Showing posts with label বউ. Show all posts
Showing posts with label বউ. Show all posts

23.2.24

বউ

 #বউ

***
***
মাথাটা ব্যথা করছে খুবই। বিছানায় শুয়ে সিগারেট টানছি।
খুব টেনশন হচ্ছে। মা আজ বিকেলেই আসবে সুমিকে দেখতে। (আমার প্রেমিকা সুমি)
মা জানে সুমি আজ এখানে এসেছে। মা ওকে দেখেনি কোনদিন। দেখবেই বা কি করে?
মা তো আর এখানে থাকে না। গ্রাম থেকে শহরে আসতে তার মন ই চায়না।
কতোবার সুমি এখানে এসেছে কিন্তু মা তো এখানে থাকেনা তাই দেখেনি।
আজ সুমির এখানে আসার কথা ছিলো। মা ওকে দেখার জন্যই আসতেছে।
কিন্তু মা তো জানেনা গতরাতেই সুমির বিয়ে হয়ে গেছে।
হা মার জন্যই ওকে আজ এখানে আসার জন্য রাজি করিয়েছিলাম। আজ আসার কথাও দিয়েছিলো।
কিন্তু ২ দিন আগে হঠাৎ করে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। ও ওর বাবাকে বলেছিলো আমার কথা বাট ওর বাবা রাজি হয়নি। সে নাকি তার
বন্ধুর ছেলেকেই পছন্দ করেছিলো মেয়ের জন্য। তার সাথেই গতকাল সুমির বিয়ে হয়ে গেছে।
গতকালকের দিনটা আমি মদ খেয়ে পড়েছিলাম বিছানায়। কাজের বুয়াকে (খালার মতো) তার আগের দিনই বিদায় করে দিছি। আমার এই কষ্টকে ভুলতে আমি নেশার মধ্যে আছি। আর এজন্য চাইনি কেউ এই কষ্ট আর নেশা করার মুহুর্ত দেখুক।
গতকাল সারারাত বিছানায় পড়ে ছিলাম। আজ দুপুরের আগে উঠে ফ্রেস হয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খেয়েছি।
সন্ধা হয়ে গেছে মা এখনও আসছে না। ছোটবোনকে ফোন দিলাম...কই রে তোরা?
-আমরা জ্যাম এ পড়েছিলাম ভাইয়া। আরো ৪ ঘন্টা লাগবে গাড়ি পৌছাতে।
আমি বিছানা থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে বের হলাম। নেশার ঘোর কাটেনি। শরীরটা কাপছে এখনো। কিন্তু ক্ষুধায় পেট চো চো করছে তাই বাজারে যাচ্ছি কিছু খেয়ে ও নিয়ে আসার জন্য।
বুয়াকে আজকে আসতে বললেও তিনি ফোন করে জানিয়েছেন আজ নয় কাল আসবেন।
মা-বোন জার্নি করে আসবে। তাদের দিয়ে তখন রান্না করানোটা ঠিক হবেনা। তাই কিছু খাবার কিনে আনি রাতটা চালানোর জন্য।
বাইরে অন্ধকার। আকাশে চাঁদ তারা নেই।
পায়ে হেটেই যাচ্ছি অল্প রাস্তা দেখে।
১০ মিনিটের রাস্তা হেটে কিছু খাবার কিনে ফিরতেছি। হঠাৎ পেছনে কারো হাটার শব্দ পেলাম। দেখি একটা যুবতি মেয়ে ওড়নায় মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আবার হাটতে লাগলাম। কিন্তু লক্ষ করলাম মেয়েটি আবার আমার পিছে হাটছে।
আমি আবার থেমে গিয়ে ফিরে তাকালাম। মেয়েটি ওড়নায় মুখ ঢেকে নিচের দিকে মাথা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সন্দেহ হলো আমার। এই গলিতে সাধারনত খারাপ মেয়েরাই পিছু নেয়। যারা দেহব্যবসা করে বেড়ায়।
এসব মেয়ে কাছে ভিড়লে আমার বড্ড বেশি মেজাজ খারাপ হয়। তবে মেয়েটি মুখ ঢেকে আছে বলে একটু রহস্যজনক লাগছে!
এখানকার খারাপ পতিতাগুলোকে কখনো মাথায় কাপড় দিতে বা মুখ ঢেকে রাখতে দেখিনি। আর ওরা আমার পিছুও নেয়না কোনদিন কারন এসবের মধ্যে আমি থাকি না।
যাই হোক এগিয়ে গেলাম মেয়েটির দিকে।
-কি হয়েছে আপনার? আমার পিছু নিয়েছেন ক্যান?
মেয়টি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
-কি হলো কথা বলছেন না যে? ঠিকাছে না বললেন তবে আমার পিছে না এসে অন্য জায়গায় যান। এসব খারাপ কাজ আমি করিনা।
এই বলে হাটতেছি। কিন্তু মনে হলো মেয়েটি তবু আমার পিছে হাটছে।
-কি ব্যাপার? কানে শোনেন না, কথা বলতে পারেন না?
-আমাকে একটা রাতের জন্য ঠাই দিবেন আপনার বাসায়? খুব ভোরেই চলে যাবো। (মুখ ঢেকেই মেয়েটি বললো)
-না সরি। আমি একা থাকি বাসায়। কোন মেয়েকে ঠাই দেয়া ঠিক হবে না। অন্য কোথাও যান।
এই বলে দ্রুত হেটে গেট খু্লে বাড়িতে এলাম।
খাবারগুলো ফ্রিজে রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে আবার ছোটবোনকে কল দিলাম...কোথায় আছিস এখন?
-যমুনা সেতুর কাছাকাছি আছি। আর ঘন্টাখানেক লাগবে।
ফোনটা রেখে আরেকটা সিগারেট ধরিয়েছি। হঠাৎ বিকট একটা শব্দ হলো। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম।
আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে খুব! বাতাস বইছে প্রচন্ড বেগে। ঝড় শুরু হবে কিছুক্ষনের মধ্যেই।
জানালাগুলো আটকে দিলাম। বারান্দায় কিছু জামাকাপড় শুকাতে দিছি সেগুলো আনতে বাইরে এলাম।
বাইরে এসে চোখ গেলো গেটে...হালকা আলো যায় বারান্দা থেকে গেটে। সেই আলোতে দেখি কেউ দাড়িয়ে আছে গেটে হেলান দিয়ে!
