Showing posts with label কবুল. Show all posts
Showing posts with label কবুল. Show all posts

25.12.23

কবুল

 কবুল

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>

-বললাম যে আমি আসবো না (শুভ)

-চুপ থাক। এত কথা বলিস কেন??(আতিক)

-আমি তোর বাড়ি যাচ্ছি, এটা কেমন দেখায় না?? তাও আবার ১ মাস এর জন্য

-চোপপপ বেশি কথা বলবি না

-বেশি কথা কই বললাম??একটু বোঝার চেষ্টা কর

-আর একটু তাই পৌছে যাবো বাড়িতে। একটু পা চালিয়ে হাট

-আমি বলি কি আর এ বলি কি। ধুররর ভালো লাগে না....


কথা বলছিল শুভ আর আতিক। দুজনে খুব ভালো বন্ধু। তিন বছর হলো তাদের পরিচয়। একই সাথে একটা বড় কোম্পানি তে জব করে। ১ মাস এর ছুটি পাওয়ায় আতিক শুভকে জোড় করে ধরলো এবার তাদের বাড়ি যেতেই হবে। এত জোড় করে ধরার কারণ শুভর কেউ নেই। একদমই একা একটা আশ্রয়স্থলে বড় হয়েছে। আর সেখান থেকেই একটু নিজের জীবনকে উন্নতির দিকে নিয়ে গেছে। আতিকের চিন্তা শুভ ১ মাস একা একা কাটাবে এর থেকে ভাল তার সাথেই ঘুরে আসুক। তো।অনেক জোড়াজুড়ির পর শুভ রাজি হয়। আর তাকে নিয়ে আসে আতিকের বাড়ি....


-ওই আর কতদূর?? হাটতে হাটতে তো জীবন শেষ (শুভ)

-আয় না আর একটু (আতিক)

-আস্তে হাটা যায় না?? 

-না আমি এভাবেই হাটি

-ধুররর জীবন আধমরা হয়ে গেছে....


হাটতে হাটতে তারা বাড়িতে পৌছে যায়। শুভ বাড়ি দেখে বলে..

-কিরে বাড়ি তো দেখে মনে হয় অনেক পুরোনো বাড়ি (শুভ)

-হ্যা আমার দাদার বাড়ি টাই আছে। বাবা নতুন করে তৈরি করেন নি (আতিক)

-তোর দাদার মনে হয় অনেক টাকা ছিলো তাই না রে??

-হ্যা দাদা তো জমিদার ছিলেন

-বলিস কি!!

-হ্যা


-আরে দেখো কে এসেছে।কেমন আছিস(একটা লোক বয়স ৫০ হবে)

-হ্যা ভালো আপনি কেমন আছেন??(আতিক)

-হ্যা ভালই আছি

-ওই উনি কে (শুভ ফিস ফিস করে বলল)

-আমার বাবা(আতিক)

-ওহহহ। আসসালামু আলাইকুম আংকেল(শুভ)

-ওয়া আলাইকুমুস সালাম (আতিক এর বাবা)

-ও কে রে আতিক???

-বাবা ও আমার বন্ধু। ওর নাম শুভ

-ওহহহ(আতিকের বাবা চলে গেলো)


-এই তোর বাবা আমার নাম শুনে মন খারাপ করল কেনো??(শুভ)

-তুই বাইরের মানুষ তাই(আতিক)

-তো কত বার করে বললাম আমি আসবো না আমি আসবো না। শুনলি না তো

-চল ভেতরে

-না  ব্যাগ দে

-কেন??

-চলে যাবো

-শালা আয় ভেতরে। বাবা ওমনি করে


আতিক শুভর হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির মধ্যে নিয়ে গেলো...বাড়ির মধ্যে বড় একটা উঠান আছে.. বাড়ি টি তিন তালা। কিন্তু অনেক পুরনো। সবাই বাড়ির মধ্যে কাজ করছিলো। নতুন মানুষ বাড়িতে আসায় সবাই তাকিয়ে আছে... আতিকের মা এগিয়ে আসলো....উনি এসেই বলল

-তোর বাবা (আতিকের মা)

-বাবা কিছু বলে নি (আতিক)

-তা কেমন  আছিস??

-হ্যা মা ভালো

-এই যে তোমার নাম কি??

-শুভ

-আতিক তোমার কথা আগেই আমাকে বলেছে

-হুমমমম

-আতিক ওকে রুমে নিয়ে যা। আর হ্যা তোর মায়া পরি আসছিলো তোর খোঁজ নিতে

-কিরে মায়া পরি কে(শুভ)

-তোকে পরে বলছি। আগে রুমে চল

-না এখনই বল

-তোর তেরামী কখনো যাবে না


আতিক শুভকে একটা রুমে নিয়ে গেলো...

-কিরে এটা তোর রুম(শুভ)

-না

-তাহলে কার??

-আজ থেকে তোর

-হুমম বুঝলাম। কিন্তু এ রুমে আগে কে থাকত??

-এটা গেস্ট এর রুম। এর আগে অনেকেই ছিলো

-ওহহহ

-শোন ডান দিকে বাথরুম। আর বা দিকে শিড়ি দিয়ে সোজা তিন তালায় যাওয়া যায়...

-বলতে হবে না। একাই চিনে নিতাম

-এহহহ আসছে। যা ফ্রসে হ

-ওকে যা তুই


শুভকে যে রুমে থাকতে দিয়েছে। রুমের দেয়াল টা অনেক পুরোনো। তবে রুমের মধ্যে আসবাবপত্র গুলো অনেক দামি আর আধুনিক। শুভ সবকিছু খুটিয়ে নাটিয়ে দেখলো। তারপর ফ্রেস হয়ে আতিকের সাথে পুরো বাড়ি দেখলো আর সবার সাথে পরিচিত হলো....


-আচ্ছা একটা কথা (শুভ)

-কি কথা??(আতিক)

-তোর মায়া পরির ব্যাপার টা বল

-ওহহ ওইটা??

-হুমম

-মায়া হচ্ছে আমার হবু বউ

-কিহহহহ

-হ্যা রে

-আগে তো বলিস নি

-এমনি

-তা বিয়ে কবে তোদের??

-এই ১ মাস এর মধ্যেই

-হায় আল্লাহ

-কি হইছে??

-তুই মনের মধ্যে অনেক কিছু লুকায়া রাখিস। কিন্তু বলিস না

-আমি এমনি

-বেশি ভাব নিবি না

-ওকে

-আচ্ছা তোর বাবা বাড়ি ফিরবে কখন?

-কেনো??

-তোর বাবার সামনে আমি যাবো না

-কেনো??

-ভয় করে

-হা হা হা হা হা পাগল

-চুপপ কর। আংকেল এর চোখ দেখছিস!  মনে হয় খেয়ে ফেলবে

-ভেতর টা দেখিস নাই। দেখলে বুঝবি

-বাহির টাই দেখে যা বুঝার বুঝে গেছি

-ওকে এখন একটু খেয়ে রেস্ট নিবি চল

-হুমম চল


খাওয়া শেষ করে শুভ একটা ঘুম দিলো। বিকেলের দিকে ঘুম থেকে উঠলো। শুভ একটু ফ্রেস হয়ে ছাদে চলে গেলো। ছাদটায় গিয়ে দেখে ছাদে শুধু আচার শুকাতে দিয়েছে। ছাদের উপর থেকে বাড়িটার চারদিক দেখতে অনেক সুন্দর দেখা যায়।


ছাদে থেকে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় চারপাশে। শুভ একটু দূরেই একটা ছোট্ট বাজার দেখতে পায়। আশে পাশে পরিবেশ টাও অনেক ভালো। এই সময় শুভ একটু আচার খাওয়ার জন্য আচারে হাত দিতে যাবে এমন সময়


-এই চোর চোর চোর চোর চোর(একটা মেয়ে)

-না না আমি চোর না

-এই এই আপনি চুরি করে আচার খাচ্ছিলেন তাই না??

-না আমি একটু খাওয়ার জন্য হাত দিয়েছিলাম। কিন্তু নেই নি

-ওইতো নেওয়ার জন্য তো হাত বাড়িয়েছিলেন

-না মানে

-মাআআ বাবাআআ, ভাইয়া, কাকা, কাকিমা কে কোথায় আছো এদিকে আসো দেখে যাও চোর ধরেছি

-না আগে শুনবেন তো


একটুর মধ্যেই সবাই চলে আসলো। 

-কিরে কি হয়েছে(আতিক)

-এই যে উনি আচার চুরি করে খাচ্ছিলেন (মেয়েটি)

-আতিক আমি একটু নেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু নেই নি

-ওই ইরা ও আচার খাবে একটু তাই কি হয়েছে??

-ভাইয়া তুমি উনাকে চেনো??

-হ্যা ও আমার বন্ধু। আমার সাথেই আসছে। তুই তাকে চোর বললি! সরি বল

-না সরি বলার দরকার নেই। উনি উনার শাশ্তি পেয়ে গেছেন।

-তুই বল সরি

-পারব না। পারলে তুমি বলো (ইরা চলে গেলো)


-এই এটা কে রে?(শুভ)

-ও আমার ছোট বোন (আতিক)

-আপন??

-হুমমম

-আগে তো বলিস নি কখনো

-তুই শুনে কি করতি??

-না কিছু না। এমনি বলছিলাম আর কি 

-ওহহহ। তো ভেতরে যাবি নাকি ছাদে থাকবি??

-এখানেই একটু থাকি

-আচ্ছা থাক আমি ভেতরে যাই

-হুমমম যা। 


আতিকের সাথে যারা আসছিল তারা শুধু দেখে চলে গেলো। কিছু বলল না।

শুভ সেই ভাবেই ছাদে দাড়িয়ে যায়...কিছুক্ষণ পর আবার ইরা ছাদে আসে....শুভ পায়ের আওয়াজ শুনে পেছনে তাকায়। তাকিয়ে দেখে মেয়েটি। শুভ মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিলো...মেয়েটি এসে শুভর পাশেই দাড়াল...

-সরি(মেয়েটি)

-এহহ(শুভ)

-কানে শুনেন না!  সরি

-কি জন্য?

-তখন ভুল হইছিলো তাই

-না ঠিক আছে।

-হুমম আমি ইরা

-আমি শুভ

-আচার খাবেন??

-(শুভ ইরার দিকে তাকিয়ে বলল)

না খাওয়া হয়ে গেছে

-কখন খেয়েছেন?? আমি যাওয়ার পর??

-না আপনি যে ভাবে চোর ডাকলেন তাতে খাওয়া হয়ে গেছে

-ওহহ সরি বললাম তো

-আমি বলছি তো হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না

-ওকে ওকে আমাকে একটা সাহায্য করবেন??

-কিইই??

-এই আচার গুলো আমার ঘরে নিয়ে যাবেন

-না

-মুখের উপর এভাবে না বললেন কেনো??

-যাদের দিয়ে প্রতিদিন নেন তাদের বলেন

-প্রতিদিন আমি একাই নেই

-তো আজ ও একা নেন

-না নিলে খবর আছে। আমি আব্বুকে বলে দিবো আপনি আমার আচার চুরি করেছেন

- না না আব্বুকে বলার কি আছে। আমি নিবো তোহ

-বাহ। আমার আব্বুকে আপনিও ভয় পান। কখন চিনলেন আমার আব্বুকে??

-আজ আসার পরই

-গুড

-হুমম

-আমি তাকে ভয় পাই না। সে আমাকে ভয় পায়

-তাই??

-হ্যা। এবার কথা না বলে আচার গুলো নিয়ে এসে আমার রুমে চলেন

-ওকে


শুভ ইরার পেছন পেছন ইরার রুমে গেলো। বাড়ির সবাই দেখলো। কিন্তু কেউ কিছু বলল না ..

