Showing posts with label রঙিন স্বপ্ন. Show all posts
Showing posts with label রঙিন স্বপ্ন. Show all posts

28.12.23

রঙিন স্বপ্ন

 রঙিন স্বপ্ন (ঈদ স্পেশাল)

Write : Sabbir Ahmed
_____________________________
এইতো গত দুদিন আগে পাত্র পক্ষ দেখতে আসছিলো মালিহা কে। আজ মালিহা যাচ্ছে মাহিন এর কাছে এই খবর টা জানাতে। মালিহার ভালোবাসার মানুষটা হলো মাহিন।
এখনো বছর খানেক হয়ে উঠেনি দুজনের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এইতো সেদিনের কথা মালিহা যখন ক্লাস নাইনে তখন মাহিন ইন্টার প্রথম বর্ষে।
,,
দুজনের কোচিং-এ যাওয়ার পথ একই আর সময় টা একই হওয়ায় মাহিন আঠার মতো পুরো পথটা পিছু লেগে থাকতো মালিহার। মালিহা প্রথম প্রথম ভয় পেলেও মাহিনের প্রতি একসময় দূর্বল হয়ে তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়৷ অনেকদিন তো ভালোভাবেই চলল, হঠাৎ মালিহাকে দেখতে আসে পাত্র পক্ষ। বাড়ির বড়দের কথা শুনে মালিহার মনে হলো এবার তার বিয়েটা হয়েই যাবে। দুইদিন পর সে কোচিং-এ যাচ্ছে, এ দুদিন সে মায়ের সাথে ব্যস্ত ছিলো।
,,
আজ কোচিং-এ যাওয়ার একটাই মাত্র উদ্দেশ্য সেটা হলো মাহিনের সাথে দেখা করা। মালিহা রাস্তায় পেয়ে যায় মাহিনকে। অটোরিকশায় করে তাদের গ্রাম থেকে একটু দূরে গেলো যাতে কথা বলতে সমস্যা না হয়।
এদিকে মাহিন জানে না মালিহা কি জন্য কোচিং বাদ দিয়ে তাকো নিয়ে এমনি একটা পথে রওনা হয়েছে।
,,
হঠাৎ মাঝ রাস্তায় দুজন নামলো...
-আমি বুঝলাম না মালিহা, এই কড়া রোদে মাঝ চরার রাস্তায় কেনো নামলে (মাহিন)
-অনেক কথা আছে তোমার সাথে। আমরা এখান থেকে কথা বলতে বলতে গ্রামের রাস্তায় ফিরবো(মালিহা)
-আমরা বসেও তো কথা বলতে পারি
-না পরিচিত কেউ দেখলে সমস্যা হতে পারে। যাই হোক শোনো
-কি হয়েছে বলো
-আমাকে দেখতে আসছিলো, ছেলে বড় চাকুরি করে। বিয়ের পর আমাকে নিয়ে শহরে থাকবে
-...(কথাটা শুনে মাহিন দাঁড়িয়ে গেলো)
-দাঁড়ালে কেনো? আগে পুরো কথাটা শোনো ভয় পেয়ো না।
-হ্যাঁ বলো
-এই বিয়েটা হওয়ার চান্স অনেক বেশি, তোমাকে এখন কিছু একটা করতে হবে, না হলে কিছুদিনের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যাবে। যতদূর শুনেছি বাবা তাদের সাথে কথা এগোচ্ছে
-আমাকে কি করতে হবে?
-বিয়ে করতে পারবে না?
-আমি তো সবেমাত্র ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি
-সেটা কি আমি জানি না? দেখো এখন যদি তুমি তোমার কোনো সমস্যা দেখাও, তাহলে আমাকে হারাতে হবে
-এতো তাড়াতাড়ি যে তোমার.......
-আমাকে ভালোবাসো না তাই না?
-আরে না না ভালোবাসবো না কেনো? অবশ্যই ভালোবাসি, কিন্তু তোমার সমন্ধ এতো তাড়াতাড়ি আসবে সেটা কো জানতো
-তুমি কিছু করতে পারবে না?
-অবশ্যই পারবো তোমার জন্য, আমার বাবা মা নেই তো কি হয়েছে? আমার নানী আছে, তাকে দিয়ে সব ঠিক করে নিবো
-তাহলে এখনই চলো
-কোথায়?
-তোমার বাড়ি, মানে নানী বাড়ি
-এখন?
