Showing posts with label মনের মানুষ. Show all posts
Showing posts with label মনের মানুষ. Show all posts

25.12.23

মনের মানুষ

 মনের মানুষ

writer. moyej uddin

-ভাই ঢাকার বাস কোনটা???(শুভ)

-ঢাকা কই যাবেন??(কন্টেক্টার) 

-ভাই ঢাকা যাবো

-হা হা হা হা। আরে ভাই ঢাকা তো অনেক জায়গায় যাওয়ার আছে আপনে কই যাবেন??

-ম ম

-ও মহাখালী??

-হ্যা ভাই

-ওঠেন ওঠেন..


ওই মহখালী মহাখালী মহখালী...

যে ছেলেটি বাসে উঠলো তার নাম শুভ। এ এ যুগের ১০ টা বোকা লোকের মধ্যে একটি। লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় যাচ্ছে। এর আগে কখনো ঢাকায় যায়নি সে। গ্রামে বাবা মা থাকেন। চাকরির পরীক্ষা দিতে বন্ধুর কাছে ঢাকায় যাচ্ছে......

-ভাই আপনি আপনার নাম কি???(শুভ পাশের ছিটে বসা একটা লোককে জিজ্ঞাস করলো)

(লোকটি শুভর দিকে তাকালো আর বলল)

-আসাদ

-ভাই একটা উপকার করবেন??

-জ্বি বলেন

-আমার বমি বমি ভাব হচ্ছে। আমি জানালার কাছে বসি। আপনি আমার এখানে বসেন

-আসেন আসেন (লোকটি ভয়ে বলল)

-থ্যাংক ইউ


শুভ বাসের মধ্যে বমি করলো। তো বাস সন্ধ্যার দিকে একটা জায়গায় যাত্রা বিরতি দেয়। শুভ নেমে কিছু খেয়ে নেয়। সে ঘুরে ঘুরে জায়গাটা  দেখছিলো। একসময় সে বাস থেকে অনেক দূরে চলে যায়.....


বাসটা তাকে রেখেই ছাড়লো

-ওস্তাদ একজন বাসে ওঠেই নাই। (কন্টেক্টার)

-আরে আগে দেখবি না (ড্রাইভার)

-ওস্তাদ ও হালার পো হালা যে বোকা। কই যে গেছে আল্লাই জানে। আপনি গাড়ি টানেন। ওই ভ্যান ওই


এদিকে শুভ সেই আগের জায়গায় আসে। এসে দেখে বাস নেই। সে ভয়ে ঘামতে থাকে....

-ভাই এখানে একটা বাস ছিলো(শুভ)

-এই কিছুক্ষণ আগেই ছেড়ে দিয়েছে।


শুভ কি করবে বুঝতে পাড়ছে না। সে রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকে....তার কাধে একটা ব্যাগ। আর হাতে একটা পুরোনো ছেড়া ব্যাগ।

আকাশের অবস্থা খারাপ দেখে সে ভাবে রাস্তা দিয়ে না হেটে একটা জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে...সে রাস্তা থেকে নেমে একটা গ্রামের ভেতর ঠুকে যায়....এদিকে অনেক জোড়ে বাতাস শুরু হয়। শুভ খুব তাড়াতাড়ি একটা বাড়ির সামনে যায়। ততক্ষণে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে.......


সে বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে। বাড়িতে দুইটা ঘর। আর একটা ঘরে বারান্দা রয়েছে। সে সেই বাড়ান্দার গিয়ে দাড়ায়....সে ব্যাগ মাটিতে রেখে তার শরীরের পানি ঝাড়তে থাকে। সেই শব্দ শুনে। রুমের ভেতর থেকে আওয়াজ আসে.....

-কে????(একটি মেয়েলি কন্ঠ)

-...........(শুভ ভয়ে কিছু বলছে না)

-আরে বারন্দায় কে?? কথা বলছে না কেনো??

-.............

শেষমেশ মেয়েটা বাইরে চলে আসে।

-এই আপনি কে এখানে কেনো??(মেয়েট)

-আসলে আমি.....(আগের সব ঘটনা গুলো বলে)

-না আপনি মিথ্যা বলছেন। এখান থেকে যান এখনি।

-একটু থাকি বাইরে গেলে ভিজে যাবো

-না বাড়িতে মা বাবা কেউ নেই আমি একা। তাই আপনি এখনি বাইরে যান

-ওনারা কই গেছেন??

-পাশের বাড়ি।

-ওহহ

-যান বাইরে। নাহলে লাঠি দিয়ে মাইর দেয়া শুরু করবো

-আচ্ছা আমি বাড়ির বাইরে গিয়ে দাড়িয়ে থাকি। ব্যাগ গুলো এখানে থাক। 

-না ব্যাগ গুলো সাথে নিয়ে যান

-না ওগুলো থাক। ব্যাগ এর ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজ আছে। ওগুলো।থাক আমি বাড়ির বাইরে দাড়িয়ে থাকি। বৃষ্টি কমলে নিয়ে যাবো।

-ওকে যান এখন

-জ্বি


শুভ এই ঝড়ের মধ্যে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দাড়াল। 

মেয়েটি জানলা খুলে দেখতেছে সব।

সবসময় দেখা যাচ্ছে না। যখন বিদ্যুৎ চমকায় তখন দেখা যায়। মেয়েটি দেখতে পায় ছেলেটি কাঁপছে। মেয়েটি ভাবে ছেলেটি ভালই হবে। তাই তাকে ডাকতে আবার বারান্দায় যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর তাকে দেখতে পায় না.....


-গেলো কই(মনে মনে বলল মেয়েটি)

-ধুররর উপকার করতে চাইলাম এখন হলো না। যাই ঘুমাই। বৃষ্টি থামলে হয়তো ব্যাগ নিয়ে চলে যাবে (এটা ভেবে মেয়েটি দরজা আটকে দিয়ে ঘুমিয়ে যায়)


সকাল বেলা.......

-কিরে ব্যাগ ব্যাটা ব্যাগ রেখেই চলে গেছে নাকি??? পাগল টাগল নাকি ধুররর।

মেয়েটি ব্রাশ করতে করতে। বাড়ির বাইরে গেলো। গিয়ে দেখলো। লোকটা শুয়ে আছে

আরে লোকটা কি আজব এখানে এই ভাবে ঘুমিয়ে আছে(মেয়েটি)

-এই যে শুনছেন(মেয়েটি)

-.........(কোনো সারাশব্দ নেই)

-ওই ছেলে

-ক ক কে কে

-এখনো শুয়ে আছেন যাননি কেনো??

-কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারি নি

-তো এখন যান

-ওকে ব্যাগ নিয়ে এসে চলে যাই

-হ্যা তাড়াতাড়ি 

শুভ ব্যাগ এনে তার কাছে দাড়ালো।এদিকে তার খুব খুদা লাগছে। রাতে কিছু খাওয়া হয় নাই।

-একটা কথা বলি(শুভ)

-হুমম বলেন(মেয়েটি)

-আমার খুব খুদা লাগছে

-হুহহ

(মেয়েটি কিছুক্ষণ ভাবলো। আর বলল)

-আচ্ছা ভেতরে চলেন

শুভ আর কিছু না বলে পেছন পেছন বাড়ির ভেতর গেলো।

-আপনি ঘরে বসে একটু ওয়েট করেন

-.............

-কি হলো কিছু বলছেন না কেনো??

-............

মেয়েটি পেছন ঘুরে দেখে। শুভ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে...

-আরে এর আবার কি হলো,,, শুনছেন। ও হ্যালো

-...........

-মাথায় হাত দিয়ে দেখি তো। একি! অনেক জড় উঠছে তো। হায় আল্লাহ কি আপদ ঘারে পড়লো। 

মেয়েটি শুভকে রুমে নিয়ে যায়। আর সেখানে শোয়ায়ে দেয়....


মেয়েটি রান্না করে নিয়ে আসে....

-এই যে ওঠেন

-হ্যা (শুভ চোখ খুলল)

-ওঠেন। উঠে কিছু খেয়ে নেন

-হুমমমম

-হুমমম

-আপনার বাবা মা আসেনি??

-উনারা নেই

-কোথায় গেছে??

-উপরে

-উনারা দোতালায় থাকে??

-হাইরে আল্লাহ। আমাদের বাড়ি দেখে কি দোতালা মনে হয়??

-তাহলে বললেন যে উপরে থাকে

-মারা গেছে। বুঝছেন এখন

-হুমমমম। আপনি একাই থাকেন এখানে??

-হ্যা। আর আমি এখানে থাকি না। ঢাকায় থাকি।

-ঢাকায় কি করেন???

-একটা হাসপাতালের নার্স আমি

-ওহহহ

-হুমম বক বক না করে খেয়ে তাড়িতাড়ি চলে যান।

-আচ্ছা। আপনি খেয়ে নেন এখনি

-না আপনি যান তারপর আমি খাবো


খাওয়া শেষে....

-তাহলে এবার যান(মেয়েটি)

-আপনার....

-আপনি এখন বলবেন আপনার ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করে পারবো না। এসব ডায়লগ দিতে হবে না। এখন যান

-হুমমম ঠিক আছে।


শুভ বারান্দায় গিয়ে ব্যাগ দুটো হাতে নেয়। সাথে সাথে আবার বৃষ্টি শুরু হয়...শুভর গায়ে এখনও জ্বর। সে কাপছে এখনো। শুভ একবার মেয়েটার দিকে তাকায়। তাকিয়ে দেখে বড় বড় চোখ করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে শুভ একটা ব্যাগ কাধে আর একটা কাধে নেয়। সে বের হওয়ার জন্যা পা বাড়ায়... এমন সময়। তার পা আর সামনে চলে নে। সে ভাবে ব্যাগটা কিছুর সাথে আটকে গেছে মনে হয়ে। এটা ভেবে পেছনে তাকায়...

-আপনাকে এই বৃষ্টির সময় যেতে হবে না থামলে যায়েন

(পেছনে তাকাতেই এমন কথা শুনতে পাবে। শুভ ভাবে নি)

-না যাই। আপনার আবার সমস্যা হতে পাড়ে

-আপনার অনেক জ্ব যেতে হবে না এমন অবস্থায়। ভেতরে আসেন

-হুমমমমমম

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।মনের মানুষ

Part: 2

writer. moyej uddin

........................................

-না যাই। আপনার আবার সমস্যা হতে পাড়ে(শুভ)

-আপনার অনেক জ্বর যেতে হবে না এমন অবস্থায়। ভেতরে আসেন(মেয়েটি)

-হুমমমমমম


-আচ্ছা বাড়িতে আপনি একাই থাকেন??(শুভ)

-না(মেয়েটি)

-তাহলে??

-আমি নার্স ঢাকায় একটা হসপিটালে জব করি

-ওও তাহলে এখানে ছুটিতে আসছেন??

-হুমমম।

-আপনার নাম কি???

-সেটা শুনে আপনি কি করবেন??

-না এমনি

-রাত্রি

-না আজ রাত থাকবো না বৃষ্টি না থামলেই চলে যাবো কোনো টেনশন কইরেন না

-আরে গাধা আমার নাম রাত্রি

-ওহহ আমি শুভ

-ভালো

-হুমমম


বাইরে ভালই বৃষ্টি হচ্ছে। দুজনই চুপচাপ থাকলো অনেক্ষণ

-বৃষ্টি থেমে গেছে এবার যাই ভালো থাকেন(শুভ)

-হ্যা দেখে যায়েন


এবার আর রাত্রি বাইরে আসলো না।

রাত্রি শুয়ে আছে। শুভ বাইরে গিয়ে আবার ফিরে আসলো। রাত্রি শুভর আসা দেখে তাড়াতাড়ি উঠে বসলো

-এই আবার আসছেন কেনো??(রাত্রি)

-বাইরে কয়েকটা লো লো (শুভ)

-কি লো লো করছেন??

-কয়েকটা লোক দাড়িয়ে আছে। আমি বাইরে যেতেই বলল আপনাকে ডাকতে

-হুমমম চলেন দেখি


রাত্রি বাইরে বের হয়ে দেখলো। গ্রামে মুরুব্বি টাইপের তিনটা লোক...

-শোন মা

-জ্বি বলেন

-এটা কি তোমার স্বামী

-না

-তাহলে তুমি ঘর আটকে দিয়ে পর পুরুষ নিয়ে ছি ছি ছি

-না ভুল বুঝছেন আপনারা

-না কোনো কথা এই রফিক মাতবর কে ডাক। আর গ্রামের সবাইকে ডাক

-আরে না আমি আসলে শুধু আশ্রয় নিয়েছি (শুভ)

-থামো তুমি...


রাত্রির মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো। এদিকে শুভর অবস্থায়ও খারাপ ভয়ে আর জ্বরে ছেলেটা কাঁপছে। তারা ভাবতেই পারে নি। এমন একটা বিপদের সম্মুখীন হবে...


সন্ধ্যা ৭ টা। রাত্রিদের বাড়ি ভর্তি হয়ে গেলো লোকজন দিয়ে। গ্রামের মুরুব্বি মাতব্বর সহ আরও অনেক লোক জন...

তারা শুভর মুখের কথা শুনলো। কিন্তু একটা কথাও বিশ্বাস করলো না। রাত্রিও অনেক বলল। কিন্তু কোনো কথাই তারা কানে নিলো না।


সবাই বলা বলি করে সিদ্ধান্ত নিলো তাদের বিয়ে দেওয়া হোক। একথা শুনে শুভ রাত্রির দিকে তাকালো। দেখল মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। সে কি করবে?? তার তো কোনো উপায় নেই। তার এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে।


রাতে ওদের বিয়ে হয়.... সবাই বাড়ি থেকে চলে যায় ১০ টার দিকে। বাড়িতে একপাশে দাড়িয়ে আছে শুভ আরেক পাশে বসে কান্না করছে রাত্রি। 

শুভ তার কাছে এসে বলল

-আমি দাড়িয়ে থাকতে পাড়ছি না। আমার একটু শুতে হবে(শুভ)

-............(রাত্রি কোনো কথা বলছে না)

-এই যে শুনছেন

-.............

হঠাৎ শুভ মাথা ঘুরে পড়ে যায়...রাত্রি একটু ভয়ই পায়। এর আবার কিছু হলো না তো। রাত্রি শুভকে ঘরে নিয়ে পানি ঠালে।


পরদিন সকাল বেলা.....

-আহহহহহহহহ(শুভ ঘুম থেকে উঠলো)

-এই যে খাবার গুলো তাড়াতাড়ি খেয়ে এখান থেকে বিদায় নিন। (রাত্রি)

-না আজ খাবো না। আবার যদি খেতে মেঘ চলে আসে। আবার সমস্যা হবে

-যা বলছি তাই করুন (রাত্রি ধমক দিয়ে বলল)

-হুমমমমমম


শুভ খাচ্ছে রাত্রি দাড়িয়ে দেখছে। শুভ রাত্রি কে দেখে বলল

-আপনি সেজেছেন কেনো??(শুভ)

-ঢাকা যাচ্ছি (রাত্রি)

-আমিও তল ঢাকা যাবো।

-হ্যা যাবেন তবে আমার সাথে না। আর এর পর থেকে আমাদের কোনোদিন দেখা হবে না।

-তাহলে আমাদের যে বিয়ে হলো

-ভুলে যান। আমি মন থেকে মেনে নেই নি

-কিন্তু বিয়ে তো হয়েছে। আর গ্রামের লোকজন পড়ে কি বলবে??