একটু এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে।
একি! সেই মেয়েটা বাড়িতে ঢুকে গেটের ওখানে দাঁড়িয়ে আছে।
ঠিক তখনি প্রচন্ডবেগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলো।
মেয়েটি তখনো গেটেই দাঁড়িয়ে বারান্দার দিকে চেয়ে আছে।
মায়া হলো আমার। বারান্দার গেটটা খুলে ডাকলাম মেয়েটিকে... এখানে এসে দাঁড়ান নইলে ভিজে যাবেন।
বলার সাথে সাথে দৌড়ে আসলো মেয়েটি।
আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।
মেয়েটি সরাসরি আমার রুমে ঢুকে গেলো!
***
......
চলবে......

#Writer:Ariyan_masum
...
***
একটুপর আমিও রুমে ঢুকলাম। দেখি মেয়েটা আমার খাটে বসে আছে।
এখনো মুখটা ঢেকে রাখছে।
-আপনি পাশের রুমের পরের রুমে যান একটু নিচু কন্ঠে বললাম।
-আপনি কেমন মানুষ গো... একটা মেয়েকে ঠাই দিলেন অথচ খেতে বলবেন না? (মেয়েটি)
ভ্রু কুচকে তাকালাম মেয়েটার দিকে। কি ঝামেলায় পড়লাম!
কোথাকার কোন মেয়ে এসে ঘরে উঠেছে। তার উপর আবার মা, বোন আসবে একটুপর। কি বলবো এই মেয়ের কথা, কি ভাববে মা?
ফ্রিজ থেকে একটা বিরিয়ানির প্যাকেট বের করে প্লেট ভরে দিলাম টেবিলে।
-টেবিলে গিয়ে খেয়ে নেন আর খাওয়ার পর সোজা ঐ ৩ নাম্বার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ুন।
ভোরে উঠেই চলে যাবেন দয়া করে। ওকে? (আমি)
-ওকে। এবার আপনি একটু বাইরে বা অন্য রুমে যান আমি খেয়ে নেবো। (মেয়েটা)
কি আর করার আপদ যখন ঘরে এনেছি তখন সামলেই নিতে হবে।
দরজা ঠেলে বাইরে যেতেই দেখি ঝড় থেমে গেছে তবে বৃষ্টি পড়ছে টুপটুপ করে।
বারান্দায় বসতে যাবো হঠাৎ দেখি গেট দিয়ে মা আর ছোটবোন আসছে। দুজনি বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।
আমাকে দেখেই মা বললেন কি বৃষ্টি রে বাবা। ভিজেই আসতে হলো।
এই বলেই মা আর বোন আমার রুমে ঢুকে পড়লো।
আমি মাথা চুলকাচ্ছি আর ভাবছি কি হবে এখন? মেয়েটার ব্যাপার কিভাবে ম্যানেজ করবো?
কিছু না বুঝে তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকলাম। দেখি মা ঐ মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে কি সুন্দর মেয়ের সাথে প্রেম করেছে আমার পাগল ছেলেটা দেখ রুমা। (রুমা আমার ছোটবোন)
এই প্রথম মেয়েটার মুখ দেখলাম আমি। দেখে পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। এ কি দেখছি আমি!
এ তো সুমির বান্ধবী বিথী!
বিথী আমার দিকে চেয়ে হাসছে। তারচেয়ে অবাক হলাম বিথী মাকে বলছে আপনি কেমন আছেন মা?
মা আর ছোটবোন অবাক হয়ে তাকালো আমার দিকে!
-কি রে আমাদের না জানিয়েই বিয়ে করেছিস সুমি কে? (মা) মাকে ফোনেই সুমির নাম বলেছিলাম তাই বিথীকেই সুমি মনে করে সুমি বলতেছে তাকে।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বিথী বললো কিছু মনে নিয়েন না মা। আসলে আমার বাবা আমাকে জোর করে বিয়ে দিতে চাইছিলো অন্য জায়গায়। তাই আমরা গতকালকেই বিয়ে করেছি কাজি অফিসে গিয়ে। হুট করে এমন বিয়ের জন্য আমরা দুজন আপনাদের জানাতে পারিনি এসব। সরি মা প্লিজ কিছু মনে নিয়েন না।
-তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আজকেও তো বলতে পারতো হেলাল।
ওর বাবা শুনলে কি বলবে আল্লায় জানে।
-আসলে আমরা আপনাদের এ ব্যাপারটা সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য বলিনি আজ তাইনা গো? (আমার দিকে চেয়ে চোখটিপ মেরে বিথী)
আমি অপ্রস্তুত ছিলাম। শুধু মাথা নেড়ে বললাম হুম।
মা তোমরা বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসো তো। ভেজা শরীরে কতোক্ষন থাকবে? ঠান্ডা লেগে যাবে যাও।
মা মুচকি হেসে বললো আচ্ছা বাপু ফ্রেস হয়ে আসি পরে কথা হবে।
মা বোন রুম থেকে বের হবার পর ই বিথীর কাছে এগিয়ে গেলাম আমি।
-কি হচ্ছে এসব? এমন নাটক করতে এলেন কেনো? কি জন্য বলেন।
-সব বলবো সময় হলে। এই বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে টেবিল থেকে উঠে এসে আমার গালে একটা টোকা মেরে সোফায় গিয়ে বসলো তিথী।
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি কি হয়ে গেলো!
খাটে গিয়ে বসতেই ছোটবোন রুমে ঢুকলো।
-ভাইয়া ঐ রুমটা ওমন অগোছালো কেনো? বাবা চিটাগাং যাওয়ার পর বুঝি আর ঐ রুমের যত্ন নেয়া হয় নাই?
-হা রে। বাবা যাবার পর ঐ রুমে যাওয়াই হয়না যত্ন নিবে কে?
