সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
>>>>>>>>>>>>>>>>
-ভাই কুমিল্লার একটা টিকেট দেন তো
-৫০০ টাকা লাগবো ভাই
-৩০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা কেনো??
-ভাই রাতে ভাড়া বেশি
-একটু কম রাখা যায়না
-বেশী প্যাচাল পাইরেন না। নিলে নেন, না নিলে নাই
-আচ্ছা দেন
-এই যে ভাই আপনার টিকেট
-ভাই বাস কখন ছাড়বে??
-ছিটে গিয়ে বসেন বেশী দেড়ী হবে না
-আচ্ছা ভাই ঠিক আছে
টিকেট যিনি কাটছিলেন তার নাম শুভ। কুমিল্লা যাচ্ছে তার খালার বাসায়। দুই দিন পড় তার খালাতো বোন এর বিয়ে। শুভর পরিচয় টা দিয়ে নেই। শুভ অনার্স থার্ড ইয়ার পর্যন্ত পড়ার পর আর লেখাপড়া করা করে নি। একবছর হলো সে বাদ দিয়েছে। এখন ঢাকা তে দিন এর বেলায় শরবত বিক্রি আর রাতে একটা রিক্সা ভাড়া করে অনেক রাত পর্যন্ত চালায়....অনার্স ফাস্ট ইয়ার এ থাকতে তার মা মারা যায়। আর তার বাবা কে সে জন্মের পর দেখেই নি। তার এত পরিশ্রমের কারন হলো টাকার জন্য সে লেখাপড়াটা করতে পারে নি। তাই একটু রাগ আছে। অভাব যাতে তাকে না ছুতে পারে,তাই সে একটু বেশি পরিশ্রম করে....রাতের কাজটা শেষ করে সে খালার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস স্ট্যান্ড এ আসে....
শুভ বাসে উঠে তার ছিটে গিয়ে বসলো। সে সিটে বসার সাথে সাথে..
-এই (জানালারে ধারে ছিটে একটা মেয়ে)
-জ্বি (শুভ)
-নর্দমা থেকে উঠে আসছেন নাকি??(মেয়েটি মুখে হাত দিলো)
-আরে না নর্দমা থেকে উঠে আসবো কেনো??
-আপনার গা থেকে যে গন্ধ বের হচ্ছে তা তো নর্দমা কে হার মানিয়ে দিয়েছে
-আর বইলেন না। কাজ শেষে ওমনি এসে বাসে উঠছি আর এখন যে গরম পড়ে...
-ওয়া ওয়া
-কি হয়েছে??
-প্লিজ আপনি উঠে দাড়ান আমি গন্ধ সহ্য করতে পারছি না
-কিন্তু
-ওয়া
শুভ ভয় পেয়ে উঠে দাড়ালো। বাসটি তখন ছেড়ে দিয়েছে। হেল্পার বলল "এ ভাই ছিটে বসেন" শুভ কিছুই বলল না। সেই সিট ধরে দাড়িয়ে আছে। আর মেয়েটা কানে ইয়ার ফোন দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
-এই যে শুনছেন(শুভ)
-.........
-এই যে ম্যাডাম
-জ্বি বলেন
-এখন কি বসতে পারি??
-নাহহহ
-ঘাম তো নেই বাতাসে শুকিয়ে গেছে
-আচ্ছা বসেন তাহলে
মেয়েটার ফোনে ফোন আসে...
-হ্যালো মা (মেয়েটি)
-হ্যা মা বল (ওপাশ থেকে)
-তুমি ঠিক বলেছিলে আমার "কার" টা নিয়ে আসলে ভালো করতাম
-মার কথা তো শুনবি না। এখন কি খারাপ লাগছে তোর??
-এতক্ষণ ভালই ছিলাম। কিন্তু এখন একটা নর্দমার পাশে বসে আছি
-কিহহহ?? নর্দমা মানে?? তুই বাসে না??
-হ্যা মা বাসে। কিন্তু আমার পাশে একটা নর্দমা বসে আছে
-কি বলিস কিছুই বুঝি না
-মা রাখো তো। তোমাকে বুঝতে হবে না
-হ্যা দেখে যাস। আর ওখানে গিয়ে ফোন করিস
-আচ্ছা
মেয়েটি কথা বলা শেষ করে। শুভ এবার অপমান সহ্য করতে না পেরে আবার উঠে দাড়ায়। দাড়িয়ে থেকে শুভ তাকে বলে..
-আপনি তো পড়ালেখা করেন তাই না(শুভ)
-হ্যা
-কিসে পড়েন??
-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি বি এ করছি এবার ফাইনাল ইয়ার।
-তো শিক্ষিত মানুষ হয়ে আপনার ব্যবহার টা যে এমন হবে। এটা তো আশা করা যায় না
-আপনি আমাকে ব্যবহার শিখাতে আসছেন??
-আমি শিখাবো কেন?? আপনার বাবা মা শিখাবে এগুলা
-.....আজাইরা লেকচার দিতে আসছে। নর্দমা যত্তসব (মেয়েটি একটু আস্তেই বলল। কিন্তু শুভ কথাটা শুনতে পেলো। আর কিছু বলল না)
টানা ৮ ঘন্টা জ্যাম থাকার কারনে গাড়ি কুমিল্লায় পৌছায় ভোরের দিকে। এতসময় শুভ দাড়িয়ে ছিলো। আর মেয়েটি কানে ইয়ার ফোন দিয়ে গান শুনেছে আর ঘুমাইছে।
শুভ গাড়ি থেকে নেমে বাইরে আসে। বাইরে এসে দেখে তার খালাতো বোন (যার বিয়ে সে)...
-কিরে তুই এখানে কি করিস এত ভোরে (শুভ)
-আরে ভাইয়া তুই কেমন আছিস??(বোন)
-হ্যা ভালো। এখানে কেন তুই??
-আমার একটা ফ্রেন্ড আসছে তাই ওকে নিতে আসছি
-তুই একাই আসছিস??
-নাহহ বাবা আসছে
-খালুজান কই??
-ওই পাশের দোকানে বসে চা খাচ্ছে..
-ওই তো ইরা.... ওই হারামীইইই(বোন)
শুভ দেখেই তো টাসকি। আরে এ তো বাসের ওই ম্যাডাম টা।
-ইয়েএএএএ কেমন আছিস (ইরা)
-খুবই ভালো তুই??
-ভালো ছিলাম না তোকে দেখে বেশি ভাল লাগছে।
-ভাইয়া ও ই...(শুভ নেই)
-আরে কাকে ভাইয়া বলছিস?? এখানে তো কেউ নেউ
-না ছিলো তো কই যে গেলো..
-থাক বাদ দে চল এখন। আর বাস অনেক লেট করছে।
-লেট হইছে ভাল হইছে। রাতে আসলে তো আমি তোকে নিতে আসতে পারতাম না।
-তা ঠিক বলছিস
-হুমমম ওই যে বাবা আসছে
-আলো তোর কি কোনো কিছু কেনা লাগবে??(আলো হচ্ছে শুভর খালাতো বোন এর নাম)
-না বাবা কিছু কেনা লাগবে না। বাবা ও ইরা আমার ফ্রেন্ড
-আংকেল কেমন আছেন??(ইরা)
-জ্বি মা ভালো তুমি কেমন আছো??
-ভালো
-তোমার বাসার সবাই কেমন আছে
-বাসার সবাই ভালো আছে
-বাবা তোমার সাথে ভাইয়ার সাথে দেখা হইছিলো??
-কোন ভাইয়া??
-শুভ ভাইয়া??
-ওহহ হ্যা ও এসে আমার সাথে দেখা করে বাজারে গেছে। কি যেনো কিনবে বলল
-আচ্ছা বাদ দাও চলো এখন
-হুমম চল
এদিকে শুভ কেনাকাটা শেষ করে খালার বাসায় যায়...তার খালাতো।বোন তিন টা কোনো ভাই নেই। শুভ কে তারা তাদের নিজের ভাই এর মতই আদর করে। বাসায় আসার সাথে সাথে সে কি একটা অবস্থা। সবার জন্য একটা করে জামা কিনে আনছে আরও কত কি!
-ভাইয়া তুই কালো হয়ে গেছিস(একটা বোন)
-ফর্সা ছিলাম কবে??(শুভ)
-ছিলে তো অনেক
(শুভ যে কাজ করে তা বাসায় বলে নি। সবাই জানে একটা বড় দোকানে থাকে)
-এ বাদ দে গোসল করব।তার পর একটু ঘুমাবো সারা রাত ঘুমাতে পারি নি
-কেনো??
-আর বলিস না একটা ভেজাল এ পড়ছিলাম
-কিসের ভেজাল
-ওই চোপপ সব কথা তোকে বলতে হবে??? এখন যা একটা তোয়ালে নিয়ে আয়
-আচ্ছা..
গোসল করার পর
-ওই কোন রুমে ঘুমাবো(শুভ তার একটা বোনকে বলে)
-তুমি আমার রুমেই যাও
-ওকে। আর হ্যা ডিস্টার্ব করবি না একদম
-না ভাইয়া ডিস্টর্ব করবো না
শুভ গিয়ে রুমে ঠুকতেই....
-আআআআআআআ
-ই আল্লাহ কি দেখালাম এগুলা??
ভেতরে একটা মেয়ে ড্রেস চেন্জ করছিলো...মেয়েটি ভেতর থেকে বলল
-এই আপনার আক্কেল জ্ঞান কিছু নেই??
-না আছে তো(শুভ বাইরে থেকে বলল)
-আরে আপনি নক করে ভেতরে ঠুকতে পারেন নি??
-আপনি দরজা আটকালেন না কেনো??
কথা বলতে বলতে মেয়েটি বাইরে চলে আসলো....বাইরে এসেই দেখে
-নর্দমাআআআআ
-এ থামেন এত চিল্লাচ্ছেন কেনো?? আমার শরীর থেকে তো কোনো গন্ধ আসছে না
-তুই এখানে কেনো??
-এটা আমার বাড়ি।
-কিহহহহ??
-জ্বি
-আলো তোর কি হয়
-বোন
-ওর তো কোনো ভাই নেই। ফাজলামি করিস আমার সাথে
-আমি ওর খালাতো ভাই
-এটার প্রতিশোধ আমি নিবো
-কোনটার প্রতিশোধ??
-মাত্র যেটা হলো এইটার
-আমি কি ইচ্ছা করে করেছি নাকি??
-দেখিস আমি কি করি
-যা পারেন করেন। এখান থেকে সরেন তো ঘুমাবো
-এটা তো আমার রুম, আলো এখানে আমাকে থাকতে দিয়েছে
-এটা যার রুম সে আমাকে থাকতে দিয়েছে
-নাহহ এখানে আমি থাকবো
-কখনই না এখানে আমি থাকবো। সরেন তো
-তুই ভেতরে আসলে খবর আছে
-তুই বাইরে না গেলে খবর আছে
-তোর তো সাহস কম না আমাকে তুই করে বলছিস নর্দমা
-তোর তো সাহস কম না তুই আমাকে তুই করে বলিস নর্দমা বলিস। আমি যদি নর্দমা হই তাহলে তুই বুড়িগঙ্গা নদী
।।
।।
।।
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 2
>>>>>>>>>>>>>>>
-তুই ভেতরে আসলে খবর আছে(ইরা)
-তুই বাইরে না গেলে খবর আছে(শুভ)
-তোর তো সাহস কম না আমাকে তুই করে বলছিস নর্দমা
-তোর তো সাহস কম না তুই আমাকে তুই করে বলিস নর্দমা বলিস। আমি যদি নর্দমা হই তাহলে তুই বুড়িগঙ্গা নদী
দুজনের ঝগড়া শুনে আলো চলে এলো।
-কিরে ইরা কি হইছে???(আলো)
-তুই ই বল তুই আমাকে এই রুমে রেখে যাস নি??(ইরা)
-হ্যা
-ও তাহলে এখানে কেনো??(শুভকে দেখিয়ে বলল)
-আচ্ছা শোন ওটা আমার ভাই শুভ। আর ভাইয়া ও ইরা
-ইরা নাকি ইরানি জিরা সেটা আমার দেখার দরকার নাই। ওনারে ক এই রুম ছাইরা দিতে
-ভাইয়া আসলে ও তো গেস্ট আর তুমি আমাদের ফ্যামিলি মেম্বর..
-হইছে আর কই তো হইবো না বুঝছি..
-ইরা থাক তাহলে (এটা বলে আলো চলে গেলো)
শুভ ইরার কাছেই দাড়িয়ে আছে...
-আপনি যাচ্ছেন না কেনো??(ইরা)
-আমি যামু কেন?? আর রুমের ভেতর তো যাই নাই বাইরে খারায়া রইছি। আপনার সমস্যা??
-হ্যা সমস্যা
-হুহ যাইতাছি
-গাইয়া খ্যাত(ইরা বিড় বিড় করে বলল)
-যাই কন না কেন..যা দেখছি সব শোধ
-যা দেখছেন মানে??
-মানে ওই যে আমি ভুল কইরা রুমের মধ্যে গেলাম না তহন যা দেখলাম
-উফফফফফফফফ(ইরা চিৎকার করে বলল)
শুভ চিৎকার শুনে চলে এলো সেখান থেকে। এসে ভাবছে..
-ধুররর আইসাই কি একটা উটক ঝামেলা ভেজালে ফালায়া দিলো। যাই একটা ঘুম দিতে হইবো। নইলে পরে আর চোখে কিচ্ছু দেহন যাইবো না(শুভ ইরার পাশের একটা রুমে ঘুমিয়ে পড়লো)
শুভ গ্রামে থাকা অবস্থায় একরকম কথা বলে। শহরে বা বাইরের মানুষদের সাথে আর একরকম কথা বলে...
ঘুমানোর ১ ঘন্টার মধ্যে শুভর ভেঙ্গে যায় ভেজা ভাব এর কারনে....শুভ উঠে দেখে তার প্যান্ট সহ বিছানা ভেজা..