-আমি তো আর কোনোদিন গ্রামে আসবো না। এই চলে যাবো।আর এখানে কোনোদিন আসবো না

-ওহহ কিন্তু আমাদের বিয়ে

-আবার বিয়ে বিয়ে করিস। তাড়াতাড়ি খা আর এখান থেকে বিদায় হ। তোর জন্যই আমার সব হইছে।


শুভ আর কিছু বলল না। প্লেটে ভাত রেখে হাতে কোনো রকম ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে বাড়ির বাইরে চলে গেলো...

রাত্রি ভাবছে

-হাহ আপদটা বিদায়

ঘরে তালা দিয়ে। শেষ বারের মতো বাড়িটা দেখে। ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হলো। বাড়ির বাইরে বের হতেই....


-আমি ঢাকা চিনি না (শুভ)

রাত্রি পেছন ফিরে দেখলো শুভ

-তুই এখনো যাস নাই(রাত্রি)

-আমিও তো ঢাকা যাবো। আমি ঢাকা চিনি না। আপনার সাথে যাই??

-না তোর মতো তুই যা

-আমি পাড়লে তো একাই যেতাম

-পাড়িস না কেন??

-কোনো দিন যে যাই নি তাই

-............(রাত্রি একবার শুভর দিকে তাকালো)

-আপনি আমার সাথে এমন ব্যবহার করছেন কেনো?? আমি কি করছি??

-ওকে আসেন


রাত্রি আগে আগে হাটছে। আর শুভ পেছন পেছন। তাড়া একটা বাসে উঠে। জানালার পাশে ছিট না শুভই নেয়। আর রাত্রি তার পাশেই বসে।


-এখন কই যাবেন??(রাত্রি)

-মহাখালী(শুভ)

-ওখানে কে থাকে??

-আমার বন্ধু। ও অনেক ভালো

-ওর বাসা চেনেন??

-না ও বলছে ওখানে গিয়ে ওকে একটা ফোন করতে

-তো এখন ফোন করে বলেন যে আপনি যাচ্ছেন

-আমার কাছে তো ফোন নেই

-হায় আল্লাহ। আপনি কি আদিম যুগের মানুষ।

-না

-ফোন নেই কেনো??

-কেনা হয় নি

-ভালো

-আপনার তো আছে। আপনার টা দেন ফোন দেই

-হুমম নেন

-না আপনার হাতেই থাক। আপনি নাম্বার উঠান। আমি নাম্বার বলছি...


শুভ একটা কাগজ বের করে একটা নাম্বার বলল...

-কি বলে??(শুভ)

-ওয়েট করেন কল ঠোকে নি

-হুমমম।

-নাম্বার তে অফ

-আবার দেন

-দিলাম তো অফ

-আচ্ছা এখন আমার কাছে দেন আমি দেখি। একসময় নিশ্চয়ই খুলবে

-ওকে নেন


শুভ অনেক বার চেষ্টা করলো। প্রত্যেক বারই বন্ধ বলল। আর এদিকে বাস তাদের জায়গা মতো নামিয়ে দিলো।

-এখন কি করবেন(রাত্রি)

-জানি না (শুভ)

-ওকে আপনি জানার চেষ্টা করেন। আমি যাই ভালো থাকবেন। কেমন

-আচ্ছা। এই দাড়ান একটা কথা

-কি কথা??

-মহাখালী কোন দিকে??

-ভালো ভাবে শোনেন

-হুমম বলেন

-এই নাক বরাবর যাবেন একটা অনেক বড় খোলা জায়গা পাবেন। ওই টাই মহাখালী

-তাহলে আমার বন্ধু খোলা জায়গায় থাকে???

-সেটা কি আমি জানি??

-ওহজ ঠিক আছে

-হুমম বায়

-হুমম

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

মনের মানুষ

Part: 3

writer. moyej uddin

..............................................

-এই নাক বরাবর যাবেন একটা অনেক বড় খোলা জায়গা পাবেন। ওই টাই মহাখালী

-তাহলে আমার বন্ধু খোলা জায়গায় থাকে???

-সেটা কি আমি জানি??

-ওহহ ঠিক আছে

-হুমম বায়

-হুমম


দুইজন দুইদিকে হাটছে...রাত্রি ভাবছে

-বোকা টা সত্যিই মনে হয় অনেক বোকা। বলার সাথে সাথে বিশ্বাস করলো। ওই দিক হাটলে ও সারাজীবন এ কিছুই খুঁজে পাবে না... তাহলে কি আবার ডাক দিবো???(রাত্রি)


-কই খালি জায়গা তো দেখতে পাচ্ছি না। শুধু গাড়ি আর বাড়ি। ওহহ না দালানকোঠা। (শুভ)

-মহাখালী ওই দিকে না(রাত্রি)

শুভ কারও কন্ঠ শুনতে পেলো। পেছন ফিরে দেখে রাত্রি...

-এই আপনি আবার আসছেন কেনো??(শুভ)

-হ্যা আসলাম। আমি আপনাকে মিথ্যা বলছি। আপমি যে জায়গায় যাবেন। সেটা ওই দিকে না।(রাত্রি)

-তাহলে আমাকে যে বললেন

-এমনি বলছি

-তাহলে কোন দিকে বলেন

-কোনো দিকে না আমাকে ফলো করে হাটেন

-আচ্ছা.....


রাত্রির পেছন পেছন শুভ হাটছে...

-আপনার বাড়িতে কে কে আছে?(রাত্রি)

-আমার বাড়িতে??(শুভ)

-হ্যা

-আমি, বাবা, মা, আর ছোট একটা ভাই

-হুমমমম। আচ্ছা আমি আপনাকে ভুল পথ দেখালাম আমাকে বকা দিলেন না তো

-আসলে আপনার সাথে তো আমার বিয়ে হয়েছে। আপনি তো আমার উপর রেগে আছেন। তাই ভয়ে কিছু বলতে পাড়ছি না

-তাই! 

-হুমমম

-হুমমম

-আচ্ছা এখন আমরা কোথায় যাচ্ছি???

-আসেন গেলেই বুঝতে পারবেন

-ও আচ্ছা চলেন

-হুমমমম


দুজন হাটছে। রাত্রি ভাবছে কি হাবা গোবা লোক রে বাবা। এখনো এই দুনিয়ায় আছে! হঠাৎ শুভ বলল

-এই যে শুনছেন??(শুভ)

-হুমম বলেন(রাত্রি)

-আমার খুদা লাগছে

-............(রাত্রি কিছু বলছে না)

-আপনিও খাবেন সমস্যা নেই। টাকা আমি দিবো।

-ওই ওই আমি কি টাকার কথা বলছি কিছু

-না (ভয়ে)

-তাহলে বললেন কেনো??

-চুপ করে ছিলেন তো তাই

-হুহহহ কি খাবেন??

-আপনি যা বলেন

-আপনার খুদা লাগছে আপনি বলেন

-আগে একটা দোকানের সামনে যাই..

-হুমম চলেন


ওরা দুজন একটা দোকানের সামনে গিয়ে পাউরুটি আর কলা কিনল। শুভ খাচ্ছে আর আশে পাশের দোকান গুলো দেখছে... হঠাৎ শুভ বলল

-আচ্ছা ওগুলো কি???(শুভ)

-কোন গুলো??(রাত্রি)

-ওই যে ওই গুলো(একটা গ্রিল চিকেন দেখিয়ে)

-ওগুলো গ্রিল চিকেন

-ওহহ। মুরগি গুলোকে ওভাবে ঘোরাচ্ছে কেনো???(এই কথা শুনে রাত্রি সহ আশেপাশের লোকজন মুচকি হাসতে শুরু করলো)


রাত্রি দোকানদারকে টাকা দিয়ে। তারাতরি ওখান থেকে শুভ কে নিয়ে সরে আসলো। 

-এই এই আপনি লেখাপড়া শেষ করছেন তাও বাইরের কিছুই চেনেন না দেখছি (রাত্রি)

-কোনোদিন দেখি নাই তো(শুভ)

-(রাত্রি মুচকি হাসলো)

-হাসছেন কেনো??

-এমনি চলেন এখন

-হুমম চলেন


একটু পর তাড়া একটা বাসার মধ্যে প্রবেশ করলো। বাসাটি ৫ তালা। ২য় তালায় রাত্রি থাকে....রাত্রি শুভ কে নিয়ে তার রুমে প্রবেশ করলো।

-এখানে কে থাকে??(শুভ)

-আমি(রাত্রি)

-তো আমাকে এখানে নিয়ে আসলেন কেনো???

-বাইরে থাকলে হারিয়ে যাবেন তাই

-আর আমার বন্ধু কে খুঁজে পাবো না তাহলে??

-এই যে ফোনটা নেন ফোন দিতে থাকেন। আমি রান্না করি

-আচ্ছা......


রাত্রি গেলো রান্না করতে...আর শুভ তার বন্ধুর নাম্বারে ফোন দিতে থাকলো। কিন্তু তার বন্ধুর ফোন টা এখনো বন্ধ। বিরক্ত হয়ে শুভ রাত্রির ফোনের পিকচার দেখতেছে.....

হঠাৎ শুভ দেখতে পেলো। রাত্রির সাথে একটা ছেলের অনেক গুলো ফটো। অনেক বিভিন্ন জায়গায় থেকে ফটো গুলো উঠানে হইছে। একটা ছবি তে দেখলো ছেলেটা রাত্রি কে আংটি পড়িয়ে দিচ্ছে......রুমে হঠাৎ রাত্রি এলো


-এই যে আপনার বন্ধু কি ফোন ধরেছে???(রাত্রি)

-ননন না ধরে নি। ফফফ ফোন অফ বলছে (শুভ)

-ওহহ। তা আপনি তোতলাচ্ছেন কেনো??

-ক ক ক কই না তো

-এই যে মাত্রই তো ক ক ক করলেন

-না কিছু না

-হঠাৎ কি হলো

-সত্যি কিছু না। এই যে আপনার ফোন


রাত্রি ফোন হাতে নিয়ে টেবিলে রেখে দিলো। আর শুভ কে বলল ফ্রেস হয়ে আসেন খেয়ে নিবেন। শুভ আর কিছু বলল না। ফ্রেস হয়ে এসে খেতে বসলো......দুজন একসাথেই খাচ্ছে....

-রান্না কেমন হইছে বললেন না তো(রাত্রি)

- হা কি(শুভ)

-আপনি মনে হয় কিছু ভাবছেন। অন্যমনস্ক

-কই না। রান্না ভালই হইছে

-কি হইছে একটু বলবেন

-আপনার মোবাইলে আপনার সাথে একটা ছেলের অনেক গুলো ছবি দেখলাম

-(এটা শুনে রাত্রি শুভর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে)

(শুভ চোখ দেখে অনেক ভয় পেয়ে বলল)

-আপনার কাছের মানুষ মনে হয়। আমাকে কিছু বইলেন না। ভালো লাগছিলো না তাই ছবি গুলো দেখছিলাম।

-হুহহহ। ছবি গুলো কে দেখতে বলেছে

-ভালো লাগছিলো না তাই দেখলাম একটু

-একটু সাধারন জ্ঞান নাই আপনার। না বলে আরেক জনের গ্যালারি তে ঠুকছেন

-না মানে (মাথা নিচ দিক দিয়ে)

-একটা কথাও বলবেন না আপনি

-আচ্ছা

-জানেন ও আমার কে হয়??

-কে হয়??

-আমার সবকিছু ও

-হুমমমম


শুভ তাড়াতাড়ি খেয়ে। ব্যাগ হাতে নিলো

-এ ব্যাগ হাতে নিচ্ছেন কেনো??(রাত্রি)

-আপনি মনে হয় আমাকে মারবেন।আমি থাকবো না আমি চলে যাই(শুভ)

-ওই ওই মারবো না ব্যাগ রাখ, ব্যাগ রাখ

(শুভ ভয়ে ব্যাগ রেখে দিলো)

-তোর কি মনে হয় বাইরে গিয়ে তোর বন্ধুকে খুঁজে পাবি???

-ননন না

-তাহলে 

-আচ্ছা যাবো না

-হ্যা কাল সকালে চলে যাবি। এমনিতে অনেক ক্ষতি করছিস আমার

-কি করছি??

-আবার মুখের উপর কথা??

-.....(শুভ একদম চুপ হয়ে গেলো)

-তোর উপকার টা করাই ভুল হইছে।

-........

-তুই উপরে ঘুমাবি। আর নিচে আমি ঘুমাবো। ঠিক আছে??

-(শুভ মাথা দিয়ে হ্যা উত্তর দিলো)

-যত্তসব.......

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।মনের মানুষ

Part : 4

writer. moyej uddin

............................................

-তুই উপরে ঘুমাবি। আর নিচে আমি ঘুমাবো। ঠিক আছে??

-(শুভ মাথা দিয়ে হ্যা উত্তর দিলো)

-যত্তসব(রাত্রি)


শুভ খাটে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে। এদিকে রাত্রি ঘুমিয়ে গেছে। শুভ ভয়ে বেশি নড়চড়া করতে পাড়ছে না। শুভ হঠাৎ সাহস নিয়ে নিচে নামল এবং বলল

-এই যে শুনছেন??(শুভ রাত্রিকে ডাকছে)

-..........(রাত্রি ঘুমের মধ্যেই রয়েছে)

-এই যে। (রাত্রির গায়ে একটু ধাক্কা দিয়ে)

(হাল্কা ধাক্কাতে রাত্রি জেগে যায়। সে চোখ খুলে দেখল শুভ তার কাছে বসে আছে। রাত্রি বুঝতে পাড়ল সে তাকে স্পর্শ করেছে। তাই কোনো কথা না বলে....)

-ঠাসসসসস ঠাসসস ঠাসস ঠাসসস (৫-৬ টা থাপ্পর দিলো রাত্রি)

(থাপ্পর টা খেয়ে শুভর চোখে পানি এসে গেছে। আর কান্না কান্না আওয়াজ এ শুভ বলছে..)


-আমি কি করছি মারলেন কেনো??(শুভ)

-ঠাসসসস ঠাসসস ঠাসস(আবারও তিনটা চর যেন মশা মারছে)

-আচ্ছা আগে বলুন আমি কি করছি?? তারপর মাইরেন (কান্না কান্না গলায় শুভ বলল)

-তুই আমায় টাচ করছিস। তোর উপকার করার জন্য ঘরে আনছিলাম। আর তুই এই সুযোগ নিলি???(রাত্রি)

-না আমি আসলে

-চোপ কোনো বাহানা দেখাবি না ঠাসসস ঠাসসস

-এত মারেন কেন আমার উপরে ঘুম ধরছিলো না। আমি এতো নরম বিছানায় ঘুমাতে পারি না তাই আপনাকে ডাকছিলাম। আর আপনি এমনিতে মাইর দিলেন (কান্না করে)

(রাত্রি অবাক হয়ে যায়। একি কি করল সে। তার আগে কথা টা শোনা উচিত ছিলো)


-আপনি কি উপরে যাবেন???(শুভ)

-হ্যা যাচ্ছি।

(রাত্রি উপরে গেলো। আর শুভ না ঘুমিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর ফিরল আর নিচে শুয়ে পড়ল)

-সরি (রাত্রি)

-না সরি বলতে হবে না। ঠিক কাজই করছেন

-.......(রাত্রি আর কিছু বলল না)


এদিকে শুভ একদম ঘুমের দেশে চলে গেছে। আর রাত্রি এখনো ঘুমাতে পারে নি। কারন যে মারটা তাকে দিছে। যা বলার মতো না। এসব ভাবতে ভাবতে রাত্রিও ঘুমিয়ে যায়......


