই উনি কি নিজে খেতে পারেন না,,,(রাগ দেখিয়ে)
.
আমেনা ::::: পারে খেতে নিজে নিজে,,,
হাতে এতগুলো গহনা যে খেতে পারবে না তাই খাইয়ে দিচ্ছি,,,
.
কনক ::::: ডিসগাস্টিং,,,,
.
কনক রাগ করে উপরে চলে গেল।ছোঁয়া আমেনাকে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: আম্মু আমি আর খেতে পারব না,,,
.
আমেনা ::::: সবে মাত্র তো এইটুকুই খেলে,,,
আর একটু খাও,,,,
.
ছোঁয়া ::::: না আম্মু বেশি খাই না আমি,,,
বেশি খেলে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাই আম্মু,,,,
.
আমেনা ::::: ঠিক আছে,,,
যা লাবন্য বউমাকে ঘরে নিয়ে যা,,,
.
লাবন্য ::::: জ্বি আম্মু,,,
.
লাবন্য ছোঁয়াকে ঘরে নিয়ে গেল।ছোঁয়া মন খারাপ করে বসে রয়েছে কনকের কান্ড দেখে।লাবন্য ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে,,,
.
লাবন্য ::::: কি হয়েছে ভাবি,,,
তুমি মন খারাপ করে বসে রয়েছে কেন,,,
.
ছোঁয়া ::::: উনি এত অদ্ভুত কেন এইভাবে রাগ দেখালেন উনি নিচে,,,,
.
লাবন্য ::::: তুমি মন খারাপ করে থেক না ভাইয়া এইরকমই,,,
.
দুপুর হয়ে গেছে।বউভাতের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে।লাবন্য ছোঁয়াকে নিচে নিয়ে গেল।আমেনা ছোঁয়াকে বসিয়ে দিল।ছোঁয়াকে অনেকেই দেখতে এসেছে।ছোঁয়ার পরিবার থেকে সবাই চলে এসেছে।
.
ছোঁয়া দৌড়িয়ে ওর মা বাবার কাছে গেল।দুইজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।ছোঁয়ার মা বাবা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে,,,
.
ছোঁয়ার বাবা ::::: মা আর কান্না করিস না তোর কান্না কিছুতেই সহ্য করতে পারি না,,,
.
ছোঁয়া ::::: ঠিক আছে আব্বু আমি আর কান্না করব না,,,,
.
ছোঁয়ার মা ::::: তুই ঠিক আছিস তো মা ,,,,
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আম্মু ঠিক আছি আমি,,,,
.
খাওয়া দাওয়ার পর্ব শুরু হয়ে গেছে।সবাই খেতে বসে গেছে।খাওয়া দাওয়া শেষ।খাওয়া দাওয়ার পর লাবন্য বলছে,,,,
.
লাবন্য ::::: ভাবি তুমি ভাইয়ার পাশে যেয়ে বস না ছবি তুলবে,,,,,
.
লাবন্য ছোঁয়াকে জোর করেই কনকের পাশে বসিয়ে দিল।যখন ওরা সবাই দূরে সরে গেল কনক ছোঁয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে ঘরে নিয়ে গেল।ছোঁয়া বারবার বলেই চলছে,,,,
.
ছোঁয়া ::::: আমার হাত ছাড়ুন,,,
আমার খুব লাগছে,,,,
.
কনক ::::: লাগুক না তাতে আমার কি,,,,
আপনি কেন আমার পাশে এসে বসলেন,,,
আপনার সাহস তো বড় কম নই,,,,
কে অধিকার দিয়ে আপনাকে আমার পাশে বসার,,,,
.
ছোঁয়া ::::: স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছে,,,
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৩
.
ছোঁয়া ::::: স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছে এই অধিকার।আপনার কাছে আসা,আপনার পাশে বসা,আপনার সাথে সবসময় চলা এইসব অধিকার সব আল্লাহ আগে দিয়ে রেখেছে আগে থেকেই।তাতেও যদি আপনার সমস্যা হয় আমার কিছু যাই আসে না।সবাই নিচে আমাদের কে খুজছে নিচে যাচ্ছি আমি।
.
ছোঁয়া নিচে চলে যাচ্ছে।হাতটা ধলতে ধলতে যাচ্ছে।হাতে একদম রক্ত জমে গেছে।কনক নিজেই নিজেকে বলছে,,,
.
কনক ::::: বেশি সাহস ওর।আজকের শুধু রাতটা আসতে দাও তখন বুঝাব আমি কি জিনিস।আমার জীবনে এই মেয়ের কোন জায়গা নেই।কখনই এই মেয়েকে নিজের স্ত্রী বলেও মানব না।আই হ্যাড হার।
.
কনকও নিচে চলে আসল।বিকেল হয়ে গেছে।একে একে অনেক গেস্ট চলে যাচ্ছে।শুধুমাত্র আত্নীয়রা চলে গেল।একটু রাত হতে না হতেই ছোঁয়ার পরিবাররা চলে গেল।চলে যাওয়ার সময় ছোঁয়া ওদেরকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করল।
.
সবাই রাতের বেলা নিচে বসে রয়েছে।সবাই মিলে এখন একটা অনুষ্ঠান করছে।এখন নাকি নাচ আর গান হবে।এই অনুষ্ঠানটা করছে ছোটরা।তাদের মধ্যে অনন্যা রয়েছে।ওরা একে একে সবাইকে নিয়ে মজা করল।এখন বাকি রইল ছোঁয়া আর কনক।তাই অনন্যা বলছে,,,
.
অনন্যা ::::: যাদের বিয়ে হয়েছে তারাই তো কোন কিছুই করল না।এখন তাদেরকে সুন্দর একটা নাচ দিতে হবে।ভাইয়া আর ভাবি তোমাদের দুইজনকে সুন্দর একটা নাচ দিতেই হবে তাও আবার রোমান্টিক গানে।
.
ছোঁয়া ::::: কি বলছ অনন্যা তুমি,,,,
.
কনক ::::: কি বলছিস টা কি তুই অনন্যা।তুই ভালো করেই জানিস আমি এইসব অপছন্দ করি।
.
অনন্যা ::::: তুমি অপছন্দ করলে কিছু যাই আসে না।আজকে তোমার কোন কথা শুনা হবে না।তুমি আর ভাবি এখন রোমান্টিক গানে ডান্স করছ এইটাই ফাইনাল।তাড়াতাড়ি আস তোমরা এইখানে।
.
অনন্যা নিজেই ছুটে এসে কনক আর ছোঁয়াকে টেনে ধরে নিয়ে গেল।সামনে ধার করিয়ে দিল।ছোঁয়া আর কনক বুঝতে পারছে না এখন ওরা কি করবে।সবার জোরাজুরিতে দুইজনেই রাজি হয়ে গেল।কনক যখন ছোঁয়াকে টাচ করল তখন ছোঁয়া সাথে সাথে কেঁপে উঠল।কারন জীবনে প্রথম ছোঁয়াকে কোন ছেলে টাচ করল।
.
ছোঁয়া শুধু বারবার কেঁপেই চলেছে।দুইজনের নাচ শেষ।সবাই জোরে জোরে হাততালি দিল।ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে উপরে চলে গেল।আর মনে মনে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: রাক্ষসটা আমাকে ছুল আর আমার কোনরকমই লাগল না।আর উনি এত এইরকম কেন সকলের সাথেই রাগ দেখিয়ে কথা বলেন।মানছি যে উনি একটা রাগি মানুষ তাই বলে এত রাগ দেখাতে হবে।এত রাগ কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি।
.
কনক ঘরে ঢুকেই দরজাটা আটকিয়ে দিয়ে ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিল।অনেক শক্ত করে ধরল হাতটা।কনক অনেক রেগে রয়েছে ছোঁয়ার উপর।ছোঁয়া অনেক ব্যাথা পাচ্ছে।ছোঁয়া আর সহ্য করতে পারছে না।ছোঁয়া একসময় বলে উঠল,,,
.
ছোঁয়া ::::: আমার হাত ছাড়ুন আপনি।আমার খুব ব্যাথা লাগছে।হাতটা ছাড়ুন।
.
কনক ::::: হাতে ব্যথা পান আর হাত কেটেই যাক আই ডন্ট কেয়ার।আজকে দুপুরে বেলাই আমার যা খুশি তাই বলেছেন কিন্তু আমি কিছুই বলেনি তাই বলে ভাববেন না যে রাতে কিছু বলব না।এখনই দেখতে পারবেন আমার কত রাগ।এখন তুমি বুঝবে।
.
এই কথা বলে কনক আরও শক্ত করে ধরল ছোঁয়ার হাতটা।ছোঁয়া আস্তে আস্তে করে চিৎকার করে উঠল।কনক হাতে একটা কাঁচের গ্লাস নিল।তারপর সেটা দূরে ছুড়ে মারল।আর ছোঁয়াকে সেই কাঁচগুলোর উপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।
.
ছোঁয়ার হাত দিয়ে অনেক রক্ত পড়ছে।ছোঁয়া কান্না করছে।তারপর কনক ছোঁয়ার উপর কাঁথা আর বালিশ ছুঁড়ে মারল।আর বলল,,,
.
কনক ::::: লাইট টা অফ করে দিয়ে নিচে শুয়ে পড়।
.
কনক এই কথা বলার পর পরই শুয়ে পড়ল।ছোঁয়ার হাত দিয়ে এতই রক্ত পড়ছে যে না বলার মত।ব্যান্ডেজ যে কোথায় রাখা আছে এই ঘরে সেটা তো ছোঁয়া জানেই না।ছোঁয়া একটা পুরনো শাড়ি বের করে তা ছিড়ে হাতটা কোন রকমে বেঁধে রাখল।
.
তারপর লাইটটা অফ করে দিয়ে ছোঁয়া শুয়ে পড়ল।আর কান্না করতে লাগল।কান্না করতে করতে একসময় ছোঁয়া ঘুমিয়ে পড়েছে।আজানের শব্দে ছোঁয়ার ঘুম ভাঙ্গল।তারপর ধীরে ধীরে ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যেয়ে ওযু টা করে এসে নামাজটা পড়ে নিল।
.
কালকে রাতে যে ছোঁয়ার হাত দিয়ে রক্ত পড়ছিল সেই রক্ত বোঝা যাচ্ছে।তাই ছোঁয়া পুরোনো কাপড়টা পানিতে ভিজিয়ে রক্ত মুছে দিল।তারপর নিচে চলে আসল।নিচে যেয়ে দেখে কনকের মা আমেনা নিচে রান্না করছে।হাতটা লুকিয়ে নিচে নেমে আসল।আমেনা ছোঁয়াকে দেখে বলছে,,,
.
আমেনা ::::: বউমা তুমি উঠে পড়েছ।কিন্তু তুমি এখনও এইভাবে কেন তুমি রেডি হওনি কেন?
.
ছোঁয়া ::::: রেডি কেন হব আম্মু?কোথায় যাব আমি আম্মু?
.
আমেনা ::::: কালকে তোমাকে কি বলেছি তুমি তোমার পড়াশুনা চালিয়ে যাবে।আজকে তুমি কলেজে যাবে।তাই তো বলছি এখনও রেডি হয়নি।
.
ছোঁয়া ::::: সেটা তো আমি বুঝতে পেরেছি আম্মু কিন্তু,,,,
.
আমেনা ::::: কিন্তু কি?
.
ছোঁয়া ::::: কিন্তু আমার বই খাতাগুলো এখনও আনা হয়নি এখানে।তাহলে আমি কি করে কলেজে যাব আম্মু।আজকে না হয় নিয়ে আসি কালকে থেকে না হয় কলেজে যাব আমি।
.
আমেনা ::::: ঠিক আছে তুমি যেটা ঠিক মনে কর।বউমা এই কফিটা কনককে দিয়ে আস।সকালবেলা সময়মত কফি না পেলে ও আবার রাগারাগি শুরু করে দিবে।তুমি তাড়াতাড়ি দিয়ে আস।
.
ছোঁয়া ::::: হুম ঠিক আছে।আমি দিয়ে আসছি।
.
ছোঁয়া উপরে গেল কফিটা নিয়ে।ছোঁয়া উপরে যেয়ে দেখে কনক ঘুম থেকে উঠে গেছে।কনক ছোঁয়াকে দেখে একটু রেগে গেল।ছোঁয়ার হাতে কফি মগ দেখে বলছে,,,,
.
কনক ::::: তুমি আমার জন্য কফি নিয়ে এসেছ কেন?
.
ছোঁয়া ::::: আসলে আম্মু বলল কফিটা আপনাকে দিয়ে আসতে।আমি ইচ্ছা করে আনি নি।আম্মুর কথা তো আর ফেলতে পারি না।
.
কনক ::::: ও।দাও।
.
ছোঁয়া কফি মগটা কনকের হাতে দিল।কনক এক চুমুক দিয়েই বলছে,,,
.
কনক ::::: কফি একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে।কতবার বলেছি আমাকে গরম কফি দিতে কে শুনে আমার কথা।তোমার সব দোষ তুমি ইচ্ছে করেই লেট করে নিয়ে এসেছ কফি।
.
ছোঁয়া ::::: কি আমি ইচ্ছে করে লেট করেছি।আমি তো কোন লেটই করেনি।
.
কনক ::::: হ্যা তুমি ইচ্ছে করেই লেট করেছ।
.
এই কথা বলে রাগ দেখিয়ে ছোঁয়ার শরীরে কফিটা ছুড়ে দিল।আসলে কফিটা গরম রয়েছে।কনক ইচ্ছে করেই এই কাজটা করেছে ছোঁয়াকে শাস্তি দেওয়ার জন্য।রাগ দেখিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।
.
ছোঁয়া চলে যাচ্ছে ঘর থেকে।ঘরের বাইরে এসে দেখে আমেনা বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।ছোঁয়া আমেনাকে দেখে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: আম্মু আপনি এইখানে?
.
আমেনা ::::: আমি সব কিছুই দেখেছি কোন কিছুই আমার কাছ থেকে তুমি লুকাতে পারবে না।নিচে থাকার সময় আমার সন্দেহ হচ্ছিল যখন তুমি তোমার হাতটা বারবার লুকাচ্ছিলে আমার কাছ থেকে।তাই পিছু নিয়েছি।আর তাই এইসব দেখতে পেলাম।
.
ছোঁয়া ::::: আম্মু উনি আমাকে মোটেও ভালোবাসেন না।উনি তো আমাকে তার পাশেই চান না তার স্ত্রী বলে মেনে নিতে চান না।তাহলে আমি উনাকে আমার আঁচলে বেঁধে রাখব কি করে।
.
আমেনা ::::: এইভাবে সব অত্যাচার সহ্য না করে প্রতিবাদ কর তাহলেই নিজের আঁচলে বেঁধে রাখতে পারবি এই রাগী বরটাকে।আর চুপ করে থাকবি না তুই।সাথে সাথে প্রতিবাদ করে উঠবি তুই।
.
ছোঁয়া ::::: হুম এখন থেকে আমি তাই করব আম্মু।আমি আর সহ্য করব না উনার অত্যাচার।আজকে থেকেই প্রতিবাদ করব আমি।
.
আমেনা ::::: এখন আর এইখানে থাকার কোন দরকার নেই তুমি এখন নিচে চল।
.
ছোঁয়া ::::: হুম আম্মু চলুন।
.
ছোঁয়া আর আমেনা নিচে চলে আসল।আমেনা রান্না করছে।ছোঁয়া আমেনাকে সাহায্য করছে।একটু করে অনন্যা আসল এইখানে।এসেই ছোঁয়াকে বলা শুরু করল,,,
.
অনন্যা ::::: ভাবি তুমি কেমন আছ?
.
ছোঁয়া ::::: আলহামদুলিল্লাহ।তুমি।
.
অনন্যা ::::: এই তো আছি আর কি।
.
ছোঁয়া ::::: মানে।
.
অনন্যা ::::: কিছু না।
.
কে যেন কলিংবেলটা বাজাল।অনন্যা যেয়ে দরজাটা খুলে দিল।কনকের বন্ধু জয়।অনন্যা দেখে বলছে,,,
.
অনন্যা ::::: আপনি।ভিতরে আসুন।
.
জয় ::::: হুম।
.
অনন্যা ::::: কিন্তু ভাইয়া তো,,,,ওই তো ভাইয়া এসে গেছে।
.
অনন্যা ছোঁয়ার কাছে গেল।দুই বন্ধু মিলে গল্প করছে।অনন্যা ছোঁয়াকে বলছে,,,
.
অনন্যা ::::: দেখ ভাবি ভাইয়ার বন্ধু কত হ্যান্ডসাম।আর অনেক রোমান্টিক।ভাইয়ার মত এত রাগি না।
.
ছোঁয়া ::::: তাহলে তো মনে হয় তুমি ভালবাস।
.
অনন্যা ::::: যা।
.
আমেনা আসল এইখানে।আমেনা এসেই বলছে,,,
.
আমেনা ::::: জয় তুমি এসেছ।
.
জয় ::::: হুম আন্টি।
.
আমেনা ::::: তোমার বন্ধুটা তো বিয়ে করে ফেলল তাও আবার রাগি বন্ধুটা।তুমি কবে বিয়ে করবে।
.
জয় ::::: জানি না আন্টি।এখনও মনের মত মেয়ে খুজে পাইনি তো।
.
অনন্যা ::::: কি এখনও মনের মত মেয়ে খুজে পাননি।এতগুলো মেয়ে থাকতে।এত মেয়ের আপনার চোখের সামনে ঘুরছে।
.
জয় ::::: ও মা তাই।তুমি যদি রাজি থাক তাহলে আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারি।
.
.
.
রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৪
.
জয় ::::: ও মা তাই।তুমি যদি রাজি থাক তাহলে আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারি।
.
অনন্যা ::::: আপনি কি বলছেন এইসব?
.
জয় ::::: আমি তো মজা করলাম তোমার সাথে।তুমি সিরিয়াস নিলে নাকি।
.
অনন্যা ::::: ও।না আমি সিরিয়াস নেইনি কথাটাকে।
.
কনক ::::: এইসব কথা বাদ দিয়ে যে কথাটা বলতে এসেছিস সেই কথা বল।আর তোর কথা শেষ হলে আমারও তোকে কিছু বলার আছে।
.
জয় ::::: হুম বলছি।
.
অনন্যা মনটা খারাপ করে উপরে চলে গেল।ছোঁয়াও ওর পিছন পিছন গেল উপরে।আর অনন্যার ঘরে গেল।অনন্যা মন খারাপ করে বসে পড়ল।ছোঁয়া অনন্যার কাছে যেয়ে বসল।তারপর বলতে লাগল,,,
.
ছোঁয়া ::::: আমি জানি তুমি এই কথাটাকে সিরিয়াসভাবে নিয়েছিলে।
.
অনন্যা ::::: উনি কি বুঝেন না আমি সত্যিই ওনাকে ভালোবাসি।আনাকে আমার জীবনসঙ্গী করতে চাই।কিন্তু উনার মনে আমার জন্য কোন জায়গা নেই ভাবি।আমি সত্যিই কথাটাকে অনেক সিরিয়াসভাবে নিয়ে নিয়েছিলাম।উনি কি আমায় একটুও ভালোবাসেন না ভাবি।
.
ছোঁয়া ::::: সেটা তো আমি জানি না।কিন্তু তুমি মন খারাপ করে বসে থেক না।তোমাকে এইভাবে ভালো দেখায় না।আর এখনি কিসের বিয়ের চিন্তা করছ সবে মাত্র দশম শ্রেনিতে পড়।এইসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও।
.
অনন্যা ::::: ভাবি তুমিও তো সবে মাত্র একাদশ শ্রেনিতে পড় তবুও তুমি বিয়ে করার চিন্তা ভাবনা কেন করলে।তবুও বিয়ে করলে কাকে আমার রাগী ভাইয়াটাকে।
.
ছোঁয়া ::::: আমি কোন বিয়ে করার চিন্তা ভাবনা করেনি।আব্বু আম্মুর জোর জবরদস্তি আর তাদের খুশির জন্য আমি এই বিয়েটা করেছি।কিন্তু,,,,
.
অনন্যা ::::: কিন্তু কি ভাবি?
.
ছোঁয়া ::::: কিছু না অনন্যা।তুমি এখন নিচে চল।ব্রেকফাস্ট করবে চল।
.
অনন্যা ::::: হুম চল।ভাবি তোমার হাতে কি হয়েছে।ব্যান্ডেজ কেন?
.
ছোঁয়া হাতটা লুকালো।ছোঁয়া এখন কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।এখন মিথ্যে কথা বলতে হবে অনন্যাকে।ছোঁয়া হাতটা শাড়ির আঁচলে লুকিয়ে অনন্যাকে বলতে লাগল,,,
.
ছোঁয়া ::::: কোথায় কিছুই হয়নি তো আমার হাতে।তুমি ভুল দেখছ অনন্যা।তুমি এখন নিচে চল অনন্যা।
.
অনন্যা ::::: হুম চল ভাবি।
.
ছোঁয়া আর অনন্যা দুইজনে মিলে নিচে চলে আসল।সোজা খাবার টেবিলের ওইখানে চলে আসল।আমেনা ছোঁয়াকে দেখে বলছে,,,
.
আমেনা ::::: বউমা তুমি কোথায় ছিলে?তোমাকে খুজছিলাম সেই কখন থেকে আর তোমাকে খুজেই পাওয়া যাচ্ছে না।
.
ছোঁয়া ::::: আম্মু আমি অনন্যার সাথে ছিলাম।আম্মু আপনি কি কিছু বলবেন বা কোন কাজ আছে।কাজ থাকলে আম্মু বলেন আমি এখনি করে দিচ্ছি আম্মু।
.
আমেনা ::::: না বউমা কোন কাজ নেই।সকালের নাস্তা করার সময় হয়ে গেছে।আর তোমার কোন খোজ খবর নেই।তুমি এখনি খেতে বস।
.
ছোঁয়া ::::: আম্মু এখনি খেতে হবে আমাকে।কিন্তু এখন তো আমার কিছুই খেতে ভালো লাগছে না।
.
ছোঁয়ার শ্বশুর কায়সার সাহেব আসলেন।তিনি ছোঁয়াকে বলতে লাগলেন,,,
.
কায়সার ::::: খেতে ইচ্ছে করছে না মানে টা কি?বউমা তুমি কি এখনও নিজেকে মানিয়ে নিতে পার নি নাকি।
.
ছোঁয়া ::::: আব্বু আপনি।আসসালামুলাইকুম আব্বু।আপনি কি যে বলছেন আব্বু তেমন কিছুই না।আমি নিজেকে এই বাড়ির সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছি।
.
কায়সার ::::: ওলাইকুমআসসালাম।তাহলে খেতে চাচ্ছ না কেন?আমি বলছি তোমাকে এখনি খেতে বস।আমি তোমার কোন কথাই শুনব না।
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আব্বু আমি এখনি বসছি।
.
ছোঁয়া বাধ্য হয়েই খাবার টেবিলে যেয়ে বসল।আমেনা ছোঁয়ার প্লেটে খাবার বেড়ে দিল।সবাই খাচ্ছে এখন।সবার খাওয়া শেষ।কায়সার সাহেব কনককে বলছে,,,
.
কায়সার ::::: জয় এসেছিল তো সে এখন কোথায় তাকে দেখতে পাচ্ছি না তো।
.
কনক ::::: আব্বু জয় চলে গেছে।
.
কায়সার ::::: সে কি কথা না খেয়েই চলে গেল।আমাদের সাথে ব্রেকফাস্ট করে যেত।একসাথেই বের হতে পারতাম।
.
কনক ::::: আমি আর আম্মু অনেকবার বলছি আমাদের সাথে খেতে কিন্তু বলল যে পরে একদিন খেয়ে যাবে এখন নাকি জরুরি কাজ আছে তাই চলে গেছে।
.
কায়সার ::::: ও।কিন্তু আমার তো জয়ের সাথে জরুরি কথা ছিল।কনক তুই আমাকে জয়ের নাম্বারটা দে।মোবাইলে কথা বলে নিব।
.
কনক ::::: ঠিক আছে নাও।
.
কনক কায়সার সাহেবকে নাম্বারটা দিয়ে দিল।তারপর দুইজনেই বের হয়ে চলে গেল।আমেনা অনন্যার দিকে তাকিয়ে বলছে,,,
.
আমেনা ::::: কি রে অনন্যা তোর আবার কি হল।এইভাবে মন খারাপ করে বসে রয়েছিস কেন?কি হয়েছে কি তোর?
.
অনন্যা ::::: কিছুই না মা।আমার কিছুই ভালো লাগছে না।আমি এখন আমার ঘরে যাচ্ছি।স্কুলে যেতে হবে আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি।আজকে স্কুলে যেতে লেট করতে পারব না আমি।আমি এখন যাই।
.
আমেনা ::::: হুম যা তাড়াতাড়ি।
.
অনন্যা ও ওর রুমে চলে গেল।তারপর রেডি হয়ে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিল।
.
আমেনা আর ছোঁয়া দুপুরের জন্য রান্না করছে।ঠিক এইসময় কলিংবেলটা বেজে উঠল।ছোঁয়া যেয়ে দরজাটা খুলে দিল।ছোঁয়া দরজা খুলে দেখে একটা দাঁড়িয়ে আছে।লোকটা ছোঁয়াকে বলছে,,,,
.
লোকটা ::::: এইখানে ছোঁয়া নামের কি কেউ থাকে।থাকলে তাকে একটু ডেকে দিন।
.
ছোঁয়া ::::: আমিই ছোঁয়া।কি হয়েছে।
.
লোকটা ::::: বই খাতা আর কি যেন পাঠিয়েছে।
.
ছোঁয়া ::::: ও হ্যা।ভিতরে এনে দিয়ে যান প্লিজ।
.
লোকটা ::::: হুম এনে দিচ্ছি।
.
লোকটা সব কিছু এনে দিল ভিতরে।ছোঁয়া কিছু টাকা দিল ভিতরে এনে দেওয়ার জন্য।আর এই বাড়িতে যে কাজ করে রহিম সে সব কিছু উপরে নিয়ে গেল।আমেনা ছোঁয়াকে বলছে,,,
.
আমেনা ::::: বই খাতা সব কিছু চলে এসেছে কালকে থেকে কলেজে যাবে হুম।
.
ছোঁয়া ::::: জ্বি আম্মু।
.
দুপুর হয়ে গেছে।অনন্যা স্কুল থেকে চলে এসেছে।অনন্যা ফ্রেস হয়ে এসে খেতে বসল।আমেনা ছোঁয়াকেও জোর করে খেতে বসাল।ছোঁয়া খাবার নাড়ছে আর মনে মনে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: আমি যে খেতে বসেছি।ওই রাক্ষসটা কি খেয়েছে।সেই যে সকাল বেলা খেয়েছে।এখনও পর্যন্ত খেল কি না একমাত্র আল্লাহ জানে।রাক্ষসটা যদি আমার সাথে ভালো করে কথা বলত তাহলে ফোন করে জানতে পারতাম খেল কিনা।
.