-আচ্ছা আপনি ওইখান টায় বসেন। আমি আসছি (ইরা)

-না আমি বাইরে যাই(শুভ)

-না এখানেই বসে থাকেন

-আচ্ছা


কিছুক্ষণ পর ইরা আসলো। হাতে একটা আচারের বাটি

-এই যে নিন খান

-না এগুলো কেনো করছেন

-হাতে নিন আগে (ধমক দিয়ে)

-হুমম

-এখন খান

-না মানে

-কি মানে মানে করছেন?? তখন তো খেতে পারেন নি। এখন খান

-হ্যা কিন্তু একটা সমস্যা আছে

-কি???

-আপনি সামনে থাকলে আমি খেতে পারব না

-কেনো??

-আমার একটু লজ্জা বেশি

-হা হা হা হা

-হাসছেন কেনো

-এমনি। আপনি খান আমি অন্য দিক ঘুরে থাকি

-হুমম ঠিক আছে


ইরা অন্যদিকে ঘুরার পর। শুভ একবার মুখে আচার নিতেই ইরা বলল

-দেখে ফেলিছি (ইরা)

-এহমমম এহমমম এহমমম

-এই এই কি হয়েছে ফেলে দিলেন কেনো?? 

-এ এ এমনি

-এত ভয় করেন কেনো??

-আচ্ছা আমি এখন যাই

-হুমম যান


শুভ উঠে চলে যাবে এমন সময় ইরা তার পা দিয়ে শুভ পায়ে বাড়ি দেয়। আর শুভ হোচট খেয়ে পরে যায়..

-এই এই সাবধানে সাবধানে(ইরা)

-...........(শুভ উঠে দাড়ালো)

-আচার খেয়ে কি মাতাল হয়ে গেছেন?? হা হা হা হা

।।

।।

।।

।।কবুল

Part: 2

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>


শুভ উঠে চলে যাবে এমন সময় ইরা তার পা দিয়ে শুভ পায়ে বাড়ি দেয়। আর শুভ হোচট খেয়ে পরে যায়..

-এই এই সাবধানে সাবধানে(ইরা)

-...........(শুভ উঠে দাড়ালো)

-আচার খেয়ে কি মাতাল হয়ে গেছেন?? হা হা হা হা

-না আপনি তো(শুভ)

-আমি তো কি হুমম

-উহমমম কিছু না

-হি হি হি হি


শুভ সেখান থেকে চলে আসলো। আর মনে মনে ভাবতে থাকল কি মেয়েরে বাবা রে বাবা। শুভ রুমে এসে শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছিলো। তখন আতিক এসে বলল...

-এই চল(আতিক)

-কই যাবি??(শুভ)

-মায়ার সাথে দেখা করতে

-কোথায়??

-ওদের বাড়ি

-এই সন্ধ্যা বেলা!!

-হ্যা চল

-কাল সকালে দেখা করলেই তো হয়

-না এখনিই।

-মনের মধ্যে কে উথাল পাতাল করছে নাকি??

-বেশি কথা না বলে বউ রেখে উঠে আয়।

-হুহ চল


আতিক আর শুভ মায়ার সাথে দেখা করতে যাচ্ছিল..এমন সময় ইরা তাদের দেখে বলে..

-ওই ভাইয়া দাড়াও(ইরা)

-কিইইই??(আতিক)

-কই যাও?

-বাইরে ঘুরতে যাচ্ছি

-মিথ্যা বলো কেন??

-না সত্যি

-না তুমি ভাবির সাথে দেখা করতে যাচ্ছো।

-তুই জানলি কিভাবে

-সেটা তো বলা যাবে না

-ওকে না বললি। তোর ভাবির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি

-আমি যাবো

-আরে না তুই থাক

-না আমি যাবো

-তোকে নিলে তো যাবি??

-না নিলে বাবা কে বলে দিবো

-কি বলে দিবি??

-তুমি ভাবির সাথে দেখা করতে রাত করে তাদের বাসায় গিয়েছিলে। আর কত কিছু বানিয়ে বানিয়ে বলব

-প্লিজ বাবাকে কিছু বলিস না

-তাহলে আমাকে নিয়ে চলো

-হুহ চল

-এই আপনিও যাচ্ছেন নাকি??(ইরা শুভ কে উদ্দেশ্য করে বলল)

-হ্যা ও সাথে যাবে(আতিক)

-তাহলে তো ভালই হলো

-ভালই হলো মানে??

-মানে উনিও তোমার বউকে দেখতে পারবে তাই

-হুমম চল এখন


তিনজন রওনা দিলো মায়াদের বাড়ি যাওয়ার জন্য। আতিক দের বাড়ি ঘেকে ১০ মিনিট হাটলেই মায়াদের বাড়ি। তো তিনজন হাটছে সবার আগে আতিক তারপর ইরা তারপর শুভ। অন্ধকারে আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে সব কিছু....আর এই আন্ধকারে ইরার ফাজলামি শুরু হয়ে গেছে....


ইরা হাটতে হাটতে দাড়িয়ে যায়। খুব তাড়াতাড়ি শুভর হাত ধরে অনেক জোড়ে চিমটি কাটে....

-আআআআআআ(শুভ)

-কিরে কি কি কি হইছে(আতিক)

-পা পা পায়ের উপর দিয়ে কি যেনো গেলো

-হুহ

-আপনি তো অনেক ভিতু এটুকুই সহ্য করতে পারেন না! আর এত জোড়ে কেউ চিল্লানি দেয়?? (ইরা)

-.....(শুভ কিছু বলল না। বলে লাভ নেই। যে মেয়ে পরে কি না কি করে বসে)


আবার তারা হাটতে থাকে। কিছুক্ষণ এর মধ্যে মায়াদের বাড়ি পৌছে যায়। ইরা আর আতিক সবার সাথে দেখা করে। শুভ দাড়িয়ে দাড়িয়ে সেটা দেখে....।সবার সাথে কথা বলা শেষে ইরা শুভ আতিককে একটা রুমের মধ্যে বসতে দেয়.....

-আসার কি দরকার ছিলো??(মায়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেই কথাটা বলল)

-না আমি তো মানে দেরি(আতিক)

-কি হলো মিথ্যা কথা বানিয়ে বানিয়ে বলতে পাড়ছো না??

(আতিক উঠে মায়ার কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে বলল)

-ওরা আছে। তুমি এসব বললে কি মনে করবে ওরা।(আতিক)

-সরি সরি দেখি নি

-হুমম আসতে

-হুমম। ইরা কেমন আছো??

-ভালো। ভাবি আপনি কেমন আছেন??

-হ্যা ভালো

-ভাবি একটা কথা বলি

-হুমম বলো

-আপনি আমাকে আর বলবেন না আমি কেমন আছি??

-কেনো??

-সারাদিন ই তো আপনার সাথে দেখা হয়

-হা হা হা। আচ্ছা ওই ছেলেটা কে??

-ওইটা আমার ফ্রেন্ড(আতিক)

-কেমন ফ্রেন্ড??

-বেষ্ট ফ্রেন্ড

-ওহহ ভালো। আচ্ছা ইরা তুমি উনাকে নিয়ে পাশের রুমে বসো। তোমার ভাইয়ের সাথে আমার কিছু কথা আছে

-ওকে ভাবি কথা বলেন। এই আসেন (ইরা শুভকে বলল)


পাশের রুমে গিয়ে বসল ইরা আর শুভ। আর এদিকে আতিক আর মায়ার মাঝে তুমুল ঝগড়া...আতিক আসছে এসেই মায়ার সাথে দেখা করে নাই কি জন্য? এইটা নিয়ে ঝগড়া...আর এদিকে শুভ হঠাৎ করে ইরা কে বলল...


-অন্ধকারে আমার হাতে চিমটি কাটলেন কেনো??(শুভ)

-বাব্বাহ! আপনার মুখে দেখছি কথা ফুটছে। তাও আবার আমার উপর অভিযোগ নিয়ে

-হুমম চিমটি কাটলেন কেনো সেটা বলেন

-ভালবেসে চিমটি কাটছি

-মানে??

-মানে বোঝেন না??

-না

-ভালবেসে বাচ্চাদের আদর করে চিমটি কাটে। আমিও আপনাকে সেই জন্যই চিমটি কাটছি

-আমাকে বাচ্চা মনে হয়??

-তা নয় তো কি?? একটা কথা পর্যন্ত বলেন না। আপনি তো বাচ্চাই

-আমি কিন্তু আপনার থেকে অনেক বড়

-ও তাই??

-হ্যা

-তা কত বড়??

-আমি মার্স্টাস শেষ করে। তিন বছর হলো চাকরি করি

-আর আমি অনার্স ফাস্ট ইয়ার এ পড়ি

-হ্যা অনেক ছোট আপনি

-এহহহ বেশি তো পার্থক্য না

-কে বলছে?? অনেক বেশি পার্থক্য

-তাই??

-হ্যা

-ওকে। আপনার বাসায় কে কে আছেন??

-আমি

-আর কে??

-আমি

-মানে

-আমি মানে আমি। আর কেউ নেই।

-তো সবাই কই গেছে

-জানি না। তাদের কখনো দেখি নি

-তো আপনি আজ এতদূর কিভাবে??

-একটা আশ্রম এ থেকে

-সত্যি আপনার কেউ নেই

-সত্যি বলছি কেউ নেই

-একা একা বড় হতে পারলেন??

-কি সব আজগুবি প্রশ্ন করছেন। একা কেন?? আমার সাথে আরও অনেকে ছিলো

-ওহহহ

-আপনার বাবা মাকে আপনি কখনো দেখছেন??

-না

-ওহহহ। আচ্ছা আপনার হাতটা দেখি তো

-কেনো??

-আর দেন না

(ইরা জোর করে শুভর হাত নিলো। আর য্যোতিষিদের মতো হাত দেখে বলল)

-আপনার কপালে সুন্দর একটা বউ আছে। বউটা একটু ঝগড়াটে হবে। তবে আপনাকে অনেক ভালবাসবে


(শুভ হাতটান দিয়ে বলল)

-কে বলছে আপনাকে??(শুভ)

-আমি বলছি

-ইহহ বললেই হলো। আমার কপালে বউ নেই

-আছে

-না নেই

-আছে

-আচ্ছা থাকলে থাকবে। আপনি এত মাথা ঘামাচ্ছেন কেনো??

-টাকা দেন

-কিসের টাকা

-মাথা ঘামিয়ে আপনার হাত দেখেছি। টাকা দেন

-আমি তো হাত দেখতি বলি নি

-টাকা দিবনে কি না??

-না

-টাকা দিবি না মানে(ইরা শুভর গলা চেপে ধরলো

-দিচ্ছি দিচ্ছি ছাড়েন

-না করবি না তো

-না টাকা দিবো

-হুমমম দেন

-কত দিবো

-উমমম ১৫০০ দেন

-মাত্র একটা হাত দেখতে ১৫০০ টাকা

-হ্যা অনেক কষ্টে দেখেছি

-ওকে এই নেন ১৫০০ টাকা

-না শোনেন পুরো টাকা নগদ নেবো না। ৫০০ টাকা নগদে নেবো আর..

-আর কি??

-আর ১০০০ টাকার জন্য ২০০ টা কিস করবো আপনাকে

-কিহহহহহ কি বললনে

-কানে শোনেন না?? একটা কিস এর দাম ৫ টাকা করে হলে ২০০ কিসের দাম ১০০০ টাকা তাহলেই শোধ

-না আপনি এখনি পুরো টাকা নেন

-আমি একবার যা বলি তাই হবে। না হলে বিপরীতে খারাপ কিছু হবে

-এগুলো ঠিক না....


-কিরে তোরা বসে এখনো কথা বলছিস??(আতিক এসে বলল)

-হ্যা ভাইয়া। তোমার ভাবির সাথে কথা বলা হইছে??

-হ্যা চল এখন অনেক রাত হলো

-হুমমম চলো


তারা তখনই রওনা দিয়ে বাড়ি ফিরল।


পরদিন সকাল বেলা...