পরদিন সকাল বেলা.....

(শুভর সামনে খাবার কিন্তু খাচ্ছে না। রাত্রি বুঝল সে রাগ করছে মনে হয়)

-সরি (রাত্রি)

-সরি কেনো??(শুভ)

-রাতের মারের জন্য

-আরে ধুরর ওটা তো ভুলে গেছি। এখন ভাবছি কি করবো??

-তাহলে খাচ্ছেন না কেনো??

-আসলে

-কোনো কথা না খান আগে


(শুভ খাওয়া শুরু করে। একবার খাবার মুখে তুলেই তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরা শুরু করে। এটা রাত্রি দেখতে পায়)

-এই এই কান্না করছেন কেনো??(রাত্রি)

-আমি খেতে পাড়ছি না(শুভ)

-কেনো কি হইছে??

-আপনি যে কাল মেরেছেন গালে। তাই গাল কেটে ফালা ফালা হয়ে গেছে। খুব ঝাল লাগছে। আপনি খান হ্যা(এটা বলে শুভ উঠে গেলো)


(এদিকে রাত্রি মন খারাপ করে বসে থাকল। তারও খাওয়া হলো না। সে ভাবছে মাইরটা বেশী হয়ে গেছে। হঠাৎ রাত্রি দেখতে পেলো শুভ ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার জন্য রেডি হইছে। হাসি মাখা মুখে শুভ বলল)

-আপনাকে অনেক জ্বালিয়েছি। ভুল হলে মাফ করে দিয়েন। আমি এখন যাই। ভাল থাইকেন। (এটা বলে শুভ চলে গেলো)


রাত্রি তখনো বসে ভাবছে। ছেলেটা তো চলে গেলো। কিন্তু সে যাবে কই?? 

আবার কি তাকে ডেকে আনবো?? ছেলে টা তো ভালই খারাপ না। আমার সাথে তার বিয়ে হইছে। কি যে করি???(রাত্রি এগুলো ভাবছে)


আর এদিকে শুভর অবস্থা....

-এ ভাই মহাখালী যাবেন??(একটা রিক্সা ডেকে বলল)

-হ্যা কোথায় যাবেন??

-বললাম তো

-খালি মহাখালী কইলে তো ওইবো না ভাই


-এই এই ও যাবে না আপনি যান(পেছন থেকে রাত্রি বলল)

-আপনি আবার আসছেন কেনো??(শুভ)

-উপরে চলেন (রাত্রি)

-না আমি গিয়ে কি করবো?? 

-আপনার বন্ধুকে আমার এখান থেকে খুঁজে বের করবেন

-না আমি ওকে না পেলে বাড়ি চলে যাবো

-না উপরে আসেন ব্যাগ দিন


আবার রাত্রি শুভ কে উপরে নিয়ে গেলো....

-এটা খেয়ে নিন(একটা ফলের জুস এগিয়ে দিয়ে)

-কি এটা (শুভ)

-জুস। খেয়ে নিন

-না

-ওই আপনি জুস ছাড়া কিছু খেতে পারবেন না। আর সকালে কিছু খেতে পাড়েন নি

-আচ্ছা দিন


সারাদিন একাই কাটালো শুভ। কারন রাত্রি তার কাজে গিয়েছিলো। রাত ৯ টায় রাত্রি আসে....

-এই যে কি করেন??(রাত্রি)

(শুভ শুয়ে ছিলো)

-এই তো শুয়ে আছি (শুভ)

-আপনার মনে হয় অনেক খুদা লাগছে। একটু ওয়েট করেন আমি রান্না করে নেই

-রান্না করতে হবে না

-তাহলে খাবেন কি??

-রান্না আমি করেছি

-কিহহহ আপনি করেছেন রান্না

-হ্যা আমি করেছি

-আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।

-ফ্রেস হয়ে আসেন আগে 

-ওকে

(রাত্রি কিছুটা অবাক। এ ছেলে আবার রান্নাও জানে)


দুজন খেতে বসে...

-ভালই তো রান্না করতে পাড়েন(রাত্রি)

-হুমমম মার কাছ থেকে শিখেছি একটু(শুভ)

-তাই

-হুমমম

-ওহ নো

-কি হইছে??

-নিচের দোকানে একটা জিনিস ফেলে আসছি

-তো খান তারপর নিয়ে আসবেন

-না এখনি নিয়ে আসতে হবে। (রাত্রি উঠে নিচে চলে গেলো)


এদিকে রাত্রির ফোনে একটা কল আসছে। একবার বেজে কেটে গেলো শুভ ধরলো না। আবার বাজছে তাই শুভ ফোনটা ধরলো

-কে বলছেন??(শুভ)

-আপনি কে বলছেন??(ওপাশ থেকে)

-আমি শুভ

-রাত্রি কোথায়??

-নিচে গেছে

-আপনি কে বলছেন??

-সেটা আপমার জেনে লাভ নেই। আপনি ওর কে হন??

-বন্ধু

-ওকে। ও আসলে ফোন দিতে বইলেন (এটা বলে ওপাশ থেকে কল টা কেটে দিলো)


রাত্রিও কিছুক্ষণ পর আসলো আর খেতে বসল...

-একটা কথা (শুভ)

-কি??(রাত্রি)

-আপনার ফোনে একটা ফোন আসছিলো

-আপনি ফোন ধরছিলেন??

-হ্যা

-দেখি ফোনটা কই??

-এই যে

(রাত্রি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো তার আকাশ (তার বয়ফ্রেন্ড) ফোন দিয়েছিলো)

-আপনি কি করছেন এগুলা?? ফোন দিয়ে কি বলছে ও আপনাকে(রাত্রি)

-বলল যে আমি আপনার কে হই??

-তো আপনি কি বলছেন??

-বলছি যে ফ্রেন্ড


রাত্রি দেড়ি না করে আকাশ কে ফোন দিলো...

-হ্যালো আকাশ(রাত্রি)

-এত রাতে তোর রুমে বন্ধু থাকে... (অনেক খারাপ ভাষায় গালি দিয়ে আকাশ ফোনটা কেটে দিলো)

-কি বললেন তিনি (শুভ)


রাত্রি শুভর দিকে তাকালো। শুভ দেখতে পেলো রাত্রির চোখ লাল হয়ে আছে....

-কি বললেন উনি??(শুভ আবার বলল)

-কুত্তার বাচ্চা ঠাসসস ঠাসসস ঠাসসস ঠাসসস(রাত্রি)

-কি করলাম আবার (শুভ)

-তুই আমার সব কিছুই শেষ করে দিলি??

-কি করছি??

-কি করছি মানে তুই বুঝতে পারছিস না??

-না। আমি শুধু তাকে বলছি আপনি আমার ফ্রেন্ড হন।

-তোক ফোন কে ধরতে বলেছে

-..........

-কি হলো কথা বল

-না মানে 

-কি মানে মানে??

।।

।মনের মানুষ

Part: 5

writer. moyej uddin

..............................................

-তোকে ফোন ধরতে কে বলেছে??(রাত্রি)

-...........(শুভ কোনো কথা বলছে না)

-কি হলো বল

-না মানে

-কি মানে মানে

-ভুল হয়ে গেছে সরি


রাত্রি আরেকটা চর মারবে এমন সময়। আবার ফোন দেয় আকাশ।


-হ্যালো আকাশ(রাত্রি)

-তুই কোনোদিন আমাকে ফোন দিবি না(আকাশ)

-আমার কথা টা তো শোনো

-আমি তোর কোনো কথা শুনতে চাই না। তুই তো একটা.. বে.....


টুট টুট টুট....লাইন টা কেটে গেলো। রাত্রি চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। আকাশকে সে অনেক ভালবাসে।

তিন তিনটা বছর হলো তাদের রিলেশন। তাদের নিজেদের মধ্যে আংটি বদল ও হয়েছে। এগুলো রাত্রি কিভাবে ভুলবে......হো হো করে রাত্রি কান্না করে দিলো.....শুভ এগিয়ে গিয়ে বলল


-আমি কিছু করি নি। আমি শুধু বলছি আমি আপনার (শুভ কে আটকিয়ে))

-চোপপপপ এক কথা কয় বার বলিস হ্যা। আর কত ক্ষতি করবি আমার?? আমি তোর কি ক্ষতি করছি।


শুভ কিছুই বলে না। শুধু ভাবে কি এমন করলাম?? 

-এই যে ফোনটা এই দিকে দেন তো (শুভ)

-...........(রাত্রি কথা না বলে ফোনটা তার দিকে এগিয়ে দেয়)


শুভ ফোন নিয়ে তার ফ্রেন্ড এর কাছে ফোন দেয়। এখনও ফোন ওফ বলছে...আর একবার দেওয়ার সাথে সাথে কল টা ঠুকল....ওপাশ থেকে বলল

-হ্যালো কে বলছেন??(ওপাশ থেকে)

-ওই তুই রাব্বি না??(শুভ)

-হ্যা আপনি কে??

-ওই সালা আমি শুভ

-শুভ কই তুই

-ওই এখন বলছিস কই তুই। আমি তিনদিন আগে ঢাকা আসছি। আর তোকে ফোন দিচ্ছি কিন্তু তোর ফোন অফ। 

-আর বলিস না। ফোনটা হারায়া গিয়েছিলো। মাত্রই সিম টা রিপ্লেস করে অন করলাম।

-ভাল করছিস। 

-এখন কই তুই?? আর তোর তো মোবাইল নেই। কার মোবাইল থেকে ফোন দিছিস??

-সে অনেক কথা। আমি এখন একটা খালার বাসায় আছি (রাত্রি কথা টা শুনে শুভর দিকে তাকাল)


-ঢাকায় তোর কোন খালা থাকে??(রাব্বি)

-তুই চিনবি না পরে বলব

-আচ্ছা

-শোন এখন

-হুমম বল শুনতেছি

-তোর কাছে যাবো। কিন্তু তুই কই থাকিস???

-........এই ঠিকানায়

-কি বললি কিছুই বুঝলাম না

-তুই তোর খালার বাসায় তাই না??

-হ্যা

-তোর খালার বাসায় কাউকে ফোনটা দে। আমি তাকে বলে দেই। কোথায় থাকি আমি

-আচ্ছা দিচ্ছি...


-এই যে শুনছেন। রাব্বি আমার বন্ধু ও আপনার সাথে কথা বলবে। ও কোথায় থাকে তা আমি চিনতে পাড়ছি না আপনি একটু শুনে নেন......(শুভ রাত্রি কে বলল)


রাত্রি ফোনটা হাতে নিয়ে ঠিকানা টা শুনলো....

-কি বলল ও(শুভ)

-.......(রাত্রি কোনো কথা বলল না)

রাত্রি গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।

আর চিপে চিপে কান্না শুরু করলো।


এটা দেখে শুভ কি করবে বুঝতে পারছে না... দুজনের খুদাও লাগছে খুব। শুভ তাই একটা প্লেটে খাবার নিয়ে রাত্রির কাছে গেলো...

-আমি জানি আপনার খুদা লাগছে খেয়ে নিন(শুভ)

-........(কোন কথা নেই)

-একটু খেয়ে নিন ভালো লাগবে

-ঠাসসসস (রাত্রি চর মারলো আর প্লেট টা ফেলে দিলো)


শুভ গালে একটা হাত দিলো, আর অন্য হাত দিয়ে ছড়িয়ে থাকা খাবার গুলো প্লেটে তুলল। রাত্রি বিছানার ওপাশে মুখ দিয়ে ঘুমিয়ে আছে...

শুভও কিছু না বলে নিচে শুয়ে পড়লো। তার গাল টায় প্রচন্ড ব্যাথা... সে দিকে তার খেয়াল নেই। সে তার বউ মানে রাত্রির দিকে মন দিয়ে আছে....শুভ ভাবছে মেয়েটার সব কিছুই আমার জন্য হয়েছে। কি যে করব আমি?? এসব ভাবতে ভাবতে শুভ ঘুমিয়ে যায়......


পরদিন সকাল বেলা...

শুভকে কেউ ধাক্কা দিচ্ছে...শুভ ঘুমের ঘোরে টের পাচ্ছে। একটু পর জোরে ধাক্কা দেওয়ার কারনে শুভ জেগে যায়...

-কে কে কে(শুভ)

-.......(তাকিয়ে দেখে রাত্রি রেডি হয়ে দাড়িয়ে আছে)

-কই যাবেন??

-কোনো কথা বলবেন না। আপনি আপনার ব্যাগ নিয়ে চলে আসুন আপনার বন্ধু ফোন দিয়েছিলো সে আপনকে নিতে আসছে....

-আচ্ছা যাচ্ছি


শুভ ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে যায় রাত্রির সাথে। তারা একটা রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে বসে। শুভ এদিক ওদিক তাকিয়ে সব কিছু দেখছে।

-কিছু লাগবে??(ওয়েটার)

-আরে মিয়া জানতো আমরা কি কিছু বলছি(শুভ)


রাত্রি শুভর দিকে বড় বড় করে তাকায়। শুভ সেটা দেখে চুপ হয়ে যায়...হঠাৎ রাত্রির ফোনে ফোন আসে..

-আপনার বন্ধু ফোন দিয়েছে কথা বলেন (রাত্রি)

শুভ ফোনটা হাতে নিয়ে বলল

-হ্যালো রাব্বি(শুভ)

-দোস্ত আজকে সরি আমি একটা কাজে আটকে গেছি। তুই তোর খালার বাসায় থাক। কাল তোকে নিয়ে আসবো

-মানে??

-একটা কাজে আটকে গেছি দোস্ত সরি

-আচ্ছা ঠিক আছে। কাল কিন্তু মিস করবি না

-হুমমম মিস হবে না কাল

-ওকে


শুভ ফোনটা রাত্রির দিকে এগিয়ে দিলো..

-কি বলল আপনার বন্ধু??(রাত্রি)

-আজ ও আসতে পারবে না। খালার বাসায় থেকে যেতে বলল(শুভ)

-খালার বাসা মানে??

-মানে আপনার ওখানে থাকি সেটা তো বলা যাবে না। তাই খালার বাসা বলছি

-ওহহহ। আমার সাথে না গেলে আমি অনেক খুশি হবো

-ওহহ আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি চলে যান তাহলে

-হুমম বায়


রাত্রি উঠে চলে যাবে তখনই দেখলে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে ভেতরে ঠুকলো। ছেলেটাকে রাত্রির চেনা চেনা লাগছে। 

-আরে এ তো আকাশ। আকাশ এই মেয়ের সাথে কি করে??(রাত্রি মনে মনে)


আকাশ আর মেয়েটি একটা জায়গায় বসল। আর কিছু ওডার করল। শুভ যে পাশে বসে ছিলো রাত্রি তার পাশে গিয়ে বসল। ওরা কি করে আড়াল থেকে তা দেখতে....এদিকে শুভ অবাক। রাত্রী মাত্রই বলল সে চলে যাবে এখন এখানে বসছে কেনো??

-এই যে আপনি যাবেন না?? (শুভ)

-চুপ একদম চুপ। চুপ করে বসে থাক। আর ওই ছেলে আর মেয়েটা কি বলে সেটা শোন

-আচ্ছা....


-জান আমাকে কবে বিয়ে করবে??(মেয়েটি)

-দেখো তোমার আর আমার এফ বিতে পরিচয় আজ প্রথম দেখা হলো। আর কয়দিন যাক তারপর বিয়ে..(আকাশ)

-আমাকে তুমি কেমন ভালোবাসো??