-হ্যাঁ এখনই, আমার কেমন জানি মনে হচ্ছে বাড়িতে গেলেই আমাকে আর বের হতে দিবে না হয়তো
-আমি এই সময় তোমাকে নিয়ে যাবো, মানে আমার তোমার বিয়ে হবে, তারপর সংসার, বাচ্চা কাচ্চা।
-তুমি এগুলো এখন ভেবো না তো। আগে তো আমাদের এক হতে হবে
-আচ্ছা চলো
-দেখো বাবা কখনোই আমাদের সম্পর্ক মেনে নিবে না, আগে আমরা ভুল কিছু করি তারপর মাফ চেয়ে নিবো সব ঠিক হয়ে যাবে
-হুমম ঠিক বলেছো।
,,
মাহিন আগে পিছে চিন্তা না করে মালিহাকে নিয়ে নানীর বাড়ি উঠলো।
সেখানে গিয়ে বড় এক হট্টগোল পাকিয়ে গেলো। মাহিনের মামা মামী এ সম্পর্ক মানবে না৷ এদিকে মালিহার বাড়িতে এ খবর টা পৌঁছে গেছে। মালিহার বাবা খুব রাগী মানুষ, উনি খবর টা শুনেই মালিহার মা কে স্পষ্ট করে বলে দেন "ঐ মেয়ে যেনো এই বাড়িতে কখনো না আসে। যদি আসে তাহলে তোমাকে বাড়ি ছাড়া হতে হবে।"
,,
পুরো গ্রামে কথাটা ছড়িয়ে যাওয়ার পর দুজনের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয় সেদিন। মাহিনের মামারাও এই বিয়েতে নারাজ। এক মামা তো মাহিনকে মারতেই আসছিলো, আর বলেছিলো মালিহাকে রেখে আসতে। মামার কথায় রাজি না হওয়ায় রেগেমেগে মারতে আসে, নানী তখন বাঁচিয়ে দেয় মাহিনকে।
,,
যাই হোক ঝৈ ঝৈ এর মধ্যে বিয়েটা হয়ে গেলো তাদের। আপাতত বিয়ের প্রথম রাত কাটবে তাদের নানীর ঘরে।
রাতে দুজন একসাথে বিছানায় বসে চিন্তা করছে। দুজনের ঠোঁট মুখ শুকিয়ে একদম কাঠ হয়ে গেছে।
মাহিন মালিহাকে উদ্দেশ্য করে বলল...
-যে যাই বলুক সব কথা মাথায় নিয়ো না, শুধু শুধু মন খারাপ হবে (মাহিন)
-তুমিও সবার সব কথা মাথায় নিয়ো না (মালিহা)
-আচ্ছা। তোমার বাবা আসলো না কেনো?
-উনি আসবেন না সেটা আমি আগে থেকেই বুঝতে পেরেছি।
-তার মানে তিনি মেনে নিবেন না?
-জানি না
-আমার মামারাও তো এমন বলাবলি করছে। মামীগুলো তো এক ধাপ বেশি বলছে। মনে হয় বাড়ি থেকে বের করে দিবো
-আচ্ছা শোনো ঘাবড়ে যেয়ো না, দুজনে মিলে ম্যানেজ করে নিবো
-হুমম। এখন তুমি ঘুমাও
-তুমি ঘুমাবে না
-না আমি একটু জেগে থাকি
-কেনো?
-ঐতো তোমার ঘুমোনো তো কখনো দেখিনি, আজ দেখি
,,
মাহিনার ডান হাতটা মালিহা নিজের দু-হাতের মধ্যে নিয়ে বলল...
-আমি কি বুঝি না তোমার মাথায় এখন অনেক চিন্তা, এই জন্যই ঘুম ধরছে না তোমার (মালিহা)
-আরে নাহহ তেমন কিছু না (মাহিন)
-তুমি এসো, বালিশে মাথা রাখো, আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই, তুমি একটু ঘুমিয়ে যাও
,,
মালিহা মাহিনকে মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়৷
পরদিন সকাল বেলা দুজন ঘুম থেকে উঠতে হলো কয়েকজের চেঁচামেচিতে। বাড়িতে আবার ঝগড়াঝাটি বাঁধিয়েছে মামা আর মামীরা। মাহিন বলল..
-আমি একটু বাইরে গিয়ে দেখে আসি কি হয়েছে (মাহিন)
-না তুমি বাইরে যাবে না (মালিহা)
-কেনো?
-উনারা যদি তোমাকে মাইর দেয়
-না না মারবে কেনো? সমস্যা হয়েছে একটা সমাধানে আসতে হবে। তুমি ঘর থেকে বের হয়ো না। তুমি আরও একটু ঘুমিয়ে নাও। আর পাগলী চিন্তা করো না আমি আছি...