শুভ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ছাদে যায়। ছাদে গিয়ে দেখে ইরার বাবা। শুভ তাড়াতাড়ি আবার নিচে নেমে আসে...কিছুক্ষণ পর আবার উপরে যায় শুভ সে গত রাতের কথা ভাবতে থাক। মেয়েটা যে কি করবে আল্লাই যানে। মেয়েটার মাথায় মনে হয় সমস্যা আছে। না হলে এভাবে কেউ (শুভ মুচকি হাসে)....ছাদে হাটতে হাটতে শুভর চোখ যায় বাড়ির উঠানের মধ্যে.....

-এই ইরা একটু খেয়ে নে (ইরার মা)

-না মা খাবো না তুমি খাও(ইরা)


ইরা কে খাওয়ানোর জন্য যথা সাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু পাড়ছে না। শুভর কাছে এই অনুভূতি গুলো শূন্য শূন্য লাগে। তার তো এইরকম আদর করার কেউ নেই। কেউ ছিলো কি না তাও যানে। ইরার দিকে সে একভাবে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছিলো। ইতি মধ্যে ইরা একবার ভাত মুখে নেয়। আর ভাত চিবোতে চিবোতে উপরে তাকায়। দেখে যে শু দাড়িয়ে তার খাওয়া দেখছে.....শুভর চোখে চোখ পড়ে যায়....

-মা তুমি প্লেট টা আমার কাছে দাও। আমি খেয়ে নিবো(ইরা)

-ফেলে দিবি না তো

-না গো। দাও তো

ইরা প্লেট নিয়ে উপরে চলে আসে শুভর কাছে। শুভ ইরার আসা দেখে নেমে যাচ্ছিলো..

-এই দাড়ান (ইরা ডাকল)

-জ্বি বলেন(শুভ)

-কই যান??

-এইতো রুমে

-আমি আসছি দেখে চলে যাচ্ছেন

-না অনেক্ষণ হলো আসছি। তাই চলে যাচ্ছি

-হুমম হা করেন

-কেনো??

-আপনাকে খাইয়ে দিবো

-না কি বলেন এগুলা

-হা করেন

-এগুলো কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে

-হা কর

-কর করছি করছি.....

।।

।।

।।

।।কবুল

Part: 3 

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>>


-হুমম হা করেন(ইরা)

-কেনো??(শুভ)

-আপনাকে খাইয়ে দিবো

-না কি বলেন এগুলা

-হা করেন

-এগুলো কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে

-হা কর

-কর করছি করছি.....


ইরা শুভকে খাইয়ে দিলো।

-আপনি আমার পেছনে এইভাবে লেগে আছেন কেনো??কেউ দেখলে অন্য কিছু ভাববে (শুভ)

-হ্যা অন্য কিছু চলছে। তাই অন্য কিছু ভাবা স্বাভাবিক(ইরা)

-না কিছু চলছে না

-হা করেন আবার

-আগে বলেন, এরকম পাগলামি করছেন কেনো?? খাইয়ে দিচ্ছেন তাও আবার একটা অচেনা লোক কে

-মাথা গরম করাইয়েন না। আমি আপনার সব প্রশ্নের জবাব এখন দিতে পারব না

-তো কখন দিবেন??

-সময় হলে

-হা করেন

-হুমম


-আপনার জীবনে তো আমি প্রথম তাই না?? (ইরা)

-বুঝলাম না (শুভ(

-আমি প্রথম এভাবে খাওয়াইয়া দিতেছি

-হ্যা তা ঠিক, আপনি প্রথম

-হুমমম আমি শেষ হবো। মনে থাকে যেন

-না থাকবে না

-কেনো??

-আপনি যা চাচ্ছেন সেটা কখনো সম্ভব না

-কি চাচ্ছি আমি??

-আমি বুঝি তো এত কেয়ার কি জন্য করেন

-হ্যা এই বুঝটাই মনের মধ্যে রাখেন

-যাই হোক আপনি যা চাচ্ছেন এটা কখনো সম্ভব না

-সেটা আমি দেখবো। এখন আপনার রুমে যান

-আচ্ছা ঠিক আছে


শুভ রুমে চলে আসলো। ইরা তার সাথে যে ব্যাবহার করা শুরু করছে তাতে খুব ভয় ই করছে শুভর.... শুভ শুয়ে থেকে কিছুক্ষণ চিন্তা করল, তারপর আতিক এর কাছে গেলো। আতিক তার রুমেই বসে ছিলো শুভ কে রুমে আসা দেখেই বলল


-কিরে কি অবস্থা(আতিক)

-আতিক একটা কথা বলব রাগ করবি না তো (শুভ)

-না বল

-আমি চলে যাবো

-চলে যাবি মানে??

-মানে এখানে থাকব না। চলে যাবো

-কেন?? থাকতে কোনো সমস্যা হয়??

-না। আমার ভালো লাগছে না

-কি বলিস এগুলা

-হুমম

-না তোর আমার বিয়ে তে থাকতে হবে

-কিন্তু

-কোনো কিন্তু না যদি যাস তাহলে সব এখানেই শেষ করে যেতে হবে

-.........

-কি ভাবছিস??

-না কিছু না

-থাকবি নাকি যাবি??

-থাকতেই হবে

-হুমমম

-আচ্ছা একটা কথা বলি

-হুমম বল

-কিছু মনে করবি না তো

-না বল

-তোর এখন বিয়ে করাটা ঠিক হবে না

-কেনো??

-তোর ছোট বোন কে আগে বিয়ে দে তারপর তুই বিয়ে কর

-কেনো??

-এমনি এটা সমাজে ভাল দেখায় না

-তো ও যদি রাজি না হয়??

-তোর বাবা কে বল আগে। ও রাজি হোক আর না হোক সেটা পরে দেখা যাবে।

-আচ্ছা ভেবে দেখি

-কোনো ভেবে দেখা লাগবে না। যা বললাম তাই কর 

-হুমম ঠিক আছে। সকালের খাওয়া খাইছিস??

-হ্যা

-কখন খেলি??

-এই যে মাত্রই

-আমাকে তো ডাকলি না

-না মানে মনে ছিলো না 

-ওহহ ওকে আমার খুব খুদা লাগছে। আমি খেয়ে নেই

-আচ্ছা ঠিক আছে


শুভ আতিক এর রুম থেকে বাইরে আসতেই...

-এই কাকু তুমি ক্রিকেট খেলতে পারো??(কয়েকটা বাচ্চা)

-পারি তবে তোমাদের মতই(শুভ)

-ওকে চলো তাহলে খেলি

-এখন??

-হ্যা এখনই

-ওকে চলো

-ইয়েএএএএএএ(বাচ্চা গুলো)

-কি হইছে এত চেচামিচি কিসের হ্যা??(আতিক এর বাবা)

-দাদু আমরা এই কাকুর সাথে খেলবো

-ওকে যাও


আতিকের বাবা শুভর দিকে আড় চোখে তাকাল। শুভও একটু আর চোখে তাকালো। দুজনের চোখে চোখ পড়ায় দুজনই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলো....


খেলাধুলা শেষ করার পর শুভ রুমে আসে...এসে শোয়া মাত্রই ইরার আগমন

-এতক্ষণ কই ছিলেন??(ইরা)

-বাচ্চাদের সাথে একটু খেললাম (শুভ)

-আমাকে ডাকতেন আমিও খেলতাম

-আপনি খেলতে পাড়েন??

-না আপনি তো আছেন শিখিয়ে দিতেন

-আচ্ছা আপনি এখন যান। কেউ দেখলে সমস্যা হতে পারে

-এটা আমার ঘর। আমি যতক্ষণ ইচ্ছা থাকব

-আচ্ছা আমি যখন চলে যাবো তখন থাইকেন এখন যান

-না আপনার সাথে কিছু কথা আছে 

(শুভর কাছে এসে বসল)

-এই দূরে থেকেই বলেন

-না বেশি বুঝলে আরও কাছে যাবো

-না লাগবে না বলেন

-আপনার জি এফ আছে বা আপনি কাউকে ভালবাসেন

-...............

-কি হলো বলেন

-হ্যা আছে

-নাম কি তার সে কি করে??(ইরার চোখে পানি)

-নাম হলো

-বলেন

-ওই যে কি বলে যেনো

-জি এফ এর নাম ভুলে গেছেন??

-না মানে ওর নামটা একটু কঠিন

-কি নাম বলেন

-উমমম এঞ্জেল নেহা

-কিহহহহ??

-হ্যা

-কি করে সে??

-এই তো আমার সাথেই জব করে

-হুমমম দাড়ান আসছি

-.........(শুভ কিছুই বলল না। সে ভাবল কি যে করবে)


ইরা গেলো তার ভাইয়ের কাছে..

-ওই ভাইয়া (ইরা)

-হ্যা বল (আতিক)

-এঞ্জেল নেহা নামে তোদের সাথে কেউ জব করে??

-না তো কেনো??

-না কিছু না

-হঠাৎ তুই এ প্রশ্ন করলি যে??

-ভাবি বলল তুমি এঞ্জেল নেহার সাথে লাইন মারো

-ও একথা বলছে??

-হ্যা 

-তুই যা আমি দেখতেছি

-ওকে


ইরা আবার শুভর রুমে আসলো। বেচারা বসেই ছিলো। ইরা দরজা টা আটকে দিয়ে দৌড়ে এসে সোজা কিস করলো ঠোঁটে...

-এ এ এটা কি করলেন??(শুভ)

-২০০ টা কিস এর মধ্যে একটা দিলাম(ইরা)

-কাজ টা তো ঠিক হলো না

-আপনি কাঁপছেন কেনো?? আর একটা দিবো??

-ঠাসসসসসসসসস


(ইরা চুপ হয়ে গেলো)

-এগুলো ঠিক না। আপনার ভাইয়ের ফ্রেন্ড আমি। ও জানলে কি হবে আপনি বুঝতে পারছেন??

-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহহহহ(আবারও কিস করলো ইরা)

-যতবার তুই মারবি ততবার কিস করবো

-..........

-আর ১৯৮ টা থাকলে সময় মতো নিয়ে নিবো (এটা বলে ইরা চলে গেলো)


শুভ বসে বসে ভাবছে। মেয়েটা সত্যি অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলল। একথা কি আতিক কে জানাবো??নাকি কি করবো ধুররর মাথায় কিচ্ছু আসছে না.... (শুভ ঘুমিয়ে যায়)


সেদিন বিকেলের দিকে...শুভ রুম থেকে বেড়িয়ে দেখল বাড়ির সবাই বসে আছে । হয়তো কোনো আলোচনা হবে। আতিক শুভকে দেখে বলল, 

-এদিকে এসে বস (আতিক)

-হুমম


আতিক এর বাবা কথা বলছে..

-সেই অনেক আগে থেকেই আমাদের বাড়িতে যারই বিয়ে হইছে, অনেক ধুমধাম করে হয়। তাই আতিকের বিয়ে টাও আমি অনেক বড় করে দিবো...আর ইরার...


আতিকের বাবা কথা বলতে বলতে শুভর দিকে চোখ যায় আর বলে...

-পরিবারের আলোচনা হচ্ছে। বাইরের কেউ না থাকলে ভাল হয়


শুভ বুঝতে পারল। আর কিছু না বলে চলে গেলো...ইরা তাকিয়ে দেখল কিন্তু কিছু বলতে পারলো না....


ইরার বাবা আবার বলতে শুরু করল

-আমি আতিকের বিয়ের আগেই। ইরার বিয়ে টা ঠিক করে রাখতে চাই। অনুষ্ঠান পরে হবে।

-বাবা কিন্তু আমি তো(ইরা)

-তোমার কোনো কথা শুনবো না 

-ধুররর তুমি বিয়ে করো আমি পারবো না(এটা বলে ইরা চলে গেলো)

-ইরার মা ওকে বোঝাও। আমি ভালর জন্যই বলছি।


ইরা রুমে যায়। আর এদিকে শুভ ছাদে এসে বসে আছে। আর ভাবছে যাক আইডিয়া টা কাজে লাগছে...


ইরা ওর ভাইয়ার রুমে আসে...

