Part-1
ইতি চৌধুরি
রোদ- চলো....
ইতি- 
কোথায়???? তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে সকাল সকাল হলো কি ওনার???


রোদ- Just Come.....বলেই ওর হাত ধরে এক প্রকার টেনে অফিস থেকে বেরিয়ে এলাম। ওকে গাড়িতে বসিয়ে দিলাম।
ইতি- But Sir আমরা যাচ্ছি কোথায়
???


রোদ- কোনো জবাব দিলাম না গাড়ি চালাতে শুরু করলাম।
ইতি- একটু পরে আমার একটা মিটিং আছে। আর ডিলটা খুব Important আমাদের জন্য।
রোদ- অফিসে ফোন দিলাম। হ্যালো রিমি।
রিমি- জি Sir বলুন।
রোদ- আজকের আমার আর ইতির যত Appointment আর মিটিং আছে সব Cancel করে দাও।
রিমি- 
But Sir ইতি মেম এর আজকের মিটিং টা তো....


রোদ- আমি যা বলছি তাই করো।
রিমি- 
ওকে Sir.


রোদ- আর আমরা আজ অফিসে বেক করবো না।
ইতি- অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকালাম। ওনি কি বললো এগুলো?? মানে কি Sir???
রোদ- তোমার এতো কিছু বুঝতে হবে না।
ইতি- সারা রাস্তা আমি বার বার জিঙ্গেস করলাম কোথায় যাচ্ছি কিন্তু ওনি আমাকে কোনো জবাবই দিলেন না।
ইতি- কিছুক্ষণ পর গাড়ি থামলো। ওনি আমার হাত ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে আবার টেনে নিয়েয়ে যাচ্ছেন। আমি হা করে আছি। ওনি আমাকে একটা কাজি অফিসে নিয়ে এসেছেন

কিন্তু কেনো??? আমার হাত ধরে টেনে আমাকে ভিতে নিয়ে গেলেন।



ইতি- আমরা এখানে কেনো???ওনি আমাকে কোনো উত্তর না দিয়ে অন্য কিছু মানুষের কাছে এগিয়ে গেলেন। হয়ত ওনার বন্ধু।
সাদ- আসলি এতক্ষণে??
রোদ- সব রেডি তো???
সাদ- হ্যা সব রেডি শুধু তোদের অপেক্ষায় ছিলাম। চল।
রোদ- চলো। ইতিকে বললাম। ও আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে।
ইতি- চলো মানে??? কোথায়???
রোদ- উফফ......এতো প্রশ্ন করো কেনো??
ইতি- ওনি আবার আমার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গিয়ে একটা চেয়ার বসিয়ে দিলেন ওনি আমার পাশে বসে পরলেন। আর আমাদের সামনে কাজি। বিয়ে পড়ানো শুরু হলো। করছেন কি??? এসব হচ্ছে কি??
রোদ- বিয়ে।
ইতি- মানে কি??? কোনো???
রোদ- আমি তোমাকে বিয়ে করছি।
ইতি- আমি আপনাকে বিয়ে করবো না। সবাই হা হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
রোদ- কাজি সাহে ১০মিনিট বসে আমরা আসছি এখনি। বলেই ওনি আমাকে টেনে রুমের বাইরে নিয়ে এলেন।
রুমের বাইরে-
রোদ- তুমি আমাকে বিয়ে করবে না???
ইতি- আপনার কি মাথা ঠিক আছে কি বলছেন এসব??? আপনি আমার বস আর আমি Just একজন সাধারণ Employee আপনার কোম্পানির তাহলে কিভাবে আপনি আমাকে বিয়ে করবেন??
রোদ- ওহ..... আমি তো ভুলেই গিয়ে ছিলাম আমি তোমার বস। তাহলে বসেরসের মতোই কথা বলি।
ইতি- মানে????
রোদ- মানে তুমি হয়ত ভুলে গেছো কিন্তু আমি ভুলিনি। তুমি কোম্পানি থেকে অনেক বড় একটা লোন নিয়েছো আর কোম্পানিটা আমার।
ইতি- Sir আপনি......অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
রোদ- তুমি আমাকে বিয়ে করতে না চাইলে আমি তোমাকে Force করবো না কিন্তু....
ইতি- কিন্তু কি???
রোদ- এখনি এই মুহূর্তে টাকাগুলো ফেরত দিতো হবে।
ইতি- আমার মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হচ্ছে না। বাবার অপারেশনের জন্য ৫ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে ছিলাম। যা এখন প্রতিমাসে কিছু কিছু করে দিয়ে দিচ্ছি কিন্তু আমার বা আমার পরিবারের পক্ষে একত্রে এতো গুলো টাকা দেয়া কোনো ভাবেই সম্ভব না।
রোদ- I hope এখন আর তোমাকে আমায় বিয়ে করতে কোনো আপত্তি নেই। Lets go....
ইতি- আর কিছুই বলতে পারলাম না বিয়ে হয়ে গেলো।
সাদ- Congratulations দোস্ত.....
রোদ- Thank u দোস্ত তোরা না থাকলে সম্ভব ছিলো না।
ইতি- আমি আর ওনার সাথে কোনো কথাই বলি নি। একটা মানুষ এতো খারাপ হতে পারে। আমার দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ওনি আমার সাথে এমনটা করতে পারলো। ভাবতেই আমার কান্না





সাদ- তোরা হানিমুনে কবে যাচ্ছিস??
রোদ- আগে বাসায় যাই। বলেই ইতির দিকে তাকালাম।
ইতি- বাসায় যাবার কথা শুনে ওনার দিকেকে তাকালাম।
ইতি- ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। ওনিও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এর পর কি হবে আল্লাহই জানে।
ইতি- ওনি গাড়ি চালাচ্ছেন। কোনো কথাই বলছে না। আমার দমবন্ধ হয়ে আছে ভয়ে। ওনি ওনার বাড়িতে নিয়ে এলেন আমাকে। এর আগে কখনও আসা হয়নি আমার কেবল অফিসে সবার মুখে শুনেছি একি বাড়িতে আলাদা চলাদা ফ্লেটে থাকে সব ভাইয়েরা। দুটো বোন বিয়ে হয়েগেছে আমেরিকায় থাকে দুজনই। ভাইদের মধ্যে ওনিই সবার ছোট। একা থাকেন আর আজ থেকে হয়ত আমি......
কোন কথা না বলে সোজা আমাকে ওনার ফ্লেটে নিয়ে গেলেন। খুব সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো বাসা।
ইতি- অনেক্ষন হলো বসে আছি। ভয়ে জাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার। অনেকটা সময়পর ওনি আসলেন।
রোদ- মেঝো ভাইয়া আসবেন। যা বলার আমি বলবো তোমার কিছু বলা লাগবে না।
ইতি- আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলাম।
কিছুক্ষন পরেই ওনার ভাইয়া এলেন।
মেঝো ভাইয়া- এসব কি রোদ?? তাহলে তো যা শুনছি তাই ঠিক মনে হচ্ছে।
রোদ- জি
ভাইয়া- তা এসব এর মানেটা কি???
রোদ- তোমরাই তো বিয়ে বিয়ে করে পাগল করছিলে। আর বিয়ে যেহুত করতেই হবে তাই করে ফেললাম।
ভাইয়া- তুমি বিয়ে করেছো এতে আমাদের আপত্তি আর ইতিকে আমাদের আপত্তি নেই তাই বলে এভাবে???
রোদ- দেখো ভাইয়া আমার নিজের একটা পছন্দ অপছন্দ আছে আর বিয়েটা আমায় করতে হবে তাই আমি আমার পছন্দ করা মানুষটাকেই আমার মতো করে নিজে করে নিলাম।
ইতি- অবাক হয়ে গেলাম 
ওনি আমাকে পছন্দ করেন????


রোদ- আর অনুষ্ঠানের কথা বলছো সেটা পরে বড় করে পার্টি দিয়ে দিলেই হবে।
ভাইয়া- বড় ভাইয়া ফোন দিলে তুমি বুঝে নিও আমি এসব এর মধ্যে নেই আগেই বলে দিলাম।
রোদ- আগে ভাইয়া আসুক।
ইতি- মেঝো ভাইয়া যাওয়ার আগে আমার মাথায় হাত দিয়ে সুখী হও দোয়া করে গেলেন। কিন্তু আর ঘোর যেনো কাটছেই না ওনি আমাকে পছন্দ করে অথচ আমি কখনও বুঝতেই পারিনি ব্যাপরটা আর ওনি আমাকে বুঝতেও দেন নি। ভাবতে ভাবতেই ওনার পিছু পিছু ওনার রুমে মানে আজ থেকে আমাদের রুমে গেলাম। ওনাকে একবার জিঙ্গেস করা দরকার তাই ডাকতে নিবো তার আগেই ওনি পিছনে ঘুরে দারালনে।
রোদ- পিছনে ঘুরে দারালম। খুশি হবার কিছু নেই
ইতি- মানে???
রোদ- মানেটা খুব Simple আমি তোমাকে পছন্দ টছন্দ করি না। ওই কথাটা Just বলেছি কারণ ভাবি আমার জন্য মেয়ে দেখছিলেন আমি তোমাকে পছন্দ করি শুনলে কষ্ট পাবে না তাই। আর ভাইয়া আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা তোমার বাসা জানিয়ে দিবে তোমার চিন্তা করতে হবে না।
ইতি- কথা গুলো বলেই ওনি বাথরুমে চলে গেলেন। আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলাম একটা মানুষের আর কতগুলো রুপ দেখব আজ একসাথে আল্লাহই জানে।
রোদ- বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখি মেয়েটা রুমে নেই। তাতে কি চলে গেলাম কিচেনে রান্না করতে।
ইতি- উফফফ.... আর ভাবতে পারছি না। ফ্রেস হয়ে রুম থেকে বের হলাম ওনাকে দেখছি না। ওমা ওনি টেবিলে খাবার দিচ্ছেন ওনার গেটাপ দেখে মনে হচ্ছে ওনি নিজে রান্না করেছে। একটা চেয়ার টেনে দিয়ে বললেন বসো খেয়ে নেই।
ইতি- ওনি নিজে আমার জন্য চেয়ার টেনে দিলেন। মানুষটাকে যত দেখছি অবাক হচ্ছি। রাগ ও হচ্ছে অনেক ওনি এগুলো কেনো করছেন কিছুই জানি না আর বলছেনও না। রাগের জন্য ভেবেছিলাম বলি খাবো না কিন্তু এতো ক্ষুদা লেগেছে যে চুপচাপ খেতে বসে পরলাম। ওনিও বসলেন।
খাওয়া-দাওয়া শেষ হতেই রুমে চলে আসলাম। আমার ফোন বাজছে। নিয়ে দেখি আম্মু ফোন করেছে। ভয়ে ভয়ে রিসিভ করলাম।
ইতি- হ্যালো মা
মা- আমরা কি তোর পর?? আমাদের বললে কি আমরা বিয়েটা দিতাম না???
ইতি- মা Plz.....
মা- তোর বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে জানিস??
ইতি- অনেক কষ্টে মাকে বুঝিয়ে ফোন রাখলাম। ফোন রেখে পিছনে ঘুরেই হা হয়ে গেলাম। একি??? আপনি এখানে??? ওনি বিছানায় সুয়ে আছেন।
রোদ- মানে??? আমার বাড়ি, আমার রুম, আমার খাট তো আমি থাকবো না তো কে থাকবে??? আর তুমি কি অন্য কাইকে Expect করছিলে।
ইতি- ওনার কথা শুনে লজ্জা পেয়ে গেলাম। না আসলে তা বলতে চাইনি। আমি কোথায় ঘুমাবো???
রোদ- আমি খাটের একপাশে শুয়ে অন্যপাশ হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলাম। এখানে ঘুমাবে।
ইতি- আপনার পাশে???
রোদ- হ্যা.....কেনো??? কোন সমস্যা???
ইতি- নাহ..... বলেই উল্টা দিকে ঘুরে বসে পরলাম। ওনার সাথে কথায় পারবো না। মাঝে কোল বালিশ দিয়ে শুয়ে পরলাম।
সকালে-
রোদ- ঘুম ভাঙতেই মেয়েটার দিকে চোখ পরল। হাকলা রোদের আলো পরেছে কি মায়াবি লাগছে দেখতে। সারারাত হয়ত মনে মনে অনেক কথা শুনিয়েছে আমাকে ভাবতেই মুখে হালকা একটা হাসি চলে আসে। উঠে যাই ফ্রেস হয়ে নেই অফিস যেতে হবে।
ইতি- আরমোরা ভেঙ্গে ঘুম থেকে উঠে বসে চোখ ডলছিলাম। চোখ মেলে তাকাতেই মাগোওওওওওওওওওওও বলেই দিলাম চিৎকার।
রোদ- কি হয়েছে??? বলেই ওর কাছে গেলাম।
ইতি- হাত দিয়ে চোখ ধরলাম। ছিঃ আপনার লজ্জা করে না। বলতে বলতে দাড়িয়ে গেলাম।
রোদ- মানে??? কেনো???
ইতি- এভাবে একটা মেয়ের সামনে কাপড় ছাড়া চলে এলেন শুধু টাওয়াল পড়ে।
রোদ- ওহ......তুমিই তো Problem কোথায়???
ইতি- আমি তো মানে???
রোদ- কেনো তুমি কি চাও অন্য কারো সামনে যাই এভাবে??
ইতি- ছিঃ... আপনার আসলেই লজ্জা নেই বলেই বাথরুমে চলে গেলাম। ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিলাম। ওনি নাস্তা রেডি করছেন।
রোদ- শুধু আজকের জন্য কাল থেকে আমি আর রান্না করছি না।
ইতি- তাহলে কে করবে???
রোদ- তুমি......
ইতি- আ...আমি??? দুজনে নাস্তা করে নিলাম। একটা কথা ছিলো।
রোদ- হুম..
ইতি- আমি আজ অফিসের পর বাবার বাসায় যাবো।
রোদ- যদি না করি??
ইতি- না করলেও আমি শুনছি না। হুহ





রোদ- শুনো
ইতি- ঘুরে দাড়ালাম। জি??
রোদ- অফিসে কিন্তু আমরা বলছিনা যে We R Married.
ইতি- চোখ কুচকে তাকালাম ওনার দিকে বললাম আমি যে মরে জাচ্ছি সবাইকে বলার জন্য। হুহ
বেরিয়ে গেলাম অফিসে যাওয়ার জন্য।


রোদ- পিছন থেকে হর্ন দিয়ে যাচ্ছি মেয়েটা দেখছেই না।
ইতি- উফফফ.... কে এতো হর্ন দিচ্ছে। পিছনে ঘুরতেই দেখি ওনি।
রোদ- গাড়িতে উঠো।
ইতি- Thank u লাগবে না.
রোদ- উঠতে বলছি উঠো।
ইতি- বসের সাথে একত্রে যাওয়াটা সবাই ভালো চোখে দেখবে না।
ইতি- বলেই একটা রিকশায় উঠে গেলাম। ওনাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। ভাবে কি ওনি নিজেকে। ওনি যা বলবে তাই হবে একে তো আমাকে জোর করে বিয়ে করেছে কেনো করেছে তাও বলছে না। আবার মিথ্যেও বলা হচ্ছে। আর সহ্য হচ্ছে না আমার।
রাগে ফুসতে ফুসতে অফিসে চলে এলাম। অফিসেও শান্তি নেই অফিসে ডুকতেই আমাকে দেখে অনেকেই কানাকামি শুরু করে দিয়েছে। গতকাল ওনি যেভাবে সবার সামনে টেনে নিয়ে গেলেন। উফফ কি লজ্জা।


অফিসে-
ইতি- কি খবর রিমি???
রিমি- জি মেম ভালো।
ইতি- আমার গতকালের মিটিংটা কবে হচ্ছে?
রিমি- আজিই মেম। ওনারা কিছুক্ষণ পর আসছেন।
ইতি- ওকে।
রোদ- আজকের মিটিংএর পেপার গুলো নিয়ে আসো তো।
ইতি- জি।
সবাই কিভাবে দেখছে আমাকে যেনো আমি কোনো জোকার বা এলিয়েন। সব ওনার জন্য সহ্য হচ্ছে না আমার একদম। ভাবতে ভাবতেই ওনার কেবিনে চলে এলাম।
ইতি- Can I come in???
রোদ- Sure. বসো। মিটিংএর আগে সব একবার ডিসকাস করে নিলে হয় তো ভালো হবে।
ইতি- জি। আমি ওনাকে সব Details বলছি।
রোদ- শুধু ওর দিকে চোখ যাচ্ছে। হালকা বাতাসে ওর চুলগুলো উড়ছে ওকে অপূর্ব লাগছে দেখতে।
ইতি- চুলগুলো জালাছে ঠিক করতে গিয়ে ওনার দিকে চোখ গেলো ওমা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলাম ওনি তো আমাকেই দেখছে।
রোদ- চোখ সরিয়ে নিলাম তাও ও দেখে ফেলেছে হয়ত আমি ওকে দেখছিলাম। রাগ উঠে গেলো কে বলেছে ওকে চুল গুলো বাধার জন্য। ভালোই তো লাগছিলো আমার।
রিমি- Sir আসবো??
রোদ- এসো।
রিমি- Sir, Ma'am Client চলে এসেছে মিটিংএর সময় হয়ে গেছে।
রোদ- Ok We r coming......ইতি সামনে ছিলো আমি ওর চুলের ক্লিপটা খুলে আগে চলে গেলাম পিছনে ও কি বলল শুনলাম না।
ইতি- আমার চুল..... উফফ আর পারছি না ওনাকে নিয়ে। পাজি একটা।
রোদ- মিটিং রুমে ওকে দেখেই রাগটা চরমে উঠে গেলো। আমি চুল খুলে দেওয়ার পরও সাহস হয় কিভাবে আবার চুল বাধার
দেখাচ্ছি মজা মিটিংটা শেষ হোক আগে।


ইতি- হুহ.....আমার চুল খোলা হচ্ছে তাই না। একটা ক্লিপ গেছে তো কি হয়েছে আমার কাছে কি ক্লিপের অভাব আছে নাকি হুহ...ওনাকে দেখে তো মনে হয় রেগে ভুত হয়ে আছে তাতে আমার কি হুহ। মিটিংএ মন দিলাম। যাক মিটিংটা ভালোই হলো ডিলটাও ফাইনাল হয়ে গেলো। আমি হাসি মুখে ওনার দিকে তাকালাম কিন্তু ওনি আমার দিকে তাকালেনই না। এমনকি সারা মিটিংএ একবারো আমার দিকে তাকাননি। Laptop এ কি যে এতো দেখে আল্লাহ জানে আর ওনিই জানে হুহ....
রোদ- পাগল মেয়ে একটা জুটেছে আমার কপালে। বার বার শুধু আমাকেই দেখছি আমি ওকে দেখছি কিনা। ভাবছে হয়ত আমি রাগ করে ওর দিকে তাকাচ্ছিই না পাগল মেয়েটা তো জানেই না যে আমি শুধু ওকেই দেখছে আমার Laptop এর সিসি টিভি ক্যামেরাতে। জানলে হয়ত লজ্জায় লাল হয়ে যাবে মেয়েটা।
ইতি- কিছু বলছেও না বের হয়ে গেলাম। নিজের কেবিনে চলে এলাম। আমার জন্য নতুন একটা ডিল হলো অথচ আমাকে একটা Thanks ও বলল না। আজ আর ফিরেই যাবো না। বাবার বাসায় থেকে যাবো একে বারে হুহ....
রোদ- ওমা পালিয়ে গেলো। এতো ভয় পায় আমাকে বলেই হেসে দিলাম। কেবিনে এসেই ফোন দিলাম ইন্টারকমে। আমার কেবিনে আসো।
ইতি- জি আসছি। আল্লাহই জানে কপালে কি আছে। May I come in??
রোদ- এসো
ইতি- জি বলুন
রোদ- কাছে আসো
ইতি- 
মানে??