-কিরে ভাল মানুষ শুইলাম পানি আসলো কই থি...ই আল্লাহ মুতি নাই তো আবার দেখি তো... নাহ কোনো গন্ধ নেই। এই কাম করলো কেডা..(শুভ ভাবতে লাগল)
হঠাৎ করেই রুমের সামনে ছোট বড় সবাই এসে নাকে হাত দিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে...
-কি হয়েছে হাসতেছেন কেনো সবাই(শুভ)
-বাবা তুমি কি এখনো ছোট আছো??(একজন বলল)
এটা শুনে সবাই হাসিতে ভেঙ্গে পড়লো।
কোথা থেকে যেনো ইরা এসে বলল
-কি কি কি হইছে এখানে (ইরা)
-ছেলেটা বিছানায় ছেড়ে দিয়েছে(একজন বলল)
-ছেড়ে দিয়েছে মানে!
-মানে হিসু করছে
ইরার হাসি আর দেখে কে। আলো এসে সবাইকে বাইরে নিয়ে গেলো। ইরা শুভর কাছে গিয়ে বলল শোধ নিলাম...ভাল যাবেন এখন থেকে...
-এহহহ কি দিয়ে কি করলো?? এটা করলো কিভাবে???(শুভ ভাবছে)
শুভ আলো কে ডেকে বলল
-ওই খালা কই রে??(শুভ)
-মার সাথে তোমার দেখা করা লাগবে না (আলো)
-না দেখা করলে আবার কিছু বলবে
-দেখা করলে বেশি সমস্যা হবে
শুভর খালা শুভকে একদমই দেখতে পারে না। শুভর মায়ের সৎ বোন হচ্ছে আলোর মা।
-এই চল তো দেখা করবো এখনই...(শুভ আলোর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ো গেলো)
-খালা কেমন আছেন??(শুভ)
আলোর মা কাজ করছিলো শুভর ডাক শুনে পেছনে ফিরে তাকায় আর দেখে শুভ
-দাওয়াত দিলেই যে সবাইকে আসতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই (আলোর মা)
-আসলে খালা আমার তো সরম নেই তাই আসছি
-মুখে মুখে কথা বলা শিখে গেছিস তাই না
-জ্বি না খালা। আপনি কেমন আছেন দেখতে এলাম
-হ্যা ভালো
আলো আবার শুভর হাত ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এলো
-কি রে এভাবে টানছিস কেনো??(শুভ)
-বললাম যে এভাবে দেখা করার দরকার নেই (আলো)
-আচ্ছা বাদ দে। আমি গিয়ে সবার সাথে দেখা করি। ঘুমের কারনে দেখা করা হয় নি
-আচ্ছা যাও
শুভ গিয়ে সবার সাথে দেখা করল। তার কিছু বন্ধুও ছিলো। আড্ডায় খুব মেতে উঠছিলো। আর এদিকে খুব আনন্দের সাথে সন্ধ্যা বেলা গায়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়...
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই ঘটে আসল ঘটনা...শুভ দৌড়ে তার রুমে যাচ্ছিলো হঠাৎ ই কারও সাথে শুভর ধাক্কা লাগে আর সেটা খুবই জোড়ে...
শুভও ধাক্কায় পড়ে যায়... আর দেখে ওই মেয়েটা মানে ইরা...হাতে মেহেদি ছিলো প্রায় সবখানি শুভর মুখে লেগে যায়...ইরা উঠে এসে শুভর গালে
-ঠাসসসস ঠাসসস ঠাসসসস
-মারলেন কেন??
-ইচ্ছা করে ধাক্কা দিলি কেন?? মেয়ে দেখলেই ধাক্কা দিতে মন চায় তাই না
-আরে না আমি তো আপনাকে দেখি নি
-আরে থাম ওটা সবাই বলে...আমার মেহেদী! কি হবে এখন! (ইরা কান্না করতে করতে চলে যায়)
শুভ উঠে তার রুমে চলে যায়। চর যে খাইছে এটা তার খেয়ালই নেই। খুব স্বাভাবিক ভাবে রুমে গিয়ে তার ব্যাগে কি যেনো খুজছিলো...হঠাৎ কেউ তাকে পেছন থেকে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে
-ঠাসসস ঠাসসস
(শুভ তাকিয়ে দেখে তার খালা) শুভ ভাবল মেয়েটা হয়তো গিয়ে বলে দিয়েছে
-তুই ইরাকে ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়েছিস কেন???
-ইরা কে??
-ওই যে ওই মেয়েটা
-না খালা আমি তো ইচ্ছা করে ধাক্কা দেই নি
-চোপপে কি পেয়েছিস তুই। আমার সব দামী দামী গেস্ট দের তুই অপমান করবি আর সেটা আমি সহ্য করবো?? আমার গেস্ট দের সম্মান দিয়ে চলবি। আর যদি সেটা না পারিস চলে যাবি।
ইসসস রে মেয়েটা মেহেদী দিয়েছিলো কি অবস্থাই না করেছে ছেলেটা...(শুভর খালা বলতে বলতে চলে গেলো)
শুভর চোখে পানি। কি যেনো ভেবে পানি মুছে আবার ব্যাগে খোজা শুরু করে দিলো...
প্রায় এক ঘন্টা পর...শুভ ইরার রুমে গেলো দেখে যে ইরা মোবাইলে কি যেনো করছে...শুভ ভয়ে ভয়ে বলল
-আসতে পারি ম্যাডাম(শুভ)
(ইরা শুভ কে দেখে শকড খাওয়ার মতো। কিছুই বলছে না)
-ম্যাডাম আসবো??
-হ্যা আসেন
শুভ ভেতরে গিয়ে দাড়ালো
-আপনি সরি বলার জন্য আসছেন তাই না?? সরি বলতে হবে না
-না ম্যাডাম ভুল শুধরাতে আসছি
-কি??
-আমি আপনার হাতে মেহেদী দিয়ে দিচ্ছি আমি তো নষ্ট করছি তাই আমি দিয়ে দেই
-পারবেন!
-হ্যা
-না আপনাকে দেখে মনে হয় পারবেন না
-আমি পারব
-না থাক আমার লাগবে না
-না কইরেন না দিয়ে দেই
-উমমম আচ্ছা বসেন
-মেহেদী নিয়ে আসেন
-হুমম আনছি
ইরা গিয়ে মেহেদী নিয়ে আসলো...
-এই যে নেন
শুভ কিছু না বলে তার হাতে দেওয়া শুরু করলো। ভাল ভাবেই দিয়ে দিচ্ছে। ইরা শুভ কে বলল
-নাম কি আপনার???
-শুনেছেন তো আর শুনতে হবে না
-শুভ তাই না
-হুমম
-আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞাস করি
-হ্যা
-আপনি একেক সময় একেক রকম করে কথা বলেন কেনো??
-জানি না তবে বেশি ভাল লাগলে একটু মজা করেই বলি
-তো এখন কি খারাপ লাগছে আপনার??
-না তবে অতটাও ভাল লাগছে না
-তা কি করেন আপনি??
-দিনে শরবত রাতে রিক্সা
-মানে
-যা বলছি তাই
-মানে আপনি দিনে শরবত বিক্রি করেন আর রাতে রিক্সা চালান??
-হ্যা
-আপনাকে দেখে তো সেটা মনে হয় না
-মিথ্যা বলেন কেনো?? বাসে যখন দেখা হলো তখন তো বললেন যে নর্দমা।
-ওটা তো..
-কোনো কিছু বলতে হবে না। এই যে মেহেদী দেওয়া শেষ
-ওয়াও খুব সুন্দর তো
-হ্যা থ্যাংকস দিবেন না। নষ্ট করেছিলাম ঠিক করে দিয়ে গেলাম আর সরি (শুভ চলে যাচ্ছিলো)
-এই শোনেন শোনেন
-জ্বি বলেন
-এদিকে এসে বসেন
-বসে কি হবে??
-একটু গল্প করি
-না আমি ঘুমাবো
-গেস্ট এর কথা না শুনলে আপনার খালা কে বলে দিবো
-হুহ বলেন
-আপনার বাবা মা কই?? ওনারা আসে নি
-না তাদের দাওয়াত করা হয় নি
-কেনো??
-বেঁচে থাকলে তো দাওয়াত দিবে
-তার মানে আপনার কেউ নেই??
-আছে তো খালা আছে খালু আছে আর কয়েকটা বোন
-সরি
-আপনি আবার কি করেছেন??
-আপনাকে অপমান করলাম
-কি যে বলেন না। এটা কোনো ব্যাপার হলো। এর জন্য সরি বলতে হবে?? আরে সারাজীবন কামলা খেটে এখন পর্যন্ত অপমান হয়ে এসেছি। আর কিছু মনে হয় না এগুলা
-.......
-বাবা যদি ছোট বেলায় না মারা যেতো তাহলে হয়তো এত কষ্ট হতো না আর মা তো একটু সময়ও দিলো না
-আপনার মা কবে মারা গেছে
-আমি যখন অনার্স থার্ড ইয়ার এ পড়ি তখন
-ওহহহ
-আর একটু ওয়েট করলেও কিন্তু পাড়তো তাই না??
-হ্যা...আচ্ছা আপনি তো কোনো ভাল কাজ করলেপ পারতেন
-খুঁজেছি পাই নি। পরে মাথায়। এই বুদ্ধি টাই আসছে। আর সব পরে বলব এখন যাই। খুব ঘুম পাচ্ছে
-আর একটু থাকেন মেহেদী টা শুকিয়ে যাক
-নাহহ দেরী হয়ে যাবে
-আচ্ছা একটা কথার উত্তর দিয়ে তারপর যান
-হ্যা বলেন
-দুপুরে এই রুমে এসে কি দেখেছিলেন??
-









।।
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 3
>>>>>>>>>>>>>>>>
-খুঁজেছি পাই নি। পরে মাথায়। এই বুদ্ধি টাই আসছে। আর সব পরে বলব এখন যাই। খুব ঘুম পাচ্ছে(শুভ)
-আর একটু থাকেন মেহেদী টা শুকিয়ে যাক(ইরা)
-নাহহ দেরী হয়ে যাবে
-আচ্ছা একটা কথার উত্তর দিয়ে তারপর যান
-হ্যা বলেন
-দুপুরে এই রুমে এসে কি দেখেছিলেন??
-...............
-হ্যালো
-ওহ হ্যা দেখছিলাম যে আপনি ড্রেস চেন্জ করছিলেন
-আর কিছু দেখেন নি তো??
-নাহহহ
-মিটি মিটি হাসেন কেনো??
-কই না তো
-এই যে আবার হাসছেন
-আপনি যে প্রশ্ন করছেন তার জন্য
-ওহহহহ
-তো থাকেন গুড নাইট
-হুমম ঠিক আছে
শুভ মিটি মিটি হাসতে হাসতে তার রুমে এসে শুয়ে পড়লো। আর ইরা শুভর মেহেদী ডিজাইন টা দেখছে। খুব সুন্দর করেই দিয়ে দিয়েছে।
পরদিন সকাল বেলা...শুভ ঘুমাচ্ছিলো আর ইরা এসে শুভ কে ডাকা শুরু করলো....
-এই যে শুনছেন?? হ্যালো
-...........
-ওই
-কি কি কি
-আস্তে আস্তে আমিই
-আমি কি?? ওহ আপনি কি হয়েছে??
-কাল রাতে এক হাতে মেহেদী দিয়ে দিয়েছিলেন। আর এক হাতে কে দিয়ে দিবে??
-কাউকে বলেন দিয়ে দিবে
-আপনি দিয়ে দেন
-পারবো না
-নর্দমা কুত্তা তোর দিয়ে দিতেই হবে
-বুড়িগঙ্গা কুত্তি আমি তোরে দিয়ে দিবো না
(ইরা রাগ দেখিয়ে চলে যায়)
একটু পড়েই...
-ওমাহহহহহহহ(শুভ ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে বলল)
-হা হা হা হা হা (ইরা)
-আরে কি করলেন এগুলা
-আমার কথা না শুনলে এমনই করি
-তাই বলে এভাবে পানি মারবেন
-হ্যা আর মারবো(এটা বলে ইরা চলে গেলো)
-ধ্যাত কি কাজটাই না করলো। যাই আর শুয়ে থাকা যাবে না গোসল করে আসি
শুভ উঠে বাথরুমে ঠুকলো। শুভর পেছন পেছন ইরাও ঠুকলো...ইরাকে দেখার সাথে সাথে...
-আআআআআআআ(শুভ)
-ওই ওই চুপ চুপ।
-আপনি এখানে কেনো??
-মেহেদী দিয়ে দে তাহলে চলে যাবো নাহলে যাবো না
-দিবো না
-তাহলে তো বিপরীত হবে
(শুভ বিপদ টের পেয়ে বলল)
-ওকে
মেহেদী দেওয়া শেষে..
-হইছে যান এখন(শুভ)
-হুমমম যাচ্ছি যাচ্ছি (ইরা)
ইরা বাইরে গিয়ে দরজা খুলতেই আলো কে দেখতে পায়
-ভেতরে কি করছিলি(আলো)
-কই কিছু না (ইরা)
আলোর কথা শুনে শুভ উঠে আসে।শুভ কে দেখে আলো খুবই অবাক হয়... আর ইরার কানে কানে বলে
-কি হচ্ছিলো ভেতরে (আলো)
-এইতো মেহেদী দিচ্ছিলাম(ইরা)
-আর কি?? হুমম
-ধুররর আর কিছু না রে(ইরা দৌরে চলে গেলো)
এবার শুভ কে প্রশ্ন করলো
-ও কি তোমাকে ভালবাসে
-এহহহ কি বলিস এগুলা?? ও জোড় করে ধরছিলো তাই একটু মেহেদী দিয়ে দিলাম আর কিছু না
-সত্যি
-হ্যা সত্যি
-কিন্তু তুমি যে মিথ্যা বলো সেটা বোঝা যায়
-তুই গেলি এখান থেকে আমি গোসল করব
-কোনো হেল্প লাগলে বলো
-গেলি এখান থেকে
গোসল আর সকালের খাওয়া শেষে শুভ বাড়ি থেকে একটু দূরে একা একা বসে আছে। আর বাড়ির ভেতর অনেক লোক সবাই খুব ব্যাস্ত। সবাই কাজ করছে আর অনেক আনন্দ করছে
-আপনাকে ভাল মনে করেছিলাম। কিন্তু আপনি তো ভালো না (শুভ পেছন ফিরে দেখে ইরা এই কথা তাকে বলল আর মুখে ভেংচি কাটল)
-আমি আবার আপনার কি করলাম??