-বেবি আমি তুমাকে সবথেকে বেশি ভালবাসি

(রাত্রি এসব কথা শুনে শুধু ফুলতেছে)

-ওরা দুজন দুজনকে অনেক ভালবাসে তাই না?? (শুভ রাত্রিকে বলল)


শুভর কথার উত্তর না দিয়ে রাত্রি। আকাশের কাছে গেলো। আর গিয়ে দুটা থাপ্পর মারল.... এটা দেখে শুভ এগিয়ে গেলো।

-কি হইছে মারছেন কেনো ওনাকে???(শুভ)

-ওহহ এই তাহলে তোমার রাতের বন্ধু। হ্যালো ম্যান রাতে কেমন ইনজয় করছো??

-কি বলেন কিছুই তো বুঝি না (শুভ)

রাত্রি কথা টা শুনে আবার থাপ্পর দেয় আকাশকে....। আকাশ এবার রেগে গিয়ে..রাত্রি কে তিনটা থাপ্পর দেয় আর বলে..

-তুই তো বে... বন্ধু কে নিয়ে রাত কাটাশ(এটা বলে আর একটা থাপ্পর দিতে যাবে তখন শুভ আকাশের হাতটা ধরে ফেলে)

-আমার বউ এর গায়ে যেনো আর একটা হাত পরে না (শুভ)

-বাহ বাহ কিরে রাত্রি বিয়ে করে ফেলেছিস। আর আমাকে বলিস ফ্রেন্ড। তুই তো একটা চিট...(আকাশ)

-আর তুই কি?? তুই কি?? তোর চরিত্র খুব ভালো। দেখলাম তো তুই কেমন। তুই একটা ছেড়ে আর একটা নিয়ে ঘুরতেছিস। (এটা বলে রাত্রি মারতে যাবে তখনই। আকাশ আবার রাত্রি কে থাপ্পর দেয়)


এটা দেখে শুভর অনেক রাগ হয়...

শুভ আকাশের কলার টা ধরে দশ বারোটার উপর কিল ঘুষি চর মারে।

রাত্রি এটা দেখে অবাক। 


কয়েকটা লোক এসে শুভ কে থামিয়ে দিলো। আকাশ নিচে পড়ে আছে। উঠে এসে বলল

-তোকে আমি দেখে নেবো। আর রাত্রি তোকেও দেখে নিবো(আকাশ)

-আর যা যা। কি করতে পারিস দেখবো আমি(শুভ)

-.....(আকাশ শুভর দিকে তাকিয়ে রয়েছে)

শুভ পায়ের জুতা খুলে অনেক গরম হয়ে বলল

-গেলি এখান থেকে(শুভ)


(আকাশ চলে গেলো)

রাত্রি ভয়ে দাড়িয়ে আছে। সেও চলে যাবে। এমন সময় শুভ বলল

-এর এক পা এগোলে পা ভেঙ্গে ফেলবো(শুভ)

-.......(রাত্রি ভয়ে কিছু বলছে না)

-সকালে খান নি। এখন কিছু খাবেন তারপর যাবেন (শুভ)

-.......

-কি হলো(ধমক দিয়ে)

-হুমম ঠিক আছে

-খাবার অডার করেন....

।।

।।

।।

।।মনের মানুষ

Part: 6

writer. moyej uddin

..............................................

-সকালে খান নি। এখন কিছু খাবেন তারপর যাবেন (শুভ)

-.......(রাত্রি চুপ)

-কি হলো(ধমক দিয়ে)

-হুমম ঠিক আছে

-খাবার অডার করেন....


রাত্রি খাবার অর্ডার করল। একটু পরই খাবার এলো। দুজনই চুপচাপ বসে আছে....

-কি হলো খাবার সামনে আছে দেখতে পাচ্ছেন না??(শুভ)

-কি হুমম?? খাওয়া শুরু করেন

-হ্যা খাচ্ছি তো


দুজনেই খাচ্ছে রাত্রি বার বার আড় চোখে শুভর দিকে তাকাচ্ছে। আর ভাবছে এভাবে রেগে যাওয়ার কারন টা কি?? ওকে জিজ্ঞাস করবো?? আবার বকা দিবে না তো?? এসব ভাবতে ভাবতে...


-এহমম এহমম একটা কথা বলি(রাত্রি)

-জ্বি বলেন (শুভ)

-তখন ওভাবে রেগে গেলেন কি জন্য???

-প্রশ্নের উত্তর কি দিতেই হবে??

-হ্যা দিতে হবে

-হুমম। রেগে দুইটা কারন আছে

-দুইটা কারন!!! কি কি??

-প্রথমত ও মেয়ে নিয়ে এসছে এটা কিছু না আর সব দোষ আপনার ঘারের উপর চাপাচ্ছে। দ্বিতীয়ত যদিও আপনি আমাকে বর হিসেবে মানেন না। আমি তো আপনাকে বউ হিসেবে মেনে নিয়েছি। তাই আমার সামনে আমার বউ কে মারবে। আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখবো!!!


-হুমমমমম

-ও হ্যা আরেকটা কারন আছে

-আবার কি??

-খুদা লাগলে আমার মাথা ঠিক থাকে না

(এটা শুনে রাত্রি মুচকি হাসলো)

-হুমমম(রাত্রি)

-হুমম হুমম না করে খেয়ে নিন


খাওয়া শেষে......

-তো ভালো থাকেন। অনেক জ্বালিয়েছি। অনেক ক্ষতিও করেছি। আর ক্ষতি করতে চাই না। আর হ্যা ওই ছেলেটার সাথে যোগাযোগ করার কোনো দরকার নেই। ওর ভাব সাব ভালো না। আর বর হিসেবে একটা কথা বলি সবসময় ভালো থাকবেন আর এই ঘটনা গুলো ভুলে যাবেন....(এটা বলে শুভ রওনা দিলো)


এমন সময় রাত্রি পেছন থেকে ডাক দিলো...

-এই শোনেন শোনেন(রাত্রি)

(শুভ পেছনে তাকাল দেখল রাত্রি তার দিকেই আসছে)

-কি হয়েছে ডাকলেন কেনো??(শুভ)

-আমাকে একটু বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসবেন??

(শুভ কিছুক্ষণ ভেবে বলল)

-তাহলে একটা শর্ত আছে (শুভ)

-কি শর্ত???(রাত্রি)

-আমার কাছে আর বেশি টাকা নেই গাড়ি ভাড়া আপনি দিবেন। রাজি??

-হুমমম রাজি(মুচকি হেসে)


ওরা একটা রিক্সা নিলো। শুভ বড় বড় বিল্ডিং গুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে..

-এই ওভাবে কি দেখছেন??(রাত্রি)

-শুধু দেখছি না ভাবছি(শুভ)

-কি??

-এত বড় বড় বিল্ডিং কিভাবে বানাইছে??

-হা হা হা কখনো দেখেন নাই নাকি??

-ধুরর আমাদের যেখানে বাড়ি বিল্ডিং তো দূরের কথা একটা ইট ও নেই। তাই এত বড় বড় বিল্ডিং দেখা হয় নি।


(তার কথা গুলো শুনে রাত্রি হাসছে) হঠাৎ শুভ বলে উঠল

-ওই দেখেন দেখেন (শুভ)

-কি কি??(রাত্রি ভয় পেয়ে)

-ওই যে সেই মুরগি গুলো পোরাচ্ছে

-হা হা হা হা

-হাসছেন কেনো??

-এমনি


রিক্সাওয়ালাও মুচকি মুচকি হাসছে...কিছুক্ষণের মধ্যে তারা রাত্রির বাসার সামনে নামল....

-তাহলে এবার আসি (শুভ)

-না শোনেন(রাত্রি)

-আবার কি??

-রুমের মধ্যে রেখে আসেন

-দেখেন এই ব্যাগ নিয়ে এই সিড়ি বেয়ে ওঠার চেয়ে না ওঠাই ভালো। আপনি যান

-না আসেন

-না গো অনেক কিছু হয়েছে। যান আপনি

-না আসেন 


হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো রাত্রি। শুভ। হা করে রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম রাত্রি হাতের ছোয়া পেলো.....এদিকে রাত্রি টানতে টানতে শুভকে রুমের মধ্যে নিয়ে গেলো...

-ফ্রেস হয়ে নিন আমি দুপুরের রান্না টা সেরে ফেলি।

- না আমি চলে যাবো

-কই যাবেন হ্যা?? আপনার বন্ধু তো বলল আজ ও আসতে পারবে না।

-তো কি হইছে। থাকবো একজায়গায়

-এখন যানি আমি হাত তুলি না খবর আছে কিন্তু

-হুমমমম। আপনি কাজে যাবেন না??

-না আজ অফ

-ওও

-যান ফ্রেস হন

-আচ্ছা....


শুভ ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো রাত্রি রান্না করছে। শুভ তখন বলল

-আমি কি সাহায্য করব(শুভ)

-না। আমি একাই পারবো(রাত্রি)

-আমি একটু সাহায্য করি

-এত দিন ধরে আমি একাই রান্না করছি বুঝছেন??

-হুমম। কিন্তু এত দিন একা ছিলেন। আজ আমি আছি। তাই সাহায্য করবে।

-ওকে ওকে। পেয়াজ কাটতে পাড়েন??

-হ্যা পাড়ি

-পেয়াজ গুলো কেটে দেন।

-তা কি রান্না করবেন??

-খিচুড়ি আর গরুর গোশত

-এ আপনার মাথা ঠিক আছে?? এই গরমে এই দুপুর বেলা। খিচুড়ি গোশত

-হ্যা সমস্যা কি?? রান্না করতেছি খেতে হবে। বেশি কথা না বলে পেয়াজ কাটেন।


(দুজন এর কথা কাটা কাটি। হাসা হাসি করতে করতে রান্না করে ফেলল)

দুপুরের খাওয়া শেষ করে দুজন বশে আছে। তবে রাত্রির মন খারাপ..শুভ সেটা খেয়াল করল

-মন খারাপ করছেন কেনো??(শুভ)

-কই না তো এমনি(রাত্রি)

-আবার মিথ্যা কথা বলে

-না সত্যি মন খারাপ না

-আমি যানি আপনি ওর কথা মনে করতেছেন। ওর কথা ভুলে যান। ওর থেকে ভালো কেউ আপনার জীবনে আসবে বুঝছেন

-এহহহ কচু আসবে

-একটা কথা বলি

-জ্বি বলেন

-আপনি খুব কিপ্টা

-কি করলাম আবার??

-আমি নতুন ঢাকায় আসছি। আমাকে নিয়ে একটহ ঘুরলেন ও না

-ওহহ এই কথা??

-হুমম এই কথা

-তো কোথায় যাবেন??

-আমি তো জায়গার নাম যানি না। আপনি ভালো চেনেন। যে জায়গা ভালো হয় নিয়ে চলেন

-ওকে চলেন

-আমি কিন্তু একটাকাও খরচ করতে পারবো না

-হা হা হা ঠিক আছে রেডি হন


রাত্রি ২০ মিনিট হলো রেডি হচ্ছে। আর এদিকে বিরক্ত হয়ে বসে আছে..

-এই এদিকে আসেন তো(রাত্রি)

-কি হয়েছে বলেন(শুভ)

-হিজাব টা লাগাতে পারছি না একটু ধরেন তো

-কি যে মাথার উপর বিল্ডিং করতেছে (ফিস ফিস করে)

-কিছু বললেন?

-কই না তো

-হুমম হয়েছে থ্যাঙ্ক ইউ(শুভর গাল ধরে)

-........(শুভ অবাক)

-ওহ সরি সরি

-হুমম ঠিক আছে চলেন

-হুমমম চলেন


-এই ব্যাগ নিয়ে কই যান??(রাত্রি)

-ওহহ মনে নেই। এই যে রাখলাম (শুভ)


দুজন রাস্তায় এসে হাটছে। কিন্তু গাড়ি পাচ্ছে না। রাত্রি বলল

-কি হলো। কিছু বলছেন না যে(রাত্রি)

-কি বলব(শুভ)

-আমাকে কেমন লাগছে??

-আমি আপনাকে ভালোভাবে দেখি নি

-দেখেন নাই মানে??

-মানে আপনার দিকে সে ভাবে তাকাই নি

-ওই দাড়ান

-আবার কি??

-আমার দিকে তাকান আর ভালোভাবে দেখে বলেন কেমন লাগছে আমাকে???

-না পরে

-পরে মানে?? এখনি

-ওকে(শুভ রাত্রির দিকে তাকালো)

 

শুভর চোখ রাত্রির চোখে যাখন পড়ে যায় তখন। একটু মুচকি হেসে শুভ চোখ নামিয়ে নেয়

-কি ভালো লাগছে না তাই না??(রাত্রি)

-না। (শুভ)

-মানে??

-বলতে দেন আগে

-হ্যা বলেন

-অনেক বেশি সুন্দর লাগছে

(রাত্রিও মুচকি হাসলো)


রাত্রি আর শুভ একটা পার্কে গিয়ে বসে

-এ কোথায় আসলেন??(শুভ)

-কেনে কোনো সমস্যা??(রাত্রি)

-দিনের বেলায় একজন আরেকজনের সাথে একদম গা ঘেষে বসে আছে

-তো কি হইছে...???

-কি হইছে মানে এগুলো ঠিক না

-তাই??

-হুমমম

-আচ্ছা একটা কথা বলি

-হ্যা বলেন

-আপনি কখনো রিলেশন করছেন??

-উউহু(লজ্জা পেয়ে বলল)

-লজ্জা পাইছেন নাকি???

-হুমম

-এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে??

-কিছু না।


দুজনই চুপচাপ এখন...সন্ধ্যার একটু আগে আকাশে মেঘ ধরলো। প্রায় সন্ধ্যা সন্ধ্যাই লাগছিলো...

-চলেন এখন। মেঘ ডাকছে মনে হয় বৃষ্টি আসবে(শুভ)

-হুমম চলেন(রাত্রি)

-একটা জিনিস আমি খেয়াল করছি

-কি??

-আপনার হাতের আংটি টা অনেক সুন্দর

-ওহহ....এটা ও দিয়েছে

-তাহলে খুলে ফেলে দেন

-কেনো

-ও খারাপ ওর আংটি টাও খারাপ ফেলে দেন

রাত্রি কিছু না বলে আংটি টা হাত থেকে খুলে ফলে দিলো। 


রাস্তায় রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছিলো দুজন। হঠাৎ জোড়ে একটা বাজ পড়ল। রাত্রি লাফ দিয়ে শুভকে জড়িয়ে ধরলে...

-এই এই কি করলেন। জড়িয়ে ধরলেন কেনো??(শুভ)

-এত জোড়ে মেঘ ডাকলো আপনি শুনতে পান না? (রাত্রি)

-তো জড়িয়ে ধরার কি আছে???

-আমার ভয় করে

-এহহ ভয় করে।উনি যখন মেঘের চেয়ে জোড়ে জোড়ে গর্জন করে তখন কিছু না.... (ফিস ফিস করে)

-এই কি বললেন

-কই কিছু না

-না বলছেন

-ঝগড়া পরে করা যাবে। এখন বাসায় চলেন। বৃষ্টি নামবে

-না আগে বলেন আমাকে কি বললেন??


-বাহ বাহহ বাহ। ঝগড়া তো সেই জমেছে...

(রাত্রি আর শুভ পেছনে তাকালো দেখলো আকাশ)

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।মনের মানুষ

Part : 7

writer. moyej uddin

...............................................