রোদ- বাংলা বুঝ না?? কাছে আসো।
ইতি- ওনার টেবিলের কিছুটা সামনে গিলাম।
রোদ- আরো কাছে
ইতি- ওার টেবিলের আরো একটু কাছে গেলাম
রোদ- আরো কাছে
ইতি- একদম ওনার টেবিলের সাথে গিয়ে দারালাম ওনার আর আমার মাঝে কেবল টেবিল টাই আছে।
রোদ- আমি কিছুটা উচু হয়ে ওর মাথার পিছনে হাত দিয়ে চুলের ক্লিপটা খুলে দিলাম
ইতি- 



রোদ- এখন যাও
ইতি- এটা কি হলো???
রোদ- কেন??? তুমি দেখতে পাও না??? নাকি ফিল করতে পারো না কোনটা???
ইতি- আমি দুটোই পারি কিন্তু আপনি চুল খুলে দিলেন কেনো??
রোদ- কারণ তোমার বাধা চুল আমার পছন্দ না।
ইতি- তাতে আমার কি??? আমার চুল আমি বাধবো না ছাড়বো সেটা আমার ইচ্ছা
রোদ- ওহ... তাই বুঝি... চেয়ার থেকে উঠে একটু একটু করে ওর দিকে এগোতে শুরু করলাম
ইতি- অবশ্যই তাই বলে দিলাম দৌড়.... ওনি যেভাবে আমার দিকে আগাচ্ছিলেন বলা যায় না যে মানুষ কি করে বসে।
রোদ- হাহাহা.... না হেসে পারলাম না যে দৌড় দিলো হয়ত ভয় পেছে।
ইতি- এক দৌড়ে আমার কেবিনে চলে এলাম। আল্লাহ এই মানুষ নামি ভুতটার হাত থেকে বাঁচাও আমাকে।
অফিস টাই শেষ। বের হয়ে গেলাম বাবা-মার কাছে যাবো। নিচে নামতেই ওনার ড্রাইভার আমার সামনে ওনার গাড়ি নিয়ে হাজির।
ড্রাইভার- চলুন মেডাম
ইতি- নাহ বমি গাড়িতে যাবো না। আপনি আপনার স্যারকে নিয়ে যান আমি চলে যেতে পারবো।
ড্রাইভার- Plz Madam আপনি একা গেলে আমার চাকরী থাকবে না।
ইতি- কথাটা শুনে অনেক মায়া হলো। আর ওনার ওপর প্রচন্ড রাগ হলো কিভাবে পারে ওনি অসহায় মানুষের সাথে এমন করতে। আচ্ছা চলুন। চলে এলাম বাবার বাসায়। আমি গাড়ি থেকে নামতেই ড্রাইভার গাড়ির পিছন থেকে অনেক রকম মিষ্টি, ফল, গিফ্ট নামাতে শুরু করল।
ইতি- এতো কিছু কোথা থেকে এলো???
ড্রাইভার- আপনি বের হবার আগেই Sir নিজে গিয়ে এসব কিনেছেন। আমাকে বলেছেন বিয়ের পর আজ প্রথম আপনি বাপের বাড়ী যাচ্ছেন কোনো কিছুর কমতি যেনো না থাকে তাই।
ইতি- ওনার আসল রুপটা কি আমি কোনো ভাবেই বুঝে উঠতে পারছি না। ওনি আমাকে পছন্দ না করেই এতো কিছু করছেন। কিন্তু কেনো?? মনে মনে ভাবলাম।
ড্রাইভার- মেডাম এখানেত পার্কিং এর জায়গা নেই আমি আশে পাশেই আছি আপনি যখন বাসায় যাবেন আমাকে ফোন দিলেই হবে আমি চলে আসবো।
ইতি- না আপনি চলে যান আমি আজ যাবো না।
ড্রাইভার- কিন্তু Sir যে বলল আপনাকে নিয়ে যেতে।
ইতি- আপনার Sir কে যা বলার আমি বলে দিবো।
বাবার বাসায়-
ইতি- আমাকে এত কিছু সহ দেখে অবাক হয়ে গেলেন সবাই। প্রতিবেশীরাও অনেকে এসেছে আমাকে দেখতে। বাবা-মার কাছে ক্ষমা চাইমাল তাদের কষ্ট দেয়ার জন্য। এমন কষ্ট দেয়ার জন্য যা আমি নিজেও জানি না কিন্তু একথা তাদের বলা যাবে না। জানতে পারলে আমার জন্য চিন্তা করবে আর সবে বাবার অপারেশন হয়েছে। আমাকে খুশি দেখে ওনারাও অনেক খুশি হলেন আমাকে মাফও করে দিলেন।
বাবা- তোর সুখেই আমরা সুখি রে মা।
ইতি- বাবা তুমি আমার জন্য দোয়া করো।
মা- তা তুই একা এলি কেনো??? জামাই বাবাকে সাথে করে নিয়ে আসতি।
ইতি- আসলে অফিসে অনেক কাজ তাই ওনি আসতে পারেন নি। অন্য সময় নিয়ে আসবো।
মা- আমরা তো ভেবে ছিলাম জামাই বাবাজি ও আসবে তাই তার জন্য টুকটাক আয়োজনও করেছিলাম।
ইতি- আমি মুখ কালো করে বললাম ও এখন জামাই ই সব মেয়ে পর হয়ে গেলো বুঝি।
বাবা- নারে মা তুই কি কখনও পর হতে পারিস।
ইতি- বাবা আমায় বুকে জরিয়ে নিলেন।
রাত ১০টা বেজে গেছে। আমি আরাম করে টিভি দেখছি ছোট ভাইয়ের সাথে।
মা- তুই যে আজ থাকছিস জামাই জানে তো? ওনি আপত্তি করবে না তো??
ইতি- না না আপত্তি করবে কেনো??
মা- তাই ভালো।
ইতি- শয়তানটার নাম নিতেই হাজির মানে সে নিজে না তার ফোন চলে এলো মনে মনে বলছিলাম না হলে যে মা শুনে ফেলবে। আমি বারান্দায় চলে এলাম।
হ্যালো....
রোদ- Already ১০টা বাজে
ইতি- আমার বাসায় ঘড়ি আছে চমি জানি???
রোদ- তোমার বাসায় মানে?? আমিও তো বাসায় তুমি কোথায়???
ইতি- আমি আপনার বাসা না আমার বাসার কথা বলছি হুহ...
রোদ- বের হচ্ছো কখন???
ইতি- জি না বের হচ্ছি না।
রোদ- মানে???
ইতি- মানে আমি আসছি না।
রোদ- দেখো ভালো হবে না কিন্তু???
ইতি- তাই?? কি করবেন???
রোদ- ওহ.... আমাকে Challenge করা হচ্ছে???
ইতি- জি পারলে কিছু করে দেখান।
রোদ- Ok Challenge Accepted Mrs Rod আজকের রাত আমি আপনার সাথেই কাটাবো।
যেই বলা সেই কাজ। রাত ১১:৩০ বাজে ইতিদের বাসার কনিংবেল বেজে উঠলো।
ইতি- মা দাড়াও আমি দেখছি। গিয়ে দরজা খুলেই হা করে রইলাম আপনিইইইইইইই......
চলবে...
Part-4
Writer : Eti Chowdhury
রোদ- আমাকে Challenge করার আগে ভাবা উচিত ছিলো My Dear Wife

ইতি- আসলে একটা খাটাশ মনে মনে বললাম।
মা- কিরে মা কে এসেছে???
রোদ- আসসালামু আলাইইকুম ওকে ধাক্কা দিয়ে ভিতে চলে গেলাম। শশুড় শাশুড়িকে সালাম করলাম।
বাবা- বাবা তুমি এতো রাতে কোন সমস্যা হয়নি তো???
রোদ- না বাবা আসলে ইতি বারবার ফোন দিচ্ছিলো ওর নাকি ভালো লাগছে না তাই আর কি........ বলেই ওকে একটা চোখ মারলাম

ইতি- 
ছিঃ কি বড় মিথ্যে বাদী নিজে বাঁচার জন্য আমাকে ফাসাচ্ছে। ছিঃ আমি বাবা মাকে মুখ দেখাবো কিভাবে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। মনে মনে বলছি আর বড় বড় চোখ করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।


মা- কিরে তুই কি ভাবছি দাড়িয়ে দাড়িয়ে। যা জামাই বাবা কে ঘরে নিয়ে যা ফ্রেস হতে দে আমি খাবার রেডি করে তোদের ডাকছি।
ইতি- কিন্তু ওনি তো আমাকে নিতে এসেছে।
মা- একি কথা না বাবা আজ কিন্তু তোমাদের ছাড়ছি না।
বাবা- হ্যা আমিও একমত। এতো রাতে আর যেতে দিচ্ছি না।
রোদ- আপনারা যা বলেন তাই...... বলেই আবার ওকে চোখ মারলাম। বাবা আমি ফ্রেস হয়ে এসে আপনার সাথে কথা বলছি।
ইতি- ইচ্ছা না থাকা সত্তেও ওনাকে রুমে নিয়ে গেলাম।
রোদ- রুমে ডুকতেই ও আগে যাচ্ছিলো আমি পিছন থেকে ওকে টান দিয়ে আমার কাছে নিয়ে এলাম একেবারে।
ইতি- 
একি???? ওনি হঠ্যাৎ আমাকে জরিয়ে ধরাতে আমার আত্মা পর্যন্ত কেপে উঠে।


রোদ- ওর কানের কাছে মুখ নিলাম। ওর নিঃস্বাশ ভারী হয়ে আসছে।
ইতি- চোখ খিচে দাড়িয়ে রইলাম। আমি মনে হচ্ছে ঠান্ডায় শক্ত হয়ে যাচ্ছি।
রোদ- আর করবে আমায় Challenge???
ইতি- আমার ঘাট হয়েছে। ছাড়ুন আমায়। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বেরিয়ে এলাম। ওনি মানুষ না পাগল উফফ আমার সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে।আর নিতে পারছি না ওনাকে। ওকে ফাইন আমাকে হারানো এবার মজা দেখাবো। আসুন আগে।
রোদ- অনেক্ষণ বসে শশুড় আর শালার সাথে আড্ডা দিলাম। শাশুড়ি খাওয়ার জন্য ডাকলে অনেক ক্ষদা লেগেছে কিছু খাওয়া হয় নি তাই এক ডাকেই উঠে গেলাম।
ইতি- আমার পাশেই এসে বসে পরলো। উফফ অসহ্য.... আমাকে জ্বালানো মজা দেখাচ্ছি। খাও আগে।
রোদ- খাবার মুখে দিতেই চোখ বড় হয়ে গেলো। আর চিবাতে পাছি না এতো ঝাল।
মা- কি হলো বাবা খাবার মজা হয়নি??? খাচ্ছো না যে?
রোদ- না মা খাচ্ছি। অনেক মজা হয়েছে। আড় চোখে ওর দিকে তাকালাম ও মিটমিট করে হাসছে আর বুঝতে বাকি রইল না কাজটা ওর করা। মেয়েটা এমন কেনো। রাগ উঠে গেলো।
ইতি- হিহিহি... খাও বাচ্চু। আমাকে জ্বালানো মজা বুঝ এখন। ওনার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে কিন্তু ওনা খেয়েই যাচ্ছে থামছে না।
রোদ- খাওয়া সম্পূর্ণ শেষ করে উঠে রুমে চলে এলাম। ওহ মাগো কি ঝাল। মরে গেলামরে। কারো রুমে ডোকার শব্দ পেলাম। পিছনে ঘুড়েই দেখি ইতি ওর কাছে গিয়ে ওকে দরজার সাথে শক্ত করে চেপে ধরলাম। ওর ঠোঁট দুটো আমার ঠোঁট দুটো দিয়ে আকড়ে ধরলাম।
ইতি- হাত থেকে পায়েসের বাটিটা পরে গেলো। ওনার জন্য পায়েস নিয়ে এসেছিলাম ওনার ঝাল কমাতে কিন্তু আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই ওনি আমার ঠোঁট দুটো আকড়ে ধরল। অনেক চেষ্টা করছি নড়তে কিন্তু পারছি না, মুখ দিয়ে কেবল ঙ্গোগানির শব্দ বের হচ্ছে তাও ওনার মুখেই সীমাবদ্ধ।
রোদ- ঝাল না কমা পর্যন্ত ওর ঠোঁট দুটো ছাড়লাম না। অনেক্ষণ পর ছাড়লাম। ওর চোখ বেয়ে পানি চলে এলো।
ইতি- নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ওনাকে ধাক্কা দিলাম। আপনি কি মানুষ না পশু
। বাথরুমে চলে এলাম। অনেক্ষন কান্না করলাম বসে বসে।