-আমার কিছু করেন নি
-তাহলে??
-বাড়িতে সবাই মজা করছে আর আপনি এখানে
-ওহহ এই কথা??
-হুমম
-খালা কোনো কাজ করতে বারন করেছে
-কেনো??
-জানি না। আপনি যান
-আমি যাবো কি জন্য??
-খালা দেখলে বলবে আমার গেস্ট কে বিরক্ত করছিস কেনো??
-ওহহ এবার পুরো ব্যাপার টা বুঝলাম
-.............
-একটা কথা বলি
-হুমম
-চলেন গ্রাম টা ঘুরে আসি
-.............
-কিছু বলছেন না কেনো??
-বিয়ে বাড়িতে আসছেন। এখানে আনন্দ করেন বাইরে যাওয়ার দরকার নেই
-আমি কাউকে চিনি না
-আচ্ছা আমি পরিচয় করিয়ে দিয়ে আসছি চলেন
-নাহহ আমি আপনার সাথে ঘুরবো
-আমি পারব না ঘুরতে ইচ্ছা করছে না
-আপনাদের এখানে আসলাম একটু ঘুরাবেন তাই এমন করেন তাই না??
-ওকে চলেন
-ইয়েএএএএ
-হুহহ
ইরা আর শুভ হাটছে চুপচাপ...
-একটা বোবার সাথে ঘুরতে আসছি (ইরা)
-কি বলব?? আপনি বলেন আমি শুনি
-আপনি কি যেন বিক্রি করেন??
-কেনো??
-বলেন না
-শরবত
-একাই
-না সাথে একটা ছোট আছে
-ছোট কে??
-আমি ঢাকায়ই ওকে পেয়েছি আর ও আমাকে পুরো ঢাকা চিনিয়েছে
-ওহহহ
-হুমমমম
-আপনি কাউকে ভালবাসেন??
-হা হা হা হা
-হাসছেন কেনো??
-ভালবাসি
-কাকে
-আমার শরবত কাষ্টমার দের
-উফফফফ
-কি হইছে
-এইরকম উত্তর না
-তাহলে??
-ওতো ভালভাবে বুঝাতে পারব না। বলেন ভালবাসেন কি না
-নাহহহ ভালবাসা দিয়ে কি হবে
-ওহহ
-সারাজীবন কি শরবত বিক্রি করবেন??
-অবশ্যই না টাকা পয়সা ভালই হইছে একটা বড় হোটেল দেওয়ার কথা ভাবছি
-বাহহহহহ এটা করলেন কিভাবে??
-শুধুমাত্র জেদ এর কারনে
-হুমমম
-আপনি কাউকে ভালবাসেন??
-নাহ তবে পছন্দ করি
-ওহহ ভালো
-হুমমম
-দাড়ান এখানেই
(শুভ ইরাকে একটা বাড়ির সামনে এসে দাড় করালো)
-এখানে দাড়ালেন কেনো??(ইরা)
-সামনে যে বাড়িটা দেখছেন এটা আমাদের। ওই ঘরটায় আমি থাকতাম। বড় ঘরটায় মা থাকত। আর এখানে যে আমরা দাড়িয়ে আছি, আমি যখন কাজে বা পড়তে যেতাম এখানে মা দাড়িয়ে থাকে আমাকে দেখত... (ইরার দেখত পেলো শুভর চোখে পানি)
-আচ্ছা আন্টির কি হয়েছিলো??
-জানি না। তবে একটু বলি অপারেশন এর জন্য খালার কাছে টাকা চাইছিলাম উনি দেন নাই। আর সেই অপারেশন না করানোর কারনেই মা মারা যায়
-..............
-ভেতরে যাবেন
-এহহহহ
-ওই ভেতরে যাবেন নাকি??
-নাহহ ভাল লাগছে না বাসায় যাবো
-ওকে চলেন
আবার বিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলো...
-আপনার বাবা মা সবাই আছে তাই না??
-হ্যা সবাই আছে
-ওহহ ভালো
-আপনারা অনেক বড়লোক তাই না
-না কে বলেছে??
-আমি জানি
-কিভাবে??
-বাসের মধ্যে আপনি আপনার আম্মুর সাথে কথা বললেন তখন আপনাকে কারে করে আসতে বলেছিলো
-ওই আছে কিছু
-নাহহ মিথ্যা বলেন কেনো?? আমি কি নিবো নাকি??
-হ্যা আপনাকেই তো দিবো
-হা হা হা হা হা
-হাসছেন কেনো??
-এমনি। আচ্ছা আপনারা কয় ভাই বোন??
-আমি একাই
-আমিও তো একাই ছিলাম। কিন্তু আমি এখন একবারে একা
-হুহ শুধু একা একা ভাবা তাই না
-হুমম চলে আসছি। আপনি ভেতরে যান
-আপনি যাবেন না
-না
-চলেন
-না
ইরা হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির মধ্যে নিয়ে গেলো...আর গিয়ে শুভর সামনে গিয়ে পড়লো
-এই শুভ কই গিয়েছিলি??(খালা)
-আন্টি আমরা বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম(ইরা)
-এই রোদে কেউ ঘুরতে যায়?? যাও ফ্রেস হও
হঠাৎ একজন শুভর দিকে এগিয়ে এসে বলল
-এই ছেলে তুমি (.....) এই রোডে নিয়মিত শরবত বিক্রি করো তাই না??(লোকটি)
লোকটির কথা শুনে শুভর খালা অবাক হয়ে যায়। আর শুভ উত্তর দেয়
-জ্বি(শুভ)
-তা তুমি এখানে কি করো??(লোকটি)
-জ্বি আমি এহেনে কাজের লোক হিসেবে আইছি কয়েক দিনের জন্য
(শুভর কথা শুনে শুভর খালা হাফ ছেড়ে বাঁচল)
-ওহহ ভালো (লোকটি বলে চলে গেলো)
এদিকে শুভর খালা, খালু কে ডেকে সব ব্যাপার বলল....শুভ রুমে ছিলো। তার খালু এসে বলল
-তোর খালা যা বলছে তা কি ঠিক??
-কি বলেছে??
-তোর কাজের কথা
-হ্যা। আর একটাও আছে আমি রাতে রিক্সা চালাই
-হুমমম খুব ভালো করেছিস
-দোয়া কইরো।বড় যাতে হতে পাড়ি
-হ্যা কিন্তু
-কিন্তু কি??
-তোর খালা তোকে এখান থেকে চলে।যেতে বলছে
-তাই??
-হ্যা
-আচ্ছা আলো কে বর পক্ষ নিয়ে যাক। তারপরই আমি যাবো
-কিন্তু তোর খালা এখনই চলে যেতে বলছে
-হুহহ তুমি খালাকে গিয়ে বলো। আমি বাইরে বের হবো না। তাহলেই তো হলো
-আচ্ছা ঠিক আছে
বিকেল বেলা...শুভ রুমে শুয়ে আছে...
-ওই ওই সেই কখন থেকে আপনাকে খুঁজছি আর আপনি শুয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছেন??
-আর বইলেম না। শরীর টা কেমন যেনো লাগছে তাই শুয়ে আছি
-হুহ চলেন ঘুরতে যাবো
-আবার!!
-হ্যা
-নাহহ
-চলেন
-ধুররর যান তো বাল ভাললাগছে না
শুভর ধমক শুনে ইরা ভয়ে চলে গেলো..
সন্ধ্যা বেলা আলো কে বর পক্ষ নিয়ে যাওয়ার পর কাউকে কিছু না বলে শুভ চলে গেলো....
আর ইরা হন্ন হয়ে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না....কিছুক্ষণ পর সবাই যেনে গেলো। আর কি জন্য চলে গেলো সেটা সবাই জানতে পাড়লো। আলোর দুইটা বোন তো সেই কান্না....
আর ইরা মনে মনে রাগছে আর বলছে
-ঢাকায় যাই তারপর তোর খবর আছে নর্দমা কুত্তা হারামীর বাচ্চা...(ইরার চোখে পানি)
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 4
>>>>>>>>>>>>>>>>
ইরা মনে মনে রাগছে আর বলছে
-ঢাকায় যাই তারপর তোর খবর আছে নর্দমা কুত্তা হারামীর বাচ্চা...(ইরার চোখে পানি)
ইরা বিয়ে বাড়িতে আরও দুই দিন থাকল। তারপর ঢাকায় ফিরলো।
আর শুভর সাথে কারও সাথেই আর যোগাযোগ হয় নাই। হয়তো সে আর এখানে আসবে না.....
শুভ ঢাকায় যাওয়ার পর....আবার আগের মতো কাজ শুরু করে দিলো..
-কিরে ছোট এই দুদিন কি রকম বিক্রি করলি???(শুভ)
-ওস্তাদ সেইরহম বেচছি । ৫০০ গ্লাস এর মতো বেচছি(ছোট)
-ভালো করছিস। এহন ডাক ছাড়
-এই শরবত,, শরবত,, শরবত খাইয়া যান,, গলা ভিজায়া যান.. লে লে লেবুর শরবত
-ওই লেবু বলতে তোতলাস কেন??
-ওস্তাদ কেন জানি লেবু কইতে মুখের মধ্যে আইটক্যা যায়
-হুমমম আবার ক কইতে থাক আমি একটু আসতাছি
-ঠিক আছে ওস্তাদ......ওই শরবত শরবত বেলের শরবত লে লে ধুররর লেবুর শরবত....
কিছুক্ষণ পর...
-ওই এদিক আয় (ইরা গাড়ি নিয়ে আসছে আর ছোট ছেলেটাকে ডাকলো
-জ্বি আপা কন(ছোট)
-তুই কি এই রোডের সব শরবত ওয়ালা কে চিনিস
-হ্যা আপা চিনি
-শুভ নাম এ কাউকে চিনি
-হ হ চিনি চিনি আমগোর এইডাই তো
-তোদের টাই মানে??
-আপনে যে কইলেন শুভ ওইটা আমার ওস্তাদ
-কই তোর ওস্তাদ দেখতে তো পাচ্ছি না
-আপনি আইসা বসেন শরবত খান ওস্তাদ একটু বাইরে গেছে আইসা পরবো এহনি
-না তুই ডেকে আন
-আমি গেলে দোকান দেখবে কে??
-আমি দেখছি যা তুই
ছোট দৌড়ে শুভকে ডাকতে গেলো..
-ওস্তাদ ওস্তাদ (ছোট)
-কিরে তুই দোকান রাইখা আইছোস কেন??(শুভ)
-ওস্তাদ একটা পরীর মতো দেখতে ম্যাডাম আইছে
-আইছে ভাল কথা তুই দোকান রাইখা আইছোস কেন???
-আরে ম্যাডাম টা কইলো আপনেরে ডাকতে
-কস কি??
-হ আপনে চলেন
-চল চল
শুভ গিয়ে দেখে মেয়েটা অন্য দিক ঘুরে আছে। শুভ বলল
-ম্যাডাম
(ডাক দেওয়ার সাথে সাথে ইরা ঘুরে দাড়ালো)
-ওহহ আপনি এসে গেছেন(ইরা)
-আপনিইইইই
-হ্যা আমি
-আমি এখানে জানলেন কিভাবে??
-ওই যে যে লোকটার জন্য বিয়ে বাড়ি থেকে আপনি এখানে তার কাছ থেকেই জেনে আসছি
-জেনেছেন ভাল কথা। আসছেন কেনো??
-আপনাকে দেখতে
-আমাকে দেখতে!!!
-হ্যা। এটার নাম ছোট তাই না??
-হ্যা
-ওই ছোট তুই বিক্রি কর। তোর ওস্তাদ এর সাথে আমার কিছু কথা আছে
-ওকে ভাবি
-ওই ওই ভাবি কস কেন (শুভ)
-ও তো ঠিকি বলেছে আপনি আসেন
-পরে গেলে হয় না??
-তুলে নিয়ে যাবো??
-না যাচ্ছি তো
-হি হি হি হি(ছোট)
-ওই দাত বাইর করিস না
-আসেন গাড়িতে বসেন
ইরা আর শুভ গাড়িতে গিয়ে বসলো...
-আমাকে না বলে চলে আসলি কেন(ইরা)
-তুই করে বলছেন কেনো??(শুভ)
-আমার কথার উত্তর দে
-আপনাকে বলে আসার কি আছে??
-আছে অনেক কিছু
-কিছু নাই
-চুপপপ
-হুমম
-আই লাভ ইউ
-আহহহহ
-হ্যা লাভ ইউউ
-মজা করছেন তাই না??
-আমাকে দেখে কি সিরিয়াস মনে হয় না??
-হয় কিন্তু আপনার মুখে এরকম কথা
-আমি তোকে ভালবেসে ফেলছি
-............
-বিশ্বাস না হচ্ছে না তাই না??
-বিশ্বাস না হওয়া টা স্বাভাবিক
-কেন?
-আপনি কই আর আমি কই
-আপনি থাকেন কোথায় আর আমি কোথায়
-আপনাকে দেখতে কেমন আর আমি দেখতে কেমন?? এগুলো ভাবেন দেখেন আমি আপনার কাছে কিছুই না
-আমার যে তোকেই লাগবে
-কেনো??
-জানি না
-হুহ এই গাড়িতে আজ প্রথম উঠলাম। কি নরম সিট রে বাবা
-আমি তোকে কি বলি আর তুই কি বলিস??
-আরে পরে বলেন। কত্ত সুন্দর গাড়ি জীবনে তো উঠি নি
-এখন থেকে উঠবি
-নাহহহ আজকেই শেষ
-কেনো??
