সেলফিশ..(ঈদ স্পেশাল)
Write : Sabbir Ahmed
____________________________
-বস আমার বেতন টা??(শুভ)
-এখন হবে না
-কেনো বস?
-এই করোনার মধ্যে বেতন চাও কিভাবে?
-বস আমাদেরও তো পেট চালাতে হবে
-বসিয়ে রেখে তোমাদের তিন মাস বেতন দিয়েছি। এখন দিতে পারবো না, কাছে টাকা নেই
-বস ঈদ এর খরচ টা যদি দিতেন, মানে বেতন এর অর্ধেক যদি দেন..
-আরেকটা কথা বললে চাকরি আউট
-না বস ঠিক আছে টাকা লাগবে না, স্যার ঈদ এ আমাদের বাসায় দাওয়াত রইলো আসবেন
,,
,,
শুভ মন খারাপ করে বাইরে চলে আসলো। আজকে কাজের শেষ দিন ছিলো। বেতন না দেওয়ায় তার মন একদম খারাপ হয়ে গেছে।
,,
রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলো তখনই তার জি এফ ইরার ফোন।
শুভ কল রিসিভ করলো...
-কই তুমি?? (ইরা)
-এইতো বাসায় যাচ্ছি(শুভ)
-তোমার কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেনো?
-কই না তো ঠিক আছে এইতো এহমম এহমমম উহুমমমমম
-তুমি ঠিক আছো?
-হ্যা একদম ঠিক
-হুমম কাল তো সারাদিন ফ্রি তাই না?
-হ্যা
-আমার সাথে দেখা করতে হবে
-চেষ্টা করবো
-চেষ্টা না দেখা করতে হবে
-আচ্ছা। কি করো?
-এইতো রান্না করছি
-রান্না করো আমি তাহলে বাড়ি যাই?
-হুমম দেখে যেয়ো আর ঘুমানোর আগে অবশ্যই কল করবা
-আচ্ছা
,,
,,
শুভ বাসায় চলে আসে। প্রথমে দেখা করে মায়ের সাথে।
-বেতন তো দিলো না, আর ঈদ বাজার ও তো করা হয় নি (শুভ)
-হ্যা (শুভর মা)
-আচ্ছা আমি ব্যবস্থা করবো নি চিন্তা করো না আমাকে খেতে দাও
-হাত মুখ ধুয়ে আয়
-আচ্ছা সীমা,রবিন ওরা কই?
-ওরা তো ঘুমাচ্ছে
-হুমমম
,,
,,
রাতের খাওয়া শেষ করে শুভ তার রুমে এসে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে। কিছু একটা নিয়ে সে খুব টেনশনে আছে। সে বিড় বিড় করে বলূ শুরু করলো...
-টাকা তো ম্যানেজ হলো না, এখন আমি বা কি কিনবো ইরা কেই বা কি দিবো। গত ঈদে কিচ্ছু দেই নি এবারও একই অবস্থা। কাল দেখা হলে মাফ চাইতে হবে। আর আমার কেনাকাটার টাকা গুলো দিয়ে ঈদ এর বাজার করতে হবে। এখন একটু ওকে কল দেই (শুভ)
,,
শুভ ইরাকে কল করলো..
-হ্যা বলো (ইরা কল রিসিভ করে)
-কি করো? (শুভ)
-আমি একটু ব্যস্ত আছি কাল দেখা হচ্ছে কেমন তুমি ঘুমিয়ে যাও
-আচ্ছা ঠিক আছে
,,
,,
পরদিন...
একটা পুকুর পাড়ে তারা দুজন বসে আছে। তাদের দুজনের বাসার দূরত্ব পাঁচ মিনিট এর।
-কেমন আছো?? (ইরা)
-হ্যা ভালো,, তুমি?(শুভ)
-তোমার মন খারাপ
-কই না তো
-কাল ও একই কথা বলছো কি হয়েছে বলো তো
-সরি
-সরি কেনো?
-আমি তোমাকে কিছু দিতে পারলাম না (শুভ কান্না করে দিছে)
-এই তুমি কান্না করছো কেনো??
-আমি তোমাকে কিছু দিতে পারি না
-এই পাগল এই আমার দিকে তাকাও, সবাই দেখছে কান্না করো না আমার দিকে তাকাও
-হুমম
-চোখের পানি মুছো
,,
,,
শুভ থামলো
-আচ্ছা আমি কি কিছু চেয়েছি?(ইরা)
-চাইতে হবে কেনো দিতে তো হবে (শুভ)
-না দেওয়া লাগবে না
-আমার মনে হয় আমি তোমাকে সুখি রাখতে পারবো না আমার থেকে তুমি দূরে সড়ে যাও
,,
ইরা বসা থেকে উঠে এসে শুভর গালে একটা চর মারে।
-কথা বলতে বলতে জিভ বড় হয়ে গেছে তাই না?? আমি তোর কাছে কিছু চেয়েছি? তুই আমার কাছে থাকবি এটাই চাই আর কিছু চাই না (ইরা)
-তোমাকে তো কিছু দিতে হবে(শুভ)
-আবার একই কথা বলিস,
-বলবো না
-মাথা টাই গরম করে দেয়
,,
,,
দুজন কিছুসময় চুপচাপ।
-নিজের জন্য কি কিনেছো? (ইরা)
-কিছু না (শুভ)
-তো নিজে না কিনে আমাকে দিবা তাই না? নায়ক গিরি দেখাইতে আইছো তাই না? একদম নায়ক গিরি দেখাবি না।
-আমি তো..