রোদ- এই দরজা খুলো। আমার কথা শুনো ইতি
ইতি- ওনি ডাকলেন তাও দরজা খুললাম না। কিন্তু অনেক্ষন হলো ওনার কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছি না। বাথরুম থেকে বের হতে আমার চোখ চড়াগ গাছ। Sirrrrrrrrrrrrrrrrrr বলেই চিৎকার দিলাম। ওনি মাটিতে পরে আছেন। আমার চিৎকার শুনে বাবা, মা, ইমন চলে এলো। ওনার চেহারা লাল হয়ে গেছে।
বাবা- আমি যাই ডাক্তারের ব্যবস্থা করি।
ইতি- বাবা দাড়াও ওনার নিজেস্ব ডাক্তার আছে। ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে বললাম। গিয়ে ডাক্তারকে নিয়ে এলো।
ডাক্তার চেকআপ করলেন-
DOC- ভয় পাওয়া লাগবে না আমি এনটি ডট দিয়ে দিয়েছি। ঘুমাক ঠিক হয়ে যাবে।
বাবা- কিন্তু হঠ্যা করে এমন হলো কেনো???
DOC- ঝালের এলার্জি।
বাবা- মানে।
DOC- জি, রোদ এর ছোট বেলা থেকেই ঝালে এলার্জি। ঝাল সে একদম সহ্য করতে পারে না। প্রথমে লাল হয়ে ফুলে যায় এর মধ্যে ঝাল না কমলে জ্ঞান জারিয়ে ফেলে। আজও তাই হয়েছে। ভয় পেয়েন না একটু পরেই ঠিক হয়ে যাবে।
ইতি- ডাক্তার চলে যাবার পর বাবা মায় আমায় অনেক কথা শুনালেন। মা দেখেছিলো আমায় ঝাল দিতে তখন বাচার জন্য মিথ্যে বলেছিলাম যে ওনার ঝাল অনেক পছন্দ ঝাল না হলে ওনি খায়ই না। কিন্তু এখন আমারও অপরাধবোধ কাজ করছে ওনাকে মজা দেখাতে গিয়ে কি করে বসলাম। যদি ওনার কিছু হয়ে যেতো তখন কি হতো। অনেক্ষণ পর ওনার জ্ঞান ফিরলো।
বাবা- এখন কেমন লাগছে???
রোদ- জি বাবা এখন ঠিক আছি। আপনার চিন্তা করবেন না। আপনারা গিয়ে শুয়ে পরেন।
মা- ওনার দিকে খেয়াল রাখিস।
ইতি- মা আমাকে একটা খিচি দিয়ে চলে গেলেন। হুহ.... ওনার সামনে বলার কি দরকার ছিলো।
রোদ- কি কেমন লাগল??? মিটমিট করে হাসছি
ইতি- হুহ.....মিট মিট করে হাসছে আমার জান বের হয়ে যাচ্ছিলো আর ওনার হাসি পাচ্ছে। হুহ....আপনি আসলেই একটা খাটাশ। বলেই খাটের অন্য পাশে ফিরে শুয়ে পরলাম আর তেমন কোনো কথা হলে না।
সকালে-
রোদ- সকালে চোখ খুলতেই দেখি পাগলীটা লুতুপুতু হয়ে ঘুমাচ্ছে। এলোচুল আর হালকা রোদ মুখের উপরে অপরূপ লাগছে মন চায় এভাবেই আজীবন চেয়ে চেয়ে দেখি। ও কিছুটা নড়ে উঠলো। না ও দেখার আগেই আমার বের হতে হবে আজ যপ মেডামের জন্য Surprise আছে।
বলেই একটা শয়তানি হাসি দিলাম।
চলবে....#বস_বর
৫ পর্ব-
Writer : Eti Chowdhury
রোদ ইতির একদম কাছে চলে এলো। ইতির নিঃশ্বাস ঘাঢ় হয়ে যাচ্ছে। বুকের ভিতর তোলপাড় করছে। মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি দিয়ে বুকের মাঝে দিপ দিপ করে বারি দিচ্ছে। ইতি মাথা নিচু করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে। রোদ তার হাত ইতির থুতুনিতে রেখে ইতির মুখ উপরে তুলল। এখনও ইতি চোখ বন্ধ করে আছে। রোদ ইতির কপালে হাত দিয়ে টিপটা ঠিক করে দিলো।
।
।
রোদ- এখন ঠিক আছে।
।
ইতি বিস্ময় নিয়ে চোখ খুলে তাকালো রোদের দিকে।
।
রোদ- তোমার টিপটা সরে গিয়েছিলো। এখন ঠিক আছে।
।
।
ইতির এতো লজ্জা লাগছিলো। মনে মনে কত কি ভেয়ে নিয়ে ছিলো আর হলো কি। লজ্জায় রোদের বুকে দুহাত দিয়ে ধাক্কা দিলো।
।
ইতি- লজ্জায় ওনাকে ধাক্কা দিয়ে বললাম ইসসস আপনি না। বলেই দৌড়ে চলে এলাম।
।
ফ্রেস হয়ে নিলো দুজনেই।
।
রোদ- খুব ক্ষুদা পেয়েছে।।
।
ইতি- আসেন খাবার দিচ্ছি।
।
।
খেতে বসে।
।
রোদ- তুমি কিভাবে বুঝলে আজ বৃষ্টি হবে।
।
ইতি- কেনো???
।
রোদ- এই যে খিচুড় রান্না করলে।
।
ইতি- না খিচুড়ি তো আপনা.....থেমে গেলাম বললাম না।
।
রোদ- কি হলো???
।
ইতি- কিছু না। এমনি খেতে ইচ্ছে হলো তাই রান্না করলাম। কেনো ভালো হয় নি??
।
রোদ- নাহ ভালো হয়েছে। একটা হাসি দিয়ে খেতে লাগলাম। মনে মনে ভাবছি শুধু কি খেতে মন চাইলো তাই রান্না করেছো নাকি আমি পছন্দ করি বলে।
।
ইতি- মনে মনে বলছি আপনি খিচুড়ি ভালোবাসেন বলেই রান্না করেছি।
।
আজ রোদ অনেক দিন পর তৃপ্তি করে খেলো। খাওয়া শেষ হতেই রোদের মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেলো।
।
রোদ- আহ....কি ঝাল।
।
ইতি- ঝাল লেগেছে বড় বড় চোখ করে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- হুম অনেক ঝাল একটু মিষ্টি হবে?? মুচকি হাসি দিলাম।
।
ইতি- ওনার মুচকি হাসি দেখে বুঝে গেলাম মজা করছেন। দূর আপনি। লজ্জা পেয়ে গেলাম। চলে যেতে নিলাম ওনি পিছন থেকে হাত ধরলেন।
।
রোদ- লজ্জা পেয়ে পালাচ্ছিলো হাত ধরে ফেললাম। একটানে কাছে নিয়ে এলাম। ওর পিঠটা আমার বুকে এসে ঠেকলো। কাধ থেকে ওর ভিজা চুল গুলো সরিয়ে দিলাম। মুখটা কাধের কাছে নিলাম।
।
ইতি- ওনার নিঃশ্বাস এসে আমার কাধে লাগছে। উফফ,,,,,সহ্য হচ্ছে না। আবার বুকের ভিতর দুরপুকানি শুরু হয়ে গেলো।
।
রোদ- মিষ্টি খাওয়াবে না।
।
ইতি- মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না তাও বললাম,,, হাত না ছাড়লে মিষ্টি আনবো কিভাবে।
।
রোদ- ওই মিষ্টি খাবো না।
।
ইতি- তাহলে???
।
রোদ- তোমার মিষ্টি খাবো।
।
ইতি- ইসসস,,,,,আপনি না বলেই নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে এলাম।
।
।
এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে ওরা একে অপরের সাথে।
।
সারাদিন ভালোই কাটলো। অনেক গল্প করলো। একে অপরকে অনেকটা জানো। ইতি ভাবছে মানুষটাকে যতটাও খারাপ ভেবেছে আসলে ওতো তাও খারাপ না। নারিকেলের মতো বাহিরটা শক্ত ডাবের মত ভিতরটা একদম নরম।
।
রোদ ভাবছে মেয়েটা কি নিঃষ্পাপ একদম বাচ্চাদের মতো। আরো বেশি প্রেমে পরে গেলো সে তার বউটার।
।
সারাদিন অনেক হইচই করে দুজনেই ক্লান্ত কাল অফিস যেতে হবে তাই সন্ধ্যার পর বাসার জন্য রওনা দিলাম। বাসায় আসতে আসতে রাত প্রায় ১০টা দুজন ফ্রেস হয়ে নিলো। ইতি রুম থেকে বের হতে নেয় রোদ আটকায়।
।
রোদ- কোথায় যাও???
।
ইতি- ডিনার করা লাগবে না??? রান্না করে আসি??
।
রোদ- নাহ,,,,,,এখন কষ্ট করে রান্না করা লাগবে না। আমি খাবো না।
।
ইতি- কেনো??? আমার কষ্ট হবে না।
।
রোদ- বললাম তো লাগবে না।
।
ইতি- আচ্ছা তাহলে কফি করে আনি।
।
রোদ- সেটা করতে পারো। আমি বারান্দায় বসছি।
।
ইতি কফি নিয়ে ডুকতেই গিটারের আওয়াজ পেলো। গিটারের সুরে ইতির ভালো মনটা আরও কয়েক হাজার গুন বেশি ভালো হয়ে গেলো। কফি নিয়ে বারান্দায় এসে দেখে রোদ ইতির জন্য রকিং চেয়ারটা রেখে সোফায় বসে আছে গিরার হাতে। ইতি কফি রেখে বসতে বসতেই রোদ গান ধরলো।
।
।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান, মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান, মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়, জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়,
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
হো, আমি তোমার ইচ্ছে ঘুড়ি যেমন উড়াও তেমন উড়ি, স্বপ্নগুলো মুঠোয় নিয়ে কেমন লুকোচুরি।
।
বন্দিকরে রাখব তোমায় ভালোবাসার জেলখানায় বন্দিকরে রাখব তোমায় ভালোবাসার জেলখানায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়,
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়, জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
।
।
গান শেষ করেই ইতির দিকে তাকায়। ইতি একটা প্রশান্তির হাসি দেয় দেখে রোদের মনটা জুরিয়ে যায়।
।
।
ঘুমানোর সময়।
।
ইতি- একটা কথা বলি???
।
রোদ- হুম,,,,বলো।।
।
ইতি- আমি না হয় অন্য রুমে ঘুমাই।
।
রোদ- অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম ইতির দিকে। হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম। একদম কাছে। ওর কপালে কপালে লাগিয়ে চোখে চোখ রেখে বললাম। থাকো না আমার পাশে।
।
ইতি- ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওনি আমার এতোটা কাছে। ওনার মাঝে এক অস্থিরতা দেখলাম। কিছু হারিয়ে ফেলার ভয় দেখলাম ওনার চোখে। বললাম থাকবো। ওনি আমার কপালে একটা চুমু খেয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলেন মাঝে অনেকটা দূরত্ব রেখে।
।
রোদ- ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে শুয়ে পরলাম। এর বেশি যে কিছুই চাইতে পারবো না। পাগলীটাকে কষ্ট দিতে চাই না যে।
।
ইতি- আমিও শুয়ে পরলাম। ঘুম আসছে না। ওনি কি ঘুয়েছেন। ছটফট লাগছে। মন চাইছে ওনার কাছে যাই। লজ্জাও করছে। কি ভাবেন। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম।
।
।
সকালে।
।
ইতি- আজ ওনার আগে আমি উঠেছি। ঘুমের মধ্যে কাছে এসে একটা হাত আমার পেটে উপর দিয়ে রেখেছেন। আলতো করে ওনার হাতটা সরিয়ে দিলাম। ওনি আরো শক্ত করে ধরলেন। ছাড়িয়ে নিলাম
উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিলাম, নাস্তাও রেডি করে ফেললাম। ওনাকে ডাকতে এসে দেখি ওনি ঘুম থেকে উঠে বসে বসে কি যেনো ভাবছেন আর মুচকি মুচকি হাসছে। আমাকে দেখে থেমে গেলেন। নাস্তা করে অফিসে চলে এলাম।
।
।
অফিসে।।
।
রাফসান- কি মেডাম আজ খুব হাসি খুশি লাগছে।
।
ইতি- কোই না তো??
।
রাফসান- হুম বুঝতে পেরেছি।
।
ইতি- কি??
।
রাফসান- কিছু তো হয়েছে।
।
ইতি- কিছুই হয় নি।
।
রাফসান- হ্যা আসলেই কিছু হয় নি তাই তো স্যার এ নিয়ে পাঁচ বার কেবিন থেকে বেরিয়ে এলেন তোমাকে দেখতে কিছু হলে তো.....
।
ইতি- অবাক হয়ে হা করে রাফসানের দিকে তাকালাম।
।
রাফসান- আমাকে না দেখে মাথাটা ঘুরি পিছনে তাকাও বেচারে কে একটু দর্শন দাও। এখন না দেখলে হয়ত পাগল টাগলই হয়ে যাবে।
।
ইতি- পিছনে ঘুরতেই দেখি স্যার দাড়িয়ে আছেন। সত্যি সত্যি আমাকে দেখছেন। ইসস.....ওনার চোখে চোখ পরতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম ওনি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলেন।
।
রাফসান- কবে বলছো???
।
ইতি- কি???
।
রাফসান- ওনাকে মনের কথা???
।
ইতি- উহু....বলে মাথা নাড়ালাম।
।
রাফসান- কেনো???
।
ইতি- ওনাকে বলতে হবে।
।
রাফসান- যদি না বলে???
।
ইতি- আরে বলবে বলবে না বলে যাবে কোই আমার কাছেই আসতে হবে।
।
রাফসান- ইতি Don't be funny Seriously বলছি যদি কোন কারণে ওনি না বলে তাহলে কি হবে??
।
ইতি- হারিয়ে যাবো।
।
রাফসান- মানে???
।
ইতি- ওনাকে কথা দিয়েছি কাজটা হলেই চলে যাব অনেক দূরে। তাই এর মধ্যে ওনি না বললে চলে যাবো। বলেই চলে এলাম রাফসানকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না।
।
রিমি- আপনার কি হলো??? আপনি এমন করছেন কেনো??
।
রাফসান- তো কি করবো??? রাগে বললাম। দুজন দুজন কে ভালোবাসা সাফ দেখা যাচ্ছে কিন্তু একে অপরের সুখের কথা ভেবে কেউ কাউকে কিছুই বলছে না।
।
রিমি- ব্যাভা চেকা খেয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
।
রাফসান- এই মেয়ে সবাই কি আমার মতো যে বলে দিবে মনের কথা।
।
রিমি- হাহ.....আপনিও কি কম নাকি??? স্যারের জন্য বলেছেন। নিজে থেকে বলেছেন নাকি হুহ.....ভেংচি দিয়ে চলে এলাম।
।
রাফসান- ওমা এখন দেখিও এ ও আমায় খেচি দিয়ে চলে গেলো।
।
রাফসান আর রিমি অনেক চিন্তা করল কি করবে। শেষে ভেবে বের করল আসলে স্যারের মনে কি চলছে তা জানা লাগবে। কিন্তু কে যাবে??? রাফসানের সাথে ইতির সর্ম্পক ভালো তা স্যার জানে। তাই সেভাবে কথা বলতে পারবে না। রাফসান মুচকি হাসি দিয়ে রিমিরর দিকে তাকিয়ে রইল।
।
রিমি- কি কি হ্যা কি দেখছেন???
।
রাফসান- হাসিটা আরেকটু বেড়ে গেলো।
।
রিমি- Impossible আমি পারব না। অসম্ভব। স্যারকে দেখলেই আমার হাত পা শক্ত হয়ে যায়।
।
রাফসান- আরে বেবি শুন তুমি পারবা। ভয়ের কি আছে??? আমি আছি তো।
।
রিমি- অসহায়ের মত ওনার দিকে তাকালাম। ওনি আমাকে ঠেলে ঠেলে স্যারের কেবিনে পাঠিয়ে দিলেন।
।
দোয়া দূরুত পরে ভিতরে চলে গেলাম।
।
রিমি- স্যার আসবো??
।
রোদ- এসো।
।
রিমি- স্যার ফাইল গুলো দেখে দিতে হবে।
।
রোদ- বসো দেখছি।
।
রিমি- মনে মনে ভাবছি অনেক গুলো ফাইল এনেছি যেনো সময় পাই।
।
রোদ- কিছু বলবে রিমি??? হয়ত কিছু বলতে চাও।
।
রিমি- না মানে আসলে স্যার.... ঢোক গিললাম।
।
রোদ- বলো কি বলতে চাও।
।
রিমি- স্যার আসলে আপনার পারসোনাল ব্যাপারে বলার রাইট আমার নেই। তাও না বলে পারছি না। আসলে। আবার ঢোক গিললাম। আসলে স্যার ইতি মেম কি সত্যি চলে যাবে??? বলেই অসহায়ের দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলাম স্যারের দিকে।
।
রোদ- একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে একগ্লাস পানি রিমিকে দিয়ে বললাম পানিটা খাও। মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে এক টানে পানিটা খেয়ে নিলো। জানো রিমি ইতি অনেক ভালো একটা মেয়ে। যার জীবনে যাবে সে অনেক সুখী হবে। কিন্তু কি জানো আমার কপালে হয়ত সে সুখটা নেই।
।
রিমি- জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে স্যারের দিকে তাকালাম।
।
রোদ- আমি জানি তুমি ইতিকে অনেক ভালোবাসো তাই সব ভয় ডর বাদ দিয়ে আমাকে প্রশ্নটা করছো। সত্যি কি জানো আমি মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি বললে হয়ত ও আমাকে ছেড়ে যাবে না জানি। কিন্তু আমি ওকে আর কষ্ট দিতে চাই না। অনেক কষ্ট দিয়েছি আর না। ওর সুখের কারণ হতে না পারি অন্তত আর ওর কষ্টের কারণ হবো না। তাই ওর সুখেই আমি সুখি।
।
রিমি- কিন্তু স্যার....
।
রোদ- ইটস ওকে রিমি আর স্বার্থপর হতে পারছি না।
।
রিমি- স্যার আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলেন না। মন চাইছিলো সব বলে দেই। বের হয়ে চলে এলাম। মুখ ভার করে রাফসানকে সব বললাম। রাফসানও মুখ ভার করে বসে রইল।
।
রাফসান আর রিমি মুখ ভার করে বসে রইল।
।
রিমি- এখন কি হবে???
।
রাফসান- হুম কিছু একটা তো করতেই হবে।
।
।
দু দিন পর অফিসে নতুন লোক নেয়া হবে তাই ইন্টারভিউ চলছে।
।
ইতি আর রাফসান মিলে ইন্টারভিউ নিচ্ছে। রোদের বিশেষ কাজ থাকায় সে থাকতে পারেনি। তাছাড়া ইতি আর রাফসানের উপর তার বিশ্বাস আছে। তারা বেস্ট টাকেই বেছে নিবে।
।
সকাল থেকে অনেকগুলো ইন্টারভিউ নেয়া হলো। কিন্তু কোম্পানির জন্য যোগ্য কাউকেই তাদের পছন্দ হচ্ছে না।
।
আদি- May I come in???
।
ইতি- Yes, come in. Seat Down.
।
আদি- Thank You.
।
ইতি- Your CV is quiet impressive.
।
ওরা একে একে প্রশ্ন করল।
।
রাফসান- আপনি একটু বাহিরে অপেক্ষা করেন আমরা আপনাকে একটুপর ডাকছি।
।
ওরা দুজনই পজেটিভ।
।
ইতি- ওকে তাহলে এটাই ফাইনাল।
।
রাফসান- ওকে।
।
আদিকে আবার ভিতরে আসতে বলা হলো।
।
ইতি- Welcome to the Company.
।
আদি- Thank you Ma'am.
।
রাফসান- She is Eti Chowdhury. Member of Company Board From Now on You will assist her.
।
ইতি হেন্ডসেক করল হাসি দিয়ে।
।
আদি- Thank You Ma'am.
।
ইতি- আপনি কাল থেকে জয়েন করছেন।
।
আদি সট্রংলি ইতিকে এসিস্ট করা শুরু করল। কাজের প্রতি ভালোই ডেডিকেটেড ছেলেটা।
।
দুদিন পর Business Trip শেষ করে রোদ বাসায় না গিয়ে সোজা অফিসে চলে আসে।
।
ইতি মিটিংএ ব্যস্ত থাকায় এখনো জানে না যে রোদ এসেছে।
।
মিটিংএ শেষ করে বের হতেই রিমি এগিয়ে এলো।
।
রিমি- MD Sir এসেছেন।
।
ইতি- ইতি প্রশান্তির একটা হাসি দিয়ে চোখের পলক ফেলে ধন্যবাদ জানলো রিমিকে। ইতি সোজা ক্যান্টিনে চলে গেলো। নিজের হাতে কফি বানালো। এতো দিনে রোদের কফির টেস্টটা ভালোই রপ্ত করতে পেরেছে ইতি। আর ইদানিং ইতির হাতের কফি ছাড়া রোদও খায় না। ইতি কফি নিয়ে রোদের কেবিনের দিকে হাটা দিলো। কেবিনের কাছাকাছি আসতেই ইতি টের পেলো আদিও ওর পিছু পিছু আসছে। ইতি থেমে গিয়ে ঘুরে দাড়ালো।
।
ইতি- কিছু বলবে???
।
আদি- No Ma'am
।
ইতি- তাহলে??
।
আদি- No, Actually
।
ইতি- তুমি গিয়ে ফাইল গুলো Complete করো আমি আসছি।
।
আদি- ওকে।।
।
।
ইতি হাসি মুখে রোদের কেবিনে ডুকে গেলো। কতক্ষণে রোদকে দেখবে আর তর সইছিলো না ইতির তাই নক না করেই ভিতরে চলে গেলো।
।
ইতি- হালকা হাসি মুখে বলল কফি।
।
রোদ পিছনে ফিরে তাকালো। ইতিকে দেখে রোদের চোখ, মুখ উজ্জল হয়ে গেলো সেও হেসে দিলো। ইতি কফিটা টেবিলে রেখে দিলো। রোদ ইতির দিকে এগোতে লাগলো। রোদ এক পা এগোচ্ছে ইতি এক পা পিছাচ্ছে।
।
রোদ- Thank you
।
ইতি- How was the trip???
।
রোদ- Successful
।
ইতি- Congratulations
।
রোদ- Thank you
।
কথা বলতে বলতে এসে ইতির পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলো। রোদ ইতির একদম সামনে এসে দাড়িয়ে গেলো। একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ তার দু হাত ইতির দুপাশে দিয়ে ইতিকে আটকে দাড়িয়ে রইল। অপলক তাকিয়ে রয়েছে ইতির দিকে। রোদের গভীর চোখ দুটোতে ইতির হারিয়ে যেতে মন চাইছে। রোদ মন ভরে ইতিকে দেখছে। মুখটা ইতির আরো কাছে নিতেই ইতি চোখ বন্ধ করে নিলো। রোদ আলতো করে ইতির কপালে একটা চুমু দিয়ে দিলো। ইতি লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। এমন সময় রিমি দেখে ফেলল।
।
।
রিমি- Sorry আমি কিছু দেখি বলেই রিমি পিছনে ফিরে গেলো।
।
ইতি- ইসস,,,,লজ্জায় ইতি বের হয়ে গেলো।
।
রিমি গিয়ে Already রাফসানকে সব বলে দিয়েছে।
।
রাফসান- তাই বুঝি তলে তলে এতো কিছু চলছে???
।
ইতি রাগি রাগি চোখ করে রিমির দিকে তাকিয়ে রইল।
।
রাফসান- হুহ....আমাদের বলে কিছুই বলবে না আর নিজেরা নিজেরা ঠিকি
।
ইতি- wait wait wait.....তোমরা যা ভাবছো আসলে তেমন কিছুই না। না আমি ওনাকে বলেছি না ওনি আমাকে বলেছেন।
।
রাফসান- তাহলে.....
।
ইতি- এটা সত্যি যে আমি ওনার স্ত্রী আর আমার ওপর ওনার অধিকার আছেন। ওনাকে পাবো কি না জানি না তাই যেটুকু পাই তা হারাতে চাই না। আর পাগলটা যে আমাকে ভালোবাসে তা তো আমি জানিই শুধু তাকে দিয়ে বলানোর অপেক্ষায় আছি। বলতে তো হবেই By hook or by cook
।
রাফসান- তোমরা দুজনই পাগল যত্তসব
।
রাফসান রাগ করে চলে গেলো।
।
রোদ সারাদিনে খেয়াল করল। একটা ছেলে সারাক্ষণ ইতির পাশে পাশে থাকছে। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য কাউকে কিছু জিঙ্গেস করা হয় নি।
।
বাসায় এসেও রোদ কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ইতির সাথে সেভাবে কথা হয় নি।
।
পরের দিন অফিসে।
।
সকাল থেকে ইতির মনটা খারাপ। সুন্দর মুখটায় কালো মেঘের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। কিন্তু কেউ বুঝতেই পারছে না। সকাল থেকে এক কাপ কফি হাতে নিয়ে বসে আছে কিন্তু এক চুমুক কফিও সে খায়নি। ইতির মন খারাপ দেখে রোদ অস্থির হয়ে যাচ্ছে ঠিকি কিন্তু তাও কিছু বলছে না। কারণ ইতির উপর তো তার অধিকার নেই। কিন্তু রাফসান আর থাকতে না পেরে ইতিকে জিঙ্গেস করেই ফেলে।
।
রাফসান- সমস্যা কি???
।
ইতি ভাবনায় বিভর। রাফসানকে সে দেখেই নি। রাফসান টেবিলে একটা বারি দেয়।
।
রাফসান- ইতি বলে চিৎকার দেয়।
।
ইতি - কেঁপে উঠে। হ্যা কে কি??
।
রাফসান- সমস্যা কি তোমার??? কি হয়েছে???
।
ইতি- কিছু না রাফসান। আমি ঠিক আছি।
।
এমন সময় আদি চলে আসে। নক না করেই চলে আসে।
।
আদি- এই পেপারগুলো....
।
ইতি- কি ব্যাপার মেনার ভুলে গেছো নাকি??? I am your boss. নক না করে কেনো এলে??? আমি কি ডেকেছি তোমাকে??? অনেকটা চিৎকার করেই বলল ইতি কথা গুলো।
।
রাফসান- আদি প্লিজ Now go
।
আদি- I am Sorry মন খারাপ করে চলে যায় ছেলেটা।
।
রাফসান ইতির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। ইতি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না। চোখ বেয়ে পানি পরতে থাকে মেয়েটার।
।
রাফনাস- কি হয়েছে???
।
ইতি চুপ করে রইল।
।
রাফসান- চোখের পানি মুছ। কি হয়েছে বলো।
।
ইতি তাও চুপ করে রইল।
।
রাফসান- দেখো এখন যদি তুমি আমাকে কিছু না বলো তাহলে কিন্তু আমি স্যারকে গিয়ে জিঙ্গেস করবো। রাফসান আর দাড়ালো না হাটা শুরু করলো।
।
ইতি- সময় শেষ হয়ে আসছে রাফসান
।