,,
মালিহাকে ঘরে রেখে মাহিন বাইরে আসে। বাইরে এসে শুনতে পায় তাদের এ বাড়িতে রাখতে চাইছে না তারা। মাহিন সেটা মেনে নেয়, তবে দাবী করে বসে তার কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিতে হবে থাকার জায়গার। সেদিন আবার ডাকা হলো গ্রামের মুরুব্বিদের। মাতবর দের জোড়াজুড়িতে মালিহার বাবাকেও এখানে আসতে হয়।
,,
এখন ছেলে আর মেয়ে কোনো পক্ষের লোক চাচ্ছে না তারা তাদের সাথে থাকুক। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে তাদের একটা থাকার জায়গা করে দিতে হবে। মালিহার বাবা একটা জমি দিতে রাজি হন। আর সেই জমিতে ঘর উঠানোর জন্য মাহিনের মামারা টাকা দিতে রাজি। সেদিন আলোচনায় এটা মিটমাট
হওয়ার পর, কাজ শুরু হয় পরদিন থেকে। গ্রামের কাঁচা রাস্তার পাশে এক কৃষি জমিতে নতুন ঘর উঠানোর কাজ চলছে। চারদিন ধরে এই কাজ চলার পর কাজ শেষ হলো। মাহিনের নানী নিজের ঘরের অনেক কিছু মাহিনকে দিয়ে দেয়। আর সেটা দিয়েই নতুন ঘরের ভেতরে সাজানো হয়।
,,
পাঁচদিনের মাথায় বিকেল বেলা নতুন বাড়ির নতুন ঘরে তারা প্রথম প্রবেশ করে। তাদের বাড়ির আশে পাশে রাস্তার সাথেই কিছু বাড়ি আছে সেগুলোও নতুন বছর খানেক হলো বাড়ি গুলো হয়েছে। তবে বাড়ি গুলোর দূরত্ব অনেক, প্রতিবেশী হিসেবে কাউকে পাওয়া হবে না। মালিহা আর মাহিনের নতুন বাড়ির পজিশন বেশ ভালো। বাতাস যে দিক থেকেই আসুক না কেনো তাদের ঘরে প্রবেশ করবেই।
,,
তখন সন্ধ্যা হতে চলো, মাহিনের নানী দুজনকে রেখে চলে গেলেন।
মালিহা ঘরের জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘরে দোয়াত লাগালো। দোয়াতের আলোয় অন্ধকার থেকে একটু মুক্তি।
,,
মাহিন ঘরে ঢুকে বলল...
-রাতের জন্য রান্না করতে হবে? (মাহিন)
-না, কাল সকালে রান্না করলে হবে, নানী খাবার দিয়ে গেছেন (মালিহা)
-ওহহ তাহলে আমরা এখনই খেয়ে নেই
-তোমার খিদে পেয়েছে?
-অনেক
-আচ্ছা তুমি বসো, আমি পানি নিয়ে আসি
-নানী যা দিয়ে গেছে তুমি বের করো, আমি পানি নিয়ে আসি
,,
দুজন মুচকি হাঁসলো।
মাহিন পানি নিয়ে আসলো। মালিহা প্লেটে খাবার দিলো।
-তুমি খাবে না? (মাহিন)
-তুমি আগে খেয়ে নাও (মালিহা)
-জ্বি না, আমার পাশে এসে বসো খাইয়ে দিচ্ছি
,,
মালিহা পাশে এসে বসলো। মাহিন খাবার মুখে তুলে দিয়ে বলল...
-তুমি ছোট মানুষ, তোমার ভয় করছে তাই না? (মাহিন)
-তুমিও তো ছোট (মালিহা)
-তোমার থেকে তো বড়
-এহহহ আসছে বড়
,,
কথায় কথায় দুজনের খাওয়া শেষ হলো। গ্রামের এইদিকে রাত খুব তাড়াতাড়ি গভীর হয়। আশেপাশে থেকে কোনো আওয়াজ না আসায় অল্প রাত গভীর মনে হয়।
,,
কোনো কাজ না থাকায় দুজন বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে৷ মালিহা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলো বিয়ের পর থেকে। মাহিন একটা দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবতে থাকে এখন শুয়ে থেকে সেটাই করছে।
,,
মালিহার ধাক্কায় মাহিনের ঘোড় ভাঙলো....
-কি ভাবছো? (মালিহা)
-খরচের জন্য কিছু টাকা মামারা দিয়েছেন৷ টাকা শেষ হয়ে গেলে, না খেয়ে থাকতে হবে। টাকা শেষ হওয়ার আগে কাজ জোগাড় করতে হবে (মাহিন)
-আমি খুব সমস্যা হয়ে গেছি তোমার জন্য তাই না?
,,
মাহিন মালিহার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে মালিহাকে বুকের উপর নিয়ে বলল..
-সমস্যা টা আমি করেছি, যদি আমি তোমার কথা না শুনতাম, তাহলে আজ বড় ঘরে থাকতে (মাহিন)
-এমন কথা বলবে না, তুমিই আমার সব (মালিহা)
-তাহলে তুমি ওমন কথা বলো কেনো?
-ভুল হয়ে গেছে আর বলব না
-হুমম আমারও ভুল হয়ে গেছে, আমিও আর বলব না
-আচ্ছা আমি যে তোমার বউ, এটা তুমি মনে থেকে মেনে নিয়েছো?
-হঠাৎ এমন প্রশ্ন!
-একদিনও আদর করলে না, আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দিলে না। এগুলো কবে করবে
-আসলে খুব চিন্তিত ছিলাম তো তাই..