-ঝগড়া পরে করা যাবে। এখন বাসায় চলেন। বৃষ্টি নামবে(শুভ)

-না আগে বলেন আমাকে কি বললেন??(রাত্রি)

-বাহ বাহহ বাহ। ঝগড়া তো সেই জমেছে...

(রাত্রি আর শুভ পেছনে তাকালো দেখলো আকাশ)

-তুই এখানে কি করিস??(রাত্রি আকাশ কে বলল)

-তোদের দেখতে আসলাম(আকাশ)

-কি দেখতে আসছিস???(রাত্রি)

-কি রকম ঘষা ঘষি হলো


কথা টা শোনার পর রাত্রি রেগে গিয়ে আকাশ কে একটা চর মারলো।

-তোর সাহস তো কম না আমারে তুই চর মারলি???(আকাশ)

-কি রে তুই কি হয়ে গেছিস যে তোকে চর মারা যাবে না 

-তোকে আজকে বুঝিয়ে দিবো আমি কি??

-কিহহ তুই কি বুঝাবি রেএএ(শুভ)

-এ ভাই দেখছেন দিনের বেলায় ছিনতাই করছে(রাত্রি একটা লোককে ডাক দিয়ে বলল)

-এই ছেলে??? (লোকটি বলল)

-হ্যা এই ছেলেটাই(রাত্রি)

-না বলে আমি তো যাস্ট কথা বলছিলাম(আকাশ)


এরকম কথা বলতে বলতে অনেকগুলো লোক জড়ো হয়ে গেলো। 

সেই সুযোগে রাত্রি আর শুভ সেখান থেকে কেটে পড়লো। যাতে আর কোনো ঝামেলা না হয়...


একটু দূরে এসে....

-এই বৃষ্টি তো নামছে। গাড়ি তো পেলাম না?? (শুভ)

-আসেন তো হেটেই যাবো। আর অনেকদিন বৃষ্টি তে ভেজা হয় নাই

-তাই

-হুমমম


একটু পর ঝুম ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। 

-এভাবেই হাটবেন??(শুভ)

-হ্যা আসেন(রাত্রি)

-সবাই তো তাকিয়ে আছে

-না তাকিয়ে থাকে। আসেন তো

-না কোথাও দাড়াই আসেন

-এই না না 

-না বললে তো হবে না। রিক্সা পেয়েছি একটা...

-কই??

-ওই যে

-না হেটে যাই 

-না ভিজবো তো

-আগে বাসায় যাই তারপর

-সত্যি তো?

-হুমম

-ওকে চলেন


বৃষ্টি তে রিক্সায় ভিজে ভিজে বাসার সামনে নামল।

-আপনি ভেজেন আমি দাড়িয়ে আছি(শুভ)

- না না আমার সাথে ভিজতে হবে (রাত্রি)

-না কি যে বলেন

-কি বলি মানে আসেন আসেন


(দুজনই ভিজতে শুরু করলো। একটা 7up এর বোতল দিয়ে দুজন ই ফুটবল খেলছে..রাত্রি শুভর গেঞ্জি টেনে ধরছে। এরকম করে অনেক্ষণ ভিজলো তারা....


রুমে এসে.....

-আপনি আগে ফ্রেস হন(রাত্রি)

-না আপনি আগে(শুভ)

-না আপনি আগে

-না আপনি

- না ইউ

-তাহলে দুজ...

-কিহহহহহ???????

-না মানে আপনি আগে যান

-কি বলতে চাইছিলেন বলেন তো

-কই কিছু না

-হুমম বেচে গেছেন...

-হুমম যান আপনি আগে

-ওকে....


দুজনই ফ্রেস হয়। রাতের খাওয়া করে 

পরদিন সকাল বেলা....শুভ ঘুম থেকে উঠে দেখে রাত্রি এখনো ঘুমাচ্ছে...শুভ রাত্রি কে ডাক দেয়

-এই যে উঠেন(শুভ)

-..........(রাত্রি ঘুমিয়ে)

-এই যে হ্যালো

-উমমমমম

-ওঠেন


অনেক ডাকা ডাকি করলো কিন্তু উঠলো না। শুভ রাত্রির কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আসছে অনেক। সকালের রান্না শুভই করল। সব রেডি করে রাত্রি কে আবার ডাকলো...


-এই যে শুনছেন(শুভ)

-হুমমম(রাত্রি)

-ওঠেন সকাল হইছে তো

-না ভালো লাগছে না

-আমি যানি আপনার জ্বর আসছে। রান্না করছি। কিছু খেয়ে তারপর আবার শুয়ে থাইকেন। এখন তো উঠেন

-আপনাকে কে রান্না করতে বলছে(ঘুম ঘুম অবস্থায়)

-কে আর বলবে?? আমি বুঝি তো। আর বেশি কথা বইলেন না তো। উঠেন এখন

-পারবো না

-কিছু খেয়ে ঔষধ খেতে হবে তো। না হলে জ্বর কমবে না

-আপনি খাবার নিয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দিন

-এহহহ

-হ্যা। না হলে খাবো না

-আচ্ছা ঠিক আছে।


শুভ খাবার নিয়ে রাত্রি কে খাইয়ে দিলো। 

-ঘরে কি ঔষধ আছে???(শুভ)

-হুমম আছে। ঐ খান টায় দেখেন(রাত্রি হাত দিয়ে একটা জায়গা দেখিয়ে দিলো)

-ওকে দেখি

শুভ সেখান থেকে ঔষধ নিয়ে রাত্রি খাওয়াতে যাবে এমন সময় রাত্রির ফোনটা শুভ রিসিভ করে...

-হ্যালো কে বলছেন?? (শুভ)

-হ্যালো শুভ(ওপাশ থেকে)

-হ্যা

-আমি রাব্বি

-হ্যা রাব্বি বল

-আমি ১ ঘন্টার মধ্যে কালকের সেই হোটেলে আসবো। তুই আয়।

-আচ্ছা ঠিক আছে

-হ্যা দেড়ি যাতে না হয়

-আচ্ছা তুই আবার পরে না করবি না তো??

-না আজ কোনো কাজ নেই

-ওকে আসছি আমি

-ওকে। 


ফোনটা কেটে দিয়ে শুভ রাত্রি কে ঔষধটা খাইয়ে দেয়। আর বলে

-রাব্বি ফোন দিয়েছিলো(শুভ)

-হুমমম(ঘুমের ঘোরে। রাত্রি চোখ খুলতে পারছে না)

-যাই তাহলে(শুভ)

-হুমমম

শুব রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অনেক্ষণ রাত্রির দিকে তাকিয়ে ছিলো। হয়তো তার যেতে ইচ্ছা করছিলো না। কিন্তু কি মনে করে 

শুভ রুম থেকে বেরিয়ে সেই হোটেলে গেলো....গিয়ে দেখলো তার বন্ধু বসে আছে

-ওই রাব্বি(শুভ)

-আরে দোস্ত কেমন আছিস(রাব্বি)

-হ্যা ভালো তুই??

-হুমম ভালো

-তো তোর খালার বাসার সবাই কেমন আছে??

-খালার বাসা না

-তাহলে??

-তোকে সব পরে বলছি। আগে তোর বাসায় চল

-ওকে চল


বাসায় গিয়ে...

-এখন বল(রাব্বি)

-কি বলব

-কই ছিলি সেটা

-শোনার জন্য এত আগ্রহ কেনো

-না আগে বল

-ওকে বলছি শোন

-হুমমম

-আমি তোকে বাড়ি থেকে যেদিন ফোন দিয়েছি তার পর দিন বেড় হয়েছি ঢাকার উদ্দেশ্যে

-বলিস কি তাহলে এ কয়েকদিন তাহলে

-ধুররর পুরোটা বলতে দে..

-হ্যা বল

-..........(শুভ পুরো ঘটনা টা রাব্বি কে বলে)

-আরে দোস্ত এত কিছু হইছে??

-হুমমমমম


কথা বলতে বলতে রাব্বির ফোনে ফোন আসে....রাব্বি নাম্বার দেখে বলে। 

-এ তোর খালার বাসা থেকে ফোন ওহহজ সরি তোর বউ ফোন দিছে....(রাব্বি)

-সত্যি??

-হুমম কথা বল

-দে

-হ্যালো(রাত্রি)

-হ্যা বলেন (শুভ)

-আপনি আমাকে রেখে চলে গেছেন। আমি দুপুরে কি খাবো??

-রান্না করে দিয়ে আসছি তো

-আমাকে খাইয়ে দিবে

-......

-কথা বলেন না কেনো?? আমার খুব খারাপ লাগছে। আপনি তাড়াতাড়ি আসেন। নয়তো আমি খুব রাগ করবো। (এটা বলে ফোনটা কেটে দিলো রাত্রি)

-দোস্ত ভাবি কি বলল

-যেতে বলে

-তো যা

-না সে তো আমাকে বর হিসেবে মানে না

-চোপপপপ মেয়েটার এখন জ্বর আর তুই যাবি না তাই না?? যা এখনি


কিছুক্ষণ ভেবে

-ওকে যাচ্ছি (শুভ)

-ভাবির ভালো ভাবে যত্ন নিস(রাব্বি)

-চুপপপপ

-চুপপ বলিস কেন?? আমি কি মিথ্যা বলছি??


শুভ কিছু না বলে। চলে গেলো রাত্রির কাছে। রুমে প্রবেশ করে দেখে। মেয়েটা শুয়ে কাপতেছে...এটা দেখে শুভ তাড়াতাড়ি রাত্রির কাছে গেলো

-এই যে আমি আসছি(শুভ)

-তুমি আমাকে না বলে গিয়েছো কেনো??(রাত্রি)

-আপনি তো যেতে বললেন

-কখন বললাম?? মিথ্যা বলো কেন??

-(শুভ ভাবছে জ্বরে আবল তাবল বলছে)

-শোনো আমি না বলা পর্যন্ত কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না

-আচ্ছা যাবো না

-এখন আমার কাছে বসে থাকো

-আচ্ছা....


শুভ রাত্রির মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে। ডাক্তার ডাকল। ডাক্তার এসে ঔষধ দিলো। আর বলে গেলো ভালভাবে খেয়াল রাখতে জ্বর অনেক বেশি....

দুপুরের দিকে জ্বর একটু কমল। তখন রাত্রি একটু চোখ খুলল।আর দেখল শুভ খাবার নিয়ে দাড়িয়ে আছে...

-এই যে কিছু খেয়ে ঔষধ টা খেয়ে নিন (শুভ)

-না খাবো না

শুভ ভাবলো এভাবে খাবে না। তাই সে রাত্রিকে উঠিয়ে তার পাশে বসলো। আর রাত্রিকে বসিয়ে দিলো। রাত্রির মাথাটা শুভর কাধের উপর পরে। সে মাথাটা সোজা রাখতে পারছে না....


তারপর কিছু খেয়ে রাত্রিকে ঔষধ খাইয়ে আবার ঘুম পাড়িয়ে দেয়....

শুভ রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে এখন। সেই প্রথম দিনের কথা মনে পড়ছে যখন তার সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো। এসব কথা মনে করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে.....


বিকেল এর দিকে রাত্রির জ্বর কমে যায়...

-যাক উঠছেন তাহলে(শুভ)

-হুমমম (রাত্রি)

-ভালো হইছে। রাতের রান্না টা কি দিয়ে করবো???

(এটা শুনে রাত্রি কান্না করে দেয়)

-এই কান্না করছেন কেনো??(শুভ)

-........(কান্না করেই যাচ্ছে)

-কি হয়েছে বলবেন তো

-এদিকে আসো

-হ্যা বলেন


শুভ কাছে আসতেই রাত্রি উঠে দাড়িয়ে....লিপ কিস করে। প্রায় তিন মিনিট.....শুভ এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। তার হাত পা কাঁপছে...

-এই শোনো

-......(শুভ কোনো কথা বলছে না। তার ঠোট ও কাপছে)

-(এটা দেখে রাত্রি শুভকে আবার কিস করে)

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।মনের মানুষ

Part: 8 

writer. moyej uddin

.............................................

শুভ কাছে আসতেই রাত্রি উঠে দাড়িয়ে....লিপ কিস করে। প্রায় তিন মিনিট.....শুভ এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। তার হাত পা কাঁপছে...

-এই শোনো

-......(শুভ কোনো কথা বলছে না। তার ঠোট ও কাপছে)

-(এটা দেখে রাত্রি শুভকে আবার কিস করে)


-এটা ক কি করলেন???(শুভ)

-আমি জানি না (রাত্রি)

-এগুলো কি ঠিক হলো??

-হুমম ঠিক হইছে

-.....................(শুভ কোনো কথা বলছে না চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছে)

-একা রান্না করতে হবে না। আমি সাহায্য করছি চলো(রাত্রি)

-না আপনি অসুস্থ। আপনি শুয়ে থাকেন। আমি রান্না করি

-না। আমি এখন ভালো। আর একা তো রান্না করছি না তুমিও সাহায্য করবে

-হুমমম


রান্না করার সময়...

-একটা কথা বলি??(শুভ)

-হুমম বলো(রাত্রি)

-আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেনো??

-কেনো?? কেনো সমস্যা??

-না সমস্যা নেই

-তাহলে প্রশ্ন করলে কেনো??

-এমনি

-হুমমম। এমনি এমনি করতেই সারাজীবন চলে যাবে তোমার।

-হুমমমম। আচ্ছা আপনি ওকে এখনো ভালবাসেন তাই না??

-তুমি পাগল হইছো হ্যা?? ওকে এখন ভালোবাসতে যাবো কেনো?? আর পর সম্পর্কে কোনো কথা বলতে চাই না আমি

-হুমম ঠিক আছে।

-হুমমম। আচ্ছা তোমার বাসায় কে কে আছে???

-বাবা মা

-ভাই বোন নেই

-হুমম একটা বোন আছে।

-ওহহ তা তুমি ঢাকায় আসছিলে কেনো??

-আপনাকে না সব বললাম

-মনে নেই আবার বলো

-চাকরির পরীক্ষা দিতে

-কোথাও পরীক্ষা দিয়েছো??

-কই দিলাম।সবসময় তো আপনার কাছেই। 

-ওহহহ

-হুমমম

-একটা কথা বলি

-হুমম বলেন

-রেস্টুরেন্ট এ আকাশ কে মারার সময় তুমি যখন বললে আমি তোমার বউ। তখন আমি খুব অবাক হইছি। আর আমার খুব ভালো লাগছে।

-হুমম

-কি হুমমম

-কিছু না

-আচ্ছা আমি তো তোমার বউ তাই না??

-হুমম কিন্তু আমি আপনার বর না

-কেনো???

-আপনি তো প্রথম থেকেই আমাকে মেনে নেন নি তাই।

-ওহহ তাই??

-হুমমম

-আচ্ছা আর একটা কথা

-এতো প্রশ্ন করছেন কেনো??

-১০০ বার প্রশ্ন করবো। হাজার বর প্রশ্ন করবো।

-আচ্ছা করেন।

-আমি তোমার সাথে যখন তোমার বাড়ি যাবো। বাড়ির সবাই যখন আমাকে দেখবে। তোমাকে প্রশ্ন করবে এ কে?? তখন তুমি কি বলবে??

-আমি কি বলেছি, আমি আপনাকে আমার বাড়ি নিয়ে যাবো??

-হ্যা তুমি না নিয়ে গেলেও তোমার সাথে যাবো

-ওহহহ

-তুমি কিন্তু আমার কথার ভালোভাবে উত্তর দিচ্ছো না

-না দিচ্ছি তো

-কই দিচ্ছো। তাহলে বলো তুমি তখন কি বলবে???