কনক বসে কাজ করছে।কনকের মনে হল কে যেন ওকে স্মরন করল।এর জন্য কনক চুপ করে বসে রয়েছে।আর অন্যদিকে মন চলে গিয়েছে কনক।কনক ভাবছে এই সময় কনককে কে স্মরন করতে পারে।
.
অফিসের একজন স্টাফ সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছে।আর সেই কখন থেকে বলেই যাচ্ছে,স্যার শুনছেন ফাইলটা সাইন করিয়ে দিন।কনক বিরক্ত হয়ে বলছে,,,
.
কনক ::::: কি হয়েছে টা কি এইভাবে চিল্লাচ্ছ কেন?(রেগে কথাটা বলল)
.
স্টাফ ::::: স্যার ফাইলটা সাইন করাতে নিয়ে এসেছি।
.
কনক ::::: এতে চিল্লিয়ে কথা বলার কি আছে?
.
স্টাফ ::::: সেই কখন থেকে আপনাকে ডাকছিলাম কিন্তু আপনি শুনছিলেন না।
.
কনক ::::: ওকে দাও ফাইলটা।সাইন করে দিচ্ছি।
.
কনক ফাইলটা সাইন করে দিল।একটু পরে কনকের পিয়ন আসল কনকের খাবার নিয়ে।কনককে খাবার দিল।কনক খাচ্ছে।
.
ছোঁয়া কিছুখন ভাত নাড়াচাড়া করার পর গালে হাত দিয়ে মুখে খাবার দিল।ছোঁয়ার গালে হাত দেখে আমেনা ছোঁয়াকে বলছে,,,
.
আমেনা ::::: গালে হাত দিতে নেই।
.
ছোঁয়া ::::: ও ভুলে গেছি।
.
আমেনা ::::: কি হয়েছে তোমার বউমা।সেই কখন থেকে খাবার দিয়েছি এখনও পর্যন্ত কিছুই খাও নি।রান্না কি ভালো হইনি।
.
ছোঁয়া ::::: কি যে বলছেন আম্মু।আমি আসলে ভাবছিলাম ওল রাক্ষ,,,মানে উনি খেয়েছেন নাকি সেইটা চিন্তা করছিলাম তো।
.
আমেনা ::::: ও বুঝতে পেরেছি।তুমি নিশ্চিন্তে খাও।আমার ছেলেটা সেই কখন খেয়েছে।তুমি আরামে খাও।
.
ছোঁয়া ::::: হুম।
.
রাত হয়ে গেছে।সবাই নিচে রয়েছে।কায়সার আর কনক চলে এসেছে।কায়সার আর কনক সোফায় এসে বসল।কিছুখন রেস্ট নিয়ে কায়সার সাহেব সবাইকে বলছে।বিশেষ করে অনন্যাকে বলছে,,,,
.
কায়সার ::::: আমি অনন্যার বিয়ে ঠিক করে রেখেছি।অনন্যার এস এস সি পরীক্ষা দেওয়ার পর বিয়েটা হবে।
.
অনন্যা ::::: কি বলছ তুমি বাবা।কার সাথে বিয়ে ঠিক করে রেখেছ।আমি তো চিনিই না আর এস এস সি র পর বলছ আমার বিয়ে হবে।একটা অচেনা ছেলেকে কি করে বিয়ে করি।
.
কায়সার ::::: আমি কিছুই জানি না আমার কথাই শেষ কথা।
.
এই কথা বলেল কায়সার সাহেব নিজের রুমে চলে আসলেন।অনন্যা বলছে ,,,,
.
অনন্যা ::::: বাবা,,,
.
অনন্যা রাগ করে নিজের রুমে চলে গেল।একে একে সবাই যে যার ঘরে চলে গেল।কনকও নিজের ঘরে চলে গেল।তার কিছুখন পর ছোঁয়াও চলে গেল ঘরে।
.
কনক দরজাটা আটকিয়ে দিল।কনক ছোঁয়ার দিকে বালিশ আর কাঁথা ছুড়ে মারল।আর বলতে লাগল,,,
.
কনক ::::: নিচে বিছানা করে শুয়ে পড়।আর লাইট অফ করার দরকার নেই আমার কাজ আছে।
.
ছোঁয়াও কিছু কম না।ছোঁয়া বালিশ আর কাঁথা উপরে উঠিয়ে বলছে,,,
.
ছোঁয়া ::::: দেখুন কনক ভাববেন না যে এই দুইদিন আপনার দেওয়া কষ্টগুলো সহ্য করেছি তার মানে এই নই যে আজকেও সহ্য করব।আমি উপরেই শুব।
.
কনক ::::: ছোঁয়া আমি তোমাকে কিছুতেই আমার পাশে শুতে দেব না।তুমি নিচেই ঘুমাবে।
.
ছোঁয়া ::::: আমি নিচে ঘুমাবো না।আমি উপরেই ঘুমাবো।আর আপনার পাশে ঘুমাবার আমার অধিকার আছে।
.
কনক ::::: না।
.
ছোঁয়া ::::: আপনি কিছুই করতেই পারবেন না।এই তো আমি ঘুমালাম।আপনার যা কাজ করার আপনি তাই করেন।গুড নাইট।
.
ছোঁয়া উপরেই ঘুমিয়ে পড়ল।কনক তো একদম রেগে আগুন হয়ে রয়েছে।
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৫
.
ছোঁয়া উপরেই ঘুমিয়ে পড়ল,,,আর কনক তো রেগে আগুন হয়ে রয়েছে,,,কনক ছোঁয়ার কাছে যেয়ে ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিতে দিতে বলছে,,,
.
কনক :::::::::: এই মেয়ে উঠ,,,তুমি এইখানে ঘুমাবে না আমার পাশে,,,
ধ্যাত মেয়েটা এইখানেই ঘুমিয়ে পড়েছে,,,এর আসলে কিছু একটা করা দরকার,,,
.
আসলেই কনককের আর কিছুই করার নেই ছোঁয়া উপরেই ঘুমিয়ে পড়েছে,,,দুইদিন পর ছোঁয়া আজকে শান্তির একটা ঘুম দিল,,,কনক সোফায় যেয়ে বসে ল্যাপটপ টা অন করে গুরুত্বপূর্ন কাজ করতে লাগল,,,কনক দুইটার সময় ঘুমালো,,,বাধ্য হয়ে ছোঁয়ার সাথে ঘুমাতে হল কনকের,,,
.
আজান দিয়ে দিয়েছে,,,ছোঁয়া ঘুম থেকে উঠে পড়েছে নামাজ পড়ার জন্য,,,কনক এখনও উঠেনি,,,তাই ছোঁয়া মনে মনে বলছে,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: আজান দিয়েছে উনি নামাজ পড়বেন তা না করে উনি ঘুমাচ্ছেন,,,,
না এই অন্যায় আমি কিছুতেই হতে দিতে পারি না,,,আজকে উনাকেই নামাজ পড়তেই হবে,,,আমি উনার স্ত্রী হয়ে কিছুতেই নামাজ পড়ার সময়ে এইভাবে ঘুমিয়ে থাকতে দিতে পারি না,,,
.
ছোঁয়া কনককে ডাকছে,,,কনক কিছুতেই ছোঁয়ার ডাক শুনছে না,,,এইবার ছোঁয়ার খুব রাগ উঠেছে তাই ছোঁয়া বলেই ফেলল,,
.
ছোঁয়া :::::::::: এই রাক্ষস ঘুম থেকে উঠেন না কেন,,,
.
এইবার কনক ছোঁয়ার ডাক শুনল,,,বিরক্ত হয়ে বলতে লাগল,,,
.
কনক :::::::::: এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি,,,
এইভাবে ডাক দিচ্ছ কেন,,,হয়েছে টা কি,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: এখনই ঘুম থেকে উঠবেন আপনি,,,,
আর নামাজ পড়বেন আপনি এখন,,,নামাজ পড়ার টাইমে এখন আপনি কিছুতেই ঘুমোতে পারবেন না,,,
.
কনক :::::::::: কি নামাজ,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: হ্যা আপনি নামাজ পড়বেন,,,আমি কিছুই জানি না,,,
মুসলমান ঘরের ছেলে অথচ নামাজ পড়বেন না তা তো আমি কিছুতেই হতে দিতে পারি না,,,তাড়াতাড়ি উঠুন আর ওযু করে আসুন,,,
.
কনক :::::::::: হুম উঠছি,,,
.
কনক বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে যেয়ে ওযুটা করে আসল,,,ছোঁয়াও ওযুও করে আসল,,,আর ছোঁয়া কনককে মসজিদে পাঠালো নামাজ পড়ে আসার জন্য,,
.
কনককে মসজিদে পাঠিয়ে নিজে নামাজটা পড়ে নিল,,,কনক নামাজ পড়ে আসল,,,আবার শুয়ে পড়ল,,,কি আর করবে বেচারা রাত দুইটার সময় ঘুমিয়েছিল,,,
.
ছোঁয়া নিচে চলে আসল,,,রান্নাঘরে এসে রান্না করতে লাগল,,,একটু পরে আমেনা আসল,,,আমেনা ছোঁয়াকে রান্না করতে দেখে বলছে,,,
.
আমেনা :::::::::: বউ মা তুমি রান্না করছ কেন ,,,আজকে তো তুমি কলেজে যাবে যাও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও ,,,
আমি কিন্তু জানি তোমাদের কলেজ নয়টা থেকে শুরু হয় ,,,,
তোমাকে রান্না করতে হবে না বউমা ,,,তুমি উপরে যেয়ে রেডি হয়ে নাও ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: জ্বি আম্মু ,,,,
.
ছোঁয়া আবার উপরে চলে আসল ,,,,উপরে যেয়ে দেখে কনক ঘরে নেই ,,,,ছোঁয়া বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: যাক বাবা রাক্ষসটা ঘরের ভিতর নেই ,,,,
এই সুযোগে আমি রেডি হয়ে নিতে পারি ,,,,
.
ছোঁয়া জানত না যে কনক ওয়াশরুমে ছিল ,,,,কনক ঘরে নেই এইটাই ভেবে ড্রেস চেন্জ করতে লাগল ,,,ঠিক ওই সময় কনক ওয়াশরুম থেকে বের হল ,,,,কনক বাইরে এসে এইসব দেখে চোখ উপরে উঠে গেল ,,,,,
.
ছোঁয়া কিছুতেই বুঝতে পারল যে কনক ওকে দেখছে ,,,ড্রেস চেন্জ করে বই খাতা গুছানোর পর যখন পিছন ঘুরে তাকালো তখন কনককে দেখল ,,,ছোঁয়া কনককে দেখে ঢুক গিলছে ,,,কনককের চোখ এখনও উপরে উঠে রয়েছে ,,,,
.
ছোঁয়া আর বেশিখন এইখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ব্যাগটা নিয়ে নিচে এক দৌড় দিল ,,,,নিচে এসে ব্যাগটা রেখে মুখটা লুকালো ছোঁয়া ,,,,ছোঁয়াকে এইরকম থাকতে দেখে আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,
.
আমেনা :::::::::: কি হয়েছে বউ মা এইভাবে মুখ লুকাচ্ছ কেন ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: কিছু হয়নি তো আম্মু ,,,,
.
কনক নিচে চলে আসল ,,,কার সাথে যেন কথা বলছে ফোনে আর প্রচুর রেগে রয়েছে ,,,এমন রেগে রয়েছে যে একসময় মোবাইলটা ছুড়ে মারল ,,,,দামি মোবাইলটা একদম শেষ ,,,ছোঁয়া একদম অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ,,,একসময় চিৎকার করে বলতে লাগল ,,,,
.
কনক :::::::::: আকাশ ,,,,,,,
.
আকাশ আসল আর সাথে একটা মোবাইল নিয়ে আসল ,,,,মোবাইলটা কনকের হাতে দিল ,,,,আমেনা ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
আমেনা :::::::::: অবাক হওয়ার কিছু নেই বউমা এর আগে কতগুলো মোবাইল এইভাবে ভেঙ্গেছে ,,,,
এইটা আবার কি ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: এ্যা ,,,,
.
আমেনা :::::::::: এ্যা নয় হ্যা ,,,,
.
জয় আসল কনককে নিতে ,,,,,ওরা দুইজনে একটা ইমপরটেন্ট একটা মিটিং যাবে ,,,,অনন্যা নিচে আসছিল ,,,হঠাৎ করে পা পিছলিয়ে পড়ে যাচ্ছিল ,,,
.
জয় এসে অনন্যাকে এসে ধরল ,,,,জয় অনন্যাকে বলছে ,,,,
.
জয় :::::::::: এইভাবে কেউ হাঁটে কিছু একটা হয়ে যেত ,,,
.
অনন্যা :::::::::: সরি ,,,,
.
আমেনা :::::::::: বউ মা তুমি এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছ তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে নাও ,,,,
তোমার কলেজের সময় হয়ে যাচ্ছে ,,,,আর তোরাও খেতে বস ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: হুম ,,,,
.
ছোঁয়া ব্রেকফাস্ট টা সেরে নিয়ে কলেজে চলে আসল ,,,,ক্লাসে ঢুকতে না ঢুকতেই ছোঁয়ার বান্ধবীরা ওর দিকে ছুটে আসল ,,,,একদম জড়িয়ে ধরল ,,,,,সবাই ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
রুবাইয়া :::::::::: কি রে দোস্ত কেমন আছিস ,,,,
পুরো এক সপ্তাহ পরে আসলি তুই ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: কি আর করবো বল আব্বু আম্মু জোর করেই বিয়েটা করিয়েই দিল ,,,
.
রিমি :::::::::: আমরা তো ভেবেই নিয়েছিলাম তোকে বোধ হয় আমরা আর দেখতে পাব না ,,,,
মনে শান্তি পেলাম তুই এসেছিস ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: আমার শ্বাশুরিই আমাকে আসতে বলেছে ,,,,
.
সাদিকা :::::::::: তোর শ্বাশুরি কত ভালো রে ,,,,
কিন্তু দোস্ত তোর হাতে কি হয়েছে ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: কিছুই হয় নি তো ,,,,(হাতটা লুকিয়ে)
.
সোনালি :::::::::: বাদ দে তো এখন ,,,,
আগে বল জিজুর নাম কি ,,,,
.
ছোঁয়া ::::::::::: কনক ,,,,
আর প্রচুর রাগি কথায় কথায় রাগ দেখায় ,,,,রাগ দেখানো ছাড়া আর কিছুই বুঝে না ,,,,
কলেজে আসার সময়ও রাগ দেখে আসলাম রে আমার হাজবেন্ড এর ,,,,
.
মন্দিরা :::::::::: কি ,,,,
রাগীটাকে নিয়ে থাকিস কিভাবে ,,,,
.
ছোঁয়া ::::::::;: ওইভাবেই ,,,,
.
সবাই মিলে আরও অনেক গল্প করতে লাগল ,,,,
.
কনক আর জয় গাড়িতে আছে ,,,,দুইজনে মিলে জরুরি কথা বলছে ,,,,হঠাৎ করে কনকের যেন মনে হল ,,,,কেউ যেন কনককে নিয়ে কথা বলছে ,,,,কনক একদম অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছে ,,,,জয় কনককে অন্যমনস্ক থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,
.
জয় :::::::::: কি রে কি হয়েছে এইভাবে অন্যমনস্ক হয়ে রয়েছিস কেন ,,,,
.
কনক :::::::::: মনে হল কে যেন আমাকে নিয়ে কথা বলছে ,,,,
.
জয় :::::::::: কে আবার বলবে ভাবি বলছে ,,,
আচ্ছা ভাবির সাথে এই কয়েকদিন কি করলি ,,,,
.
তখনই কনকের সকালের কথা মনে পড়ল ,,,,
আবার চোখ উপরে উঠল কনকের ,,,,
.
কনক :::::::::: এইসব বিষয় নিয়ে আমি কোন কথা বলতে চাচ্ছি না ,,,
আমি খেয়াল করেছি যে তুই যখন অনন্যাকে কালকে ওওই কথাটা বললি তখন মন খারাপ করে উপরে চলে গিয়েছিল ,,,
আর আজকেও তোর দিকে কেমন করে তাকিয়ে ছিল ,, ,,আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না ,,,,
.
জয় :::::::::: আমি কিছু জানি না অনন্যা কি হয়েছে ,,,
.
কনক :::::::::: আমার মনে নেই অনন্যা তোকে ভালোবাসে ,,,,
.
জয় :::::::::: আমি জানি না হতেও পারে ,,,,
.
ছোঁয়ার কলেজ ছুটি দিয়ে দিয়েছে ,,,,ছোঁয়া এখন রাস্তায় ,,,,ছোঁয়া গাড়ির কাছে যাওয়ার আগেই কলেজে যে ছেলেগুলো বখাটে টাইপের সে ছেলেগুলো ছোঁয়াকে ঘিরে ধরল ,,,,
.
এদের মধ্যে যে লিডার সিরাজ সে একদম ছোঁয়ার কাছে আসল ,,,,সে ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
সিরাজ :::::::::: তুই আমার না হয়ে অন্য কারোর হয়ে গেলি ,,,,আজকে তো তোকেই ছাড়ছি না ,,,,
.
ছোঁয়া বুঝতে পারছে না ছোঁয়া এখন কি করবে ,,,,সিরাজ ছোঁয়ার হাত ধরল ,,,,টানতে টানতে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে ,,,ওই রাস্তা দিয়েই কনক যাচ্ছিল কনক এইসব দেখল ,,,,
.
কনক এখন দ্বিগুন বেশি রেগে গেল ,,,,গাড়ি থেকে নামল ,,,,গাড়ি থেকেই নেমেই সিরাজের হাতটা ধরল আর ছোঁয়াকে ছুটিয়ে নিল ,,,সিরাজ বলছে ,,,,
.
সিরাজ :::::::::: কে রে তুই ,,,,একে বাঁচানোর জন্য এইভাবে আসলি ,,,
তুই কে হস এই মেয়ের ,,,,
.
কনক :::::::::: আমি ওর হাজবেন্ড ,,,,
আর ও আমার ওয়াইফ ,,,,
.
সিরাজ ::::::::;: তার মানে তুই সেই এই মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছে ,,,,
তোকে আমি ছাড়ছি না ,,,,
.
কনক সিরাজকে একটা ঘুষি মেরে নিচে ফেলে দিল ,,,আর বলতে লাগল ,,,,
.
কনক :::::::::: আর কোনদিন যদি আমার স্ত্রীর দিকে তাকানোর চেষ্টা করিস তাহলে তোর চোখ টেনে ছিড়ে আনবি ,,,
আর গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করিস তাহলে তোর হাত কিন্তু তোর বডি তে থাকবে না ,,,,
.
সিরাজ :::::::::: তুই জানিস না কার গায়ে হাত তুলেছিস ,,,,
আমার বাবা তোকে ছাড়বে না ,,,,
.
কনক :::::::::: তুই হয় তো বা আমাকে চিনিস নি আমি কে ,,,,
আমি কনক চৌধুরি ,,,,
পুরো দেশ আমাকে চিনে আমাকে জানে অনেক বড় বিজনেস ম্যান ,,,,
আমার স্ত্রীর আশর পাশে তোকে যেন না দেখি ,,,,
.
ছোঁয়া কনকের মুখে এইসব কথা শুনার পর থেকে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ,,,,কনক ছোঁয়ার হাতটা ধরল ,,,আর গাড়িতে নিয়ে বসাল ,,,,আর কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ,,,,
.
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৬
.
কনক ছোঁয়ার হাত ধরে গাড়িতে নিয়ে বসালো ,,,,,কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ,,,,কনক এখনও অনেক রেগে রয়েছে ,,,,,গাড়ি চালানোর ভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছে ,,,,ছোঁয়া শুধু চুপ করে বসে রয়েছে ,,,,
.
ওরা বাসাই চলে এসেছে ,,,,,কনক গাড়ি থেকে নামল প্রথমে ,,,,,তারপর ছোঁয়াকে হাত ধরে গাড়ি থেকে নামাল ,,,,,তারপর হাত ধরে সোজা ঘরে নিয়ে যাচ্ছে ,,,,
.
ঘরে নিয়ে যেয়ে দরজাটা একদম আটকিয়ে দিল ,,,,আমেনা আর অনন্যা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ,,,,ওরা বুঝতে পারছে না ভিতরে কি হচ্ছে ,,,কনক ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,
.
কনক :::::::::: ছেলেটা কে ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: আমাদের সাথেই পড়ে ,,,,,
ওর নাম সিরাজ ,,,,,
.
কনক :::::::::: কে বলেছিল ছেলেটার সাথে কথা বলতে হুম ,,,,,
তাহলে এইরকম কিছুই হত না ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: আমি ছেলেটার সাথে কথা বলতে যাইনি ,,,,
আমি গাড়ির কাছে যাচ্ছিলাম ওই সময় ও ওর বন্ধুরা আমার সামনে আসে ,,,,
তারপরই তো হলো ,,,,
.
কনক :::::::::: ছেলেটার বাবার নাম কি ,,,,
বলল যে ছেলেটার বাবা নাকি আমাকে শেষ করে দিবি ,,,,
কে ওই শয়তান ছেলেটার বাবা ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: আরমান সিকদার ,,,,,
.
কনক :::::::::: ও আই সি ,,,,,
কালকে থেকে তুমি একা একা কলেজে যাবে না আর একা একাও আসবে না ,,,,
আমি তোমাকে দিয়ে আসব ,,,,, আর নিয়ে আসব ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: ঠিক আছে ,,,,
.
কনক দরজা খুলে দিল ,,,,, আমেনা আর অনন্যা এখনও বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ,,,, আমেনা কনককে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,,
.
আমেনা :::::::::: কি হয়েছিল টা কি এইভাবে দরজা আটকিয়ে দিয়ে কি করছিলি বউমার সাথে ,,,,
.
কনক :::::::::: কিছু না ,,,,
.
আমেনা :::::::::: তুই আবার বউমাকে অত্যাচার করছিলি দরজা আটকিয়ে ,,,,,
.
কনক :::::::::: আম্মু তুমি সবসময় নেগেটিভ ভাব কেন ,,,,, একটু কি পজিটিভ ভাবতে পার না ,,,,,
.
আমেনা :::::::::: তাহলে দরজা আটকিয়ে করছিলি টা কি ,,,,,
.
কনক :::::::::: বললাম তো কিছুই না ,,,,(রাগি গলায় বলল কথাটা)
.
কনক রাগ করে নিচে চলে গেল ,,,, ছোঁয়া কনকের পিছন পিছন যেতে চাচ্ছিল কিন্তু আমেনা ছোঁয়ার হাতটা টেনে ধরল ,,,,ছোঁয়া কাঁদ কাঁদ গলায় আমেনাকে বলছে ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: এমনিতেই উনি খুব রেগে ছিলেন আর আপনি আরও রাগিয়ে দিলেন আম্মু ,,,,
এই রাগ কি আর এত সহজে কি ভাঙ্গবে ,,,,
.
আমেনা :::::::::: কেন কি হয়েছে বউমা ,,,,,
.
ছোঁয়া আমেনা কে সব কিছু খুলে বলল ,,,,ছোঁয়া আবার বলা শুরু করল ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: এখন অনেক রেগে রয়েছেন উনি জানি না এখন উনি কি করবেন ,,,,
.
আমেনা :::::::::: এখন আর একা একা কলেজে যাবি না ,,,,
আমিও তোর সাথে যাব ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: না আম্মু আপনাকে যেতে হবে না ,,,,,
উনি বলে দিয়েছেন কালকে থেকে উনি আমাকে কলেজে দিয়ে আসবেন আর নিয়েও আসবেন ,,,,,
.
আমেনা :::::::::: ভালোই হল ,,,,
অনন্যা তুই তোর ভাবির সাথে এখন থাক ,,,,
.
অনন্যা :::::::::: জ্বি আম্মু ,,,,
.
ছোঁয়া আর অনন্যা বসে রয়েছে ,,,,অনন্যাকে ছোঁয়াকে বলছে ,,,,,
.
অনন্যা :::::::::: যখন ছেলেটা তোমার গায়ে হাত দিল তখন না একটা থাপ্পর আর জুতার বাড়ি মারা উচিৎ ছিল ভাবি ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::::::: সেই শক্তি টাই তো পাচ্ছিলাম না ,,,,
উনি যদি তখন ওইখান দিয়ে না যেতেন তাহলে যে কি হত ,,,,,
.
অনন্যা :::::::::: হুম ভাবি ,,,,,
.
কনক অফিসে চলে এসেছে ,,,,,কনক ওর কাজ করছে ,,,,কনকের আশে পাশে যে থাকে আকাশ সে এসে বলছে ,,,,
.
আকাশ :::::::::: স্যার আপনার সাথে আরমান সিকদার দেখা করতে এসেছে ,,,,
.
কনক :::::::::: উনাকে ভিতরে পাঠিয়ে দাও ,,,,
.
আকাশ :::::::::: ওকে স্যার ,,,
.
আকাশ বাইরে যেয়ে আরমান সিকদারকে ভিতরে পাঠিয়ে দিল ,,,,,কনক আরমান সিকদারকে দেখে বলছে ,,,,
.
কনক :::::::::: আরমান সিকদার হঠাৎ করে আমাকে কেন মনে পড়ল ,,,,,
.
আরমান :::::::::: তোমাকে কিছু বলতে এসেছিলাম কনক চৌধুরি ,,,,,
.
কনক :::::::::: কি কথা ,,,,,
.
আরমান :::::::::: আজকে তুমি আমার ছেলের গায়ে হাত তুলেছ কেন ,,,,
.
কনক :::::::::: আপনার ছেলে এমনই এক কাজ করেছে যার জন্য হাত তুলতে বাধ্য হয়েছি ,,,,
.
আরমান ::::::::::: আমার ছেলে এমন কি করেছে যে গায়ে হাত তুলেছ তুমি ,,,,
.
কনক ::::::::::: আমার স্ত্রীর দিকে খারাপ নজরে দেখেছিল ,,,,
আর ওর গায়েও হাত দিয়েছিল এর জন্য মেরেছি আপনার ছেলেকে ,,,,
.
আরমান ::::::::::: নিজের জীবন যদি বাঁচাতে চাও তাহলে মেয়েটাকে ছেড়ে দাও ,,,,
তোমার সাথে ওই মেয়ের বিয়ে হওয়ার আগে আমার ছেলে ওই মেয়েকে ভালোবাসতো ,,,
আর চাইত আর এখনও চাই তাই ভালোই ভালোই মেয়েকে ছেড়ে দাও ,,,,
.