-হুমম বুঝেছি
-আচ্ছা এখন তো একটু আদর করাই যায়
-জানি না মশাই......
,,
প্রথম সপ্তাহ চলল ভালোভাবেই। এদিকে মাহিন কাজ খুঁজতেছে, গ্রাম অঞ্চলে একটা স্থায়ী কাজ পাওয়া বেশ কঠিন। তবে সিজনের সময় বেশ কাজ পাওয়া যায়। এদিকে খরচের টাকার কিছু হাতে আছে, টাকা যত ফুরিয়ে আসছে মাহিনের কপালে চিন্তার ততো ভাঁজ পড়ছে।
,,
গ্রামে প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না, পাওয়া গেলেও সেটার পারিশ্রমিক খুবই অল্প। তবে যাই হোক দিন শেষে কিছু একটা পাওয়া যায়।
মাস দুয়েক যাওয়ার পর মালিহা আর মাহিনের এক বেলার খাবার বন্ধ হয়ে গেলো৷ এখন শুধু দুপুরে আর সকালে খাওয়া হয় তাদের।
,,
আরও দুই মাস যাওয়ার পর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। মাহিন কাজের চিন্তায় নিজে নিজে বিরক্ত হলেও মালিহার খালি পেটে খুদার ডাক তাকে বিরক্ত করেনি। মালিহার চিন্তা তার পাগলটার জন্য, সারাদিন কাজ খোঁজা দিন শেষে কিছু টাকা নয়তো খালি হাতে ফিরে আসা, খুব কষ্টে যাচ্ছিলো তাদের জীবন।
,,
একদিন সকাল বেলা মাহিন কাজের জন্য বের হবে, হাত মুখ ধুঁয়ে মালিহাকে বলে...
-ভাত দাও (মাহিন)
-নেই (মালিহা)
-গত রাতের ভাত যে ছিলো, সেটা পানতা করোনি
-গত রাতে তো পানতা ভাত খেলে মনে নেই??
-ওহহহ
-চাল নিয়ে, আসার সময় চাল নিয়ে আসবে
-আচ্ছা ঠিক আছে
,,
মাহিন বাইরে এসে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলো না এইটা ভেবে যে তার প্রিয়তমা আজ সারাদিন না খেয়ে থাকবে। এদিকে ঘরে দরজা লাগিয়ে দিয়ে মালিহা কান্না করছে মাহিনের জন্য, এইটা ভেবে যে, নিজে তো বাড়িতে থেকে কোনো রকম দিন টা কাটিয়ে দিতে পারবে না। আর সে তো কাজ করবে, না খেয়ে সে প্রচুর কষ্ট পাবে।
,,
মাহিনের সেদিন কোনো কাজ হলো না। সে খালি হাতে বাড়ি ফিরে আসলে সন্ধ্যায়। মাহিনের খালি হাত দেখে মালিহা বুঝতে পারলো আজও তার কাজ হয়নি। মালিহা বলল...
-সমস্যা নেই, আজ হয়নি কাজ, কাল হবে তুমি হাত মুখ ধুঁয়ে ঘরে এসো (মালিহা)
-ঘরে তো কিছু নেই (মাহিন)
-হাত মুখ ধুঁয়ে খেতে এসো বলছি
,,
মাহিন হাত মুখ ধুয়ে আসলো। মালিহা পাটিতে বসতে দিলো তাকে।
তারপর একটা প্লেটে কিছু পিঠা দিলো...
-আগে পিঠা খাও তারপর ভাত আছে (মালিহা)
-এগুলো কোথায় পেলে? (মাহিন)
-নানী আসছিলো দিয়ে গেছে
-নানী এগুলো দিয়ে গেছে??
-আসলে এগুলো আমার মা পাঠিয়েছে। মা হয়তো কাউকে দিয়ে নানীর কাছে পাঠিয়েছিলো। নানী এসে দিয়ে গেলো বিকেলে
-ওহহহহ
,,
সারাদিনের না খাওয়া,
খুদার যন্ত্রণায় ছটফট করা মাহিনের পেট খাবার দেখে মোচড় দিয়ে উঠে, যেই না একটা পিঠা মুখে দিতে যাবে তখনই মনে হলো মালিহা তো তাকে ছাড়া খায় না। জিজ্ঞেস না করে খাওয়াটা একদম উচিত হবে না।
-খাচ্ছো না কেনো? (মালিহা)
-তুমি একটা পিঠা হাতে নিয়ে মুখে দাও, তারপর আমি খাবো (মাহিন)
-দুজন একসাথেই খাই, কি বলো?
-হুমমম
,,
খাওয়ার মাঝে হঠাৎ মাহিন হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো। তার কান্না দেখে মালিহা বসে না থেকে কাছে এসে বলল..
-এই কি হয়েছে তোমার কান্না করতেছো কেনো? (মালিহা)
-তোমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছি আমি৷ তুমি আর থেকো না বাড়ি চলে যাও (মাহিন)
-ওরে কি বলে!