-কেনো রে খোকা? রহিমা (কাজের বুয়া) কোথায়? ওকে তো দেখছিনা। (মা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো)
-একদিনের ছুটি দিয়েছি বাড়িতে ঘুরে আসার জন্য। আজকে আসার কথা থাকলেও ফোন করে বলেছে আসবে না আজ। (আমি)
-ও আচ্ছা। রুমা যা তো মা রুমটা পরিস্কার কর একটু। (মা)
ঠিক তখনি বিথী বলে ওঠে আপনারা আগে খেয়ে নেন তো। টেবিলে খাবার বেড়ে রেখেছি। আমি যাচ্ছি ঐ রুম পরিষ্কার করতে। এই বলে ঐ রুমে চলে যায় বিথী।
তাকিয়ে দেখি ফ্রিজ থেকে সব বের করে আমাদের তিনজনের জন্য খাবার রেডি করেছে।
খেতে বসে মা বলতেছে দারুন একটা মেয়েকে বিয়ে করেছিস খোকা। কি লক্ষি মেয়েটা।
আমি কিছুই বলতে পারছি না। মাথাটা এলোমেলো হয়ে গেছে আমার।
-ভাবিটা কিন্তু দারুন সুন্দর ভাইয়া (রুমা)
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বিথী রুমে ঢুকে বললো মা আমি কিন্তু গ্রামে যাবো আপনাদের সাথে।
-অবশ্যই যাবে মা। গ্রামে ধুমধাম করে আয়োজন করে বিয়ের অনুষ্ঠান করবো আমার ছেলে আর বৌমার।
কিন্তু হেলালের অফিস দেখতে হবে যে। ওর বাবা তো চিটাগাং রয়েছে। (মা)
-তো কি হইছে। ভাবিকে নিয়ে যাবো আর বাবা আসলে ভাইয়া আর বাবা যাবে তারপর বিয়ে হবে। (রুমা)
-আরে ও তো অফিসের কাজ সব ম্যানেজারের দায়িত্বে দিয়ে বাবার কাছ থেকে ১ সপ্তাহের ছুটি নিয়েছে। (বিথী)
আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম বিথীর দিকে। এ খবর ও জানলো কি করে? সত্যিই তো আমি গ্রামে যাবার জন্য বাবাকে ফোন করে অফিসের সব কাজ ম্যানেজারের কাছে হস্তান্তর করে এসেছি পরশুদিন।
কিন্তু এই মেয়েটা এতো কিছু জানে কি করে? আর কেনোই বা এমন আমার বউ সেজে অভিনয় করছে?
-কি হলো সাহেব? আরেকটু দেবো বিরিয়ানি?
বিথীর কথায় চমকে গেলাম! এই মেয়ে তো সত্যিকারের বউয়ের মতো কথাবার্তা বলছে।
-না নেবো না। মা আর রুমাকে দাও।
খাওয়ার পর শুয়ে পড়ছি বিছানায়। বৃষ্টি না থাকলে হয়তো একটু রাস্তায় বা দোকান থেকে ঘুরে আসতাম।
একটা সিগারেট ধরাতে ইচ্ছা করছে। তা মা আবার কখন ঢুকে যায় ঘরে এই ভয়ে ধরাচ্ছি না।
টিভিটা অন করে দেখতে চাইলাম কিন্তু টিভিতেও মন বসছে না।
রাতের কথা ভাবছি। ঐ মেয়েটা বউ হিসেবে এখন আবার আমার ঘরে শুতে না এলে হয়।
বিথীকে নিয়ে মা আর বোন বাবার রুমে গল্প করছে। জানিনা ঐ মেয়েটা মার কাছে কি দিয়ে কি বলতেছে।
টেনশন বেড়েই চলছে... নাহ একটা সিগারেট ধরাই।
সিগারেটে আগুন দেবো এমন সময় কারো আসার শব্দ পেলাম রুমে। তড়িঘড়ি করে সিগারেট লুকালাম।
-বৌমাকে নিয়ে আগামীকালকেই আমরা গ্রামে যাবো কি বলিস হেলাল? (মা)
-এখানে ২/১ দিন থাকো তারপর না হয় যাবো।
-না খোকা। তোর বাবাকে ফোনে সব বলেছি। সে কয়েকদিনের মধ্যে ফিরবে।
-বাবাকে কি বলেছো মা? (ভয়ে গলা কাঠ)
-কি বলবো আবার। তোর আর বৌমার কথা, আর বলেছি বৌমাকে নিয়ে কালকেই গ্রামে যাচ্ছি। তুমি ফিরলে সরাসরি গ্রামে যাবে তারপর ধুমধাম করে ওদের বিয়ের আয়োজন করবো।
-বলো কি মা! কিছু বলে নাই বাবা?
-হুম তা তো বলছেই। ভীষন রাগ করে বললো আমাকে জানালে কি এমন ক্ষতি হতো? আমি কি ওদের মেনে নিতাম না?
আমি বললাম দেখো আমাদের একটাই ছেলে সে যখন ভুল করেই ফেলেছে আমাদেরি সামলে নিতে হবে।
তাছাড়া মেয়েটাকে জোড় করে বিয়ে দিতো তাইতো ওরা তাড়াতাড়ি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো অনেকভাবে বুঝানোর পর বলেছে আচ্ছা বৌমাকে গ্রামে নিয়ে যাও আমি ২/১ দিনের মধ্যেই আসছি।
-ওহ মা তুমি সত্যিই আমার লক্ষি মা। এই বলে মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
-হয়েছে ছাড়। বৌমাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাইরে না গিয়ে শুয়ে পড়।
আমার সারাদিন গাড়িতে থেকে মাথার ভিতর ঘুরছে আমরাও শুয়ে পড়বো।
-রুমা আর বিথীকে বুয়ার রুমে গিয়ে শুতে বলো। ওখানে ওরা গল্পসল্প করুক। (আমি)
-না না তা শুবে কেনো? রুমা আমার কাছেই শোবে।
নতুন বৌমা তোর কাছেই থাক পাগল ছেলে আমার।
এই বলে মা বের হয়ে গেলো।(মা আমার মা হলেও বন্ধুর মতো তাই এমন ফ্রি।)
আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো! এই নাটকে তিথীর সাথে আমিও অভিনেতা হয়ে গেলাম। জানিনা কপালে কি আছে।
শুয়ে আছি হঠাৎ দরজা ঠেলে তিথী ঢুকলো।
***
চলবে......
.....

....
......