।
রাফসান দাড়িয়ে গেলো।
।
ইতি- আমি মনে হয় ওনাকে হারিয়েই ফেলবো।



।
রাফসান- কেনো বলছো এই কথা???
।
ইতি- আর মাত্র দেড় মাস বাকি এর পরে আমায় ওনাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে রাফসান। আমি পারবো না ওনাকে ছাড়া থাকতে। আমি পারবো না।
অনেক্ষণ কান্না করলাম।


।
রাফসান- তুমি কেনো বলছো না ওনাকে??
।
ইতি- না রাফসান তা হয় না ওনার ওপর বোঝা হতে চাই না। আর আমার ভালোবাসা ওনার ওপর চাপিয়ে দিতে চাই না। তাই ওনার জন্য হলেও ওনাকে ছেড়ে চলে যাবো।
।
রাফসান- কিন্তু ইতি...
।
ইতি- প্লিজ রাফসান আর না আমি আমার ডিসিশন চেন্জ করবো না। বলেই চলে এলাম।
।
নিচে নামতেই আদিকে দেখতে পেলাম। ওহেতুক ছেলেটাকে বোকলাম। সরি বলা দরকার ভেবেই ইতি আদির কাছে যায়।
।
ইতি- সরি
।
আদি অবাক হয়ে পাশে তাকায় দেখে ইতি। ইতিকে দেখেই হাসি দিয়ে দিলো।
।
ইতি- আসলে তখন আমার ওভাবে বলা উচিত হয়নি। Actually.....
।
আদি- ইটস কে। আমি কিছু মনে করিনি। কিন্তু...
।
ইতি- কিন্তু কি??
।
আদি- আপনার মন খারাপ কেনো???
।
ইতি- তোমাকে না কত বার বলেছি আমাকে তুমি করে বলতে।
।
আদি- ওকে ওকে। বলছি আগে বলো তোমার মন খারাপ কেনো???
।
ইতি- কিছু না
।
আদি- কিছু তো অবশ্যই কিন্তু বলতে না চাইলে জোর করছি না।
।
ইতি অনেক্ষণ বসে আদির সাথে গল্প করল। ছেলেটা অনেক সুন্দর করে কথা বলে। এত মজার মজার কথা বলল যে ইতি খিল খিল করে হেসে দিলো। আদির কথা শুনে যেনো ইতির হাসিই থামছে না। রোদ দেখছে। কিছু বলছে না।
।
আদি- এভাবে হাসলেই আপনাকে সরি তোমাকে ভালো লাগে।
।
রোদ- রিমি আমার কেবিনে একটু আসতো।
।
রিমি- আসব স্যার???
।
রোদ- হুম....ওই ছেলেটাকে দুদিন ধরে দেখছি। কে???
।
রিমি- ও তো আদি। ইতি মেম কে এসিস্ট করছে। পরশু যে ইন্টারভিউ হলো ওকেই সিলেক্ট করেছে ইতি মেম আর রাফসান স্যার।
।
রোদ- ওহ.....ওকে তুমি যাও।
।
আদির সাথে কথা বলেই ইতির মনটা কিছুটা ভালো হয়ে গেলো। মন খারাপের কথা ভুলেই গিয়েছিলো।
।
রোদ। বেরিয়ে এলো।
।
রোদ- কি ব্যাপার কাজ রেখে হাসা হাসি হচ্ছে খুব।
।
রোদকে দেখেই ইতির হাসি থেমে গেলো।
।
ইতি- না স্যার Actually আমরা Just
।
রোদ- দেখেছি। নতুম ক্লাইন্টের ফাইল টা কি রেডি???
।
ইতি- ওই ফাইলটা আদি কে দেয়া হয়েছে।
।
আদি- Almost done.
।
রোদ- Almost বলতে কিছু নেই হয়ত হয়েছে নয়ত হয় নি। আর ইতি মিটিংটা কাল সো ২ টোর মধ্যে ফাইলটা রেডি হয়ে যাওয়া চাই। আর মিটিংএ তুমিও থাকছো।
।
ইতি- ওকে স্যার আমি দেখছি।
।
বলেই রোদ চলে গেলো।
।
আদি- এই রাক্ষসটা কে???
।
ইতি- ভ্রু কুচকে আদির দিকে তাকালো। কি বললে???
।
আদি- রাক্ষসই তো
।
ইতি- He is the MD. বলেই চলে এলাম। আদি হা করে তাকিয়ে রইল।
।
আদি ইতির পিছু পিছু গেলো।
।
আদি- Seriously!!!! ওনি আমাদের MD.
।
ইতি- হুম....
।
আদি- বাট বান্দা হ্যান্ডসাম আছে।
।
ইতি মনে মনে হাসলো। দেখতে হবে না জামাইটা কার।
।
হাজার কাজের মাঝেও রোদের মন ইতির উপরই রয়ে গেছে। আদিটা যে বড্ড বেশি ইতির পিছু ঘুরছে।
।
অনেক্ষণ হলো ইতিকে দেখছে না রোদ। কাচের গ্লাসের এপাশে ওপাশে ওদের কেবিন। বার বার চোখ যাচ্ছে। নাহ মেয়েটা আসছে না গেলো কোই। রোদ আর অপেক্ষা করতে পারলো না। বেরিয়ে গেলো।
।
রোদ- রিমি ইতি কোথায়???
।
রিমি- মেম তো স্টোরে গেছেন।
।
রোদ- ওকে বলে চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে এলো। ইতি কি একা গেছেন???
।
রিমি- না স্যার মেমের সাথে আদিও গেছেন।
।
মনে মনে এটাই ভাবছিলো রোদ। কারণ অনেক্ষণ ধরে ইতির সাথে সাথে আদিকেও দেখা যাচ্ছিলো না। রোদ আর অপেক্ষা না করে স্টোরে চলে গেলো। স্টোরে গিয়ে রোদের চোখ কপালে উঠে গেলো। ইতি সেল্ফের উপর উঠেছে ফাইল নামানোর জন্য। আর আদি নিচে দাড়িয়ে কথা বলছে শুধু কথা না ইতিকে হাসাচ্ছে। দেখে রাগ উঠে গেলো রোদের। বেখেয়ালে পরে যেতে পারে মেয়েটা। যা ভাবল তাই। ইতি পরে যেতে নিলো দেখেই রোদ দৌড়ে এলো। আদিও এগিয়ে যাচ্ছিলো। রোদ আদিকে হাত দিয়ে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতেই আদি গিয়ে ছিটকে পরে। নিজেই ইতিকে ধরে ফেলল।
।
ইতি- আআআ বলে চিৎকার দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম। ভাবলাম এই বুঝি শেষ। কিন্তু না নিজেকে কারো কোলো অনুভব করলাম। চোখ খুলতেই দেখি আমি ওনার কোলো। রাগে ওনার চোখ লাল হয়ে এতো বড় বড় হয়ে গেছে।
।
রোদ- এই মেয়ে তুমি কি পাগল নাকি?? এতো উপরে কেনো উঠেছো??? মাথায় সমস্যা নাকি??? এখন যদি কিছু হয়ে যেতো। এখন আমি না থাকলে কি হতো???
।
ইতি- আমি মিট মিট করে হাসতে লাগলাম।
।
রোদ- আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে। 
আর এই ছেলে তুমি থাকতে ও কেনো উপরে উঠলো। আর এতো হাসা হাসির কি আছে??? এভাবে ডিসট্রেক করলে তো পরেই যাবে। যত্তসব Useless পিপল। বলেই রোদ বাহিরের দিকে হাটা শুরু করল।


।
ইতি- এ্যা কি করছেন???
।
রোদ- 
আবার কি হলো??


।
ইতি- কোথায় যাচ্ছেন???
।
রোদ- এখন কি কেবিনেও যেতে পারবো না???



।
ইতি- যান কিন্তু আমাকে তো নামান।
।
রোদ- ওহ....রোদ ভুলেই গিয়ে ছিলো যে ইতি ওর কোলে। ইতি হেসেই দিলো। রোদ রেগে বেরিয়ে গেলো। পিছনে ঘুরতেই দেখে আদি উঠে দাড়াচ্ছে।
।
ইতি- পরে গেলাম আমি আর উঠে দাড়াচ্ছো তুমি কেনো??
।
আদি- স্যার যে ধাক্কা দিলোরে বাবা।
।
ইতি- স্যার তোমাকে ধাক্কা দিয়েছে বাট কেনো???
।
আদি- কি জানি কোথা থেকে চলে এলো। তুমি পরে যাচ্ছো দেখে ধরতে নিলাম আর কোথা থেকে ওনি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেই দাড়িয়ে গেলেন। আসলেই রাক্ষস লোকটা।
।
ইতি- চোখ বড় করে তাকাল আদির দিকে কি বললা।
।
আদি- দিলাম দৌড় রাক্ষসকে রাক্ষস বলছি।
।
ইতি- পাগল একটা ছেলে হেসে দিলাম। ওনি আদিকে ধাক্কা দিয়ে আমায় ধরলেন। Wait wait তার মানে ওনি আগেই এসেছেন। সামনে আসেননি। আড়াল থেকে দেখছিলেন। আর যেই আমি পরে গেলাম আদি আমায় ধরবে ভেবে ওনি আদিকে ধাক্কা দিয়ে আমায় কোলে তুলে নিলেন। ইয়েস.....আমার #বস_বর আপনি ফেসে গেছেন। আপনাকে তো মনের কথা বলতেই হবে। তাও ব্যাপারটা আরেকটু সিওর হতে হচ্ছে। হুম ভাবতে হবে। পেয়েছি। বুদ্ধি ও হাজির এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই ইতি একটা হাসি দিলো।
।
সারাদিন রোদের রাগে রাগেই কাটলো। ইতি পরে যাওয়ার জন্য নয়। ওই আদির উপর। ছেলেটা এতো কেনো ইতির পিছে পিছে থাকে।
।
বিকেলে কাজ শেষ করেই ইতি রিমির কাছে হাজির।
।
রিমি- মেম এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো???
।
ইতি- ইতি আজব দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিমির দিকে। রিমি বুঝে গেছে রিমিকে দিয়ে কোন কাজ করাবে তাই এভাবে তাকিয়ে আছে। কারণ রাফসানও এটাই করে তাই রিমির বুঝতে অসুবিধা হলো না।
।
রিমি- অসহায়ের মতো ইতির দিকে তাকিয়ে রইল। কি করতে হবে মেম??
।
ইতি সব বলে দিলো কি করতে হবে। প্লেন অনুযায়ী সব ঠিক হলো।
।
রোদ করিডরে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলো। এমন সময় রিমি আর রাফসানের কথা শুনতে পেলো। সে দিকে কান দিলো না। কিন্তু রিমির কথা শুনে থমকে গেলো রোদ। কান থেকে ফোন নামিয়ে ফেলল।
।
রিমি- হিহিহিহিহি.....
।
রাফসান- হাসছো কেনো???
।
রিমি- আজ কিছু হতে যাচ্ছে।
।
রাফসান- কি???
।
রিমি- Guess করেন।
।
রাফসান- পারছিনা তুমি বলো আমার সহ্য হচ্ছে না।
।
রিমি- আজ আদি ইতি মেমের জন্য Special কিছু প্লেন করেছে।
।
রাফসান- Special মানে??? আদি আর ইতির মধ্যে কিছু চলছে নাকি???
।
রিমি- আদির সাইড থেকে তো ফুল ওন চলছে। এখন শুধু মেম কি ফিল করে তা জানার অপেক্ষা।
।
কথা গুলো শুনে রোদ যেনো আকাশ থেকে পরল। ইতির কেবিনের দিকে গেলো ইতি নেই। পিছনে ঘুরতেই দেখে ক্যান্টিন থেকে ইতি আর আদি হাসাহাসি করতে করতে আসছে। ভালো ভাবে খেয়াল করতেই দেখতে পেলো ইতি যে সাইড দিয়ে আসছে সামনে কিছু পরে আছে ইতি সেদিকে দেখছেই না। দেখবেই বা কিভাবে সে তো আদির কথা শুনে হাসায় ব্যস্ত। অসহ্য। যা ভাবা তাই আজ রোদ যা ভাবছে তাই হচ্ছে ইতির সাথে। ইতি আর দু কদম আগালেই পরে যাবে পা পিছলে পরে যাবে। কিন্তু না হয়ত পরবে না আদি ধরে ফেলবে। Impossible. রোদ আবার দৌড় লাগালো। ঠিকি দু কদম আগাতেই ইতির পা পিছলে গেলো। ইতি পরে যাওয়ার আগেই রোদ ওকে ধরে ফেলল। এক হাত ইতির কমড়ে আরেক হাত দিয়ে ইতির হাত ধরে ফেলে। ইতি হা করে রোদের দিকে তাকিয়ে রইল। রোদও তাকিয়ে রইল ইতির দিকে। দুজন দুজনকে দেখতে লাগলো। কেউ কারো দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছে না। ইতি মনে মনে মিট মিট করে হাসছে। পাগলটা তাই করল ইতি যা ভেবে ছিলো তাই হলো। কারণ রিমি আর রাফসান এর কথা গুলো ইতির সাজানো ছিলো। রোদ কি করে দেখার জন্য
।
।
রোদ ওভাবেই অনেক্ষণ আগলে রাখে ইতিকে।
।
ইতি - আসতে করে বললাম সবাই দেখছে।
।
রোদ- কিছুটা বিব্রতবোধ করলাম। সোজা হয়ে দাড়ালাম ইতিকে ছেড়ে দিলাম না পরে যায়নি। সোজা করে দাড় করিয়ে দিলাম। ছোট করে একটা কাশি দিলাম।
।
ইতি- আপনি ঠিক আছেন তো।
।
রোদ- আমার কি হবে। সবার এখানে কি যে যার জায়গাও যাও। ইতির দিকে তাকালাম। এই মেয়ে এই চোখ কোথায় থাকে হ্যাঁ দেখে হাটতে পারো না?? আর সমস্যা কি এতো হাসাহাসি কেনো করো??? আমি কি সব সময় ফ্রি থাকি নাকি তোমাকে পাহাড়া দিতে যে কখন তোমার বিপদ হবে আমি বাঁচাবো। বলেই চলে এলাম।
।
ইতি- ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আর মুচকি মুচকি হাসলাম
।
আদি- এটা কি হলো????
।
ইতি- ঘুরে দাড়ালাম কোনটা???
।
আদি- ওনি সেদে এসে বাঁচালো আবার কথা শুনিয়ে চলে গেলো??? আর ওনি না আসলেই বা কি হতো আমি ছিলাম না বুঝি। মিনমিন করে বললাম বার বার আমাদের মাঝে আসতেছে।
।
ইতি- কি বললা???
।
আদি- আরে কোই কিছু না তো।
।
ইতি- হুম বেটার।
।
অফিস টাই শেষ হয়ে গেলো। একে একে সবাই বেরিয়ে যাচ্ছে। ইতিও রেডি হচ্ছে বেরবে বলে। রোদ দেখছে বসে বসে। মেয়েগুলো পারেও আসার আগে রেডি হয় যাওয়ার সময় রেডি হয় এরা পারেও বটে। বাসায়ই তো যাবে এতো রেডি হবার কি আছে। ইতি বেরলেই রোদ বেরবে। এমন সময়ই দেখে আদি ইতির রুমে হাজির একসাথে বেরবে বলে। রোদ আর দেড়ি না করে ফোন দেয়।
।
রোদ- একটু আমার কেবিনে এসো তো??
।
ইতি- আমি তো বের হবো।
।
রোদ- আমি কেবল একটা ফাইল দিবো নিয়ে যাও সাথে করে।
।
ইতি- ওকে আসছি।
।
আদি- আবার কি হলো???
।
ইতি- কিছু না তুমি যাও লবিতে একটু Wait করো আমি আসছি।
।
আদি- দেড়ি করো না।
।
ইতি- দেড়ি হলে তুমি চলে যেয়ো