কনক ::::::::::::: সরি ,,,,
.
আরমান :::::::::::: এই কনক চৌধুরি ,,,,
.
কনক :::::::::: আওয়াজ নিচে আরমান সিকদার ,,,,
আপনি এখন ভালোই ভালোই যান এইখান থেকে নইতো আমার সিকিউরিটি এনে গাড় থাক্কা দিয়ে বের করে দিব ,,,,
.
আরমান :::::::::: ঠিক আছে যাচ্ছি ,,,,
.
আরমান সিকদার চলে গেল ,,,,
.
কনক :::::::::: এত দিন আমি ওকেই ছাড়তে চাইতাম ,,,,
না আমি আর জীবনেও মেয়েটাকে ছাড়বো না ,,,
মেয়েটাকে যদি ছেড়ে দেই তাহলে মেয়েটা সুরক্ষিত থাকবে না ,,,,
.
রাত হয়ে গেছে ,,,,কনক বাসাই চলে এসেছে ,,,,ছোঁয়া এখনও ঘুমাইনি ,,,,কনক ঘরে এসে দেখে ছোঁয়া এখনও জেগে রয়েছে ,,,,মানে রাত জেগে পড়ছে ,,,,কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::::::::: তুমি এখনও জেগে রয়েছ ঘুমাওনি কেন ,,,,
.
ছোঁয়া ::::::::: কলেজের অনেক পড়া তাই এখনও ঘুমাইনি ,,,,
.
কনক :::::::::: এত রাত জেগে পড়তে হবে না ,,,,
এখন শুবে তুমি ,,,,
আর কালকে যদি আবার কিছু করার চেষ্টা করে আমায় সরাসরি কল করবে ,,,,
.
ছোঁয়া ::::::::: ঠিক আছে ,,,,
.
কনক ::::::: এখন আর রাত জাগতে হবে না ,,,,
শুয়ে পড় এখন ,,,,
.
ছোঁয়া :::::::: না ,,,,
.
কনক অনেক রেগে গেছে ,,,,ছোঁয়া সেটা বুঝতে পেরেছে ,,,,আর রাগাতে চাই না বলে আর কোন কথা না বলে শুয়ে পড়ল ,,,,
.
কনকও লাইট অফ করে দিয়ে ছোঁয়ার পাশে শুয়ে রয়েছে ,,,,
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৭
.
কনক লাইটা অফ করে দিয়ে ছোঁয়ার পাশে শুয়ে পড়ল ,,,,কিসের জন্য যেন ওরা দুইজনে দুইজনের দিকে তাকাল ,,,,,দুইজনেই একটু লজ্জা পেল ,,,,,কনক নিজেকে ঠিক রেখে ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক :::::: তুমি এখনও ঘুমাওনি কেন ,,,,,
.
ছোঁয়া ::::: কি করব কিছুতেই তো ঘুম আসছে না ,,,,
কিন্তু আপনি এখনও ঘুমাননি কেন ,,,,,
.
কনক ::::::: এমনি ,,,,
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড় ,,,,
আর কোন কথা নয় ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: আমি না হয় ঘুমিয়ে পড়ব ,,,
আপনি আগে ঘুমান তো তারপর না হয় আমি ঘুমিয়ে পড়ব ,,,,
আপনি না ঘুমালে আমি কিন্তু ঘুমাবো না এই আমি বলে দিলাম হুম ,,,,
.
কনক ::::: ঠিক আছে ,,,,,
.
কনক ওইপাশে ঘুরে ঘুমিয়ে পড়ল ,,,,ছোঁয়া কনককে কিছুখন দেখার পর ওইপাশে ঘুরে ঘুমিয়ে পড়ল ,,,,,,আজানের শব্দে ছোঁয়ার ঘুম ভাঙ্গল ,,,,চোখ ডলতে ডলতে ছোঁয়া শুয়া অবস্থা থেকে বসে পড়ল ,,,,
.
ছোঁয়া পাশে তাকিয়ে দেখে কনক এখনও উঠেনি ,,,,ছোঁয়ার মেজাজটা এখন গরম হয়ে গেল ,,,,,কনকের কাছে যেয়ে কনককে ডাক দিচ্ছে ,,,,,,
.
ছোঁয়া ::::: ওই আপনি উঠছেন না কেন ,,,,
কালকে না আপনাকে বলেছি প্রতিদিন নামাজ পড়তে আপনি এখনও উঠছেন না ঘুম থেকে ,,,,
আমার আর ভাল লাগে না ,,,,
আমার হইছে যত জ্বালা ,,,,,
.
কনক তো উঠলো না উল্টে হাতটা ধরে টান দিল ,,,,ছোঁয়া একদম কনকের উপরে পড়ে গেল ,,,ছোঁয়া আরও রাগতে রাগতে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: বুঝতে পেরেছি উনাকে কিভাবে ঘুম থেকে জাগাতে হবে ,,,,
.
এই কথা বলার পর পরই কনকের ঠোঁটের সাথে ছোঁয়া ওর ঠোঁটটা মিলিয়ে দিল ,,,,কনক ওর ঠোঁটে কারোর স্পর্শ পেল একদম সাথে সাথে চোঁখটা খুলে ফেলল ,,,,কনক চোখ খুলে ভালো করে শ্বাস নিতে পারছে না ,,,,
.
ছোঁয়া এইবার কনককে ছেড়ে দিল ,,,,কনক শ্বাস নিচ্ছে আর বলছে ,,,,
.
কনক ::::: এইটা তুমি কি করলে ,,,,,
তুমি ভেবেছ কি আমি তোমাকে ছেড়ে দিব ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::: কি বলছেন ,,,,
না না ,,,,
.
ছোঁয়া বিছানা থেকে উঠে সারা ঘর দৌড়াচ্ছে ,,,,আর কনক ওর পিছন পিছন ,,,একটা সময় কনক ছোঁয়ার হাতটা ধরে ফেলল ,,,,কনক ছোঁয়াকে ওর কাছে টেনে নিল ,,,,কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::::: রাগি দেখে ভেবেছ কি আমি রোমান্টিক না আমার মাঝে কোন রোমান্টিকতা নেই ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: না মানে ,,,,
.
কনক যেই ছোঁয়ার আরও কাছে যাচ্ছে ,,,,,ঠিক ওই সময় আমেনা বাইরে দাঁড়িয়ে দরজা ধাকাচ্ছে আর বলছে ,,,,
.
আমেনা :::::: বউ মা দরজাটা খোল ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: জ্বি আম্মু খুলছি ,,,,
.
ছোঁয়া নিজেকে ছুটিয়ে দরজাটা খুলে দিল ,,,,আমেনা ছোঁয়াকে বলছে ,,,,,
.
আমেনা :::::: বউ মা তুমি নিচে আস তো ,,,,,
আর কনক তুইও নিচে চলে আই ,,,,
তোদের আব্বু তোদের ডাকছে ,,,,
.
দুইজনেই :::::: জ্বি আসছি আমরা ,,,
.
দুইজনেই নিচে নেমে গেল ,,,,কায়সার সাহেব বসে রয়েছে ,,,,,কায়সার সাহেব ওদের দুইজনকে দেখে বলছে ,,,,
.
কায়সার :::::: তোমরা এসেছ ,,,,
.
দুইজনেই :::::: হুম ,,,,
.
কনক :::::: আমাদেরকে এইভাবে নিচে ডাকলে কেন আব্বু ,,,,
.
কায়সার :::::: দুইজনে হানিমুনের ব্যাপারে কি ভেবেছ ,,,
.
কনক :::::: হানিমুন ,,,,
না মানে এখনও কিছুই ভাবে নি এইটা নিয়ে ,,,,,
.
কায়সার :::::: মাঝে মাঝে তোকে দেখে মনে হয় তুই আমার ছেলেই না ,,,,
.
কনক :::::: কেন আব্বু ,,,,
.
কায়সার :::::: এত আনরোমান্টিক কেন রে তুই ,,,,,
আমার যখন তোর মায়ের সাথে বিয়ে হয়েছিল বিয়ের এক সপ্তাহ পরে হানিমুনে গিয়েছিলাম ,,,,
আর তুই এখনও হানিমুনের জন্য কিছুই ভাবিসনি ,,,,
এর জন্য সব কিছু আমাকেই করতে হল ,,,,
.
কনক শুধু মাথা চুলকাচ্ছে ,,,,,আড়চোখে ছোঁয়াকে দেখছে ,,,,ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে ছোঁয়া হাসছে ,,,,কনক মাথা চুলকাচ্ছে আর রাগে একদম ফায়ার হয়ে যাচ্ছে আর যখন তখন ছোঁয়ার গায়ে লেগে যেতে পারে ,,,,কায়সার সাহেব আবার বলছে ,,,,
.
কায়সার :::::: আমি জানতাম তুই কিছুই করবি না তাই আমি আগে থেকেই সব কিছুই রেডি করে রেখেছিলাম ,,,,
এখন উপরে যেয়ে সবকিছু প্যাকিং করে নাও ,,,
আজকে তোমাদের ফ্লাইট ,,,,,
.
কনক :::::: তা তো বুঝলাম আমরা যাব টা কোথায় ,,,,
.
কায়সার :::::: লন্ডনে ,,,,,
এখনও এইখানে রয়েছ তোমরা যাও তাড়াতাড়ি ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::: হুম যাচ্ছি ,,,,
.
কনক আর ছোঁয়া উপরে চলে গেল ,,,,ওরা দুইজনে সব কিছু প্যাকিং করছে ,,,,পিছন থেকে কনক এসে ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে ধরল. ,,,,,আর বলছে ,,,,
.
কনক ::::: নিচে তো খুব হাসি পাচ্ছিল তাই না ,,,
প্রচুর রাগ উঠছিল আমার ,,,,
.
এই কথা বলার পর ছোঁয়ার হাতটা ছেড়ে দিল ,,,বেচারি অনেক ব্যথা পেয়েছে ,,,,,হাতে বারবার ফুঁ দিচ্ছে ,,,কনক ছোঁয়ার এই কান্ড দেখে বলছে ,,,,,
.
কনক :::::: খুব ব্যথা লেগেছে তাই না ,,,,
ব্যথা লেগেছে তো আমি কি করবো ,,,
আই ডন্ট কেয়ার ,,,,
.
কনক এই কথা বলে ওয়াশরুমে চলে গেল ,,,,ছোঁয়া হাত ফুঁ দিচ্ছে আর বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::::: নিজেই ব্যথা দিয়ে আবার বলছে আই ডন্ট কেয়ার ,,,,
রাক্ষস একটা ,,,,
ও কি ব্যথা ,,,,
আপনি একবার বাইরে আসুন তারপর দেখাচ্ছি মজা ,,,,
.
কনক ওয়াশরুম থেকে বের হল ,,,,,ছোঁয়া কনকের শার্টের কলার ধরে বলছে ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::: এই যে রাক্ষস আপনি কেন আমাকে বারবার ব্যথা দেন ভালো লাগে না ,,,
আর কোনদিন যদি আমার হাত শক্ত করে ধরেন তাহলে আমার একদিন না হয় আপনার একদিন ,,,,
.
ছোঁয়া কথাগুলো বলার পর হাঁপাচ্ছে ,,,কনক বলছে ,,,,
.
কনক :::::: হয়েছে এইবার ,,,
নিচে যাই এইবার আমরা ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: না নিচে যেতে দিব না ,,,,
যতখন না পর্যন্ত আমাকে সরি বলবেন ,,,
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৮
.
ছোঁয়া :::::: না আমি আপনাকে নিচে যেতে দিব না ,,,,
যতখন না পর্যন্ত আপনি আমাকে সরি বলবেন ,,,,
.
কনক :::::: তোমাকে কেন সরি বলতে যাবো ,,,,
কি করেছি টা কি আমি ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: আমার হাতে ব্যাথা দিয়েছেন যে ,,,,
হাত একদম ফুলে গিয়েছে এইযে দেখুন ,,,
.
কনক :::::: আহারে ,,,,
অনেক ব্যাথা করছে তাই না ,,,,
সরি ,,,,
.
এই কথা বলে কনক ছোঁয়ার হাতটা আবার ধরল ,,,
যেখানে ফুলে গেছে সেখানে ঠোঁটটা এগিয়ে দিল কনক ,,,,
ঠোঁটটা ছোঁয়ার হাতের সাথে লাগিয়ে দিল ,,,,
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,,,
.
ছোঁয়া :::::: উনাকে তো কোনদিন এইরকম নরম হতে তো দেখেনি ,,,,
এতটা রোমান্টিক হতে দেখেনি ,,,,
.
ছোঁয়া অনেক লজ্জা পেল ,,,,,
নিজের হাতটাকে সরিয়ে এক দৌড়ে নিচে চলে আসল ,,,,
ছোঁয়া এখনও অনেক লজ্জা পাচ্ছে ,,,,,
কায়সার ছোঁয়াকে দেখে বলছে ,,,,
.
কায়সার :::::: বউ মা বসে পড় ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: জ্বি বাবা ,,,,
.
ছোঁয়া যেয়ে বসে পড়ল ,,,,
কায়সার কনককে দেখতে না পেয়ে ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কায়সার :::::: আমার রাগি ছেলেটা কোথায় ,,,,
সে কেন এখনও নিচে নামছে না কেন ,,,,
সে কি আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল কেন ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: ওই তো উনি আসছেন ,,,,
.
কায়সার :::::: আসেন অ্যাংগরি বার্ডস বসুন খেয়ে নিন কিছু ,,,,
.
কনক নিজে একটু লজ্জা পেল ,,,,
সবাই মিলে খাওয়া শুরু করল ,,,,
মাঝখানে কায়সার বলা শুরু করল ,,,,
.
কায়সার :::::: কি আনরোমান্টিক ছেলেরে বাবা ,,,,
কোন রোমান্টিকতাই নেই ,,,,
.
কনক :::::: আবার কি হল!
.
কায়সার :::::: বিয়ের পর একটু আদর করে নিজের বউকে একটু খাইয়ে দিবে তা নয় তিনি মুখ ঘুমড়ো করে বসে আছে ,,,,
.
কনক :::::: কি আমি ওকে খাইয়ে দিব ,,,,
ওর কি নিজের হাত নেই যে আমাকে ওকে খাইয়ে দিব ,,,
.
কায়সার ::::::: কিছুই বুঝে না রে তুই একবার বউমাকে খাইয়ে দিবি আর বউমা তোকে খাইয়ে দিবে ,,,,
এই বয়সে এখন আমাকে এইগুলো শিখিয়ে দিতে হচ্ছে ,,,,
আরে বুঝিস না এইভাবেই তো স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বাড়ে ,,,,
.
এই কথা শুনার পর দুইজন দুইজনের দিকে তাকিয়ে আছে ,,,,
কনক চোখটা ফিরিয়ে নিয়ে বলছে ,,,,
.
কনক :::::: যত্তসব ,,,,
.
ছোঁয়া ::::::: আমি এইসবে বিশ্বাস করি না ,,,,
.
কনক ::::::: আমি তো আরও ,,,,
.
কনক উঠে গেল খাবার টেবিল থেকে সোজা চলে আসল নিজের ঘরে ,,,,
কনক মনে মনে বলছে ,,,,
.
কনক :::::: আমি ছোঁয়াকে এর জন্যই দূরে ঠেলে দিচ্ছি না কারন মেয়েটার বাইরে অনেক বিপদ দাঁড়িয়ে রয়েছে ,,,
ওকে একবার ছেড়ে দিলে তো আরমান সিকদারের ছেলে ওর জীবনটা শেষ করে দিবে ,,,,
শুধুমাত্র এর জন্যই আমি ওর কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছি ,,,,
কিন্তু ভালোবাসার চিন্তাভাবনা কোনদিনই না ,,,,
.
ছোঁয়াও খাবার টেবিল থেকে উঠে চলে আসল ,,,,
সিঁড়ি দিয়ে উঠছে আর মনে মনে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: তারমানে কি উনি আমাদের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি করতে চাচ্ছেন না ,,,
তাহলে যে এই দুইদিন যে উনার চোখে ভালোবাসা দেখেছি সেটা তাহলে কি মিথ্যে ,,,,
উনার মনে আমার জন্য কোন ভালোবাসা নেই ,,,,,
.
ছোঁয়াও ঘরে চলে আসল ,,,,
দুইজনের মাঝে চোখাচোখি হল ,,,,
কনক একটু পরে চোখটা সরিয়ে নিল ,,,,
কনক মনে মনে বলছে ,,,
.
কনক ::::::: আর একটু যদি ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে থাকি তাহলে ওর উপর ভালোবাসা জন্মে যাবে ,,,,
না আমি আর একটুও তাকাব না ,,,,
.
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: সরেন আমি যাব ,,,,
.
কনক :::::; আমি সরব কেন আরও কত জায়গা আছে ওইখান দিয়ে যাও ,,,,
.
এই কথা বলার সাথে সাথেই হাত ধরে টান দিয়ে ওইপাশে দিয়ে দিল ,,,,
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::::::: কি হল উনি এত রেগে গেলেন কেন ,,,,
কিছুখন আগে তো উনি ঠিক ছিলেন এখন উনার আবার কি হল ,,,,
বুঝিনা বাপু রাক্ষসটার মন ,,,,
.
রাত হয়ে গেছে ,,,,
কনক আর ছোঁয়া ব্যাগ নিয়ে নিচে নামল ,,,,
সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুইজনে গাড়িতে যেয়ে বসল ,,,,
ছোঁয়া কনককের দিকে তাকাল ,,,,
সেটা কনক কিছুখন পর খেয়াল কর ,,,
আর ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক :::::: কি হয়েছে টা কি ,,,,
এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: কোথায় আমি আপনার দিকে তাকিয়ে রয়েছি ,,,,
আর আমি তাকিয়ে থাকলে আপনার সমস্যাটা কি ,,,,,
আপনি আমার স্বামী আমি আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি ,,,,
.
কনক :::::: না পারেন না ,,,,
.
ছোঁয়া :::::: আমি হাজার বার আপনার দিকে তাকিয়ে থাকব ,,,
.
কনক :::::: না তুমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে না ,,,,
.
ওরা দুইজনে এইভাবে করতে করতে এয়ারপোর্টে পৌছে গেল ,,,
গাড়ি থেকে নেমে পড়ল ওরা দুইজনে ,,,,,
তারপর এয়ারপোর্টে ঢোকার সময় ওদের দুইজনকে চেক করা হল ,,,,
এখন ওরা দুইজন প্লেনে আছে ,,,,
.
অনন্যা ও ওর ঘরে বসে পড়ছে ,,,,,
একটু পরে অনন্যার মোবাইল বেজে উঠল ,,,,
জয় কল করেছে ,,,,
অনন্যার মুখে একটু হাসি ফুটল ,,,,
অনন্যা কলটা রিসিভ করল ,,,,
তারপর বলতে লাগল ,,,
.
অনন্যা ::::: হ্যালো ,,,
.
জয় :::::: হ্যালো অনন্যা ,,,,
তোমার ভাইয়া কোথায় ,,,,,
ফোনটা তো অফ দেখাচ্ছে ,,,
.
অনন্যা :::::: এখন ভাইয়া প্লেনে ,,,,,
.
জয় :::::: কোথায় যাচ্ছে আবার ,, ,,,,
.
অনন্যা :::::: হানিমুন ,,,
কেন আপনাকে কিছুই বলেনি ভাইয়া ,,,,
.
জয় ;::::: ও তো আমায় কিছুই বলেনি ,,,
আচ্ছা তোমার কালকে তো স্কুল অফ ,,,
.
অনন্যা :::;;:: হুম ,,,,,
কিন্তু কালকে প্রাইভেট আছে ইংলিশ প্রাইভেট ,,,
.
জয় ::::::: ও আচ্ছা বাই ,,,,
গুড নাইট ,,,
.
অনন্যা :::::: বাই গুড নাইট ,,,
.
ছোঁয়া আর কনক লন্ডনে পৌছে গেল ,,,,
কায়সার সাহেব যে হোটেল বুক করে রেখেছে সেই হোটেলে যেয়ে ওরা উঠল ,,,,
দুইজনে এখন অনেক ক্লান্ত ,,,
তাই দুইজনে ফ্রেস হয়ে নিয়ে একটু ঘুমিয়ে পড়ল ,,,,
কখন যে কনকের হাত ছোঁয়ার পেটে গেল কনক নিজেও জানে না ,,,,
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:০৯
.
কনকের হাত কখন যে ছোঁয়ার পেটে চলে গেছে কনক নিজেও জানে না ,,,,
কিসের জন্য যেন ছোঁয়ার চোখটা একটু আগে খুলে গেল ,,,,,
ছোঁয়া ঘুম থেকে উঠেই দেখে কনকের হাত ওর পেটের উপর ,,,,
ছোঁয়া তো একদম রাগেই ফায়ার ,,,,,
ছোঁয়া কনককে ডাক দিয়ে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এই আপনি আমার পেটে হাত রেখেছেন কেন ,,,,,
.
কনক ::: ভুল করে লেগে গিয়েছে ,,,,
আর লাগলে সমস্যাটা কি ,,,,
এইটার জন্য কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে দিল ,,,,
একটা সামান্য বিষয় ,,,,
.
ছোঁয়া ::: কি এইটা সামান্য বিষয় ,,,,
আপনিও তো আমার পেটে হাত রেখে আমারও কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে দিয়েছেন ,,,
.
কনক ::: এ্যা বললেই হল ,,,,
.
ছোঁয়া বালিশ হাতে নিয়ে কনককে ইচ্ছা মত বারি মারছে ,,,,
কনক নিজেকে আটকানোর চেষ্টা করছে ,,,,
একসময় ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিল ,,,,
একদম শুইয়ে দিল কনক ছোঁয়ার উপরে পড়ল ,,,,
কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,,
.
কনক ::: এইবার নিজেকে কিভাবে বাঁচাবে ,,,,
আমার সাথে লড়াই করে নিজেকে ছুটাতে পারবে না ,,,,
.
ছোঁয়া ::: না না ,,,,
.
কনক ছোঁয়াকে ইচ্ছামত নিজের করে নিল ,,,,
.
অনন্যা সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ইংলিশ প্রাইভেটে যাচ্ছে ,,,,
যেই বাসার ভিতর ঢুকতে যাবে ঠিক তখনই কে যেন অনন্যার হাত ধরে টান দিয়ে ভিতরে নিয়ে গেল ,,,,
অনন্যা অবাক হয়ে বলছে ,,,,
.
অনন্যা ::: আপনি ,,,
আপনি আমাকে এইখানে নিয়ে আসলেন কেন ,,,,
.
জয় ::: এমনি ,,,
.
অনন্যা ::: এমনি মানে ,,,
পাগল হয়ে গেছেন কি আপনি ,,,,
.
জয় ::: হুম ,,,,
ওইদিকটা চল ,,,,
.
অনন্যা ::: না পারব না ,,,
প্রাইভেট শুরু হয়ে গেছে বোধ হয় ,,,
.
জয় ::: আজকে কেউ পড়বে না ,,,,
ওই যে দেখ সবাই যে যার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরছে ,,,,
আর স্যার তার ওয়াইফ কে নিয়ে ,,,,
.
অনন্যা ::: এইসব কি আপনি করেছেন ,,,,
.
জয় ::: আমি কেন করতে যাব ,,,
পাগলি নাকি ,,,,
.
অনন্যা ::: ওরা না হয় ওদের বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরছে আমি কাকে নিয়ে ঘুরব ,,,,
আমার তো বয়ফ্রেন্ড নেই ,,,
.
জয় ::: কি ,,,
বয়ফ্রেন্ড নেই ,,,,
তাহলে আমি কে ,,,,
রাগ করেছ সোনা তুমি আমার উপর এইবার করেছি টা কি আমি ,,,,
.
অনন্যা ::: সেইদিন তো বললেন আমাকে বিয়ে করার কথা তারপর ওইভাবে কেন বললেন আপনি মজা করে বলেছেন আপনি ,,,,
আপনি তো বলতেই পারতেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন আপনি সত্যিই আমাকে বিয়ে করতে চান ,,,
আর এখন বলে কোন লাভ নেই আব্বু আমার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করে রেখেছে ,,,,,
আমার এসএসসি পরীক্ষার পর আমার বিয়ে দিয়ে দিবে ,,,,
.
জয় ::: এ্যা বললেই হল তোমার বিয়ে শুধু আমার সাথেই হবে ,,,,
আমার উপর আর রেগে থেক না ওইদিকে তো চল ,,,
এইখানে অক্সিজেনের বড্ড অভাব ,,,
.
অনন্যা ::: হুম চল ,,,,
.
ছোঁয়া কনককে ধাক্কা দিল ,,,,
আর বলতে লাগল ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এমনিতে মনে হয় একটা রাগি ,,,,
এর মনে যে এত শয়তানি সেইটা তো একদমই মনে হয় না ,,,
.
কনক ::: এই যে হ্যালো যে কে বলেছে যে রাগি থাকে সে রোমান্টিক হতে পারে না ,,,,
আমি তো রাগি থাকি কাজের জন্য তাছাড়া তো আর কিছুই না ,,,,
আর কে বলেছে যে রাগিরা রোমান্টিক থাকে না ,,,
.
ছোঁয়া ::: কেউ ই বলে নি ,,,,
আমিই বললাম ,,,,
.
কনক ::: ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে আজকেই বের হব ,,,
কিন্তু তা আর হল না মনে হচ্ছে তোমার সাথেই ঝগড়াই করতে হবে এই এক সপ্তাহ ,,,
আর বের হতেই পারব না ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এ্যা বললেই হল ,,,
অবশ্যই বের হব ,,,,
আজকে না হয় বের হতে না পারলাম কালকে বেরই হব ,,,
আপনিই তো আমার সাথে পাগলামো করা শুরু করলেন ,,,
আর এইটাই করতে করতেই রাত হয়ে গেছে ,,,,
.
দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে একজন এসে বলছে ,,,,
.
লোকটা ::: স্যার আপনাদের জন্য রাতের খাবার ,,,(লোকটি বাঙ্গালি ছিল)
.
কনক দরজাটা খুলে দিল ,,,,
সে ভিতরে খাবারটা রেখে দিল ,,,
আবার বলতে লাগল ,,,
.
লোকটা ::: এর আগে তো আসতেন কাজের জন্য ,,,
এইবার আসলেন ওয়াইফ নিয়ে ,,,
.
এই কথা বলে লোকটা চলে গেল ,,,,
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আর আগেও আপনি এইখানে আসতেন ,,,
.