আমার বুকের মধ্যে ধুকধুকানি শুরু হয়ে গেছে অলরেডি।
মেয়েটা দরজা আটকে খাটের দিকে আসছে।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লাম।
-একটা চাদর থাকলে দেন আমি নিচে বিছানা করে শুই। (বিথী)
-আচ্ছা আপনি এরকম করলেন কেনো? এসব অভিনয় করে কয়দিন থাকবো? আর এতে আপনার লাভ কি বা উদ্দেশ্য কি? (আমি)
-সময় হলে জানাবো কেনো আপনার বউ হয়ে অভিনয় করছি। জানি এতে আপনার খুব সমস্যা হচ্ছে বা হবে।
তবু এইটুকু ম্যানেজ করেন প্লিজ। সময় হলে সব বলবো আর চলে যাবো অনেক দূরে।
এসব বলে মেয়েটি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে খাটে বসে পড়লো।
আমি কিছু বুঝতে না পেরে বললাম ঠিকাছে... কিন্তু আপনি নিচে শুবেন এটা কেমন দেখায়? তারচেয়ে আপনি উপড়ে শোন আমি নিচে শুই।
-মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে বলে আপনার উপর আমার বিশ্বাস আছে বলেই আপনার ঘরে ঠাই নিয়েছি।
খাটটা তো ছোটো নয়। আপনি ঐ প্রান্তে শোন আমি এই প্রান্তে শুই।
খারাপ কিছু মনে নিয়েন না। আমি আপনার সম্পর্কে খুব ভালো ভাবে জানি তাই বিশ্বাস আছে আর আমার উপরও বিশ্বাস রাখতে পারেন।
-ঠিকাছে। এই বলে আমি খাটের ঐ প্রান্তে শুয়ে কোলবালিশ টা মাঝখানে রেখে দিলাম।
মেয়েটিও (তিথী) এইপাশে শুয়ে পড়লো তবে একটা চাদর গায়ের উপর দিয়ে।
শীত তেমন পড়েনি হালকা। তবে বৃষ্টি হচ্ছে এজন্য একটু শীত লাগছে। তাছাড়া দুটি যুবক যুবতী এক বিছানায় থাকলে এমনেই শরীরে অন্যরকম ভয়, টেনশনে জ্বর এসে যায় আমারও সেরকম অবস্থা।
এভাবে চুপ করে শুয়ে আছি। ঘুম আসছে না।
মেয়েটি কি ঘুমিয়েছে? পাশ ফিরে কি দেখবো?
নাহ! খারাপ ভাববে যদি জেগে থাকে।
এসব টেনশন বাদ দিয়ে সুমির কথা ভাবতে লাগলাম। মানুষ কতো বেঈমান হতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমার প্রেমিকা সুমি।
যদি আমার নাই হতে পারবি তো ভালোবাসলি কেনো? কেনো জীবনে এলি, এই জীবনটা নিয়ে খেললি?
মনের অজান্তে দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে আমার।
-আপনার কষ্ট হচ্ছে তাইনা? (বিথীর কথায় চমকে গেলাম)
-আরে না। (চোখের পানি মুছতে মুছতে)
-মিথ্যা বলেন কেন? সুমির কথা মনে হচ্ছে তাইনা?
-ফিরে তাকালাম মেয়েটির দিকে। বারবার অবাক হচ্ছি! আমি সুমির কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি ও জানে কি করে?
তারচেয়ে অবাক হলাম পাশ ফিরে ওর দিকে মুখ করে শুয়ে।
একটু মাথা উচু করে দেখি মেয়েটার চোখেও পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমার দিকে চেয়ে কথা বলছে আর কাঁদছে।
আমি বললাম হা সুমির কথা মনে হয়েই আমি কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু আপনি জানলেন কি করে আর আপনিও কাঁদছেন কোন কারনে?
কিছুক্ষন নিরব থেকে বিথী বললো সব বলবো একসময়। এখন সব কষ্ট ঝেড়ে ফেলে ঘুমান প্লিজ। (বোঝা গেলো চেখের পানি মুছছে আর কথাগুলো বলছে)
-ওকে ঘুমাই। আপনিও ঘুমান গুড নাইট।
এরপর কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।
ফজরের আজানের আগে হঠাৎ ঘুম ভেংগে যায় কারো হাতের ধাক্কায়।
তাকিয়ে দেখি বিথী ডাকছে আমায়।
-কি হয়েছে কোন সমস্যা? (আমি)
-না মানে... যদি কিছু মনে না করেন তো একটা রিকুয়েস্ট করবো?
-হুম করেন।
-অভিনয় যখন করছিই একটু গোসলের অভিনয়টাও করতে হবে। খারাপ কিছু ভাববেন না। যেহেতু আপনার মা আর বোন এখানে। তারপরো আপনার ইচ্ছা।
-ওকে আপনি আগে গোসল করে আসেন। পরে আমি করবো হুম।
-একটু বাইরে দাড়ান আমার ভয় করে। গোসল করা পর্যন্ত বাইরে থাকবেন।
-ওকে। এই বলে উঠে দরজা খুলে বাথরুমের কাছে গেলাম। ও ঢুকে পড়লো ওর জামাকাপড় নিয়ে আর আমি পাহাড়ায়।
মনে মনে হাসছি... কষ্টের পৃথিবীতে আবার একটি মেয়ে সাথী হলো তাও আবার অভিনয় করতে... হা হা হা।
গোসল করে এসে শুয়ে পড়ছি আবার।
২ ঘন্টা পর বেলা উঠে গেছে...
ছোটবোন এসে বলছে...ভাইয়া ওঠো না বেলা হয়েছে।
একটু বাজারে যেতে হবে তোমায়। (বোন)
আমি উঠে দেখি ঘরটা একেবারে গোছানো।
টেবিল থেকে থালাবাসন বাইরে নিয়ে যাচ্ছে বিথী... আমায় উঠতে দেখে বলছে ওঠেন সাহেব। কিছু ময় মশলা আর হাবিজাবি আনতে হবে তারপর রান্না করবো।
ফ্রিজে মাংস থাকলেও রান্না করার প্রায় মশলা নেই। এই বলে একটা চার্ট হাতে দিলো বিথী।
কি কি আনতে হবে এই চার্ট। কি সুন্দর হাতের লেখা মেয়েটার চার্টে চোখ বুলিয়ে দেখলাম।
উঠে মুখটা ধুয়ে বেরুবো তখন মা আমার কাছে এলো। একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো একটা লক্ষি মেয়েকে ঘরে এনেছিস খোকা।
সকাল থেকে সব কাজ একাই করে যাচ্ছে। আমাদের কিছু করতেই দেয় না। মেয়েটাকে কখনো কষ্ট দিসনা বাবা। ওর ভিতর অনেক মায়া, ভালোবাসা আছে আমি বুঝে গেছি।
মার মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে চলে গেলাম বাজারে।
সব কেনার পর একটা শাড়ি, রেডিমেট ব্লাউজ ও পেটিকোট কিনলাম। সাথে আর সব ও কিনলাম বিথীর জন্য।
রান্না করে খাওয়া দাওয়া হলে মা বললো রেডি হ তোরা দুপুরের আগেই রওনা দেবো।
বিথীকে বললো রেডি হয়ে নাও বৌমা...