-ওই ভাইয়া (ইরা)

-কি হয়েছে?? এত রেগে কেনো??

-বাবা হঠাৎ করে আমার বিয়ের কথা তুলল কেনো??

-দরকার সেই জন্য তুলছে

-আমি পারব না বিয়ে করতে

-বাবা কিন্তু রাগ করবে

-যা ইচ্ছা তাই করুক। আমি পারব না

-হুহ তবে যাই বলিস আমার দোস্ত এর মাথায় বুদ্ধি আছে

-কেন??

-ওই আমাকে এসে বলল(আগের কথা গুলো বলল)

-.......(ইরা হা হয়ে গেছে। কোনো কথা বলতে পারছে না)

-কিরে কিছু বলছিস না কেনো??

-না কিছু না


ইরা রাগে গজ গজ করেতে শুভর রুমে ঠুকলো। কিন্তু পেলো না। ছাদে গেলো দেখে বসে আছে.....কাছে গিয়ে টেনে তুলল

-আমার বিয়ের কথা আমার ভাইয়ার মাথায় ঠুকাইছিস কেনো??(ইরা)

-...................

-কি হলো কথা বল

-মানে আপনি যে ব্যাবহার করেন এটা তো স্বভাবিক মনে হয় নাই আমার। তাই এই কথা বলছি

-তোর স্বভাবিক এর গুষ্ঠি কিলাই। তুই দাড়া এখানে আমি এখনই আসছি

-কই যাবেন??

-দাড়া তুই আমি এখনই আসছি...


ইরা চলে গেলো। আবার কিছুক্ষণ পর ফিরে আসলো। হাতে একটা ব্লেড...

-এই ব্লেড দিয়ে কি করবেন??

-দেখ কি করি(এটা বলে ইরা হাতে ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কাটল)


শুভ দৌড়ে গিয়ে কাটা জায়গায় চেপো ধরলো

-এই কি করলেন আপনি??

-বাঁচব না আমি তোমাকে ছাড়া

-এত ভালবাসো কেনো

-জানি না আমি


খুব ধীর গতিতে ইরা শুভকে জড়িয়ে ধরলো। শুভ আর কিছু বলল না....

।।

।।

।।

।।কবুল

Part: 4 

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>


শুভ দৌড়ে গিয়ে কাটা জায়গায় চেপো ধরলো

-এই কি করলেন আপনি??(শুভ)

-বাঁচব না আমি তোমাকে ছাড়া(ইরা)

-এত ভালবাসো কেনো

-জানি না আমি

খুব ধীর গতিতে ইরা শুভকে জড়িয়ে ধরলো। শুভ আর কিছু বলল না....

-এই হইছো ছাড়ো এখন (শুভ)

-..........(ইরা কোনো কথা বলছে না)

-এই


ইরা অজ্ঞান হয়ে গেছে। শুভ একটা কাপড় দিয়ে হাতটা বেধে দিলো। ইরাকে রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় সবাই দেখে দাড়িয়ে গেলো...বাড়ির ভেতর সে সময় আতিক এর বাবাও ছিলেন। শুভ কিছু না দেখে ইরাকে ইরার রুমে নিয়ে গিয়ে শোয়াই দিলো।

আতিক দেখা মাত্র দৌড়ে এলো...


-এই কি হয়েছে??(আতিক)

-ছাদ এর উপর অজ্ঞান হয়ে ছিলো। আর হাত ও কাটা। ওই জায়গায় বেধে দিয়েছি..(শুভ মিথ্যা বলল। সত্যি বললে আবার ভেজাল ও হতে পারে)

-এই ইরা, ইরা(আতিক)

-আচ্ছা পানি নিয়ে আয় একটু অজ্ঞান হয়ে গেছে মনে হয়


আতিক পানি নিয়ে এসে মুখে ছিটেয়ে দিলো। ইরার বাবা মা এগিয়ে এসেছে। বাড়ির সবাই ও এসেছে। ৩০ মিনিট পর ইরা জ্ঞান ফেরে। ইরার বাবা দূরে দাড়িয়ে ছিলো। ইরার জ্ঞান ফেরা দেখায় কাছে আসলো। আর শুভ কাছে থেকে ভালই দূরে গিয়ে দাড়াল।

-মা কি হয়েছে হাত কাটছিলি কেনো??(বাবা)

-আমি এখন বিয়ে করব না (ইরা)

-তাই বলে এ কাজ করতে হবে তোর(মা)

-হুমমম হবে(ইরা)

-আচ্ছা তোর বিয়ে এখন না অনেক দেড়ি আছে। 

-হুমমম এখন ঠিক আছে

-ডাক্তার ডাকব হাত টা ব্যান্ডেজ করতে??

-না। ডাক্তার কই আছে??

-..............

(শুভ কথাটা শুনে মুচকি হেসে তার রুমে চলে গেলো)

ইরা মেয়েটাকে শুভ ভালবেসে ফেলছে। শুভ ভাবছে

-একয়েক দিন এভাবেই যাক। আমি যখন চলে যাবো সব ঠিক হয়ে যাবে।

(শুভ এসব ভাবছিলো হঠাৎ আতিকের আগমন)

-এই শুভ(আতিক)

-হ্যা বল(শুভ)

-এটা কি হলো??

-হুমম আমিও তাই ভাবছি। তোর বোনটা যে এত যেদী সেটা তো জানতাম না

-হুমম রে খুব বেশী যেদি

-হ্যা এখন তাহলে কি করবি??

-এইতো বিয়ে করে চলে যাবো

-সব ঠিক ঠাক হয়েছে কি??

-আজ বিকেলে মায়ার বাড়ি থেকে লোকজন এসে সব ঠিক করবে। বিকেলে তুই থাকিস তো আমার সাথে।

-কেনো??

-বাব্বাহ একটাই বন্ধু আমার

-কিন্তু তোর বাবা তো বাইরের লোক সহ্য করতে পারে না

-হুহ কপাল আমার 

-সে যাই হোক। তোর বিয়েটা ভালভাবে হলেই হলো। 

-হুমম সরি

-কি জন্য??

-বাবার এইরকম ব্যাবহার এর জন্য

-ধূরর পাগল। এটার জন্য আবার সরি বলতে হবে নাকও?? আর উনিও হয়তো কোনো কারনে এমন করতেছে

-হুমম আচ্ছা থাক আমি আসছি

-ওকে


সেদিন বিকেল বেলা...মায়ার বাড়ি থেকে অনেক লোকজন আসলো। শুভ তখনই বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা রাস্তা ধরে হাটতে থাকে...বাড়িতে সবাই বসেছে, কি ধরনের আয়জন হবে, কত জন লোক আসবে যাবে, এসব কথা হচ্ছে।


ইরা রুমে শুয়ে ছিলো। সে এসে তার বাবার কাছে বসল। আর তার চোখ দুটো শুভকে খুঁজছিলো কিন্তু শুভকে পাচ্ছিলো না । সে উঠে শুভর রুমে গেলো। গিয়ে দেখে নেই। সে ছাদে গেলো। রুমে না থাকলে শুভ ছাদেই থাকে। সেখানে গিয়ে পেলো না। 

-গেলো কই(ইরা মনে মনে) আসুক আজকে ওর খবর আছে

-কিরে কার খবর আছে??(ইরার মা)

-না মানে কিছু না

-আমি সব জানি

-কি যানো

-তুই ওই ছেলেটাকে ভালবাসিস

-না মানে মা তুমি জানলে কিভাবে??

-সকালে তুই তোর রুম থেকে ব্লেড নিয়ে গেলি তখন আমি তোর পিছু নেই। আর বাকি সব কিছু দেখছি আমি। 

-আসলে মা সত্যি আমি ছেলেটাকে ভালবাসি

-এটা তোর বাবা শুনলে খবর আছে। হয়ত তোকে কিছু বলবে না। তবে ছেলেটার সমস্যা করতে পারে

-আমি তাহলে কি করব মা

-আমি জানি না। তুই তো তোর বাবা কে চিনিস

-বাবা ও আমাকে চেনে বুঝছো

-তোর সাথে কথায় পারা যাবে না। আয় নিচে আয়

-না আমি খুব টেনশন এ আছি

-কেনো??

-তোমার জামাই টা যে কই গেলো দেখতে পাচ্ছি না

-চিন্তা করিস না আসবে। এখন নিচে আয়।

-হুমম চলো


সন্ধ্যার পর শুভ বাড়ি ফেরে। রুমে ভেতর ঠুকতে যাবে তখনই

-ওখানেই দাড়া (শুভর রুমের মধ্যে থেকেই আওয়াজ আসে। তাকিয়ে দেখে ইরা লাঠি নিয়ে দাড়িয়ে আছে)

-কি হয়েছে??(শুভ)

-এতক্ষণ কই ছিলি??

-এই হেটে হেটে গ্রাম টা দেখছিলাম

-আমি যে তোর জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছি

-আচ্ছা কি জন্য আমার সাথে এমন করেন?? 

-সকালপ তো বললাম ই

-কি জন্য ভালবাসেন?? আর কি দেখে ভালবাসেন??

-সত্যি বলব

-হুমমম বলেন

-আসলে আমি যখন শুনলাম আপনার কেউ নেই তখন কেমন যানি একটা মায়া সৃষ্টি হয়েছে। আর তখন থেকেই ভালবাসি

-এটা তো করুনা

-না এটা ভালবাসা

-না গো এটা একধরনের করুনা

-হাতে লাঠি দেখছিস?? মাথা ফাটিয়ে দিবো একদম

-.........

-আমি মাকে সব কিছু বলে দিয়েছি

-মানে!!!

-মানে আমি যে তোমাকে ভালবাসি সেটা বলে দিয়েছি

-আন্টি কি বললেন

-মেনে নিয়েছে

-মিথ্যা

-মিথ্যা বলতে যাব কেন?? সত্যি মেনে নিয়েছে।

-কি যে করেন আপনি

-সে যাই করি। এখন বল এত দেড়ি করে বাড়ি ফিরলি কেনো??

-বললাম তো গ্রামটা একটু ঘুরে দেখলাম

-আমাকে সাথে নিতে

-হুমম

-কি হুমমম??

-না কিছু না

-এখন দরজটা বন্ধ করি

-কেন কেন??

-১৯৮ টা পাই মনে নেই

-না মানে এখন না

-কখন

-পড়ে

-না এখন

-ওগুলো তুমি তোমার বর কে দিয়ো

-তুমিই তো আমার বর

-না

-দাড়া তোর না বলা ছুটিয়ে দিচ্ছি..

-ওই শুভ দরজটা খোল তো(হঠাৎ আতিকের আগমন)

-ওই ওই এখন কি করবে??(শুভ)

-ভয় পাওয়ার কিছু নেই(ইরা)

-তো কি করবেন??

-সেটা পরে বলছি আগে বলেন আপনি করে আর বলবে না তুমি করে বলবে।

-এখন এ কথা আসছে কেন??

-আগে বলো

-ওকে

-ওই ঘুমিয়ে গেছিস নাকি??(আতিক)

-না ভাইয়া দাড়াও আসছি(ইরা)

-🤨🤨🤨-ইরা ভেতরে কি করে(শুভ মনে মনে বলল)


ইরা গিয়ে দরজা খুলল। 

-ওই তুই ভেতরে কি করিস?? আর দরজটা আটকানো কেনো??(আতিক)

-আর বলো না। তোমার বন্ধু আবার আচার চুরি করছে। এই যে লাঠি নিয়ে মারতে আসছি

-ওই তুই ওকে মারছিস নাকি??

-না মারব ভাবছি। তুমি বাইরে যাও

-না বেশি কথা বলিস যা ঘরে যা


(এমন সময় আতিক এর একটা ফোন এলো)

-হ্যালো মায়া(মায়া ফোন দিয়েছে)

আতিক যাওয়ার সময় বলে গেলো "ওকে যেন কিছু করিস না"

ইরা আবার দরজা আটকে দিলো...