।
আদি- জ্বি না আজ যাচ্ছি না আপনাকে ছাড়া।
।
ইতি- আসবো স্যার??
।
রোদ- এসো। আদি তোমার কেবিনে কি করছে এখন বাসায় যায় নি।
।
ইতি- হা করে অবাক হয়ে একবার পিছনে ফিরে দেখলাম না মাঝের কর্টান টা তো দেয়া তাহলে ওনি দেখলো কিভাবে যে আদি এসেছে।
।
রোদ- কি হলো??? বললে না।
।
ইতি- ও বায়না ধরলো আজ একটু ওর সাথে বের হতে তাই আর কি।
।
রোদ- বসা থেকে উঠে দাড়ালাম। ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকালাম।
।
ইতি- ওমা ওনি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?? মনে মনে বললাম।।
।
রোদ- এক ঝটকায় ওর হাত দরে ফেললাম যাওয়াচ্ছি। বলেই ওকে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। আদি লবিতে wait করছে তাই ইচ্ছে করেই করিডরের লিফট দিয়ে ইতিকে নিয়ে নিচে নেমে এলাম।
।
ইতি- এসব এর মানে কি???
।
রোদ- তুমি এখন বাসায় যাবে। অন্য কোথাও যাবে না তাই।
।
ইতি- আমি অন্তত ওকে বলে আসতাম।
।
রোদ- সেটা এখনও বলতে পারো। ফোন করে বলে দাও।
।
ইতি- ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে হাতে নিলাম কেবল আবার ওনি চিৎকার করে উঠলো।
।
রোদ- wait wait ফোন করা লাগবে না Text করে দাও।
।
ইতি- রাগি চোখে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- দেখে লাভ নেই যা বলছি তাই করো। Now we are friends তাই তুমি আমার কথা শুনতে বাধ্য



।
ইতি- উফফ....ওনাকে নিয়ে আর পারলাম না। তাই কথা না বাড়ি ওনি যা বলল তাই করলাম মিথ্যে মিটিং এর বাহানা দিয়ে দিলাম। এখন খুশি তো
।
রোদ- 
একটা হাসি দিলাম আর কিছুই বললাম না।


।
ইতি- আপনি খুশি হন আর না হন আজ আমি অনেক খুশি আমি জানি আদির মনে আমার জন্য ফিলিংস আছে শুনেই আপনি আমাকে ওর সাথে যেতে দেননি। আমি জানি আপনি অন্য কারো সাথে আমাকে সহ্য করতে পারবেন না। প্লিজ একবার বলে দেন না আমাকে ভালোবাসেন আমি প্রমিজ করছি আপনার বলতে হবে না আমি সারাজীবন আপনার পাশে থাকবো প্লিজ বলেন না একবার মনে মনে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে ভাবছিলাম কথাগুলো।
।
রোদ- হ্যালো কোথায় হারিয়ে গেলে???
।
ইতি- হ্যাঁ কি
।
রোদ- কোথায় হারিয়ে গেলে???
।
ইতি- না কিছু না
।
রোদ- বাসায় এসে গেছি নামবে না।
।
ইতি- হুম....ইসস আমিও না পাগল একটা মনটা যে কোই থাকে।
।
দুজনে ফ্রে হয়ে নিলাম। ওনি ওনার ডেইলি রুটিন অনুযায়ী ওনার প্রেমিকাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওনার প্রেমিকা কেবলি ওনার কাজ আর ওবার লেপটপ। আমারো আজ কিছু কাজ ছিলো শেষ করে নিলাম। ওনার কাজ শেষ হলেই ডিনার করবো। তাই বারান্দায় গিয়ে বসলাম। প্রত্যেকদিন খাওয়ার পর বসি আজ আগেই বসলাম। ওনি কাজ করছেন।
।
রোদ- ফোনটা বেজে উঠলো। দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকাতেই দেখি প্রায় ১১টা বাজে। এতো রাতে কে?? ফোনটা হাতে নিতেই দেখি লইয়ার আঙ্কেলের ফোন।
।
রোদ- আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল।
।
আঙ্কেল- ওয়ালাইকুম সালাম।
।
রোদ- হঠ্যাৎ এতো রাতে আঙ্কেল সব ঠিক আছে তো??
।
আঙ্কেল- হ্যাঁ সারাদিন তুমি ব্যস্ত থাকো ভেবেই এসময় ফোন দিলাম। ব্যস্ত ছিলে না তো???
।
রোদ- না আঙ্কেল বলেন কি বলবেন।
।
আঙ্কেল- আর মাত্র এক মাস আছে রোদ। এর পরেই কিন্তু সাইনিং
।
রোদ- আর মাত্র এক মাস আছে কথাটা শুনে রোদের বুকের মাঝে মোচড় দিয়ে উঠল। মনে হচ্ছে ওর বুকের মাঝে কেউ ছুড়ি দিয়ে আঘাত দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে। হ্যাঁ এক মাস তার মানে ইতিও আর মাত্র একমাস আছে ওর সাথে। সাইনিং হয়ে গেলেই ইতি চলে যাবে। ভাবতেই রোদের দমবন্ধ হয়ে আসছে। পায়ের নিচের মাটি টা সরে যাচ্ছে।
।
আঙ্গেল- রোদ তুমি আছো??
।
রোদ- হ্যাঁ, জ্বি আঙ্গেল বলেন।
।
আঙ্গেল- Any Problem???
।
রোদ- না আঙ্গেল বলেন আপনি।
।
আঙ্গেল- Get Ready for the Day. আর ইতিকেও বলে দিও।
।
রোদ- জ্বি। ফোনটা রেখে বারান্দার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ইতি চলে যাবে ভাবতেই পারছি না। একটা বছর এভাবে চলে গেলো। আমি কিভাবে থাকবো। ইতি থাকতে পারবে তো??? ওকি সত্যি চলে যাবে??? প্লিজ যেও না আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে আর জ্বালাবো না I promise. অনেক ভালোবাসা দিবো তোমাকে। প্লিজ আমায় একটু তোমাকে ভালোবাসার সুযোগ দাও প্লিজ
।
ইতি- কি ব্যাপার এভাবে বসে কি ভাবছে ওনি। হলো কি। এই যে.... ওনার কোন সাড়া নেই। এই যে বলেই চিৎকার দিলাম।
।
রোদ- নাহ....বলেই থতমত খেয়ে গেলাম
।
ইতি- কি না???
।
রোদ- নাহ কিছু না বলো কি।
।
ইতি- ১১টার উপরে বাজে ডিনার করবেন না???
।
রোদ- হ্যাঁ তুমি যাও আমি আসছি।
।
ইতি- কি জানি কি হলো। এমন লাগছে কেনো?? উফফফ...এতো যে কি ভাবে লোকটা অসহ্য বলেও না। ডিনার সার্ভ করে বসে রইলাম আসছেনা কেনো?? উঠতে নিলাম ওনি এলেন। মুখটা অনেক মলিন লাগছে। এমন দেখাচ্ছে কেনো আমার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল কিছু হলো না তো কেম যেনো লাগছে। মনটা বড্ড কু ডাকছে।
।
রোদ- খেতে পারছি না। আমার গলা দিয়ে খাবার নামছে না। প্লেটের খাবার নেড়েই যাচ্ছি।
।
ইতি- ওনি সেই কখন থেকে খাবার নেড়েই যাচ্ছে কিন্তু এক লোকমাও মুখে দিচ্ছেন না। নাহ আর পারছি না জিঙ্গেস করে বসলাম কি হয়েছে আপনার???
।
রোদ- মাথা তুলে ওর দিকে তাকালাম। আমার হয়ে গেছে বলেই উঠে গেলাম। বারান্দায় এসে সিগারেট ধরালাম।
।
ইতি- অবাক হয়ে রইলাম। না খেয়েই চলে গেলেন। কি হলো ওন?
Part-6
Writer : Eti Chowdhury
সকালে-
রোদ- ঘুম ভাংতেই দেখি মেয়েটা আমার হাতে মাথাদিয়ে আমার সাথে লেগে শুয়ে আছে। আমার নিঃশ্বাসে ওর চুল গুলো উড়ে গিয়ে ওর চোখের উপর পরছে। এতো মায়া মনে হয় এভাবেই তাকিয়ে থাকি। ও হালকা নড়ে উঠলো। নিজেকে এভাবে দেখলে হয়ত লজ্জা পাবে। ওকে সরিয়ে উঠে গেলাম।
ইতি- ঘুম ভাংতেই দেখি ওনি already রেডি হয়ে গেছেন। আমিও ফ্রেস হয়ে বের হতেই দেখি ওনি কি যেনো খুজছেন।
ইতি- Sorry
রোদ- কেনো???
ইতি- আমার জন্য দেরি হয়ে গেলো।
রোদ- হালকা একটা হাসি দিলাম পাগল।
ইতি- কি বললেন??
রোদ- কিছু না, চলো যাই।
ইতি- ওনি ড্রাইভ করছেন আমার চোখ গুলো শুধু ওনার দিকে যাচ্ছে। ওনাকে ব্লু সুটটায় যে কি সুন্দর লাগছে।
রোদ- এভাবে তাকিয়ে থেকো না একসিডেন্ট হয়ে যাবে

ইতি- ইস....কি লজ্জা কি লজ্জা ওনি দেখে ফেলেছেন আমি ওনাকে দেখছি। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম। মনে মনে ভাবছি গাড়ি তো ওনি চালাচ্ছেন তাহলে একসিডেন্ট হবে কিভাবে?? তাহলে ওনিও আমাকে দেখছেন নাহলে বুঝল কিভাবে
.....আমি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছি।


রোদ- এমনি সব সময় চুল বেধে রাখে আজ কে বলল খুলে রাখতে। ওই খোলা চুল দেখে যে চোখ ফেরাতে পারছি না। মনে মনে ভাবছি।
ইতি- একটা কথা জিঙ্গেস করি??
রোদ- হুম
ইতি- আপনি জানলেন কিভাবে যে আপনার ফ্যামিলি আপনার Against এ প্লেন করছেন।
রোদ- চলো আগে বলছি।
গাড়ি লইয়ারের অফিসে চলে এলো।
লইয়ার- আরে রোদ যে?? কেমন আছো???
রোদ- জি Uncle ভালে আপনি কেমন আছেন???
লইয়ার- ভালো বাবা তা ওনি কি আমার মামনি নানি???
ইতি- লইয়ার Uncle আমাকে দেখিয়ে জিঙ্গেস করলেন আমি কে।
রোদ- জি Uncle। ও ইতি আপনার বউ মা।
ইতি- ওনি আমাকে ইশারা দিলেন লইয়ার Uncle কে সালাম করার জন্য তাই করলাম।
ল.Uncle- আরে একি করছো মামনি??
রোদ- থাক না Uncle বাবা-মা বেঁচে থাকলে তো ওনাদের দোয়াও নিতো আর আপনি তো আমার জন্য কোন অংশে কম নন।
ইতি- আমি ওনাকে যত দেখছি কেবল অবাকই হচ্ছি।
রোদ- ইতি তুমি জানতে চেয়ে ছিলে না কিভাবে জানলাম সব কিছু। এই যে সেই মানুষটা Uncle কেবল আমার লইয়ার ই না ওনি আমার বাবার বন্ধু। বাবা-মা মারা যাবার পর ওনি সবসময় আমাদের খবর রেখেছেন। Uncle ই জানতে পারেন সবটা। ওনিই আমাকে যানান আমার পিছনে কি কি হচ্ছিলো। আর বিয়ে ছাড়া যে কোনো রাস্তা নেই তাই Uncle বলেছিলো আমাকে।
ল.Uncle- হুম আমার কথাতেই রোদ বিয়েটা করে।
ইতি- তাহলে এখন কি করতে হবে।
ল.Uncle- এখন ওদের ফ্যামিলি নিয়ম অনুযায়ী ওর সম্পত্তির লিগেল সেয়ার হোল্ডার হবে তুমি। আর তোমার পারমিশন ছাড়া রোদ একা কোন কিছুই করতে পারবে না।
ইতি- আমি???? বলেই একবার ওনার দিকে তাকালাম আর একবার Uncle এর দিকে।
রোদ- হুম
ইতি- কোন way নেই ওনার সম্পত্তি কেবল ওনারই থাক।
ল.Uncle- আছে। তুমি যদি লিখে দাও তাহলে সম্ভব।
ইতি- ok fine তাহলে আমি এখনি লিখে দিচ্ছি।
ল.Uncle- এখন তা সম্ভব না।
ইতি- কেনো???
ল.uncle- এক বছর সময় লাগবে। এক বছর একসাথে থেকে তারপর এটা সম্ভব।
ইতি- ওহ।
রোদ- ঠিক আছে তাহলে এভাবেই হোক। Uncle আজ আমরা আসি।
ল.uncle- আগামী শুক্রবার আমার বাসায় তোমাদের দাওয়াত আমি কোন না শুনবো না তোমরা আছো।
রোদ- ওকে uncle।
ইতি- অফিসে এতো কাজ যে দম নেয়ার সময় নেই। অফিস টাইমও শেষ। বের হয়ে গেলাম। কিছুটা পথ যেতেই দেখি ওনি গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। আপনি এখানে???
রোদ- তোমার অপেক্ষায় ছিলাম। এসো।
ইতি- আজ অনেক ক্লান্ত লাগছিলো তাই কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে গেলাম। মনের মধ্যেও কেমন যেনো অস্থিরতা কাজ করছিলো। আর এখানে তো অফিসের কেউ নেই যে দেখবে।
রোদ- uncle এর ওখান থেকে আসার পর থেকেই কেমন চুপচাপ হয়ে রয়েছে কিন্তু কেনো???
ইতি- বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে বারান্দায় বসে আছি। ওনি জানতেন এক বছর লাগবে। তাই বলেছিলেন একবছর পর আমাকে মুক্ত করে দিবেন
আর এই এক বছর ওনার সাথেই থাকতে হবে। আমার কেনো এতো অস্থির লাগছে এসব ভেবে। মনে মনে ভাবছি তখনি পিছনে কারো উপস্থিতি অনুভব করতে পারলাম। পিছনে ঘুড়েই দেখি ওনি।
রোদ- তোমার কি কিছু হয়েছে???
ইতি- নাহ তো।
রোদ- খাবে না???
ইতি- আমার ক্ষিদে নেই আপনি খেয়ে নিন।
রোদ- মন খারাপ???
ইতি- ওনাকে আর কোনো জবাব দিতে পারলাম না পিছনে ফিরে আবার রকিং চেয়ারটায় হেলান দিয়ে বসে পরলাম মনে মনে বললাম আমার মনটা ভিষন খারাপ। মুখে চুপ রইলাম।
রোদ- জানি না কেনো মেয়েটার মন খারাপ কিন্তু ওর মন খারাপ থাকাটা যে আমি নিতে পারছিলাম না। আমার অনেক খারাপ লাগছে। কিছু একটা করা লাগবে ভাবতেই পেয়ে গেলাম কি করবো।
ইতি- হঠ্যাৎ গিটারের আওয়াজ। ওনি আমাকে অবাক করে দিয়ে গিটার বাজাতে বাজাতে আমার সামনে বারান্দার রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে দাড়ালেন। ওনি একটা গান ধরলেন।
রোদ- ওর দিকে একবার তাকিয়ে অন্য দিকে ফিরে গান শুরু করলাম-
আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে
।
তুমি আনমনে বসে আছো
।
আকাশ পানে দৃষ্টি উদাস
।
আমি তোমার জন্য এনে দেব মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি হাওয়া
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
।
।
।
আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে
।
তুমি আনমনে বসে আছো
।
আকাশ পানে দৃষ্টি উদাস
।
আমি তোমার জন্য এনে দেব
।
মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি হাওয়া
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
।
।
।
আজ তোমার চোখের কোণে জল
।
বৃষ্টিও অবিরাম কাঁদে
।
তোমার সাথে সাথে আমার পথে পথে
।
আমি তোমার জন্য এনে দেব
।
রোদেলা সে পাখিকে করে দেব তোমার আপনজন
।
পরী তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে
।
পরী তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে
।
।
।
আজ তোমার জোসনা হারায় আলো
।
প্রজাপতির ডানায় বিষাদ করে ভর
।
যখন তখন বিষাদ করে ভর
।
আজ তোমার জোসনা হারায় আলো
।
প্রজাপতির ডানায় বিষাদ করে ভর
।
যখন তখন বিষাদ করে ভর
।
আমি তোমার জন্য এনে দেব
।
অঝর শ্রাবণ আকাশ ছোয়া জল জোসনা
।
পরী তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে
।
পরী তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে
।
।
।
আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে
।
তুমি আনমনে বসে আছো
।
আকাশ পানে দৃষ্টি উদাস
।
আমি তোমার জন্য এনে দেব
।
মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি হাওয়া
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
।
সেই হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি
রোদ- গান শেষ করেই ওর দিকে তাকালম।
ইতি- ওনার গানের সাথে পালা দিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। গান আর বৃষ্টি আমার জীবনের সবচাইতে প্রিয় দুটি জিনিস। তাও জানি না কেনো আমার চোখের কনে এক ফোটা জল চলে এলো। হয়ত এটাকেই আনন্দ অশ্রু বলে আবার হয়ত না। ওনার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম।
সকালে-
ইতি- আজ একটু যলদি উঠলাম। নাস্তা রেডি করে নিজেদের জন্য Lunch রেডি করে নিলাম।
রোদ- good morning.
ইতি- আপনি উঠে গেছেন??? নাস্তা রেডি।
রোদ- আমি নাস্তা বাইরে করে নিবো। আমার একটা মিটিং আছে। ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি তোমাকে অফিসে দিয়ে আসবে।
ইতি- ওনি না খেয়েই চলে গেলেন
। একবার দেখলেনও না। ওনার পছন্দের সব খাবার রান্না করেছিলাম ওনার জন্য Thanks হিসেবে কাল রাতে আমার মনটা ভালো করে দেয়ার জন্য কিন্তু 
আবার হেসে দিলাম ভেবে তো কি হয়েছে Lunch এ খাবে