-বলব যে আমার বউ

-যদি তারা তোমাকে কিছু বলে

-বলবে না

-এত সিউর কিভাবে??

-গেলেই টের পাবেন। কিন্তু আমি আপনাকে নিয়ে যাবো না

-কেনো?? ভয় পাও??

-না

-তাহলে

-এমনি

-আমার দিকে তাকা

-জ্বি বলেন

-আমার চোখে চোখ রাখ

-হুমমম

-আমি ১০০ বার যাবো আর তোর সাথেই যাবো

-হুমমম

-কি হুমম বল নিয়ে যাবি(শার্টের কলার ধরে)

-আচ্ছা দেখি

-কোনো দেখা দেখি না বল নিয়ে যাবি

-হুমম নিয়ে যাবো

-প্রমিস

-হুমমম প্রমিস

-উউউম্মম্মাম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহ(শুভর গালে একটা কিস করলো)

-এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে(রাত্রি)

-কিছু না। আপনি বার বার ইয়ে দিচ্ছেন কেনো??(শুভ)

-ইয়ে মানে কি??

-মাত্রই যে দিলেন ওইটা

-নাম আছে তো তাই না??

-হুমমম

-বলেন

-না পরে

-আচ্ছা মনে থাকে যেনো।

-হুমমমম


রান্না শেষ করে খাওয়া দাওয়া করে রাতে ঘুমানোর সময়।

-তোমার নিচে ঘুমানোর দরকার নেই উপরে আসো(রাত্রি)

-আরে না আপনি ঘুমান। আমি এখানেই থাকি

-না উপরে আসো

-না এখানে থাকি।

-দাড়াও আমি নিচে যাচ্ছি।


রাত্রি একটা বালিশ নিয়ে নিচে শুভর পাশে শুয়ে পড়লো।

-কি হলো??(রাত্রি)

-কিছু না (শুভ)

-তাহলে এত দূরে চলে গেলে কেনো??

-এমনি

-কাছে আসো

-না

-বুঝছি। তোমাকে টাইট না দিলে কাজ হবে না

-কি করবেন আবার

-দাড়াও দেখাচ্ছি


রাত্রি শুভর কাছে যাবে এমন সময় শুভ একটু কাছে এসে বলে..

-কিছু করতে হবে না আসছি (শুভ)

-হুমম। কিন্তু আমার দিকে ঘুরো

-না 

-এই ঘোর

-হুমম

-একটা কথা বললে, শোনে না।

-শুনি তো

-আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকো

-হুমমম

-কি দেখছো??

-আপনার চোখ

-আর কি??

-চোখ

-আর

-সেই চোখ ই। আর কিছু না

-তাই না??

-হুমমম

-আই লাভ ইউ

-........(লজ্জা পেয়ে শুভ চোখ নামিয়ে নিলো)

-এই চোখ উপরে তোলো

-হুমমম

-আই লাভ ইউ

-আপনি তো তাকে ভালোবাসেন


এটা বলার সাথে সাথে চটাস করে দুইটা থাপ্পর

-বলছি না ওর কথা বলবি না (রাত্রি)

-হুমমমম(শুভ)

-তাহলে বললি কেনো??

-...........

-সরি তুই করে বলার জন্য। আর আমি মাঝে মাঝে তুই করেই বলবো। তোমাকে সাইজ করার জন্য

-হুমম

-এখন বলো তুমি কি আমাকে ভালোবাসো??

-...............

-কি হলো বলো

-...............

-তুমি ঘেমে যাচ্ছো কেনো বলো

-ভাল না বাসলে কি। এখন এখানে আসতাম???


রাত্রি কথাটা শুনে শুভ কে জড়িয়ে ধরে...খুব শক্ত করেই জড়িয়ে ধরে। আর কান্না করে দেয়...

-ছাড়বেন না?? (শুভ)

-না (রাত্রি)

-কেনো??

-জানি না। তবে এভাবেই ঘুমাবো আজ

-কিন্তু 

-কোনো কিন্তু না

-হুমমম

-এই

-হ্যা বলেন

-তুমি করে বলো

-আচ্ছা বলবো

-এখন বলো

-হুমম বলবো তো বললাম

-ওকে আমি ঘুমাবো তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দাও

-আচ্ছা দিচ্ছি


-কান্না করছো কেনো??(শুভ)

-এমনি (রাত্রি)

-না বলো

-আমি নিরাপদ জায়গা টা খুঁজে পেয়েছি হঠাৎ করে। আমার তো কেউ ছিলো না। যে ছিলো তার উপর পুরো বিশ্বাস ছিলো না

-আমি নিরাপদ স্থান হলাম কিভাবে??

-জানি না। আমার মনে হচ্ছে তাই বললাম। আর বেশি কথা বলো না তো। মাথায় হাত বুলিয়ে দাও

-হুমম দিচ্ছি তো তুমি ঘুমাও...

।।

।।

।।

মনের মানুষ

Part: 9

writer. moyej uddin

...............................................

-আমি নিরাপদ স্থান হলাম কিভাবে??(শুভ)

-জানি না। আমার মনে হচ্ছে তাই বললাম। আর বেশি কথা বলো না তো। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও(রাত্রি)

-হুমম দিচ্ছি তুমি ঘুমাও


পরদিন সকাল বেলা...রাত্রি আগে ঘুম থেকে জেগে উঠে। উঠে দেখে শুভ তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে আর নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। রাত্রি চালাকি করে তার নাকে কয়েকবার চেপে ধরলো। একবার চুল গুলো ঠিক করে দিলো। হঠাৎ

-এই কি করছো(শুভ জেগে উঠে)

-ন ন না কিছু না (রাত্রি ভয় পেয়ে)

-ওই ভয় পাওয়ার কি আছে??আমি কি কিছু বলছি???

-উউহুমমম

-তাহলে??

-হঠাৎ করে ডাক দিছো তো তাই

-হুমমম

(শুভ রাত্রিকে ছেড়ে দিলো)

-এই ছাড়লে কেনো?? জড়িয়ে ধরে থাকো। (রাত্রি)

-না এখন উঠতে হবে(শুভ)

-না উঠতে হবে না

-চলে যাবে তো

-কই যাবা??

-রাব্বির কাছে

-কেনো??

-সেই বাড়ি থেকে কবে আসছি চাকরির জন্য, সেটা খুঁজতে হবে,হাতে টাকা পয়সাও নেই।

-না যাবে না

-না গো যেতে হবে

-তুমি না আমাকে কথা দিলা। আমাকে ছেড়ে যাবে না

-ওটা তো বলছি তুমি অসুস্থ থাকার কারনে

-আমি তো তোমার স্ত্রী। তাও আমাকে রেখে চলে যাবা??

-আমাকে কি তুমি স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছো??


রাত্রি সাথে সাথে আবার শুভর ঠোটে কিস দিলো প্রায় পাঁচ মিনিট।

-এখন তো বিশ্বাস হলো(রাত্রি)

-কিন্তু আমাকে তো ভালোবাসে না

-না বাসি তো (কান্না করে)

-আমাকে তুমি চেনো কয়েকদিন ধরে ভালবাসো কিভাবে??

-আমি একদিনেই তোমাকে চিনে ফেলেছি

-ওহহ। আচ্ছা শোনো। আমি পরে তোমার কাছে আসবো আগে চাকরি টা পাই তারপর

-না যেতে দিবো না।

-চাকরি তো খুঁজতে হবে

-আমার এখান থেকেই খুজবা

-আমার কাছে টাকা পয়সা কিছু নেই। রাব্বির কাছ থেকে ধার নিতে হবে

-আমার টাকা আছে তো

-তোমার টাকা আমি নিবো কেমন দেখায় না??

-না আমার টাকা মানে তোমার টাকা

-না

-ওই আমি আর তুমি একই তো। আমার যা কিছু আছে সব তোমার

-না তাও থাকা যাবে না। থাকো আমি যাই ভালো থেকো।(হঠাৎ করেই শুভ উঠে গেলো)


রাত্রি বসে কান্না করছে। ছেলেটাকে এখন খুব ভালবেসে ফেলছে। ছেলেটা তার বর ও হয়। রাত্রি ভাবছে( ও তো কথা দিয়েছে, যখন ও চাকরি পাবে আমার কাছে ফিরে আসবে। থাকবো আমি ওর অপেক্ষায়)


প্রায় ২০ মিনিট পর........ হুর হুর করে রাত্রির রুমের মধ্যে প্রবেশ করে শুভ।

-এই ধরো ধরো (শুভ বাজার করে আনছে সাথে নিয়ে আসছে একটা বড় মাছ)

-ওই তুমি না চলে গেলে(রাত্রি)

-ধুররর বাজার করতে গিয়েছিলাম (শুভ)


রাত্রি দৌরে এসে জড়িয়ে ধরে আবার কান্না করে দেয়।

-ওই কান্না করছো কেনো??(শুভ)

-তুই আমাকে ছেড়ে গেলি কেনে??(রাত্রি)

-কই ছেড়ে গেলাম?? আমি কি গিয়েছি নাকি???

-তখন বললি যে

-এমনি বলছি

-বলবি কেন তুই???

-আরে এসব কথা পড়ে হবে। আমার হাত ব্যাথায় শেষ। মাছ আর ব্যাগ টা ধরো

-হুমমমমম

-হুমম হুমম না করে ধরো

-তোমাকে বাজার করতে কে বলেছে??(রাত্রি ব্যাগ হাতে নিয়ে)

-টাকা পয়সা যা ছিলো একদম শেষ করে ফেললাম

-দেখো আবার এত বড় মাছ আনতে কে বলছে?? হুমম

-পছন্দ হলো তাই নিয়ে আসলাম

-তুমি খারাপ

-যাই হই না কেনো ঝটপট রান্না করে তুমি কাজে যাও আর আমি বন্ধুর বাসায় যাই

-আবার আসবে তো??

-হ্যা গো আসবো তো

-এই আমি মাছ কাটতে পারি না

-এহহহ কি বলো??

-হ্যা

-আচ্ছা সমস্যা নেই আমি পারি

-তুমি কিভাবে শিখলে??

-আচ্ছা মাছ কাটি আর কথা বলি


শুভ মাছ কাটছে আর রাত্রি দেখছে...

-এই ভালো ভাবে কাটা দেখে শশুর বাড়ি গিয়ে কাটতে হবে(শুভ)

-না তখন তুমি কেটে দিবে

-না শিখতে হবে

-ধুরর তখন দেখা যাবে। আগে বলো শিখলে কিভাবে??

-আমাদের বাড়ি তো গ্রামে তা তো যানো

-হুমমম

-আমাদের অনেক গুলো পুকুর আছে।প্রতি বছর মাছ ধরার সময়। বড় মাছটা খাওয়ার জন্য রেখে দেই।আর ওইটা আমি কাটি। সেখান থেকেই শিখি।

-ওহহহ

-হুমমম

-তোমার বাবা আর কি করে??

-অনেজ জমি আছে। সেগুলো দেখাশোনা করে

-ওহহহ


হঠাৎ করে শুভ রাত্রির নাকে মাছের আঁশ ভরিয়ে দেয়।

-এই এই কি করলা??(রাত্রি)

-দেখলেই তো কি করলাম

-এহ এহ গন্ধ

-ইহহহহ গন্ধ। আসো ধুয়ে নিয়ে আসি।


তারপর রান্না শেষ করে খাওয়া দাওয়া শেষ করে। রাত্রি তার হাসপাতালে যায়। আর শুভ যায় রাব্বির কাছে।


রাস্তায় হঠাৎ দেখা হয় শুভর সাথে আকাশের।

-কিরে হিরো। তরে তো এখন জিরো বানায়া দিমু

শুভ তাকিয়ে দেখে আকাশ এর সাথে আর চার পাচ জন

-কিরে তোর বউ কই???(আকাশ)

-...........

-কিরে বোবা হইলি নাকি??

-দেখ এখন কোনো ভেজাল করিস না

-কিহহ ভেজাল করবো না?? ভেজাল তো তুই করছিস শালা


(এটা বলে শুভকে মাইর দিলো। আশে পাশে লোকজন পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়)


এদিকে রাত্রি সন্ধ্যার দিকে বাসায় আসে। সে শুভর জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু শুভ আসছে না। রাত্রি রাব্বির ফোনে ফোন দেয়....

-হ্যালো রাব্বি??(রাত্রি)

-হ্যা ভাবি বলেন(রাব্বি)

-শুভ কি তোমার ওখানে আছে এখনও??

-কই ও তো আসেই নাই। এখানে থাকবে কিভাবে???

-কি বলো। ও তো তোমার কাছে গেছে

-না ও আসে নাই

-তাহলে কই গেলো??(রাত্রি কান্না করে)

-আচ্ছা ভাবি। আমি আসছি আপনার কাছে। আর এর মধ্যে যদি বাসায় যায় তাহলে ফোন দিয়ে যানাবেন।

-আচ্ছা


রাত্রি টেনশন এ পড়ে গেলো। সে ভাবতে ভাবতে আকাশের কথা মনে করলো। ও কিছু করে নাই তো?? ফোন দেয় দেয় আকাশের কাছে...আকাশ ফোন ধরেই বলে

-তোর বর তো হাসপাতালে রে

-কি করছিস ওর??

-বেশি না শুধু কয়েকটা মাইর দিছি

-তুই মারলি কেন ওকে??

-ও আমাকে মারছিলে মনে আছে তোর

-ও কোথায়???

-.......এই হাসপাতালে। আর হ্যা ওকে মারতাম না। ও আমাকে মারছে। আমি ওরে মারছি শোধ। আর হ্যা হাসপাতালে তোর বর এর কাছে যা। যত্তসব খ্যাত


রাত্রি আকাশের কথার কোনে জবাব দেয় না। কারন তার আগে শুভর কাছে যেতে হবে। রাত্রি ফোন দেয় রাব্বি কে আর বলে......এই হাসপাতালে আসতে....


কিছুক্ষণ পর রাত্রি আর রাব্বি হাসপাতালে পৌছে

-তুমি রাব্বি না?? (রাত্রি)

-হ্যা আপনি রাত্রি??(রাব্বি)

-হুমমম


পরিচয় হওয়ার পর তারা শুভকে খুঁজে বের করে....রাত্রি দেখে শুভ শোয়া থেকে উঠছে

-এই এই এখন তোমাকে উঠতে হবে না(রাত্রি)

-আমি এখানে তুমি জানলে কিভাবে??(শুভ)

-(শুভর কথার উত্তর না দিয়ে রাত্রি বলল) কোথায় বেশি লাগছে??

-আরে বেশি লাগে নি। একটা মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দেয় সামান্য ব্যাথা পাইছি

-আমার জন্য মাইর খেতে হলো তোমার 

-তোমাকে কে বলছে

-আকাশ....

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

মনের মানুষ

Part : 10

Write : SabbirAhmed

...............................................

-আরে বেশি লাগে নি। একটা মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দেয় সামান্য ব্যাথা পাইছি(শুভ)

-আমার জন্য মাইর খেতে হলো তোমার(রাত্রি)

-তোমাকে কে বলছে

-আকাশ....

-ওহহহহ

-আচ্ছা এখন কি অবস্থা??

-হুমমম ভালো। 

-বাসায় যেতে পারবে??

-হ্যা পারব

-ওকে চলো

-হুমমম

-আর হ্যা রাব্বি আসছে 

-কোথায় ও??

