27.2.24

ভাইয়ের বন্ধু যখন বর

 পাট ১-৩

গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০১
লেখিকা – তানিয়া
-মা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না প্লিস তোমরা বুঝার চেস্টা করো।
-বিয়ে করতে পারবি না মানে,বিয়েতো হয়েই গেছে,আমরা কি জোর করে তোকে বিয়ে দিয়েছি, তুই নিজ ইচ্ছায় করেছোস,এখন তো আমরা সমাজের সামনে তোকে ধুমধাম করে তুলে দিচ্ছি।
-ও... মা তুমিও জানো কেন বিয়েটা করতে হইছে তার পরও বলো আমি ইচ্ছা করে করেছি।
দেখো যা হবার হয়েছে, তখন পরিস্থিতি অন্য ছিলো,তাই করতে বাধ্য হয়েছি।কিন্তু এখন আমি মন থেকে বিয়েটা কোন ভাবেই মানতে পারবো না,,না তাকে স্বামী হিসেবে চিন্তা করতে পারবো।
-দেখ তিশা আমরাও চিন্তা করেনি এমন হবে,কিন্তু ভাগ্য কেউ পাল্টাতে পারেনা।জন্ম- মৃত্যু -বিয়ে সব উপরওয়ালার হাতে, আর সে যদি তোর ভাগ্যে জিসান কে লিখে রাখে তাহলে আমরা আর কি করতে পারি।বিয়েটার কথা আত্মীয় স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশি সবার কানে চলে গেছে।এখন যদি তুই বলিস তুই ওর সাথে সংসার করবি না, তাহলে চিন্তা কর তোর বাবা সমাজে মুখ দেখাবে কি করে।
যে ব্যক্তি কারো কাছে নতো হয়নি তুই কি চাস আজ তোর বাবার সম্মান চলে যাক।সে কি বাঁচবে তার মান সম্মান হারিয়ে।।।।তুই বল---।
-টিক আছে মা তোমাদের যা খুশি করো।আমি আর কিছুই বলবো না আমার কপাল খারাপ তা না হলে আমার সাথেই বা কেন এমন হলো।(এ কথা বলে তিশা চলে গেলো)
-মা আর কিছু বললো না,কারন আজ তিশার গায়ে হলুদ,সকাল থেকেই সবাই খুব ব্যস্ত, আত্মীয় স্বজন ও আসা শুরু করলো।
-তিশার কিছু কাজিন রা তাকে গায়ে হলুূদ এর জন্য তৈরি করলো,তারা অনেক চেস্টা করেও তিশাকে পার্লারে নিতে পারলো না।
তিশাকে ওরা রুমে রেখে বাহিরে চলে গেলো,আর তিশা সে দিন গুলোর কথা চিন্তা করছে আর মনের অজান্তে চোখ থেকে পানি পরছে।
তিন মাস আগে......
অতীত....
-তিশা...তিশা এই তিশা।উফ এই মেয়েটা সবসময় পড়তে বসলে পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে যায়।(তিশার মা)
-কি হলো মা এতো চেঁচামিচি কেন করো বলতো,সব সময়।আমাকে একটু শান্তি মতো ঘুমাতেও দেয়না..(তিশা ঘুম ঘুম চোখে)
- কি আমি ঘুমাতে দিনা,দেখ তিশা তুই প্রত্যেক বার অংকে খারাপ রেজাল্ট করোস,যখনি তোকে অংক করতে বলি তুই পড়ার টেবিলে ঘুমিয়ে পড়স সমস্যা কি তোর।(মা তিশার কান ধরে)
-মা ও দিন দিন পড়া চোর হয়ে যাচ্ছে,পড়ালেখার প্রতি ওর একদম মন নেই।তুমি ওকে তারাতারি বিয়ে দিয়ে দেয়।ওটাই ভালো ওর জন্য।(তিশার বড়ভাই)
-কি বললি ভাইয়া তুই...(তিশা দৌড় দিয়ে ড্রয়িংরুম এ এসে)
তিশার ভাই টিভি দেখতে দেখতে কথা গুলো বলছিলো।তিশা তিশার ভাইকে খুব ভয় পায়।খুব তেরা টাইপ এর মানুষ তাই।
-কি আর বলবো যা বলেছি সত্য বলেছি।এবার খারাপ রেজাল্ট করলে বিয়ে দিয়ে দেবো,মনে রাখিস।(তিশার ভাই)
তিশা নাক মুখ ফুলিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো।কারন ভাইকে কিছু বললে সে নিজের পায়ে কুড়াল মারার সমান জানে।
-বিকেলে তিশা সুন্দর করে সেঝে নিলো,কারন নিলুর বাসায় যাবে।নিলুর ফুফাতো ভাই আবিরকে তিশার খুব পছন্দ, প্রথম যেদিন দেখেছিলো, তখন থেকেই আবির এর উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছে।একদম চকলেট বয়ের মতো,তিশার তো মন চাইছিলো খেয়ে ফেলতে।এর পর আবির যখনি নিলুদের বাসায় আসে, তিশাও ওদের বাসায় চলে যায়,আবির আর ওর মাঝে খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েগিয়েছে কিন্তু সেটা ভালোবাসা কিনা তারা দুজনেই জানে না।তারা ফেসবুকে ফোনেও অনেক কথা বলে,তবে খুব লুকিয়ে।কারন ওর ভাই জানতে পারলে ওর কপালে শনি আছে তিশা খুব ভালো করেই জানে।যাই হোক নিলুর বাসায় আবিরের সাথে দেখা করতে যাবে তাই সুন্দর করে সেজে যেই ড্রয়িংরুম এ পৌছালো তিশার চোখ কপালে উঠে গেলো।
ড্রয়িংরুম এ জিসান আর রায়হান ভাই বসে আছে।
-রায়হান ওর নিজের ভাই আর জিসান হলো রায়হান ভাইয়ের বন্ধু,বলতে গেলে রায়হান জিসান কে তিশার থেকেও বেশি বিশ্বাস করে।জিসান খুব রোগচটা মানুষ, খুব জেদি।
কিন্তু খুব হেন্ডসাম,উচা লম্বা টল ফিগার। উনার জন্য কলেজে অনেক মেয়েরাই পাগল ছিলো।কিন্তু উনার জিদ আর রাগের কারনে কেউ কাছে আসার সাহস পেতো না।উনাকে দেখলে কেনো জানি আমার কলিজা শুকিয়ে যায়,ভাইকে বোকা বানাতে পারলে ও এই ব্যক্তি কে বোকা বানানো এতো সহয না,দুজনে সোফায় বসে কথা বলছে,আমি আস্থে করে তাদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম,হঠাৎ পেছন থেকে ডাক পড়লো,আমার নিশ্বাস বন্ধ হবার মতো, আমি মুখে হাসি রেখে পেছনো তাকালাম,দেখলাম রায়হান ও জিসান ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।একটু খেয়াল করে দেখলাম জিসান ভাই আর চোখ দিয়ে আমায় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখলো,দেখে মোবাইল টিপাতে লাগলো।
-কোথায় যাচ্ছিস এই অবেলায়।(রায়হান)
-ভাইয়া এইতো একটু নিলুর বাসায়।(তিশা)
-কেনো?
-এইতো একটু কাজ ছিলো ও কিছু নোট করেছে,ওগুলো আনতে।
-তুই আর নিলু এক কলেজে পরছ,তাই না, আর ক্লাসমেট ও(এতো ক্ষন পর জিসান ভাই প্রশ্ন মারলো আমার দিকে।)
-আমি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকালাম।মন চাইছিলো একটা লাঠি এনে উনার মাথায় মারি।
-জিসান কিছু জিগ্যেস করছে,উত্তর দিস না কেন।(রায়হান)
-জি ভাইয়া,আমরা ক্লাসমেট।
-তাহলেতো নোট কাল কলেজ থেকেও নিতে পারবি,এখন বাহিরে যাওয়ার কি দরকার তার উপর এতো সেঝে গুজে।বান্ধবীর বাসায় নোট আনতে এতো সাজার কি প্রয়োজন পরলো বলতো।
-কি আর বলবো, দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,খুব দরকার ছিলো ভাইয়া নোট গুলো তাই।আর এমনেই একটু সাজতে মন চাইলো তাই একটু সাজলাম আর কিছু না।রায়হান ভাই তাকিয়ে আমার কথা শুনতাছে।
-আমি ভয়ে আর কিছুই বলতে পারলাম না।
-টিক আছে খুব বেশি দরকার হলে আমরা নিয়ে আসছি।তুই নিলুকে বলে দে।তোর যাবার দরকার নাই।
(জিসান)
-কি বললো জিসান শুনোস নাই।যা ঘরে যা।(রায়হান)
-আমি রাগে মুখ ফুলিয়ে আবারো নিজের ঘরে চলে গেলাম,কারন একবার যেহেতু জিসান ভাই মানা করছে তাহলে আর আজ কোন ভাবেই আমার বাহিরে যাওয়া হবে না।কারন জিসান ভাইকে আমার পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে।তার কথার উপর আর কোন কথাই নাই।সে কিছু মানা করলে সেটা আমার বাবা মা ও করেনা এতোটা ভালোবাসে তাকে, আর রায়হান ভাইতো আছে তার সাথে সাথে সব কথায় সায় দিবে।তাই সে মানা করার পরও খুব জোর করলে উনার সন্দেহ বেড়ে যাবে।তখন আমার কপালে খারাপি আছে।
আমি রুমে গিয়ে তারাতারি নিলুকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম। তা না হলে ভেজালে পরে যেতাম।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০২
লেখিকা – তানিয়া
-কলেজে যাবার জন্য তিশা রেডি হচ্ছে।আজ কলেজে parents metting আছে, তাই তিশার মা বাবাকে যেতে হবে কলেজে।কিন্তু বাবার সময় নেই তাই তিশার মা একাই গেলো তিশার সাথে।
ও পরিচয় টা মনে হয় দেয়া হয়নি এখনো আমার, আমি তিশা। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পরছি,খুব ভালো ছাত্রী না হলেও মোটামোটি আছি।আর এতে আমি সন্তুষ্ট, কারন সবাই কে যে গোল্ডেন প্লাস পেতে হবে এমন কথা না।যাই হোক আমার বাড়ীর সবাইয়ের মাথা ব্যাথা আরো একটু ভালো করে পড়লে আরো ভালো করতি।তাদের বুজিয়ে লাভ নাই।আমার যতোটুকু সম্ভব আমি চেস্টা করি,ভালো করার।আমার মতে আমি ভালো করেছি।আমরা ২ ভাইবোন। আমার বড় ভাই রায়হান।যে আমার লাইফকে হেল করে রাখে।পড়াশুনা শেষ করে চাকরীর জন্য ওয়েট করছে।কিছু ভালো জায়গায় ইন্টার্ভিউও দিয়েছে।ভাইয়া সিয়র এর মধ্যে কোন এক জায়গায় চাকরী হয়ে যাবে।সারা দিন কোন কাজ নাই বলে আমার পিছে লেগে থাকে।বাবা মা ও এতো শাসন করে না, যতোটা ও করে।ভাইরা কি এমন হয়।নাকি আল্লাহ আমাকেই এমন একটা ভিলেন ভাই দিছে।
"
"
"
-তিশা ও তিশার মা কলেজে এসে পৌছাল। তারা ওয়েট করছে, তিশার রোল অনুযায়ী ভেতরে ডাকবে।তিশা কিছুটা চিন্তিত। কারন এবার পরীক্ষা গুলো তেমন ভালো করে দেয়নি।এমনিই আমাকে বকে আমি নাকি পড়া চোর,তার উপর আজ যদি আফরোজা মেডাম মা কে কিছু বলে তাহলে বাড়িতে গিয়ে মার একটাও নিচে পরবে না।সব আমার গালে.... তিশা এগুলো ভাবছে গালে হাত দিয়ে। কিছুক্ষন পর তিশার রোল ডাকা হলে ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে মাকে নিয়ে আফরোজা মেডাম এর কক্ষে গেলো।তাদের বসতে দিয়ে আফরোজা মেডাম তিশার মাকে জিজ্ঞেস করলো বাড়ীতে সবাই সুস্থ আছে কিনা।তিশার মা কিছুটা অবাক হলো এমন প্রশ্নে,তৎক্ষনিক জবাব দিয়ে জিজ্ঞেস করলো কেন মেডাম হঠাৎ এমন প্রশ্ন।
আসলে তিশা মোটামোটি ভালো ছাত্রী, কিন্তু এবার পরীক্ষাগুলো তেমন ভালো হয়নি তাই জানার জন্য বাড়ীতে কেউ অসুস্থ ছিলো কিনা যার কারনে পড়তে পারেনি।তাই হয়তো পরীক্ষাগুলো খারাপ হলো কিনা।
"
"
"
-আসলে মেডাম পরীক্ষার কিছুদিন আগেই ওর প্রাইভেট টিচার টা চলে গিয়েছিলো।তখন একা পড়তে একটু সমস্যা হচ্ছিলো।তাই হয়তো কিছুটা বিশৃঙ্খল হয়ে পরেছিলো।
"
"
"
-হয়তো,,,, এমনেই ওর কোন সমস্যা নেই।কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষার বেশী দিন বাকি নাই।তাই ওকে এখন পড়াশোনায় অনেক মনোযোগী হতে হবে। আপনারও একটু খেয়াল রাখবেন।তাহলেই হবে।
"
"
-ওকে মেডাম আমি সব বুজেছি, এবার আসি।
"
"
-ওকে....।(আফরোজা মেডাম)
"
"
-মেডাম এর কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখলাম মা আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম.. মা কি হইছে।এমন করে কি দেখছো আমায়,,,আগে দেখনো কখনো।
"
"
- মা রেগে গিয়ে বললো আজ আসিছ বাসায়, আর এমন মিস্টি কথা গুলো তোর ভাই আর বাবার জন্য বাঁচিয়ে রাখ।রায়হান টিকিই বলেছে তুই একটা পড়া চোর হয়ে গিয়েছোস।। দিন দিন মানুষের উন্নতি হয়,আর তোর অবনতি হচ্ছে।আমার তো তকে নিয়ে গর্ব করার কথা।
"
"
-মায়ের কথা শুনে তিশার সুন্দর মুখ খানী মলিন হয়ে গিয়েছে।আর মাকে পটানোর বৃথা চেস্টা করছে।যাতে মা বাসায় গিয়ে তার ভাইকে আর বাবাকে কিছু না বলে।কিন্তু লাভ হয়নি।অর মা কোন কথাই শুনতে রাজি না।তাই তিশাও রেগে গিয়ে বললো... হুমমমম আমার তো মনে হয় তুমি আমার মা না শুধু রায়হান ভাইয়ের মা,তাইতো তোমার মাঝে দয়া মায়া কম,আমার মা হলে আমার মতো দয়ালু হতে।
"
"
-দেখ তিশা বাজে কথা বাদ দে।আর বাসায় এসে নিজেকে কিভাবে বাঁচাবি সেটা ভাব।আমি গেলাম বাসায়,তুই ক্লাসে যা।
"
"
-ক্লাসে গিয়ে তিশা নিলা কে সব বললো,আর অর থেকে বুদ্ধি চাইলো আজকে কিভাবে বাঁচা যায়।নিলা তো একদম না বলে দিলো।।
"
"
-তোর কি মাথা খারাপ হইছে, তোর ভাই যদি শুনে আমি তোকে কোন উল্টা পাল্টা বুদ্ধি দি,তাহলে আমাকে মাথায় তুলে একটা আছার মারবো।আর আমিতো এই ভয়ে আছি আবিরের কথা জানলে আমায় কি করে, আমার সেদিন মৃত্যু দন্ড নিশ্চিত।। রাতে এ চিম্তায় গুম হয় না আমার জানোস,হারামি তোর জন্য।
"
"
-এতো চিন্তা করোস কেন! আমি কি ওর সাথে প্রেম করে বেরাইছি।ভালো লাগতো তাই একটু আকটু কথা বলতাম।আর কি করছি।
"
"
- প্রেম করার ইচ্ছা না থাকলে এখানেই স্টোপ যা।আর আগে বারিস না।তা না হলে.....থাক আর বলবো না।
"
"
-আরে বাদ দে... আগে বল এখন কি করবো।আমি কোথাও পালিয়ে গেলে কেমন হয় বলতো।
"
"
-তোর মাথার সব নাট বল্টু কি ঢিলা হয়ে গেছে বলতো। (লিনা)
"
"
-তিশা আবাক হয়ে বললো নাতো,,,কেন তুই এমন বলছোস।
"
"
-তাহলে কি বলবো,তুই ভাবছোস তুই এমন করলে তোর ভাই তোকে যেখান থেকে পারুক খুঁজে এনে একটা রিকশাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে।তাহলে ভালো হবে তাই না।
"
"
-নিলার কথা শুনে তিশা গভীর চিন্তায় মগ্ন হলো,আসলেই তো আমার ভাই এটা করতেই পারে, ওর কোন ভরসা নাই,এমনেই বলে পরীক্ষায় খরাপ করলে নাকি বিয়ে দিয়ে দিবে।তার উপর এটা করলে আমার কপালে রিকশাওয়ালাই জুটবে।না না না... বলে চিৎকার করলো তিশা।
"
"
-চিন্তা বাদ দে...যা হবার হবে।ভাইয়া হয়তো একটু বকবে। খেয়ে নিস।এতো কিছু খেতে পারছ, একটু বকা খেলে কি হবে।
"
"
-হুমমমমম....।
"
"
-কলেজ থেকে সোজা বাসায় গেলো।ওর আজ বাসায় যেতেও ভয় লাগছে।বাসায় গিয়ে সোজা রুমে গিয়ে ফ্রেস হলো,কিছু খেয়ে বিশ্রাম নেবার জন্য বিছানায় পিঠ লাগাতেই ঘুমিয়ে পড়লো।সন্ধ্যায় মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো।
"
"
-কি হইছে মা এতো ডাকাডাকি কেন করছো।
"
-তোর বাবা আর রায়হান ডাকছে তোকে ড্রয়িংরুম এ আস।
"
- এ কথা শুনে আমার কলিজার পানি সব শুকিয়ে গেছে।তবুও আস্থে আস্থে ড্রয়িংরুম এর দিকে পা বাড়ালাম।
"
-তিশা এসব কি মা,তোর মা যা বলছে সত্য।
"
-এভাবে খরাপ করার কারন কি বলো, তোমার সমস্যা না জানলে সমাধান কি করে করবো।
"
-ভাইয়া আমার দিকে ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে।আমি কি বলি তা জানার জন্য হয়তো।
"
-আসলে বাবা তিন মাসে তিনটা টিচার আসছে।আর নতুন টিচার এসেই পুরানো টিচারের সব বদলে নতুন করে সব দেয়।যার কারনে সব কিছু উলট পালট লাগতো আমার। পড়াগুলো টিক মতো কভার করতে পারনি।আর পরীক্ষা ও সামনে এসে পরেছে তাই এমন হলো বাবা।একদমে কথা গুলো বলে চুপ হয়ে যায় তিশা।
"
"
- টিক আছে বুজলাম।কিন্তু এই সমস্যার কথা গুলো আগে বললে এমন হতো না।আমরা কিছু না কিছু ব্যবস্থা করতাম।
"
"
- রায়হান তখনো চুপ। কিছুই বললো না।হয়তো সমস্যা টা বুঝতে পরেছে তিশার।
"
-রায়হান তুমি কালই ওর জন্য ভালো একটা টিচার এর ব্যবস্থা করবে।আর পরীক্ষার আগ পর্যন্ত যাতে আর টিচার বদলাতে না হয়, তেমন ভাবে দেখে আনবে।
"
-টিক আছে বাবা।(রায়হান)
"
-তিশা দেখলো ওর ভাই ওর দিকে এখনো ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে।
"
-ভাইয়া তুমি কি আমায় কিছু বলবে।
"
-না তেমন কিছু না,এমনেই তোর কাজে আমরা অনেক গর্বিত। আর কিছু বলে তোকে ফুলিয়ে দিতে চাই না।
"
-তিশা ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে গেলো ভাইয়ের এমন কথা শুনে।
"
-রাতের খাবারের পর রায়হান ভাবছে।কার কাছে দিলে তার আদরের বোন টি সুরক্ষিত থাকবে আর পড়াতেও পারবে।কারন এর আগের তিনটা টিচারের মধ্যে দুটারি চরিত্র ভালো ছিলো না।তা কিছু দিন এর মধ্যেই রায়হান বুঝতে পারলো, আর সাথে সাথে না করে দিলো। এর মধ্যে নীলয় ছেলেটা ভালো ছিলো কিন্তু ওর ভালো চাকরী হওয়াতে তিশাকে পড়াতে পরেনি।রায়হান সিগারেট টানছে আর ভাবছে এতো আর্জেন্ট একটা ভালো টিচার কই পাবে।ওর ফ্রেন্ডস এর অনেকেই টিউশনি করে কিন্তু তাদের সভাবও তেমন ভালো না।এমন সময় জিশান ফোন করলো।
"
-কি রে খুব টেনস মনে হচ্ছে।রায়হানকে জিজ্ঞেস করলো।
"
-রায়হান সব বললো। এখন কি করি বলতো।
"
-আরে ভাবিস না কাল দেখবো নি।কি করা যায়।এখন ঘুমা।রাখি।
"
-জিশান ফোন কাটার পর রায়হান ভাবতে লাগলো জিশান হলে মন্দো হতো না।কিন্তু জিশান কি রাজি হবে।ওর কোন কিছুর অভাব নেই।ওকে কোন মুখে বলবো তিশাকে পড়াতে, যদি রাজি না হয়।ধুর কাল দেখবোনি।মানলে মানবে,তা না হলে অন্য কিছু ভাববো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৩
লেখিকা – তানিয়া
-পরের তিন রায়হান আর জিসান বসে চা খাচ্ছে,তাদের একটা নির্দিষ্ট জায়গা আছে,তারা এখানেই বসে বেশির ভাগ সময়,আড্ডা মারে।হঠাৎ জিসান রায়হান কে উদ্দেশ্য করে বললো কি রে,,,কিছু ভাবলি।কাকে রাখবি।
"
"
-ভাবলাম তো.. সারা রাত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনেক ভাবলাম।
"
"
-কি,,,,! মানুষ জেগে থেকে ভাবে আর তুই ভাবিস ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে।আজব!!!(জিসান)
"
"
-আরে দূর ওটা বাদ দে আমি এমনেই ভাবি।(রায়হান)
"
"
-টিক আছে বস, এখন বল কাকে দিয়ে পড়াবি।(জিসান)
"
"
-তুই ছাড়া আমার কে আছে বল।
"
"
-জিসান চা খাচ্ছিলো, রায়হানের কথা শুনে বিষম খেলো।কি জা তা বলছোস।আমি....?তুই আর কাউকে খুঁজে পাসনি।আমি কি আগে কাউকে পড়াইছি।আর জানোস না তিশা মাঝে মাঝে এমন কান্ড করে তখন আমার খুব রাগ উঠে যায়।তখন আবার আমি নিজেকে সামলাতে না পারলে কি না কি করে ফেলবো আমি নিজেও জানি না।আমার রাগ সম্পর্কে তো তোর আইডিয়া আছে।
"
"
"
- সে কারনেই তো তোকে বললাম,তিশা খুব ভয় পায় তোকে,তোর ভয়ে এমনেই দেখবি পড়াও সব তারাতারি কমপ্লিট করে ফেলবে তোকে ভাগানোর জন্য।আমি ই পড়াতাম কিন্তু আমার চাকরীর লেটার যে কোন সময় পেয়ে যাবো তখন আবার সমস্যা হবে, তাই তোকে বললাম।আর ওর পরীক্ষারও বেশিদিন বাকি নেই।দেখ এতো কম সময় ওর সিলেবাস একমাত্র তুই কমপ্লিট করে দিতে পারবি।
"
"
"
-তুই রনি কে বল,ও তো এর আগে ও অনেককে পড়িয়েছে।(জিসান)
"
"
-তুই রনির সভাব জানোস না,ওর কাছে আমার বোন কে দেব.... এর আগে ও কি কি করেছে জানোস না।পড়া রেখে আমার বোনের দিকে নযর দিবে।
"
"
-দেখ জিসান আমার শেষ ভরসা তুই।তুইও কি আমাকে নিরাশ করবি।
"
"
-ওকে টিক আছে, আমি শুধু ওর সিলেবাস শেষ করে দেবো। ওকে.....(কিছু ক্ষন চিন্তা করে জবাব দিলো)
"
"
-ওওওওও জিসান।(জিসান কে জরিয়ে ধরে) তুই আমার কতো বর সমস্যা দূর করছোস জানোস না।
"
"
-তোর সমস্যা তো দূর হলো আমার শুরু হলো,তুই জানোস তোর বোন আমাকে হিটলার বলে।আমি নাকি এনাকোন্ডা।আমি নাকি সব কিছু গিলে ফেলি,চাবানোর সুযোগও দিনা।(জিসান)
"
"
-হা হা তোকে কে বলললো।
"
"
-একদিন বসে বসে আমাকে বকছিলো,আমি পেছনো দাঁড়িয়ে ছিলাম,বেচারি জানতো না,যখন আমাকে দেখলো এমন দৌড় দিলো। এক মাস আমার সামনেও আসে নি।তাহলে বুজ.....।
"
"
-ভালই।তুই আজ থেকেই পড়ানো আরম্ভ কর।আমি মাকে বলে দিবনি।(রায়হান)
"
"
-ওকে।(জিসান)
"
"
বিকেলে হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো......
-তিশা দরজা খোল, দেখতো কে আসছে।তোর স্যার আসার কথা ছিলো।( মা চিৎকার দিয়ে বলছে রান্না ঘর থেকে)
"
"
-তিশা দরজা খুলে দেখে জিসান দাঁড়িয়ে আছে।জিসান কে দেখে এই সময় তিশা কিছুটা আশ্চর্য হলো।কারন রায়হান ভাই না থাকলে জিসান কখনো আসে না।ফোন দিয়ে আসে।
"
"
-জিসান ভাই আপনে।রায়হান ভাইতো বাসায় নেই।
"
"
-তা তো জানি,আমি তো রায়হানের সাথে দেখা করতে আসিনি,আসছি তোর জন্য।(জিসান)
"
"
-এ্যা.....।(তিশা,মুখ চোখ বাকিয়ে)
"
"
-কিরে এভাবে তাকিয়ে থাকবি নাকি ঘরেও আসতে দিবি।
"
"
-কি রে তিশা কে আসছে।(মার কথায় তিশার ধ্যান ভাঙ্গলো)
"
"
-মা জিসান ভাই,তিশা মনে মনে ভাবছে এই হিটলার আমার সাথে দেখা করতে কেনো আসছে মতলোব কি।
"
"
-আরে জিশান বাবা আসো আসো। বাহিরে দাঁড়িয়ে আছো কেন, ভেতরে আসো।
"
"
-জিশান ভেতরে ডুকে তিশার মাকে জিঙ্গেস করলো, আন্টি কোথায় বসবো, ড্রয়িংরুম এ, নাকি তিশার রুমে।
"
"
-তিশার রুমে কথাটা শুনে,,, তিশা যেনো আকাশ থেকে পড়লো,আ,,মা,,,র,,রুমে মানে কি...
"
"
তিশার মা তিশার কথা কানে মনে হয় শুনলোই না।
"
"
-আরে এখানে কেনো বসবে তিশার রুমে গিয়ে বসো।ওখানে পড়াতে সুবিধা হবে।
"
"
-এতোক্ষন পরে তিশার চিন্তার অবসান হলো,নিউ টিচার আর কেউ না জিসান।(তিশা তো পারে না কেদেই দেয়)
'
"
-এই লোকটার কাছে কিভাবে পড়বো আমি,এটাতো এক নাম্বারের হিটলার।,এনাকোন্ডা।আমাকে গিলে খেয়ে ফেলবে।মনে মনে জিসানকে গালি দিচ্ছে আর ভাবছে।
"
"
-আমাকে গালি দেয়া শেষ হইছে,নাকি আরো বাকি আছে।এখন চল পরতে বসতে।
'
"
-জিসান এর কথায় তিশা ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে গলো।কপালটা কুচকিয়ে মনে মনে বললো কিভাবে জানলো আমি গালাগালি করছি।
"
"
-জিসান গিয়ে তিশার রুমে চেয়ারে বসলো,তিশার কোন কোন সাবজেক্ট এ সমস্যা আছে তা আগে বের করতে বললো।
"
"
-তিশা ২ টা বই সামনে দিয়ে বললো, কতো বছর পর এই বই গুলোর মুখ দেখছেন।
"
"
-তোর কি মনে হয় আমি অনেক বুড়ো হয়ে গিয়েছি।তাই বই দেখলে বলবো আরে আমি তো পাস করার পর বই গুলো ধরিনি।তাই না,,,।
"
"
-না তেমন কিছু তো বলিনি আমি, আপনে একটু বই গুলোর সাথে পরিচিতো হন,আমি একটু আসছি।
"
"
-কই যাস তুই।পড়া রেখে।(জিসান)
"
"
-এই তো আম্মুর কাছে আমি এখনি আসছি।তিশা সোজা ওর মার কাছে গিয়ে জিঙ্গেস করলো,মা মা....
"
"
-কি হইছে, সারা দিন বকরীর বাচ্চার মতো ম্যা ম্যা করস কেনো।আর তুই এখানে কি করস।পড়তে না বসে।
"
"
-মা আমি কি তোমার সৎ মেয়ে।নাকি রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাইছো।
"
"
-কি জা তা বলছিস,তোর মাথা কি ঠিক আছে।
"
"
-কিভাবে মাথা ঠিক থাকবে, তোমরা একটা বারও আমাকে জিঙ্গেস করলে না,জিসান ভাইকে ঠিক করার আগে।এমনেই তাকে আমার সহ্য হয় না তার উপর আমার ঘাড়ে বসিয়ে দিয়েছো।
"
"
-দেখ তিশা আর কোন কথা শুনতে চাই না,জিসান বসে আছে আগে পড়া শেষ কর, তার পর কথা হবে।
"
"
-তিশা চলে গেলো ওর রুমে।চেয়ারে বসে জিসানের দিকে থাকিয়ে আছে।
"
"
-জিসান বুঝতো পেরে বইটা বন্ধ করে, তিশার দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলো,কি সমস্যা, এভাবে তাকিয়ে আছোস কেন।কিছু বলবি।
"
"
-আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো,স্যার নাকি জিসান ভাই।
"
"
-দু,,টাই।(জিসান জানতো তিশা এমন ইস্টুপিট মার্কা প্রশ্নে করবেই।)
"
"
-এ্যা,এ্যা.....।(তিশা)
"
"
-মুখ বন্ধ কর।নাহলে মোশা ঢুকবে।
"
"
-তিশা আবার, আচ্ছা স্যার আইডিয়াটা কার ছিলো আমাকে পড়ানোর।
"
"
-তোর রায়হান ভাইয়ার।(জিসান)
"
"
তিশা মনে মনে বলা শুরু করলো,, হে আল্লাহ একটা রশি ফেলো আমি উঠে যাই তোমার কাছে।কেনো এমন ভাই আমার কপালে জুটলো।
"
"
-এখন যদি তোর প্রশ্ন শেষ হয় তাহলে এবার পড়ায় মনোযোগ দেয়া যাক।
"
"
তিশাকে সব পড়া বুঝিয়ে দিয়ে জিসান চলে গেলো।কাল আবার আসবে অনেক পড়া দিয়ে গেছে সব যাতে কমপ্লিট পায় কাল, তিশাকে বলে গেলো।
"
"
-তিশা ভাবছে যদি ভালো মতো দিতে না পারি কাল আবার যেনো কি শাস্তি দেয় আল্লাহ ই যানে।সে দিনের শাস্তির কথা তিশার এখনো মনে আছে।
এই তো কয়েক সপ্তাহ আগের কথা।
"
"
-তিশা কোচিং এ গিয়ে শুনে আজ স্যার পড়াবে না অসুস্থ।তাই তিশা আর ওর কিছু কোচিং ফ্রেন্ডসরা প্লানিং করলো আজ পার্টি করবে ওরা।
"
"
-তিশার সাথে নিলাও ছিলো,আর তিন জন ছেলে ফ্রেন্ডস, যারা তিশার সাথে কোচিং এ পরতোই।ওরাও এই এলাকায় থাকে।
"
"
-তিশা ও ওর ফ্রেন্ডসরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফুসকা খাচ্ছে আর ক্লাসের কিছু বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছে।
"
"
জিসান বাইক নিয়ে যাবার সময় তিশাকে দেখে থেমে যায়।বাইক থেকে নেমে তিশার কাছে গিয়ে জিঙ্গেস করে এখানে কি করস তুই।তোর না এখন কোচিং এ থাকার কথা।
"
"
-হঠাৎ জিসান কে দেখে তিশা বিষম খায়,ফুসকা মনে হয় ওর গলা দিয়ে নামছে না।কোন রকম খেয়ে বললো, আজ ছুটি দিয়ে দিয়েছে স্যার,সে অসুস্থ।
"
"
-তাই খুশিতে ফুসকা পার্টি চলছে, তা আবার রাস্তা দাঁড়িয়ে। তাই না।(জিসান রাগে কটমট করে কথা গুলো বলছে)
"
'
-চল আজ আমি তোকে ফুসকা খাওয়াবো,দেখি তুই কতো খেতে পারিস।মামা ১ প্লেট ফুসকা বানান কড়া জাল দিয়ে....।
"
"
-এ কথা শুনে তিশা তো ভয়ে কাপতে লাগলো,আর নিলা ফুসকার প্লেট টা রেখে বিল দিতে চাইলে, জিসান বলে.... আমি দিয়ে দেবো নিলা।তোমরা যাও,নাকি তোমাদের জন্যও অর্ডার করবো।
"
"
-না ভাইয়া, আমাদের পেট ভরে গেছে,আমরা আসি।সব দৌঁড়, সেখান থেকে।
"
"
-জিসান ফুসকার প্লেট টা নিয়ে তিশাকে দিলো।খাও এবার।
"
"
-তিশা প্লেটটার দিকে তাকিয়ে দেখলো মরিচ দিয়ে ভরা।সে জিসানের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকলো।
"
"
-তুই খাবি নাকি আমি খাইয়ে দেবো।(জিসান)
"
"
-না না আমি খাচ্ছি।বলে তিশা শুরু করলো,ওর চোখ নাক লাল হয়ে গিয়েছে,চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।তবুও সব খেলো।
"
"
-নেক্সট টাইম এভাবে দেখলে এর থেকে বেশি হবে মনে রাখিস, বলে একটা রিকসা ডেকে ভাড়া দিয়ে দিলো রিকসা চালক কে।আর কিছু চকলেট তিশার হাতে দিয়ে দিলো।
"
"
-তিশা রাগবে নাকি কাঁদবে কিছু ই বুঝতে পারছে না।
"
"
-বাসায় এসে ওর ভাইকে বিচার দিচ্ছে, জিসান কি কি করছে।
"
"
-ওর ভাই ওর সামনে এসে যা বললো এতে ও আরো অভাক হলো।
"
"
-জিসান তো জ্বাল খাইয়েছে, আমি থাকলে তোকে এক থাপ্পড় মারতাম। রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তুমি পার্টি করো,তা আবার এলাকার বদ ছেলেদের সাথে করে।আবার বিচার দিতে আসছো।যা ঘরে যা।
তিশা দৌড় দিয়ে ঘরে চলে গেলো,সেদিন কিছুই আর খায়নি রাগ করে।
"
"
-পরে তিশার বাবা এসে ওর রাগ ভাঙ্গিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো।
"
"
তিশা হঠাৎ ওর মার ডাকে ভাবনার জগৎ থেকে বের হলো।মনে মনে ভাবছে লোকটা আমার সাথে এমন কেনো করে।আসলে সমস্যা কি তা ও কখনো বলে না।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

পাট ৪-৬
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৪
লেখিকা – তানিয়া
-এভাবে অনেকদিন চলে গেলো।তিশার সিলেবাসও অনেকটা কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে।জিসান এর ভয়ে তিশা পড়াচুরি করতে পারেনি।😜
"
"
-জিসান পড়ানোর সময় তেমন কোন কথা বলে না তিশার সাথে, জিসানের মনে তিশার জন্য সপ্ট কিছু আছে তা ভালোবাসা কিনা তা বুজতে পারছে না,তবে তিশার প্রতি ও দূর্বল তা জিসান এ কয়েকদিনে তিশাকে পড়াতে গিয়ে বুজতে পেড়েছে,কিন্তু জিসান তিশার সামনে এমন কোন কিছু প্রকাশ করতে চায় না।কারন রাহয়ান আর জিসানের বন্ধুত্বের ফাটল ধরুক এমন কিছু জিসান চায় না।অনেক বিশ্বাস করে জিসানকে এই দায়িত্ব দিয়েছে,আর তাই জিসান নিজের ভালো লাগাটা প্রকাশ করে না কখনো।
"
"
-জিসান রাগী হলেও ও খুব গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ।ও কি চিন্তা করে তা কখনো কেউ বলতে পারেনা।আর নিজের আবেগকে কখনো প্রকাশ করেনা।জিসান এর চরিত্র টিক নারিকেলের মতো,উপর দিয়ে খুব শক্ত, কিন্তু ভেতরে নরম।।
"
"
এভাবে বেশ কিছু দিন চলে গেলো।।
"
"
-রাতে তিশার মা ড্রয়িংরুম এ বসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিশার বাবাকে বললো।জানো আজ কে ফোন দিয়েছে।
"
"
-তিশার বাবা একটু নেড়ে চেড়ে বললো কে?
"
"
-রফিক ভাই,সিমার নাকি বিয়ে টিক হয়ে গিয়েছে,দাওয়াত দেবার জন্য ফোন দিয়েছে,কাল সকালে তোমাকেও ফোন দিবে।বেশিদিন বাকি নাই।এই শুক্রবারেই নাকি বিয়ে।
"
"
-মামাতো বোনের বিয়ের কথা শুনে তিশাতো মহা খুশি।অনেকদিন পর একটু আনন্দ করতে পারবে।
"
"
-এতো তাড়াহুড়া কেনো বিয়ের জন্য।আর এমন সময় বললো, আমিতো কিছুতেই ছুটি নিতে পারবো না অফিস থেকে।তোমাকে তো আগেই বললাম,এই মাসে অফিসের কাজ অনেক বেশি।কি করা যায় বলতো।(তিশার বাবা)
"
"
- আমি ভাইজানকে বলেছি সব, আমি বলে দিয়েছি আমরা আসতে পারবো না,কিন্তুু রায়হান আর তিশাকে পাঠিয়েয়ে দেবো।
"
"
-মা আমার তো তোমাদের গ্রামে যেতে মন চায় না,এই আধুনিক যুগেও ওখানকার মানুষ বিভিন্ন কুসংস্কার নিয়ে আছে।
"
"
-দেখ বাবা,যেতেতো হবে।আমরা ছাড়া তোর মামার কে আছে।গ্রামের মানুষকে কুসংস্কার থেকে মুক্ত করার জন্য তোর মামা এতো লিখাপড়া করার পরও গ্রামে থেকে গেছে।ওখান কার বাচ্চাদের জন্য একটা স্কুলও খুলেছে।এর জন্য ভাইজানকে অনেক কিছু সহ্য করতে হইছে।এখনো অনেকে আছে, যারা চায় তোর মামা যেনো গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।কিন্তু গ্রামের মানুষ যারা তোর মামাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসে তাদের জন্য পারেনা।
"
"
-টিক আছে বাবা।কবে যেতে হবে।(রায়হান)
"
"
-তিশা ওর মাকে বললো,আমাকে আগে মার্কেটিং করে দিতে হবে।তার পর যাওয়া।🥺
"
"
-দেখছোস রায়হান।তোর বনের এখন আবার সোপিং করতে হবে।আচ্ছা টিক আছে সকাল সকাল সোপিং এর জামেলা সারিয়ে ফেলবো।তোরা বিকেলে রওনা দিস।(তিশার মা)
"
"
-ওকে। সব গুছিয়ে নে। সময় কম।আর রাতও অনেক হইছে তিশা গিয়ে ঘুমা, কাল অনেক জার্নি কারতে হবে।(তিশার বাবা)
"
"
-রায়হান রুমে গিয়ে ভাবলো জিসান কে সাথে নিলে কেমন হয়।একা একা আর বোর ও হবো না।জিসান কে কল দিলো,অনেক বলার পর জিসান রাজি হলো যেতে ওদের সাথে।ওকে কাল দেখা হবে বিকেলে।
"
"
-সকাল সকাল সোপিং শেষ করে, খাওয়াদাওয়া করে তিশা রেডি হয়ে গেলো।বাহিরে বের হতে দেখলো জিসান হুন্ডা থেকে নামছে।আরে জিসান ভাই, ভাইয়ার সাথে দেখা করতে আসছেন। কিন্তু আমরা তো এখন বের হবে।ভাইয়া আপনাকে কিছু বলনি।
"
"
-যা তকে ধরে রাখছে কে।জিসান তিশাদের বাড়ির ভেতর হুন্ডাটা রাখলো।
"
"
-আরে জিসান আসছোস।দাড়া আমি ব্যাগ নিয়ে আসছি।তুই সব কিছু আনছোস তো।(রায়হান)
"
"
-আরে হো সব কিছু নিছি,তুই তারাতারি কর।লেট হলে বাস পাবো না।।
"
"
-তিশা হা করে আছে।এটা কি হলো জিসান ভাই ও আমাদের সাথে যাবে।কেউ আমাকে কিছু বললো না কেন।এই লোকটা আমার জীবন তেজপাতা বানিয়ে দিচ্ছে।😩
"
"
-কি রে হা করে আছস কেনো,মুখটা বন্ধ কর।
-আপনেও আমাদের সাথে আসছেন।(তিশা)
-হুমমমম।
-আপনার কি অন্য কোন কাজ কর্ম নাই।(তিশা)
-আছে তো.... তোকে পাহাড়া দেয়া।
-মা.. মা...নে।🥺
-তুই যাতে অন্য কারো নযরে না পরিস,সবার বদ নযর থেকে বাঁচিয়ে রাখা,এটা কি এতো সহজ বল।এটাই এখন আমার প্রধান কাজ।জিসান তিশার একদম সামনে এসে কথাটা বললো।
"
"
-জিসান এতো কাছাকাছি আসায় তিশা একটু ঘাবরে গেলো।ও ২ পা পেছনো নিয়ে বললো, মানে কি... আমাকে কেনো পাহাড়া দেবেন, আমি কি ছোট বাচ্চা।
"
"
-বাচ্চা না, তাইতো আগলে রাখতে হয়।বাচ্চা হলেতো কোলে করে নিয়ে যেতাম।ভালো হতো তখন... টিক না।
"
"
(জিসান একটু বাকা হাসি দিয়ে কথাটা বললো)
"
"
-জিসানের মুখে এমন কথা শুনে তিশা তো শোকড।এমন ভাবে জিসান কখনো তিশার সাথে কথা বলেনি,তাই তিশা কিছুটা চিন্তায়মগ্ন।
"
"
-কিছুক্ষন পর তিশা, জিসান ও রায়হান রওনা দিলো ওদের গন্তব্যে।ওদের মামা বাস স্ট্যান্ড এ ওদের নেবার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো।ওদের যেতে অনেক রাত হলো, তিশার মামা ওদেরকে নিয়ে বাসায় ডুকলো,সিমা দৌড় দিয়ে তিশা কে জরিয়ে ধরলো।
"
"
-ছাড়,,,এতো জরে জরিয়ে ধরলে তোর বিয়ের আগেই মারা যাবো।(তিশা)😬
"
"
-যা শয়তান,তুই তো আমায় ভুলে গেছস।তাইতো একবার দেখতেও আসিস না।(সিমা কিছুটা রাগ নিয়ে কথাটা বললো।)
"
"
-ওওওও......।নতুন বউ দেখি রাগ করছে।এতো রাগ জামাইরে গিয়া দেখাইও আমারে না।(তিশা)
"
"
-আমরাও আছি সিমা। আমাদের মনে হয় তুই দেখছ নাই।নাকি আমরা চলে যাবো।(রায়হান)
"
"
-ভাইয়া, কি বলো।এক তো কতো বছর পর
আসছো,তার উপর এখন ঢং করছো,আমার সাথে।।
"
"
-হইছে কাল কথা বলিস,এখন ওদের ঘরে আসতে দে।কতো দূর থেকে আসছে।খেয়ে দেয়ে বিশ্রাম নিক।কাল আবার অনেক কাজ আছে বিয়ে বাড়ি বলে কথা।(তিশার মামী)
"
"
তিশার মামা-মামী ও সিমা জিসানকে ভালো করে চেনে।ঢাকায় তিশাদের বাসায় জিসানের সাথে দেখা হয়েছিলো অনেকবার। তাদের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে।।তাই জিসান কে দেখে তারা খুব খুশি হয়েছে।
"
"
-সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে, ঘুৃমাতে চলে গেলো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৫
লেখিকা – তানিয়া
-রায়হান ও জিসান সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গেলো।কারন আজ গায়ে হলুদ,আর ডেকোরেশন এর দায়িত্ব পড়লো তাদের, তাই তারা সকাল সকালই কাজ শুরু করে দিলো।
"
"
-তিশা লোক জনের কোলাহলের শব্দে ঘুমাতে পারছে না।বিয়ে বাড়ী বলে কথা।শব্দ তো হবেই।তাই সেও ঘুম থেকে উঠে গেলো।আজ সকালটা তার কাছে অনেক ভালো লাগছে,গ্রামের বিয়ে বাড়ী গুলো ঢাকার মতো না,কিন্তু অনেক মজা হয়,বান্ধবীদের মুখে অনেক শুনেছিলো।তাই সেও আজ অনেক মজা করবে ভাবছে মনে মনে।
"
"
-ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে বাহিরে এসে দেখলো সবাই ব্যস্ত।তিশা চিন্তা করলো একটু হাটাহাটি করে চারপাশ টা দেখি।কালতো রাত ছিলো কিছুই দেখতে পারিনি।রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে অনেকটা দূরই এসে পড়লো বাড়ী থেকে।চারদিকে ধানক্ষেত,সবুজের সমাহার।হঠাৎ পিছে ঘুড়ে তিশা ভয়ে আতকে উঠলো।সামনে তিনটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।তাদের মতলোব ভালো দেখাচ্ছে না,তিশা বুঝতে পারলো।পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলে ওরা বাধা দেয়।কিছু বলার আগেই ওরা তিশার হাত ধরে ফেলে।তিশা চিল্লাতে শুরু করে।এমন সময় ওদের তিনজনের মধ্যে একজন বলে... আরে সুন্দরী এমন করো কেনো।আমরা তো তুমারে মারবো না,একটু আদর করবো।এটা বলে ওরা হাসাহাসি করছে।
"
"
-রায়হান বার বার তিশাকে বলেছিলো,একা কোথাও যেতে না।কিম্তু তিশা এমন ভুল কিভাবে করলো।নিজের ভুলের কারনে এতো বড় বিপদে পড়তে হলো।তিশা মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছে।কারন চারপাশে কেউ নেই,যে তিশাকে সাহায্য করবে।তিশার চোখদিয়ে ভয়ে পানি বের হচ্ছে।
"
"
-ছেলেটা তিশার হাত ধরে টেনে একটা ঝোপের মধ্যে নিয়ে যেতে চাইলো।এমন সময় তিশা বুজলো তাকে কেউ ধরে রেখেছে।পেছনে তাকিয়ে দেখে জিসান।তিশা এই প্রথম জিসান কে দেখে এতো খুশি হলো।জিসান তিশার অন্য হাতটা ধরে রাখছে।
"
"
-ঔই কেডারে তুই।আমাগো মালের দিকে নযর দেস।জানোস আমরা কে।(ওই ছেলেগুলোর মধ্যে একজন বললো।)
"
"
-জিসান রাগে তিশাকে একটা থাপ্পড় মারলো।তিশাতো আবাক।গালে হাত দিয়ে জিসান এর দিকে তাকিয়ে দেখলো জিসানের চোখ দুটা লাল হয়ে আছে।
"
"
-তোকে না বলছি একা কোথাও বের হবিনা।তুই এখানে একা একা কি করছোস।তুই কেনো কোন কথা শুনুছ না বলতো।সমস্যা কি....।জিসান তিশার সাথে রাগারাগি করছে এমন সময় তিশার হাতের দিকে ওর নজর যায়।হাতটা লাল হয়ে গিয়েছে।এটা দেখে জিসানের রাগ আরো বেরে যায়,কে তোকে ধরছে এদের মধ্যে।তিশা চুপ হয়ে আছে।এখন জিসান জরে একটা ধমক দিলো।....তিশা ভয় পেয়ে যায়।
"
"
-তিশা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে ছেলেটা ওর হাত ধরেছিলো।
"
"
-জিসান ছেলেটার সামনে গিয়ে এমন জোরে একটা থাপ্পড় মারে, যে ছেলেটা রাস্তার অনেকটা দূরে গিয়ে পরে।নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়।থাপ্পরটা এমনি জোরে ছিলো,ওদের মধ্যে আরেক জন জিসান কে মারার জন্য এগিয়ে আসতে চাইলে জিসান তার বুকে এমন এক লাত্থি মারে,ছেলেটা পাসের ক্ষেতে গিয়ে পরে।আর ওদের সাথে তয় ছেলেটা ভয়ে পালিয়ে যায়।প্রথম ছেলেটাও চলে যেতে যেতে বলে এর প্রতিশোধ আমি নেবো।
"
"
-জিসান তিশার হাত ধরে বাসায় নিয়ে এলো।এই দৃশ্য অনেকেই দেখছে গ্রামের।তিশাকে সোজা ওর ঘরে গিয়ে বসালো।
"
"
-এখনো জিসান এর রাগ কমছে না।কারন ও সময় মতো না গেলে আজ কি হতো, তা ভেবেই ওর বুক কেপে উঠে।তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।তিশা খাটে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুই বলছে না।
জিসান দেখলো তিশার গালে ওর আঙ্গুলের ছাপ পড়ে গেছে।তা দেখে জিসান নিজেই নিজেকে বকছে কিভাবে তিশাকে মারতে পারলো সে।রুম থেকে বের হয়ে পাশের রুম থেকে একটা মলম নিয়ে আসলো।একটা চেয়ার নিয়ে তিশার সামনে বসলো।জিসান মলমটা নিয়ে ওর গালে লাগাতে গেলে,তিশা বললো, আমাকে দিন,আমি নিজেই লাগাতে পারবো।।।
"
"
-চুপ,একদম....।নাকি আরো একটা থাপ্পড় খাবি।আমাকে আমার কাজ করতে দে।জিসান আস্তে আস্তে করে ওর গালে মলম টা লাগিয়ে দিলো।নাস্তা করেছিস, জিসান তিশাকে জিঙ্গেস করলো।তিশা মাথা নাড়িয়ে না বললো।ওকে আমি সীমাকে দিয়ে নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি,চুপচাপ লক্ষীমেয়ের মতো নাস্তা করেনিস।কোন নাটক একদম করবি না।
"
"
-তিশা রাগি চোখে জিসানের দিকে তাকায়।😡
"
"
-আমিই তোকে মারবো,আবার আমিই তোকে আদর করে মলম ও লাগিয়ে দেবো।।এই অধিকারটা শুধু আমার।জিসান একটু হেসে কথাটা বলে বাহিরে চলে গেলো।সীমাকে তিশার নাস্তার জন্যও বলে দিলো.........।😍
"
"
-তিশা অবাক হয়ে জিসানের যাওয়ার পথে তাকিয়ে রইলো।।তিশা ভাবতেও পারেনি জিসান এমন কোন কথা বলবে ওকে।
"
"
-সীমার ডাকে তিশার ঘোর কাটলো,সীমা ওকে নাস্তা করিয়ে দিলো।
"
"
-জিসান বাহিরে এসে রায়হানকে সব বললো।রায়হানেরও তিশার উপর খুব রাগ আসলো।এতো করে বুজাবার পরও এই মেয়েটা এমন ভুল কেমনে করলো।রাগে তিশার কাছে যেতে চাইলে জিসান বাধা দেয়।আজ এমনেও অনেক হইছে আর না।আমি ওকে যা বলার বলে দিয়েছি।পরে কথা বলিস।এমনেই অনেক কাজ আছে তা সারি তারাতারি চল।
"
"
-সারা দিন তিশা আর রুম থেকে বের হয়নি।আসলে জিসানকে দেখে বিষণ লজ্জা লাগছে ওর।তাই সারা দিন সীমার সাথেই ছিলো।
রাতে হলুদের জন্য একটা হলুদ জামদানি শাড়ী পড়লো। মুট ভরে চুড়ি পড়লো।হালকা সাজে গাড় লিপস্টিক দিলো।মাথার সামনের চুলগুলো ক্লিপ দিয়ে বেধে নিলো।পেছনোর চুলগুলো কাটা দিয়ে খোপা করে নিলো।এর থেকে বেশি সাজ ওর পছন্দ না।
"
"
-এ দিকে জিসান ও রায়হান ও তৈরি হয়ে গেলো।রায়হান আগেই বের হলো।জিসান তৈরি হয়ে বাহির হতেই দেখলো তিশা শাড়ি টিক করতে করতে রুম থেকে বের হচ্ছে, সামনে যে জিসান দাঁড়িয়ে আছে তা ওর খেয়ালিই নাই।জিসানের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে জিসান ধরে ফেলে।জিসানের এক হাত তিশার কোমড়ে আর এক হাত দিয়ে তিশার হাত ধরে আছে।
"
"
-আল্লারে বাঁচাও.....ভয়ে তিশা চোখ বন্ধ করে ফেললো।কিছু ক্ষন পর তিশা চোখ খুলে দেখে জিসান ওকে ধরে রাখছে,তা না হলে পড়ে কোমর আজ যেতো।
"
"
-জিসান তিশাকে সোজা করে দাঁড় করালো।কোথায় চোখ রেখে হাটস বলতো।এখন যদি আমি না থাকতাম কি হতো।
"
"
-আপনে ছিলেন বলেই পড়ে যেতে নিয়েছি,তা না হলেতো আমি পড়তামই না,ভুল আপনার ছিলো,আর আমাকে বকছেন শুধু শুধু।আর আপনে না ধরলে অন্য কেউ ধরতো,কেউনা কেউ বাঁচাতো আমাকে।
তিশা এক দমে কথা গুলো বলে জিসানের দিকে তাকালো।
"
"
-জিসানের চোখ ২টা লাল হয়ে গিয়েছে রাগে।তিশাকে অন্য কেউ ধরতো এ কথাটা শুনতেই জিসানের রাগ চরম মাত্রায় পৌছে গেছে।তিশার হাতটা ধরে টেনে রুমে নিয়ে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।তিশা এবার ভয় পেয়ে গেলো।জিসান তিশার দিকে এক পা এক পা করে আগাতে লাগলো তিশা ভয়ে পিছিয়ে যেতে লাগলো,ভয়ে তিশার মুখ দিয়ে কথাও বের হচ্ছে না।কারন তিশা জিসানের এমন রুপ আগে দেখেনি কোন দিন।পেছনের দেয়ালে তিশার পিঠ ঠেকে গেলো।
"
"
-তিশার কাধের দুপাসে হাত রেখে তিশাকে জিঙ্গেস করলো,কি বললি তুই.... আবার একটু বলতো।
"
"
-আ....মি...মি কিকিকি..... বললাম।(তিশা ভয়ে ভয়ে বললো)
"
"
-তোকে অন্য কেউ ধরবে মানে।কেউ তকে ধরলে আমি তাকে জেন্ত কবর দেবে।আর তুই কাউকে ধরলে তোর হাত কেটে দেবো মনে রাখিস।আর এতো সেজে গুজে কই জাস।গায়ে হলুদ তোর বোনের তোর না।আর এতো বড় কেনো ব্লাউজ এর গলা,শরীল দেখাতে খুব ভালো লাগে তাই না।জিসান তিশার খোপাটা খুলে পিঠটা ঢেকে দিলো চুল দিয়ে।এমন বড় গলার ব্লাউজ আর কখনো যাতে পরতে না দেখি।এ কথা বলে তিশার কপালে একটা ভালোবাসার পড়স বসিয়ে দিলো।তিশা হালকা কেপে উঠলো।তিশা এখনো হতোভম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।আর জিসান চলে গেলো।😍😍😍
"
"
-হঠাৎ জিসান আবার আসলো। কি রে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবি।নাকি বাহিরে আসবি,রায়হান ডাকছে তকে।
"
"
-জিসানের কথায় ধ্যান ভাঙ্গলো তিশার।একটু আগে যা ঘটলো তা কি সত্য ছিলো।😯
"
"
-তিশা বাহিরে গিয়ে দেখলো উঠান ভর্তি মানুষ।তিশা এদিক ওদিক তাকিয়ে সব কিছু দেখতে লাগলো,কারন কাউকে ও তেমন ভালো করে চিনে না।হঠাৎ দেখলো জিসান কে ঘিড়ে অনেকগুলো মেয়ে দাড়িয়ে আছে।আর ও মেয়ে গুলোর সাথে হাসাহাসি করছে।তিশার গা জ্বলে যাচ্ছে।ঢং আমাকে বলে কোনো ছেলের আশেপাশে ও যাতে না যাই।আর নিজে মেয়েদের মাঝে বসে রংতামাসা করছে।(তিশা মনে মনে জিসানের চৌদ্দ গুষ্টি কে বকছে)
"
"
-জিসান আড় চোখ দিয়ে সব দেখছে,আর হাসছে।
"
"
-তিশা রেগে গিয়ে সীমার পাশেগিয়ে বসলো,সবাই হলুদ দেয়া আরম্ভ করলো।
"
"
-আর জিসান শুধু তিশার দিকেই তাকিয়ে আছে।এই মেয়েটা আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে।আজ ওকে পরীর মতো লাগছে।এভাবে চলতে থাকলে নিজেকে ওর কাছ থেকে দূরে রাখা কস্ট হয়ে পড়বে।এ মেয়েটা কি এখনো বুঝতে পেরেছে আমি ওকে কতো ভালোবাসি।এক নাম্বারের গর্দভ, আমি খুব ভালো করেই জানি.....ও হয়তো এখনো বুঝেনি।😐
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৬
লেখিকা – তানিয়া
-জিসান তিশার দিকেই তাকিয়ে আছে।এই মেয়েটা আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে।আজ ওকে পরীর মতো লাগছে।এভাবে চলতে থাকলে নিজেকে ওর কাছ থেকে দূরে রাখতে কষ্ট হয়ে পরবে।আচ্ছা তিশা কি এখনো বুঝতে পেরেছে আমি ওকে কতো ভালোবাসি।এক নাম্বারের গর্দভ, আমি খুব ভালো করেই জানি.....ও হয়তো এখনো বুঝেনি।😐
কিভাবে ওকে বুঝাবো।আমাকে দেখলেই এরিয়ে চলে।মনে হয় আমি কোন জঙ্গল এর বাঘ ওকে গিলে খেয়ে ফেলবো।ওওও আল্লাহ এ মেয়েটাকে একটু বুদ্ধিদেও।তা না হলে আমার জীবন তেজপাতা করে তুলবে।
(জিসান তিশার দিকে এক নযরে তাকিয়ে মনে মনে কথাগুলো বলছে আর হাসছে)😊
-সীমা তোকো অনেক সুন্দর লাগছে,জিজু দেখলে পাগল হয়ে যাবে।(তিশা)
-তাই তুমিও কোন দিক দিয়ে কম লাগছো না।দেখনা... বউ আমি আর সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে আছে।কতো জনকে আজ ঘায়েল করে দিচ্ছো কে জানে।(সীমা)
-তাইনি জেলাস ফিল করছো গো....(তিশা মুখটা একটু ভেঙ্গছিয়ে সীমা কে বললো।
-চারদিক নজর করতে গিয়ে হঠাৎ জিসান এর চোখ পড়লো সকালের ছেলে তিনটার দিকে।ষ্টেজ এর পাশে একটা গাছে দাঁড়িয়ে কথা বলছে আর তিশার দিকে তাকাচ্ছে।ওরা তিশাকে নিয়ে কিছু একটা বলছে এটা জিসানের বুজতে আর বাকি রইলো না।তাই সে তাড়াতাড়ি রায়হানের কাছে গেলো,আর সব খুলে বললো।রায়হানকে ছেলেগুলোকে দেখিয়ে বললো,এদের কে এখানে ইনভাইট করছে।
-মামা দেখোতো এদের চিনেননি,মামা তাকিয়ে দেখলো এরা এই এলাকার মেম্বার এর ছেলে আর তার বন্ধু।রায়হান মামাকে সব খুলে বললো, সকালে কি কি হলো,আর এখনও ওরা তিশাকে ইশারা করে কি জেনো বলছে।(রায়হান মামার সাথে)
-হে আল্লাহ কি বলস।আমাকে আগে বলস নাই কেনো।এরা একবার যার দিকে নযর দেয় তার জীবন নস্ট করে দেয়।এই এলাকার অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে।মেম্বার এর ছেলে বলে কেউ কিছু করতে পারে না।দেখ তোরা তিশার দিকে একটু নযর রাখিস।ওকে একা কোথাও যেতে মানা করিস।টিক আছে।আল্লাহ... আল্লাহ করে দুদিন ভালোয়ভালো গেলেই হলো।তার পর এক মিনিটও তোদের এখানে থাকার দরকার নাই।(তিশার মামা)
-জিসান ও রায়হান টেনশনে পরে গেলো।তাই তারা সিদ্ধান্ত নিলো জিসান যেহেতু মেহমানদের বেশির ভাগকেই জানে না তাই জিসান শুধু তিশার দিকে নযর রাগবে,আর রায়হান মেহমানদের আপ্যায়ন করবে।
-জিসান তিশাকো কিছু বলিস না,অর মনটা খারাপ হয়ে যাবে।টেনশন ও করবে।(রায়হান)
-হুমমম টিক বলেছিস। ওকে বুজতে দেয়া যাবেনা,অর আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে।
-রায়হান চলে গেলো,কারন মামার একার পক্ষে এতো কিছু করা সম্ভব না।আর জিসান দূর থেকে তিশাকে পাহারা দিচ্ছে।
-একজন একজন করে সীমাকে সবাইকে গায়ে হলুদ দিলো,রায়হান ব্যস্ত বলে জিসানকে ভাই হয়ে হলুদ দিতে বললে সবাই।জিসান সীমার কপালে একটু হলুদ দিয়ে একটু মিস্টি খাইয়ে দিলো।হঠাৎ তিশা বলে উঠলো এতো মিস্টি খাইস না.... বিয়ের আগেই মুটকি হয়ে যাবি।
-তিশার কথা শুনে জিসানের খুব হাসি পেলো।একটু হলুদ নিয়ে তিশার নাকে লাগিয়ে দিলো।সীমার কথা না ভেবে তুই নিজেকে দেখ দিন দিন কোলবালিশ হয়ে পড়ছিস।তোর জামাইয়ের কোলবালিস কেনা আর লাগবে না,তোকে পেলেই হবে।
-জিসানের কথা শুনে তিশার মাথা নস্ট হয়ে গেলো।কিকিকি।আমি কোলবালিস? কোন দিক দিয়ে। আপনার চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।ঢাকায় গিয়ে চোখের ডাক্তার দেখাবেন। আর আপনে আমাকে হলুদ দিয়েছেন কেনো।বিয়ে কি আমার।🤨
-না তোর না,তবে শুনেছি বউয়ের হলুদ কুমারী মেয়েদের দিলে তার বিয়ে নাকি তারাতারি হয়।তাই আর কি তোকে দিয়ে দিলাম যাতে করে তোকেও আমরা তারাতারি বিদায় করতে পারি।😜
-তিশাতো রেগে গিয়ে চলে যেতে চাইলে সীমা বাধা দেয়।আরে কই জাস,জিসান ভাইয়া তোর সাথে দুষ্টুমি করছে।দেখস না মিটমিটিয়ে হাসছে।তিশা খেয়াল করলো সত্যিই জিসান হাসছে অর দিকে তাকিয়ে।
-তিশা মনে মনে যতো গালি ছিলো সব জিসান কে দিলো।🤬
-অনুষ্ঠানের গান বাজনাও শুরু হয়ে গেলো।সবাই অনেক আনন্দ করছে।ছেলে পক্ষ আর মেয়ে পক্ষের মধ্যে অনেক খেলা চলছে,গিফট আদান প্রদান।কেউ ভাঙ্গা গলায় গান করছে,আবার কেউ নাচছে।যে যেটা পারছে করছে।হঠাৎ তিশার দিকে খেয়াল করলো,একটা ছোট মেয়ে তিশাকে শরবত এনে দিলো,তিশা মেয়েটার সাথে কথা বলছে আর শরবতটা খাচ্ছে।জিসান ভাবলো হয়তো তিশার পিপাসা পেয়েছে তাই মেয়েটা কে দিয়ে আনিয়েছে।
-আরে এটা কার জন্য,ছোট মেয়েটি এটা তোমার জন্য।আমার জন্য কে দিয়েছে।ভাইয়া দিয়েছে মেয়েটি বলে দৌড় দিলো।তিশা ভাবলো হয়তো রায়হান ভাই তিশার জন্য শরবতটা পাটাইছে তাই অন্য কিছু চিন্তা না করে খেয়ে ফেললো।আরে এটার টেস্টটা এমন কেনো।কোমন জানি।হয়তো গ্রামের পানি দিয়ে বানিয়েছে বলে এমন হইছে।তিশা আবার গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠানের।দিকে মন দিলো হঠাৎ মনে হলো তিশার মাথাটা একটু ঘুরাচ্ছে।তিশা ভাবলো হয়তো ক্লান্ত লাগছে বলে এমন হচ্ছে তাই সীমা কে বলে বাড়ীর ভেতরে যাবার জন্য হাটতে লাগলো।মাথাটা খুব বেশি ঘুরাচ্ছে। হাটতেও কস্ট হচ্ছে।
-জিসান এতো ক্ষন একটু সাইড গিয়ে রায়হানের সাথে ফোনে কথা বলছিলো, তাই খেয়ালি করেনি তিশা কখন উঠে চলে গেছে।ফোনটা পকেটে রেখে দেখলো তিশা নাই।আরে তিশা কই গেলো। জিসান সীমাকে জিঙ্গেস করলো,সীমা তিশা কই,তোমার সাথে না ছিলো।
-ভাইয়া ওর নাকি মাথা ঘুরাচ্ছে তাই বাড়ির ভেতরে চলে গেছে।
-মাথা ঘুরাচ্ছে কেনো হঠাৎ। জিসান ও বাড়ির ভেতরে দৌড় দিলো, কিন্তু বাড়ীর ভেতরে তিশাকে পেলো না,আসে পাশে খুঁজতে গেলে হঠাৎ জিসান দেখলো তিশার স্যান্ডেল পরে আছে বাড়ীর পেছনে। জিসান বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে। রায়হানকে ও অনেক কল করলো কিন্তু এতো শব্দে ফোনের রিং রায়হান শুনতে পাইনাই।জিসান আর কিছু চিন্তা না করে বাড়ীর পেছনের দিক হাটতে লাগলো।পেছনের দিকটা একটু জঙ্গলের মতো আর কিছুটা দূরে তিশার মামাদের একটা পরিতেক্ত বাড়ী আছে,যেটা এখন স্টোর রুম বানিয়ে।আসলে আগে ওখানেই তিশার মামারা থাকতো পরে এখানে নতুন বাড়ীকরে ওটাকে স্টোর রুম বানিয়ে রাখছে।জিসান সোজা ওই বাড়ীর দিকে হাটা ধরলো।দেখলো স্টোর রুমের দরজা খোলা, জিসানের মনে একটু খটকা লাগলো, তাই ফোনের লাইটটা ওন করে ভেতরে ঢুকলো।ভেতরে গিয়ে দেখে তিশা অঙ্গান হয়ে পরে আছে মাটিতে।জিসান দৌড়ে গিয়ে তিশাকে জরিয়ে ধরে,আর তিশা তিশা বলে ডাকতে থাকে।হঠাৎ জিসানের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে কেউ বারি মারে আর জিসানও সেখানে অঙ্গান হয়ে যায়।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
পাট ৭-৯
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৭
লেখিকা – তানিয়া
-জিসান দৌড়ে গিয়ে তিশাকে জরিয়ে ধরে,আর তিশা তিশা বলে ডাকতে থাকে।হঠাৎ জিসানের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে কেউ বারি মারে আর জিসানও সেখানে অঙ্গান হয়ে যায়।
"
"
এই কাজ গুলো সকালের ওই ছেলেগুলো করছে, ওদের টার্গেট ছিলো শুধু তিশা।ওরা চাইছিলো তিশা যাতে আর কাউকে মুখ দেখাতে না পারে এমন ব্যবস্থা করবে।ওরা তিশাকে ধর্ষণ করতে চাইছিলো। কিন্তু জিসান এসে পড়ায় ওদের সব প্লান নষ্ট হয়ে যায় ।তাই এখন জিসানকেও ওরা শায়েস্তা করতে চায়।
"
"
-কি রে কি করমু এহন,মাইয়াডার লগে এই শালাও আইসা পরছে।(ওই তিন জনের মধ্যে একজন বললো)
"
"
-মেম্বার এর পোলার নাম ছিলো শাকিব।শকিব বলে উঠলো শোন দুইডারে একসাথেই শায়েস্তা করমু।দেখ কাল কি খেলা হয়।এই কথা বলে তিনটাই হেসে উঠলো।
"
"
অন্যদিকে জিসান ও তিশা দুজনেই অঙ্গান হয়ে মাটিতে পরে আছে।কাল এক ভয়াবহ সকাল হবার অপেক্ষায়
"
"
-অনেক রাত পর্যন্ত হলুদের অনুষ্ঠান চলেছে।এদিকে রায়হান এতোই ব্যস্তছিলো যে তিশার কথা ওর মনেই ছিলো না।কিছু মেহমান চলে গেছে আর কিছু মেহমান বাসায়ই রয়ে গেছে।ক্লান্ত শরীলে যে যেখানে জায়গা পাইছে ঘুমিয়ে পড়েছে।বাড়ি ভর্তি এখনো মেহমান আছে।রায়হানও সোফায় বসার সাথে সাথে শরীলটা ছেড়ে দিছে।তাই সেও সোফায় ঘুমিয়ে পড়েছে।আসলে রায়হান ভাবছে তিশা ও জিসান হয়তো বাড়ির কোথাও না কোথাও ঘুমিয়ে আছে,এখন কাউকে সে ডিস্টার্ব করতে চায় না।
"
"
-আজ বিয়ে বলে সবাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গেছে।সীমা উঠেই আগে তিশাকে খুঁজতে লাগলো,কারন তিশা কাল অসুস্থ ছিলো,আর কাল রাত থেকেই ওকে আর দেখেনি সীমা।পুরা বাড়ি সীমা তিশাকে খুঁজলো কিন্তু পেলো না।সীমার সাথে তিশার মামা মামীও খুঁজতে লাগলো।সীমা দৌড়ে গিয়ে রায়হানের কাছে গিয়ে রায়হানকে ঘুম থেকে উঠার জন্য ডাকতে লাগলো।এই রায়হান ভাই, ভাই,এই ভাই...উঠ।
"
"
-রায়হান ঘুম ঘুম চোখে সীমাকে বকতে লাগলো।কি রে কি হইছে।এতো সকাল সকাল ডাকলি কেন। আরো একটু ঘুমাতে দে।
"
"
-সীমা চিৎকার দিয়ে বললো, ভাই তিশাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।কাল রাতের পর থেকে কেউ ওকে দেখেনি।তুমি জানো ও কোই।
"
"
-রায়হানের মাথায় জেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।কি বলস তুই।তিশা তোর সাথে ছিলো না।ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে।
"
"
-না ভাইয়া।হলুদ শেষ হবার আগেই ও চলে আসছে বাসায়।ওর শরীল ভালো লাগছিলো না বলে।
"
"
-কি....?রায়হান লাপ দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।আমি ভাবলাম ও তোর সাথে আছে তাই রাতে আর খোঁজ নি নাই।আমারি ভুল ছিলো।ওওওও খোদা।
"
"
-রায়হান পাগলের মতো চারদিক তিশাকে খুঁজতে লাগলো।বাড়ীর বাকি মানুষ গুলোও খোঁজা শুরু করে দিলো।হঠাৎ রায়হানের জিসান এর কথা মনে পড়লো।সবাই আছে কিন্তু জিসান নাই এখানে।জিসান কি তিশাকে খুঁজতে গেছে নাকি ওও ঘায়োব।
"
"
সীমা এই সীমা জিসান কে দেখছোস।
"
"
-না ভাইয়া।কাল রাতের পর থেকে আমি জিসান ভাইকেও আর দেখিনি।এমনকি সকালও কোথাও পাওয়া যায় নি।
"
"
-রায়হান যেনো পুরো পাগল হয়ে যাবে এখন।এক দিকে তিশা আরেক দিকে জিসান।দুজনেই ওর কাছের মানুষ, আর দুজনকেই ও জেনো হারিয়ে ফেলেছে মনে হয়।
"
"
-পুরো বিয়ে বাড়ী এখন মরাবাড়ীর মতো হয়ে গেছে।
"
"
-হঠাৎ বাড়ীতে গ্রামের কিছু মুরব্বী এসে হাজীর হলো এরা আসলে সকলেই গ্রামের মেম্বার আর চেয়ারম্যান সাহেবের চামচা।শফিক স্যার মানে তিশার মামাকে উনারা দেখতে পারেনা।এর আগেও কয়েকবার চেস্টা করেও শফিক স্যারকে গ্রাম ছাড়া করতে পারেনি।তাই এবার ও অনেক প্লানিং করে আবার আসছে।তিশার মামাকে অপমান করতে।
"
"
-এদের দেখেই শফিক সাহেব বুজতে পারলো কেনো এরা এসেছে।শফিক সাহেব রায়হানকে চুপ থাকতে ইশারা দিলো।মুখ বন্ধ থাকলেও চোখ জেনো কোন বাধ মানছে না রায়হানের।শফিক সাহেব গিয়ে সৌজন্যতা বজায় রাখতে জিঙ্গেস করলো আরে আপনারা এতো সকাল সকাল এখানে।কি মনে করে।
"
"
-শফিক স্যার কি হুনতাছি আমরা আপনার বোনের মাইয়াটা নাকি কাইল রাত থেকে ঘায়োব।তো কই গেছে কিছু জানতে পারছেন।
"
"
-অন্য একজন বলে উঠলো, কই আর যাইবো মনে হয় রাইতে কারো লগে ভাইগা গেছে।মাইয়াটার চালচলন তেমন ভালা ছিলোনা, গতো দুইদিন যা দেখলাম।(মুখটা একটু বাকিয়ে কথাগুলো বলছে।)
"
"
তাদের সাথের আরো একজন,,,, শুনলাম.. যে পোলাডার লগে ভাগছে ওইডা নাকি রায়হানের বন্ধু,ছি ছি,, ভাবতেও ঘৃণা লাগছে।কেমনে করলো।এহোন সীমার কি হইবো শফিক সাহেব। পোলার বাড়ী যদি জানে মাইয়ার বোন রাতে কারো লগে ভাইগা গেছে তাহলে এই বাড়ীতে উনারা রিশতা করতে কোনদিনও আইবো না।
"
"
-রায়হান এখন রেগে গেলো।একতো বোনকে পাচ্ছে না তার উপর এদের এ ধরনোর কথা। নিজের রাগটা আর কন্ট্রোল করতে পারলো না।চিৎকার দিয়ে উঠলো।খবরদার আমার বোনকে নিয়ে আর একটা খারাপ কথাও আমি শুনতে চাইনা।
"
"
শফিক সাহেব রায়হানকে ধৈর্য্য ধরতে বললো, না হলে সব শেষ হয়ে যাবে।
"
"
-দেখুম আগে তিশাকে খুঁজা খুব জরুলী,আগে ওকে খুঁজে পাই তার পর কি হইছে ওদের মুখ থেকেই শোনা যাবে।।
অন্যদিকে """""
জিসানের জ্ঞান ফিরলো।বাহিরের সূর্যের আলো জানালার ফাকগুলো দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছে।চারদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দও শোনা যাচ্ছে।জিসান অনেক কস্টে চোখগুলো খুলতে চেস্টা করছে।মাথাটা খুব ব্যাথা করছে।হঠাৎ জিসানের খেয়াল হলো কাল রাতে পেছন দিয়ে কেউ ওকে মাথায় মেরেছে।তার ব্যাথা এখনো অনুভব করছে।হঠাৎ জিসানের তিশার কথা মনে পড়লো। জিসান চোখ খুলে তিশাকে নিজের বুকের উপর পেলো।জিসান লাফ দিয়ে উঠে তিশা তিশা করে ডাকতে লাগলো।জিসানের অনেক ডাকে তিশার জ্ঞান ফিরে এলো।তিশা মাথাটা ধরে চারদিক থাকিয়ে ভাবতে লাগলো ও কোথায় এখন।কারন কাল বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে কেউ তিশার হাত ধরে ফেলে,তিশা ঘুম ঘুম চোখে শাকিবকে দেখতে পায়।আর তখনি জ্ঞান হরায়।কিন্তু এ কি জিসান ভাই আপনে এখানে কেন।আর আমি কোথায়।আমার মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে।চোখগুলো খুলতেও অনেক কস্ট হচ্ছে।
"
"
-সব বলবো।আগে এখান থেকে বের হতে হবে আমাদের ।কাল রাত থেকে আমরা এখানে,রায়হান মামা মামী সবাই মনে হয় খুঁজছে আমাদের। উঠ কস্ট করে, দাঁড়াবার চেস্টা কর।
জিসান তিশাকে ধরে উঠালো।জিসান দেখলো দরজাটা একনো খোলা বাহির থেকে।তাই ও আর এক মিনিটও ওখানে না থেকে তিশাকে সাথে নিয়ে বাড়ীর দিকে হাটতে লাগলো।যতো বাড়ীর কাছে আসছে চিল্লানো আর চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পারছে জিসান।জিসান বুজতে পারলো কিছু একটা হচ্ছে বাড়ীর ভেতরে,তানা হলে কেউ আমাদের না খুঁজে এমন চিল্লাচিল্লি কেনো করছে।জিসান মনে মনে ভাবছে আল্লাহ তুমি সাহায্য করো এ বিপদ থেকে রক্ষার জন্য।
"
"
-এ দিক দিয়ে রায়হানের সাথে গ্রামের কিছু মানুষের সাথে তুমুল লড়াই লেগে গেছে।সবাই তিশার নামে আজেবাজে কথা বলছে বলে।
"
"
-জিসান বাড়ীর ভেতরে ডুকে ঘাবরে যায়।বাড়ী ভর্তি মানুষ দেখে।পরিস্থিতি বুজার চেস্টা করছে।কি হচ্ছে এসব।এতো মানুষ কেনো এখানে।জিসান একটু জোরেই রায়হান কে ডাকদিলো।ডাকের সাথে সাথে বাড়ী ভর্তি মানুষ পেছনো তাকিয়ে দেখলো তিশা ও জিসান দাঁড়িয়ে আছে।তিশা টিক মতো দাঁড়াতেও পারছে না জিসান ধরে রাখছে।রাহয়ান দৌড় দিয়ে তিশাকে এসে ধরলো।
"
"
-তিশা এই তিশা কি হইছে তোর, এই অবস্থা কেনো।বল,,,বল কিছু।
"
"
-তিশা শুনতেতো পারছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।
ক্লান্ত আর ঘুম ঘুম চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখে সব মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে।আসলে তিশা বুজতে পারছে না কেন।তিশার পুরো শরীল কাপছে।কিছু বলতে চাইছে কিন্তু ভয়ে কিছুই বলতে পারছে না।
"
"
-সবাই তিশাকে কেমন নযরে জেনো দেখছে।জিসান বুঝার চেস্টা করছে, সবাই তিশাকে দেখে এমন করছে কেনো।হঠাৎ জিসান তিশার দিকে একটু ভালো করে তাকালো, দেখতে পেলো তিশার ব্লাউজ টা কিছুটা ছিড়া।ঠোটের লিপস্টিক আর কাজলটাও ছড়ানো।শাড়ীর কুছিগুলোও টিক না।জিসান এবার বুঝতে পারলো কেনো সবাই তিশার দিকে আড় চোকে তাকিয়ে আছে।
"
"
এদিক দিয়ে রায়হানকে জরিয়ে ধরে তিশা কাঁদতে লাগলো কিন্তু কিছু বলছে না।কি আর বলবে ও।কেউ কি ওর কথা বিশ্বাস করবে।
"
"
-জিসান মামী আর সীমাকে ইশারা করলো তিশাকে ঘরে নিয়ে যেতে।
"
"
-গ্রামের কিছু মহিলা বলাবলি করা শুরু করেদিলো,দেখছোস মাইয়ার কাম,লজ্জা শরমের মাথা খাইছে মনে হয় ।সারা রাইত আকামকুকাম কইরা মুখ কালা করছে।মামা মামী তো দূরহে থাহুক বোইনডার কথাও চিন্তা করেহ নাই।এহোন আবার এই মুখ হবাইরে দেহাইতে আইছে।
"
"
-তিশা সব শুনতে পাচ্ছে,আর চোখ দিয়ে অশ্রু ফেলছে।
"
"
-জিসান সব রাহয়ানকে খুলে বললো।,রায়হান স্তব্ধ হয়ে পরলো।কি হলো এক রাতে।এতো কিছু হয়ে গেলো আর ও রাতে বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিলো।এখন কি হবে।কিভাবে গ্রামের এই অশিক্ষিত মুর্খ মানুষ গুলোকে বুঝাবে।।
"
"
-জিসান রায়নহান কে সান্তোনা দিলো,এতো ভাবছিস কেনো আমি এখন এসে পড়েছি,তুই একা না।চল দেখি কে কি বলছে।সবার প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো।
"
"
-তিশার মামাকে সবাই অনেক অপমান করছে,লোকটা নিরবে সব শুনছে,সীমার বিয়ে ও নাকি এরা আর হতে দেবে না,গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলছে।
"
"
-ব্যাশশশশশ....।(খুব জোরেই শব্দটা করেছে জিসান।)
"
"
-জিসানের এ ধরনের আচরণ এ উপস্থিত সবাই অবাক।
তাদের সামনে এসে বললো।সমস্যা কি আপনাদের।একটু খুলে বলবেন।আর আপনারা এই বিয়ে বাড়ীতে এসে এতো চেচামেচি কেনো করছেন। কি জানতে চান আমাকে বলুন আমি বলবো।কেন এই নির্দোষ মানুষকে অপমান করছেন।
"
"
-এতো ক্ষনে চেয়ারম্যান সাহেব ও এসে হাজির হইছে।সব কিছু শুনলো সবার থেকে।
"
"
-দেখছেন দেখছেন চেয়ারম্যান সাহেব,আফনের সামনেই কেমন বেহায়ার মতো প্রশ্ন করছে।এতো বড় কুকাম কইরা এহোন ভালা সাজতে আসছে।
"
"
-জিসান আবার বলে উঠলো কি কুকাম আমরা করছি একটু খুলে বলবেন।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৮
লেখিকা – তানিয়া
-গ্রামের সব মানুষের সাথে জিসানের অনেক তর্ক হচ্ছে।এসব কিছু তিশা ঘরে বসে শুনছে।আর ভয়ে হাত পা কাপছে তিশার।কি করবে, কি হবে.....। এ ভেবে তিশা অস্থির হয়ে পড়ছে।
আর জিসান সবাইকে বুঝানোর অনেক চেস্টা করছে।কিন্তুু সবাই তিশা আর ওর নামে নোংরা নোংরা কথা বলছে যা জিসানের সহ্যেরসীমা পার হয়ে যাচ্ছে।
রায়হান ও শফিক (তিশার মামা) ও সবাইকে বুঝাবার ব্যর্থ চেস্টা করছে।
-একসময় জিসান ধৈর্যহারা হয়ে সবাইকে বললো।তিশা আমার বিবাহিত স্ত্রী, আর স্বামী-স্ত্রী এক সাথে সারা রাত যদি ছিলো এতে আপনাদের কোনো সমস্যা হতে পারেনা বলে মনে করি।(কিছু বুজতে না পেরে মিথ্যা কথা বললো,কারন বিপদ আসলে মাথায় তখন কোন ভালো বুদ্ধি আসে না।)
-জিসানের এ কথায় উপস্থিত সবাই চুপ হয়ে গেলো।রায়হানও কিছু বুজতে পারলো না,জিসান এটা কি বলছে। রায়হান ভালো করেই জানে এটা মিথ্যা কথা কিন্তুু এতো বড় মিথ্যা কথার পরিণাম কি হবে।
-উপস্থিত সবাইকে চুপ থাকতে দেখে,জিসান বললো,তিশা আর আমি একজন আরেক জনকে ভালোবাসি।কিন্তু রায়হান যদি না মানে তাই আমরা লুকিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি,আর রায়হান ও এই ব্যাপারটা জানে না।সময় হলে ওকে বলতাম কিন্তু আজ পরিস্থিতির কারনে বলতে হলো।
.....জিসান একটু রায়হানের দিকে তাকিয়ে... সরি বললো।রায়হান এখনো অনেকটা শকট এর মধ্যে আছে।
-এর মধ্যে অনেকে বললো, আমরা মানি না এডা মিছা কথাও তো হইতে পারে।কেমনে মানুম এই ছ্যাড়া ছ্যারি জমাই বউ।সবাই প্রমাণ চায়।এই বিবাহের কি প্রমাণ আছে।
""তখন মেম্বার ও জিসানের উদ্দেশ্য বলে উঠলো,তোমার কাছে কি সাক্ষী আছে, তোমরা জমাই বউ।
""জিসান কিছুটা ভেবে উত্তর দিলো,দেখুন প্রমাণ ঢাকায়, আমি কি প্রমান পকেটে নিয়ে ঘুরি।আমাকে কালকের দিন সময় দিন।
-কিন্তুু উপস্থিত কেউ জিসানকে এক দিনও সময় দিতে রাজী হলো না।তাই জিসান রেগে সবাইকে জিঙ্গেস করলো ঠিক আছে,আপনারাই বলুন কি করলে বিশ্বাস করবেন।তিশা আমার বউ।😡
(একটি সময় পেলে জিসান কোনো না কোনো পথ বের করতে পারতো এই বিপদ থেকে বাচার জন্য,কিন্তুু এখন.......)
-মেম্বার সবার সাথে যুক্তি পরামর্শ করে জিসানকে বললো,আমাগো গ্রামে এমন ঘটনা ঘটলে এটা ক্ষমা কোন ভাবেই করা হয় না।ছেলে মেয়ে উভয়কেই শাস্তি পেতে হয়।শফিক স্যার তা ভালো করাই কইতে পারবো।কিন্তু তোমরা যেহেতু জামাই বউ,তাহলো তোমাগো শাস্তি দিতে চাইনা।শুধু কারো জাতে মনে কোন সন্দেহ না তাকে তার জন্য তোমারে সবার সামনে আবার বিয়ে করতে হইবো তিশা ডারে।তাহলে আর কাউরো কোনো সমস্যা হইবো বলে মনে হয় না।
-আবার বিয়ে.......এটার কি দরকার।(জিসান)🥺
-আরে মিয়া,আমরা তো তোমারি বউর লগে বিয়া দিমু,অন্য মাইয়ার লগে না।নিজের বউরে একবারের জায়গায় দুইবার বিয়ে করবে তাতে সমস্যা কি।
শুনো আর কোন কথাই শুনতে চাইনা।তারাতারি বিয়াডা কইরা আমাগো বিদায়করো।
-জিসান রায়হানের দিকে তাকালো।রায়হান ও অসহায়ের মতো জিসানের দিকে তাকালো।
(এই তাকানোর অর্থ অনেক কিছুই বলে দিচ্ছে,রায়হান ভাবছে, জিসান পরিস্থিতি সামাল দিতে মিথ্যা তো বলে দিলো,কিন্তু এখন কি হবে,বিয়েটা কি করতে রাজি হবে তার বোনের সম্যান পাচাবার জন্য)
-জিসান সবাইকে বললো, টিক আছে আপনারা বিয়ের ব্যবস্থা করুন,এখনি হবে।রায়হান সীমা আর মামীকে বলো তিশাকে তৈরি করতে।উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বললো,আপনারা কিছু মনে না করলে আমিও একটু জামাটা চেন্জ্ঞ করে আসি।
-মেম্বার ও বলে উঠলো,হো...যাও বাজান পাক পবিত্র হয়ে আসো,এতোক্ষনে আমরা সব রেডি করি।কি বলো সবাই....?হো হো,,,, টিক কইছেন।
-রায়হান ভেতরে গেলো তিশার কাছে।তিশা সব শুনেছে ঘরে বসে,তার পরও রায়হান অনেক বুজালো তিশাকে, কারন এই মুহুর্তে আর কোন উপায় নাই।শুধু তিশা না সীমার জীবনও নস্ট হয়ে যাবে যদি বিয়েটা না হয়, তিশা ভাইকে জরিয়ে ধরে অনেক কাদলো,কিছুই বলতে পারলো না।বোন যা কাদার এখনি কেঁদে নে,বাহিরে একদমই কাঁদবি না, বাহিরের সবাই জানে তোর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।তোকে এভাবে কাঁদতে দেখলে সবাইর সন্দেহ হবে।
:বোন আমার শোন,আমার দিকে তাকা,(তিশা মাথা উঠিয়ে ওর ভাইয়ের দিকে তাকালো)তোর মনে হয় আমি এমন কোনো ডিশিশন নিবো যা তোর জন্য ভালো হবে না,আমার প্রতি বিশ্বাস আছে। (তিশা মাথা নেড়ে হ্যা জনাব দিলো)শোন.... জিসান অনেক ভালো একটা ছেলে,আমি চাইলেও তোর জন্য এমন ছেলে খুঁজে আনতে পারতাম না,ও বেচে থাকতে তোর ক্ষতি কোন দিনও হতে দেবে না,তোকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করবে।যেমন আজ করছে।তুই অনেক ভাগ্যবান তিশা জিসান তোকে বিয়ে করতে রাজী হইছে।একদিন তুইও বুজবি।।।।আচ্ছা বাদ দে....। সীমা তিশাকে রেডি কর তারাতারি। এ কথা বলে রায়হান চলে গেলো বাহিরে।
জিসান গোসল করে নতুন আরেকটা পান্জাবী পরে নিলো।
""""তিশাকে জিসান ভালোবাসে,তাই তিশাকে বিয়ে করতে ওর কোন সমস্যা নাই,কিন্তু এভাবে বিয়ে করার কথা কখনো চিন্তা করেনি।জিসান আগে তিশার মনে জায়গা করতে চায়েছিলো। কিন্তুু পরিস্থিতির স্বীকার এখন সবাই।মনে মনে ভাবছে জিসান।তিশার মনের অবস্থা ও ভালো করেই বুঝতে পারছে,কিন্তুু কিছু করার নেই।ভাগ্যের লিখন কেউ পাল্টাতে পারে না।"""
-জিসান বের হয়ে দেখলো কাজী এসে সব রেডি করে বসে আছে।তিশাকে আনতে রায়হান গেলো।
-জিসান একটা চেয়ারে বসে আছে,( কনে আসছে কেউ বললে।)জিসান পেছনে তাকায়,তিশা একটা লাল শাড়ি পড়ছে।হাতে কিছু চুড়ি,আর ঠোটে একটু লিপস্টিক ,চুল গুলো ছারা। হয়তো সীমা জোর করে এগুলো লাগিয়ে দিয়েছে।টিক নতুন বউয়ের মতোই লাগছে তিশাকে।জিসানের পাশের চেয়ারে তিশাকে বসালো।রায়হান টিক ওর বাসেই বসলো।তিশা মাথাটা নিচা করে বসে আছে,কিছুক্ষন পর কাজী কবুল বলতে বলে,তিশার চোখ দিয়ে অজান্তে এক ফোটা জল পড়ে।রায়হান বুঝতে পারে,তাই তিশার হাতটা গিয়ে ধরে।তিশা মাথাটা উঠিয়ে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কবুল বলে।এর পর জিসানও কবুল বললে বিয়েটা ওখানেই সম্পূর্ণ হয়।
-রায়হান তিশাকে ঘরে নিয়ে যা।এখনতো আপনাদের মনে আর কোন প্রশ্ন নেই।যদি কোন সমস্যা না থাকে,তাহলে দয়া করে এখন আপনারা সবাই আসতে পারেন।আমার বোনের আজ বিয়ে, আর আমাদের অনেক কাজ আছে,এমনেই সব কিছুতে দেরি হয়ে গিয়েছে।আশা করি আমার বোনের বিয়েতে আপনারা কোন সমস্যা করবেন না।সবাই বিয়েতে এসে আমার বোনকে দোয়া করে যাবেন।(জিসান কথাটা বলে ঘরে গিয়ে শোফাতে বসে পড়লো)
-তিশার মামাও সবাইকে বিদায় দিয়ে ঘরে এসে বসলো।রায়হান দৌড়ে গিয়ে জিসানকে জরিয়ে ধরলো,আর কাঁদতে লাগলো।জিসান রায়হানের এমন আচরণ এ কিছুটা আবাক হয়ে গেলো।আর রায়হান কে কোনদিনও কাঁদতে দেখেনি জিসান। রায়হান খুব শক্ত প্রকৃতির মানুষ, সহযে ইমোশনাল হয় না,আর সে মানুষ আজ কাঁদছে, তার মানে অনেক.....।তিশা দরজায় দাড়িয়ে সব দেখছে।জিসান রায়হানকে জোর করে ছাড়ালো।
হে ব্রো...!!!কি হলো তুই কাঁদছিস কেনো।আরে আমাকে বল।
-রায়হান জিসানের হাত দুটো ধরে বললো,তুই জানোস না জিসান তুই আজ আমাদের কি উপকার করলি।তুই শুধু তিশাকে না, সীমার জীবনটা ও নস্ট হতে বাচালি।আজ আমাদের পুরো পরিবার কে তুই এই বিপদ থেকে উদ্ধার করলি,তোর ঋন শোধ করার মতো না।
তিশার মামা মামীও কাঁদতে লাগলো,আসলেই তারা আজ অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পয়েছে,শুধু জিসান এর কারনে।
-জিসান এবার একটু রেগে গেলো,থাপ্পর মেরে তোর সব দাত ফেলে দিবো,কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছোস, তোর মাথা কি টিক আছে।আর তোর এসব কথা বলার সাহস হলো কি করে।আরেক দিন যদি দেখুম তুই এসব ঋন ফিন এর কথা বলছোস, তোর সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ করে দেবো।
-রায়হান হেসে জিসানকে আমার জরিয়ে ধরলো।
(বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই এমন,এখানে নো সরি আর নো থ্যাংকু।)
জিসান মামা মামীর কাছে গিয়েও মামা মামীকে সান্তনা করলো।আরে অনেক হইছে কান্নাকাটি আর না,রাতে বর পক্ষ আসবে বাসায় অনেক কাজ আছে,তাই সবাই কান্না কাটি বাদ দিয়ে কাজে নেমে যাও।সবাই হেসে উঠলো।জিসানের চোখ হঠাৎ তিশার দিকে পড়লো,তিশার মুখে এখনো হাসি নাই।
-রায়হান,,,,,,।(জিসান)
-হুমমমমমম.......
-তিশা কাল রাত থেকে না খাওয়া, তুই খাইয়ে দে ওকে,তোকে ও মানা করতে পারবে না।(জিসান)
-বাবা তুমিও খেয়ে নেও কিছু, তুমিওতো খাওনি সেই কাল থেকে।(তিশার মামী)
-টিক আছে মামী চলুন। তারপর কাজ ও আছে অনেক।।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প _ ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ০৯
লেখিকা – তানিয়া
**আজ সীমার বিয়ে,চারদিকে অনেক মানুষের আগমন। অতিথি আপ্যায়ন এ সবাই ব্যস্ত। জিসান ও রায়হানও খুব ব্যস্ত।কিছুক্ষন পর বর ও আসবে।তাই এই সময় সবাই যে যার কাজ নিয়ে মগ্ন,এদিক দিয়ে সীমা অনেক চেস্টা করেও তিশাকে রেডি করতে পারলো না,সে ঘরের বাহিরে কিছুতেই যাবে না। ঘর ভর্তি মানুষ বলে ছাদে গিয়ে দাড়িয়ে আছে সে কখন থেকে।আর বাড়ীর চারপাশের লাইটগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।
**কতো আনন্দ করবে বোনের বিয়েতে,কতো কিছু করবে,সীমার হবু হাসবেন্ড কে কিভাবে ঝালাবে সবই ভাবা ছিলো,কিন্তুু এখন সব শেষ....!একটা ঝড় এসে মনে হয় তিশার সব স্বপ্নকে লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে।তিশা কিছুতেই লোকজনের সামনে যেতে চায় না,মনে হয় সবাই ওর দিকে আর চোখে দেখছে,আর হাসছে।এসব মনে মনে ভেবেই চলছে**
**সীমা বার বার রায়হানকে ফোন দিচ্ছে কিন্তুু রায়হান মানুষের ভিড়ে ফোনের শব্দ শুনতে পেলো না।তাই বাধ্য হয়ে জিসানকে ফোন দেয়।
**হে মা আমরা কালই রওনা দেবো। তুমি চিন্তা করো না।এসে তোমাকে ফোন দেবো।ওকে মা এখন রাখি।পরে কথা বললো।আল্লাহ হাফেজ,বলে ফোনটা কাটার সাথে সাথে ই সীমার ফোনটা এলো।
**হ্যালো সীমা বলো....(জিসান)
**হ্যালো ভাইয়া আপনে কি ব্যস্ত।
**না বলো কিছু লাগবে।(জিসান)
**আসলে ভাইয়া তিশাকে কিছুতেই রেডি করাতে পারছি না,ও নাকি বেরই হবে না,মন খারাপ করে ছাদে বসে আছে।রায়হান ভাইকে ফোন দিলাম সে মনে হয় ব্যস্ত তাই ফোন ধরছে না,আপনে একটু দেখুন না ওকে রাজি করাতে পারেন কিনা।।।প্লিস ভাইয়া।
**তুমি চিন্তা করো না, আমি দেখছি।
**জিসান ছাদে গিয়ে দেখে তিশা ছাদের এক পাশে দাড়িয়ে আছে।এখনো বিয়ের শাড়িটা পড়ে আছে।দেখতে অপরূপ লাগছে তিশাকে।কিন্তু চোখ মুখ ফুলে আছে,হয়তো কাদার কারনে।
**তিশা কি করছোস এখানে।এখনো রেডি হোসনি কেন।(জিসান তিশার পাশে গিয়ে কথাটা বললো)
**তিশা এখনো চুপ।
**কি রে কথা বলবি না।আমি কি খুব বেশি অপরাধ করে ফেলেছি। আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না।দেখ আমি জেনে এটা করেনি।অনেক কস্ট দিয়ে ফেলেছি তোকে।আই এম সরি তিশা। রাগ করিস না আমার উপর,দেখ....এ কথা বলে জিসান তিশাকে নিজের দিকে ঘুরালে। তিশা জিসান কে হঠাৎ জড়িয়ে ধরে।আর জিসানের বুকে মাথা রেখে চিৎকার করে কাদতে থাকে।
জিসানও হতোভম্ভ হয়ে যায়।এই প্রথম তিশা নিজ ইচ্ছায় জিসানকে জড়িয়ে ধরেছে।জিসানের বুঝতে বাকি নেই,তিশা খুব ভেঙ্গে পড়েছে,আজকের এই ঘটনার কারনে।যতো তারাতারি সম্ভব তিশাকে এই কস্ট থেকে মুক্তি দিতে হবে।
**আমি নিচে যাবো না,ওই লোক গুলো আমাকে নিয়ে আাবার খারাপ খারাপ কথা বলবে।আমাকে নোংরা চোখে দেখবে।আমি আর নিতে পারবো না।আমার কি দোষ ছিলো।আমি কিছু করিনি।তাহলে কেনো ওরা আমাকে খারাপ বলছে।আমি সত্যি বলছি আমি কিভাবে ওখানে গেলাম আমার কিছুই মনে নেই।ওরা আমার সাথে খারাপ কিছু করেছে কিনা তাও জানি না।এ কথা গুলো বলছে আর জিসানের বুকে মাথা রেখে কান্নায় ভেঙ্গে পরছে।
**জিসান বার বার তিশাকে সামলানোর চেস্টা করছে।কিন্তু তিশার মনের কস্টটা একটু বেশিই ছিলো।চিৎকার করে কাঁদতে চাইছিলো কিন্তুু সারা দিন ঘরবর্তি মানুষ থাকায় তিশা তার মনের কস্টে গুলো প্রকাশ করতে পারে নি।তাই এখন জিসানকে দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি,চোখের পানির বাধ জেনো ভেঙ্গে গেছে।
**জিসান ও তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে আছে।জিসানের চোখ দিয়ে দুফোটা নোনাজল তিশার কপালে এসে পড়ে।তিশা বুঝতে পারে জিসানও কাঁদছে। তাই নিজেকে সামলিয়ে জিসানকে ছেড়ে দেয়।কিন্তুু জিসান তিশাকে ছাড়ে না।ওকে বুকের মধ্যে শক্তকরে এখনো জড়িয়ে আছে।জিসান ছাড়ছে না বলে,আমি টিক আছি এখন প্লিস ছাড়ুন আমাকে।তিশার কথায় জিসানের ধ্যান ভাঙ্গে।
**কিছুক্ষনের জন্য সীমা আর মামা-মামীর জন্য নিজের কস্ট টাকে একটু ভুলে যা।কথা দিলাম যাদের কারনে তোকে কস্ট পেতে হলো, তারা সবাই কঠোর শাস্তি পাবে।।শুধু কিছু ক্ষনের জন্য হলেও রেডি হয়ে নিচে আস।কেউ তোকে কিছু বলবে না,আর যদি বলেও তাহলে তাদের সব প্রশ্নের উত্তরও আমি দেবো।আমি থাকতে তোর গায়ে কেউ একটা আঙ্গুল ও তুলতে পারবে না।আমার উপর বিশ্বাস আছে।
**তিশা মাথা নাড়িয়ে হ্যা জবাব দিলো।
**যা সীমা বসে আছে তোর জন্য,তোকে ছাড়া ও বের হবে না।আমি ও আসছি একটু পর।
**তিশা নিচে নেমে সীমার রুমে চলে গেলো
**আর জিসান একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোয়ায় নিজের কস্টটা উড়িয়ে দিচ্ছে আজকের রাতের জন্য।কারন তিশার চোখের পানি জিসানকে কুড়িয়ে খাচ্ছে।তাদের সবাইকে জিসান শাস্তি দিবে কিন্তু আজ না কাল।যাদের কারনে তিশার আজ এ অবস্থা, কাউকে মাপ করবে না।
**সিগারেট শেষ করে জিসান নিচে গেলো তিশার জন্য,তিশা আজ লেহেঙ্গা পড়েছে,হালকা সাজেও খুব সুন্দর লাগছে।তিশার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে তিশার হাতটা ধরে বাহিরে নিয়ে গেলো।এতোক্ষনে বরপক্ষও এসে পরেছে।তিশা ও জিসানকে এক সাথে দেখে সবাই তাকিয়ে আছে,কারন তাদের এক সাথে অনেক সুন্দর লাগছে।তিশার পাশে জিসানকে দেখে কেউ কোন কথাই বলেনি।আর সারা অনুষ্ঠানে জিসান তিশাকে এক সেকেন্ড এর জন্যও ছাড়েনি।সারাক্ষন ওর সাথেই ছিলো।এক সময় সীমার বিদায়ের সময় এসে পরলো।সবাইকে ধরে সীমা কানছে।তিশার জন্য সীমার সবথেকে বেশি কস্ট পাচ্ছে।কারন ওর বিয়েতে না আসলে হয়তো এমন কোন কিছুই হতো না।
সীমাকে বিদায় দিয়ে সবাই ঘরে এসে বসলো।তিশার
মামা মামী এখনো কাঁদছে, তিশা সবাইকে সান্তনা দিয়ে রুমে পাটিয়ে দিলো।
** তিশা,জিসান ও রায়হান ড্রয়িংরুম এ বসে আছে।তিশা সব গুছিয়ে রাখিস আজিই,কাল সকাল হলেই আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবো।এই গ্রামে আর একদিনও থাকতে চাই না।রায়হান তিশাকে বলছে।এখন গিয়ে ঘুৃমা,কাল আবার অনেক জার্নি করতে হবে।
**ভাইয়ের কথা শুনে তিশাও রুমে চলে গেলো।
**জিসান বসে বসে কি জেনো ভাবছে।রায়হানের কথায় ধ্যান ভাঙ্গলো।
**কি রে ঘুৃমাবি না,চল।কাল আবার সকাল সকাল উঠতে হবে।
***হুমমমমম।চল।(জিসান)
আজ সকাল.......
**রায়হান ঘুম থেকে উঠে দেখে জিসান নাই।তাই ফ্রেস হয়ে বাড়ীর উঠানে বসে জিসানের জন্য অপেক্ষা করছে।ফোনটাও সাথে নেয়নি।
হঠাৎ বাড়ীর মেন গেট এ নজর পরলে জিসানকে দেখতে পায়।জিসান বাড়ীর দিকেই আসছে দেখে, রায়হান জিসানের সামনে গিয়ে দাড়ায়।
**আমাকে নিলি না কেন?
**কস্ট যেহেতু আমাকে দিয়েছে তাই শাস্তি আমি নিজেই দিয়েছি।
**তোকে একা দেয়নি আমার বোনকেও ওরা অনেক কস্ট দিছে,অপমান করছে তাই আমারো অধিকার আছে ওদের শাহেস্তা করানোর।
**তুই ভুলে গেছিস রায়হান তোর বোন এখন আমার বউ,আর আমার বউয়ের অপমানের বদলা আমি নিজেই নিতে পারি, আর কাউকে দরকার পরেনি বলে, তোকে নি নাই।
**তিশা ব্রাশ করতে করতে বাড়ীর বাহিরে এসে দেখে রায়হান ও জিসান কথা বলছে।কি বলছে শুনার জন্য একটু কাছে আসলে হঠাৎ জিসানের শার্টের দিকে চোখ পরে তিশার।রক্ত.....!!!এতো রক্ত কেনো শার্ট এ।
**রায়হান ও জিসান দুজনেই বিচলিত হয়ে পড়ে তিশাকে দেখে।
মুরগীর রক্ত এগুলো।মামা মুরগী কাটতে দিছিলো,জিসান মুরগী ধরতেই পারেনা জানস,ছেড়ে দিছে কাটতে গিয়ে।তাই মুরগীর রক্ত ওর শার্টে এ পরেছে।
**তিশা ভ্রুটা কুচকিয়ে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।ওর বিশ্বাস হচ্ছে না রায়হান এর কথা।
**জিসান তিশার সামনে গিয়ে বললো,ব্রাশটা টিক মতো কর,তা না হলে মুখের গন্ধে বাসের সবাই পলাবে।কথাটা বলেই জিসান রুমে চলে যায় ফ্রেস হতে।
**ভাইয়ায়য়য়য়শ দেখছোস কি বলে।
**দেখ আমাকে তোদের ঝগড়ার মাঝে ডাকবি না।(রায়হান)
**জিসান ফ্রেস হয়ে, রক্ত মাখা শার্টটা ব্যাগে ভরে নেয় আর নতুন একটা শার্ট পরে নেয়।পেছনে ঘুরে দেখে তিশা দাড়িয়ে আছে,চোখে ওর অনেক প্রশ্ন।
কি,,,, রে। কিছু বলবি।
**এগুলো মুরগীর রক্ত না,মামা কে আমি জিঙ্গেস করেছি।সত্যিই করে বলুন এগুলো কার রক্ত।
**জিসান প্যান্টের পকেটে হাত রেখে তিশার দিকে আঘাতে থাকে।তিশাও ভয়ে পেছনে ফিরতে ফিরতে দেয়ালে গিয়ে আটকে যায়।
***জিসান দেয়ালের দুদিকে হাত রেখে তিশাকে আটকে দেয়, জাতে তিশা পালাতে না পারে।
কি জানতে চাস,রক্তগুলো কার।বলেছিলাম না, তোকে কেউ টাচ করলে তার হাত দুটা ভেঙে দিবো।আর ওই কুকুর গুলোর কতো বড় সাহস তোর দিকে নযর দিছে,তোকে বেহুঁশ করে ওখানে নিয়ে গেছে।তাই হাত ও পা দুটাই ভেঙ্গে দিছি।আর হা ওরা তোর সাথে উলটা পালটা কিছুই করেনি তাই তাদের জানে মারেনি।কিন্তুু তোকে কস্ট দেয়ার শাস্তি তো ওদের পেতে হবে তাই না।
**তাই বলো আপনে এভাবে শাস্তি দিবেন।(তিশা)
**হ্যা,তোর দিকে কেউ নজর দিলে তাকে এভাবেই শাস্তি পেতে হবে।তাই তুই ও এখন উল্টা পাল্টা চিন্তা করা বন্ধ করে দে।স্বপ্নেও অন্য কারো স্বপ্ন দেখিস না,তাহলে তোকেও জ্বালিয়ে দেবো,আমার ভালোবাসার আগুনে।মনে রাখিস তুই এখন শুধুই আমার।
তিশার মুখে ভয়ের ছাপ দেখে জিসান তিশার কপালে একটা ভালবাসার পরশ দিয়ে দিলো।
যা তারাতারি রেডি হয়ে নে।কিছুক্ষন পর আমরা রওনা দেবো।তিশাও এক দৌড়ে ওর রুমে চলে গেলো।।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