রোদ- ইস...এভাবে কষ্টটা না দিলেও পারতাম। মেয়েটা কষ্ট করে রান্না করল কিন্তু কি করবো ওর সাথে যে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ইতি- অফিসে চলে এলাম।
রাফসান- হ্যালো
ইতি- আরে তুমি কবে এলে??? তোমার বোনের বিয়ে কেমন হলো??
রাফসান- গতকাল রাতে এসেছি। আপুর বিয়েটা ভালোই হয়েছে। আপু অনেক চেয়ে ছিলো তুমি যাও।
ইতি- কি করবো বলো তুমি নেই আমিও যদি না থাকতাম তাহলে কিভাবে হতো। ডিল গুলোও তো আটকে যেতো।
রাফসান- হ্যা ঠিক বলেছো তাই তো আসতে না আসতেই বস নতুন কাজ ধরিয়ে দিলেন।
ইতি- বস মানে??? বস কখন কাজ দিলেন???
রাফসান- এইতো তুমি আসার আগে।
ইতি- তুমি MD র কথা বলছো???
রাফসান- হ্যা নয় তো আর কে।
ইতি- ওনি অফিসে???
রাফসান- হ্যা অফিসে থাকবে না তো কোথায় থাকবেন। আমি যাই কাজ করি পরে কথা হবে।
ইতি- রিমিকে ডাকলাম।
রিমি- আসবো মেম???
ইতি- MD Sir এর আজ কোনো মিটিং ছিলো???
রিমি- নাহ তো মেম।
ইতি- আচ্ছা তুমি যাও। তার মানে ওনি আমাকে মিথ্যে বলেছেন। কিন্তু কেনো??? বসে পরলাম চেয়ারে।
রোদ- মেয়েটা কাজ করেই যাচ্ছে কেউ দেখলেও বলতে পারবে না এই মেয়েটা কোম্পানীর MD র Wife।
রাফসান- এই যে মেম কতো কাজ করবেন Lunch টাইম হয়ে গেছে। খাবে না।
ইতি- হ্যা তুমি যাও আমি আসছি।
রিমি- রাফসান Sir মেম আমাদের সাথে আর খাবেন না।
রাফসান- কেনো রিমি???
রিমি- মেম ইদানিং MD Sir এর সাথে Lunch করেন।
রাফসান- তাই নাকি অফিসে এতো কিছু চলছে আর আমি কিছুই জানি না।
ইতি- কিছুই চলছে না। যাও আমি আসছি। ওদের পাঠিয়ে দিলাম। ওনার জন্য Lunch এনেছি। নিয়ে গেলাম ওনার কেবিনে। Knock Knock আসবো???
রোদ- এসো।
ইতি- ওনার খাবারটা দিয়ে দিলাম।
রোদ- এসব কি??
ইতি- Lunch
রোদ- আমি কি তোমাকে বলেছি??? নাকি বউ হবার চেষ্টা করছো??? কোনটা??
ইতি- 
এটা কি বললেন ওনি। না মানে আসলে....


রোদ- আর আসলে আসলে করতে হবে না। আমি এসব আদিখ্যেতা একদম পছন্দ করি না। আর হ্যা একদম আমার বউ হবার চেষ্টা করবে না। তুমি আসতে পারো এখন।
ইতি- 
.....বেরিয়ে আসছিলাম ওনি পিছন থেকে ডাকলেন।


রোদ- ইতি
ইতি- থেমে গেলাম
রোদ- যাবার সময় ডোরটা ভালোভাবে লক করে দিয়ে যেও
ইতি- আর অপেক্ষা করতে পারলাম না। দৌড়ে পালিয়ে এলাম এতো অপমান









চলবে........#বস_বর
Part-7
Writer : Eti Chowdhury
ইতি- দোড়ে পালিয়ে এলাম। ওনার বলা প্রত্যেকটা কথা কানে বাজছে। 



চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।
ওনার সব কিছু মেনে নিতে পারছি কিন্তু এই রূপটা যে মানতে পারছি না।







রোদ- চুপ চাপ দারিয়ে কিছুক্ষণ দেখলাম। পাগলীটা কান্না করছে। করবেই তো এসব কথা কি কেউ কাউকে বলে নাকি। উফ....এতো কান্না করছে কেনো। আমি কি মরে গেছি নাকি
।


ইতি- মনে হলো পিছনে কেউ দাড়িয়ে আছে Sir নয়ত তো। পিছনে ঘুড়লাম কিন্তু কাউকে পেলাম না।
রোদ- আরেকটু হলেই দেখে ফেলতো। ভাগ্যিস খেয়াল করে ফেলেছিলাম। চলে এলাম কেবিনে।
ইতি- মুখে পানি দিয়ে কেবিনে চলে এলাম। চেয়ারের বসতে বসতেই ওনার দিকে চোখ পরল। ওনাকে দেখে মনেই হয় না একটু আগে এই মানুষটা.... না আর ভাবতে পারছি না ওসব।
রাফসান- তাহলে রিমি ঠিকি বলেছে।
ইতি- আচমকা রাফসানের আওয়াজ পেয়ে ভয় পেয়ে গেলাম। কেহ ও তুমি বলেই রাফসানের থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।
রাফসান- ইতির কাছাকাছি গেলাম। আমার দিকে তাকাও তো।
ইতি- মাথা নিচু করে জিঙ্গেস করলাম কেনো???
রাফসান- তাকাও বলছি। ইতি Plz...
ইতি- মাথা উচু করে তাকালাম।
রাফসান- এসব কি
??? এইটুকু সময়ের মধ্যে কি হয়ে গেলো যে তোমার চোখ মুখের এই অবস্থা।


ইতি- কিছু হয় নি।
রাফসান- বলবা না???
ইতি- বললাম তো কিছু না।
রাফসান- ওকে ফাইন আমাকে না বলা পর্যন্ত তোমার সাথে কথা বলছি না Bye
।

রোদ- বসে বসে সিসি ক্যামেরায় ইতির রুমের ফুটেজ টাই দেখছিলাম। ইতিকে ফোন দিলাম। আমার কেবিনে আসো।
ইতি- আসবো???
রোদ- এই ফালটা চেক করো তো।
ইতি- জি। ফাইল নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম।
রোদ- এখানে বসেই দেখো।
ইতি- উফফ.....যত ওনার থেকে দূরে থাকতে চাইছি পারছি না।
রোদ- অনেক কান্না করেছে চোখ, মুখ লাল হয়ে গেছে। খায়ও তো নি আজ। সব আমার জন্য। ইচ্ছে করে কাজ টা করেছি খুব দেখতে মন চাইছিলো ওকে। মন চাইছে একটু ছুয়ে দেই।
ইতি- যলদি কাজটা শেষ করে বেরিয়ে এলাম। ভালো লাগছে না। অফিস থেকে বের হতে পারলে ভালো লাগতো কিন্তু বাসায় ও তো ওনিই থাকবেন। উফফ... আর পারছি না।
অফিস টাইম শেষ।
রাফসান- চলো
ইতি- কোথায়???
রাফসান- ঘুরতে যাবো আমরা আজ।
ইতি- আমি যাবো না Plz.
রাফসান- তোমার কোন কথা শুনছি না। তুমি যাবে।
ইতি- আমার একহাত রাফসান ধরলো আরেক হাত রিমি ধরে টেনে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। ভালোই হলো বাসায় গেলে ওনাকে Face করতে কষ্ট হতো। এর চাইতে বাইরেই থাকি।
রাফসান- চলো আজ আমরা আমার পছন্দের জায়গায় ফসকা খেতে যাবো।
রিমি- এজন্যই Sir আপনি আমার আর মেম এর এতো পছন্দের।
রাফসান- কেমন???
রিমি- এই যে আপনি ফুসকা পছন্দ করেন। অন্য ছেলেরা তো ফুসকার নাম ও পছন্দ করে না।
ইতি- রাফসান বুঝে যায় কোন কারণে আমার মনটা অনেক খারাপ। ওদের কথা শুনে হাসতে হাসতে আমি ভুলেই গেলাম আমার মন খারাপের কথা। এদিকে যে রাত হয়ে যাচ্ছে সে দিকে আমাদের খেয়ালি নেই।
রোদ- উফফ.....৯টা বাজে প্রায় মেয়েটা গেলো কোই। আসার নাম গন্ধ নাই। কি করি ওকে Got it।
ইতি- প্রায় ১০টা বাজে। ফোনটা বেজে উঠলো। হাতে নিতেই দেখি ওনার ফোন। রিসিভ করলাম না।
রিমি- মেম ফোন বাজছে??
রাফসান- কি হলো??? কোন সমস্যা??? কেউ ডিস্টার্ব করছে???
ইতি- আরে না না তুমি এতো সিরিয়াস হয়ে যাও কেন। কিছু হয় নি। ওনি এ পর্যন্ত ৫টা ফোন দিয়েছে। ৬বারের মতো ফোন বাজছে। এবার রিসিভ করেই ফেললাম।
রোদ- বাইরে অপেক্ষা করছি অনেক রাত হয়ে গেছে। বলেই ফোন রেখে দিলাম।
ইতি- ফোন রেখে দিলেন। আমাকে কিছু বলার সুযোগ ও দিলেন না। অনেক রাত হয়ে গেছে এখন উঠি।
রাফসান- চলো তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।
ইতি- না না আমি যেতে পারবো
তুমি বরংচ রিমিকে দিয়ে আসো একা কিভাবে যাবে। বলেই বেরিয়ে গেলাম আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। তাছাড়া ওনি বাইরে অপেক্ষা করছে ওদের সাথে গেলে যদি দেখে ফেলে পরে হাজার প্রশ্ন করবে। চুপচাপ গাড়িতে বসে পরলাম ওনার দিকে তাকালম ও না।
বাসায় চলে এলাম। ফ্রেস হয়ে বাথরুম থেকে বের হতেই আহ.... বলে চিৎকার দিলাম। ওনি আচমকা আমার হাত ঘুড়িয়ে পিছনে মুড়ে ধরলেন আমাকে দেয়ালের সাথে আটকে ধরলেন। গালের সাথে দেয়ালে ব্যথা লাগছে। না চাইতেও নিঃশব্দে কেঁদে দিলাম।
রোদ- খুব হাসি আসছিলো তাই না। অন্যদের সাথে গা ঘেষা ঘেষি করতে খুব ভালো লাগে তাই না। এখন কেমন লাগছে।
ইতি- আমি চুপচাপ কাঁদছিলাম
কিছুই বলিনি।
রোদ- কোন দিন আমার বউ হবার চেষ্টা করবা না একদম না। বলেই ওকে ছেড়ে দিলাম।
ইতি- আমি ওখানেই বসে পরলাম। উঠে বাথরুমে চলে গেলাম সাওয়ার ছেড়ে সাওয়ারের নিচে বসে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলাম। অনেক কাঁদলাম অনেক। কিন্তু আমি কেনো কাঁদছি। ওনার কথায় কাজে কেনো এতো কষ্ট পাচ্ছি আমি। কাঁদতে কাঁদতে সাওয়ারের নিচেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
রোদ- এ নিয়ে তিনবার ঘরে গেলাম। মেয়েটা এখন বের হয় নি। আবার মনে হয় কান্না করছে। আচ্ছা মেয়েটা এতো কাঁদে কেনো??? ওকি বুঝে না ও কাঁদলে আমার কষ্ট হয় তখন মন চায় ওকে বুকে টেনে নেই। কেনো বুঝে না মেয়েটা। সকালে আর একটু কান্না করলে হয়ত তখনি ওকে বুকে টেনে নিতাম। আমি তো ওর জন্যই করছি এসব। যেনো পরে ওর কষ্ট না হয়। না আর পারছি না। সাওয়ারের শব্দ পাচ্ছি এতো ভিজলে তো ঠান্ডা লেগে যাবে। Knock করলাম কিন্তু কোন শব্দ নেই। কয়েকবার Knock করলাম এখন ভয় করছে আমার। দরজা ভেঙ্গে ফেললাম। ইতুউউউউউউউ। ও সাওয়ারের নিচে পরে আছে ভিজে অবস্থা খারাপ। কোলে তুলে বাইরে নিয়ে এলাম। ইসস.... এই কাপড় পরে থাকলে যে আরো বিপদ হবে এখন নি করি। না কিছু করার নেই কোন উপায় না পেয়ে চোখ বন্ধ করে ওকে তুলে বসালাম। আমার হাত কাঁপছে। হাত আটকে যাচ্চে। কাপা কাপা হাতে ধীরে ধীরে ওর জামার চেনটা টেনে খুললাম। ধীরে ধীরে ওর শরীর থেকে ভিজা কাপড় গুলো খুলে অন্য কাপড় পরিয়ে দিলাম। চোখ খুলতে ভয় করছে ঠিক ভাবে আছে তো। তাকিয়ে দেখি ওর ঠোঁকগুলো একদম সাদা হয়ে গেছে ওনেক কাঁপছে ও ভয়ে পেয়ে গেলাম। ডাক্তারকে ফোন দিলাম। তিনটা কম্বল দিয়ে ওকে ডাকলাম তাও ওর কাঁপানি কমছে না।
অল্প সময়ের মধ্যে ডাক্তার চলে এলো-
DOC- এ অবস্থা কিভাবে হলো???
রোদ- জ্ঞান হারিয়ে সাওয়ারের নিচে পরে ছিলো।
Doc- কি বলো। এতো একদম সাদা হয়ে গেছে।
রোদ- ইনজেকশন দেওয়া হলো ওকে।
Doc- রোদ আমি তো ডাক্তার অনেক সময় রোগীর ভালোর জন্য আমাদের সরম-লজ্জা ভুলে অনেক কথাই বলতে হয়।
রোদ- Any thing serious????
Doc- ও একদম ঠান্ডায় সাদা হয়ে গেছে। She need hit warm। ওকে এখন তিনটা না পাঁচটা কম্বল দিলেও ওর শরীর গরম হবে না।
রোদ- তাহলে উপায় হাসপাতালে নিবো??
Doc- হালকা একটা হাসি দিয়ে। না না তার প্রয়োজন নেই। ওর যেহুত তুমি আছো ওর হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না।
রোদ- আমি??
Doc- হ্যা তুমি। সরাসরি বলছি তোমার শরীরের গরমটাই ওর দরকার এখন। আজ না হয় বউকে একটু বেশি আদর করো। আমি আসি। আশা করি আর details বলা লাগবে না। কি আদর দিবে তা তুমি ভাবো করেই বুঝ।
রোদ- আমি পাশে ওর মাথা হাত দিয়ে বসে পরলাম। ডাক্তার এটা কি বলে গেলেন। যেখানে আমরা একসাথেই থাকবো না এখন কিভাবে আমি ওকে কাছে টেনে নিবো। হঠ্যাৎ করেই রুমের লাইটটা Off হয়ে গেলো বাইরে প্রবল বেগে ঝড় শুরু হয়ে গেলো তাই কারেন্ট চলে গেছে। সাথে যে আমার ভিতরেও এক বিশাল ঝড় শুরু হয়ে গেছে। খুব বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। প্রকৃতিও মনে হয় চায় যা হচ্ছে তা হোক। উঠে শার্টটা খুলে গিয়ে ওর পাশে শুয়ে পরলাম। ও আমাকে পেয়ে যেনো আমার কাছে ঘেষে এলো। আমি ওকে ধরতে নিয়েও ধরছি না। ওর নিঃস্বাস এসে আমার বুকে লাগছে। আমি যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছি। আচমকাই ওকে বুকে জড়িয়ে নিলাম।
চলবে.......
রোদ- কাছে পেয়ে যেনো আমার ভিতরে ডুকে যাচ্ছে। খামচে ধরলো আমাকে। ওর খামচি যেনো আমাকে পাগল করে দিচ্ছে। আমার নিঃস্বাস ভারি হয়ে আসছে। আর কিছু ভাবতে পারছি না। নিজের সাথে আর পেরে উঠছি না। আচমকাই ওকে ছেড়ে উঠে গেলাম। কি করছি এটা আমি। যার সাথে থাকবোই না কিভাবে ওর কাছে যাই। নাহ এটা অন্যায়।
!
ইতি- উউউ....
!
রোদ- পিছনে ফিরে দেখি পাগলীটা অনবরত কাঁপছে। এভাবে থাকলে যদি ও আরো অসুস্থ হয়ে পরে। পাশে গিয়ে বসলাম। ওর হাতটা ধরলাম। আমার হাতটা পেয়ে ও আরো জরে আকড়ে ধরল। যেনো এই হাতটা শুধুই ওর। খামচে ধরল হাতটা। ওর অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম। মেয়েটা গুটি সুটি মেরে শুয়ে আছে। আসতে আসতে ছোট হয়ে যাচ্ছে। আমাকে পাশে পেয়েই গরম অনুভূতি পেয়ে আমার কাছে ঘেষছে। ও ঘুমের ঘোরেই আমার কাধে খামছি দিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ ঘুষলো। আমি আবার কোথাও হারিয়ে যাচ্ছি। এক ওজানা সুখের অনুভূতি। ওর জন্য হলেও আজ নিজেকে ওর কাছে সপে দিতে হবে। ওকে বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম। আলতো করে ওর কপালে একটা চুমু খেলাম। ওর প্রতিটা নিঃশ্বাস এসে আমার বুকে বারি খাচ্ছিল আর আমি ওর নেশায় উন্মাদ হয়ে যাচ্ছি। ওকে কাছে পাওয়ার লোভ আর সামলে রাখতে পারলাম না। ওর গালে চুমু দিলাম। এ লোভ যে বেড়েই চলেছে। হুট করেই ওর ঠোঁট দুটোকে আকড়ে ধরলাম। চুমু দিতেই ও ঘুমের ঘোড়েই আমার ঠোঁটের মাঝে কামড়ে ধরল। ওর কামড় আমায় পাগল করে দিলো। কি এক নেশায় ধরে ফেলল আমায়। আমি পাগলের মতো চুষতে লাগলাম ওর ঠোঁট। ও যেন পালা দিয়ে আমার সাথে আমার ঠোঁট দুটো চুষতে লাগলো। যেনো কে কাকে বেশি আদর করতে পারি কমপিটিশন চলছে। আমি ওর আরো কাছে চলে এলাম। আদর করতে করতে ওর গলায় নেমে এলাম। পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলাম। ও আমার সারা শরীরে খামচি দিতে লাগলো। ওর খামচি গুলো আমাকে আরো উন্মাদ করে দিচ্ছে। খামচি দিয়ে আমাকে ওর আরো কাছে টানছে। নিজের ওজানতেই ওর পিঠে হাত চলে গেলো। জামার হুকটা খুলে দিলাম। ওর কাধের উপর থেকে জামা নামাচ্ছি আর ওর কাধে চুমু খাচ্ছি। উফফ.....আমি যতটা সুখ অনুভব করছি ও কি তাই অনুভব করছে। আমি যে আর পারছি না। ওর মাঝে ডুব দিতে মন চাইছে। ওর পরনের জামাটা ছুড়ে যত দূরে পারি ফেলে দিলাম। আজ আর কোন বাধাকেই মাঝে আসতে দিবো না। ওর দু হাত শক্ত করে চেপে ধরলাম। সে যে কি সুখের অনুভূতি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। ও আমাকে পাগলের মতো খামচে যাচ্ছে। অন্য কেউ হলে হয়ত ব্যথা পেয়ে রাগে বকে দিতাম কিন্তু আমার বউটা যে আমায় সুখ দিতে খামচে আরো পাগল করে দিচ্ছে। ওর প্রতিটা খামচি যেনো ভালোবাসার কথা বলছে। উফফ.....সব বাদ দিয়ে আজ এক হয়ে গেলাম আমরা। সুখের সাগরে ডুব দিলাম। ওকে নিয়ে সারারাত সুখের সাগরে সাতরে বেড়ালাম।
!
সকালে-
!
রোদ- চোখ খুলতেই দেখি বউটা আমার হাতে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। এখন অনেকটা স্বাভাবিক। কপালে একটা চুমু খেয়ে উঠে গেলাম।
!
ইতি- ঘুম ভাংতেই নিজে অনেক দুর্বল লাগছে। চোখ খুলতেই কেমন যেনো নিজেকে হালকা হালকা লাগছে। উঠতে যাবো তখনি আমার টনক নড়ল। একি গায়ের কম্বলটা ছাড়া তো গায়ে আর কিছুই নেই।