-বাইরে

-ওকে চলো

-হুমমমম


তারপর রাব্বির সাথে দেখা করে। শুভ আর রাত্রি বাসায় চলে আসে...

-কিছু খাবে??(রাত্রি)

-না। আকাশ কোথায় থাকে???(শুভ)

-কেনো??

-একটু দেখা করব

-না দেখা করতে হবে না। আর আমি কোনো ভেজাল চাই না

-(শুভ কিছুক্ষণ ভেবে) আচ্ছা ঠিক আছে। 

-রাত অনেক হলো ঘুমাবে না???

-হ্যা আগে কিছু খেয়ে নেই

-ও হ্যা মনেই তো নেই

-হুমমম

-আমি কিন্তু তোমাকে খাওয়াই দিবো

-............

-ওই কি বলি আমি

-এ হ্যা

-তোমাকে খাওয়াই দিবো

-আচ্ছা দাও


সেদিন খেয়ে দুজন ঘুমিয়ে যায়। রাত্রি ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু শুভ ঘুমায় না। শুভ রাত্রির ফোনটা নিয়ে রাব্বির নাম্বার এ ফোন দেয়...আর আগের সেই রেস্টুরেন্ট এ আসতে বলে....


পরদিন সকাল বেলা...

-কিরে আসতি এত লেট করলি কেনো??(রাব্বি)

-তোর ভাবি উঠতে দেরী করছে(শুভ)

-খুব চলছে তাই না??

-চুপপ কর। ওগুলো কিছুই হয় নাই

-তাহলে

-বেশি কথা বলিস না।

-কিরে তুই এদিক ওদিক তাকিয়ে কি দেখিস???

-বলছি

-আরে আমার দিকে তাকা

-(রাব্বির মাথায় একটা চর মেরে)কি হইছে বল??

-তাকিয়ে কি দেখিস

-আকাশ কে খুজতেছি

-আকাশ কে??

-আরে হারামী আমার সাথে যার মারামরি চলছে।

-ওহহ। ওকে দিয়ে তুই কি করবি??

-মারবো

-কিহহহ??

-হ্যা। বেশি কথা না বলে আমার সাথে আয়....


শুভ সেই পার্কে গেলো। যেখানে রাত্রি আর শুভ বসে ছিলো।

-কিরে আবার পার্কে কেনো আসলি??(রাব্বি)

-ও এখানেও আসে। অনেকগুলো জি এফ আছে ওর

-ওহহহহ

-কিন্তু পাচ্ছি না কেনো এখানে

-দোস্ত বাদ দে। যা হবার হইছে। তোর এখন একটা জব লাগবে তাই না??

-জব না হলেও চলবে। ওরে আগে মারতে হবে।

-আরে না শোন এখন ওরে মারলি। পরে তোর আনার ক্ষতি করতে পারে। বা ভাবির কোনো ক্ষতি করতে পারে

-হুহ।

-আমার কথা শোন

-বল

-দুই দিন এর মধ্যে তোর জব এর ব্যবস্থা করছি

-একদিন এ হবে না???

-না একটা ব্যাপার আছে না

-ওকে...


তারপর দুইদিন এর মধ্যে একটা কোম্পানি তে জব হয়ে যায়। কারন রাব্বি যেখানে জব করে সেখানেই জব হলো শুভর। আর শুভর রেজাল্ট খুবই ভালো। তো জব পাওয়ার পর ১ মাস ঢাকাতেই থাকে....হঠাৎ একদিন...রাত্রি তার কাজে যাচ্ছে আর শুভ বলল

-তোমাকে আর কাজ করতে হবে না (শুভ)

-কেনো??(রাত্রি)

-তুমি জব করলে আমাকে আব্বা মাইর দিবে

-কেনো??

-তার একটা ছেলের বউ সে আবার কাজ করে। এটা সে মানতে পারবে না

-তো জনাব এখন কি করতে হবে??

-কাল আমার সাথে আপনার শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে।

-কিহহহহ সত্যি??

-হ্যা গো

-তোমার অফিস??

-ছুটি নিয়েছি।

-ওকে। একটা কথা বলি

-হুমম বলো

-আমার না ভয় করছে

-কেনো??

-যদি মেনে না নেয়

-একশ বার নিবে

-আচ্ছা তুমি বাড়িতে একটা ফোন করো

-ফোন নেই তো

-তুমি না ফোন কিনলা

-না মানে বাড়িতে নেই তো

-ওহহ

-আমরা বাড়ি যাবো তারপর দেখো কি হয়

-ওকে

-হুমমম

-আরেকটা কথা

-কি???

-শপিং করবো চলো

-শপিং কেনো??

-এই প্রথম শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছি একটা ব্যাপার আছে না

-ওহহ তাই

-হুমমম

-আমাদের বাসর কিন্তু গ্রামের বাড়িতে হবে(শুভ খুব তারাতারি কথা টা বলল)

-কি বললা তুমি??

-কই কিছু না

-না বলেছো

-বললাম যে শপিং এ চলো

-এটা না অন্য কিছু 

-কি অন্য কিছু??

-কি যেনো করবা গ্রামের বাড়িতে??(ধীরে ধীরে রাত্রি শুভর কাছে যাচ্ছে)

-আরে ওইটা তখন দেখতে পারবা

-তাই

-হুমম। এত কাছে আসছো কেনে??

-মানা আছে নাকি??

-না

-তাহলে?

-কিছু না

-যেখানে তোমার কাছে আসার কথা সেখানে আমি তোমার কাছে যাচ্ছি

-হুমমম। আর না পরে

-কি পরে??

-সব পরে

-না এখন 

-না না পরে

-না না না এখন

-নাআআআআআআআআ

-ওই কি হইছে?? দেখো কত দূর চলে আসছি আমি

-হুমমম।

-চলে শপিং এ যাই

-হুমম চলো

-আমার সাথে কথা বলার সময় তুমি একদম নরম হয়ে যাও কেনো??

-ভয়ে

-কিসের ভয়

-যেভাবে মাইর দাও

-হা হা হা হা হা এই কথা??

-হুমমম

-ওকে আর মারবো না এখন তো চলো

-হুমম চলো


শপিং শেষ করে বসায় এসে সব গুছিয়ে, পরদিন তারা রওনা হয়।

-এই আর কতদূর???(রাত্রি)

-এইতো আর একটু(শুভ)

-সইতেছে না আর

-তাই হুমমম


বাস থেকে নেমে..

-এখন আবার কি করতে হবে??(রাত্রি)

-একটু হাটতে হবে। সামনেই আমাদের বাজার। (শুভ)

-তারপর?? 

-তারপর ভ্যান এ চরে পাঁচ মিনিট যাওয়ার পরই আমাদের বাড়ি

-তাই??

-হুমমম

-কই যাও আবার??

-দোকানে

-কি কিনবা??

-ছোট বোন আছে। ওর জন্য তো কিছু কিনতে হবে তো

-ওকে


তারপর দুজনই ভ্যান এ উঠে...শুভ রাত্রিকে তাদের গ্রামের সবকিছু দেখাচ্ছে....

-ওই রাত্রি (শুভ)

-হুমম বলো(রাত্রি)

-ওই যে পুকুর টা দেখছো ওইটা আমাদের

-এত্ত বড়??

-হুমমম

-এরকম আরও আছে

-তাই??

-হ্যা গো


-এই নামো এখানে বাড়ি এসে গেছি(শুভ)

-এইটা??

-হ্যা

-এই আমার ভয় করছে

-ওই আমি আছি তো

-যদি কিছু বলে

-কিছু হবে না আসো তো

-আমি তোমার হাতটা ধরি??

-হ্যা ধরো


তারপর রাত্রি আর শুভ একটা বড় বাড়ির মধ্যে ঠুকলো। বাড়িটাতে দুইটা বড় বড় ঘর। একপাশে গরুর গোয়াল। আরেক পাশে রান্না ঘর....শুভকে দেখে তার বোন আর মা রান্না ঘর থেকে এগিয়ে আসে....

-এ ভাইয়া কেমন আছো??(শুভর বোন)

-হ্যা ভালো তুই কেমন আছিস??(শুভ)

-হ্যা ভালো

-তোর সাথে এই মেয়ে কে??(শুভর মা)

-আসলে মা ও রাত্রি(শুভ)

-কিন্তু তোর সাথে কেনো??

-মা আমার আর ওর বিয়ে হইছে

-কি বলিস!!!!

-হ্যা মা

-কার বিয়ে হইছে??? আর কে বিয়ে করছে(শুভর বাবা কর্কশ গলায় বলতে বলতে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসলো)

-ওই সালাম দাও (শুভ রাত্রিকে বলল)

-আসসালামু আলাইকুম(রাত্রি)

-ওয়া আলাইকুমুস সালাম (শুভর বাবা)


-কিরে এই মেয়েটা কে??(শুভর বাবা)

-বাবা ও আমার বউ (শুভ)

-কিহহ বউ?? কবে বিয়ে করছিস???

-বাবা আসলে......(তারপর পুরো ঘটনা বলল তার বাবার কাছে)

-ওহহহহ তোমার নাম কি??(রাত্রিকে উদ্দেশ্য করে)

-রাত্রি

-তোমার বাড়িতে কে কে আছে??

-কেউ নেই

-কেউ নেই মানে??

-মানে আমি একা

-হুমমম। তা এতোদিন কিভাবে থাকছো??

-আমি একটা হাসপাতালে জব করেছি

-হুমমমম তোমার জীবন তো তাহলে খুব সুখে কাটেনি তাই না???

-হুমমম আংকেল

-ওই আংকেল, না বাবা বলো(শুভ ফিস ফিস করে বলল)

-তা তোমাকে একটা কথা বলি। তুমি কিভাবে নেবে তা জানি না(শুভর বাবা)

-জ্বি বলেন


(শুভর বাবা কি বলবে! রাত্রি আর শুভ দুজনই খুব চিন্তিত)

-শুভ এইদিকে আয় (শুভর বাবা)

-হ্যা বাবা বলো

-এ কয়েকদিন যে ফোনে কথা বললি। কই একবারও তো এই কথা বললি না। (শুভর কান ধরে)

-বাবা খুব লাগতেছে...আর আমার ভয় করছিলো তাই বলি নি(শুভ)

-রাত্রি মা। তুমি যদি কিছু মনে না করো। আমি এই বিয়ের জন্য একটা অনুষ্ঠান করতে চাই। কারন আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজন আছে। আমার আবার একটাই ছেলে। একটা ব্যাপার আছে না (হাসি মুখে)

-জ্বি আং..ওহহ সরি বাবা

-হুমমম

-তুমি দাড়িয়ে দেখছো কি?? বউমাকে রোদে দার করিয়ে রাখবা??? ঘরে নিয়ে যাও। (শুভর বাবা শুভর মাকে বলল)


রাত্রিকে শুভর মা ঘরে নিয়ে গেলো


-বল এখন কি করা যায়(শুভর বাবা)

-কি করবা??(শুভ)

-গরু কয়টা জবাই করবো

-তোমার ইচ্ছা

-আচ্ছা আয় তোর দাদার সাথে আগে দেখা কর.....

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।মনের মানুষ

Part: 11

writer. moyej uddin

................................................

-বল এখন কি করা যায়(শুভর বাবা)

-কি করবা??(শুভ)

-গরু কয়টা জবাই করবো

-তোমার ইচ্ছা

-আচ্ছা আয় তোর দাদার সাথে আগে দেখা কর.....


তারপর শুভ দাদুর কাছে যায়....

-হে দাদু কেমন আছো (শুভ)

(দাদু বশে বশে বাতাস পান চিবোচ্ছিলে। শুভ হঠাৎ করে বলায়। দাদু একটু ভয়ই পাইছে)

-কিরে কখন আইছোস??

-এইতো একটু আগেই। তবে সাথে একজন কে নিয়ে আসছি।

-কারে

-তোমার নাথ বউ

-সত্যি??

-হুমমম

-তোরে ঢাকায় যাওয়ার আগে বলছি না। তোর বউ ঢাকায় গিয়ে পাবি

-কখন বললা??

-আরে বলছি মনে করে দেখ।

-মনে নেই।


-আপনাদের কথা শেষ হলে আমি একটু কথা বলতে পারি??(শুভর বাবা)

-কে কথা বলবে। কথার মধ্যে কথা ঢুকায় কে??(দাদু)

-বাবা আমি(শুভর বাবা)

-দাদু বাবা আসছে। দেখোনি তুমি(শুভ)

-নারে খেয়াল করি নি

-ভালে হইছে। তোমরা কথা বলো। আমি একটু যাই

-কিরে কই যাবি?? কথা শেষ হইলো না। নাথ বউ দেখতে কেমন।??

-একটু পর এসে দেখে যেয়ো। তোমরা কথা বলো এখন।(এটা বলে শুভ সেখান থেকে চলে গেলো)


শুভ রাত্রির কাছে গেলো। গিয়ে দেখে বোন রাত্রিকে পানি খাওয়াচ্ছে...

-কিরে কি করতেছিস??(শুভ)

-দেখছো না ভাবি কে পানি খাওয়াচ্ছি (শুভর বোন)

-ওহহ। এখন যা আমার ব্যাগ এর মধ্যে তোর জন্য কিছু জিনিস এনেছি

-কি এনেছো??

-তুই ব্যাগ খুলে দেখ গিয়ে যা

-ওকে। আর ভাইয়া ভাবি কিন্তু খুবই সুন্দরী (ফিস ফিস করে)

-তুই যাবি এখান থেকে

-হি হি হি যাচ্ছি....(শুভর বোন চলে গেলো)


-কি???(শুভ চোখের ব্রু উচু করে বলল)

-কি??(রাত্রিও সেটাই করলো)

-বলছি যে শ্বশুর বাড়ি কেমন লাগছে??

-আমি বলে বোঝাতে পারব না।

-তাহলে খারাপ হইছে তাই না??

-না গো খুব খুব ভালো।কিন্তু এত তাড়াতাড়ি মেনে নিলো যে

-মেনে না নেওয়ার কি আছে?? একি কোনো দোষ পেয়েছে তারা??

-না তা পায় নি

-তো! এসব কথা বাদ। চলো ঘুরে আসি

-কোথায়???

-নতুন জায়গা আসলা ঘুরে দেখবা না??

-ওকে চলো

-হুমম হুমম তাড়াতাড়ি

-দাড়াও গো


শুভ আর রাত্রি বাড়ির বাইরে যাবে তখনই.....

-এ কোথায় যাস(শুভর মা)

-একটু বাইরে যাবো(শুভ)

-দাড়া একটু

-মা যাবে নাকি(শুভ মনে মনে বলল)

-ওই ওই গাধা বউমা কে নিয়ে এই রোদে কই যাস

-ওই একটু ঘুরে সব দেখাবো

-হারামজাদা। তোর তো একটু খেয়াল নেই। সেই কখন আসছিস খেতে হবে না??

-এই রাত্রি তোমার খুদা লাগছে??

-না তেমন লাগে নি

-খুদা লাগুক আর নাই লাগুক এখন বাইরে যাওয়া যাবে না। বউমা

-জ্বি মা বলেন

-ওকে নিয়ে ঘরে যাও

-আচ্ছা। ওই চলো

-দিলে তো সব শেষ করে(মনে মনে বলল)


তারপর শুভ আর রাত্রি একটা ঘরে বসল....

-এই এটা কার রুম(রাত্রি)

-আমার(শুভ)

-বেশি ভালো না

-আমি জানি

-সুন্দর গোছানো না রুম টা

-আমি জানি

-এই রুমে আমি থাকবো না

-আমি জা.... এই কি বললা তুমি??