-আপনি কি মনে করছেন?? আমি প্রতিদিন আপনার গাড়িতে উঠবো?? কখনই না
-না উঠলি। আগে বল লাভ ইউ টু
-নাআআ
-কেন আমি কি দেখতে খারাপ
-..........
-তাকা আমার দিকে
-হুমমম
-আমি দেখতে খারাপ??
-কখনই না আপনি দেখতে খুবই সুন্দর। কিন্তু আপনার ব্যবহার টা ভালো না
-কি করলাম??
-এই যে আমাকে তুই করে বলছেন
-তাহলে তুমি করে বলব??
-না আপনি করে বলেন
-হুমম
-আচ্ছা শোনেন
-হ্যা বলেন
-আপনি দেখতে তো সেই আপনার জন্য আপনার বাবা মা অনেক কষ্ট করছে। আর আপনাকে নিয়ে তাদের কিছু আশা আছে। আপনি সেটা ভাঙ্গবেন না
-.....................
-আমি কিন্তু আপনাকে জ্ঞান দিচ্ছি না
-হুমমম আর কি বলবেন বলেন
-তারা আপনার জন্য ভাল ঘরের একটা পাত্র খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক
-হুমমম আর
-আর সেখানে আপনি সুখে থাকেন এটাই তারা চাইবে
-হুমমম
-আর আপনি এসে গাধির মতো আমাকে বলছেন লাভ ইউ। এটা কোনো কথা। মনে করেন যে আমি তো থাকি রাস্তায়। ঠিক ঠিকানা নাই
-................
-বাদ দেন এসব। আর মনে করেন যে আংকেল ভাল জায়গায় আপনার বিয়ে দিবে আর আমি একটা মানুষ হলাম??
-................
-আমাকে নিয়ে কোথাও দাড়াতে পারবেন?? পারবেন না। তো মাথা থেকে পাগলামো ঝেড়ে ফেলেন
-...............
-কথা বলছেন না কেনো??
-হুমমমম
-এই একটা কথা বলি
-হুমম বলেন
-এই যে গাড়ির মধ্যে আঙ্গুর ঝুলিয়ে রাখছেন। কয়েকটা খাই?? বড় বড় টা আছে
-হা হা হা হা হা হা হা হা
-হাসছেন কেনো??
-ওগুলো আসল আঙ্গুর না
-নাহহ কি বলেন আমি চিনি তো
-হাত দিয়ে দেখেন
-ওমাহ তাই তো আসল না। দেখতে কিন্তু মনে হয় আসল আঙ্গুর
-হুমমম
-গাড়ির ভেতরে এত ঠান্ডা কেন??
-এসি আছে
-ওহহ তাই তো কই সালা সরি এত গরমে ঠান্ডা কই থিকা আইলো
-হুমমম
-আপনি শুধু হুমম হুমম করছেন কেনো??
-ভাবছি
-কি ভাবছেন??
-বুঝবেন মি. শুভ সাহেব
-আরে কি কন আমি শাহেব না আমি তো শরবত ওয়ালা
-নারে পাগল তুই আমা...সরি আপনি আমার সাহেব
-আবার শুরু করলেন
ইরা হঠাৎ করে গাড়ি থামিয়ে দিলো..
-থামালেন কেনো??(শুভ)
-কাজ আছে(ইরা)
-কি কাজ??
-কাছে আসেন
-কেন??
-আয় বলছি
-হুমমম
-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহহহ (জড়িয়ে ধরে শুভর গালে একটা কিস করলে)
-এ এ এ এটা কি কি করলেন
-এতক্ষণ ভেবে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার প্রথম ধাপ এইটা ১০ নাম্বার ধাপে বিয়ে হবে আমাদের
-.............(শুভ কাপছে)
-আরে আরে কাপছেন কেনো??
-আপনার শরীর অনেক নরম
-হা হা হা হা
-.............
-আরেকটা দেই
-না মরে যাবো তাহলে
-হি হি হি পাগল একটা
-এগুলা আর কইরেন না
-আমার ইচ্ছা হলে করবই। আটকাতে পারবেন না
-এগুলো ঠিক না
-জানি কিন্তু কিছু করার নেই। তোকে ঠিক করতে সব কিছুই করতে হবে
-এখন তাহলে ফেরা যাক
-এসেই তো গেছি
-ওহহহ কিভাবে??
-এটা শর্ট কার্ট রাস্তা
-ভালই চেনেন তো
-এখানেই জন্ম চিনতে তো হবেই
-হুমমম
-হুমমম এসে গেছি নামেন(ইরা)
-হুমমম
-দাড়ান আগেই উঠেন না
-কি করবেন??
(ইরা শুভর মাথার পেছন ধরে মাথা টা সামনে নিয়ে এসে খুব তাড়াতাড়ি কয়েকটা কিস করলো)
-এখন যাও(ইরা)
-.................
-দাড়াও
-আর দিয়েন না
-হা হা হা দিবো না...তোমার নাম্বার টা দাও
-কি করবেন??
-এমনি দাও
-হুমম নেন...০১...
-ওকে এখন থাকো কাল দেখা হবে।
-হুমমম।
-আমার কথা একটু মনে কইরো
-..........
-কি করবা তো
-না
-আবার দিবো??
-না না মনে করবো
-হুমম গুড বয় যাও এখন
শুভ কে নামিয়ে দিয়ে ইরা চলে গেলো...
-ওস্তাদ সেই যে গেছিলেন আর আসার নাম নেই। কই গেছিলেন??
-হিমালয়
-মানে
-মানে যেখানে অনেক ঠান্ডা
-কিছু খাইছেন ওখানে গিয়ে..
-কি...কাজ কর
-হুমম ভাবি দেখতে অনেক সুন্দর
-আমি কি বিয়ে করেছি??
-না
-তো ভাবি বলিস কেন??
-যা দেখলাম ভাবি ছাড়া আর কি কেউ ওটা করতে পারে??
-কি দেখছিস??
-না ওস্তাদ কিছু দেখি নি। এই শরবত শরবত শরবত... হিমালয়ের শরবত
(শুভ ছোটর দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকালো)
-সরি ওস্তাদ.... বাংলাদেশী শরবত
।।
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 5
>>>>>>>>>>>>>>>>
-তো ভাবি বলিস কেন??(শুভ)
-যা দেখলাম ভাবি ছাড়া আর কি কেউ ওটা করতে পারে??(ছোট)
-কি দেখছিস??
-না ওস্তাদ কিছু দেখি নি। এই শরবত শরবত শরবত... হিমালয়ের শরবত
(শুভ ছোটর দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকালো)
-সরি ওস্তাদ.... বাংলাদেশী শরবত
-দিন দিন বেশী পাকনা হয়ে যাচ্ছিস
-সবই তো আপনি শিখিয়েছেন
-চুপপপপ কাজ কর..
শুভ আর ছোট একটা রুম ভাড়া করে থাকে...রাতে ইরা ফোন দিলো...
-হ্যালো বাবু(ইরা)
-জ্বি বাবু নেই এখানে (শুভ)
-আপনি কে??
-শুভ
-কুত্তা আমি ইরা তোর কাছেই ফোন দিয়েছি
-ওহহহ আপনি ম্যাডাম
-হুমমম
-ভালো
-কি ভালো?? কি করেন??
-এইতো খাচ্ছিলাম
-কি খাচ্ছিলেন??
-ভাত আর মাছ। আপনি রাতে খেয়েছেন??
-হ্যা খেয়েছি
-হুমমম
-এখন কি করবেন??
-আপনার সাথে প্রেম করব
-কি যে বলেন আপনি
-খারাপ বলছি??
-হ্যা। আমি একটা মানুষ হলাম
-হ্যা মানুষ ই তো..আচ্ছা ছোট কি তোমার কাছেই থাকে???
-হ্যা
-ও কি এখন তোমার কথা শুনছে??
-হ্যা কেনো??
-ওর থেকে দূরে যাও
-কি জন্য??
-দরকার আছে যাও
-হুমম আসছি
-কই আসছো??
-ওর থেকে দূরে বাইরে আসছি
-হুমম ভালো হইছে
-একটা কথা বলি
-হ্যা বলো
-আপনি আমার সাথে কথা বলতে তুমি তুই আপনি তিনটাই ব্যবহার করেন কেনো??
-আমার প্রিয় মানুষ কে আমি যা ইচ্ছা বলতে পারি
-প্রিয় মানুষ!!!
-হ্যা
-হুহ
-আচ্ছা আমি এখন কিছু কথা বলব ফান হিসেবে নিবে না
-তো কি হিসেবে নিবো
-সিরিয়াসলি নিবা
-ওকে বলেন
-আমি সত্যি সত্যি তোমাকে ভালবেসে ফেলছি।
-আবার একই কথা??
-হ্যা
-আচ্ছা কি দেখে ভালবাসছেন একটু বলবেন??
-পুরো তুমি টা দেখেই ভালবেসে ফেলছি
-কিহহহ বুঝলাম না
-এত প্যাচ তুমি বুঝবে না। আমি যেটা বলি সেটা শোনো
-হ্যা বলেন
-তুমিও আমাকে ভালবাসো, যদিও এখন মুখে না করবে তবে আমি জানি তুমি আমাকে পছন্দ করো
-কিভাবে জানলেন আমি আপনাকে পছন্দ করি??
-তুমি প্রায় সময় আমার দিকে আড় চোখে তাকাও
-এহমম এহমম না তাকাই না
-এহহহ সাধু সাজা হচ্ছে তাই না। সামনে পাই ঠ্যাঙ ভাঙ্গব কাল
-আচ্ছা আমি কিছু বলি
-হুমম বলো
-আপনি যেভাবে কথা বলেন শুনতে খুব ভাল লাগে...আর আপনি কথা বললে মনে হয় কত আপন মানুষ কথা বলছে। খুব আপন মনে হয়
-.......................
-কোনো দিন এত এভাবে কেউ ভালবাসে নি। শুধু বকা শুনেই এসেছি।
-.....................
-আর সত্যি কথা হলো আমি যতই মুখে না করি না কেনো?? মন থেকে আপনাকে ইয়ে করি
-....................
-হ্যালো
-.........
-হ্যালো কিছু বলছেন না কেনো??
-হ্যা শুনতেছি তো(কান্না কান্না ভাব)
-আপনি মনে হয় কান্না করছেন
-হুমমম
-আরে কান্না করার কি আছে?? আমি কি খারাপ কিছু বলছি??
-শুধু খারাপ হলে মানুষ কান্না করে না। কোনো খুশির খবর হলেও কান্না করে
-হুমমমম কিন্তু একটা খারাপ খবরও যে শুনতে হবে
-কিইইই(ইরা)
-হুমমম(শুভ)
-বলো
-তোমাকে যে আমি বিয়ে করতে পারব না
-কেনো পারবে না??
-তোমার ফ্যামিলি তো মেনেই নেবে না। আর আমিও মেনে নিতে পারব না
-তুমি কেনো পারবে না
-তোমার লেভেল টা উঁচু। সবকিছুতেই বিলাসিতা আছে। তুমি আমার ঘরে এসে থাকতে পারবে না
-যদি পারি
-সম্ভব না
-একটা জিনিস খেয়াল করেছো??
-কি??
-তুমি আমাকে তুমি করে বলতেছো
-ওহহ সরি সরি আমি খেয়াল করি নি
-ইয়েএএএএএ অনেক খুশি হলাম
-কি জন্য
-আমাকে যে ভালবাসো এটা সিউর হলাম
-হুমমম অনেক কথা হইছে এখন ফোন রাখেন
-না রাখব না
-অনেক কথা বললাম তো
-আরও কথা বলতে ইচ্ছা করছে
-আজ না আবার কাল
-না আজই
-সকালে উঠতে হবে তো...কাজ আছে না?? কাজ করতে হবে না??
-..............
-হ্যালো
-হ্যা বলো
-তাহলে ঘুমাই এখন
-জানি না আমি
-রাগ করে না ঘুমাতে হবে তো
-আচ্ছা যাও ঘুমাও তবে সকাল বেলাই আমি কিন্তু দেখা করব তোমার সাথে
-আচ্ছা ঠিক আছে
-হুমমম গুড নাইট লাভ ইউ
-হুমমমম (শুভ ফোনটা কেটে দিলো)
কথা বলতে বলতে তখন রাত অনেক হয়ে গেছে। শুভ তার রুমে গিয়ে শুয়ে পরে। পরদিন সকাল বেলা...
-এই ছোট আজ মনে হয় শরবত বিক্রি করা হবে না (শুভ)
-কেন ওস্তাদ কি হইছে??(ছোট)
-আকাশে তো মেঘ জমছে বৃষ্টি হবে মনে হয়
-হ ওস্তাদ ঠিকি কইছেন
হঠাৎ...
-টিট টিইইটট ওই (ইরা)
-ওস্তাদ হিমালয় আসছে ওস্তাদ আপনাকে ডাকছে (ছোট)
-তুই আসলে বেশি কথা বলিস চুপপ থাক(শুভ)
-ওই শুভ
-হ্যা গাড়িতে একটু বসেন আসছি
-হুমম তাড়াতাড়ি করো
-ওই ছোট বৃষ্টির সম্ভবনা দেখলে সব উঠিয়ে রাখিস।
-ঠিক আছে ওস্তাদ
-আমি গেলাম
-যাও যাও হিমালয়ে যাও (ছোট মনে মনে বলল)
-হ্যা বলেন(শুভ ইরার গাড়ির কাছে গিয়ে বলল)
-গাড়িতে ওঠো
-কই যাবেন??
-উঠতে বলছি উঠো
(শুভ গাড়িতে উঠলো)
-কোথায় যাচ্ছি আমরা??(শুভ)
-এখন তো ১০ টা বাজে তার মানে বাবা এখন অফিসে আছে। শোনো প্রথমে বাবার কাছে যাবো তারপর আমার বাসায়
-আমাকে মারার এই প্ল্যান করছেন??
-এই পাগল মারার প্ল্যান করবো কেনো???