বিথী রুমে গেলো। পিছে আমিও গেলাম।
ওর জন্য আনা শাড়ি আর সব দিলাম ওর হাতে।
-এগুলো পড়ে নেন
-এসব আনতে গেলেন কেনো?
-বউয়ের অভিনয়ে এগুলো লাগবে।
আমার কথায় যেনো ও লজ্জা পেলো। কাপড়গুলো নিয়ে পাশের রুমে গেলো ও।
দুপুরের আগেই সবাই গিয়ে কড্ডার (সিরাজগঞ্জ) বাসে উঠলাম।
মা আর বোন একসিটে বসলো আর আমি একসিটে...
ও এসে আমার পাশে বসলো...
এই প্রথম ওর হাত আমার হাতের উপর পড়লো।
***
.....
চলবে.....
....
***
আমি শিউরে উঠলাম। সত্যি বলতে আমি কখনো যুবতি মেয়ের স্পর্শ অনুভব করিনি।
ভাবছেন হয়তো আমি তো প্রেম করেছিলাম। হা করেছিলাম তবে কখনো ওকে ছুয়ে দেখিনি। এটা নাকি ওর পছন্দ না অবশ্য আমার ও না।
একটু চোখ ঘুরিয়ে খেয়াল করলাম ওর ব্যাগটা ভালোভাবে নিতে গিয়ে আমার হাতের উপর হাত রেখেছে। পরে খেয়াল করে হাত সরিয়ে নিলো বিথী।
বাস তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে। আমি তাকিয়ে দেখছি বাইরের আশেপাশের দৃশ্যগুলো।
আসলে গাড়িতে উঠলে প্রায় সবার চোখে ঘুমের ভাব চলে আসে তবে আমি এর ব্যতিক্রম।
সবাই ঘুমায় আর আমি জানালা দিয়ে দেখি বাইরের দৃশ্যগুলো।
প্রায় ৪/৫ ঘন্টা লাগবে কড্ডায় পৌছাতে। ওখান থেকে নেমে সোজা আবার তামাইয়ের (বেলকুচি) বাস ধরবো।
গাড়িটা হঠাৎ থেমে গেলো। তাকিয়ে দেখি পুলিশ লাইসেন্স চেক করার জন্য গাড়ি থামিয়েছে অনেকগুলো।
আমাদের গাড়িটা সিরিয়ালে পড়েছে।
হঠাৎ জানালার কাছে কেউ বলছে স্যার বাদাম নিবেন?
পাশে তাকালাম দেখি বিথী আমার কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।
পাশের সিটে লক্ষ করলাম মা আর বোন ও ঘুমিয়েছে।
-২০ টাকার বাদাম দেন।
বাদাম হাতে নিয়ে রেখে দিলাম। যখন সামনে কোথাও ওদের ঘুম ভাংগে তখন খাবো সবাই মিলে।
....
.....
চলবে......
# বউ
.....
***
বিথীকে নিয়ে আমার ঘরে (গ্রামের ঘর) গেছে সবাই।
পাড়া পড়শী সকলেই আমার বউ দেখার জন্য ভিড় করেছে বাড়ীতে।
এই গ্রামে বড় হয়েছি, পড়েছি, খেলেছি, সবার সাথে মিশেছি এই গ্রামেই।
সুতরাং যেই শুনতেছে যে আমি শহর থেকে প্রেম করে বিয়ে করে এনেছি সেই আসতেছে বাড়ীতে বউ দেখতে।
বিরক্ত মনে হলেও অনেকদিন পর সবাইকে দেখে ভালোই লাগতেছে।
আমি একটা লুঙ্গি নিয়ে গোসল সেরে নিলাম।
ততক্ষনে সন্ধা হয়ে গেছে। ঘরে এসে দেখি বিথী ভাবিদের সাথে পুরাই মেতে গেছে।
আসলে গ্রামের বউ/ঝি দের সাথে মিশলে অতি তাড়াতাড়ি ঘনিষ্ট হয়ে যায় সবাই।
বিথীকে দেখে মনে হচ্ছে এ বাড়ির সবাই ওর কতো পরিচিত।
ওরা সোফায় বসে আছে। আমি খাটে উঠলাম। বাহ কি সুন্দর করে বাসর সাজিয়ে রেখেছে আমার ঘরে। সাথে ঘরটাও সাজিয়েছে নতুন রুপে।
-কি দেবর মশাই...কেমন হয়েছে বাসর সাজানো। (ভাবিরা)
-দারুন। তা কে সাজিয়েছে মেমসাহেবরা? (আমি)
-আমরা সাজিয়েছি তোমার আর তোমার ঐ মিষ্টি বউটার জন্য।
- ভালা করছেন। শুয়ে একটু আরাম করে নেই।
-আহহা... আগে আমাদের বাসর সাজানোর মূল্য দাও তারপর আরাম কইরো সাহেব।
-গেটের আবার মূল্য কিসের হুম?
-এতো কষ্ট করে সাজিয়েছি টাকা খরচ করে আর উনি বলছেন মূল্য কিসের? ওই আয় (অন্য ভাবিদের উদ্দেশ্য করে) আমরা শুয়ে থাকবো বাসরে। এই বলে আমায় ঠেলে উঠিয়ে দিতেছে।
-আরে আমায় সরিয়ে দেন কেন? আসেন আপনাদের নিয়েই বাসর করবো।
এই কথা বলার সাথে সাথে সবাই হো হো করে হেসে উঠেছে...
২ ভাবি আমার ২ কান ধরে বলতেছে আজ তোমার সব শখ মিটিয়ে দেবো।
-উহ লাগছে... ছাড়েন তো ভাবিজানরা।
-আগে আমাদের বিদায় করো।
-ওহ ছাড়েন দিতাছি। ৫০০ টাকা বের করে ভাবির হাতে দিয়ে বললাম যান সবাই মিলে মিষ্টি কিনে খান গা...
রাগ করলেন না তো ভাবিরা? আসলে বাসরের মূল্য কেউ দিতে পারে না। এটা শুধু মিষ্টমুখ করার জন্য দিলাম।
-আরে নাহ... খুশি আমরা। এই বলে বড় ভাবিটা গালে একটা চুমু দিয়ে দৌড়ে পালালো হাসতে হাসতে। (খারাপ কিছু না, এই চুমুটা আসলে ছোট থেকেই দেয় ঐ ভাবিটা। কোলেপিঠে মানুষ করেছে এই ভাবি মায়ের সাথে)
সবাই বাইরে চলে গেলো।
বিথীর দিকে তাকালাম। মিষ্টি করে হাসছে...