পাট ১০-১২
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১০
লেখিকা – তানিয়া
""জিসান, তিশা ও রায়হান সবাইকে বিদায় দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো,তারা পৌছাতে পৌছাতে বিকেল হয়ে গেলো।জিসানও তিশাদের বাসায় গেলো কারন তিশাদের বাসার গ্যারেজ এ হুন্ডাটা রেখে গিয়েছিলো তা নিতেই ওদের সাথে আসছে।রায়হান অনেক বললো ঘরে আসতে কিন্তুু আজ না পরে আসবো।এখন বাসায় যাওয়া জরুলী বলে চলে গেলো।
""তিশা ঘরে ডুকার সাথে সাথে তিশার মা তিশাকে ধরে কাঁদতে লাগলো।কারন রায়হান ফোন করে সব বলেছিলো, যা যা হইছে।তিশা মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে মাকে গালে কতো গুলো চুমো দিয়ে বললো মা দেখো আমি টিক আছি।তুমি এভাবে কাঁদলে আমিও কেঁদে দেবো কিন্তুু! দেখো মা কতো দূর জার্নি করে এসেছি, আমার পেটে খোরগোশ দৌড়াচ্ছে।খুব ক্ষুধা পাইছে।
"""আচ্ছা আচ্ছা যা তুই ফ্রেস হয়ে আস,আমি এখনি খাবার রেডি করছি।তোর পছন্দের চিংড়ীর মালাইকারি রান্না করছি।
"""সত্যিইইইইইইই।(তিশা)
""''হুমমমমমম।
"""আগে আমার কথার জবাব দে।(ভ্রুটা কুচকিয়ে তিশারকে রায়হান)
""কি......(তিশা)
""'ক্ষুধা পেলে সবাই বলে পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে।কিন্তুু তোর খোরগোশ দৌড়াচ্ছে কেনো।
"""ইয়ায়ায়ায়াক।তুমি জানো না আমি ইদুর একদমই সহ্য করতে পারি না।তাহলে আমার পেটে ইদুর কেনো দৌড়াবে।আমার খোরগোশ পছন্দ তাই আমার পেটে খোরগোশই দৌড়ায় ক্ষুধা পেলে।বুজছো.....।
(তিশা মুখ ভেঙ্গছিয়ে চলে যায়।)
""আসলে রায়হান ইচ্ছা করেই ওর সাথে এমন করেছে,যাতে তিশার মনটা ভালো হয়ে যায়।
জিসানের বাড়ী....
"""গল্পের নায়ক জিসানের পরিচয় এখন দেয়া হবে,এতো দিন প্রয়োজন ছিলো না তাই দেয়া হয়নি।
জিসান তৌফিক হাওলাদার এর মেঝো সন্তান।জিসানেরা তিন ভাইবোন।তাওহিদ,জিশান আর ছোট বোন নিশি।তাওহিদ জিসানের বড় ভাই, বাবার সাথে ফ্যামিলি বিজনেস এ জরিত।জিসানেরা এলাকার স্থানীয়। আর ওর বাবাও এলাকার নামীদামী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন।বড় ভাই তাওহিদ এর স্ত্রীর নাম তানজিলা।আর মা রাবেয়া বেগম কে নিয়ে জিসানের পরিবার।আর সবার আদরের মধ্যমনি হলো জিসান।জিসানকে তার পরিবার কখনো কিছু বলে না।শুধু জিসানের রাগটাকে সবাই ভয় পায়।জিসানের রাগ খুবই খারাপ সহযে কাউকে মাপ করে না,তাই ওর ফ্যামিলি কখনো কোন কিছুতে বাধা দেয় না।
""""জিসান বাড়ীর কলিংবেল বাজাচ্চে।গেট খুলতে আসছে জিসানের ছোট বোন নিশি।
"""নিশি-ভাইয়য়য়য়া। জরিয়ে ধরে।আরে ভাবি কই।
""""জিসান -ভাবি কই মানে,ভাবি ওর বাসায়।
"""নিশি-কেন ওর বাসায় কেনো।আমিতো ভাবলাম তুমি সাথে করে নিয়ে আসবে,সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে।
"""জিসান-পাগল.....।তুই ছাড়া বাসায় কেউ জানে না বিয়ের কথা।আগে সবাইকে বলি তার পর....
"""নিশি -কবে বলবা,সবাইকে।
"""জিসান-দেখি আজই বলে দেবো।বাবা আসুক তার পর।
"""জিসানের মা-কিরে তোরা দরজায় দাঁড়িয়ে ভাই বোন কি প্লানিং করছোস।
"""মার কথায় জিসান নিশিকে চুপ থাকতে ইশারা করে।
আরে মা কিছু না, তুমিতো জানো ওও কেমন,এসেই আগে আমার মাথা খাচ্ছে।এখন বলো তুমি কেমন আছো(মাকে জরিয়ে ধরে)
""জিসানের মা-পাগল ছেলে আমার,আমি ভালোই আছি,তুই বল।সব ঠিকঠাক হয়েছে তো।
"""জিসান-মানেনননন।(জিসান একটু ভয় পেয়ে)
""জিসানের মা,আরে বাবা,তুইনা রায়হান এর মামাতো বোনের বিয়ে খেতে গেলি,বিয়েটা ঠিকঠাক মতো হলো কিনা তা জানতে চাইলাম।আর তুই এতো মানে মানে করছিস কেন,সব ঠিক আছে তো।
""জিসান-হে মা সব ঠিক আছে।তুমি খাবার রেডি করো,আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
""জিসানের মা-আচ্ছা যা।
নিশি মুখ চেপে হাসছে, ভাইয়ের কান্ড দেখে।
""জিসান-ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে বসলো।ভাবি ভাইয়া আর বাবা কখন আসবে।
""তানজিলা(জিসানের ভাবি)-এইতো আসতে আসতে ৭টা-৮টা বাজবে।কেনো,খুব বেশি দরকার।
""জিসান-তোমাদের সবার সাথে আমার কিছু কথা আছে তাই।
""তানজিলা -ওওওও তো কি এমন ইমপোর্টেন্ট কথা,আমাকে আগে বলো।
""জিসান-না না সবাইকে এক সাথেই বলবো।
""তানজিলা -ওকে।
""জিসান খাবার খেয়ে রুমে চলে গেলো।কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া দরকার।
রাতে সবাই খাবার টেবিলে বসছে
""রাবেয়া বেগম-জিসান সবাইকে কি বলতে চাস বল।সবাইতো আছে এখন।তোর কি টাকা পয়সা লাগবে।
""জিসান-না মা,আমার টাকা লাগলে তোমাকেই বলতাম।
""জিসানের বাবা-রাবেয়া এই বয়সে তোমার ছেলে টাকা না লাগলে আর কি চাইবে,বিয়ে করার জন্য কাউকে পছন্দ হইছে মনে হয়।
""জিসানের মা-আরে কি বলো,আমার ছেলে কাউকে পছন্দ করবে,আর আমি জানবো না।আর যদি কাউকে পছন্দ হয় সমস্যা কি,ওর যাকে পছন্দ হবে আমরা তাকেই বউ করে আনবো।
বল বাবা তুই কি বিয়ে করতে চাস।
""নিশি মুখ চেপে আসছে।
""তানজিলা -নিশি কি হইছে তুমি হাসছো কেন এতো।
""জিসান-আসলে মা বিয়ে করতে চাইনা,বিয়ে করে ফেলছি।।।।🥺
খাবার টেবিলে সবাই....কিকিকিকিকি।
"""জিসান মাথা নিচু করে আছে।হ্যা মা আমি বিয়ে করে ফেলছি।
"""নিশি-সবাই এমন করছো কেনো।দেখো ভাইয়া লজ্জা পাচ্ছে।
""রাবেয়া বেগম-নিশি তুই চুপ থাক।আর জিসান এসব কি বলছোস, আমরা কখনো তকে কিছুতে মানা করছি,তুই বললে আমরাই বিয়ে করিয়ে দিতাম এভাবে একা একা কাউকে কিছু না বলে বিয়েটা করে ফেললি।আমাদের কথা একবারও চিন্তা করলি না।(জিসানের মা রাগ করে)
""জিসানের বাবা-কবে করলা।
""জিসান-গতকাল
""তাওহিদ -তো মেয়েটা কে।আর তুইতো বিয়ে খেতে গেলি আর নিজেই বিয়ে করে ফেললি।
""তানজিলা -কি হলো দেবারজি, বলো তোমার বউয়ের নাম কি,কি করে।
""জিসান-একবার সবাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,,,,তিশা।
"""তিশাশাশাশাশশা।উপস্থিত সবাই এক সাথে.....🙄
""জিসান -নিরব।
""তাওহিদ -রায়হানের বোন।রাইট।
"""জিসান -হুমমমমমম।
"""'তাওহিদ -এই কারনেই বলি এতো ঘন ঘন ওদের বাসায় যায় কেনো।
""জিসানের বাবা-তুমি আমাদের বলতে পারতে একবার,আমরাই সবাইকে রাজি করিয়ে বিয়েটা করিয়ে দিতাম।এভাবে করাটা মানে কি।
"" জিসান এর পর সবাইকে বললো,গ্রামে কি কি হইছে, আর কোন পরিস্থিতির মধ্যে বিয়েটা করতে হলো।
""খাবার টেবিলে সবাই চুপ।কেউ কিছুই বলছে না।
""জিসান-আমি কি কোন ভুল করেছি বাবা।
""জিসানের বাবা -আমি আজ খুব গর্বিত মাই স্যান।তুমি দুটো পরিবারকে বাঁচিয়েছো।তাদের সম্মান রক্ষা করেছো।তুমি ভুল কিছুই করো নি।।
""তানজিলা -ছবি আছে তোমার কাছে দেখাও, তিশাকে দেখতে চাই।
""জিসান নিজের ফোনটা থেকে তিশার কিছু পিক বের করে দিলো।
""তিশাকে দেখে সবার পছন্দ হলো।।।।।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১১
লেখিকা – তানিয়া
:জিসান মায়ের কলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে।মা তুমি কি আমার উপর রাগ করেছো।
:মা কি সন্তানের উপর রাগ করে থাকতে পারে...বল.
:তাহলে কিছু বলছো না কেন।আমার উপর রাগ হলে আমাকে মারো, বকো,কিন্তু চুপ করে থাকবে না।তুমি আমার সাথে কথা না বললে আমার যে কিছুই ভালো লাগে না,জানো না।
:পাগল ছেলে আমি তোর উপর কেনো রাগ করবো।তুই তো এমন কোন অপরাধ করিসনি।আচ্ছা বলতো,সত্যি করে বলবি,তুই কি তিশা কে পছন্দ করিস।
:মা আমি তিশাকে ভালোবাসি।নিজের জীবন থেকেও বেশি ওকে ভালোবাসি।কবে, কখন, কিভাবে জানি না কিন্তুু এতোটুকু জানি ও ছাড়া আমি শূন্য। আমার খালি জীবন কে ভরাট করার জন্য ওকে আমার প্রয়োজন।
(জিসান অর মায়ের সাথে খুব ফ্রি,সারা দিন কি করে না করে সবই ওর মাকে বলে,তাই আজও ওর ফিলিংস কাউকে বুঝতে না দিলেও মায়ের কাছে লুকায় নি)।
:আর তিশা!!!!!! তিশা কি তোকে পছন্দ করে।
:জানি না মা..... ও কখনো আমাকে সেই চোখে দেখেছে কিনা জানি না।আমিও তো আমার ফিলিংস ওকে কখনো বুজতে দেইনি।
:কিন্তুু আমার তো ভয় হয় তকে নিয়ে,তোর জিদ আর রাগের কারনে তুই সকলের কাছ থেকে আলাদা হয়ে জাস,তিশা কি তোর সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে।
:জিসান ওর মার হাতটা ধরে,তুমি চিন্তা করো না,যেদিন ও আমাকে মন থেকে মেনে নিয়ে ভালোবাসবে,আমার জিদ ও রাগটাকেও আপন করে নিবে।আমি ওকে আমার মতো বানিয়ে নেবো।
:দেখিস আবার ওকে জব্দ করতে গিয়ে তুইনা আবার জব্দ হয়ে যাস।(জিসানের মা একটি হেসে)
শোন রায়হান কে বলে দিস আমরা এই শুক্রবারেই আসছি।আমরা তো তিশাকে দেখেছিলাম,তাওহিদ এর বিয়ের সময়, তখন তো ও আরো ছোট ছিলো।আর এখনতো ও এই বাড়ীর ছোট বউ,আমাদের ও তো কিছু দায়িত্ব আছে।
:আচ্ছা মা আমি বলে দেবো।
২দিন জিসানের সাথে কোন দেখা বা কথা হয়নি তিশার।
:দুদিন পর জিসান রায়হানদের বাড়ীতে আসছে,তিশাকে পড়াতে।এদিক দিয়ে রায়হানের চাকরীটাও হয়ে গেছে।
তিশার মা দরজা খুলে দেখে জিসান দাঁড়িয়ে আছে।
আরে বাবা তুমি এসো এসো ভেতরে এসো।তুমি সেদিন দেখা না করেই চলে গেলা। কাজটা টিক করোনি।
:আসলে আংটি বাড়ীতে যাওয়াটা খুব দরকার ছিলো।কারন বাসার কেউ কিছু জানতো না আর আমি চাইনা তারা অন্য কারো থেকে কিছু জানতে পারুক।তাই আর কি....
:আারে তুমি কি এখনো আমাকে আংটি বলবে।মা ডাকবে এখন থেকে।
(জিসান একটি লজ্জা পেলো কথাটা শুনে।
:ওকে মা।আসলে আমি তিশাকে পড়াতে আসছি।ওর কিছু সমস্যা ছিলো, আমি বলেছিলাম গ্রামের বাড়ী থেকে এসে সোলভ করে দেবো।তাহলে আর ওর পরীক্ষাগুলো দিতে সমস্যা হবে না।তাছাড়া আমাকেও তারাতারি বাবার ব্যবসায় জয়েন হতে হবে।বাবা ওয়ার্নিং দিয়েছে।
:আচ্ছা টিক আছে, কিন্তুু তোমার বউতো আজ দুদিন ধরে খেয়ে আর ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে। যাও তুমি ওর রুমে গিয়ে ডাক দেও।
:বউ শব্দটা শুনে জিসানের খুব ভালো লাগলো।তিশার রুমে গিয়ে দেখি আমার ম্যাডাম হাতপা গুটিসুটি করে গুমিয়ে আছে।ওড়না টেবিলে রাখা।ওকে অনেক আদর করতে মন চাইছিলো,ভালোবাসা দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরতে মন চাইছিলো।কোনও কিছু চিন্তা না করে ওর গালে একটা কিস করে দিলাম,কিন্তু ম্যাডামের কোন সারা নেই,বুজলাম সে ঘুমে দিশাহারা।
তাই ওর পাশেই ফ্লোরে গিয়ে বসে ওর ঘুমন্ত মুখের মায়ায় জেনো পরে গেছি।
তোকে খুব কাছে পেতে মন চাইছে তিশা।তুই আমার নেশায় পরিণত হচ্ছিস।তোর নেশাটা আমাকে ভেতর থেকে পুড়িয়ে ফেলছে।তোকে পাবার জন্য কতো কাল নিজেকে পুড়িয়ে ছাই করেছি তা তো তুই জানিসই না।এখন থেকে আমার ভালোবাসায় তোকেও আমি পুরাবো,তোর মন, দেহে শুধু আমার নেশাই জরিয়ে থাকবে।একদিন তুইও আমার ভালোবাসায় নিজেকে পুড়িয়ে মারতে চাইবি।এগুলো বলে জিসান তিশার ঠোঁটের দিকে আগাতে তাকে।
আরে এই আমি কি করছি,নিজেকে আরো সংযত করতে হবে আর তো কিছুদিন তার পর তিশা আমার শুধুই আমার।তিশার দিকে তাকিয়ে,তোকে বধু সাজিয়ে আমার ঘরে নিয়ে যাবো।তার পর মন ভরে তকে ভালোবাসবো,আমার ভালোবাসাটা তোর সহ্য হবে তো....।একটু হেসে
জিসান উঠে গ্লাস থেকে হাতে একটু পানি নিয়ে তিশার মুখে মারে।তিশা ভয়ে লাফিয়ে উঠেই....
:এই কেকককক রেরররর।
:জিসান লাইটটা ধরিয়ে চেয়ার থেকে ওরনাটা নিয়ে তিশার দিকে ছুড়ে মারে।আর নিজে চেয়ারে গিয়ে বসে পরে।
:তিশা তো শোকড,প্রথমত জিসানকে নিজের ঘরে দেখে,তার পর শোকড এভাবে ওর দিকে ওড়না মারার জন্য।
আপনে এখানে কি করেন,আর আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম আপনাকে আসতে কে বলছে এই ঘরে।
:জিসান-মা বলছে।(জিসান মোবাইল টিপছে আর বলছে)
:তিশা-মা কার মা।
:জিসান-আমার শ্বাসুড়ী,আর তোর মা।
:তিশা-শ্বাসুড়ীইইই।
:জিসান-হুমমমম,তোর কি আর কিছু বলা আছে,তাহলে বল,আর যদি না থাকে তাহলে তারাতারি ফ্রেস হয়ে পড়তে বস।
:তিশা-আপনে আমাকে পড়াতে এসেছেন।কিন্তু কেনো???
:জিসান-কেনো মানে,এটা কেমন প্রশ্ন।
:তিশা -আরে আমি তো বিয়ের ডরে আপনার কাছে পড়তে রাজি হয়েছিলাম।পরীক্ষায় খারাপ করলে নাকি ভাইয়া আর বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে,তাই এতো দিন আপনার অত্যাচার সহ্য করছি।কিন্তু লাভ কি হলো,সেই বিয়েতো হয়েই গেলো।তা আবার হিটলারের সাথে।তাহলে আমি এখন আর কেনো পরে নিজের এনার্জি নস্ট করবো।কথাগুলো একনাগাড়ে বলে জিসানের দিকে চোখ যায়।
(জিসান রেগে তিশার দিকে তাকিয়ে আছে)
হে খোদা এ আমি কার সামনে কি বললাম।
সরি জিসান ভাইয়া,আসলে..... আর কোন কথা বলতে দিলো না।
:জিসান-মন চাইতাছে ওকে একটা থাপ্পড় মারি,রাগটা এতো ক্ষন কন্ট্রোল করলেও জিসান ভাইয়া শুনে মাথা নস্ট হয়ে গেছে।
জিসান তিশার হাতটা পেছনের দিকে বাকিয়ে নিজের দিকে টেনে আনে,তিশা জিসানের বুকের সাথে মিশে আছে,ভয়ে মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
:জিসান - কি বললি, আমি হিটলার,তোর উপর অত্যাচার করি।আর লজ্জা করে না নিজের স্বামীকে ভাই বলে ডাকিস,কেউ শুনলে আমার মান সম্মান কিছু থাকবে না।আর বিয়ে হয়েছে বলে কি পরতে হবে না।
পরীক্ষা খারাপ করলে আমার শাস্তি থেকে তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না,বুজলি।কথা বলিস না কেন,,,
:তিশা:সরি,ভুলে বলেছি,আর প্লিস আমাকে ছাড়ুন, আমার খুব লাগছে।
জিসান তিশাকে ছেড়ে....
:সরি,একটু জোরেই ধরে ফেলেছি।যা ফ্রেস হয়ে তারাতারি আস।
:তিশা ফ্রেস হয়ে পড়তে বসলো।জিসান শুধু তিশার সমস্যা গুলো সমাধান করে চলে গেলো।
রাতে ডিনারে....
:বাবা জিসানের পরিবার এই শুক্রবার আসছে।তিশাকে দেখতে,আর আংটি পড়াতে আসবে,যাতে কেউ কোন উল্টাপাল্টা কথা না বলতে পারে।কারন ওদের বিয়েটা তো কেউ এখনো জানে না।তাই তারা......তিশার বাবা আর কথা বলতে দিলো না।
:হুমমমম,আমি বুঝতে পারছি, আর কিছু বলতে হবে না।আমি এতেই খুশি জিসানের পরিবার খুব সহযে বিয়েটা মেনে নিলো।তোমরা সবাই শুক্রবারের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নেও।
:তিশা শুনছে সবই কিন্তু কিছু বলার নাই।
:তিশা রাতে ফেসবুকে ডুকে কিছু সময় কাটাচ্ছিলো ঘুম আসছিলো না বলে।
হঠাৎ একটা ম্যাসেজ আসলো,যা দেখে তিশার চোখ কপালে উঠে গেলো।
:কি রে এতো রাতে তুই অনলাইন এ কেনো।কার সাথে গল্প করছিস,কয়টা বাজে এখনো ঘুমাসনি কেনো।নাকি তোকে ঘুম পারাতে আমি আসবো।
ম্যাসেজ টা আর কারো না জিসানের।
তিশা ভয়ে ফোনটাই বন্ধকরে শুইয়ে পরে।
জিসান এমন কেনো,সব সময় রাগ করে কথা বলে,মনে হয় ছোটবেলায় করলা একটু বেশি কাইছে,উনার মাকে জিঙ্গেস করতে হবে।এই লোকটার সাথে সারা জীবন কিভাবে কাটাবো, হে আল্লাহ, আমাকে রক্ষা করো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১২
লেখিকা – তানিয়া
- আজ থেকে তিশা কলেজে যাওয়া শুরু করলো আবার।অনেক দিন কলেজে যায় না।আজ নিলুও আসেনি,অসুস্থ বলে।তাই তিশা একাই গেলো,আবার কলেজ শেষে একাই বাসার দিকে রওনা দিলো।কিন্তু পথে আজ আবিরের সাথে দেখা হয়ে গেলো।
- আরে তিশা কোথায় যাও।
- আবির ভাই,এতো দিন পর,কোথায় ছিলেন।কোন খোঁজ খবর ছিলোনা এতোদিন।
- আরে আমি একটু ঢাকার বাহিরে কাজে গিয়েছিলাম।কিন্তুু তোমারও তো কোন খবর নাই।তুমি তো পারতে আমাকে একটা কল দিতে।
- আসলে ভাইয়া আমিও ঢাকায় ছিলাম না,কাজিন এর বিয়েতে গিয়েছিলাম।এতোদিন কলেজও আসেনি। আজই আসলাম।
- ওওও আচ্ছা,তাই বলো।নিলু নাকি অসুস্থ।
- হুমমমম,আমি ও আজই জানতে পারলাম।
- তুমি কি যাবে দেখতে ওকে।গেলে চলো আমার সাথে আমি তো ওর বাসায়ই যাচ্ছি।
- না থাক ভাইয়া আমি বিকেলে গিয়ে দেখে আসবোনি।আপনে জান।
- আরে না না। তোমার কোন কথাই আজ শুনবো না।তুমি এখনই আমার সাথে যাবে।কতোদিন পর দেখা হলো,তোমার সাথে কথা বলিনা, অনেক দিন হলো।
- এক ধরনের জোরাজোরি করার পর তিশা উপায় না পেয়ে আবিরের সাথে এক রিকশায় উঠে পরে।
- নিলু আর আবিরের সাথে অনেক গল্প করে তিশা বিকেলে বাসায় আসে।
- বাড়ীতে এসেই,,,,,,,।
কিরে এতো দেরি করলি কেনো।(তিশার মা)।জিসান কখন থেকে এসে বসে আছে তোর ঘরে জানোস।আর তোর কোন খবর নাই।
- জিসানননন.....।উনি আসবে আমাকে তো বলেনি।তাহলে আমি কি করে যানবো।(তিশা একটু আশ্চর্য হলো)
- তিশা ঘরে গিয়ে দেখে জিসাম বসে আছে।আজ জিসান কে অন্য রকম লাগছে তিশার।চোখে মুখে কেনো জানি রাগ দেখা যাচ্ছে।
- স্যার আপনে আসবেন আমি তো জানতাম না,জানলে তারাতারি আসতাম।
- জিসান উঠে আমার সামনে এসে দাড়ালো,আমার হাতটা ধরে খাটে বসালো।টিক আমার সামনে একটা চেয়ার নিয়ে বসে তার দুপায়ের মাঝে আমাকে আটকিয়ে ফেললো।আমিতো চুপচাপ বসে আছি আর ভাবছি আজ আবার কি হলো।এই রাক্ষসটা এমন রেগে আছে কেনো।
- কোথায় ছিলি তুই।
- আ... মিমিমি।নিলুদের বাসায় গিয়েছিলাম, নিলু অসুস্থ তাই।
- ছেলেটা কে তিশা।
- তিশা উঠে দাড়িয়ে গেলো।কো..ননন.....ছেলে।(ভয়ে তিশার গলা শুকিয়ে গেলো)
- জিসান তিশার হাতটা ধরে আবার অর সামনে বসিয়ে দিলো।যার সাথে রিকসায় বসেছিস,কেনো মনে পরছে না।
- তিশা ভয়ে নিচের দিকে তাকিয়েই বলছে, ওওওও তো আবির ভাইয়া।
- কে এই আবির ভাইয়া যাকে আমি চিনিনা।দেখেতো মনে হয়না তোর সাথে পড়ে।তাহলে কে....?
- নি নি নিলুর কাজিন।
- নিলুর কাজিন তোকে চিনে কিভাবে।
- নিলুর বাসায় পরিচয়ে হয়েছিলো।নিলুকে দেখতে যাচ্ছিলো,তাই তার সাথে আমিও গিয়েছিলাম।আর কিছুনা।
- পরিচয়টা মনে হয় খুব ঘনিষ্ঠ তা না হলে ছেলেটা বলার সাথে সাথে তুই ওর সাথে চলে গেলি।
- জিসান তিশার হাতটা ধরে এক টান দিয়ে তিশাকে সামনে টেনে আনে,তিশার মুখের উপর জিসানের গরম নিশ্বাস পড়ছে,তা তিশা বুঝতে পারে।
- নিলুর বাসায় সেজেগুজে যাওয়ার কারণ কি এই আবির।
- তিশা ভয়ে কাঁপতে থাকে।না না না কি বলছেন,এমন কিছুই না বলে তিশা উঠে দাঁড়াতে চায়।
- জিসান রেগে তিশার দুই বাহু খুব শক্ত করে ধরে,কি মনে করিস তুই, আমি বোকা কিছুই বুঝি না,নাকি নিজেকে খুব বেশি চালাক মনে করিস।তুই যা খুশি তাই করবি আর আমি জানতে পারবো না।তুই কবে বুঝবি আমার ভালোবাসা, নিজের ক্যারিয়ার ফেলে শুধু তোকে পাহাড়া দি,যাতে কেউ তোকে নজর দিতে না পারে,আর তুই কিনা নিজের নজরে অন্যকে বসাতে চাস,কেনো বল।আমার ভালোবাসার কি কোন মুল্য নেই তোর কাছে,তুই ছাড়া কোন মেয়েকে কাছে আসতে দেয়াতো দূরে থাক চোখ তুলে দেখিনি।শুধু তোকে ভালোবেসে গিয়েছি।বিনিময় তোর থেকে কিছুই চাইনি।কিন্তু এখন তুই শুধু আমার ভালোবাসা না,আমার বিবাহিত বউ, আর আমার বউয়ের মুখে অন্য কারো নাম আমি কিছুতেই শুনতে চাইনা।আমি আগেই বলে দিয়েছি, তোকে কেউ হাত দিলে আমি তাকে যেমন মাপ করবো না,টিক তুই কারো কাছে গেলে আমি তোকেও কিন্তুু মাপ করবো না।আমার শাস্তি থেকে তুই নিজেকেও বাঁচাতে পারবি না।মনে রাখিস আমি ভালোবেসে তোর জন্য মরতে পারি,তেমনি তুই অন্যকারো হতে চাইলে নিজ হাতে তোকে মেরে ফেলবো।এর পর নিজেও মরবো।
- জিসানের চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না,আর তিশার চোখ দিয়ে তো অশ্রু বেয়েই চলছে😩😩😩
- প্লিস আমাকে ছাড়ুন, আমার খুব লাগছে।
- তোর খুব লাগছে,আমারো এমন লেগেছে তোকে আবিরের সাথে দেখে।
- আপনে ভুল বুজছেন, আমার আর আবির ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছুই নেই।
- না থাকলে তোর জন্যই ভালো।জিসান কথাটা বলেই তিশাকে ছেড়ে দেয়।ওখান থেকে চলে যায়।
- তিশা খাটের উপর বসেই কান্না করছে।কেনো কান্না করছে তা হয়তো তিশা নিজেও টিকমতো জানে না,আবিরকে তিশা পছন্দ করে,কিন্তুু ভালোবাসে না।আর জিসান তো এখন ওর স্বামী, তাই ভালোবাসতে চায় কিন্তুু ভয়ে ভালোবাসতে পারেনা।সেই ছোট কাল থেকে জিসানকে দেখে আসছে কিন্তুু সেই চোখে কখনো দেখেনি।তাই অনেক সংশয় কাজ করে তিশার মাঝে।
- সেদিন এর পর থেকে তিশা আর জিসানের মধ্যে কোন কথা হয়নি।জিসান রায়হানের কাছ থেকে তিশার সব খবর নিচ্ছে কিন্তুু তিশার সাথে কোন কথা বলে না।
- আসতে আসতে শুক্রবার এসে পড়েছে।আজ জিসানের বাড়ী থেকে সবাই আসবে।তিশার বাবা মার সাথে কথা বলে সব ঠিকঠাক করে তিশাকে আংটিও পড়িয়ে যাবে।
- তাই সকাল সকাল ই তিশার বাড়ী মেহমান দিয়ে ভরে গিয়েছে,তিশার কিছু কাজিন আর ফুফুরা আসছে।তিশাকে তার কাজিনরা ও নিলু মিলে রেডি হতে সাহায্য করলো।আজ তিশা একটা নীল রংয়ের শাড়ী পড়লো,আর সাথে কিছু হালকা সাজ।এতেই ওকে অনেক সুন্দর লাগছে।আর তিশা ভালো করেই জানে বেশি সাজ জিসানের একদমই পছন্দ না,,,,এর জন্য তিশা একদিন থাপ্পড় ও খেয়েছিলো জিসানের হাতে। সে থেকে তিশা খুব হালকা সাজই দেয়।
- কিছুক্ষন পর জিসানের পুরো পরিবার এসে পড়েছে।সাথে জিসানও।এই প্রথম জিসান এই বাড়ীতে রায়হান এর বন্ধু হয়ে না বরং এ বাড়ীর জামাই হয়ে এসেছে। তাই জিসানের খাতিরদারি এখন ভিন্ন।
- কিছুক্ষন পর তিশাকেও নিয়ে আসে।
- জিসানের মা, এইতো আসছে আমার বউ মা।জিসানের মা তিশাকে জিসানের পাশেই বসালো।আর উনিও তিশার সাথেই বসলো।
আমার তো তিশাকে খুব পছন্দ হয়েছে।ওর পরীক্ষা না থাকলে আমরা আজই নিয়ে যেতাম আমাদের বাসায়।
জিসানের মার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো।
- এর পর একটা আংটি জিসানকে দিলো তিশাকে পড়িয়ে দেবার জন্য,তিশা হাত বাড়াতে দেরি করছিলো বলে জিসান নিজেই তিশার হাতটা ধরে আংটিটা পড়িয়ে দিলো।আর তিশাকেও জিসানকে আংটি পড়িয়ে দিতে হলো।
- এভাবে ওদের এংগেসমেন্টটা হয়ে গেলো।কিছুক্ষণ পর তিশার কাজিনরা জিসান ও তিশার কিছু ভালো ভালো পিক তুললো একটু জোর করেই।
- যাওয়ার সময় জিসান সবার থেকে বিদায় নিলেও তিশার সাথে একটা কথাও বলনি।
- তিশা জিসানের এই ব্যবহার দেখে কিছুটা অবাক হলো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

পাট ১৩-১৫
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৩
লেখিকা – তানিয়া
*তিশার পরীক্ষা আজ, তাই সবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে বাড়ী থেকে বের হলো,রায়হান আগেই বাড়ীর বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।আজ রায়হান নিজেই নিয়ে যাবে বোনকে।
বাড়ী থেকে বের হয়ে দেখি জিসান দাঁড়িয়ে আছে।রায়হান ভাই আর জিসান কথা বলছে।আমাকে দেখে জিসান শুধু একবার তাকালো,আর সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলো।রায়হান ভাইয়ের হাতে একটা ব্যাগ দিয়ে হুন্ডাটা নিয়ে চলে গেলো,আমি তো শোকড। লোকটা আজও একটা কথা বললো না।আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলো।
আমি রায়হান ভাইয়ের পাশে দাড়ালাম।
আরে তুই আসছোস,আরো একটু আগে আসলে জিসানের সাথে দেখা করতে পারতি,বেচারা এতোক্ষন এখানেই ছিলো তোর জন্য।
তোমার বন্ধু আমাকে দেখেই পালিয়েছ, এ কথা তোমায় কিভাবে বলি।তিশা মনে মনে.....।
নে ধর, এটা তোর জন্য জিসান দিয়েছে।
কি এটাতে.....।
আরে আমি কি করে বলবো।তোকে দিয়েছে তুই দেখ।আমি বরং একটা রিকসা নিয়ে আসি।
একটা সোপিং ব্যাগ এর মতো,ব্যাগটা খুলে দেখলাম, আরে এখানে একটা চকলেট বক্স, একটা কলম,একটা খুব সুন্দর হাতের ঘড়ি আছে।আর একটা চিরকুট,
"সব চিন্তাবাদ দিয়ে ভালোমতো পরীক্ষা দিস।"
আমার খুব হাসি পেলো চিরকুট টা দেখে।
রায়হান ভাই আমাকে হলে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
আসার সময় নিলুর সাথে আসতাম।
পরীক্ষার এ কয়দিন জিসানের সাথে আমার একবারও দেখা হয়নি।কিন্তুু জিসান প্রতিদিনই রায়হান ভাই বা মায়ের কাছ থেকে আমার সব খবর নিতো।
এভাবে এক এক করে সব পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো,আর আজ আমার লাস্ট পরীক্ষা তাই কিছু ফেরেন্ডরা ডিসিশনস নিলাম পরীক্ষার পরে একটা ছোট পার্টি করবো,কারন এর পর হয়তো কেউ কাউকে দেখবো না।
যেমন বলা তেমন কাজ,পরীক্ষার পর সবাই একটা রেস্টুরেন্ট এ গেলাম।আমাদের সাথে আমাদের কোচিং এর কিছু ফেরেন্ডরাও যোগ দিলো।
সবাই খাবার অর্ডার করে গল্প করতে লাগলাম।হঠাৎ আবিরও কোথা থেকে যেনো হাজির হয়ে গেলো।আবিরকে দেখে তো আমি আবাক। কারন অর এখানে কি কাজ।
আরে আবির ভাই, আপনে এখানে।কোন কাজে আসছেন।
না তোদের পার্টিতে জয়েন হতে আসছি,আমি থাকলে কোন সমস্যা।
না সমস্যা হবে কেনো,আপনে কিভাবে জানলেন আমরা এখানে।
আরে নিলুকে কিছুক্ষন আগে কল করলাম ও বললো তোরা সবাই নাকি পার্টি করতে এখানে আসছোস।তাই আমিও বিনা ইনভার্ট এ এসে হাজির হলাম
ওওওও আচ্ছা।আমিতো নিলার দিকে তাকানোর সাথে সাথে বেচারি ভয় পেয়ে গেলো।
কি মনে করে যেনো আমি একটু পিছনের দিকে তাকলাম,কিন্তু যা দেখলাম মনে হলো,আমার এখনি মনে হয় দম বন্ধ হয়ে যাবে।
পেছনের দুটা টেবিল পরেই কয়েকজন বসে আছে তাদের মধ্যে একজন আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে,এই চোখ অনেক চেনা,চোখগুলো থেকে মনে হয় আগুন বের হবে, আর আমাকে জ্বালিয়ে দেবে।কারন এই চোখ দুটো আর কারো না জিসানের।
এই দুনিয়াতে কি আর কোন লোক নাই,ঘুরেফিরে জিসানের সামনেই কেনো পরি আমি।পোড়া কপাল আমার, যার ভয়ে দুনিয়া ছাড়ি সেই আমার সাথে মরে।হে আল্লাহ আমাকে বাঁচিও এবার।তার উপর এই আবির আর সময় পাইনি আসার,,,,ওর জন্য কতো কি হলো।জিসান তো মনে করবে,আমিই আবিরকে আসতে বলছি।রেগে মেগে নিলার দিকে তাকালাম।
কিরে তুই এতো রেগে আছিস কেনো,সরি ইয়ার।আর আবির ভাই আসছে তো কি হইছে,সে তো আর অপরিচিত কেউনা।
রেগে আছি কেনো,দেখ আমার যম পিছে বসে আছে।
নিলু পিছে তাকিয়ে তো বেচারি শোকড, আরে জিশশশশান ভা,,ভা,,ই।
হুমমমমম,জিসান।এবার বুঝতে পারছো আমি রেগে আছি কেনো।
আরে মাপ করে দে দোস্ত, তোর জামাইয়ের কি কোন কাজ নাই,এখানে কি করে,আর সে জানলো কি করে তুই এখানে।
আরে আমি কি করে বলবো,মনে হয় কোন কাজে আসছে,তাইতো পরিবেশ এতো শান্ত।
হুুমমমমম,মনে হয়।তারা তারি খেয়ে চল চলে যাই।তা না হলে জিসান ভাই এসেই তোকে ঠাশঠাশ করে লাগিয়ে দিবে।
দুই বান্ধবী মিলে মিনমিন করেই কথাগুলো বলছে।
এদিক দিয়ে জিদ্দের চোটে জিসানের চেহারা লাল হয়ে গেছে,আজ আবার তিশাকে আবির ছেলেটার সাথে দেখছে।যা জিসানের একদম পছন্দ না,কিন্তুু জিসান তবুও চুপ হয়ে আছে কারন সাথে ওর কিছু ফেরেন্ডরাও আছে,আর ওরা কেউ তিশাকে আগে দেখেনি,তাই এখানে সিনক্রিয়েট করতে চায়না জিসান।
জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কপি খাচ্ছে আর বলছে, যা করার করে নেও সোনা,এর পর তোমাকে আমার খাচায় বন্দি হতেই হবে।তখন দেখবো তুমি উড়ো কিভাবে।
তিশা আর কোন কথাই বললো না কারো সাথে,আর আবির তো সেই কখন থেকে বাজতেই আছে,যা তিশার একদমই ভালো লাগছে না।
হঠাৎ আবির তিশার সামনে হাটুগেরে বসে তিশাকে প্রপোজ করলো।
তিশা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।বলবো বলবো করে বলা হয়নি,কিম্তু আজ আর মনের কথা মনে রাখতে চাই না,তাই তোমাকে বলেই দিলাম।তুমি কি আমার বউ হবা।
তিশাতো লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো,আবির কি সিনক্রিয়েট করছেন,সবাই দেখছে প্লিজ উঠে চেয়ারে বসেন।
না তিশা তুমি আগে বলো তুমি আমার ভালোবাসা একসেপ্ট করেছো।
তিশারতো মনে চাইতাছে, একটা দড়ি নিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাই,রেস্টুরেন্ট এর সব লোক ওদের দিকে তাকিয়ে আছে,সাথে জিসানও।
জিসান শুধু দাঁতেদাঁত চেপে বসে আছে তিশার উত্তর জানার জন্য।
আবির পাগলামো ছাড়েন,আর এসব আজে বাজে কি বলছেন,কি জানেন আমার সম্পর্কে,,,,,,।আমি বিবাহিত।
না আমি বিশ্বাস করি না,আগেতো কখনো শুনি নাই।আর আজ হঠাৎ বলছো তুমি বিবাহিত, দেখো তিশা একদম মিথ্যা বলবে না।
ও খোদা,,,,,,আরে বেকুব তকে মিথ্যা বলে আমার কি লাভ।ফাজিল কোথাকার,, বিশ্বাস না হলে নিলাকে জিঙ্গেস করে দেখিস।
আর নিলা এই গাধাটা আমার সামনে কোন দিন যাতে না আসে।
তিশা আর এক মুহুর্তেও ওখানে থাকেনি।বাহিরে চলে গেলো।
what is this...নিলু,তিশা আমাকে তুই করে বলছে।এ কেমন ভাষা।আমি কি এমন রং বললাম।
ভাইয়া কিছু বলার আগে জায়গা,আর পরিস্থিতি বুঝে বলতে হয়,আর তুমি তো,,,।বাদ দেও এটা সত্য তিশার বিয়ে হয়ে গেছে।
তাহলে আমাকে কেনো বলিস নি।
আরে তিশার পরীক্ষার পরে সবাইকে বলা হতো।অনেকটা ঘরোয়া ভাবে বিয়েটা হইছে,তাই কেউ জানে না।
বেচারা আবির মনটাই ভেঙে গেলো।
এদিকদিয়ে তিশা....
নিজেকে বকতে বকতে হেটে যাচ্ছে,কচু একটা রিকসাও পাইনা।
হঠাৎ তিশার সামনে একটা বাইক দাঁড়ালো। তিশা বাইক টা চিনে।এটা কার।তিশা ভয়ে পিছাতে চাইলে হঠাৎ জিসান বলে উঠে,,,,,চুপচাপ উঠে বস।খুব গম্ভীর ভাবে কথাটা বলে।
জিসান আর কোন কথা বলে নি।
এখন না বসলে আমার কপালেই খারাপি আছে।তাই চুপচাপ বসে পড়াই ভালো।আরে আমিতো আবার বাইকে উঠতে ভয় পাই।রায়হান ভাইকে শক্ত করে ধরে রাখতাম। কিন্তু এখন কি করি।কিছু বললে আবার কে জানে আমাকে হয়তো বাইকের নিচে ফেলে দিবে।
জিসান ভালো করেই জানে তিশা বাইকে উঠতে ভয় পায়,তাই তিশার একটা হাত টান দিয়ে জিসানের বুকের সামনে নিয়ে আসলো।তিশাও ভয়ে হাত আর সারালো না।
তিশা জিসানের পিঠের সাথে একদম লেগে আছে, এতে তিশার খুবই আনইজি লাগছে।এমন করে আগে কখনো জিসানের সাথে বসেনি।আর জিসানও এর আগে তিশাকে নিজের বাইকে উঠায়নি।কিন্তুু আজ জিসানের খুব ভালো লাগছে,বাইকের আয়না দিয়ে তিশাকে দেখছে,বেচারি তিশা জিসানের এতো কাছে বসায় লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।যা জিসান খুব উপভোগ করছে,একটু আগে তিশার উপর যে রাগ ছিলো তা এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো।
জিসান সারারাস্তায় খুব আস্তেই বাইক চলালো,তিশার জন্য।
কিছুক্ষন পর তিশার বাড়ীর সামনে এলে,তিশাকে নামিয়ে দিয়ে জিসান চলে যায়।
আর তিশা জিসানের যাওয়ার পথে চেয়ে থাকে।তিশা চিন্তা করছে এটা কিভাবে হলো,আমাকে আজ কিছুই বললো না।কেন.....।চান্দু এতো ভালো হলো কেমনে।
তিশা জানেই না জিসান কি প্লান করে আসছে এতো দিন।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৪
লেখিকা – তানিয়া
তিশা বাসায় প্রবেশ করে দেখে, বাসায় মেহমান দিয়ে ভরা,সব আত্মীয় স্বজন কে একসাথে দেখতে পেয়ে তিশা কিছুটা অবাক হয়।তিশাকে দেখে ও সবাই মুসকি হাসাহাসছে।তিশা বড় সবাইকে সালাম দিয়ে সবার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে,মা কে খুঁজতে লাগলো।
তিশা খেয়াল করলো আজ তার বাবা ও ভাই কেউ অফিসে যায় নি।
মা মা.... তিশা চিল্লিয়ে।
আরে তিশা এসে পরেছিস, ভালো হলো,যা আগে ফ্রেস হয়ে আস।তারপর কিছু খেয়ে নিয়ে কিছুক্ষন রেস্ট নে।তা না হলে খুব ক্লান্ত লাগবে রাতে।
মা এসব কি হচ্ছে, বাসায় কি কোন পার্টি হবে।
তিশার বোন সীমাও এসেছে, দেখো যার বিয়ে তার কাম নাই পাড়া প্রতিবেশির চোখে ঘুম নাই।বলেই সবাই হেসে উঠলো।
মা কি বলছে, সীমা।তিশার মাথায় কিছুই আসছে না,এমনেই মেজাজ খারাপ তার উপর সবার এতো ঢং আর সহ্য হচ্ছে না।
সীমা আমার মেয়েটাকে আর লজ্জা দিওনা।তিশা মা তুই আগে ফ্রেস হয়ে এসে কিছু খেয়ে নে।আস্থে আস্থে সব জানতে পারবি।
কারো কথার কোন আগা মাথাও বুজালাম না,আর ভালোও লাগছে না তাই আর তর্ক না করে সোজা রুমে চলে গেলাম।ফ্রেস হয়ে বিছায় বসে বসে ভাবছি সবার কথার মানে।
হঠাৎ ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো, আমার তো চোখ কপালে উঠে গেলো।
"খেয়েদেয়ে, কিছুক্ষন ঘুমা,সন্ধ্যায় দুজন মেয়ে আসবে তকে মেহেদি দিতে।কোন নাটক না করে তাদের মেহেদী লাগাতে দিবি।"
হুমমম টিক ভাবছেন,জিসানের ম্যাসেজ।
আরে মেহেদী কেনো দেবো, পাগল নি।তিশা আবার রুম থেকে বের হয়ে সোজা অর মার ঘরে যায় মাকে খুঁজতে।মার ঘরে গিয়ে তিশা যেনো আকাশ থেকে পড়ছে।
চারপাশে সোপিং ব্যাগ,গহনা, মেহেদী, হলুদের ডালা, আরো অনেক কিছু।যা তিশা শুধু দেখছে কিন্তু বুজে উঠতে পারছেনা এসব কি,আর কার।
হঠাৎ মার ডাকে ভাবনার ছেদ পরে,মা এসব কি,আর এগুলো কার।আমাকে বলে মেহেদী লাগাতে আসবে কেনো।কিছুতো বলো।
নতুন বউ মেহেদী লাগাবে না, কি আমরা লাগাবো।তিশার ফুফি একটু হেসে বললো।
নতুন বউ মানেননন।
আজ বাদে কাল যার বিয়ে তাকে তো নতুন বউ ই বলবো।কি বলো সবাই।আবার সবাই হা হা কারে হেসে উঠে।
আমার বিয়ে, কার সাথে।
এ মা এটা কি ধরনের প্রশ্ন তিশা,তোমার বিয়ে আর কার সাথে হবে জিসানের সাথে।আজ মেহেদি, কাল গায়ে হলুদ,আর পরশু বিয়ে দিয়ে উঠিয়ে দেবো।তিশার মা।
হঠাৎ করে এসব কি,আর আমাকে বিদায় দেবার এতো জলদি কেনো সবাইর। কেউ কিছু বলার প্রয়োজন মনে করলা না আমাকে।
আরে হঠাৎ কই।এক মাস ধরে সব প্লান চলছে।
এতো কিছুর প্লান করেছো আমাকে বলনি কেনো।
আরে পাগলী মেয়ে আমার, জিসান মানা করেছে,তোর পরীক্ষা বলে।তুই জাতে কোন টেনশন না করিস তাই তোর থেকে লুকিয়ে এতো দিন রাখতে হইছে।
ও তো পারে না তোকে আজই নিয়ে যায়।কিন্তুু তুই আমার এক মাত্র মেয়ে অনুষ্ঠান না করে কিভাবে তুলে দি বলতো।অনেক কথা হইছে এখন যা কিছু খেয়ে রেস্ট নে।
তিশাতো রেগেমেগে ফায়ার।সোজা নিজের রুমে গিয়ে দরজাটা ঠাস করে লাগিয়ে দেয়।
বিছানায় বসে, তাহলে এই ছিলো শয়তানটার প্লান,তাইতো আমাকে কিছুই বললো না।কারন আমাকে শাস্তি দেয়ার প্লান তো আগেই করে রেখেছে।কি করবো আমি,কতো ইচ্ছা ছিলো,পরীক্ষার পর কতো ঘুরবো ফিরবো,আনন্দ করবো,সব এক নিমিষে মাটি করে দিলো।আমাকে খাঁচায় বন্দি করার সব প্লান মিস্টার জিসান করে ফেলছে। আমি চাইলেও এ থেকে মুক্তি পেতে পারবো না এখন।এসব ভাবতে ভাবতে তিশা ঘুমিয়ে পড়ে।
সন্ধ্যায়
তিশার ফোনে আবার ম্যাসেজ আছে।
"""তুই এখনো কিছু খাস নি কেনো।উঠ ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি খেয়ে রেডি হয়ে নে।ওরা এসে পড়বে,মেহেদী দিতে।তুই উঠবি নাকি আমি আসবো।আর আমি আসলে তোকে কিন্তুু সঙ্গে করে নিয়ে যাবো।'""'
তিশা মেসেজ দেখে ভয় পেয়ে লাফ দিয়ে বসে পরে।বিশ্বাস নেই এই জিসানের।সত্যি সত্যি যদি আজই উঠিয়ে নিয়ে যায়।আমার বাড়ীর কেউ ওকে আটকাতে ও পাড়বে না।না কিছু ভেবে আর লাভ নেই।আমাকে বলি দেবার সব প্লান হয়ে গেছে।গিয়ে রেডি হয়ে নি।
তিশাকে তার কাজিনরা রেডি করে দিলো।আজও তিশা শাড়ি পড়লো,প্রথমে পরতে চায় নি,পড়ে সবার জোরাজোরি তে পড়তে হলো।কিছু ফুলের গহনা পড়িয়ে দিলো।হালকা সাজ আর ফুলের গহনাতে তিশাকো অসাধারণ লাগছে।তিশা ড্রয়িংরুম এ এসে একটু অবাক, ওর মেহেদীর জন্য রুম গুলো খুব সুন্দর করে সাজানো হইছে।তিশা ভাবছে এতো অল্প সময় এতো কিছু কেমনে করছে এরা।
তিশা চুপচাপ বসে আছে,কিন্তুু মেহেদী লাগাতে কেউ আসছে না।তিশা ইশারা দিয়ে সীমাকে ডাক দিলো।
কি হলো মেহেদীর জন্য শং সাজিয়ে বসিয়ে রাখছিস। আরম্ভ করছোস না কেনো।কার জন্য অপেক্ষা করছিস।
আরে দাড়া, এতো তারা কি তোর।এখনি আরম্ভ হবে সে আগে আসুক।
কে আসবে আবার।কথাটা বলার সাথে সাথে দেখি আমার সব কাজিনরা কাকে যেনো ধরে নিয়ে আসছো।
সামনে সীমা দাঁড়ানো ছিলো বলে দেখতে পারিনি।
এইদেখ এসে পরেছে।
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি জিসান দাঁড়িয়ে আছে।আমার সাথে মেচিং করে নীল একটা পান্জাবী পরেছে।দেখতে কোন অংশে তাকে কম লাগছে না।জিসান আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় আগে কখনো দেখেনি।ওর চোখে চোখ পড়ায়,আমি সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।কেনো জানি আমি জিসানের চোখে চোখ রাখতে পারিনা।যখনি উনার চোখের দিকে তাকাই মনে হয় এই চোখ দুটো হাজারো কথা বলতে চায়।
আমি টিক ওর সামনে বসেছি,আমার ছোট পরীটাকে আজ সত্যিই পরীর মতো লাগছে।কাচা ফুলগুলো ওর সৌন্দর্য কে আরো ফুটিয়ে তুলছে।মন তো চাইছে আজই ওকে নিয়ে যাই।আমিতো আজ পাগল হয়ে যাবো তিশা তোর প্রেমে।কি নেশা লাগাইলি তুই আমার মনে।
হঠাৎ তিশার কাজিনরা, ভাইয়া দেখা শেষ হলে শুরু করুন।কথা ছিলো সবার আগে তিশাকে মেহেদি আপনে দিবেন।তাই আমরা এতোক্ষন ধরে আপনার অপেক্ষা করছি।আর আপনার বউতো মাথা খারাপ করে ফেলছে আমাদের, আরম্ভ করিনা কেনো।উপস্থিত সবাই হেসে একাকার।
আমারতো লজ্জায় মরে যেতে মন চাইতাছে।কি দরকার ছিলো এই জিসানের বাচ্চার এখানে আসার।তিশা মনে মনে শতো শতো গালি দিচ্ছে জিসানকে।
জিসান তিশার হাতটা ধরে মেহেদী দিয়ে তিশার হাতে ছোট করে নিজের নাম টা লিখে দিলো।তিশাকে উদ্দেশ্য করে জিসান বলে উঠলো,মেহেদির রংটা হয়তো দুদিন পরে চলে যাবে,কিন্তুু তোর হাতে আমার নামটা সারাজীবন থেকে যাবে।
কথাটা বলার সাথে সাথে রুমের ভেতর সবাই চিৎকার দিয়ে উঠলো।ওওওওও করে।
আমার দুহাতে জিসানের নাম লিখা হয়ে গেছে।এর পর মেয়েগুলো আমার হাতে মেহেদি দেয়া শুরি করলো।
আমার কোন রিয়েকশন নেই,আসলে কি বলবো কিছুই বুঝতাছি না।
জিসানও সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।মা আর রায়হান ভাই অনেক জোর করলো থাকার জন্য কিন্তুু বাসায় সবাই ওর জন্য অপেক্ষা করছে তাই চলে গেলো।
মেহেদির অনুষ্ঠান ঠিকঠাক মতো শেষ হলো।
আমি ঘরে গিয়ে ফ্রেস হয়ে হাত দুটোর দিকে তাকিয়ে আছি।আর ভাবছি সবাই এতো খুশি তাহলে আমি কেনো খুশি হতে পারছি না।কি এমন বাধা কাজ করছে,যার কারণে আমি উনাকে মন থেকে মেনে নিতে পারছিনা।
এমন সময় মা আসলো হাতে খাবার নিয়ে।মা আমি খাবো না বললাম তো।
একদম চুপ,আমি আজ নিজের হাতে তোকে খায়িয়ে দেবো।আর তো পারবো না। কাল বাধে পরশু তুই চলে যাবি,তখন তো আমাদের কথা ভুলেই যাবি।
কি বলছো মা,আমি তোমাদের কিভাবে ভুলবো।মার কান্না বন্ধ করার জন্য বললাম হইছে আর কানতে হবে না,আমাকে খাইয়ে দেওতো,আমার খুব ক্ষুধা পাইছে।
মা আমাকে খাইয়ে দিয়ে চলে গেলো।খুব ক্লান্ত লাগছে তাই শোবার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেলো,বাড়ীর মানুষের চিল্লাচিল্লিতে।আমার তো মন চাইতাছে সবাইরে বাহির করেদি।কেনো জানি এখন আর ভালো লাগছে না এসব।একটু একা থাকতে চাই।কিন্তুু এটা তো সম্ভব না আজ আর।মা নাস্তার জন্য ডাকলে, নাস্তা করে ঘরে ডুকে বসে ছিলাম আর সারাদিন বের হইনি।আজ আমার গায়ে হলুদ, মা তৈরি হবার জন্য পার্লারে পাটাতে চাইলে,রাগের মাথায় মাকে মুখ ফুসলি বলে ফেলি মা আমি বিয়ে করবো না।আর আমার মা আমাকে কতোগুলো লেকচার মেরে চলে গেলো। এ হলো আমার অবস্থা।
আমি রেডি হয়ে বসে আছি।আমাদের ছাদটা বিষণ বড়।তাই গায়ে হলুদের আয়োজন সেখানেই করা হলো।শুধু আমার না জিসানের হলুদ ও এখানে করা হবে।মানে বর ও কনের একসাথেই হলুদ আজ।আমাকে নিয়ে গেলো ছাদে অসংখ্য মানুষ ছাদে চারদিকে একবার চোখ ঘুড়িয়ে দেখলাম।হঠাৎ চোখ গেলো স্টেজ এর দিকে একটা ছেলে আমার দিকে মায়াভরা চোখে তাকিয়ে আছে।এই চোখ দুটো আমি কখনেই ভুলিনা।এই চোখদুটো শুধু আমাকেই খুঁজে তা আমার অজানা নয়।আমাকে জিসানের পাশে বসিয়ে দেয়া হলো।আমি আজও লজ্জায় চোখ তুলে সামনে তাকাতে পারলাম না।মন তো চাইছিলো এক দৌড় দিয়ে পালিয়ে যাই।
আজও সবার আগে আমাকে হলুদ দিলো জিসান।তার পর সবাই এক এক করে হলুদ দিয়ে হলুদের অনুষ্ঠান আমার জন্য শেষ হলো।মানে হলুদের পর আমাকে আর ছাদে এক মিনিটও রাখেনি,কড়া আদেশ ছিলো জিসানের।কারন জিসান ও রায়হান ভাইয়ের ফ্রেন্ডস সার্কেল আসবে।উনারা আজ ছোট একটা পার্টি করবে।তাই আমাকে আগেই ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে।এদের মধ্যে কিছু ফ্রেন্ডস দের চরিত্রের সমস্যা আছে।তাই জিসান চায় না এখন আমাকে কেউ দেখুক।
কি ভালোবাসা,,,,আমার তো কান্নাও পাচ্ছে।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৫
লেখিকা – তানিয়া
★আজ তিশার বিয়ে.......
সকালে সকাল ঘুম থেকে একপ্রকার টেনে উঠালো মা আমায়। মা আরো একটু ঘুমাইনা এমন করো কেনো।
এই কি বলিস, তারাতারি উঠ,আজ বিয়ে, কতো কাজ আছে।তুই তাড়াতাড়ি নাস্তা কর।পার্লার থেকে মেয়েরা এসে পড়বে তোকে সাজাতে।জিসান ওদের পাঠিয়েছে, যে কোন সময় এসে পরবে।তুই একটু তারাতারি কাজ করতে পারোস না,আজ বাধে কাল শ্বশুর বাড়ী যাবি,এভাবে ঢিলা ঢিলা হয়ে কাজ করলে,শ্বশুর বাড়ী মানুষ বলবে আমরা তোকে কিছু শিখাইনি।
তাইতো বলছি আমাকে কোথাও পাঠাতে হবে না,আমি তোমাদের সাথেই থাকবো।মার কোমর জরিয়ে।
পাগল মেয়ে এটা কি হয় কখনো।একদিন না একদিন তোকে নিজের বাসায় যেতেই হবে।আর তোর স্বামীর বাসাই এখন তোর বাসা।মেয়েরা বাবা মায়ের কাছে কারো আমানত হিসেবে থাকে।একদিন না একদিন যার জিনিষ তাকেতো দিতেই হবে।
আর কথা বলিস না,তারাতারি ফ্রেস হয়ে, নাস্তা করে নে।
তিশা উঠতে নিবে, তখনিই মেসেজ,
শুভ সকাল জান,,,,,নিজের বাসায় আসার জন্য তৈরি হয়ে নে।পার্লারের মেয়েদের সব বলে দেয়া হইছে,তাই তাদের কোন ডিস্টার্ব করবি না।তোর কাজ শুধু বসে থাকা,ওরা তোকে আমার মতো করে তৈরি করে দেবে।
ওওও আরেটা কথা ভুলে গেছি.....love❤❤ u jan...
😘....
লাব ইউ,,,,তোর লাভ ইউ তুই রাখ,আমার জীবনটা তেজপাতা বানিয়ে এখন আসছে লাব ইউ বলতে।ব্যাটা খাটাইশ কোথাকার,মন চায় বুড়ি গঙ্গা নদীতে গিয়ে ফেলেদি।আমার শান্তি কেড়ে নিয়ে আবার আমাকে এখন ভালোবাসা দেখাতে আসছে।তিশা মনে মনে কথা গুলো বলছে আর দাঁতে দাঁত চাবাচ্ছে।
আবার মেসেজ আসছে,,,,,
গালাগালি হইচে,কিছু গালাগালি রেখে দে পরে তোর কাজে লাগবে,এখন তারাতারি কর।।
তিশার চোখ কপালে উঠে যায়।এই জিসানের বাচ্চা আমার মনের কথা জানে কিভাবে।এদিক ওদিক তাকিয়ে তিশা,,,,।
না বাদ দে তিশা।উঠে ফ্রেস হয়ে নি।
পার্লারের মেয়েরা তিশাকে রেডি করিয়ে দিলো।পার্লারের মেয়েদের খুব কড়া করে বলে দেয়া হইছে,ভারী মেকআপ একদম না,আর চুলে জোট করানো যাবে না।তাই তারা সেভাবেই রেডি করালো।সিম্পল সাঝে গর্জিয়াছ যাকে বলে।তিশার শরীলের গায়ের রং এর সাথে বিয়ের লেহেঙ্গা টা একদম পার্ফেক্ট মানিয়েছে।তার সাথে মেচিং জুয়েলারি, হাত ভরা চুরী। তিশাকে দেখে আজ কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না।পার্লারের মেয়েরাও খুব অবাক।এতো সিম্পল সাজে কোন বউ তারা দেখেনি,তবুও জেনো চোখ ফেরানো যায় না এই বউ থেকে।তিশার জন্য প্রত্যেকটা জিনিস জিসান নিজেই পছন্দ করে এনেছে,তাইতো সব পার্ফেক্ট।
★ জিসানকেও আজ কোন রাজকুমার থেকে কম লাগছে না,তিশার সাথে মেচিং করেই শেরয়ানি পড়েছে জিসান।জিসানের বাসার সবাই কমিউনিটি সেন্টারের দিকে রওনা দিলো।
জিসান আসার আগেই তিশাকে সেন্টারে আনা হলো।
এদিকদিয়ে জিসানও এসে পড়েছে।জিসানকে সবাই বরণ করে নিলো।
আবাক করার বিষয় হলো,আমার জামাই লজ্জা শরম সব ভুলে,ফ্রেন্ডদের সাথে নাচতে নাচতে আসছে।তার দুপাশে তার কাজিন আর ফ্রেন্ডসরাও নাচছে।সে ও তাদের তালের সাথে তাল মিলাচ্ছে।আশেপাশের সবাই খুব আনন্দ পাচ্ছে, এমন বিয়ে পাগল জামাই আমি এই জীবনে দেখি নি।মনে মনে.....।।
যেখানে আমি লজ্জায় মাথা উচু করতে পারছি না,আর সে নাকি নিজের বিয়েতে নিজেই নাচছে।।
দাদী সত্যিই বলছে এটা শেষ জামানা কতো কিছুই না আরো দেখতে হবে।
এর পর বিয়ের আয়োজন শুরু হলো।আমাকে আবার কবুল বলতে হলো।একই ব্যক্তির সাথে আমার দুবার বিয়ে হলো।কি ভাগ্য....আমার।
আয়োজন শেষে এবার এলো বিদায়ের পালা।আমার কান্নাতো কেউ বন্ধই করতে পারছে না।সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম কিন্তু রায়হার ভাইকে দেখিনা।এই তিনদিন আমি রায়হান ভাইকে তেমন কাছে পাইনি,আমার সাথে খুব কম কথা বলছে।আর আজ তো আমার বিদায়ের সময় সে আসেনি।আমি সবার দিকে তাকিয়ে রায়হান ভাইকে খুঁজছি।আমি জানি আমার বিদায়টা সে দেখতে পারবে না তাই হয়তো সামনে আসেনি।জিসান ব্যাপারটা বুজতে পারছে।
তাই আমার হাতটা ধরে ভিড় থেকে আমাকে বাহির করে এনে,বারান্দায় নিয়ে আসে।আমি সামনে তাকিয়ে দেখি রায়হান ভাইয়া একটা চেয়ারে মাথাটা দুহাত দিয়ে ধরে বসে আছে,হয়তো কাঁদছে নিরবে।আমি দৌড়ে গিয়ে রায়হান ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলাম।
....ভাইয়া আমি যাবো না,তোমাদের ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো,তুমি যা বলবে আমি তাই করবো,তোমার সব কথা শুনবো।প্লিজ ভাইয়া আমি যাবো না।
রায়হানও বোনকে ধরে নিরবে কাঁদছে।
জিসান দূর থেকে দাঁড়িয়ে সব দেখছে,তার চোখেও কিছুটা জল এসে পড়েছে,ভাই বোনের ভালোবাসা দেখে।
জিসানও ভালো করে জানে, রায়হানের কলিজা তিশা,তাই তিশার বিদায় সবথেকে কষ্টকর রায়হানের জন্য।কিন্তুু আজ জিসানের কিছুই করার নাই।কারণ এটাই নিয়ম।তিশা যদি রায়হানের কলিজা হয়, তাহলে জিসানের নিশ্বাস,আর নিশ্বাস ছাড়া কেউ বাঁচাতে পারেনা,জিসানও পারবে না।
একটা নাড়ী,আর দুজন ভালোবাসার মানুষ, একজন তার ভাই,আরেক জন তার সঙ্গী। আজ একজনকে ছেড়ে আরেক জনের কাছে যেতেই হবে।এটা যে মেয়েদের কপাল।
রায়হান কিছুই বললো না তিশাকে,ওকে জিসানের কাছে নিয়ে গেলো।তিশার হাতটা জিসানের হাতে দিয়ে দিলো।
আমার কলিজাটা আজ ছিড়ে তোকে দিয়ে দিলাম,আজ থেকে তুইও ওকে আমার মতো বুকে আগলে রাখিস, ও ভুল করলে ওর ভুল গুলো ক্ষমা করে দিছ।
তুই চিন্তা করিসনা,আজ থেকে ওর ভালোমন্দ সব দায়িত্ব আমার।
রায়হান জোর করে তিশাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো কিন্তু তিশা বার বার বের হয়ে যায়।শেষে রায়হানের রাগ উঠে যায়,আর একবার গাড়ী থেকে নামলে আমি কিন্তু তোর সাথে আর কথা বলবো না।
তিশা আর গাড়ী থেকে নামেনি।
তিশা চলে গেলো জিসানের সাথে,নতুন এক জীবনে,নতুন এক দুনিয়া।পুরাতন সব চেহারাগুলো ফেলে সব নতুন মানুষ গুলোকে আপন করতে।
সারা গাড়িতে তিশা এভাবেই কান্না করতে লাগলো।আর জিসান তিশাকে টিসু পেপার দিতে থাকে।
এদিক দিয়ে জিসান ভাবতে থাকে,,,,
আজ যা কান্না করার করে নে,এর পর তোকে আর কাঁদতে দেবোনা।তোর চোখের জল,আমার হ্রদয়টাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে।।তোকো যে বড্ড ভালোবাসি পাগলী।।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