-আরে আপনার বাবার কাছে নিয়ে গেলে কি আমাকে আস্ত রাখবে??
-কিছুই করবে না আমি আছি তো
-নাহহ মরছি এবার
-এই তুমি কাঁপছো কেনো??
-কি যে করবে আপনার বাবা সেই জন্য
-আগে যাই দেখো কি করে...
-আল্লাহ রক্ষা কইরো
সেই অফিসে যাওয়ার পর....
ইরার বাবার টেবিলের সামনে দুজন দাড়িয়ে আছে। ইরার বাবা খুবই রাগী মানুষ। তার ১১ টা গার্মেন্টস আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু তাকে দেখে বোঝাই যায় না....
-হ্যা ইরা মা বল (বাবা)
-এই ছেলেটা শুভ(ইরা)
-তারপর
-ও শরবত বিক্রি করে ও শরবত ওয়ালা
-হুমমম
-আমি ওকে ভালবাসি বিয়ে করতে চাই
-হুমমম
-তুমি কি রাজি???
-তুই বাইরে যা। আমি আগে এই ছেলেটার সাথে কথা বলে নেই
-আচ্ছা বাবা(ইরা বাইরে চলে গেলো)
-আমার মেয়ের সাথে তোমার পরিচয় টা কিভাবে হইছে
-.........(শুভ পুরো ঘটনা বলে)
-এগুলো কি করেছো তুমি জানো??
-না আংকেল
-এগুলো কি ঠিক??
-জ্বি না আংকেল
-তোমার বাবা মা কি করেন
-উনারা কেউ নেই মারা গেছেন
-পরিবারে আর কেউ আছে??
-জ্বি না আংকেল
-আমার মেয়েকে বিয়ে করে কোথায় রাখবে??
-...........
-বলো
-আমি যেখানে থাকি
-কোথায় থাকো তুমি
-(......) এই জায়গায়
-ওখানে আমার মেয়েকে রাখবে??
-আপনার মেয়ে তো রাজি হইছে
-উঠে দাড়াও
-........
-দাড়াও বলছি
শুভ উঠার সাথে সাথে
-ঠাসসস ঠাসসস ঠাসসস
-......(শুভ গালে হাত দিয়ে আছে আর তার চোখ লাল হয়ে পানি পড়ছে)
-ফকিরের বাচ্চা আর দুনিয়ায় মেয়ে পাস নি
-..........
-তোর বাপ মা কি ভাল মন্দ শিখাই নি?? ওও শিখাবে কিভাবে? তুই তো রাস্তায় বড় হইছোস
-...........
-দ্বিতীয় বার কোনো সময় যেনো চোখের সামনে না দেখি।
-জ্বি আংকেল আসসালামু আলাইকুম
-আর শোন
-হ্যা বলেন
-চোখের পানি মুছে তারপর বাইরে যা
ইরার সাথে এমন ব্যবহার করবি যাতে ও বুঝতে না পারে। আর ওর সাথে কম যোগাযোগ করবি। একবারে যোগাযোগ বন্ধ করে দিবি না। তারপর কি করা যায় দেখছি আমি....
-জ্বি আংকেল
-যা এখন
শুভ চোখ মুছে বাইরে চলে এলো। ইরা শুভকে দেখেই বলল
-বাবা কি বলল(ইরা)
-বলেছে যে...(শুভ বলতে পাড়ছে না ভেতরে কান্না আটকে গেছে)
-কি বলেছে
-এই খোঁজ খবর নিলো(কোনো রকম নিজেকে সামলিয়ে বলল)
-হুমমম এখন আমার বাসায় চলো
-আজ না অন্যদিন
-আজই যেতে হবে
-নাহ বাদ দাও
-আমার দিকে তাকাও তো
-কেনো??
-তাকাও বলছি
-হুমমম
-বাবা কি বলবে বা বলেছে আমি সব জানি। এখন কি করতে হবে তাও যানি। এখন তুমি আমার সাথে আমার বাড়ি চলো
-নাহহ
-চুপপ থাক হাত চালাতে বাধ্য করবি না
-হুমম
-আর মনে রাখবি আমার বাবা চলে ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়..
।।
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 6
>>>>>>>>>>>>>>>
-বাবা কি বলবে বা বলেছে আমি সব জানি। এখন কি করতে হবে তাও যানি। এখন তুমি আমার সাথে আমার বাড়ি চলো(ইরা)
-নাহহ(শুভ)
-চুপপ থাক হাত চালাতে বাধ্য করবি না
-হুমম
-আর মনে রাখবি আমার বাবা চলে ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়....
-........(এহহহ আসছে ডায়লগ ছাড়তে)
-ওই কি ভাবো??
-না কিছু না
-গাড়িতে উঠো
-না গেলে হয় না??
-.....(ইরা চোখ গরম করল)
-উঠছি উঠছি....
ইরাদের বাসায় যাওয়ার পর...
-গাড়ি টা কি বাসার ভেতর নেবে নাকি??(শুভ)
-হ্যা তুমি বসে থাকো নামতে হবে না।
-আহা কত্ত সুবিধা
-অতটা না নতুন একটা বাসা করতে হবে
-নতুন আরেকটা!!
-হ্যা
-এটাও কিন্তু অনেক সুন্দর
-থ্যাংকস। এখন নামো
শুভর ভয়ে তো কাজ শেষ। ইরা শুভর হাত ধরে নিয়ে বাসার মধ্যে প্রবেশ করে। আর তার মাকে ডাকে...
-মা মা ও মা (ইরা)
-কি রে কি হয়েছে(অন্য একটা রুম থেকে তার মা উত্তর দিলো)
-বাইরে আসো দেখো কে আসছে...
এখন আবার কে এলো...ইরার মা বাইরে এসে দেখে ইরা একটা ছেলের হাত ধরে আছে....
-মা ও শুভ (ইরা)
-আন্টি আসসালামু আলাইকুম (শুভ)
-ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ইরা এ কে??(মা)
-তোমার মেয়ের জামাই
-আমার কোন মেয়ের জামাই??
-তোমার মেয়ে কয়টা
-একটা
-সেটা কে??
-তুই
-হুমমম তাহলে বুঝছো তো
-কিন্তু এ ছেলে...
-থামো আমি যেটা বলি সেটা শোনো... (ইরা শুভর সম্পর্কে পুরো বলল আর এর আগে যে বাবার সাথে দেখা করে আসছে তাও বলল)
-সবই তো শুনলাম, কিন্তু তুই তো তোর বাবা কে চিনিস এটা কখনো সে মেনে নেবে না (মা)
-এখন মেনে না নিলে কিছু করার নেই
-এই ছেলের তো কিছুই নেই
-ওহহহ তোমার কি লাগবে??
-এর সাথে বিয়ে দিলে আমাদের আত্মীয় দের সামনে মুখ দেখাবো কি করে???
-..............
-রাস্তার একটা ছেলেকে তুই ছিহহ
-আমি বলি কি আপনি আন্টির কথাই শোনেন আমি যাই(শুভ)
-তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমি সোজা উপরে চলে যাবো
-না না আছি আমি
-মা তাহলে আমি চলে যাচ্ছি ভালো থেকো...
-যা ইচ্ছা তাই কর ভাল্লাগেনা না আমার।
-বাব্বাহ মেয়ে একবারে চলে যাচ্ছে আর তোমার ভাল লাগছে না??
-তোর বাবা কে নিয়ে বেশী ভয়,, আমি না হয় মেনে নিলাম কিন্তু তোর বাবা
-সে যা পারে করুক আমি গেলাম। দরকার পড়লে ফোনে কথা বলব। ভাল থেকো বায়
-ওই শোন
ইরা না শুনেই হন হন করে চলে গেলো। বাসা থেকে বের হবে এমন সময় ইরা বলল
-এই দাড়াও তো(ইরা)
-কি হয়েছে??(শুভ)
-আমি গাড়িতে ২ টা ব্যাগ রেখে আসছি
-আচ্ছা যাও নিয়ে আসো
ইরা ব্যাগ নিয়ে একটু পরই ফিরলো...
-চলো এখন(ইরা)
-যাবো কই??(শুভ)
-তোমার বাসায়
-হুমমম
-একটা কথা বলি
-হ্যা বলো
-আমি কিভাবে বাসা থেকে বের হয়ে আসছি জানি না। আমি আমার পরিবারের সবাইকে অনেক ভালবাসি। তবুও তোমার সাথে এভাবে বেড়িয়ে আসছি। আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো(কান্না কান্না ভাব)
-আরে না সোনার টুকরা পেলে কেউ ছেড়ে দেয়
-তার মানে আমি তোমার কাছে সোনার টুকরা??
-হুমমমম
হঠাৎ ইরার বাবার ফোন
-হ্যালো(ইরা)
-তুই কই এখন??(বাবা)
-এইতো তোমার জামাই এর হাত ধরে হাটছি
-ওই ছেলেটাকে যদি আমি কখনো পাই তো ওই দিনই ওর শেষ দিন
-তোমার সমস্যা কোথায় ওকে মেনে নিতে ও কি খারাপ?? ও কি খারাপ নেশা করে?? ইয়াবা খায়?? গান্জা খায়?? খুন করে?? না ও ভাল একটা কাজ করে ও ভাল একটা মানুষ। এমন মানুষ হাতে পেলে তো ছাড়তে পারব না আমি
-আমাকে জ্ঞান দিচ্ছিস??
-না বাবা বোঝানোর চেষ্টা করছি
-তুই কই আছিস এখন সেটা বল
-খুঁজে নাও (এটা বলে ইরা ফোন কেটে দিলো)
-ধুরর ক্যান যে সবাই বোঝে না। আমি কি খারাপ কিছু করছি নাকি! হুহ
-আচ্ছা তুমি বাসায় ফিরে যাও। উনারা যদি আমার সাথে তোমার বিয়ে দেয় তো দিবে না দেয় তো না দিবে...
-একটা গাড়ি দরকার এখন
-কি করবা??
-গাড়ির নিচে মাথা দিবো
-না না বাসায় যাওয়া লাগবে না
-হুমমম এখানেও থাকা যাবে না
-তাহলে কোথায় যাবো??
-দূরে কোথায়ও যেতে হবে
-না এখানেই থাকি
-না বাবা সমস্যা করতে পারে
-আমার ভয় করছে তোমার বাবা আমাকে যদি মেরে ফেলে
-পারবে না আমি আটকাবো
-তুমি আটকাতে পারবে??
-হুমম খুব পারব
-হুমমম
-এখন বলো। কোথায় যাওয়া যায়??
-চট্টগ্রাম যাবে??
-হুমম খারাপ না চলো
-আগে ছোটর সাথে দেখা করে আসি
-ও যদি বলে কোথায় যাবে
-দেখি কি বলা যায়...
ছোটর কাছে গিয়ে...
-কি রে আজ কি রকম বিক্রি হলো(শুভ)
-ওস্তাদ আপনি তো ভাবি কে নিয়ে ব্যস্ত আর আমি কাষ্টমার নিয়ে। খুব বেচছি ৪০০ গ্লাস এর কাছা কাছি
-হুমমম চালিয়ে যা আমি কয়েকদিনের জন্য একজায়গায় যাচ্ছি
-কোথায় যাবেন আবার
-যাচ্ছি এক জায়গায় তুই একটু কষ্ট কর আমি এসে তোকে কয়েকদিনের জন্য ছুটি দিবো
-আপনি ওস্তাদ হলেও আমার বড় ভাইয়ের এর মতো। কোনো কিচ্ছু মনে করবো না আর কোনো ছুটিও লাগবে না। শুধু বলেন কই যাচ্ছেন
-বললাম তো যাচ্ছি এক জায়গায়
-আমি জানি কই যাচ্ছেন
-কোথায়??
-হিমালয়ে
-চোপপপ পাকনামি বেশি শিখছিস?? থাক এখন যাই কোনো সমস্যায় পড়লে ফোন দিস কিন্তু
-ঠিক আছে ওস্তাদ
-হুহ থাক
-দেখে যায়েন....আরররর রেএএএ শরবত
শুভ ইরার কাছে আসলো...
-কি বুঝালে ওকে??(ইরা)
-কি কি করতে হবে কিভাবে থাকতে হবে সব বুঝিয়ে দিলাম
-হুমম চলো এখন
-চট্টগ্রাম কিভাবে যাবো
-কিভাবে যাবো মানে?? গাড়িতে যাবো
-ট্রেনে যাবে??
-সে তো ভালো কথা চলো ট্রেনেই যাই
-ইয়েএএএ
এদিকে ইরাদের বাসার অবস্থা...
-ইরার মা ইরার মা (বাবা)
-হ্যা গো আসছি (মা)
-ইরা কই??
-তুমি তো যানো আমাকে বলছো কেনো??
-তাহলে ও এখানে আসছিলো??
-হ্যা এসে জামাই দেখিয়ে নিয়ে গেলো
-তোমার মেয়ে অনেক বেশী বুঝতেছে। এর মজা ও টের পাবে
-ওহহ ওটা শুধু আমার মেয়ে! তোমার মেয়ে নয়??
-আর ওই ছেলেটাকে যদি পাই তাহলে খবর আছে।
ইরা আর শুভ ট্রনে উঠেছে কিছুক্ষণ হলো...ইরা জানালার ধারে বসেছে। আর তার পাশেই শুভ....ইরা চুপ হয়ে আছে দেখে শুভ বলল
-তোমার কি বাসার সবার কথা মনে পড়ছে(শুভ)
-এহহহ না এমনি ভাল লাগছে না (ইরা)
-আচ্ছা কিছু খাবে??
-না খুদা নেই
-কিন্তু আমার প্রচুর খুদা লাগছে সেই সকালে খেয়েছি এখন তো রাত ৮ টা বাজে
-বলো কি!!! আগে বলবা না??