,,
মালিহা খাওয়া বন্ধ করে মাহিনের কোলের মধ্যে গিয়ে মুখোমুখি বসলো।
-ওমন কথা মুখে কেনো আনো? সারাদিন আমি নিজের সাথে যুদ্ধ করি, সন্ধ্যায় যখন তোমাকে দেখি তখন আমি সেই যুদ্ধে জয়ী হয়ে তোমার কাছে রই৷ আর তুমি আমাকে চলে যেতে কেনো বলো?
তুমি হাজার বার বললেও আমি তো তোমায় ছেড়ে যাবো না। (মালিহা কান্না করে)
-তোমার তো খুব কষ্ট হচ্ছে(মাহিন)
-হোক! কষ্টের পরেই সুখ আসে। আমি সেই আশাতেই আছি। আর সুখ আসুক আর না আসুক সন্ধ্যায় তোমার বাড়ি ফেরা আমার কাছে মধুর একটা মূহুর্তের মতো লাগে।
দেখো একটা সময় যখন আমরা পেট ভরে খেতে পারবো তখন এই সমস্যা থাকবে না। এখন কান্নাকাটি বন্ধ
-তবুও তুমি...
,,
মালিহা মাহিনের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রাখলো, তাতেই মাহিন চুপ। ঠোঁট ছাড়িয়ে নিয়ে মালিহা বলল...
-মা এক হাজার টাকা পাঠিয়েছে, দুজন খাওয়া শেষ করে বুদ্ধি করি কিভাবে এই টাকা খরচ করে এর থেকে কিছু টাকা বের করা যায়
-হুমমমম
-পাগল একটা খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি
,,
খাওয়া শেষে দুজন বিছানায়। মাহিনের কোলের মধ্য বসে আছে মালিহা। ঘরের পুব দিকের জানালা টা খোলা রেখেছে। জানালা দিয়ে দূর গায়ের গাছ দেখা যাচ্ছে আবছা আবছা। মালিহা মজা করে বলল...
-রাতের বেলায় দূরের গাছ গুলো ওমন দেখায় কেনো? গাছের আলদা একটা রূপ থাকলে ভালো হতো, এই মনে করো নিজে নিজে জ্বলে উঠা (মালিহা)
-তাতে অনেক জীবের কষ্ট হতো (মাহিন)
-তাও ঠিক, আচ্ছা মা যে এক হাজার টাকা.......
,,
কথাটা বলে থেমে গেলো মালিহা, কারণ মাহিন তার সাথে দুষ্টামি শুরু করেছে৷
-এই মিষ্টার, এখন কাজের কথা বলতেছি, হাত সড়াও সুড়সুড়ি লাগে(মালিহা)
-সড়াবো না (মাহিন)
-কথাটা বলে নেই, তারপর তুমি...
-আচ্ছা ঠিক আছে
-এক হাজার টাকা দিয়ে কি করা যায় বলো তো
-আমি ভেবে রেখেছি
-কি?
-টাকা আপাতত রেখে দাও, দুই সপ্তাহ পর তো রোজা। রোজায় অনেক ভালো ব্যবসা হয়। কিছু একটা করা যাবে....
-আর এ কয়েকদিন?
-আজ একটা কাজের ব্যবস্থা করে আসছি কাল ঠিকই কাজ করতে পারবো
-ওহহ হ্যাঁ আমার ভালে একটা কথা মনে পড়েছে
-বলো
-তোমার কিন্তু লেখাপড়া বাদ দিলে চলবে না। তোমার পড়তে হবে
-এর মাঝে কিভাবে পড়বো?
-এই বছর টা গ্যাপ যাক। পরের বছর রেজিস্ট্রেশন করে অবশ্যই তোমাকে ইন্টার এক্সাম দিতে হবে। তারপর আরও পড়া
-আর তুমি পড়বে না?
-আমার না পড়লেও চলবে। তোমরা লাগবে তুমি পড়বে
-হুমমম
-আর কাল কাজ থেকে আসার সময় বাজার থেকে কিছু বীজ নিয়ে আসবা,
-কিসের বীজ?
-ঐ যে বিভিন্ন ধরনের শাক আর সবজীর বীজ
-আচ্ছা
-মনে করে আনতে হবে কিন্তু। বাবা তো অনেকটা জমি আমাদের দিয়েছে, ঘর উঠানোর পর ও অনেক জায়গা খালি আছে, কিছু চাষ করলেও তো ভালো ভাবে চলতে পারি
-হুমমমম ভালো বলেছো
-আরেকটা কথা
-বলো
-মা কে খুব দেখতে ইচ্ছে করে
-তোমার বাবা তো তাকে আসতেই দেয় না। আমি শুনেছি উনি অনেক কান্নাকাটি করেন
-সত্যি?? (মালিহা কান্না করে দিয়েছে)
-আরে শোনো শোনো ওরকম কান্নাকাটি বলতে, অনুরোধ করেন যে তোমার সাথে যেন একটু দেখা করতে দেয়৷
-আমি কবে দেখা করবো উনার সাথে?