পাট ১৬-১৮
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৬
লেখিকা – তানিয়া
🍂তিশা বাসরঘর এ বড় একটা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে,একটু ঘুমটা টা ফাক করে পুরো রুমটা দেখছে।রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো।হঠাৎ দেয়ালের দিকে চোখ পড়লো।বিছানার পাশের দেয়ালটাতে জিসানের একটা ছবি বড় করে বাধানো। তিশা ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে,অসম্ভব সুন্দর লাগছে জিসানকে ছবিটার মধ্যে,কেউ দেখলে বলবেই না এই মানুষটা এতোটা রাগী।
অনেকক্ষণ ধরে তিশা জিসামের জন্য অপেক্ষা করছে,কিন্তু জিসানের কোন খবর নেই।তিশার খুব অস্বস্তি লাগছে।সব খুলে ফেলতে মন চাইছে।কিন্তুু তিশার চিন্তা হচ্ছে জিসানকে কিভাবে বলবে তার সমস্যার কথা।
🍂সবাইকে বিদায় দিয়ে জিসান ঘরের দিকে যেতে নিলো, বেচারা আজ খুব খুশি।আর তার খুশিতে পানি ঢালতে এসে পরলো তার ভাবী।
জিসান,,,,,জিসানের ভাবী।
জি ভাবী।
এগুলো নিয়ে যাও,তিশার ব্রিটকেস টা দেখিয়ে।
ওকে ভাবী।
শোনো জিসান।
জি ভাবী, আর কিছু।
এই ব্যাগটা নিয়ে যাও, এতে তিশার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস আছে।তোমাকে আরো কিছুূদিন ধৈর্য্য ধরতে হবে,আসলে তিশার ডেট পরে গিয়েছে।
তুমি কি বুঝতে পারছো আমি কি বুঝাতে চাইছি।
জিসান প্রথমে ভাবীর কথা না বুঝলেও পরে,একটু ভেবে বুঝতে পারে,ভাবী কি বলতে চাইছে।বেচারা খুব কস্টে একটু হেসে ভাবীকে বলে,জি ভাবী আমি বুঝেছি।জিসান মাথাটা নিচা করে ঘরের দিকে চলে গেলো।
ঘরে প্রবেশ করতেই বুঝতে পারি আমার মেডামটার খুব অস্বস্তি লাগছে,একতো ভারী লেহেঙ্গা, জুয়েলারি তার উপর বেচারির এই অবস্থা। ওর কস্টের তুলনায় আমার কস্টটা খুব সামান্য মনে হলো।
জিসান কে দেখে আমি আবার চুপ করে বসে পরলাম, আমার চিন্তা একটাই কিভাবে বলবো,আর এই খাটাইশ টা কি আমার সমস্যা বুঝবে।নাকি আবার ঝাপিয়ে পরবে।হে খোদা আমাকে এবার বাঁচিও।
🍂কিরে তুই এখনো এসব পড়ে বসে আছিস কেনো।যা তারাতারি গিয়ে আগে ফ্রেস হও।আর এসব কিছু খোল,তোকে দেখে আমারি অস্বস্তি লাগছে,কিভাবে পোরস এতো ভারী ভারী জিনিস।
শ্যালা খচ্চর কোথাকার আমাকে এই অবস্থায় এনে এখন আবার বলছে কিভাবে পরি,তুই তো দিলি,এতো ভারী লেহেঙ্গা, জুয়েলারি, তখন মনে ছিলো না,কমপক্ষে বিয়ের ডেটটা ফিক্সড করার আগে আমার ডেট টাতো জেনে নিতি।তাহলে আজ এতো প্যারা লাগতো না।তিশা মনে মনে কথা গুলো বলে যাচ্ছে।
কিরে কি ভাবস এতো,তুই চেন্জ্ঞ করবি নাকি আমি করিয়ে দেবো,এতে আমার কোন সমস্যা নাই।
তিশা জিসানের কথা শুনে ৪৫০ ভোল্ট শোকড খেলো।কি বলে এসব,লজ্জা শরমের মাথা খাইছে মনে হয়।
না না না,,,,আমিই করছি।এতেক্ষনে জিসান চেন্জ্ঞ করে ফ্রেস হয়ে এসে দেখে তিশা একটা একটা করে জুয়েলারি গুলো খুলছে।
জিসান তিশার সামনে গিয়ে তিশাকে নিজের দিকে ঘুরালো।তার পর নিজেই তিশার গয়না গুলো খুলে দিচ্ছে।জিসানের হালকা স্পর্শে তিশা কিছুটা কেঁপে উঠে।
তিশা একবার বাধা দেয়ার চেস্টা করছে।
কিন্তুু জিসান,,,।
চুপ,আমার কাজে কখনো বাধা দেবার চেস্টা করবিনা।তোর জন্য ভালো হবে না।গয়না গুলো খুলছে আর বলছে।
তিশার মাথার প্রতিটি ক্লিপ খুব যত্ন করে খুলছে,এদিক দিয়ে তিশা বেচারি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে,যা জিসানের চোখ এড়ায় নি।
কিভাবে স্বপ্ন ভাঙ্গতে হয়,তকে দেখলে বোঝা যায়।বুজছোস....।কতো শোক ছিলো বাসরঘরে বিড়াল মারবো।
কিন্তু্ু আমার বিল্লি আমাকেই মেরে ফেলার প্লানিং করে বসে আছে।
তো আজ কয়দিন তোর।
জিসানের সব গুলো কথাই তিশার মাথার উপর দিয়ে গেছে।তিশা বুঝতে পারছে না জিসান কি বলতে চাইছে।আর এতো বিড়াল মারার শখ থাকলে বাহিরে গিয়ে মারুক,ঘরে বিড়াল মারার কি দরকার আছে,আমিতো তাই বুজলাম না।আর কিসের কথা জানতে চাইছে।আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না।
জিসান আবার বলে উঠলো,আমি কিছু জিঙ্গেস করেছি তোকে। জবাব দিস না কেনো।এতে এতো লজ্জা পাবার বা ভয় পাবার কিছুই নেই।একজন নাড়ীর জন্য এটা আশির্বাদ, তাই এটা নিয়ে কখনো লজ্জা পাবিনা।এটা না হলে তুই আমার বাচ্চার মা হবি কিভাবে।
এবার তো তিশার মন চাইতাছে দরজাটা খুলে এক দৌড় দিয়ে কোন জঙ্গলে চলে যেতে।
তিশার চেহারা টা দেখার মতো ছিলো।জিসানতো মিসকি মিসকি হাসছে, মনে মনে বলছে অনেক জালাইছোস আমারে, এবার বুঝ কেমন লাগে।আমার থেকে দূরে দূরে সরে থাকতি এতো দিন,তোর দূরত্ব আমার জন্য বেদনাময় ছিলো।আজ আমি দেখ তোকে কিভাবে সাইজ করি।
জিসান জানে তিশা খুব লাজুক এবং চাপা স্বভাবের মেয়ে,সহযে কিছু বলেনা।তাই জিসান এসব বলছে......🤣🤣
জিসান আবারো তিশাকে জিঙ্গেস করল তিশার কতো দিন আজ।
তিশা এখন একটু সহয হয়ে বললো,তিনদিন।তিশা নরমাল একটা শাড়ি ও ব্যাগটা নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো।
আর এদিকদিয়ে জিশান মনে মনে হাসছে,তিশার অবস্থা দেখে।
🍂তিশা চেন্জ্ঞ করে এসে দেখে জিসান নাই।তাই ও আয়নার সামনে এসে চুলগুলো আছড়াতে লাগলো।
জিসান রুমে এসে তিশার সামনে দাঁড়ালো এক গ্লাস দুধ নিয়ে।
দুধ দেখে তিশা মুখটা কালো করে ফেললো।আমি দুধ খাবো না।একদমই পছন্দ না আমার।
দেখ তিশা নাটক করবি না আমার সামনে, কষে একটা দেবো গালে।আমি চিনি মিক্সড করে আনছি, তাই খেতে কোন সমস্যা হবে না, তাই চুপচাপ খেয়ে নে।আজ অনেক ধবল গেছে তোর উপর তা আবার এই অবস্থায়।কাল আবার বৌ-ভাত।আমি চাইনা তুই অসুস্থ হয়ে পড়িস।
জিসানের কথা শুনে তিশা চুপচাপ নাক বন্ধ করে দুধটা খেয়ে নিলো।
কিন্তুু তিশার এখন নতুন চিন্তা হলো জিসানের সাথে এক বিছানায় শোয়া।এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ঘরের লাইট বন্ধ হয়ে গেলো।তিশা কিছু বলবে তার আগেই জিসান তিশাকে কোলে তুলে নিলো,তিশাতো পুরো শোকড। লাইটের আবছা আলোয় তিশা জিসানকে দেখতে পাচ্ছে।জিসান তিশাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজেও তিশার বুকের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো। জিসানের এতো কাছে থাকায় তিশার হ্রদস্পন্দন জেনো বেড়ে গেলো।
আর এ দিক দিয়ে জিসান তিশার বুকে মাথা রেখে তিশাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে,মনে হয় এই স্থানটা জেনো ওরই ছিলো,শুধু এতোদিন কাছে ছিলোনা।
🍂জানোস তিশা ৫বছর ধরে তোর অপেক্ষা করছি,তোকে পাবার জন্য ছটফট করেছি।তোকে একদিন না দেখে থাকতে পারতাম না,তাই কতো দিন তোর কলেজ এ গিয়ে তোকে লুকিয়ে দেখছি,তোর আসে পাসে কাউকে সহ্য হতো না।তোকে একটু স্পর্শ করার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে পরতো,কিন্তু আমি তো আমার তিশাকে ভালোবাসি,তাই তোকে অপবিত্র করতে চাইনি।তোর অবহেলায় আমি কখনো নেশা করিনি,কারণ তুই নিজেই আমার নেশার কাজ করিস।নেশা যেমন মস্তিষ্ককে বস করে।তোর নেশাও আমার পুরো শরীলে চড়ে গেছে।কতো রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি,আমি জানি না।কিন্তুু সকাল হলেই তকে দেখার জন্য ছুটে গেছি, খুব বলতে ইচ্ছা করতো,আমি তোকে ভালোবাসি,টিক কতোক্ষানি ভালোবাসি বলতো পারবো না,ভালোবাসার পরিমাপ মাপতে পারবোনা,ভালোবাসার গভীরতা দেখাতে পারবো না,কিন্তুু সব শেষে বলবো ভালোবাসি,ভালোবাসি।
তুই ভালো না বাসলোও তোকে আমি ভালোবাসব,ভালোবাসতে না জানলে শিখিয়ে দেবো।কিন্তু তবুও ছেড়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করবি না।
"""ছেড়ে যেতে চাইলে তোর পায়ের শিকল হয়ে যাবো,আর ভালোবাসলো তোর গলার মালা হয়ে থাকবো"""
তুই ভুল করলে শাস্তি দেবো,আবার ভালোবাসা দিয়ে পুষিয়ে দেবো।কিন্তুু ছাড়তে তকে কখনোই পারবো না।
তিশা বুঝতে পারছে জিসানের চোখ দিয়ে জল পড়ছে,কিন্ত আজ তিশার চোখদিয়ে ও অশ্রু ঝরছে। আর এবারকার অশ্রু কস্টের না,এক পরম সুখের,তিশা কখনো ভাবতেও পারেনি জিসান ওকে এতোটা ভালোবাসে।যে মানুষটি সবসময় আমার উপর রাগ দেখাতো,তার রাগের পেছনে ছিলো আমার জন্য বুক ভরা ভালোবাসা।কেনো আমি দেখলাম না জিসানের মনের কস্টটা জিসানের চোখ বলে দিতো।তা ও লুকাতে চাইলেও পারতো না।
এসব ভাবছে আর জিসানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
এতোদিন পর মনে হয় জিসান কোন টেনশন ছাড়া শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।
আর তিশাও এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৭
লেখিকা – তানিয়া
জিসানের ঘুম আগে ভেঙ্গে গেলো,হঠাৎ খেয়াল করলো কেউ পেছন দিয়ে ওকে জরিয়ে ধরে আছে।।জিসাম বুজতে পারলো তার বুকের সামনের হাতটা কার।আস্তে করে হাতটা সরিয়ে পেছনে ফিরলো, আজকের সকালটা জেনো জিসানের কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছে। ঘুমন্ত তিশাকে দেখে যেনো আবার প্রেমে পড়ে গেলো।
তিশার শাড়ীর খোলা অংশ ভেদ করে সাদা পেটটা দেখা যাচ্ছে,পায়ের থেকে শাড়ীটা সরে গেছে।
চুল দিয়ে মুখটাও ঢেকে গেছে।জিসান কিছুক্ষন তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চাদর দিয়ে তিশাকে ঢেকে দিলো।এর পর চুল গুলো সরিয়ে একটা গভীর কিস করলো গালে।
এই মেয়েটার থেকে যতো দূরে থাকতে চাই ততোই ও আমাকো চুম্বকের মতো কাছে টানে।কেনো বুজছ না আমি এখন তোর কাছে আসলে তোর কস্টই বেশি হবে,যা আমি চাইনা।আর এভাবে আমাকে লোভ দেখালে আমিও দূরে থাকতে পারবো না।
জিসান কথা গুলো মনে মনে বলে.......।
জিসান ফ্রেস হতে চলে যায়।ফ্রেস হয়ে দেখে তিশা এখনো উঠেনি।জিসান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবে একটু দুষ্টুমি করা যাক,কতো রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি তোর জন্য,আর তুই কিনা আরামে ঘুমাস,দেখ তোর সাথে কি করি।
এই কথা বলতেই এক গ্লাস পানি তিশার শরীলে ঢেলে দেয়।
🍁তিশা ভয়ে লাফ দিয়ে উঠে যায়।এ কি হলো,,,আমাকে পানি মারলেন কেনো।কি সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম,আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলেন,একটু ন্যাকামি করে।
জিসান তিশার একদম কাছে এসে,আমার স্বপ্ন যে তুৃই কাল রাতে ভেঙ্গে দিলি সেটার কি হবে,আর এখন নিজেই স্বপ্ন দেখছোস।অনেক স্বপ্ন হইছে,এখন বাস্তবে ফিরে আসেন,কয়টা বাজে,সবাই নিচে অপেক্ষা করছে,১০মিনিট সময় দিলাম তারাতারি রেডি হয়ে নিচে আস,তা না হলে,এখন তো এক গ্লাস পানি মারছি,লেট করলে আমাদের বাসায় একটা সুইমিংপুল আছে সেখানে তকে ফেলে দেবো।
তিশা ভয়ে ঢোক গিল্লো,তারাতারি নেমে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
তিশা পানি খুব ভয় পায়,মানে নদী,পুকুর,সুইমিংপুল এ ও কখনো নামেনা ভয়ে আর তাই জিসানও সুযোগটা কাজে লাগালো।
জিসান নিচে গিয়ে নিশিকে পাঠিয়ে দিলো,তিশাকে সাহায্য করার জন্য।
তিশা বের হয়ে নিশিকে দেখে খুব খুশি হলো,তিশা ও নিশি বয়সে তেমন বড় ছোটনা তাই নিশির সাথে কথা বলতে ভালোই লাগে তিশার।
ভাবী তুমিতো দেখতে খুব সুন্দর,তাইতো বলি ভাইয়া তোমার জন্য এতো পাগল কেনো।
নিশি তোমার ভাই আমার জন্য পাগল না,উনার এমনেও মাথায় সমস্যা আছে বলে মনে হয়।তোমরা কখনো ডাক্তার দেখাওনি তাকে মনে হয়,তাই বুজতে পারছো না।মুখ দিয়ে সারাক্ষন তিতাকথা ছারা মিস্টি কথা বেরই হয় না।তোমার ভাইকি আমার সাথেই এমন করে, নাকি তোমাদের সাথেও করে,সত্যি বলতো।
ভাবী কি বলছো,ভাইতো কতো ভালো জানো।এখন চুপ থাকো,তা না হলে কপালে খারাপি আছে।
আসলে ওদের দেরি হচ্ছে বলে জিসান দেখতে আসছে,আর এসেই তিশার সব কথা দরজার সামনে দাড়িয়ে শুনছে।আর রাগে কটকট কটছে।
আরে রাখোতো আর কি খারাপি হবে।
পিছনে তাকিয়ে দেখো সব বুঝতে পারবে।
তিশা হাসতে হাসতে পেছনে ফিরে তাকায়,আর সাথে সাথে মুখটা মলিন হয়ে যায়।বাঁচার জন্য নিশিকে বলে, নিশি চলো সবাই বসে আছে।
নিশি বুঝতে পারে তাই নিশিও বলে,
ভাবী চলো সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।আবার আজতো বৌ ভাত তাই তোমাকে রেডিও হতে হবে।
জিসান নিশি সামনে বলে নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে আর কিছুই বলে না তিশাকে।।
তিশা, নিশি ও জিসান তিনজনেই একত্রে নেমে এসে নাস্তা করতে বসে।টেবিলে এতো খাবার কিন্তু লজ্জায় তিশা কিছুই নিতে পারছে না,তাই জিসান নিজেই তিশার প্লেটএ ওর পছন্দের খাবার গুলো নিয়ে দেয়।তিশা কিছুক্ষন জিসানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমাকে দেখলে পেট ভরবে না।তাই চুপচাপ খেয়ে নে।আর কি কি যেনো বলছিস,মনে রাখিস সময় হলে সুদে আসলে সব তুলবো।
তিশা জিসানের কথায় একটু ভয় পেলো।
কিরে মা খাস না কেনো,এখানে কেউ পরনা,সবাই তোর আপন,তাই লজ্জা করার কিছুই নেই।জিসানের মা।
তিশা মাথা নাড়িয়ে কিছু খেয়ে, রুমে চলে গেলো,কারন আজ আর ওর কোন কাজ নেই।
অনেকটা সময় নিশির সাথে গল্প করে কেটে গেলো,এরপর তিশাকে সাজাতে আসলো কিছু মেয়ে। কারন আজ জিসান ও তিশার বৌ-ভাত, অনেকেই বিয়েতে আসতে পারেনি,তারা আজ এসে জিসান ও তিশাকে আশির্বাদ করবে।
বৌ-ভাত এর জন্যও বিশাল বড় হল ভাড়া করা হলো,জিসান আগেই সেখানে চলো গেলো,আর সবার শেষে তিশাকে নিয়ে আসতে বললো।তিশা সারা দিন জিসানকে আর দেখেনি।
তিশা হল রুমে পৌঁছানোর পর পরই লাইটটা অফ হয়ে গেলো,শুধু তিশার উপর একটা লাইট পরলো।তিশাকে সবাই দেখে কিছুটা অবাক,আজ তিশাকে লাল বেনারসি শাড়ি পড়ানো হলো,লাল কালারটা যে তিশাকে এতোটা মানাবে তিশা নিজেও কল্পনাও করেনি কারন তিশা কোনদিন লাল কালারের কিছুই পরেনি।
কিন্তু আজ তিশাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তিশাকে সবাই দেখতে পাচ্ছে কিন্তুু তিশা কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না।তিশাকে নিয়ে স্টেজ এর সামনে বসিয়ে দিলো।আর সাথে সাথে আরো একটা লাইট পুরো স্টেজ এর উপর পড়লো,তিশা তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে পিছ ঘুরে আসে।তার পিঠ তিশার দিকে,তাই দেখতে পাচ্ছে না।আর রায়হান ভাইয়ের হাতে গিটার, বুজতে বাকি রইলো না তারা গান গাইবে।আমি শুনেছি তারা কলেজে থাকতে অনেক শো করেছে কিন্তু সামনা সামনি কখনো দেখিনি।কিন্তু আজ...
হঠাৎ মাইক দিয়ে কেউ কিছু বলছে,গান গাওয়া হয়না অনেক দিন ধরে,কিন্তু আজকের দিনটা আমার জীবনের অনেক বড় একটা দিন, তাই না গেয়ে পারলাম না,কথাটা বলেই জিসান সামনের দিকে ঘুরে তিশার দিকে তাকালো,আমার গানটা তোরই জন্য......
জিসান গান ধরলো,,,,,,।
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Naam Niklega Tera Hi Lab Se
Jaan Jab Iss Dil-E-Nakam Se Ruksat Hogi
Mere Mehboob.............
Mera Sajam Ke Dar Se Agar
Baad-E-Saba Ho Tera Guzar
Kehna Sitamgar Kush Hai Khabar
Tera Naam Liya Jab Tak Bhi Jiya
Aye Shama Tera Parvana
Jise Ab Tak Tujhe Nafrat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob.............
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Meri Nazarein Toh Gila Karti Hai
Tere Dil Ko Bhi Sanam Tujhse Shikayat Hogi
Mere Mehboob.............
Teri Gali Mein Aata Sanam
Nagma Wafa Ka Gaata Sanam
Tujhse Suna Na Jata Sanam
Phir Aaj Idhar Aaya Hoon Magar
Yeh Kehne Mein Deewana
Khatm Aaj Yeh Dehshat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob.............
Meri Tarah Tu Aahein Bhare
Tu Bhi Kisi Se Pyar Kare
Aur Rahe Woh Tujhse Pare
Tune O Sanam Dhaye Hai Sitam
Toh Yeh Tu Bhool Na Jana
Ke Na Tujhpe Bhi Inaaya Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Mere Mehboob Qayamat Hogi
Aaj Rusva Teri Galiyon Mein Mohabbat Hogi
Meri Nazarein Toh Gila Karti Hai
Tere Dil Ko Bhi Sanam Tujhse Shikayat Hogi
Mere Mehboob.............
এটা তিশার পছন্দের একটা গান,যখনি তিশা উদাশিন থাকে তখনি গানটা শুনে,এটা জিসান অনেক বার খেয়াল করেছিলো।গানটা শুনার পর তিশার মনটা ভালো হয়ে যেতো।
আর আজ জিসান যেভাবে গানটা গাইছে,গানের প্রতিটা কলি যেনো তিশার জন্যই,তা আর কেউ বুজতে না পারলেও তিশা বুঝে গেছে।তিশার চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি তিশার হাতে পরলো।
এই পানিটা ছিলো তিশার প্রতি জিসানের ভালোবাসার গভীরতার কারনে।কেউ কাউকে এতোটা ভালোবাসতে পারে,তা তো তিশার জানাই ছিলোনা।
তিশা দিন দিন যতোই জিসানের ভালোবাসার গভীরতা মাপার চেস্টা করছে তা যেনো আরো গভীর হয়ে পরছে।আর তিশাও জিসানের পাগলামো গুলো খুব উপভোগ করছে।
আর সেই জল কেউনা দেখলেও জিসান টিকই দেখতে পেলো,কারন পুরোটা সময় জিসান তিশার দিকেই তাকিয়েই গানটা গেলো।
গানটা শেষ হবার সাথে সাথে পুরো হল রুমের লাইট জ্বলে উঠলো,জিসানকে আরো গান গাইতে বললো,কিন্তু জিসান স্টেজ থেকে নেমে তিশার হাতটা ধরলো,যে হাতে চোখের জলটা পড়েছিলো।জলটা নিজের একহাত দিয়ে মুছে বললো,তোর চোখের জলটাও আমার তাই আমার সাথে মিশিয়ে নিলাম।
তিশা খুব অবাক হয়ে জিসানের দিকে তাকালো।
অবাক হবার কিছুই নেই,তুই সামনে থাকস বা না থাকস কিন্তু আমার চোখ তোর উপরি থাকে।
তিশাকে নিয়ে স্টেজ এ চলে গেলো।একে একে অনেকেই এসে তিশা ও জিসানকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানালো,তিশার বাবা মা ও আত্মীয়রাও এসে পরছে।সবাইকে দেখে খুব খুশি হলো।সবাইকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো।
এতোক্ষন পর রায়হান এলো,কি রে এতো কান্না করলে তোর মেকআপ নস্ট হয়ে যাবে,এর পরতো তোকে পেত্নীর মতো লাগবে।মানসম্মান সব শেষ হয়ে যাবে আমাদের।
তিশা কান্নার শব্দ আরো একটু বাড়িয়ে রায়হানকে দুহাত দিয়ে মারতে লাগলো,একসময় শান্ত হয়ে ভাইকে জরিয়ে ধরলো।
হইছে এবার চুপ হো।সবাই দেখছে।রায়হান চোখের পানিটা মুছে দিয়ে।
এবার এলো জিসান ও রায়হানের ফ্রেন্ডস সার্কেল, তাদের অনেকেই বিয়ের দিনে ছিলোনা,তার মধ্যে রনি ছিলো।জিসান ও রায়হানের ফ্রেন্ডেদের মধ্যে কেউ আগে তিশাকে দেখেনি।তিশাকে কখনো এদের সামনে আসতে দিতো না।এমনকি ফ্রেন্ডেদের কোন অনুষ্ঠানে রায়হান তিশাকে আনতে চাইলেও জিসান আনতে দিতো না,এর কারন সবাই আজ বুজতে পারলো।
রনি তো তিশাকে দেখে পাগল হয়ে গেছে।তাই জিসানকো বলো উঠলো,ভাই তোরেতো খুব ভদ্রমনে করেছিলাম,কিন্তু তুইতো দেখি চুপারোস্তম।
তলে তলে জল ডুব দিলি বুজতেও পারলাম না।
আরে না তেমন কিছু না,তুই ভুল বুঝছোস,পরে বলবো নি সব সময় করে।জিসান একটু বিরক্ত হয়ে।
তো তিশার সাথে পরিচয়তো করো দে আমাদের।
ওওও আস।তিশা এরা আমার ফ্রেন্ডস, শুধু আমার না রায়হানের ও।
তিশা সবাইকে সালাম দিলো।কিন্তু,,,,
রনি হাতটা বাড়ালো তিশার সাথে মিলানোর জন্য।আর তখনিই রায়হান এসে রনির হাতটা ধরে,,
আরে কি তিশা তিশা করছিস,ও আমার বোন তাই তোদেরও ছোট বোন এখন থেকে।
আরে এখন তো ভাবী আমাদের, আর আমরা তার দেবর।তাইতো একটু দুষ্টুমি করাই যায়।জিসানের বাকি ফ্রেন্ডেরাও বুঝতে পারলো রনির কথা, তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওরা রনিকে নিয়ে চলো গেলো অন্য সাইডে।
এদিক দিয়ে জিসান একটি টেনস হয়ে পরলো,রনির মতিগতি জিসানের ভালো লাগলো না।
অন্যদিক দিয়ে,,,, রনি এখনো তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।আর বলছে,রায়হান কাজটা ভালো করেনি জানোস।এই কলিটাকে এতো দিন সবার থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে।তাইতো বলি রায়হান কেনো তিশা কে আমাদের সামনে আনতো না।যদি আগে দেখতাম তাহলে আজ জিসানের জায়গায় আমি থাকতাম।
ওদের আরেক ফ্রেন্ড সাকিব বলে উঠলো,তুই শালা পাগল হয়ে গেছোস মনে হয়,চুপ তাক।রায়হান আর জিসান জানতে পারলে।তোর খবর আছে।রায়হান একবার মাপ করলেও জিসান তোকো মেরে ফেলবে।
জিসান তিশা বলতে পাগল,তিশাকে খুব ভালোবাসে।তাই এসব নোংরা চিন্তাবাদ দে।
কিন্তু্ু রনির নজর পরে গেছে তিশার উপর,,,,আর ওর চাই তিশাকে এক রাতের জন্য হলেও।রনি কথাগুলো মনে মনে ভাবছে।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৮
লেখিকা – তানিয়া
: আনুষ্ঠান শেষ হতে এখনো বাকি,এখনো কিছু গেস্ট আছে যারা একটু দেরি করে আসবে, তাই জিসান তিশা,নিশিও ভাবীকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।আর ভাই,বাবা ও মার সাথে নিজেও পার্টিতে রয়ে গেলো গেস্ট এটেন্ড করার জন্য।তিশার মা বাবা কে ও পাঠিয়ে দিয়েছে,রাত বেশি বলে।কিন্তু রায়হান রয়ে গেছে।
:তিশা বাসা এসে ফ্রেস হয়ে বসলো।খুব ক্লান্তে ঘুম আসছে কিন্তু্ু ক্ষুধাও খুব লাগছে।বলা হয় না,যার বিয়ে সেই খেতে পারেনা কিন্তু বাকি সবাই আনন্দ করে পেট ভরে খায়।অনুষ্ঠানে সবার সামনে লজ্জায় কিছু খেতেই পারেনি।কিন্তু এখন টিকা যাচ্ছে না।আর এই বাসার কোন কিছু আমি জানিই না কোথায় কি আছে,তা না হলে রান্নাঘর থেকে কিছু নিয়ে খেয়ে নিতাম।তিশা ভাবছে,,,,। আর এমন সময় ফোন আসলো।স্ক্রিনে লিখা জিসান।
হ্যালো,,,, আসসালামালাইকুম।
জিসান সলামের জবাব দিয়ে,বাসায় পৌঁছিয়েছো।
হুমমমমম।
কখন????
এইতো কিছুক্ষন হলো।
ফোন কেনো দেও নাই।
না আসলে, ভাবলাম আপনে ব্যস্ত।
আমি যতোই ব্যস্ত থাকি,তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকি।
হঠাৎ জিসানের মুখে তুমি শুনে তিশাতো অবাক।
কি হলো কথা বলো না কেন।
না, আসলে সরিিিি।
ওকে বাদ দেও,শোনও
হুমমমম
আমার আলমারীর চাবী দেখো বালিশের নিচে আছে,ওখান থেকে চাবিটা নিয়ে আলমারীটা খোলও।
তিশা চাবী নিয়ে আলমারীরটা খুললো।
দেখও আলমারীর নিচের তাকে তোমার জন্য কিছু খাবার আছে,তুমি সারা দিন তেমন কিছুই খাওনি।এখানেও কম খেতে দেখলাম।আর এখন বাসায় তোমাকে খাবার দেয়ার মতো কেউ নেই।তুমি এখান থেকে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পরো।খালি পেটে তোমার ঘুম আসবে না।আমার আসতে লেট হবে,তাই তুমি ঘুমিয়ে পরো।
তিশা মনোযোগ দিয়ে জিসানের কথা শুনছে,আর ভাবছে।আলমারীর নিচর তাকে,বিস্কুট, কেক জুস,আরো কিছু খাবার আছে,এখানের সব খাবারি তিশার পছন্দের।কি করে সম্ভব, একটা মানুষ এমন কি করে হতে পারে।
তিশা হ্যালো, তিশা,শুনতে পাস।জিসান ফোনের অন্য পাশে।
হুমমমমম,আমি শুনছি।চিন্তা থেকে ফিরে,,।
তাহলে রাখি এখন।
আপনে খেয়েছেন।
না,এখন বসবো রায়হানের সাথে।
ওকে।
বায় বলে ফোন রেখে দিলো তিশা।কিছু হালকা খাবার খেয়ে তিশা বিছানায় পিঠ লাগাবার সাথে সাথেই।ঘুমিয়ে পরলো।
জিসানের আসতে আসতে রাত ১ টা বেজে গেলো।জিসান এসে দেখে তিশা ঘুম,তাই আর ডাক দেয়নি।ফ্রেস হয়ে তিশার পাশে শুয়ে,তিশাকে একটান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।তিশাকে জরিয়ে ধরে নিজেও ঘুমিয়ে পরলো।
আজ সকালে তিশার ঘুম আগে ভাঙ্গলো, তিশা দেখে জিসানের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে।তিশার কিছুটা লজ্জা লাগলো।তিশার নাকে একটা মিস্টি ঘ্রান আসে,এই ঘ্রাণ টা জিসানের শরীল থেকেই আসছে।জিসানের শরীলের এই ঘ্রাণটা তিশার খুব ভালো লাগে।এর আগেও কয়েকবার পেয়েছে,যখনি জিসান ওর একদম কাছে ছিলো।জিসানের শরীলের ঘ্রনটা তিশাকে কিছুটা মাতাল করে তুলছে,তাই তিশার উঠতেই মন চাইছে না আজ।সারাদিন জিসানের বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে মন চাইছে।হঠাৎ মনে পরলো আজতো তিশার নিজেদের বাসায় যাওয়ার কথা....।না উঠতেই হবে।তিশা আস্তে করে উঠে চলে যেতে চাইলে কিছুতে টান অনুভব করে।পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে জিসানের হাতে তিশার শাড়ীর আচলটা।তিশা চলে যেতে চাইলে জিসান আচল ধরে টান মারে।তিশা সামলাতে না পেরে জিসানের বুকের উপর পরে যায়।
আমার তিশাপাখি যাচ্ছে কোথায় আমাকে ছেড়ে.....
আপনে জাগনা ছিলেন এতোক্ষন।
চুপিচুপি আমাকে দেখার কি আছে, আমিতো পুরাই তোর।আর এতোই শখ আমার বুকে ঘুমানোর তাহলে কোথায় যাস,সারাদিন তোকে আমি এই বুকের মধ্যে রাখতে পারবো।তিশাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কথাগুলো বলছে জিসান।
না না আমার এতো শখ নেই,প্লিস ছাড়ুন, তা না হলে আজ বাসায় গেলে আমি আর আসবো না।
এবার জিসান তিশাকে বিছানায় ফেলে, তিশার উপর উঠে দুহাত চেপে ধরে।
তিশা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
কি বললি,তুই।আসবি না,,,,,তুই আমার বাঁধনে বেধে আছোস। আর এই বাঁধন ছিড়ার সমর্থ কারো নেই।তিশার কপালে কপাল দিয়ে,নাকে নাক ঘসছে আর বলছে।তুই না আসলে তোকে বেধে নিয়ে আসবো।পালাতে চাইলে শিখল দিয়ে বেধে রাখবো। তাই আমাকে ছাড়ার স্বপ্ন ছেড়ে দেন ম্যাডাম বলই,তিশার ঠোটে একটা লিপ কিস করে।এর পর জিসান উঠে চলে যায় ফ্রেস হতে।
তিশার চোখ মনে হয় কপালে উঠে গেছে,জিসানের কিস করায়।তিশা এখনো ভাবছে কি হলো এটা।ওর জেনো বিশ্বাস হচ্ছে না।তিশা এতোটাই চিন্তায় মগ্ন ছিলো যে ও সব কিছু ভুলেই গেছে।
জিসান এসে দেখে তিশা এখনো ভাবছে, কি রে এতো কি ভাবছেন।আরো কিছু লাগবে টিক তিশার সামনে এসে।
না না,,,। আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।তিশা ফ্রেস হয়ে দেখে জিসান রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য।
আপনে কোথাও যাবেন।
জিসান তিশাকে আয়নার সামনে এনে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরেছে,আর নিজের থুতনি তিশার কাধে রেখে,,,,,হুমমম।আমাকে অফিসে যেতেই হবে,ভাইয়ার সাথে।অনেক কাজ আছে,আমি না গেলে ভাইয়ার উপর সব চাপ পরে যাবে। রায়হান আসবে তোমাকে নিতে, তুমি চলে যেও ওর সাথে।আমি অফিস থেকে সরাসরি চলে আসবো তোমার কাছে।কথা গুলো বলছে আর তিশার গলায় কাধে কিস করছে।জিসানের এতো কাছে আসা,আর ওর একটা কিসে তিশা কেপে উঠছে।তাই জিসান তিশাকে আরো একটু শক্ত করে ধরে।জিসান তিশার কানের কাছে মুখটা নিয়ে,এখনি যদি এতো কাপতে থাকস তখন কি করবি,যখন আমি তোকে ভালোবাসার সাগরে ডুব দেওয়াবো।জিসানের কথায় তিশার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে কিন্তু কেনো জানি ভালোও লাগছে।
হইছে এখন ছাড়ুন।সবাই বসে আছে, আমাদের জন্য।
আচ্ছা চল,,,,জিসান একটু হেসে দিলো তিশার এ অবস্থা দেখে।তিশাকে নিয়ে নিচে নেমে এলো।
খাবার টেবিলে,
কি রে জিসান তুই অফিসে যাবি,আজ না তিশাদের বাসায় যাওয়ার কথা।একদিন না গেলে কি হয়।জিসানের মা।
না মা আজ যেতেই হবে,অনেক কাজ বাকি পরে গেছে।আর আমি রায়হান কে সব বুজিয়ে বলেদিছি।তাই চিন্তা করোনা,আমি অফিস শেষ করেই ওখানে চলে যাবো।
আমি বলি কি, আমি না হয় চলে যাই,তুই থাক।
না বাবা,তোমার বয়সের তুলনায় তুমি অনেক কাজ করেছো, আর না।এখন আমাদের ভাইদের উপর ছেড়ে দেও।আচ্ছা আমার শেষ,ভাইয়া তুমিও তারাতারি চলে আসো আমি বাহিরে আছি।
আচ্ছা চল আমারো হয়ে গেছে।
জিসান অফিসে চলে গেলো,আর তিশা নাস্তা করে ভাবীর সাথে টেবিল গুছাচ্ছে।
আরে তিশা মা তুমি কেনো করছো,তুমি যাও রেডি হয়ে নেও।রায়হান চলে আসবে।
এই কাজটা করেই আমি যাচ্ছি।
থাক তিশা আমি আর খালা মিলে করে ফেলবো, তুমি রেডি হতে যাও।
সমস্যা নেই ভাবী আমার রেডি হতে তেমন সময় লাগবে না,আমাকে সাহায্য করতে দেও এখন।
জিসান ঠিকই বলেছে,তুমি অনেক জিদিই।
তিশা ভাবীর সাথে কাজ গুলো করে রুমে চলে আসে রেডি হতে।
কিছুক্ষন পর নিশি এসে,মেঝো ভাবি তোমার ভাইয়া আর বাবা এসেছে নিচে,তোমাকে মা ডাকছে চলো।
তিশা নিশিকে নিয়ে নিচে এসে ভাইয়া আর বাবার সাথে দেখা করে।কিছুক্ষন সবাই কথাবলে,তিশা সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে যায়।
তিশার মা তিশার জন্য অপেক্ষা করছে,মাকে দেখে তিশা জরিয়ে ধরে।
তিশার মাতো কান্না করতে থাকো,এতোই যদি ভালবাসতে তাহলে আমাকে বিদায় করার জন্য এমন উঠে পরে লাগলে কেনো।এখন বিদায় করে, এতো কান্না করছো।
পাগল মেয়ে,তুই যেদিন মা হবি সেদিন বুঝতে পারবি,,, ভেতরে আস এখন।আজ আমি তোকে নিজের হাতে খাওয়াবো টিক আছে। ওকে মা জননি,,,,।
আর শোন তোর রুমে সীমা আর নিলা বসে আছে তোর জন্য।এই কথা আগে বলনি কেনো,তিশা দৌড় দিয়ে রুমে চলে আসে।
কি রে শাঁকচুন্নিরা তোরা আমার রুমে কি করোস।তিশশশশা।নিলা দৌড়ে এসে তিশাকে জড়িয়ে ধরে।হইছে ছাড়,,,,,। আমিও কিন্ত আছি।তিশা -তাই,আমিতো দেখিনি।তাইইই,,,,,শয়তান মাথারী,আমাকে বলে দেখেনি,সীমা আর তিশা রুমের চারপাশে দৌড়াচ্ছে, তিশাকে মারার জন্য।হইছে থাম এখন।
হে রে তিশা এবার বল।
কি বলবো।
এই তো তোর বাসররাতের কাহিনী।
মানেননন।
মানে মানে করছোস কেনো এতো,আমাদের একটু বল আমাদেরও ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
এতোই যদি বাসর রাতের কাহিনী শুনতে মন চায় তোর, তাহলে সীমাকে জিঙ্গেস কর,ওরতো আমার চেয়ে বেশি আইডিয়া আছে,যা ওর থেকে শিখে নে।।
নিলা সীমার দিকে তাকিয়ে আছে,কি রে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছোস কেনো।দেখ আমি কিছু বলতে পারবো না,তোর জানার এতো ইচ্ছা থাকলে তুই বিয়ে করে নে।তোর জামাই তোরে সব শিখিয়ে দেবে।
এখন না না করছো কেন সীমাবেগম,এতোক্ষন আমার পিছে লেগেছিলে তখন মনে ছিলোনা।
আরে বাদদে,ও একটা ফাজিল মেয়ে,বিয়ের আগে বাসরঘর করার শখ বেশি দেখছ না।তাই,,,,নিলা সীমাকে মারার জন্য তেরে উঠে।
তিশা থামিয়ে দেয়, হইছে।আর না এবার বস তোরা।তিনজন বিছানায় শুয়ে উপরের পাখার উপর তাকিয়ে আছে।
তিশা,,,,, জিসান ভাই তোকে অনেক ভালোবাসে তাই না।
||হুমমমম।
বিয়ের আগে নাকি পরে।
||বিয়ের আগের থেকে।
তাইইই।দেখে কখনো মনেই হতো না।
||হুমমমম।
তুই ভাইয়াকে ভালোবাসিস।
||যদি তোকে কেউ বলে,সে তোকে ৫ বছর ধরে ভালোবাসছে,বিনিময় কিছুই তোর কাছে আসা না করে।তোর অপেক্ষায় নির্গুম রাত কাটিয়েছে কবে তুই একটু বড় হবি।আর তাকে একটু ভালোবাসার চাদর দিয়ে জরিয়ে ধরবি।কেউ যদি তোর জন্য নিজের ক্যারিয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দেয় শুধু তোকে নিজের নজরে রাখতে আর অন্যের নযর থেকে বাঁচাতে। তোর বিপদে সবার আগে ঢাল হয়ে দাড়াতে।এমন অনেক কিছু যা বলে শেষ করা যাবে না।এমন মানুষটিকে, না ভালোবেসে থাকা যায় বল।
সত্যি বলছিস,৫বছর ধরে, মানে তুই যখন অষ্টম শ্রেণীতে পরস,তখন তেকে তোকে ভালোবাসে।
||হুমমমমমম।
জিসান ভাই সাঙ্গাতিক মানুষ,এতো কিছু মনে লুকিয়ে রাকছে কিভাবে।
||জানিনা,কিন্ত এখন উপলদ্ধি করে,,,তাকে নাকি আমি অনেক কস্ট দিছি।
ভালোই হলো তিশা, তোর বিয়েটা যেভাবে হইছে,আমিতো ভাবছিলাম অনেক সমস্যা হবে।কিন্ত জিসান ভাই যেহেতু তোকে ভালোবাসে দেখবি আর কোন সমস্যা হবে না।
||কিন্ত অর সীমাহীন ভালোবাসা দেখে আমারতো ভয় লাগে।
আরে ভয়ের কিছু নেই,আস্তে আস্তে দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে,ভাইয়ার রাগও অনেক কমে যাবে।
||তাই জেনো হয়।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

পাট ১৯-২০
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ১৯
লেখিকা – তানিয়া
জিসান অফিসের সব কাজ তারাতারি শেষ করে, বিকালবেলা তিশার বাসায় চলে গেলো,সেখানে কিছুক্ষন রায়হানের সাথে গল্প করলো।
জিসান তুই ফ্রেস হয়ে কিছুক্ষন রেস্ট নে।তিশা ওকে তোর রুমে নিয়ে যা।তিশা জিসানকে নিজের রুমে নিয়ে যায়,আর নতুন কিছু কাপড় এনে দেয় জিসানকে ফ্রেস হয়ে পড়ার জন্য।
এগুলো কার কাপড়,রায়হানের।
না,আপনার জন্য বাবা আনছে।
তাইইই,কি দরকার ছিলো,আমি রায়হানের কিছু পরে নিতাম।
এটা নিয়ম , নতুন জামাই প্রথম বাড়ীতে এলে শ্বশুরের দেয়া কাপড়ি পরতে হয়।
খুব সুন্দর নিয়মতো,,,,,তো আর কিছু নিয়ম শিখিয়ে দেয়নি তকে।
তিশাকে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরে,এই যেমন স্বামী আসলে তাকে সেবা করা,তাকে জরিয়ে ধরে আদর করা।সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে তাকে ডিপলি একটা কিস করা।
না না এমন কোন নিয়ম নেই,কে বলে আপনাকে এসব। আমিতো আজও এসব দেখিনি কাউকে বলতে।
যতোসব আজাইরা নিয়ম।
তিশা জিসানকে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে নিলে,জিসান তিশার হাতটা ধরে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে।
এই তুই দেখবি কি করে,এর আগে তোর কয়টা বিয়ে হইছে,,,,বল।
কি যা তা বলছেন, মানুষের কয়টা বিয়ে হয়,আর বিয়ে হলেই সব জানবে, আর না হলে জানবে না কে বলেছে।
ওওও আমার তিশাপাখিতো তো তাহলে সব জানে,তাহলে এতোই যেহুতু জানো,তাহলে স্বামীর থেকে এতো দূরে দূরে থাকো কেনো জানু।জানো না স্বামীর থেকো দূরে থাকা আল্লাহ পছন্দ করে না।।তিশার কোমড় কে দুই বাহুদিয়ে আবদ্ধ করে রেখে।
হইছে,আজকের জন্য,এখন আপনে ফ্রেস হতে জান।আমি চা নিয়ে আসছি।তিশা জিসানের কাছ থেকে ছুটার চেস্টা করছে।
জানু আমি না ছাড়লে তুমি হাজার চেস্টা করেও নিজেকে ছুটাতে পারবে না,তাই শুধু শুধু নিজের শক্তি নস্ট করো না।।
জিসান তিশাকে ছেড়ে দিয়ে কাপড়গুলো নিয়ে ওয়াস রুমে চলে যায়।
ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে তিশা এখনো আসেনি,তাই জিসান আধো শোয়া অবস্থায় বিছানায় বসে মোবাইল টিপছে। তিশা চা নিয়ে আসে।জিসান চা টা এক চুমুক নিয়ে, আমার মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে তাই আমি কিছুক্ষন ঘুমাবো।
তিশা চায়ের খালি কাপটা হাতে নিয়ে চলে যেতে চাইলে,জিসান তিশার হাতটা ধরে বলে,তুই কোথায় যাস।
আপনে ঘুমাবেন আমি কি করবো,বরং আমি থাকলে আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে তাই।
আমি ঘুমাবো,তুই আমার চুলগুলো টেনে দিবি।
কিকিকি,,,।
এতো জোরে চিল্লানোর কি আছে।
না মানেননন।
এতো মানে জানতে চাইনি, বস এখানে।
তিশাকে বিছানায় বসিয়ে তিশার কলে মাথা রেখে শুয়ে পরে।তিশা জিসানের মাথাটা বিলি দিতে থাকে।
তোকে আমি কি বলছি।
কি,,,।
আমি চুলগুলো টানতে বলেছি,বিলি দিতে না।
তিশা চুলগুলো টেনে টেনে দেয়।
তিশা,,,,,,,,?
হুমমমমম।
দুপুরে খাস নাই।
হুমমমম, খেয়েছিতো।
তাহলে এতো আস্তে আস্তে কেনো টানছিস, শক্তি নাই হাতে।কিছুটা চেঁচিয়ে।
তিশা মুখটা ভেঙ্গছিয়ে চুলগুলো জোরে জোরে টানতে থাকে।
আমি না উঠা পর্যন্ত তুই কোথাও যাবি না,এখানেই থাকবি,আমি ঘুম থেকো উঠে তোকো না দেখলে খবর আছে।
আসলেই পাগল,কখন ভালেবাসে, কখন রাগ করে,আর কখন যে মতিগতি নস্ট হয়ে যায়।কিছুই বুজিনা।
তিশাও বসে ভাবতে ভাবতে কিছুটা ঘুমিয়ে যায়।
মাগরিবের আজানে তিশার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
তিশা-এই যে শুনছেন উঠুন।আর ঘুৃমাতে হবে না।
তিশার ডাকাডাকি তে জিসান তিশার কোমড় টা আরো শক্ত করে ধরে ঘুম থেকেই বলেই কি করছোস, ঘুমাতে দে আরো একটু।
ঠিক আছে আপনে ঘুমান,কিন্তু আমাকে যেতে দিন।বাড়ীর সবাই কি মনে করবে, আমি এতোক্ষন রুমে কি করছি।
জিসান লাফ দিয়ে উঠে বসেই তিশার দিকে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে বলে সবাই তোর মতো গাধা না,,,,,সবাই বুঝে শুধু তুই ছাড়া।
এ কথা বলেই জিসান ফ্রেস হতে ওয়াসরুম এ যেতে নিলো।
কি আমি গাধা, আমি গাধা হবো কি করে,এতো পড়া লেখা করে ও আপনে জানেন না।
তিশার কথা শুনে জিসানের মন চাইছিলো তিশাকে আছাড় মারতে।
জিসান তিশার দিকে তেড়ে আসে,তিশা ভয়ে রুম থেকে পালানোর জন্য দৌড় দিলে,জিসান তিশার হাতটা ধরে টান দিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে।
সব জানিস তাই না,কিন্তু জা জানার তাই জানোস না,এবার বাসায় চল দেখ কিভাবে সব শিখিয়ে দি।
তিশাতো ভ্যাবাচেকা হয়ে তাকিয়ে আছে।
জিসান তিশাকে ছেড়ে দিয়ে, যা তারাতারি রেডি হো,আমরা ডিনার করেই আজই বাসায় চলে যাবো।
তিশা মুখটা ঘোমরা করে বলে,আমি কাল আসি।
-এক কথা আমি দ্বিতীয় বার বলবো না,আর আমরা আজই যাবো।
জিসান ফ্রেস হতে চলে গেলো।
ডিনার টেবিলে,জিসান তোমরা নাকি আজই চলে যাবে।
জি মা।একটা দিন থাকো।কাল চলে যেও।না মা,অফিসের কাজ অনেক জমে গেছে,আর ভাইয়ার একা সম্ভব না, তাই জেতেই হবে।আর কাল নাকি আমার কাজিনরা বাসায় আসবে ,তাই তিশাকেও নিতে হবে।আমরা পরে একদিন সময় করে আসবো।
আচ্ছা বাবা,তুমি যা ভালো মনে করো।ডিনার করে সবার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে তিশাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো।জিসান বুজতে পারছে, তিশার মন খারাপ।এভাবে বাসা থেকে নিয়ে আসার কারনে।কিন্তু জিসান তিশাকে একদিনও তার কাছ থেকে দূরে থাকতে দেবে না।তাই তিশাকেও থাকতে দেয়নি।
বাসায় আসতে আসতে অনেক লেট হয়ে গেছে।ওরা বাসায় এসে দেখে সবাই যার যার রুমে, হয়তো ঘুমিয়ে পরছে,তাই কাউকে ডিস্টার্ব না করে রুমে চলে গেলো।
রাতেও তিসা জিসানের সাথে কোন কথা বলেনি,জিসান কিছু কাজ বাকি ছিলো বলে লেপটপ নিয়ে বসে কাজ করছে।আর তিশা ঘুমিয়ে পরছে।
আজ সকালে উঠেও তিশা নিজেকে জিসানের বুকের উপর পেলো।তিশা মনে মনে ভাবছে,আমি রোজ রোজ বালিশ ছেড়ে এখানে কি করে আসি।
হঠাৎ জিসান, এতো ভাবিস না,তোর মতো পিচ্ছি এগুলো বুজবে না।
রেগে গিয়ে, তাহলে এই পিচ্ছি কে বিয়ে করছেন কেন।বড় কাউকে বিয়ে করতে পারলেন না।যে সব বুঝে।
হঠাৎ জিসান এক ঝটকায় আমায় বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার উপর উঠে দুহাত চেপে ধরে।
ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি।কিন্তু হঠাৎ ফিল হয় ঠোটে কিছুর স্পর্শ, চোখ খুলে বুঝার আগই আমার ঠোট ওর ঠোটের মধ্যে নিলো।উমমমমম,,,,।আমার চোখ জেনো কপালে উঠে গেলো।জিসানকে সরানোর চেস্টা করতে লাগলাম কিন্তু হাত দুটো শক্ত করে ধরে রাখছে।আমার ছটফটানও তো ওর কোন মনোযোগ নেই।ও নিজের কাজে ব্যস্ত। প্রায় অনেকক্ষন পর আমায় ছাড়ে।
আমার দিকে তাকিয়ে বললো,এটা তোর শাস্তি আমাকে এতো দিন দূরে রাখার জন্য।আর এখন থেকে নিজেকে তৈরি করে রাখ আস্তে আস্তে আমি সব শিখিয়ে তেবো আমার এই পিচ্ছি বউটাকে।
একটা ডেবিল হাসি দিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না,এটা কি ছিলো, স্বপ্ন নাকি বাস্তব। কেউ আমাকে একটি চিমটি মারো।কিন্তু কে মারবে কেউ তো নেই।আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।আআআয়য়য়।কিন্তু আমার ঠোটটা এমন ফুলে গেছে কেনো।তার মানে এটা সত্য ছিলো।শয়তান ব্যাটা আমার ঠোট কি তোর জাগির মনে করেছোস।যে এমন করলি।তিশা বসে বসে জিসানের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে।
জিসান এসে দেখে আজও তিশা ঠোঁটে হাত দিয়ে কি জেনো ভাবছে।তাই তিশার সামনে এসে ভিজা চুলগুলো হাত দিয়ে ঝাকাতে লাগলো,ভিজা চুলের পানি তিশার উপর পড়লে চিন্তা থেকে বের হয়ে আসে।
তিশা জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।এক অদ্ভুত অনুভূতি লাগছে।জিসানে উন্মুক্ত শরীলটায় জেনো এক নেশা আছে।আগে কখনো কোন ছেলেকে এমন ভাবে দেখিনি বলে কি আজ এমন লাগছে।
জিসান আয়না দিয়ে দেখতে পেলো সব।কি রে এভাবে কি দেখছোস, চোখ দিয়ে আমাকে গিলে খাবি মনে হয়।
ফাজিল কোথাকার,মুখে কিছু আটকায় না।কিছু না, আপনার লজ্জা শরম নেই। কোন মেয়ের সামনে এভাবে থাকে।
কোন মেয়ে মানে, আমি আমার বউয়ের সামনে যেমনে খুশি তেমনে থাকবো।এতে লজ্জার কি আছে।আর এতো লজ্জা নিয়ে থাকলে তোর লজ্জা ভাঙ্গাবো কিভাবে।হুমমমম।বলতো,,,,।জিসান তিশাকে এক চোখ টিপ মেরে বলে।
উফফফফ,,,,,।বিরক্ত নিয়ে ওয়াসরুম এ চলে গেলো।
জিসান ওয়াসরুমের দরজা নক করে,তারাতারি বের হয়ে নিচে আস।।
জিসান নিচে নামার কিছুক্ষন পর তিশাও নেমে আসে।
আরে তোরা কখন এলি,আমি তো ভাবলাম তোরা আজ আসবি।
না মা আমরা কাল রাতই এসে পরেছি।লেট হয়ে গিয়েছে বলে তোমাদের আর ডাকিনি।
আচ্ছা ঠিক আছে,এখন বস নাস্তা করে নে।আজ আবার মেহমান আসবে,তাই জিসান ও তাওহিদ তোরাও তারাতারি আসিস।
আচ্ছা মা চেস্টা করবো আমরা।নাস্তা করে অফিসে চলে গেলো ওরা।
আর তিশা, তানজিলা ও রেনু খালাকে নিয়ে সব গুচগাচ করে নিলো।
রাতে জিসান ও তাওহিদ বাড়ীর ভেতরে ঢুকতেই চেচামেচির শব্দ শুনে দাড়িয়ে যায়।
ভাইয়া মনে হয় শয়তান গুলো এসে পরছে,আজ থেকে আর শান্তি দিবে না।
ঠিক বলছিস, আমিতো তোর ভাবীর কথা চিন্তা করছি।ঝুমুর কে দেখলে আমার দিকে এমন ভাবে তাকায় মনে হয় খেয়ে ফেলবে।
ঠিকই আছে, বলতে গেছো কেনো,ঝুমুর আপুর কথা আগ বাড়িয়ে।
আরে বলবো না তো কি করবো।দেখোস না মেয়েটা বাসায় আসলেই আমার পিছ ছারে না।তানজিলা তো একদিন আমাকে চেপে ধরেছে সমস্যা কি,তাই সব বলে দিলাম।
ভালো এখন বুঝো।আগে চলো ভেতরে দেখি কি অবস্থা।
চল।আর আল্লাহ কাছে দোয়া করিস আমার জন্য।
তাওহিদ ও জিসান ভেতরে গিয়ে দেখে সবাই ড্রয়িং রুমে আড্ডা করছে।কিন্তু জিসান কিছু একটা দেখে ওর রাগ উঠে যায় তিশার উপর।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
গল্প – ভাইয়ের বন্ধু যখন বর
পর্ব – ২০
লেখিকা – তানিয়া
★জিসান ও তাওহিদ দেখে সবাই ড্রয়িং রুমে আড্ডা দিচ্ছে।কিন্তু জিসান তিশাকে দেখে মেজাজ গরম হয়ে যায়।কারন তিশা আর অর্ক পাশাপাশি বসে কথা বলছিলো,আর কি বিষয় নিয়ে জেনো অনেক হাসা হাসি করছে।
অর্ক,দিশা,ঝুমুর ও অনু এরা হচ্ছে সবাই জিসানের কাজিন।সবাই ড্রয়িংরুম বসে আড্ডা দিচ্ছিলো,সাথে তানজিলা আর নিশিও ছিলো।
জিসান তিশার দিকে রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে আছে সে দিকে তিশার খবরি নেই।
★আরে জিসান কেমন আছিস, বিয়ের পরে ভাবলাম হানিমুনে যাবি,তা না করে অফিসে যাস।কেমন আনরোমান্টিক তুই।
কেমন আছো আপু তুমি।
আমরাও কিন্তু আছি ভাইয়া। -দিশা
আমরা তো ভালো, কিন্তু তোর কি হলো,আমাদের দেখে কি খুশি হোসনি।
কি বলো আপু,আসলে একটু টায়ার্ড। আর কিছু না।আমি বরং একটু ফ্রেস হয়ে আসি।তার পর তোমাদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দেবো।ওকে।
একবার তিশার দিকে তাকিয়ে,জিসান উপরে চলে গেলো।
আরে বাবা কি হলো,আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো কেনো।আমি এখন আবার কি করলাম।
তিশা জিসানের জন্য চা নিয়ে যাও।তা না হলে চিল্লাবে এখন।
হমমমমমম,,,,,ভাবী।
তিশা জিসানের জন্য চা নিয়ে রুমে গেলো।জিসান চেন্জ্ঞ না করে বারান্দায় সিগারেট খাচ্ছে।
কি হলো আপনে এখানে। চেন্জ্ঞ করবেন না।
জিসান সিগারেটা হাতে তিশার দিকে তাকালো।চোখগুলো লাল হয়ে গেছে।
চোখগুলো দেখে ভয় পেয়ে গেলাম,তবুও সাহস নিয়ে আবার জিজ্ঞাস করলাম,আপনে ঠিক আছেন।
জিসান সিগারেট টা ফেলে দিয়ে তিশাকে দেয়ালের মধ্যে চেপে ধরলো।কি করছিলি নিচে,কিছুটা ঝাঁজালো সুরে।
তিশার ভয়ে মুখ দিয়ে জেনো কথা বের হচ্ছে না।
কি হলো কথা বলোস না কেনো।আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি।
নানননন মাননননে,,, কিকিকি করেছি।
এতো কিসের হাসাহাসি অর্কের সাথে।কি হয় তোর ওওও।
না কিছু না,এমনেই।আপনে হয়তো ভুল বুজছেন।
আমাকে শিখাতে আসবি না তিশা,যা আমার একদম পছন্দ না তা করার চেস্টাও করবি না।অর্ক আমার ভাই কিন্তু তোর আশেপাশে ও আমি ওকে দেখতে চাই না।অর্কের থেকে ১০ হাত দূরে থাকবি,কি বলছি শুনছোস।
হুমমমম। (তিশা নিচে তাকিয়ে হ্যা বললো)
জিসান তিশাকে ছেড়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো।
এদিকদিয়ে তিশার খুব কান্না পাচ্ছে,জিসানের এমন আচরণ এ।সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এমন রিয়েক্ট করার কি ছিলো।তিশা নিচে চলে গিয়ে ভাবীর পাশে গিয়ে বসলো।
কি হলো তিশা মুখটা এমন মলিন কেনো।জিসান কিছু বলছে।
না ভাবী এমনেই।
জিসানকে খুব ভালো করেই চিনে তানজিলা তাই আর কিছু বললো না।
★এদিকদিয়ে তাওহিদের সাথে গায়ে পরে হাসাহাসি করছে ঝুমুর, তা দেখে তানজিলা দাঁতেদাঁত চেপে বসে আছে।
তাওহিদ ব্যাপারটা বুঝতে পারে তাই ড্রয়িংরুম থেকে উঠে সোজা নিজের রুমের দিকে হাটা ধরে সাথে তানজিলা কেও আসতে বলে।তানজিলা ও চলে যায়।
এতোক্ষনে জিসান এসে পরে,আর গিয়ে তিশার সাথে বসে পরে।
ভাইয়া আজের প্লান কি,
আমি কি করে বলবো তোরা কি প্লান করছোস,আজ এমনেই টায়ার্ড তাই আজ না করে কাল কর, ভালো হবে যাই করোস।
ভাইয়া আমরা সবাই রাত জেগে মুবি দেখবো,টিক আগে যেমন করে দেখতাম।
ওকে আমি মুবি সেলেক্ট করে নি আগে।তার পর কাল রাত দেখবো নি।পরের দিনতো ছুটি,তাই কোন সমস্যা ও হবে না।
টিক বলছে ভাইয়া-অর্ক।
★তানজিলা রুমে গিয়ে তাওহিদ কে ইচ্ছামত ঝাড়ছে। তাওহিদ তুমি জানো আমার ওকে একদমই পছন্দ না তবুও কেনো ঝুমুরের সাথে এতো মাখামাখি তোমার।ও তোমার কাজিন না হলে আমি কখনো ওকে এই বাসায় ডুকতেই দিতাম না।তাওহিদ তানজিলাকে জরিয়ো ধরে,তানজু তুমি জানো আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি,তাই এসব চিন্তা বাদ দেও।
জিসান লক্ষ করলো তিশার মনটা ভালো না,হয়তো তখন এমনটা করা ঠিক হয়নি,কিন্তু্ু কি করবো কেনো জানি ওর পাশে অর্ককে সহ্য হচ্ছিলো না আমার।ওকে হারানোর ভয়টা এখনো আমাকে তাড়া করে।তাইতো না বুঝেও কস্ট দিয়ে ফেলি।কিন্তুু তার জন্য তোকে সরি বলবো না,কারন দোষটা তোরই ছিলো।
সবাই মিলে অনেকক্ষন আড্ডা দেবার পর,
রাতের খাবার খেয়ে নিজনিজ রুমে চলে গেলো।
আজ আকাশে পূর্ণিমা চাঁদ উঠেছে।তাই বিছানাটা টিক করে বারান্দায় দাড়ালাম। হালকা বাতাসে চুল গুলো উড়ছে আর পূর্ণিমা চাঁদের আলো জেনো মনো মুগ্ধকরা পরিবেশ।
ঘরে এসে দেখি তিশা নেই তাই বারান্দায় চলে গেলাম।বাতাসে তিশার চুলগুলো উড়ছে,আর তিশা বার বার চুলগুলোর সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।মুখের উপর চাঁদের আলোয় জেনো ওকে আরো অপরুপ লাগছে।আমিতো ওর থেকে চোখই সরাতে পারছিনা।
হঠাৎ মনে হলো কেউ পিছে দাড়িয়ে আছে, ঘুরে দেখি জিসান।এমন ভাবে তাকিয়ে আছে জেনো আমাকে আগে কখনো দেখেনি।চোখেচোখ পরায় আমি সরিয়ে নিলাম।
তিশা চল আমার সাথে,তিশার হাতটা ধরে।
কোথায়,,,???প্রশ্ন করার সাথে সাথে জিসান আমার হাতটা ছেড়ে আড়কোলে তুলে নিলো।আমি কিছুটা আশ্চর্য হয়ে গেলাম।
আরে এটা কি করছেন।নামান আমাকে, না হলে পরে যাবো।
চুপ থাক,তা না হলে আমি নিজেই তোকে ফেলে দেবো।
আমি ভয়ে জিসানের গলা জরিয়ে ধরলাম।
জিসান মুসকি হাসি দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে সোজা হাটা ধরলো ছাদের উদ্দেশ্যে।
ছাদে গিয়ে দেখি একটা মাদুর বিছানো।আমাকে মাদুরের উপর বসিয়ে দিয়ে,নিজেও পাশে বসলো।
জানোস আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো তোকে নিয়ে পূর্ণিমা চাঁদ দেখবো।তাই দেরি না করে এখানে নিয়ে এলাম।
রাতে খোলা আকাশের নিচে প্রিয় জনের সাথে চাঁদ দেখার মজাই আলাদা।
জিসান মাদুরের মধ্যে শুয়ে উপরের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,মনে হয় অনেক কিছু চিন্তা করছে।
আমি জিসানের এক হাত পাটিতে রেখে ওর হাতের বাহুর উপর শুয়ে আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ জিসান কিছু বলে উঠলো।
মনে আছে তিশা তোর পাঁচ বছর আগের কথা।সেদিন মনের অজান্তেই তুই আমার জীবনে প্রবেশ করেছিলি।
হুমমমমম।
পাঁচ বছর আগে------
জিসান ও রায়হান এক সাথে ছাদে বসে সিগারেট খাচ্ছিলো আর কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলছিলো।এমন সময় রায়হান এর ফোন আসে তাই রায়হান নিচে চলে যায়।
আর আমি একাই ছাদে ওপিঠ করে দাড়িয়ে ছিলাম।হঠাৎ কেউ পেছন দিকদিয়ে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কান্না করছে আর কিছুক্ষণ পর পর নাক ঘষছে আমার জামাতে।আমার বুঝার বাকি ছিলো না এটা তিশা।আমার ভেতরটা কেমন জানি তোলপার শুরু হয়ে গেলো।তবুও নিজেকে সংযত রেখে হাতটা ছাড়িয়ে পেছনে তাকালাম,কি হলো তিশা।
আরে জিসান ভাইয়া আপনে, আমি ভাবলাম রায়হান ভাইয়া,সরি আমি বুঝতে পারিনি।কান্না করছে আর বলছে।
কেনো জানি তিশার প্রতিটি চোখের জল আমার ভেতরটা ছাড়খাড় করে দিচ্ছে।
নিজেকে শান্ত রেখে,কি হলো তিশা বল আমায়,আর কান্না করছোস কেন,আগে কান্না বন্ধ কর।চোখের পানি মুছে দিয়ে।তোকে কেউ কিছু বলছে।মা বকেছে।
না,,,,কিন্তু।
কিন্তু কি বল আমাকে সব।হঠাৎ তিশার হাতের দিকে চোখ গেলো।
তোর হাতের এ অবস্থা কেনো,কে করেছে।বল,,,।
তিশা কিছু না বলে কান্না করে যাচ্ছে,তাই জিসান একটা ধমক দিয়ে,বল আগে কিভাবে হলো এমন,তার পর কাঁদিস।
জিসানের ধমকে তিশা ভয় পেয়ে সব বলে দিলো।
রাস্তার মোরে যে দোকানটা আছে না,আমি স্কুল থেকে আসার সময় ওখামে আইচক্রিম আনতে গিয়েছিলাম,কিন্তুু ওই লোকটা খুব বাজে,আমাকে কি সব কথা বলছে আমার একদম ভালো লাগছিলোনা,তাই চলে আসতে চাইলাম,কিন্তুু আমার হাতটা শক্ত করে ধরে দোকানের ভেতরে নিয়ে যেতে চাইলো,তাই আমি আমার হাতের পানির বোতল দিয়ে জোরে একটা মেরে পালিয়ে এলাম।
দেখো আমার হাতটা কি করছে,খুব ব্যাথা করছে।
জিসান তিশার হাতটা ধরে তাকিয়ে আছে,আর রাগে ওর মুখ চোখ লাল হয়ে গেছে।পাঁচ আঙ্গুলের দাগ বসে গেছে।
তুই বস আমি আসছি।একথা বলে জিসান নিচ থেকে কিছু বরফ নিয়ে এলো।হালকা করে তিশার হতে লাগাতে লাগলো যাতে কিছুটা কমে যায়।
শোন তিশা রায়হান কে তুই কিছু বলবি না,যা করার আমি করবো।ওই লোকটা তোকে আর ডিস্টার্ব করবে না।কিন্তুু রায়হান জানলে তোকে বকবে।
ঠিক আছে আমি বলবো না।
এর পর জিসান চলে গেলো।
পরের দিন তিশা স্কুল থেকে আসার সময় দেখলো দোখান বন্ধ আর টুলেট লাগানো।
আরে একদিনের মধ্যে কই গেলো।
ফ্লাশ ব্যাক-
জিসান সে দিন এসে দোকানদার কে অনেক মারলো,এমনি যে হাত দিয়ে তিশাকে ধরেছে সে হাতটাই ভেঙ্গে দিলো।এর পর ২৪ ঘম্টার মধ্যে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বললো।না গেলে জান হারাবে।
তাই দোকানদার রাতারাতি সব কিছু ছেড়ে চলে গেলো
এসবের কোন কিছুই তিশা জানে না।
এর পর থেকেই জিসান তিশাকে নজর রাখতে লাগলো,তিশা কি করে,কার সাথে চলে।তিশার পুরো জীবনটা জেনো জিসানের হয়ে গেলো।জিসান তিশাকে চোখে হারায়।
কিন্তু কখনো তিশাকে নিজের মনের কথা জানতে দেয়নি।
এসব ভাবতে ভাবতে তিশার দিকে তাকিয়ে দেখে তিশা ঘুমিয়ে গেছে।
ঘুমন্ত তিশার মুখে চাঁদের আলো জেনো তিশার রুপকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
জিসান একটু হেসে তিশাকে একটা কিস করলো।এর পর তিশাকে কোলে করে রুমে নিয়ে এলো।তিশাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]