কনক ::: হুম ,,,,
কাজের জন্য ,,,,
আর বেশি কথা না বলে ডিনার করে নাও ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আগে আপনি ,,,
আপনি না খাওয়া পর্যন্ত আমি খেতে পারি না ,,,,
.
কনক ::: ঠিক আছে ,,,,
.
ওরা দুইজনেই খেয়ে দেয়ে আবার শুয়ে পড়ল ,,,,
কালকে সকালে ঘুম থেকে উঠল ,,,,
সকালের নাস্তা করার পর পরই ওরা দুইজনেই বের হয়ে গেল ,,,,
এই ভালো ভাবে দুইজনে ঘুরছে আর কিছুখন পর আবার ঝগড়া ,,,,
.
ছবিও তুলছে একটু পর পর ,,,,
একটু পর ছোঁয়া বাইনা ধরল আইসক্রিম খাবে ,,,,
কনক আর কি করবে কনক আইসক্রিম আনতে চলে গেল ,,,,
.
কনক আইসক্রিম আনতে গেছে ,,,,
আইসক্রিম আনতে গিয়ে কনক একটু অবাক হল ,,,,
কনক সিরাজকে দেখল ,,,
সিরাজও কনককে দেখতে পেল ,,,,
.
সিরাজও কনকের কাছে আসতে লাগল ,,,
কনকের কাছে এসে বলছে ,,,,
.
সিরাজ ::: তুই কি ভেবেছিস তুই ছোঁয়াকে ছেড়ে না দিলে আমি ছোঁয়াকে আমার কাছে পাব না ,,,,
আমি তো ছোঁয়াকে আমার নিজের করেই ছাড়ব ,,,,
.
কনক ::: আমি থাকতে তো কোন দিনই না ,,,
আমি তো ছোঁয়াকে কোনদিন তোর মত শয়তান ছেলের হতে দিতে তো পারি না ,,,,
আমি তো ছোঁয়াকে বাঁচাবই বার বার তোর হাত থেকে ,,,,
.
সিরাজ ::: এইবার তুই নিজেই ছোঁয়াকে ছেড়ে দিবে ,,,
তখন ও আপনাআপনি আমারই হবে ,,,,
.
কনক ::: সিরাজ ,,,
.
কনক আর কথা না বাড়িয়ে ওইখান থেকে চলে আসল ,,,
সোজা ছোঁয়ার কাছে আসল ,,,
ছোঁয়া তো অনেক রেগে রয়েছে ,,,,
কনক ছোঁয়ার সামনে আইসক্রিমটা ধরল ,,,
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এত দেরি হল কেন ,,,,
সেই কখন থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি ,,,,
.
কনক ::: সরি আর কোনদিন এইরকম হবে না ,,,,
এইবার তো রাগ কমাও ,,,
তুমি তো দেখি আমার থেকেও বড় রাগি ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এতদিনে আপনি বুঝলেন ,,,,
.
কনক ::: তুমিই তো আইসক্রিম খাওয়ার জন্য বায়না করছিলে এখন নিজেই খাচ্ছ না ,,,,
.
ছোঁয়া ::: ও সরি ,,,,
ওইদিকটাই চলুন না ,,,
.
কনক ::: চল ,,,,
.
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১০
.
ছোঁয়া কনকের হাত ধরে হাটছে ,,,,
একেক সময় কনকের কাঁধে মাথা রাখছে ,,,,
সিরাজ এইসব লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে আর অনেক রাগছে ,,,,
কনক সিরাজকে দেখে ফেলেছে ,,,,
কনক ছোঁয়াকে আরও কাছে টেনে নিল ,,,,
কনক ছোঁয়াকে নিয়ে একটা জায়গায় বসল ,,,,
ছোঁয়াকে রাগানোর জন্য কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::: সারাদিন শুধু খাই খাই করে ,,,,
আর শুধু মুটি হচ্ছে ,,,,
সেটার উপর কোন খেয়াল নেই উনি এখন আইসক্রিম খাচ্ছেন ,,,,
.
ছোঁয়া তো সেই পরিমানের রেগে গেছে ,,,,
রেগে গিয়ে ছোঁয়া কনকের শার্টে আইসক্রিমটা ভরিয়ে দিল ,,,,
আর কনকের হাতে ধরিয়ে দিল ,,,,
ছোঁয়া রাগতে রাগতে কনককে বলছে ,,,,,
.
ছোঁয়া ::: লাগবে না ,,,,
আমি আপনার সাথে থাকব না ,,,,
আমি আপনার সাথে ঘুরব না এই আমি গেলাম ফিরে ,,,,,
.
ছোঁয়া রেগে গিয়ে উঠে সোজা হোটেলের দিকে যাচ্ছে ,,,,
কনক আইসক্রিমটা হাতে নিয়ে ওর পিছনে পিছনে যাচ্ছে ,,,,
ছোঁয়া সোজা হোটেলের ভিতর ঢুকল ,,,,
কনক ঢুকল পিছন পিছন ,,,,
কনক ছোঁয়াকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল ,,,
ছোঁয়া নিজেকে অনেক কষ্টে ছুটিয়ে কনককে ধাক্কা দিল ,,,
.
ছোঁয়া এখনও কনকের উপর অনেক রেগে রয়েছে ,,,
রাগি গলায় কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: খবরদার আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরবেন না ,,,
.
কনক ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে বলছে ,,,,
.
কনক ::: এতটাই রেগে গেছ তুমি আমার উপর ,,,,
এইবার তোমার রাগ ভাঙ্গাবো আমি ,,,,
.
ছোঁয়া ::: পারবেন না আপনি আমার রাগ ভাঙ্গাতে ,,,,
.
কনক ::: ও কি তাই ,,,,
.
ছোঁয়া ::: হুম ,,,,
.
কনক ::: ঠিক আছে ,,,
আমার না খুব ক্ষুধা লেগেছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: তো আমি কি করব ,,,
আপনার যা ইচ্ছে আপনি তাই খান ,,,,
.
কনক ::: আমার তো তোমাকে খেতে ইচ্ছে করছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: কি ,,,
.
কনক ::: যা শুনেছ তাই বলেছি ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি আমাকে খাবেন ,,,
খেতেও তো পারেন আপনি তো আবার একটা রাক্ষস ,,,,
.
কনক ::: হুম আমি তো রাক্ষস ,,,,
এইবার আমি তো তোমাকে খাব ,,,,
.
এই বলে ছোঁয়ার পিছনে ছুটছেন কনক ,,,,
ছোঁয়া শুধু নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ,,,,
একসময় কনক ছোঁয়াকে ধরেই ফেলল ,,,,
ছোঁয়াকে ধরে খাটে শুইয়ে দিল ,,,
তারপর ছোঁয়ার উপরে ,,,,
.
ছোঁয়ার গাড়ে মুখটা নিয়ে এসে একটা কামড় দিল ,,,,
তারপর কনকের ঠোঁট ছোঁয়ার ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে দিল ,,,
অনেকখন পর কনক ছোঁয়াকে ছাড়লেন ,,,,
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আমারও খুব ক্ষুধা লেগেছে ,,,,,
এইবার আমি আপনাকে খাব ,,,,
.
কনক ::: তাই নাকি ,,,,
.
ছোঁয়া ::: হুম ,,,,
.
এই বলে ছোঁয়াও কনকের গাড়ে আস্তে করে একটা কামড় দিল ,,,,
কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::: এইবার তুমি আমাকে দাও ,,,,
.
ছোঁয়া ::: কি দিব ,,,,
.
কনক ::: ওই তো আমি যেইটা তোমাকে দিলাম ,,,,
.
ছোঁয়া লজ্জা পেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: যা ,,,
পারব না ,,,,
.
কনক ::: তাহলে আমি উঠছি না তোমার উপর থেকে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: না না এই তো আমি দিচ্ছি ,,,,
.
ছোঁয়াও কনককে দিয়ে দিল একটা কিস ,,,,
এইভাবে করতে করতে পুরো সাতদিন কেটে গেল ,,,,
এখন ওরা এয়ারপোর্টে এ যাচ্ছে চলে যাওয়ার জন্য ,,,,
ছোঁয়া আর কনক যে হোটেলে ছিল সিরাজও ঠিক ওই হোটেলেই ছিল এই কয়েকদিন কিন্তু সেটা কনক এখনও বুঝতে পারেনি ,,,,,
কনক আগেই ক্যাব এর ওইখানেই চলে গিয়েছিল ,,,
কিন্তু ছোঁয়া একটু পরে যাচ্ছে ,,,,
.
ছোঁয়া যেই ক্যাবের ওইখানে যাবে ঠিক তখন সিরাজ ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গেল ,,,
সিরাজ ছোঁয়ার মুখ চেপে ধরে বলছে ,,,,
.
সিরাজ ::: তুই শুধু আমার আর অন্য কারোর নয় ,,,
তুই শুধু আমার হবি ,,,
তোর পিছু আমি এত সহজে ছাড়ব না ,,,
.
ছোঁয়া সিরাজের হাতটা সরিয়ে সিরাজকে একটা থাপ্পর দিল ,,,,
সিরাজ ছোঁয়ার সাথে আরও অনেক খারাপ কিছু করতে চাইছিল ,,,
ছোঁয়া সিরাজকে একটা ধাক্কা দিয়ে আসল ,,,
ছোঁয়া ক্যাবের কাছে আসল ,,,
ছোঁয়ার দেরি হয়েছে আসতে তাই কনক অনেক রেগে রয়েছে ,,,,
.
কিন্তু ছোঁয়ার উপর তেমন কোন রাগ দেখাল না ,,,,,
কিন্তু মনে মনে প্রচুর রেগে রয়েছে ,,,,
কিছুখন পর ওরা এয়ারপোর্টে চলে আসল ,,,
এখন ওরা প্লেনে রয়েছে ,,,,,
আর ওরা বাংলাদেশে চলে এসেছে ,,,,,
.
আর ওইদিকে ওরা আসছে বলে এখনও রাত জেগে রয়েছে ,,,,
ওরা কিছুখন পর বাড়িতে চলে আসল ,,,,
ওরা ভিতরে চলে আসল ,,,,
আমেনা ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
আমেনা ::: বউমা ,,,
ওইখানেও যেয়ে আমার ছেলে তোমার উপর রাগ দেখাইনি তো ,,,,
.
ছোঁয়া ::: না আম্মু ,,,,
.
কায়সার ::: তোমরা এখন উপরে যাও ,,,,
উপরে যেয়ে রেস্ট নাও ,,,,
.
দুইজনেই ::: হুম ,,,,
.
কনক আর ছোঁয়া দুইজনেই উপরে গেল ,,,,,
ব্যাগ থেকে সব কাপড় বের করে রেখে দিল ,,,,
ছোঁয়া লাইটটা অফ করে দিল ,,,,
দুইজনেই শুয়ে পড়ল ,,,,
ছোঁয়া একটু পরে খেয়াল করল কনক ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে ,,,
ছোঁয়া কনককে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: এইভাবে কি দেখছেন ,,,
.
কনক ::: তোমাকে দেখছি ,,,
তোমায় শুধু বারবার দেখতেই ইচ্ছে করছে ,,,,
মন চাচ্ছে তোমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকি ,,,
.
ছোঁয়া ::: কি বলছেন ,,,,
আমার খুব লজ্জা লাগে ,,,,
.
ছোঁয়া কনকের গায়ে হাত দিল ,,,,
ছোঁয়া কনকের গায়ে হাত দিয়ে দেখে কনকের গায়ে প্রচুর জ্বর ,,,
ছোঁয়া জোরে করে বলে উঠল ,,,,
.
ছোঁয়া ::: একি আপনার গায়ে তো জ্বর ,,,
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১১
.
ছোঁয়া ::: একি আপনার গায়ে তো অনেক জ্বর ।
জলপট্টি দিতে হবে এখনি ।
জ্বরের জন্য গায়ে হাত দেওয়াই যাচ্ছে না ।
.
ছোঁয়া এক দৌড়ে নিচে থেকে একটা বাটিতে করে পানি নিয়ে আসল ।
কিন্তু কিছুতেই একটা কাপড় খুঁজে পাচ্ছে না ।
তারপর কোন উপায় না পেয়ে শাড়ির আঁচল টা ছিড়ল ।
তারপর তাড়াতাড়ি করে উপরে চলে গেল ।
আর কনকের পাশে যেয়ে বসল ।
আর সারারাত কনকের মাথায় জলপট্টি দিতে লাগল ।
.
সকাল হয়ে গেছে ।
সারারাত জলপট্টি দেওয়ার পর কনকের জ্বর একটু কমেছে ।
কনক ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে ।
আমেনা একটু পরে দরজা ধাকাচ্ছে ।
আর বলছে ,,
.
আমেনা ::: কি হল বউমা এখনও নিচে আসছ না কেন?
কোন কিছু কি হয়েছে বউমা ।
দরজাটা খোল ।
.
ছোঁয়া দরজাটা খুলে দিল ।
আমেনা দেখে ছোঁয়ার চোখে পানি ।
ছোঁয়ার চোখে পানি দেখে আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
আমেনা ::: কি হয়েছে বউমা ।
তুমি কান্না করছ কেন?
.
ছোঁয়া আমেনাকে সব খুলে বলল ।
তারপর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: তখন আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি কি করব ।
আপনাদেরকে যে ডাকব সেই শক্তিও পাচ্ছিলাম না ।
তবুও অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে সারারাত জলপট্টি দিতে লাগলাম ।
.
আমেনা ::: শান্ত হও বউমা ।
রিলেক্স ।
এখন কি কিছুটা জ্বর কমেছে কিনা ।
.
ছোঁয়া ::: হুম কমেছে ।
.
আমেনা নিচে যেয়ে খাবার নিয়ে আসল ।
আর ছোঁয়াকে বলে দিল খাবারটা খাইয়ে দিয়ে ওষুধটা খাইয়ে দিতে ।
কনক কিছুতেই এই জ্বরওলা মুখ নিয়ে কোন কিছুই খেতে চাচ্ছে না ।
কিন্তু অনেক কষ্টে ছোঁয়া কনককে বুঝিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে ।
একটু খানি খাওয়ার পর কিছুতেই কনক আর খেতে পারছে না কনকের বারবার বমি আসছে ।
কনকের কষ্ট হচ্ছে দেখে ছোঁয়াও আর কোন জোর করল না ।
ছোঁয়া কনককে ওষুধটা খাইয়ে দিল ।
.
অনন্যা কিছুখন পর এই ঘরে আসল ।
তারপর কনকের জ্বরটা মেপে দিয়ে গেল ।
দেখে স্বাভাবিকই আছে ।
কনক এখন কিছুটা সুস্থ ।
.
কনক এখন কিছুটা সুস্থ দেখে কনক বিছানা উঠতে যাচ্ছিল ঠিক তখন ছোঁয়া কনককে আটকে দিয়ে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি এখন যাচ্ছেন টা কোথায়?
.
কনক ::: কেন অফিসে যাচ্ছি ।
.
ছোঁয়া ::: না আপনি কোথাও যাবেন না ।
.
কনক ::: কেন যাব না ।
এখন তো আমি কিছুটা সুস্থ ।
.
ছোঁয়া ::: কিন্তু আপনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেননি ।
আজকে আপনি আমার চোখে চোখে থাকবেন ।
আজকে আমি আপনাকে কোথাও যেতে দিব না ।
বুঝতে পেরেছেন ।
.
কনক ::: হুম বুঝতে পেরেছি ।
ঠিক আছে আজকে যাব না ।
কিন্তু তোমার শাড়ির আঁচল ,,,
.
ছোঁয়া ::: কালকে রাতে আপনার মাথায় জলপট্টি দেওয়ার জন্যই তো ছিড়েছি ।
.
কনক ::: কিন্তু এই শাড়িটা তো তোমার অনেক প্রিয় ।
.
ছোঁয়া ::: এই প্রিয় শাড়ির থেকে আপনি আমার কাছে অনেক কিছু ।
.
রাত হয়ে গেছে ।
ছোঁয়া কনকের পাশে বসে রয়েছে ।
একটু পরে ছোঁয়ার ফোনটা বেজে উঠল ।
সাদিকা ফোন করেছে ।
ছোঁয়া কলটা রিসিভ করল ।
কল রিসিভ করার সাথে সাথেই ওই পাশ থেকে সাদিকা বলে উঠল ,,,
.
সাদিকা ::: দোস্ত আমাদের ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা শুরু হবে ।
.
ছোঁয়া ::: কবে থেকে ।
.
সাদিকা ::: তেইশ তারিখ থেকে ।
.
ছোঁয়া ::: ও ,,,
.
ছোঁয়া একদম মন খারাপ করে বসে পড়ল ।
কনক সেটা খেয়াল করল ।
তাই কনক ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করল ,,,,
.
কনক ::: কি হয়েছে মন খারাপ করে বসে রয়েছ কেন?
.
ছোঁয়া ::: এক সপ্তাহ পরে ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা ।
আমি তো কিছুই পারি না ।
কালকে কলেজেই যেয়েই কত কাজ করতে হবে আমাকে ।
পরীক্ষার রুটিন নিতে হবে এই কয়েকদিন কি কি পড়িয়েছে তা নিতে হবে আর স্যাররা কি সিলেবাস দিয়েছে তা নিতে হবে ।
কত জ্বালা আমার ।
.
কনক ::: রিলেক্স ।
তুমি এইদিকে এসে বস ।
এখন আর রাত জাগতে হবে না তোমাকে ।
তুমি এখন ঘুমিয়ে পড় ।
আর এমনিতে কালকে সারারাত তুমি ঘুমাওনি ।
লাইটটা অফ করে দিয়ে তুমি শুয়ে পড় ।
.
ছোঁয়া ::: হুম ।
.
ছোঁয়া লাইটটা অফ করে দিয়ে কনকের পাশে যেয়ে শুয়ে পড়ল ।
সকাল সকালই ছোঁয়ার ঘুমটা ভাঙ্গল ।
তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিল ।
আর ব্যাগটা গুছিয়ে নিল তারপর কনককে ডাক দিল ।
আর বলতে লাগল ,,,
.
ছোঁয়া ::: এই যে সকাল হয়ে গেছে তো ।
আপনি কি উঠবেন না আজকে ঘুম থেকে ।
.
কনক হালকা করে চোখটা খুলল ।
তারপর ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের বুকের কাছে নিয়ে আসল ।
ছোঁয়ার নিজেকে ছুটানোর চেষ্টা করছে আর বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: ছাড়ুন আমাকে ।
কালকে তো অফিসে যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছিলেন আর আজকে কি অফিসে যাবেন না ।
আর আমাকে ছাড়ুন আমাকে এখন কলেজে যেতে হবে ।
.
কনক ::: না আজকে আমি অফিসে যাব না আর তোমাকেও কলেজে যেতে দিব না ।
.
ছোঁয়া ::: কেন ?
.
কনক ::: যতখন না পর্যন্ত তুমি আমাকে কিস দিচ্ছ আমি তোমাকে যেতে দিব না ।
আর আজকে কলেজে না গেলে তুমি পরীক্ষায় ফেল করবে ।
ভালোই ভালোই বলছি তোমাকে আমায় একটা কিস দিয়ে দাও ।
.
ছোঁয়া ::: আপনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছেন ।
.
কনক ::: তুমি দিবে না নাকি ।
তাহলে কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়ছি না ।
.
ছোঁয়া ::: ঠিক আছে আমি দিচ্ছি ।
.
ছোঁয়া বাধ্য হয়েই কনককে একটা কিস দিল ।
কনকও উঠে রেডি হয়ে নিল ।
ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে দুইজনেই বের হয়ে গেল ।
কনক ছোঁয়াকে কলেজের সামনে নামিয়ে দিল ।
ছোঁয়া যখন গাড়ি থেকে নামতে যাবে ঠিক তখন কনক ছোঁয়ার হাতটা টেনে ধরল ।
আর ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,,
.
কনক ::: আজকে সব কিছু নিতে ভুল না ।
.
ছোঁয়া ::: হুম ।
আমি যাই কলেজের টাইম শুরু হয়ে যাচ্ছে ।
.
কনক ::: হুম যাও ।
.
ছোঁয়া কলেজের ভিতর ঢুকল ।
ক্লাসে যেতে না যেতেই সব কিছু নিয়ে নিল ।
অনেক দিন পর ফ্রেন্ডসদের সাথে দেখা হয়েছে তাই একটু গল্প করছে ওরা ।
সবাই ওকে বলছে ,,,
.
---- সেইদিন তো দেখলাম তোর হাজবেন্ডকে সো হ্যান্ডসহাম ইয়ার ।
.
ছোঁয়া ::: ওই একদম নজর দিবি না আমার হাজবেন্ডের উপর তোরা ।
.
---- ঠিক আছে ।
.
কনকও ওর অফিসে চলে গেছে ।
কনক অফিসের কাজ করছে ।
একটু পরে কনকের কাছে একটা পার্সেল আসল ।
কনক পার্সেলটা নিল ।
আর কনক বলছে ,,,
.
কনক ::: আমি তো কোন কিছুই তো ,,,,
তাহলে এইটা কে পাঠাল ।
.
কনক পার্সেলটা খুলল ।
সেইটার ভিতর কিছু ছবি দেখতে পেল ।
কনক ছবিগুলো দেখল ।
কনক ছবিগুলো দেখার পর অনেক রেগে গেছে ।
ছবিগুলো নিজের পকেটের ভিতর ঢুকাল ।
প্রচুর রাগ উঠেছে কনকের ।
.
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১২
.
কনক অনেক রেগে রয়েছে ।
এমনিতে তো কনকের রাগ বেশি থাকে তার মধ্যে কনকের রাগ আজকে দ্বিগুন বেশি ।
রাগ করে কনক অফিসের বাইরে চলে আসল ।
সরাসরি গাড়িতে যেয়ে বসল ।
.
আর ওইদিকে আজকে ছোঁয়ার কলেজ আগেই ছুটি দিয়ে দিয়েছে ।
আর ছোঁয়া কলেজের বাইরে কনকের জন্য অপেক্ষা করছে ।
কনক একটু পর ওর গাড়ি নিয়ে এসে ছোঁয়ার সামনে এসে দাঁড়ালো ।
.
ছোঁয়া অপেক্ষা করছে কখন কনক গাড়ি থেকে নেমে ওকে ভালোবেসে গাড়িতে উঠাবে ।
কিন্তু কনক গাড়ি থেকেই নামছে না শুধু এক দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে ।
ছোঁয়া কনকের এই ব্যবহার দেখে অনেক কষ্ট পেল ।
আর কোন কথা না ভেবে ছোঁয়া নিজেই গাড়িতে যেয়ে বসল ।
.
ছোঁয়া কিছুতেই গাড়ির সিট বেল্ট টা লাগাতে পারছে না ।
সেই কখন থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছে ।
একটু পরে কনক ছোঁয়ার হাতটা সরিয়ে নিজেই লাগিয়ে দিল ।
কনক ছোঁয়ার হাতটা এমন ভাবে সরাল যেন কনক মানুষ খুন করবে ।
ছোঁয়া কিছুতেই বুঝতে পারছে না কনকের কি হয়েছে ।
.
সারা রাস্তাই কনক ছোঁয়ার সাথে কথা বলল না ।
এমনকি ছোঁয়াকেও দেখে মুখে একটু হাসিও দিল না ।
ছোঁয়ার এইসবের মানে কিছুই বুঝতে পারল না ।
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: আজকে কনকের এমন কি হল যে আমার সাথে একটুও কথা বলল না ।
আমার দিকে তাকিয়েও একটুও হাসল না ।
কি হয়েছেটা কি উনার ।
এত রেগে রয়েছেন কেন আমার উপর । আমি করেছি টা কি ?
.
ছোঁয়া এই কথা গুলো ভাবছে আর ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
কনক সেইটা খেয়াল করল ।
কনক ছোঁয়ার দিকে টিস্যু পেপার এগিয়ে দিল ।
ছোঁয়ার কনকের দিকে তাকাল ।
কনক অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেগেছে ।
ছোঁয়া টিস্যু পেপারটা হাতে নিল ।
.
টিস্যু পেপারটা দিয়ে চোখের পানি মুছল ।
কিছুখন পর ওরা দুইজনেই বাড়িতে পৌছে গেল ।
ছোঁয়া গাড়ি থেকে নেমে গেল কিন্তু কনক গাড়ি থেকে নামল না ।
কনক গাড়ি অন্য দিকে ঘুরিয়ে আবার চলে গেল ।
ছোঁয়া কিছুখন ওইদিকে তাকিয়ে থেকে সোজা রুমে চলে গেল ।
.
ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ারটা ছেড়ে দিল ।
এখনও ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
সেই যে শাওয়ারটা অন করে ভিজছে আর বন্ধই করছে না ।
আমেনা আর অনন্যা ঘরে আসল ।
আমেনা আর অনন্যা বলাবলি করছে ।
.
আমেনা ::: কে রে সেই কখন থেকে শাওয়ার অন করে রেখেছে ।
দুইঘন্টা তো হবেই ।
.
অনন্যা ::: বোধ হয় ভাবি ।
আর ভাবিই যদি থাকে তাহলে এতখন ধরে শাওয়ার অন করে রেখেছে কেন ?
.
আমেনা ::: সেটাই তো বুঝতে পারছি না ।
মেয়েটা করছে টা কি আর হয়েছেই বা টা কি ?
.
অনন্যা ::: ভাবি দরজাটা খোল ।(ওয়াশরুমের দরজা ধাকাচ্ছে )
.
একটু পরে পানি পড়ার শব্দ বন্ধ হয়ে গেল ।
ছোঁয়া বের হল ওয়াশরুম থেকে ।
আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,
.
আমেনা ::: তুমি ওয়াশরুমে এতখন করছিলেটা কি তুমি বউমা ।
.
ছোঁয়া ::: খুব গরম লাগছিল তো মা তাই ।
.
আমেনা ::: তাই বলে দুইঘন্টা ধরে ।
.
ছোঁয়া ::: কি দুইঘন্টা ?
.
আমেনা ::: হুম ।
.
ছোঁয়ার এখনও চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
বারবার চোখের পানি মুছছে ।
সেইটা আমেনা খেয়াল করল তাই আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
আমেনা ::: কি হয়েছে তুমি কান্না করছ কেন বউমা ?
.
ছোঁয়া আরও জোরে কান্না শুরু করে দিল ।
তারপর নিচে বসে পড়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: উনি আমাকে সেই কখন থেকে ইগ্নোর করেই যাচ্ছে ।
আমার উপর অনেক রেগে রয়েছেন ।
আমার উপর রেগে আমার সাথেই কথা বলছে না ।
এইবার আমি করেছি টা কি ?
.
আমেনা ছোঁয়ার কাছে গেল ।
ছোঁয়াকে তুলে বিছানায় বসাল ।
তারপর ছোঁয়া কে বলছে ,,,
.