-তুমিও তো কিছু খাও নি
-টেনশনে খুদা অনুভব হয় নি
-আচ্ছা সামনের স্টেশন থেকে কিছু কিনবো
-হুমমম ঠিক আছে
ইরা একদম থেমে গেছে, কথা বলারও তেমন শক্তি পাচ্ছে না।
একটা স্টেশন থেকে খাবার কিনে তারা খেয়ে নিলো। রাতে আর তেমন কথা হয় নি তাদের। খাওয়া শেষে তারা দুজনই ঘুমিয়ে যায়। ভোরের দিকে ট্রেন থেকে নেমে যায়... আর অনেক খুঁজে একটা হোটেল পায়...সেখানে বলেছে তারা বিবাহিত।
তো রুমে যাওয়ার পর...
-এই শুনছো(ইরা)
-হ্যা বলো(শুভ)
-বাবা কে একটা কল করি
-যদি কিছু বলে
-যা বলার বলবে
-আচ্ছা কথা বলো...
ইরার বাবা কে ফোন দিলো
-হ্যালো বাবা (ইরা)
-হ্যা কই আছিস মা (ইরার বাবা কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলল)
-বাবা আমি চট্টগ্রাম আছি। আমি তোমাদের অনেক মিস করছি (ইরাও কান্না করে দিলো)
-তুই আগেই চলে গেলি। আমি কি করতাম সেটা তো দেখলি না। তুই বাসায় ফিরে আয় ওই ছেলেটার সাথে তোর বিয়ে দিবো....
-না বাবা বাসায় ফিরবো না
-রাগ করে না মা বাসায় ফিরে আয়
-আচ্ছা দেখি
-শোন শোন
-হ্যা বলো
-আমার চট্টগ্রামে একটা কাজ আছে। আজই রওনা হবো তাহলে কাজ শেষে আমরা তিনজন একসাথে বাসায় ফিরবো
-সত্যিইইই???
-হ্যা রে
-ইয়এএএএ বাবা রাখছি এখন
-ওকে মামনি
ইরা ফোন রেখেই শুভকে জড়িয়ে ধরে...
-এই এই এত খুশি কেনো কি হয়েছে??(শুভ)
-বাবা আমার আর তোমার সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে
-এহহহ সত্যি
-হ্যা সত্যি। আর বাবা এটাও বলছে যে তার নাকি চট্টগ্রামে কাজ আছে। কাজ শেষে আমরা একসাথে ফিরবো..
-এটা বলেছেন উনি
-হ্যা গো এটাই বলেছে
-.......(কি কাজ আছে ওনার এখানে) শুভ মনে মনে বলল
-ওই কি ভাবো
-না কিছু না
-এখন একটু আদর করো না গো
-না বিয়ের পর সব একবারে
-না এখনই
-উহুম এখন না
-হুহ লাগবে না আড়ি
-আড়ি টু
।।
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 7
>>>>>>>>>>>>>>>
-ওই কি ভাবো(ইরা)
-না কিছু না(শুভ)
-এখন একটু আদর করো না গো
-না বিয়ের পর সব একবারে
-না এখনই
-উহুম এখন না
-হুহ লাগবে না আড়ি
-আড়ি টু
-কুত্তা কথা বলবি না আমার সাথে
-ওকে
দুজনই চুপ কেউ কেনো কথা বলছে না। শুভ ভাবল..(নাহ এভাবে থাকলে রাগারাগি টা বাড়বে। দেখি মহারাণীর রাগ কমানো যায় কি না)
শুভ যে জায়গায় বসা ছিলো সেখান থেকে উঠে এসে কোলে নিলো...তাও ইরা অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো...শুভ ইরাকে খাটে শুইয়ে দিলো... আর তার খুব কাছে গেলো....
-কি দেখছো??(ইরা)
-চোখ দেখছি নাক দেখছি আর গোলাপি ঠোঁট টা দেখছি (শুভ)
-শুধুই দেখবে??
-না,,,কিন্তু ওত দূর পৌঁছানোর জন্য আমি তো রেজিস্ট্রেশন করি নি..
-দাড়া তোর ফাকি দেওয়া ছুটাচ্ছি (ইরা শুভ কে টান দিয়ে তার বুকে নিলো। আর পরে কিস করলো)
সারাদিন খুবই হাসি খুসি তে কাটয়া দুজন... সেদিন সন্ধ্যা বেলা ইরার বাবা ফোন দেয়...
-ইরা মা (বাবা)
-হ্যা বাবা বলো(ইরা)
-আমার কাজ শেষ তোরা কোন হোটেল এ আছিস
ইরা হোটেল এর ঠিকানা বলে দেয়। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই ইরার বাবা পুলিশ নিয়ে ইরাদের রুমে হাজির....
-বাবা (ইরা)
-হে মা আমি এসে গেছি তর আর কোনো ভয় নেই(বাবা)
-ভয় নেই মানে
-স্যার এই সেই শয়তান যাকে আপনারা এতদিন খুঁজছিলেন
-বাবা কি করেছে ও
-মা ও মেয়েপাচার কারি
-আরে না ও মেয়ে পাচার করবে কেনো??
-মা আমার এটা মুখের কথা নয় পুলিশ এর কাছে প্রমান আছে। আর এর আগে কয়েকটা মেয়েকে এই হোটেলেই বিক্রি করে দিয়েছে
-আরে না কি বলেন আমি পাচার করবো কেনে?? ইরা উনারা মিথ্যা বলছে (শুভ)
-ইরা মা তুই হোটেল এর মালিক কে জিজ্ঞাস করতে পারিস।
-না বাবা বুঝতে পারছি
-আরে না না আমি এরকম না
-ঠাসসসস ঠাসসস ঠাসসস
(ইরা শুভকে মাইর শুরু করলে শরীরের যেখানে পারছে খুব মারছে। ইরার বাবা একটা বেল্ট ও দেয় ইরার হাতে আর বলে ওকে বেশী করে মার। শুভ হাজার বোঝানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। গালে হাতে কয়েক জায়গায় কেটে গেছে। এটা দেখে ইরার বাবা মুচকি হাসছে)
-ইরা মা রাখ এখন এসব চল বাসায় চল (বাবা)
-হ্যা বাবা চলো (ইরা মারতে মারতে ঘেমে গেছে)
-ই ই ই ইরা আমিহ...(আর কিছুই বলতে পারল না শুভ জ্ঞান হারিয়ে ফেলল)
ইরা তার বাবার সাথে বাসায় চলে যায়... আর শুভকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়...
ইরার বাসায় আসার পর মন মরা হয়ে বসে থাকে...সে ভাবে এতদিন একটা পশু কে ভালবাসছি। ছি ছি আমার সবকিছু ভাল ভাবে যেনে তারপর তার সাথে মেশা উচিত ছিলো। ধুররর ওর কথাই আমি ভাবব না। হঠাৎ নিচে থেকে ডাক আসে...
-ইরা ইরা (ইরার বাবা)
-আসছি বাবা
ইরা উঠে যায় তার বাবার কাছে...
-হ্যা বাবা বলো(ইরা)
-তোর চোখ ফোলা কেন?? কান্না করছিস নাকি??(বাবা)
-কই না বাবা
-এমনি একজন এর জন্য কান্না করে লাভ আছে বল
-না বাবা
-হুমম গুড। আচ্ছা যে কথা বলার জন্য তোকে ডাকছি
-হুমমম বলো
-আমি আর তোর মা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তোর বিয়ে দিয়ে দিবো। তোর কি কোনো আপত্তি আছে???
-না বাবা তোমরা যেটা ভাল বোঝো সেটাই করো
-আচ্ছা ঠিক আছে...
এদিকে শুভর জ্ঞান ফোরার পর সে দেখে থানায়... শুভর জ্ঞান ফেরার সাথে সাথে একজন উঠে এসে শুভ কে ভেতর থেকে বাহির করে আনে...
-আপনি চলে যান (একটা পুলিশ)
-চলে যাবো মানে??(শুভ)
-কেনো থাকার ইচ্ছা আছে??
-না না তা নেই। আমাকে কাল ধরে আনল নারী পাচার কারি বলে। আর আজই ছেড়ে দিলো।
-এই ভেজাল কইরেন না তো যান এখান থেকে
শুভ বাইরে চলে আসলো...আর ভাবছে..
-এটা ইরার বাবার কাজ। আমাকে ইরার সামনে খারাপ করার জন্য এই কাজটি করছেন। হুহ ইরাকে কিভাবে বুঝাবো?? আহহ ব্যাথা,,, হাত টা মনে হয় মচকে গেছে...উফফফ
শুভ চট্টগ্রাম থেকে আবার ঢাকায় ফিরে আসে.....ফিরতে রাত হয়ে যায়... শুভ সোজা তার রুমে ঢোকে দেখে ছোট খাচ্ছে...
-এই ছোট
-ওস্তাদ আপনেহহ...
-ভাত আছে কি???
-হ্যা ওস্তাদ আছে
-দে কয়েকটা
-আচ্ছা আপনে এহন এহেনে ক্যান
-খেতে সব বলছি। তুই ভাত দে
-হুমমম বসেন দিতেছি আমি
ছোট ভাত নিয়ে এলো...
-ওস্তাদ কি হয়েছে কন না কেন??
-শোন....(ছোট কে সব কথা শুভ বলল)
-হাইরে এই অবস্থা??
-হ্যা তাইলে ক এহন কি করমু আমি। উনি তো আমাকে ভুল বুঝতেছেন
-আপনার শ্বশুর হালার অনেক বুদ্ধি
-হুহ আচ্ছা বাদ দে। আমি যেটা বলি শোন
-হ্যা হ্যা বলেন বলেন
-ইরার বাসার ঠিকানা আমি বলে দিচ্ছি তুই কাল ওখানে যাবি
-কি জন্য যাবো??
-আমি তোকে একটা চিঠি দিবো ওইটা নিয়ে যাবি
-গিয়া কি করমু
-তারে দিবি
-হুমম ঠিক আছে
-বুঝছস তো
-হ্যা ওস্তাদ বুঝছি। কিন্তু আপনি গিয়ে বলেন
-আমি গিয়ে বললে মাইর দিবে আমাকে
-ওহহ তাহলে আমারেই যাইতে ওইবো
-হুহ তোকেই যেতে হবে
-চিন্তা কইরেন না মনে করেন চিঠি পৌঁছে গেছে....
পরদিন সকালে শুভ ছোট কে একটা চিঠি দিয়ে ইরার বাসার ঠিকানা বলে দেয়। ছোট এখন ইরার বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে...ভেতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না... হঠাৎ দেখে ইরা গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছে....ছোট দৌড়ে গেলো...
-ভাবি ভাবি (ছোট)
-ছোট তুই!! কি হইছে??(ইরা)
-এইটা ধরেন ভাই আপনাকে দিলো। আর ঠান্ডা মাথায় পড়তে বলছে
-শুভ চলে আসছে???(ইরার খটকা লাগল)
-হ্যা কাল রাতেই আসছে
-বলিস কি??
-হুমমম
- ঘুষ দিয়ে মনে হয় বেড়িয়ে আসছে(ইরা মনে মনে ভাবল)
-ভাবি
-আচ্ছা ছোট তুই যা আমি একজায়গায় যাচ্ছি
-আর চিঠি টা পইড়েন কিন্তু
-.......(ইরা আর কিছু না বলে চিঠিটা তার ব্যাগে রেখে চলে গেলো)
ছোট আবার শুভর কাছে আসলো
-কিরে কি বলল
-ভাবি তো চিঠি নিছে কিন্তু পড়বে কি না জানি না
-তুই পড়তে বলিস নাই
-কইছি তো
-আচ্ছা দেখা যাক কি হয়...
এদিকে ইরা ভাবছে চিঠি পড়বে কি পড়বে না... হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে চিঠি টা পড়া শুরু করলো......
চিঠির শেষ লাইনে লেখা ছিলো
"আমি তো তোমার সামনে গিয়ে কথা বলতে পারব না তাই চিঠি টা দিলাম। যদি তোমার মন চায় তাহলে ফোনে উত্তর দিয়ো...ইরা সাথে সাথে ফোন দিলো
-হ্যালো (ইরা)
-.........(শুভ কথা বলার সাহস ই পাচ্ছে না)
-হ্যালো কথা বলেন
-জ্বি আমি পাচার কারি না, আপনার বাবা টাকা দিয়ে হোটেল এর মালিক আর পুলিশকে হাত করেছে...আর পুলিশ আমাকে কিছু না বলে ছেড়ে দিয়েছে। আমি যদি পাচার কারি হতাম তাহলে কি আমাকে ছেড়ে দিতো???
-.................
-আমি জানি আমার প্রতি আপনার ঘৃণা চলে আসছে।
আমি কথা গুলো বললাম শুধু আপনার ভুল ভাঙানোর জন্য...আচ্ছা বায়...(শুভ ফোনটা কেটে দিলো)
ইরা গাড়িতে বসেই ভাবছে...
-বাবা আমার সাথে সাপ লুডুর গেইম খেলল!! আর শুভও এখন আমাকে অনেক ভয় পায়। ইসসসস না জেনে শুনে কি মার টাই টা মাড়ছি ওকে। কি করি এখন?? ওর কাছে কি যাবো??
(যেই বলা সেই কাজ ইরা গাড়ি নিয়ে শুভর সাথে দেখা করার জন্য শুভর বাসায় গেলো)
ইরা গিয়ে দরজায় টোকা দেয়...
-ওই যা দরজটা খুলে দে (শুভ)
-ওস্তাদ আপনি যান
-যাবি তুই
-যাচ্ছি
ছোট গিয়ে দরজা খুলেই দেখে ইরা..
-ভাবি!!
-ও আছে??
-হ্যা আছে
ওস্তাদ ভাবি আইছে...
ইরার আসা দেখে শুভ শোয়া থেকে উঠে বিছানা টা ঠিক করে দেয়। আর মাথা নিচু করে একটু দূরে গিয়ে দাড়ায়....শুভ বলে
-বসেন
-ছোট তুই বাইরে যা এখন (ইরা)
(ছোট বাইরে চলে গেলো)
দুজনই চুপচাপ কেউ কথা বলছে না..