গল্প ঃভাইয়ের বন্ধু যখন বর
লেখিকা – তানিয়া
পাট ২১-২৪
★আজ তিশা তারাতারি ঘুম থেকে উঠে গেলো।একটা শাড়ী নিয়ে ওয়াসরুম এ চলে গেলো শাওয়ার নেবার জন্য।শাওয়ার নিয়ে বাহিরে এসে দেখে জিসান এখনো ঘুম,এখনো কিছুটা সময় আছে বলে আর ডাক দেয়নি।তাই তিশা আয়নার সামনে গিয়ে নিজের চুলটা তোয়াল দিয়ে ঝাড়ছে যাতে চুল গুলো তারাতারি শুকিয়ে যায়।আর তখনি চুলের কিছু পানি জিসানের গায়ে পরে ঘুম ভেঙ্গে যায়।ঘুম ঘুম চোখে তিশার দিকে তাকিয়ে থাকে।
এদিক দিয়ে তিশাতো চুল ঝাড়ছে কিন্তু ওর খবরি নাই,দুটো চোখ কখন ধরে ওকে দেখছে।
★পিছে ঘুরে দেখি উনি আমার দিকে কেমন নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আছে।আমার বুঝতে বাকি রইলো না,উনার মতলোব ভালো না,কালকের মতো আজকেও না আবার,,,, না না।তার আগে ভালো আমি কেটে পরি।
তিশা তোয়ালটা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে মেলে দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে গেলেই জিসান সামনে এসে দাঁড়ায়।
তিশা জিসান কে দেখে একটা ঢোক গিলে,আপনে এখানে কি করেন,ওয়াসরুম ওদিকে। জান ফ্রেস ওয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিন।আমি নিচে গেলাম।
এ কথা বলে সাইড দিয়ে চলে যেতে চাইলাম,কিন্তু উনি আমার কোমড় টা ধরে একটান দিয়ে তার বুকের সাথে চেপে ধরলেন।এতে ভিজা চুলগুলো আমার মুখের সামনে এসে পরেছে।
উনি একএক করে সব গুলো চুল কানের পেছনো সরিয়ে দিলেন।প্রতিটা স্পর্শে জেনো হ্রদয়ের স্পন্দন টা বেড়ে যাচ্ছে।।কেনো জানি আজ উনার চোখে চোখ রাখতেও পারছি না,এই চোখের নেশাভরা চাওনী আমাকে মনে হয় পাগল করে দেবে।
★তোকে ভিজা চুলে অসাধারণ লাগছে।মনে হয় তোর মাঝে ডুবে যাই আমি।এমন হলে নিজেকে সামলানো আমার জন্য কস্টেকর হবে।
তিশার গালে জিসান নিজের নাকটা ঘষছে, আর বলছে।গরম নিশ্বাস গুলো তিশার মুখে পরছে।
তুই আমায় পাগল করে দিবি।আমি তোর মাঝে ডুবতে চাই,দিবি আমাকে একটু ডুবতে।আমার অতৃপ্ত মন তোর ভালোবাসার জন্য বেকুল হয়ে পরছে।কি করবো আমি,কিভাবে সামলাবো নিজেকে আর।
তিশা কিছু বলে উঠার আগেই,
জিসান তিশার ঠোটটাকে নিজের ঠোটের মধ্যে নিয়ে নিলো।আর তিশা জিসানের গেনজিটা খামচি দিয়ে ধরে ফেললো।জিসানের এক হাত তিশার কোমড়ে,আরেক হাত দিয়ে তিশার চুলগুলো আঁকড়ে ধরে রেখেছে,যাতে তিশা নড়তে না পারে।এভাবে কতোক্ষন ছিলো দুজনেরি কোন খবর ছিলো না।
হঠাৎ দরজার নক শুনে তিশা জিসানকে ধাক্কা দিলো,কিন্তু জিসান এক পাও নড়লো না।আরো শক্ত করে ধরে তিশার ঠোট থেকে গালে,গলায় কিস করতে লাগলো।জিসান জেনো আজ নিজের মধ্যে নেই।
এদিক দিয়ে দরজার বাহিরে নিশি দরজা নক করছে আর ভাইয়া ভাবী বলে চিল্লাচ্ছে।
তিশা জিসানকে ছাড়াবার বৃথা চেস্টা করছে কিন্তু্ু পারছে না।
জিসান প্লিজ ছাড়ুন, নিশি দরজা নক করছে।ওর চিল্লানিতে বাড়ীর সবাই এসে পরবে।প্লিস্,,,
তিশার কথায় জিসানের ঘোড় কাটে।জিসান গিয়ে দরজাটা খুলেই নিশিকে এক ধমক দেয়, বেচারী নিশি কিছুই বুজতে পারে না,কেনো তার ভাই তার সাথে এমন করেছে।রাগ করে চলে জেতে নিলে তিশাও পিছে পিছে যায়।
আর জিসান রাগে কটমট করে ওয়াসরুম এ চলে যায়।
★জিসান ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে রেডি হচ্ছিলো,এমন সময় অর্কও তিশা তিশা করে ডাকতে এলো,রুমে এসে দেখে জিসান রেডি হচ্ছে কিন্তুু তিশা নেই।
ভাই তিশা কোথায়.....।
জিসান শার্টের বোতাম গুলো লাগাচ্ছে আর অর্ককে ইশারা করে বলছে,অর্ক আমি তোর ছোট নাকি বড়।
অফকোর্স ভাই তুমিতো আমার বড়।
তাহলে আমার বউকে নাম ধরে ডাকার কারন কি।
ভাইয়া তিশা তো আমার ছোট তাই ওকে নাম ধরে ডাকি, আর তেমন কিছু না।এতে সম্পর্ক গভীর হয়।
এমন সময় জিসান তানজিলা কে দেখতে পায়,তানজিলা তাওহিদকে চা দিয়ে নিচে যাচ্ছিল ও।
ভাবী,একটু এখানে আসবে।
বলো জিসান কিছু বলবে।
ভাবী তুমি আমার কতো বছরের ছোট।
এই কথা কেনো জিঙ্গেস করছো।
আরে বলো না,তার পর বুজবে।
এই তো দুই বছরের ছোট হবো।
কখনো তোমাকে আমি নাম ধরে ডাকছি বলো।
নাতো,,,,,।
কেনো,তুমি তো বয়সে আমার ছোট তাহলে নাম ধরে ডাকতেই পারি,এতে নাকি সম্পর্ক ভালো থাকে।
না পারো না,কারন আমি তোমার বড় ভাইয়ের বউ হই,বয়সে তুমি আমার বড় হলেও সম্পর্কে আমি তোমার বড়।তাই তোমার নাম ধরে ডাকাটা যুক্তিসঙ্গত নয়।আর সম্পর্ক ভালো রাখতে নাম ধরে ডাকার প্রয়োজন নয়,সম্মান দিলেই হয়।
আর কিছু জানার আছে তোমার।
না ভাবী, তুমি সব বলেই দিয়েছো।আশা করি অর্ক বুঝে গেছে।
অর্ক মাথা নিচে করে চলে গেলো।
আসলে ভাবী,,,,,থাক বলতে হবে না আমি বুঝে গেছি।তুমিও তারাতারি চলে আসো।
★এদিক দিয়ে তিশা নিশির পিছে পিছে ওর রুমে গেলো।নিশি রুমে গিয়ে ন্যাকা কান্না করতে লাগলো।
ভাইয়া আমাকে একটুও ভালোবাসে না।
কে বলছে তেমাকে এসব কথা।
কেনো তুমি দেখোনি, শুধু শুধু আমাকে কিভাবে ধমক দিলো,আমি তো আজ তেমন কিছুই করেনি,মা বলেছে বলে তোমাদের ডাকতে গেলাম।আর ভাইয়া এ্যা এ্যা এ্যা,,,,,করে কানতে লাগলো।
আরে পাগলী তখন তোমার ভাইয়া খুব সুন্দর স্বপ দেখছিলো,কিন্তুু তোমার কারনে বেচারার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো,তাই রাগে তোমার সাথে এমন বিহেভ করেছে।
তুমিই বলো, তুমি কোন সুন্দর স্বপ্ন দেখছো,এমন সময় কেউ এসে তোমাকে ডাকাডাকি করলে কেমন লাগবে।নিশ্চয় ভালো লাগবে না।
জানো ভাবী মা প্রায়ই এমন করে আমার সাথে,যখনি কোন সুন্দর স্বপ্ন দেখতে নি,টিক ওই সময়ে মা এসে নিশি উঠ নিশি কলেজে যাবি না বলে ডাকাডাকি করতে থাকে।আর আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।
এই কারনেই তোমার ভাইয়ের ও খারাপ লাগছে,তাই হয়তো একটু রেগে গেছে।তুমিতো জানো উনার রাগ কেমন।একটু উন্নিশ বিশ হলেই রাগ উঠে যায়।
হুমমম ঠিক বলছো।কিন্তুু ভাইয়াকে বলবে আমাকে সরি বলতে।ওকে
ওকে ওকে ওকে।এখন চলো।সবাই বসে আছে।
আবার না তোমার হিটলার ভাই আমার উপর রেগে যায়।তাই তারাতারি চলো।
জিসান রেডি হয়ে নিচে নেমে বড়সড় ধাক্কা গেলো লাবণি কে দেখে।
লাবনি অর্কের বড় বোন।বিদেশে ছিলো এতোদিন, জিসান বলতে লাবনি পাগল।ছোটবেলা থেকেই জিসানকে ভালোবাসতো, কিন্তুু জিসান কখনওই লাবনি কে সেই নযরে দেখেনি।এক সময় ওর পাগলামি অনেক বেড়ে যায়।তাই লাবনির বাবা লাবনিকে বিদেশে ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দেয়।কিন্তুু জিসানের বিয়ের কথা শুনে কাউকে কিছু না বলেই এখানে চলে আসে আজ।
লাবনি জিসানকে দেখতে পেয়ে কাছে আসে,কেমন আছো জিসান।
আলহামদুলিল্লাহ, তুমি কেমন আছো।আর মামা কি জানে তুমি এখানে এসেছো।
ওগুলো বাদ দেও,শুনলাম তুমি নাকি বিয়ে করেছো।(লাবনি)
হুমম,ঠিক শুনেছো।
তো সেই লাকি গার্ল টা কে,এখনো তো দেখলাম না।কোথায় লুকিয়ে রেখেছো।
তেমন কিছু না,ও হয়তো নিশির ঘরে,নিশিকে নিয়ে আসছে।
এমন সময় তিশা ও নিশি নিচে আসলো।
ভাবী তোমার জামাইকে বলো সরি বলতে।নিশি মুখ অন্য দিকে ঘুড়িয়ে কথা গুলো বলছে।
থাপ্পর চিনোস,তখনতো ধমক দিয়েছি, এখন থাপ্পর দিয়ে দাঁত ফেলে দেবো।জিসান।
নিশির মন খারাপ বলে,তিশা জিসানের কাছে এসে বলতে নিবে, সরি বলার জন্য,তখনি জিসান তিশার দিকে এমন ভাবে তাকালো বেচারী ভয়ে নিশিকে বললো,নিশি উনার তরফ থেকে আমি সরি বলছি।উনি বলা আর আমি বলা একই কথা,ঠিক না।
এখন রাগকে ঝেড়ে নিচে ফেলে দেও,খালা ঝাড়ু দিয়ে বাহিরে ফেলে দিয়ে আসবে।
তিশার এমন কথা শুনে নিশি হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে।ভাবী তুমি এমন কেনো।এই কারনেই বলি ভাইয়া তোমার উপর এমন ফিদা কেনো।
এ্যা আমি আবার কি করলাম।।(তিশা)
সেটা তুই বুজবি না,এখনোও তুই বাচ্চা তো,আগে বড় হো,তার পর সব বুঝে যাবি,বলে তিশার হাতটা ধরে লাবনির সামনে নিয়ে আসে,লাবনি এটা আমার তিশা।তিশার এক কাধে হাত রেখে তিশাকে কাছে টেনে পরিচয় করিয়ে দেয় জিসান।তিশা কিছুটা অবাক জিসান এভাবে সবার সামনে কাধে হাত রেখে জরিয়ে পরিচয় করাচ্ছে বলে।
আর তিশা উনি আমার কাজিন,অর্কের বড় বোন,আর তোমার ননদ।
ওওওপ,হায় আপু কেমন আছেন।(তিশা)
লাবনি কোন জবাব না দিয়ে, তিশাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত খুব ভালো করে পর্যবেক্ষণ করছে।
তিশা বুঝে উঠতে পারছে না কি সমস্যা।
কিন্তু জিসান বুঝে গেছে,লাবনি কি দেখছে।
আচ্ছা লাবনি পরে কথা বলবো,এখন আমার নাস্তা করে অফিসে যেতে হবে।
তিশা তারাতারি নাস্তা রেডি করো।
জিসান চলে গেলো খাবার টেবিলে,তিশাও পিছে পিছে চলে গেলো।
তিশা জিসানকে নাস্তা বেরে দিচ্ছে, আর তাওহিদ ও জিসান কথা বলছে।
জিসান তুই অফিস সামলা আজ,আমি ফেক্টরী থেকে ঘুরে আসি,ওখানকার কাজের কি অবস্থা দেখে আসি।
ওকে ভাইয়া।
★এদিক দিয়ে লাবনি জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে,জিসান তিশার হাত ধরে নিজের পাশের চেয়ারে বসিয়ে দিলো,আর নিজেই তিশাকে নাস্তা বেরে দিচ্ছে,তা দেখে লাবনি দাঁতেদাঁত কটমট করছে।
এটা আমার অধিকার ছিলো জিসান শুধু আমার,,,,,,,মনে মনে কথা গুলো বলে চলছে।
জিসান তিশার কাছ থেকে কোট আর ব্যাগটা নিয়ে তিশার গালটা ধরে বায় বলে চলে গেলো।
আর লাবনি জিসানের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকলো।
★জিসান অফিসে গিয়ে সবার আগে ওর মাকে কল করলো,,,মা আমি।
হে বল বাবা,কিছু ভুলে গেছোস।
না মা,একটা কথা ছিলো।
বল,,,,।
মা তিশা......।
তোকে কিছু বলতে হবে না,আমি তিশার খেয়াল রাখবো।আর লাবনি থেকে দূরে রাখবো।তুই চিন্তা করিস না।আমি ভালো করেই বুজতে পারছি লাবনি এখানে কেনো আসছে।আমি ওর বাবাকে ফোন দেবো যতো তারাতারি পারে ওকে জাতে নিয়ে যায় এখান থেকে।
টিক বলছো মা,ও যতো তারাতারি চলে যাবে ততই ভালো আমার জন্য,তা না হলে আমার সংসার করার আগেই ঘর ভেঙ্গে যাবে।
জিসান কিছুটা রিলাক্স হলো এখন,তবুও লাবনি যতোদিন থাকবে টেনশনে থাকতে হবে।
★এদিক দিয়ে তিশা সারাদিন ঘরের কাজ আর জিসানের কাজিনদের সাথে গল্প করে কেটে গেলো।ফাঁকেফাঁকে জিসানও অনেকবার কল দিয়েছে তিশার খোঁজ নেবার জন্য।
কিন্তু লাবনির সাথে তেমন কথা হলো না,তিশা বুজতে পারলো লাবনির হয়তো তাকে পছন্দ করে না।মাজে মাজে কথার ফাকো কিছু ঠেস মেরে কথা বলছে তিশাকে।তাই তিশাও আর আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যায় নি।
সন্ধ্যার পর তিশা তার ঘরেই ছিলো আর বের হয়নি।কাপড়গুলো ভাজ করছে।
জিসান এসে দেখে সবাই ড্রয়িংরুম এ কিন্তুু তিশা নেই।
নিশি তোর ভাবী কোথায়।
ভাবী রুমে ভাইয়া।।
ওকে।বলে চলে জেতে নিলে।
কিরে জিসান এসেই বউকে খুজছোস,আমাদের মনে হয় চোখে দেখস না।লাবনি।
বউটা আমার, তাই আমি খুঁজবো নাতো কে খুঁজবে।
★কি যে বলো লাবনি আপু,জিসান ভাইয়াতো ভাবীকে চোখে হারায়।ভাবীকে একদিনও তার বাবার বাড়ীতে থাকতে দেয়নি।আর ভাইয়া বাসায় থাকলে তার আসে পাসে ভাবী না থাকলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেয়।যেনো তিশা ভাবী ছোট বাচ্চা একা ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে।
সবাই হা হা করে একত্রে হেসে দিলো।
বড্ড পেকে গেছোস তুই নিশা, দাড়া তোকে বিদায় করার ব্যবস্থা করতে হবে এবার।জিসান
মুখ ভেঙ্গছিয়ে, শখ কতো,,,,। উচিৎ কথা বললেই আমি খারাপ।যাও তোমার তিশা বেবির কাছে।
আবার সবাই হেসে দিলো।
জিসান বুজতে পারছে এরা আজ জিসানকে হেস্থনেস্থ করে ছারবে তাই কিছু না বলে রুমে চলে গেলো।
★জিসান রুমে গিয়ে দেখে তিশা ধোয়া কাপড়গুলো ভাজ করছে,তাই চুপিচুপি গিয়ে পেছন দিয়ে তিশার কোমড় জরিয়ে ধরলো।
তিশা প্রথমে ভয় পেলেও বুঝতে বেশিক্ষণ লাগেনি কে এটা।কারন জিসানের শরীলের এর ঘ্রানটা তিশা খুব ভালো করে চিনে গেছে এ কয়েকদিনে।
এটা কি করছেন।ছাড়ুন,,,,।দরজা খোলা কেউ এসে পরলে তখন।
কে আসবে,সবাই গল্প করছে।
ওওওও তাহলে জান আপনেও ফ্রেস হয়ে নিচে গিয়ে গল্প করুন।
আমার তিশা যেখানে নেই আমি ওখানে গিয়ে কি করবো।কিন্তুু তুই এ সময় এখানে কেনো।
এমনেই,,,,,।ভালো লাগছিলো না।
কেনো দেখি শরীলে জ্বর আসছে নি, আরে না এমনেই।
তিশার কাধে মুখ রেখে,কি হয়েছে তিশা বল আমায়,আমি তোকে তোর থেকেও বেশি চিনি,তাই মিথ্যা কথা একদম না।
লাবনি আপু,,,,,,,!
জিসান কাধ থেকে মুখটা উঠিয়ে, লাবনি তোকে কিছু বলছে।
তেমন কিছু না,কিন্তুু আমার মনে হয় সে আমাকে পছন্দ করে না।কেমন ভাবে তাকিয়ে থাকে,আবার মাঝে মাঝে ঠেস মেরে কথা বলে।কেনো এমন করছে বুঝতে পারছি না,আমি কি তাকে জিঙ্গেস করবো।
আরে বাদ দে,ওওওও এমনি।ওকে নিয়ে এতো বেশি চিন্তা করার কিছুই নেই।এখন বল, সারাদিন আমাকে মিস করেছোস।
না তো, একদমই না,আমি কেনো আপনাকে মিস করতে যাবো।
তাই,,,,,জিসান তিশার গাড়ে একটা কামড় দিয়ে দিলো।
আউচ,,,,,রাক্ষস কোথাকার।
জামাইকে মিস না করার প্রতিদান এটা বুজলি।
★হঠাৎ দরজা খুলে লাবনি ঘরে ডুকে পরে।
জিসান ও তিশা দুজনেই অপ্রস্তুত ছিলো,তাই দুজনে একটু দূরে সরে যায়।
আরে লাবনি,দরজা নক করেতে ডুকবি,এখন আর আমি একা নই।
ও সরি,আসলে ভুলে গেছিলাম।তোমার জন্য কফি আনছি।
সরি লাবনি আমি এখন চা খাই,তা ও আবার শুধু তিশার হাতের।
কিন্তু্ু তুমিতো আগে চা খেতে না।
হুমমম।কিন্তু তিশার হাতে চা ছাড়া আর কারো হাতের চা খাই না আমি।
তিশা আমার কাপড়গুলো বের করে এক কাপ চা নিয়ে আস,আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
জিসান চলে গেলো।
আপু আপনে কস্ট করতে গেলেন কেনো।আমিই আসছিলাম,দেখুন আপনার কস্টটা বৃথা গেলো।
যাই হোক, কফিটা আমাকে দিন,আর আপনে নিচে গিয়ে সবার সাথে বসুন,উনি এখন চেন্জ করবে।
লাবনি রাগে গজগজ করতে করতে নিজের রুমে চলে গেলো।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
পর্ব – ২২
~আপু আপনে কস্ট করতে গেলেন কেনো।আমিই আসছিলাম,দেখুন আপনার কস্টটা বৃথা গেলো।
যাই হোক, কফিটা আমাকে দিন,আর আপনে নিচে গিয়ে সবার সাথে বসুন,উনি এখন চেন্জ করবে।
লাবনি রাগে গজগজ করতে করতে নিজের রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে অস্থির হয়ে পড়লো কিভাবে তিশাকে জিসানের জীবন থেকে সরাবে।প্লান মতো কাজ করতে হবে।আগে বুঝতে হবে তিশাকে কি দিয়ে জালে ফেলতে হবে।অবশ্যই জিসানের সামনে করা যাবে না।যা করতে হবে একা,যখন জিসান বাসায় থাকবে না।
লাবনি ভাবতে ভাবতে ওর মুখে হাসি ফুটে উঠলো,তিশার মতো মোটা মাথা মেয়েকে জালে ফেলতে সময় লাগবে না।যে ভাবেই হোক তিশাকে আমার জিসান থেকে দূরে সরাতেই হবে।জিসান কে আমার চাইইই চাই।যে কোন ও মূল্যে।।তুমি শুধু আমার আর কারো না।
~তিশা চা নিয়ে উপরে যেতে নিলে,জিসান কে নামতে দেখে আর উপরে গেলো না।জিসান তিশা থেকে চা টা নিয়ে ড্রয়িংরুম এ সবার সাথে গিয়ে বসলো।সবাই গল্প নিয়ে ব্যস্ত।
ভাইয়া আজকের প্লান মনে আছে তো,আজ আমরা মুভি দেখবো।রাত জেগে।~নিশি।
হুমমম তা তো ঠিক আছে।কিন্তু প্রত্যেকবারের মতো এবারও তাওহিদ ভাইয়া ছবির মাঝ পথে ঘুমিয়ে যাবে দেখিস।
সবাই হা হা করে হেসে উঠে।
তিশা গিয়েও জিসানের পাশে বসে।
ঠিক বলেছে জিসান,তুমি প্রত্যেকবার এমন করো কেনো।সোফায় বসেই হা করে ঘুমিয়ে পরো।এতো শব্দে ঘুমাও কেমনে।~তানজিলা।
ভাবী ভাইয়া সকালে তারাতারি উঠে ঘুম থেকে নামায পড়ার জন্য,কখনো কখনো আর ঘুমায় না।আর সারা দিন অফিসের কাজে শরীল ক্লান্ত হয়ে যায়,তাই হয়তো রাত জাগতে কস্ট হয়।
একদম ঠিক বলছো তিশা,এতোদিন পর আমার দুঃখ দূর হবে বলে মনে হয়।এরা সবাই আমার বিরোধী দল জানো,কেউ আমার কস্ট বুঝে না,আজ এতোদিন পর আমার দলে একজন সদস্য পেয়েছি।নিজেকে আজ শক্তিশালী মনে হচ্ছে।
ওকে ভাইয়া আজ থেকে আমি আপনার দলে।
এতোক্ষন এ লাবনিও নিচে নেমে তাদের সাথে জয়েন হয়।কিন্তুু কোন কথা বলে না,চুপচাপ বসে থাকে।
চল আগে ডিনার সারি আমরা তার পর মুভির প্লানিং করবো নি।~জিসান।
সবাই ডিনার করতে বসে জিসানের পাশের চেয়ারে লাবনি বসে পরে।কিন্তুু তিশা বসার জন্য জায়গা পায়না। কারন মেহমান বাসায়,তাই চেয়ার সব বুক।জিসান উঠতে নিলে লাবনি হাতটা ধরে বলে কি হলো ডিনার করবে না।
জিসান হাতটা সরিয়ে,তোমরা শুরু করো,আমি তিশার সাথে করবো পরে,বলে চলে যায়।
সবার ডিনার শেষে তিশা,জিসান এক সাথে বসে ডিনার করে নেয়।
ডিনার শেষে সবাই কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে,মুভি দেখার জন্য প্রস্তুুত নেয়।জিসানদের বাসায় আলাদা একটা থিয়েটার রুম আছে সেখানে বড় একটা টিভি,আর বসার জন্য তিনটা শোফা আছে।যাতে পরিবারের সবাই বসে এক সাথে মুভি এনজয় করতে পারে,তাইতো জিসানের কাজিনরা যখনি আসে ওদের বাড়ীতে তারা একত্রে মুভি দেখার প্লান করে।
জিসান মুভি সেলেক্ট করে তাকিয়ে দেখে সবাই আসছে কিনা।সবাইকে দেখতে পেলেও তিশা এখনো আসে নি তাই ও রুম থেকে বের হয়ে তিশাকে খুঁজতে লাগে।
তুই এখনো রান্নাঘর এ কি করছিস।
তিশা জিসানের দিকে তাকিয়ে,আপনে এখানে মুভি আরম্ভ হয়নি।
কিভাবে হবে আমার ম্যাডামতো এখানে।
আমি এখনি আসতাম,খাবার গুলো না নিয়ে আসলে সবাই আবার মুভির মাঝখানে জ্বালাবে তাই সব একবারে নিয়ে যাবো বলে দেরি হলো।
তিশা চিপস,কোক,পপকোর্ন একসাথে করে একটা ব্যাগে ভরছিলো।
জিসান তিশার পেছনে দাঁড়িয়ে তিশার কোমড়টা জরিয়ে ধরলে তিশা কিছুটা কেপে উঠ।জিসান তিশার কানের কাছে মুখটা নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,,, তিশা।
একদম মায়াভরা কন্ঠে,,,,,,,
হুমমমমম।
শরীল ভালো হয়েছে।
তিশা জেনো সাত আসমান থেকে নিচে ধপ করে পড়লো মনে হয়।
তিশা তাই নিশ্চুপ।
কানের কাছে আবার, কি হলো বলিস না কেনো।
আমার কাজ শেষ চলুন,সবাই বসে আছে।এ কথা বলে তিশা জিসানের হাতটা কোমড় থেকে ছাড়াতে চাইলে জিসান আরো শক্ত করে ধরে,,,নিজের সাথে।
আগে আমার কথার জবাব দে।
কি?
আমি জা জিঙ্গেস করেছি।
জানি না কি জিঙ্গেস করছেন।
তাইইই,চল বেড রুমে চল।আমি চেক করি।সব টিক আছে কিনা।
তিশার কোমর ছেড়ে কোলে তুলে নিলো।
আরেরেরে কি করছেন ছাড়েন আমাকে,আমি ভালো আছি এখন।প্লিজ নামান।কেউ এসে পরবে।
জিসান তিশাকে নামিয়ে একদম বুকের সাথে চেপে ধরে।
এখন কি হলো,,,,তিশার দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ মেরে।
ছাড়ুন আমাকে,এটা আপনার বেডরুম না।কেউ এসে পড়লে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাবে।
তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে।
কি,,,,,!
তোর পছন্দের মুভি,,,,,
আমার কোন মুভি পছন্দ আপনে কিভাবে জানেন।
আগে ভেতরে চল,তার পর সব বুঝতে পারবি।
তিশা জিসানের দিকে আড় চোখ দিয়ে তাকাচ্ছে আর ভাবছে কিছু একটা প্লানতো করছে এই হিটলার,তা না হলে সামান্য মুভি পাগল এই ছাগলে না।
তিশা ও জিসান প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে থিয়েটার রুমে আসলো।
আসছোস তোরা, আমি তো ভাবলাম বউকে নিয়ে মনে হয় হানিমুনে চলে গিয়েছোস।
ঝুমুর আপু তুমিও না, কখন কি বলো,আসে পাশে দেখেতো বলো।~জিসান।
সোফাগুলো একটার পিছে আরেকটা করে তিনটা শোফা সেট করা।
প্রথম সারিতে জিসানের কাজিনরা বসেছে, দ্বিতীয় সারিতে তানজিলা, তাওহিদ,অর্ক,নিশি বসেছে।
লাবনি এখনো বসেনি,জিসানের জন্য অপেক্ষা করছে।জিসান যেখানে বসবে ওখানেই বসবে।
তিশা গিয়ে নিশির পাশে বসে পড়লো।
জিসান মুভি চালু করে দেখে তিশা নিশির পাশে বসে আছে।
জিসানের মেজাজ টাই খারাপ হয়ে যায়।
তিশার হাত ধরে একটান দিয়ে উঠিয়ে, পিছনে নিয়ে গিয়ে বসে।লাবনি বসতে চাইলে জিসান বলে উঠে,
লাবনি প্লিস নিশির সাথে একটু বসবে, বেচারী নিশি ভয় পাবে একটু পর।
কেনো ভয় পাবে কেনো,,,,তিশার প্রশ্ন।
জিসান দাঁতেদাঁত চেপে বলে মুভি আরম্ভ হলেই বুঝবি।।
লাবনি বাধ্য হয়ে নিশির সাথে বসে পরে।
পেছনের শোফায় তিশা আর জিসান ছাড়া কেউ নেই।জিসান এটাই চেয়েছিলো মনে মনে।
মুভি আরম্ভ হবার সাথে সাথে সবাই একটা চিৎকার দিয়ে উঠলো কারন এটা হরোর মুভি।
সবাই জিসানের দিকে তাকিয়ে, এটা কি হলো ভাইয়া।আমরা রোমান্টিক মুভি আসা করেছিলাম।আর তুমি ভূতের ছবি নিয়ে আসলে।
আরে এটা অন্যধরনের রোমান্টিক ছবি।
ভূতের ছবি আবার রোমান্টিক হয় কিভাবে।
হয় হয় আগে দেখ।পরে তোরাই বলবি ভাইয়া অস্থির একটা মুভি।
এতোক্ষন তিশা জিসানের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো, আর ভাবছে,,,,,বলে কি এসব।পাগল হয়ে গিয়েছে,এই ছবি আর রোমান্টিক। এটা সব থেকে ভয়ের একটা ছবি।আমি তিনবার দেখার ট্রাই করেছি একবারও পারিনি ভয়ে।
জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে কি ভাবছিস এতো।
এটা আমার পছন্দের ছবি কে বলছে আপনাকে
তাহলে,,,,,,।
আমি দেখবো না এই মুভি আপনেই দেখুন,বলে তিশা উঠে চলে যেতে চাইলে জিসান তিশার হাতটা ধরে নিজের কোলে বসিয়ে দেয় আর তিশার কোমড়টা শক্ত করে জরিয়ে ধরে যাতে তিশা যেতে না পারে।
ছাড়ুন আমায়, আমি এই মুভি দেখবো না।
এটা কি করে হয়,এতো কস্ট করে তোর জন্য খুঁজে আনলাম আর তুই দেখবি না।
আপনাকে কে বলেছে এই মুভির কথা।~তিশা
কে আর বলবে।~জিসান
বুঝছি রায়হান ভাই নিশ্চয়।
এতো তারাতারি বুঝে গেলি।
আমি এটা দেখতে পারবো না আমার খুব ভয় করে।
আমি আছি না,আমি থাকতে তোর ভয় কিসের।এবার তুই একটুও ভয় পাবিনা দেখিস।
ঠিক আছে, ছাড়ুন,আমি শোফায় বসি, আপনার পা ব্যাথা করবে।
না করবে না, তুই এখানে বসেই দেখবি।আর আমি তোর শরীলের ঘ্রাণ নিবো।যা আমার খুব ভালো লাগে।।
জিসানের কথায় তিশার ভেতরে তেলপার শুরু হয়ে যায়।
সবাই মুভি দেখাতে ব্যস্ত আর জিসান তিশাকে নিয়ে।
জিসান তিশার চুলের খোপা খুলে দিয়ে চুলের ঘ্রান নিতে থাকে।মাথাল করা ঘ্রান আসে তিশার চুল থেকে।আর জিসান তা খুব মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করছে।
এক সময় চুলটা কাধ থেকে সরিয়ে তিশার গলায় ঘাড়
এ কিস করতে থাকে।
বেচারী তিশা মুভি দেখে ভয় পাবে কি,সে তো জিসানের রোমান্টিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
না উঠতে পারছে না শান্তিমতো বসতে পারছে।এভাবে তাদের রোমান্টিক মুভি শেষ হলো।।
মুভি শেষে যে যার রুমে চলে গেলো।একেকটার চেহারা দেখলে বুঝা যায় তারা কি ভয়টা পেয়েছে।
তিশাও ভয়ে জিসানের হাত ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।
কি রে রুমে যাবি না,নাকি এখানেই থাকবি।
আমার ভয়,করছে।~তিশা
জিসান তিশাকে কোলে তুলে নিলো,এবার তিশা আর কিছু বলেনি,চুপচাপ জিসানের গলা জড়িয়ে আছে।
সবার আগে আল্লাহ কে ভয় পাবি,এর পর দুনিয়াতে আমাকে ভয় পাবি।~বুজলি।
তোর হাসবেন্ড কিন্তুু ডেবিলের থেকে কম না।তিশাকে কোলে করেই রুমে নিয়ে গেলো।
আজ তিশা নিজেই জিসানের বুকে মাথা রেখে জিসানকে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ঘুমিয়ে আছে ভয়ে।
জিসান এটাই চেয়েছিলো।কারন জিসান ভালো করেই জানে এই ছবি দেখার পর তিশা একা কিছুতেই ঘুমাবে না।
রায়হানের কাছ থেকে জেনেছিলো,তিশা হরোর মুভি দেখলে রাতে একা ঘুমাতে পারেনা।তাইতো এতো ব্যবস্থা।
তিশা জিসানের বুকো মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।আর জিসানও তিশার কপালে একটা কিস করে ওকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।।
.............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
পর্ব – ২৩
- তিশা জিসানের বুকো মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।আর জিসানও তিশার কপালে একটা কিস করে ওকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।।
সকালে জিসান ঘুম থেকে উঠে আজ তিশাকে পায়নি।কারন তিশা আগে উঠেই নিচে চলে গিয়েছিলো জিসান ঘুমিয়ে আছে বলে।তানজিলার সাথে রান্নাঘর এ সবার জন্য নাস্তা রেডি করছে।
_জিসান ফ্রেস হয়ে রেডি হতে লাগলো,এমন সময় লাবনি ঘরে ডুকলো।লাবনিকে দেখে জিসানের মেঝাজ খারাপ হলেও কিছু বললো না।
তুমি এখানে,,,,, কি চাই।আর তোমাকে না বললাম এখন আমি এই রুমে একা থাকি না, তাই দরজা নক করে আসবে।তাহলে,,,,,
_হুমমম আমি জানি তুমি একা নও,কিন্তুু কি করবো বলো,এই রুমটাকে নিজের মনে করেছিলাম,সাথে রুমের মানুষটি কেও।কিন্তু তুমি!কেনো করলে আমার সাথে এমন।
_দেখো লাবনি, আমি আগেও বলেছি আমি তোমাকে সেই নজরে কখনো দেখিনি।তাই এসব বলে কোন লাভ নেই।
_লাবনি জিসানকে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরে,কেনো কেনো তুমি আমাকে সেই নজরে দেখতে পারো না,কি নেই আমার মাঝে বলো,আমি কি ওই তিশা থেকে কম সুন্দর বরং সব দিক থেকে অনেক এগিয়ে আছি।আর তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি।কেনো তুমি আমার ভালোবাসা বুঝতে চাও না।
_জিসান লাবনিকে ছাড়িয়ে কষে এক থাপ্পড় দিলো।তাল সামলাতে না পেরে লাবনি ফ্লোরে পরে গেলো।
নিজেকে আমার তিশার সাথে তুলনা করছিস।আমার নজরে তিশা সবথেকে সুন্দরী নারী।কারন জানোস তিশাকে আল্লাহ আমার জন্য সৃষ্টি করেছে,তাইতো তিশা আজ আমার অর্ধাঙ্গিনী। তিশাকে ওর রুপ দেখে আমি ভালোবাসিনি।ও তোর মতো গায়ে পরে কথা বলেনি,বরং দূরত্ব রেখে আমার হ্রদয়কে স্পর্শ করেছে।তাই ওর সাথে কারো তুলনা হয় না,,,কারো না।
_লাবনি এখনো ফ্লোরে বসে চোখের পানি ফেলছে আর জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।জিসানের কথা শেষে লাবনি উঠে দাঁড়ালো। ঠিক জিসামের সামনে এসে,তিশা কি তোমাকে ভালোবাসে।আমার তো মনে হয়না।একটু বাকা হেসে।
আর বাসবেও না,কারন ও মন থেকে তোমাকে মেনে নেয়নি এখনো।এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিয়েটা করছে।আর এখন বাধ্য হয়ে সংসার চালাচ্ছে।কিন্তুু কতোদিন তুমি ওকে এভাবে বেধে রাখবে।এক দিন পাখি খাঁচা থেকে উড়ে যাবে..... মনে রেখো।
লাবনি রুম থেকে বের হতে নিলে তিশার সাথে দেখা হয়।তিশা জিসানকে ডাকতে এসেছিলো নাস্তার জন্য।
আপি আপনে,কোন কাজ ছিলো।
হুমমমম,কিন্তুু তোমার সাথে না,যার সাথে ছিলো হয়ে গেছে, জিসানের দিকে ইশারা করে।
_তিশার লাবনির উপর রাগ উঠলো,,, কারন যখন তখন লাবনির এই রুমে আসা ওর একদম পছন্দ না।
তবুও চুপ থাকলো কারন জিসানের কাজিন আর এই বাড়ীর মেহমান। তাই কিছু বলতে চায় না।
তাই চুপচাপ জিসানের কাছে এসে নাস্তা করবেন চলুন।
জিসানের এমনেই সকাল সকাল মেজাজ খারাপ, একতো তিশাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে না পারা আর তার উপর লাবনির এই ধরনের আচরণ আরো রাগটা বাড়িয়ে দেয়।
কোথায় ছিলি তুই। ~ধমক দিয়ে।
আমি তো রান্না ঘরে ছিলাম,নাস্তা রেডি করছিলাম ভাবীর সাথে।
বাড়ীতে অনেক মানুষ আছে কাজ করার জন্য, তোকে কি বলেছিলাম, আমি জেনো ঘুম থেকে উঠে তকে দেখতে পাই।বলেছিলাম কি না,,,,,।~আবারও ধমক দিয়ে।
জিজিজি.....।~তিশা একটু ভয় পেয়ে গেলো জিসানের এমন আচরনে।
আমারি ভুল, তোর কাছে কিছু আশা করা।তুই কখনো বুঝবি না,,,,,,আমাকে।
কথাগুলো বলেই কোটটা আর ব্যাগটা নিয়ে চলে গেলো।নাস্তা না করেই চলে গেলো আজ।
আর তিশা বসে বসে ভাবছে সামান্য একটা ব্যাপারে এমন রাগ করার কি আছে।আমিতো তাকে ডাকতেই এসেছিলাম,কিন্তুু উনিই আজ তারাতারি উঠে গেছে।
তিশার খুব কান্না পাচ্ছে কিন্তুু এখন নিচে যেতে হবে,তা না হলে সবাই প্রশ্ন করা শুরো করে দিবে।
নিচে গিয়ে দেখি সবাই নাস্তা করছে কিন্তুু জিসান নেই তার মানে নাস্তা না করেই চলে গেছে।রাগ করে।কিন্তুু লাবনি সবার সাথে দিব্বি নাস্তা করছে আর আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে হাসছে।ব্যাপারটা আমার মোটেও ভালো লাগেনি।কি যে চলছে এই মেয়েটার মনে আল্লাহই জানে।
দিনটা জেনো আজ কাটছে না,সব কিছুতে খুব বিরক্তি লাগছে,আজ সারাদিন জিসান একটা কলও করেনি।
কেনো রে ভাই এতো কিসের রাগ তোর বজ্জাত কোথাকার,আমাকে বকে আবার আমার সাথেই রাগ করোস।মনে তো চায় মাথার সব গুলো চুল টেনে ছিড়ে ফেলেদি ওর।না না টাক হলে কেমন লাগবে,সকলে তখন আবার আমাকে টাকলুর বউ বলবে।অন্য কিছু ভাবতে হবে।
_এদিকদিয়ে জিসান....
আমি আজ কল দিনাই বলে কি আমাকে একটা কল করবে না,মানলাম সকালে রাগ করেছি তাই বলে কি একটাবার ও ফোনদিয়ে খোঁজ নেয়া যায় না।
জিসান চোখ বন্ধ করে কথাগুলো ভাবছে।একটু ভালোবাসার জন্য তোর কাছে ছুটে যাই।আমাদের সারা জীবনের জন্য আমার ভালোবাসাই যথেষ্ট কিন্তুু সম্পর্ক টিকে রাখার জন্য তোকেও কিছু করতে হবে।তা না হলে আমাদের মাঝের দূরত্ব টা অনেক বেড়ে যাবে, যা আমি হতে দেবো না।তাই আমাকেই কিছু করতে হবে।
এদিকদিয়ে রাত ১১টা বেজে গেছে,কিন্তুু জিসান এখনো আসছে না।সবাই ডিনার করে যার যার রুমে চলে গেলো কিন্তু তিশা খাবার নিয়ে জিসানের জন্য অপেক্ষা করছে।কয়েকবার কলও করছে কিন্তুু জিসান ফোনটা সুইচ অফ করে রাখছে।তিশার খুব চিন্তা হচ্ছে।কখনোতো এমন করেনা।কি হলো আজ,,,,,
_রাত ১২ টায় জিসান বাড়ীতে আসলো।এসেই দেখে তিশা এখনো খাবার টেবিলে বসে আছে।
জিসান কিছু না বলেই রুমে গিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলো।
তিশা ২জনেরি খাবারগুলো আবার গরম করে রুমেই নিয়ে গেলো,তিশাও না খেয়ে ছিলো।জিসানের সাথে একসাথে খাবে বলে।
জিসান ফ্রেস হয়ে এসে দেখে তিশা খাবার নিয়ে এসেছে।
খাবার কার জন্য।
_আপনার জন্য খাবেন না।সকালেও না খেয়ে চলে গেলেন।এখন তো খেয়ে নিন।
_জিসান অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে,আমি খেয়ে আসছি,এগুলো নিয়ে যা।আর লাইট অফ করে দে,আমি ঘুমাবো।খুব টায়ার্ড আমি।
_তিশার মনটা খারাপ হয়ে গেলো,তবুও কিছু বললো না,কিন্তুু অনেক কিছু বলতে মন চাইছিলো আজ জিসানকে।কেনো জানি জিসানের অবহেলাটা সহ্য হচ্ছে না।
তিশা লাইটটা অফ করে খাবার গুলো রেখে আসলো।এসে দেখে জিসান আজ একলাই অন্য দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে আছে।তাই তিশাও না খেয়ে শুয়ে পরলো কিন্তুু তিশার চোখে আজ ঘুম নাই।সারা রাত নির্ঘুম কাটালো।
আর এসব রাতের অধারে শুধু একজন দেখলো,তা হলো লাবনি।লাবনি মনে মনে অনেক খুশি।লাবনি ভাবছে তিশা ও জিসানের মাঝের দূরত্ব যতো বাড়বে ততোই আমারি লাভ।
ভোর রাতে তিশার চোখ লেগে গিয়েছিলো, সারারাত ঘুম না হবার কারনে সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু লেট হলো।ঘুম থেকে উঠে দেখে জিসান নেই।ফ্রেস হয়ে নিচে গেলে,তানজিলা ভাবী বলে জিসান নাকি অনেক আগেই চলে গেছে।আজও নাস্তা করেনি।তিশা মনটা খারাপ হয়ে গেলো।ভাবী আর শ্বাসুড়ীর জোড়া জোড়িতে তিশা কোন রকম নাস্তাটা করে নিলো।
না এভাবে চলতে দেয়া যাবে না,আজ একটা ফেছালা করতেই হবে এই লোকটা কি চায় আমার কাছ থেকে কেনো এমন করছে।
তিশা সারাদিন অনেক ফোন দিলো কিন্তুু জিসান আজ খুবই ব্যস্ত থাকার কারনে ধরতে পারেনি।
এদিকদিয়ে তিশা প্রায় পাগল হয়ে যাবে,জিসানের এমন অবহেলা তিশা কখনো দেখেনি তাই হয়তো সহ্য হচ্ছে না।
জিসান কাজ শেষে ফোন চেক করে তিশার অনেকগুলো মিসকল পেলো।
জিসান মনে মনে ভাবছে,এবার লাইনে আসা শুরু করলো,তুই যেমন ত্যারা তোকে সোজা করতে ত্যারা রাস্তাই বেঁচে নিতে হলো।আমাকে কম জ্বালাস নাই দেখ ভালোবাসার মানুষ থেকে অবহেলা কেমন লাগে।
জিসানের মোবাইলের কভার ফোটোতে তিশার ছবি দেওয়া।সেটা দেখছে আর মনে মনে বলে যাচ্ছে।
এদিকদিয়ে তিশা অপেক্ষা করছে জিসানের ফোনের।
জিসান তিশাকে কল বেক করার সাথে সাথে তিশা কল ধরলো।
_হ্যালো,কোথায় ছিলেন আপনে, ফোন ধরছেন না কেনো।
_ব্যস্ত ছিলাম তাই খেয়াল করিনি।বল কি বলবি।
_বাসায় কখন আসবেন।
_কেনো,আমাকে দিয়ে তুই কি করবি।আজ আমার অনেক কাজ তাই কখন আসবো বলতে পারিনা।আমার অপেক্ষায় থাকার কোনো দরকার নাই।ঘুমিয়ে জাস।
রাখি আমি এখন।
_না না শুনেন,টুংটুং টুংটুং কেটে গেলো।
_হাধারাম কোথাকার,আমার কথা না শুনেই ফোনটা কেটে দিলো।আরও একটু কথা বললে তোর কি লেজ গজাতো।মনে মনে তিশা এমন হাজারো গালি দিচ্ছে।
তিশা মন খারাপ করে ঘরে বসে আছে।এমন সময়
লাবনি রুমে আসে।
আসতে পারি~লাবনি
আপু আসুন।জিঙ্গেস করার কি কাছে।
_না এখন তো এই রুমটা তোমার। একসময় আমার হওয়ার কথা ছিলো তাই ভুলে আগে অনুমিত না নিয়েই এসে পরেছিলাম তুমি কিছু মনে করো নিতো।
না আপু,আমি কিছুই মনে করেনি।
_জিসান কি রাগ করেছে তোমার উপর।
নাতো আপি,আপনার এমন কেনো মনে হলো।
_না তেমন কিছু না দুদিন ধরে নাস্তা না করে চলে যাচ্ছে,আবার রাতেও দেরি করে আসে।তাই আর কি।
ও তো কখনো এমন করেনা।যতোই রাগ করুক ও বাসায় টাইম মতো আসে।কিন্তু এমন কি হলো,ও এতো চেন্জ্ঞ হয়ে যাবে ভাবতেও অবাক লাগে।তোমরা কি একে অপরের সাথে সুখী নও।
_না আপু এমন কিছু না,আপনে হয়তো ভুল বুজছেন।সে একটু ব্যস্ত কাজের চাপটা বেশিতো।তিশা মুখটা অন্য দিকে ঘুড়িয়ে কথা গুলো বলছে।
_ওওও আসলে জিসান আর তুমি সম্পূর্ণ আলাদা তো তাই এমন মনে হলো। জিসান এর মতো ছেলে আরো ভালো সঙ্গী পাওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু তোমাদের বিয়েটাতো একটা এক্সিডেন্ট মাত্র। জিসান ভালো বলে বিয়েটা একচেপ্ট করে নিয়েছে।না হলে অন্য কেউ হলে,তোমার জন্যই অনেক মুশকিল হতো।
দেখোনা এই শহরের অনেক বড় বড় ঘর থেকে প্রস্তাব এসেছিলো জিসানের জন্য,প্রত্যেকটা ঘরের মেয়ে যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি উচ্চ শিক্ষিত, কারো থেকে কেউ কম ছিলো না।আমার কথাই ধরো আমার বাবার কোন কিছুর অভাব নেই,আমার বিয়ের কথাও হয়েছে জিসানের সাথে।এই বিয়ে নামক দূর্ঘটনাটা যদি না ঘটতো তাহলে হয়তো আমার আর জিসানএর বিয়েটা হয়েই জেতো।যাক এই নিয়ে আমার আফসোস নেই।
কিন্তু আমার চিন্তা হচ্ছে তোমাকে নিয়ে।
_তিশা লাবনির দিকে করুন চোখে তাকালো।আমায় নিয়ে,,?
হুমমমম,আমি ভাবছি জিসান আবার বিয়েটা নিয়ে আফসোস করেনি।তাই আর কি তোমার সাথে কথা বলতে আসলাম,যেভাবে তোমাকে এড়িয়ে চলছে মনে হচ্ছে জিসানের আফসোস হচ্ছে।আসলে ছেলে মানুষের মন বলে কথা।
লাবনি খেয়াল করলো তিশা কিছু একটা ভাবছে।লাবনি মনে মনে খুশি হলো যাক কাজ হচ্ছে মনে হয়।আজকের পর থেকে তিশা ও জিসানের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়ে যাবে।আমার কাজ শেষ।তিশা আমি এখন আসি।তুমি কোন চিন্তা করো না সব টিক হয়ে যাবে।
_এদিক দিয়ে তিশা গভীর চিন্তায় মগ্ন, আসলে কি সত্য জিসানের আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়ে করে।উনি তো আরো ভালোকিছু পেতো।কিন্তুু আমি তো কিছুই দিতে পারিনি।এমনকি ভালোবাসাটাও না।হয়তো এখন উনার আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়েটা করায়।কিন্তুু উনিতো বললেন আমাকে ভালোবাসে।তাহলে এখন.....না আমি কোন চিন্তা করতে পারছি না।
তিশা চোখ বন্ধকরে ফ্লোরে বসে পড়লো।
রাতে তিশা ডিনারের জন্য নিচে ও নামেনি।সবাই কিছু বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে কিন্তুু জিসান আর তিশাকে জিঙ্গেস করলে লাভ নেই,কেউ কিছুই বলবে না তাই ডিনার করে সবাই যার যার রুমে চলে গেলো।
_জিসান আজও লেট করে বাড়ী ফিরলো।এসে দেখে বাড়ী পুরো অন্ধকার তার মানে তিশা আজ আর আমার জন্য ওয়েট করেনি।জিসান সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।
রুমের লাইট অফ,ভাবলাম তিশা ঘুমিয়ে আছে তাই লাইট ওন করলাম না।কিন্তু ড্রিম লাইট আর চাঁদের আলোয় ঘর আলোকিতো। তিশা বিছানায় নেই, ঘরের চারদিকে তাকিয়ে দেখি তিশা ঘরের এককোনায় ফ্লোরে মাথা নিচু করে বসে আছে।
শার্ট এর টাইটা খুলতে খুলতে তিশার কাছে গেলাম।
তিশা এই তিশা।তুই এখানে কি করছ।উঠ,,,বিছানায় চল।
তিশা মুখটা উচুকরে আমার দিকে তাকালো।
আমি ওকে দেখে কিছুটা হতোভম্ভ হয়ে গেলাম।কারন চোখ মুখ ফুলে গেছে।মনে হয় অনেকক্ষন ধরে কানছে।চোখের কাজল গুলো ছড়িয়ে গেছে।নাকটা লাল হয়ে গেছে।
এই তোর এই অবস্থা কেনো।আর তুই কান্না করছিস কেনো।উঠ আগে।
তিশাকে জোর করে উঠালাম।
_তিশা আমাকে ধাক্কা দিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো।আমার ফোন কেনো ধরছেন না,আর কথা বলার আগেই ফোন কেনো কেটে দিলেন।
_তিশার এমন রুপ আমি আগে কখনোই দেখিনি।নিজে শান্ত হয়ে জবাব দিলাম।কারন আমিও যদি রেগে যাই তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
_আমি ব্যস্ত ছিলাম,তোকে তো ফোনে বলেছি।
মিথ্যা সব মিথ্যা,আপনে একটা মিথ্যাবাদী লোক।
এতো দিন ধরে শুধু মিথ্যা বলে এসেছেন।
_কি বলছিস এসব পাগল হয়ে গেছোস।
হে সত্য কথা বললে,আমি পাগল তাই না।
_কি সত্য বলছিস আর কোন সত্যকথা জেনেছিস তুই।
এই যে আপনার এখন আফসোস হচ্ছে আমাকে বিয়ে করায়।
_কিকিকিকিকিকি,,,,,কিসব বলছিস তুই।
সত্য বলছি,তাইতো দুদিন ধরে আমাকে এড়িয়ে চলছেন।আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলছেন না, রাতে আমাকে জরিয়ে এখন ঘুমান না।সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে জ্বালান না।ভালোবাসি ভালোবাসি বলে কান জ্বালাপুরা করে ফেলেছেন এতোদিন আর এখন যখন আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করেদিয়েছি আর আপনে, এমন করছেন।জানেন আপনাকে ভালোবাসা কতোটা কস্টকর,আপনার ভয়ে আপনাকে ভালোবাসতে পারতাম না।মনে হতো এই বুজি এখন রাগ করবেন,ধমক দিবেন,আর টিকমতো ভালো না বাসতে পারলে থাপ্পড় সব আমার গালে পরবে।আর আপনার এখন আফসোস হচ্ছে।এতোদিন কোথায় ছিলো আপনার আফসোস।
তিশা একাধারে কথাগুলো বলছে।ও হয়তো জানেই না রাগের মাথায় কি কি বলছে।কিন্তু সত্য বলছে।
জিসান অপলক ভাবে তিশার দিকে তাকিয়ে আছে,কারন আজ সে নতুন এক তিশাকে দেখছে।
আমি চলে যাবো,আপনাকে আর ডিস্টার্ব করবো না।আপনে লাবনি আপুকে বিয়ে করে নিয়েন।
_কোথায় যাবি~জিসান হাত দুটো পকেটে রেখে।
যে দিকে দুচোখ যায় চলে যাবো,আর যাওয়ার জায়গা না থাকলে মরে যাবো।আপনার কি,,,,
ঠাসসসসসস।তিশার এমন কথায় জিসানের রাগ উঠে গেলো।
_কি বললি তুই,সাহস কি করে হলো তোর এমন বলার।
তিশা গালে হাত দিয়ে কান্না করতে লাগলো।
_জিসান তিশার হাত ধরে টেনে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো তিশার ঠোঁটকে নিজের ঠোঁটে আবদ্ধ করে ফেললো।ঘটনা আকস্মিক ঘটায় তিশা কি করবে কিছুই বুজতে পারছে না তাই রোবট এর মতো দাঁড়িয়ে আছে।
টিক ১০ মিনিট পর জিসান তিশাকে ছেড়ে দিলো।তিশার মুখটা দুহাতে আবদ্ধ করে কপালে কপাল রেখে, জানোস তিশা এই দুদিন মনে হয় আমি নরকে ছিলাম,তোর মুখ দিয়ে ভালোবাসি কথাটা বের করতে আমাকে কতো কাঠকয়লা পোড়াতে হয়েছে তুই কিছু জানোস না।আমি জানতাম তোর সাথে এমন না করলে তুই কখনো মুখ খুলে আমাকে কিছুই বলবি না।তাইতো এমন করতে হলো।কস্ট তোকে দিতে গিয়ে দ্বিগুণ কস্টে আমি ভুগেছি।তোকে ছারা আমি এই দুদিন কিভাবে কাটিয়েছি তুই ভাবতেও পারবি না।আর আফসোস, সেটা কি জানি না,আমি শুধু জানি আমি তোকে ভালোবাসি,অনেক ভালোবাসি,তোর থেকে দূরে থাকলে নিশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে আসে আমার। তুই আমার নেশা যার থেকে পরিত্রাণ হতে আমি চাই না।বরং এই নেশায় আমি আরো নেশাগ্রস্ত হতে চাই।দিবি আমায় তোর ভালোবাসায় নেশাগ্রস্থ হতে,,,, বল না।
জিসানের কথায় এবার তিশা কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলো।
_জিসান তিশার কানের সামনে গিয়ে বলে,আজ লজ্জা পাবার সময় না,লজ্জা ভাঙ্গাবার রাত।তোর মুখ থেকে ভালোবাসা কথাটা শুনার জন্য অনেক অপেক্ষা করছি।কিন্ত আজ আর পারছি না নিজেকে সামলাতে।আজ আমি তোকে ভালোবাসবো ঠিক আমার মন মতো,আর তুই শুধু অনুভব করবি আমার ভালোবাসাকে।
জিসান তিশাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলো। জিসান তিশার উপর ভর দিয়ে আবারও তিশার ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলো।এক সময় তিশার ঘাড়ে, বুকে সব জায়গায় জিসানের ঠোঁট স্পর্স করছে।ভালোবাসার এ খেলায় দুজনেরি নিশ্বাস জেনো ভারী হয়ে গেলো।তিশা আজ সত্যি জিসানের ভালোবাসা অনুভব করছে।এই ভালোবাসায় কোনো পাপ নেই,আছে শুধু পবিত্রতা।যা একজন স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসায় আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে।
জিসানের ভালোবাসাটা সহ্য করার ক্ষমতা আসলেও অন্য কেউ পারবে না।কারন জিসান তিশার নেশায় এতোটাই মগ্ন যে ওর ভালোবাসা গুলো কামড়ে পরিনিত হয়েছে।কিন্ত তিশা ভালোবাসার মাঝে জিসানের দেয়া কস্টটাও আপন করে নিয়েছে।
আজ দুটি দেহ এক হয়ে গিয়েছে।আর তার সাক্ষী হয়েছে দূর আকাশের সেই চাঁদ।
..............
....................
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে........]
পর্ব – ২৪
~ সকালে আমার ঘুম আগে ভাঙ্গলো।আর প্রতিদিনের মতো আজও নিজেকে জিসানের বুকের উপর পেলাম।ঘুমন্ত জিসানকে দেখতে কেনো জানি আজ অনেক ভালো লাগছে,আর কাল রাতের কথা মনে পড়তে বিষণ লজ্জাও লাগছে।ভালো করে দেখলাম উনি ঘুমিয়ে আছে,তাই আস্তে করে উনার কপালে,গালে কিস করে ঠোঁটে জেতেই এই কি হিটলার চোখ মেলে তাকালো।উনার এভাবে তাকানো দেখে লজ্জা পেয়ে চলে জেতে নিলে উনি হাতটা ধরেই নিজের কাছে টেনে আনলো।নিজেকে সামলাতে না পেড়ে উনার বুকের উপর গিয়ে পরলাম।কাল রাতের কথা মনে পড়ায় লজ্জায় উনার দিকে তাকাতে পারছি না।
~কি হলো ঘুমন্ত অবস্থায় আদর না করে,জেগে আছি এখন কর।
উমমম,উনাকে আদর করতে বয়েই গেছে আমার,বলে উঠার চেস্টা করলাম।
~তাইইই,,,, তাহলে এতোক্ষন কি করছিলি।
মোশা মারছিলাম।অনেকগুলো মোশা বসেছিলো,তাই আস্থে করে মেরে দিলাম।
~তাইইইনি।আমার গাল, আমার কপাল,তাহলে তুই মারলি কেনো,আমাকে ডেকে দিতি।আমিই তাদের একটু আদর করে দিতাম।
টিক আছে নেক্সট টাইম ডেকে দিবোনি।এখন ছাড়ুন আমায়।
~না ভুলতো করেছিস, এখন তোকে জরিমানা দিতে হবে।
~কি জরিমানা দেবো আমি।,,,কিছু বলার আগেই জিসান আমাকে বিছানায় ফেলে নিজে আমার উপর উঠে যায়।আমার ঠোঁটের চারপাশে স্লাইড করতে করতে বলো,যেটা বাকি ছিলো সেটা এখন চাই।
কি বাকি ছিলো।আমি কপাল কুচকে.....।
~এটা... ঠোটটা দেখিয়ে।
না না না কিছু বাকি নেই,বলার আগেই জিসান আমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়।আমি বাধা দিতে চাইলে হাত দুটো বিছানায় চেপে ধরে।অনেকক্ষন পর জিসান ছেড়ে দেয়,আমি চোখ বন্ধ করে আছি এখনো।তাই জিসান আমার গাড়ে,গলার আর বুকের কমড়ের দাগ গুলোতো ডিপ কিস করে দেয়।
আমি চোখ খুলেই জিসানের দিকে তাকাই।
~আমি ব্যাথা দিয়েছি দেখছিস এখন আমিই আদর করে দিলাম।
আমি একটা ভেঙ্গছি কেটে,জিসানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।গায়ের চাদরটা ভালো করে পেছিয়ে উঠে চলে জেতে চাইলে জিসান আবার হাতটা ধরে ফেলে,
~কোথায় যাস।একটা ভ্রু উঠিয়ে জিঙ্গেস করে।
সারাদিন কি এভাবেই থাকব,ফ্রেস হতে হবে না,একটু রাগ করে।
~জিসান বিছানায় পা জুলিয়ে বসে আমাকে কোলে বসিয়ে কোমড়টা শক্ত করে ধরে আমার পিঠে নাক দিয়ে স্লাইড করে, __আগে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবি তার পর যাবি।তা না হলে একদমও নড়তে পারবি না।
আমি ঢোক গিলে উনাকে জিঙ্গেস করলাম কি প্রশ্ন।
~কাল এমন করলি কেনো।তোকে কেউ কিছু বলছে।
না তো কেউ কিছু বলেনি। জিসানকে বলতে চাচ্ছি না, যদি উনি আরো রাগ করে।
~দেখ তিশা তোকে আমি নিজের চোখে বড় হতে দেখেছি,তুই কখন কি করস,আর কেনো করস তার আইডিয়া আমার আছে,তাই ভালো চাইলে বলে দে,কারন আমি পরে অন্যকরো থেকে জানলে তোর জন্য ভালো হবে না।জিসান তিশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।বল কে কি বলেছে।
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে, লাবনি আপু।
~কি বলেছে......।জিসান জানতো লাবনি ছাড়া আর কেউ না।
এর পর তিশা জিসানকে লাবনি কি কি বললো সব বলে দিলো।
~জিসান কিছুটা রাগ হলেও তিশাকে বুজতে দিলো না
দেখ তিশা তোকে বিয়ে করে আফসোস হবার কোন কথাই আসে না,আমি তোকে ভালোবাসি।তাই আজ হলেও করতাম,কাল হলেও তোকেই বিয়ে করতাম,তুই রাজি না হলে জোর করে হলেও তোকে বিয়ে করতাম।তবুও তোকে আমি অন্যকারো হতে দিতাম না।কারন তুই শুধু আমার।তিশার মুখটা দুহাতে আবদ্ধ করে।আর হে অনেক প্রস্তাব আসছে,আসতেই পারে,লাবনির সাথে বিয়ের জন্য মামা ও বলেছে,কারন লাবনি আমাকে অনেক আগে থেকেই নাকি ভালোবাসে।কিন্তু আমি ওকে সেই নযরে কখনো দেখিনি,ভালোবাসাতো দূরে থাক।দিন দিন লাবনির পাগলামো বেড়ে যাচ্ছিলো,এমনকি নিজের শরীল দেখিয়েও আমাকে বশে করতে চাইছিলো,সেদিন আমার সহ্যেরবান শেষ হলো,আর আমি সেদিন ওকে কয়েকটা থাপ্পর মেরেছিলাম।শরীল দেখিয়ে ছেলেদের বশে করা মেয়েগুলো পতিতা থেকেও খারাপ হয় জানিস।সেদিনের এই কথায় ও আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলো।কিন্তু মামা সময় মতো বাঁচিয়ে ফেলে।এর পর মামাও অনেকবার বলেছে ওকে বিয়ে করতে,কিন্তু আমি মানা করেদি।আর মামাকে লাস্ট বার মানা করার সময় বলেদি,আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি।
মামা এটা শুনার পর আমাকে আর কখনো বিয়ের জন্য কিছু বলেনি।
তোর সাথে বিয়ের কথা মামা জানার পর লাবনিকে তারাতারি দেশের বাহিরে ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দেয়।এতো দিন ও ওখানেই ছিলো। কিন্তু কিভাবে জেনো লাবনি জেনে যায়।আর সাথে সাথে মামাকে না বলে আমাদের বাসায় এসে পরে।আমি ওকে প্রথম দিন দেখেই বুজতে পারি ও কেনো এসেছে।ও রিয়েক্ট করলে আমার স্বাভাবিক লাগতো কিন্তুু ও চুপচাপ থাকতো,যা একদম অস্বাভাবিক। আমি বুজতে পারছিলাম না ওর মনে কি চলছিলো।এখন বুজছি।ও কৌশলে তোকে আমার কাছ থেকে সরাতে চাইছিলো।
কিন্তু ব্যাচারীর কস্ট বিফলে গেলো।আমি একটু হেসে.....।
ও তো আমার তিশাকে টিকমতো জানেই না।কোমরটা শক্তকরে জরিয়ে।তিশার মাথায় যে বুদ্ধি কম গিলুবেশি।তা যদি জানতো তাহলে এমন প্লান করতো না।
কি আমার মাথায় বুদ্ধি কম,ছাড়ুন আমায়, থাকবো না আমি আপনার সাথে।বুদ্ধিমতী কাউকে বিয়ে করে নিয়েন।জিসানের হাত ছাড়ানোর বৃথা চেস্টা করে একটু রেগে।
~আমার বুদ্ধিমতী লাগবে না,আমার উচ্চ শিক্ষিত লাগবেনা,আমার শুধু তিশা লাগবে।তুই যেমন আছিস আমি তোকে তেমনি পছন্দ করি।তোর পরিবর্তন আমি চাই না।তাই নিজেকে চেন্জ করার চেস্টাও করবি না।আর আমাকে ছেড়ে যাওয়ার খুব শখ তাই না,একদম পা দুটো ভেঙে দেবো আর একদিন এমন কথা শুনলে।
হইছে এবার ছাড়ুন,ফ্রেস হয়ে আসি।
~না আমার আরো একবার লাগবে রাতের টা।একটু দুষ্ট হাসি দিয়ে।
কিকিকিকিকি একদম না,এমনেই সারারাত ঘুমাতে দেননি।আমি এখন ফ্রেস হয়ে নিচে যাবো ছাড়ুন।
~ওকে পাওনা রইলো,আজ রাতের জন্য।আমি ছেড়ে দিলে তিশা দৌড় দিয়ে কাভার থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াসরুম এ চলে গেলো।
~আমি হাসত হাসতে উপর হয়ে আবার বিছানায় শুয়ে পরলাম।
বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখে চোখ উপরে উঠে গেলো আমার,শরীলের দাগ গুলো দেখে।কোনো রকম গোসল সেড়ে বাহির হয়ে দেখি জিসান শুয়ে আছে উপর হয়ে।আমি গিয়ে চুল ঝারা দিলাম উনার সামনে ইচ্ছা করে,এতে চুলের পানি উনার শরীলে পরলে লাফ দিয়ে উঠে পরে।
~এটা কি হলো,আমাকে এভাবে পানি মারছিস কেনো।
এগুলো কি....নিজের দাগ গুলো দেখিয়ে।
~ কোন গুলো....।
এগুলো দেখেন না,এগুলো নিয়ে আমি নিচে যাবো কি করে।নিশা ও ভাবী আমাকে জ্বালিয়ে মেরে ফেলবে।আর মা দেখলে কি মনে করবে।বাড়ীতে আপনার কাজিনরা ও আছে।আমি মুখ দেখাবো কি করে।মুখ দুহাত দিয়ে ডেকে।
~আমার খুব হাসি পাচ্ছে তিশার কথা শুনে।তিশার হাত দুটো ধরে নিজের সামনে এনে,এগুলো আমার ভালোবাসা।আমি এমনেই ভালোবাসি।তোকে অভ্যাস করে নিতে হবে।আর হে কেউ কিছু বললে আমাকে বলিস আমি সবাইকে বলে দেবো জেনো কেউ আমার তিশাকে না জ্বালায়।ঠিক আছে।আমি মুসকি মুসকি হাসছি আর তিশাকে বুঝাচ্ছে।
আপনে একটা শয়তান,অসভ্য, আর রাক্ষস।বলেই দৌড় দিয়ে বাহিরে চলে গেলাম।
~এই দাড়া দাড়া কি বললি।ব্যাচারী ভয়ে নিচে চলে গেলো।আমিও ফ্রেস হতে চলে গেলাম।
আমি ভালো মতো চুল আর আচল দিয়ে দাগ গুলো ডেকে নিলাম,ভাবীর সাথে টেবিলে নাস্তা লাগাচ্ছিলাম।
ভাবীর চোখ ফাকি দিতে পারলাম না,ভাবী হেসে হেসে বলছে,সব ঠিক আছে তিশা।
উমমম ভাবী সব ঠিকই আছে।
সকাল সকাল গোসল, উমমম তাইতো বলি জিসান আজ এখনো বাসায় কেনো।তাহলে সাহেবের রাগ ভাঙ্গছে মনে হয়।
ভাবী তুমিও না,একটু বেশি ভাবো।
আমি ভাবিনা বোন,তেমার শরীলই বলে দিচ্ছে।ভাবী হাসতাছে।
এমন সময় নিশি ও লাবনি এসেও হাজির হলো।লাবনি ভাবলো আমি মন খারাপ করে থাকবো।কিন্তু আমাকে ভাবীর সাথে হাসতে দেখে অনেকটা অবাক।কি হলো কি নিয়ে এতো হাসাহাসি।
তুমি বুঝবে না ননদিনী ,বিয়ের পর বুঝবে।~তানজিলা।
কি এমন কথা যা এখন বুঝবো না,বলে দেখো।~লাবনি।
তিশার সকালে গোছলের রহস্য।~তানজিলা।
হা হা হা করে তানজিলা ও নিশি হাসলেও লাবনি হাসতে পারলো না।
জিসান আছে নাকি আজও নাস্তা না করে চলে গেছে।~লাবনি।
না আপু ও তো বাসায়।আজ না আপনারা চলে যাবেন তাই একটু দেরি করে যাবে।আপনে বসুন নাস্তা করে নিন,তা না হলে আবার দেরি হয়ে যাবে।
~লাবনির মাথায় কিছু আসছে না, তিশা এমন বিহেভ কেনো করছে।হঠাৎ তিশার গাড়ের দাগগুলো দেখে লাবনির মাথায় রক্ত উঠে যায়।লাবনি নাস্তা না করেই উঠে রুমে চলে যেতে নিলে সিড়িতে জিসানের সাথে দেখা হয়।
কেনো করলে আমার সাথে এমন।~লাবনি।
~আমি কি করলাম তোর সাথে।জিসান হাত দুটো পকেটে রেখে।
তুমি আর তিশা কাল.......।আর কিছু বলতে পারলো না।
~উমমম আমি আর তিশা কাল এক হয়ে গেছি।জানিস আমাদের এক হওয়ার পিছে কার হাত বেশি। একটু হেসে ----তোর।তোর কারনেই তিশা কাল আমাকে ওর মনের কথা বলে দিয়েছে,ও আমাকে ভালোবাসে।আমি সত্যি খুব খুশি,ধন্যবাদ আমার এতো বড় উপকার করার জন্য।জিসান হাসতে হাসতে নিচে চলে গেলো।
আর লাবনি দাঁতেদাঁত চেপে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।ওর মন চাইছে ঘরের সব ভেঙ্গে ফেলতে।
~জিসান নাস্তা করে ড্রয়িংরুম এ বসে ওর কাজিনদের সাথে কথা বলছে কারন ওরা কিছুক্ষন পর চলে যাবে।
তিশা আমার ফোনটা রুমে রেখে আসছি,নিয়ে আস তো।
আমি ফোন আনতে রুমে গেলাম,ফোনটা ডেসিং টেবিলের উপর ছিলো।ফোনটা নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখি লাবনি আপু দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু তাকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম,কারন তাকে দেখলেই মনে হচ্ছে খুব রাগান্বিত সে।
আপু আপনে কিছু লাগবে।
তুই কি ভেবেছিস, তুই আমার জিসানকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবি।আর আমি চুপচাপ বসে বসে দেখবো।ভেবেছিলাম তোকে বুঝিয়ে বললে তুই ভালোয় ভালোয় চলে যাবি।কিন্তু তুইতো ওকে তোর রুপ আর শরীল দিয়ে বশে করতে চাইছিস।তা আমি হতে দেবো না।
আপু এসব কি বলছেন,আপনার মাথাতো ঠিক আছে।জিসান আমার স্বামী।আর সব থেকে বড় কথা জিসান আমাকে ভালোবাসে,তাই ওকে আমার শরীল আর রুপ দিয়ে বশে করার প্রয়োজন নেই।তাই এসব চিন্তাবাদ দিন।আর আমি সব জেনে গেছি,জিসান আমাকে সব বলে দিয়েছে।তাই আপনার কোন কথাই শুনতে চাই না আমি।
তুই বেঁচে থাকলে আমি জিসানকে কোনদিনও পাবো না।তাই তোকে আজ আমি নিজের হাতেই মেরে ফেলবো।লাবনির হাতে একটা চাকু ছিলো যা ওড়না দিয়ে ডেকে রেখেছিলো,তাই তিশা এতোক্ষন দেখতে পারেনি।এখন চাকুটা বের করে তিশার দিকে এগিয়ে আসছে।
আপু আপনে পাগল হয়ে গেছেন।আমাকে মেরেও আপনে জিসানকে পাবেন না।তাই এসব পাগলামি বন্ধ করুন।
লাবনি চাকু নিয়ে তিশার দিকে এগোচ্ছে আর হে আমি পাগল হয়ে গিয়েছি।জিসানকে ছাড়া আমি এমনেই বাঁচতে পারবো না,আমি ওকে না পেলে তোকেও পেতে দিবো না।
আপুপুপু,,আআআআআআআআ।
লাবনিকো বাধা দিতে গিয়ে তিশার হাত কেটে গেছে,আর প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে।
~আর এ দিক দিয়ে,জিসান নিশিকে রুমে পাঠালো, দেখতো তোর ভাবী রুমে কি করে,ওকে মোবাইল আনতে পাঠালাম এখনো আসছেনা কেনো।
তাই নিশি রুমে এসে দেখে তিশা ফ্লোরে বসে আছে আর হাত দিয়ে রক্ত পরছে,আর লাবনি তিশাকে মারার জন্য সামনে আবার এগিয়ে আসলে, নিশি চিৎকার দিয়ে উঠে।ভাবীইইইইই।
তাওহিদ মাত্র রুম থেকে বের হয় নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিন্তু নিশির চিৎকারে ছুটে যায়।
জিসান ও বাকি সবও শুনতে পায় তারাও ছুটে যায়।
লাবনি তিশাকে চাকুটা মারতে নিলেই তাওহিদ হাতটা ধরে ফেলে।পাগল হয়ে গিয়েছোস। চাকু ছাড় বলছি।
লাবনি হাত পা ছুটাছুটি করে তাওহিদ থেকে মুক্ত হবার জন্য।
এতোক্ষন জিসান ও বাকি সবও এসে পরে।জিসান তিশাকে দেখে দৌড়ে তিশার কাছে যায়।
জিসানকে তিশার পাশে দেখে লাবনি সামনে একটা ফুলদানি ছিলো তা তিশাকে লক্ষ করে মারলে,জিসান তিশাকে জরিয়ে ধরে ফুলদানির সামনে এসে পরে।জিসানের পিঠে আঘাত লেগে ফুলদানিটা ভেঙ্গে যায়।
জিসানও পিঠে ব্যাথা পায় কিন্তু তাতে তার কোন রিয়েক্ট নাই।
রক্ত দিয়ে ফ্লোর ভরে গেছে।অতিরিক্ত রক্ত আর ভয় পাবার কারনে তিশা অঙ্গান হয়ে যায়।জিসান সাথে সাথে তিশাকে ধরে ফেলে।তিশা,,,, এই তিশা উঠ।
তিশাকে এই অবস্থায় দেখে জিসান প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছে,ও কিছু চিন্তাও করতে পারছে না।তানজিলা এসে তিশার হাতটা কাপড় দিয়ে পেছিয়ে দেয় রক্ত বন্ধকরার জন্য।
জিসান তারাতারি ওকে হাসপাতালো নিয়ে যা।উঠ জিসান, শুনতে পাসনা কি বলছি।তা না হলে আবার দেরি হয়ে যাবে।তিশাকে উঠা।জিসানের মা চিল্লিয়ে বলছে।
জিসানের এতোক্ষন পর হুস আসলো,তিশাকে কোলে করে নিয়ে গাড়ীতে তুললো।অর্ক গাড়ী চালাচ্ছে আর জিসান হাসপাতালে ওর বন্ধু নাঈম কে বলে সব রেডি করতে বলে দিলো।হাসপাতালে যাবার সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু হয়ে গেলো।
এদিকদিয়ে বাসায় জিসানের মামা এসব শুনে হতোভম্ভ হয়ে গেলো।সবার সামনে লাবনিকে কষে এক থাপ্পর মাড়লো।লাবনি এখনো রাগে ফুলছে।কারন তিশাকে পুরোপুরি মারতে পারেনি বলে।
তাওহিদ, তানজিলা ও জিসানের বাবা মা ও এসে পড়েছে হাসপাতালে।
~মা আমার তিশার কিছু হলে ওই লাবনিকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না, কেউ না।
জিসান শান্ত হো বাবা,সব ঠিক হয়ে যাবে।
নাঈম অপারেশন রুম থেকে বের হলে জিসান দৌড়ে নাঈমের কাছে যায়।
~তিশা ঠিক আছে। প্লিস দোস্ত বল,আমার নিশ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে।
আরে রিলেক্স ব্রো।সব ঠিক আছে।রক্ত একটু বেশি গিয়েছে।অল্পের জন্য হাতের রগটা কেটে যায় নি।ভয়ে আর দূর্বল হয়ে অঙ্গান হয়ে পরেছে।এখন ও ঘুমিয়ে আছে।আমরা স্যালাইন দিয়ে রেখেছি।কাল সকালে নিয়ে জেতে পারবি।
জিসান নাঈমকে জরিয়ে ধরে,হইচে এবার মেয়ে মানুষের মতো কান্না বন্ধ কর।
~কান্নার জন্য মেয়ে হতে হয় না,কস্টটা বেশি হলে চেখের জল এমনেই পরে।
আরে বাহ তুই দেখি রোমিও হয়ে গিয়েছোস। তা আবার জুলিয়েট এর না তিশার।
দুবন্ধু হেসে দিলো।জিসান সবাইকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।আর ফোন করে রায়হানকে সব বললো।কারন রায়হান তিশার ভাই,তাই তাদেরও অধিকার আছে সব কিছু জানার।
..............
....................
Please wait for next part.....