হাসলে ওকে সত্যি পরীর মতো লাগে।
মা আর কাকি আসলো ঘরে।
-বাবা... বৌমাকে নিয়ে খেতে আসো আমাদের ঘরে। (কাকি)
এই বলে বিথীর কাছে গিয়ে থুটনিটা ধরে মাথা উচু করে দেখছে আর বলছে কি মিষ্টি বৌমা এনেছো চাচামিয়া। (কাকি)
-চলো খেয়ে এসে কথা হবে (মা)
খেতে গেলাম কাকিদের ঘরে।
২/৪ দিন আর আমার মাকে রান্না করতে দেবে না কাকি আর ভাবিরা। এই কয়দিন তাদের ওখানে খেতে হবে।
খেতে বসে লক্ষ করলাম বিথী খুব খুশি এখানে এসে।
হবেই তো ভরা বাড়ীর মানুষের আন্তরিকতা, ভালোবাসা, আমোদ আড্ডা শহরের যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
রাত প্রায় ৯ টা বাজে। এই ৯ টাই গ্রামে অনেক রাত।
আমি অনেকদিন পর গ্রামে এসে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে কিছু খেয়ে ফেললাম মদ জাতীয়।
এর আগে গ্রামে এসব খাইনি। এখন যেহেতু শহরে খেয়েছি সুমির দেয়া আঘাত ভোলার জন্য তাই আর না করিনি ওদের।
ওরা আমায় বাড়ি অব্দি পৌছে দিলো নেশায় মাতালের মতো হয়েছি বলে।
দরজা খুলতেই দেখি এখনো ভাবি ও কাজিনরা গল্প করছে বিথীর সাথে।
আমি ঢুকতেই সবাই বের হয়ে গেলো। ভাবি কানের কাছে মুখ এনে বললো বাসর উদ্বোধন করো দেবর সাহেব।
আমি গিয়ে শুয়ে পড়লাম ধড়াম করে খাটে।
মাথাটা ঘুরছে খুব। নেশাটা খুব বেশি হয়ে গেছে।
বিথী দরজা আটকে খাটে উঠলো।
এই খাটটা সিঙ্গেল খাটের মতো। যদিও স্বামী স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট।
আমার গা ঘেসে শুয়েছে ও। আমি চোখ বুঝে আছি...
কপালে হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ খুললাম।
-কিছু খেয়েছেন মনে হয়? এসব খান কেনো? এই বলে কাঁদছে মেয়েটা...!
-কি হলো কাঁদছেন কেনো? আমার কিছু হয়নি তো। মাথাটা শুধু ঘুরছে...
-বললেই হলো। আপনার শরীর তো কাঁপতেছে।
-ওকে কাঁদবেননা... সরি আর কখনো খাবোনা।
-হুম ওকে (চোখ মুছতে মুছতে)
মাকে ডেকে আনি থাকেন। এই বলে বিথী খাট থেকে নামতে যাবে ওমনি খপ করে হাত ধরে টান দিয়ে বললাম মাথা খারাপ হইছে আপনার?
এমন মাতাল অবস্থায় মা দেখলে উপায় আছে?
আমার হাতের হেচকা টানে ও আমার বুকের উপর এসে পড়েছে খেয়াল করিনি।
ওর ঠোটদুটো আমার ঠোটের সামনে।
নেশার ঘোরে ওকে আমি বুকের সাথে ঝাপটে ধরেছি।
ওর চোখের পানি পুরোটুক মোছেনি...
এমনেই ও পরীর মতো। চোখে পানি জমায় আরো মায়াবতী রাজকুমারীর মতো লাগছে ওকে।
নেশার ঘোরে সব ভুলে আমি ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিছি। ভুলে গেছি আমরা দুজন মিথ্যা স্বামী স্ত্রী।
হঠাৎ ও এক ঝটকায় আমার উপর থেকে উঠে গেছে... হাপাচ্ছে মেয়েটা।
চোখবেয়ে আবার পানি পড়ছে।
-সরি। নেশার ঘোরে মাতাল হয়ে দিক হারিয়ে এমন করছি। ক্ষমা করে দিন প্লিজ...
আচ্ছা ঠিকাছে আপনি ঘুমান। (কান্নাকন্ঠে বিথী)
- এই তুমি কে বলো তো? তোমার এই কান্না আমায় কিছু মনে করিয়ে দেয়... (আমি)
-কি মনে হয় আপনার? এই কান্না কার হতে পারে মনে করেন? এই বলে বিথী আরো জোড়ে ডুকড়ে ডুকড়ে কাঁদছে।
হা আমার ধারনা ঠিক হবে হয়তো। আমি ওর শাড়ির আচলটা টান দিয়ে সরালাম। ব্লাউজের বোতামে হাত দিতেই হাত ধরে ফেললো বিথী।
আমি হাত সরিয়ে জোর করে খুলে ফেললাম ওর ব্লাউজ (খারাপ ভাববেন না কাহিনী আছে)
ওর পিছনে গিয়ে হুকটা খুলে দেখেই আমি পেছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম আমি আর বিথী দুজনেই একসাথে।
***
......
চলবে.....

#পার্টঃ৬ ও শেষ...