আমেনা ::: কান্না করিস না মা ।
সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ।
আমিও তো বুঝতে পারছি না কনক কেন তোমার উপর রেগে রয়েছে ।
আর কোথাও কনক বউমা তাকে তো দেখতে পাচ্ছি না ।
.
ছোঁয়া ::: তিনি আমাকে এইখানে নামিয়ে দিয়ে কোথায় যেন চলে গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না ।
.
আমেনা ::: ও ।
নিচে খেতে আস তাড়াতাড়ি ।
.
ছোঁয়া ::: না আমি এখন খাব না আম্মু ।
আমার এখন খিদে নেই ।
.
আমেনা ::: বললেই হল ।
.
অনন্যা ::: আম্মু ভাবিকে এখন জোর কর না ।
তুমি এখন চল আম্মু ভাবিকে এখন একটু একা থাকতে দাও ।
.
আমেনা ::: হুম ।
.
আমেনা আর অনন্যা এই ঘর থেকে চলে গেল ।
ছোঁয়া একলা একা ঘরে বসে রয়েছে চুপচাপ ।
সারাদিনেও কিছু খেল না ছোঁয়া ।
রাত হয়ে গেছে ।
রাতেও মেয়েটা কিছুই খেল না মেয়েটা ।
যেইভাবে বসে ছিল ঠিক ওইভাবেই বসে রয়েছে মেয়েটা ।
.
অনেক রাত হয়ে গেছে কিন্তু এখনও কনক আসছে না বাড়িতে ।
রাত দুটোর সময় কনক আসল বাড়িতে ।
ছোঁয়া কনককে দেখে উঠে দাঁড়াল ।
ছোঁয়া কনকের সামনে যেয়ে ওকে ধরে বলতে লাগল ,,,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেন ?
আপনি আমার সাথে কথা বলছেন না কেন ?
আমি আপনার কি এমন ক্ষতি করেছি যে আমার উপর রাগ করে রয়েছেন আপনি ?
.
কনক ::: এমন ভাবে তুমি জিজ্ঞাসা করছ যে তুমি কিছুই জান না ।
.
ছোঁয়া ::: সত্যিই আমি কিছুই জানি না ।
আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ।
.
কনক ::: না কি না বুঝার ভান করছেন ।
তাহলে এইগুলো কি ?
.
কনক ছোঁয়াকে ছবিগুলো দেখালো ।
ছোঁয়া ছবিগুলো দেখার প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিল ।
কিন্তু নিজেকে সামলিয়ে নিল ।
এইবার কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,
.
কনক ::: এরপরও কি তুমি না বোঝার ভান করে থাকবে ।
এমন ভাব করবে যে তুমি কিছুই জান না তুমি কিছুই কর নি ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন আমি এইসব করিনি ওই শয়তানটার সাথে ।
.
কনক ::: তুমি সিরাজের সাথে এইসব করার পরও আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছ ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন কনক আমি এইসব করিনি ।
উল্টে ওই আমার সাথে ,,,,,
.
কনক ::: চুপ একদম চুপ তোমার ওই নোংরা মুখে আমার নাম উচ্চারন করবে না ।
আর তুমি আমার সামনে আসবে না ।
তুমি আজ থেকে এইখানে থাকবে না ।
.
কনক ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে সরাসরি বারান্দায় ধাক্কা মেরে ফেলে আসল ।
আর বারান্দাটা ভিতর থেকে আটকে দিল যাতে করে ছোঁয়া আর ভিতরে ঢুকতে না পারে ।
ছোঁয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানালায় দাঁড়িয়ে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন আমি সত্যিই এইসব করি নি ।
এইসব মিথ্যে ।
.
এইবার কনক জানালাটায় বন্ধ করে দিল ।
ছোঁয়া জোরে জোরে কান্না করতে লাগল ।
ছোঁয়ার বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে ।
কান্না করতে করতে করতে ওইখানেই বসে পড়ল ছোঁয়া ।
ছোঁয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে লাগল ,,,,
.
ছোঁয়া ::: হোটেল থেকে বের হওয়ার সময় সিরাজ একবার আমার হাত ধরে টান দিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল ।
আর ছবিগুলোতর সেই জায়গাটা দেখা যাচ্ছে ।
তার মানে যখন সিরাজ আমার সাথে জোর জবরদস্তি করছিল তখন কেউ ছবি তুলে রেখেছিল ।
কিন্তু উনি তো আমার কথা শুনতেই চাচ্ছেন না ।
হাই আল্লাহ এইবার তুমিই আমাকে সাহায্য করতে পার ।
.
ছোঁয়া বসে বসেই শুধু কান্না করছে ।
আর কনক মনযোগ দিয়ে কাজ করছে ।
মনে হচ্ছে অনেক রেগে রয়েছে ।
.
আর ওইদিকে সিরাজ আনন্দে আত্মহারা হয়ে আরমান সিকদার কাছে গেল ।
আর চিল্লাতে বলতে লাগল ,,,
.
সিরাজ ::: আই অ্যাম সো হ্যাপি ড্যাড ।
ফাইনালি আমি ছোঁয়াকে নিজের মত করে পাব ।
ওই মাঝখানের হাড্ডিটা আমাদের মাঝখান থেকে চলে যাবে ।
আমি অনেক খুশি ।
কি বলেছিল আমি কোনদিনও পাব না ।
.
আরমান ::: তুমি এখন খুশি তো মাই সান ।
.
সিরাজ ::: ইয়া ড্যাড ।
কবে যে ডিভোর্স দিয়ে দিবে আমি আমার জান পাখিটাকে আমার মত করে নিব ।
.
আরমান ::: এইবার আর কনক চৌধুরি আমার ছেলের সাথে পাঙ্গা নিতে আসবে না ।
.
সিরাজ ::: হুম ।
.
আরমান ::: এইবার খুশি তো ।
এইবার ঘরে ফিরে যাও ।
.
সিরাজ ::: হুম ।
.
ছোঁয়া এখনও বসে কান্না করছে ।
ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে দিল ।
এইবার কনকও দরজাটা খুলে দিল ।
ছোঁয়াকে আসতে বলল ।
ছোঁয়া ভিতরে আসল ।
কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::: পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে তুমি কলেজে যাবে না ।
কলেজে যাওয়ার নাম করে আবার না কি করে বস ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন ।
.
কনক ::: আমি তোমাকে বিশ্বাস করি না ।
তুমি শুধু পরীক্ষার দিনগুলোতে কলেজে যাবে ।
তাছাড়া তার আগে নয় ।
.
ছোঁয়া ::: কিন্তু ,,,,
.
কনক ::: কোন কিন্তু নই ।
আমি কোন কথা শুনতে চাই না ।
.
এই কথাটা বলে কনক ওয়াশরুমে চলে গেল ।
ছোঁয়া কান্না করতে করতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে ।
আর চোখ তো একদম লাল হয়ে গেছে ।
.
আর কনক যখন ওকে ধাক্কা দিয়েছিল তখন হাতে একটু ব্যথা পেয়েছে ছোঁয়া ।
একটু ছুলেছে ।
রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে ।
আর প্রচুর জ্বলছে হাতটা ।
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৩
.
ছোঁয়া বারবার শুধু হাতে ফু দিচ্ছে ।
এত জ্বলছে বেচারির হাতটা ।
রক্ত জমাট বেধে রয়েছে কেটে যাওয়া স্থানে ।
পরিষ্কার করার জন্য ছোঁয়া স্যাবলন আনতে যাচ্ছিল ঠিক ওই সময় কনক স্যাবলনটা নিয়ে নিজের পকেটে নিয়ে নিল ।
এইবার ছোঁয়ারও প্রচুর রাগ উঠলো ।
রেগে গিয়ে কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এইটা কি করলেন আপনি ।
স্যাবলনটা এইভাবে পকেটে ভরে নিলেন কেন ?
.
কনক ::: স্যাবলন দিয়ে তোমার কাজটা কি ?
.
ছোঁয়া ::: দরকার আছে আমার ।
.
কনক ::: কি দরকার ?
.
ছোঁয়া ::: আমার হাত কেটে গেছে ।
রক্ত জমাট বেধে রয়েছে ।
পরিষ্কার করব দেন ।
.
কনক ::: তোমার হাতই কাটুক আর অন্য কিছুই হোক আমার স্যাবলন তুমি ব্যবহার করতে পারবে না ।
তুমি অন্য কারোর টা নিয়ে পরিষ্কার কর যাও ।
আমার জিনিসে তুমি হাত দিলে সেই জিনিস আমি জীবনেও ব্যবহার করব না ।
আশা করি কথাটা বুঝতে পেরেছ ।
.
ছোঁয়া কনককে কিছু বলার আগেই ঘর থেকে হন হন করে বের হয়ে চলে গেল ।
ছোঁয়াও কনকের পিছু পিছু ঘর থেকে বের হয়ে গেল ।
দুইজনেই নিচে চলে আসল ।
ছোঁয়া আমেনার কাছে গেল আমেনাকে সাহায্য করতে লাগল ।
সবাই ব্রেকফাস্ট করার জন্য বসে রয়েছে ।
.
ছোঁয়া এক এক করে সবাইকে খাবার দিল ।
যখন কনককে দিতে গেল তখন কনক রাগ দেখিয়ে না খেয়েই চলে গেল ।
কনকের এই ব্যবহারে ছোঁয়া আরও কষ্ট পেল ।
কনক না খেয়ে চলে গেছে তাই ছোঁয়াও কিছু খেল না ।
না খেয়েই উপরে চলে গেল ।
উপরে যেয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগল ।
.
কান্না করতে করতে বেচারি চোখ লাল করে ফেলেছে ।
একটু পরে ছোঁয়ার ফোনটা বেজে উঠল ।
রিমি কল করেছে ।
ছোঁয়া নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে কলটা রিসিভ করল ।
তারপর বলতে লাগল ,,,
.
ছোঁয়া ::: হ্যা বল রিমি ।
.
রিমি ::: তুই আজকে কলেজে আসবি না ।
.
ছোঁয়া ::: না রে দোস্ত ।
একদম পরীক্ষার দিনই আসব রে ।
.
রিমি ::: ও ।
তুই কি কান্না করছিস ?
মানে তোর কন্ঠটা আজকে একটু অন্যরকম লাগছে ? মনে হচ্ছে তুই কান্না করছিস ?
.
ছোঁয়া ::: আমি কেন কান্না করতে যাব রে ।
আসলে ঠান্ডা লেগেছে তো এরজন্য কন্ঠটা এইরকম মনে হচ্ছে ।
.
রিমি ::: ও ।
এখন আমি রাখি ।
বাই ।
.
ছোঁয়া ::: হুম ।
বাই ।
.
ছোঁয়ার হাত এখনও জ্বলছে ।
আগের থেকে আরও বেশি জ্বলছে ।
মনে হচ্ছে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে ওর পুরো শরীর ।
একটু পরে আমেনা ছোঁয়াকে ডাকতে লাগল ।
ছোঁয়া নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে নিচে চলে আসল ।
.
ছোঁয়া নিচে গিয়ে আমেনাকে রান্নায় সাহায্য করতে লাগল ।
আমেনা বুঝতে পেরেছে ছোঁয়া উপরে যেয়ে কান্না করেছে ।
কিন্তু কিসের জন্য কান্না করেছে সেটা এখনও আমেনা বুঝতে পারে নি ।
ছোঁয়ার মন মেজাজ এখন ভালো না এখন কিছু জিজ্ঞাসা করা ঠিক হবে না তাই আমেনা ছোঁয়াকে এখনও কিছু জিজ্ঞাসা করেনি ।
.
একটু পরে অনন্যা আসল ।
এসে নিয়েই বলতে লাগল খাবার দিতে ওর নাকি এখন প্রাইভেট আছে ।
ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে অনন্যাকে খাবার দিল ।
অনন্যা খেয়াল করল ছোঁয়ার হাতে কাটা দাগ ।
তাও আবার রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে ।
অনন্যা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
অনন্যা ::: ভাবি তোমার হাত কাটল কিভাবে ?
.
ছোঁয়া ::: কালকে রাতে দরজার সাথে হাতটা লেগে একটু কেটে গেছে ।
সমস্যা নেই পরে আমি ওষুধ লাগিয়ে নিব ।
তুমি চিন্তা কর না তুমি তাড়াতাড়ি করে খেয়ে নাও তোমার তো আবার প্রাইভেট আছে ।
.
অনন্যা ::: না ভাবি তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছ আমার কাছ থেকে ।
ভাইয়া কি তোমার উপর রাগ দেখিয়েছি ?
.
ছোঁয়া ::: না না তেমন কিছু না ।
উনি কেন আমার উপর রাগ দেখাবেন ।
.
ঠিক ওই সময় আমেনা আসল ।
আমেনা এসে ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,
.
আমেনা ::: বউমা তুমিও এখন অনন্যার সাথে খেয়ে ফেল ।
দেরি করে খাওয়ার দরকারটা কি ?
এখনই খেয়ে ফেল ।
.
ছোঁয়া ::: না আম্মু ।
আমি এখন খাব না ।
আমার মোটেও এখন খিদে নেই ।
.
ছোঁয়া না খেয়ে আবার উপরে চলে গেল ।
আমেনা অনন্যাকে বলছে ,,,,
.
আমেনা ::: এখন তুই তোর ভাবিকে কোন বিষয় নিয়ে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করবি না ?
.
অনন্যা ::: কেন আম্মু ?
.
আমেনা ::: এখন তোর ভাবির মন মেজাজ কিছুতেই ভাল না ।
.
অনন্যা ::: ওকে আম্মু ।
আম্মু আমি এখন যাই ।
আমার প্রাইভেট শুরু হয়ে গেল ।
.
আমেনা ::: হুম যা ।
.
অনন্যা চলে গেল ওর প্রাইভেটে ।
ছোঁয়া উপরে যেয়ে কান্না করছে আর বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: কেন আপনি বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না যে আমি কারোর সাথেই কিছু করেনি ।
বিয়ের আগে তো কেউ আমার জীবনে ছিলই না আর বিয়ের পর শুধু আপনিই আমার জীবনে আর কেউ না ।
আর ওই শয়তানটা শুধু শুধু আমার পিছনে ঘুরে । আপনি আমাকে কেন বিশ্বাস করছেন না ।
আমায় শুধু কষ্টই দিয়ে যাচ্ছেন আপনি ।
.
ছোঁয়া শুধু কান্নাই করে যাচ্ছে ।
আমেনা আসল ঘরে ।
আমেনা আচমকা বলা শুরু করল ,,,,
.
আমেনা ::: তোমার না পরীক্ষা শুরু হচ্ছে তুমি এখনও পড়তে বস নি বউমা ।
.
ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে চোখের পানি মুছে নিল ।
বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: এই তো আম্মু বসছি ।
.
আমেনা ::: গুড ।
তা তোমার খাবারটা কি উপরে পাঠিয়ে দিব বউ মা ।
.
ছোঁয়া ::: না আম্মু আমার খিদে নেই ।
আমি খাব না ।
.
আমেনা ::: তা বউমা তোমার কি কিছু হয়েছে ।
.
ছোঁয়া ::: না আম্মু আমার কিছুই হয় নি ।
আমি এখন পড়ব ।
.
আমেনা ::: ঠিক আছে তুমি পড় বউ মা ।
.
ছোঁয়া তো বই খুলে বসল কিন্তু কিছুতেই পড়াই মনযোগ দিতে পারছে না ।
.
আর ওইদিকে সিরাজ একদম আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে ।
শুয়ে রয়েছে সিরাজ আর বলছে ,,,,
.
সিরাজ ::: কবে যে তোকে ডিভোর্স দিবে আর আমি তোকে পাব ।
আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না আমার ময়না পাখি ।
.
সিরাজ মোবাইলে ছোঁয়ার ছবি বের করে কথাগুলো বলছে ।
বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখল ।
সিরাজ ওর চোখটা বন্ধ করল ।
সিরাজ ছোঁয়াকে কল্পনা করছে ।
.
সিরাজ আর ছোঁয়ার বিয়ে হয়েছে ।
ছোঁয়া সিরাজের রুমে বসে রয়েছে ।
সিরাজ ওর রুমে চলে আসল ।
ছোঁয়া সিরাজকে দেখে উঠে দাঁড়ালো ।
আর সিরাজকে দেখে ভয় পাচ্ছে ।
ছোঁয়া সিরাজের থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ।
.
সিরাজ ছোঁয়ার কাছে গেল আর ছোঁয়ার কোমড়ে হাত দিল ।
ছোঁয়া একটু কেঁপে উঠল ।
সিরাজ ছোঁয়াকে কাছে টেনে নিয়ে ইচ্ছামত চুম্বন দিতে লাগল ।
তারপর ছোঁয়াকে কোলে তুলে নিল ।
বিছানায় শুইয়ে দিল ।
.
সিরাজ ওর চোখটা খুলে ফেলল ।
তারপর মুখে একটা হাসি দিয়ে বলতে লাগল ,,,,
.
সিরাজ ::: তার মানে আমি এতখন স্বপ্ন দেখছিলাম ।
কবে যে এই স্বপ্নটা সত্যি হবে ।
.
এই কথা বলার পর পর কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরল ।
কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরে নাচানাচি করতে লাগল ।
.
ছোঁয়া কিছুখন বইয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে উঠে দাঁড়াল ।
আর এখন বিকেল হয়ে গেছে ।
ছোঁয়া এখন নিচে গেল ।
আমেনা আর অনন্যা ওইখানেই বসে রয়েছে ওরা বসে বসে টিভি দেখছে ।
.
কিন্তু ছোঁয়ার মাথাটা অনেক ঘুরাচ্ছে ।
ছোঁয়া সব কিছু অস্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ।
ছোঁয়া আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না ।
আমেনা আর অনন্যার কাছে আসার পর ছোঁয়া মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেল ।
আমেনা আর অনন্যা তাড়াতাড়ি করে ছোঁয়াকে নিয়ে ঘরে শুইয়ে দিল ।
.
অনন্যা তাড়াতাড়ি করে ওদের পারিবারিক ডক্টর রাশেদকে কল করল ।
রাশেদ কলটা রিসিভ করল ।
আর বলতে লাগল ,,,,
.
রাশেদ ::: অনন্যা কি হয়েছে ?
.
অনন্যা ::: রাশেদ ভাইয়া তুমি তাড়াতাড়ি আস না ।
ভাবি সেন্সলেস হয়ে গেছে ।
.
রাশেদ ::: হুম অনন্যা ।
আমি এখনি আসছি ।
.
রাশেদ হল আমেনার বড় ভাইয়ের ছেলে ।
ও একজন ডক্টর ।
কারোর কোন কিছু হলে সর্বপ্রথম রাশেদকে ডাকা হয় ।
আর তাই অনন্যা রাশেদকেই এইখানে আসতে বলল ছোঁয়াকে চেকআপ করার জন্য ।
রাশেদ আসতেছে ওদের বাড়িতে ।
.
কনক কিসের জন্য যেন একটু বাড়িতে এসেছিল ।
বাড়িতে এসে দেখে এই অবস্থা ।
কনক আমেনাকে জিজ্ঞাসাকে করছে ,,,,
.
কনক ::: আম্মু কি হয়েছে ছোঁয়ার ?
.
আমেনা ::: জানি না হঠাৎ করেই সেন্সলেস হয়ে গেছে ।
.
কনক ::: ডক্টরকে কল কর ।
.
অনন্যা ::: রাশেদ ভাইয়া আসছে ।
ওই তো এসে গেছে ।
.
রাশেদ এসে গেছে ।
রাশেদ ছোঁয়াকে দেখতে লাগল ।
রাশেদ ছোঁয়াকে চেকআপ করে একটু ভয় পেল ।
বিশেষ করে কাটা দাগ দেখে ।
ভয় পেল যে এখনও রক্ত জমে রয়েছে ।
কনক রাশেদকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,,
.
কনক ::: রাশেদ ।
ছোঁয়ার হয়েছে টা কি ?
.
রাশেদ ::: ভাবি একে তো খাই নি তার জন্য সেন্সলেস হয়ে গেছে ।
কিন্তু ,,,,
.
কনক ::: কিন্তু কি রাশেদ ,,,
.
রাশেদ ::: এই কাটা অংশে এখনও কোন ব্যান্ডেজ বা স্যাবলন দেওয়া হয়নি ।
এর জন্য এইখানে ইনফেকশন হয়ে গেছে ।
এর জন্যও আবার মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেছে ।
এখন যদি তাড়াতাড়ি হসপিটালে না নেওয়া হয় তাহলে ভাবিকে বাঁচানো সম্ভব নয় ।
আর যদি বেঁচেও যাই তাহলে হাত কেটে ফেলতে হবে ।
.
কনক ::: কি ?
না যে করেই হোক আমি ওকে সুস্থ দেখতে চাই ।
.
রাশেদ ::: তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে ।
অপারেশন করাতে হবে ।
.
কনক ছোঁয়াকে কোলে করে নিয়ে নিচে নামল ।
গাড়িতে নিয়ে শুয়াল ।
সেই গাড়িতে শুধু অনন্যা উঠল আর কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ।
আর রাশেদ আর আমেনা আর এক গাড়িতে আসছে ।
ছোঁয়াকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হল ।
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৪
.
কনক ছোঁয়াকে তাড়াতাড়ি করে হসপিটালে নিয়ে গেল ।
রাশেদ এসে তাড়াতাড়ি করে ছোঁয়াকে তাড়াতাড়ি করে ওটি তে নিয়ে গেল ।
কনক আর বাকি সবাই বাইরে অপেক্ষা করছে ।
সবাই ছোঁয়ার জন্য অনেক চিন্তা করছে ।
কি যে হবে মেয়েটার সাথে এইটাই ভেবে ।
কনক শুধু নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে ।
.
একটু পরে রাশেদ বের হল ।
রাশেদকে দেখে কনক রাশেদকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
কনক ::: কি হয়েছে রাশেদ ?
সাক্সেস ফুল না ।
.
রাশেদ ::: রক্ত লাগবে ।
রক্ত যদি এখন না দেওয়া হয় তাহলে আমরা কিছুই করতে পারব না ।
.
কনক ::: ব্লাড গ্রুপ কি ?
.
রাশেদ ::: দাঁড়াও ভাইয়া পরীক্ষা করে দেখতে হবে ।
.
কনক ::: তাড়াতাড়ি ।
.
রাশেদ আবার ভিতরে ঢুকল ।
কিছুখন পর বের হল ।
তারপর বলতে লাগল ,,,
.
রাশেদ ::: বি পজিটিভ ।
.
কনক ::: বি পজিটিভ আমারও তো ব্লাড গ্রুপ বি পজিটিভ ।
আমার টা কি দিলে হবে না ।
.
রাশেদ ::: কেন হবে না ।
ভাইয়া তুমি শুধু তাড়াতাড়ি আস ।
ভাবির এখনি রক্ত লাগবে ।
.
কনক ::: হুম চল ।
.
কনক ছোঁয়াকে রক্ত দিতে চলে গেল ।
কনকের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত নিল ।
তারপর ছোঁয়ার কাছে নিয়ে যাওয়া হল ।
কনক রক্ত দিয়ে এসে বাইরে চলে আসল ।
বাইরে এসে আবার নিশ্চুপ হয়ে বসে পড়ল কনক ।
কোন কথাই বের হচ্ছে না এখন মুখ থেকে ।
কিন্তু মনে মনে কনক নিজেকেই বলছে ,,,,
.
কনক ::: তুই এইটা কি করলি কনক ।
মানছি যে ছোঁয়ার ওই কাজের জন্য ছোঁয়াকে শাস্তি দিতে চাচ্ছিস তাই বলে এত বড় শাস্তি ।
তুই অনেক খারাপ কনক ।
.....না না অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আমার ।
আজকে সকালে ওই কাজটা করাই উচিৎ হয়নি ।
একটু বেশিই করে ফেলেছি আজকে সকালে ।
আমার রক্ততেই যেন ও সুস্থ হয়ে উঠে এই দোয়া করি আল্লাহর কাছে ।
.
একটু পরে রাশেদ ওটি থেকে বের হল ।
বের হয়েই রাশেদ বলতে লাগল ,,,,
.
রাশেদ ::: অপারেশন সাক্সেসফুল ।
কিছুখনের মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসবে
.
ছোঁয়াকে ওটি থেকে বের করে আনা হল ।
সবাই রাশেদকে জিজ্ঞাসা করছে .... ওরা কি এখন ছোঁয়ার সাথে দেখা করতে পারবে ।
রাশেদ সবাইকে বলছে ,,,
.
রাশেদ ::: এখন তো সবাই দেখা করতে পারবে না তাও আবার একসাথে ।
তবে কনক ভাইয়া তুমি ভাবির পাশে এখন থাকতে পার ।
.
কনক মুখে একটা হাসি দিল ।
রাশেদ কনককে ছোঁয়ার কাছে নিয়ে গেল ।
কনক ছোঁয়ার পাশে যেয়ে বসল ।
রাশেদ কনককে দিয়ে এসে বাইরে চলে আসল ।
ছোঁয়ার এখনও জ্ঞান ফিরে আসে নি ।
কনক বলছে ,,,,
.
কনক ::: তোমার সাথে একটু বেশিই করেই ফেলেছি ।
এতটাও কঠোর হওয়া উচিৎ হয়নি আমার ।
একটু তো নরম হওয়া উচিৎ ।
.
কনকের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
এক ফোঁটা ছোঁয়ার হাতের উপর পড়ল ।
তখনই ছোঁয়ার হাতটা নড়ে উঠল ।
সাথে সাথে কনক তার চোখের পানি মুছে ফেলল ।
আস্তে আস্তে ছোঁয়া তার চোখটা খুলতে লাগল ।
অবশেষে ছোঁয়ার চোখটা খুলল ।
.
ছোঁয়া চোখ খুলেই কনককে দেখতে পেল ।
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি ।
.
কনক ::: ভেব না যে তোমার উপর দয়া দেখাচ্ছি তার মানে এই নয় যে আমি তোমায় ক্ষমা করে দিয়েছি ।
তুমি যা কাজটি করেছ তার পরে তোমায় ক্ষমা কোনদিনও করব না ।
.
ছোঁয়া ::: আ,,,পনি এ,,ইসব কি ব,,লছেন আ,,,মি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ।
আ,,র আমিই বা এই,,খানে কেন ?
আ,,মার কি হয়েছে ?
.
কনক ::: অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলে তুমি ।
পুরো একদিন তুমি কিছুই খাও নি ।
না খেয়ে থাকার জন্য তুমি সেন্সলেস আর ওই হাতে ব্যাথা ।
.