পাট ২৪-২৭
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-24+25
~সকালে আমার ঘুম আগে ভাঙ্গলো।আর প্রতিদিনের মতো আজও নিজেকে জিসানের বুকের উপর পেলাম।ঘুমন্ত জিসানকে দেখতে কেনো জানি আজ অনেক ভালো লাগছে,আর কাল রাতের কথা মনে পড়তে বিষণ লজ্জাও লাগছে।ভালো করে দেখলাম উনি ঘুমিয়ে আছে,তাই আস্তে করে উনার কপালে,গালে কিস করে ঠোঁটে জেতেই এই কি হিটলার চোখ মেলে তাকালো।উনার এভাবে তাকানো দেখে লজ্জা পেয়ে চলে জেতে নিলে উনি হাতটা ধরেই নিজের কাছে টেনে আনলো।নিজেকে সামলাতে না পেড়ে উনার বুকের উপর গিয়ে পরলাম।কাল রাতের কথা মনে পড়ায় লজ্জায় উনার দিকে তাকাতে পারছি না।
~কি হলো ঘুমন্ত অবস্থায় আদর না করে,জেগে আছি এখন কর।
উমমম,উনাকে আদর করতে বয়েই গেছে আমার,বলে উঠার চেস্টা করলাম।
~তাইইই,,,, তাহলে এতোক্ষন কি করছিলি।
মোশা মারছিলাম।অনেকগুলো মোশা বসেছিলো,তাই আস্থে করে মেরে দিলাম।
~তাইইইনি।আমার গাল, আমার কপাল,তাহলে তুই মারলি কেনো,আমাকে ডেকে দিতি।আমিই তাদের একটু আদর করে দিতাম।
টিক আছে নেক্সট টাইম ডেকে দিবোনি।এখন ছাড়ুন আমায়।
~না ভুলতো করেছিস, এখন তোকে জরিমানা দিতে হবে।
~কি জরিমানা দেবো আমি।,,,কিছু বলার আগেই জিসান আমাকে বিছানায় ফেলে নিজে আমার উপর উঠে যায়।আমার ঠোঁটের চারপাশে স্লাইড করতে করতে বলো,যেটা বাকি ছিলো সেটা এখন চাই।
কি বাকি ছিলো।আমি কপাল কুচকে.....।
~এটা... ঠোটটা দেখিয়ে।
না না না কিছু বাকি নেই,বলার আগেই জিসান আমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়।আমি বাধা দিতে চাইলে হাত দুটো বিছানায় চেপে ধরে।অনেকক্ষন পর জিসান ছেড়ে দেয়,আমি চোখ বন্ধ করে আছি এখনো।তাই জিসান আমার গাড়ে,গলার আর বুকের কমড়ের দাগ গুলোতো ডিপ কিস করে দেয়।
আমি চোখ খুলেই জিসানের দিকে তাকাই।
~আমি ব্যাথা দিয়েছি দেখছিস এখন আমিই আদর করে দিলাম।
আমি একটা ভেঙ্গছি কেটে,জিসানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।গায়ের চাদরটা ভালো করে পেছিয়ে উঠে চলে জেতে চাইলে জিসান আবার হাতটা ধরে ফেলে,
~কোথায় যাস।একটা ভ্রু উঠিয়ে জিঙ্গেস করে।
সারাদিন কি এভাবেই থাকব,ফ্রেস হতে হবে না,একটু রাগ করে।
~জিসান বিছানায় পা জুলিয়ে বসে আমাকে কোলে বসিয়ে কোমড়টা শক্ত করে ধরে আমার পিঠে নাক দিয়ে স্লাইড করে, __আগে আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবি তার পর যাবি।তা না হলে একদমও নড়তে পারবি না।
আমি ঢোক গিলে উনাকে জিঙ্গেস করলাম কি প্রশ্ন।
~কাল এমন করলি কেনো।তোকে কেউ কিছু বলছে।
না তো কেউ কিছু বলেনি। জিসানকে বলতে চাচ্ছি না, যদি উনি আরো রাগ করে।
~দেখ তিশা তোকে আমি নিজের চোখে বড় হতে দেখেছি,তুই কখন কি করস,আর কেনো করস তার আইডিয়া আমার আছে,তাই ভালো চাইলে বলে দে,কারন আমি পরে অন্যকরো থেকে জানলে তোর জন্য ভালো হবে না।জিসান তিশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।বল কে কি বলেছে।
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে, লাবনি আপু।
~কি বলেছে......।জিসান জানতো লাবনি ছাড়া আর কেউ না।
এর পর তিশা জিসানকে লাবনি কি কি বললো সব বলে দিলো।
~জিসান কিছুটা রাগ হলেও তিশাকে বুজতে দিলো না
দেখ তিশা তোকে বিয়ে করে আফসোস হবার কোন কথাই আসে না,আমি তোকে ভালোবাসি।তাই আজ হলেও করতাম,কাল হলেও তোকেই বিয়ে করতাম,তুই রাজি না হলে জোর করে হলেও তোকে বিয়ে করতাম।তবুও তোকে আমি অন্যকারো হতে দিতাম না।কারন তুই শুধু আমার।তিশার মুখটা দুহাতে আবদ্ধ করে।আর হে অনেক প্রস্তাব আসছে,আসতেই পারে,লাবনির সাথে বিয়ের জন্য মামা ও বলেছে,কারন লাবনি আমাকে অনেক আগে থেকেই নাকি ভালোবাসে।কিন্তু আমি ওকে সেই নযরে কখনো দেখিনি,ভালোবাসাতো দূরে থাক।দিন দিন লাবনির পাগলামো বেড়ে যাচ্ছিলো,এমনকি নিজের শরীল দেখিয়েও আমাকে বশে করতে চাইছিলো,সেদিন আমার সহ্যেরবান শেষ হলো,আর আমি সেদিন ওকে কয়েকটা থাপ্পর মেরেছিলাম।শরীল দেখিয়ে ছেলেদের বশে করা মেয়েগুলো পতিতা থেকেও খারাপ হয় জানিস।সেদিনের এই কথায় ও আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলো।কিন্তু মামা সময় মতো বাঁচিয়ে ফেলে।এর পর মামাও অনেকবার বলেছে ওকে বিয়ে করতে,কিন্তু আমি মানা করেদি।আর মামাকে লাস্ট বার মানা করার সময় বলেদি,আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি।
মামা এটা শুনার পর আমাকে আর কখনো বিয়ের জন্য কিছু বলেনি।
তোর সাথে বিয়ের কথা মামা জানার পর লাবনিকে তারাতারি দেশের বাহিরে ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দেয়।এতো দিন ও ওখানেই ছিলো। কিন্তু কিভাবে জেনো লাবনি জেনে যায়।আর সাথে সাথে মামাকে না বলে আমাদের বাসায় এসে পরে।আমি ওকে প্রথম দিন দেখেই বুজতে পারি ও কেনো এসেছে।ও রিয়েক্ট করলে আমার স্বাভাবিক লাগতো কিন্তুু ও চুপচাপ থাকতো,যা একদম অস্বাভাবিক। আমি বুজতে পারছিলাম না ওর মনে কি চলছিলো।এখন বুজছি।ও কৌশলে তোকে আমার কাছ থেকে সরাতে চাইছিলো।
কিন্তু ব্যাচারীর কস্ট বিফলে গেলো।আমি একটু হেসে.....।
ও তো আমার তিশাকে টিকমতো জানেই না।কোমরটা শক্তকরে জরিয়ে।তিশার মাথায় যে বুদ্ধি কম গিলুবেশি।তা যদি জানতো তাহলে এমন প্লান করতো না।
কি আমার মাথায় বুদ্ধি কম,ছাড়ুন আমায়, থাকবো না আমি আপনার সাথে।বুদ্ধিমতী কাউকে বিয়ে করে নিয়েন।জিসানের হাত ছাড়ানোর বৃথা চেস্টা করে একটু রেগে।
~আমার বুদ্ধিমতী লাগবে না,আমার উচ্চ শিক্ষিত লাগবেনা,আমার শুধু তিশা লাগবে।তুই যেমন আছিস আমি তোকে তেমনি পছন্দ করি।তোর পরিবর্তন আমি চাই না।তাই নিজেকে চেন্জ করার চেস্টাও করবি না।আর আমাকে ছেড়ে যাওয়ার খুব শখ তাই না,একদম পা দুটো ভেঙে দেবো আর একদিন এমন কথা শুনলে।
হইছে এবার ছাড়ুন,ফ্রেস হয়ে আসি।
~না আমার আরো একবার লাগবে রাতের টা।একটু দুষ্ট হাসি দিয়ে।
কিকিকিকিকি একদম না,এমনেই সারারাত ঘুমাতে দেননি।আমি এখন ফ্রেস হয়ে নিচে যাবো ছাড়ুন।
~ওকে পাওনা রইলো,আজ রাতের জন্য।আমি ছেড়ে দিলে তিশা দৌড় দিয়ে কাভার থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াসরুম এ চলে গেলো।
~আমি হাসত হাসতে উপর হয়ে আবার বিছানায় শুয়ে পরলাম।
বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখে চোখ উপরে উঠে গেলো আমার,শরীলের দাগ গুলো দেখে।কোনো রকম গোসল সেড়ে বাহির হয়ে দেখি জিসান শুয়ে আছে উপর হয়ে।আমি গিয়ে চুল ঝারা দিলাম উনার সামনে ইচ্ছা করে,এতে চুলের পানি উনার শরীলে পরলে লাফ দিয়ে উঠে পরে।
~এটা কি হলো,আমাকে এভাবে পানি মারছিস কেনো।
এগুলো কি....নিজের দাগ গুলো দেখিয়ে।
~ কোন গুলো....।
এগুলো দেখেন না,এগুলো নিয়ে আমি নিচে যাবো কি করে।নিশা ও ভাবী আমাকে জ্বালিয়ে মেরে ফেলবে।আর মা দেখলে কি মনে করবে।বাড়ীতে আপনার কাজিনরা ও আছে।আমি মুখ দেখাবো কি করে।মুখ দুহাত দিয়ে ডেকে।
~আমার খুব হাসি পাচ্ছে তিশার কথা শুনে।তিশার হাত দুটো ধরে নিজের সামনে এনে,এগুলো আমার ভালোবাসা।আমি এমনেই ভালোবাসি।তোকে অভ্যাস করে নিতে হবে।আর হে কেউ কিছু বললে আমাকে বলিস আমি সবাইকে বলে দেবো জেনো কেউ আমার তিশাকে না জ্বালায়।ঠিক আছে।আমি মুসকি মুসকি হাসছি আর তিশাকে বুঝাচ্ছে।
আপনে একটা শয়তান,অসভ্য, আর রাক্ষস।বলেই দৌড় দিয়ে বাহিরে চলে গেলাম।
~এই দাড়া দাড়া কি বললি।ব্যাচারী ভয়ে নিচে চলে গেলো।আমিও ফ্রেস হতে চলে গেলাম।
আমি ভালো মতো চুল আর আচল দিয়ে দাগ গুলো ডেকে নিলাম,ভাবীর সাথে টেবিলে নাস্তা লাগাচ্ছিলাম।
ভাবীর চোখ ফাকি দিতে পারলাম না,ভাবী হেসে হেসে বলছে,সব ঠিক আছে তিশা।
উমমম ভাবী সব ঠিকই আছে।
সকাল সকাল গোসল, উমমম তাইতো বলি জিসান আজ এখনো বাসায় কেনো।তাহলে সাহেবের রাগ ভাঙ্গছে মনে হয়।
ভাবী তুমিও না,একটু বেশি ভাবো।
আমি ভাবিনা বোন,তেমার শরীলই বলে দিচ্ছে।ভাবী হাসতাছে।
এমন সময় নিশি ও লাবনি এসেও হাজির হলো।লাবনি ভাবলো আমি মন খারাপ করে থাকবো।কিন্তু আমাকে ভাবীর সাথে হাসতে দেখে অনেকটা অবাক।কি হলো কি নিয়ে এতো হাসাহাসি।
তুমি বুঝবে না ননদিনী ,বিয়ের পর বুঝবে।~তানজিলা।
কি এমন কথা যা এখন বুঝবো না,বলে দেখো।~লাবনি।
তিশার সকালে গোছলের রহস্য।~তানজিলা।
হা হা হা করে তানজিলা ও নিশি হাসলেও লাবনি হাসতে পারলো না।
জিসান আছে নাকি আজও নাস্তা না করে চলে গেছে।~লাবনি।
না আপু ও তো বাসায়।আজ না আপনারা চলে যাবেন তাই একটু দেরি করে যাবে।আপনে বসুন নাস্তা করে নিন,তা না হলে আবার দেরি হয়ে যাবে।
~লাবনির মাথায় কিছু আসছে না, তিশা এমন বিহেভ কেনো করছে।হঠাৎ তিশার গাড়ের দাগগুলো দেখে লাবনির মাথায় রক্ত উঠে যায়।লাবনি নাস্তা না করেই উঠে রুমে চলে যেতে নিলে সিড়িতে জিসানের সাথে দেখা হয়।
কেনো করলে আমার সাথে এমন।~লাবনি।
~আমি কি করলাম তোর সাথে।জিসান হাত দুটো পকেটে রেখে।
তুমি আর তিশা কাল.......।আর কিছু বলতে পারলো না।
~উমমম আমি আর তিশা কাল এক হয়ে গেছি।জানিস আমাদের এক হওয়ার পিছে কার হাত বেশি। একটু হেসে ----তোর।তোর কারনেই তিশা কাল আমাকে ওর মনের কথা বলে দিয়েছে,ও আমাকে ভালোবাসে।আমি সত্যি খুব খুশি,ধন্যবাদ আমার এতো বড় উপকার করার জন্য।জিসান হাসতে হাসতে নিচে চলে গেলো।
আর লাবনি দাঁতেদাঁত চেপে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো।ওর মন চাইছে ঘরের সব ভেঙ্গে ফেলতে।
~জিসান নাস্তা করে ড্রয়িংরুম এ বসে ওর কাজিনদের সাথে কথা বলছে কারন ওরা কিছুক্ষন পর চলে যাবে।
তিশা আমার ফোনটা রুমে রেখে আসছি,নিয়ে আস তো।
আমি ফোন আনতে রুমে গেলাম,ফোনটা ডেসিং টেবিলের উপর ছিলো।ফোনটা নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখি লাবনি আপু দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু তাকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম,কারন তাকে দেখলেই মনে হচ্ছে খুব রাগান্বিত সে।
আপু আপনে কিছু লাগবে।
তুই কি ভেবেছিস, তুই আমার জিসানকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবি।আর আমি চুপচাপ বসে বসে দেখবো।ভেবেছিলাম তোকে বুঝিয়ে বললে তুই ভালোয় ভালোয় চলে যাবি।কিন্তু তুইতো ওকে তোর রুপ আর শরীল দিয়ে বশে করতে চাইছিস।তা আমি হতে দেবো না।
আপু এসব কি বলছেন,আপনার মাথাতো ঠিক আছে।জিসান আমার স্বামী।আর সব থেকে বড় কথা জিসান আমাকে ভালোবাসে,তাই ওকে আমার শরীল আর রুপ দিয়ে বশে করার প্রয়োজন নেই।তাই এসব চিন্তাবাদ দিন।আর আমি সব জেনে গেছি,জিসান আমাকে সব বলে দিয়েছে।তাই আপনার কোন কথাই শুনতে চাই না আমি।
তুই বেঁচে থাকলে আমি জিসানকে কোনদিনও পাবো না।তাই তোকে আজ আমি নিজের হাতেই মেরে ফেলবো।লাবনির হাতে একটা চাকু ছিলো যা ওড়না দিয়ে ডেকে রেখেছিলো,তাই তিশা এতোক্ষন দেখতে পারেনি।এখন চাকুটা বের করে তিশার দিকে এগিয়ে আসছে।
আপু আপনে পাগল হয়ে গেছেন।আমাকে মেরেও আপনে জিসানকে পাবেন না।তাই এসব পাগলামি বন্ধ করুন।
লাবনি চাকু নিয়ে তিশার দিকে এগোচ্ছে আর হে আমি পাগল হয়ে গিয়েছি।জিসানকে ছাড়া আমি এমনেই বাঁচতে পারবো না,আমি ওকে না পেলে তোকেও পেতে দিবো না।
আপুপুপু,,আআআআআআআআ।
লাবনিকো বাধা দিতে গিয়ে তিশার হাত কেটে গেছে,আর প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে।
~আর এ দিক দিয়ে,জিসান নিশিকে রুমে পাঠালো, দেখতো তোর ভাবী রুমে কি করে,ওকে মোবাইল আনতে পাঠালাম এখনো আসছেনা কেনো।
তাই নিশি রুমে এসে দেখে তিশা ফ্লোরে বসে আছে আর হাত দিয়ে রক্ত পরছে,আর লাবনি তিশাকে মারার জন্য সামনে আবার এগিয়ে আসলে, নিশি চিৎকার দিয়ে উঠে।ভাবীইইইইই।
তাওহিদ মাত্র রুম থেকে বের হয় নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিন্তু নিশির চিৎকারে ছুটে যায়।
জিসান ও বাকি সবও শুনতে পায় তারাও ছুটে যায়।
লাবনি তিশাকে চাকুটা মারতে নিলেই তাওহিদ হাতটা ধরে ফেলে।পাগল হয়ে গিয়েছোস। চাকু ছাড় বলছি।
লাবনি হাত পা ছুটাছুটি করে তাওহিদ থেকে মুক্ত হবার জন্য।
এতোক্ষন জিসান ও বাকি সবও এসে পরে।জিসান তিশাকে দেখে দৌড়ে তিশার কাছে যায়।
জিসানকে তিশার পাশে দেখে লাবনি সামনে একটা ফুলদানি ছিলো তা তিশাকে লক্ষ করে মারলে,জিসান তিশাকে জরিয়ে ধরে ফুলদানির সামনে এসে পরে।জিসানের পিঠে আঘাত লেগে ফুলদানিটা ভেঙ্গে যায়।
জিসানও পিঠে ব্যাথা পায় কিন্তু তাতে তার কোন রিয়েক্ট নাই।
রক্ত দিয়ে ফ্লোর ভরে গেছে।অতিরিক্ত রক্ত আর ভয় পাবার কারনে তিশা অঙ্গান হয়ে যায়।জিসান সাথে সাথে তিশাকে ধরে ফেলে।তিশা,,,, এই তিশা উঠ।
তিশাকে এই অবস্থায় দেখে জিসান প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছে,ও কিছু চিন্তাও করতে পারছে না।তানজিলা এসে তিশার হাতটা কাপড় দিয়ে পেছিয়ে দেয় রক্ত বন্ধকরার জন্য।
জিসান তারাতারি ওকে হাসপাতালো নিয়ে যা।উঠ জিসান, শুনতে পাসনা কি বলছি।তা না হলে আবার দেরি হয়ে যাবে।তিশাকে উঠা।জিসানের মা চিল্লিয়ে বলছে।
জিসানের এতোক্ষন পর হুস আসলো,তিশাকে কোলে করে নিয়ে গাড়ীতে তুললো।অর্ক গাড়ী চালাচ্ছে আর জিসান হাসপাতালে ওর বন্ধু নাঈম কে বলে সব রেডি করতে বলে দিলো।হাসপাতালে যাবার সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু হয়ে গেলো।
এদিকদিয়ে বাসায় জিসানের মামা এসব শুনে হতোভম্ভ হয়ে গেলো।সবার সামনে লাবনিকে কষে এক থাপ্পর মাড়লো।লাবনি এখনো রাগে ফুলছে।কারন তিশাকে পুরোপুরি মারতে পারেনি বলে।
তাওহিদ, তানজিলা ও জিসানের বাবা মা ও এসে পড়েছে হাসপাতালে।
~মা আমার তিশার কিছু হলে ওই লাবনিকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না, কেউ না।
জিসান শান্ত হো বাবা,সব ঠিক হয়ে যাবে।
নাঈম অপারেশন রুম থেকে বের হলে জিসান দৌড়ে নাঈমের কাছে যায়।
~তিশা ঠিক আছে। প্লিস দোস্ত বল,আমার নিশ্বাস নিতে কস্ট হচ্ছে।
আরে রিলেক্স ব্রো।সব ঠিক আছে।রক্ত একটু বেশি গিয়েছে।অল্পের জন্য হাতের রগটা কেটে যায় নি।ভয়ে আর দূর্বল হয়ে অঙ্গান হয়ে পরেছে।এখন ও ঘুমিয়ে আছে।আমরা স্যালাইন দিয়ে রেখেছি।কাল সকালে নিয়ে জেতে পারবি।
জিসান নাঈমকে জরিয়ে ধরে,হইচে এবার মেয়ে মানুষের মতো কান্না বন্ধ কর।
~কান্নার জন্য মেয়ে হতে হয় না,কস্টটা বেশি হলে চেখের জল এমনেই পরে।
আরে বাহ তুই দেখি রোমিও হয়ে গিয়েছোস। তা আবার জুলিয়েট এর না তিশার।
দুবন্ধু হেসে দিলো।জিসান সবাইকে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।আর ফোন করে রায়হানকে সব বললো।কারন রায়হান তিশার ভাই,তাই তাদেরও অধিকার আছে সব কিছু জানার।
চলবে....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-25
সারা দিন হাসপাতালে তিশা ঘুমিয়ে ছিলো।সন্ধ্যার সময় তিশার ঘুম ভাঙে আর জিসান কে পাশে বসে থাকতে দেখে।জিসান তিশার একটা হাত ধরে বসে আছে।চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছো সারাদিন কিছুই খাইনি।
তিশা একটু নড়ে উঠার চেস্টা করলে,জিসান এর ধ্যান ভাঙে, আর নিজেই তিশাকে ধরে বসিয়ে দেয়।
আমি এখানে কেনো।সামান্য একটু হাত কেটেছে, এর জন্য কি হাতপাতালে আনতে হয়।উনার দিকে তাকিয়ে দেখি চোখগুলো ছলছল করছে।কিছু বলার আগেই আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।মনে হয় ছেড়ে দিলেই আমি কোথাও চলে যাবো।আমার কাধে গরম কিছু পড়ছে আমি বুঝতে পারছি আর কিছু না সাহেব আমার নিরবে কাঁদছে।
তাই আমিও আর কিছু বললাম না।কিছুক্ষন পর উনি নিজেই ছেড়ে দিলো।আমার কাটা হাতটার জায়গায় একটা কিস করলে।আমি এই মানুষটিকে যতোই দেখি ততোই আবাক হই।এতো ভালোবাসা পায় কোথা থেকে।
# ওর হাতটা ধরে কি খাবি বল।আমি নিয়ে আসি।সারাদিন কিছুই খাস নি।
আমি বাসায় যাবো।একবারে বাসায় গিয়েই খাবো।
# আরে না ডাক্তার বলছে আজ রাত থাকতে কাল সকালে চলে যেতে।
না আমি আর এখানে এক সেকেন্ড ও থাকবো না।আমি কি অসুস্থ যে এখানে থাকবো।আপনে ডাক্তার কে বলুন।তা না হলে আমি পালিয়ে যাবো।
# হা হা সব শেষে তুই হাসপাতাল থেকে পালাবি।
হে আপনে না নিলে,আমি আপনাকে এখানে রেখেই পালিয়ে বাসায় চলে যাবো।আর আপনে সারা রাত নার্স আর ডাক্তার এর সাথে বসে বসে গল্প কইরেন।
# তাই... থাক আমার এতো শখ নেই, তকে রেখে ওদের সাথে গল্প করার।তুই বস,আমি নাঈমকে বলে আসি।আর ড্রাইভার কে বলি গাড়ী আনতে।
তারাতারি আসবেন...কিন্তু।
# ওকে... যাবো আর আসবো।আমি নাঈমকে বলে তিশাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ফেললাম।ড্রাইভার ও গাড়ী পার্ক থেকে গেটের সামনে নিয়ে আসলো।আমি রুমে এসে দেখি ম্যাডাম বেড থেকে নিচে নামছে।আরে রে রে কি করছিস।
নামচি,কেনো।
# তোকে বেড থেকে নামতে কে বলছে।
আরে না নামলে যাবো কি করে।
# আমি এসেই ওকে কোলে তুলে নিলাম।
আরে রে রে করছেন কি, আমার হাত কেটেছে পা না,আমি হাটতে পারবো,নামান আমাকে।কেউ দেখলে কি বলবে।
# একদম চুপ,একটা কথা বললে ফেলে দেবো।
কিকিকিকিকি..... এ আপনার ভালোবাসা।
# হুমমম, আমার ভালোবাসা এমনি,তুই জানোস না,আমার কথা না শুনলে আমি কি করতে পারি।আর সবথেকে বড় কথা ম্যাডাম,আমি আপনাকে যখন কোলে করে এনেছি।তখন আপনার পায়ে জুতাও ছিলো না,আর এখন ও নেই।আর আপনে কি খালি পায়ে হেটে হেটে বাহিরে যাবেন,আবার পায়ের বারোটা বাজুক।হুমমম,,,,তার থেকে ভালো আমিই কোলে করে নি।
আর কিছুই বললাম, উনার গলাকে জরিয়ে ধরলাম।
উনি কোলে করে আমাকে গাড়ী পর্যন্ত নিয়ে, গাড়ীতে বসিয়ে দিলো।সারা রাস্তায় আমার হাতটা ধরে রইলো।
আমার কাছে দিন দিন জিসানের পাগলামো গুলো ভালোই লাগছে,উনার সব কিছু জেনো আমার অভ্যাসে পরিনিত হচ্ছে।
# কিছুক্ষন এর মধ্যেই আমরা বাসায় এসে পড়লাম।সবাইকে আগেই বলে দিয়েছি,আমদের আসার কথা, তাই সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের।রায়হান আর তিশার মা বাবা ও এসেছে।
ভেতরে গিয়ে দেখি সবাই ড্রয়িংরুম এ বসে আছে।সাথে মা বাবা আর ভাইয়াও।আমি দৌড়ে গিয়ে মা কে জরিয়ে ধরলাম,মার চোখেতো গঙ্গা যমুনা বেয়ে পড়ছে।আরে মা দেখো আমি ঠিক আছি।সামান্য একটু কাটছে।তোমাকে দেখাবো আমি দাড়াও,
হইছে আর দেখাতে হবে না,সন্তানের একটু কাটলেও ব্যাথাটা বাবা মায়ের বুকে গিয়ে লাগে,তুই এখন বুজবি না,যখন নিজে মা হবি তখন বুজবি।
হইছে এতো কাঁদতে হবে না এখন, মুছো।বাবা আর ভাইয়ের সাথে ও কিছুক্ষন কথা বলে,আমরা সবাই একসাথে ডিনার করে নিলাম,মা বাবা আর ভাইয়া কিছুক্ষন থেকে চলে গেলো।আমিও কিছুক্ষন ভাবী আর আমার শ্বাসুড়ীর সাথে কথা বলে জানতে পারলাম,লাবনি আপুকে উনার বাবা এসে জোর করে নিয়ে গেছে,কালই আপুকে বাহিরে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করবে।আমি এর পর আমার রুমে চলে গেলাম।রুমে গিয়ে দেখি উনি বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানছে,আর কিছু ভাবছে।আমি উনার সামনে গিয়ে, কি মজা পান এটা খেয়ে।আমাকেও দেন আমিও একটু ট্রাই করে দেখি কেমন মজার জিনিস।
# পেছনে ঘুড়ে দেখি তিশা দাঁড়িয়ে আমার থেকে সিগারেট চাচ্ছে।আমি সিগারেট টা নিভিয়ে ওর হাতটা ধরে সামনে এনে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরলাম।এবার বল কি বলছিস।
ছেড়েদেন না কেনো এসব ছাইপাঁশ।
# অনেক দিনের অভ্যাস,ছাড়ি কিভাবে বল।আর সব সময় খাওয়া হয় না, যখন খুব টেনশন বা মন খারাপ থাকে তখনিই একটু বেশি খেয়ে ফেলি।তাই ছাড়তে বলিস না, প্লিস।আমার সব কিছু তোর, কিন্তু এসব ছাইপাঁশ তোকে ভাগ দিতে পারবো না, সরি।
তাইই,তাহলে বলুন, এখন কি এমন চিন্তা করছেন যার জন্য এসব খেতে হচ্ছে।
# আজ অনেক বড় দূর্ঘটনা হয়ে জেতে পারতো,হয়তো তোকে আমি হারিয়ে ও ফেলতাম,এটা ভাবতেই বুকটা কেপে উঠছে,ভুলতে পারছি না কোন কিছু।আমার কারণেই আজ তোর এ অবস্থা। সরি.... আমি তোর খেয়াল রাখতে পারিনি।
আমি উনার সামনে ঘুড়ে তার হাত দুটো ধরে।যা আবার হয়ে গেছে,তা নিয়ে এখনো কেনো এতো টেনশন করছেন।আল্লাহ যদি আমার কপালে আপনাকে লিখে রাখে,তাহলে কেউ যতো চেস্টা করুক আমাকে আপনার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না।একমাত্র মৃত্যু ছাড়া।তাই মনে রাখবেন আল্লাহ যা করে বান্দার ভালোর জন্যই করে।তাই এসব নিয়ে এখন আর ভাববেন না।অনেক রাত হইছে,আপনে সারাদিন একটুও বিশ্রাম নেন নি চলুন ঘুমাবেন।দেখলাম জিসান এখনো আমার হাতটার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই আমি উনার মুখটা দুহাত দিয়ে ধরে কপালে একটা কিস করে দিলাম।উনি কিছুটা শোকড হয়ে গেলো,ভাবেনি আমি এমন কিছু করবো।উনি আমার কোমড়টা জরিয়ে উনার বুকের সাথে চেপে ধরলো,,,
# আমি কি ছোট বাচ্চা, যে তুই কপালে কিস করলি।
তো কোথায় দেবো,কপালে দিছি এটাই বেশি।
# তাইইই নি,আমার তো ওটা লাগবে।
কোনটা....আমি একটু কপাল কুচকিয়ে।
# এই যে এটা,ওর ঠোটটা দেখিয়ে।
আরে পাগল নি,আপন আসলেই একটা লুচু।
# তাহলেতো লুচুগিরি একটু করতেই হয়।
আমি কিছু বলার আগেই আমার ঠোঁটটা নিজের দখলে নিয়ে নেয়।আমিও জেনো তার ভালোবাসা পেয়ে সব কিছু ভুলে গেলাম।কতোক্ষন ছিলাম দুজন খেয়ালি ছিলো না,একসময় আমাকে ছেড়ে আমার কপালে নিজের কপাল রেখে কিছুক্ষন, দুজনেই চোখ বন্ধকরে ছিলাম।এর পর উনি একটা মুসকি হেসে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলো।আর আমার বুকে মাথা রেখে আমাকে জরিয়ে শুয়ে পড়লো, টিক বিয়ের প্রথম রাতের মতো।আমিও উনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম।হয়তো খুব ক্লান্ত ছিলো তাই কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে গেলো।
সকালে উঠে দেখি সাহেবে এখনো ঘুমানো,আর আমাকে এমন ভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে আছে যে ছাড়াতেও পারছি না।আমি একটু নড়চড় করায় উনি খুব বিরক্ত চোখে আমার দিকে তাকালো।
# কি হয়েছে এমন নড়ছোস কেনো,শান্তিমতো একটু ঘুমাতে দেও বলে আবার জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।
আরে ভাই উঠেন, দেখেন কয়টা বাজে।
# ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি এমা এতো বেলা হয়ে গেছে,লাফ দিয়ে উঠে পরি,তিশা আগে ডাক দেওনি কেনো।আজ খুব জরুলী মিটিং আছে।আমার সব কিছু রেডি কর, আমি তারাতারি আসছি।
আজব আমি কি করে জানব,যাক আমি সব কিছু বেড এ রেখে, নিশির রুম থেকে ফ্রেস হয়ে নিচে চলে এলাম।
কিন্তু্ু সাহেব আমার দেরি হয়ে গিয়েছে বলে নাস্তা না করেই চলে গেলো।
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেলো।আমিও সংসার আর জিসানকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলাম।কিছুদিন পর আমার রেজাল্ট বের হলো,খুব ভালো না করলেও খারাপও করেনি।জিসান ও খুশি হলো রেজাল্ট দেখে।রেজাল্ট বের হবার পর একদিন আমার শ্বাসুড়ী জিসানকে বললো,আমাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবার জন্য।কিন্তু মি:জিসানের মনে অন্য কিছু চলছে।উনি মাকে মানা করে দিলো।
কিন্তু কেনো,তুই চাস না তিশা আরোও পড়ুক,নিজের পায়ে দাঁড়াক।
মা এতুটুকু আনতে আমার সব তেল শেষ করে দিয়েছে তোমার সাধের বৌ।একটা আস্ত বড় পড়া চোর।আর ও কলেজে গেলে,আমার জীবন আরো অতিষ্ঠ হয়ে পরবে,এতো বছর ওকে চোখে রাখার জন্য আমি বা রায়হান ছিলাম কিন্তু এখন,কলেজে ও যাবে,আর টেনশন আমি করবো।আমি নিজের কাজে মনোযোগ দিতে পারবো না,আর সবথেকে বড় কথা ও কলেজে গেলে ওর মধ্যে বিরাট পরিবর্তন আসবে,যা আমার জন্য কস্ট কর হবে।তাই ওর কলেজের যাওয়ার কোন দরকার নাই,যতোটুকু পড়ছে আমার জন্য এনাফ।আমার এতো পড়ুয়া বউ লাগবে না।
তুই আসলেই আজব,সারা দুনিয়ার ছেলেরা চায়,তার বউ উচ্চশিক্ষিত হোক আর তুই নাকি....আচ্ছা বাদ দে,তিশা যদি পড়তে চায় তখন কি করবি।
# মা আমি ওকে খুব ভালো করে জানি,ও নিজেও একবার কলেজে ভর্তির জন্য বলবে না দেখো, আর যদি ও নিজ ইচ্ছায় বলে, তখন দেখবো নি,তুমি এখন এসব চিন্তা বাদ দেও।
আচ্ছা তুই যা ভালো মনে করিস।
এভাবেই চলছিলো দিনকাল,একদিন নিশি আর আমি গল্প করছিলাম ওর রুমে,এমন সময় নিশি আমাকে জিঙ্গেস করলো,ভাবী কোন কলেজে ভর্তি হবা।
আরে বোন বাদ দেও, এতো পড়ে কি করবো বলো,কতো কস্ট করে পাস করছি জানো,তোমার ভাইয়ের কতো অত্যাচার সহ্য করেছি।এখন আর এসব পড়া পড়া নিয়ে কোন রকম যন্ত্রণা সহ্য করতে পারবো না,আমি যেমন আছি ভালো আছি,আর তোমার ভাই আমি কলেজে গেলে আমাকে আরো টর্চার করবে।এভাবে যাবি না,এটা করবি না,কারো সাথে কথা বলবি না ব্লা ব্লা ব্লা.....।এতোসব শর্ত মেনে কি কলেজ করা যাবে বলোতো।তার চেয়ে ভালো আমি এখনি আছি।
# আচ্ছা বাদ দেও, এখন বলো তুমি আমার সাথে যাবে।
কোথায়????
# আরে আমার বান্ধবী আয়নির জন্মদিন আজ,তুমি চলনা ভাবী,তুমি গেলে মা আমাকেও যেতে দিবে।
আরে রে অফ যাও ননদিনী, তুমি মার কথা পরে বলো,তোমার হিটলার ভাইকি আমাকে যেতে দিবেনি,আগে সেটা ভাবো।
# আচ্ছা আমি সবাইকে রাজি করাচ্ছি, তুমি রেডি হও।
আগে তোমার ভাই কি বলে দেখো,,,,,শুনো আমার কথা,কে শুনে কার কথা,নিশিতো দৌড়,,,,
আমি রেডি হয়ে নিলাম,নীল রংয়ের একটা শাড়ি পড়লাম,আর হালকা সাজ করলাম।রেডি হয়ে জিসানকে কল দিলাম কিন্তু জিসানের ফোন সুইচ অফ,ও মিটিং এ থাকলে প্রায়ই ফোন অফ থাকে।তাই হয়তো।আমি তবুও অনেকবার কল করলাম।কিন্তু নো রিসপনস।
# ভাবী তুমি রেডি হয়েছো।আরে ভাবী তোমাকেতো নীল পরি লাগছে।
এতো পাম্প মারতে হবে না,তোমার ভাইয়ের ফোনতো বন্ধ এখন কি করবো।তোমার ভাইকে না বলে গেলে অনেক রাগ করবে।তখন আবার আমাকে আস্ত রাখবে না।
# আরে ভাবী তুমি এতো ভয় পাও কেনো,আমি তো আছি, আমি মাকে বলে দিয়েছি, মা ভাইকে ফোন করে বলে দিবে,(ডাহা মিছা কথা,মা নিজেও বলেছে জিসান ভাইকে জেনো বলো যাই,ভাবীর ব্যাপারে সে রিস্ক নিতে রাজি না,)মা বললে ভাইয়া মার উপর কোনো কথাই বলতে পারবে না দেখো।
তিশা ফোনটা টেবিলে রেখে,নিশির কাছে এসে, সত্যি বলছো।
# হুমমম,তিন সত্যি, এবার চলো।
দাঁড়াও আমি ব্যাগটা নিয়ে নি,তিশা ব্যাগটা তো নিয়েছে কিন্তু ফোনটা ওখানেই রেখে গেছে ভুলে।
কারন কপলা যে ওর দূর্ঘতি আছে তাই।
চলবে,,,,,
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-26 +27
♣আমি নিশির সাথে আয়নির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চলে গেলাম।কিন্তু্ু সাথে করে ফোনটা নিতে ভুলে গেছি।ফোনটা আমার রুমেই রয়ে গেলো।
কিছুক্ষন পর আমি ও নিশি আয়নির বাড়ীতে পৌছালাম। আয়নির বাড়ীতে এসেই আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।আমি ভেবেছিলাম অনুষ্ঠানে শুধু আয়নি আর নিশির ফ্রেন্ডেরা আসবে কিন্তু এখানে নিশি আর আয়নি থেকে বড় কিছু লোকও আসছে।আর ছেলে মেয়ে এক সাথে নাচ গান করছে,যা খুবই অসহ্য লাগছে।নিশি এসব কি তুমি বললে আয়নির জন্মদিন।তাহলে এরা কারা,এরা নিশ্চয় তোমাদের ফ্রেন্ডস না, বয়সে অনেক বড় তোমাদের,তার উপর এখানে অনেক ছেলেরাও আছে,তোমার ভাইয়া জানতে পারলে আমাকে মেরেই ফেলবে।তুমি কেনো আমাকেএখানে আনলে।
ভাবী বিশ্বাস করো আমিও জানতাম না, আমি ভেবেছিলাম ও শুধু আমাদের ফ্রেন্ডেসদের ইনভাইট করেছে,কিন্তু এখানে এসে আমিও কিছুটা হতোভম্ভ তোমার মতো।আর এরা মনে হয় আয়নির ভাইয়ের বন্ধুরা,কারন এদের মধ্যে কয়েকজনকে আমি চিনি।
♣যাই হোক, এখানে আমি আর এক মুহুর্তও থাকবো না,চলো বাসায় যাই।
কিম্তু ভাবী আয়নি.....
-আরে নিশি দোস্তো, কখন আসলি,আর এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো।ভেতরে চল।দেখ সবাই আসছে।আরে এটা কে তোর পিছে।
তিশা আমার ভাবী,তোকে বললাম না,জিসান ভাইয়ের বউ।
-ওওওও ভাবী,বাহিরে কেনো ভেতরে চলুন।আপনে তো সেইই সুন্দরী, নিশিতো টিকই বলছে।(আমার হাতটা ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে গেলো।)
♣নিশি তার ফ্রেন্ডসদের সাথে ব্যস্ত হয়ে পরলো।অনেকবার আয়নিকে বলতে চাইছিলো চলে যাবার জন্য,কিন্তু আয়নি কোন কথাই শুনছে না নিশির।উপায় না পেয়ে আমিও ঘরের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছি।আর আল্লাহ আল্লাহ করছি,এ কোন বিপদে ফেল্লা আমায়।আমি নিশিকে এই ভিড়ে অনেকবার ডাকার চেস্টা করলাম,কিন্তু মিউজিক এতো জোরে চলছে যে,আমার গলার সুর ওর কানে পৌচাচ্ছে বলে মনে হয় না।কেনো জানি বিষন ভয় লাগছে।
♠এদিক দিয়ে জিসান, ফোনটা খুলেই তিশার ফোনে কল করছে কিন্তু তিশা কল ধরছে না।ধরবেই বা কি করে ফোনতো বাসায়।এভাবে অনেকবার কল করার পরও যখন দেখলাম তিশা ফোন ধরছে না,তখন বাসার নাম্বারে কল দিলাম।ফোনটা মা ধরলো, মা তিশা কোথায়....?
কেনো তুই জানোস না।
♠মানে, কি জানবো।
মেয়ে গুলোকে এতো করে বলে দিলাম তোকে বলে জেতে,না আর পারি না এদের নিয়ে।
♠কোথায় গেছে,আর কার সাথে।
নিশি আর তিশা, নিশির কোন বান্ধবী আয়নি আছে না,ওর নাকি জন্মদিন আজ।ওখানে গেছে দুজন।
♠কিকিকি,,,, তুমি অনুমিত কেনো দিলে।
আরে আমি কি জানি ওরা তোকে কিছু না বলে চলে গেছে।তাহলেতো জেতেই দিতাম না।
♠আচ্ছা আমি রাখি,ফোনটা রেখে নিশিকে কল করলাম,কিন্তু নিশিও কল রিসিভ করছে না,মন তো চাইতাছে দুটারে সামনে পেলে একটা আছাড় মারতার।
অলরেডি ৮টা বাজে,আর এতো রাতে মেয়ে দুটো বাহিরে ,তার উপর ফোনও রিসিভ করছে না।আজ শুধু বাসায় আসুক।তার পর দেখাচ্ছি। বলে জিসান অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় গেলো।মা মা মা.....
কি হলো জিসান।
♠ওরা আসেনি এখনো।
না রে বাবা,দুজনকেই কল করছি কিন্তু কেউ কল ধরছে না।এখন তো আমারো টেনশন হচ্ছে।
♠ওকে তুমি টেনশন করো না,আমি দেখছি বলে জিসান রুমে গেলো।ফ্রেস হওয়া দরকার আগে।ফ্রেস হয়ে কাপড় চেন্জ করার সময় তিশার ফোনটা রুমে পায়,রাগের চোটে ফোনটা আছাড় মারে।কাপড় চেন্জ করে সোজা বাহিরে চলে যায়।ড্রাইভার কে ফোন করে এডড্রেসটা নিয়ে নেয়।বিকেলে তিশা ও নিশা যে গাড়ী দিয়ে এসেছে আয়নির বাসায়।
♣এতো রাত হয়ে গেছে নিশির কোন খবর নেই।চিন্তা করতে করতে কারো সাথে ধাক্কায় হাতের জুশটা আমার শাড়ীতে পরে গেলো।
-আরে ভাবী কি হলো।~আয়নি।
♣এইতো জুশটা পরে গেছে শাড়ীতে।
ভাবী এক কাজ করো তুমি আমার রুমে গিয়ে পরিষ্কার করে নেও তা না হলে দাগ লেগে যাবে।এই শুনো ভাবীকে আমার রুমটা দেখিয়ে দেও।
♣আমাকে একজন সার্ভেন্ট আয়নির রুমটা দেখিয়ে দেয়।আমি রুমে গিয়ে শাড়ীটা ভালো করে পরিষ্কার করে নি।রুম থেকে বের হতে নিবো দেখি সামনেই কিছু মানুষ জরো হয়ে কথা বলছে,হাসাহাসি করছে আর ড্রিংকস করছে।তা দেখে আমার মেজাজ টা আরো খারাপ হয়ে গেলো।কারন যখন এসেছিলাম তখন কেউ ছিলো না,হয়তো সবাই সামনের রুমে ছিলো,এখন বের হয়ে গিয়েছে।আমি আর কিছু চিন্তা না করে শাড়ীর আচলটা দিয়ে ভালো করে নিজেকে ঢেকে তাদের পাশ কেটে চলে যেতে নিলাম।হঠাৎ করো ডাকে..দাঁড়িয়ে গেলাম কিন্তু আমার বুকটা ধকধক করছে ভয়ে।কারন এখানে আমি একা,আর সব গুলো ছেলেই ড্রিংকস করা,আমি ভয়ে ভয়ে পেছনে না ঘুরেই,জি বলুন।
★who r u?আর এখানে কি করছেন।পার্টিতো নিচে।আপনে এখানে কেনো।~নিলয়,আয়নির ভাই।
♣আসলে আ,,, মি,,,,,,একটু আমতা আমতা করে।শাড়ীতে জুশ পরেছিলো, তাই আয়নি আমাকে এখানে পাঠালো।আমি একবারের জন্যও ঘুড়লাম না।তখন ওদের মধ্যে একজন বললো।
আরে একটু সামনে ঘুড়ুন।আমরা দেখতে এতো খারাপ না,এ কথা বলই সবাই হা হা করে হেসে উঠলো।
♣আমি চলে যেতে নিলে,কেউ আমার নাম ধরে ডাক দেয়।
তিশাএএএএএএ........।
♣আমি চমকে জাই,সাথে সাথে পেছনে তাকাই।একি এতো রনি,রায়হান ভাই আর জিসানের ফ্রেন্ডস।লোকটা সেদিনও আমার কাছে সুবিধার মনে হয়নি,আর আজ তার সাথেই দেখা।খোদা.....
আরে এ দেখি তিশা,তুমি এখানে,তোমাকেই স্মরণ করছিলাম,আর তুমি দেখি সত্যিই আমার সামনে,,, আমার তো বিশ্বাস ই হচ্ছে না,একটু ছুঁয়ে দেখি।
♣রনি ভাইয়া আমার হাতটা ধরতে এলে আমি দুপা পেছনে চলে যাই।
আরে রেরে ভয় পাও কেনো।ভালোই হলো তোমাকে এখানে পেলাম,সেদিনতো কথাই বলতে পারিনি।
★মেয়েটা কে রনি,তুই চিনিস।~নিলয়।
আরে রায়হানকে চিনোস না।ওর বোন তিশাএএএএ।
★মেয়েটা অদ্ভুত সুন্দর, আর সবথেকে সুন্দর ওর চোখের চাওনী। কেমন ভাবে জেনো তাকায়,অনেকটা মায়া কাজ করে।দেখলে দেখতেই মন চায়,চোখ জেনো ফিরানো যায় না।কিন্তু দেখেই বুঝা যাচ্ছে রনিকে বিষণ ভয় পাচ্ছে, হয়তো ওর স্বভাব সম্পর্কে অবগত।
রিলেক্স ব্রো ওকে জেতে দে।আমাদের ক্লাশ মেটের বোন,তাই,,,,। আপনে জেতে পারেন।~নিলয়।
♣আমি চলে জেতে চাইলে আমার পথ আগলে রনি দাঁড়ায়। আমি বিষণ ভয় পাই।ভয়ে সেই ছেলেটার দিকে তাকাই,কারন একমাত্র তার চোখে আমি আমার জন্য কোন খারাপ কিছু দেখতে পাই নি।
★মেয়েটও অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকায়,মনে হয় চোখের ঈশারায় বলছে তাকে সেভ করতে।তার চোখের ভাষা আমি পরতে পারছি।আমি গিয়ে রনিকে সড়ে জেতে বললাম।কিন্তু রনি সরবে না।রনি কি করছিস।জেতে দে ওকে।এভাবে সিনক্রিয়েট করবি না আমার বাসায়,তোর ড্রিংকস একটু বেশি হয়ে গিয়েছে বলে মনে হয়,এই জাহিদ ওকে নিয়ে যা,জাহিদ রনিকে ধরতে এলে জাহিদ কে ধাক্কা দেয়।
আই এম ওকে দোস্ত। আমার নেশা এখনো চড়েনি,জানোস ওকে প্রথম দেখার পর থেকেই কোনও নেশা কেনো জানি ধরেই না,তাই কথা বলতে দে।চলো তিশা আমার সাথে।
♣রনি আমার হাতটা ধরতে এলে আমি নিলয়ের পেছনে চলে যাই।প্লিস ভাইয়া সেভ মি,প্লিস।পারিনা কান্না করে দি।
★রিলেক্স, আমি আছি,আপনে ভয় পাবেন না।~নিলয়।
রনি নিলয় কে সরিয়ে তিশার কাছে জেতে চাইলে কেউ এসে রনিকে ঠাসসসস করে একটা চড় মারে।উপস্থিত সবাই শোকড লোকটাকে দেখে।কারন সে আর অন্য কেউ না জিসান।রনি ফ্লোরে অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পরে থাকে।কারন সে আগের থেকেই নেশাগ্রস্ত ছিলো।আর জিসানের থাপ্পড়ে আর নড়তে পারছে না।
তিশাএএএএ।~জিসান।
♣আরে এতো জিসান,আমি নিলয়ের পেছন থেকে সামনে তাকাই,মনে হয় আমার জানের মধ্যে এখন জান এসেছে।
★জিসান তুই এখানে।তুই এখানে কি করছিস।~নিলয়।
(আর তিশার সাথে কি সসম্পর্ক,,,,,মনে মনে)
♠তোর বাড়ীতে আসার আমার শখও নাই।
★তাহলে.....~নিলয়।
♠আমার একটা অমুল্য জিনিস তোর বাড়ীতে না বুজে এসে পরেছে।তাই আমার জিনিস আমি নিতে এসেছি।
জিসান আমার দিকে তাকিয়ে আছে,আর আমি নিচের দিকে ভয়ে।
★কিকিকি,,,,সেটা।যা তোর ঠিকানা ভুলে আমার ঠিকানায় এসে পড়েছে।
♠আমি নিলয়ের সামনে গিয়ে তিশার হাতটা ধরে সামনে নিয়ে এলাম।মিসেস জিসান আহমেদ। তিশা আমার ওয়াইফ।আর আমি আমার ওয়াইফ কে নিতে এসেছি।
★নিলয় জেনো আকাশ থেকে পড়লো,এতোক্ষন যে মেয়ে কে নিয়ে এতো চিন্তায় মগ্ন ছিলো,সে নাকি তারই শত্রুর ওয়াইফ।
কিছুটা এটিটিউড নিয়ে জিসানকে বললো,সুন্দরী বউকে সামলিয়ে রাখতে হয়।তা না হলে বাহিরে শুকুনের অভাব নেই।কখন কি করে বসে,এর পর প্রস্তুাতে হবে।সবাই আমার মতো ভালো না।।একটু বাকা হেসে।
♠আই নো দেট,আর আমার পাখিকে নজর দেয়া এতো সহয না। জিসান তিশার হাতটা ধরে চলে জেতে নিলে।নিলয়ের কথায় আবার তাকায়।
★তাহলে পাখি আজ খাঁচা থেকে উড়লো কিভাবে।এটা অসতর্কতার লক্ষণ।পাখির খেয়াল রাখতে না পারলে বলিস আমি নিয়ে আসবো,আর খেয়ালও রাখবো।
♠জিসান কথাটার অর্থ ভাল করে বুজতে পারছে,তাই রাগে কটমট করতে করতে তিশার হাতটা শক্ত করে ধরে বাহিরে চলে এলো।
♣জিসান আমার হাতটা এমন ভাবে ধরলো মনে হয় হাতটা এখনি ছিড়ে যাবে।আমাকে টানতে টানতে গাড়ীর সামনে এনে বসিয়ে দেয়।আমি লুকিং গ্লাসে নিশিকে দেখতে পাই।এক গালে হাত দিয়ে কাঁদছে। মনে হয় জিসান ওকে ডুস দিয়ে দিছে এখন আমার টা বাকি।আমাকে আজ কি করবে আল্লাহই জানে।আমার হাত পা জেনো এখনি কাপছে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা বাড়ীতে এসে পরেছি।নিশি গাড়ী থেকে নেমেই দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো।কিন্তু আমি ভয়ে গাড়ী থেকে নামতেই পারছি না।জিসান গাড়ী থেকে বের হয়ে আমার হাতটা ধরে সোজা রুমে নিয়ে গেলো।রুমে গিয়ে দেখি আমার ফোনটা আগেই ইন্তেকাল করেছে,এখন আমার বাকি।জিসান সোফায় হেলান দিয়ে বসে পড়েছে চোখ বন্ধকরে।আর আমি অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে আছি।
♣কার অনুমতি নিয়ে তুই বাসা থেকে বের হলি।
আ,,,মি,,,,আ,,মি,,,আপনা,,,কে, কল,,,করে,,,ছিলাম।কিন্তু ফোনটা বন্ধ ছিলো।
♠ফোন খোলার ওয়েট করলি না কেনো।
নিশি বললো,মা নাকি জেতে অনুমতি দিয়েছে।তাইইইই,,,
আমি সত্যি জানতাম না।
♠নিশির কথা বাদ দে,আমাকে বলে যাওয়া তোর উচিৎ ছিলো কিনা।
বলিসনা কেনো.....(ধমক দিয়ে)
♣জিজিজি মানেননন সরিরিরি।
ঠাসসসস,,,, জিসান শরীলের সমস্ত জোর দিয়ে থাপ্পড় টা মারে।
তাল সামলাতে না পেরে আমি গিয়ে বিছানায় পরি,তাই ব্যাথা কম পাই।কিন্তু জিসানের পাঁচটা আঙ্গুলের দাগ বসে যায় গালে।জিসান আমাকে টেনে আবার দাড় করিয়ে আমার দুবাহুকে শক্ত করে ধরে,
♠তোর সাহস কি করে হলো আমাকে না বলে বাড়ীর বাহিরে যাওয়া।জানোস আজ কি হয়ে জেতো,যদি নিলয় না থাকতো,সেই নিলয় যে আমার আর রায়হানের শত্রু কলেজ থেকে।আজ ও তোকে বাঁচিয়েছে।কেনো তুই কিছু বুঝিস না,তোর কি মনে হয়।তোকে সারাক্ষন চোখে চোখে রাখা আমার অপরাধ।আজ তোর কারনে নিলয় আমাকে কি বলেছে শুনিস নাই,আমি আমার পাখির খেয়াল রাখতে পারিনা।সত্যি কি আমি তোর খেয়াল রাখতে পারিনা বল....বলোস না কেনো।ধমক দিয়ে।
♣আমি.... কান্না জরিত কন্ঠে, আই এম সরি।প্লিস,,, , মাপ করেদিন।আমি জানতাম না এমন কিছু হবে।
জিসান রাগে তিশাকে বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।
আমি হয়তো তোর যোগ্যই না,তাইতো তোর খেয়াল রাখতে পারিনা।এ কথা বলে দেয়ালে একটা জোরে ঘুষি মারে।আর সাথে সাথে হাত দিয়ে রক্ত পরতে থাকো।
♣একি করলেন, আমি দৌঁড়ে গিয়ে হাতটা ধরলাম।হাতটা থেকে রক্ত বের হচ্ছে।দোষ আমার ছিলো আপনে নিজেকে কেনো আঘাত করলেন,আমি একটা রুমাল নিয়ে সাথে সাথে বেধে দিলাম।উনি হাতটা ছাড়িয়ে রুম থেকে চলে গেলেন।আমি জানি অনেকটা কস্ট দিয়ে ফেলেছি আজ। আই এম সরি জিসান বলে ফ্লোরে বসে পড়লাম।
চলবে.....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNiA
Part-27
~তিশা কাঁদতে কাঁদতে ঝর্নার নিচে বসে পড়লো।না জেনে জিসানকে কস্ট দিয়ে ফেললো।এভাবে অনেকক্ষন ভিজলো,চোখের পানি ঝর্ণার পানির সাথে মিশে যাচ্ছে।এভাবে অনেকক্ষন থাকার পর বাহিরে বের হয়ে দেখলো জিসান এখনো আসে নি।তাই তিশাও চুপচাপ বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।খুব ক্লান্তে ঘুমিয়ে গেছে।
~এদিকদিয়ে জিসান ছাদে এক কর্নারে দাঁড়িয়ে সিগারেট এর ধোয়া ছাড়ছে আর গভীর চিন্তায় আছে।কি হবে এখন।কেনো জানি মনে হচ্ছে সামনে অনেক বড় বিপদ আসছে, আর এই বিপদ থেকে মুক্ত হবার কোন উপায় জেনো জিসানের জানা নেই।নিলয় ও রনি দুজনকেই চিনি আর এ দুজনেই তিশার জন্য বিপদ ডেকে আনবে।এদের চোখ থেকে এতো বছর আড়ালে রাখলাম কিন্তু এখন কেনো পারছি না,কেনো জানি মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই আমি কিছু হারাবো।এমন সময় জিসানের ফোন বেজে উঠলো।জিসান একটু চিন্তিত হলো,এতো রাতে আননোন নাম্বার থেকে কে কল করছে।জরুলী হতে পারে ভেবে ফোনটা ধরে,হ্যালো,,,,,.।
:হ্যালো জিসান। কি হলো ঘুম আসছে না।~নিলয়।
~উমমম।আমি ভাবছিলাম এখনো ফোন কেনো আসলো না।
:হা হা হা,আসলেই আমরা দুজন শত্রু হলেও দুজন দুজনকে খুব ভালো করে চিনি।
~উমমমম,আমি এটাও জানি কেনো এতো রাতে আমাকে ফোন করেছিস।তাই আমি আগেই বলেদি ভালো করে শুন,যার দিকে নযর দিচ্ছিস সে আমার ভালোবাসা,আমার জীবন,আমার রাতের পূর্ণিমা চাঁদ।যা শুধু আমাকে আলোকিত করার জন্য জন্ম ওর।আমার চাঁদকে আমি অন্য কাউকো আলোকিত করতে দিবো না,আর এটা কলেজ না,যা নিয়ে তোর আর আমার মধ্যে দন্ধ হবে বা প্রতিযোগিতা হবে।
ও আমার গার্ল ফ্রেন্ড না আমার বিবাহিত স্ত্রী, তাই আমি আসা করবো তুই ওর থেকে দূরে থাকবি।
:রিলেক্স... এতো চিন্তা করে কি হবে এখন।আমি আপাতত দূরেই থাকবো কিন্তু মনে রাখিস তিশার ওই চোখের চাওনী আমাকে ঘায়েল করছে।তাই ওকে ভুলা এতো সহয না।আর আমি ভুলতেও চাই না।আসলে রনি টিকই বলেছিলো,তিশা মনেই নেশা।তাইতো এতো পাগল হয়ে গিয়েছে ওওও।
~নিলয় জাস্ট সেট আপ।
:আমাকে চুপ করিয়ে লাভ নেই,আমি ততোক্ষণ তিশাকে আপন করে পাওয়ার চেস্টা করবো না, যতোদিন তুই ওকে আঘলে রাখবি,কিন্তু তিশার প্রতি তোর কোন অবহেলা হলেই,আমি তিশাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো।আর এতে তুই কেনো তিশাও আটকাতে পারবে না,আর আমি কেমন আর কি করতে পারি,এটা খুব ভালো করেই জানোস।
~জিসান.... নিরব।
:আর একটা কথা,রনি খুব রেগে আছে যে কোন সময় কিছু একটা করবে,সো বি রেডি।
~তকে এতো চিন্তা করতে হবে না।
আরে ভাই আমি তোর চিন্তা করিনা,আমার তো তিশুর জন্য চিন্তা হচ্ছে,আর তিশু যেহেতু এখন তোর দায়িত্বে তাই ওকে সব দিক থেকো রক্ষা করাও তোর কাজ, আমার না।
জিসান আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলো।
আপাতোত নিলয়কে নিয়ে টেনশন করতে চাই না,সমস্যা হচ্ছে রনিকে নিয়ে এই রনির একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
জিসান আর কিছু না ভেবে,রুমে চলে গেলো,রুমে গিয়ে দেখি তিশা শুয়ে আছে,হয়তো ঘুমিয়ে গেছে।তাই নিজেও গিয়ে শুইয়ে পড়লাম।গভীর রাতে কারো আর্তনাদে ঘুম ভাঙ্গলো। হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে দেখি তিশা কাঁপছে, আমি তারাতারি ওর মাথায় হাত দিয়ে দেখি,এতো বিষণ জ্বর শরীলে ।একি ওর চুল ভিজা,তার মানে ও এতো রাতে শাওয়ার নিয়েছে,মনে হয় অনেকক্ষন ছিলো,তাইতো এতো জ্বর আসছে।আমি ওর চুলগুলো ভালো করে মুছে দিলাম,ওকে তুলে জোর করে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে কপালে পট্টি দিতে লাগলাম।আর ওর গালটাতে আমার আঙ্গুলের দাগ গুলো কালছে ওয়ে পরেছে, আমি দাগগুলোতে মলম লাগিয়ে দিলাম।কিন্তু জ্বর এখনো কমছে না,তাই আর কিছু না ভেবে।নিজের শার্টটা খুলে তিশাকে বুকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম,শরীলের তাপদেয়ার জন্য।ভোর রাতে তিশার জ্বর চলে গিয়ে শরীল থেকে ঘাম বের হয়।
~সকালে উঠে দেখি জিসান আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে ঘুমিয়ে আছে।উনার ঘুমান্ত ফেসটা একদম বাচ্চাদের মতো দেখতে,কে বলবে এই মানুষটা এতোটা রাগি।আমাকে বকে,আবার সারারাত বসে আমার সেবাও করছে।মাঝে মধ্যে মনে হয় আমি উনাকে এখনো পুরাপুরি চিনি নাই।আমি আস্তে করে উঠে ফ্রেস হতে চলে গেলাম।এর পর নিচে গিয়ে সবার জন্য নাস্তা টেবিলে সাজাতে লাগলাম।গালের দাগটা এখনো অনেকটা আছে তাই চুল দিয়ে ডেকে রাখলাম।নিশি এসে টেবিলে বসলো।কিন্তু আমি কোনো কথাই বললাম না ওর সাথে।কারন দোষটা সম্পূর্ণ ওর ছিলো।ও ভালো করেই জানে জিসান কেমন তবুও মিথ্যা বলছে।তাই আমি ওকে দেখে রান্নাঘরে চলে গেলাম।
~জিসান ও কিছুক্ষন পর নিচে আসলো নাস্তা করার জন্য।কাল থাপ্পর খেয়েও এই মেয়ের মধ্যে কোন অনুশোচন নেই।বুঝছি কালকের ডুসটা কম ছিলো, এখনো কন্ট্রোল না করলে এমন ঘটনা আরো ঘটবে।নিশিএএএএ।
:বলো ভাইয়া কি বলবে।মুখটা ঘোমরা করে।~নিশি
~তোর ফোনটা দে তো।
:কেনো,,,,,
~দিতে বলছি দে,,,,,, অনেকটা চেঁচিয়ে।
জিসানের চেঁচানো শুনে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে টেবিলে এসে যা দেখলাম,আমি তো শোকড। নিশির ফোনটাও আমার ফোনের মতো ইন্তেকাল করছে।
~জিসান নিশির ফোনটা জোরে ফ্লোরে ছুড়ে মারলো,আর ফোনটা ভেঙ্গে চুরমার।
:ভাইয়া এ কি করলে,আমার নতুন ফোন।
~কাল কয়টা কল করেছিলাম।একটা কলও রিসিভ করার টাইম হয়নি তোর।তোকে ফোন দিলে যদি তুই ফোন ধরার টাইমই না পাস তাহলে ফোন দিয়ে কি হবে,আজ থেকে ২ মাস তুই ফোন ছারাই থাকবি।এটা তোর শাস্তি।এর পর জিসান রাগে গজগজ করতে অফিসে চলে গেলো।আর আমি ওর যাওয়ার পথে চেয়ে রইলাম।
:নিশি ন্যাকা কান্না করতে লাগলো,তখন আমার শ্বাসুড়ী এসে এক ধমক দিলো।
মা তুমিও আমাকে বকছো।ভাইয়াকে কিছু বলছো না কেনো।
-কি বলবো,সব নস্টের মুল তুই।তোর ফোনটা ভাঙ্গছে বলে এতো নাটক করছিস দেখ তোর কারনে এই মেয়েটার কি অবস্থা, আমাকে টেনে নিশির সামনে নিয়ে।
তোর কারনে ওকে ও শাস্তি পেতে হইছে।আমি তোকে বার বার বলেছিলাম না জিসানকে না বলে তিশাকে কোথায়ও নিতে না।তুই জানিস তোর ভাই কেমন তবুও তুই মিথ্যা বলে তিশাকে নিয়ে গেলি।এখন আবার এখানে বসে নাটক করছিস।
:নিশি আমার গালের দাগটা দেখে,আমাকে জরিয়ে কান্না করে দিলো।সরি ভাবী।আমার জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হলো।আমি ভাবছি ভাইয়া একটু বকবে,কিন্তু এতো কিছু হবে আমি বুঝতে পারিনি।সরি।ওর কান্না দেখে আমি আর রাগ করে থাকতে পারলাম না।আমি ওকে শান্ত হতে বললাম, ওর কান্না বন্ধ করার জন্য বললাম,ননদিনী শুধু তোমার ফেনটা ইন্তোকাল করেনি,আমার টাও কাল শহীদ হইছে।
:কি তোমার ফোনও ভাইয়া ভেঙে ফেলছে।
~হুমমমমম.....আমি বাচ্চাদের মতো ঠোটটা উলটিয়ে।
এর পর আমরা দুজনেই হেসে দিলাম।
সারাদিন জিসান আর কল করেনি।তাই আমিও আর কল দি নাই।
~রাতে বাসায় এসে ফ্রেস হয়েই আবার লেপটপ নিয়ে বসে পড়লো,একটাবারও আমার সাথে কথা বলনি
একটু পর ডিনারের জন্য নিশি এসে ডেকে গেলে,উনি ডিনার করে রুমে এসে বারান্দায় সিগারেট এর ধোয়া উড়াচ্ছে।আর আমি সব কাজ শেষ করে রুমে আজ ইচ্ছা করেই দেরি করে গেলাম,ভাবলাম ঘুমিয়ে গেছে কিন্তু গিয়ে দেখি উনি এখনো বারান্দায়।
আমি আস্তে করে উনার পেছনে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম।সরি,আমি আর এমন কখনো করবো না,আপনাকে না বলে কোথাও যাবো না।প্লিস এবারের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন।প্লিস....।আপনে বললে আমি কানও ধরতে রাজি।তবুও ক্ষমা করেদিন।
এদিকদিয়ে জিসান…তিশার এমন আচরনে হাসবো না কাঁদবো চিন্তা করছি।একদম পিচ্ছিদের মতো মাপ চাচ্ছে।আমি ওর হাতটা ধরে ওকে সামনে নিয়ে এলাম।দেখি ও এখনো কান্না করছে।কান্না বন্ধ কর তিশা।
আপনে এখনো আমার উপর রেগে আছেন,আগে বলুন আমাকে মাপ করেছেন।
~আমি রেগে নেই,তুই কান্না বন্ধ কর।
সত্যি.....
~হুমমমমম,কিন্তু এর পর এমন যাতে না হয় মনে থাকবে।
আমি মাথা নেড়ে হা বললাম।উনি আমাকে শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরলেন।এর পর কপালে একটা কিস করে কোলে তুলে নিলেন।বিছানায় রেখে আবারো ভালোবাসার সাগরে ডুব দিলাম আমরা।
চলবে...
(ভুল বুঝাবুঝি,কথা কাটা কাটি হবেই, কিন্তু এতে ভালোবাসা কমে না।বরং বারবে ওদের।তিশা আর জিসানে জীবনেও এমন অনেক কিছু হবার বাকি আছে।জিসান তিশাকে ভালো করে জানলেও তিশা জিসানের অনেক কিছুই জানে না।তাই জিসানকে জানতে হলেও ওকে এখনো অনেক পরীক্ষায় দিতে হবে।এতে তিশা কতোটা সফল হবে দেখা যাবে।
আজে বাজে কমেন্ট না করে নিজের মন্তব্য জানাবেন।ধন্যবাদ।)

পাট ২৮-৩১
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
Writer -TaNia
Part-28+29
♦এভাবে জিসান আর তিশার বিবাহ জীবন ভালোই কাটছিলো।তিশা ও অনেকটা বুজতে পারছে জিসানকে,জিসানের ভালো মন্দো সবই এখন খেয়াল রাখে।জিসান যেমন তিশার পছন্দ অপছন্দ সব জানে তিশাও জানার চেস্টা করছে।
এমনি একদিন ড্রয়িংরুম এ বসে গল্প করছে বাড়ীর সব লেডিসরা মিলে।আমি ও তাওহিদ ভাইয়া অফিস শেষ করে বাড়ীর ভেতরে ডুকে দেখি সবাই অনেক খুশি।সোপিং এর কথা বলছে আর কে কি নিবে,কে কি পরবে তাই ডিশকাশন চলছে।আমি ভ্রু কুচকে জিঙ্গেস করলাম হচ্ছেটা কি।আর এতো আয়োজন কিসের জন্য।এরি মধ্যে নিশি দৌড়ে এসে বলতে লাগলো,ভাইয়া আমাদের কালই সোপিং এ নিতে হবে।
কেনো....এতো কিসের সোপিং। ~জিসান
তাওহিদ দুঃখের খবর তোমার ঝুমুরের বিয়ে টিক হয়ে গেছে।~তানজিলা।
এটা আমার জন্য দুঃখের খবর কেমনে হলো,আর আমার ঝুমুর মানে।আমি কি ঝুমুর কে দত্তক নিয়েছি।
ছি তাওহিদ এসব কি বলছিস।~মা
দেখোনা মা তানজিলা কিভাবে পিনছ মারছে আমাকে।
আচ্ছা বাদ দে ওসব, শুন আমাদেরকে বিয়ের তিনদিন আগেই জেতে বলছে,তাই সবাই সবার গোছগাছ করে নে হাতে সময় নেই।কাল সোপিং করে পরশু চলে যাই আমরা কি বলিস।
মা আমিতো জেতে পারছি না,কাল আমাকে অফিসের কাজে চিটাগাং যেতে হচ্ছে।আমি একেবারে বিয়ের দিনই যাবো তোমরা যাও~ তাওহিদ।
♦ভাইয়া চিটাগাং গেলে অফিসের সব চাপ আমার উপর পরবে,তাই আমি আর তিশা একেবারে গায়ে হলুদের দিনই যাবো,এ কথা বলে জিসান রুমে জেতে নিলো।
তিশা এখানে একলা থেকে কি করবে জিসান, ও আমাদের সাথেই চলুক।~তানজিলা।
না ভাবি,ও আমার সাথেই যাবে।তোমরা যাও।
কিন্তু জিসান....
প্লিস ভাবি আর কিছু বলো না।সবাই চুপ হয়ে গেলো।
আর....
আমি,, আমি আর কি বলবো,জিসান যেহেতু মানা করেছে,তাহলো ও যা বলবে তাই হবে।তাই আমি সেখান থেকে উঠে চলে গেলাম।
জিসান এমন কেনো,তিশাকে কি একলা যাবে,আমরা তো সাথেই থাকবোই তাহলে এতো কিসের ভয়।,,, ~তানজিলা।
ভাবী তুমিও না,,, জানোনা ভাইয়া ভাবীকে বাপের বাড়ীতে একদিন থাকতে দেয় না,সকালে দিয়ে আসে,আবার রাতে আসার সময় নিয়ে আসে,তাহলে
এখন কিভাবে দিবে।
ঠিকই বলছো.....~তানজিলা।
আমি চা নিয়ে রুমে গেলাম,জিসান মাত্রই ফ্রেস হয়ে বের হলো,আমার হাতটা থেকে চাটা নিয়ে আমাকে কাছে বসিয়ে আমার হাতটা তার মুঠিতে নিলো।
♦তিশা আমি জানি তুই রাগ করে আছিস আমি তোকে জেতে মানা করেদিছি বলে,কিন্তু আমার এসব একদম পছন্দ না,বিয়ে বাড়ীতে তিনদিন আগে গিয়ে কি হবে।তার উপর অনেক মেহমান আসবে,সবাইকে গাদাগাদি করে রুমে এডজাস্ট করতে হবে,আর তা আমার পছন্দ না।এসব আমার কাছে জামেলা মনে হয়।আমি নিজে তোকে গায়ে হলুদের দিন নিয়ে যাবো।পরের দিন বিয়ে খেয়ে চলে আসবো আমরা।ওকে।
আমার কোন সমস্যা নেই।আর আমি রাগও করেনি।তাই এতো চিন্তা না করে চা খান।আমি হেসেই বললাম।
জিসানও হেসে দিলো।
♦পরের তিন সবাই সোপিং করতে গেলো,কিন্তু আমি যাইনি,কারন জিসান নিজে আমাকে সোপিং করতে নিয়ে যাবে বলেছে।তাই আমি যাই নি।
পরেদিন সবাই চলে গেলো বিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে,আর আমি বাড়ীতে একা।দুজন কাজের মহিলা আছে,তবে এর মধ্যে একজন সকালে কাজ করে চলে যায়।আরেক জন এখানেই থাকে।আজ সারা দিন খুব বোরিং কাটলো,কারন বাসার কেউ নেই বলে,তবে জিসান কিছুক্ষন পর পর ফোন দিয়ে জিঙ্গেস করে আমি কি করছি।খেয়েছি কিনা,ব্লা ব্লা ব্লা....।আমি একা বলে বেচারা আজ অফিস থেকেও তারাতারি আসছে।আমি কাপড়গুলো ভাজ করছিলাম এমন সময় আমাকে পেছন থেকে জরিয়ে বলে,ভালোই হইছে সবাই তিনদিন আগে চলে গেছে।কি বলিস....
আমি একটু বোকার মতো তার দিকে তাকিয়ে বললাম।কেনো,এতে ভালোর কি হইছে।
♦উনি একটু দুস্ট চোখে তাকিয়ে,আমার ঘাড়ে একটা কিস করে বললো,তিনদিন মন মতো হানিমুন করতে পারবো।হানিমুনে এ তো যাওয়া হলো না,তাই বাসায় হানিমুনের প্লানিং করলে মন্দ কিসের।
আমি উনার মতলোব সব বুজতে পারছি।এই ছারুন আমায়,শখ কতো হানিমুন করার।আমার কোনো ইচ্ছা নেই ওসব করার।আমি পিচ্ছি মানুষ,আমার হানিমুন করার বয়স হয়নি।
তাই চলতো দেখি আমার বউটা কোনদিক দিয়ে এখনো পিচ্ছি আছে।বলেই আমায় বিছায় ফেলে আমার হাত দুটো বিছানায় চেপে ঠোঁটে ঠোঁট নিয়ে নেয়।আমি বাঁচতে চাইলেও সেদিন বাঁচতে পরিনি,এর পর দুজনি শাওয়ার নিয়ে ডিনার করে ছাদে বসে চাঁদের আলোয় দেখেছি অনেক রাত জেগে গল্প করলাম।এই রাতটা আমার স্মরণী রাতের মধ্যে একটি।
পরের দিন জিসান সকালে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলো।আমিও কাজ শেষ করে দুপুরে গোসল করে যোহর এর নামাজ টা আদায় করলাম,কিছুদিন ধরে নামায শুরু করলাম,বিয়ের আগে রেগুলার পরা হতো,কিন্তু বিয়ের পর কিভাবে জেনো বন্ধ হয়ে গেলো।শয়তানে পাইছে মনে হয়।তাই আবার নামাজ টা শুরু করলাম।বিকেলে হঠাৎ কাজের মহিলাটা কান্না করতে করতে আমার কাছে আসলো।
কি হলো খালা কান্না করছেন কেনো।
মাগো আমার মাইয়া....বলেই কেঁদে দিলো।
কি হইছো খালা বলুন, আর কান্না বন্ধ করুন।
আমার মাইয়াডার নাকি এক্সিডেন্ট হইছে।কে জানি ফোন দিছে।আমারে এহোনি যাওয়া লাগবে।
তাইনি ঠিক আছে আপনে এখনি জান।দাঁড়ান আমি কিছু টাকা দিয়ে দিচ্ছি।আরো লাগলে বলবেন।
আমি কিছু টাকা দিলে খালা তারাতারি চলে যায়।আমিও দরজা লাগিয়ে জিসানকে কল করলাম।ফোন ধরলো না।কিছুক্ষন পর সে নিজেই কল দিলো।
হ্যালো....আমি।
কল করেছিস।
হুমমমমম।
কেনো আমাকে মিছ করছিস।
আরে দুস্টমি বন্ধ করুন,আর বাসায় তারাতারি আসার চেস্টা করবেন,আমি একা বাসায়।
কেনো, খালা কই।
তারপর আমি সব বললাম।
ঠিক আছে,তুই না দেখে দরজা খুলবি না।আমিও তারাতারি আসার চেস্টা করছি।
ওকে।বলে ফোনটা কেটে দিলাম।বসে বসে একা একা কি করবো তাই টিভি দেখছিলাম।
♦হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো।আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এমন সময় কে আসলো।তাই দরজায় গিয়ে দেখার চেস্টা করলাম।কিন্ত কাউকে দেখতে পেলাম না।তাই চলে জেতে নিলে আবার কলিংবেল বেজে উঠে।আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।মেইন গেটের সিকিউরিটি কে কল করলাম কিন্তু কেউ ফোন ধরছে না আজব।আর এদিক দিয়ে কলিংবেল বেজেই চলছে।
♦আমি তারাতারি অফিসের কাজ গুলো শেষ করার চেস্টা করছি।জাতে বাসায় যেতে পারি।হঠাৎ নিলয়ের কল আসছে ফোনে।আমি বিরক্ত হয়ে ফোনটা কেটে দিচ্ছি।কিন্ত ও বার বার কল দিচ্ছে।এতো কল দিচ্ছে সহ্য করতে না পেরে কলটা রিসিভ করলাম।
প্রোভলেম কি তোর এতো কল কেনো করছিস।আমি কল কেটে দিচ্ছি দেখতে পারছিস না।
ইউউউ..... ফুল।দরকার না থাকলে কেউ এতো কল করে না জানোস না।খুব চিল্লিয়ে।~নিলয়
কি হয়েছে নিলয়।
তিশা কোথায় জিসান।~নিলয়
আবার শুরু করবি না নিলয় আগেই বলেছি।
জাস্ট শেট আপ জিসান,তিশার বিপদ।বল তিশা কোথায়।~নিলয়
কেনো কি হয়েছে।তিশাতো বাসায়।
বাসাতে কে আছে ওর সাথে।~নিলয়
কেউ নাই ও একা।কেনো।কি হয়েছে।
জিসান বাসায় ফোনদে,রনি আজ কিছু করবে।ও নাকি কি প্লান করেছে।তিশাকে বল সেভ থাকতে।~নিলয়।
মানে কি বলছিস,আর তুই কিভাবে জানলি।
আরে এগুলো পরে বলবো।আগে তিশুকে ফোন দিয়ে দেখ ও ঠিক আছে কিনা।~নিলয়।
জিসান কথাটা শুনেই তিশাকে ফোন দিলো কিন্তু তিশা ফোন ধরছে না।বাড়ীর লেন্ডলাইনে ফোন দিলো কেউ ধরছে না,এখন জিসানের ও টেনশন হতে লাগলো।নিলয় এখনো লাইনে আছে।
হ্যালো জিসান, জিসান।কি হলো~নিলয়।
তিশা ফোন ধরছে না,আমি বাসায় যাচ্ছি এখনি বলেই অফিস থেকে রওনা দিলো জিসান।নিলয়ও রাস্তায় ছিলো,ও জিসানের বাড়ীর দিকে গাড়ী বাড়ালো।
রায়হানও খবর পেলো।তাই ও বের হয়ে গেলো তড়িঘড়ি করে।উদ্দেশ্য সবার এক,যেই আগে জেতে পারে।
♦এদিক দিয়ে বাড়ীর কলিংবেল বারবার বাজছে,আমি আবার লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখলাম কে,এখন দেখি একজন কুড়িয়ার ম্যান দরজার সামনে কিম্তু চেহারা দেখা যাচ্ছে না,আমি তবুও জিঙ্গেস করলাম কে।
ম্যাম আপনার পারসেল আসছে।প্লিস ছেক করে বুঝে নিন।
কিন্ত আমি কিছু ওর্ডার করিনি।
ম্যাম আমি তা বলতে পারবো না।প্লিস পারসেলটা কালেক্ট করেনিন।আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
হয়তো বাসার কেউ কিছু ওর্ডার করেছে ভেবে,দরজাটা খুলি।পারসেলটা দিন বলে,লোকটার দিকে তাকালাম।এতোক্ষন নিচের দিকে তাকিয়ে কি জেনো লিখছিলো।এখন আমার দিকে তাকালো।আমি লোকটাকে দেখে ভয় পেয়ে গেলাম,এতো রনি ভাই।আপ,,,,নে।আর লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে একটা বাকা হাসি দিলো।আমি তারাতারি দরজা বন্ধ করতে নিলে রনি দরজাটা জোরে ধাক্কা দিলো আর আমি ছিটকিয়ে অনেক দূরে ফ্লোরে পরে গেলাম।
আমি এমন একটা দিনের জন্য কতো ওয়েট করছিলাম। আর এতো সহযে পেয়ে যাবো ভাবতেই পারিনি।এখন কে বাঁচাবে তোমাকে।
রনি আমার দিকে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে আর বলছে।আমি পরে অনেকটা ব্যাথা পেয়েছি।তবুও শরীলের সব শক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়াই, প্লিস ভাইয়া আপনে এখান থেকে জান।জিসান জানতে পারলে আপনাকে খুন করে ফেলবে।তবুও রনি আমার দিকে আসছে,আর আমি পেছনে যাচ্ছি।
তোমার জিসানকে শায়েস্তা করার জন্যই তো আসছি।ওকে মারলে ওর ওতো কস্ট পাবে না কিন্তু তোমার কিছু হলে ও বেছে ও মরে যাবে।হা হা হা....
আমার এতোটা রাগ উঠলো, সামনে একটা ফুলদানি ছিলো রনির দিকে মারলাম।কিন্তু শয়তানটার গায়ে লাগলো না ও আমাকে ধরতে আসলে আমি দৌড়ে একটা রুমে গিয়ে গেট লাগাতে নি,আর ও তখনি ওর একহাত দিয়ে গেট আটকে ফেলে।আমি বাচাঁও বাচাঁও বলে চিল্লাতে থাকি।আশেপাশের কেউ শুনেছে কিনা জানি না, একসময় রনি খুব জোরে দরজা ধাক্কা দিলে আমি আবার ছিটকে পরি।আর এবার গিয়ে খাটের সাথে মাথা লেগে প্রচণ্ড ব্যাথা পাই। মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে,আর সাথে সাথে আমার মাথাও ঘুরাতে থাকে।আমি নিচের ফ্লোরে পরে যাই।আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।লাস্টবার শুধু দেখতে পেলাম।রনি শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে আমার সামনে আসছে।আর আমি হে আল্লাহ আমাকে রক্ষা করো,,,,,জিসান বলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
চলবে....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
write -TaNiA
part-29
তিশা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,আর আল্লাহর নাম নিয়ে জিসানকে স্মরন করে চোখ বন্ধ করে ফেলে,তিশা ভাবছে আজ হয়তো ওকে রক্ষা করার জন্য কেউ আসবে না।
এদিক দিয়ে রনি শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে তিশার দিকে এগিয়ে আসে,আর ডেবিল হাসি দিয়ে বলে,এবার কে বাঁচাবে সুন্দরী তোমাকে,আজ জিসান বুঝবে আমাকে আপমান করার শাস্তি কি ভয়ানক। রনি তিশার দিকে এগিয়ে যায়। আর তিশার শাড়ীটা হাত দিতেই।জোরে একটা শব্দ হয়।রনি ভয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা নয় চারটা চোখ ওর দিকে ভয়ানক ভাবে তাকিয়ে আছে।
♣জিসান ও নিলয় দুজনি বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।কিন্তু নিলয় আগে পৌছায়।কারন নিলয় জিসানের আগে বের হয়েছিলো।কিন্তু বাড়ীর ভেতরে ডুকতে পারছিলো না কারন ভেতর থেকে লক করা।আর এতো বড় দরজা ও একা ভাঙ্গতে পারছে না।কিছুক্ষন পর জিসানও এসে পরে।ওর কাছে বাড়ীর সব দরজার চাবী ছিলো।দরজা খুলে দুজনেই ভেতরে ডুকলো আর চারদিকে খুঁজতে লাগলো।এমন সময় কিছু পরার শব্দ এলো সামনের একটা রুম থেকে।দরজাটা ভেতর থেকে লাগানো আর এটার চাবী দিয়েও খুলছিলো না। তখন নিলয় আর জিসান একে অপরের দিকে তাকিয়ে শরীলের সব জোর দিয়ে দরজায় লাথি মারলে দরজার ছিটকারীটা ভেঙ্গে যায়।ওরা ঘরে প্রবেশ করে অগ্নি চোখে রনির দিকে তাকায়।পারেনা চোখ দিয়ে গিলে খাবে এখন।
♣রনি নিলয় আর জিসানকে একত্রে দেখে ভয়ে বারান্দা দিয়ে পালাতে নেয়।কিন্তু নিলয় রনির পিছনে যায় ওকে ধরতে।আর জিসান গিয়ে তিশাকে ধরে।তিশাকে নিজের কোলে মাথা রেখে ডাকতে থাকে কিন্তু তিশার কোন হুশ নাই।রায়হান ও এসে পরে।
জিসান তিশা অঙ্গান হয়ে পরেছে ওকে ওর ঘরে নিয়ে যা।বারান্দায় শব্দ পেয়ে রায়হান ওখানে চলে যায়।গিয়ে দেখে নিলয় ইচ্ছা মতো রনিকে পিটাচ্ছে।
♠নিলয় কি করছিস..... ছাড় ওকে এখন । জিসান আসুক।নিলয়,কে অনেক কস্টে আটকাতে পেরেছে রায়হান।
♣এদিক দিয়ে জিসান তিশাকে কলে করে রুমে নিয়ে গিয়ে বিছায়নায় শুয়ে দিলো।মুখে পানি ছিটানো তে তিশা জ্ঞান ফিরে পায়।আর জ্ঞান ফিরেই তিশা পাগলের মতো ছুটাছুটি করে,ও ভাবছে রনি মনেহয় ওর সামনে।তাই ও পাগলের মতো চিল্লাতে থাকে আর হাতপা ছুটাছুটি করে।জিসান ওকে শান্ত করার চেস্টা করে কিন্তু জিসানের কোন কথায়ই জেনো তিশার কানে পৌছাচ্ছে না,জিসান তিশাকে শান্ত করার অনেক চেস্টা করে কিন্তু তিশা কিছুতই শান্ত হচ্ছে না।তাই জিসান একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।থাপ্পটা খেয়ে তিশা গালে হাত দিয়ে সামনে বসে থাকা মানুষটার দিকে থাকায়।মানুষটাকে দেখে তিশা ছলচ্ছল চোখে মানুষটার বুকের দিকে ঝাপিয়ে পরে।আর চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকে।জিসান শক্ত করে ঝরিয়ে ধরে তিশাকে।
তিশা এখনো ভয়ে ওর পুরো শরীলটা কাপছে।তাই তিশার মুখটা সামনে এনে দুহাত দিয়ে ধরে আশ্বাস দিলাম সব ঠিক আছে তিশা,আমি আছি তো,আর আমি থাকতে কোন ক্ষতি তোর হতে দিবো না,বিশ্বাস আছে তো আমার উপর। তিশা এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো কিছু বলতে যাচ্ছে,কিন্তু আমি জানি ও কি বলবে,তাই ওকে বললাম আর কোন কথা না।আমি ওর কপালে ফেটে যাওয়া জায়গাটা ডেসিং করে দিলাম,একটা ব্যাথার ওষুধ এর সাথে একটা ঘুমের ওষুধ ও দিয়ে দিলাম। কারন ওর বিশ্রাম এর প্রয়োজন।যতোক্ষন জেগে থাকবে ততোক্ষনই এসব চিন্তা করে কান্না করবে।ও ঘুমানোর পর আমি ওর কপালে একটা কিস করে, ওকে রেখে রুম থেকে বের হলাম।
"রনিকে স্টোররুমে একটা চেয়ারে বেধে রেখেছে,নিলয় আর রায়হান।"
♠তুই বাসায় কি করে এলি,আর সেকেউরিটি গার্ড কোথায়।~নিলয়।
"আমি সেকেউরিটি গার্ডকে নেশা দিয়ে বেহুশ করে দিয়েছি,আর কাজের মহিলাকে মিথ্যা ফোনদিয়ে বাসা থেকে বের করেছি।আর নিজে কুড়িয়ার ম্যান হয়ে তিশার সামনে এসেছি,তাই ও চিনতে পারেনি আমায় প্রথমে।~রনি।"
♠তোর এসব করতে বুক কাপেনি।তুই জানোস জিসান কেমন তবুও। তকে এখন কে বাঁচাবে বল।~রায়হান।
♣হঠাৎ স্টোররুমের দরজা খুলে জিসান ভেতরে ডুকে।জিসানের চেহারা দিয়ে মনে হয় আগুন বের হচ্ছে,চোখমুখ সব লাল হয়ে আছে।ওর হাতে একটা হকিস্টিক।আর জিসান ওটা নিয়েই রনির দিকে এগোচ্ছে।
♠নিলয় ও রায়হান দুজনি জিসানকে দেখে ভয় পাচ্ছে।এদিক দিয়ে রায়হান ভাবছে আজ জিসানকে কন্ট্রোল করা এতো সহয হবে না।
♣জিসান স্টিকটা দিয়ে রনির হাতে পায়ে ইচ্ছা মতো আগাত করতে থাকে।রনির এক হাত আর এক পা ভেঙ্গে দেয় তবুও জেনো ওর মনে শান্তি হচ্ছে না।কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে রনি মারাই যাবে।তাই রায়হান গিয়ে জিসানকে বাধা দেয় কিন্তু জিসানকে একা ও আটকাতে পারছে না।তাই নিলয়ও এসে গিয়ে জিসানকে ধরে কিন্তু জিসান পাগলের মতো চিল্লাতে থাকে.... ওর সাহস কি করে হলো তিশার দিকে হাত দেয়া।আমি ওকে ছাড়ব না রায়হান ওকে আমি মেরেইইই ফেলবো।
♠জিসান স্টোপ, এবার থাম ভাই।ওকে ছেড়ে দে।~নিলয়।
♣আমার তিশাও নিশ্চয় ওর কাছে অনেক রিকোয়েস্ট করছে ওকে ছাড়ার জন্য, ও ছেড়েছে, আর আজ যদি সময় মতো না আসতাম তাহলে কি ও ছাড়তো বল নিলয়, আছে তোর কাছে জবাব।জিসান আবার রনিকে মারতে যায়।
♠সব বুজছি ভাই,তবুও তুই একটু শান্ত হো।জিসানকে ধরে। ~রায়হান।
রায়হান ও নিলয় কেউ জিসানকে শান্ত করতে পারছে না।হঠাৎ জিসানকে কেউ এসে ঠাসসসস করে একটা থাপ্পড় মারে ।থাপ্পর খেয়ে জিসান ও সবাই পেছনে ঘুড়ে তাকায়।
~তাওহিদ বাসা এসে বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে। তাই ও উপরে উঠতে নিলে স্টোর রুম থেকে শব্দ পায়, তাই দেখতে গেলে জিসান, রায়হান ও নিলয়ের কথা শুনতে পায়।কিন্তু জিসানকে এভাবে পাগলামো করতে দেখে ওকে শান্ত করার জন্যই থাপ্পরটা দেয়।
ভাই তুমি,তুমি কখন এলে।~জিসান।
~কখন আসছি সেটা বড় কথা না,তুই কি করছিস।
ভাইয়া আসলে ও....
~স্টোপ রায়হান আমি সব শুনেছি বাহিরে দাঁড়িয়ে। আর কিছু বলতে হবে না।নিলয় জিসানকে এখান থেকে নিয়ে যাওতো একটু।
কিন্তু ভাইয়া.....~জিসান।
~তুই যাবি নাকি থাপ্পর আরো একটা খাবি।
♠জিসান চলরে ভাই,তোর মাথা ঠান্ডা করা প্রয়োজন।নিলয় জিসানের হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেলো।
~রায়হান তুমি থাকতে জিসান এমন করলো কিভাবে।রনির কিছু হয়ে গেলে কি হবে জিসানের জানো।রনি কি কোন ছোটোখাটো ঘরের ছেলে।ওর বাবা মা যদি ভেজাল করে।
কি করবো ভাইয়া, আপনেতো জানেন,জিসানের রাগ।আমরা অনেক চেস্টা করেও আটকাতে পারিনি।~রায়হান
~আচ্ছা ঠিক আছে,আগে ওর জ্ঞান ফিরাও।
রনির মুখে পানি মারলে রনি জ্ঞান ফিরে পায়।রনির বা হাতটা ভেঙ্গে দিছে কিম্তু ডান হাতটা এখনো অনেকটা ভালো।তাওহিদ একটা সাদা কাগজে অনেক কস্টে রনির সাইন নিয়ে ওর ফ্যামিলি কে খবর দেয়।
রনির ফ্যামিলি থেকো ওর বাবা আর ছোট ভাই আসে রনিকে নিতে।
~তাওহিদ তাদেরকে সব কিছু বলে,আর হুমকি দেয় রনির হা পা ভাঙ্গার কারনে কোন কেস যাতে না করে,তাহলে ওর শাইন করা কাগজ আর সি সি টিভি ফুটেজ দিয়ে রনিকে জেল খাটাতে তখন বাধ্য হবো আমরা।
রনির ফ্যামিলি রনির কুকর্মের জন্য লজ্জিত, তাই তারা আর কোন জামেলায় জেতে চায় না,রনিকে নিয়ে চলে যায়।
♣এদিক দিয়ে জিসান ও নিলয় ছাদে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে।তুই জানলি কিভাবে নিলয়।
আমি সারারাত জার্নি করে আজ সকালে ঢাকায় আসছি।তাই ফোন অফ করে ঘুমিয়ে ছিলাম।আমার ফোন বন্ধ পাওয়ায় আমার ফ্রেন্ড রাকিব আমার বাসায় এসে আমাকে ডাকতে থাকে, আমি খুব বিরক্তি হয়ে ঘুম থেকে উঠলাম।তার পর ও আমাকে সব বললো,কাল নাকি রনি ক্লাবে বসে ড্রিংক করছিলো, একটু বেশিই করে ফেলেছিলো মনে হয় তাই নেশায় বলে দেয় ও কি কি প্লান করেছে,আর আজ নাকি তা বাস্তবায়ন করবে।আমি শুনেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।তাই তারাতারি বের হয়ে যাই আর তকে কল করি।সত্যি কথা বলতে আমি নিজেও আজ বিষণ ভয় পেয়ে গেছিলাম।ভাবলাম হয়তো আমি দেরি করে ফেলছি।
♣তিশা খুব আবেগপ্রবণ মেয়ে।আজ কিছু হলে নিজেকে শেষ করে দিতো।হয়তো আমি ও ওকে আর বাঁচাতে পারতাম না।তোকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না।তাই বলবো ও না।আমি জানি তোর মনের কোনও একটা জায়গায় তিশাকে দখল করে রেখেছিস কিন্তু সরি আমি ওকে কারো সাথে ভাগ দিতে পারবো না।
♠নিলয় জিসান এর দিকে তাকিয়ে একটু বাকা হেসে।তোর কি মনে হয় আমি তিশুকে তোর কাছ থেকে চিনিয়ে নিবো,,,,,।নিতাম যদি ও তোর গার্লফ্রেন্ড হতো,কিন্তু কারো বউকে তার কাছ থেকে নিতে চাই না,এতোটা জঘন্য না আমি।আর আমি ভালো করেই বুঝেছি তিশুকে তোর চেয়ে বেশি কেউ ভালোবাসতে পারবে না। আমিও না।
আমার তিশুর প্রতি ফিলিংসটা একটা অদ্ভুত।প্রথম দেখায় এমন ফিলিংস কেনো হলো জানি না।কিন্ত আমি ওকে খারাপ নযরে কখনো দেখি না।কিন্তু হে ওর প্রত্যেক বিপদে তুই আমাকে পাশে পাবি,তুই চাস বা না চাস।আমি ওর কাছে যাবারও চেস্টা করবো না।দূর থেকে ওর হাসি দেখেই শান্তি, তাই ব্রো আসা করবো তুই আমার ফিলিংস টাকে সম্মান করবি।
♣জিসান নিলয়ের কথাগুলো শুনে একটা মুছকি হেসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
ওদের মাঝখানে রায়হান এসে ঢুকে পরলো।নিলয়ের হাতের সিগারেট টা নিয়ে নিজেই টানতে লাগলো।
জীবনটা প্যারময় হয়ে উঠছে, আর ভালো লাগে না।মুখে এক রাশ বিরক্ত নিয়ে কথাগুলো বলছে।আর নিলয় জিসানকেই সামলাতে আমার ধম যায়।তুই আবার মাঝখান দিয়ে কোথা থেকে আমদানি হলি বলতো।তোদের মতো পাগলের দলে আমি যে কি করি আল্লাহ জানে।
কি বল্লি, কারে পাগল বলিস তুই।এতো কিছু হবার পরও তুই কিভাবে আমাকে শান্ত থাকতে বলিস।~জিসান
শোন জিসান সব সময় এতো জিদ আর এতো রাগ ভালো না।এটা মনে রাখিস, কিছু কাজ ভেবে চিন্তেও করতে হয়।
কি বলতে চাস তুই,জিসান কিছুটা রেগে।
তুই একা না এখন, তোর সাথে ওর বোনের জীবনটাও জরিত ও তাই বলতে চাচ্ছে।~তাওহিদ
♣সবাই পিছনে ঘুরে দেখি তাওহিদ ভাই দাঁড়িয়ে আছে।তাই তিনজনেই সিগেরেটটা পেছনে লুকিয়ে ফেলি ঝগড়া বন্ধ করে। হাজার হোক উনি আমাদের বড়।
~তাওহিদ ভাই জিসানের পাশে এসে,সিগারেটটা দে....
জিসান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। আসলে বুঝার চেস্টা করছে।
~দেখ তোরা কেউ দুধে ধোয়া তুলছি পাতা না, আমি ভালো করেই জানি,তাই এতো ভালো সাজার দরকার নাই,দে সিগারেট, মাথাটা ধরে আসছে।জিসানের থেকে সিগারেট টা নিয়ে কয়েকটা ফু দিয়ে বলছে।
তুই এখন একা না জিসান,তিশার জীবনটাও জরিতো তোর সাথে।তিশার কোন শত্রু নেই, কিন্তু তুই তিশার জন্য যে সবার সাথে শত্রুতা করছিস তা তিশার জন্যই ক্ষতি হবে।তোকে আঘাত করতে না পারল তিশাকে আঘাত করবে।কারন তিশার প্রতি তুই দূর্বল।আর এসব কারনে কোনদিন তুই হয়তো তিশাকে হারিয়ে ফেলবি।তোরি কোনও শত্রুর দাড়া।তাই বলছি ভাই মাথাটা ঠান্ডা রাখ।প্রতিশোধ নে কিন্তু কৌশলে।ডান হাত দিয়ে কাজ করলে বাম হাত জেনো না জানে।আমি জানি তুই খুব বুদ্ধিমান, তাই তোকে জ্ঞান দিতে চাই না।কিন্তু বলবো সামনে বার যা করবি বুঝে করবি।
♣জিসান মাথা নেড়ে সায় দিলো।ও ভালো করেই বুঝতে পারছে ওর ভাই ওকে কি বুঝাতে চাইছে।পরিবেশটা নিরব হয়ে পরেছে।চারজনের হাতে চারটা সিগারেট, সবাই চুপ চাপ বাতাসকে দূষিত করে নিজের কস্টটাকে ধোয়ায় উড়াতে চাচ্ছে।
ভাই ভাবি কি জানে তুমি এতো সিগেরেটখোর।~জিসান।
তাওহিদ একরাশ বিরক্ত নিয়ে,শোন জিসান সব কথা বউদের বলতে হয়না,যদি বলি মাথাটা মাথার জায়গায় থাকবে না।আর তোর ভাবী যদি জানে এ কথা আমার জীবনটা তেজপাতা বানায় ফেলবো।সো চুপ থাক।
জিসান ও রায়হান মুসকি মুসকি হাসছে।করন ওরা ভালো করেই জানে তাওহিদ ভাই কিছুটা হলেও তানজিলা ভাবীকে ভয় পায়।তাই বউয়ের ভয়ে সিগেরেটটাও খায় না বউয়ের সামনে।
চলবে.....
।অনেকে হয়তো বলবে গল্পে জিসানকে প্রাধান্য দেয়া হইছে বেশি যার কারনে তিশার ভূমিকা কমে গেছে।আসলেই কি তাই।আপনাদের মতামত কি জানাবেন।
প্লিস অভিযোগ কম কর, কেমন হলো জানাবেন কমেন্ট করে।
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNiA
part-30+31
সেদিন অনেক রাত পর্যন্ত চারজন মিলে গল্প করলো।এর পর রায়হান ও নিলয় চলে গেলো।তাওহিদ আর জিসানও নিজেদের রুমে চলে গেলো।জিসান তিশার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে রইলো অনেকক্ষন, এর পর তিশাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।কেনো জানি জিসানের ঘুম আসছে না হয়তো তিশাকে হারাবার ভয়টা একটু বেশিই পেয়েছে আজ।তাইতো নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে কিছু নোনা পানি তিশার কপালে পরছে।তিশা যদি জাগনা থাকতো তাহলে হয়তো দেখতে পারতো জিসানের কস্টটা আজ।
কেনো তোকে হারানোর ভয়টা আজকাল আমায় তাড়া দেয় বেশি।কোনো মনে ভয় তকে ছেড়ে দিলে হয়তো আর পাবো না।বড্ড ভালোবাসি তোকে, আমি পারবো না তোকে ছাড়া থাকতে,আমি পারবো না।বলেই তিশাকে নিজের আরো কাছে টেনে নেয়।
সকালে ঘুম ভাঙ্গলে মনে হয় কেউ আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে আছে।মাথাটা উঠিয়ে তাকে দেখতে লাগলাম, কেনো জানি তাকে নিজের থেকে আজ ভালোবাসতে মন চাইছে,তাই লজ্জা শরম ভুলে তার কপালে গালে কিস করে,তার বুকে ও একটা কিস করে নিজের থেকে জরিয়ে ধরে শুয়ে রইলাম।~তিশা।
কিছুক্ষন পর জিসান, ঘুম কেমন হলো ম্যাডামের।আমাকে জরিয়ে ধরেই প্রশ্ন করলেন।
হুমমমম.... ভালো।কখন উঠলেন।~তিশা।
যখন তুই চোরের মতো আমাকে কিস করছিলি।আর ঘুমের মধ্যে আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছিলি।~জিসান।
আমি মাথাটা উঠিয়ে আড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে আপনে তো ঘুমিয়ে ছিলেন জানলেন কি করে।
কারন আমার ঘরে একটা চোর আছে,আর সে চোর আমি ঘুমিয়ে থাকলেই আসে,আর এই সুযোগে ওই চোরটা আমাকে আদর করে,জাগনা থাকলে সাহস পায় না,কেমন ভিতু বলতো।
হঠাৎ তিশা জিসানের উপর উঠে পরে,আর জিসানের কলার ধরে একদম কাছে এসে বলে,ওই কি বললেন, আমি চোর, ভিতু।
আমি কি তোকে বলছি,আমাকে যে কিস করছে আমি তাকে বলছি।
ওই হিটলার এই ঘরে আমি ছাড়া আর কোন চুন্নি আছে,আর কার এতো বড় সাহস আপনাকে কিস করবে।একদম কাছে গিয়ে কথাগুলো বললাম,এতে আমার গরম নিশ্বাস জিসানের মুখের উপর পরছে।আর জিসান নেশাভরে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে,একটা বাকা হাসি দিলো।কি হলো,হাসছেন কেনো।
সর আমার উপর থেকে,আমি বিশ্বাস করিনা....তুইতো একটা আনরোমান্টিক মহিলা।
কিকিকিকিকি এতো বড় ইনসাল্ট,আমি নাকি মহিলা।আমি জিসানের মুখটা ধরে ওর ঠোঁটটি নিজের ঠোঁট দিয়ে আবদ্ধ করে নিলাম। জিসান হয়তো ভাবতেও পারেনি আমি এমন কিছু করবো,তাই প্রথমে শোকড হলো ব্যাচারা।
জিসানের এক হাত আমার চুলগুলো আকড়ে ধরে আছে,আরেক হাতদিয়ে আমার পিঠে স্লাইড করছে।এভাবে অনেকক্ষন থাকার পর আমি উঠতে চাইলে আমার কোমড় কে আকড়ে ধরে ফাজিল টা।আমাকে ছাড়ার নামই নাই,তাই আমি একটা কামড় দিয়ে দি।
আআআআআ তিশা কি করলি,ব্যাচারার ঠোঁটটা কেটে গেলো।আমাকেও ছেড়ে দিলো,আমিতো হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছি।
কি হলো মি:জিসান বউ নাকি রোমান্টিক না।বেশি রোমান্টিক হলে এমন দশাই হবে।আমি হাসছি আর জিসান আমার দিকে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষন পর আমি দেখি উনি এখনো তাকিয়ে আছে।কি দেখেন এভাবে।
তোকে.....!!তোর হাসিটা অনেক সুন্দর,নিজের যতো কস্ট আছে সব জেনো শেষ হয়ে যায় এই হাসির সামনে।
হয়েছে আর পাম্প মারতে হবে না উঠুন অফিস এ যাবেন না।আমিও উঠে দাঁড়ালাম।আর তখনি জিসান আমার হাত ধরে নিজের কোলে বসিয়ে তার দুহাত দিয়ে আমাকে আবদ্ধ করে ফেললো।আজ অফিসে যাবো না।
কেনো....।~তিশা।
আজ তোকে নিয়ে সারাদিন ঘুরবো, সোপিং করবো।তার পর কাল আমরা ঝুমুর আপুর গায়ে হলুদে যাবো। ওকে,,,তাই ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে রেডি হো তারাতারি।
ওকে....বলেই ওয়াসরুম এর দিকে দৌড় দিলাম আমি।~তিশা।
আরে দাঁড়া, দেখ চলো গেলো।যাক ভালোই হলো কালকের কোনও কথা মনে না পরলেই ভালো।তাই আজকের দিনটা সারাক্ষন তোর সাথেই কাটাবো।~জিসান।
তিশা ও জিসান নাস্তা করে রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলো।সোপিং শেষ করে দুজনে বাহিরেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিলো।এর পর জিসান তিশাকে শহর থেকে একটু দূরে একটা ঝিলের সামনে নিয়ে গেলো,চারদিকে সবুজ, কিছু দূরে কাশফুলও দেখা যাচ্ছে অনেকেই এই জায়গাটা চিনেনা বলে লোকজনও কম আসে,কিন্তু জায়গাটা সুন্দর, তিশার খুব পছন্দ হয়েছে।
ওরা একটা গাছের ছায়ায় গিয়ে বসলো।চারদিকে সুন্দর বাতাস বইছে,আর বাতাসে তিশার চুলগুলো উড়ছে।তিশা সামনের ঝিলের দিকে তাকিয়ে আছে আর জিসান তার মায়াবী তিশার দিকে।
জায়গাটা অনেক সুন্দর, আপনে এখানে আগে এসেছেন।~তিশা।
জিসান সামনের দিকে তাকিয়ে,হুমমমম,আমি রায়হান আর কিছু ফ্রেন্ডস যখনি সময় পেতাম এখানে এসে আড্ডা দিতাম।পছন্দ জায়গা গুলোর মধ্যে এটি।
এভাবে অনেকক্ষন থাকার পর জিসান ও তিশা সন্ধ্যার দিকে রওনা দেয়।রাতের ডিনার ও বাহিরে করে বাসায় চলে আসে।
পরের দিন.....
তিশা সব গুছিয়েনে মনে করে।আমরা কিছুক্ষন পরই রওনা দেবো,ঝুমুর আপু ফোন দিয়ে পেরেশান করে ফেলছে।
আমার হয়ে গেছে,শুধু শাড়ীটা চেন্জ্ঞ করে আসি।আমি শাড়ীটা নিয়ে ওয়াসরুমের দিকে পা বাড়াতে নিলেই জিসান আমার হাতটা ধরেই কাছে টেনে আনে,উনার বুকে আমার পিঠ ঠেকিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে,আমার কাধে নিজের থুতনি টা রেখে,কোথায় যাস।
শাড়ী চেন্জ্ঞ করতে,ছাড়ুন দেরি হয়ে যাচ্ছে।~তিশা
তাহলে ওয়াসরুম এ কেনো যাচ্ছিস।~জিসান
ওয়াসরুম এ না গেলে কোথায় করবো।~তিশা।
কেনো এখানে।ভ্রু কুচকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে।~জিসান।
ঠিক আছে তাহলে আপনে বাহিরে জান।~তিশা।
কেনো.....!!!~জিসান
কেনো আবার আপনে না বললেন,তাহলে রুম থেকে বের হন আমি রুমেই শাড়ী চেন্জ করি।
আমি পারবো না বাহিরে জেতে,এখানেই আমার সামনে কর।~জিসান।
কিকিকি,আমার চোখ কপালে উঠে গেছে।~তিশা।
কি আবার কি,আমি মনে হয় পর কেউ যেভাবে রিয়েক্ট করছিস।আর কি এমন আছে যা আমি দেখিনি এখনো। জিসান তিশার দিকে একটু আড়চোখে তাকিয়ে,তুই কি এমন কিছু লুকিয়ে রেখেছিস যা আমি দেখিনি।কি রে....।
উফফফফ এই লোকটার মুখে কিছু আটকায় না।কি সব আবোলতাবোল বলে।আমি কি লুকাবো আর।লুকানোর জিনিসতো দেখেই ফেলেছেন। ছারুন,,,,, নতুন করে দেখানোর কিছু নাই আমার কাছে।
তাইইই,তাহলে এতো লজ্জা কিসের আমার সামনে চেন্জ করতে, শাড়ী খোল বলেই জিসান তিশার শাড়ীটা একটান দিয়ে খুলে ফেললো।অবশেষে তিশাকে নিজের সামনেই চেন্জ্ঞ করালো জিসান।জিসানের জিদের কাছে তিশার লাজ শরম হার মানলো।
তিশা চুল আছড়াচ্ছে আর আয়না দিয়ে জিসানকে দেখছে।জিসান খাটে বসে আধোশোয়া হয়ে মোবাইল টিপছিলো।তিশা মনে মনে হাজারটা গালি দিচ্ছে জিসানকে।আর রাগে নিজের চুল আছড়াচ্ছে কম ছিঁড়ছে বেশি।
গালাগালি কম কর আর ,আমার রাগ চুলের উপর কেনো দেখাচ্ছিস।আর একটা চুল যদি ছিড়ে মনে রাখিস কি করবো কল্পনাও করতে পারবি না।জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলছে।
বদমাইশ ব্যাটা, আমার চুল আমি ছিড়লে তোর কি।এমন হাজারো কথা তিশা শুধু মনে মনেই করতে পারে।বলতে আর পারে না।যা আর আছড়াবো না।তিশা চুলগুলো একটা কাটা দিয়ে বেধে নিলো।
জিসান আর চোখে দিয়ে সব দেখছে,আর মনে মনে হাসছে।তিশাকে মাঝে মাঝে রাগাতে ভালোই লাগে।তাইতো আজ এমন করলাম।
এর পর দুজনেই রওনা দিলো।বিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে।সারা রাস্তায় জিসান টুকটাক কথা বললেও তিশা তেমন কিছু বলেনি একটু অভিমান করে।
পৌছাতে পৌছাতে বিকেল হয়ে গেলো।তিশা এই প্রথম জিসানের কোন আত্মীয়র বিয়েতে এসেছে।আর অনেকেই তাকে দেখেনি,তাই বিয়ে বাড়ীতে আসতেনা আসতেই তিশা ব্যস্ত হয়ে পরলো,তিশার শ্বাসুড়ী এর সাথে ওর সাথে কতো মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে,ব্যাচারী এসে বিশ্রাম ও নিতে পারছে না।হঠাৎ ঝুমুড় এসে সবার সামনে থেকে তিশাকে হাত ধরে নিয়ে জেতে লাগলো,,,,
আরেরেরে আপু কি করছেন।এভাবে গরুর মতো টানছেন কেনো।উনারা কি ভাববে বলুনতো।
ঝুমুড় একটা রুমের সামনে এসে বলে,দেখো তিশা কে কি ভাবছে, আমার যায় আসে না।কিন্তু তোমার কারনে আমার ভাই জিসান যদি চলে যায় এখান থেকে তাহলে আমি তোমাকে এই রাতের বেলায় পুকুরে ফেলে দেবো।
কেনো আপু আমি কি করলাম।
কি করলে মানে, এসেই তুমি ব্যস্ত হয়ে পরলে,আমার ভাই যে তোমার কারনে না খেয়ে আছে তা খেয়াল করছো।
কেনো না খেয়ে আছে, আমি কি খেতে মানা করেছি তাকে,নাকি এখন তাকে আমার খাইয়ে দিতে হবে।
হে তাইই দেও,যাও। ও তোমার জন্য এখনো না খেয়ে আছে,বলে তুমি নাকি সারাদিন কিছু খাওনি তাই তোমার সাথেই খাবে।
আমি রুমে গেলে আপু বাহির থেকে দরজাটা লাগিয়ে দেয়।জাতে কেউ এই রুমে না আসে।আমি গিয়ে দেখি সাহেব শোফায় বসে মুখ ফুলিয়ে মোবাইল টিপসে।
আমি তার সামনে বসে জিঙ্গেস করলাম সমস্যা কি।
উনি আমার দিকে একবার তাকালো আবার সাথে সাথে চোখ সরিয়ে ফেললো।
কি হলো কথা বলছেন না কেনো,আর এখনো খাবার খাননি কেনো।সোজা হয়ে বসুন আমি খাবার বেরে দিচ্ছি।
আমি খাবো না, তুই যা তোর কাজে।আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না।মুখটা ফুলিয়ে।~জিসান।
তাইইই,আমি ভাববো না তো কে ভাববে বলুন।নাকি এসেই কোন শাঁকচুন্নি কে পেয়ে গেছেন।
জিসান আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে,মনে হয় চোখ দিয়ে খেয়ে ফেলবে।
আমি ভাতটা মেখে তার মুখের দিকে ধরলাম,নিন খান।কি হলো।কিন্তু সে মুখ খুললো না।
আমি নিরাশ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,আমি কি করবো বলুন তো,মা আমাকে বাড়ীর মুরুব্বিদের মাঝখানে বসিয়ে দিয়েছে।আমি তাকে কি করে বলবো তার পাগল ছেলে যে আমাকে সামনে না পেলে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবে।বলুনতো কি ভাববে তারা।
আমারও অনেক ক্ষুধা পেয়েছে কেউ যদি না খায় তাহলে আমি আর খাবোনা।কেউ যদি মনে করে তার একাই জিদ আছে, তাহলে ভুল আমিও তার বউ আমারও কম জিদ না।এই বলে উঠে চলে জেতে নিলে,আমার হাতটা ধরে ফেলে।আমার দিকে ঘুড়ে হ্যা করলে আমি খাইয়ে দি।এবং নিজেও খেতে থাকি।
ঝুমুর আপু এসে,আআআআ কি রোমান্টিক দৃশ্য। তোদের দেখে তো আমারি হিংসা হচ্ছে।
তাহলে আমাদের দেখো কেনো,নিজের হবু বরকে গিয়ে দেখো।
চলবে.....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বড়😍
writer-TaNiA
Part-31
আজ ৫ মাস চলছে,,
তিশা চলে গেছে জিসানকে ছেড়ে, জিসানের ভালোবাসাকে ত্যাগ করে,ঘর সংসার,মা-বাবা, এমনকি প্রিয় ভাইকেও ছেড়ে চলে গেছে।এই পাঁচ মাসে সবাই কিছুটা স্বাভাবিক হলেও একজন মানুষ এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। আর মনে হয় পারবেও না,সে হচ্ছে জিসান।
তিশা চলে যাবার প্রথম একমাস নিজেকে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলো।রাতদিন ঘর থেকে বের হতো না,সারা দিন তিশার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতো।নাওয়া খাওয়া দাওয়ার কোন ঠিক ছিলো না।কেউ এসে জোর করে কিছু খাইয়ে দিলে খেয়ে নিতো।করো সাথে কোন কথাও বলতো না।দিনটা যেমন তেমন পার হতো কিন্তু রাতটা জেনো জিসানের পারই হতে চেতো না।প্রতিরাতেই জিসানের ঘর থেকে কান্নার শব্দ পাওয়া যেতো।যা শুনে পরিবারের সবাই কস্ট পেতো কিন্তু জিসানকে এই কস্ট থেকে মুক্তি করার কোন পথ জেনো খুঁজে পাচ্ছিলো না কেউ।
জিসান তিশার স্মৃতি গুলো বুকে নিয়েই যেনো পার করছে।বলতে গেলে বেঁচে আছে।
অতিত....
আজ ও মনে আছে সেই দিনের কথা, ঝুমুর আপুর গায়ে হলুদে তিশা নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিলো,আর তা দেখে ঝুমুর আপু কতো কথা বললো,তার সাথে কিছুক্ষন পর তাল মেলাতে আমার বাকি সব কাজিনরা ও চলে এলো।তারাতো হাসাহাসি করছে আমাদের ভালোবাসা দেখে।
কিগো ভাবী, মামীর কথার জবাব দিলানা।~দিশা।
কি কথা রে.....~জিসান।
ভাবীর চুন্নুমুন্নু কবে আসবে।~কাজিন দিশা।
ওওও এই কথা মামীকে বলে দিস প্রসেসিং চলছে।রেজাল্ট খুব শীঘ্রই পাবে।তিশার দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ মারে জিসান।
আর তখনিই সবাই হো হো করে হেসে দিলো।
আমি তো অবাক এই লোকটার কথা শুনে,এই লোকটার আসলেই লজ্জা শরম নেই।বড় ছোট কিছু মানে না, ভাইবোনদের সামনে কিসব বলছে।মনে মনে~তিশা।
আমি একটু রেগেই বললাম,এই আপনে চুপ থাকবেন।কিসব বলছেন।এখানে বড় আপু বসে আছে।
দেখ তিশা তুই মাইন্ড করলে করতে পারিস, কিন্তু এরা কেউ মাইন্ড করবে না।কারন এগুলো একেকটা বদের হাড্ডি একটু সুযোগ পেলে বাসর রাতে কি করেছি তা জানার জন্য উঠে পরে লেগে যাবে।~জিসান।
আমি জানতাম আপনেই একজন বেহায়া এখন তো দেখছি সব গুলো একি দলে আপনারা।~তিশা।
আহা ভাবী রাগ করো কেনো আমরা তো একটু মজা করি।এছাড়া আর কিছু না।আর আমাদের শখ নেই তোমার বাসর রাতের কাহিনী শোনার,তা আমরা আগেই জেনে গেছি।~জিসানের কাজিনারা।
আমিতো অগ্নি দৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকালাম,ব্যাচারা এই প্রথম আমাকে মনে হয় ভয় পেলো।~তিশা।
ভয়ে ব্যাচারা শুকনো একটা ঢোক গিললো।দেখ বউ আমি কিছু বলেনি।এসব কি বলার জিনিস।এই পিচ্ছি গুলো ঈদানিং বেশি পেকে গেছে।আপুর বিয়ের পর এগুলো সবাইকে এক এক করে বিদায় করতে হবে।~জিসান।
যে দলের বুইরার লাজ শরম কম থাকে,সে দলের পিচ্ছিরা তো পাকবেই।বলে চলে গেলাম এখান থেকে এখানে থাকলে আমিও পাগল হয়ে যাবো।~তিশা।
আরে কই যাস দাঁড়া,তোর বুইরাটাকে সাথে করে নিয়ে যা।আরে দেখলি তোদের করনে আমার বউটা রাগ করলো।~জিসান।
হইছে ভাইয়া আর বলতে হবে না,এবার যাও,তোমাকে ডাকছে বাহিরে।জিসানও চলে গেলো।
সন্ধ্যায় হলুদ আরম্ভ হলো,আজ তানজিলা তিশাকেও খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো।নরমালি তিশা এতো সাজে না,তাই তানজিলা একটু জোর করেই সাজিয়ে দিলো।আজ তো তিশার দিক থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।
দেখো আমি বলে দিলাম জিসান আজ তোমাকে দেখলে আবার প্রেমে পরবে।তিশাকে আয়নায় দাঁড় করিয়ে তানজিলা কথাগুলো বললো।
তানজিলা ভাবীর কথা শুনে আমার নিজেরি লজ্জা লাগছে।আমিও তাই জিসানের রিয়েকশন দেখার জন্য রুমে গেলাম যেখানে জিসান রেডি হচ্ছিলো।হলুদ কালার পান্জাবী, বুকের সামনে একটা ময়ূরী দেয়া স্টোনের, দেখতে আমার হিটলার টাকে কোনো হিরোর থেকে কম লাগছে না,তাই আমিও ঢেং ঢেং করতে করতে জিসানের সামনে দাঁড়ালাম।
রেডি হচ্ছিলাম,এমন সময় আয়নায় তিশাকে দেখতে পেলাম,ওকে দেখে আমার মেজাজটা বিগড়ে গেলো,এতো সাজগোজ কেনো,আরে নিজের বিয়েতেও এতো সাজতে দি নাই আর এখানে মহারাণী অন্যের বিয়েতে পরী সেজে ঘুরছে।ওকে দেখলে যে কোন ছেলের মাথা নস্ট হয়ে যাবে।তখন আমার হবে যন্ত্রণা।~জিসান।
বলেনতো আমাকে কেমন লাগছে।~তিশা।
এভাবে সং সেজেছোস কেনো,অনেকটা ধমক দিয়ে। চোখে মুখে এসব কি,এতো সাজগোজ কোন খুশিতে।আমাকে দিয়ে হয়না নাকি আশিক আরো লাগবে তোর।
কার জন্য সেজেছিস। আমি না তোকে এসব লাগাতে মানা করছি,বলেই একটা টিসু নিয়ে আমার ঠোঁটের লিপস্টিক টা নিজেই মুছতে লাগলো এতে লিপস্টিক ঠোঁটের চারপাশে আরো ছড়িয়ে গেলো।টিসুটা ছুড়ে ফেলে,এখনি মুখ ধুয়ে আস।আর এসব কিছু খোল।,,,,আমি কি বলছি কানে যায় না।
আমি সামনে দাঁড়াবার সাথে সাথে জিসান চিল্লিয়ে উঠলো।আমি ওর চিল্লানি তে বিষণ ভয় পেয়ে গেলাম,কারন এর আগে এমন কখনো করেনি।আমি কিছুই বোঝার আগে নিজেই লিপস্টিক মোছার চেস্টা করলো,না পেড়ে আমাকে মুখ ধুতে পাঠালো,আমার মন চাইছিলো উনার মাথাটা ফাটিয়ে ফেলি,শয়তান,বজ্জাত নিজে নায়ক সেজে যাবে,কিন্ত আমি সাজলে দোষ।
আমি তারাতারি মুখ ধুয়ে শাড়ীটা পাল্টিয়ে নিলাম।হালকা গহনা আর একদম সিম্পল সাজ দিলাম।আর এতোক্ষন উনি মুখ ফুলিয়ে বসে বসে দেখছিলেন আমি কি করি।আমি রেডি হয়ে বাহিরে চলে গেলাম,পুরো গায়ে হলুদে আমি আর কোন কথাই বলিনি উনার সাথে।তানজিলা ভাবী আমাকে দেখে ৪২০ ভোল্টেজ ঝটকা খেলো মনে হয়।
তিশা এসব কি কতো কস্ট করে সাজিয়ে ছিলাম তোমায়।আর তুমি....!!!!
ভাবী আপনিতো জানেন আমি বেশি সাজিনা,আমার খুব অস্বস্তি লাগছিলো তাই...ওসব খুলে ফেলেছি।
সত্যিই তাই, নাকি জিসান কিছু বলেছে।~তানজিলা।
আরে না ভাবী,চলুন আপুকে হলুদ দিয়ে আসি।
হুমমমম,চলো।~তানজিলা।
জিসান দূর থেকে তিশার কথা গুলো শুনেছে।তিশা কখনো ওদের স্বামী স্ত্রীর কথা কাউকে বলে না।তিশার এই দিকটা জিসানকে সব সময় মুগ্ধ করে। জিসানকে কেউ খারাপ ভাবুক তা ও চায়না।কারন জিসান কেমন আর কেনো করে তা তিশা দেরিতে হলেও বুঝে।
সেদিন জিসান চুপি চুপি কিছু পিক তুলে ছিলো, সে ছবি গুলো আজ দেখছে আর চোখ দিয়ে মনে অজান্তেই অশ্রু জরছে।
কেনো করলি তিশা আমার সাথে এমন,
কেনোওওওওও....।কিকিকিকিকি দোষ ছিলো আমার। কেনো এতো কস্ট দিলি আমায়।কেনো আমায় ছেড়ে গেলি,কি নিয়ে বাঁচবো আমি,কি নিয়ে থাকবো।বল তিশাশাশা।
হাতের ফোনটা আছাড় মেড়ে।আমি তোকে কোনদিন ক্ষমা করবো না তিশাশাশা। কোনদিনও না।
জিসান ওর মাথাটা ধরে চিৎকার করে বসে পড়লো, জিসানের চিৎকার শুনে বাড়ীর সবাই এসে পড়লো।জিসান ওর মাকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলো।
মা আমার তিশাকে এনে দেও,প্লিস মা।আমি যে ঘুমাতে পারছি না মা,আমি যে শান্তি পাচ্ছি না।আমার নিশ্বাস জেনো বন্ধ হয়ে আসছে।মা আমার তিশা চাই।যেখান থেকে পারো এনো দেও।মাআআআআআ.....বলেই জিসান কাঁদতে লাগলো।ঠিক একটা ছোট বাচ্চার মতো।
সামনে দাঁড়িয়ে তানজিলা ও নিশিও কাঁদছে। আর তাওহিদ নিরবে সব দেখছে।কিন্ত তাওফিক সাহেব ছেলের এমন অবস্থা সইতে না পেড়ে সেখান থেকে চলো যায়।
জিসান কাঁদতে কাঁদতে এতোটাই ক্লান্ত হয়ে যায় যে,জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।সবাই অনেক চেস্টা করেও যখন জ্ঞান ফিরাতে না পারে তখন তাড়াতাড়ি সবাই জিসানকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।রায়হান খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসে।
সবাই রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে,ডাক্তারে এর জন্য।ডাক্তার নাঈম জিসানকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।অবশেষে জিসানকে দেখে বাহিরে বের হয়ে আসে।
কি হলো নাঈম সব ঠিক আছে।জিসান কেমন আছে।~তাওহিদ।
ভাইয়া ও মনে হয় অনেক রাত না গুমিয়ে কাটিয়েছে,তার উপর শরীল অনেক দূর্বল, মনে হয় টিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না,আর এভাবে ও শারীরিক ও মানসিক সব ভাবে ভেঙ্গে পরছে।এখন তো ঠিক আছে,কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে বেশিদিন ঠিক থাকবে না।ওকে যতো তারাতারি পারেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনেন।আমি কি বলছি আপনে বুজতে পারছেন।
হুমমমম,তুমি চিন্তা করো না,আমি আমার ভাইকে এভাবে ভাঙ্গতে দেবো না।
আমি ওকে স্যালাইন আর ঘুমের ওষুধ দিয়ে দিয়েছি,তাই ও আজ রাত আর উঠবে না,একজন বাদে সবাই চলে জেতে পারেন।~নাঈম।
ঠিক আছে,,,,,,,তাওহিদ গিয়ে ওর মার পাশে বসলো,তাওহিদ এর মা এখনো কান্না করছে।মা প্লিস কান্না বন্ধ করো,জিসান ঠিক আছে।তোমরা চলে যাও, আমি আছি জিসানের সাথে।
তাওহিদ আমার জিসানকে বাঁচা বাবা।ও নিজেকে শেষ করে দেবে,মা হয়ে আমি আর দেখতে পারছি না।আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আন তাওহিদ। আমি যে আর পারছি
না....
তুমি চিন্তা করোনা,আমার ভাই এতোটা দূর্বল না,ওকে আমি আবার আগের জিসান করে তুলবো,তুমি একটু ধৈর্য্য ধরো,আর আল্লাহ কে ডাকো।
সে রাতে তাওহিদ আর রায়হান বাদে সবাই চলে যায়।
ঠিক তিনদিন পর জিসানকে বাসায় নিয়ে আসা হয়,বাসায় আনার পর জিসানকে কেউ একলা থাকতে দেয়না,কেউনা কেউ সারাক্ষন ওর সাথে থাকে।
কিন্তু রাতে জিসান কাউকে সাথে থাকতে দেয় না।ও একলাই থাকবে,বলে সবাইকে জানিয়ে দেয়।
কিন্তুু রাতে তাওহিদ এসে ওর পাশে বসে।নিজে একটা সিগেরেট জ্বালিয়ে জিসানের দিকে এগিয়ে দেয়।
কেনো আসছো ভাইয়া,আমি এখন ঠিক আছি,আমাকে নিয়ে টেনশন করোনা।এতো তারাতারি মরবো না।
কিন্তু সবাইকে মারার প্লানিং করছিস।~তাওহিদ।
জিসান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
তুই কস্টে থাকলে আমরা কিভাবে সুখে থাকবো বল।তুই কি আমার ভাই বলতো,আমার ভাই কবে থেকে এতোটা দূর্বল হয়ে পরেছে।~তাওহিদ।
ভালোবাসার মানুষটা যখন পাশে না থাকে,তখন নিজেকে এমনেই দূর্বল মনে হয়,তুমি বুঝবে না, হারানোর বেদনাটা কি।
জানোস জিসান তোর ভাবীকে বিয়ে করার আগে এক মেয়ের সাথে আমার ৩ বছর রিলেশন ছিলো।অনেক ভালোবাসতাম তাকে।এতোটাই যে ওকে ছাড়া নিজেকে চিন্তাও করতে পারতাম না।কিন্তু একদিন ও নিজে থেকে সম্পর্কের ব্রেকআপ করে নিয়েছে,কারণ কি ছিলো জানিস।ও জয়েন ফ্যামিলিতে নিজেকে এডজাস্ট করতে পারবে না।তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছিলো।সব কিছু শেষ করে দিতে মন চাইছিলো।ঠিক তখনি আমার জীবনে আশার আলো হয়ে তানজিলা আসলো।তানজিলা আমার ব্রেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ও আমার সম্পর্কে সব জানতো, তবুও আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছিলো।বাসর রাতে আমি ওকে বলেছিলাম আমি হয়তো আর ভালোবাসতে পারবো না।কিন্তু তোর ভাবী কি বলেছিলো জানিস, সমস্যা নেই,আমি শিখিয়ে দেবে।আজ দেখ তোর ভাবী আমাকে নতুন করে ভালোবাসতে শিখিয়ে দিয়েছে।আজ আমার মনে হচ্ছে তানজিলা ই আমার জন্য, বেস্ট তাইতো আল্লাহ ওকে আমার সাথে একই সুতায় বেধে দিলো।
জিসান কিছুক্ষন ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে,তুমি কি আমাকে তিশাকে ভুলে জেতে বলছো।তিশা আমার গার্লফ্রেন্ড না বউ ভাইয়া।
তাইতো ওকে ভুলতে বলছি না,ওকে খুঁজে বের করতে বলছি।ওকে খুঁজে বের কর,তার পর সামনে বসিয়ে জিঙ্গেস কর কেনো ও তোর সাথে এমন করলো।কি এমন হয়েছিলো,যার জন্য ও তোকে ছেড়ে যাওয়ার মতো এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলো।ও কোথায় গেছে, কোথায় আছে,এসব জানতে হলে তিশাকে আগে খুঁজে বের করতে হবে।আর আমি জানি তিশাকে তুই ছাড়া কেউ খুঁজে বের করতে পারবে না,তাই আগে তোকে আগের জিসান হতে হবে।এভাবে দেবদাশ হয়ে থাকলে তুই কখনো তিশাকে পাবিনা।তাই বলছি ভাই, ঘর থেকে বের হো।নিজেকে শক্ত কর।আর মাঠে নেমে আস।
জিসান অবাক হয়ে ভাইয়ের কথাগুলো শুনলো।ভাই আগে কেনো আসলে না,,,,
তুমি ঠিকই বলছো,আমি বেকুবের মতো শোক পালন করছি।আর না.... অনেক হয়েছে।জিসান এবার নিজেই একটা সিগেরেট ধরিয়ে তিশার একটা ছবি দেয়ালে লাগানো তার সামনে এসে দাঁড়ালো, তুই যেখানে থাকোস,তকে আমি খুঁজে বের করবো।দুনিয়ায় যেই প্রান্তেই থাকোস তোকে আমার থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।কেউ না।
চলবে...