-শীঘ্রই
-সত্যি তো?
-হুমমম
-আচ্ছা আমার কথা শেষ এখন তুমি হাত রাখো।
-কোথায়?
-যেখানে একটু আগে রেখেছিলে
-নাহহহ থাক এখন
-থাকবে কেনো?? হাত রাখো
-তোমার তো এখন সুড়সুড়ি লাগছে
-এখন তোমতে মনোযোগ দিবো, সুড়সুড়ি লাগবে না আর। তোমার প্রতিটা স্পর্শ আমার কাছে অনেক দামী। আমি এগুলো খুব উপভোগ করি
-তোমার প্রতিটা কথা আমার কাছে অনেক দামী, যা শুনলে আমার কলিজা পর্যন্ত শীতল হয়ে যায়
-হুমম চলো এখন ঘুমাই
-আরেকটু থাকি এভাবে
-ঠিক আছে পাগল থাকো
,,
দেখতে দেখতে প্রথম রোজা এসে গেলো। বাড়ির আশে পাশে এখন শাক দিয়ে ভরে উঠা শুরু করেছে।
আর এদিকে মাহিন সেই টাকা নিয়ে সকাল সকাল শহরে গেছে কিছু ইফতারির খাবার কেনার জন্য। যেগুলো গ্রামের বাজারে বিক্রি করে কিছু টাকা উপার্জন করা যায়।
,,
রোজার আগে মাহিন প্রচুর কাজ পায় তা দিয়ে বেশ ভালো একটা মূলধনের জোগান হয় তার হাতে আর সেটা দিয়েই ব্যবসা শুরু করে। প্রথম দিনেই বেশ ভালো বিক্রি আর অনেক টাকা লাভ হয়।
,,
এশার সময় বাড়ি আসে মাহিন, এসে দেখে মালিহা আর তার মা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করেছে। মাহিনকে দেখে তারা কান্না বন্ধ করে। মাহিন মালিহার মা কে উদ্দেশ্য করে বলে...
-কেমন আছেন? আর কখন আসলেন? বাবা আসেনি? একাই এসেছেন? (মাহিন)
-...(মালিহার মা উত্তর না দিয়ে সোজা চলে গেলেন)
,,
মাহিন মালিহাকে বলল...
-মা যে কথা বলেনি, আমি কিন্তু রাগ করিনি। উনিই আমার উপর রেগে আছে, কারণ তার এতো সুন্দর নাদুস নুদুস মেয়ের অবস্থা আমি খারাপ করে দিয়েছি, তার মেয়ের আমি যত্ন নেই নি (মাহিন)
-সে জন্য না, হয়তো আগের রাগ আছে। বাদ দাও, তোমার আজ বিক্রি হলো কেমন?
-খুব মানে খুব ভালো বিক্রি হয়েছে,
-বলো কি! তাহলে তো ভালই। এদিকে বাড়ির আশে পাশে শাক-সবজির গাছু গুলো বড় হচ্ছে। এগুলো তুলে নিয়ে শহরে নিয়ে বিক্রি করবা
-হুমম দেখা যাক
,,
আজ রমজানের শেষ দিন৷ একটু আগে জানা গেলো ঈদের চাঁদ দেখা দিয়েছে আগামীকাল ঈদ। মাহিন ইফতারি বিক্রি শেষে বাড়ি না গিয়ে গেলো বাজারে। সেখান থেকে মালিহার জন্য কিছু কেনাকাটা আর কাল ঈদের জন্য কিছু খাবার কিনলো।
,,
বাজার থেকে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হলো৷ মাহিন বাড়িতে আসতেই ঘরে ঢোকার আগেই মালিহা এসে মাহিনকে জড়িয়ে ধরলো আর তার বুকে ইচ্ছে মতো কিল ঘুসি মারতে থাকলো।
-আরে আরে কি হয়েছে? (মাহিন)
-আপনি কোথায় ছিলেন? আপনার আসতে এতো দেড়ি হলো কেনো? (মালিহা)
-এই প্রথম এতো দেড়ি হলো এর জন্য সরি। ঘরে চলো, তোমার জন্য কি এনেছি দেখবে চলো।
-দেখা লাগবে না, দেড়ি করে আসলেন কেনো??
-আচ্ছা দেড়ি করে আসার জন্য আমাকে শাস্তি দিয়ো, এখন ঘরে চলো
,,
বিছানায় বসে মালিহার জন্য করা বাজার একে একে দেখাতে লাগলো।
-বিয়ের পর থেকে একটা সুতো তোমাকে দিতে পারিনি। এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই। আমি যা এনেছি হাসিমুখে এগুলো গ্রহণ করো
-হুমম করলাম। আর অবশ্যই গ্রহণ করবো। আমার পাগলের অনেক কষ্টে উপার্জিত টাকায় কেনা এগুলো আমার কাছে অনেক মূল্যবান
-আমি এগুলো দিতে পেরে খুব খুশি। বিয়ের পর এই প্রথম আমার একটু ভালো লাগছে তোমাকে কিছু দিতে পেরে।
-জ্বি অনেক দিয়েছেন, এখন নিজের জন্য কি কিনেছেন দেখি তো
-এহ হে আমার তো মনেই নেই আমার টা কিনবো
-মিথ্যে বলো তাই না?