ছোঁয়া ::: ওফ মাথাটা যে কেমন যন্ত্রনা দিচ্ছে আমি আর পারছি না ।ওফ,,,
.
একটা নার্স আসল ভিতরে ।
ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরেছে দেখে বাহিরের সবাইকে বলে দিল কথাটা ।
সবাই ছোঁয়াকে দেখার জন্য ছুটে চলে আসল ।
সবাই ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
---- কেমন আছ ।
.
ছোঁয়া ::: এখন ঠিক আছি আমি ।
কিন্তু মাথাটা ,,,,
.
রাশেদ ::: এখন উনাকে একটু রেস্ট নিতে দিন ।
সবে মাত্র জ্ঞান ফিরেছে উনার ।
ভিড় আর চিল্লাচিল্লি উনার পক্ষে এখন মোটেও ভালো না ।
.
আমেনা ::: ঠিক আছে আমরা সবাই বাইরে যাচ্ছি ।
.
সবাই বাইরে চল গেছে ।
কনকও বাইরে যাচ্ছি রাশেদ কনককে আটকে দিয়ে বলছে ,,,
.
রাশেদ ::: ভাইয়া তুমি কোথায় যাচ্ছ ?
তুমি ভাবির পাশে থাক ।
নইতোযে ভাবি একা হয়ে যাবে ।
.
কনক ::: ওকে ।
.
সিরাজ ছোঁয়াকে পাওয়ার জন্য এতই পাগল হয়ে গেছে যে সব জায়গায় শুধু ছোঁয়াকেই দেখতে পাচ্ছে ।
সিরাজ দেখছে যে ছোঁয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইয়ার রিং খুলছে ।
কিন্তু কিছুতেই খুলতে পারছে না সিরাজ ওইখানে যেয়ে নিজে খুলে দিচ্ছে ।
আর শুধু ছোঁয়ার চুলের ঘ্রান নিচ্ছে ।
.
ছোঁয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল ।
যখন নিজের ঠোঁট ছোঁয়ার দিকে দিল তখনই ছোঁয়া অদৃশ্য হয়ে গেল ।
সিরাজ আবারও বলতে লাগল ,,,
.
সিরাজ ::: আজকে আবারও ,,,
আমি আর ওয়েট করে থাকতে পারছি না ।
কবে যে আমার জানপাখিটা আমার হবে ।
.
সিরাজ নিচের দিকে যেতে লাগল ।
আরমান আর তার স্ত্রী কথা বলছে ,,,
.
আরমান ::: ছোঁয়া যে এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সেটা সিরাজ যেন কোনভাবে জানতে না পারে ।
জানতে পারলে যে পাগলামো শুরু করে দিবে ।
.
সিরাজের মা ::: ঠিক আছে ।
.
সিরাজ নিচে নামার সময় সব কিছু শুনে ফেলেছে ।
কথাটা শোনার পর থেকে সিরাজ একদম পাগলামো শুরু করে দিয়েছে ।
আর বলতে লাগল,,,,
.
সিরাজ ::: কি হয়েছে আমার ছোঁয়ার ?
ও হাসপাতালে কেন ?
আজকে আমি সব কিছু ,,,
.
সিরাজের মা ::: কি করছ কি তুমি সিরাজ ?
এইরকম পাগলামো কর না ।
এই আপনি একটু বোঝান ।
.
আরমান কোন মতে সিরাজকে শান্ত করে ঘরে নিয়ে গেল ।
.
কালকে ছোঁয়াকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে ।
এখন ছোঁয়াকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে ।
অনেক রাত হয়ে গেছে তো তাই ছোঁয়া এখন ঘুমাচ্ছে ।
আর পাশে কনক বসে রয়েছে ।
.
বাড়ির অনেকেই আজকে থাকতে চেয়েছিল হাসপাতালে ছোঁয়ার সাথে কিন্তু কনকই থাকতে দেইনি কাউকে ।
কনক একাই থাকতে চাই ছোঁয়ার সাথে ।
কনক এখনও জেগে রয়েছে কারন ছোঁয়ার যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয় ।
.
সকাল হয়ে গেছে ।
রাশেদ আসল আর ছোঁয়াকে চেক করল ।
আর ছোঁয়াকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল ।
.
কনক ছোঁয়াকে গাড়িতে নিয়ে যেয়ে বসাল ।
কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ।
ছোঁয়া কনকের দিকে তাকাল ।
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: এই রাগি মানুষটাকেই যে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি ।
আপনি কেন আমাকে ভুল বুঝছেন কনক ।
একবার শুধু আমার কথাটা শুনার চেষ্টা করুন কনক ।
.
কনক আর ছোঁয়া বাড়ি পৌছে গেছে ।
কনক প্রথমে গাড়ি থেকে নামল ।
ছোঁয়া গাড়ি থেকে নামছিল শরীর দূর্বল থাকার কারনে ঠিকমত দাঁড়াতে পারছে না তাই পড়ে যাচ্ছিল ।
কনক সাথে সাথে এসে ছোঁয়াকে ধরে ফেলল ।
.
কনক ছোঁয়াকে কোলে নিল ।
কোলে করে নিয়ে ঘরে নিয়ে গেল ।
ছোঁয়ার মা আর বাবা এসেছে ছোঁয়াকে দেখতে ।
ছোঁয়ার বাবা ছোঁয়াকে বলছে ,,,
.
ছোঁয়ার বাবা ::: এখন ঠিক আছিস তো মা ।
.
ছোঁয়া ::: হুম আব্বু ।
.
ছোঁয়ার মা ::: কালকে ভালো করেও দেখতে পারে নি মেয়েটাকে ।
এখন ভালো করে দেখতে পেয়ে মনটা একটু শান্ত হল ।
.
ছোঁয়া ::: আম্মু ।
.
ছোঁয়া ও ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরল ।
আর কান্না করছে ।
ছোঁয়ার মা ওকে বলছে ,,,
.
ছোঁয়ার মা ::: কাঁদিস না মা ।
তোর চোখের জল যে আমার আর তোর আব্বুর যে সহ্য হয় না ।
.
ওনারা কিছুখন ছোঁয়ার কাছে থেকে আবার নিচে চলে গেল ।
কনক ছোঁয়ার কাছে এসে ছোঁয়ার চোখের পানি মুছে দিল ।
.
সিরাজ তো একদম পাগল হয়েই গেছে ।
ছোঁয়ার হাসপাতালে ভর্তি থাকার কথা শুনে আর কনক এখনও ছোঁয়াকে ছাড়ছে না কেন সেটার জন্য ।
তাই সিরাজ রাগে আরমানকে বলছে ,,,
.
সিরাজ ::: ড্যাড ওই শয়তান টা ছোঁয়ার নিশ্চয়ই কিছু করেছে তাই ছোঁয়া হাসপাতালে ভর্তি ছিল ।
শয়তানটা ছোঁয়াকে এখনও ডিভোর্স দিচ্ছে না কেন ?
.
আরমান ::: কাম ডাউন ।
তুমি আর চিন্তা কর না মাই সান আমি কিছু একটা করছি ।
.
সিরাজ ::: প্লিজ ড্যাড ,,
যা করার তাড়াতাড়ি কর ।
আমি যে আর পারছি না ।
প্লিজ ড্যাড ।
ছোঁয়া শুধু বারবার আমার স্বপ্নে আসছে ।
সব জায়গায় শুধু ওকে দেখি ।
আমি বাস্তবে ওকে চাই কবে পাব আমি ওকে ।
.
আরমান ::: চিন্তা কর না খুব শীর্ঘই পাবে ।
.
আরমান সিরাজকে ঘরে পাঠিয়ে দিল ।
আরমান নিজেই নিজেকে বলছে ,,,
.
আরমান ::: সত্যিই আমাকে তাড়াতাড়ি কিছু একটা করতে হবে ।
তা না হলে যে আমার ছেলেটা যে একদম পাগল হয়ে যাচ্ছে ।
ওই কনক চৌধুরি ছোঁয়াকে বিয়ে করার আগেই আমার ছেলের জন্য ছোঁয়াদের বাড়িতে যাওয়া উচিৎ ছিল ।
তাহলে আমাকে এত কিছু করতে হত না ।
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৪
.
কনক ছোঁয়াকে তাড়াতাড়ি করে হসপিটালে নিয়ে গেল ।
রাশেদ এসে তাড়াতাড়ি করে ছোঁয়াকে তাড়াতাড়ি করে ওটি তে নিয়ে গেল ।
কনক আর বাকি সবাই বাইরে অপেক্ষা করছে ।
সবাই ছোঁয়ার জন্য অনেক চিন্তা করছে ।
কি যে হবে মেয়েটার সাথে এইটাই ভেবে ।
কনক শুধু নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে ।
.
একটু পরে রাশেদ বের হল ।
রাশেদকে দেখে কনক রাশেদকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
কনক ::: কি হয়েছে রাশেদ ?
সাক্সেস ফুল না ।
.
রাশেদ ::: রক্ত লাগবে ।
রক্ত যদি এখন না দেওয়া হয় তাহলে আমরা কিছুই করতে পারব না ।
.
কনক ::: ব্লাড গ্রুপ কি ?
.
রাশেদ ::: দাঁড়াও ভাইয়া পরীক্ষা করে দেখতে হবে ।
.
কনক ::: তাড়াতাড়ি ।
.
রাশেদ আবার ভিতরে ঢুকল ।
কিছুখন পর বের হল ।
তারপর বলতে লাগল ,,,
.
রাশেদ ::: বি পজিটিভ ।
.
কনক ::: বি পজিটিভ আমারও তো ব্লাড গ্রুপ বি পজিটিভ ।
আমার টা কি দিলে হবে না ।
.
রাশেদ ::: কেন হবে না ।
ভাইয়া তুমি শুধু তাড়াতাড়ি আস ।
ভাবির এখনি রক্ত লাগবে ।
.
কনক ::: হুম চল ।
.
কনক ছোঁয়াকে রক্ত দিতে চলে গেল ।
কনকের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত নিল ।
তারপর ছোঁয়ার কাছে নিয়ে যাওয়া হল ।
কনক রক্ত দিয়ে এসে বাইরে চলে আসল ।
বাইরে এসে আবার নিশ্চুপ হয়ে বসে পড়ল কনক ।
কোন কথাই বের হচ্ছে না এখন মুখ থেকে ।
কিন্তু মনে মনে কনক নিজেকেই বলছে ,,,,
.
কনক ::: তুই এইটা কি করলি কনক ।
মানছি যে ছোঁয়ার ওই কাজের জন্য ছোঁয়াকে শাস্তি দিতে চাচ্ছিস তাই বলে এত বড় শাস্তি ।
তুই অনেক খারাপ কনক ।
.....না না অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আমার ।
আজকে সকালে ওই কাজটা করাই উচিৎ হয়নি ।
একটু বেশিই করে ফেলেছি আজকে সকালে ।
আমার রক্ততেই যেন ও সুস্থ হয়ে উঠে এই দোয়া করি আল্লাহর কাছে ।
.
একটু পরে রাশেদ ওটি থেকে বের হল ।
বের হয়েই রাশেদ বলতে লাগল ,,,,
.
রাশেদ ::: অপারেশন সাক্সেসফুল ।
কিছুখনের মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসবে
.
ছোঁয়াকে ওটি থেকে বের করে আনা হল ।
সবাই রাশেদকে জিজ্ঞাসা করছে .... ওরা কি এখন ছোঁয়ার সাথে দেখা করতে পারবে ।
রাশেদ সবাইকে বলছে ,,,
.
রাশেদ ::: এখন তো সবাই দেখা করতে পারবে না তাও আবার একসাথে ।
তবে কনক ভাইয়া তুমি ভাবির পাশে এখন থাকতে পার ।
.
কনক মুখে একটা হাসি দিল ।
রাশেদ কনককে ছোঁয়ার কাছে নিয়ে গেল ।
কনক ছোঁয়ার পাশে যেয়ে বসল ।
রাশেদ কনককে দিয়ে এসে বাইরে চলে আসল ।
ছোঁয়ার এখনও জ্ঞান ফিরে আসে নি ।
কনক বলছে ,,,,
.
কনক ::: তোমার সাথে একটু বেশিই করেই ফেলেছি ।
এতটাও কঠোর হওয়া উচিৎ হয়নি আমার ।
একটু তো নরম হওয়া উচিৎ ।
.
কনকের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
এক ফোঁটা ছোঁয়ার হাতের উপর পড়ল ।
তখনই ছোঁয়ার হাতটা নড়ে উঠল ।
সাথে সাথে কনক তার চোখের পানি মুছে ফেলল ।
আস্তে আস্তে ছোঁয়া তার চোখটা খুলতে লাগল ।
অবশেষে ছোঁয়ার চোখটা খুলল ।
.
ছোঁয়া চোখ খুলেই কনককে দেখতে পেল ।
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি ।
.
কনক ::: ভেব না যে তোমার উপর দয়া দেখাচ্ছি তার মানে এই নয় যে আমি তোমায় ক্ষমা করে দিয়েছি ।
তুমি যা কাজটি করেছ তার পরে তোমায় ক্ষমা কোনদিনও করব না ।
.
ছোঁয়া ::: আ,,,পনি এ,,ইসব কি ব,,লছেন আ,,,মি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ।
আ,,র আমিই বা এই,,খানে কেন ?
আ,,মার কি হয়েছে ?
.
কনক ::: অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলে তুমি ।
পুরো একদিন তুমি কিছুই খাও নি ।
না খেয়ে থাকার জন্য তুমি সেন্সলেস আর ওই হাতে ব্যাথা ।
.
ছোঁয়া ::: ওফ মাথাটা যে কেমন যন্ত্রনা দিচ্ছে আমি আর পারছি না ।ওফ,,,
.
একটা নার্স আসল ভিতরে ।
ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরেছে দেখে বাহিরের সবাইকে বলে দিল কথাটা ।
সবাই ছোঁয়াকে দেখার জন্য ছুটে চলে আসল ।
সবাই ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
---- কেমন আছ ।
.
ছোঁয়া ::: এখন ঠিক আছি আমি ।
কিন্তু মাথাটা ,,,,
.
রাশেদ ::: এখন উনাকে একটু রেস্ট নিতে দিন ।
সবে মাত্র জ্ঞান ফিরেছে উনার ।
ভিড় আর চিল্লাচিল্লি উনার পক্ষে এখন মোটেও ভালো না ।
.
আমেনা ::: ঠিক আছে আমরা সবাই বাইরে যাচ্ছি ।
.
সবাই বাইরে চল গেছে ।
কনকও বাইরে যাচ্ছি রাশেদ কনককে আটকে দিয়ে বলছে ,,,
.
রাশেদ ::: ভাইয়া তুমি কোথায় যাচ্ছ ?
তুমি ভাবির পাশে থাক ।
নইতোযে ভাবি একা হয়ে যাবে ।
.
কনক ::: ওকে ।
.
সিরাজ ছোঁয়াকে পাওয়ার জন্য এতই পাগল হয়ে গেছে যে সব জায়গায় শুধু ছোঁয়াকেই দেখতে পাচ্ছে ।
সিরাজ দেখছে যে ছোঁয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইয়ার রিং খুলছে ।
কিন্তু কিছুতেই খুলতে পারছে না সিরাজ ওইখানে যেয়ে নিজে খুলে দিচ্ছে ।
আর শুধু ছোঁয়ার চুলের ঘ্রান নিচ্ছে ।
.
ছোঁয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল ।
যখন নিজের ঠোঁট ছোঁয়ার দিকে দিল তখনই ছোঁয়া অদৃশ্য হয়ে গেল ।
সিরাজ আবারও বলতে লাগল ,,,
.
সিরাজ ::: আজকে আবারও ,,,
আমি আর ওয়েট করে থাকতে পারছি না ।
কবে যে আমার জানপাখিটা আমার হবে ।
.
সিরাজ নিচের দিকে যেতে লাগল ।
আরমান আর তার স্ত্রী কথা বলছে ,,,
.
আরমান ::: ছোঁয়া যে এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সেটা সিরাজ যেন কোনভাবে জানতে না পারে ।
জানতে পারলে যে পাগলামো শুরু করে দিবে ।
.
সিরাজের মা ::: ঠিক আছে ।
.
সিরাজ নিচে নামার সময় সব কিছু শুনে ফেলেছে ।
কথাটা শোনার পর থেকে সিরাজ একদম পাগলামো শুরু করে দিয়েছে ।
আর বলতে লাগল,,,,
.
সিরাজ ::: কি হয়েছে আমার ছোঁয়ার ?
ও হাসপাতালে কেন ?
আজকে আমি সব কিছু ,,,
.
সিরাজের মা ::: কি করছ কি তুমি সিরাজ ?
এইরকম পাগলামো কর না ।
এই আপনি একটু বোঝান ।
.
আরমান কোন মতে সিরাজকে শান্ত করে ঘরে নিয়ে গেল ।
.
কালকে ছোঁয়াকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে ।
এখন ছোঁয়াকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে ।
অনেক রাত হয়ে গেছে তো তাই ছোঁয়া এখন ঘুমাচ্ছে ।
আর পাশে কনক বসে রয়েছে ।
.
বাড়ির অনেকেই আজকে থাকতে চেয়েছিল হাসপাতালে ছোঁয়ার সাথে কিন্তু কনকই থাকতে দেইনি কাউকে ।
কনক একাই থাকতে চাই ছোঁয়ার সাথে ।
কনক এখনও জেগে রয়েছে কারন ছোঁয়ার যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয় ।
.
সকাল হয়ে গেছে ।
রাশেদ আসল আর ছোঁয়াকে চেক করল ।
আর ছোঁয়াকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল ।
.
কনক ছোঁয়াকে গাড়িতে নিয়ে যেয়ে বসাল ।
কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ।
ছোঁয়া কনকের দিকে তাকাল ।
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: এই রাগি মানুষটাকেই যে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি ।
আপনি কেন আমাকে ভুল বুঝছেন কনক ।
একবার শুধু আমার কথাটা শুনার চেষ্টা করুন কনক ।
.
কনক আর ছোঁয়া বাড়ি পৌছে গেছে ।
কনক প্রথমে গাড়ি থেকে নামল ।
ছোঁয়া গাড়ি থেকে নামছিল শরীর দূর্বল থাকার কারনে ঠিকমত দাঁড়াতে পারছে না তাই পড়ে যাচ্ছিল ।
কনক সাথে সাথে এসে ছোঁয়াকে ধরে ফেলল ।
.
কনক ছোঁয়াকে কোলে নিল ।
কোলে করে নিয়ে ঘরে নিয়ে গেল ।
ছোঁয়ার মা আর বাবা এসেছে ছোঁয়াকে দেখতে ।
ছোঁয়ার বাবা ছোঁয়াকে বলছে ,,,
.
ছোঁয়ার বাবা ::: এখন ঠিক আছিস তো মা ।
.
ছোঁয়া ::: হুম আব্বু ।
.
ছোঁয়ার মা ::: কালকে ভালো করেও দেখতে পারে নি মেয়েটাকে ।
এখন ভালো করে দেখতে পেয়ে মনটা একটু শান্ত হল ।
.
ছোঁয়া ::: আম্মু ।
.
ছোঁয়া ও ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরল ।
আর কান্না করছে ।
ছোঁয়ার মা ওকে বলছে ,,,
.
ছোঁয়ার মা ::: কাঁদিস না মা ।
তোর চোখের জল যে আমার আর তোর আব্বুর যে সহ্য হয় না ।
.
ওনারা কিছুখন ছোঁয়ার কাছে থেকে আবার নিচে চলে গেল ।
কনক ছোঁয়ার কাছে এসে ছোঁয়ার চোখের পানি মুছে দিল ।
.
সিরাজ তো একদম পাগল হয়েই গেছে ।
ছোঁয়ার হাসপাতালে ভর্তি থাকার কথা শুনে আর কনক এখনও ছোঁয়াকে ছাড়ছে না কেন সেটার জন্য ।
তাই সিরাজ রাগে আরমানকে বলছে ,,,
.
সিরাজ ::: ড্যাড ওই শয়তান টা ছোঁয়ার নিশ্চয়ই কিছু করেছে তাই ছোঁয়া হাসপাতালে ভর্তি ছিল ।
শয়তানটা ছোঁয়াকে এখনও ডিভোর্স দিচ্ছে না কেন ?
.
আরমান ::: কাম ডাউন ।
তুমি আর চিন্তা কর না মাই সান আমি কিছু একটা করছি ।
.
সিরাজ ::: প্লিজ ড্যাড ,,
যা করার তাড়াতাড়ি কর ।
আমি যে আর পারছি না ।
প্লিজ ড্যাড ।
ছোঁয়া শুধু বারবার আমার স্বপ্নে আসছে ।
সব জায়গায় শুধু ওকে দেখি ।
আমি বাস্তবে ওকে চাই কবে পাব আমি ওকে ।
.
আরমান ::: চিন্তা কর না খুব শীর্ঘই পাবে ।
.
আরমান সিরাজকে ঘরে পাঠিয়ে দিল ।
আরমান নিজেই নিজেকে বলছে ,,,
.
আরমান ::: সত্যিই আমাকে তাড়াতাড়ি কিছু একটা করতে হবে ।
তা না হলে যে আমার ছেলেটা যে একদম পাগল হয়ে যাচ্ছে ।
ওই কনক চৌধুরি ছোঁয়াকে বিয়ে করার আগেই আমার ছেলের জন্য ছোঁয়াদের বাড়িতে যাওয়া উচিৎ ছিল ।
তাহলে আমাকে এত কিছু করতে হত না ।
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৫
.
সিরাজ রাগতে রাগতে নিজের রুমে চলে আসল ।
নিজের রুমে এসেই মোবাইল থেকে ছোঁয়ার ছবিটা বের করে কিছুখন দেখতে লাগল একদৃষ্টিতে ।
কিছুখন পর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে লাগল ,,,
.
----- তুই কেন বুঝিস না আমি যে সত্যিই তোকে অনেক ভালোবাসি ।
আমি একটু অন্যরকম ভাবে চলতাম ফিরতাম তাই তুই আমাকে খারাপ ভাবতিস ।
কিন্তু বিশ্বাস কর আমি তোকে প্রচুর ভালোবাসি ।
একবার আমার দিকে তাকিয়ে দেখ তোর ভালোবাসার জন্য আমি পুরোপুরিই পাগল হয়ে গেছি ।
আমি জানি তুই আমাকে কলেজের প্রথম দিন থেকেই দেখতে পারিছ না ।
কিন্তু আমি প্রথম দিন থেকেই তোকে ভালোবাসি ।
সেইদিন তোর মত অত সুন্দর মানে মনের দিক থেকে সুন্দর মেয়ে জীবনেও খুজে পাই নি ।
মনে পড়ে কলেজের প্রথম দিনের কথা তুই তখন সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলি আর আমি একটা কাজের জন্য নামছিলাম ।
তখন তুই আমার জন্য পড়ে যাচ্ছিলি আমি তোর হাতটা ধরেছিলাম ।
ওইদিন তুই আমাকে হাজারটা বকা দিয়েছিলি কিন্তু আমি শুধু তোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম ।
সেইদিনের পর থেকে তুই আমাকে দেখতে পারিছ না ।
আজও মনে পড়ে সেই দিনের কথা ।
.
সিরাজ ছবিটা নিজের বুকে রেখে কান্না করছে ।
আর কলেজের প্রথম দিন টা কল্পনা করছে ।
বার বার শুধু চোখের সামনে ভাসছে ।
.
সিরাজ একটু আগেই চলে এসেছিল কলেজের প্রথম দিনে ।
সিরাজের খুব ক্ষুধা লেগেছিল তাই ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনতে নিচে নামছিল ।
ঠিক ওই সময় ছোঁয়া সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল আর সিরাজ সিঁড়ি দিয়ে নামছিল ।
ঠিক ওইসময় দুইজনের মধ্যে ধাক্কা লাগে ছোঁয়া একদম পড়েই যাচ্ছিল তখন সিরাজ ছোঁয়ার হাতটা ধরল ।
ছোঁয়া অনেক রেগে গেছে হাতটা ছুটিয়ে নিয়ে তারপর বলছে ,,,
.
----- মেয়ে মানুষ দেখলেই শুধু তার সাথে ইচ্ছা করে ধাক্কা খাওয়া তারপর তার হাত ধরা তাই না ।
একটা বেদব ছেলে ।
ইডিয়ট ।
.
ছোঁয়া এই কথাগুলো বলেই ক্লাসে চলে গেল ।
সিরাজ ছোঁয়ার যাওয়ার পথে তাকিয়ে আছে ।
সিরাজের বন্ধুরা সিরাজকে বলছে ,,,,
.
----- দেখছছ মেয়েটার কত বড় সাহস ।
আরমান সিকদারের ছেলেকে বকা দিয়ে গেল ।
যেইখানে অন্যসব মেয়েরা এর জন্য তোর সাথে চোখ রাঙ্গিয়ে কথা বলতে পারে না সেইখানে তোকে ,,,
.
----- এর জন্যই তো ভালোবেসে ফেলেছি ।
.
এইগুলো সিরাজ ভাবছিল আর চোখের পানি ফেলছিল ।
এরপর থেকেও আরও কত পিছনে ঘুরেছে সিরাজ কিন্তু কোন লাভ হয়নি ।
সিরাজ আবার বলা শুরু করল ,,,
.
----- ড্যাডকে বলেছিলাম যে কথা বলতে তোদের বাড়িতে যেয়ে কিন্তু না তখন ড্যাড তো আমাকে পাত্তাই দেই নি ।
ড্যাড যদি আগে যেয়ে কথা বলত তাহলে আজ তুই আমার হতি ওই কনক চৌধুরির না ।
প্লিজ তাড়াতাড়ি আমার কাছে চলে আই না ।
.
সিরাজ ওই ছবিখানা নিয়ে একদম শুয়ে পড়ল ।
.
কনক ছোঁয়ার পানি মুছে দিচ্ছে কনক ছোঁয়ার কাছে আসতেছিল কিন্তু পরে আবার দূরে সরে গেল ।
তারপর বলতে লাগল ,,,
.
----- ছি ছি একি করছিলাম আমি একটা চরিত্রহীনা মেয়ের কাছে যাচ্ছিলাম ।
ছি ছি ।
.
----- আপনার কাছে যদি তাই মনে হয় যে আমি চরিত্রহীনা ঠিক আছে তাহলে আমি চরিত্রহীনা ।
কিন্তু বিশ্বাস করুন ,,,
.
----- তোমাকে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে কোনদিনও সম্ভব নয় ।
.
এই কথাগুলো বলে ফোনে কথা বলার ভান করে নিচে চলে গেল ।
কনক চলে যাওয়ার পর পরই আমেনা আসল ওদের ঘরে তারপর বলতে লাগল ,,,
.