পাট ৩২-৩৫
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-32+33
জিসান অফিসে নিজের কেবিনের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে।জানালার দিয়ে ব্যস্ত শহরটা পুরো দেখা যাচ্ছে।চারদিকে কতো কোলাহল কিন্ত জিসানের কানে জেনো কিছুই আসছে না।সে দূরের আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে।আজ পাঁচ মাস হয়ে গেছে। কিন্ত এখনো তিশার খবর পায়নি।কিন্ত জিসান হার মানেনি।এখনো খুঁজছে। হঠাৎ কারো ফোন এলো
-হ্যালো..... হে বলো কি খবর।
স্যার এখনো কোন খবর পাইনি।
-তাহলে ফোন কোন সাহসে করেছো।আমি কোনো অজুহাত শুনতে চাই না।লোক দরকার পরলে আরো লাগাও,ঢাকার বাহিরের সব জায়গায় দেখো।ওর আত্মীয় স্বজন,বন্ধুবান্ধব সবার ওখানে খোঁজ নেও।দরকার পড়লে সবার ফোন টেপ করো।তবুও আমার চাই ওকে।যতো টাকা লাগে সমস্যা নেই।কিন্ত কোন খবর না জেনে দ্বিতীয় বার ফোন করবে না।আন্ডারস্ট্যান্ড।
ওকে স্যার...
-জিসান ফোনটা কেটে দিলো।
সেদিন রাতে তাওহিদ বুঝানোর পর জিসান সব বুজতে পারলো এভাবে বসে না থেকে তিশাকে খুঁজে বের করতে হবে।তাই পরের দিন থেকেই জিসান অফিসে আসা শুরু করলো।সারা দিন অফিসের কাজ নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেস্টা করে,এখনতো বাসাও খুব দেরি করে যায়।নিজেকে অনেকটা শক্ত করে ফেলেছে এ কয়েকমাস এ। নিজের কস্টটা এখন বুঝাতে দেয়না কাউকে।সবার সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলে,কারন ওর কস্টে ওর পরিবারও কস্ট পায়।তাই সবার সামনে ভালো থাকার অভিনয়টা ভালোই করে যাচ্ছে।কিন্ত সব শেষে রাতে নিরবে চোখের জলটাকে আর আটকাতে পারেনা,বেহায়ার মতো বের হয়ে যায়।
হঠাৎ অফিসের দরজা খুলে দুজন পুরুষ ভেতরে ঢুকলো।~রায়হান +নিলয়।
জিসান পেছনে ঘুরে,ভ্রু কুচকে জিঙ্গেস করলো,কিরে তোরা এসময়।এখানে কেনো।
তোকো দেখতে মন চাইছে তাই চলে এলাম।~রায়হান।
আমাকে নতুন করে দেখার কি আছে,দেখতে পাছ না তোর বোন আমাকে যেমন করে রেখে গেছে তেমনি আছি।শুধু ভেতর থেকে ভালোবাসার নামক ফিলিংস টা এখন আর নেই।
দেখ জিসান, তিশার কারনে কি তুই আমার সাথে এখন ঝগড়া করবি।
জিসান নিজের চেয়ারটাতে বসে, না ঝগড়া করবো না,তোকে সাবধান করছি,আমি কারো ঋন রাখি না তা তো জানিস।পরে আমাকে কিছু বলতে পারবি না।
রায়হান ভালো করে বুঝতে পরছে জিসান কি বুঝাতে চাইছে।
ভাই মাথা ঠাণ্ডা কর,এতো হাইপার হলে কিভাবে হবে।আমার চিন্তা হচ্ছে এটা ভেবে যে, তিশার মতো মেয়ে যে কোনদিন একলা কোথায়ও যায়নি,ঠিকমতো রাস্তা ঘাটও চিনে না,পাঁচটা মাস ধরে নিখোঁজ, ও ঠিক তো আছে,নাকি আবার....আর বলতে পারলো না নিলয়।
জিসান ও রায়হান দুজনি খুব চিন্তিত হয়ে নিলয়ের দিকে থাকালো।
জিসান আবার জানালার পাশে ধারিয়ে একটা সিগেরেট ধরালো।তুই কি মনে করেছিস আমি এসব নিয়ে ভাবি না,সবই ভাবি।কিন্তু আমার মন বলছে ও ঠিক আছে,শুধু আমার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখছে।
কারণটা কি......~নিলয়।
কারণতো ওকে পেলে, ওর কাছ থেকেই জানা যাবে।~রায়হান।
পুরো রুমে নিরবতা বিরাজ করছে।হঠাৎ জিসানের ফোন বেজে উঠলো।
হ্যালো হে বলো,আবার কেনো কল করেছো।
স্যার ম্যাম ৩০ সেকেন্ড এর জন্য ফোনটা ওন
করেছিলো,এবং কাউকে কলও দিয়েছে।
ওয়াট,সত্যি বলছো।(পাঁচ মাস পর এই প্রথম তিশা নিজের ফোন দিয়ে কাউকে কল করলো)
জি স্যার,এক মিনিট কথা বললে আমরা তার লোকেশন জেনে যেতাম কিন্তু উনি ৩০ সেকেন্ড কথা বলে ফোনটা বন্ধ করে দিয়েছে।
আচ্ছা কোন নাম্বারে কল দিয়েছে, নাম্বার টা আমাকে সেন্ড করো।~জিসান।
জি স্যার আমি এখনি দিয়ে দিচ্চি।এই নাম্বারটাতে ম্যাম যাবার আগেও অনেক কথা বলতো,হয়তো পরিচিতো কেউ উনার।
ওকে,আমি দেখছি, তুমি নাম্বারটা সেন্ড করো।~জিসান।
তিশার ফোন এতোদিন পর ওন হবার কথা শুনে সবাই একটু বিচলিত হয়ে পরলো।ফোনটা কি তিশা করেছে নাকি অন্য কেউ সেই চিন্তাই করছে সবাই।
কিছুক্ষন পর নাম্বারটা পেলো ওরা,নাম্বারটা দেখে রায়হান শোকড। আরে এটাতো নিলুর নাম্বার।
তিশার ফ্রেন্ড নিলু।
ওওওও,তাহলো এ ব্যাপার,তার মানে ফোনটা নিশ্চই তিশাই করেছে,আর আমার মনে হয় নিলু প্রথম থেকেই সব জানতো।আর ওর সাথে হয়তো অন্য কোন নাম্বার দিয়ে কথা বলে।~জিসান।
কিন্তু আমি আর মা বার বার ওকে জিঙ্গেস করেছি,কসম দিয়েছি, ও একই কথা বলে,ও জানে না।~রায়হান।
জিসান একটু বাকা হেসে,জানবে কি করে,তিশার ফ্রেন্ড না,ভালো করে বললে কখনো শিকার করবে না।ভালো মতো সাইজ দিতে হবে।এখন কোথায় পাওয়া যাবে ওকে।
ওর ক্যাম্পাস এ আছে হয়তো এখন।ওখানেই চল।~রায়হান।
হুমমম চল~জিসান।
তার পর তিনজনেই বের হয়ে গেলো।
নিলুর ক্যাম্পাসের সামনে তিনজন অপেক্ষা করছে।জিসান গাড়ীতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,হঠাৎ রাস্তার সামনের এক রেস্টুরেন্ট এর দিকে নযর পরলো, হয়তো কারো জন্মদিন তাই ফ্রেন্ডসরা মিলো তা পালন করছে।
তা দেখে জিসান আবার তার অতীতে ফিরে গেলো......
ঝুমুরের বিয়ের পরের দিনই জিসান, তাওহিদ, তিশা আর তানজিলা বাড়ীতে চলে আসছিলো।কিন্তু তিশার শ্বশুর শ্বাসুড়ী আর নিশা ওখানেই রয়ে গেলো।
জিসান বাড়ীতে এসেই প্রথমে বাড়ীর সিকিউরিটি বারিয়ে দিলো,বাড়ীর চারপাশে সি সি টিভি ক্যামেরা লাগিয়ে দিলো,বাড়ীতে গার্ড ও বাড়িয়েছে।হঠাৎ এতো কিছু দেখে তানজিলা তাওহিদ কে জিঙ্গেস করেই ফেললো,সমস্যা কি।এতো আয়োজন কেনো।কিছু হইছে।
তাওহিদ কথাটা কোন রকম সামলিয়ে নিলো,তানজিলা কে কোন রকম বুজ দিয়ে।
এর এক সপ্তাহ পরই তিশার জন্মদিন,কিন্তু জিসান এবার তিশার সাথে একলা নিজস্ব ভাবে এই দিনটা পালন করতে চায়।তাই এক সপ্তাহ ধরেই প্লান করছে জিসান,তিশাকে জানতেও দেয়নি ও কি প্লান করে আসছে।
অবশেষে সেই দিনটি এলো,তিশার নিজেরি খেয়াল নেই জন্মদিনের, হয়তো এরি নাম সংসার।তিশা সারাদিন সবার সাথে ব্যস্ততায় কেটে গেলো,রাতে তাওহিদ একাই বাসায় এলো কিন্তু জিসান আসে নি,
ভাইয়া জিসান কোথায়।
ওর নাকি বাহিরে কিছু কাজ আছে তাই আসেনি,আসতে নাকি লেট হবে,তোমাকে চিন্তা করতে মানা করছে।~তাওহিদ।
জিসানের জন্য অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করলো তিশা,এর পর ধৈর্য্য হারা হয়ে রুমে চলে গেলো।রুমে এসে দেখি একটা পেকেট রাখা,সাথে একটা চিঠি,,,
"এটা পড়ে ছাদে আস,আমি অপেক্ষা করছি।লাভ জিসান।"
তার মানেকি জিসান বাসায়,আর আমি কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি।আর এতো রাতে এসব করার কারন কি।কিছুই বুঝি নাই,তবুও চুপচাপ পেকেট টা হাতে নিয়ে দেখি,ওয়াইট কালারের একটা গ্রাউন।আর খুব সুন্দর করে কাজ করা।ড্রেসটা পছন্দ হয়েছে তাই চুপচাপ পরে নিলাম।ছাদের দিকে পা বাড়ালাম।এ কি এতো সুন্দর করে কে সাজালো।পুরো ছাদ ডেকোরেশন করা,লাল,নীল সবুজ কিছু ঝাড়বাতি লাগানো,সামনে দূটো চেয়ার একটা টেবিল।তাতে কেকও রাখা।আর চারপাশে বেলুন দিয়ে ভরা।মনে হয় কারো জন্মদিন,কিন্তু কার জন্মদিন।
উপর থেকে হঠাৎ কিছু ফুলের পাপড়ি আমার উপর পড়া শুরু করলো।আমিতো শোকড, আর তখনি কেউ আমায় পেছন থেকে জরিয়ে ধরেছে।আমি প্রথমে একটু ভয় পেলেও পরে বুঝতে পারি,এটা আর কেউ না,আমার ভালোবাসার মানুষটি।
কিরে ভয় পেলি...~জিসান।
নাতো.....ভয় পাবো কেনো।
তাহলে এতোক্ষন কোথায় ছিলেন ম্যাডাম, আপনার জন্য কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি জানেন।
আমি কি করে জানবো, আপনে এতো রাতে ছাদে বসে আছেন,আর আমি আপনার জন্য নিচে বসে অপেক্ষা করছিলাম।
তাইইই....আমি তো জানতামই না আমার বউ আমাকে এতো ভালোবাসে।~জিসান
কে বলছে আমি আপনাকে ভালোবাসি,আমি কোন ভালোটালো বাসি না,ছাড়ুন বলে চলে জেতে চাইলে।জিসান আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
কোথায় যাস,আমাকে ছেড়ে যাওয়া এতো সহয না।
তাই আর যদি চলে যাই কখনো তখন কি করবেন।~জিসান।
বেধে নিয়ে আসবো,থাকতে না চাইলে জোর করে রাখবো,তুই ভালো না বাসলেও আমি বাসবো।কখনো যদি অন্যকরো হতে চাস,তাহলে নিজ হাতে খুন করবো, আর নিজেও মরে যাবো।কিন্তু তবুও তোকে ছাড়বো না।কারন তিশা শুধু জিসানের,তোর জন্মই হয়েছে আমার জন্য।তাইতো আজকের দিনটা আমি একা তোর সাথে কাটাতে চাই।চল আমার সাথে,জিসান তিশাকে ছাদের গ্রিলগুলোর সামনে নিয়ে এসে, নিচে তাকাতে বললো।নিচে মোমবাতি দিয়ে লিখা হাপি ব্রাথ ডে তিশা।
আজ আমার জন্মদিন, আমারতো মনে নেই।
জিসান তিশার গাল দুটো ধরে টেনে,কিন্তু আমার তো আছে।এখন চলেন কেকটাও কাটি।
এর পর দুজন কেক কাটলো।দুজন দুজনকে কেক খাওয়ালো।আরো একটা সুন্দর দিন কাটলো জিসানের সাথে তিশার,যা মনে রাখার মতো।
হঠাৎ রায়হানের ডাকে জিসানের ধ্যান ভাঙ্গলো।
সামনে তাকিয়ে দেখি নিলু দাঁড়িয়ে আছে।নিলু আমাকে দেখেই ভয় পেতে লাগলো।ওর ভয় পাওয়াই বলে দিচ্ছে ও কিছু একটা জানে,আমি নিলুর সামনে গিয়ে,
কেমন আছো নিলু।~জিসান
আমি ভালো আছি ভাইয়া।
আর তোমার বান্ধবী,সে কেমন আছে।~জিসান।
ও,,ও কেম,,ন আ,,,ছে আমি কি করে বলবো।আমি আগেই বলেছি আমি কিছু জানি না।
হুমমম,তাতো তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।চলো আমাদের সাথে, তোমার সাথে কথা আছে।~জিসান।
এখানেই বলুন ভাইয়া,আমি কোথায়ও জেতে পারবো না।আম্মু বকা দেবে।
তোর আম্মুকে আমি ফোন করে বলেদিছি তাই ওই টেনশন না করে গাড়ীতে উঠ।উঠ বলছি।ধমক দিয়ে।~রায়হান।
নিলুতো ভয়ে গিয়ে গাড়ীতে বসলো।জিসান ও রায়হান সামনে বসছে আর নিলয় ও নিলু পেছনে।নিলু বার বার নিলয়কে দেখছে। আর মনে মনে ভাবছে এটা আবার কে...
আর নিলয় বসে বসে আইচক্রিম খাচ্ছে আর মোবাইল টিপছে। কি হলো এমন বার বার তাকাচ্ছো কেনো,আইচক্রিম খাবে।
নিলু মাথা নেড়ে না বললো।
গাড়ী এসে দাড় করালো,জিসানের অফিসের সামনে।সবাই নামলেও নিলু নামতে চাইনি প্রথমে।কিন্ত জিসানের ধমকে গাড়ী থেকে নেমে পরলো।
নিলু বসে আছে জিসানের কেবিনে।আর তার পাশে তিনজন সুদর্শন ছেলে বসে তার দিকে চেয়ে আছে।নিলুর নিজেরি খুব আনইজি লাগছে এখন।
নিলুর হাতে এক গ্লাস পানি দিলো জিসান,নিলু পানিটা মুখে দিতে নিলেই,জিসান জিঙ্গেস করে।
নিলু তিশা কোথায়।
জিসানের কথায় নিলুর বিষম উঠে যায়।ভাইয়া আমি জানি না,সত্যি বলছি।
নিলু তিশা কোথায়,আর একটাও মিথ্যা কথা বলবে না।আজও তিশা তোমাকে কল করেছে, কি বলছে।আর ও এখন কোথায়।নিলু প্লিস বলো,তুমি আমার ছোট বোনের মতো,তাই আমি চাইনা তোমার সাথে জোর করতে।ভালো করে জিঙ্গেস করছি, তা না হলে আমি কি,আর কি করতে পারি।নিশ্চই তিশা বলছে।তাই বলছি ভালোয়ভালো বলে দেও।বললললললও........অনেকটা জরে।
নিলু ভয়ে কাঁপছে, তার সাথে কান্নাও করতে লাগলো।
প্লিস বলো নিলু......~রায়হান।
আমি জানি না ও কোথায় কিন্তু এতোটুকু জানি ও ঠিক আছে।আমাকে মাঝে মাঝে কল করে অন্য এক নাম্বার দিয়ে,আজ নিজের নাম্বার দিয়ে কল করেছে,কিন্তু আমি ক্লাসে ছিলাম তাই আর কথা হয়নি।
তুমি কি জানো ও কেনো গেছে।~রায়হান।
আমি শুধু জানি ও জিসান ভাইয়ের উপর বিষণ রাগ,কারন ভাইয়া নাকি ওকে ধোকা দিয়েছে।আর ভাইয়ার এই ধোকাটা ও মেনে নিতে পারছিলো না।খুব কস্টে ছিলো,এমনকি আত্মহত্যা ও করতে চাইছিলো। কিন্তু যখন ও জানলো.....
জিসান,নিলয় আর রায়হান বিস্ময় হয়ে তাকিয়ে আছে নিলুর দিকে,আর জিসান ভাবছে কোন ধোকার কথা বলছে তিশা।কবে ধোকা দিলাম।
কোন ধোকার কথা বলছো....~রায়হান
তিশা চলে যাবার কিছুদিন আগে আপনারা এক পার্টিতে গিয়ে ছিলেন তিশা বলেছিলো।সে দিন কিছু হয়ে ছিলো কিন্তু কি তা তিশাও জানতো না,জিসান ভাইকে খুব টেনশনে দেখা গিয়েছিলো সে দিন এর পর থেকে।এর পর নাকি অফিসের কাজেও খুব বেশি ব্যস্ত হয়ে পরেছিলো ভাইয়া।তাই নাকি তিশা আর কিছু জিঙ্গেস করেনি।পার্টিতে কি হইছিলো।কিন্তু এক রাতে তিশা ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলো,আর তখনি তিশার ফোনে একটা ভিডিও আসে।ভিডিওটা কয়েক সেকেন্ডের,কিন্ত ভিডিও তে স্পষ্ট ভাবে ভাইয়ার চেহারা দেখা যাচ্ছিলো।আর ভিডিওতে খুব ক্লোজ ভাবে একটা মেয়ের সাথে জিসান ভাইকে দেখা গেলো।ওটা দেখেই তিশার মাথা নষ্ট হয়ে গেলো।
তিশার দৃষ্টিতে________
ভিডিওটা দেখে জেনো শরীল কেমন নিস্তেজ হয়ে পরলো।নিজেকে সামলাতে পারলাম না তাই ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়লাম।বিশ্বাস হচ্ছে না,না না এটা জিসান হবে না,আমার জিসান আমাকে ধোঁকা দেবে না।এগুলো মিথ্যা,কেউ হয়তো ফাজলামী করছে আমার সাথে,অথবা এটা এডিটিং করা। হুমমমম এমোনি হবে।জিসান এমন আমার সাথে কোনদিনও করবে না।
এর পর আরো একটা ম্যাসেজ আসলো,
কি! বিশ্বাস হচ্ছে না মিসেস তিশা।ছবি এডিটিং করা জেতো কিন্তু ভিডিও না।আর যদি তবুও বিশ্বাস না হয় তাহলে হোটেলের নাম আর রুম নাম্বার দিয়ে দিলাম।ছেক করতে পারেন।আপনার জিসান আজ অন্যকে নিয়ে মগ্ন আছে।হা হা হা।
কি মনে করে জেনো আমি সাথে সাথে হোটেলের নাম্বারটায় কল করলাম, রিসিপশন একজন মেয়ে ছিলো। আমি মেয়েটার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম,জিসানই হোটেলে একটা রুম বুক করেছে।ওর নিজের কেডিট কার্ড দিয়ে।আমার বুজতে বাকি রইলো না।আমি মেয়েটাকে রিকোয়েস্ট করলাম,দেখুন মি: জিসানের ফোনটা বন্ধ, আপনে তার রুমে আমার লাইনটা কানেক্ট করে দিন।খুব জরুলী তার সাথে কথা বলা দরকার।
কিন্তু মেয়েটি ডাইরেক্ট মানা করে দিলো,সরি ম্যাম, তার মিসেস আমাদের ইস্ট্রিটলি বলে দিয়েছে,তাদের জাতে কেউ ডিস্টার্ব না করে।সরি বলে ফোনটা কেটে দিলো।
আমার কেনো জানি মাথা ঘুড়াচ্ছে, বমিও আসছে।সইতে না পেরে বাথরুমে গিয়ে বমি করে দিলাম।হঠাৎ মনে পরলো আমার তো ২ মাসের উপর হলো পিরিয়ড হয় না।আমি এতো কেয়ারলেস কিভাবে হলাম।তাহলে কি....
না না আমি এখন আর কিছু ভাবতে চাই না।আমার বিষন ক্লান্ত লাগছে। বিছানায় গিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম,নিজেকে আজ সব থেকে অসহায় মনে হচ্ছে।কি করবো আমি।এই ভিডিওটার সত্য কি না মিথ্যা কিভাবে জানবো।আল্লাহ আমাকে পথ দেখাও।
নিলু এই পর্যন্ত কথা গুলো বলে একবার রায়হান আরেকবার জিসানের দিকে তাকালো।
চলনে.....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNiA
Part-33
নিলু কথা গুলো বলে জিসান আর রায়হান এর দিকে তাকায়।তিশা আমাকে পরের দিন কল করে ভিডিও আর ম্যাসেজ এর কথা বলে,আর অনেক কান্না করে, আমি ওকে অনেক বুঝাই আর ভাইয়ার সাথে ডায়রেক্ট কথা বলতে বলি।
এর পর কি হলো জানি না,ও আমাকে কিছুই বললো না আর।এক সপ্তাহ পরই ও বাড়ী ছেড়ে চলে গেলো।তখন আমিও কিছুই জানতাম না।ও কোথায় গেছে।জানলে ওকে আমার কাছেই নিয়ে আসতাম।তিশা নিখোঁজ হবার ২ সপ্তাহ পরে একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসে।আমি কল রিসিভ করার পর জানতে পারলাম, তিশা কল করেছে।আর কল করে শুধু বলেছে ও ঠিক আছে, আর এই কথা কাউকে না বলতে।ও প্রায়ই ফোন দিয়ে সবার খোঁজ নেয়।কিন্তু ও কোথায় আছে তা বলতে চায় না।আমি অনেকবার রিকয়েস্ট করেছি।চলে আস আমার বাড়ীতে,বা কোথায় আছে বল আমি নিজে তোকে নিয়ে আসি।কিন্তু ও শুনতে নারায।নিলু এসব বলেই কান্না করতে লাগে।
~~তুই কাজটা একদম ঠিক করেসনি,নিলু।আমাদের একটাবার বলার প্রয়োজন মনে করিসনি।ও হয়তো কোনও কিছু না ভেবে এতো বড়ো একটা ডিসিশন নিয়ে নিছে,কিন্তু তোকেতো আমি অনেক বুদ্ধিমান মনে করতাম আর তুই ও....।
সরি ভাইয়া কি করবো ও আমাকে কসম দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছে।
~~জিসানের অস্থিরতা জেনো আরো বেড়ে গেলো এতো বড় একটা ভুল কিভাবে করলাম।ওকে সব ক্লিয়ার করে বললে হয়তো এতো বর ভুল বুঝাবুঝি হতো না।জিসান আবার চেয়ার থেকে উঠে জানালার সামনে গিয়ে উপরের আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে এক গভীর নিশ্বাস নিলো।আজও মনে আছে সে রাতের কথা।
সে দিন অনেক রাত করেই বাসায় এসেছিলাম, এসে দেখি তিশা ঘুমিয়ে আছে।কিছুটা অবাক হলাম,কারন যতোরাতই হোক তিশা আমার জন্য জেগে থাকে।আজ কি হলো।আমি ও খুব টায়ার্ড ছিলাম তাই আর ডাক দিলামনা,ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।আজ সকালে উঠতেও খুব খারাপ লাগছিলো, তাই মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে রইলাম।এমন সময় তিশা আমার দিকে চা বাড়িয়ে দিলো।
নিন চা খান,এটা এখন আপনার খুব বেশি প্রয়োজন।
~~আমি মাথা তুলে তিশার দিকে তাকালাম। আজ কেনো জানি মনে হলো,আমি অন্য কোনোও তিশাকে দেখছি।
চোখেমুখের এই অবস্থা কেনও তোর।রাতে ঘুৃম হয়নি।
তিশা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে আমার দিকে তাকিয়ে,আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টা প্রশ্ন করে, আমি কাল এতো রাত কোথায় ছিলাম,এতো দেরি কেনো হলো।
~~আমি একটু অবাকই হলাম,কারন তিশা কখনো আমাকে এমন প্রশ্ন করনি।তবুও একটু হেসে ওর কথার জবাব দিলাম।
একটা মিটিং ছিলো।মিটিং টা করে বাসার দিকেই আসছিলাম।হঠাৎ কিছু পুরানো ফ্রেড দের ফোন আসে।তাই তাদের সাথে দেখা করতে গিয়ে কখন যে আড্ডায় পরে গেলাম বুঝলাম না,এতো দেরি হয়ে যাবে।আমি কথা গুলো বলে তিশার দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।ওর চোখের পলকটাও মনে হয় পরতে দিচ্ছে না।আমার কেনো জেনো মনে হলো তিশা আমার কোনও কথাই বিশ্বাস করলো না।
তিশা আর কিছু না বলে,জিসানের অফিসের কাপড়গুলো বের করতে লাগলো।আবার প্রশ্ন ছুড়ে মারলো জিসানের দিকে,রায়হান ভাই যায়নি আপনাদের সাথে।
~~হুমমমম,রায়হাম ও ছিলো।
আচ্ছা, আপনে ফ্রেস হয়ে নিচে আসুন।আমি নাস্তা রেডি করছি।
~~এ কথাগুলো বলেই তিশা চলে গেলো,আজ ওর আবভাব ভালো লাগছে না,তাহলে কি ও কিছু জানে।নাকি বুজে গেছে আমি মিথ্যা বলছি।আমাকে সব তারাতারি টিক করতে হবে,না হলে আবার, দেরি না হয়ে যায়।
সরি জান....এই প্রথম মিথ্যা বল্লাম তোকে,কিন্তু আমি নিরুপায়। কিছু দিন মাত্র তারপর আমি সব ঠিক করে দেবো।আমি জানি সত্য জানার পর তোর রাগ অভিমান সব চলে যাবে।
রায়হানের কথায় জিসান ধ্যান ভাঙ্গলো, আর অতীত থেকে চলে আসে বর্তমানে।
~~নিলু তিশা কাদের সাথে আছে এটাতো জানিস।-রায়হান।
না ভাইয়া.....কিন্তু ও একজনের নাম নিয়েছিলো, নামটা জানি কি!,,,,নিলু মাথা চুলকিয়ে মনে করার চেস্টা করছে।ও মনে পরেছে....রুপদা।না না না... রুপকদা।
হুমমম রুপকদা। সে নাকি অনেক ভালো ওর অনেক খেয়াল রাখে।
~~জিসান রুপকদা নামটা শুনে নিলুর দিকে তেড়ে আসে,যা দেখে নিলু কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
এই রুপকদাটা আবার কে????~জিসান।
জিসান এর মাথাটা জেনো অনেক গরম হয়ে গেছে,এই জেনে যে অন্য একটা ছেলে তিশার খেয়াল রাখছে। আর কেনো।
ভাইয়া আপনে ভুল বুঝছেন।আসলে.....মানে..।নিলু কাঁদো কাঁদো ফেস নিয়ে রায়হানের দিকে তাকায়।
রায়হান বুঝতে পারে।
~~রিলাক্স জিসান।আই থিংক, আমি রুপকদাটা কে জানি।
~~জিসান রায়হান এর দিকে জিঙ্গেসা দৃষ্টি তে তাকায়,মানে তুই চিনিস।কে এই রুপকদা, যাকে আমি চিনি না।আমি তো তোর ফ্যামিলির সবাইকেই চিনি,তাহলে....!
~~আমিও এক রুপকদা কে চিনি,আগে দেখে নি এই সেই রুপকদা কি না।নিলু তিশা যে নাম্বার দিয়ে কল দিতো সেই নাম্বার দেও।
নিলুর কাছ থেকে নাম্বারটা নিয়ে আমি আমার এক পরিচিতো একজনকে কল দিলাম নাম্বারটা রুপকদা বা তাদের কেউর কিনা।আর জানতে পারলাম এটা রুপকদার মার নাম্বার।আর এটা ওরি চেনা রুপকদা। তার মানে তিশা রুপকদার বাসায়।
~~জিসান এখন চিল্লিয়ে রায়হানকে জিঙ্গেস করছে,কে এই রুপকদা,আর ওর সাথে তিশার কি সম্পর্ক।
~~রুপকদা আমার কাজিন জিসান।বাবার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে।ছোটকালে দেশের কিছু সম্পত্তির জন্য তিশার সাথে রুপকের বিয়ে দিতে চাইছিলো আমার চাচা।তারি পেক্ষিতে অনেক বড় ঝগড়া লাগে চাচার সাথে আমাদের।আব্বু রাগ করে সেখানের সব কিছু বেচে একেবারের জন্য চলে আসে এখানে।অনেক বছর ধরে তাদের সাথে কোনও যোগাযোগ নেই।আর তখন তো তিশা অনেক ছোটছিলো।এই রুপক এতো বছর পর কোথা থেকো এলো।আর তিশাই বা কি করে চিনে।উফফ মাথাটা নস্ট হয়ে যাবে আমার।মনে হয় নিজের বিয়ের আগেই মরে যাবো আমি।
রায়হানের কথায় জিসানের মন চাইতাছে, রায়হানকে দশতালার ব্লিডিংটা থেকে ফেলেদি।বনের পুরানো প্রেমিক ফিরে এসেছে সে খবর নাই,নিজের বিয়ের কথা চিন্তা করছে।তুই কি আমার সাথে ফাজলামি করছিস।
একতো ওই রুপককের কথা শুনে মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে,তার উপর তোর আজাইরা কথা।একটা কথা বলতো তোর বোনকি ছোটবাচ্চা, যে ওই রুপকেই ওর খেয়াল রাখতে হবে।আর ওর সাহস কি করে হয় নিজের পুরানো প্রেমিক এর বাসায় যাওয়া,আর এখনতো উনিও সেবাও নিচ্ছে। একবার পাই সামনে ওর খেয়াল রাখা ছুটিয়ে দিচ্ছি।খুব শখ না,নেকামি করে অন্যের সেবা পাওয়া।জিসান যা মন চাচ্ছে তাই বলছে।কি যে বলছে হয়তো ও নিজেও জানে না।
স্টোপ ভাইয়া,এসব কি বলছেন।ও অসুস্থ, তাই হয়তো রুপকদা ওর একটু খেয়াল রাখছে,এতে দোষের কি।
~~তিশার অসুস্থতার কথা শুনে জিসান ও রায়হান দুজনেই নিলুর দিকে ভ্রু কুচকে জিঙ্গেস করছে, কি হইছে তিশার।
নিলু কথাটা বলেই জেনো আরো ফেসে গেলো।এখন নিজেকে নিজেই গালি দিচ্ছে।
কি হলো নিলু,কথা বলছো না কেনো।কিকিকি হইছে তিশার।~জিসান।
নিলু মাথাটা নিচা করে,তিশা যখন বাড়ী থেকে চলে যায় তখন ও পেগনেন্ট ছিলো।
কিকিকিকিকি...... জিসান,রায়হান, নিলয় তিনজনই অবাক হলো কথাটা শুনে।
কিন্তু ও জানতো না তখনোও।ও আমাকে প্রথম যেদিন ফোন দেয়,সেইদিনই বলে।ওখানে যাবার পরই তিশা খুব অসুস্থ হয়ে পরে,তখন ডক্টর ওর পেগনেন্সি টেস্ট করায়।আর রিপোর্ট পজেটিভ আসে।~নিলু একদমনে কথাগুলো বলে ফেলে।
জিসান ধপাস করে চেয়ারে বসে পড়লো।নিরবে ওর চোখ দিয়ে আজ অশ্রু ঝরছে,আজ এই অশ্রু কস্টের না সুখের।ওর জেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না,ও বাবা হতে যাচ্ছে।তিশার মধ্যে ওর একটা অংশ বেড়ে উঠছে আর ও জানেই না।এ কথা মনে পড়ে রাগে টেবিলের উপর সব জিনিসগুলো ফেলে দেয়,তবুও জেনো রাগ কমছে না।নিজের চুল নিজেই ছিড়ে ফেলতে মন চাইছে এখন।জিসান চিৎকার পেরে মাটিতে হাটুগেড়ে বসে পড়ে।রায়হান ও নিলয় দুজনেই জিসানকে শান্ত করার চেস্টা করে।
রায়হান তিশা এটা ঠিক করেনি আমার সাথে।এতো বড় একটা কথা কিভাবে পারলো আমার থেকে লুকাতে।ওর একবারও কি মনে পরেনি,ওই সন্তান ওর একার না,আমারও,তাই আমারও জানার অধিকার আছে।আমি ওকে এর জন্য মাপ করবো না রায়হান, মাপ করবো না বলেই জিসান অফিস থেকে বের হয়ে গেলো গাড়ী নিয়ে।
এদিকে নিলয় চিন্তা করছে কি হবে এখন।জিসান এমনেই তিশার প্রতি অনেক রেগে আছে,এখন তো রাগ আরো বেড়ে গেছে।তিশার অবস্থা যে কি করবে,রায়হান ও ওকে রক্ষা করতে পারবো না এবার জিসান থেকে।
এর পর নিলয় আর রায়হান নিলুকে ওর বাসায় নামিয়ে দিলো,আর ভালো করে শাসিয়ে দিলো, জাতে তিশাকে কিছু না বলে।তিশা জানলে ওখান থেকেও পালিয়ে জেতে পারে.....তাই।
চলুন তিশা যেখানে সেখান থেকে ঘুরে আসি।
তিশা সেদিন জিসানের বাড়ী ছাড়ার পর রাস্তা দিয়ে হাটছিলো আর চিন্তা করছিলো কোথায় যাবে।নিজের বাসায়ও যাওয়া যাবে না।আমার পরিবার আমার কোনও কথা শুনতে রাজি হবে না।জোর করে হলেও আমাকে শ্বশুর বাড়ী পাঠিয়ে দেবে।আর রায়হান ভাইয়াও এখন নিজের বোনকে সাপোর্ট না করে,জিসানের সাথে মিলে আমাকে মিথ্যা বলছে।না আমি নিজের বাসায় যেতে পারবো না।নিলুর বাসায় গেলেও পেয়ে যাবে আমাকে।কে আছে আমার, কার কাছে সাহায্য চাইবো।তখনি নিজের ফেসবুকটা ছেক করলাম,দেখলাম ওনলাইন এ আছে কিনা সে,এই একজন আছে যিনি বিনা স্বার্থে আমাকে সাহায্য করবে।মেসেজ দেবার সাথে সাথেই কল এলো।
হ্যালো ভাইয়া।~তিশা।
~~তিশা কি হইছে,কান্না করছো কেনো।আগে কান্না বন্ধ করো আর খুলে বলো আমাকে।
আমি তাকে খুলে বললাম,উনি সব শুনে বুঝতে পারলো আমি অভিমান করে বাসা থেকে বের হয়ে পরেছি।এখন
যতোকিছু বলুক আমি আর শুনছি না।তাই উনি আমাকে ঠিকানা ভালো করে বুঝিয়ে দিলেন।ঢাকা থেকে অনেকটা দূরে একটা গ্রামের ঠিকানা।উনি আমার জন্য বাস স্টোপে অপেক্ষা করবেন বলেছেন।আমি ও তার ঠিকানা অনুজাই একটা বাসে উঠে পড়লাম,আর পৌছাতে পৌছাতে অনেকটা রাত হয়ে যায়।যখন বাস স্টোপে এসে নামি আমার নিজেরি অনেক ভয় লাগছে,যদি সে না আসে তখন।বাসটিও কিছুক্ষন পর চলে যায়।এখনতো আরো ভয় হচ্ছে।এমন সময় একটা ছেলে বাইক নিয়ে আমার সামনে এসে দাড়ায়।
আমি ছেলেটাকে দেখে কিছুটা অবাক হই,কারন গ্রামের ছেলেরাও এতো হেন্ডসাম আর স্টাইলিশ হয় জানা ছিলো না।
তিশাশাশা ..... সে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে ডাকে।
রুপকদা.....!!!~তিশা।
রুপকদা একটু হেসে বলে,হুমমম তোর রুপকদা।
কেনো জানি তাকে দেখে আমার রায়হান ভাইয়ার কথা মনে পড়লো।
এখানেই দাড়িয়ে থাকবি,নাকি বাসায় যাবি।~রুপক
না মানে,চাচা চাচী কিছু বলবেনাতো।~তিশা।
না কিছু বলবে না,তোর জন্যই অপেক্ষা করছে সবাই।আমি সবাইকে বলেছি তুই আসবি।এখন উঠ তারাতারি।রাত হয়ে গেছে অনেক।
~রুপক।
আমি একটু হেসে তার বাইকে বসে পরলাম।
বাসায় গিয়ে দেখি সত্যি তারা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।আমাকে দেখে চাচী তো কি রেখে কি করবে দিশা পাচ্ছে না,চাচাও আগের থেকে অনেকটা ভালো হয়ে গেছে,তার সম্পর্কে অনেক কথাই শুনেছিলাম বাবা থেকে,কিন্তু বলে না, মানুষ পরিবর্তনশীল। কে কখন পরিবর্তন হয়ে যায়।বলা যায় না।এমন সময় ভেতর থেকে রুপা এসে আমাকে জরিয়ে ধরেছে।রুপা রুপকদার ছোট বোন।
আপু কেমন আছো।কতো বছর পর দেখলাম তোমাকে।তুমি আগের থেকে আরো সুন্দর হয়ে গেছো।
~~আমি ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আর তুমিও অনেক সুন্দর।
হইছে আর বকবক করতে হবে না,মেয়েটা অনেক দূর থেকে আসছে।ওকে ফ্রেস হতে দে।খাবার দিচ্ছি আমি।ওকে তোর রুমে নিয়ে যা।~রুপকের মা রুকাইয়া বেগম।
ওকে ওকে,,,,,চলো আপি।~রুপা।
রুপক আমার মনে হয় তিশার পরিবারকে বলে দেওয়া দরকার তিশা এখানে।ওরা চিন্তা করবে।~রুপকের পিতা জসিম।
না বাবা এখন না,ও একটা শর্তে এখানে আসছে।আমি জাতে ওর পরিবারকে কিছু না বলি।ও জানতে পারলে ওর বিশ্বাস ভেঙ্গে যাবে আমার প্রতি।আর এখনো টিক মতো সব জানিনা কি হইছে,মেয়েটা অনেক জিদি কিছু করে ফেলবে।
চলবে......
পুরো গল্প না পড়ে কেউ জিসান বা তিশার সম্পর্কে কোন মন্তব্য করবেন না।।
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-34+35
সারারাত তিশা নির্ঘুম কাটালো।এক তো নতুন জায়গা।তার উপর বিয়ের পর এই প্রথম জিসানকে ছাড়া রাতটা জেনো কাটছিলো না তিশার,সারারাত চোখের পানি ও জেনো কোনো বাধ মানলো না।
"
"
"
ভালোবাসাটা কেনো এতো কস্টের হয় বলতে পারবেন জিসান।কেনো এসেছিলেন আমার জীবনে,কেনো আমাকে ভালোবাসার মানে বুঝিয়েছিলেন।দেখুন আপনাকে ভালোবেসে আমি আজ নিশ্য হয়ে গিয়েছি।আপনার সাথে সারাটা জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম,আপনার সাথী হয়ে পাশাপাশি হাটতে চেয়েছিলাম।কিন্তু কেনো পারলাম না বলতে পারবেন।কি দোষ ছিলো আমার, কেনো করলেন।ধোকা যদি দেওয়ার কথাই ছিলো তাহলে এতো ভালোবাসা কেনো দিলেন প্রথমে।আজ যে আমার বিষণ কস্ট হচ্ছে,আমি যে পারছিনা আপনাকে ভুলতে,আপনাকে ঘৃণ্যা করতে।আমি কিভাবে থাকবো এখন।বলুন জিসান, বলছেন না কেনো।
"
"
(তিশা জিসানের একটা ছবি বুকে রেখে কথা গুলো বলছে,আর কান্না করছে,কাঁদতে কাঁদতে হিচকি উঠে গেছে তিশার।অসুস্থতার কারনে শরীল ও বিষণ ক্লান্ত হয়ে পরেছে কিন্তু চোখের জল জেনো শেষ হচ্ছে না।)
"
"
সারারাত নির্ঘুম কাটলো তিশার,ফজরের আজানের ধ্বনি শুনে উঠে নামাজ পরে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল তিশা।
"
"
চাচার বাড়িটা,দোতালাবিশিষ্ট ।বাড়ির সামনে ছোট একটা বাগান করা,এতে অনেক রকম ফুলগাছ দেখা যাচ্ছে।অনেক যত্ন করে দেখে বুজা যায়।বাম পাশে বিরাট বড় একটা পুকুর। পুকুরের সামনে বসার ব্যবস্হাও আছে।বাড়ির ডান পাশে কিছু বড় বড় গাছপালা।অনেক ধরনের গাছ আছে,কিছু কিছু গাছের নামও জানি না আমি।বাড়ির পেছনে শাকসবজি চাষ করে।বাড়িটা দেখতেও ভালো লাগে।খুব শৌখিনতার আভাস ভেসে উঠছে।
"
"
চাচা উঠানে বসে চা খাচ্ছে।এই বাড়ির সবাই খুব সকাল সকাল উঠে যায়।তাই আমিও নিচে চলে গেলাম।নিচে গিয়ে দেখি চাচী আর রুপা নাস্তা রেডি করছে,আর একজন মহিলা, যতো সম্ভব কাজের লোক হবে,ঘর মুছছে। আমাকে দেখে কেমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।মনে হয় আমি কোনো ভূত।
আমি তার চাওনীর দিকে তোয়াক্কা না করে পাকের ঘরের দিকে গেলাম।
"
চাচী আমাকে বলো,আমিও কিছু করি।
"
আরে তিশা তুই এতো সকালে কেনো উঠতে গেলি।আর তোর সাহসতো কম না,এসেই পাকের ঘরের দিকে নযর দিলি।তুই ভাবলি কি করে তোকে দিয়ে কাজ করাবো।
"
"
কেনো চাচী,আমি কি তোমার মেয়ে না।
"
"
আমি কি বলছি তুই আমার মেয়ে না।তুই ও আমার মেয়ে। কিন্ত এই মেয়ে এতোদিন পর মার বাসায় এসেছে,আমি কি তাকে দিয়ে কাজ করাতে পারি।আর কোনো কথা না,তুই টেবিলে গিয়ে বস,আমি নাস্তা দিচ্ছি।
"
"
আচ্ছা......।~তিশা।
"
"
আফা ও আফা।রুপক বাবাকি বিইা করছে।(কাজের মহিলাটি)
রুকাইয়া বেগম(রূপকের মা) একটু বিরক্ত চোখে মহিলার দিকে তাকালো,কি আবোলতাবোল বলছিস।
"
"
তাইলে এই ছেমড়িটা কে।
"
"
ও রুপকের চাচার মেয়ে।ঢাকা থেকো আসছে বেড়াতে কাল।কিছুদিন আমাদের সাথেই থাকবে।আর তুই কেনো এতো কথা জিঙ্গেস করছিস।
"
কমুনা,দেখতে তো মাশআল্লাহ কোনও পরী থেকে কম না।রুপকবাবার লগে বেশ মানাইবো।ভাইবা দেখেন আপনে।
"
রুকাইয়া বেগম একটু মুছকি হাসলো।আর চিন্তা করতে লাগলো সব কিছু ঠিক থাকলে আজ তিশা হয়তো আমার ঘরের বউ ই হতো।
"
"
"
এদিক দিয়ে রুপক খাবার টেবিলে এসে দেখে তিশা মনমরা হয়ে বসে আছে।কি রে তিশা তুই এতো সকালে, সারারাত ঘুমাসনি, ঠিক তো।
"
"
ওমা তুমি কি করে জানলে।~তিশা।
"
"
তোর চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে, কেমন বাংলা পাঁচ এর মতো করে রেখেছিস।
"
"
তিশা রুপকের কথা শুনে হেসে দিলো।
"
"
এভাবেই হাসবি,তোকে এভাবেই ভালো লাগে।আর শোন আমার কিছু কাজ আছে আমি এসে তোকে মার্কেটে নিয়ে যাবো।তুই রেডি থাকিস।
কেনো!!!!~তিশা।
মেডাম আপনে কি এই মুরব্বিয়ানা কাপড় পরে থাকবেন।আপনাকে মুরব্বি মুরব্বি লাগছে। আমার সাথে যাবেন আর সোপিং করবেন।বুজলেন।
"
রুপক নাস্তা করে তিশাকে বায় বলে চলে গেলো।
"
আমি কিছুক্ষন চাচা আর রুপার সাথে গল্প করলাম, এর পর রুপকদার সাথে সোপিং করতে চলে গেলাম।এভাবে বেশ কিছুদিন ভালোই কাটলো।কিন্তু্ু আসার পর থেকে বমি ও মাথা ব্যাথা, বেশি বেড়ে গেলো।তাই একদিন রুপকদা জোর করেই ডক্টর এর কাছে নিয়ে গেলো।ডক্টর কিছু টেস্ট দিলো।রিপোর্ট পরের দিন পাবো।
"
"
"
পরের দিন রিপোর্ট নিয়ে পুনোরায় ডক্টর এর কাছে গেলাম।ডক্টর হঠাৎ রুপকদা কে জিঙ্গেস করলেন আপনে কি উনার হাসবেন্ড। ডক্টরের এ কথা শোনার জন্য আমি মোটেও রেডি ছিলাম না।
"
"
কিন্তু রুপকদা খুব সুন্দর করে উত্তর দিলো,,,,,না আমি ওর ভাই।আর ওর হাসবেন্ড এখানে নেই,বাংলাদেশর বাহিরে আছে। আপনে আমাকে বলতে পারেন।বিনা সংকোচন করে।
"
"
একচুয়েলি উনি পেগনেন্ট। তিন মাসের উপরে চলছে।
কথাটা শুনে রুপকদা তো অনেক খুশি।কিন্তু আমি...
আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে কথাটা শুনে।কতো স্বপ্ন ছিলো জিসানের আমাদের সন্তান নিয়ে।কিন্তু আজ যখন ওর স্বপ্ন পুরোন হচ্ছে কিন্তু ওই আমার সাথে নেই।ও তো জানেই না আমার পেগনেন্সির কথা।
"
"
"
দেখুন আপনারা একটু শান্ত হোন।আমি সাজেশন করবো আপনে বাচ্চাটা এবোশন করে ফেলেদিন।
"
"
"ডক্টরের কথায় আমার মাথা গরম হয়ে গেছে।কি বলছেন এসব।কি করে বলতে পারলেন আপনে এসব।
"
"
তিশা আগে শান্ত হো,এমন সময় তোর এতো উত্তেজিত হওয়া ঠিক না।তুই বস আগে,এই নে পানি খা।আমি
ডক্টরের দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলাম সমস্যা কি।~রুপকদা।
"
"
"
দেখুন পেসেন্ট এর শরীল খুব দূর্বল,দিন দিন আরো দূর্বলতা বাড়বে,রক্ত শূন্যতার অভাব।উনার পেগনেন্সিতে অনেকটা রিস্ক আছে।হয়তো পরে মা বাচ্চার মধ্যে একজন বাঁচবে।তাই ডক্টর হিসেবে আমার প্রথম প্রায়োরিটি হচ্ছে পেসেন্ট কে আগে সেভ করা।
"
"
আমি তার কথা গুলো শান্ত হয়ে শুনলাম,আপু হায়াতের মালিক আল্লাহ, আল্লাহ চাইলে হয়তো আমি আর আমার সন্তান দুজনেই ভালো থাকবো।আর আল্লাহ না চাইলে আপনে আর আমি কিবা করবো বলুন।~তিশা।
"
"
তা ঠিক বলছো।একজন ডক্টর হিসেবে আমার জা বলার আমি বলে দিলাম।তোমাকে এখন নিজের অনেক খেয়াল রাখতে হবে।মি: রুপক আপনে যেহেতু উনার গার্ডিয়ান হিসেবে এসেছেন।তাই আপনে পেসেন্ট এর খেয়াল রাখবেন,কোন প্রকার টেনশন করতে দিবেন না।আমি কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি টাইম মতো খাওয়াবেন।সামনের মাসে আবার আসবেন।
এর পর তিশা ও রুপক বের হয়ে আসলো।আসার সময় রুপক তিশাকে,,,তিশা আবার একটু ভাব,ডক্টর এর কথা।
"
"
না ভাইয়া,আর কোনো ভাবাভাবি নাই,আল্লাহ কপালে যা লিখছে তাই হবে।এসব নিয়ে নিজে টেনশন করো না,আর আমাকেও করতে বলো না।
"
"
আর জিসান, ওকে কি বলবি।~রুপকদা।
"
"
আপাতোত কিছু বলা যাবে না।তুমি জানো না ভাইয়া ও যদি জানে এ বাচ্চার কারনে আমার জীবনের ঝুঁকি আছে, তাহলে এই বাচ্চাটাকে ও আসতেই দিবে না।আমি ওকে এতোটুকু তো জানি।
"
"
এতোই যদি ও তোকে ভালোবাসে,তাহলে ছেড়ে চলো আসছিস কেনো।কি এমন হলো,এতো বড় ডিশিশন নিয়েছিস।
"
"
বলবো ভাইয়া সব বলবো।একটু সময় দেও আমাকে প্লিস।
"
"
ঠিক আছে তোর যখন মন চায় বলিস।আমি অপেক্ষা করবো।এখন চল বাসায় যাওয়া যাক।তার আগে সবার জন্য মিস্টি নিয়ে যাই কি বলিস।
"
"
হা হা চলো।~তিশা।
"
"
তিশার পেগনেন্সির খবর শুনে রুপকের পরিবার অনেক খুশি।সবাই তিশাকে অনেক যত্নে রাখা শুরু করে দিলো।তিশা সেদিনই নিলুকে ফোন করে পেগনেন্সির কথাটা বলে দিয়েছিলো।
"
"
তিশার দিনগুলো ভালোই চলছিলো।রুপকদা তিশার অনেক খেয়াল রাখছিলো।ওর চাওয়ার আগেই সব কিছু এনে দেওয়া হতো।সারাদিন ওকে কোনও না কোন ভাবে ব্যস্ত করে রাখতো।যাতে ও কোন টেনশন না করে।কিন্তু রাতটা তিশার কাছে অভিশাপ লাগতো।মনটা জিসানকে স্মরন করে বার বার ছুটে জেতে চাইতো।ফোন হাতে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো কিন্তু সাহস হতো না জিসানকে ফোন দেওয়ার।
"
"
আচ্ছা জিসান কি আমাকে এখনো স্মরন করে.....
"
"
আমার নির্ঘুম রাত কাটে তোমাকে ভালোবেসে
তুমি কি এখনো ভালোবাসবে আমার কাছে এসে।
আমি যতোটা স্মরন করি তোমাকে,
তুমিও কি এতোটা ভালোবাসো এখনো আমাকে।
আজও তোমার পথ চেয়ে থাকি,
তোমাকে খুঁজে কেনো আমার এই দুটো আঁখি।
এভাবে তিনমাস কেটে যায়।সবই ভালো চলছিলো কিন্তু গ্রামের মানুষের কটুক্তি তিশার জীবনকে আবারও দূর্ভিসহ করে তুলে।রুপকের তিশার প্রতি এতো কেয়ার নেয়াটা গ্রামের মানুষের চোখে পরে।যার ফলে তিশাকে অনেকে অনেক কথাই বলে,কেউ কেউ বলে কারো সাথে আকামকুমাম করে পেট বাজিয়ে চাচার বাসায় মুখ লুকিয়েছি, আবার কেউ কেউ তো এই বাচ্চা রুপকদার বলেও দাবি করে।কারন সে আমাকে ডক্টরের কাছে নেয়া হতে শুরু করে আমার পছন্দ অপছন্দ সব খেয়াল রাখছে।সকালে আমাকে নিয়ে কিছুটা হাটায়,এমনকি কেউ কেউ এসে দেখেছে রুপকদা আমার পায়ের পাতা মালিশ করছে।এসময় আমার পায়ের পাতা খুব জ্বালাপুরা করত,রাতে ঘুমাতেও কস্ট হতো।তাই রুপকদা প্রতিদিনই আমার পায়ের পাতা মালিশ করে দিতো।আমি অনেক নিশেধ করতাম কিন্তু শুনতো না।মাঝে মধ্যে খারাপ লাগতো,কারন আমার কারনে তাকেও অনেক কুকথা শুনতে হতো।রুপকদা আমি চলে যাই এখান থেকে।
"
আমি চলে গেলে তোমাকেও এসব মানুষদের আর কথা শুনতে হবে না।
"
"
কি বললি তুই,আরেকবার বলতো।আমি তোকো কখনো কিছু বলেছি।তাহলে তুই কেনো এসব কথা বলছিস।দেখ যারা বলার তারা বলবেই,তুই থাকলেও বলবে,তুই চলে গেলেও বলবে।একদিন এই সব লোকের মুখে তালা পরবে, তুই শুধু ধৈর্য ধর।
"
"
রুপকদা কথা শুনলে আমার জিসানের কথা মনে পরে যায়।জিসানও থাকলে সেও এসব কথা বলতো।কতো না সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলো জিসানের সাথে।আমার প্রতিটা না বলা কথা সে জেনে যেতো।আজও মনে পরে আমার জজন্মদিনের রাতে কেককেটে দুজনেই ছাদে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখছিলাম।হালকা হালকা মৃদ বাতাসে পরিবেশটা জেনো আরো রোমান্টিক হয়ে পরেছে।জিসান আমাকো পেছন দিয়ে জরিয়ে আমার কাদে তার থুতনি রেখে আমার সাথে চাঁদকে দেখছিলো।
"
"
তিশাশশশা....
"
"
হুমমমমম। ~তিশা।
"
"
তোর কি চাই আর।
"
"
কিছু না। এতো কিছুতো করলেন এতেই আমি অনেক খুশি।
"
"
তাইইই.....। কিন্তুু আমার একটা জিনিস চাই তোর কাছ থেকে।সে আমার ঘাড়ে একটা ডিপ কিস করে।তার স্পর্শে আমার শরীলে কম্পন সৃষ্টি হয়।
"
"
কি চান,আমি পারলে দিয়ে দেবো।বলুন।
"
"
আমার যে একটা ছোট তিশা চাই।ঠিক তোর মতো।জিসান কথাটা আমার কানের কাছে এসে বলে।
জিসান এধরনের আবদার করবে আমি আসলেই বুজতে পারিনি।আমার বিষন লজ্জা লাগছিলো।আমি মাথানিচু করে হা বলে দাঁড়িয়ে ছিলাম।আর উনি আমার লজ্জা দেখে সেদিন আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরেছিলো।তার পর আমরা সেদিনও একে অপরের মাঝে ডুবে গিয়েছিলাম।
"
"
আমার মাঝে অলরেডি জিসানের একটি অংশ বেড়ে উঠছিলো, তা না আমি জানতাম,নাহি জিসান।জানলে হয়তো এভাবে আলাদা হতাম না দুজন।কিন্তুু দুজনে একসাথে স্বপ্ন বুনেছিলাম সেদিন।
"
"
এর পরই সব আস্তে আস্তে এলোমেলো হয়ে গেলো।মাঝে মাঝে মনে হয় কেনো সেদিন সেই পার্টিতে গেলাম।
চলবে....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
Part-35
জিসানদের কম্পানি ১টা বড় ডিল সাইন করেছে।সাইন এর সময় জিসান ছিলো না,বড় ভাই তাওহিদই তাই পেপার সাইন করেছে।এতো বড় ডিল আগে কখনো পায়নি। যাদের সাথে ডিল সাইন করেছে তারা দেশের বাহির থেকে আসছে।তাই কাজটা অনেক ইম্পোর্টেন।
ডিলের কাগজ গুলো তাই জিসান চেক করছে।কাগজ দেখার সাথে সাথে জিসান এর মেজাজ গরম হয়ে গিয়েছে,ভাইয়া কি এসব কাগজ দেখে সাইন করেনি।কি এসব,,,,,,এটাতো কোম্পানিকে ডুবানোর প্লানিং চলছে।তাই কাগজ গুলো নিয়ে তাওহিদ এর কাছে গেলো
"
"
"
এসব কি ভাইয়া,তুমি কি দেখে কাগজ গুলো সাইন করছে। এতো বড় রিস্ক নেওয়ার কি দরকার ছিলো।
"
"
"
কি হইছে আগে খুলে বল।আমিতো ভালো মতো পড়েই পেপারগুলো সাইন করেছি।সমস্যা কি।
"
"
"
"নিচের শর্তগুলো দেখছো,টাইম মতো ডেলিভারি দিতে না পাড়লে বা লেট হলে বা কেনশালড করতে চাইলে আমাদের কোম্পানি AK কোম্পানিকে তিন ডোবল টাকা শোধ করতে হবে,লোকশান হিসেবে।।আর এতো অল্প সময় তাদের সব ডিমান্ড পূরণ করবো কিভাবে।বিজনেস এ সময়ের উনিশবিশ তো হয়।তাই বলে এমন শর্ত।এটা করতে গেলে আমাদের সব কিছু নিলামে উঠে যাবে।
"
"
"
তাওহিদ পেপারগুলো হাতে নিয়ে আবার দেখতে থাকে।পেপারগুলো দেখে তাওহিদ এর ও মাথা গরম হয়ে যায়।জিসান আমি পেপারগুলো ভালো করে চেক করেছিলাম,এ ধরনের কোন শর্ত তখন ছিলো না।আমি এতো বছর ধরে বিজনেস করছি,এতো বড় ভুল আমি কিভাবে করবো।এসব দেখলে আগে ডিলই সাইন করতাম না।
"
"
"
জিসান কিছুক্ষন চুপ থেকে ভাবতে লাগলো,সত্যি ভাইয়ার ধারা এতো বড় ভুল হওয়ার কথা না তার মানে আমাদের কোম্পানিতেই এমন কেউ আছে যে আমাদের ধোকা দিচ্ছে Ak company র সাথে হাত মিলিয়ে।
আচ্ছা Ak কোম্পানির মালিক কে?তুমি চিনো।এ ধরনের শর্তের পিছনে কারন কি। আমাদের সাথে তো এটাই তার প্রথম ডিল।
"
"
"
না চিনি না,কেনাডা থেকে এসেছে পরিবার নিয়ে।এতো বছর নাকি ওখানেই ছিলো।
"
"
"
আচ্ছা শুনো ভাইয়া, বাবাকে কিছু বলো না,অনেক বিশ্বাস করে তার গড়ানো ব্যবসা বাণিজ্য আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে,এসব জানতে পারলে অনেক টেনশন করবে।আমি এই ডিলের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিলাম,তুমি বাকি কোম্পানির ডিলগুলো দেখো।তাওহিদ চিন্তা করলে,এটাই ভালো হবে।
"
"
"
ডিলটার কারনে জিসান পুরাই ব্যস্ত হয়ে পরলো,টাইম মতো ডিলটা ডেলিভারি করতেই হবে।তার জন্য নিজেকেই সব দেখতে হবে,কারো আসায় দিয়ে দিলে,সব হারাতে হবে।আর বাসায় বলেনি কারন অফিসের কোনও জামেলা তারা বাসায় নিয়ে যায় না।
"
"
"
কিছু দিন পর,Ak company র পক্ষ থেকে এক বড় পার্টি আয়োজন করা হলো।দেশের বড় বড় বিজনেস ম্যানদের ইনভাইট করা হলো।Ak company র মেনেজার এসে জিসানকে ইনভাইট করে গেলো আর কার্টে লিখা ছিলো নিজের লাইফ পাটনারকে সাথে করে নিয়ে জেতে হবে।তার মানে তিশাকে ও নিতে হবে সাথে।এধরনের বিজনেস পার্টিগুলোতে তিশাকে নিয়ে যাওয়া জিসানের একদম পছন্দ না।পার্টিগুলো খুব বিশৃঙ্খল টাইপের।কিন্তু এই পার্টিতে তিশাকে নিতেই হবে।কারন Ak company র মালিক কে দেখতে হবে।কে এই আরাফান খান।কেনো আমাদের সাথে এমন করছে।
জিসান আর কিছু না ভেবেই পার্টির দিন একটু তারাতারি বাসায় চলে গেলো।কারন রাতে আবার পার্টিতে জেতে হবে।
"
"
"
"জিসানকে এতো তারাতারি বাসায় আসতে দেখে আবাক আমি।আপনে এতো তারাতারি এলেন।শরীল ঠিক আছে তো।~তিশা।
"
"
"
হুমমম সব ঠিক আছে।আসলো রাতে একটা পার্টি আছে তো চাই তারাতারি চলে এসেছি।
"
"
"
ওওওওও,আচ্ছা।আমি চা নিয়ে আসছি।
"
"
"
তিশা শোন,তোকেও জেতে হবে আমার সাথে।
"
"
"
আমি ওখানে গিয়ে একা একা কি করবো।~তিশা।
"
"
"
জিসান তিশার সামনে এসে, তিশার দুকাধে হাত রেখে...কিছু করার নেই জান।জেতেই হবে।পাটনারকে সাথে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে।আর যাওয়াটা ইম্পোর্টেন না হলে তোকো কোনদিনও আমি এই ধরনের পার্টিতে নেবার কথা বলতাম না,তুই তো জানিস।
"
"
"
ওকে,আমি যাবো।~তিশা।
"
"
"
শোন এই গুলো তোর জন্য,এগুলো পরেই জেতে হবে।
কিছু সোপিং ব্যাগ তিশার হাতে দিয়ে।
তিশা সোপিং ব্যাগগুলো রেখে জিসানের জন্য চা আনতে চলে গেলো।
"
"
"
সন্ধ্যার পর তিশা সব কাজ কর্ম করে, মাগরিবের নামাযটা আদায় করে নিলো।পরে যদি পরতে না পারে।
রেডি হবার জন্য সোপিং ব্যাগগুলো থেকে সব বের করলো,যা দেখলো তাতে তিশার চোখ উপরে উঠে গেলো,এ কি! এই লোকটা আমার জন্য বোরখা, ম্যাছিং হিজাব নিয়ে এসেছে।আমাকে পার্টিতে বোরখা পরে নিয়ে যাবে।তিশা বোরখাটা খুলে দেখে,এটা একটা পার্টি বোরকা,খুব সুন্দর কাজ করা।বোরখাটা হাতে নিয়ে তিশা ভাবতে থাকে,তাইতো বলি সাহেবে পার্টিতে নিয়ে যাবার জন্য রাজি কিভাবে হলো।আমাকে আড়াল করার সব প্লানিং করে রেখেছে।আর কিছু না ভেবে তিশা রেডি হয়ে গেলো।হিজাবটা ঠিক করছিলো তখনি জিসান এসে পেছনদিয়ে তিশার কোমড় জরিয় ধরে। আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখতো আমার তিশাকে কেমন লাগে।
"
"
"কেমন লাগে।~তিশা।
"
"
"
একদম আমার মনের মতো।এখন থেকে আপনাকে বাহিরে গেলে এসব পরেই জেতে হবে।নিজেকে পর্দায় রাখতে হবে।আমি চাইনা আমার বউকে অন্য কেউ দেখুক। বুজছিস।
"
"
"
সব জায়গায় পরতে হবে।(তিশা).....।জি ম্যাম বাহিরে গেলে এখন থেকো বোরখা পরে যাবেন।যতোটা পারবেন নিজেকে ঢেকে রাখবেন।ইসলামি জীবন মেনে চলার চেস্টা করবেন।আমিও নিয়মিত নামায ধরবো। আমি চাই ভবিষ্যৎ এ আমাদের সন্তান আমাদের নিয়ে গর্ব করতে পারে।আমরা জাতে তাকে ভালো শিক্ষা দিতে পারি,ইসলামি জ্ঞান দিতে পারি,তার জন্য নিজেদেরকেও আগে শুধরাতে হবে।ঠিক আছে।
"
"
"
জিসানের কথা গুলো শুনে তিশা খুবই অবাক হলো।এর পর তিশা মাথা নেড়ে হ্যা বললো।~তিশা।
"
"
"
জিসান তিশা পার্টিতে চলে গেলো।Ak company এর মালিক পার্টিটা আয়োজন করেছে।দেশের বড় বড় বিজনেস ম্যানরা ও পার্টিতে অংশ গ্রহন করেছে।জিসানকে দেখে Ak কোম্পানির মেনেজার নিজে এসে রিসিভ করতে আসলো।পার্টিতে এসে তিশার খুব অস্বস্তি লাগছে।কারন এধরনের পার্টিগুলোতে তিশা আগে আসেনি।আর আশে পাশের মেয়ে গুলো বেশির ভাগই ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে,হাতে ড্রিংক নিয়ে মেতে আছে।আর জিসান ও অন্য বিজনেস ম্যানদের সাথে কথা বলতে একটু ব্যস্ত হয়ে পরেছে।তিশা একা একা দাড়িয়ে ভাবছে আরে এখানে আমার কি কাজ,শুধু শুধু এনেছে।তিশার ভাবনার জগৎ এ ছেদ এনে কেউ পেছন থেকে তিশাকে ডাক দিলো।
"
"
"
পেছনে ঘুড়ে দেখি নিলয়।আরে আপনে এখানে,আর আমাকে চিনলেন কিভাবে।
"
"
"
আমিও তোমার হাসবেন্ড এর মতো একজন বিজনেস ম্যান।তাই আমাকেও ইনভাইট করা হয়েছে।আর তোমাকে হাজার মানুষের ভিড়েও চিনতে পারবো।তুমি একটু স্পেশিয়াল যে।
"
"
"
মানে,,,,,তিশা জানে না নিলয়ের মনে তিশার জন্য যে আলাদা একটা জায়গা আছে।
"
"
"
এতো মানে মানে করছো কেনো।জিসান ঠিকই বলছে তোমার মাথায় ঘিলু আছে।আরে তুমি একমাত্র নাড়ী এখানে বোরখা পড়ে এসেছো।আর এধরনের আইডিয়া যে তোমার স্বামীর ছাড়া আর কারো না তা আমি ভালো করেই জানি।তাই চিনতে সমস্যা হয়নি।যাই হোক তেমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
"
"
"
রাইট,,,,,,এধরনের পার্টিগুলোতে আমাকে কখনো আনে না।আর কেনো আনে না আজ বুজতে পারলাম।দেখুন আমাকে এনে নিজেই ব্যস্ত হয়ে পরলো।~তিশা।
"
"
"
বোর ফিল করছো সমস্যা নেই আমি আছিতো,আপনার সেবায় নিয়োজিত হতে।
"
"
"
থ্যাংকস ভাইয়া।~তিশা।
"
"
"
এখনোতো কিছু করলামই না।আগে কিছু করি তোমার জন্য তার পর বলো।~নিলয়।
"
"
"
আপনে আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন।আমাকে জিসান সব বলছে।কিন্তু ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করতে চাইনি তাই বলিনি।~তিশা।
"
"
"
তাহলে আজ কেনো বলছো।~নিলয়।
"
"
"
কারন উপকারের পাল্লা ভারী হয়ে যাচ্ছে।কিছুটা তো কমাতে হবে।~তিশা।
"
"
"
তাই তুমিতো দেখি ধারুন কথা বলো।এই কারনে বলি জিসান এতো পাগল কেনো """তুমি বলতে"""।
"
"
"
জিসান এতোক্ষন Ak company এর মালিক আরাফান খান এর সাথে কথা বললো।আর জানতে পারলো,আরাফান খানের ওয়াইফ ডিলটার দায়িত্ব এ আছে।কিন্তু সে এখনো আসেনি।কিছুক্ষন পর সবাইকে একটা করে মাস্ক দেওয়া হলো।জিসান মাস্কটা নিয়ে তিশার কাছে এসে পরলো।তিশাকে নিজের হাতে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছে আর নিলয়ের সাথে কথা বলছে।
"
"
"
এমন সময় হলের লাইট সব অফ হয়ে ডান্স ফ্লোরে শুধু লাইট রাখা হয়।কাপল ডান্স করার জন্য।কিন্তু জিসান এতে একদমই ইন্টারেস্টিং না,তাই মেনেজারকে খুঁজছে।বলে চলে যাবে।আর তখনি কেউ এসে জিসানকে টান দিয়ে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়।জিসান কিছু বুজে উঠার আগেই মেয়েটি জিসানের এক হাত নিজের হাতে রেখে,আরেক হাত নিজের কোমড়ে রেখে ডান্স করা শুরু করে দেয়।ঘটনাগুলো এতোই দ্রুতু হলো যে জিসান কিছুই বুজে উঠতে পারছে না।
"
"
"
sorry Miss,I'm not interested in dancing with anyone expect my wife....এটা বলে জিসান মেয়েটা থেকে সরে জেতে নেয়।
"
"
"
If I say,I am Mrs Arafan khan....
"
"
"
oooh really, I'm glad to meet you....জিসান বলেই চলে জেতে চাইলে মেয়েটি আবার জিসান কে আটকে ফেলে।এদিক দিয়ে মিউজিক ও শুরু হয়ে যায়।আর জিসান বাধ্য হয়ে ডান্স করতে হয়।
"
"
"
তুমি আজও বদলাও নি জিসান।শুধু আগের থেকে অনেকটা হ্যান্ডসাম হয়ে গিয়েছো।
"
"
"
মাস্ক এর কারনে জিসান দেখতে পাচ্ছে না,মেয়েটা কে।
কে আপনে,আমি কি চিনি আপনাকো।জিসান ভ্রু কুচকিয়ে জিঙ্গেস করে।
"
"
"
তুমি যতোটা চিনো আমায় অতোটা কেউ চিনে না।এই বলেই নিজের মাস্ক টা সরিয়ে,একটা পৈচাশিক হাসি দেয়।
"
"
রোজ তুমি।তুমি মিসেস আরাফান খান।রোজ কে দেখে জিসান রোজ থেকে দূরে সরে জেতে নেয়।
(রোজ হলো জিসান ও রায়হানের ভার্সিটির ফ্রেন্ড, রায়হান এর সাথে তেমন কোন বন্ধুতা ছিলো না,কিন্তু জিসানের সাথে ছিলো।জিসানের তরফ থেকে শুধু বন্ধত্ব ছিলো,কিন্তু রোজ জিসানকে পাগলোর মতো ভালোবাসতো।এক কথায় dangerous love...তার কাহিনী পরে বলি)
"
"
"
হুমমম।ঠিক বলছো।কিন্তু রোজ জিসানের আরো কাছে গিয়ে ওর সাথে লেপ্টে গিয়ে ডান্স করছে।
"
"
"
এতোগুলো মানুষের সামনে জিসান কিছু বলতেও পারছে না।রোজ কি করছো,ছাড়ো আমায় সবাই দেখছে।লিমিট ক্রস করছো তুমি।
"
"
"
দেখুক এতে আমার কি,আমি কি তোমার সাথে এসব নতুন করছি।
"
"
"
রোজ জিসানকে অস্বাভাবিক ভাবে টাচ করছে।জিসান ভেবে পায় না একটা মেয়ে এতোটা নির্লজ্জ কিভাবে হয়।তার উপর ও এখন বিবাহিত।ওর হাসবেন্ড দেখলে ব্যাপারটা কতোটা খারাপ দেখাবে।রাগের বসে আবার ডিলটা না আবার কেনশালড করে দেয়।জিসান খুব কৌশলে রোজ থেকে নিজেকো ছাড়িয়ে ফেলে।
"
"
"
দূর থেকে তিশা এসবই দেখছিলো।কিছু না বললেও অর চোখ দুটো ছলছল করছে,হয়তো যে কোনও সময় বৃষ্টি নেমে পরবে।
"
"
"
ঠিক এসময় কোথা থেকে জিসান এসে আমার হাতটা ধরে টেনে পার্টি থেকে বের হয়ে যায়।কিছুক্ষণ পর আমরা বাসায় এসে পরি।গাড়ীতে কেউ কোনও কথা বলিনি।আর বাসায় আসার পরই জিসান অনেক টেনশন এ।মেয়েটা সম্পর্কে জিঙ্গেস করলে জিসান পরে বলবো বলে শুয়ে পরে।এর আগে জিসানকে এতো টেনশনে কখনো দেখিনি।
"
"
"
"আমার আর জিসানের মধ্যে কেনো জানি সেদিন থেকে দূরত্ব বেরে যায়।সে রাত নির্ঘুম কাটে,শুধু এ ভেবে কে এই মেয়ে।আর কি সম্পর্ক জিসানের এই মেয়ের সাথে।
"
"
"
হঠাৎ রুপকদার কথায় আমার ধ্যান ভাঙ্গে।অতিত থেকে ফিরে এলাম।
"
"
"
কি রে কি এমন চিন্তা করছিস।পালানোর আইডিয়া খুঁজছিস মনে হয়।লাভ নেই, পালাতে চাইলে ধড়ি দিয়া বাইধা রাখুম।মনে রাখিস।
"
"
"
রুপকদার কথা শুনে আমি একটু হেসে দিলাম,জানো রুপকদা জিসানও বলে,আমাকে নাকি ধড়ি দিয়া বেধে রাখবে।বেধে রাখলে হয়তো ভালোই হতো, তাই না।তাহলে আমাকে একা এই সময় কাটাতে হতো না।
"
"
"
কেনোরে আমরা আছি না,নাকি আমাদের চোখে পরে না।রুপকদা।
"
"
"
আমিও আছি......পেছনে তাকিয়ে দেখি সুরভী দাঁড়িয়ে আছে।আরে সুরভী আপু তুমি কখন এলে....।ভেতরে আসো।দাঁড়িয়ে আছো কেন।
(সুরভী চাচীর ছোট বোনের মেয়ে,বাল্যকাল থেকেই রুপকদাকে ভালোবাসে।অনার্স এ পড়ছে।দেখতেও খুব সুন্দর।সবথেকে সুন্দর ওর চুলগুলো,ঘন,কালো আর অনেক বড়।)
"
"
"
এই মাত্রই আসলাম।এই নোও, মা তোর জন্য চিড়ার মোয়া পাঠাইছে।~সুরভী।
"
"
"
তাই,কই দেওতো।আমি নিয়েই খাওয়া শুরু করেদিলাম।
"
"
"
আরে আস্থে খা,আর বেশি খাইচ না,পরে পেট ব্যাথা করবে।~রুপকদা।
"
"
"হো কইছে তোমারে,তিশা খাতো কিছু হইবো না।আর শোনও তোমার জন্য পিঠা আনছি।নিজের হাতে বানাইছি,খাইয়া কোও তো কেমন হইছে।
"
"
"
রুপকদা উঠে দাড়িয়ে, তোর ওই পচা পিঠা তুই খা।আর তকে কে বলছে আমার জন্য পিঠা বানাতে।তকে না বলছি আমার এসব ভনিতা একদম ই পছন্দ না।সর....আমার সামনে থেকে।বলে নিজেই চলো গেলো।
"
"
"
সুরভীর মুখটা মলিন হয়ে যায়।ভাইয়াকে খুব ভালোবাসো তাই না।
"
"
"
আমি বাসলে কি হইবো,তোর ভাইতো দুচোখে দেখতে পারেনা আমাকে।দেখোস না কেমন ব্যবহার করে।আমারে অপমান করে অনেক মজা পায় সে,বুজলি।কিন্তু আমার মনরে বুজাইতে পারিনা।তারে না দেখলে থাকতেও যে পারিনা।
"
"
"
ভালোবাসা মনে হয় এমনি,দেখো ভাইয়াও একদিন তোমাকে অনেক ভালোবাসবে।শুনো একটা আইডিয়া পাইছি।দেখো কিছুটা কাজে আসেনি।আমি সুরভী আপুকে সব বুজিয়ে দিলাম।কাল দেখা যাবে ভাইয়া তোমাকে ভালোবাসে কিনা।
"
"
"
পরের দিন সকালবেলা প্লান অনুযায়ী, রুপকদা যখন নাস্তা করতে বসে ঠিক তখনি সুরভীর আগমন ঘটে।
খালা তিশা কই।
"
"
"
এইতো আমি।আপু আমাকে ধরে চেয়ারে বসালো।।
"
"
"
তুই আমাকে ডাকছিস কেনো,তারাতারি বল।আমার আবার তাড়া আছে।
"
"
"
আগে বলো তুমি কোথায় যাচ্ছো এতো সেজেগুজে। তোমাকে তো একদম ঝাক্কাস লাগছে।
"
"
হে সুরভী আপু তিশা আপু ঠিক বলছে,তেমাকে খুব সুন্দর লাগছে।যে দেখবে পাগল হয়ে যাবে।~রুপা।
"
"
"
এবার রুপক না তাকিয়ে পারলো না।আসলে এতোক্ষন ধরে রুপক সুরভীর দিকে তাকায়নি।ভাবছে আবার কোনও প্যারা দিতে আসছে।কিন্তু এখন সুরভীকে দেখে হা হয়ে আছে।আর তা তিশা ঠিকই খেয়াল করেছে।
তুমি কোথায় যাচ্ছো আপু,এতো সাজছো কেনো।
"
"
"
এদিক দিয়ে রুপক চিন্তা করছে,ওকে আজ এতো সুন্দর কেনো লাগছে,নাকি আগের থেকেই ও সুন্দর ছিলো,কিন্তু আমি মনে হয় খেয়াল করিনি।গাধা একটা আমি।
"
"
"
হে রে বাবার বন্ধুর ছেলে, আজমীর আছে না,তার সাথে ঘুড়ার প্লানিং আছে আজ।উনি নিতে আসবে কিছুক্ষন পর।
"
"
"
ওওও, তা হঠাৎ আজমীর ভাইয়ার সাথে ঘুরতে যাওয়ার প্লানিং, কোনও বিশেষ কারন।তিশা সুরভী সাথে কথা বলছে আর রুপকদার দিকে আড় চোখ দিয়ে দেখছে।রুপকদার চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো।চেহারে রাগ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
"
"
"
হুমমম,আছেতো।বাবা বিয়ে বিয়ে নিয়ে মাথা খারাপ করে ফেলছে।এতোদিনতো তাল বাহানা দিয়েছি।কিন্তু বাবা যখন কাল ডেকে নিয়ে বললো,হায়াত মরনের কথা বলা যায় না মারে, আমি তোকে কারও হাতে তুলে দিয়ে শান্তিতে মারতে চাই।বাবার কথায় নিজেরি খুব খারাপ লাগলো জানিস।কাল অনেক চিন্তা করলাম,শুধু শুধু বাবা কে এতো কস্ট দিয়ে কি লাভ।এমনতো না আমার জন্য কোন প্রিন্স বসে আছে।যার জন্য অপেক্ষা করবো।তাই রাজি হয়ে গেলাম।বাবা অনেক আগেই আজমীর কথা বলেছিলো,তাই আজ তার সাথে বের হবো।কি বলিস, যাকে বিয়ে করবো তাকে জানাওতো দরকার।
"
"
"
এদিক দিয়ে রুপক চিন্তা করছে,এতবছর এই ফুল আমার ছিলো,আমি এখনো তার সুভাষ নিলাম না।আর আমার বাগানের ফুলকে নাকি অন্য কেউ নিয়ে যাবে মগেরমুল্লুক পাইছে।দেখুম কেমনে নেয়।
"
"
"
"ঠিক বলেছো।অল দা বেস্ট আপু।~তিশা সুরভী কে।
"
"
"
এসব শুনে রুপকদা ওখান থেকে কোথায় জেনো চলে গেলো।আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকলাম।মনে মনে ভাবলাম,এবার পালাবে কোথায়।
"
"
"
সুরভী আপুও কিছুক্ষন পর চলে গেলো।কিন্তু সেদিনের প্লান টা খুব কাজ দিছিলো।ওই দিনিই রুপকদা চাচীকে পাঠায় সুরভী আপুদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে।আর সুরভী আর রুপকদার এংগেসমেন্টটা ও হয়ে যায়।
আর এভাবেই তাদের সাথে আমার দিনগুলো চলে গেলো। আজ প্রায় পাঁচ মাসের উপর আমি এখানে।
চলবে.....
(গল্পটা ছোট করতে চাইছি কিন্তুু তবু গল্পটা বড় হয়ে যাচ্ছে,জানি না কেমন হচ্ছে।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আপনাদের মতামত এর আসায় থাকবো।ধন্যবাদ।