-না সত্যি বলতেছি, টাকা আছে পকেটে, সবই কিনেছি, আমার জিনিস গুলো কিনতেই মনে ছিলো না
-যা এনেছো একটাও আমি নিবো না
-পাগলী নিতে হবে তোমাকে
-কাল তুমি মাঠে নামাজ পড়তে
যে যাবা, কি পড়ে যাবা? নতুন কিছু আছে কি?
-পাঞ্জাবি তো একটা আছে, ওটা তো বেশি পড়া হয়নি। সেটা পড়েই যাবো
-নতুন পোশাক পড়ে যেতে হয়
-জানি, আচ্ছা পড়ের বার যাবো
-আমার তো মনটা খারাপ করে দিলে
-আচ্ছা দেখি বাজারে গেলে আমার জন্য নিয়ে আসবো
-তখন তো আর ঈদ থাকবে না
-হুমমম, বাদ দাও। এই দেখো সেমাই এনেছি, সাথে চিনি, পোলাও এর চাল। ওহ হ্যাঁ গোশত এনেছি, গোশতের ব্যাগটা কই? এইতো নিচে রেখেছিলাম। এখন নাও গোশত টা এখনি রান্না করে ফেলো
-আমি পারবো না এতো রাতে রান্না করতে
-আচ্ছা তোমার খারাপ লাগলে শুয়ে থাকো, আমি তাহলে রান্না করি
-এহহহ আসছে মহাশয় রান্না করতে, সারাদিন কাজ করে আসলেন এখন কি আপনাকে রান্না করতে দিবো? আপনি শুয়ে থাকেন, আমি রান্না করতেছি,
-নাহহ আমি তোমার পাশে একটু বসে থাকবো
-আচ্ছা আসো
,,
রান্না করছে মালিহা। মাহিন একটু দূরে টুলে বসে রান্না করা দেখছে। রান্না করা দেখছে বললে ভুল, সে মালিহাকে দেখছে। মালিহা টের পেয়ে চুলায় খড়ি দিতে দিতে বলল...
-ওমন করে কি দেখা হচ্ছে? (মালিহা)
-তোমায় দেখি? (মাহিন)
-কেনো? আমি কি আজ নতুন
-নতুন পুরাতন এর কিছু নেই, আমি তোমায় দেখি
-কেনো দেখো?
-ভালো লাগে তাই দেখি
-দূরে কেনো? কাছে এসে দেখো
-নাহহ কাছে গেলে তোমার রান্নায় সমস্যা হবে
-থাক থাক কাছে আসতে হবে না, আমাকে রান্না করতে দাও
-এজন্যই যাচ্ছি না
-এই তুমি কি ঈদের চাঁদ দেখেছো?
-না দেখা হয়নি
-আমি দেখেছি, তুমি দেখে নাও বাইরে গিয়ে
-এখন তো দেখা যাবে না আর
-ওহহহ, ঈদের চাঁদ দেখলে কিন্তু ভালোই লাগে তাই না?
-হুমমম একদম পিচ্চি কালের কথা মনে পড়ে যায়
-আমারও
,,
গল্প করতে করতে রান্না শেষ হলো, দুজন খাওয়া শেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাহিন বলল..
-আগেই ঘুমানো যাবে না কিন্তু, জানালা টা বন্ধ করে দোয়াত বিছানার এদিকে নিয়ে আসো৷ (মাহিন)
-কেনো গো? কি করবা এখন? ঘুমাবে না? (মালিহা)
-তোমার জন্য মেহেদী এনেছি
-ইয়েএএএ কি বলো! কোথায় সেটা??
-এদিকে আসো আমি দিয়ে দিবো
-ওরে আমার রোমান্টিক বর, দাঁড়াও আসছি
,,
মালিহা মাহিনের সামনা সামনি এসে বসলো। মাহিন মালিহার হাতে লাভ চিত্রটা আঁকানোর চেষ্টা করছে..
-আমি তল দিয়ে দিতে পারছি না, যেমনটা পারি তেমনটা দেই?? (মাহিন)
-সমস্যা নেই পাগল, তোমাড যেমন খুশি তেমনটা দাও তুমিই তো শুধু দেখবে
,,
দুই হাতে মেহেদী লাগানোর পর...
-এবার তোমার জন্য আরেকটা সারপ্রাইজ আছে? (মাহিন)
-আরও?? (মালিহা)
-হ্যাঁ আরও, তোমার তো দুই হাত বন্ধ এখন, এবার আমি তোমাকে একটু জ্বালাবো
-কিভাবে?