----- আমি জানি তুই কিছুই করিস নি ।
এই বিশ্বাস আছে আমার তোমার প্রতি বউ মা ।
.
----- আম্মু আপনি ।
.
----- আমি বাইরে দাঁড়িয়ে সবই শুনছিলাম বউ মা ।
আমি জানি তুমি এমন কিছু করবে না যে তোমার চরিত্রের উপর দাগ পড়বে আর তোমার পরিবারের ।
.
----- আম্মু ,,,, আপনি যে আমাকে বিশ্বাস করতে পেরেছেন তাতেই আমি অনেক খুশি হয়েছি ।
কিন্তু উনি যে আমাকে বিশ্বাসই করতে চাচ্ছেন না ।
.
----- সেইটা তোকেই চেষ্টা করে যেতে হবে স্বামীর বিশ্বাস অর্জনের জন্য ।
ও সরি তুই করে বলে ফেললাম তোমাকে ।
.
----- আম্মু আপনি আমাকে তুই করে বলতে পারেন আপনি আমার গুরুজন ।
আর গুরুজনরা তো ছোটদের তুই করে বলতেই পারে ।
.
----- এখন এইসব চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দে ।
এখন শরীরের দিকে একটু খেয়াল রাখ ।
আর সামনে তো এক্সাম পড়াশুনাই মনযোগ দে ।
আর এখন খেয়ে নাও তো দেখি ।
.
----- আম্মু উনি কি খেয়েছেন ?
.
----- এই তো খেতে বসল ।
.
----- ও ।
.
----- এখন তুমি খেয়ে নাও তো দেখি ।
না খেলে যে আবার ,,,,
.
----- এই তো আম্মু ,,, আমি খেয়ে নিচ্ছি ।
.
ছোঁয়া খাবারের দিকে হাত এগুচ্ছে ততই হাত কাপছে ছোঁয়ার ।
আমেনা বুঝতে পেরেছে এখন ছোঁয়ার নিজ হাতে খাওয়ার শক্তি নেই ।
তাই আমেনা ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,
.
----- দাঁড়াও আমিই তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি ।
.
আমেনা ছোঁয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে ।
বিয়ের আগে ছোঁয়া যখন অসুস্থ হয়ে যেত তখন ছোঁয়ার মা ঠিক এইভাবেই খাইয়ে দিত ।
সেই কথাগুলো ভাবছে ছোঁয়া ।
একবার ছোঁয়ার খুব জ্বর হয়েছিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে ।
বিছানা থেকেও উঠতে পারছিল না ছোঁয়া ।
.
জ্বরে মুখ তেঁতো হওয়ার কারনে কিছুই খেতে পারত না ছোঁয়া ।
কিন্তু ছোঁয়ার মা নানান কথা বলে ছোঁয়াকে খাইয়ে দিত ।
শুধু এইটাই বলত ,,,
.
----- জানি এখন এইটা তোর কম্ম নই দাঁড়া আমি তোকেই খাইয়ে দিচ্ছি ।
.
তখন ছোঁয়া ও ওর মায়ের এক কথাই খেয়ে নিত ।
আজকে সেই কথাগুলো ভাবছে আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
.
আমেনা ছোঁয়াকে খাইয়ে দিয়ে ওষুধটা খাইয়ে দিয়ে নিচে চলে গেল ।
ছোঁয়া নিজেকেই নিজে বলছে ,,,
.
----- মা তো বলে গেল আমাকেই চেষ্টা করে যেতে হবে উনার বিশ্বাস অর্জনের জন্য ।
এখন আমি করব টা কি উনার বিশ্বাস অর্জনের জন্য ।
.
বিকাল হয়ে গেছে ।
অনন্যা ছোঁয়ার কাছে আসল ।
আর বলতে লাগল ,,,
.
----- ভাবি ছাদে চল না ।
.
----- কেন ?
.
----- তুমি তো এখন অসুস্থ ।
ছাদে গেলে তোমার মনটা ফ্রেশ হবে আর তোমার শরীরটা একটু সুস্থ হবে ।
.
----- ঠিক আছে চল ।
.
ওরা দুইজনে ছাদে গেল ।
অনন্যা ছোঁয়াকে বলছে ,,,
.
----- জান ভাবি কালকে না আমি ঘুরতে যাচ্ছি ।
.
----- কার সাথে ।
.
----- ওর সাথে ।
.
----- জয় কি তোমায় প্রপোজ করেছিল ।
.
----- হুম । তোমার সাথে ভাইয়ার বিয়ে হওয়ার আগে ।
.
----- আমায় আগে বল নি কেন ?
.
----- তোমাকে বললে যদি ভাইয়াকে বলে দিতে ।
.
----- ধ্যাত পাগলি তোমার ভাইয়াকে বলব কেন ?
.
রাত হয়ে গেছে ।
ছোঁয়া ওর ঘরে যাচ্ছে ।
ছোঁয়া ঘরে যেয়ে দেখে কনক বসে ল্যাপটপে কাজ করছে ।
তখনই ছোঁয়ার মনে পড়ল নিজেকেই চেষ্টা করে যেতে হবে স্বামীর বিশ্বাস অর্জনের জন্য ।
তাই ছোঁয়া বলা শুরু করল ,,,
.
----- ওফ কি মাথা ব্যথা ।
সহ্য করতে পারছি না এই যন্ত্রনা ।
আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না ।
.
তখন কনক সাথে সাথে এসে ছোঁয়াকে ধরল।
কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল ।
ছোঁয়া কনককে বলছে ,,,
.
----- প্লিজ আপনি আমার পাশে থাকেন ।
.
----- ঠিক আছে ।
.
ছোঁয়ার অনেক ভালো লাগছে অনেকদিন পর কনককে পাশে পেয়ে ।
কনক মনে মনে ভাবছে ,,,,
.
----- এর কি সত্যি মাথায় যন্ত্রনা হচ্ছে ।
পরীক্ষা করতে হবে ।
.
ঠিক তখনই কনক বলতে লাগল ,,,,
.
----- সাপ ।
.
ছোঁয়া চিৎকার করে উঠল ,,,
.
----- কোথায় সাপ ?
.
----- আপনার নাকি মাথা ব্যথা দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না ।
তাহলে এখন দাঁড়ালেন কিভাবে ?
কেন এমনটা করলেন ?
.
----- আপনাকে কাছে পাওয়ার জন্য ।
.
----- আমি তো আপনার কাছে আসতে চাই না ।
.
----- কেন ?
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৬
.
----- কেন আপনি আমার কাছে আসতে চান না ?
•
----- কারন আপনাকে আমার প্রয়োজন নেই ।
আপনার মত একটা চরিত্রহীনা মেয়েকে আমার প্রয়োজন নেই ।
•
----- আমি যে কাজটি করে নি সেই কাজ আপনি আমার উপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন ।
বিশ্বাস করুন আমি ওই কাজটি করে নি ।
•
----- আমি আপনাকে একটুও বিশ্বাস করি না ।
আপনার এই মিথ্যে কথাকে তো আমি আরও বিশ্বাস করি না ।
আপনি এখন আমার ঘর থেকে চলে যান ।
•
----- যাচ্ছি আমি ।
আপনার সামনে আর কোনদিনও আসব না মি কনক ।
•
----- হ্যা এস না আমার সামনে আজকের পর থেকে ।
•
----- হ্যা আসব না ।
যতখন না পর্যন্ত আপনি বলবেন আমি আপনার সামনে আসতে পারব ততখন পর্যন্ত আসব না ।
•
এই কথা বলে ছোঁয়া দৌড়ে চলে গেল ওই ঘর থেকে ।
এক দৌড়ে চলে গেল নিচে । তারপর বসে কান্না করতে লাগল ।
আমেনা আর অনন্যা নিচে বসে টিভি দেখছে । ছোঁয়াকে এইভাবে হঠাৎ নিচে এসে কাঁদতে দেখে অনন্যা আর আমেনা জিজ্ঞাসা করছে ,,,
•
----- কি হয়েছে ভাবি ? তুমি কান্না করছ কেন ?
•
----- কি হয়েছে বউ মা ।
কনক কি কিছু বলেছে বউমা ।
কি হয়েছে বউ মা তুমি কান্না করছ কেন ?
•
----- আমি আর কোনদিন উনার সামনে যাব না ।
•
----- আবার কি বলেছে কনক ?
আজকেও ফির তোকে সন্দেহ করে নানান কথা শুনিয়েছে ।
•
কনক নিচে এসেছে ।
একটা কাজের জন্য ।
ওর নামে এইভাবে কথা বলতে শুনে বলতে লাগল ,,,
•
----- সন্দেহ করার আর কি আছে আম্মু ।
যা করার তো অনেক আগেই করে ফেলেছে ।
•
----- অযথা তুই বউমার উপর মিথ্যে দোষ চাপাচ্ছিস ।
•
----- অযথা মানে টা কি ?
ওই ছবিগুলোই তো পরিষ্কার বলে দিচ্ছে যে ও এই কাজটি করেছে ।
•
----- আম্মু আমি কিছুই করেনি ।
শুধু শুধু উনিই আমার উপর ,,,
.
----- এখন সবার সাথে কথা বলাই বেকার ।
•
এই কথাই বলে উপরে চলে গেল ।
ছোঁয়া আবার বলা শুরু করল,,,
•
----- আমি আর উনার সামনে যাব না ।
আমি উনার সাথে আর একঘরে থাকতে পারব না ।
যতখন না পর্যন্ত উনি বলবেন আমি উনার সাথে থাকতে পারব ।
•
----- ঠিক আছে ।
আজকে তুমি অনন্যার সাথে থাক ।
•
----- হুম আম্মু ।
•
ছোঁয়া অনন্যার ঘরে গেল ।
অনন্যা ছোঁয়াকে বলছে ,,,
•
----- ভাবি তোমার সাথে কি ভাইয়ার কোন ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে ?
•
----- কই না তো ।
•
----- তাহলে ভাইয়া তোমার সাথে এইভাবে কথা বলছিল কেন ?
আর তুমিও ভাইয়ার সাথে না থাকার কথা বলছিলে কেন ?
•
----- ও কিছু না ।
আসলে আমার ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা তো আমাকে রাত জেগে পড়তে হয় ওইটাতে উনার সমস্যা তাই ওই রকম করছিলেন ।
•
----- ও ।
•
----- হুম ।
•
সিরাজ ছোঁয়ার ছবি দেখছে আর বলছে ,,,
•
----- ওই শয়তানটা যে কেন এখনও তোকে ডিভোর্স দিচ্ছে না ।
আমি যে তোকে ছাড়া আর এক মুহূর্ত থাকতে পারছি না ।
আই লাভ ইউ সো মাচ ।
•
বাইরে দাঁড়িয়ে আরমান এইসব কথা শুনছিল ।
আর মনে মনে বলছে ,,,
•
----- ওই মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য আমার ছেলেটা একদম পাগলই হয়ে গেছে ।
না তো কোন কাজ ঠিকমত করছে আর না তো ঠিক মত খাচ্ছে ।
শুধুমাত্র পথের কাঁটা হচ্ছে ওই কনক চৌধুরি ।
আমার ছেলের খুশির জন্য কনক চৌধুরিকে মারতে হয় তাহলে আমি তাই করব ।
•
ছোঁয়ার পরীক্ষার দিন চলে এসেছে ।
ছোঁয়া সেই কোন সকালে উঠেছে পড়ার জন্য ।
আজকে পরীক্ষা দেখে একটু আগেই যাচ্ছে কলেজে ।
আমেনা ছোঁয়াকে বলছে ,,,
•
----- ভালোভাবে পরীক্ষা দিস ।
•
----- জ্বি আম্মু ।
•
ছোঁয়া পরীক্ষা দিতে চলে গেল ।
পরীক্ষার সময় শুরু হয়ে গেছে ।
ছোঁয়া পরীক্ষা দিচ্ছে ।
অনেক দিন ক্লাস না করার পর অনেক কিছুই লিখতে পারছে ।
•
কনক অফিসে যাচ্ছে ।
অফিসে যাওয়ার পথে সিরাজের সাথে দেখা হল ।
কনক গাড়ি থেকে নামল ।
কনক সিরাজের সামনে যেয়ে বলছে ,,,
•
----- তুই এইখানে কি করছিস ?
•
----- তোকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে এসেছি ।
•
----- কি ?
•
----- তুই এখনও কেন ছোঁয়াকে ছেড়ে দিচ্ছিস না ?
•
----- আমার ছেড়ে দেওয়ার দরকার কি তুই এসে নিয়ে যা না ।
চিন্তে করিছ না খুব শীর্ঘই ছেড়ে দিব ।
•
----- কবে ?
•
----- আমার মনে হচ্ছে না এইখানে দাঁড়িয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে ।
গাড়িতে উঠ ।
•
----- ঠিক আছে ।
•
সিরাজ আর কনক গাড়িতে যেয়ে বসল ।
কনক গাড়ি ড্রাইভ করছে ।
আর দুইজনে কথা বলছে ।
কিন্তু ওরা দুইজনেই জানে না যে গাড়ির ব্রেক ফেইল করা আছে ।
সিরাজকে যে গাড়ি থেকে নামাবে তাও পাড়ছে না ।
•
যখন সিরাজ আর কনক রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল তখন কেউ একজন এসে গাড়ির ব্রেকফেইল করে দিয়েছে ।
আর সিরাজ এইসবের কিছু জানে না ।
কনক কিছুতেই গাড়ি কন্ট্রোল করতে পারছে না ।
সিরাজ কনককে বলছে ,,,,
•
----- কিরে গাড়ি থামাচ্ছিস না কেন ?
•
----- গাড়ি তো ব্রেকই করতে পারছি না ।
কেউ নিশ্চয়ই জেনে বুঝে গাড়ির ব্রেক ফেইল করে দিয়েছে ।
•
----- কি বলছিস টা কি তুই ?
•
ওরা এখন যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে সে রাস্তায় এখন কোন মানুষ নেই যে একটু হেল্প চাবে ।
সামনে একটা গাছ দেখা যাচ্ছে এখন ওরা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না ।
গাড়ি একদম গাছের সাথে যেয়ে ধাক্কা খেল ।
গাড়িতে একদম আগুন লেগে গিয়েছে ।
•
কনক সিরাজের মুখকে বাঁচিয়ে রেখেছে ।
কিন্তু কি আর করার সিরাজ আর নেই ।
কনকের পুরো বডি ঠিক আছে কিন্তু মুখটা জ্বলে গেছে ।
ছোঁয়ার কলমটা পড়ে গেল নিচে ।
ছোঁয়ার মনটা জানি কেমন করছে মনে হচ্ছে কারোর কোন ক্ষতি হয়েছে ।
ছোঁয়া আর কোন কিছুই লিখতে পারছে না ।
•
পরীক্ষার সময় শেষ ।
ছোঁয়া বাসাই চলে এসেছে ।
ছোঁয়া সবার সাথে নিচে বসে রয়েছে ।
কিছুখন পর কায়সার মোবাইলে ফোন আসল ।
কায়সার ফোনে কথা বলছে ।
কায়সার সাহেব বলে উঠলেন ,,,
•
----- কি ?
•
আর সাথে সাথে মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে গেল ।
ছোঁয়া কায়সার সাহেবকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
•
----- কি হয়েছে আব্বু ?
•
----- আমাদের কনক আর এই পৃথিবীতে নেই ।
গাড়িতে আগুন লেগে গেছে ।
আগুনে একদম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আমার ছেলেটা ।
কনক আর নেই ।
•
----- না এইটা কিছুতেই হতে পারে না ।
উনি আমাকে একলা ছেড়ে রেখে চলে যেতে পারেন না ।
না না এইটা কিছুতেই হতে পারে না ।
•
ছোঁয়া একদম অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে ।
আমেনা আর কায়সার ছোঁয়াকে ঘরে নিয়ে গেল ।
আমেনা কায়সারকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
•
----- আপনি বউমাকে এমন কি বললেন যে বউমা একদম অজ্ঞান হয়ে গেলেন ।
•
----- আমাদের ছেলেটা যে আর নেই গো ।
গাড়িতে আগুন লেগে ,,,
•
----- কি বলছেন টা কি আপনি ?
•
----- গাড়িতে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।
•
----- না এইটা কিছুতেই হতে পারে না ।
•
পুরো সাতদিন পর ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরল ।
জ্ঞান ফিরার পর থেকে ছোঁয়া একদম নিশ্চুপ হয়ে গেছে ।
কারোর সাথে তেমনভাবে কথা বলছে না ।
এমনকি নিজের মা বাবার সাথেও না ।
এই দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকে বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে পারেনি ছোঁয়া ।
•
সিরাজ আর কনককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এক্সিডেন্ট হওয়ার পর পরই ।
ওই রাস্তা দিয়ে কয়েকজন মানুষ যাচ্ছিল ওদেরকে ওই অবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেছে ।
•
সিরাজ তো ওইসময়ই মারা গেছে ।
কিন্তু কনক এখনও বেঁচে আছে ।
কিন্তু পুরো চেহারা জ্বলে গেছে ।
এখন কি করবে ডাক্তারটা কিছুই বুঝতে পারছে না ।
•
ডাক্তারটা কোন উপায় না পেয়ে কনককে নতুন রুপ দিল ।
•
ছোঁয়া তো কনকের জন্য পাগলামি শুরু করে দিয়েছে ।
ছোঁয়া কিছুতেই মানতে চাচ্ছে না কনক মারা গেছে ।
নিজেকে আটকিয়ে রেখে শুধু কান্না করছে ।
আর কনকের ছবি দেখে ।
•
•
•
•রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৭
.
ডাক্তাররা কনকের নতুন রুপ দিল ,,,
কিছুখন পর কনকের জ্ঞান ফিরে আসল ,,,,,
কনক জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই ছটফট করছে ,,,,,
মুখে যে ব্যান্ডেজ লাগানো হয়েছে সেটা এখনও খোলা হয় ,,,,,
নার্সরা কনকের ছটফটানি দেখে ডাক্তারকে ডাক দিল ,,,
ডাক্তাররা কনকের মুখের ব্যান্ডেজ খুলে দিল ,,,,
কনকের মাথা ব্যথা করছে দেখে কনক কিছুখন মাথায় হাত দিয়ে রাখল ,,,,,
.
তারপর আয়নার দিকে তাকাল ,,,,
আয়নার দিকে তাকানোর পর কনকের চোখ একদম বড় বড় হয়ে গেছে ,,,,,
কনকের চেহারার পরিবর্তন দেখে কনক বলতে লাগল ,,,
.
--- আমার চেহারা ,,,, আমি কি ভুল দেখছি না ,,,
আমাকে সিরাজের মত দেখতে লাগছে কেন ,,,
.
কনক অন্যদিকে তাকাল আবার আয়নার দিকে তাকাল ,,,,
আবার সেই অবাক হল ,,,
যতবারই আয়নার দিকে তাকাচ্ছে ততবারই অবাক হচ্ছে কনক ,,,
কনক আবার বলতে লাগল ,,,
.
--- কি হচ্ছে টা কি আমার সাথে ,,,,
.
ডাক্তার কনককে বলছে ,,,
.
--- ঘাবড়াবেন আপনি ,,,,
এক্সিডেন্টে আপনার পুরো মুখ জ্বলে গিয়েছিল তার জন্য আমরা বাধ্য হয়েছি আপনাকে নতুন চেহারা দিতে ,,,,
.
--- কি ,,,
আমাকে যে এই চেহারা দিয়েছেন কিন্তু এই চেহারার যে ছেলে আমার সাথে ছিল সিরাজ তার কি হয়েছে ডক্টর ,,,
.
--- আই এম সো সরি হি ইস ডেথ ,,,,
.
--- হোয়াট ,,,
আমি কি সিরাজের সাথে দেখা করতে পারি ,,,,
.
--- ইয়াহ সিউর ,,,,
.
ডক্টর কনককে সিরাজের লাশের কাছে নিয়ে গেল ,,,,
কনক সিরাজের এই অবস্থা দেখে বলছে ,,,
.
--- কে জেনে বুঝে আমার গাড়ির ব্রেক ফেইল করে দিয়েছে ,,,,
আমি যে একদিন বাড়িতে যাই নি তার জন্য বোধ হয় সবাই আমাকে নিয়ে টেনশন করা শুরু করে দিয়েছে ,,,,
বিশেষ করে ছোঁয়া ,,,,
আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে ,,,,,
আর মোটেও দেরি করা চলবে না ,,,,,
.
ছোঁয়া চুপ করে বসে রয়েছে ওর ঘরে ,,,,,
কনকের ছবি সামনে নিয়ে বসে রয়েছে ,,,,
আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ,,,,,
এই বার ছোঁয়া বলতে লাগল ,,,,
.
--- কেন আপনি আমাকে এইভাবে একা রেখে চলে গেলেন ,,,,
আপমার কি একবারও মনে হয় নি যে আপনি না থাকলে আমার অবস্থাটা কি হবে ,,,,,
যেইখানে থাকুন না কেন কনক আমাকে প্লিজ এসে নিয়ে যান কনক ,,,,
আপনাকে ছেড়ে থাকা অসম্ভব ,,,,,
একবারও আপনার ভুল ভাঙ্গানোর সুযোগ দিলেন না আমাকে ,,,,,
প্লিজ আপনি আবার আমার কাছে ফিরে আসুন কনক ,,,,
আপনি আমাকে বকুন আর অত্যাচারই করুন আমার কোন সমস্যা নেই ,,,,
আমি সব কিছু সহ্য করে যাব ,,,,,
প্লিজ ফিরে আসুন ,,,,,
.
এই কথাগুলো বলে জোরে জোরে কান্না করতে লাগল ,,,,
কনক আসতেছে ওর গন্তব্যে ,,,,
আজও কি কনক পৌছাতে পারবে কনক ,,,,
.
যে রাস্তা দিয়ে কনক হেঁটে বাসায় ফিরছিল ,,,,,,
ওই রাস্তা দিয়েই আরমান সিকদার গাড়ি দিয়ে অফিসে যাচ্ছিল ,,,,,,,
ঠিক তখনই কনককে দেখে ,,,,,,
কনককে দেখে ভাবে সিরাজ কারন কনককে সিরাজের চেহারা দেওয়া হয়েছে ,,,,,,
আরমান সিকদার গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে কনকের কাছে যেতে লাগল ,,,,,,
কনকের কাছে যেয়েই বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- সিরাজ মাই সান ,,,,,,
তুমি কোথায় ছিলে ,,,,,
তোমার জন্য তো গুড নিউজ আছে তো ,,,,,
তুমি আগে বাসাই চল তো তারপর বলছি তোমাকে গুড নিউজটা ,,,,,
.
আরমান সিকদার কনককে একটা কথাও বলতে দিল না ,,,,,,
কনককে জোর করে নিয়ে গাড়িতে বসাল ,,,,,,
এমনকি গাড়িতেও কোন কথা বলতে দিল না কনককে ,,,,,,,
আরমান সিকদার কনককে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেল ,,,,,
সিরাজের মা পাগলের মত ছুটতে ছুটতে কনকের কাছে গেল আর বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- তুই কোথায় গেছিলে রে ,,,,,
কাউকে কোন কিছু না বলেই ,,,,,
কত চিন্তা হচ্ছিল আমার ,,,,,
একবার তো ফোন করে বলতেও পারতি ,,,,,
কি রে কথার উত্তর দিচ্ছিস না কেন ,,,,,,
.
--- আরে তুমি কি ছেলেটাকে পাগল করে দিবে নাকি ,,,,,,,
পরে কথা বল ছেলেটার সাথে ,,,,,,,
আগে ছেলেটাকে একটু রেস্ট নিতে দাও ,,,,,,
.
আরমান তার ওয়াইফ কে ঘরে পাঠিয়ে দিল ,,,,,,,
তারপর কনকের কানে কানে বলছে ,,,,,,
.
--- তুমি তোমার ঘরে যাও রেস্ট নাও তারপর তোমাকে গুড নিউজটা দিচ্ছি সিরাজ ,,,,,,,
আগে আমি তোমার মাকে একটু সামাল দিয়ে আসি ,,,,,,,
.
কনক কিছু বলার আগেই আরমান সিকদার ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,,,
কনক তো সিরাজের রুমও চিনে না ,,,,,,
কি করে যাবে সিরাজের রুমে ,,,,,,,
সিরাজের বাসাই যে লোকটি কাজ করে সে ওইখান দিয়ে যাচ্ছিল ,,,,,,
কনক সেই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,,,,,,
.
--- এই যে হ্যালো আমার ঘরটা কোথায় ,,,,,,,,
.
--- কি ছোট সাহেব আপনি আপনার রুমও ভুলে গেছেন নাকি উপরে উঠে রাইটে ,,,,,,,
আপনি একটা ডাক্তার দেখান ,,,,
.
--- আই এম জোকিং ,,,,,,,,
আমার মনেই ছিল ,,,,,,
.
এই কথা বলে কনক সিরাজের রুমে ঢুকল ,,,,,
সিরাজের রুমে ঢুকার পর কনক তো পুরাই অবাক ,,,,
সারা ঘরে শুধু ছোঁয়ার ছবি লাগানো ,,,,,,,
কনকের গাটা একদম জ্বলে উঠল ,,,,,,
.
কনকের শরীরটা অনেক দূর্বল তাই শুয়ে পড়ল ,,,,,
আর মনে মনে বলছে ,,,,,,
.
--- আমাকে দেখতে না পেয়ে আম্মু আব্বু আর অনন্যা যে কি অবস্থা ,,,,,,
বিশেষ করে ছোঁয়ার অবস্থা ,,,,,,,
আমাকে এইখান থেকে বের হতে হবে ,,,,,,
কিন্তু কি করে বের হব সবাই তো আমাকে সিরাজ ভাবছে ,,,,,,
আম্মু আব্বুও তো আমাকে চিনবে না ,,,,,
ছোঁয়াও তো আমাকে চিনতে পারবে না ,,,,,,,
.
ছোঁয়া কনকের ছবি জড়িয়ে ধরে কান্না করছে ,,,,,,
অনন্যা আসল ছোঁয়ার কাছে ,,,,,
ছোঁয়াকে এইভাবে কাঁদতে দেখে বলছে ,,,,,,
.
--- ভাবি তুমি এইভাবে আর কেঁদ না ,,,,,
যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না তো ,,,,,
.
--- তোমার ভালোবাসার মানুষটি যদি তোমায় ছেড়ে চলে যাও তখন তোমার অবস্থাও আমার মত হবে ,,,,
তখন তুমি একদম নিশ্চুপ হয়ে যাবে ,,,,
কারোর সাথেই কথা বলতে ভালো লাগবে না ,,,,,
.
অনন্যা আর কথা বলতে পারছে না ,,,,,
আমেনা অনন্যাকে বলছে ,,,
.