পাট ৩৬-৩৯
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNiA
part-36+37
~~জিসান মায়ের কোলে মাথা রেখে কাঁদছে। এই একটি মাত্র জায়গা যেখানে জিসানের সব কাস্ট, দুঃখ জেনো নিমিষে দূর করতে পারে।মায়ের কোলে মাথা রেখে এক পরম সুখ পায় জিসান।
"
"
"
কি হলো বাবা তোর,কাঁদছিস কেনো।তিশার কথা মনে পরছে।দেখিস তিশা জলদি ফিরে আসবে আমার মন বলছে।ছোট মানুষ তো তাই অভিমানটা একটু বেশি।দেখিস সময়ের সাথে জ্ঞান বুদ্ধি যখন বাড়বে,এমন ছেলেমানুষি ও কমে যাবে।
"
"
"
মায়ের এসব কথায় জিসানের এবার রাগ উঠে গেলো।
মা দুদিন পর যে নিজে এক বাচ্চার মা হবে,সে নিজে কোনদিক দিয়ে বাচ্চা বলোতো।
"
"
কিসব বলছিস তুই,আমিতো কিছুই বুজতে পারছি না।
"
"
আমি বাবা হবো,আর তুমি দাদী, বুজলে।তোমার ওই বাচ্চা বউ আমার বাচ্চাকে পেটে নিয়ে পালিয়েছে।চিল্লিয়ে কথাগুলো বলছে।
"
"
"
মানে.....জিসানের মা মনে হয় সাত আসমান থেকে নিচে ধপাস করে পরছে মনে হয়।
"
"
মানে.... তিশা পেগনেন্ট ছিলো,যখন ও বাসা থেকে চলে গেছে।~জিসান।
"
"
"
ওওও আচ্ছা, তাইতো বলি,ও কিছুদিন ধরে কেমন অসুস্থ অসুস্থ লাগছিলো।আমার তখনি সন্দেহ হইছিলো তাই আমি ডক্টররের কাছে নিয়েও জেতে চাইছিলাম,কিন্তু মেয়েটি জিদ ধরলো যাবে না,এমনেই ঠিক হয়ে যাবে নাকি।
"
"
আমাকে বলোনি কেনো।~জিসান।
"
"
আমি ভাবলাম তোকে হয়তো ও বলেছে।আমি কি জানি ও এভাবে আমার নায়নাতনী নিয়ে পালাবে।কিন্তু তোকে কে বলছে।
"
"
"
সেটা জেনে কি করবে.....শুনো কাল তোমার বাচ্চা বউকে আনতে যাচ্ছি।একবার শুধু পাই সব ভিমরিতি যদি না ছুটাইছি,তাহলো আমার নামও জিসান না।আদর করে করে মাথায় উঠাইয়া ফেলছিতো।এখন বুজাবো আমি যদি মাথায় তুলতে পারি,আবার জোরে আছাড় ও মারতে পারি।
"
"
"
এ কথা বলেই জিসান ওর মার রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।রুমে গিয়েই বিছানায় হাত পা মেলে শুয়ে পরলো,আজ খুব ক্লান্ত লাগছে,হয়ত এতো দিনের অপেক্ষা শেষ হবে বলে।কতোরাত জিসান ঘুমায় নি,তা হয়তো জিসানও জানে না।চোখ বন্ধ করলেই তিশার মুখটা জেনো ভেসে উঠত।তাই সে আজ রিলেক্স হতে চায়।জিসান মনে মনে ভাবছে,রোজ নামের সেই অভিশাপ ওর জীবনে পুনরায় যদি না আসতো,তাহলে আজ জীবনটা কতোনা সুন্দর হতো তিশা আর আমাদের বেবির সাথে।ওর অস্তিত্ব ও আমিও ফিল করতে পারলাম না।আমার কিছু ভুলের কারনে আজ আমি আমার সবথেকে দামি মানুষগুলো থেকে দূরে।আমাকে তিশাকে সব খুলে বলা উচিৎ ছিলো।কেনো বললাম না সেদিন।
"
"
"
আর তিশা কেনো তুই একটু ধের্য্য ধরলি না।তোর মনে কোনও সংশয় থাকলে,সন্দেহ হলে কেনো একবার আমাকে জিঙ্গেস করলি না।আমি তোর সব সংশয় দূর করে দিতাম,তবুও তোকো জেতে দিতাম না।তোর জিসান এমন কিছু করবে তুই ভাবলি কি করে।আমার প্রতি কি একটুও বিশ্বাস রাখতে পারলি না।কেনো আমাকে আমার সন্তান থেকো দূরে রাখলি।
(স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা এমনি,এখানে লুকোচুরি যতোবেশি থাকে সন্দেহ ততোই বাড়ে।জিসান একজন প্রাপ্ত বয়সের ছেলে।জীবনের অনেক কিছুর সাথে ওর অভিঙ্ঘতা আছে।কিন্তু অপর দিক দিয়ে তিশা অর পুরো জীবটা কেটেছে,নযর ধারিতে। কখনো রায়হান বা কখনো বাবা মা,বা কখনো জিসান ওর জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।তাই নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু ভাবার প্রয়োজন পরেনি।আর যখন পরছে একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।)
"
"
"
অতীত....
"
"
"
সেদিন পার্টি থেকে ফিরে এসেই খুব টেনশনে পরে গেলাম,রোজ আবার কেনো এলো।এবারও কোনও প্লান করে এসেছে মনে হয়।আমি এসব ভাবতে ভাবতে তিশার দিকে তাকালাম।ওর চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে, মেয়েটি কস্ট পাইছে, রোজের সাথে এতোটা ক্লোজ হয়ে ডান্স করাতে,অনেক প্রশ্নও মনের মধ্যে জমে আছে।কিন্তু সরি জান আমি এখন কিছুই বলতে পারবো না,আগে রোজের প্লান কি জানতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।কিন্তু রাত ৩ টায় হঠাৎ কেউ কল দিলো।আমি টাইমটা দেখে ফোনটা রিসিভ করলাম।
"
"
"
হ্যালো~জিসান।
"
"
নিশ্চুপ....
"
"
কথা না বলতে চাইলে ফোন কেন করেন,এতোরাতে।যতোসব আজাইরা লোক বলে ফোনটা কাটতে নিলাম,আর তখনি কেউ হ্যালো বললো।আমি খুব ভালো করে চিন্তে পারলাম ফোনের অপর পাশের এই হ্যালোর মালিক কে।আমি একবার তিশার দিকে তাকালাম।ও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাই আমি বারান্দায় চলে গেলাম।
"
"
হে বলো, কেনো কল করেছো এতো রাতে।
"
"
কেনো আবার তোমাকে আমার চাই,তুমিতো খুব ভালো করে জানোই আমার কোন জিনিস পছন্দ হলে এতো সহযে ছাড়ি না,তা যেভাবেই হোক হাছিল করে নি।
"
"
আমি কোন জিনিস না রোজ,আমি মানুষ।সেটা তোমার ভাবা উচিৎ। এতো কিছু করার পরও শান্তি হওনি,আবার আসছো আমার জীবনে ঝড় আনতে।কেনো এলে....
"
"
কি করবো জান, আমার রাজ্যের রাজা এখানে আর আমি ওখানে থেকে কি করবো।তাই রানী নিজেই রাজাকে আপন করে নিতে আসছে।
"
"
রোজ,আমি রাজা কিনা জানি না,কিন্তু এতোটুকু বলবো আমার কোনো রানীর প্রয়োজন নেই।কারন আমার কাছে এক মায়াবী ঘুমন্ত পরী আছে।যার দিকে তাকিয়ে আমি সারা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো।(জিসান বারান্দা থেকে তিশার দিকে তাকিয়ে কথাটা বলছে)
তাই বলছি নিজেও ভালো থাকো,আর আমাকেও ভালো থাকতে দেও।
ফোন কেটে দিয়ে,আমার ঘুমন্ত পরিটার দিকে চেয়ে আছি।তকে দেখলেই আমার অশান্ত মনটা কেমন শান্ত হয়ে যায়।কি যে যাদু জানিস তুই,আল্লাহই জানে।জিসান একটু মুসকি হাসি দিয়ে তিশাকে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
"
"
"
সেরাত তিশা জিসানের বুকের উপর ঘুমিয়ে ছিলো।কিন্তু তিশা গভীর ঘুমে ছিলো বলে কিছুই জানতে পারনি।সকালে জিসান তিশা ঘুম থেকে উঠার আগেই চলে জেতে হইছে।কাজের চাপ বেশি ছিলো বলে।তিশাকে খুব ক্লান্ত লাগছিলো কাল,তাই জিসানও আর ডাক দেয়নি।তিশার কপালে একটু ভালোবাসার পরশ দিয়ে চলে গেলো।
"
"
"
রোজ এর কারনে জিসান এমনেই টেনশনে, তার উপর এই ডিলের দায়িত্ব রোজের, তাই জিসান চায় না,রোজ ডিল ক্যান্সাল করার বাহানা পাক।কিন্তু রোজ তো ছিলো বেহাইয়া টাইপের মেয়ে।প্রতিদিন জিসানের সাথে দেখা করতে আসতো,কাজের বাহানা দিয়ে।জিসান বেচারা কিছু বলতেও পারতো না।আর রোজকে সহ্য ও করতে পারছিলো না।
"
"
রোজ একদিন জিসানকে জোর করে এক হোটেলে নিয়ে গেলো ডিনার করবে বলে।
"
"
রোজ আমাকে এখানে কেনো এনেছো।আরো অনেক রেস্টুরেন্ট আছে,আমার ওখানে জেতে পারি।
'
"
না আমি এখানেই ডিনার করবো, সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত।তাই চুপচাপ ডিনার করো।তার পর বাসায় চলে জেও।আমি কিছু বলবো না।
"
"
কিন্তু জিসানের কিছুটা সন্দেহ হলো।কারন রোজকে ও খুব ভালো করে চিনে।কারন ছাড়া কিছুই করে না।তাই রোজের নযর এড়িয়ে জিসান রায়হান কে কল দিয়ে আসতে বললো।
"
"
রাহয়ান এসে জিসানকে পেলো না,অনেকবার কলও দিলো কিন্তু জিসানের ফোন বন্ধ।রায়হান বুজতে পারছে,রোজ কিছু একটা করেছে।তাই রায়হান নিলয়কে কল দিলো।কিছুক্ষনের মধ্যে নিলয়ও চলে আসলো।নিলয়েরও অনেক ক্ষমতা আছে।ও একজন নামীদামী বিজনেস ম্যান। তাই ম্যানেজার এর সাথে কথা বলে হোটেলের সব সি সি টিভি ফুটেজ চেক করা শুরু করলো।আর পেয়েও গেলো।
"
"
জিসানকে রোজ হোটেলের একটা রুমে নিয়ে যাচ্ছে।জিসানকে দেখে বুজাই যাচ্ছে,জিসান জিসানের মধ্যে নেই।
"
"
রোজ ডিনারের সময় জিসানে জুসে কিছু নেশা জাতীয় মিক্সড করে দেওয়ার জন্যও আগেই ওয়েটারকে বলে রেখেছিলো।ওয়েটার টাকার লোভে তাই করলো।জিসান জুসটা কিছুটা খেয়েছে।খাওয়া কিছুক্ষন পরই মাথা ঘুড়াতে লাগলো।চিন্তা চেতনা লোপ পাচ্ছে জিসানের।ভাগ্যিস জুস পুরোটা খায়নি।তাই এখনো কিছুটা স্বাভাবিক রাখার জন্য চেস্টা করছে নিজেকে।
রোজ জিসানের হাত ধরে হোটলের রুমে নিয়ে হেলো।এই রুমটা রোজ মিস্টার & মিসেস জিসান আহমেদ নামে বুক করে আগেই রেখেছিলো।
"
"
"
জিসানকো রুমে নিয়ে রোজ এলোপাথাড়ি কিস করতে থাকে।কিন্তু জিসানের যেহেতু কিছুটা সেনস এখনো আছে,তাই ও বুজতে পারছে ওর সাথে কিছু একটা হচ্ছে।তাই জিসান রোজকে জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।আর নিজেও বেড এ পরে যায়।কিন্তু জিসান বুজতে পারছে নিজের উপর কোন্ট্রল আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলছে।নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না।জিসান বেড থেকে উঠে জেতে চাইলে,রোজ এসে বাধা দেয়।জিসানকে আবার ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয়। নিজেও জিসানের উপর উঠে জিসানের সার্ট খুলতে থাকে।
"
"
"
তুমি কি ভেবেছো জিসান তোমাকে ছেড়ে দেবো।আজ আমি তোমাকে আপন করেই নেবো।আজ তো তুমিও নিজেকে আটকাতে পারবে না আমাকে আদর করতে।
এসব বলছে আর একটা পৈছাশিক হাসি দিচ্ছে।
রোজ সার্টটা খুলে জিসানের বুকে কয়েকটা কিস করলো।জিসান বাধা দিতে গিয়েও বাধা দিতে পারছে না।
এদিকদিয়ে রোজ জিসানের আরো ক্লোজ জেতে নিলেই কেউ দরজা খুলে ভেতরে আসে।রোজ তাকিয়ে দেখে,দরজায় রায়হান ও নিলয় দাঁড়িয়ে আছে।অগ্নিময় চোখে রোজ এর দিকে তাকিয়ে আছে।রায়হান রোজকে ধাক্কা দিয়ে জিসান থেকে সরিয়ে ফেললো।রোজ ফ্লোরে গিয়ে পরলো।তখন নিলয় রোজকে টেনে দাঁড় করিয়ে কষে একটা চর মারে।
"
"
"
এই তুই কি সত্যি একটা মেয়ে।একটা মেয়ে এতোটা নির্লজ্জ কিভাবে হতে পারে।বলতো.....।ছি:....। আমার তোকে দেখে নিজেরি লজ্জা করছে,তোর মতো মেয়ে আমার ক্লাসমেট ছিলো।তুই মেয়ে নামে কলঙ্ক।
"
"
"
এর পর রায়হান ও নিলয় জিসানকে ডক্টর এর কাছে নিয়ে গেলে,ওকে স্বাভাবিক করতে।কয়েক ঘন্টা জিসান হসপিটালে ছিলো। একটু স্বাভাবিক হলেই জিসান বাসায় চলে আসে।সে রাতে তাই জিসান অনেক রাতে বাসায় আসে।ডক্টর রাতটা এখানেই থাকতে বলেছিলো।কিন্তু জিসান থাকতে রাজি হয়নি।তাই নিলয় ও রায়হান বাধ্য হয়েই জিসানকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে যায়।
"
"
"
সেদিন ঐরুমেও একটা ক্যামেরা লাগানো ছিলো।জিসানকে পরে ব্লাকম্যাল করার জন্যই ক্যামেরা লাগিয়ে ছিলো রোজ।কিন্তু ওর প্লান নস্ট হওয়ায় ও নতুন প্লান করলো।তাই ভিডিওটা কিছুটা এডিট করে তিশাকে পাঠিয়ে দিলো।
"
"
!
এ ছিলো জিসান ও তিশার বিচ্ছেদ হবার মুল করণ।
"
"
"
কিন্তু এই ভিডিও দেখার পরও তিশা জিসানকে সেদিনই ছেড়ে যায়নি,হয়তো জিসানের প্রতি ওর ভালোবাসার গভীরতাও বেশি ছিলো।তাইতো ওর বিশ্বাস করতে কস্ট হচ্ছিলো। জিসানকে বার বার জিঙ্গেস করতে চাইছিলো কি সত্য কি মিত্যা।কিন্তু পারনি। কোন না কোন কারনে।এক সময় ধৈর্যেরবান ভেঙ্গে পরে,ভালোবাসা আর সন্দেহ এর মধ্যে সন্দেহ জিতে যায়।
"
"বর্তমান.....
"
"
এসব ভাবতে ভাবতে জিসানের ও চোখ লেগে গেলো।
এ জেনো কতো বছরের শান্তির ঘুম।
জিসান আজই জেতে চাইছিলো তিশাকে আনতে,কিন্তু রাহয়ান নিশেধ করলো।কারন রুপকের গ্রামের ঠিকানা রায়হান ও জানে না।ও আজ ঠিকানা বের করে কাল সকালে যাওয়াই ভালো মনে করলো।আজ জেতে জেতে অনেক রাত হয়ে যাবে।জিসানকে অনেক কস্টে আটকাতে পারছে।
"
"
"
এদিক দিয়ে তিশার মনটা সকাল থেকেই বিচলিত করছে।নিলুর সাথেও তেমন কথা বলতে পারেনি।ক্লাসে ছিলো বলে।এরপর থেকেই ওর কিছুই ভালো লাগছে না।কেনো জানি মনটা আজ জিসানের জন্য ছটপট একটু বেশিই করছে।এমনতো না জিসানকে এতোদিন মনে পরেনি।মানুষটি কে ভুলতেই পারিনি,তাহলে না মনে করার কি আছে।কিন্তু আজ তাকে দেখতে খুব মন চাচ্ছে।কাল যদি আমি না বাঁচি তাহলে হয়তো মানুষটি কে না দেখেই চলে যেতে হবে।একটি বার তাকে দেখতে চাই।আল্লাহ কি আমার আশাটা পূরন করবে।
"
"
"
কিরে এতো কি চিন্তা করিস।~রুপকদা।
"
"
"
কিছুনা,কিন্তু তুমি এই সময় বাসায় কি করো।~তিশা।
"
"
"
এইতো হিসেবের খাতা টা বাসায় রেখে গেছি সকালে।তাই বাকি কাজ গুলো করতে পারিনি।কি আর করবো চলে আসলাম বাসায়।তুই বল তোর টোনাটুনি কেমন আছে।তোকে বেশি ঝালাচ্ছে না তো।রুপক তিশার পেটে হাত রেখে বলছে.....এই আমার টোনাটুনি তিশা মাকে বেশি জালিও না,তা হলে কিন্তু আমি তোমাকে একটুও আদর করবো না,আরতো মাত্র কিছুদিন।তার পরতো তোমার মামা বিশ্রাম করবে,আর আমরা গল্প করবো,খেলবো।কি বলো।এই মামুর সাথে খেলবে।
"
"
"
রুপকদা আমার কিছু হয়ে গেলে আমার সন্তানকে ওর বাবার কাছে দিয়ে দিও।আমি হয়তো জিসানকে শেষ দেখাও দেখতে পারবো না।জানি না কাল ভাগ্যে কি আছে।কিন্তু আমার সন্তানটাকে বাঁচিও। কোন সমস্যা হলে ডক্টর হয়তো আমাকে বাঁচাবার চেস্টা করবে।কিন্তু তুমি আমার সন্তানকে বাঁচাবার জন্য বলবে।
"
"
"
তুই এসব কেনো বলছিস।আল্লাহর উপর ভরসা রাখ।আল্লাহ সব ঠিক করে দেবে।আর আমার মনে হয় এখন জিসানকে জানানো দরকার সব।এই বাচ্চার উপর ওরও সমান অধিকার আছে।আমি বলি কি,তুই জিসানকে একটা কল করে দেখ ও কি বলে।
"
"
"
অনেক বার কল দিতে চাইছিলাম,কিন্তু সাহসি হয়নি আর।কে জানি কেমন রিয়েক্ট করে।
"
"
"
ভালোবাসিস ওকে,,,,,~রুপকদা।
"
"
"
কালও ভালোবেসে ছিলাম,আজও ভালোবাসি।কাল যদি বেঁচে থাকি ভালোবেসে যাবো।উনার প্রতি ভালোবাসা কখনো কম হয়নি আর হবেও না।শুধু কিছুটা রাগ তার উপর এর চেয়ে বেশি কিছু না।
"
"
পরের দিন......
আজ জিসান ও রায়হান রওনা দিলো তিশাকে আনতে।
দু পরিবারের সবাই অপেক্ষা করছে জিসানদের বাসায়।
আর এদিক দিয়ে তিশা ঘুম থেকে উঠার পরই ওর শরীল টা ঠিক লাগছে না,মনটাও বিচলিত করছে।ঠিকমতো খাবারও খায়নি।সকালে ২ বার বমিও করছে।শরীল দূর্বল তবুও পায়চারি করছে ঘরে।কেনো তার এমন লাগছে ও নিজেও জানে না।কেনো জানি হারানোর একটা ভয় কাজ করছে।তিশা মনে মনে ভাবছে বাড়ীর সবাই ঠিক আছে তো।মা-বাবা,রায়হান ভাই,জিসান......এরা সবাই ঠিক আছে।আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখো।তিশা এসব ভাবতে ভাবতে হেটে ঘরের বাহিরে জেতে নিলেই মাথাটা ঝিমঝিম করতে থাকে,মাথাটা ঘুড়িয়ে পরে জেতে নিলে দরজার পর্দাটা ধরে ফেলে তিশা কিন্তু তিশার ভার পর্দা টা নিতে না পাড়ায় ছিড়ে নিচে পরে যায় তিশা।আর ব্যাথাও পায় ভালো।
হঠাৎ কিছুর শব্দে রুপা দেখতে আসে কি পরেছে।এসে দেখে তিশা ফ্লোরে পরে আছে বেহুশ হয়ে।রুপা তিশা আপুওওওও..... বলে চিৎকার করে।ঘরের সবাই চিৎকার শুনে দৌড়ে আসে।রুপক তিশাকে এই অবস্থায় দেখে ভয় পেয়ে যায়।তারাতারি তিশাকে পাজা কোলে নিয়ে গাড়ীতে বসে সবাই হসপিটালের জন্য।গাড়ীতে ওর হাত পা ঢলে গরম করার চেস্টা করছে।কারন কেমন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তিশা।
চলবে......
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNiA
part-37
রুপক হসপিটালে বসে আছে।পাশে ওর বাবা মা,সুরভী ও রুপাও আছে।সবাই ডক্টর এর জন্য অপেক্ষা করছে।ডক্টর এখনো কিছু জানায়নি।তাই খুব টেনশনে আছে।কালও তো মেয়েটা ভালোই ছিলো।আজ কি থেকে কি হয়ে গেলো।
"
"
"
রুপক আমার মনে হয় তিশার পরিবারকে এখন বলা উচিৎ। আবার দেরি না হয়ে যায়।রুকাইয়া বেগম।
"
"
"
হুমমম ঠিক বলছো,মা।আমি খবর দিচ্ছি এখনেই।
এমন সময় ডক্টর এলো।
"
"
"
তিশা ঠিক আছে ডক্টর।দেখুন আমি আগেই বলেছি,পেসেন্ট এর অবস্থা এমনেই ভালো ছিলো না।তার উপর এমন এক্সিডেন্ট।পেসেন্ট এর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।তাই আমরা আর দেরি না করে তার সিজারিয়ান করতে চাইছি।এমনেই পেসেন্ট এর জন্য রিস্ক আর রিস্ক নেওয়া ঠিক হবেনা।আর পেসেন্ট এর হাসবেন্ড কই।আমাদের কিছু কাগজে সাইন লাগবে।আর তাকে বলতে হবে আমরা কাকে বাঁচাবো। আমরা মা এবং বেবি দুজনকেই বাঁচাবার চেস্টা করবো।কিন্তু সেটা মুশকিল।তাই পেসেন্ট এর হাসবেন্ড এর সাথে কথা বলা জরুরী।
প্লিস তারাতারি করুন।আমাদের হাতে একদমই সময় নেই।আমরা কি করবো বলুন।
আমরা কাকে বাঁচাবো।
"
"
"
রুপক পেপারগুলো হাতে নিয়ে কিছু বলতে যাবে....তার আগেই।
"
"
"
তিশাকে......তিশাকে বাঁচান।বাচ্চা না বাঁচলেও চলবে।যদি কোনদিন বাচ্চা না হয় তাহলেও চলবে,আমার শুধু তিশা চাই।আপনে বুজতে পারছেন ডক্টর।
"
"
কে আপনে....পেসেন্ট এর কি হন।
"
"
আমি পেসেন্ট এর হাসবেন্ড, আর আমার কথাই ফাইনাল।রুপকের কাছ থেকে পেপারগুলো নিয়ে সাথে সাথে সিগনেচার করে দিয়ে দেয়।আমার ওয়াইফের কিছু হলে আমি কিন্তু কাউকে ছাড়বো না।জিসানের চোখগুলো লাল হয়ে গিয়েছে।ডক্টর নিজে ও কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো জিসানকে দেখে।
দেখুন আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেস্টা করবো,বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করুন,কারন বাঁচানোর মালিক তিনি।আপনারা রক্তের ব্যবস্থা করুন,আমরা অপারেশন শুরু করছি।
"
"
"
রুপক আশ্চর্য হয়ে জিসানকে দেখছে।জিসানের চেহারা বলে দিচ্ছে ওর ভেতরের যন্ত্রনা।আর তিশাকে হারাবার ভয়।জিসানকে দেখেই রুপক চিন্তে পেরেছে।তিশার কাছে জিসানের অনেক ছবি ছিলো,যা প্রতি রাতে তিশা বিছানার এক পাশে রেখে ঘুমাতো।এতে নাকি জিসানের পাশে থাকার অনুভূতি হতো।কি অদ্ভুত ভালোবাসা।
"
"
"
ভেতরটা পুরে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে,সব কিছু পেয়েও জেনো সব হারিয়ে ফেললাম মনে হয়।দাঁড়িয়ে থাকার মতো শক্তিও জেনো পাচ্ছি না।হঠাৎ করে পরে জেতে নিলাম।~জিসান।
"
"
"
জিসানকে দেখেই বুজা যাচ্ছে ও আর সহ্য করতে পারছে না।ও পরে জেতে নিলো।আমি আর রায়হান ওকে ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিলাম।আর আমিও পাশে বসলাম।আল্লাহ কে ডাকো জিসান।আল্লাহ চাইলে সব ঠিক হয়ে যাবে।তোমাকে একটি বার দেখার জন্য কাল থেকে খুব ছটফট করছিলো মেয়েটা।তখন বুজতে পারিনি কেনো।এখন বুজলাম......।~রুপক।
"
"
"
জিসান শুধু শুনছে, কিন্তু কোনও কথা বলছে না,চোখ গুলো শুকিয়ে গেছে।মনে হয় চোখগুলো অনেকটা বেঈমান হয়ে পরেছে।তাইতো আজ এই কঠিন সময়ও কোন জল দেখা যাচ্ছে না।
"
"
"
এতোক্ষন এ তিশা ও জিসানের পরিবার ও এসে পরেছে।খবর পেয়ে জিসানের ডক্টর ফ্রেন্ড নাঈম দেশের বেস্ট গাইনি ডক্টর কে সাথে করে এসে ওটিতে চলে গেলো।কারন রাস্তা থাকা অবস্থায়ই তিশার ডক্টর এর সাথে কথা বলেছে তারা।
"
"
"
ওটির বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে সবাই।সবার চিন্তা হচ্ছে।আল্লাহর কাছে সাহায্য চাচ্ছে।
"
"
"
জিসানের মার সব থেকে বেশি চিন্তিত। কারন উনি ভালো করে জানে তিশার কিছু হলো ছেলেকেও হারাতে হবে।এবার আর ছেলেকে হয়তো বাঁচাতে পারবে না।এসব চিন্তা করতে করতে পেসার লো হয়ে যাচ্ছে তার।
"
"
"
তিসাকে রক্ত রুপক আর নিলয় দিয়েছে।দুজনের রক্তের গ্রুপ মেচ হয়ে গিয়েছিলো।তাই আর খুঁজতে হয়নি।
"
"
"
সবাই নিশ্চুপ।ঠিক তখনি কারো কান্নার শব্দ পাওয়া গেলো।সবাই ওটির দিকে তাকালো।একটা নার্স একটা সাদা কাপড়ে একটা বাচ্চাকে পেচিয়ে বের হলো।বাচ্চাটিকে সবার সামনে এনে বললো।পেসেন্ট একটি ছেলে বাচ্চা জন্ম দিয়েছে।সবাই বাচ্চাকে দেখে স্থব্ধ হয়ে গেলো।ঠিক জেনো জিসান।জিসানের মা সবার প্রথমে বাচ্চাটিকে কোলে নিলো।এর পর সবাই নিতে চাইলে, নার্স বাধা দেয়।কারন বেবিটার কিছুটা সমস্যা আছে তাই বেবিকে কিছুদিন আইসিইড কেয়ারে রাখা হবে।কারন বেবিটা প্রি-ম্যাচিওর,সময়ের আগেই চলে এসেছে।তাই বেবি কে নার্স নিয়ে চলে গেলো।কিন্তু জিসানের কোন রিয়েকশন নেই।একটি বারও বাচ্চার দিকে তাকায়নি।মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।চিন্তা শুধু এক জায়গায় এসে শেষ হচ্ছে.... তিশা।
"
"
"
কিছুক্ষন পর ওটি থেকে নাঈম ও বের হয়ে এলো।নাঈমকে দেখে জিসান দৌড়ে ওর কাছে গেলো।কিন্তু কিছু জিঙ্গেস করার সাহস জেনো পাচ্ছিলো না।গলা থেকে কথা বের হচ্ছে না।গলাটা একদম শুকিয়ে গেছে।
কিন্তু নাঈম বুজতে পারে।সামনে এসে জিসানের কাধে হাত রেখে....তিশা আপাতোতো আশংকা মুক্ত।কিন্তু তবুও জ্ঞান ফিরা না পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছিনা।কিছুক্ষন পর কেবিনে সিফট করছি তুই দেখতে পারবি।
"
"
"
তিশার হাতটা ধরে বসে আছে।কিছুক্ষন আগেই তিশাকে কেবিনে সিফট করা হলো।জিসানও সাথে সাথে এলো কেবিনে,জিসানের কাছে মনে হচ্ছে কতো যুগ পরে আজ তিশাকে দেখতে পেলো।তিশাকে ছাড়া একএকটা দিন বছরের মতো লেগেছিলো জিসানের।তিশার পাশে বসে একটা গভীর কিস দিলো কপালে।এতোদিন পরে জিসানের প্রাণ টা জেনো নিজের হাতে পেলো মনে হয়।কিস করতে গিয়ে দুফোটা চোখের জল তিশার গালে পরলো।তিশা বেহুশ, এখনো জ্ঞান ফিরে নাই।তাই হয়তো জিসানের এই কস্টটা দেখতে পায়নি। আর তখন থেকেই তিশার হাতটা ধরে এমন ভাবে বসে আছে মনে হয় ছেড়ে দিলেই আবার তিশাকে হারিয়ে ফেলবে।তিশার হাতে নিজের কপাল রেখে, এবার উঠ 'জান' আর কস্ট দিছনা আমায়।আমি যে আর সইতে পারছি না।আমার ভেতরটা পুরে যাচ্ছে।প্লিস তিশা উঠ।তুই ছাড়া যে আমি শুন্য.......।প্লিস!!!!
"
"
"
জিসানকে ছাড়া আর কাউকে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমিত নেই।তাই সবাই বাহিরে থেকেই আয়না দিয়ে তিশাকে দেখছে।
"
"
"রুপক হসপিটালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।নিজেকে দোষী লাগছে তার।কারন সে তিশার খেয়াল রাখতে পারেনি ভালো মতো।যদি রাখতো তাহলে তিশার আজ এ অবস্থা হতো না।এমন সময় রায়হান পাশে দাঁড়ালো।তিশা তোদের কাছে ছিলো এ কথা আমাদের কি একবার বলা উচিৎ ছিলো না।
"
"
"
না, প্রয়োজন মনে করেনি।~রুপক।
"
"
"
মানে,,,,এটা কেমন কথা বলছিস।তিশা আমার বোন, আমাদের জানার অধিকার আছে।
"
"
"
অধিকার!ঠিক বলেছিস তোরা ওর উপর শুধু অধিকারই খাটাস।ওর নিজের ভালো বন্ধ কখনো জানতে চাসনি।তাইতো ওর এমন কস্টের সময় ও তোকো স্মরন না করে আমাকে করেছে।ভাবতে পারোস।আমি কে ওর!!!আরে এতো বছর ধরে ওর সাথে দেখা পর্যন্ত হয়নি।কিন্তু সে দিন ওর সবথেকে চরম বিপদে আমাকে মনে করেছে।তার সাথে আমাকে কসম দিয়েছে কাউকে বলতে না।তুই বল,যে মেয়ে ওর সব আপমজনকে ত্যাগ করে আমাকে বিশ্বাস করেছে তার বিশ্বাস কেমনে ভঙ্গ করি।আর তুইতো ওর ভাই এতো সামনে থেকে ওর কস্টগুলো কেনো বুঝিসনি।নাকি বন্ধুর হাতে বোনকে তুলে দিয়ে নিজের সব কর্তব্য শেষ বলে মনে করেছিস।~রুপক।
"
"
"
এমন কিছুই না,তিশা আমার কলিজা।আমি ওকে কস্টে দেখতে পারবো না কোনদিন।ছোটকাল থেকে আগলে রেখেছি সব কিছু থেকে।সামান্য ভুল বুঝাবুঝিতে ও এমন কাজ করবে ভাবতেও পারিনি।একটা দিন শুধু অপেক্ষা করতো ও সব সত্য জানতে পারতো।কিন্তু ও বোকার মতো এমন কাজ করবে,আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।
"
"
"
ও বোকা না রায়হান।ও ইমোশনাল টাইপ মেয়ে,তোদের বুজা উচিৎ ছিলো।জিসানকে খুব বেশি ভালোবাসে,ওকে ছেড়ে এসে তিশাও খুব সুখী ছিলো না।প্রতি রাতে ওর কান্নার শব্দ পেয়েছি আমরা।হাসতে ভুলে গিয়েছিলো মেয়েটা জানোস, কতো কস্টে ওকে স্বাভাবিক করেছি।
"
"
আমি ওকে চিনি, কিন্তু জিসান ওকে ধোকা দেয় নি।এর পর সব কিছু রায়হান খুলে বলে রুপককে।
"
"
রুপক সব শুনে,আমিও বুজতে পেরেছিলাম কোথাও কোনো গন্ডগোল আছে।তিশার বুজার সমস্যা আছে।কিন্তু ওকে বললে আরো বেশি টেনশন করে।কান্নাকাটি করে।তাই সব আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি।
'
"
দুজনেই নিরব।আসলে বলার কিছু নাই এখন আর।
"
"
প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর আমার ঙ্গান ফিরেছ।আর চোখ খুলে দেখি কেউ আমার হাতটা শক্ত করে ধরে হাতের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে।আমার বুজতে সময় লাগলো না এটা আর কেউনা আমার জিসান।আমি আস্তে করে আমার হাতটা সরাতে চাইলাম কিন্তু আমার হাত নাড়ার সাথে সাথে জিসান ঘুম ঘুম চোখে আমার দিকে তাকালো।দেখে বুঝাই যাচ্ছে সাহেব আমার অনেকরাত ঘুমায়নি,তাই হয়তো ক্লান্ত হয়ে এখানে শুয়ে পরেছে।চোখগুলো লাল হয়ে আছে।চুলগুলো উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে।মুখটা শুকিয়ে গেছে।
"
"
"
আমি চোখ খুলে দেখি তিশা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।ওর ঙ্গান ফিরে দেখে আজ আমি প্রাণ ফিরে পেয়েছি।ওর গালটা দুহাত দিয়ে ধরে ওর কপালে,গালে,আর ঠোঁটে একটা করে ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলাম।ওর কপালের সাথে নিজের কপাল লাগিয়ে কতোক্ষন ছিলাম জানি না।আর চোখ দুটো জেনো আজ আর কোনো কথা শুনছে না।~জিসান
"
"
"
এতোদিন পর তার স্পর্শ পেয়ে কি যে শান্তি লাগছে।তা হয়তো বলে বুঝাতে পারবো না।তার চোখ দিয়ে যে অশ্রুগুলো আমার গালে পরছে,তাও বলে দিচ্ছে তার ভালোবাসার কথা।এটাই আমার জিসান, হে এই মানুষটি শুধু আমাকে ভালোবাসে আর কাউকে না।
"
"
"
কিছুক্ষন পর উনি আমাকে ছেড়ে বাহিরে চলে গেলেন।আর আমি তার যাওয়ার পথে তাকিয়ে রইলাম।এর পর সবাই এক এক করে আমার সাথে দেখা করলো।এর পর রায়হান ভাই আমার পাশে বসে,আমাকে হালকা করে জরিয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগলো।আমি মনে হয় এই প্রথম আমার এই ভাইকে কাঁদতে দেখলাম।খুব খারাপ লাগলো।রায়হান ভাই এক এক করে সব কিছু খুলে বললেন।জিসান কেনো আমার থেকে দূরে দূরে ছিলো,কতোটা টেনশনে ছিলো সে কয়দিন।সব আমি বুজতে পারলাম।রায়হান ভাইকে জরিয়ে কাঁদতে লাগলাম।জিসান এ কয়েকমাস কি কস্টে ছিলো, আমাকে খোঁজার জন্য কি কি করলো সব বললো।এ আমি কি করলাম ভাইয়া।আমার একবার উনাকে জিঙ্গেস করা উচিৎ ছিলো।তাকে কিছুই বলার সুযোগও দিলাম না।বিনা কোনো দোষে কতো বড় শাস্তি দিলাম আমি ভাইয়া।জিসান হয়তো আমাকে মাপ করবে না।
"
"
"
ও তোকে অনেক ভালোবাসে।তাই বেশিদিন রাগ করে থাকতে পারবে না দেখিস,তুই একটু ধের্য্য ধরিস।নিরাশ হইস না।আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।কথা বল,ওর সাথে।
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
"
"
"
রায়হান বাহিরে গিয়ে জিসানকে পাঠালো,জিসান এসে তিশার সামনে দাঁড়িয়ে রইলো কিন্তু তিশার দিকে একটিবারও তাকালো না।
"
"
আমার কাছে এসে একটি বসবেন, প্লিস।~তিশা।
"
"
জিসান তিশার পাশে এসে বেডের উপর বসলো,তিশা অধোশোয়া হয়ে বসে ছিলো।তাই জিসানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে তিশা শক্ত করে জিসামকে জরিয়ে ধরলো।কিন্তু জিসান ধরেনি তিশাকে।
pls,forgive me.pls....আমি না বুঝে আপনাকে অনেক কস্ট দিয়ে ফেলছি।প্লিস, ক্ষমা করে দিন।প্লিস জিসান।তিশা কান্না করতে করতে জিসানের সাদা সার্টটা ভিজিয়ে ফেলছে।প্রচুর কান্না করাতে পেটের সেলাইও ব্যাথা করছে।কিন্তু তিশা থামছে না।তিশার কস্ট আরো বেরে গেলো,কারন জিসান ওকে ধরেনি।
"
"
কিছুক্ষন পর নাঈম আর বড় ডক্টরস রা কেবিনে ডুকে।ওদের এভাবে দেখে ডক্টরস রা চলে জেতে চাইলে জিসান বাধা দেয়।দাড়া নাঈম।
জিসান তিশার হাতটা ধরে তিশা থেকে নিজেকে জোড়করে ছাড়িয়ে নেয়।কারন তিশা জিসানকে ছাড়ছিলো না।এর পর ডক্টরসরা তিশাকে দেখে চলে যায় বেবিকে দেখতে।জিসানও নাঈম এর সাথে চলে যায়,বেবিকে দেখতে।
"
"
হসপিটালে আটদিন থাকতে হয়। এই আটদিনে জিসান তিশার সাথে একটা কথাও বলে নি।এর পর তারা ঢাকায় রওনা দেয়।জিসানের এমন আচরনের কারনে তিশার মা তিশাকে আর বেবিকে নিয়ে জেতে চাইলো কিন্তু জিসান দেয়নি।তাই কেউ আর কোনও কিছু বলার সাহস পায়নি।
চলবে.....
#ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
Writer-TaNiA
part-38+39
দেখতে দেখতে ছয়টা মাস কেটে গেলো।ঈশান ও এখন আগের থেকে একটু বড় হয়েছে। জিসান ও তিশার ছেলের নাম ঈশান রাখা হয়েছে।সে দিন হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার সাতদিন পরই আকীকা দিয়ে ঈশানের নাম করণ করা হয়েছে।এই ছয়মাসে অনেক কিছু বদলে গেছে।তিশা আসার পর বাড়ীর সবাই কিছুটা রেগেছিলো,এভাবে কাউকে কিছু না বলে চলে যাবার জন্য,ঈশানের কথা লুকাবার জন্য।কিন্তু আস্তে আস্তে ঈশানকে পেয়ে সবাই ভুলে গেলো সব।
"
"
"
"
কিন্তু একজন মানুষ এখনো কোনো কিছু ভুলেনি।আর সে হলো জিশান।জিশান তিশার দেয়া কস্ট গুলো এখনো ভুলেনি,তাইতো তিশার প্রতি ওর অবহেলাটা বেরে গেছে।তিশাকে দেখেও না দেখার মতো থাকে।জিসানের এই অবহেলাটা তিশাকো খুব পোড়ায় ভেতরে।কিন্তু কাউকে বলতো পারেনা।এমন নয় জিসান তিশাকে ভালোবাসে না।ভালোতো এখনো বাসে আগের মতো,কিন্তু প্রকাশের ধরনটা বদলে গেছে।এই তো সেদিনের কথা।
"
"
"
"
ঈশানকে দেখতে কিছু আত্মীয় এসেছিলো।তাদের মুখে তো তিশার কথাই লেগে আছে।স্বামী সংসার ফেলে যে মেয়ে এতো দিন কই না কই ছিলো।এই মেয়েকে কিভাবে এতো সহযে ঘরে তুললো জিসান।আর জিসানের মা, তুমি বা কিছু বললে না কেনো।
তিশার শ্বাসুড়ী ভালো করেই বুজতে পারলো এরা শুধু ঈশানকে দেখতে আসেনি,সুযোগ বুজে আপমানও করতে এসেছে।তাই জিসানের মা কথা বাড়াতে চায়নি।অন্যকোনো প্রসঙ্গ তুলতে চাইলে।কিন্তু বলেনা কিছু মানুষের খেয়ে দেয়ে কাজ নাই।অন্যের সংসার নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকে তারা।নিজের সংসার জাহান্নামে যাক,তাতে কি।
"
"
"
"
ঠিক সে সময় জিশান এসে হাজির তাদের সামনে,তো কেমন আছেন আপনারা।নিশ্চই আমাকে নিয়ে আলোচনা করছেন।(বাড়ীতে এদের দেখে নিশু কল করে জিসানকে।নিশু ভালো করেই বুঝতে পারছিলো,যারা কোনদিন খোঁজ খবর নেয়নি,এমন আত্মীয় হঠাৎ উদয় হয়েছে।নিশ্চই কোন না কোন মতলবে)
"
"
"
আরে কি বলোস জিসান, আমরা তোকে নিয়ে কেনো আলোচনা করবো,আমরা তো তোর গুণবতী বউর কথা বলছি।এটা বলেই সবাই হেসে উঠলো।
"
"
"
জিসান একবার তিশার দিকে খেয়াল করলো,তিশা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।তিশার চোখের কোনের জলটা আর কেউ দেখুক বা না দেখুক জিশান ঠিকই দূর থেকে দেখতে পরেছে।
"
"
"
একই কথা আন্টি,,,,, আমি আর আমার বউতো আলাদা না।আর শুনুন বউতো আমার তাই তাকে কি বলবো,বা কি করবো সেটা আমার উপরে ছেড়ে দিন।আমার বউকে নিয়ে আপনাদের এতো মাথা ঘামানোর প্রয়োজন তো আমি মনে করি না।বউ যেহেতু আমার তাই তার ভুলভাল সব ঠিক করার দায়িত্ব ও আমার।আপনাদের টেনশন করতে হবে না।আপনারা মেহমান হয়ে এসেছেন মেহমান হয়ে থাকুন।আমার পরিবারের কোন বিষয় নাক না গলালে খুশি হবো।
"
"
"
এসব কথার মাঝে ঈশান কান্না করে উঠে।তখন জিসান ঈশান কে কোলে নিয়ে তিশাকে উদ্দেশ্য করে বলে,ঈশানের মনে হয় ক্ষুদা লাগছে,ওকে নিয়ে গিয়ে খাওয়া।তিশা তখন ঈশানকে কোলে নিয়ে চলে যায় রুমে।
"
"
মেহমান গুলোও রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে যায়।জিসানের মাও হাফ ছেড়ে বাঁচে।
"
"
এদিক দিয়ে তিশা ভাবতে থাকে,কি আশ্চর্য!!, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমি এখনো জিসানকে চিন্তে পারিনি।নিজে অবহেলা করবে,অপমান কারবে অথচ কেউ আমাকে কিছু বললে,তা উনি সহ্য করবে না।নিজে কস্ট দেবে,কিন্তু অন্য কারো কাছে আমাকে ছোট হতে দেবে না।এ কেমন ভালোবাসা জিসানের।
"
"
"
"
হসপিটাল থেকে আসার পর থেকেই জিসান আমার সাথে হ্যা বা না ছাড়া কোনও কথা বলে না।আগের মতো আমাকে বকেও না আবার আদরও করে না।এমনকি রাতে আমার সাথে এক বিছানায় ঘুমায়ও না।জিসানের রাত কাটে সোফায় আর আমার কাটে ঈশানের সাথে বিছানায়।এই ছয় মাসে নিজ থেকে অনেকবার চেস্টা করেছি উনার কাছে আসতে কিন্তু প্রতিবারই কস্ট পেয়েছি।তবুও ধের্য্য হারায়নি।এভাবেই চলচিলো,,,,কিন্তু
একদিন মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে উঠে দেখি জিসান নেই সোফায়।তাই আমি উনাকে দেখতে বারান্দায় গেলাম।উনি বারান্দায় রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে সিগেরেট টানছে।আমি সব ভয়,লাজ স্মরম রেখে তাকে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরি।
"
"
"
কেনো এমন করছেন আমার সাথে, আমাকে বকুন, মারুন তবুও আমাকে এভাবে দূরে সরিয়ে রেখেন না। প্লিস জিসান।এবার তো ক্ষমা করুন।আমি আর কখনো এমন করবো না।আমার সাথে কথা বলুন জিসান।আপনার এই চুপ থাকা আমি যে আর নিতে পারছিনা।প্লিস আমার সাথে কথা বলুন।আমি উনার পিঠে মাথা রেখে কাঁদছি। ঠিক তখনি উনার বুকের সামনে থাকা দুটো হাতের মধ্যে একটা হাত ধরলো খুব শক্ত করে।এতো দিন পর এই প্রথম উনি আমার হাতটা ধরলেন।
"
"
"
জানিস তিশা তুই যাবার পর আমি এর থেকেও বেশি যন্ত্রনা ফিল করেছি।প্রতিটা রাত আমার নির্গুম কেটেছে।কতো রাত চিৎকার করে কেঁদেছি জানি না। শুধু এই ভয় পেতাম আমার তিশার কিছু হয়নি তো।ও ঠিক আছে তো।আমার ভালোবাসায় এমন কি ভুল ছিলো যার কারনে তুই আমাকে ছেড়ে জেতে বাধ্য হলি।আমি ভাবতাম তুইও আমাকে ভালোবাসিস।কিন্তু আমার সব ধারনাই ভুল ছিলো,তুইতো কখনো ভালোবাসিসই নি আমাকে। শুধু বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছিস স্বামী নামের এই আমাকে।
"
"
"
আমি জিসানের সামনে এসে উনার গালটা আমার দুহাতে আবদ্ধ করে, আমি আপনাকে ভালোবাসি জিসান।আর এটা মিথ্যা না।শুধু স্বামী বলে আপনাকে মেনে নিয়েছি,এটা সত্য না,আমি আপনাকে ভালোবাসি,ভালোবাসি বলে আপনার সাথে থাকতে চাই,ভালোবাসি বলে আপনার সাথেই মরতে চাই।আমার অস্তিত্বে আপনে মিশে আছেন,আপনাকে ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারিনা।
আমি কথাগুলো বলার সময় জিসান আমার দিকে কেমন ভাবে জেনো তাকিয়ে ছিলো,উনার আজকের চাওনী আমার কাছে খুব অচেনা লাগছিলো।উনি একটা তাচ্ছিল্য হাসি দিলো আর আমাকে তার কাছ থেকে সরানোর জন্য একটা ধাক্কা দিলো।আমি তাল সামলাতে না পেড়ে নিচে ফ্লোরে পরে গেলাম।আর উনিও আমার সামনে হাটু গেড়ে বসলো।হাতে আরো একটা সিগারেট ধরিয়ে একটা টান দিলো,আর আমার দিকে তাকিয়ে বললো।
"
"
"
জানিস ভালোবাসার মুল মন্ত্র কি।""বিশ্বাস ""....যাকে আমরা ভালোবাসি তাকে নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করতে শিখতে হয়।আর তুইতো আমাকে বিশ্বাস ই করিসনা।ভালোবাসা তো দূরে থাক।যদি বিশ্বাস করতি তাহলে আমাকে এভাবে ছেরে চলে জেতে পারতি না।আমাকে কস্ট দিতে পারতি না।একটা সত্য কথা বলতো,তোর মনে হয়নি,আমার অপরাধ সম্পর্কে আমাকে অবগত করা।আরে ফাঁশির আসামী কেও একবার সুযোগ দেয়া হয় কিছু বলার।তাহলে আমি কেনো পেলাম না।বলতো।আমার ভেতরটাও পুড়েছে জানিস কেমনে,ঠিক এভাবে....
জিসান তিশার পা টা শক্ত করে ধরে জলন্ত সিগারেট টা লাগিয়ে দিলো।শুধু একবার না,একই জায়গায় তিনবার জলন্ত সিগারেট টা ধরে রেখেছিলো।
"
"
"
তিশা চিৎকার দিতে চেয়েও চিৎকার দিতে পারেনি,ঈশান উঠে যাবে বলে।তাই দুহাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরেছে,সহ্য করতে না পেরে।চোখ দিয়ে পানি তিশার অনোবরত পরছে।কিন্তু তবুও জিসানকে কিছু বলছে না।
"
"
"
আর কখনো আমার কাছে আসার চেস্টা করবি না,এখন যেমন আছিস তেমনি থাকতে হবে তোকো । এভাবেই থাকতে হবে বাকি জীবন আমার সাথে।তুই এখান থেকে কখনো মুক্তি পাবিনা।জিসান উঠে ওয়াসরুমে চলে গেলো।আর তিশা অসহ্য যন্ত্রনায় ছটফট করতে লাগলো।নিজে উঠে দাঁড়াতেও পারছে না।খুব কস্টে দেওয়াল ধরে উঠে দাঁড়ালো। আস্তে আস্তে বিচানায় গিয়ে শুয়ে পরলো।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু ফজরের আজানে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।তাই উঠে নামায পরতে বসলো।তিশা যাবার পর জিসানও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরতো।তাই জিসানও উঠে নামায পড়ে আবার ঘুমিয়ে পরে।তিশা ও উঠে ঈশানের পাশে শুয়ে পরে।
"
"
"
"
সকালে একটু দেরি করেই জিসানের ঘুম ভাঙ্গে,কাল রাত দেরি করে ঘুমিয়েছিলো বলে।আজ উঠে তিশা ও ঈসান কে রুমে দেখতে পেলো না।হয়তো উঠে গেছে।জিসানও ফ্রেস হয়ে নিচে চলে গেলো।ঈশানের সাথে বসে কিছুক্ষন খেলা করে,নাস্তা করে নিলো।কিন্তু ঘুম থেকে উঠে এই পর্যন্ত তিশাকে একটিবারও আর দেখলো না।তাই হতাশ হয়ে জিসান অফিসে চলে গেলো।তিশা আজ রান্না ঘরেই ছিলো,ইচ্ছা করেই জিসানের সামনে আসেনি।কাল রাতের ঘটনা স্মরণ হলে তিশার বুকটা এখনো কেপে উঠে।জিসানের এমন একটা রুপ তিশা আগে কখনো দেখেনি।কাল তিশা জিসানের চোখে কোন দয়া বা মায়া দেখেনি নিজের প্রতি,দেখেছে শুধু অভিমান আর রাগ ।
"
"
"
"
ঈশান তানজিলার কাছেই বেশির ভাগ থাকে।শুধু খাওয়া আর রাতে ঘুমানোর সময় ঈশানকে পায় তিশা।তা না হলে সারাদিন ঈশান কখনো তানজিলা ,কখনো দাদা দাদী ,বা নিশুর কাছেই থাকে।মাঝে মধ্যে তিশার মন চায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দিতে।কারন ও ছেলেকে মাজে মধ্যে খুঁজতে বের হতে হয়।সারাদিন যার কাছেই থাকুক না ঈশান,জিসান এলে আর কেউ নিতে পারেনা।জিসান বাসায় এসেই আগে ঈশান কে খুঁজে। আর ঈশানও আজকাল বাবাকে ভালোই চেনে।মাজখান দিয়ে আমি পর হয়ে গেলাম।ঈশান সবার কাছে থাকতে পারে বলে ভালোই হলো,কারন আজ শরীল খুব খারাপ লাগছে।পায়ের পুড়ার ব্যাথায় জ্বর আসছে মনে হয়।তাই ভাবীর কাছে ঈশান কে দিয়ে কিছুক্ষন শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষন পর কাপানি দিয়ে জ্বর আসছে।জ্বরের ঘরে কিছুই আর মনে নেই।
"
"
"
"
"
ঈশানকে খাইয়ে দাইয়ে বিকেলে ভাবীর কাছে দিয়ে এসেছিলো তিশা,এখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে।জিসানও কিছুক্ষন পর চলে আসবে।আর এসেই ছেলেকে খুঁজবে। তাই তানজিলা ঈশানকে কোলে নিয়ে তিশার রুমে আসে।এসে দেখে তিশা ঘুমিয়ে আছে।
এই মেয়ে এই ভরা সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে আছে কেনো।এই দিক দিয়ে তো নামাযের সময় ও চলে যাচ্ছে।তাই তানজিলা তিশার কাছে এসে ওকে উঠানোর জন্য হাতটা ধরে ঝাকাতে নেয়।দেখে তিশার গা পুরে যাচ্ছে জ্বরে।তানজিলা তারাতারি ওর শ্বাসুড়ী কে ডেকে আনে।নিশুও চিল্লাচিল্লির শব্দ পেয়ে দৌড়ে চলে আসে।তারাতারি ডক্তর কে ফোন দেয়।কিছুক্ষন পর জিসানদের ফ্যামিলি ডক্তর চলে আসে।ডক্তর চেক করার সময় তিশার পায়ের দিকে চোখ যায়।পুড়া জায়গাটাতে ফোসকা পরে গেছে।খুবই খারাপ অবস্থা। ডক্তর সবাইকে জিঙ্গেস করলো,এটা কিভাবে হয়েছে।কিন্তু্ু উপস্থিত কেউ কিছু বলতে পারেনি।তখন ডক্তর পুড়া জায়গাটা ভালো করে ড্রেসিং করে দেয়,আর বলে এটার যন্ত্রনার কারনেই জ্বর আসছে।জ্বর, ব্যাথা আর শরীল দূর্বল হবার কারনে তিশা জ্ঞান হারায়।ডক্তর ঔষুধ দিয়ে তিশার শ্বাসুড়ীর সাথে কথা বলতে বলতে নিচে নামছিলো।জিসান ও তাওহিদ ঐসময় বাসায় প্রবেশ করে।আর ডক্তরকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
"
"
"
মা কে অসুস্থ, ঈশান ঠিক আছে তো।~জিসান।
"
"
জিসান বাবা ঈশান ঠিক আছে।আমি তো তোমার বউকে দেখতে এলাম।
"
"
কেনো?তিশার কি হইছে।
"
"
আগে বলো তোমার বউয়ের পা এভাবে কিভাবে পুড়লো।খুবই খারাপ অবস্থা। ব্যাথার কারনে জ্বর এসে পরেছে।আর খুব দূর্বলও শরীল।সারা দিন মনে হয় কিছু খায়নি।তুমি একটু খেয়াল রেখো।রাতও যদি জ্বর না কমে,তাহলে হসপিটাল এ নিয়ে জেতে হবে।আমি এখন আসি।
"
"
"
"
ডক্তরের কথাগুলো শুনে আমি এক মিনিটও দাঁড়ায় নি,দৌড়ে রুমে চলে আসি।এসে দেখি তিশা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।নিশু জল পট্টি দিচ্ছে,আমি ওকে ইশারা করায় ও চলে গেলো।আমি তিশার পাশে বসে ওকে জরিয়ে ধরলাম।ওর গালে, কপালে ঠোটে পাগলের মতো কিস করলাম।তিশার শরীল গরম হয়ে আছে জ্বরে।আমি সত্যি সরি জান।আমি এমন চাইনি।তুই এতোটা কস্ট পাবি ভাবিও নি, সরি জান,সরি.....।সরি বলে তিশার কপালে একটা ডিপ কিস করে।হয়তো তিশা জাগনা থাকলে এসব কিছুই করতো না জিসান।
এদিক দিয়ে জিসান তিশার শরীল থেকে কাপড়গুলো খুলে পুরো শরীল মুছে দেয়।তিশাকে এতোদিন পর এতোটা কাছে পেয়ে জিসান কিছুটা ঘোরে চলে জেতে নেয়,কিন্তু পরমুহুর্তে নিজেকে সংযত করে ফেলে।তিশার পাটা দেখে।পা টার মধ্যে ও একটা কিস দেয়।
জিসান তিশাকে আজও আগের মতো ভালোবাসে।কিন্তু আজ অভিমানটা ভালোবাসা থেকে বেশি জায়গা করে নিয়েছে।তাই তিশাকে কস্ট দেয়, কিন্তু এতে জিসানও খুব কস্ট পায়।তা হয়তো বুঝতে দেয়না তিশাকে।তাতে কি!!!জিসানের ভালোবাসা কম হবে না তিশার প্রতি।তিশাকে হারানোর ভয়টা জিসান এতোই বেশি পেয়েছে যে,তিশা এখন জিসানের অনুমতি ছাড়া বাড়ীর বাহিরে যাওয়াও নিশেধ। বাড়ী চার পাশে গার্ড রাখা আছে।গার্ডকে নির্দেশনা ও দিয়ে দেওয়া হইছে।এমনকি এই ছয় মাসে জিসান তিশাকে বাপের বাড়ীও জেতে দেয়নি।এই হলো তিশার প্রতি জিসানের অন্যরকম ভালোবাসা।
চলবে,,,
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
#writer-TaNiA
part-39
গভীর রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি কিছুটা অবাক হয়ে যাই।কারন সেই বিকেলে ঘুম দিয়ে ছিলাম।হঠাৎ ঈশানের কথা মনে পরে, পাশে ফিরে দেখি ঈশান ও জিসান দুজনেই আমার পাশে শুয়ে আছে।আমি কিছুটা আশ্চর্য হলাম।কারন এ কয়েক মাসে জিসান সোফায় ঘুমিয়ে রাত কাটিয়েছিলো।আস্তে করে ঈশান কে নিজের দিকে টেনে নিলাম।পরম শান্তি লাগছে আমার এই মুহুর্তে।ছেলেটাকে সেই বিকেলে খাইয়ে দিয়েছি।এ পর্যন্ত আর নিজের কাছে আনতে পারেনি।নিশ্চই অনেক কেঁদেছে আমার জন্য।দুধের বাচ্চা।সবার কাছে থাকে কিন্তু একটা সময় তার মাকে তো লাগেই।অথচ আমি এই ভাবে পরে পরে ঘুমিয়ে ছিলাম।কিভাবে পারলাম আমি...।ছেলের কস্টের কথা চিন্তা করে চোখ দিয়ে কিছু অশ্রু বালিশে পড়লো তিশার।
(এ এক পরম সুখ একজন মায়ের জন্য।তা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।একজন মা-ই বুজবে।)
"
"
"
"
ঈশান কে রেখে আমি বিছানা থেকে উঠতে নিলাম।কিন্তু পাটা নিচে ফেলার সাথে সাথে কিছুটা ব্যাথা অনুভব করলাম।(আআআআআ)আর নিজের অজান্তেই মুখ থেকে একটু শব্দ বের হয়ে আসলো।সাথে সাথে বিছানায় বসে পড়লাম।পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি ব্যান্ডেজ করা।এটা কে করলো।ভাবতে লাগলাম কি করা যায়।ওয়াসরুম এ যাওয়া দরকার কিছুক্ষন পর আযানও দিবে নামাযটা তো পরতে হবে কি করি।সামনে মোবাইল দেখে চিন্তা করলাম,নিশু বা তানজিলা ভাবীকে কল দেবো।না না এতো রাতে তাদের জালানো ঠিক হবে না।এসব চিন্তা করতে,হঠাৎ মনে হলো আমি শুন্যে ভাসছি।একটু পর বুজতে পারলাম কেউ আমায় পাজা কোলে নিয়েছে।আমি তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।আমাকে নিয়ে গিয়ে ওয়াসরুমে নামিয়ে দিলো।
"
"
"
পায়ে পানি লাগাবি না, নামায পরতে চাইলে তায়াম্মুম করে নেয়,তোর হয়ে গেলে আমাকে ডাক দিস আমি বাহিরে আছি।~জিসান।
"
"
"
আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।কি বলবো আসলে ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা এই মুহুর্তে।এইতো কালই বললো তার কাছে জাতে না যাই,আর আজ নিজেই পিরিত করতে আসে।ঢং দেখলে গা জ্বলে।নিজেই কস্ট দেবে আবার নিজেই সেবা করবে।শয়তান কোথাকার।আমি এমন আকাশ পাতাল চিন্তা করে যেই ওয়াসরুম এর দরজাটা লাগাতে নিলাম,তেমনেই উনি দরজাটা এক হাত দিয়ে ধরে ফেললো।আমি উনার দিকে ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে রইলাম।
"
"
"
কি হলো দরজা লক করছিস কেনো।এতো রাতে এখন রুমে কেউ আসবে না,আর আমি তো আছি।তাই দরজাটা শুধু ভিড়িয়ে দে।লাগানোর দরকার নেই।
"
"
"
তার এসব কথায় আমি ভ্রুটা কুচকিয়ে তাকিয়ে রইলাম।আসলে তাকে বুঝার চেস্টা করছি।আর তখনি আমার চিন্তার মাঝে এক বালতি জল ফেলে দিলো।
"
"
"
কি হলো এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো।আমার কি নতুন করে রুপ জলজল করছে। সত্যি করে বলতো,নিজে একা ফ্রেস হতে পারবি নাকি আমার ভেতরে আসতে হবে,তোকে সাহায্য করার জন্য।~জিসান
"
"
"
উনার কথায় আমার মনে হলো,আমি নিজে যদি এক বালতি পানি এই লোকটার শরীলে ঢেলে দিতে পারতাম।মনটা শান্তি হতো।নাএএএ...(আমি কিছুটা চিল্লিয়ে) আমি একাই পারবো।বলো দরজাটা ভিড়িয়ে দিলাম।
"
"
"
এদিক দিয়ে জিসান দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবছে।এই মেয়েটা মনে হয় না এই জীবনে আমাকে বুঝবে।সারা জীবন আমাকে এভাবেই পুড়াবে।আমার ভেতরে অশান্তির ঝড় উঠিয়ে নিজে খুব শান্তি পায়।কিন্তু এবার থেকে আমি একা পুড়বো না, তোকেও পুড়াবো।তবে সেটা হবে আমার তাপে।আমার তাপে তোকে আমি পুরাবো আবার আমার ভালোবাসার শীতলে তোকে ডুবাবও।
"
"
"
আমি ওয়াসরুম এর দরজাটা খুলার সাথে সাথে দেখলাম উনি দাঁড়িয়ে আছে।আমি কিছু বলার আগেই আমাকে আবার কোলে তুলে নিলো।আমি মানা করলেও সে শুনে নাই।আমাকে জায়নামাজ এ বসিয়ে দিলো।নিজেও ওযু করে আমার সামনে নামাযের জন্য দাঁড়ালো। দুজনেই এক সাথে নামায শেষ করলাম।উনি আমাকে উঠিয়ে বিছানায় না বসিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলেন।আমি মনে মনে ভাবছি,কি হলো....এখন কি আমাকে বলবে,আজ থেকে তুই সোফায় ঘুমাবি।আমার খাটে তোর কোনও জায়গা নেই।ব্লা ব্লা ব্লা......।
কিন্তু না সে এসব কিছুই বললো না।
"
"
"
এখানে চুপচাপ বস,আমি আসছি।কিছুটা যেয়ে থেমে গেলো...আর হে জায়গা থেকে এক পা ও নড়বি না।~জিসান।
"
"
আমি সোফায় হেলান দিয়ে মনে মনে ভাবছি, আসলে কোন রসকষ নেই এই লোকটার মাঝে।কথায় কথায় হুমকি দেয় আমায়।মনে হয় আমি উনার বউ না,কোনও জেলখানার কয়দি।আর উনি জেলার।যাই হোক এই বাহানায় উনি আমার সাথে কথা তো বলছে,আজ কতোদিন পর উনি নিজ থেকে আমার কাছে আসছে।আমি এতেই খুশি।আগে যদি জানতাম তাহলে নিজেই নিজের পা পুড়িয়ে দিতাম।হঠাৎ কিছুর শব্দে আমার ধ্যান ভাঙ্গলো। সামনে তাকিয়ে দেখি সাহেব আমার খাবার নিয়ে এসেছে।আমিতো আজ অবাক এর উপর অবাক।
"
"
"
খেয়ে নে।তারাতারি।~জিসান।
"
"
আমি কিছুক্ষন তার দিকে তাকিয়ে মুখটা অন্যদিকে ঘুড়িয়ে ফেললাম।আমি খাবো না,ক্ষুধা নাই আমার।(একদম মিথ্যা কথা আমি কাল দুপুরে খেয়েছি এখনো কিছু পেটে যায়নি তাই খুব ক্ষুদা ও লাগছে।)
"
"
"
দেখ তিশা নাটক করবি না একদম।চুপচাপ খেয়ে নে,তুই না খেলে ঈশানকেও না খেয়ে থাকতে হবে।আর তোর জন্য আমার ছেলে না খেয়ে থাকলে কিন্তু তোকে আমি আস্তো রাখবোনা। এসব কথা শুনেও আমি চুপচাপ বসে আছি।এর পর কি মনে করে উনি খাবারটা হাতে নিয়ে নিজেই আমার সামনে ধরলো,আমি মুখ খুলছিলাম না,তাই অন্য হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরে খাবার দিয়ে দিলো মুখে।উনার মুখে স্পষ্ট রাগ আর কস্ট দুটাই দেখা যাচ্ছে,কারনটা যে আমি তা আর নতুন করে বলতে হবে না। সে সব আমাকে খাইয়ে ছাড়লো।সে খেয়েছে কিনা তা জানতেও চাইছিলাম।কিন্তু কোনও কথা বললো না।আমার কোন কথার জবাব দেওয়া সে এখন প্রয়োজন মনে করে না।কিন্তু তবুও আজ আমি খুব খুশি । এতোদিন পর তাকে কাছে পাওয়ার সুখ,তার হাতে খাবার খাওয়া সব জেনো এক সাথে আমি পেয়ে গেছি।তাই আমার চোখ দুটো দিয়ে জল অনোবরত পড়ছে, আর আজ এটা কস্টের না সুখের।কিছুক্ষন পর উনি নিজেই আমার চোখের জলগুলো মুছে দিলেন।খাওয়া শেষ করে উনি সব কিছু আবার রেখে এলেন।আর আমাকেও কোলে করে বিছানায় শুয়ে দিলেন।
"
"
ঘুমিয়ে পর।এখনো পুরোপুরি সকাল হয়নি।~জিসান।
"
"
জিসানও গিয়ে ঈশানের পাশে শুয়ে পড়লো।এখনো বাড়ীর কেউ উঠেনি তাই আরো একটু ঘুমানো দরকার। আজকের সব কিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম মনে নেই।
এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো।এ কয়েকদিন জিসান আমার অনেক খেয়াল রাখলো।এখন অনেকটা সুস্থ আর পাটা রাখতেও এখন কস্ট হয় না।তাই নিজেই নিজেই হাটতে পারি।এসবের মাঝে একটা জিনিস খুব ভালো হইছে আর তা হলো জিসান এখন আমার আর ঈশানের সাথে বিছানায় ঘুমায়।
আজ বাড়ীতে মেহমান আসবে,তাওহিদ ভাইয়ের কিছু ফ্রেন্ড আর তাদের বউ ও সাথে আসবে।তাই বাড়ীতে অনেক কাজ।ঈশানকে নিশি সামলাচ্ছে। আমার শরীল যেহেতু ভালো তাই আমিও ভাবী আর মাকে সাহায্য করছি।তারা অনেক মানা করলো কিন্তু আমি শুনিনাই।সব রেডি এখন শুধু মেহমানদের অপেক্ষা।আমি পাকের ঘরের গরমে ভিজে একাকার তাই রুমে গিয়ে একটা শাওয়ার নিলাম।শাড়ীটা ঘরে পড়বো বলে ইচ্ছা করে বিছানায় রেখে এসেছি।কারন এ সময় বাড়ীতে কোন পুরুষ নেই।আমি শাওয়ার নিয়ে রুমে এসে শাড়ীটা পরতে নিলাম।হঠাৎ কে জেনো ঘরে ডুকলো,আমি ভয় পেয়ে পেছনে তাকাই।একি জিসান,আর এ সময়।আমি উনাকে দেখতে এতোটাই ব্যস্ত আছি যে, আমার খেয়ালি নেই আমি যে শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে দাঁড়িয়ে আছি।উনি আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে কোট টা সোফায় রেখে,টাই খুলতে খুলতে ওয়াসরুম এ চলে গেলো,আর ওয়াসরুম এর দরজাটা এতো জরে লাগালো যে আমি নিজেই ভয় পেয়ে গেলাম।আমি আসলেই বুঝে উঠতে পারিনি উনি এমন ভিলেন চোখে কেনো তাকিয়ে ছিলো আর এখন সব রাগ দরজার উপর কেনো ছাড়লো।আমি আর কিছু ভাবতে চাইনা, তাই শাড়ীটা পরে নিচে চলে গেলাম।
"
"
"
"
উফফ,এই মেয়েটা একদিন পাগল করে দিবে আমাকে।এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে কেউ।আমার জায়গায় যদি অন্য কেউ ডুকে পরতো রুমে তখন।এমনেই ও সামনে থাকলে আমার রাগ গুলো সব কিভাবে যে উড়ে যায়।বলতেও পারিনা।মনে মনে ওকে শাস্তি দেবার কতো কিছু চিন্তা করে রেখেছি।কিন্তু কেনো যে পারি না।ওর কাছে গেলেই আরো কাছে জেতে মন চায়,ওকে অনেক ভালোবাসতে মন চায়।কিন্তু না ওর সামনে দূর্বল হলে চলবে না,যতোটা কস্ট আমি পেয়েছি,ওকেও পেতে হবে।আমার সীমাহীন ভালোবাসাকে অবহেলা করেছে।তাই ওকেও অবহেলার এই অনুভূতি বুঝতে হবে।জিসানও শাওয়ারে নিচে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছে।তিশাকে এভাবে দেখে জিসান এরও মাথা গরম হয়ে গিয়েছে।নিজেকে কোন্ট্রল করতে হবে।
"
"
"
"
তাওহিদ ভাইয়ের চারজন ফ্রেন্ডস আসছে।এদের মধ্যে আরিফ, আর ফয়সাল ভাইয়ের ওয়াইফ সাথে আসছে,আর শাহিব ভাইয়ের ওয়াইফ বাপের বাড়ী গেছে বলে আসতে পারেনি।আরও একজন আসছে রিয়াদ ভাই।উনার ওয়াইফের সাথে উনার দুবছর আগেই তালাক হয়ে গেছে।অবশ্য এই তালাকের কারন উনি উনার ওয়াইফকে দোষারুপ করে।
আমাদের সমাজ এমনি, এখনে তালাক যে কারনেই হোক দোষ শুধু বউয়ের হয়,স্বামী দোষী হোক বা না হোক,একটা মেয়েকেই দোষী করা হয়।তখন সেই মেয়েটা হয় আসামী, আর সমাজের যোগ্য,গন্য মান্য লোকগুলো সবাই বিচারপতি,কি সমাজ আমাদের।
সবাই ড্রয়িংরুম এ বসে কথা বলছে।জিসানও ঈশানকে নিয়ে বসে সবার সাথে আলাপ করছে।কিছুক্ষণ পর তানজিলা ভাবীর ডাকে আমিও ড্রয়িংরুম এ উপস্থিত হলাম।তানজিলা ভাবী সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো।সবাই খুব ভালো।আমিও তাদের সাথে পরিচয় হলাম।এর মধ্যে রিয়াদ ভাই বললো,you are so beautiful. And তোমার নামটাও তোমার মতো মিস্টি।তোমাকে দেখলে মনে হয়না তুমি বিবাহিত।আমার তার কথাগুলো তেমন ভালো না লাগলোও সৌজন্যতা বজায় রাখতে,একটা ধন্যবাদ দিলাম।কিন্তু এর পর লক্ষ্য করলাম,রিয়াদ ভাই কিভাবে জেনো আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, এর পর চা পানি নেওয়ার বাহানায় লোকটি আমাকে বার বার টাচ করছে,আমার খুব বেশি অস্বস্তি লাগছে।কিছু বলতেও পারছি না,তাই বার বার জিসানের দিকে তাকালাম।কিন্তু আমার ভাবনায় উনি জল ঢেলে দিলেন।উনি ঈশানের সাথে খেলতে ব্যস্ত। আমাকে দেখার মতো সময় তার নেই।এদিক দিয়ে লোকটা কেমন ভাবে জেনো আমার দিকে তাকিয়েই আছে।তাই আমি আর এক মুহুর্তে ওখানে না দাঁড়িয়ে চলে গেলাম।ভেবেছিলাম এদের সামনে আর আসবো না।কিন্তু ডিনার করার সময় আবার আসতে হল,লোকটি এখানেও এমন করছে।আমি কিছু বলতে পারছি না।জিসানের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।আর উনিতো নিজে খাচ্ছে আর সাথে ঈশানের মুখেও অল্প অল্প করে দিয়ে খাওনোর চেস্টা করছে।কি মনোযোগ দিয়ে কাজটা করছে,মনে হয় ছেলেকে আজই সব শিখিয়ে ফেলবে।খাওয়ার পর সবাই কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে চলে গেলো।আমিও সব কিছু গুচগাচ করতে লাগলাম।
"
"
"
"
সবাই যাওয়ার জন্য বের হলো,তাওহিদ ভাই ও তানজিলা ভাবীও তাদেরকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য বের হলো।সাথে আমিও বের হলাম।আর রিয়াদ ভাইকে ডাক দিলাম।হ্যান্ডশেক করার জন্য হাতটা বাড়ালাম,আর রিয়াদ ভাইও হাসতে হাসতে হাত বাড়ালো কিন্তু তার হাসিটা মুহুর্তের মধ্যে বিলিন হয়ে গেলো।কারন হলো জিসান এতো জরে হাতটা ধরছে যে বেচারা কিছুতেই ছাড়াতে পারছে না।বরং হাতের ব্যাথায় আআআআ করে উঠে।
জিসান কি করছো,ছাড়ো আমায়।আমার খুব লাগছে।রিয়াদের চিল্লাচিল্লিতে তাওহিদ ও বাকি সবাই ঘুড়ে তাকালো,তাওহিদ দৌড়ে এসে জিসান কে হাত ছাড়ার জন্য বলছে।কিন্তু জিসান তো নাছোড়বান্দা। ও হাতটা আরো জরে চাপ দিয়ে ধরেছে।কেউ কিছু বুজে উঠতে পারছে না।কি হচ্ছে এসব।
"
"
জিসান ছাড় ভাই কি করেছে ও।~তাওহিদ।
"
"
ওর সাহস কি করে হলো,আমার তিশার দিকে নোংরা চোখে তাকানোর,আর ওকে স্পর্শ করার।এই হাত দিয়ে বার বার ওকে টাচ করার চেস্টা করছিলি না।কি করে ভাবলি আমি কিছুই দেখতে পাইনি।আমি সব দেখেছি।কিন্তু তুই ভাইয়ের বন্ধু বলে আর মেহমান হয়ে এসেছিস বলে ঘড়ে কিছু বলিনি।আর কোনও দিন তোকে জাতে এই বাড়ীর আশেপাশে না দেখি তাহলো মেরে তোর লাশকে কুকুর কে খাওয়াবো।মনে রাখিস।
জিসান হাতটা ছেড়ে দিলো।রিয়াদ ব্যাথায় নিচে বসে পড়লো।তাওহিদ আর বাকি সব বুজতে পারলো।কিন্তু কেউ কিছু বললো না।কারন রিয়াদের চরিত্র এমনেই ভালো না।ওর এসব বাজে স্বভাব এর জন্যই ওর বউ ও ছেড়ে চলে গেছে।কিন্তু তাওহিদ আসা করেনি ও এমন কিছু করবে বাসায় এসে, তাহলে আর ইনভাইট ও করতো না।রিয়াদ কে ফয়সাল ধরে হসপিটাল এ নিয়ে গেলো।রিয়াদ ব্যাথায় হাতটা নাড়াতেও পারছে না।
"
"
"
আমি পাকের ঘরের কাজ সেরে রুমে চলে গেলাম ঈশানকে দেখতে।কিন্তু রুমে এসে দেখি ঈশান নেই।ভাবলাম ঈশান নিশ্চই মায়ের ঘরে।তাই মায়ের ঘরের দিকে জেতে নিলাম।কিন্তু কেউ আমাকে টেনে রুমে নিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।আমার বুজতে একটুও সময় লাগলো না এটা যে জিসান।উনি রাগী একটা লুক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আর আমি চিন্তিত,যে আজ আবার কি করলাম।কিন্তু এতো চিন্তা করেও কিছু পেলাম না।কিছুক্ষন পর উনিই বলে উঠলো।
"
"
"
পরপুরুষ এর স্পর্শ পেতে খুব ভালো লাগে তোর,তাই না।
"
"
উনার কথায় আমার মাথা গরম হয়ে গেলো।মন চাইলো উনাকে এই মুহুর্তে গরম খুন্তি এনে কয়েকটা ছেক দিয়ে দি।এসব কি বলছেন আপনে।
"
"
ও ও কি বলছি,কেনো এখন বুজতে পারছিস না।রিয়াদ যখন বাহানা দিয়ে বার বার তোকে স্পর্শ করছিলো কি মনে করেছিস আমি কিছু দেখিনি।নাকি আমি অন্ধ।খুব মজা লাগছিলো তাই না।তাইতো কিছু না বলে,মজা নিচ্ছিলি।
"
"
হাত ছাড়ুন আমার লাগছে।~তিশা।
"
"
তাই,আমি ধরলে ব্যাথা লাগে,আর রিয়াদ যখন ধরছিলো খুব মজা লাগছিলো।
"
"
একদম বাজে বকবেন না,আমি কি তাকে বলছি আমাকে ধরতে।আর ঐ লোকটা যে বার বার আমার সাথে এমন করছিলো,তখন কিছু কেনো বললেন না, এখন আমাকে শাসাতে আসছেন।
"
"
আমার কথা শুনে উনি আমার হাতটা ছেরে দেন।আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।কিন্তু পরক্ষনে উনি আমার ভাবনার ছেদ করে আমার কোমড় কে শক্ত করে ধরে উনার বুকের সাথে চেপে ধরলেন।আর এতে উনার নাকের গরম নিশ্বাস আমার মুখের উপর পরছে।আর উনার চোখ জোড়া আমার চোখেই আবদ্ধ।
"
"
তাইতো রিয়াদের হাতটা শুধু ভেঙেছি।বাড়ীতে জেই আসুক আর কোনো দিন তোকে যাতে না দেখি কোনও ছেলেমানুষ এর সামনে এমন হ্যাং হ্যাং করে জেতে।আর আজকাল দেখছি তোর মুখে খই ফুটছে।খুব বেশি বেশি কথা বলিস।আমি আবার, কিভাবে চুপ করাতে হয় খুব ভালো করে জানি।দেখাবো....
"
"
"
উনি আঙ্গুল দিয়ে আমার মুখে স্লাইড করছে।এতে আমার যায় যায় অবস্থা।আমার নিশ্বাস জেনো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে,যখন উনার হাতটা আমার গলা থেকে নিচে নামছে।উনি কি বলছে আমার কানে কিছু আসছে না।একসময় উনি আমার চুলের ভেতরে হাত দিয়ে আমাকে আরো কাছে এনে আমার ঠোটকে নিজের ঠোটে আবদ্ধ করে ফেললো।আমি আসলে স্বপ্ন দেখছি নাকি বাস্তব এ হচ্ছে কিছুই বুজতে পারছি না।কারন আমি শকড।কিন্তু উনি উনার কাজে ব্যস্ত।মনে হয় অনেক চাওয়ার পর কেউ কিছু পেলে যেমন যত্ন করে রাখে,ঠিক তেমনি উনি ও আজ পেলো।অনেকক্ষন পর উনি নিজেই ছেড়ে দিলো।আর আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো,আমি সামলাতে না পেড়ে বিছানায় পরে গেলাম।আর উনি চলে গেলো।আমার এমন রাগ উঠলো,অসভ্য কোথাকার।
"
"
কি বল্লি তুই......।(জিসান ফিরে এসে)
"
"
কিছু না....তো,আমি বললাম।আজ কি বার।আপনে কি শুনলেন।উনাকে আবার দেখে আমার গলা শুকিয়ে গেলো।হিটলার টা শুনছে কিনা কে জানে।শুনলে আমার খবর আছে।তুলে একটা আছাড় মারতেও কস্ট হবে না আমার জন্য।
উনি এবার চলে গেলো।আর আমি ভয়ে সামনের গ্লাসে রাখা পানিটা এক ঢোকে খেয়ে ফেললাম।কিছুক্ষন চিন্তা করলাম,ব্যাটারে একটু শিক্ষা দিতে হবে।কিভাবে দিবো।দিন দিন উনার হিটলার গিরি বেড়ে যাচ্ছে।
আমি কিছু চিন্তা করে মায়ের রুমে গেলাম।মা ঈশানের সাথে খেলছে।আমি গিয়ে মায়ের পাশে বসলাম।
"
"
"
জানিস তিশা ঈশান দেখতে একদম জিসানের মতো হইছে।আমার কাছে লাগে আমার ছোট জিসানটা বসে আছে।দেখ জিসানের ছোটবেলার ছবি।
মা আমার হাতে অনেক পুরানো ছবির এলবাম দিলো।এখানে জিসানের ছোটবেলার অনেক ছবি আছে।দেখতে কতো কিউট লাগতো উনাকে। কে জানতো এই কিউট ছেলেটি এমন রাগী হবে বড় হলে।
আমি মায়ের সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বলে,মাকে হঠাৎ বললাম, মা আমি বাড়ী যাবো।আমার এ কথা শুনে আমার শ্বাসুড়ী মা এমন ভাবে তাকালো মনে হয় কি এমন কঠিন আবদার জেনো আমি করিছি।কি হলো মা,আপনে কি চিন্তা করছেন।
"
"
কিছু না,জিসানকে বলো।ওর কোনো সমস্যা না হলে জেতে পারো।
"
"
মা উনিতো আমার কোনও কথা পাত্তাই দেয়না।প্লিস মা আপনে একবার বলুন।আপনাকে মানা করতে পারবে না।
"
"
মা কিছুক্ষন ভেবে,আচ্ছা আমি চেস্টা করবো ওকে রাজি করাতে,কিন্তু কথা দিতে পারছি না।
আচ্ছা, আমার লক্ষীমা।মাকে জরিয়ে ধরে।
খুশিতে ব্রেক লাগাও তিশা,আগে তোর স্বামীকে ম্যানেজ করতে পারি কিনা দেখি।যে ত্যারা আমার ছেলে।মা হয়ে আমি নিজেও ভয় পাই ওকে।
পরের দিন সকাল......
সবাই নাস্তা করছে,ঠিক এ সময় তিশার শ্বাসুড়ী,জিসান তিশা বাপে বাড়ী যেতে চায় কিছুদিনের জন্য।তুই ওকে আর ঈশানকে সাথে করে নিয়ে দিয়ে আস।
"
"
এ কথা শুনে জিসান একবার আমার দিকে তাকালো,এর পর মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,আমি দিয়ে আসবে এক শর্তে, আমার সাথে রাতে আবার চলে আসতে হবে।
"
"
আমি বলছিলাম কি জিসান শোন.....
"
"
না মা, এই ব্যাপারে কিছু আর শুনতে চাই না।আমার শর্তে রাজি থাকলে জেতে পারবে।তা না হলে যাওয়ার কেন দরকার মনে করি না।জিসান উঠে চলে গেলো।আর তিশা জিসানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে অন্য কিছু ভাবছে।
চলবে.......
[[খুব শীঘ্রই গল্পটা শেষ হয়ে যাবে।আশা করি সবাই পাশে থাকবেন]]