***
একটু শান্ত হয়ে ওকে আমার দিকে ঘুরিয়ে
বসিয়ে বললাম... আমাকে পরিচয় দেস নাই
কেনো পাখি? (বিথীর আসল নাম পাখি)
-কি করে পরিচয় দিতাম বল? ৭ বছর পর যখন তোর
কাছে পৌছলাম তখন তুই অন্য কারো হয়ে
গিয়েছিলি। (পাখি)
-এই ৭ বছর কোথায় ছিলি? তোকে কতো
খুঁজেছি কোথাও পাইনি। (আমি)
পাখি বললো সেদিনকার কথা মনে নাই তোর? বাবা
গ্রামের সব জমি বিক্রি করে শহরে চলে
যাচ্ছিলো আমাদের নিয়ে। তখন আমার যাওয়া
দেখে তুই কাঁদছিলি আর আমিও কাঁদছিলাম।
এর কয়েকদিন পর শহর থেকে গ্রামে আসতে
চাইলেও বাবা নিয়ে আসলো না।
আমি রাগ করে সিড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে গিয়ে
পড়ে যাই। আমাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। আমি
সুস্থ হলেও আগের সবকিছু ভুলে যাই।
এই ৭ বছর পর আজ থেকে কয়েকমাস আগে
আমি হঠাৎ করে সবকিছু মনে করতে পারি।
তখন মনে পড়ে তোর কথা। বাবাকে সব খুলে
বললাম যে তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো
না। সেই ছোট থেকেই তুই আর আমি একসাথে
থেকেছি, খেলেছি, পড়েছি।
তখন বাবা বললো ঠিকাছে তোকে নিয়ে যাবো
গ্রামে।
গ্রামে এসে সোজা তোদের বাড়িতে আসি।
তোর মা আমাকে দেখে কেঁদে ফেলে।
বলে তোমার জন্য আমার খোকা অনেক
অপেক্ষা করেছিলো মা।
তখন আমাকে সব খুলে বলে তোর মা। তুই বাবার
অফিস দেখতে শহরে এসে পড়াশোনা করিস
আর বাবার অফিস দেখাশোনা করিস।
কিছুদিন আগে নাকি একটা মেয়ে তোর
জীবনে আসে এটাও বলেছিলো তোর মা।
আমি বিশ্বাস করিনি। তোর ঠিকানা নিয়ে শহরে
আসলাম।
তোরা যেখানে থাকতি ঐ এলাকার পাশেই আমার
ফুফুর বাসা।
সেখানে থেকে তোকে ফলো করলাম। হা
সত্যিই তুই একটা মেয়ের সাথে জড়িয়ে গেছিস।
বাবা এই কথা শুনে আমায় নিয়ে যেতে চাইলো
ওখান থেকে। বললো তোকে ভালো সুন্দর
একটা রাজপুত্রের সাথে বিয়ে দেবো।
আমি কেঁদে বুক ভাসালাম আর বললাম হেলাল ছাড়া
কাউকে আমি কল্পনাও করবো না জীবনে।
আমি বাবার কথায় চলে যাইনি। তোর ঐ সুমির সাথে
পরিচিত হয়ে বান্ধবী বানালাম।
তুই ওর সাথে আমায় দেখেও চিনতে পারিস নি।
পারার কথাও না। এই ৭ বছরে আমি অনেক পাল্টে
ফেলেছি চেহারা। আর তখন তো কিশোর বয়স
ছিলো আর এখন যৌবনকাল।
তখন আমায় চিনতে পারিস নি বলে খুব কষ্ট হতো।
আমি পরিচয় দেইনি সুমি তোর জীবনে
এসেছিলো বলেই।
আমি চাইনি তোদের মাঝে দেয়াল হয়ে দাড়াই
আমি।
আমিফুফুর বাসা থেকে ও তোর থেকে দূরে
যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
কিন্তু ঐ কয়দিনে সুমির সাথে থেকে আর
তোদের দুজনকে ফলো করে একটা বিষয়
আমাকে কৌতুহলী করে তুললো!
তুই ওকে ভালোবাসলেও তোদের চলাফেরায়
আমার কেমন জানি মনে হলো। ও তোর সাথে
টাইমপাস করছে না তো?
তখন আমি আরো বেশি মিশতে লাগলাম সুমির
সাথে।
একসময় সুমিকে বলেই ফেললাম ছেলেটা
তো তোমায় খুব ভালোবাসে। তা তোমরা
বিয়ে করবে কবে?
কথাটা শুনে ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
বললো ও একটা বড় ভুল করেছে।
কৌতুহলী হয়ে বললাম কি ভুল?
ও বললো হেলালকে কোনদিন বিয়ে করতে
পারবো না আমি। কারন আমার বিয়ে ঠিক হয়ে
আছে বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে। আর আমরা
চুটিয়ে প্রেম ও করি। তাইতো হেলালকে আমি
আমার শরীর স্পর্শ করতে দেইনি বা ওকে
স্পর্শ করিনি।
এইটুকু বলে পাখি আমার দিকে চেয়ে বললো...
বিশ্বাস কর হেলাল সুমির এই কথা শুনে আমি প্রচন্ড
কষ্ট পেলাম তোর কথা ভেবে।
শেষমেশ তুই একটা ভুল মেয়ের প্রেমে
পড়েছিলি এই ভেবে।
যাই হোক তখন ওকে বললাম তাহলে হেলাল
নামের ছেলেটার জীবন নিয়ে খেলছো
কেনো? ও তো তোমায় সত্যিই ভালোবাসে।
ও বললো হা। খুব সহজ সরল ছেলে হেলাল।
আমি একটু টাইমপাস করার জন্য ওর পিছে লাগি।
ভালোবাসর প্রস্তাব দেই। কিন্তু ও রাজি হয়নি
প্রথম।
বলেছিলো গ্রামের কোন এক মেয়েকে ও
ভালোবাসে। সে কোথাও হারিয়ে গেছে। ওর
বিশ্বাস সে একদিন ফিরে আসবে।
কিন্তু আমি কেনো জানি ওর প্রতি বেশি দুর্বল
হয়ে গেলাম। ওর মুখে ভালোবাসার কথা শুনেই
ছাড়বো ভাবলাম।
অনেকদিন ওর পিছে ঘুরেও ওর সাড়া না পেয়ে
বললাম তুমি আমায় না ভালোবাসলে আমি আত্মহত্যা
করবো।
এই কথা শুনে ও আমার সাথে সময় দিতে
থাকলো। কারন ও খুব সহজ সরল ছেলে।
আমি এই সরলতার সুযোগ নিয়ে বড় একটা ভুলের
ফাঁদে পা দিয়েছি। না পারছি সত্যটা বলতে, না পারছি
ওর সাথে চলতে।
এই বলে সুমি আমার হাতটা ধরলো। আমায় একটা
বুদ্ধি দাও বিথী... আমি কি করে ওর থেকে দূরে
যাবো?
আমি তখন সুমিকে বললাম খুব বড় ভুল করেছো।
তবে এখনো সময় আছে এই ভুল
শোধরানোর। তুমি ওর সাথে আর দেখা
করোনা। একটা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দাও তোমার
বিয়ে হয়ে গেছে। বলবে তোমাদের
ভালোবাসার কথা তোমার বাবাকে বলার পরও রাজি
হয়নি তিনি।
সুমি বললো ও কি মানবে? ওর যদি কিছু হয় বা
কোন পাগলামি করে?