-কি বলব বুঝতে পাড়ছি না (ইরা)
-আপনি সরি বলতে আসছেন তাই তো। সরি বলে চলে যান
(ইরা শুভর কথা শুনে কান্না করে দেয়)
-কান্না কইরেন না যেটা করছেন সেটাতে আপনার কোনো দোষ নেই। আপনার বাবাই সব করেছে
-হুমমম বুঝতে পাড়ছি আমি
-আমি আপনাকে প্রথমে বললাম যে থাক এগুলো করার দরকার নেই। শুধু শুধু পালিয়ে গেলাম। আপনি আমাকে মারলেন। যদি মরে যেতাম!!!
-....................
-আপনি যদি ভুল টা বুঝতে পাড়েন তো এখন আসতে পাড়েন
-নাহহ কাছে এসে বসো একটু
-না আমি আপনার কাছে আর কখনই যাবো না
-আসো বলছি
-না আপনি আপনার মত থাকেন আমি আমার মতো।
-ঘরে দা ছুড়ি কিছু আছে??
-কেনো আমাকে মারবেন নাকি??
-না আমি মরবো
-আপনি ক্যান মরবেন??
-আমি বুঝতে পারি নাই। আর এখন তোমার কাছে আসছি তুমি কেমন করছো। তোমাকে রাগের মাথায় মেরেছি তুমি রাগ করেছো...এখন আমি মরে যাই। তাহলেই সব ভেজাল শেষ
-না মরা যাবে না...মারতে মারতে পুরো শরীর এ দাগ বানিয়ে ফেলছেন...
-কই দেখি তো (ইরা কাছে এসে)
-নাহহ আমি শার্ট খুলে দেখাতে পারব না
-না দেখাতে হবে যেখানে যেখানে মেরেছি সেখানেই আদর করব আজ।
-না না আপনি কাছে আসবেন না দূরেই থাকেন
-না এমন করো না
-কাছে আসবেন না বলছি
-আমি বুঝতে পারি নি
-এখন বুঝে লাভ হবে
ইর বিদ্যুৎ গতিতে শুভে জড়িয়ে ধরে। আর কান্না করে বলে...
-আমি বুঝতে পারি নি। বুঝলে কি এমন করতাম??
-.....................
-কোথায় কোথায় লেগেছে বলো
-কলিজায় লেগেছে
-.................
-ছাড়ো এখন শরীর টা ব্যাথা করছে
-দাড়াও এখনই কমে যাবে
-কি করবা??
-ঔষধ দিবো। শার্ট খুলো
-নাহহহহ খোলা যাবে না
-না খোলো বলছি
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
Part : 8
>>>>>>>>>>>>>>
-ছাড়ো এখন শরীর টা ব্যাথা করছে(শুভ)
-দাড়াও এখনই কমে যাবে(ইরা)
-কি করবা??
-ঔষধ দিবো। শার্ট খুলো
-নাহহহহ খোলা যাবে না
-না খোলো বলছি
-নাহহ
-আমি তো তোমার বউ তাই না??
-না তুমি বউ না আমার যাও
-রাগ করছো কেনো??
-রাগ না করার কি আছে??
-কি জন্য রাগ করছো???
-তুমি যখন আমাকে অবিশ্বাস করে মারলে আমি কত বার বললাম কই শুনলে না তো,,,আসলে তুমি আমাকে বিশ্বাসই করো না
-না আমি তখন বাবা, পুলিশ আর হোটেল এর মালিকের কথা শুনে বিশ্বাস করছিলাম
-ওই তো যাও না যাও তাদের কথাই শুনো
-সরি
-রাখো তো তোমার সরি কিছু হলেই সরি
-এমন করো না
-তো কেমন করবো?? আচ্ছা তুমি এখন যাও। আসছো কেন হ্যা??
-তোমাকে দেখতে
-আমি চিঠি তে লিখছিলাম শুধু ফোন দিতে আসতে তো বলি নাই যাও এখন
-আমি তোমাকে ভালবাসি
-আরে ভাই যান তো মেজাজ গরম কইরেন না,,, আপনার ভালবাসা আপনার কাছে রাখেন যত্তসব
-............(ইরা কান্না করছে সেটা শুভ আড় চোখে দেখছিলো)
শুভ আরও বলল
-কি হলো যাচ্ছেন না কেনো??(শুভ)
-.............
-যান এখান থেকে
হঠাৎ করে ইরা শুভ পা ধরতে নেয়। কিন্তু ধরতে দেয় না...
-আরে আরে কি করছেন???(শুভ)
-তোমার পায়ে পরি এমন করো না আমাকে মাফ করে দাও (ইরা)
-হ এটা তো নাটক এর শুটিং চলছে আমি এখন আপনাকে বুকে টেনে নিয়ে বলব "ওগো তোমার স্থান আমার পায়ে নয় আমার বুকে"
-.............(ইরা কান্না করেই যাচ্ছে)
শুভ মনে মনে বলছে
-করো বেশি করে কান্না করো। আমিও অনেক কষ্ট পাইছি এখন বোঝো ঠেলা....
ভাবনা শেষে শুভ বলল
-কি হলো যাচ্ছেন না কেনো??
ইরা কথাটা শুনেই মাটিতে বসে পড়লো...
-ঠং করে লাভ হবে না আপনি যান এখান থেকে... ঠং আমার পছন্দ না...
ইরা অজ্ঞান হয়ে শুয়ে পড়লো... শুভ অন্যদিক তাকিয়ে কথা বলছিল তাই দেখতে পারে নি... শুভ আবার বলল
-মুখে কি টেপ লাগাইছে.....(আর কিছু বলতে পারলো না। দেখে ইরা শুয়ে আছে মাটিতে)
শুভ এগিয়ে গিয়ে তুলে ধরলো আর বলল
-ইরা এই ইরা
-..................(কোনো সারা শব্দ নাই)
শুভ ইরাকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিলো। আর পানি এনে তার মুখে ছিটিয়ে দিলো...ইরার আবার জ্ঞান ফেরে...
-..........(ইরা শুভর দিকে তাকিয়ে মুখ অন্য দিক ঘুরিয়ে নিলো। আর অনবরত চোখ দিয়ে পানি পড়ছে)
-নাহহ আর কষ্ট দেওয়া যাবে না আর...এহহমম এহমমম শোনেন...
-............
-আমি আপনাকে বিয়ে করলে আপনার বাবা এসে আমাকে মেরে ফেলবে
-আর পারবে না(ইরা তাকাল শুভর দিক)
-এহহহ বললেই হলো। যদি মেরে ফেলে??
-মারতে পারবে না এবার
-মারলে কি করবেন আপনি??
-বাবা মারার কথা মাথায় আনার আগেই খেলা শেষ করে দিবো
-কিসের খেলা??
-সাপ লুডু খেলা..
-ওহহ সেটা আপনার বাবা মেয়ের ব্যাপার...
-এখন তুমি রাগ কমাইছো??
-নাহহ রাগ কিভাবে কমবে?? যে মাইর দিছেন
-আচ্ছা তোমার বেল্ট খোলো আমি পিঠ দিচ্ছি আমাকে মারো...
-দিবো??
-হুমমম দাও
শুভ উঠে দাড়ালো... আর বলল
-উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলে সব রাগ শেষ হয়ে যাবে(শুভ)
ইরা দেড়ি না করে উঠে এসে সোজা শুভর বুকে ঝাপ দিলো।
-এই আরেকটু হলে তো আমি পড়েই যেতাম(শুভ)
-চুপপ একদম চুপপ আমি এখানে চিন্তায় মরে যাচ্ছি আর ও পরে যাওয়ার চিন্তা করছে...
-হুমমমমম
-কি হুমমম???
-কিছু না
-যানো আমার কেমন লাগছে??
-কেমন??
-মনে হইছিলো তুমি আমাকে মেনে নিবে না
-আবার অবিশ্বাস??
-আরে পাগল সেটা না
-তাহলে কোনটা??
-কিছু না ওই সম্পর্কে আর কথাই বলব না(ইরা শুভকে আরও জড়িয়ে ধরলো...)
-এই তুমি আমাকে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরছো কেন?? আর একহাত কই??(ইরা)
-না মানে(শুভ)
-কি না মানে?? আমার মনে হচ্ছে রুমের একপাশে দেয়াল আছে আর একপাশে নেই...দাও বলছি
-আমি হাত উঠাতে পাড়ছি না... মনে হয় ভেঙে গেছে...
-কি বলো কিভাবে???
-ওই যে সেইদিন
-তাহলে আমাকে খাটে শোয়ায় দিলো কে???
-আমি..আর তোমাকে শোয়াই দোওয়ার সময়ই খুব ব্যাথা করছে। এখন আর হাত উঠাতে পাড়ছি না
-বলো কি!!! এখনই যেতে হবে ডাক্তার এর কাছে চলো
-হ্যা তুমি বাসায় যাও তারপর যাচ্ছি
-না আমি তোমাকে নিয়ে যাবো
-না তোমার বাবা যদি দেখে ফেলে তো সমস্যা হবে
-তবুও চলো
-আরে আমি যাবো তো। কিন্তু তার আগে তুমি বাসায় যাও
-হুমম যাবে কিন্তু
-হ্যা গো অতবার বলতে হবে না আমি অবশ্যই যাবে। না গেলে হাত ঠিক হবে কিভাবে??
-হুমম ঠিক আছে
-হুমমম
-একটা কথা বলি
-হ্যা বলো
-একটা কপালে চুমু দিয়ে যাই
-..........
-কি দিবো না??
-..........
-ঠোঁট তো বলি নাই। কপাল এর কথা বলছি
-এত কথা বলার কি আছে দিলেই তো হয়
-উম্মাম্মাম্মাহহহহহহহহ
ইরা তার বাসায় যাওয়ার পর...
ইরা রুমে শুয়ে শুভর কথা ভাবছে। সেই সময় রুমে তার মা এলো...
-ইরা (রুমের বাইরে থেকে)
-হ্যা মা বলো
-দেখ তোর বরের একটা ছবি এনেছি
-মা আমি বিয়ে করতে চাইছি। ছবি টবি দেখতে চাই নি। নিয়ে যাও দেখব না
-আরে একটু দেখ
-বললাম না দেখব না
-সত্যি করে বল তো কি হইছে??
-কি হবে আবার?? বিয়ে দিতে চাইছো আমি রাজি হইছি। আমার দেখার প্রয়োজন নেই
-আচ্ছা ঠিক আছে থাক। আর শোন
-হ্যা বলো
-বিয়ে কিন্তু এক সপ্তাহ পরেই
-আজ হলেও সমস্যা নেই
ইরার এই গরম মেজাজ দেখে ইরার মা চলে গেলো...
আর এদিকে ইরা মনে মনে বলছে
-দেখো মা কি করি আমি...
সেদিন রাত ১০ টা। ইরা শুভ কে ফোন দেয়... প্রথমবার রিং হতে হতে কেটে যায় পরের বার ধরে..
-হ্যা বলো (শুভ)
-ফোন ধরেই হ্যা বলো বলতে হয়?? ফোনে কথা বলাটা ঠিক মতো শিখো নাই...
-হুমম
-ফোন ধরতে লেট হলো কেন??
-এই খাওয়া শেষ করলাম
-ডাক্তার এর কাছে গিয়েছিলে??
-হ্যা ব্যান্ডেজ করে দিছে। আর হাত ভাঙে নি মচকে গেছে আর ব্যাথা টা অনেক বেশি
-হুমমম ঔষধ খাইছো??
-না খাবো এখন
-এখন না
-তাহলে??
-কথা বলা শেষ করে নেই তারপর
-হা হা হা ঠিক আছে
-হাসবে না
-হুমমম
-এখন শোনো
-হ্যা বলো
-বাবা তো আমার জন্য পাত্র দেখছে
-হুমম তারপর
-বাবাকে আমি ছ্যাকা দিবো
-কিভাবে??
-প্রথমে...(ইরার প্ল্যান বলল)
-ওরে বাবা এটা কাকে ভালবাসছি আমি! এতো একটা দেশ চালাতে পারবে
-ঠং করো না তো
-তো কি করবো??
-আমার কথা শুনবা
-আচ্ছা ঠিক আছে...
-এখন ঘুমাও
-হুমম ঠিক আছে গুড নাইট
-আর হ্যা ঔষধ টা এখনই খাবে
-ওকে গিন্নি
-ওই ওই গিন্নি মানে কি??
-কিছু না
-কিছু না হলে তুমি বললে কিভাবে??
-ওকে কাল দেখা হলে বুঝিয়ে বলব
-ওকে বায়
-হুমম বায়...
পরদিন সকাল বেলা...
শুভ ইরার বাবার অফিসে যায়...
-আসসালামু আলাইকুম আংকেল আসতে পারি???(শুভ)
-তুমিইইই!!!!
-হ্যা
-আসো
-থ্যাংক ইউ আংকেল
-কি জন্য আসছো??
-বসে বলি??
-হ্যা বলো
-আপনি তো একটা সেই লেভেল এর ক্রিমিনাল
-কি বলতে চাইছো কি তুমি??
-আগে বলতে দেন। আপনার ভাল চাই সেই জন্যই কিছু বলতে আসছি
-...............
-আপনার ওই কাজ টা কি করা ঠিক হইছে..????
-হ্যা
-যাক আপনার বিবেক বুদ্ধি গিলে খাইছেন
-আমাকে জ্ঞান দিতে আসছো??
-না শ্বশুর মসাই ওহ সরি আংকেল। জ্ঞান দিতে আসি নি। শোনেন(শুভর পরিচয় টা সে ভালভাবে বলে।)
-আপনার মেয়ে আমাকে খুব ভালবাসে। ও আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না
-ও তো তোমাকে অবিশ্বাস করে এখন আর ও বিয়েতে রাজি হইছে
-আমি এখানে আসার পর ওর সাথে আমার কথা হইছে। আর ও সব জানে
-..............(ইরার বাবা কিছু বলছে না)
-আচ্ছা শোনেন ইরার বিয়ের দিন ও এমন কিছু করবে যেটা আপনি মেনে নিতে পারবেন না.... তাই আমি আসছি যাতে আপনার ওই দিন কোনো ক্ষতি না হয়। ও এমন কিছু করলো আর আপনি তাতে হার্ট এটাক ও করতে পারেন... আর আপনার কিছু হলে একটা পরিবার অনেক কিছু হাড়াবে। আপনার সাথে অনেক জীবন জড়িত........