-এই যে মশাই এখন কি করবে??(ইরা)

-মানে আচ্ছা একটা কথা বলি রাখবেন??(শুভ)

-আবার আপনি করে বলছো কেনো??

-ওকে শোনো

-হুমম বলো

-বিয়ের আগে ১৯৮ টার একটাও দিতে পারব না।

-তুমি দিবে নাতো আমি দিবো

-না তুমিও না

-কিন্তুউউউ

-কোনো কিন্তু না

-তাহলে বিয়ে হবে এটা কিন্তু শিওর

-হ্যা ঠিক আছে। এখন যাও

-হ্যা যাবো তবে আবার আসব

-কেনো??

-খাবার দিতে

-আমি গিয়ে খেয়ে আসব

-না ওখানে গেলেই মাইর হবে

-আচ্ছা


ইরা চলে যাচ্ছে। 

-কি মেয়েরে বাবা ধুরর(শুভ ফিস ফিস করে বলল)

ইরা একটু শুনতে পেয়ে চলে আসলো

-কি বললা??

-না কিছু না

-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহহ

-এটা কি করলা??

-আর ১৯৭ টা পাও। আমি দিবো দেখি কিভাবে আটকাও

-বিয়ে করবো না

-তুই করবি আর তোর....

।।

।।

।।

।।কবুল

Part: 5

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>


-কি বললা??(ইরা)

-না কিছু না(শুভ)

-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহহ

-এটা কি করলা??

-আর ১৯৭ টা পাও। আমি দিবো দেখি কিভাবে আটকাও

-বিয়ে করবো না

-তুই করবি আর তোর....

-কিইই??

-কিছু না। লাভ ইউ(ইরা চলে গেলো)


শুভ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। ভাবছে ছলে বলে কয়েকটা দিন পার করলেই বাঁচে। 


আতিক এর বিয়ের আর মাত্র দুই দিন। এ কয়েকদিনের মধ্যে শুভ ইরার অনেক জ্বালাতন সহ্য করেছে। এখন বাড়িতে অনেক আত্নীয় স্বজন এসেছে আরও আসবে, অনেক বড় অনুষ্ঠান। 


শুভ আতিকের কাজে টুকটাক সাহায্য করছিলো। বাড়ি টা সাজাচ্ছিল, আতিকের রুম সাজালো, আরও অনেক কাজ করলো। বিকেল এর দিকে বাড়ির ভেতর দাড়িয়ে থেকে সব কাজ দেখছিলো ...হঠাৎ আতিকের বাবা এসে বলে....

-এই ছেলে এদিকে আসো

(আতিক এর বাবা ডাকায় শুভ একটু ভয়েই ছিলো না জানি কি বলে)

-জ জ জ্বি বলেন

-নাম কি তোমার??

-শুভ

-এখানে যে থাকছ কিনো অসুবিধা হচ্ছে কি??

-জ্বি না আংকেল।

-আচ্ছা আমার সাথে একটু চলো তো

-কোথায় যাবেন??

-গেলেই বুঝতে পারবে

-হুমম

-তোমার বাবা মা কোথায় থাকেন??মানে বলতে চাচ্ছি তোমার গ্রামের বাড়ি কই

-আংকেল আমার কেউ নেই। আমি একাই

-কি বলো?

-জ্বি আংকেল আমি একটা আশ্রম এ বড় হয়েছি। আমি বাবা মা কে কখনো দেখিনি

-ওহহহ আচ্ছা 


আতিক এর বাবা শুভকে নিয়ে গ্রামের নিকটেই একটা বাজারে যায়..

-আংকেল হঠাৎ বাজারে এলেন যে

-আর বলো না একমাত্র ছেলের বিয়ে, আমার জন্য একটু নতুন জামা কাপড় জুতা কিনব। আর তোমার আন্টির জন্যও কিনব

-হুমমম ঠিক আছে...


তাদের দুজনের বাজার করতে রাত অনেক হলো। এদিকে ইরা অস্থির হয়ে গেছে শুভ গেলো কোথায়?? এত রাত পর্যন্ত তো বাইরে থাকার কথা না। ইরা অনেক বার শুভর রুমে গিয়েছিলো..ইরা তো আর জানে না শুভকে তার বাবা বাজারে নিয়ে গেছে


আতিক এর বাবা আর শুভ যখন একসাথে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলো তখন ইরার মা আর আতিক দেখল। দুজনই খুব অবাক। 

-শুভ

-জ্বি আংকেল

-তুমি গিয়ে রেস্ট নাও অনেকক্ষণ হলো আমরা বের হয়েছি

-আচ্ছা আংকেল(শুভ তার রুমে চলে গেলো)


এদিকে আতিক আর তার মা একভাবে তাকিয়ে আছে...

-এই একটু ঘরে আসো(বাবা)

-হ্যা আসছি গো(মা)


আতিক দৌড়ে শুভর রুমে গিয়ে বলল

-এই এই বাবা তোকে কই নিয়ে গিয়েছিলো??(আতিক)

-উনি একটু বাজার করতে নিয়ে গিয়েছিলো

-কিছু বলছে তোকে??

-কি বলবে??

-না

-তাহলে

-কিছু না তুই রেস্ট নে(আতিক চলে গেলো)


শুভ শার্ট খুলতে যাবে এমন সময় ইরা ঘরে প্রবেশ করে..

-ওই (ইরা)

-ক ক কে??(শুভ)

-আমিইই

-ওহ হ্যা বলো(শার্ট ঠিক করে)

-কোথায় গিয়েছিলে??

-এইতো তোমার বাবার সাথে বাজারে গিয়েছিলাম

-ওহহহ। আমার জন্য কিছু কিনেছো??

-না

-তা কিনবে কেন?? আমি তো তোমার কেউ না

-হুমমমম

-কুত্তা হারামী 

-কি করলাম আবার

-কিছু কিনলি না কেন

-আমার মনে ছি...(হঠাৎ কারেন্ট গেলো)

-ওই তুমি যেখানে আছো সেখানে দাড়িয়ে থাকো আমি ফোন এর লাইট অন করছি


এটা বলতে দেড়ি ইরা তার বুকে আসতে দেড়ি করে নি। ইরা ফিস ফিস করে বলে..

-এরকম সুযোগ তো ছাড়া যাবে না(ইরা)

-এই কারেন্ট চলে আসবে (শুভ)

-আসুক তাতে কি

-তাতে সমস্যা হবে

-হবে না। একটা ইয়ে দাও

-না

-না দাও

-না

-প্লিজ দাও

-ঠাসসস ঠাসসস। যাও বাইরে যাও

(ইরা গাল ধরে বাইরে গেলো)


অন্ধকারে শুভ বসে আছে, আর ভয় ও করছে। 

-চর টা দিয়ে কি ভুল করলাম?? যে মেয়ে কি না কি করে। ব্যাপার টা আতিক কে জানানো দরকার...


রাত তখন অনেক বাজে শুভর চোখে ঘুম নেই। ইরা মেয়েটা যে রাগি যখন তখন যা কিছু করতে পারে...শুভ উঠে আতিক এর রুমের সামনে গেলো...

-এই আতিক আতিক(শুভ)

-.................

-আতিক

-কে(ঘুম অবস্থায়)

-আমি শুভ

-কি হয়েছে??

-দরজা টা খোল তো

-কেন??

-খোল আগে

-দাড়া আসছি


আতিক দরজা খুলে দিলো

-কি রে এত রাতে ডাকছিস কেনো??(আতিক)

-ভেতরে চল কথা আছে(শুভ)

-কি কথা?? তাও এত রাতে! কাল বলিস

-না এখনই বলতে হবে

-ওকে আয় ভেতরে


-বল(আতিক)

-আমার জীবনে তুই ই বেস্ট। আমার দ্বারা এমন কিছু ঘটুক যা তর জন্য মন্দ হয়

-কি বলতে চাইছিস হ্যা??

-শোন আগে

-হ্যা বল

-প্রথম যেদিন তোর বাড়িতে আসলাম তখন থেকে তোর বোন ইরা আমার পিছে লেগেই রয়েছে...আর(তারপর সবকিছু বলল শুভ)

-...............

-আর আজ ইরা যে কাজ টা করছে তার জন্য দুটা চর ও মেরেছি

-ঠাসসস ঠাসসস ঠাসসস

-প্রথম দিন আমায় বললি না কেন??

-................

-আমার তোকে বাড়িতে নিয়ে আসাই ভুল হইছে। কি করব এখন আমি

-আমি চলে যাচ্ছি (কান্না কান্না কন্ঠে)

-বাবা যদি যানতে পারে একদম আমাকে শেষ করে ফেলবে। আর আমার বিয়ে টাও গোল্লায় যাবে

-...........

-তুই আগে বললি না কেনো??

-..........

-ইরা কই??

-মনে হয় ওর রুমে

-চল

-না আমি আর ওর সামনে যাবো না।

-বিপদে ফেলে বলছিস যাবি না। তুই কি চাস আমার বিয়ে টা ভেঙে যাক??

-না

-তাহলে আয় আমার সাথে

-.........


ইরার রুমের সামনে গেলো আতিক আর শুভ....

-তুই ডাক। আমি ডাকলে নাও উঠতে পারে(আতিক)

-আচ্ছা...(শুভ)


-ইরা এই ইরা (শুভ)

-.........

-ইরা দরজা খোলো কথা আছে

-.........

-না খুললে আমি কিন্তু চলে যাবো

সাথে সাথে এসে দরজা খুলে দিলো। আতিক দেখে তো অবাক...

-শুভ তুই ওকে বুঝিয়ে বল(আতিক)

-কি বুঝিয়ে বলবে ভাইয়া(ইরা)

-আমি এখানে দাড়িয়ে আছি তোরা কথা বল(আতিক)

-ভেতরে চলো কথা আছে(শুভ)


ইরা কিছু বলল না। ইরার চোখটাও লাল। শুভর চোখেও পানি....শুভ বলা শুরু করল

-প্রথম দিন থেকে যা যা হইছে সবকিছু তোমার ভাইকে বলে দিয়েছি(শুভ)

-থামো(ধমক দিলো ইরা)

-কি হইছে??

-তোমার গালে দাগ কেনো??

-কিছু না

-ও তোমায় মারছে তাই না! দাড়াও দেখাচ্ছি

(শুভ ইরার হাত টেনে ধরলো)

-শোনো এমন পাগলামো করে না। ও তোমার বড়।(শুভ)

-তাই কি হইছে। ও আমার কলিজায় হাত তুলছে

(শুভর চোখে পানি আর বাধ মানল না। অঝরে পড়তে লাগল। মেয়েটা এত্ত ভালবাসে তাকে! কি দেখে ভালবাসে! এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খায় শুভর মাথায়)

-না শোনো কি বলি

-না শুনবো না

-তাহলে কিন্তু চলে যাবো

-না বলো

-দেখো তোমার সাথে আমার বিয়ে কখনই তোমার পরিবার মেনে নিবে না। আমি একটা এতিম। কোথায় আমার জন্ম তাই জানিনা। আর এটা মানায় না। তোমার বিয়ে অনেক ভাল জায়গায় হবে। তুমি পাগলামে ছাড়ো। আর আমি এখনই চলে যাবো।

-তুই ২ মিনিট এখানে বসে থাক

-কেনো??

-থাকতে বলছি থাক


ইরা রুমের বাইরে এসে দরজা আটকে দিলো আর আতিককে বলল

-আমার কলিজার গালে হাত তুললে কেনো??(ইরা)

-বাবা কে বল কলিজা ছাড়াইবো নি(আতিক)

-দাড়াও বাবা কে এখনই ডাকছি

 

এদিকে রুমের মধ্যে শুভ বসে খুবই টেনশনে আছে। ইরা বাবার রুমে গিয়ে দরজায় জোড়ে বাড়ি দিয়ে বলল

-বাবা বাবা উঠো তো(ইরা)

-.........

-বাবা (জোড় গলায়)

-কিরে কি হয়েছে???(ভেতর থেকে ইরার মা বলল)

-বাবা কে ডাকো আর বাইরে নিয়ে আসো

-কেনো??