। আমার এ অবস্থা হলো কিভাবে। মাথা ভো ভো করছে। চারেপাশে দেখতে লাগলাম। রুমের মধ্যে কাপড় এক একটা এক এক জায়গায় এলো মেলো হয়ে পরে আছে। কেবল আমার না ওনার কাপড় সাথে দেখে যেনো আমি আকাশ থেকে পরলাম। রাতের কথা মনে পরল। হুস ছিলো না ঠিকি কিন্তু সর্ম্পূণ বেহুসও ছিলাম না। ওনি আমার সাথে। ছিঃ ছিঃ আর ভাবতে পারছি না। একটা চাদর গায়ে জরিয়ে উঠে গেলাম ফ্রেস হতে যাবো। কিন্তু হাটতে কষ্ট হচ্ছে। শরীরটা অনেক দুর্বল। বাথরুমে ডুকতে যাবো ওনি বেরিয়ে এলেন।



!
রোদ- যেই গোসল সেরে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এলাম দেখি বউটা উঠে গেছে।
!
ইতি- ঠাসসসসসসসসসস......... দিলাম চড় বসিয়ে।
!
রোদ- রাগে ওর হাত মুড়ে পিছনে ধরলাম। ওকে আবার দেয়ালের সাথে চেপে ধরলাম
তোমার সাহস হয় কি করে।
!
ইতি- লজ্জা করলো না আপনার। আমাকে বলছেন বউ এর অধিকার ফলাতে না। তাহলে কেনো আপনি আপনার পুরুষত্ব ফলালেন। নাকি আমার জ্ঞান ছিলো না বলে আপনার ভেতরের পশুটা বের হয়ে গিয়ে ছিলো। ছিঃ আপনি এতোটা......ওনি আমার হাত ছেড়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে খেলে দিয়ে চলে গেলেন।
!
রোদ- রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম। অনেক জোরে ড্রাইভ করছি। কোন দিকেই কিছু খেয়াল করছি না। গাড়ি চালিয়েই যাচ্ছি।
!
ইতি- বের হয়ে দেখি ওনি নেই। ভালোই হয়েছে। ওনাকে দেখতেও ইচ্ছে করছে না। অফিসের জন্য বেরিয়ে গেলাম।
!
অফিসে-
!
রিমি- মেম এই ফাইলটা একটু দেখে দিন না।
!
ইতি- রেখে যাও
!
রিমি- মেম একটু Argent ছিলো। আজকেই.......
!
ইতি- বললাম তো রেখে যাও চিৎকার দিয়ে বললাম।
!
রিমি- Sorry ma'am
!
ইতি- উফফ....কার রাগ কার উপর ঝারছি। মেয়েটাকে শুধু শুধু বকলাম। কিছুই ভালো লাগছে না।
!
রাফসান- কি হলো শুধু শুধু ওকে বকলে কেনো??
!
ইতি- কিছু হয়নি।
!
রাফসান- love bite দিলো কে গো???
!
ইতি- চোখ বড় বড় করে তাকালাম রাফসানের দিকে। ওড়না দিয়ে ডেকে দিলাম। না কিছু না পরে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি।
!
রাফসান- পরে গিয়ে লাভ বাইটও পায় মানুষ জিঙ্গাসু চোখে তাকালো রাফসান ইতির দিকে।
!
ইতি- বললাম তো কিছু না।
!
রাফসান- তুমি বললেই তো হচ্ছে না। কিছু একটা হয়েছে এটা আমি Sure তুমি না বললেও।
!
ইতি- প্লিজ আমি একটু একা থাতে চাই। রাফসান কিছু না বলেই চলে গেলো। সারাদিন চলে গেলো কোন কাজই ঠিক মতো করতে পারলাম না। কাজে মনই বসছে না।
!
রিমি- রাফসান Sir
!
রাফসান- কিছু বলবে রিমি??
!
রিমি- জি Sir । আসলে আজ MM কোম্পানির সাথে মিটিং ছিলো MD Sir এর কিন্তু ওনি তো এলেন না। আর ফোন দিচ্ছি ধরছেন ও না। আর....
!
রাফসান- আর কি???
!
রিমি- আর ইতি মেম কে যে বলবো ওনি আজ সকাল থেকে যে পরিমান রেগে আছে। ওনার সামনে যেতেও ভয় করছে। যে যাচ্ছে তাকেই বকছেন।
!
রাফসান- আচ্ছা আমি দেখছি।
ইতির কেবিনে গেলাম। মিটিংটা কি তুমি করছো???
!
ইতি- রাফসান এর কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম
কিছু বললে??
!
রাফসান- যতক্ষন না নিজে থেকে বলছো আমি আআর জিঙ্গেস করছি না কিছুই তোমাকে কি হয়েছে তোমার। তা মিটিংটা করছো তুমি??
!
ইতি- কোন মিটিং????
!
রাফসান- MM কোম্পানির সাথে আজ মিটিং ছিলো কিন্তু MD Sir মিসিং।
!
ইতি- ভাবলেস হীন ভাবে জিঙ্গেস করলাম মিসিং মানে???
!
রাফসান- কেন তুমি জানো না। ওনি আজ অফিসে আসেন নি। রিমি অনেক ফোন ও করেছেন কিন্তু ওনাকে পাওয়া যাচ্ছে না ফোনে তাই আর মিটিংটাও খুব Important ।
!
ইতি- ওকে আমি করবো।
!
রাফসান- ওনারা অপেক্ষা করছেন।
!
ইতি- Hello Gentle man's
I am Eti Chowdhury.
Our Managing Director
Mr Mod Chowdhury is not able to present today for the meet for some Circumstance on behalf of him and Our company today I will Represent the Offers and Deal to MM Company Hoping your Cooperation Thank You.
!
বলেই মিটিং শুরু করলাম।
!ভালোয় ভালোয় শেষ হলো। ওনাদের এতো ভালো লেগেছে আমাদের ওফার যে ওনারা আর Sir এর জন্য অপেক্ষা করলান না। ডিলটা সই করে দিলেন।
!!
ওই কোম্পানির একজন- Excuse me ma'am
!
ইতি- Yes
!
ওই লোক- Are You Mrs Rod Chowdhury???
!
ইতি- ওনার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। ওনি কিভাবে বুঝলো। তাও বুঝতে দিলাম না। No. Why??
!
ওই লোক- Actually He is Rod Chowdhury and You are Eti Chowdhury so I thought you guys are Husband and Wife.
!
ইতি- হালকা একটা হাসি দিলাম No its not like that. We are just boss and employee.
!
ওই লোক- oh... I am so sorry for such an stupid question. And Congratulations for the Deal.
!
ইতি- Thank you বলে চলে আসলাম ওখান থেকে।
!
অফিস টাইম শেষ-
!
ইতি- রাস্তায় হাটছি। ড্রাইভার সামনে চলে এলেন।
!
ড্রাইভার- বউমণি বাসায় যাবেন না??? আপনি হেটে গেলে আমার চাকরি থাকবে না।
!
ইতি- না চাইতেও গাড়িতে উঠে গেলাম। মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে খেলে কি মজা পায় ওনি। এতো নিকৃষ্ট মানুষ কিভাবে হয়। আমারই ভুল ছিলো ওনাকে মনে জায়গা দিতে গিয়ে ছিলাম ওনি কারো মনে জায়গা পাবার যোগ্য নন।
!
ড্রাইভার- বউমণি ???
!
ইতি- হু.....ড্রাইভার এর কথায় হুদিস ফিরলো। কিছু বলছেন??
!
ড্রাইভার- জি বাসায় চলে এসেছি। নামবেন না???
!
ইতি- গাড়িতেই বসে আছি মন চাইছে না ওনার বাসায় যেতে। গিয়ে তো ওই নিকৃষ্ট মানুষের মুখটাই দেখতে হবে।
!
ড্রাইভার- বউমণি??
!
ইতি- গাড়ি ঘুড়ান আমার বাবার বাসায় যাবো।
!
ড্রাইভার- জি
!
ইতি- আবার চিন্তার জগৎ এ ডুব দিলাম। যতই চাইছি ভাববো না ততই ওনার কথা মাথায় আসছে। ওনার দেয়া কষ্টে আমি এতো কষ্ট পাচ্ছি কেনো??? ওনি তো কেউ না আমার তাহলে কেনো??? মন এতো জ্বলে কেনো আমার ওনার জন্য উফফ....আর ভালো লাগছে না। আবার ড্রাইভারের কথায় হুস ফিরলো। জি।
!
ড্রাইভার- বউমণি আপনি ঠিক আছেন তো??
!
ইতি- হুম....গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে রইলাম। এক পা আগাতেই মনে হলো বাবা-মার কথা। ওনারা আমাকে দেখলেই বুঝে যাবে কিছু একটা হয়েছে। চাইলেও তাদের থেকে লুকাতে পারবো না। না এসব বলা যাবে না। জানতে পারলে অনেক কষ্ট পাবেন। ফিরে গিয়ে হাড়িতে বসলাম।
!
ড্রাইভার- কি হলো বউমণি???
!
ইতি- কিছু না বাসায় চলেন। আজ যাবো না। বাসায় চলে এলাম। সোজা ছাদে চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে ওই মানুষটার মুখ দেখতে মন চাইছে না। রাত হয়ে গেলো ছাদে বসে থাকতে থাকতে। না এখানে তো আর সারারাত থাকা যাবে না বাসায় চলে গেলাম। দরজায় ধাক্কা দিতে গিয়ে থেমে গেলাম। নাহ ধাক্কা দিলে ওনি এসে খুলবে এর চাইতে ওনি আমাকে একটা Extra চাবি দিয়ে ছিলেন ওটা দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে চলে গেলাম। না সকালে যেভাবে সব রেখে বেরিয়ে ছিলাম সব ওভাবেই আছে তার মানে ওনি আসেন নি। হুম একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলাম। ফ্রেস হয়ে বারান্দায় গিয়ে রকিং চেয়ার টায় হেলান দিলাম। কষ্টে থাকলে মনে হয় মানুষ বেশি ক্লান্ত হয়ে যায় তাই আমারও অনেক ক্লান্ত লাগছে। চোখ বুঝতেই ঘুমে তলিয়ে গেলাম। ওভাবেই সারারাত ঘুমালাম।
!
সকালে-
!
ইতি- সকালে ঘুম ভাংতেই দেখি ওভাবেই ঘুমিয়ে আছি। রুমে এসে দেখি ওনি নেই। কি ব্যাপার ওনি কি আসে নি। ফ্রেস হতে চলে গেলাম। মিররের সামনে দাড়াতেই নিজের শরীরে ওনার ছুয়ে দাগ গুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। অনেক সুখের স্বাক্ষী এই দাগ গুলো। নিজের ওজানতেই চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি পরে গেলো। ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে গেলাম ভাবলাম ওনাকে দেখতে পাবো কিন্তু না আমাকে অবাক করে দিয়ে হলেও ওনি রুমে নেই। বেলকনি গেলাম নাই। আবার বাথরুমে গেলাম সেখানেও নেই। এখন যেনো কৌতুহলটা বেড়ে গেলো। মানুষটা গেলো কোই। কিচেনে গেলাম নেই, রিডিং রুমেও নেই, ডাইনিং রুম, ড্রইং রুম, গেস্ট রুম, অফিস রুম, হল রুম কোথাও নেই। বুঝতে পারছি না তাহলে কি কাল রাতে আসে নি নাকি এসে আমার উঠার আগেই চলে গেলো। রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম। ভাবছি ড্রাইভারকে জিঙ্গেস করবো কি না। অনেক সংকোচ নিয়েই জিঙ্গেস করলাম। আপনার Sir কি খুব সকালেই বেরিয়ে গেছেন??
!
ড্রাইভার- নাহ তো
!
ইতি- হয়ত আপনি আসার আগেই চলে গেছেন।
!
ড্রাইভার- না বউমণি আমি তো এখানেই ছিলাম Sir কাল রাতে ফেরেনি বলেই তো আমি যাই নি।
!
ইতি- ওনি রাতে ফেরেনি??
!
ড্রাইভার- কিছু ভাবছেন বউমণি??
!
!
ইতি- ওনি ফেরেনি??
।
ড্রাইভার- কিছু ভাবছেন বউমণি??
।
ইতি- নাহ কিছু না। অফিসে চলেন। অফিসে গিয়ে যেনো অস্থিরতাটা আরো বেড়ে গেলো। কারণ ওনার কেবিনটা ফাকা। ওনি নেই। তাহলে কি অফিসেও আসেন নি??? গেলো কোথায়। এতো ভাবছি কেনো যেখানে খুশি যাক আমার কি?? হুহ....খারাপ একটা মানুষ মরে যাক আমার কি??? খাটাশ উফফ..... আমি চাই না ওনার কথা ভাবতে বলেই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলাম।
।
রাফসান- কার কথা ভাবতে চাও না??
।
ইতি- হুমম....হায় খোদা শুনে ফেলেনি তো। কিসব বলছো??
।
রাফসান- বলছো তো তুমি। কার কথা ভাবতে চাও না।
।
ইতি- কি আবল তাবল বলছো। আমি আবার কার কথা বললাম।
।
রাফসান- সেটাই তো জানতে চাচ্ছি।
।
ইতি- তোমার মাথা গেছে চলো ক্যান্টিনে যাই চা খেয়ে আসি তোমার মাথা ঠিক হয়ে যাবে।
।
রাফসান- মাথা আমার না তোমার গেছে। চলো।
।
ইতি- ক্যান্টিনে গিয়েও আমার চোখ যেনো ওনাকে খুজছে। কিন্তু ওনাকে তো কোথাও দেখতে পারছি না। উফফফ.....কেন জ্বালায় ওনি আমাকে এতো। ভেবে কান্না আসছে ইতির।
।
।
ইতি- অনেক্ষণ নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখলাম।
।
রিমি- মেম আসবো??
।
ইতি- এসো। রিমি গতকালকের জন্য
I am sorry। তুমি কিছু মনে করো না।
।
রিমি- না না মেম কি বলেন। আমি কিছু মনে করি নি। রিমি জিঙ্গাসু চোখে ইতির দিকে তাকিয়ে রইল।
।
ইতি- হুম। কিছু বলবা।
।
রিমি- মেম আপনি স্যারের কোনো নিউজ জানেন??
।
ইতি- কোন স্যার??
।
রিমি- MD Sir
।
ইতি- ঘড়ির দিকে তাকালাম ৪টা বাজে। আবার রিমির দিকে তাকালাম। ওনি এখনো আসেন নি??
।
রিমি- অসহারের মত জবাব দিলো। নাহ মেম। কিছু পেপারে স্যারের সই দরকার। কি করবো বুঝতে পারছি না।
।
ইতি- তাহলে ফোন দাও।
।
রিমি- দিয়েছি Out of reach Ma'am
।
ইতি- হুম,,,,,তুমি যাও আমি দেখছি। বলে তো দিলাম আমি দেখবো কিন্তু এখন কি করি। মাথায় কিছু আসছে না। সাত পাচ ভেবে ওনাকে ফোন দিলাম।
।
আমি যে নম্বর টি তে ফোন করেছেন তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে। অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন ধন্যবাদ।
।
ইতি- উফফ....ফোন টাও আউট ওফ রিচ এখন কি হবে??? দূর আসলে আসুক না আসলে নাই। চিন্তাও হচ্ছে বিরক্তও লাগছে। আর ভাবতে পারছি না।
।
।
অফিস টাইমও শেষ।
।
ইতি- বেরতেই দেখি ড্রাইভার দাড়িয়ে আছে। গাড়িতে বসে পরলাম।
।
রাফসান- এতো ডাকলাম শুনলো না মেয়েটা। কিন্তু কার গাড়ি তে যাচ্ছে। সিকিউরিটিকে জিঙ্গেস করে দেখি। সিকিউরিটি।
।
সিকিউরিটি- জি স্যার
।
রাফসান- ইতি মেম কার গাড়িতে গেলেন। জানেন গাড়িটা কার??
।
সিকিউরিটি- জি MD Sir এর গাড়ি।
।
রাফসান- MD Sir??
।
সিকিউরিটি- জি স্যার সকালে তো এই গাড়িতেই আসতে দেখেছি।
।
রাফসান- MD Sir এর গাড়ি করে ইতি যাওয়া আসা করে কাহিনিটা ঠিক মিলছে না।
।
ইতি- আবার হাজার চিন্তায় পরে গেলাম। কাকে জিঙ্গেস করবো।
।
ড্রাইভার- বউমণি স্যার বাসায় যাবেন না?? গতকাল যেভাবে রেগে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলেন আমাকে শুধু বলে গেলেন আপনাকে যেন একা বাহিরে না ছাড়ি।
।
ইতি- জবাব দিতে পারলাম না। ওই সময়ও আমার কথা ভেবেছেন। অনেক আশা নিয়ে বাসায় ডুকলাম হয়ত এখন ওনাকে বাসায় পাবো। কিন্তু না ওনি নেই। সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত হয়ে গেলো ওনার আসার কোন খবর নেই। ফোনের পর ফোন দিয়েই যাচ্ছি কোন খবর নেই। এখন যে পাগল পাগল লাগছে নিজেকে। কি করি। কিছুই ভেবে পাচ্ছি। এতো কষ্ট হচ্ছে কেনো?? যে মানুষটা বিনা কারণে এতো কষ্ট দেয় তা জন্য কেনো আমার বুক জ্বলে?? কেনো??? উফফ....হঠ্যাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো রোদ এসেছে বলেই দৌড় দিলাম।
।
Delivery boy- Mr.Rod Chowdhury এর নামে পারসেল আছে।
।
ইতি- ওনি বাসায় নেই আমি ওনার Wife আমাকে দিন। ওটা নিয়ে রেখে দিলাম। কান্না করে দিলাম। ওনি কোথায় আমার যে আর সহ্য হচ্ছে না। আবার ফোন দিলাম। খাটের পাশে রাখা ওনার ছবিটা নিয়ে ফ্লোরে বসে পরলাম। ছবিটা বুকে নিয়ে হাউমাউ করে কান্না করলাম। বুকটা ফেটে যাচ্ছে আমার ওনাকে দেখার জন্য। ওভাবেই বসে বসে ঘুমিয়ে পরলাম কান্না করতে করতে।
।
সকাল-
।
ইতি- ঘুম ভাংতেই আবার ওনাকে খুজতে শুরু করলাম। নাহ ওনি আসেন নি। তাহলে কি আমি ওনাকে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেললাম। ভাবতেই বুকটা খা খা করছে। মনে হচ্ছে এখনি যদি ওনি সামনে আসেন ওনাকে বুকের মাঝে লুকিয়ে নিবো। অনেক্ষণ অপেক্ষা করে অফিসের জন্য রেডি হয়ে নিলাম। ওনি নেই আমিও যদি না যাই কিভাবে হবে। যাবার সময় সিকিউরিটিকে বলে গেলাম ওনি আসলে যেনো সাথে সাথে আমাকে ফোন করে জানায়।
।
অফিসে
।
।
ইতি- আমাকে আসতে দেখে রাফসান প্রায় দৌড়ে এলো আমার কাছে।
।
রাফসান- গাড়িটা কার???
।
ইতি- চোখ কপালে উঠে গেলো আমার। কিসের গাড়ি??
।
রাফসান- যে গাড়িটা দিয়ে তুমি মাত্র এসেছো।
।
ইতি- কিসের গাড়ি??? রাফসান আর কোন কথা বলল না। আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সবার সামনে দিয়ে। আহ রাফসান লাগছে। প্লিজ.... ও কোন জবাব দিলো না। টানতে টানতে আমাকে টেরেসে নিয়ে গেলো। আমাকে Almost সামনের দিকে ছুড়ে মারলো। আমি ওর ব্যবহারে অনেক অবাক হয়ে গেলাম।
।
ইতি- কি হচ্ছে রাফসান??? আমার হাতে লাগছে। এ ভাবে সবার সামনে দিয়ে নিয়ে আসার মানেটা কি??
।
রাফসান- মানে কি তুমি বুঝ না?? আজ অনেকগুলো দিন ধরে দেখছি তুমি অন্য মনস্ক হয়ে আছো। কখনও কাঁদছো আবার কখনও কষ্ট পাচ্ছো বাট কেনো??? কেনো কষ্ট পাচ্ছো??? কে দিচ্ছে তোমাকে এতো কষ্ট??? কারো কোন কথায় এতো কষ্ট পাওয়ার মানুষ তুমি না। অবশ্যই মানুষটা তোমার লাইফে অনেক Important তা না হলে তুমি এমন আচরণ করতে না।
।
ইতি- আমি রাফসানের কথা শুনে থর থর করে কাঁপছি। এতোক্ষণ অনেক চেষ্টা করেছি নিজে ধরে রাখার কিন্তু
।
রাফসান- MD Sir এর সাথে তোমার কি সর্ম্পক???
কেনো ওনার গাড়ি তোমাকে দিয়ে যায় নিয়ে যায়???
Why???
অফিসের সবাই তোমাকে নিয়ে নানারকম মন্তব্য করছে।
তোমার আর স্যারকে নিয়ে।
কেনো???
Damn answer me.....