-চুপপ একটা কথাও না আমার সাথে চলো
-কোথায়?
-কোথায় আবার আমার বাসায়
-না
-না কেনো
-আন্টি আংকেল?
-কিছু বলবে না উঠো
,,
,,
ইরার বাসার সবাই শুভ কে চেনে। তবে তাদের মধ্যে যে রিলেশন আছে সেটা জানে না।
বাসায় ঢুকেই প্রথমে ইরার দাদীমার সাথে দেখা..
-হে বুড়ি কেমন আছো?? (শুভ)
-এই বাদড় তুই আমাকে বুড়ি বলিস? একটু আগে আমি পাঁচটা প্রপোজ পাইছি
,,
দাদীমার কথা শুনে সবাই হাসলো। তারপর ইরা শুভ কে তার রুমের বারান্দায় নিয়ে গেলো।
-তুমি এখানে বসো আমি আসছি (ইরা)
-হুমমম (শুভ এর আগেও আসছে তব এতদূর পর্যন্ত না ড্রয়িং রুম পর্যন্ত)
,,
,,
ইরা কিছু পিঠা নিয়ে আসলো।
-আরে এগুলোর কি দরকার?? (শুভ)
-খাবো, নাও শুরু করো (ইরা)
,,
দুজন খাচ্ছিলো। হঠাৎ ইরা বলল
-হাত বাড়াও (ইরা)
-কেনো?
-আবার বলে কেনো
-হুমমম
,,
,,
-এটা তো আতর(শুভ)
-এইটা টুপি, এইটা জায়নামাজ। এক জোড়া জুতো আর এইটার মধ্যে পাঞ্জাবী পায়জামা।(ইরা)
-এগুলো কার?
-আমার আব্বার। আবার জন্য কিনেছি
-তো আমাকে দিচ্ছো কেনো?
-হারামী এটা তোর জন্যই
-এহহহ তুমি আবার এগুলো করতে গেছো কেন?
-আমার হবু বর এর জন্য আমি সব করবো তুই কোনো কথা বলবি না
-আমিই তো তোমার বর
-না তুই না
-তাহলে কে?
-শুভ
-এখন যাও এগুলো পরে আমার সামনে আসো
-আরে না এখানে কই পরবো এগুলা?
-রুমে পরবা, যাও বলছি
-হুমম যাচ্ছি
,,
,,
শুভ পাঞ্জাবী পরে ইরার সামনে আসলো।
-বাহহ সেই লাগছে, এদিকে আসো আমি টুপি দিয়ে দেই (ইরা)
,,
শুভ মাথাটা নিচু করলো। ইরা মাথা টুপি পড়িয়ে দিলো।
-এই আতর দিয়ে দিবো হাত উঠাও (ইরা)
-হুমমম (শুভ)
,,
শুভর চোখে পানি এসে গেছে ইরার কান্ড দেখে। ইরা পাঞ্জাবীর বিভিন্ন জায়গায় আতর লাগিয়ে দিচ্ছে।
-নাক টা এগিয়ে দাও তো (ইরা)
-নাকেও দিয়ে দিবা?(শুভ)
-হুমমম
,,
ইরা নাকে আর হাতে আতর দিয়ে দিলো। শুভর কাছে সারপ্রাইজ ছিলো। সে ভাবতেও পারে নি ইরা এত কিছু করবে তার জন্য।
-এই পাগল এখনো তোমার মন খারাপ, যাও তুমি কেমন যেনো কথা নেই তোমার সাথে (ইরা রাগ করে অন্যদিকে মুখ করে দাড়ালো)
,,
শুভ ইরার কাধে হাত রাখলো। ইরা সামনে ঘুরলো..
-আমি অনেক অনেক অনেক খুশি হয়েছি (শুভ)
-আমি তো ঈদ এর দিন সাজিয়ে দিতে পারবোনা তাই এখন সাজিয়ে দিলাম (ইরা)
-হুমমম
-পছন্দ হইছে?
-খুব পছন্দ হইছে
,,
,,
-তুমি একটা সেলফিশ(শুভ)
-কেনো?? কি করলাম?(ইরা)
-আমাকে কিছুই করতে দাও না সবকিছু তুমি করো
-কি করলাম আমি??
-মানে তুমি ভালোবাসো
-এ কুত্তা এ এগুলো দিলেই ভালোবাসা হয় না, আমি জানি তুমিই আমাকে বেশি ভালোবাসো
-একটু বুকের মধ্যে আসবে?
-উহুমমম (ইরা লজ্জা পেয়ে বলল)
-আসো না একটু
-উহুমম কেউ যদি দেখে
-দেখবে না একটু আসবে? বুক টা খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে
,,
ইরা একটু একটু করে শুভর দিকে এগোতে থাকে।
-হুমম আসছি এখন তুমি জাড়িয়ে নাও (ইরা)
-...(শুভ কে ইরা জড়িয়ে ধরলো)
-উমমম আতর টা তোমার শরীরের সাথে ভালই মানিয়েছে
-তাই??.
-হুমম
-আমি তো সেই নেশায় ডুব দিয়ে গন্ধ শুকছি
-তুমে যে একটা কি
-তোমার সেলফিশ হি হি হি হি
,,
,,
,,
,,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,END,,,,,,,,,,,,,,,,,,,