।।
সে এসেছিলো নিরবে
Write : Sabbir Ahmed
END PART
>>>>>>>>>>>>>>>
-আচ্ছা শোনেন ইরার বিয়ের দিন ও এমন কিছু করবে যেটা আপনি মেনে নিতে পারবেন না.... তাই আমি আসছি যাতে আপনার ওই দিন কোনো ক্ষতি না হয়। ও এমন কিছু করলো আর আপনি তাতে হার্ট এটাক ও করতে পারেন... আর আপনার কিছু হলে একটা পরিবার অনেক কিছু হাড়াবে। আপনার সাথে অনেকের জীবন জড়িত। আমি ইরাকে বুঝিয়ে বলব আর সে যদি না বোঝার চেষ্টা করে সেটাও দেখব আমি...আপনি ভাল জায়গায় ওর বিয়ে দেন। আর বেয়াদবি মাফ করবেন আসি আংকেল ভাল থাকবেন....
শুভ চলে যাচ্ছে..পেছন থেকে ডাক দিয়ে বসলো ইরার বাবা....
-দাড়াও
-জ্বি আংকেল কিছু বলবেন??
-এদিকে আসো
-জ্বি বলেন
-বসো
-হুমমম
-সরি বাবা আমার ভুল হয়ে গেছে। তুমি যেই হও না কেন তোমার সাথে ইরার বিয়ে দিবো
-আংকেল কি বলেন এগুলা! আমি সামান্য শরবত ওয়ালা তার সাথে
-আমি মানুষ চিনতে ভুল করেছি। যাই হোক বাবা তুমি না করো না (শুভর হাত ধরে)
-কিন্তু আংকেল আমি...
-আর কোনো কথা না আজই বিয়ে
-আজ বিয়ে!!!
-হ্যা
-আমি তো অসুস্থ
-আচ্ছা সেটা দেখা যাবে কিন্তু আজই বিয়ে...
-.............
-চুপ হয়ে আছো কেনো?? বাবা না করো না তোমার সাথে সত্যি অন্যায় হয়েছে...আর সেটা এখন বুঝতে পাড়ছি আমি। তাই এই ব্যাপারে আমি দেড়ি করতে চাই না
-আচ্ছা আংকেল ঠিক আছে
-আচ্ছা শোনো লেখাপড়া কি কিছু জানো
-জ্বি আংকেল অনার্স থার্ড ইয়ার পর্যন্ত পড়েছি
-ওহ হ্যা ইরা প্রথম দিনই বলেছিলো। সরি সরি মনে ছিলো না। আর তাহলে জব এর কোনো সমস্যা নেই
-মানে চাকরির কথা বলছেন??
-হ্যা
-না আংকেল জব আমি করতে পারব না
-কি জন্য
-আমার ভাল লাগে না আর আমি..(শুভ যে বড় একটা হোটেল দিবে তার কথা বলল)
-হুমম খুব ভালো
-আর আংকেল বিয়ের পর পর সব খরচ আমার আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে কোনো টাকা নিতে পারব না
-হুমম ঠিক আছে। আচ্ছা যাও এখন রেডি হও সন্ধ্যায় আমার বাসায় এসো
-আংকেল একটা কথা
-হ্যা বলো
-আমার সাথে যে বিয়ে এটা ওকে বলবেন না
-আচ্ছা ঠিক আছে
-আসি আংকেল আসসালামু আলাইকুম
-ওয়া আলাইকুমুস সালাম..
শুভ সেখান থেকে চলে এসে ছোটর সাথে দেখা করল...আর সব কথা ছোট কে বলল...
-ওস্তাদ তাইলে তো রুম আরেকটা লাগবে
-কি জন্য??
-আমি থাকব কই??
-হ ঠিকি বলছিস। তুই ম্যানেজ করতে পারবি না??
-এটা কোনো ব্যাপার হলো??
-এখন চল বাজারে
-বাজারে কেন??
-আরে পাগলা বিয়ে শপিং করতে হবে না?? একটা ব্যাপার আছে না
-ওহ হো ঠিকিই কইছেন চলেন চলেন...
ইরাদের বাড়িতে....
-ইরা ইরা ইরা(অফিস থেকে এসেই ইরাে ডাকছে ইরার বাবা)
-ও একটু বাইরে গেছে (ইরার মা)
-ফোন দাও দিয়ে তারাতারি বাসায় আসতে বলো
-কেনো??
-যা বলছি তাই করো...
ইরা এক ঘন্টা পর বাসায় এলো...এসেই বাবার সাথে দেখা..
-কোথায় গিয়েছিলে??
-এই একটু বাইরে গিয়েছিলাম
-শোনো আজ সন্ধ্যায় তোমার বিয়ে
-আচ্ছা ঠিক...কিহহহ আজ সন্ধ্যায় বিয়ে মানে??
-মানে আজকে সন্ধ্যায় বিয়ে। পাত্র পক্ষ রাজি হইছে আর কাজি কে আসতে বলেছি সন্ধ্যায়।
-বাবা কিন্তু
-আমি তো তোর ভালর জন্যই বলছি মা
ইরা খুবই টেনশনে পড়ে গেলো. এক সপ্তাহ পরের বিয়ে আজকে কেনো...ইরা রুমে গিয়ে শুভ কে কল করল। কিন্তু শুভর নাম্বার বন্ধ
-হারামীর বাচ্চা টা দরকারি সময় ফোন অফ করে রাখছে। কেমনডা লাগে। (ইরা খুবই রেগে যাচ্ছে)
ফোন দিতে দিতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এলো। কিন্তু শুভ ফোন তুলছে না। ইরা সিদ্ধান্ত নিলে বাইরে পালিয়ে যাবে। তাকে যেতে দেওয়া হলো না। এখন ইরা রুমে বসে কান্না করছে...
এদিকে শুভ আর ছোট রেডি হয়ে ইরার বাসায় ঠুকছে...
-ছোট দেখতো আমাকে কেমন লাগছে??(শুভ)
-ওস্তাদ কি কমু...সালমান খান ফেল(ছোট)
-চোপপ সালমান খান এর সাথে কম্পিটিশন করলে আমাকে ফেইল নাম্বার ও দিবো না
-কি যে কন আপনে
-ঠিকি বলছি
-চল ভেতরে চল
-হুমম চলেন
-ওই আমার তো ভয় করছে
-কি কন এগুলা!! শ্বশুর বাড়ি ঠুকতে ভয় হচ্ছে??
-ফার্স্ট টাইম তো
-আর আসেন তো..
শুভ ইরার বাসার ভেতর ঠুকল...ইরার বাবা সোফায় বসে ছিলো..শুভ ছালাম দেওয়াতে উঠে দাড়িয়ে এগিয়ে এলো
-তোমাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম....এইখান টায় বসো(ইরার বাবা)
-থ্যাংক ইউ আং...বাবা
-কই গো।দেখে জামাই বাবাজি এসে গেছে (ইরার বাবা ইরার মাকে ডাকতে ডাকতে একটা রুমে চলে গেলো)
ইরা তার রুম থেকেই...ইরার বাবার কথা টা শুনতে পায়..সে দৌড়ে আসে আর দেখে...শুভ আর ছোট বসে আছে...দেখে ইরা অবাক হয়ে যায়...দৌড়ে নিচে আসে...ইরা শুভর কলার ধরে ইরার রুমে নিয়ে যায়...
ইরার বাবা এসে দেখে জামাই নাই..
-আরে জামাই গেলো কই??
-আংকেল জামাই কে ধরে নিয়ে গেছে আপনার মেয়ে(ছোট)
-কি জন্য??
-সেটা তো জানি না। কিন্তু ভাবি কে দেখলাম অনেক রেগে আছে
-হুমম বুঝছি
-আংকেল ভাবি আপনার মতই হইছে তাই না??
-আমার মতো মানে??
-মানে আপনার মতো রাগি
-আমাকে দেখে রাগি মনে হয়??
-হ্যা সেই জন্যই তো আপনার মাথায় চুল নেই
-....(ইরার বাবা লজ্জায় আর কিছু বলে না)
ইরার রুমে...
-ওই তুই এখানে কেন?? আর তোর নাম্বার বন্ধ কেন??(শুভ)
-তোমার বাবা বিয়ের দাওয়াত দিয়েছে আর সেই জন্যই আসছি
-তোর ফোন বন্ধ কেন??
-চার্জ নাই
-আমার বিয়ে আর তুই দাওয়াত খাইতে আসছিস কুত্তার বাচ্চা
-ছি ছি কি বলো
-চোপ তোর সাথে কথা নেই যা এখান থেকে
-আচ্ছা শোনো
-তোর কোনো কথাই শুনবো না আমি তুই যা
-ওই শোনো আমি তোমার বাবার কাছে গিয়েছিলাম আজ সকালে....(তারপর পুরো ঘটনা বলল শুভ)
ইরা দৌরে এসে শুভকে জড়িয়ে ধরলো
-কুত্তা কুত্তা কুত্তা...
-ইউ ইউ ইউ
-তুই তুই
-..........
-এমন করলি কেন??
-খারাপ করছি??
-না তুই আমাকে কথাটা আগে জানালি না কেন??
-একটু সারপ্রাইজ দিলাম
-আমি যদি টেনশন করে মরে যেতাম
-যাবে
-কেনো??
-আমি বেঁচে আছি তাই
-বল্লেই হলো??
-হুমম বল্লেই তো হবে
-হুমম
-আচ্ছা আমাকে এখানে নিয়ে আসছো আর শ্বশুর মসাই মনে হয় খুজতেছে
-একটু পরে যাও
-না
ইরা একটু বেশি জোড়ে জড়িয়ে ধরলো
-হঠাৎ এরকম কেনো??
-প্রিয় মানুষ টিকে পাওয়ার আনন্দ আমি কিভাবে প্রকাশ করবো বুঝতে পারছি না তাই
-তাহলে যত শক্তি আছে জড়িয়ে ধরো
-ধরবো
-হুমমম
-........
-ওমা ওমা ছাড়ো মরে যাবো
-নিজেই তো ধরতে বললে
-তাই এত জোড়ে
-হ্যা
-আচ্ছা থাকো আমি নিচে যাই
-হুমম যাও আমি রেডি হচ্ছি
-না তাহলে রেডি হওয়া দেখি
-না না এখন দেখা যাবে না
-তুমি সাজবে আর আমি দেখতে পারবো না??
-পারবে এখন না বিয়ের পর.. যাও এখন মা আসতে পারে
-ওকে যাচ্ছি..
কাজি আসার পর বিয়ে পড়ানো হয়ে গেলো...এবার যাবার পালা...ইরার মা কান্না করছে
-মা কান্না করো না। আমি কাল সকালেই আসবো তো
-....(শুভ কথাটা শুনে হা হয়ে যায়)
-বাবা তুমি মন খারাপ করো না
-আচ্ছা দেখে যাস
-বাবা কোন গাড়িটা নিয়ে যাবো
-এই যে ম্যাডাম আজ থেকে বাবার বাড়ির কোনো জিনিস উইজ করতে পারবেন না সব খরচ আমার...
-এখন যাবো কিভাবে??
-রাত তো বেশি হয় নি। রিক্সা আছে রিক্সায় যাবো...
-হুহ
শুভর বাসায় আসার পর...
-বাহহ রুম টা কে সাজিয়েছে..??(ইরা)
-ছোট আর আমি(শুভ)
-খুব সুন্দর হয়েছে
-হুমম থ্যাংকস
-ছোট কোথায় গেলো??
-ও একটা নতুন রুম নিয়েছে ওইখানে
-ওহহ
-আচ্ছা তুমি খাটে উঠে বসো। তোমার জন্য কিছু কিনেছি আমি
-কি কিনছো আবারর??
-উঠে বসো আগে
ইরা গিয়ে বসল..আর শুভ কয়েকটা ব্যাগ নিয়ে এসে ইরার সামনা সামনি বসল...
-এই যে এই ব্যাগটাতে একটা গলার হার আছে... এই ব্যাগটাতে এটা কানের দুল আর একটা নাকফুল আছে।
-এগুলো কিনতে কে বলেছে??
-দিতে হয় এগুলো আমি জানি..আর একা মানুষ কি কি দিতে হয় আমি তো জানি না এই একটা শাড়ীও এনেছি। আর যদি কিছু লাগে বলো। অনেক কিছু কেনা হয় নি তাই না..???
ইরা এগিয়ে এসে শুভর গাল ধরে বলল
-ওই পাগল এগুলো কে কিনতে বলেছে হ্যা?? এগুলো কিনছো কেনো??
-তুমি তো দেখি একটা পাগলী। এগুলো বিয়ের সময় দিতে হয়। আর আমার বউ আমি দিবো না??
-কত গুলো টাকা খরচ হলো
-গরিব হলে কি হবে টাকা পয়সা তো কিছু আছে তাই না!! আর সেটা বড় কথা নয়। সব তোমার
-কিছু লাগবে না এসব। তুমি থাকলেই হবে
-না এগুলো লাগবে তোমার। নাহলে শ্বশুর মসাই আবার খোটা দিয়ে কথা বলবে
-পাগল একটা...
-দাড়াও এগুলো রেখে আসি
শুভ রেখে এসে আবার ইরার সামনা সামনি বসলো
-মা থাকলে ব্যাপার টা আলাদা হতো...তোমার যে কি অসুবিধা হবে আল্লাই যানে
ইরা শুভকে ধাক্কা দিয়ে শোয়াই দেয়.. আর বলে
-কিচ্ছু হবে না তুমি আছো তো...
-হুমম কিন্তু
-চুপপ কোনো কিন্তু না। এবার তোমাকে গিফট দিবো
-দেখি কি দিবা??
-হুমম দাড়াও দেখাচ্ছি..
অতঃপর... লোডশেডিং...
..
..
..
..
..
..
..
..
..
..
................END..................
..