পাট ৪০-৪৩
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
Writer -TaNiA
part-40+41
আমি বিছানায় বসে বসে ভাবছি কি করা যায়।বাসায় তো যাবো।কিন্তু কে সাহায্য করবে।ঈশান বসে বসে খেলছে।আর আমার সাহেব আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে।আজ কেনো জানি একটু বেশি সুন্দর লাগছে।রহস্য কি,প্রেমেটেমে পরেছে নি নতুন কারো।আজকাল একটু বেশিই সময় নিয়ে রেডি হয়।দিন দিন মনে হয় আরো বেশি হ্যান্ডসাম হয়ে যাচ্ছে।আমাকে তো ঘরে বন্দি করে রাখে অথচ নিজে কতো সেজেগুজে অফিসে যায়।কেন রে....অফিসে যাওয়ার জন্য এতো রেডি হতে হয় কেনো।কোনও ঘাপলা আছে মনে হয়।
"
"
"
আমি রেডি হচ্ছিলাম,আয়নায় দিয়ে তিশাকে দেখতে পেলাম।ম্যাডাম গভীর চিন্তায় মগ্ন।নিশ্চই কোনও শয়তানি বুদ্ধি চলছে মনে।জাই করোনা তিশাপাখি আমার থেকে পালাতে পারবে না।একবার সুযোগ পেয়েছো বলে যে বার বার পাবে ভুলে যাও।তুমি যদি থাকো ডালে ডালে,আমি থাকি পাতায় পাতায়।আমাকে জ্বালানোর জন্যই তুই বার বার বাসায় যেতে চাইছোস,তা কি আমি বুঝি না।তোর মন মস্তিকে কখন কি চলে সবই বুঝি।জিসান কথাগুলো মনে মনে বলছে।
কিরে আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো। নজর লেগে যাবে তো।অন্যদিকে তাকা।
"
"
আমি উনার দিকে তাকিয়ে,,, নতুন কারো প্রেমে পরেছেন।~তিশা।
"
"
কিসব বাজে বখছিস, তোর মাথায় কি ভালো কিছু আসে না।আগেতো ভাবতাম একটা তাড়ছিড়া এখনতো মনে হয় পুরা মাথাটাই গেছে।
"
"
আমি বসা থেকে উঠে সোজা উনার সামনে গেলাম।তাহলে দিন দিন এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছেন কেনো।আর অফিসে এতো সাজগোজ করে যাওয়ার মানেটা কি।কি মনে করেন আমি কিছু বুঝি না।
"
"
তিশা আমার মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করেদিলো।এর আমার শার্টটা খুলতে লাগলো।
"
"
একি করছিস কি।আমার শার্ট কেনো খুলছিস। দেখ তিশা আমার সম্মান কেড়ে নিস না।আমি কিন্তু চিৎকার দিবো।
"
"
অসভ্য কোথাকার,শুধু বাজে চিন্তা।একদম চুপ।তা না হলে মাথা ফাটিয়ে দেবো কিন্তু।
"
"
তিশা আমার শার্টটা খুলে আমাকে অন্য একটা শার্ট ধরিয়ে দিলো।এটা কি??? এই রং এর কাপড় আমাকে একদম শুট করে না।কেমন দেখা যায়।
"
"
তাই তো এটা দিলাম।আজ এটাই পরেই যাবেন।উনাকে অন্য একটা শার্ট দিয়ে ঈশানকে নিয়ে নিচে চলে গেলাম।রাগে গজগজ করতে করতে।
"
"
তিশার এমন বিহেভ দেখে কেনো জানি রাগ হলো না। বরং অনেকটা ভালো লাগলো।আজ অনেকদিন পর ওর এমন রুপ দেখতে পারলাম।ম্যাডাম যে আমাকে হারানোর ভয় পাচ্ছেন তা বুঝার বাকি নাই।আমিও ওর দেওয়া শার্টটা পরে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম।নিচে গিয়ে নাস্তা করে ঈশানকে একটু কোলে নিলাম।ঈশান সোনা, বাবা অফিসে যাচ্ছি, বাবাকে একটা গুডবাই কিসসি দেওতো।আর শুনো বেশি দুষ্টুমি করবে না।ঠিক আছে।আর তোমার মা কে বলো উল্টাপাল্টা সব চিন্তা বাদ দিয়ে দিতে। কোন লাভ হবেনা।
"
"
"
উনার কথাগুলো শুনে রাগ জেনো আরো বেরে গেলো,কি মনে করে আমাকে....আমি একটা মুখ ভেঙ্গছি দিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে ফেললাম।
"
"
ভাবীর সাথে সকালের সব কাজ গুলো সেড়ে ঈশানকে নিয়ে রুমে এসে রায়হান ভাইকে কল করলাম।
"
"
হ্যালো ভাইয়া।
"
"
আরে তিশা আজ সকাল সকাল ভাইয়ের কথা মনে পড়লো কেনো।সব ঠিক আছে তো।
"
"
কেনো ভাইয়া তুমি এমন কেনো বলছো,আমি কি তোমাকো ফোন দিতে পারিনা।
"
"
তাতো অবশ্যই, আমি সেটা বলি নাই।তুইতো সব সময় রাতে কল করিস,কখনো অফিস টাইমে ফোন দেস না, তাই আরকি।ওসব বাদ দে,তোর কথা বল, কি খবর,আর কিছু কি বলবি।
"
"
তুমি কি করে জানলে আমি কিছু বলবো।
"
"
ওটা তুই বুজবি না।এতো ছোট মাথায় এতো টেনশন নিয়ে লাভ নাই।
"
"
ভাইয়া তুমিও এসব বলো।তুমি আর জিসান দুজনে একদম এক।
"
"
হুমমমম,বন্ধু বলে কথা।তা আবার জিগারের।তুই বল কি বলবি।
"
"
ভাইয়া আমি বাসায় জেতে চাই।
"
"
তাহলে আমাকে কেনো বলছিস।তোর জামাইকে বল।ও তোকে নিয়ে আসবে।
"
"
ভাইয়া আমি কিছুদিন থাকবো তোমাদের সাথে।কিন্তু জিসান রাজি হচ্ছে না।তাই তুমি জিসানকে বুঝিয়ে কাল সকালে আমাকে নিতে আসবে,বলে দিলাম। তা না হলে আর কথা বলবো না তোমার সাথে,মনে রেখো।এ কথা বলে ফোনটা কেটে দিলাম।মনে মনে ভাবছি রায়হান ভাইকি রাজি করাতে পারবে।আমি এসব চিন্তা না করি দেখা যাবে পরে,ঈশান চলো দেখি ফুফু কি করে।সকাল থেকে তো দেখলাম না,তোমার নিশি ফুফুকে।আমি ঈশানকে নিয়ে নিশির রুমের দরজাটা হালকা খুলে দেখি নিশি কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলছে" জান না ভালো"। ওর এসব কথা শুনে কিছুটা বুঝলাম নিশি কোনো ছেলের সাথে কথা বলছে।কিন্তু ছেলেটা কে।নিশি কারো সাথে সম্পর্কে জরিয়ে পরেছে নাতো।আর তা যদি সত্যি হয় তখন।সবাই জানলে,বিশেষ করে আমার হিটলার জানলে কি করবে কে জানে।তাই সবার আগে আমার নিশির সাথে কথা বলতে হবে।আমি রুমে আর না ডুকে চলে গেলাম।
সারাদিন এসব চিন্তা করেই কেটে গেলো।
"
"
"
রাতে রান্না ঘরে কিছু কাজ করছিলাম,ঠিক সে সময় জিসান বাসায় এসেই আমাকে সবার সামনে থেকে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।সবাই কিছুটা অবাক,তাদের অবাক করা ফেস দেখে আমিও বিষণ অবাক।আমাকে রুমে নেওয়ার আগ পর্যন্ত চিন্তা করলাম আজ আবার আমি কি করলাম।জিসান আমাকে বিছানায় ছুড়ে মারলো।আমি কিছুটা ব্যাথা পেলাম।আআআআ....কি করছেন কি।আমাকে এভাবে গরুর মতো টেনে আনছেন কেনো।
"
"
"
সমস্যা কি তোর।আগে এটা বল।~জিসান।
"
"
আমার আবার কি সমস্যা।আজ আবার আমি কি করেছি।কিছুটা ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে।উনার চেহারা রাগ এ ভরে আছে,তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
"
"
কোনো সমস্যা না থাকলে,তাহলে রায়হান কে ফোন করে কি সব বলছিস।
"
"
আমি আমার ভাইকে ফোন করে যা খুশি তাই বলবো,এতে আপনার সমস্যা কি।
"
"
তোকে কাল কি বলছিলাম আমি,বাসায় জেতে পারবি কিন্তু থাকার কথা বলবি না।তাহলে কেনো বার বার যাওয়ার জন্য জিদ করছিস।
"
"
আমার বাবা মার কথা খুব বেশি মনে পরছে, তাই কিছুদিন তাদের সাথে সময় কাটাতে চাই,তাতে সমস্যা কি।এ কথা বলার সাথে সাথে আমার গালটা চেপে ধরে উনি....
"
"
"
খুব বেশি বার বেড়েছিস, আজকাল মুখে মুখে তর্ক একটু বেশি করছিস।আর বাহ....! এখনদেখি বাবা মার কথা খুব বেশি মনে পরছে মনে হয়,যখন বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেছিলি।তখন মনে পরেনি তাদের কথা একবার। তখন যেহেতু তাদের ছেড়ে থাকতে কস্ট হয়নি।তাহলে এখনো হবে না নিশ্চই।
"
"
আআআ,জিসান, ছাড়ুন আমার লাগছে।
"
"
আমারো খুব বেশী লেগেছিলো, এখানে....(জিসাম নিজের বুকের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে)।জানিস....নিশ্বাস নিতে পারতাম না,মনে হতো মরে যাবো।কিন্তু মরতাম ও না।শুধু ছটফট করতাম।জানিস কার জন্য তোর জন্য।কিন্তু তুই.....জিসানকে আর কিছু বলতে দিলো না তিশা,তার আগেই জিসানকে ধাক্কা দিয়ে হাতটা সরিয়ে জিসানের সামনে ধারালো।
"
"
কস্ট কি একা আপনে পেয়েছেন।আমি কি পাইনি।আর দোষ কি একা আমার ছিলো, আপনার ছিলো না।আপনে আমার থেকে সব লুকিয়েছিলেন।আমি বার বার আপনার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আপনে তো তখন রোজ কে নিয়ে ব্যস্ত।একবার কখনো চিন্তা করেছেন,আমার তখন কেমন লেগেছিলো।মরে জেতে মন চাইছিলো।মরেও জেতাম,যদি ঈশান আমার গর্ভে না থাকতো।কিন্তু এখন আফসোস হচ্ছে মরে গেলেই হয়তো ভালো হতো,কমপক্ষে আপনে মুক্তিতো পেয়ে জেতেন।তিশা আর কিছু বলতে চাইছিলো,কিন্তু তার আগেই ঠাসসসস করে একটা চড় পরে তিশার গালে।আর তিশা বিছানায় গিয়ে পরে।
"
"
"
জিসান তিশাকে টেনে তুলে,তিশার দুবাহু শক্ত করে ধরে,নিজের একদম কাছে টেনে আনে। তুই জানতে চাসনি কখনও।কারন তুই সেই ফেক ভিডিওটাকে বিশ্বাস করেছিস।আমাকে না।যদি আমাকে বিশ্বাস করতি তাহলে ছেড়ে চলে জেতে পারতি না।একবার ভাবতি,তোকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো।কিন্তু তুই ভাবিস নি।তিশাকে ছেড়ে দু পা পেছনে চলে যায় তিশার থেকে।খুব শখ না আমার থেকে দূরে থাকা,তাহলে তাই হবে।কিন্তু এবার তুই না আমি যাবো।থাক তুই এখানে,তোর কোনও সমস্যা হবে না।সব পাবি,কিন্তু আজকের পর থেকে আর আমাকে পাবি না।তোর যা খুশি করতে পারিস।শুধু যাবার আগে একটা রিকুয়েস্ট করি এই বাড়ী ছেড়ে কোথাও যাস না।প্লিজ বলেই জিসান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
"
"
"
এদিক দিয়ে তিশা এখনো শোকড এর মধ্যে কি বললো জিসান।উনি চলে যাবেন মানে,কোথায় যাবে।জিসান বলে তিশা চিল্লাতে থাকে।তিশা দৌড়ে নিচে নেমে বাহিরে চলে যায়,জিসানও গাড়ী নিয়ে বের হয়ে যায়,তিশা গাড়ীর পেছনে অনেক ডাক দেয় কিন্তু জিসান শুনে না।এতোক্ষনে জিসানের গাড়ী অনেক দূরে চলে যায়।তিশা ওখানেই বসে কাঁদতে থাকে।তিশার চিৎকার শুনে নিশি,তানজিলা,তিশার শ্বশুর ও তাওহিদ বের হয়ে আসে।তিশাকে এভাবে কাঁদতে দেখে তানজিলা গিয়ে ধরে।তিশা তানজিলালে দেখে জরিয়ে কাঁদতে থাকে।ভাবী উনি আমাকে ছেড়ে চলে গেছে রাগ করে।আর আসবে না বলে গেছে।প্লিজ ভাবী তুমি বলো ফিরে আসতে।আমি আর জিদ করবো না।আর কখনো কোনও অভিযোগ করবে না।সব কথা শুনবো। কিন্তু তবুও বলো ফিরে আসতে।প্লিজ ভাবী।তিশা কাঁদতেই থাকে।
"
"
তাওহিদ ফোন লাগা তোর ভাইকে,কি শুরু করছে ও।বিয়ে হয়ে গেছে এক বাচ্চার বাপ হয়ে গিয়েছে।অথচ এখনো নিজের জেদ ছাড়ছে না।এমন হলে সংসার করা যায় না।সংসারের জন্য অনেক ধৈর্য্য লাগে, যা তোর ভাইয়ের মধ্যে এক চিমটি নেই।আর কেমন বড়ভাই তুই, ছোট ভাইকে বুঝাতে পারোস না।নাকি তুইও ওই বদমেজাজ টাকে ভয় পাছ।
"
"
বাবা,কি সব বলছো। আর ও কি আমার কথা শুনে।তুমি ওর বাবা তুমি বোঝাতে পারোনা।নাকি তুমিও ভয় পাও।
"
"
তাওহিদের কথা শুনে তৌফিক সাহেবের মুখটা মলিন হয়ে গেলো,কারন কথাটা সত্য।চুপ থাক,তোরা সব কয়টা অপদার্থ। বড় বউ, তুৃমি তিশা মাকে ঘরে নিয়ে যাও।আর তিশা মা শুন,ওই অপদার্থ কোথাও যাবে না দেখিস।রাগ কমলে চলে আসবে।এবার আসুক তার পর দেখাবো আমিও ওর বাবা।
"
"
"
তানজিলা ও নিশু আমাককে রুমে নিয়ে বসালো।কিন্তু আমার এখনো কান্না পাচ্ছে ।আমি কিছুটা শান্ত হই কারন ঈশানও আমাকে দেখে কান্না করছে।কিছুক্ষন পর ঈশানকে শান্ত করে ফোনটা নিয়ে জিসানকে কল করি। প্রথম কয়েকবার রিং বাজলেও পরে ফোনটা বন্ধ পাই।আমার বুঝতে বাকি রইলো না জিসান ইচ্ছা করে ফোনটা বন্ধ করে রেখেছে।সেদিন সারা রাত আমি উনার অপেক্ষা করেছি।কিন্তু জিসান আসেনি।অপেক্ষা জিনিসটা যে এতোটা কস্টকর,আগে জানতাম না।আজ হারে হারে বুঝতে পারছি।যখন তাকে ছেড়ে গিয়েছিলাম,তখন সবাই উনার সাথে আছে বলে কখনো এতো টেনশন করিনি।কিন্তু আজ তো আমি জানিই না উনি কোথায় গেছে।কি করছে।ঠিক আছে তো।এসব চিন্তা করে বুকটা কেপে উঠছে। আজ আমি বুঝতে পারছি।এমন প্রতিটা রাত জিসান ও আমার কথা চিন্তা করে কাটিয়েছে।উনারও তখন এভাবে হারানোর ভয়টা বার বার নাড়া দিতো।যা আমি আজ অনুভব করতে পারছি।প্লিজ জিসান একবার চলে আসুন। আজকের পর থেকে আমাদের মাঝে কাউকে আসতে দেবো না।রাগ, অভিমানকেও না।আপনে আমাকে আপনার কস্টা অনুভব করাতে চেয়েছিলেন।দেখেন আমি আজ বুঝতে পারছি।আপনার কতোটা কস্ট তখন হয়েছে।প্লিজ চলে আসুন।আপনার তিশা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
ভোরে ফজর এর আযান শুনে তিশা নামায পরে নিলো।ঈশানের সাথে শুয়ে রইলো কিন্তু ঘুম আসছে না।
"
"
"
সকাল সকাল রায়হান এসে হাজির তিশাকে নিতে।কারণ তিশা কাল বলেছিলো আজ নিতে না আসলে আর কোনদিন তিশা রায়হান এর সাথে কথা বলবে না।তিশাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জিসানের সাথে কথা বললে,জিসানের সাথে অনেক তর্কবিতর্ক হয়। এই প্রথম জিসান ও রায়হানের মধ্যে মনোমালিন্য হয়,তাই জিসান অনেকটা রেগে বাসায় আসে।আর বাসায় এসেও তিশার সাথে এসব হয় যায়।যার কারনে রাগ করে জিসান বাড়ী থেকে চলে যায়।রায়হান এসে সব শুনতে পায়।রায়হান তিশার কাছে গেলে,তিশা ভাইকে দেখে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।রায়হান খুব ভালো করে জানে জিসান এসব কেনো করছে।কিন্তু রায়হানের মনে হলো জিসান এখন কিছুটা দিন একা থাকুক।এতে ওর ভিতরের রাগটা কমে যাবে।রায়হান তিশাকে বুঝিয়ে কিছুটা শান্ত করে।এর পর তিশাকে না নিয়েই চলে যা।এভাবে ২দিন কেটে যায়।জিসান না বাসায় এসেছে,না অফিসে গিয়েছে আর ফোনটাও বন্ধ।তিশার এখন আর সহ্য হচ্ছে না বসে থাকতে। তিশা চিন্তা করতে থাকে জিসান কোথায় জেতে পারে।আগেও নাকি এভাবে রাগ করে চলে জেতো।কোথায় যেতো।কাকে জিঙ্গেস করবো।তিশা চিন্তা করছে। হুমমম বুঝছি,আর কেউ জানুক বা না জানুক একজন মানুষ আছে যে জিসানের সব জানে।তিশা দেরি না করে ফোনটা হাতে নিলো।
"
"
"
হ্যালো,ভাইয়া।
_হুমমম,তিশা বল।~রায়হান।
ভাইয়া জিসান কোথায়।
_আমাকে কেনো জিঙ্গেস করছিস।
ভাইয়া আমি এতোদিনে এতোটুকু তো বুঝতে পেরেছিই,তুমি জিসানের সব জানো।তাই আমার কাছে লুকিয়ে লাভ নেই।এখন বলো ও রাগ করলে কোথায় গিয়ে লুকিয়ে থাকে।
_আসলে......ও জানলে খুব রাগ করবে।
আমি তোমার আপন বোন তোমার মনে আছে তো।
_উফফফ.... তোরা যে কেনো এতো ঝগড়া করিস।এবারি লাস্ট এর পর তোরা এমন করলে,দুজনকেই পাননায় পাঠিয়ে দেবো।কিন্তু তুই একা কিভাবে যাবি,তুইতো চিনবি না।তুই রেডি হো,আমি আসছি।
"
"
"
আমি রেডি হয়ে নিলাম,জিসানেরি দেওয়া একটা শাড়ী পড়লাম,হালকা সাজ দিলাম।ঈশানকে তানজিলা ভাবীর কাছে দিয়ে,সব খুলে বললাম।তানজিলা ভাবী ঈশানের চিন্তা করতে মানা করলেন।আমিও জানি ভাবী ঈশানকে অনেক ভালোবাসে,আর ঈশানও ভাবী কে পেলে সব ভুলে যায়।তাই আপাতোত ঈশানকে নিয়ে টেনশন নেই।আমি বের হয়ে দেখি নিলয় দাঁড়িয়ে আছে।আমি গিয়ে দাঁড়াতেই নিলয় গাড়ীর দরজা খুলে দিলো।আমি গাড়ীতে বসে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে,সারা রাস্তায় নিলয় আর আমি খুব কম কথাই বলছি।জিসান যে বাড়ীটায় আছে, বাড়ীটা শহর থেকে একটু দূরে।কিছুক্ষন পর পৌছে গেলাম।আমি নামতে নিলে নিলয় আমাকে ডাক দেয়,
জি ভাইয়া।
রাগ আর অভিমানটা কে দূরে রেখে দুজনে মিলে যাও।তোমরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসো।তাহলে এতো ভালোবাসায় অভিমানটাকে কেনো আসতে দেও।জিসান কেমন আমরা সবাই জানি,তুমিও জানো।এবার হয়তো অর অভিমানটা একটু বেশি জমে গেছে,তাই এবার তোমাকেই ওর অভিমান ভাঙ্গাতে হবে।তুমি নিশ্চই বুঝছো।তিশা মাথা নেড়ে হ্যা বললো।তিশা নেমে বাড়ীর ভেতরে চলে গেলো।
আর নিলয় তিশার যাওয়ার পথে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো।এর পর চলে গেলো।
"
"
"
আমি দরজাটা নক করবো,ঠিক তখনি কেউ দরজাটা খুলে বের হলো।আপনে কে ম্যাডাম।
আমি তিশা।লোকটাকে আর কিছু বলতে হলো না।মধ্যবয়স্ক লোকটি আমাকে বললো।জিসান বাবা উপরের রুমে।আমি শুধু রান্না করতে আসি।আমি চলে যাবো এখন।আমি লোকটাকে জিঙ্গেস করলাম।চাচা আপনে আমাকে চিনেন।লোকটি হেসে মাথা নাড়ালো।
"
"
"
আমি উপরের রুমে ডুকে দেখি জিসান বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে।
জিসান বুঝতে পারে,তাই পিছে না ঘুড়েই আমাকে জিঙ্গেস, করে তুই এখানে কেনো এসেছিস।
আপনে কি করে জানলেন আমি এসেছি।আপনেতো দেখেনি আমাকে।
তোকে দেখার জন্য আমাকে চোখে দেখতে হয় না,তোর অস্তিত্ব আমি অনুভব করতে পারি।এখন বল কেনো এসেছিস।
যদি বলি আপনাকে আমার প্রয়োজন।
কেনো.....???~জিসান।
(তিশা জিসানের দিকে এক পা এক পা করে আগাচ্ছে)
রাতে শান্তির একটা ঘুম দেবার জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
সকালে আমার ভেজা চুলে তোমাকে ডুবানোর জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার সারাবেলা সব কাজের মাঝে,তোমাকে স্মরন করার জন্য,তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার রাতের জ্যোৎস্না দেখার জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন।
আমার সব ভুলগুলো শুধরাতে তোমাকে আমার প্রয়োজন।
জীবনে সামনে চলার জন্য একজন প্রিয়জন তো দরকার আর সেই প্রিয়জনকে কাছে পেতে তোমাকে আমার প্রয়োজন।
"
"
জিসান এতোক্ষন স্থির দৃষ্টিতে তিশাকে দেখছে,তিশা আজ প্রথম জিসানকে তুমি বলে ডাকলো,জিসানের জেনো বিশ্বাসই হচ্ছে না।তিশা বলতে বলতে জিসানের একদম সামনে এসে দাঁড়ালো। জিসান এখনো তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।জিসানের মনে হচ্ছে আজ ও অন্য একটা তিশাকে দেখছে।তিশা হঠাৎ জিসানের পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে জিসানের ঠোঁট দুটো নিজের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেললো।এতোক্ষন এ জিসানের ধ্যান ভাঙ্গলো।জিসানও আজ সব রাগ, অভিমান ফেলে দিয়ে তিশাকে নিজের কাছে টেনে নিলো।এক হয়ে গেলো দুজন পূণরায়।দুজনের ভালোবাসার সামনে অভিমানটা শেষ হয়ে গেলো।এতোদিন পর দুজনের মিলন আবার হলো।পরিপূর্ণ হলো দুজনে।শুরু হলো আবার দুজনের ভালোবাসার অধ্যায়।
চলবে......
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer-TaNiA
part-41
আমি জিসানের উন্মুক্ত বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি,মনে হচ্ছে জীবনের সবথেকে সুখের স্থান এটা আমার কাছে।কেনো যে এতো ভালো লাগে উনার বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকতে,জানি না।এ এক অদ্ভুত অনুভূতি।জীবনের শেষ পর্যন্ত আমি এই বুকেই মাথা রেখে ঘুমাতে চাই।এই স্থানটি শুধু আমার।আর উনিও পরম আবেশে আমার চুল গুলোতে হাত ভুলাচ্ছে।মন তো চাইছে এই সময়টাকে ধরে রাখি।
"
"
"
-তিশা.......।~জিসান।
হুমমমমম....।
-আমি এখানে কে বলছে।
রায়হান ভাই।
-তাহলে তো তোর ভাইকে একটা ধন্যবাদ দেয়া দরকার, কি বলিস।~জিসান।
তাইনি.....কেনো।
-ওর কারণেই তো আজ তুই আর আমি সব ভুলে এতো কাছে আসতে পারলাম। (জিসান আমাকো জরিয়ে ধরে কথাটা বললো)আমার বউটাকে আজ কতো দিন পর আদর করলাম।এ সবি তোর ভাইয়ের কৃতিত্ব।
"
"
"
শয়তান কোথাকার,এভাবে কেউ চলে আসে।আমি বাদে বাড়ীর সবাই রিলেক্স ছিলো।আমিতো কিছুতেই বুজতে পারছিলাম না।
"
"
-কারন ম্যাডাম আপনে বাদে সবার সাথেই আমার কথা হইছে।
"
"
কিকিকি, এই নি কথা।বাসায় চলেন তার পর দেখাবো মঝা।
"
"
-হুমমম, চল।ঈশান একা।তুই ফ্রেস হয়ে নে আলমারীরতে তোর কাপড় আছে।
"
"
আমি উনার দিকে ভ্রু কুচকিয়ে তাকালাম।
"
"
-কি হলো আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো।আরে বাবা।আমি জানতাম তুই একদিন না একদিন এই বাড়ী আসবি, তাই তোর জন্য কিছু কাপড় এখানে রাখা আছে।এখন যান তারাতারি করেন।
"
"
আমি উঠে সাওয়ার নিয়ে ফ্রেস হয়ে আসলাম।
-তিশা তোকে রায়হান নিয়ে এসেছে।~জিসান।
না,নিলয় দিয়ে গেছে।
নিলয়.... কেনো।~জিসান।
ভাইয়া বের হচ্ছিলো আমাকে নিতে।কিন্তু হঠাৎ ভাইয়ার খুব দরকারি কাজ এসে পরেছে।সেই সময় নিলয় ভাইকে ফোন দিলো,আপনার ফোন বন্ধ কেনো জানার জন্য।তার পর রায়হান ভাই সব খুলে বললো।ভাইয়া নিলয় কে রিকুয়েস্ট করলো,তাই নিলয় নিয়ে আসে এখানে।
"
"
-ওওওও,,,ওকে।তুই বস আমি ফ্রেস হয়ে আসি তার পর রওনা দেবো।
"
"
ঘন্টাখনিকের মধ্যে আমরা বাসায় এসে পরলাম।জিসান এসেই ঈশানে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগলো।দুদিন পর ছেলেকে দেখছে বলে।এ দুদিন নাকি নিশু ভিডিও কলে ঈশানকে দেখাতো।অথচ আমি কিছুই জানি না।আমি বোকা বলে এরা সবাই মিলে বোকা বানালো।
রাতে সবাই ডিনার করে রুমে চলে গেলো।কিন্তু আমি, ভাবী আর নিশু জমিয়ে কিছুক্ষন আড্ডা দিলাম।এর পর ভাবীও চলে গেলো,ভাইয়া ডাকছে বলে।আমি ভাবলাম এই সুযোগ নিশির সাথে কথা বলার।
নিশি কিছু জিঙ্গেস করলে,সত্যি করে বলবে।
"
"
এ কেমন কথা ভাবী,তোমাকে কবে আমি মিথ্যা বললাম।বলো...কি জানতো চাও।
"
"
তুমি কাউকে পছন্দ করো।সত্যি করে বলবে।
"
"
আমি সত্যি বলবো ভাবী।হুমমম,আমি একজনকে পছন্দ করি,শুধু পছন্দ না আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি।আমি অনেকদিন ধরেই তোমাকে বলতে চাইছিলাম, কিন্তু তোমার লাইফে এতো কিছু চলছে,তাই তোমাকে আর বলা হয়নি।ভাবী প্লিস আমাকে সাহায্য করো।বাবা মা আর ভাইকে তুমি রাজী করাতে।
"
"
নাম কি,কিভাবে চিনো।আর সে কি তোমায় বিয়ে করবে বলেছে।
"
"
নাম আদি,এতো বছর বাহিরে ছিলো,একবছর হলো বাংলাদেশে আসছে।এখন বাবার ব্যবসা দেখছে।আর আমরা আয়নীর জম্মদিনে গেলাম না,সেখানে ও আমাকে দেখেছে।তার পর কিভাবে জেনো আমার ফোন নাম্বারটা জোগার করে আমাকে কল করে।প্রথমে আমাদের মধ্যে কিছু ছিলোনা।কিম্তু আস্তে আস্তে আমি ওকে ভালোবেসে ফেলি।আমাদের সম্পর্কের ছয়মাস চলছো।ও বার বার বিয়ের জন্য বলছে।আদি ওর পরিবারকে পাঠাতে চাইছে আমাদের বাসায়।কিন্তু ভাইদের ভয়ে আমিই বার বার মানা করছি।তুমি বলো আমি এখন কি করবো।
"
"
তুমি চিন্তা করোনা।আমি তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলবো।সব ঠিক হয়ে যাবে।
"
"
ও ভাবী,তুমি বেস্ট।
"
"
হইছে,এবার ঘুমাও।অনেক রাত হয়ে গিয়েছে।
আমি নিশিকে গুড নাইট বলে রুমে চলে এলাম।রুমে এসে আমার চোখদুটো ছলচ্ছল হয়ে গেলো।ঈশান জিসানের বুকের উপর শুয়ে ঘুমিয়ে আছে।এ যেনো আমার চোখে সব থেকে সুন্দর একটা মুহুর্ত।আমি আস্তে করে জিসানের পাশে বসে উনার চুলগুলো হাতাতে লাগলাম।আমার স্পর্শে উনি ঘুমঘুম চোখে আমার দিকে তাকালো।
"
"
আসতে মন চাইছে,তোর।আমি তো ভাবলাম,আমাদের বাপ ছেলেকে আজ একাই থাকতে হবে।
"
"
তাই,দুজন থাকার পরও আপনারা একা।হা হা হা করে আমি হেসে দিলাম।
"
"
চুপ,ঈশান ঘুম থেকে উঠে যাবে।দেখোস না,কি আরামে ঘুমিয়ে আছে।আমার বুকে।
"
"
হুমমম,ও বুঝে এখানে অনেক শান্তি।
"
"
জিসান আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুসকি হাসি দিলো।
"
"
আমি ঈশানকে সুন্দর করে বিছানায় শুয়ে দিলাম।ঘুম আসছিলো না তাই বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। আজ আকাশে চাঁদ উঠে নাই।কিন্তু সুন্দর বাতাস বইছে।বাতাসে খোলা চুলগুলো উড়ছে।হঠাৎ জিসান এসে পেছন দিয়ে জরিয়ে ধরলো।গলায় একটা কিস করে,
-ঘুমাবি না।~জিসান।
ঘুম আসছে না।
-কেনো....।~জিসান।
এমনেই।আপনে ঘুমান না কেনো।
-তোকে ছাড়া ঘুম যে চোখে আসে না।
আমিও জিসানের হাতে হাত রেখে বললাম, তাইই।
-হুমমম,ম্যাডাম।তুই কিছু ভাবছিস।
হুমমম।আপনে কিভাবে জানলেন।
-তোকে যে আমি তোর থেকে বেশি চিনি।এখন বল কি ভাবছিস।
একটা কথা জিঙ্গেস করবো,রাগ করবেন নাতো।
-আমি জানি তুই কি জানতে চাইছোস।রোজ সম্পর্কে জানতে চাস তাই তো।
হুমমমম।
তাহলে শোন.....
রোজ আমাদের সাথে ভার্সিটি তে পরতো।বাবার বন্ধুর মেয়ে বলে,আমাকে একটু দেখে রাখতে বলেছিলো,কারন ও নতুন ছিলো,আর কাউকে চিনে না।আমি ভার্সিটিতে কোন মেয়ের সাথে তেমন কথা বলতাম না।রোজকে জানতাম বলে ওর সাথে টুকটাক কথা বলতাম।প্রয়োজন হলে।প্রথম কিছুদিন ভালোই ছিলো।কিন্তু আস্তে আস্তে রোজ একটু বেশিই গায়ে পরে কথা বলতো,যখন তখন হাত ধরে টেনে নিয়ে জেতো।ছোটখাটো জিনিস নিয়ে আমার কাছে আবদার করতো।প্রথমে মনে করতাম ওর এখানে আপন কেউ নেই বলে হয়তো এমন করে।আমি একজন ফ্রেন্ড হিসেবে ওর সাহায্য করতাম।কিন্তু ও আমার সাহায্যকে ভালোবাসা মনে করে।ও ভার্সিটিতে বলে বেড়াতে লাগলো ও আমার লাভার।যেহেতু রোজ এর সাথে আমাকে সবাই প্রায় দেখতো।মাঝে মাঝে আমি রোজকে ওর বাসাও ড্রপ করে দিতাম।তাই সবাই বিশ্বাস করতে লাগলো।
ব্যাপারটা আমার কানে তখনো আসে নি।একদিন ক্যাম্পাসে বসে ফ্রেন্ডস দের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম,এমন সময় আমার একজন ফ্রেন্ড এসে আমাকে সব বলে।আমার খুব রাগ উঠেছিলো তখন।রায়হান আমাকে শান্ত হতে বললো।রোজকে বুঝাতে বললো।আমি রোজকে বুঝালাম কিন্তু রোজ কোন কিছু বুঝতেই চায়না।বার বার এক কথা বলা শুরু করলো আমাকে ভালোবাসে।
অনেক বুঝানোর পরও যখন ও বুঝতে চাইছিলো না তখন আমি ওকে এভোয়েড করা শুরু করলাম।ওর থেকে যতোটা পাড়তাম দূরত্ব বজায় রাখতাম।কিন্তু একদিন সহ্যেরসীমা অতিক্রম করে ফেলেছিলো।ক্যাম্পাসে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছিলো।অনেক মানুষ ও ছিলো।হঠাৎ রোজ কোথা থেকে এসে আমাকে সবার সমনে জরিয়ে ধরে।আমি সেদিন নিজের রাগটাকে আর সামলাতে পারলাম না।সবার সামনে ওকে কষে একটা থাপ্পর মারলাম।আর সেদিন অনেক অপমানও করেছিলাম।আমি ভেবেছিলাম এতো অপমানের পর হয়তো ও আর আমার সামনে আসবে না।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।এর পর ও এমন এক কান্ড করলো যা আমি ভাবতেই পারিনি।
একদিন আমি ফোনে কথা বলতে বলতে লাইব্রেরীর দিকে যাচ্ছিলাম। ক্লাশ গুলো সব খালি ছিলো তখন।হঠাৎ কেউ আমাকে টান দিয়ে একটা খালি ক্লাসে ডুকিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।কে সে দেখার জন্য পেছনে ঘুরে দেখি রোজ।
"
"
রোজ,তুমি। তোমার কি লজ্জা বলতে কিছু নেই।আর আমাকে এভাবে টেনে আনছো কেনো।
"
"
তোমাকে আমি ছেড়ে দেবো,ভাবলে কিভাবে।আমার যেটা চাই তো চাই।আর আজ এমন ব্যবস্থা করবো,যাতে তুমি সারা জীবনের জন্য আমার হয়ে যাও।
"
"
এসব কি বলছো।আর সরো আমাকে জেতে দেও।
"
"
কিন্তু ও আমার দিকে এগোতে থাকে,আর নিজের কাপড় নিজেই ছিড়ে ফেলতে লাগলো।আর চিৎকার করতে লাগলো।ঘটনা আকষ্মিক ঘটায় আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।রোজ চিৎকার দিতে দিতে রুম থেকে দৌড় দিয়ে বের হয়ে গেলো।আমিও ওর পেছন পেছনে ছুটতে লাগলাম।
ক্যাম্পাস এর সবাই ঝড়ো হয়ে গেলো।টিচার রাও এসে পড়লো,রোজ এর চিৎকারে।রোজ সবাইকে বললো আমি নাকি ওকে খালি রুমে নিয়ে ওর সাথে খারাপ কিছু করতে চাইছিলাম।সবাই আমার দিকে সন্দেহ নযরে তাকালো।আমি সবাই কে বুঝাতে লাগলাম।কিন্তু রোজ মেয়ে বলে সবাই ওকেই বিশ্বাস করতে লাগলো।আর আমার কাছে কোনও প্রমান ও ছিলো না।ঘটনাটা অনেক বেশি জটিল হয়ে পড়লো আমার জন্য।আমাকে কলেজ থোকে বের করে দেবার কথা চলছিলো।তখনি রায়হান আসে।আসলে তখন ফোনে রায়হান এর সাথেই কথা বলছিলাম।যখন রোজ আমাকে টান দিয়ে রুমে ডুকায়,তখন ফোনটা হাতের থেকে পরে যায়।কিন্তু রায়হান লাইনে ছিলো বলে ও সব শুনতে পারে আর রেকর্ড ও করে ফেলে।আর সেই রেকর্ডটা সবাইকে শোনায়।এর পর রোজকে অনেক অপমান করে পুরো কলেজ এর সবাই।রোজ কে কলেজ থেকে বের করে দেয়।আংকেল এসব শুনে লজ্জায় রোজকে নিয়ে বিদেশ চলে যায়।
"
"
এর পর তো জানিস ও এতো বছর পর আবার প্রতিশোধ নিতে এসেছিলো।আমাদের কম্পানিতে ডিল সাইন করা,আমাকে এভাবে ফাঁসানো সব কিছুই ওর প্লান ছিলো।আসলে ওর টার্গেট তুই ছিলি।ও আমার কাছ থেকে তকে কেড়ে নেওয়ার প্লান করেছে।রোজ এর হ্যাসবেন এসব কিছুই জানতো না।সে দিন ঐ ঘটনার পর ওর হাসবেন্ড কে সব খুলে বলি।উনি খুব ভালো মানুষ ছিলো।তাই রোজকে নিয়ে আবার বিদেশে চলো যায়।আমি ভেবেছিলাম ও যাবার পর তোকে সব বলবো।কিন্তু এর আগেই আপনে ফুড়ুৎ হয়ে গিয়েছেন।
"
"
আমি গুড়ে জিসানকে শক্ত করে জরিয়ে ধরি।সরি তখন আসলেই আমার চিন্তাশক্তি লোপ পেয়েছিলো।~তিশা।
"
"
থাক আমরা আগের সব কথা ভুলে যাই।যে অতীত কস্টের সে অতীত মনে না করাই ভালো।
"
"
আমি জিসানকে ছেড়ে উনার পান্জাবীর বুতামটা বার বার খুলছি আর লাগাচ্ছি।
"
"
কি ম্যাডাম আজ একটু বেশিই রোমান্টিক মনে হচ্ছে।
আমার কোমড় টা ধরে টান দিয়ে কাছে টেনে কথা গুলো বলছে।
"
"
ফাজিল কোথাকার,সব সময় মাথায় এসব চিন্তা ছাড়া কি আর কোনও কথা নেই।
"
"
তাহলে তুই এমন করছিস কেনো।কিছু বলবি।
"
"
হুমমম,আগে বলেন রাগ করবেন না।ওয়াদা করেন।
"
"
জিসান কিছু একটা ভেবে,ওকে রাগ করবো না বল।
"
"
নিশি একজনকে ভালো বাসে।এ কথা বলার সাথে সাথে আমার সাহেবের চেহারার রং পালটে গেছে।
আপনে রাগ করবেন না বলেছেন।
"
"
জিসান নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,ছেলেটা কে।
"
"
তার পর আমি সব ডিটেলস বলি।উনি কালই আদির পরিবারের সব খোঁজ নিবেন আগে।তার পর সবাইকে জানাবেন।
"
"
রাত অনেক হয়েছে চল ঘুমাতে চাই।
"
"
পরের দিন জিসান আদির পরিবারের সব খবর নিতে থাকে।আদির পরিবারের কোনও খারাপ কিছু পায়নি।তাই বিষয়টি জিসান বড় ভাই ও নিজের বাবাকে বলে।জিসানের পরিবারের সবাই রাজি হয়ে যায়।তাই নিশি ও আদিকে কল করে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে বলে।
চলবে....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNia
part-42+43 last part
আজ আদি তার পুরো পরিবার নিয়ে আসছে,নিশিকে দেখতে।আদিকে জিসানের পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করেছে।নিশিকেও আদির পরিবারের ভালো লেগেছে।তাদের সবার সম্মতিতে সামনের মাসেই বিয়ের ডেট ফ্রিক্সড করা হলো।সবাই খুশি।আদি আর নিশিকে পাশাপাশি বসালো,দুজনকে বেশ মানিয়েছ। আদির মা নিশিকে আংটি,আর হাতে দুইজোড়া চুড়ি পড়িয়ে দিলো ডায়মন্ড এর।পরিবারের সবাই খুব খুশি বাড়ীর মেয়ের বিয়ে বলে কথা।আদির পরিবার সব কিছু ঠিকঠাক করে রাতে সবাই ডিনার করে চলে যায়।বিয়ে যেহুতু এক মাস পর, তাই বিয়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পরে জিসান ও তাওহিদ ভাইয়ের উপর।
"
"
"
"
বাড়ীর একমাত্র মেয়ের বিয়ে,কোন কিছুতে কমতি রাখতে চাইছে না জিসান ও তাওহিদ ভাইয়া।নিশির জন্য সোপিং হতে শুরু করে কোন কিছুতে ত্রুটি নেই।পুরো বাড়ীতে এক উৎসবের আমেজ এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে।মেহমানদের বিয়ের দাওয়াত দেয়া শেষ।বিয়ের সব প্রস্তুতিও প্রায় শেষ।বিয়ের এ সপ্তাহ আগে থেকেই মেহমান আসা শুরু হয়ে গিয়েছে।পুরো বাড়ী মেহমান দিয়ে গিজগিজ করছে।এতো মানুষের মাঝেও জিসান কিছুক্ষন পর পর আমাকে খুঁজে,মনে হয় আমি কোন ছোট বাচ্চা,মেলায় ঘুড়তে এসে ভিড়ের মাঝে হারিয়ে যাবো।এই নিয়ে বড় ছোট সবাই হাসাহাসি করা শুরু করে দিয়েছে ইতি মধ্যে।আমিতো রাগে তার দিকে তাকালে,সে ডোন্ট কেয়ার একটা লুক দেয়।আশ্চর্য!! এই লোকটার পাগলামি যে আমাকে সবার সামনে লজ্জায় পড়তে হয় সে কি বুঝে না।।
"
"
"
"
আজ নিশির গায়ে হলুদ,সবাই রেডি হয়ে নিচে চলে গেছে,অথচ আমি এখনো রেডি হতে পারিনি।ঈশান আজকাল খুব বেশি দুষ্ট হয়ে গেছে,একদম বাপের মতো।ওর কারনে আমিও রেডি হতে পারিনি।ওকে আগে রেডি করিয়ে ওর ফুফুর কাছে দিয়ে আসলাম।এখন যদি একটু শান্তি মতো রেডি হতে পারি।না তা কি আমার কপালে আছে।
রুমে এসে দেখি জিসান ওয়াসরুম থেকে চিল্লাচ্ছে।তিশা এই তিশা করে....।উফফ উনার আবার কি চাই।কি হলো এমন ষাঁড়ের মতো চেচামেচি করছেন কেনো।
=কি বললি.......তুই
না কিছুনা,আমি বলছিলাম কি,কিছু লাগবে।
=হুমমম,তোয়ালটা দে,আমি নিতে ভুলে গেছি।
উফফ,এই লোকটাও আমাকে শান্তি দিবে না,আমি তোয়াল টা নিয়ে দাঁড়ালাম, এই নিন।উনি তোয়াল সহ আমাকে ও টান দিলো, আমি নিজেকে সামলাতে না পেড়ে জিসানের উপর পরি।আর নিজেও ঝরনার পানিতে কাক ভিজা হয়ে পরি।এটা কি হলো।
জিসান আমার কোমড় জরিয়ে ধরলো।ছাড়ুন আমায়,আমাকে কেনো টেনে আনলেন।
=রোমান্স করবো বলে,জিসান আমার ঘাড়ে কিস করতে থাকলো।
এটা কি রোমান্স করার জায়গা।
=কি করবো বল,সারা দিন ব্যস্ততায় চলে যায়।আর রাতে ক্লান্তে ঘুম এসে পরে।তাই চিন্তা করলাম শাওয়ার নেওয়ার সময় রোমান্স করলে কেমন হয় বল।
আমার এতো শখ নেই,এমনেই আপনার ছেলের জন্য,রেডি হতে পারিনি।আর এখন আবার আপনে,আমি সাজবো কখন, রেডি হবো কখন।
=এমনেই তোকে দেখলে, চোখ সরাতে পারিনা,তার উপর আজ এতো বেশি সাজলে আমিতো ঘায়েল হয়ে যাবো।তখন কিন্তু আবার আমাকে আটকাতে পারবি না।
এই ছাড়েন আমায়,আপনে দিনদিন ফাজিল হয়ে যাচ্ছেন।একবাচ্চার বাবা হয়েও এতো রোমান্স কোথা থেকে আসে।
=মাত্র একটা বাচ্চা, আমার তো হাফ ডজন বাচ্চার প্লানিং চলছে,কল্পনা কর দুটো বেবি তোর কলে,আর একটা তোর আঁচল ধরে,মা মা বলে চিল্লাচ্ছে।আর বাকি গুলোরে আমি সামলাবো নি।
জিসান এর কথা শুনে আমার চোখ কপালে।লোকটা কি...আমার তো মাঝে মধ্যে মন চায় লোকটার মাথায় একটা বারি মারি।মাথায় কিছু সমস্যা আছে মনে হয়।হইছে থাক,আমার এ ধরনের কল্পনা স্বপ্নেও আসে না।তাই আপনার কল্পনার গাড়ী এখানেই থামান।
=জিসান আমাকে আরো কাছে টেনে নিয়ে, যাই বলস না কেনো।আমার কিন্তু একটা ছোট তিশা চাই,আর যে পর্যন্ত ছোট্ট একটা তিশা না পাই,আমার প্রসেসিং থামবে না।
আল্লার এই কোন পাগলের পাল্লায় আমায় ফালাইলা,উফফ,এবার বের হোন আপনে।নিচে সব মেহমান এসে পরছে... আর উনি ওয়াসরুম এ রোমান্স করছে,,,,এই জানতো আপনে এখন।আমি ধাক্কা দিয়ে জিসানকে সরিয়ে দিলাম।
=এখন ছেড়ে দিচ্ছি কিন্তু পরে এর উসুল উঠাবো।মনে রাখিস।
"
'
"
"
জিসান চলে গেলো, আমি তারাতারি বের হয়ে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম।হলুদের আয়োজন বাড়ীর সামনে খোলা জায়গায় করা হয়েছে।খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে।নিশিকেও খুব সুন্দর লাগছে আজ।আমার বাড়ী থেকেও রায়হান ভাই ও,বাবা মা এসেছে।কিছুক্ষন পর গায়ে হলুদের আয়োজন শুরু হয়ে গেলো।আমাকে কোন কাজ দেওয়া হয়নি,কারন ঈশানকে সামলাতে হয় বলে।আমার শ্বাসুড়ীর নির্দেশ আমি জাতে নিজেকে একটু দেখে রাখি,সাথে ঈশানকেও।তা না হলে তার ছেলেকে সে সামলাতে পারবে না।আআআ কি ভালোবাসা।তাই তারা আমাকে কোনও কাজই করতে দেয়নি।এক এক করে সবাই গায়ে হলুদ দিয়ে দিলো নিশিকে।এর পর কিছু নাচ গানের আয়োজন করা হলো।রাত অনেক হয়ে গিয়েছে।ঈশানেরও ঘুমের সময় হয়ে গিয়েছে।আমি জিসানকে খুঁজতে লাগলাম।কিছুক্ষন পর পেয়েও গেলাম।কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে।কিছুক্ষন আগেও তো খুব খুশি ছিলো।এখন কি হলো।আমি সামনে যেতেই ফোনটা রেখে দিলো।
কি হয়েছে,কোনও সমস্যা।
=জিসান আমার দিকে একটা মুসকি হেসে বললো।কিছু না।তুই এখানে কেনো।
আমি ভেতরে চলে যাচ্ছি,ঈশান খুব ঝালাচ্ছে, মনে হয় ঘুমাবে।আপনে ঠিক আছেন তো।
=হুমমম,সব ঠিক আছে।তুই ঈশানকে নিয়ে চলে যা।ভেতরে গিয়ে ফ্রেস হয়ে তুইও ঘুমিয়ে যাস।আমার লেট হবে আজ।
আমি চলে গেলাম,কিন্তুু আমার মন বলছে কিছু একটা ঘটতে চলছে।পিছে ফিরে দেখি জিসান আবার ফোনে কথা বলছে,আমি আর কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম।
"
"
"
"
ঈশানকে নিয়ে আমিও ঘুমিয়ে পরেছিলাম।গায়ে হলুদের পর জিসান কখন আসছে আমি বুঝতেও পারিনি।ফজরের আজানে আমার ঘুম ভাঙ্গে।উঠে দেখি জিসান নেই।আমার খুব ভয় হলো।দেরি হবে আসতে তা বলেছে।কিন্তু এখন দেখি উনি সারা রাতে আসেনি।আমি উঠে আগে নামাযটা পরে নিলাম।এর পর বাহির হয়ে সারা বাড়ী জিসানকে খুঁজতে লাগলাম।কিন্তু্ু জিসান বাসায় নেই।তাই দেরি না করে উনাকে ফোন দিলাম।কিন্তু ফোন বন্ধ বলছে।কেনো জানি আমার কিছু ভালো লাগছে না।মনটা খুব অশান্ত হয়ে পরেছে।আমি রায়হান ভাইকে কল করলাম।ভাইয়া কল ধরলো।আমি কিছু বলার আগেই ভাইয়া বলা শুরু করে দিলো।
হ্যালো তিশা।জিসান আমার সাথে আছে তুই চিন্তা করিস না।আমরা একটা কাজে আসছি।জিসানের ফোনে চার্জ নেই।ওকে....এখন রাখ।পরে কথা বলবো।
আমি কিছুটা টেনশন ফ্রি হলাম।কিন্তু মন থেকে কেনো জানি ভয়টা দূর হচ্ছে না কোনও মতে।
"
"
"
"
আমরা সবাই বিয়ের হলরুমে উপস্থিত হয়েছি।কিন্তু জিসান আর রায়হান ভাই এখনো আসেনি।মেহমানও এক এক করে এসে পরেছে।নিশিকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।প্রিয় মানুষটির সাথে বিয়ে হবে বলে নিশিকেও খুব খুশি লাগছে।এদিক দিয়ে তাওহিদ ভাই বর পক্ষকে বার বার ফোন দিচ্ছে কিন্তু আশ্চর্য কেউ ফোন ধরছেনা।কিছুক্ষন পর জিসান ও রায়হান ভাই কে দেখতে পেলাম।তাদের গায়ে এখনো কাল রাতের হলুদের পোষাক।আর চেহারা দেখেই বুঝতে পারলাম কিছু একটা হয়েছে।
"
"
"
"
পুরো পরিবার রেস্ট রুমে।বর পক্ষ আসবে না।জিসান নিজে বিয়ে ভেঙ্গে আসছে।সবাই বিষ্ময় হয়ে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে,কারন জানার জন্য।নিশির চোখের পানি মনে হয় কোনও বাধ মানছে না।জিসান নিশির কাছে গিয়ে হাটুভাজ করে বসে নিশির হাত দুটো নিজের হাতে নিয়ে বলতে শুরু করলো।
কাল রাত....বাহির থেকে নিলয় কল করেছিলো।নিলয় এতোদিন জানতো না,আদির সাথে তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে।আমি ওদের বাসায় কার্ড দিয়েছিলাম।কিন্তু নিলয়ে বাংলাদেশ এর বাহিরে ছিলো বলে এ কয়দিন ওর সাথে কোনও কথা হয়নি।কিন্তু কাল ও ফোন করে যা বললো।তা শুনার পর আমার নিজের প্রতিই খুব রাগ হয়েছিলো।কেনো আমি আরো ভালো করে আদির খোঁজ নিলাম না।আদির কোন ও খারাপ রেকর্ড এখানে পাইনি কারন আদি পাঁচ বছর ধরে বাহিরে ছিলো।কিন্তু ওখানে আদির অতীত খুব জঘন্য ছিলো।আর ওর অতীত তোর বর্তমানকে ধ্বংস করে দিতো।তাই বাধ্য হয়ে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে হয়েছে।
"
"
"
বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছিস, কেনো?এতো মেহমান যে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে তাদের আমি কি জবাব দেবো।আমার এতো বছরের মান সম্মান সব ডুবিয়ে দিলি।কেনো করলি, আমাদের সাথে কিছু না জিঙ্গেস করে। কারনটা কি,বল....তৌফিক।
"
"
"
আদি লিভিং রিলেশন এ ছিলো এতো বছর, তা আবার একজনের সাথে নয়।অনেক মেয়ের সাথে ওর সম্পর্ক ছিলো।এদের মধ্যে একটা মেয়ে পেগনেন্ট হয়ে পরেছে।যখন আদি জানতে পারে,ও ওখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশ এ এসে পরে।আদি মনে করেছে এসব কিছু এখানে কেউ কোনদিন জানতে পারবে না।আর এখানে আসার পর ওর বাবা মা বিয়ের জন্য জোরাজোরি করছিলো বলে ও নিশিকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে।তা না হলে ও নিশিকে কখনো বিয়ে করতোই না।আর এসব ও নিজে স্বীকার করেছে।পুলিশের কাছে।কারন কাল রাত নিলয় ওই মেয়েটাকে নিয়ে বাংলাদেশ এ আসে প্রমাণ সহ।সারারাত আমরা এয়ারপোর্ট এ অপেক্ষা করতে থাকি,নিলয় সেই মেয়েটাকে নিয়ে এলে,আমরা থানায় যাই।মেয়েটা ওখানে সব প্রমান দেয়।মেয়েটার নাম এলিনা।এলিনা সব খুলে বলে।এর পর পুলিশ আদিকে গ্রেফতার করে জিঙ্গেসা করলে ও সব স্বীকার করে।এবার বলো বাবা এর পরও কি এই ছেলের সাথে শুধু মান সম্মান এর ভয়ে বিয়ে দিয়ে দেবো।চোখের সামনে নিজের বোনের জীবন কিভাবে নষ্ট হতে দিবো।
"
"
সবাই চুপ।কারো মুখে কোনও কথা নেই।নিশিও কেমন জানি চুপ হয়ে গেলো।চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে।
"
"
এখন কি করবো বাবা।মেহমানদের কিছু একটা বলতে তো হবে।~তানজিলা।
"
"
সবাইকে বলে দেও বউ মা এই বিয়ে হবে না।সবাই কে চলে জেতে বলো।কথাটা বলতে গিয়ে আমার শ্বসুড়ের চোখে জল এসে পড়লো।
সবাই কিছুক্ষন নিরব হয়ে গেলো।
চলবে....
ভাইয়ের বন্ধু যখন বর😍
writer -TaNia
part-last part....
এখন কি করবো বাবা।মেহমানদের কিছু একটা বলতে তো হবে।~তানজিলা।
সবাইকে বলো বউ মা এই বিয়ে হবে না।
সবাই কিছুক্ষন নিরব হয়ে গেলো।কারো মুখে কোন শব্দ নেই।
আসলে সবই কপাল।ভাগ্যের উপর কারো নিয়ন্ত্রন নেই।কাল যে জায়গায় আমি ছিলাম,আজ নিশি দাঁড়িয়ে আছে।আমার জন্য তো জিসান ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।কিন্তু নিশির জন্য কে আসবে।বিয়ে ভাঙ্গার জন্য নিশিকে সমাজের কিছু নিকৃষ্ট মানুষের অনেক কথা শুনতে হবে।দোষ না হওয়া সত্যেও নিশিকে সবাই দোষী করবে।চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম রায়হান ভাই নেই এখানে।তাই আমি রায়হান ভাইকে খুঁজতে বের হলাম।বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগেরেট খাচ্ছে আর কিছু হয়তো চিন্তা করছে।
"
"
"
ভাইয়া কি চিন্তা করছো।
~জিসানের কথা, জিসান আজ কতোটা অসহায় ফিল করছে আমি জানি।কারন এমন একটা দিন আমিও অনুভব করেছিলাম।তাই জিসানের কস্টটা খুব ভালো করে বুঝতে পারছি।কিন্তু আমি জানি জিসান নিশিকে সামলিয়ে ফেলবে।
"
"
জিসান হয়তো নিশিকে সামলিয়ে ফেলবে কিন্তু কাল যখন বিয়ে ভাঙ্গার কারন সবাই জানবে তখন সবাই নিশির চরিত্রেও আঙ্গুল তুলবে।আদি আর নিশির রিলেশন নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠবে।আদির চরিত্রে সমস্যা ছিলো,নিশির না।কিন্তু সবাই নিশির চরিত্রেও আঙ্গুল তুলবে,তখন কি হবে ভাইয়া।কাকে কাকে বুঝাবো,আর কিভাবে.....।একটা কথা বলি ভাইয়া..প্লিস রাগ করো না।
"
"
একদিন তোমার বোনের সম্মান জিসান বাঁচিয়েছে।আজ তুমি কি তার বোন আর পরিবারের সম্মান বাঁচাতে পারবে না।
"
"
মানে,তুই কি বলতে চাস।খুলে বল।রায়হান ভাই জিঙ্গেসা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
"
"
ভাই তুমি নিশিকে বিয়ে করে নেও।
"
"
তিশা তুই ঠিক আছিস।কি বলছিস।
"
"
কেনো ভাইয়া কি হয়েছে। নিশি খুব ভালো একটা মেয়ে।আদিকে ও ভালোবাসতো কিন্তু এতে ওর চরিত্রে একটা দাগও লাগতে দেয়নি।আমি জানি।ও না বুঝে একটা নোংরা মানুষকে ভালোবেসে ফেলেছিলো,তার জন্য ও কেনো শাস্তি পাবে বলো।
"
"
নিশি সে ধরনের মেয়ে না, আমি খুব ভালো করে জানি।
"
"
তাহলে সমস্যা কি?
"
"
সমস্যা হলো নিশি একটি বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে,ওর ভাইয়েরা ওকে কোনও অভাব বুঝতে দেয়নি।ওর সব চায়িদা পুরোন করার মতো সমর্থ এখনো আমার হয়নি।আমার সাথে থাকতে হলে ওকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে।আর আমার মনে হয়না আমার সাথে ও খুশি থাকবে।তাই এধরনের ভাবনা বাদ দে।
"
"
ভাইয়া তুমি জানো না নিশি এমন না,ও খুব বুঝের একটা মেয়ে।কোন পরিবেশে কিভাবে চলতে হয় ও খুব ভালো করে জানে।এতো বড় ঘরের মেয়ে হওয়া সত্যেও খুব সাধারন ভাবে চলাফেরা করে।হয়তো একটু সময় লাগবে কিন্তু ধীরে ধীরে ও তোমাকে মেনে নেবে।তুমি খুব সুখী হবে ওর সাথে।
তিশা জাস্ট স্টোপ, আমি আর কিছু শুনতে চাইনা।
"
"
"
কিন্তু আমরা শুনতে চাই রায়হান।
তিশা ও রায়হান পিছে ঘুরে দেখে জিসান ও তাওহিদ দাঁড়িয়ে আছে।ওরা সব শুনেছে।এতোক্ষন তিশা ও রায়হান এর সব কথা।
বলো রায়হান, তুমিও কি ভাবো আমার বোনের দোষ ছিলো,তাই ওর সাথে এমন হয়েছে।
ভাইয়া একদম না।এখানে নিশির কোনও দোষ নেই।কারো চেহারা দেখে যদি বুঝা যেতে কে কেমন,তাহলে কেউ ভুল মানুষকে ভালোবাসতো না।আসলে সমস্যা সেটা না।
তাহলে কি সমস্যা রায়হান।তুই শুুধু বল তুই বিয়ে করবি কিনা,হ্যা আথবা ন্যা উত্তর দিবি।আর এতে তোর উপর কোন ফোর্স করবো না।মন থেকে মেনে নিতে পারলে বলবি।
রায়হান কিছুক্ষন ভেবে,যদি নিশার কোন আপত্তি না থাকে,তাহলে ওকে বিয়ে করতে আমি রাজি।কিন্তু প্লিস পরিবারের মান সম্মান বাঁচাবার দায়িত্ব ওর উপর বলে ওকে জোরাজোরি করিস না।ও যদি মন থেকে এই সম্পর্কটাকে গ্রহন করে তাহলে আমার কোনও সমস্যা নেই।
তিশা রায়হান এর মুখে হ্যা শুনে খুশিতে রায়হান এর বাহুটা শক্ত করে ধরলো।
"
"
"
"
তিশা আর জিসান নিশির পাশে বসে আছে।নিশিকে সব খুলে বললো তিশা।নিশি আমার ভাই হয়তো তোমার সব চায়িদা পুরণ করতে পারবে না।কিন্তু ভালোবাসার কমতি হবে না সেখানে।আমরা তোমাকে জোড় করবো না।তুমি হ্যা বলো বা না,পুরো পরিবার তোমার সাথে আছে।আমরা জানি এতে তোমার কোনও দোষ নেই।তাই তুমি ভালো করে ভেবে বলো।নিশি শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো কিছুই বলছিলো না।
"
"
"
"
হল রুমে এখনো মেহমানদের সমারোহ। কিছুক্ষন পর বর এসে হাজির হলো।একদম সাদাসিধে ভাবে বরকে দেখে অনেকে অনেক কথা বলছে।কারন রায়হান ভাই একদম নরমাল একটা পান্জাবী পরে বিয়ের আসরে বসেছে।অবশেষে সবার সম্মতিতে রায়হান ও নিশির বিয়েটা হয়ে গেলো।দুপরিবারের সবাই খুশি।নিশির মুখে এখনো হাসি নেই।কিন্তু আমি জানি রায়হান ভাই ঠিক নিশির মনে জায়গা করে তুলবে।নিশিও একদিন রায়হান ভাইকে মেনে নিবে।
"
"
"
"
নিশিকে বিদায় দিয়ে সবাই বাড়ী চলে এলাম।সবার মুখে এখনো টেনশন বিরাজ করছে।সবার মনে একই চিন্তা নিশি ও রায়হান সুখে থাকতে পারবে কিনা।রাত ১২ টা বাজে এখনো জিসান আসেনি,আমি জানি ও এখন কোথায়।নিশ্চই নিশির ঘরে।হয়তো বোনকে স্মরন করে নিরবে কিছুক্ষন কাঁদবে।
এদিকে জিসান নিশির রুমে দেয়ালে টাঙ্গানো তাদের তিন ভাইবোনের ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমরা কি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি জিসান।তোর মনে হয়।
রায়হান খুব ভালো ছেলে ভাইয়া,তুমি দেখো একদিন তুমিও বলবে রায়হান নিশির জন বেস্ট চয়েজ।
তাই জেনো হয় ভাই।না হলে নিজেকে বড় অপরাধী মনে হবে সারাজীবন।
তুমি চিন্তা করো না,রায়হান নিশিকে অনেক সুখে রাখবে।আমার বিশ্বাস নিশির হারিয়ে যাওয়া হাসিটা খুব শীঘ্রই দেখতে পাবো আমরা।
হুমমমম।অনেক রাত হয়েছে।গিয়ে এখন রেস্ট নে।গুড নাইট।তাওহিদ চলে গেলো।জিসান আরো কিছুক্ষন থেকে চলে গেলো।
"
"
"
নিশির বিয়ের চারমাস পর....
ঈশানের জন্মদিন আজ।দেখতে দেখতে ঈশানের এক বছর হয়ে গেলো।ঈশান এখন,জিসানকে দেখলে বা বা বলে দৌড়ে চলে যায়।ছেলেরা নাকি মায়েদের বেশি ভক্ত হয়,কিন্তু আমার ছেলে বাবা বলতে পাগল।বাবা কে পেলে আমাকে ভুলে যায়।কি আশ্চর্য!!
রাতে বড় পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।ঈশানের প্রথম জন্মদিন উপলক্ষে সকল মেহমান এসে পরেছো,কিন্তু আমরা যাদের জন্য অপেক্ষা করছি তারা এখনো আসেনি।
ঐদেখো এসে পরেছে আমাদের লাভলি কাপল।পিছনে ঘুড়ে দেখি নিশি ও রায়হান ভাই।দুজনকে এক সাথে খুব সুন্দর লাগছে।আজ দুজনকে একসাথে খুশি দেখে সত্যি ভালো লাগছে।নিশিও ভাইকে মন থেকে মেনে নিয়েছে।তার জন্য ভাইকেও অবশ্যই কিছু কাঠকয়লা পুরাতে হয়েছে।বেচারা রায়হান ভাই, বিয়ের পর নিশির প্রেমে পরে গেলো,এর পর বউয়ের মন পেতে এক প্রকার যুদ্ধে নেমে গেয়েছিলো।অবশেষে নিশিও রায়হান ভাইয়ের ভালোবাসাকে মেনে নিলো।এর পর তো শুরু হয়ে গেলো নতুন জামেলা।রায়হান ভাই আর জিসান জিগারের বন্ধু।জিসান যেমন আমায় জালিয়েছে রায়হান ভাই ঠিক তেমনি নিশিকে জালাতে লাগলো।এটা করা যাবে না,ওটা করা যাবে না।কোথায় যাওয়া যাবেনা একা,উফফফ,এমন হাজারো অভিযোগ নিশি আমাকে করতো।কারন আমি যেমন জিসানের কোন অভিযোগ করলে ভাইয়ার কাছে পাত্তা পেতাম না,এখন নিশিও পায় না।বেচারী এক হিটলার থেকে মুক্তি পেয়ে আরেক হিটলারের পাল্লায় পরেছে।তাই নিশিকে সান্তনা দিয়ে বলি.... ভাইয়ের বন্ধু যখন বর হয় তখন কপাল এমন নি হয়।আর যদি কপাল গুনে রায়হান ভাই আর জিসানের মতো হলে তো কথাই নাই।......হা হা হা।
সবাই এসে পরেছে এবার তো কেকটা কাটো।[তানজিলা ভাবীর কথায় কল্পনা থেকে বের হয়ে আসলাম]
আরেক জন এখনো আসেনি,সে আসুক। [জিসান]
কে সে....????[তানজিলা ]
আমি এসে পরেছি.....নিলয়ের হাতে ঈশানের জন্য বিশাল বড় একটা টেডিবিয়ার।
এই তুই আমার এক বছররের ছেলের জন্য এতো বড় টেডিবিয়ার এনেছিস কেনো ছাগল।আমার ছেলে কি এটা দিয়ে খেলতে পারবে।
সমস্যা নাই ব্রো,ঈশান না খেলতে পারুক,ঈশানে মামা খেলবে।
তিশা ভ্রুটা কুচকিয়ে, আ...মি।আমি কি ছোটবাচ্চা যে টেডিবিয়ার দিয়ে খেলবো।
জি ম্যাম,আপনে তো জিসানের পিচ্ছি তিশা।জিসানের চোখে আজও আপনে একটা পুচকি মেয়ে,যাকে ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবে।বুঝলেন....
হইছে অফ জা।আমার তিশাকে এতো পিচ্ছি বলিস না পরে কলে উঠে কাঁদতে লাগবে।
সমস্যা কি একটা চকলেট দিয়ে দিস, ইসপেসিয়াল চকলেট।
আমিতো এদের কথা শুনে শোকড।এদের কারো লজ্জা শরম বলতে কিছু নাই।সবাই কি সুন্দর করে হাসছে।
হইছে আর আমার মেয়েটাকে লজ্জা দিতে হবে না।আয়তো মা, চল আমরা কেক কাটি।তোরা আসলে আস,না আসলে থাক এখানে।তিশা রাগ করায় তিশার শ্বাসুড়ী এসে নিয়ে যায়।কিছুক্ষন পর কেক কেটে ঈশানের জন্মদিন পালন করা হলো।বাচ্চাদের জন্য রিটার্ন গিফ্ট এর ব্যবস্থাও করা হলো।খুব আয়োজনের সাথে শেষ হলো ঈশানের জন্মদিন।
"
"
রাতে আস্থে আস্থে সব মেহমান চলে গেলো,রায়হান, নিশি ও নিলয় বাদে।জিসানের কোলে ঈশান ঘুমিয়ে পড়লো।তাই জিসান ঈশানকে রুমে নিয়ে গেলো।এক এক করে সবাই রুমে চলে গেলো,রায়হান ভাই ও নিশিকে আজ জেতে দিনাই।ড্রয়িংরুম এ আমি আর নিলয় বসে আছি।
"
"
সবাই তো বিয়ে করে ফেলেছে,আপনার খবর কি নিলয় ভাইয়া।এবার একটা বিয়ে করে ফেলেন।
"
"
নিলয় একটা মুসকি হেসে, তোমার মতো একটা খুঁজে দিতে পারলে বিয়ে করে নেবো।
"
"
এটা কিভাবে সম্ভব,যদি আমার একটা বোন থাকতো তাহলো আপনাকে ধরে ওর সাথে বিয়ে দিয়ে দিতাম।কিন্তু তাও এখন সম্ভব না।
"
"
আচ্ছা একটা কথা বলি মাইন্ড করবে নাতো।
"
"
হুমমমম,বলুন।মাইন্ড করবো কিনা তা তো কথার উপর ডিপেন্ড করে।
"
"
যদি জিসান না থাকতো তোমার জীবনে,তাহলে আমার জায়গা কি হতো তোমার মনে।
"
"
তিশা কিছুক্ষন ভেবে,একটু হেসে জবাব দিলো,আসলে ভাইয়া যদি জিসান না থাকতো তাহলো হয়তো আমার সাথে আপনার দেখাটাও হতো না।তখন হয়তো আপনে অন্য কাউকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন।হয়তো আমি আর জিসানও অন্য কাউকে নিয়ে ব্যস্ত হতাম।তখন আমাদের তিনজনই আলাদা তাকতাম।একজন আরেক জনকে হয়তো চিনতামও না।কিন্তু দেখুন আজ ভাগ্য আমাদের এক সাথে নিয়ে এসেছে।জানেন নিতো আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আপনার জন্যও কোথাও হয়তো কেউ অপেক্ষা করছে।শুধু তাকে খোজার বাকি।মনে রাখবেন ভালোবাসা মানে চাওয়া না,দেয়ার নাম ভালোবাসা।আপনার সামনে বসে থাকা ব্যক্তিটা কে আপনে হয়তো ভালোবাসেন।কিন্তু বিনিময় সে আপনাকে ভালোবাসবে এটা চাওয়া বোকামি। লাইফটা তো তখন বেশি সুখী হবে যখন কেউ আপনাকে পাগলের মতো ভালোবাসবে,আর আপনে তার ভালোবাসা গুলোকে চাইলেও দূরে ফেলতে পারবেন না।আপনার জন্য নিশ্চই এমন কেউ আছে।শুধু মনের চোখ দিয়ে একবার খোঁজেন পেয়ে যাবেন। যা আপনার তা আপনারি থাকবে।কিন্তু যা আপনার না তাকে নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না।ভাগ্য বলেও একটা কথা আছে।এই জীবনে আমি শুধু জিসানের।তাই উনাকে ছাড়াতো এখন কল্পনাও করতে চাই না।[তিশা আর কিছু বলার আগে জিসান রুম থেকে ডাকা শুরু করলো]
হুমমম, আমি সবই বুঝতে পেরেছি।চিন্তা করো না,আমার জন্য তোমার জীবনে কখনো ঝড় আসবে না।শুধু দোয়া করো আমি জেনে এমন কাউকো খুঁজে পাই।যে শুধু আমার.....আর কারো না।
নিলয়ের কথা শুনে তিশা হেসে দিলো।নিলয় বিদায় নিয়ে চলে গেলো।তিশা কথাগুলো আজ ইচ্ছা করেই বলেছে।কারন তিশা নিলয়ের চোখে নিজের জন্য কিছু ফিলিংস দেখেছে।আর তিশা চায়না,নিলয় এভাবে বাকি জীবন এভাবে কাটাক।অপেক্ষা জিনিসটা খুব খারাপ।আর নিলয় শুধু নিজের মনকে মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছে।কারন তিশা তো শুধু জিসানের আর কারো না।
"
"
"
রুমে এসে দেখি জিসান সাহেব রুমে নেই।কোথায় গেলো।বারান্দায় গিয়ে দেখি উনি এখানে, কি করছেন আপনে এখানে।ঘুমাবেন না।
জিসান আমাকে টেনে তার বুকের সাথে আমার পিঠটা রেখে জরিয়ে ধরলো।
তোর জন্যই অপেক্ষা করছি।
তাইই....
হুমমমম....
আচ্ছা বাবা মা কবে যাবে।
সামনের সপ্তাহে তাদের ফ্লাইট।তারা হাজ্ব করে আসলে তোকে আর ঈশানকে নিয়ে লন্ডনে যাবো।লাবনি বার বার ফোন দিচ্ছে, ও ঈশানকে দেখতে চায়।
লাবনি আপু সুখে আছে,এটা শুনেও খুব ভালো লাগলো।আপু নাকি পেগনেন্ট।
হুমমম, তাইতো আমাদের জেতে বলছে।ভাবলাম হানিমুনে তো কোথায়ও যাওয়া হয়নি, এই বাহানায় হানিমুন ও করা হবে।কি বলিস।
উমমম,আইছে বুড়া বয়সে হানিমুন করতে।শখ কতো।আমি উনার হাতের বাধনটা খুলে চলে জেতে নিলাম।
কি বল্লি আমি বুড়ো হয়ে গেছি।তাহলে দেখ এই বুড়োর রোমান্টিক অত্যাচার সহ্য করতে পারিস কিনা,জিসান আমাকে কোলে তুলে নিলো।
দেখুন নামান আমাকে একদম উল্টাপাল্টা কিছু করতে আসবেন না।ঈশান উঠে যাবে।
ঈশান আমার ছেলে,তাই আমার রোমান্সে ও ডিস্টার্ব কখনো করবে না।আর তোর সাথে করবো না তো কার সাথে করবো।পাঠকদের মধ্য থেকে এনেদে কাউকে।
জিসানের জন্য পাঠকরা ও পাগল।কি বলিস।
সব শাঁকচুন্নি কে আমি পচা পানিতে চুবিয়ে মারবো।কেউ আপনার দিকে নযর দিলে।
তাই পাঠকগন ওদের আমরা আর ডিস্টার্ব করতে চাইনা।এভাবেই বেঁচে থাকুক ওদের ভালোবাসা।
---------------------++++সমাপ্ত+++++-------------------
[[এবার গল্প নিয়ে কথা বলি,এটা আমার প্রথম গল্প,আমি খুব চেস্টা করেছি,সব চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে।কতোটা পেরেছি জানি না।আজ আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই পুরো গল্পটা কেমন লাগলো।
আপনাদের সারা পেলে নতুন গল্প দেবো।আসা করবো আপনারা পাশে থাকবেন।]]

No comments:

Post a Comment

অদৃশ্য পরী

  ----দেবর সাহেব, তো বিয়ে করবে কবে? বয়স তো কম হলোনা ৷ ----আপনার মত সুন্দরী কাউকে পেলে বিয়েটা শীঘ্রই করে ফেলতাম ৷ -----সমস্যা নাই তো, আমা...