-এত কথা বলো কেন?? যা বলছি করো

(ইরার মা যানে তার মেয়ের যে রাগ আর অভিমান পরিবারের সবার টা এক করলে ওই রকম হবে না)

-.......

-কি হলে কথা বলছো না কেনো??

-হ্যা আসছি

-আসো।


ইরা উঠানের মধ্যে একটা চেয়ারে বসলো....পুরো তার দাদার মতো...মনে হয় একটা জমিদার...

।।

।।

।।

।।

।।কবুল

Part: 6

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>>


-কি হলে কথা বলছো না কেনো??(ইরা)

-হ্যা আসছি(ইরার মা)

-আসো।

ইরা উঠানের মধ্যে একটা চেয়ারে বসলো....পুরো তার দাদার মতো...মনে হয় একটা জমিদার...


ইরার মা ইরার বাবাকে ডাকছে

-এই শুনছো...!

-..........

-এই

-ক ক কি হইছে?? 

-বাইরে চলো

-এত জোড়ে ডাকলে আমি ভাবছি না জানি কি হইছে

-হইছেই তো বাইরে গেলেই বুঝতে পারবে

-কেন??

-তোমার মামনি আদরের মেয়ে বাইরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

-কেনো ওর কি হলো আবার

-জানি না। বাইরে চলো

-হুহ মেয়েটা না কি যে করে


ইরা আগেও অনেক বার এমন কাজ করছে। রাতে কিছু খেতে মন চাইলে ডাকা ডাকি লাফা লাফি আরও কত কি। 

ইরার বাবা বাইরে আসার পর...

-বাবা (ইরা চেয়ার থেকে উঠে দাড়াল। আর একটু নরম শুরে বলল)

-হ্যা মামনি বলো কি হয়েছে??

-বাবা তোমাকে না জানিয়ে আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি

-কি সিদ্ধান্ত??

-বাড়ির সবার এখান উপস্থিত থাকা উচিত। মা তুমি সবাই কে ডাকো তো

-আচ্ছা (ইরার মা ডাকতে গেলো সবাইকে)


-এই কি হয়েছে মামনি বলো তো

-বাবা একটু অপেক্ষা করো সবাই আসুক তারপর বলছি

-এই তুই ওখানে ওভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো???(আতিককে বলল)

-না বাবা এমনি

-এদিকে আয়

-হুমমম


ধীরে ধীরে সবাই উপস্থিত হলো। সবাই ফিস ফিস করছে আজকে আবার এর কি হলো....

-ভাইয়া যাও শুভকে নিয়ে আসো (ইরা)

-হুমমম

আতিক শুভকে নিয়ে আসলো। 

-শুভকে ডাকলি কেনো??(বাবা)

-দরকার আছে।

-হুমম এইতো সবাই এসে গেছে এখন বল

-হ্যা বলব। কিন্তু তার আগে একটা কথা বলে নেই। আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তোমরা মানা করলেও শুনবো না (ইরার এমন কথা শুনে শুভর একটু হাত পা কাঁপছে।)

-হ্যা বল এখন (ইরার বাবা)

-এই যে শুভ তাকে আমি ভালবাসি। আর বিয়ে হলে ওর সাথেই হবে। ওর সবকিছু জেনেই আমি ওকে ভালবাসছি। এখানে ওর কোনো দোষ নেই কারন ও আমাকে এখনও ভালবাসে না। তবুও ওকে আমার চাই।

-..............(সবাই চুপ)

-কি হলো কিছু বলো

-এটা তো ঠিক না

-কোনটা ঠিক আমি জানতে চাই না

-কি মেয়েরে বাবা বাবার মুখের উপর কথা বলে(পাশ থেকে একটা শব্দ ভেসে এলো)

-আপনার যদি শুনতে দেখতে ভাল না লাগে তাহলে চলে যান এখান থেকে।

-আচ্ছা মামনি চুপ করো

-হুমমম

-আতিক এদিকে আয়

-হ্যা বাবা বলেন

-তুই কি বলিস

-বাবা ভাইয়ার কিছু বলার নেই 

-কিন্তু মা এটা তো ঠিক না

-আমি তো ঠিক বেঠিক জানতে চাই নি

-তাহলে কি বলব। তুমি তো সব বলছ

-এই সম্পর্কটা মেনে নিবে কি না??

-.............

-বলো

-আমার মান সম্মান টা তুমি দেখবে না??

-তোমার মান সম্মান দেখছি বলেই সবাইকে এখানে ডাকছি। আর তোমাকেও

-কিন্তু ওর তো তেমন কোনো পরিচয় নেই

-হ্যা আংকেল এই কথাটা আমি ওনাকে অনেক বুঝিয়েছি।(শুভ)

-তুমি চুপপ করো(ইরা)

-ইরা মা তুমি বোঝার চেষ্টা করো

-হ্যা বোঝার চেষ্টা করলাম। আর বুঝতেও পারলাম। তুমি মানবে না।

এই তুমি তোমার ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে আসো(ইরা শুভ কে বলল)

-ও ব্যাগ গোছাতে যাবে কেনো??(বাবা)

-এখনই আমরা দুজন এখান থেকে চলে যাবো

-তুই কি আমার মান সম্মান ডুবাবি??(রাগি হয়ে)

-না। সেই জন্যই তো সবার সামনে থেকে পালিয়ে যাবো। এই আপনি দাড়িয়ে আছেন কেনো?? ব্যাগ গোছাতে বললাম না??

-জ্বি

-তো যান গুছিয়ে নিয়ে আসেন

-হুমমম

-না তুই যেতে পারবি না(বাবা)

-আমায় না যেতে দিলে খারাপ হবে।

-অনেক বেড়ে গেছিস তাই না??কোথাও যেতে পারবি না তুই।

-এটা দেখছো??(ইরা ব্লেড দেখিয়ে বলল)

-কি করবি ওটা দিয়ে

-নিজের গলা কাটবো। যদি যেতে না দাও

-তুই এমন করছিস কেনো??

-আমি তোমার কাছ থেকে একটা ছেলে চাইছি। অন্য কিছু কি চাইছি বলো?? আর ও কি খারাপ?? ও অনেক কষ্ট করেই বড় হইছে। না থাকলো পরিচয় তাতে কি।

-কিন্তু মা সমাজ তো

-তাহলে তুমি তোমার সমাজ নিয়েই থাকো। আমি যাই

-না শোন। একটু ভাবতে দে

-হুমম ভাবো


ইরার বাবা ভাবছে। আর আশে পাশে যারা ছিলো তারা ঘুমের ঘোড়ে নাটক দেখছে এমন একটা অবস্থা।

-আচ্ছা ইরা শোন (বাবা)

-হ্যা বলো (ইরা)

-তুই যেটা বললি সেটাই হবে


(ইরা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়লো। চোখে একটু পানি আসছে)

-তাহলে বিয়ে কবে হবে বাবা

-তোর ভাইয়ের বিয়ে টা শেষ হয়ে যাক তারপর

-আচ্ছা

-সবাই এখন যাও। রাত অনেক হয়েছে।আর ইরার বিয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত কথা পরে করা যাবে। এখন সবাই যাও। (সবাই ফিস ফিস করে কথা বলতে বলতে যার যার ঘরে চলে গেলো)


ধীরে ধীরে সবাই চলে গেলো। শুধু ইরা আর শুভই বাইরে দাড়িয়ে আছে...

-আমার এখানে আসাটাই ভুল হইছে (শুভ)

-.............(ইরা শুনতে পেয়েও কিছু বলল না)

-কি করবো আমি এখন


ইরা শুভর কাছে এসে হাত ধরে শুভর রুমের দিকে যাচ্ছে আর বলছে..কিচ্ছু করতে হবে না। যা করার আমি সব ঠিক করেই দিয়েছি....রুমের মধ্যে গিয়ে শুভ দাড়িয়ে আছে আর ইরা বসে আছে।

-সরি(ইরা)

-কি জন্য(শুভ)

-আমার জন্য তুমি ভাইয়ার হাতে চর খেয়েছো

-.......(কি মেয়েরে বাবা এখনও ওই কথা নিয়ে আছে)

-তুমি অনেক ব্যাথা পাইছো তাই না??

-কই না তো

-ওকে আমি বকা দিয়ে দিবো নি। তুমি রাগ করো না

-আরে না মেরেছে তাই কি হইছে

-ওনেক কিছু হইছে। আচ্ছা একটা কথা বলি

-হুমম বলো

-তুমি আমায় একটুও ভালবাসো না তাই না (হু হু করে কান্না করে দিলো)

-না মানে

-.......(কান্না করেই যাচ্ছে)

-কান্না থামাও

-......

-ভালবাসি তো


ইরা শুভর বুকের মধ্যে চলে যায়। আর কান্না করে বলে

-আগে বলো নি কেনো??(ইরা)

-আগে যে ভালবাসি নি

-কেনো??

-আমি ভাবছি এগুলো তোমার আবেগ

-এখন কি মনে হচ্ছে??

-সত্যি ভালবাসো

-বুদ্ধুরাম বুঝতে অনেক দেড়ি করছো

-হুমমম

-কি হুমমম??

-কিছু না

-শুধু আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে আছি। তুমি ধরছো না কেনো??

-ইয়ে মানে

-ধরো বলছি

-কিন্তু

-উফফ আমি তো এখন তোমার বউ। বিয়ে তো ঠিক হইছে ধরো বলছি

-হুমমম

-হুমম এভাবেই সারাজীবন বুকের মধ্যে রাখবে

-না

-কিইইই?? না কেন কুত্তা?

-গরমে ঘেমে যাবো তো

-হি হি হি হি পাগল একটা

-হুমমম। একটা কথা বলি

-বলো

-এত ভালবাসো কেন আমায়??

-এক কথা কতবার জিজ্ঞাস করো হ্যা?? একবারই তো বলছি আর বলতে পারবো না। আর সবকিছুরই কারন জানতে চাইবে না

-আচ্ছা ঠিক আছে

-হ্যা

-অনেক রাত হইছে এখন যাও ঘুমাও

-এখানেই ঘুমাবো

-অবশ্যই না। তোমার রুমে যাও

-না এখানে

-না

-হ্যা

-যেদ ধরো না। কাল তোমার ভাইয়ার গায়ে হলুদ আছে। সকাল সকাল উঠে তোমার অনেক কাজ আছে

-হুমম যাবো তাহলে একটা শর্ত আছে

-আবার কি??

-১৯৭ টা যে পাই সেটা আজকে ১৫০ এ নিয়ে যাবো

-উহুম সেটা হবে না

-হ্যা হবে

-না

-দেখাচ্ছি...


দীর্ঘ ৩০ সেকেন্ড পর

-নাহ একটাই থাক বাকী গুলো কাল নিবো (ইরা)

-আর হবে না(শুভ)

-হবে কি না দেখা যাবে

-হ্যা দেখা যাবে

-আমার মুখের উপর কথা হ্যা।  

-কই না তো

-না বলছো

-সত্যি বলি নাই

-লাগবে না চলে যাচ্ছি

-না আমি ওভাবে বলি নাই

-হুমম যানি

-তাহলে বললে কেনো??

-ভালবাসা কেমন তৈরি হয়ছে একটু দেখে নিলাম

-হুহ

-আর একবার জড়িয়ে ধরো নাগো

-এত বার কেনো??

-ভালবাসা পাইছি যুদ্ধ করে। একটা ব্যাপার আছে না।

-হইছে এখন যাও ঘুমাও

-হুম মিস ইউ লাভ ইউ গুড নাইট

-হুমম গুড নাইট


পরদিন সকালে এসে ইরা শুভকে ঘুম থেকে ডেকে বলল

-এই যে শাড়ি টা নাও আর পড়িয়ে দাও(ইরা)

-মানে??(শুভ)

-যা বলছি তাই করো

-পারি না 

-যে পাড়তে হবে

-সত্যি পাড়ি না

-ওকে আমি বলে দিচ্ছি প্রথমে...