--- তুই এইখানে কি করছিস ,,,,,
ভাবিকে একটু শান্তিতে থাকতে দে যা ,,,,
.
--- হুম যাচ্ছি ,,,,
.
অনন্যা চলে গেল ,,,,
ছোঁয়া বলছে ,,,,,
.
--- আম্মু তুমি কি কিছু বলবে ,,,,,
.
--- কালকে থেকে কিছুই খাসনি এখন তো কিছু খেয়ে নে ,,,,,
.
--- না আম্মু আমি খাব না ,,,,
আমি উনার কাছে যাব ,,,,
.
--- ধ্যাত পাগলি এইসব কি বলছিস ,,,,,
এইগুলো বলতে নেই ,,,,
.
--- তো কি বলব ,,,,,
.
ছোঁয়া কান্না করতে লাগল ,,,,,
.
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৮
.
ছোঁয়া শুধু কান্নাই করেই যাচ্ছে ,,,,,,,,
কিছুতেই থামাতে পারছে না এই কান্না ,,,,,,,,,
আমেনা ছোঁয়ার কান্না সহ্য করতে না পেরে নিজেও কান্না করতে করতে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেলেন ,,,,,,,
আমেনা ঘর থেকে বের হয়েই বলতে লাগলেন ,,,,,,,
.
--- ছেলেটা চলে যাওয়ার পর পরই মেয়েটার অবস্থা একদমই খারাপ হয়ে গেছে ,,,,,,,
আমরা মেয়েটাকে একটুও সামলিয়ে রাখতে পারছি না আর একটু মুখে হাসি ফোটাতেও পারছি না ,,,,,,,
আল্লাহ তুমিই এখন পার মেয়েটার মুখে হাসি ফেরাতে ,,,,,,
.
কনক সিরাজের রুমে শুয়ে একটু রেস্ট নিচ্ছে ,,,,,,,
কারন এক্সিডেন্ট হওয়ার পর থেকে একটু রেস্টও নিতে পারেনি ছেলেটা ,,,,,,,
একটু পরে আরমান সিকদার হাসতে হাসতে আসলেন সিরাজের ঘরে ,,,,,,,,
আর বলতে লাগলেন ,,,,,,,,
.
--- গুড নিউজ আছে মাই সান ,,,,,,
গুড নিউজ ,,,,,,,
.
--- কি গুড নিউজ আছে সেটাই তো বলছেন না ,,,,,,,
সেই কখন থেকে গুড নিউজ আছে বলে বলে লাফাচ্ছেন ,,,,,,,,
.
--- দাঁড়াও বলছি ,,,,,,,
.
--- বলেন তাড়াতাড়ি ,,,,,,,
.
--- তোমার পথের কাঁটা কনক চৌধুরি আর বেঁচে নেই ,,,,,,,
জান তাও আবার কে মেরেছে ওই কনককে ,,,,,,,,
আমি মেরেছি ,,,,,,,
শুধু তোমার খুশির জন্য মাই সান ,,,,,,,
.
--- কি ,,,,,,,
.
--- তোমার আইডিয়াতে কনক একটু দূরে সরে গিয়েছিল ছোঁয়ার জীবন থেকে ,,,,,,
আর আমার এই আইডিয়া পুরোপুরি দূরে সরিয়ে দিয়েছে ছোঁয়ার জীবন থেকে তোমার ছোঁয়ার জীবন থেকে ,,,,,,,
তুমি যদি ওইসময় মিথ্যে পিক গুলো না বানিয়ে ওই কনকের কাছে না পাঠাতে তাহলে কনককে দূর্বল করা সহজ হত না ,,,,,,,
এর জন্য মারাটা সহজ হয়ে উঠেছিল ,,,,,, ,,
আপদটা গাড়ির মধ্যে আগুন লেগে পুরে ছাই হয়ে গেছে ,,,,,,,,
গুড নিউজ তাই না মাই সান ,,,,,,,,,
.
কনক এই কথাগুলো শুনে আর কিছুই বলতে পারছে না ,,,,,,,,
আরমান সিকদার সিরাজের ঘর থেকে চলে গেলেন ,,,, ,,,,
কনকের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে , ,,,,,,,,,
আর নিজেই নিজেকেই বলছে ,,,,,,,
.
--- ছি আমি ছোঁয়ার মত একটা সতী মেয়েকে অসতী মেয়ে বানিয়ে দিয়েছিলাম ,,,,,,,
আমার এই পাপের জন্য আমার কোন ক্ষমা নেই ,,,,,,,
আমি শুধু শুধু মেয়েটার উপর সন্দেহ করছিলাম ,,,,,,,
ভুল বুঝে এত কষ্ট দিয়েছি ,,,,,,
ছি নিজেকেই ধিক্কার জানাই ,,,,,,,,
আমার মরে যাওয়ার খবর শুনে আল্লাহ জানে মেয়েটার অবস্থা টা যে কি হয়েছে ,,,,,,,
আমার একবার ছোঁয়ার সাথে দেখা করা উচিৎ ,,,,,,,
ছোঁয়া বোধ হয় আবার না খাওয়া শুরু করে দিয়েছে ,,,,,,,
.
কনক ঝটফটিয়ে বের হয়ে চলে যাচ্ছে ,,,,,,,,
আর বারবার চোখের পানি মুছছে ,,,,,,,,
যাওয়ার পথে সিরাজের মার সাথে দেখা হল ,,,,,,,
এইভাবে ঘর থেকে বের হতে দেখে বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- তুই আবার এখন কোথায় যাচ্ছিস ,,,,,,,,
এই মাত্র তো বাসাই আসলি ,,,,,,,
খেয়ে যা কিছু ,,,,,,,,
.
--- আমার জরুরি কাজ আছে ,,,,,,,
আমার এখন খিদে নেই ,,,,,,,,
.
কনক আর কারোর কোন কথা না শুনে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেল ,,,,,,,,
সিরাজের বাইকটা নিয়ে বের হয়ে গেল ,,,,,,,
.
ছোঁয়া কারোর সাথে একটুও কথা বলে না ,,,,,,,
নিজেকে বন্দি করে রাখে একটা ঘরে ,,,,,,,
অনন্যা আসল ছোঁয়ার ঘরে ,,,,,,,,
ছোঁয়ার পাশে এসে বসল ,,,,,,,,
ছোঁয়ার হাতটা ধরে বলতে লাগল ,,,,,,,
.
--- ভাবি তুমি আর কতদিন নিজেকে এইভাবে ঘরবন্দি করে রাখবে ,,,,,,,,
একটু বাইরে ঘুরতে চল না ,,,,,,,
কত সুন্দর মৌসুম ,,,,,,,
ভাবি তুমি না কর না ,,,,,,,
আম্মুও বলছে তুমি যেন কোথাও যেয়ে ঘুরে এস ,,,,,,,
.
--- আমার কোথাও যাওয়ার কোন মোড নেই ,,,,,,,
.
--- প্লিজ ভাবি ,,,,,,,
প্লিজ তুমি না কর না ,,,,,,,
শুধু মাত্র তো এই পার্কেই যাব তো ভাবি ,,,,,,
প্লিজ তুমি না কর না ,,,,,, ,
প্লিজ প্লিজ প্লিজ ,,,,, ,
.
--- ঠিক আছে আমি যাব ,,,,,,,,,
.
--- তাহলে তুমি রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি আমিও রেডি হয়ে আসছি ,,,,,,,,
.
--- হুম ,,,,,,,,
.
ছোঁয়া রেডি হওয়ার জন্য আলমারির সামনে গিয়ে দাঁড়াল ,,,,,,,
আলমারি থেকে শাড়ি বের করতে লাগল ,,,,,,,,
ছোঁয়া কোন ভালো শাড়িই খুজে পাচ্ছে না পড়ার জন্য ,,,,,,,
হঠাৎ ছোঁয়ার চোখ আটকে গেল একটা শাড়ির উপর ,,,,
শাড়িটার রং সাদা ,,,,,,,
শাড়িটা ভালোবেসে কনক ছোঁয়াকে দিয়েছিল ,,,,,,,
তাও আবার ছলে ,,,,,,,,,
শাড়িটা দেওয়ার পর থেকে ছোঁয়া একবারও এই শাড়িটা পড়ার সুযোগ পাইনি ,,,,,,,
আজকে সে সুযোগ পেয়েছে ছোঁয়া ,,,,,,,,
ছোঁয়া আজকে ঠিক করল এই শাড়িটা পড়বে ,,,,,,,
.
ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে এই শাড়িটা পড়ে নিল ,,,,,,,
কিন্তু ছোঁয়া একটুও সাঁজল না ,,,,,,,,
যার জন্য যে সাজবে সে তো এখন নেই ছোঁয়ার পাশে ,,,,,,,
এখন সেজে কি করবে ছোঁয়া ,,,,,,,
.
অনন্যা একটু পরে আসল ছোঁয়ার ঘরে ,,,,,,
ছোঁয়াকে দেখে অনন্যা একটু অবাক হল ,,,,,,,
আর ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- ওয়াও ভাবি তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে ,,,,,,,,
আর বিশেষ করে তোমার এই শাড়িটা অনেক সুন্দর ,,,,,,,,
এই শাড়িটা তোমায় ভাইয়া দিয়েছিল তাই না ,,,,,,,
.
--- হুম ,,,,,,,,
.
--- আজকে প্রথম এই শাড়িটা তুমি পড়লে তাই না ,,,,,,,
.
--- হুম ,,,,,,
.
--- তাহলে চল ভাবি ,,,,,,,
.
ছোঁয়াকে নিয়ে অনন্যা বের হয়ে গেল ,,,,,,,
ওরা যাচ্ছে গাড়িতে সামনে একটা আইসক্রিমের দোকান পড়ল ,,,,,,,
এই আইসক্রিম নিয়ে কত কাহিনি ঘটেছিল কনকের সাথে লন্ডনে ,,,,,,
সব কিছু মনে করতে লাগল ছোঁয়া ,,,,,,
অনন্যা খেয়াল করল ছোঁয়া আইসক্রিমের দোকানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ,,,,,,,
.
তখনই অনন্যা মনে পড়ল ভাবির তো আইসক্রিম খুব পছন্দ ,,,,,,,
অনন্যা ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলল ,,,,,,
তারপর ছোঁয়াকে গাড়ি থেকে নামল ,,,,,,,
ওই আইসক্রিমের দোকানের সামনে নিয়ে গেল ,,,,,,,
ছোঁয়াকে দোকানের সামনে নিয়ে বসাল ,,,,,,
কেউ একজন পিছন থেকে বলে উঠল ,,,,,,
.
--- তোমরা এইখানে কি করছ ,,,,,,
.
অনন্যা পিছনে তাকিয়ে দেখে জয় ,,,,,,
অনন্যা বলতে লাগল ,,,,,
.
--- আপনি ,,,,,,
.
জয় ওদের কাছে চলে আসল ,,,,,,
আর বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- হঠাৎ এইখানে তাও আবার আইসক্রিমের দোকানের সামনে ,,,,,
তুমি তো বেশি আইসক্রিম পছন্দ কর না ,,,,,
.
--- ভাবির জন্য এসেছি ,,,,,
ভাবিকে নিয়ে একটু ঘুরতে ,,,,,,
ভাইয়া চলে যাওয়ার পর থেকে ভাবি কেমন যেন হয়ে গেছে কারোর সাথে ঠিক মত কথাও বলে না ,,,,,,
তাই ভাবিকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছি ,,,,,,
আর ভাবির খুব আইসক্রিম প্রিয় ,,,,,,
.
--- ও ,,,,,,
.
অনন্যা তিনটি আইসক্রিমের অর্ডার দিল ,,,,,,,
ছোঁয়ার তো শুধু কনকের কথা মনে পড়ছে ,,,,,,
আর শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ,,,,,
.
ওই রাস্তা দিয়ে সিরাজের বাইক নিয়ে কনক যাচ্ছিল ,,,,,,,
আইসক্রিমের দোকানে চোখ পড়তেই ছোঁয়াকে দেখতে পেল ,,,,,,
তারপর বাইকটা থামাল ,,,,,,
প্রানভরে ছোঁয়াকে দেখছে আর কনকের মন চাচ্ছে ছোঁঁয়াকে জড়িয়ে ধরতে ,,,,,,
কনকের দেওয়া শাড়ি টা দেখে আরও বেশি খুশি হল ,,,,,
আর বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- অনেক সুন্দর লাগছে ছোঁয়াকে ,,,,,,
বার বার শুধু ওকে দেখতে মন চাচ্ছে ,,,,,,,
কিন্তু কান্না কান্না করতে করতে নিজের কি হাল বানিয়েছে ,,,,,,
তোমার এই অবস্থা দেখতে আমি আর পারছি না ,,,,,
এখনি মন চাচ্ছে জড়িয়ে ধরে বলি আমি তোমার কনক ,,,,,,
.
ছোঁয়ারা বেশিখন আর আইসক্রিমের দোকানে বসে থাকল না ,,,,,,
গাড়িতে নিয়ে বসাল ,,,,,
পার্কের দিকে যাচ্ছে ,,,,,,
কনক ওদের পিছু নিল ,,,,,,
.
ওরা পার্কে এসে পৌছাল ,,,,,
গাড়ি থেকে নামল ,,,,,,
জয় আর অনন্যা কত কথা বলছে ,,,,,,,
কিন্তু ছোঁয়ার কিছুই ভালোই লাগছে না ,,,,,,
.
ছোঁয়া একটা বেঞ্চে এসে বসল ,,,,,
কনক শুধু ছোঁয়ার পিছু নিচ্ছে ,,,,,,
আর ছোঁয়াকে আড় চোখে দেখছে ,,,,,,
ছোঁয়া সেটা খেয়াল করল ,,,,,
ছোঁয়া ভাবছে সিরাজ ওকে ফলো করছে ,,,,,,
.
তাই ছোঁয়া ওইখানে গেল আর শার্টের কলার ধরে বলতে লাগল ,,,,,
.
--- তুই আবার আমার পিছু নিচ্ছিস ,,,,,,
তোর কারনে আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি ,,,,,,
আমি তোকে ছাড়ব না ,,,,,,,
তোকে আমি শেষ করে দিব ,,,,,,
.
কনক নিজেকে ছুটিয়ে ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,,
তারপর বাইকের কাছে চলে গেল ,,,,,,
বাইকটা নিয়ে ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,
.
ছোঁয়াকে এইভাবে উত্তেজিত হতে দেখে অনন্যা আর জয় ছোঁয়াকে নিয়ে বাড়িতে চলে গেল ,,,,,,
ছোঁয়া বাড়িতে এসে এক দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গেল ,,,,,
আবার কান্না শুরু করে দিল ,,,,,
.
কনকও সিরাজদের বাসায় চলে এসেছে ,,,,,,,
কারোর সাথে কোন কথা না বলে সোজা রুমে চলে গেল ,,,,,,
আর দরজাটা ভিতর থেকে আটকে দিল ,,,,,
কনকের চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছে ,,,,,,
কনক বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- আমার ছোঁয়ার অবস্থাটা কি হয়েছে ,,,,,,
সব কিছু হয়েছে ওই আরমান সিকদারের জন্য ,,,,,,
আরমান সিকদার আমি তো তোমায় ছাড়ব না ,,,,,,
.
ছোঁয়া তো ওর রুমে বসে কান্না করছে ,,,,,
আমেনা নিচে বসে রয়েছে ,,,,,
প্রতিবেশিরা এসেছে এইখানে ,,,,,,
একজন বলে উঠল ,,,,,,
.
--- এত অল্প বয়সে বিধবা হয়েছে তাই তো এইরকম করছে ,,,,,,
আমার মনে হয় কি মেয়েটাকে আবার বিয়ে দিয়ে দিন ,,,,,
তাহলে সব ঠিক হয়ে যাব ,,,,,
.
--- বিয়ে দিলেই কি সব ঠিক হয়ে যাবে ,,,,,
মেয়েটা আবার হাসতে পারবে ,,,,,
.
--- হুম ,,,,,
.
--- তাহলে তাই করব ,,,,,
একবার বিয়াই আর বিয়াইন এর সাথে কথা বলতে হবে ,,,,,,,,
উনার সাথেও কথা বলতে হবে ,,,,,
.
.
.রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:শেষ
.
কায়সার সাহেব আসলেন একটু পরে ,,,,,,,
কায়সার সাহেব উপরে যেয়ে ফ্রেস হয়ে আসলেন ,,,,,,,
তারপর নিচে এসে বসলেন ,,,,,,
টিভি তে দেশ বিদেশের সংবাদ শুনতে লাগল ,,,,,,,
আমেনা আসল কায়সার সাহেবের কাছে ,,,,,,,
একটা কাশি দিয়ে বলতে লাগলেন ,,,,,,
.
--- শুনছেন আপনাকে একটা কথা বলার ছিল ,,,,,,
.
--- বল কি কথা ,,,,,,,
.
--- আমাদের মনে হয় ছোঁয়ার আবার বিয়ে দেওয়া উচিৎ ,,,,,,
এই অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়েছি সেই শকটা কিছুতেই নিতে পারছে না ,,, ,,
আর মেয়েটার বয়সই বা কত হয়েছে মাত্র ১৮ ,,,,,,,
মনে হয় আবার বিয়ে দেওয়া উচিৎ ,,,,,,
যদি আগের মত স্বাভাবিক হতে পারে ,,,,,,
.
--- তুমি তো ঠিকই বলেছ আমেনা ,,,,,,
কিন্তু আমরা এই বিষয়ে কি করতে পারি বল ,,,,,,
ছোঁয়ার মা বাবার সাথে কথা বলা উচিৎ ,,,,,
.
পিছনে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো ছোঁয়া শুনছিল ,,,,,,
তারপর জোরে করে বলতে লাগল ,,,,,,
.
--- না আমি আর দ্বিতীয় কোন বিয়ে করব না ,,, ,,,,
.
--- বউ মা একবার কথা শুন আমার ,, ,,,
.
--- না আম্মু ,,,,,
না আমি বিয়ে করব না ,,,,,
আমাকে বিয়ে করিয়ে দিয়ে এই বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাচ্ছেন ,,,,,
.
--- না না বউমা তুমি আমাদেরকে ভুল বুঝছ ,,,,,
আমরা শুধু চাচ্ছি তুমি যেন শান্তিতে সুখে সংসার করতে পার বউমা ,,,,,
এর জন্যই চাচ্ছি তুমি দ্বিতীয় একটা বিয়ে কর বউ মা ,,,,,
.
--- আব্বু ,,,,,,
.
--- বল না বউমা তুমি বিয়ে করবে ,,,,,
আমরা শুধু তোমার মুখে একটু হাসি দেখতে চাই বউমা ,,,,,
.
--- ঠিক আছে আব্বু ,,,,
ঠিক আছে আম্মু ,,,,,
আমি এই বিয়েটা করব ,,,,,,
.
ছোঁয়া এই কথাটা বলে উপরে উঠে চলে গেল ,,,,,
আর কাঁদতে লাগল ,,,,,
পরের দিন সকাল বেলা উনারা ছোঁয়ার মা বাবা কে ডাকলেন আর এই বিষয়ে কথা বলতে লাগলেন ,,,,,
কায়সার সাহেব ছোঁয়ার বাবাকে বলছে ,,,,,
.
--- আমরা চাই ছোঁয়া সেই আগের জীবনটা ফিরে পাক ,,,,
সেই আগের মত হাসি খুশি ,,,,,
যে সবার সাথে মিশত কথা বলত ,,,,,
এর জন্য আমরা চিন্তা ভাবনা করছি ছোঁয়ার আর একবার যদি বিয়ে দেওয়া যাই ,,,,
তাহলে মেয়েটা বোধ হয় আগের জীবন ফিরে পেতে পারে ,,,,,
এখন শুধু আপনারা কি চান সেটা জানার বাকি ,,,,,
.
--- আমরাও ঠিক এই কথাটাই আপনাদেরকে বলতে চাচ্ছিলাম আর আপনিই এই কথাটা বলে দিয়েছেন এখন শুধু একটা স্বস্তি পেলাম ,,,,,,
এখন শুধু পাত্র খুঁজতে হবে ,,,,,
.
--- হুম ,,,,,
.
এখন সবাই ছোঁয়ার জন্য ভালো একটা ছেলে খুঁজছে ,,,,,
এইটা আবার আরমান সিকদার জানতে পারল ,,,,,
এখন আরমান সিকদার তো অনেক খুশি ,,,,,
নাচতে নাচতে বাসাই গেলেন ,,,,,
তারপর সিরাজের রুমে গেলেন ,,,,,
কনককে বলতে লাগল ,,,,,
.
--- আর একটা গুড নিউজ আছে মাই সান ,,,,
.
--- কি ???
.
--- ছোঁয়ার আবার বিয়ে দিতে চাই ওর পরিবার ,,,,,
কনক চৌধুরির মা বাবা ,,,,,
আমি ভাবতেছি তোর জন্য কথা বলতে যাব ,,,,,
ভাবতেছি কালকেই কথা বলতে যাব সবাই ,,,,
তুই রেডি থাকিস ,,,,,
.
কনক মনে মনে বলছে ,,,,,
.
--- কালকেই একটা সুযোগ এই আরমান সিকদারকে সাজা দেওয়ার ,,,,,
আজকে যে করেই হোক একটা ভিডিও বানাতে হবে এর যে আরমান সিকদার কনক চৌধুরিকে মেরেছে ,,,,,
না না আমাকে মারতেই পারে নি ,,,,,
মেরেছে তো নিজের আপন ছেলেকেই ,,,,,
এখন আমাকেই কিছু একটা করতে হবে ,,,,,
আরে সিরাজ তো অনেক সময় অনেক কথাই ভুলে যাই ,,,,,
এই অসুখটাকেই কাজে লাগাতে হবে ,,,,,
.
মোবাইল হাতেই ছিল ক্যামেরা চালু করে কথাগুলো ভিডিও করতে লাগল ,,,,,
কনক আরমান সিকদারকে বলছে ,,,,,
.
--- ড্যাড কনক চৌধুরি মারা গেল কিভাবে ,,,,,
হাউ ,,,,
.
--- আরে সেইদিনই তো বললাম আমি মেরেছি ,,,,,
গাড়ির ব্রেকফেইল করে দিয়ে ,,,,,
আপদটা বিদেয় হয়েছে ,,,,
.
--- ও ভুলেই গেছিলাম ,,,,
.
আরমান সিকদার ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেলেন ,,,,,
কনক ভিডিওটা সেভ করে রাখল ,,,,
কনক মনে মনে বলছে ,,,,
.
--- কালকে যেন সফল হতে পারি যে ,,,,
আমার ছোঁয়াকে আবার হাসি খুশি রাখতে পারি ,,,,,,
.
কনক শুধু কালকে সকালের অপেক্ষায় রয়েছে ,,,,,
ছোঁয়া কনকের ছবি বুকে জড়িয়ে নিয়ে কান্না করছে ,,,,,
আর বলছে ,,,,,
.
--- কেন যে আপনি আমাকে একা ফেলে রেখে চলে গেলেন ,,,,,
আমাকে সাথে করে নিয়ে যান ,,,,,
আপনাকে ছেড়ে থাকতে আর পারছি না কনক ,,,,
.
ছোঁয়া কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে টেরই পাই নি ,,,,,
সকাল হয়ে গেছে ,,,,
আরমান সিকদার কালকেই কনকের মা বাবাকে ফোন করে বলে রেখে দিয়েছে ,,,,,
তাই এত আয়োজন করা হয়েছে ,,,,,
.
অনন্যা সেই কখন থেকে ছোঁয়াকে সাজাতে বসেছে ,,,,
কিন্তু ছোঁয়ার মন যে কিছুতেই ভালো নেই শুধু কনকের দিকে রয়েছে ,,,,,
একটু পরে ওরাও এসে পড়ল ,,,,
ঘরে নিয়ে এসে সোফায় বসান হল ,,,,
.
কনক অনেকদিন পর ওর মা বাবাকে দেখতে পেল ,,,,
এখনই শুধু কনকের বারবার বলতে মন চাচ্ছে আমিই তোমাদের ছেলে কনক ,,,,,
কনক সবাইকে দেখতে পেল কিন্তু এখনও ছোঁয়াকে দেখতে পেল না ,,,,
.
একটু পরে ছোঁয়াকে নিয়ে আসা হল ,,,,,
সকলের সামনে বসিয়ে দেওয়া হল ,,,,,
কনকের মনটা একটু শান্তি পেল ,,,
আরমান সিকদার কোন কিছুই বলার আগেই কনক বলতে লাগল ,,,,
.
--- আমি না আপনাদেরকে একটা জিনিস দেখাতে চাই ,,,,,
.
এই কথা বলেই টিভির সামনে গেল ,,,,
কালকে রাতে যা ভিডিও করেছে সব দেখাবে ,,,,
তারপর টিভির সাথে কানেকশন করিয়ে দিল ,,,,,
.
সকলের সামনে সেই ভিডিওটা তুলে ধরল কনক ,,,,,
সবাই তো দেখে অবাক ,,,,
আরমান সিকদার দাঁড়িয়ে বলছে ,,,,,
.
--- তুমি এইটা কি করলে সিরাজ ,,,,
তুমি ,,,,
.
--- এই হ্যালো আরমান সিকদার আমি সিরাজ না ,,,,,
আমিই কনক চৌধুরি ,,,,
তোমার ছেলেই মারা গেছে ,,,,
কারন তোমার ছেলে আমার সাথে ছিল ,,,,,
.
--- কি ???
.
--- ইয়েস ,,,,
আমি সিরাজ না আমি কনক চৌধুরি ,,,,,
.
ছোঁয়া এই কথাগুলো শুনার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল ,,,,,,
কনক ছোঁয়াকে কোলে করে নিয়ে উপরে নিয়ে গেল ,,,,,,
আর বাকিরা সবাই পুলিশকে খবর দিল ,,,,
আর আরমান সিকদারকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেল ,,,,
.
কনক ছোঁয়ার পাশে বসে রয়েছে ,,,,,,
ছোঁয়ার কিছুখন পর সেন্স ফিরল ,,,,,,,
ছোঁয়া কাঁদতে কাঁদতে কনককে বলছে ,,,,,,
.
--- আমি যখন আপনার শার্টের কলারে ধরে ওই কথাগুলো বলছিলাম তখন কেন আপনি আমাকে বলেননি আপনিই কনক ,,,,,
.
--- তখন বললে আপনি বিশ্বাস করতেন না ,,,,
.
ছোঁয়া কনককে জড়িয়ে ধরল ,,,
কনকও জড়িয়ে ধরল ,,,,
ইচ্ছামত কিস করতে লাগল গাড়ে ,,,,,,
.
সমাপ্ত ,,,,