-সুড়সুড়ি দিয়ে
-নাহ নাহ এমনটা করে না গো, আমার কষ্ট হয়
-এরকম কষ্ট সহ্য করতে পারবে তো
-এখন দিয়ে না, হাত ধুঁয়ে আসি তারপর দাও
-এখন হাত ধুয়েঁ আসলে কালার হবে না
-তাহলে একটু ওয়েট করো
-নাহহ
-এ পাগল একটু করো একটু
-আচ্ছা যেখানে তোমার সুড়সুড়ি নেই আমি সেখানে একটু...
-এখন তোমার কথা শুনে পুরো শরীরে একইরকম হবে। কিছু করো না এখন
-ঠোঁটে তো সমস্যা হওয়ার কথা না
-হুমম তা নেই, কিন্তু..
-কি?
-আমার এখন লজ্জা করতেছে
-কেনো?
-হাতে মেহেদী, তোমাকে টাচ করতে পারবো না, কেমন যেনো একটা লাগছে
-এটাই তো সারপ্রাইজ
-বেশি দিয়ো না, একটু দিয়ো আচ্ছা....
,,
পরদিন সকালে ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ শেষে মাহিন বাড়িতে আসে।
বাড়িতে এসে দেখে তার পাগলি সাজুগুজু করেছে। মালিহাকে দেখে মুচকি হেঁসে বলে..
-আমি আবার তোমার প্রেমে পড়েছি (মাহিন)
-হে হয়েছে তোমার কথা রাখো। এর আগে প্রেমে পড়ে তোমার পেট খারাপ হয়েছিলো(মালিহা)
-তোমার ঠোঁটে জীবাণু ছিলো
-নিজের যে পেটে ভালো কিছু সহ্য হয় না সেটা বলবে না শুধু শুধু আমার দোষ দিবে
-উমমম আচ্ছা চলো এখন
-কোথায় নিয়ে যাবে?
-তোমার বাবার বাড়ি
-না আমি যাবো না
-চলো তো, ঈদের দিন কিছু বলবে না। আমি বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবো। তুমি মায়ের সাথে দেখা করে চলে আসবে
-বাবা যদি কিছু বলে
-কিছু বলবে না, হয়তো তোমাকে দেখে কথা বলবে না, তবে তুমি অবশ্যই বলবা
-আচ্ছা
-চলো এখন
-হুমমম চলো
,,
সাহস করে দুজন চলল সেই বাড়ি। বাড়ির সামনে এসে মালিহাকে ভেতরে পাঠিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে মাহিন।
মালিহা ভেতরে গিয়েই প্রথমে তার বাবার সাথল দেখা....
-কেমন আছো? (মালিহা)
-ভালো, তুই কেমন আছিস? (বাবা)
-আলহামদুলিল্লাহ
-জামাই আসেনি?
-আসছে, বাইরে দাঁড়িয়ে আছে
-বাইরে কেনো ভেতরে নিয়ে আয়
,,
মালিহা বাইরে গিয়ে মাহিন কে এই ঘটনাটা বলল..
-দেখেছো কিছু বলল না, তবে এর মানে এটা যে মেনে নিয়েছেন। আমরা কিন্তু এখান থেকে তাড়াতাড়ি ফিরবো বেশি দেড়ি করবো না। তুমি আবার থাকার বায়না করো না
-আচ্ছা, করবো না
,,
দুজন ভেতরে গেলো। বাড়ির সবাউ সবার খোঁজ খবর নিলো অল্প কথায়।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে মালিহাকে নিয়ে মাহিন চলে আসলো বাড়িতে।
-আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আজকের দিনটা এতো সুন্দর করার জন্য (মালিহা)
-আমি করিনি, যা করার তোমার বাবা মা করেছে (মাহিন)
-তুমি না নিয়ে গেলে তো হতো না,
-হুমমম
-আচ্ছা এমন করে উনারা যদি সারাবছর আমাদের সাথে থাকতো!
-আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, আমরা তো উনাদের মন ভেঙেছি, তাই অভিমান করে আছে হয়তো
-হুমমম তাদের এ অভিমান কে ভাঙাবে??
-আমাদের নতুন মেহমান
-নতুন মেহমান মানে?
-ঐ যে তোমার পেট থেকে যে বের হবে
-যাহহ পঁচা মানুষ
,,
মাহিন মালিহাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো, আর বলল...
-নতুন মেহমান পারবে সব ঠিক করতে দেখো আমাদের সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের যে সাদাকালো দিন যাচ্ছে এটা একদিন রঙিন হয়ে উঠবে
-হুমমম এর পেছনে তোমার ভালোবাসার শক্তি আছে, অবশ্যই রঙিন হবে
-তোমারও তাই। আর হ্যাঁ নতুন মেহমান কে নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখা শুরু করবো, আমাদের রঙিন স্বপ্ন🥰
,,
,,
,,
,,
,,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, END,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...