।।

।।কবুল

Part:7

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>>


-এই যে শাড়ি টা নাও আর পড়িয়ে দাও(ইরা)

-মানে??(শুভ)

-যা বলছি তাই করো

-পারি না

-যে পাড়তে হবে

-সত্যি পাড়ি না

-ওকে আমি বলে দিচ্ছি প্রথমে...

-না শোনো আমি জানি বলতে হবে না

-এইতো নাও শুরু করো

-না বিয়ের পর

-আমি আজকের দিনে কোনো রাগা রাগি করতে চাই না। 

-ওকে দিচ্ছি

-হুমমম

-এই এই কি করছো??

-কি করছি মানে

-মানে তুমি আগে শুরু করো আমি অন্যদিক ঘুরে আছি। প্লিজ এই কথাটা রাখো। আর আচল আর কুচিটা আমি দিয়ে দিবো

-হুহ ঠিক আছে মহাশয়।


কিছুক্ষণ পর

-এই যে এইদিকে ঘুরেন এখন (ইরা)

-হুমমমমম

-মাথা নিচের দিক কেনো উপরে তুলো

-হুমম দাও 

-কি দিবো??

-আচল টা

-কেনো তুমি নিতে যানো না


শুভ আচল আর কুচি টা ঠিক করার সময় মুচকি হাসলো। এটা ইরা দেখে ফেলছে

-এই ব্যাপার কি?? মুচকি হাসলে কেনে??(ইরা)

-খুশিতে হাসছি(শুভ)

-কখনোই না। তুমি শয়তানি হাসি দিছো

-আরে না। শাড়ি টা খুবই সুন্দর। আর তোমাকে সেইরকম দেখাচ্ছে। 

-তাই??

-হুমমম

-এই যে টিপ। এটা কপালে দিয়ে দাও

-বিয়ের আগেই এই অবস্থা (ফিস ফিস করে বলল)

-যতই ফিস ফিস করো কাজ হবে না। এটুকু করতেই হবে

-হুমম হয়েছে আর বলতে হবে না

-হুমম। এই তুমি ফ্রেস হবা কখন?? আর খাবে কখন??

-এইতো এখনই কিন্তু

-কিন্তু কি??

-বাইরে যেতে পারব না আর

-কেনো??

-আমার কেমন কেমন যেন লাগছে

-কেমন লাগছে?

-এই দেখো রাতে যা ঘটল সেটা তো সবাই জানে। আর এটা...

-আমি এটা নিয়ে আর একটা কথাও শুনতে চাই না। তুমি ফ্রেস হও আমি খাবার নিয়ে আসছি। আমার আবার একটু কাজ আছে

-ওকে ওকে যাও


ইরা রুমের বাইরে চলে যেতেই আতিক রুমে প্রবেশ করল....আতিক কে আসা দেখে শুভ আমতা আমতা শুরু করলো

-সরি দোস্ত। তখন তোকে বাবার ভয়েই মেরে ছিলাম। (আতিক)

-আরে না দোষ টা আমারই

-না তোর কোনো দোষ নেই। আর তুই তো অনেক ভালো। আমি জানি। আর হ্যা আমার বোনটাকে কখনো কষ্ট দিস না

-হুমমমম

-আর সরি

-ধুরর পাগল নিজেদের মধ্যে এত সরি বলার কি আছে??(শুভ এটা বলতে বলতে আতিক কে জড়িয়ে ধরলো)


-বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়া কি শেষ??(শুভ)

-হ্যা শেষ। আর হ্য তুই একটু পরে বাইরে আয় কাজ আছে

-ওকে


আতিক বাইরে চলে গেলো। রুম থেকে বের হতে গিয়ে ইরার সাথে দেখা হলো।

-এই তুমি এখনও ফ্রেস হও নি(ইরা)

-না তোমার ভাইয়া আসছিলো তাই কথা বললাম(শুভ)

-তুমি না! কাজের সময় কি যে করো।

-হুমমম

-হুমম হুমম না করে এখন যাও ফ্রেস হও। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে

-ওকে


শুভ ফ্রেস হয়ে আসলো। এসে দেখে তার রুমে ইরা নেই! আর একটা মেয়ে বসে আছে

-এই আপনি কি??(শুভ)

-আমি ইরার মামাতো বোন (মেয়েটি)

-ইরা কই গেছে??

-এখনই আসবে। আমাকে একটু বসতে বলছে

-ওহহ ঠিক আছে...


প্রায় ৩০ মিনিট হয়ে যায় ইরা আসার নাম নেই। এদিকে শুভর অনেক খুদা পেয়েছে। লজ্জায় বেচারা খেতেও পারছে না। মেয়েটি অনেক বার বলছে খাওয়ার কথা। শুভ প্রত্যেক বারই না করছে....ঘন্টা খানেক পর ইরা আসলো

-ওই তুই বাইরে যা (ইরা)

-আপু উনি তো খেলেন না (মেয়েটি)

-আমি দেখতেছি যা তুই 

(মেয়েটি চলে গেলো)

-ওই তুমি খেলে না কেনো??(ইরা)

-আরে নতুন কারও সামনে খাওয়া যায় নাকি

-হাইরে আমি আরও ওকে রেখে গেলাম যাতে কোনো কিছু লাগলে ও দিবে। ও কি তোমাকে খেতে বলছিল?

-হ্যা বলছিল অনেক বার

-তুমি না আসলেই একটা। খাও এখন

-হুমম তুমি খাইছো??

-হ্যা

-আমার সাথে একটু খাবে??

-না খাও তুমি

-তাহলে থাক খাবো না 

-ওকে খাওয়াই দিবে??

-জ্বি


বিকেলে গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান এর সময়...ইরা শুভর পাশেই দাড়িয়ে আছে। দুজনই বরকে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে আসার পর ইরা বলে...

-কবে যে আমার সুযোগ টা আসবে

-এইতো কয়েকদিন পর

-আজকে হলেই ভালো হতো। দেরী সহ্য হয় না 

-হা হা হা

-ওই হাসো কেন(চিমটি কেটে বলল)

-তোমার কথা শুনে

-হেসে কাজ হবে না। সবসময় তো আমি ভয়ে থাকি তুমি তো না

-জ্বি না আমিও

-কতো থাকে জানা আছে 

-আসলে তোমার মতো অত কথা বলতে পারি না

-কবে পারবে বলতে??

-জীবনেও পারবো না

-কেনো??

-জানি না 


সেদিন বিকেল বেলা....গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর। বাড়ির সবাই আর আত্নীয় স্বজনরা শুভকে নিয়ে একটু বেশি সমালোচনা শুরু করছে....কেউ কেউ বলছে

-দেখছিস ছক্কা পিটাইছে

-আরে দেখ কোথাকার জিনিস কি করছে

-দেখ দেখ বাপ মা ছাড়া পরিচয়হীন ছেলের সাথে ইরা এটা করলো কিভাবে??


এসব কথা শুভ বাড়ির মধ্যে দাড়িয়ে থেকে শুনতে পাচ্ছিলো। সহ্য করতে না পেরে রুম আটকে শুয়ে ছিলো। এদিকে ইরা তো তাদের বোন আত্নীয় স্বজন নিয়ে ব্যস্ত...

-ওই তোর বর টা কে কিন্তু আমি এখনও দেখলাম না (ইরা মামাতো বড় বোন)

-আপু তোমাকে দেখতে দিবো না। ওটা আমার জিনিস(ইরা)

-দেখলে কি ফুরিয়ে যাবে??

-হ্যা অবশ্যই যাবে

-হা হা হা। আচ্ছা কি দেখে ওকে পছন্দ করলি তুই

-জানি না। তবে ওকে দেখলেই আমার ভাললাগে

-ভালই ভালবাসা হইছে সবার মধ্যে

(সবাই হো হো করে হেসে উঠলো)


রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইরা শুভর সাথে দেখা করার জন্য তার রুমে যায়...গিয়ে দেখে দরজা আটকানো

-এই যে স্যার ঘুমাইছেন নাকি???

-..........

-ওই

(দ্বিতীয় বার দরজায় টোকা দিতেই শুভ এসল দরজা খুলে দেয়।)

শুভর চোখটা ফোলা ফোলা....

-এই তোমার চোখে কি হইছে??(ইরা)

-না কিছু না ভেতরে এসে বসো(শুভ)

-তাহলে চোখ ফুলছে কেনো??

-শুয়ে ছিলাম তো তাই

-আমার মনে হয় তুমি কান্না করছো অনেক

-আরে না কি যে বলো কান্না করবো কি জন্য??

-............(ইরা ভাবছে)

-তা কি রকম মজা করলে ভাইবোনদের সাথে??

(শুভর কথা কানে না নিয়ে ইরা তার মাথায় শুভর হাত রাখলো আর বলল)

-এখন বলো সত্যি টা কি?? কি হইছে?? কান্না করছো নাকি এমনি চোখ ফুলছে?

-কান্না করছি

-কি জন্য

-ওটা না বলি

-বলো বলছি

-আমি বাড়ির মধ্যে দাড়িয়ে ছিলাম তখন আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক কথা বলছে

-কি বলছে??

-তুমি আমার সাথে....(আগের শোনা কথা গুলো বলল)

-............(ইরা চুপ কিছুই বলছে না)

-শোনো আমি একটা এতিম। আমার না আছে কোনো পরিচয় আর না আছে কিছু। আমার সাথে তোমার বিয়ে হলে সবসময় এসব কথা শুনতে হবে তোমাকে। আমি আজ রাতেই চলে যাবো ভাবছি।(কথা গুলো বলে অন্য দিক ঘুরে কান্না করছে শুভ)

-দেখি আমার দিকে তাকা তো

-........(তাকালো না)

-কথা কানে যায় না??

(শুভ ঘুরলো ইরার দিক)

-বলো

-আমাকে এখানে মেরে ফেলে তারপর এখান থেকে যাবি

-পারবো না

-কেন পারবি না??

-ভালবাসি যে

-কুত্তা তুই বুঝিস না কেন তোকে ছাড়া আমার আর থাকা সম্ভব না

-এখন এসব কথা শুনলে যে তোমার কষ্ট হবে

-কারা কারা বলছে সবাইকে চিনিয়ে দিতে পারবে

-সবাইকে শাসিয়ে লাভ নেই। সবার মুখ আটকানো যাবে না

-তাহলে কি করবো আমি

-কিছুই করতে হবে না

-তাহলে আমাকে ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না

-আমি জানি কিন্তু

-আর কিন্তু বলো না

-আচ্ছা....

-থাকবে তাহলে??

-হুমম থাকবো

-..........

-আচ্ছা আমি মনে হয় কাল দিন পড়েই চলে যাবো

-কেনো??

-আমার কিছু কাজ আছে।

-আমিও তোমার সাথে যাবো

-না বিয়ের পর

-বিয়ে কালকেই হবে

-কিভাবে??

-যেভাবেই হোক। আমি এখানে থাকবো না আর

-বাবা মা কি মানবে

-না মানলে তোমার সাথেই চলে যাবো

-ওকে এখন এসব কথা রাখো।

-তাহলে কি কথা বলব??

-আমাদের বাবুটার কি নাম দিবো গো?

-কি ব্যাপার বাবু আসলো কোথা থেকে?

-না যখন হবে

-আগে তো হোক

-হুমমম

-আমার পাওনা যা আছে সব নিবো

-কিসের পাওনা??

-আজকে কোনো কারন শুনবোই না

-কি পাও সেটা তো বলবা?

-১৯৭ টা

-ওহ ওইটা

-জ্বি

-ওইটা তো বিয়ে....

(আর কোনো কথা বলতে পারলো না।)  

-ওই তোমার ঠোঁটে কি আছে গো(ইরা)

-কই কিছু না তো

-তাহলে এত মিষ্টি লাগে কেন??

-........

-আমার বর টাকি লজ্জা পাইছে নাকি??

-হুমমম

-আরও দিবো??

-তোমার দিতে হবে না আমি দিচ্ছি...