-এই রুমে থাকবো না

-এই রুম তোমার পছন্দ না কি জন্য??

-রুমের মধ্যে কি লাগাইছো এগুলা?? আর কতো পুরোনো

-তাই বলে থাকা যাবে না??

-না। আর এগুলা কি ঝুলিয়ে রাখছো??

-আরে গাধী ছোট বেলায় যখন মেলায় যেতাম। তখন যা যা কিনছি সব গুলো ঝুলিয়ে রাখছি। আমার কাছে আমার রুম টা ছোট খাটো একটা জাদুঘর এর মতো

-তাই

-হুমমম

-এখন শুনে ভালো লাগছে

-তো এখন কি এখানে থাকবে??

-হ্যা তবে শর্ত আছে

-কি শর্ত??

-সব গুলো খুলে আবার মুছে ধুয়ে আবার নতুন করে সাজাবো।

-আমি পারবে না

-তাহলে থাকবো না

-ওকে ভেবে দেখি 

-ওকে


রাত্রি তাকিয়ে তাকিয়ে সব দেখছে আর শুভ মোবাইল টিপছে...এমন সময় রাত্রি বলল

-এই দেখো দেখো। আমার চোখের মধ্যে পোকা গেছে (রাত্রি)

-কই কই দেখি তো (শুভ)


শুভ কাছে আসতেই। রাত্রি শুভকে লিপ কিস করলো।

-কি করলে এগুলা??(শুভ)

-দেখলেই তো। কি করলাম(রাত্রি)

-তো এখন কেনো??

-তো কখন

-পরে আমি যখন বলি

-এখন দিলে সমস্যা কোথায়??

-আছে সমস্যা

-ওকে আত্মাপাখি গাল ফুলাতে হবে না। একদম পরে দিবো সবকিছু কেমন

-হুমমম

-একটা গালে কিস দেই??

-আবার

-হি হি হি হি


-ওই শুভ(বাইরে থেকে শুভর মা ডাকলো)

-হ্যা মা বলো(শুভ)

-বউমাকে নিয়ে খেতে আয়

-ওকে আসছি


-এই চলো মা ডাকছে(শুভ)

-হ্যা চলো(রাত্রি)


তারা গিয়ে একটা রুমে খেতে বসলো। এমন সময় শুভর বাবা আসলো। বোন কাছেই ছিলো। সবাই খেতে বসলো।যদিও সময় টা বিকেল এর মতো।


-আচ্ছা মা একটা কথা বলি(রাত্রি)

-হ্যা বলো(শুভর মা)

-আপনারা কি প্রতিদিন বিকেলে খান??

-না গো। তুমি আসছো তো তাই রান্না করতে করতে দেড়ি হয়ে গেছে।

-কি কি রান্না করছো মা?? (শুভ)

-দেখতেছিস না??

-তাড়াতাড়ি দাও

-খাই খাই করিস কেন?? 

-খুদা লাগছে তাই

-হ্যা ওদের তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও (শুভর বাবা)

-দিতেছি গো


শুভর মা সবাইকে খাবার দিলো। মাছের মাথা টা রাত্রিকে দিলো। সেটা শুভ চোখ বড় বড় করে দেখলো। দেখবেই তো কারন রাত্রি কে যে মাথা টা দিয়েছে। তা প্লেটে আটছে না....

-ওমা!!!! (শুভ)

-কি রে কি হইছে??

-মাথা প্রত্যেক বার তো আমি খাই

-এবার ওখানে গেলো কেনো??

-তোর ভাগ্যে নেই। চুপচাপ যা দিয়েছি খেয়ে নে। আর একটা কথা বলবি না।

-আচ্ছা


রাত্রি ভাত খাচ্ছে কিন্তু মাছ খাচ্ছে না। এটা শুভর বাবা দেখলো। 

-কি হয়েছে মা খাচ্ছো না কেনো?? রান্না খারাপ হয়েছে??

 এই কি রান্না করাছো তুমি হ্যা??(শুভর মাকে বলল)

-না বাবা। আমি আসলে এটা একা খেতে পারবো না (রাত্রি)

-তাহলে কি করবে(শুভর বোন)


রাত্রি উঠে মাছটা ভেঙে সবাইকে মাছ দিলো

-আরে কি করছো খাও তুমি(শুভর মা)

-আমি একা খেতে পারবো না মা

-না সমস্যা নেই আমরা খাই তো। এখন তুমি খাও

-না মা একা খেতে পারবো না


সবাই খাচ্ছে আর বলছে...

-ওমা আর কিছু নেই(শুভ)

-মা একটু ঝোল দাও তো(শুভর বোন)

-এই ছোট মাছ গুলো কি রান্না করছো??(শুভর মা)

-ই আল্লাহ মনেই তো নেই(শুভর মা)

-তোমার কি মনে থাকে?? এখন বউমা কি শুধু একটা মাছ দিয়েই খাবে??

-না বাবা এটাই খেতে পারছি না

-খেতে হবে। এখন থেকে খেতে হবে।


রাত্রি এতো আদর দেখে। কান্না করে দিলো...

-এই তোমার চোখে পানি কেনে?? ঝাল লাগছে??(শুভ)

-না এমনি (রাত্রি)

-না কি হইছে বলো

-এত আদর কখনো পাই নি তো তাই

-আচ্ছা খেয়ে নাও এখন

-হুমমম


শুভর বাবা মা রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে...

-খাচ্ছো না কেনো তোমরা??(শুভ)

-এহ হ্যা খাচ্ছি তো

-হুমম খাও


শুভর বাবা মার চোখে পানি। হয়তো মেয়েটার চোখে পানি দেখে। তাদেরও কিছুটা খারাপ লাগছে...

-শুভর মা আমি একটু বাজারে গেলাম

-কেনো গো

-একটু গোস্ত কিনতে যাবো। আর শুভ তুই আর তোর বোন দুজনে একটা লিস্ট কর কত জন আত্নীয় আছে আমাদের। দূরে হোক কাছে হোক। সব লিস্ট করবি

-আচ্ছা বাবা ঠিক আছে

-আচ্ছা আমি চললাম

-তাড়াতাড়ি আসবে। আর হ্যা দেখে যেয়ো।

-আচ্ছা


-এত লোক দাওয়াত করবে কেনো??(রাত্রি শুভকে বলল)

-বুঝবে না তুমি (শুভ)

-কই কই দেখি তো শুভ কাকে যেনো বিয়ে করে এনেছে...(দাদা)

-এই যে এটা দাদু

-আসসালামু আলাইকুম দাদু (রাত্রি)

-ওয়া আলাইকুমুস সালাম (দাদু)

-নাতি। বউ তো সেই দেখতে। পুরো তোর দাদির মতো(দাদু)

-এই বুড়ো চোখ দিবা না

(ফিস ফিস করে কথা বলল শুভ আর তার দাদু)

-বউমা দুইটা পান বানিয়ে দাও তো

(দাদু পান নিয়ে চলে গেলো)


শুভ রাত্রিকে বলল

-দাদুর বয়স অনেক হইছে। ভালভাবে চোখে দেখে না। আর বেশি খেয়াল ও থাকে না....

-ছি ছি ছি শুভ এগুলো কি করছে। ওকে ভালো মনে করতাম। আর কেমন মেয়ে আনছে ছি ছি ছি....(পাশের বাড়ির ফুপি। এটা বলতে বলতে ঘরে প্রবেশ করল)

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

।।

মনের মানুষ

END PART

writer. moyej uddin

.................................................

শুভ রাত্রীকে বলল..

-দাদুর বয়স অনেক হইছে। ভালভাবে চোখে দেখে না। আর বেশি খেয়াল ও থাকে না....

-ছি ছি ছি শুভ এগুলো কি করছে। ওকে ভালো মনে করতাম। আর কেমন মেয়ে আনছে ছি ছি ছি....(পাশের বাড়ির ফুপি। এটা বলতে বলতে ঘরে প্রবেশ করল)

-কি এমন কাজ করছি??(শুভ)

-শুভ কিছু বলিস না তুই(শুভর মা ফিস ফিস করে বলল)

-মা তুমি চুপ করো। এই যে আপনি বলেন কি এমন করেছি??(শুভ)

-তুমি যে পালিয়ে বিয়ে করছো সেই কথা বলছিলাম

-আমি যে পালিয়ে বিয়ে করেছি এটা আপনাকে কে বলছে

-বলে নাই কেউ। জানি তো

-কি জানেন??

-প্রেম করেছো অনেক দিন। বাড়িতে জানাও নি। এখন পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করলে। সমাজে আমরা মুখ দেখাবো কি করে???

-আচ্ছা যা করছি আমি করছি। আপনাকে বুঝানোর মতো সময় আমার নেই। এখন এখান থেকে যান

-কিহহহ। তোর বাবা আসুক আজকে এই বিচার যেনো উনি করে....

-তুই বের হবি এখান থেকে?? নাকি...যত্তসব আজাইরা মহিলা। বাড়ির পাশে থাকে(মহিলাটি চলে গেলো)

-বাবা কি যে করলি তুই। এমন ব্যবহার না করলেও পাড়তি।(শুভর মা) 

-মা তুমি চুপ করো তো। এরকম ভাইরাস মার্কা মহিলা অনেক আছে। যাদের জন্য অনেক সংসার ভেঙেছে

-হুমমমমম

-শোনো মা আর একবার যদি আসে। সত্যি আমি কি করবো জানি না। তবে অনেক খারাপ কিছু করবো।

-ঠান্ডা হও(রাত্রি)


তারপর শুভ,রাত্রী,শুভর বোন, শুভর রুমে গিয়ে তাদের আত্নীয় স্বজন এর লিস্ট করতে লাগল। কিন্তু রাত্রির মন অনেক খারাপ। রাত্রি শুভর কাধের উপর হাত রেখে তার উপর মাথা রাখছে.......রাত্রীর চোখে পানি দিয়ে শুভর শার্ট ভিজে যাচ্ছে। শুভ সেটা বুঝতে পারলো।।


-এ তুই একটু বাইরে যা(শুভ তার বোনকে বলল)

-কেনো??

-যা একটু পরে আয়। ডাক দিলে আসবি

-আচ্ছা

(শুভর বোন বাইরে চলে গেলো। রাত্রি সেটা খেয়ালই করে নি। হয়তো আনমনে কান্না করছে)


এবার শুভ রাত্রীকে বলল

-এই কান্না করছো কেনে??(শুভ)

-কই না তো(চোখের পানি মুছে)

-এই দেখো শার্ট একদম ভিজিয়ে দিয়েছো। 

-হুমমমম

-এখন বলো কান্না করছো কেনো??


রাত্রি হু হু করে কান্না করে দিলো। সেটা দেখে শুভ সহ্য করতে না পেরে বলল...

-আমিও কিন্তু কান্না করে দিবো। কি হয়েছে বলো(শুভর কান্না কান্না ভাব)

-আমার জন্য তোমাকে লোকের কাছে কথা শুনতে হলো। সরি

-এই সরি তুমি বলছো কেনো?? সরি বলব তো আমি। আমার সামনে আমার বউকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলছে। তাই আমি সরি।

-না সরি বলতে হবে না। আর আমার বাবা মার কথা খুব মনে পড়ছে। এখানে এখন একা আমি

-কেনো?? আমি কি পর??

-পর ই তো। দেখতেছো কান্না করতেছি। তারপরও কোলে নাও না। আদর করো না।

-ওরে আমার লক্ষী বউ..

-এভাবে আদর না

-তাহলে

-তুমি হেলান দিয়ে শুয়ে থাকবে। আর আমি তোমার কোলে ঘুমাবো

-তাই

-হুমমম

-ওকে

-এখনি

-এখনি কেনো??

-আমি বলছি তাই

-বাবা যে লিস্ট করতে বলেছে।

-লিস্ট ফিস্ট পরে

-ওকে আসো। কোলের মধ্যে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই

-হুমমম।প্রতিদিন এমন করে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে

-ওকে দিবো গো


শুভর কোলে রাত্রী শুয়ে আছে। শুভ রাত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে..

-এই একটা গান বলো(রাত্রী)

-গান কেনো বলব (শুভ)

-আমার ঘুম আসছে না। তাই

-আমি যে পাড়ি না

-যা পারো তাই বলো

-ওকে চেষ্টা করি

-(শুভ গুন গুন করলো(

-এই তোমার গান হি হি হি

-পাড়ি না তো

-হুমমম পাড়বেও না 


(কথা বলতে বলতে দুজনই ঘুমিয়ে যায়)


পরদিন সকালে শুভ ফ্রেস হয়ে বাইরে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু রাত্রী ঘরে এখনও ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ শুভর বাবার আগমন

-তোমার ফুপুকে কি বলছো তুমি??

-বাবা উনি (সব ঘটনা বলল শুভ)

-এত ভালো কথা কে বলতে বলেছে

-......(শুভ কিছু না বলে তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে)

-ভালই বলেছো। এইরকম লোকজনকে এইরকম শিক্ষা দেওয়া উচিত।

-হুমমম

-আচ্ছা শোনো কাল দিন পর অনুষ্ঠান করি তুমি কি বলো??

-হ্যা বাবা যেটা ভালো হয়

-হুমমম কেনা কাটা করে নাও যা যা প্রয়োজন.....

-আচ্ছা বাবা


অনুষ্ঠানের দিন...

বাড়ি ভর্তি লোকের সমাগোম। ঢাকা থেকে রাব্বি আসছে। আর কত আত্নীয় স্বজন। এক এক করে সবার সাথে পরিচয় করে দিলো রাত্রীকে।

শুভর জন্য একটা বাসর ঘর গিফট করেছে তার বন্ধুরা। অনেক দিন পর সব আত্নীয় স্বজনরা এক হওয়ায়। সবাই সবার খোঁজ খবর নিচ্ছে....অনেক আনন্দ বাড়ির ভেতর....


এদিকে রাত ১০ টা বাজার সাথে সাথে শুভকে বাসর ঘরে ঠুকিয়ে দেয় তার বন্ধুরা.... শুভ বাসর ঘরে প্রবেশ কারর পর....

-ভালই দেখাচ্ছে তোমাকে(শুভ)

-তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।(রাত্রী)

-কি কথা??

-বসো আগে

-হুমম বসলাম বলো

-তোমার কেমন মেয়ে পছন্দ

-হঠাৎ এ প্রশ্ন কেনো???

-না বলো আগে। কেমন মেয়ে আশা করেছিলে তুমি??

-খুব শান্ত। আর আমি দোষ করলে বকা ঝকা করবে। আর কেয়ার +প্রচুর ভালবাসা। আর কিছু না

-এটা শুনে কি হলো??

-আমি ওইরকম না হলে ওইরকম হওয়ার চেষ্টা করবো। তোমার মনের মতো হতে হবে তো

-হুমমমম। আর তোমার কেমন ছেলে পছন্দ???

-যেমন ছেলে পছন্দ সেইরকম ছেলে আমার সমানেই বসে আছে। একদম আমার মনের মানুষ  

-তাই??

-হুমমমম

-একটা কথা বলি

-বলো

-একটা ইচ্ছা পূরন করবে আমার 

-কি???

-এদিকে আসো কানে কানে বলি

-হুমম বলো

-একটা দুষ্ট মেয়ের মা হবো আমি

-...........

-হা হা হা লজ্জা পাইছে এ এ হে

-দাড়াও দেখাচ্ছি মজা.....


......................END....................

..

..

..

..

..

..

..

..

#SSSS


অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...