আমি বললাম যাওতো তুমি তোমার কাজ করো।
আমি দেখবো এদিকটা। আর তুমি যদি এটা না করে
আরো জড়াও ওর সাথে তবে ওর সহজ সরল
জীবনটা নষ্টের মুখে চলে যাবে। তারচেয়ে
এখনি এই সিদ্ধান্ত নাও।
ও আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যায় আর
তোকে চিঠি পাঠায়।
আমি তখন কি করবো ভেবে পাইনা।
হঠাৎ মনে হলো তোর মাকে জানাই ব্যাপারটা।
আসার সময় তোদের বাড়ির নাম্বার নিয়ে
এসেছিলাম।
কল দিয়ে তোর মাকে বলতেই তোর মা
কেঁদে ফেললো তোর কথা ভেবে।
এটাও জানালো তাদের নাকি আগামিকাল আসার কথা
তোর সুমিকে দেখতে।
তখন তোর মা আর আমি বুদ্ধি খাটিয়ে এই নাটক
সাজানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
তিনি বললেন তুমি যে কোন উপায়ে ওর কাছে
ঠাই নিবে ওর ঘরে।
আমরা গিয়ে তোমায় সুমি হিসেবে ডাকবো। আর
আমাকে অবাক করে দিয়ে মা ডাকবে তুমি। তারপর
বাকিটা আমরা ম্যানেজ করবো।
আর বাকি কাহিনী তো তুই জানিস ই...
আমার এই অভিনয়ে যদি কষ্ট পেয়ে থাকিস বা
খারাপ ভাবিস তাহলে আমায় ক্ষমা করে দিস।
কালকে বাবা এখানে আসবে। তাহলে তার সাথে
আমি চলে যাবো আর কখনো তোকে
জ্বালাতে আসবো না।
কথাগুলো একটানে বলে আমাকে জড়িয়ে
ধরে ডুকরে ডুকরে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে পাখি
নামের পাগলিটা।
ওর কথাগুলো শুনতে শুনতে চোখের জ্বলে
কখন আমার বুকটা ভেসে গেছে নিজেই জানিনা।
ওকে আরেকটু বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়েছি।
ঠিক একেবারে কলিজার ভিতরে।
-আমাকে আর ছেড়ে যাবিনা তো পাগলি? (আমি)
-তুই আমাকে ছেড়ে না দিয়ে এভাবে বুকের
মাঝে জড়িয়ে রাখলে কোথাও আর যাবোনা
রে।
পারবি না আমায় সারাজীবন এভাবে রাখতে?
-খুব পারবো রে পাগলি। এই পাখি শোন...
-কি বলবি বল?
- সবাই কি জানে এই অভিনয়ের কথা?
-না সবাই না। জানে শুধু তোর মা, বোন, বাবা আর
আমার বাবা।
-তোর বাবাও জানে?!
-হুম। বাবা কালকে আসবে এখানে। আর তোর বাবা
আসবে ২ দিন পর।
এখন তুই চাইলে শুক্রবারে আমাদের বিয়ের
আয়োজন করবে তারা।
-আমি চাইলে মানে? কি বলতে চাস?
-তুই তো সুমিকে ভালোবাসিস তাই বললাম।
-সেটা আমার খুব বড় ভুল ছিলো রে। এটা
ভেবে যদি কষ্ট পাস তো চলে যাবো
তোদের থেকে অনেকদূরে না ফেরার
দেশে।
-চুপ হারামী। এসব আর বলবি না। অনেক কষ্ট
দিয়েছিস আমায়। এবার আমায় ভালোবেসে পাগল
করে দে।
তোর ভালোবাসায় আমি পাগল হয়ে যেতে চাই
রে পাগল....
এই বলে পাখি (বিথী ছিলো পাখির ছদ্ম নাম) আমায়
অজস্র চুমোয় ভরিয়ে দিচ্ছে।
আমিও পাল্টা আক্রমন করছি ওকে।
-এই ছাড় আমায়। এর বেশি কিছু করতে যাবিনা হুম...
-কেনো রে? তুই তো আমার বউ।
-হুম বউ। তবে নকল বউ হা হা হা...
এই পাগল আমায় আজ চিনলি কি করে।
-তোর কান্না দেখে। ছোটকাল থেকে তুই
এভাবেই কাঁদতি। আর এখনো...
মনে আছে পাখি? তোকে ছোটবেলায় ধাক্কা
দিয়েছিলাম আর তুই পড়ে গিয়েছিলি। পড়ে গিয়ে
তোর পিঠে কেটে গিয়েছিলো।
আজ যখন তোর কান্না দেখে সন্দেহ হলো!
যে তুই পাখি হতে পারিস। তখনি আমি তোর ব্লাউজ
খুলে পিঠ দেখলাম।
-হুম। যখন তুই ব্লাউজে হাত দিলি তখনি বুঝলাম ধরা
খাইছি এবার।
-তুই আমাকে আগেই বলতে পারতি। নাটক না
করলেও হতো।
- যদি শুক্রবার পর্যন্ত এভাবে থাকতে পারতাম তবে
বাসর রাতে তোকে সারপ্রাইজ দিতে
চেয়েছিলাম নিজেকে। তা আর হলো না।
-আয় আমার মিষ্টি বউ। তোকে পাগল করে
দেই।
-যাহ দুষ্টু। আর ২ টা দিন সবুর কর সব পাবি...
-তাই বলে তোকে ছুতে পারবো না?
-পারবি তবে এমন পাগল করিস না যেনো আমরা
কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি।
এতো অপেক্ষা, এতো কষ্ট সইলাম দুজন আর
২ টা দিনের অপেক্ষা করতে পারবো না তা হয়?
এর মধ্যে আমাদের ভালোবাসা নিষিদ্ধ করতে
চাইনা।
আমায় বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমা এখন।
-ওকে আয় পাগলি...
ও আমার বুকের সাথে মিশে ঘুমিয়ে গেছে।
আমি ওর মুখটা দেখছি এক নজড়ে...
আমি ওকে একটুর জন্য ভুলে গেলেও ও ঠিকই
আমায় মনের মধ্যে রেখেছে।
ওকে আরেকটু চেপে ধরে দুচোখের
দুফোটা অশ্রু ফেলে মনে মনে ভাবতেছি...
এভাবেই সারাজীবন তোকে বুকে জড়িয়ে
রাখবো রে আমার পাগলি *বউ*
..
..
...সমাপ্ত...
...
....
(এটা কাল্পনিক গল্প। আমি বিয়ে করিনি
আর কখনো মদ তো দূরে থাক সিগারেট
হাতেও নেইনি টানার জন্য)
আগের পার্টগুলো পড়তে আমার টাইমলাইন বা
পেজ ফলো করেন। ভালো লাগলে শেয়ার
করুন

অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...