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।কবুল

END PART

writer. moyej uddin

>>>>>>>>>>>>>>>>>>>


-ওই তোমার ঠোঁটে কি আছে গো(ইরা)

-কই কিছু না তো(শুভ)

-তাহলে এত মিষ্টি লাগে কেন??

-........

-আমার বর টাকি লজ্জা পাইছে নাকি??

-হুমমম

-আরও দিবো??

-তোমার দিতে হবে না আমি দিচ্ছি...


কিছুক্ষণ পর...

-ওই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??(ইরা)

-দেখছি (শুভ)

-কি দেখো??

-একটা চোখ। যে চোখটা আমার মতো কাউকে এত ভালবাসে

-কুত্তা একদিন বলছি নিজেকে ছোট করে দেখবি না। আমার কাছে তুই অনেক দামি

-হুমমম

-আচ্ছা একটা কথা বলি

-হ্যা বলো

-আমার কি তোমার কাছে সবথেকে ভাললাগে??

-সাজিয়ে গুছিয়ে বলতে পারবো না। তবুও বলছি তুমি যখন আমার সামনপ এসে শাশন করো ভালবাসা দেখাও ওইটাই ভালো লাগে

-হুমমম শোনো বিয়ের পর আমার কোনো কথা শুনতে হবে না তোমাকে। তুমি যা বলবা আমি তাই করবো। তোমার মন ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকব

-ইহহহহ শুধু আমার কথা মতো চলবে তা হবে না। তুমিও যা বলবা তাই শুনবো

-হইছে পাগল বরটা এখন যাই

-যাবে??

-হুমম

-না থাকো

-থাকলে কি করবা??

-গল্প করবো

-আর কিছু না???

-আর কি

-ওই যে একটু আদর

-না তোমার এখানে থাকা লাগবে না। তুমি যাও ঘুমাও। বিয়ের পর একবারে সব পাবে

-হুমমম ওকে তুমিও ঘুমাও তাহলে

-হুমমম বায়


ইরা চলে গেলো তার রুমে। আর শুভও ঘুমিয়ে গেলো। 

সকালবেলা....শুভ ঘুম থেকে উঠবে এমন সময় দেখে তার পা এর উপর একটা পা, আর তার গলা জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে..

-আরে ইরা এখানে আসলো কিভাবে??? রাতে তো ও চলে গেলো। দরজা"! ওহ নো দরজা তো আটকানো হয় নাই তখন। হায় আল্লাহ (শুভ মনে মনে বলল)


শুভ বিছানা ছেড়ে উঠতে যাবে এমন সময় ইরা আরও জোড়ে জড়িয়ে ধরে আর বলে....

-এই এখন উঠা যাবে না (ইরা)

-কেনো??(শুভ)

-এমনি আর একটু ঘুমাবো(ঘুম ঘুম অবস্থায়)

-তুমি ঘুমাও আমি উঠি

-নাহহ। এত্ত কথা বলিস কেনো


(শুভ আর কিছু বলল না। ইরা আরও জোড়ে জড়িয়ে ধরলো।)

-আচ্ছা তোমার রুমে না ঘুমিয়ে এখানে এসে কেনো ঘুমাইছো??(শুভ)

-রুমে গিয়ে দেখি যে আমার বোনরা সবাই ঘুমিয়ে গেছে। কি আর করা এখানে তো জায়গা খালি ছিলো। এসে ঘুমিয়ে গেলাম (ইরা)

-তো জড়িয়ে ধরার কি আছে। পাশে সুন্দর করে ঘুমালেই পাড়তে

-বাব্বাহ ধরছি তাতে মনে হচ্ছে ক্ষয় গেছে। ধরব না যা (ইরা পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো)

-আমি সেটা বলি নি

-ওইটাই বলছিস তুই

(শুভ এবার ইরাকে জড়িয়ে ধরলো)

-এখন তো রাগ কমাও (শুভ)

-না কমাবো না কি করবি??(ইরা)

-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহ

-...........

-কি রাগ কি কমল একটু??

-হা কমতেছে আর কয়েকটা দিলে কমে যাবে

-বেশি দুষ্টামি তাই না

-ওই তুমি আমার বর আমার হাজার টা আবদার থাকতে পারে তাই না

-না ঠিকিই আছে

-কি ঠিক আছে??

-হাজার টা আবদার

-হুমমম

-ওকে ম্যাডাম এখন দুজনই উঠি

-ওকে


সকাল বেলা বাড়ি শুদ্ধ লোকজন থই থই করছে...ইরা সকালের সব কাজ শেষ করে তার বাবার কাছে যায় আর বলে...

-বাবা

-হ্যা বলো

-শুভ কাল চলে যাবে

-ওহহ

-তুমি কিছু করবে না??

-কি করবো। ওর তো যেতেই হবে

-আর বিয়ে

-মামনি দেখো ও কোথাকার না কোথাকার ছেলে তার জ....

-হইছে থাক তোমাকে আর বলতে হবে না। আমি এখনই চলে যাচ্ছি

-কোথায় যাবে??

-ওকে নিয়ে এখান থেকে চলে যাবো

-না

-তুমি না বললে তো হবে না

-তুমি কিন্তু আমাকে চেনো না

-তুমি তো আমাকে চেনো! আমি কি করতে পারি??

-কিভাবে বোঝাবে তোকে বিয়ে করতে একটা না একটা পরিচয় লাগে। সেটা ওর নেই(রেগে গিয়ে)

-নেই হবে

-কিভাবে

-ওয়েট আসছি


ইরা বাইরে চলে গিয়ে তার খালা আর খালুকে ধরে আনলো।

-এই যে বাবা এরা ওর বাবা মা (ইরা)

-তুমি জানলে কিভাবে??(ইরার বাবা)

-জানতে হবে কেন?? খালার ছেলে নেই। ওই ছেলেটাকে খালার ছেলে বানিয়ে তারপর বিয়ে দিতে হবে

-এগুলো কি বলছো ইরা(খালু)

-খালু আপনি চুপ করেন। বাবা এখন বলো রাজি কি না??

-হুমমম ঠিক আছে

-তাহলে আজকেই বিয়ে

-আজকে কিভাবে??

-যেভাবে ভাইয়ের বিয়ে হবে সেভাবে

-কিন্তু।

-বাবা কোনো কিন্তু না আমার কোনো অনুষ্ঠান করা লাগবে না।

-তোর মতো জেদী মেয়ে আর কারও যেনো না হয়

-হ্যা আমি সেটাই বলি। খালা আসো তোমার ছেলে কে দেখবে

-কই নিয়ে যাস তুই??

-আসো তোমার ছেলে কে দেখবা


ইরা তার খালা কে টানতে টানতে শুভর রুমে নিয়ে গেলো...

-এই যে স্যার এটা আপনার মা (ইরা)

-মা!

-হ্যা। এটা আমার খালা আজ থেকে তোমার মা

-কিন্তু কিভাবে??

-তোমাকে পালক নিয়েছে আজকে থেকে

-কিন্তু আমি

-কোনো কথা বলো না। উনার ছেলে নেই। আজ থেকে তুমি উনার ছেলে। খালা তুমি ওর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলো আমি আসছি (ইরা চলে গেলো)


শুভ চুপ করে দাড়িয়ে আছে। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। হঠাৎ বলল

-বসেন (শুভ)

-তোমার মা নেই(খালা)

-না

-কি হয়েছিলো তার

-আমি দেখি নি তাকে। আমি একটা অনাথ আশ্রম এ বড় হয়েছি

-ওহহ। এখানে আসলে কিভাবে??

-ইরার ভাই আমার বন্ধু। ও অনেক করে বলল তাই আসছি। কালই চলে যাবো

-ইরা কে বিয়ে করবে??

-আসলে আমি প্রথমে ওকে ভালবাসি নি। কিন্তু ও আমার জন্য পাগল ছিলো। আর আমি এখন ওর জন্য পাগল তবুও ওকে বিয়ে করতে চাই না

-কেনে??

-ও সুখি হবে না। আমি একা, পরিবার নেই তাই

-কিন্তু ও তোমাকে ছাড়বে না। বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তোমাদের

-.............

-কি বলব বলেন। আমি একা কেউ নেই যে সাথে থাকবে বিয়ের সময়। তাই কিছু বলছি না। আবার না করলে ও আবার কিছু একটা করতে পারে

-তোমার মা বাবা তো আছে

-কোথায়

-কেনো তোমার সামনে দাড়িয়ে আছি দেখতে পাচ্ছো না???

-ও দেখতে পাবে না ওর চোখ শেষ হয়ে গেছে (খালু)

-মানে আপনারা

-চোপপপ মা বল আর উনি তোর বাবা

-হুমমম

-কি হুমমম মা বল

-মা

(এখন ইরা রুমে প্রবেশ করেই দেখে সবার চোখেই পানি)


-বা বা বাহঃ আজ আমারে সুখের দিন আর তোমরা কান্না করছো??(ইরা)

-এটা সুখের কান্না রে

-হুমমম হইছে এখন তোমারা দুজন যাও। তোমাদের ছেলের সাথে কিছু কথা আছে আমার

-তো শুভ তুই কথা বলে বাইরে আয়।

-আচ্ছা মা(তারা বাইরে চলে গেলো)

-এই যে আমার দিকে তাকাও

-হুমম বলো

-বিয়ে তো ঠিক হয়ে গেলো, এখন অনেক কাজ আছে।

-কি কাজ??

-সেটা তো তুমি ভাল ভাবে যানো না। আমাকেই সব করতে হবে

শুভ ইরাকে বুকে টেনে নিয়ে বলল

-এত কিছু করতে কে বলছ?? এত টেনশন করতে কে বলছে??

-আমার কলিজার জন্য আমি সব করতে পারি

-আমি সত্যি অনেক...

-এখন কোনো কথা না। পাঞ্জাবি আছে তোমার??

-না তো

-ওকে আমি ভাইয়ার কাছে থেকে একটা এনে দিচ্ছি ওইটা পড়বা

-পাঞ্জাবি কেনো??

-ওরে আমার পাগল বরটা বিয়েতে তো পড়তে হয়

-হুমমম

-ওকে তুমি তোমার মা বাবার কাছে যাও আমি আসছি

-আচ্ছা

-ওকে


শুভ তার বাবা মা পেয়ে গেছে সাথে একটা ছোট বোন। যদিও আপন না। তবে শোনা যায় কখনো কখনো রক্তের থেকে অন্য মানুষ গুলো আপন বেশি হয়..... মাত্র কয়েকটা ঘন্টার ব্যাবধানে শুভকে দেখে মনেই হবে না ওর বাবা মা ছিলো না। অনেক আদর আর ভালবাসা পাচ্ছে এখন সে....


প্রথমে মায়াদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পর শুভ আর ইরার বিয়ে হয়। বাসর টা হয় ইরার ঘরে। যদিও ইরার খালার বাড়ি মানে শুভদের বাড়ি হওয়ার কথা। কিন্তু পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় সেটা আর হলো না....


বাসর ঘরে.....নিয়ম অনুযায়ী ইরা আগে থেকেই বসে আছে। একটু পড়েই শুভ ঠুকলো...শুভ ঠুকে ইরার পাশে বসতে যাবে তখনই ইরা বলে উঠলো

-চোর চোর চোর চোর (ইরা)

শুভ মুখ চেপে ধরলো

-এই কই চোর?? (শুভ)

-এই যে তুমি তো চোর

-আমি চোর কি জন্য?? কি চুরি করছি??

-প্রথম দিন আমার আচার এর সাথে আমার মন

-হুমম তুমি তো চুন্নি

-কি বললা তুমি??

-চুন্নি বলছি

-কি চুরি করছি

-পুরো আমি টাকেই চুরি করছো

-হুমম তাহলপ বলো চুরি করা জিনিস কার??

-চোরের

-না আমি তো চুন্নি

-ওহ্যা চুন্নির

-তো আমার জিনিস আমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যাবহার করবো


অতঃপর : লাইট অফ......

.....

.....

................END................


অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...