।
ইতি- রাফসান অনেক রেগে গেছে। ওনার কথা বলায় আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। কেঁদেই দিলাম।
।
রাফসান- তার উপর আজ তিন দিন ওনি নেই। কোথায় গেছেন ওনি ইতি??? সবাই বলে তুমি জানো। কেনো বলে??? তুমি কে হও ওনার যে তুমি জানবে??? বলো??
।
ইতি- আমি কেঁদেই দিলাম। কাঁদতে কাঁদতে বসে পরলাম। আমি জানি না ওনি কোথায় প্লিজ ওনাকে এনে দাও.....





।
রাফসান- ইতির কথা শুনে রিতিমত ধাক্কা খেলাম। কি হয়েছে ইতি।
।
ইতি- আমার ভুল হয়ে গেছে আমি আর কখনও এমন করবো না। শুধু একবার ওকে ওনে দাও প্লিজ একবার





।
রাফসান- কাকে এনে দিবো???
।
ইতি- 
...ওনি এতোটা কষ্ট পাবে আমি বুঝতে পারিনি। আমি ওনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না রাফসান আমার রোদকে চাই প্লিজ কেউ ওনায় এনে দাও প্লিজ







।
রাফসান- রোদ স্যার।???

এই ইতি ইতি তাকাও আমার দিকে তাকাও বলছি। ঠান্ডা হও প্লিজ। ইতি



।
ইতি- আমার সত্যিই ভুল হয়ে গেছে আমি আর কখনও স্ত্রীর অধিকার ফলাতে যাবো না। 

এতো টাই ভেংগে পরেছিলাম যে আর আটকে রাখতে পারলাম না সব বলে দিলাম।



।
রাফসান- স্ত্রী????

ইতি শান্ত হও প্লিজ শুনু আমার কথা।



।
ইতি- অনেক কষ্টে শান্ত হলাম। তাও বুক ফেটে কান্না আসছে।
।
রাফসান- তোমরা বিয়ে করেছো??
।
ইতি- সবটা তো বলেই দিয়েছি তাই আর বাকিটা লুকালাম না। বলে দিলাম সব কিছু কিভাবে হলো আমাদের বিয়ে আর কেনো হলো।
।
রাফসান- ইতি তাকাও তো আমার দিকে।
।
ইতি- রাফসানের দিকে তাকালাম। ও আমার হাতটা ধরল।
।
রাফসান- ওর হাতটা ধরলাম। প্লিজ এখন যা জিঙ্গেস করবো তার সত্যি সত্যি জবাব দিবে। ভালোবাসো তাকে??
।
ইতি- কিছুক্ষণ অসহায়ের মত তাকিয়ে রইলাম।
।
রাফসান- ভালোবাসো তাকে??
।
ইতি- ভালোবাসি হ্যাঁ নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসি। হ্যাঁ রাফসান ভালোবাসি আমি আমার স্বামীকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি।
।
রাফসান- তো এভাবে ভেংগে পরলে চলবে খুজে বের করতে হবে না তোমার ভালোবাসার মানুষটাকে??
।
ইতি- হুম
।
রাফসান- এবার সামনে পেলেই বলে দিবে তাকে কতটা ভালোবাসো।
।
ইতি- প্লিজ একবার খুজে দাও। ওকে সারাজীবন বুকে আগলে রাখবো প্লিজ
।
রাফসান- পাগলী একটা চলো আর কেঁদো না।
।
ইতি- চলে আসছিলাম আবার দাড়িয়ে গেলাম রাফসান।
।
রাফসান- বলো
।
ইতি- আমাদের কথা কাউকে বলো না প্লিজ।
।
রাফসান- ওর মাথায় হাত দিয়ে চুল নেড়ে বললাম পাগলী তুমি না বললেও আমি কাউকে বলতাম না বলে একটা হাসি দিলাম।
।
ইতি- আমরা নিচে নেমে এলাম। আমাদের দেখে রিমি দৌড়ে এলো।
।
রিমি- হাপাতে হাপাতে....আমি আপনাদের সারা অফিসে খুজছি আর আপনারা এখানে।
।
রাফসান- কেনো??? কি হয়েছে???
।
রিমি- আপনাদের মিটিং এর সময় হয়ে গেছে আর ওদিকে ক্লাইনটরাও চলে এসেছে।
।
ইতি- ওহ সিট এই ডিলটা আমাদের কোম্পানীর জন্য অনেক Important রাফসান ডিলটা আমার চাই ই চাই। বলেই দিলাম দৌড়।
।
।
।
মিটিং রুমে-
।
ইতি- I am extremely Sorry Gentle man's to keep you guys waiting. Lets start the meeting....
আমি মিটিং শুরু করে দিলাম কিছুক্ষণ পরেই একটা ফোন এলো। তাড়াহুড়ো ফোন সাইলেন্ট করতে ভুলে গেছি।
Sorry gentle man's.
ফোনটা সাইলেন্ট করে দিলাম। কিন্তু ফোন আসতেই থাকলো। বার বার ফোন আছে দেখে আমার ভিতরে কেমন যেনো করে উঠলো। হঠ্যাৎ রোদের কথা মনে পরে গেলো।
Excuse me gentle man's.
আমি ফোন রিসিভ করলাম।
হ্যালো কে বলছেন??
।
ওপাশে- আপনি কি ইতি বলছে??
।
ইতি- জি। আপনি কে??
।
ফোনে যা বলল শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। রাফসান আমাকে লক্ষ করলো। আমি ফোন রেখেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম। ড্রাইভার যলদি চলো।
।
ড্রাইভার- বউমণি কি হয়েছে??
।
ইতি- কিছুই বললাম না শুধু যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি চালাতে বললাম। যলদি পৌছে গেলাম। লিফট টাও উপরে আর অপেক্ষা না করে সিড়ি দিয়েই ৭ তলায় উঠে গেলাম। আর কান্না আটকে রাখতে পারলাম না। বসে পরলাম। আমার রোদ।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে









।
।
।
চলবে.....
Part-10
Writer : Eti Chowdhury
ইতি- আমার রোদ।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে









।
নার্স- আপনি কে??
।
ইতি- ওনি আমার স্বামী।
।
নার্স- আচ্ছা আমি ডাক্তারকে খবর দিচ্ছি।
।
ইতি- আমি ওনার পাশে বসে পরলাম। চোখের পানি যেনো থামার নাম ই নিচ্ছে না।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এলেন। ওনি রোদেরই ডাক্তার। এর আগেও দেখা হয়েছে যখন রোদ জ্ঞান হারিয়ে ছিলো বাবার বাসায়।
।
Doc- অনেক কষ্টে তোমাকে খুজে পেলাম।
।
ইতি- ওনার কি হয়েছে??
।
Doc- Accident । অনেকটা ব্যাথা পেয়েছে জ্ঞান ফিরে আসে আবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
।
ইতি- ওনি ঠিক হয়ে যাবে তো??
।
Doc- হ্যা। জ্ঞানটা ঠিক মতো ফিরলেই একদম আশংকা মুক্ত হয়ে যাবে ।
।
ইতি- Thank u so much.
।
Doc- Its OK Dear। তুমি শুধু ওর একটু যতন নাও।
।
ইতি- ডাক্তার চলে যেতে নিলেন আবার কি ভেবে থেমে গেলেন।
।
Doc- আচ্ছা তুমি এখন কেমন আছো??
।
ইতি- আমার কি হবে?? আমি তো ঠিকি আছি।
।
Doc- সেদিন রোদ তোমাকে নিয়ে অনেক ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলো।
।
ইতি- আমাকে??
।
Doc- সেকি তোমার খেয়াল নেই। তিনদিন আগেই তো তুমি সাওয়ারের নিচেই জ্ঞান হাড়িয়ে পরে ছিলে। ভিজে তোমার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গিয়ে ছিলো। ইনজেকশনেও কাজ হচ্ছিলো না। ভাগ্যিস তোমরা মেরিড ছিলে তাই তো।
।
ইতি- 
সে রাতে.....আমাকে বাঁচাতে???


।
Doc- হ্যা।।। কেনো রোদ তোমাকে কিছু বলে নি?? তোমাকে নিয়ে যে কি ভয়টা না পেয়েছিলো ছেলেটা।
।
ইতি- ডাক্তার চলে গেলেন আমি হা করে ওনার দিকে চেয়ে বসে রইলাম। চোখের পানি যেনো বাধ মানছে না। মানুষটা আমার জন্য আমার কাছে এসেছিলো। আর আমি কিনা ওনাকেই এভাবে ছোট করলাম। ওনার হাতটা ধরে বাকিটা দিন বসে রইলাম। ওনার জ্ঞান ফিরার কোন নামই নেই।
।
রাফসানকে ফোন দিয়ে বললাম ওনাকে পেয়েছি। ওনি হাসপাতালে আছে। বললাম অফিস দেখে রাখতে। এখন আমাকে ওনার দরকার। আমি ওনার পাশে থাকতে চাই কেবল।
।
।
পরের দিন সকালে-
।
রোদ- জ্ঞানটা ফিরেছে কিন্তু চোখ খুলতে পারছি না। বুকের উপর কারো ভার অনুভব করতে পারছি। চোখ খুলতেই ঝাপসা ঝাপসা দেখলাম কেউ আমার পাশে বসে বুকের উপর মাথা রেখে আছে।
।
ইতি- ওনি হালকা নড়ে উঠলেন। খুশিতে মাথা উঠিয়ে ওনার দিকে তাকালাম। ওনি তাকিয়েছেন। আপনার জ্ঞান ফিরেছে। দুহাত দিয়ে ওনার মুখ চেপে ধরলাম। কপালে চুমি দিলাম। দু গালে চুমু দিলাম। আপনার এখন কেমন লাগছে??? কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে??? থাক বলা লাগবে না। আমি ডাক্তারকে ডেকে আনি। বেড়িয়ে যাচ্ছিলাম আবার ফিরে এলাম। ওনার কপালে আবার একটা চুমু দিলাম। দৌড়ে বেড়িয়ে এলাম।
।
রোদ- চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি পড়ে গেলো। মেয়েটার মুখ শুখিয়ে কি অবস্থা করেছে নিজের। পাগলের মতো আদর করলো আমায় যেনো আমি বেঁচে ফিরে আসায় ও নিজে জীবন ফিরে পেয়েছে। মনে মনে অনেক সুখ লাগছে। সব কষ্ট ভুলে গেলাম।
।
।
ডাক্তার এসে রোদ এর চেক আপ করলো।
।
Doc- হুম,,,, Now he is totally out of danger.
।
ইতি- Thank u so much doctor.
।
Doc- তুমি আসাতে যে ও এতো যলদি সুস্থ হয়ে যাবে জানলে তোমাকে আরো আগে খবর দিতাম। Now he is your responsibility. You have to take care him very carefully and properly.
।
ইতি- আপনি কোন চিন্তা করবেন না। আমি আমার দিন রাত এক করে দিবো ওনাকে সুস্থ করবোই ইন শাহ আল্লাহ।
।
রোদ- কথা বলতে পারছিনা। কষ্ট হচ্ছে। পারলে পাগলীটার সাথে অনেক কথা বলতাম। এই পাগলীটাই সেদিন আমাকে সহ্য করতে পারছিল না আর আজ আমার জন্য কত কত পাগলামী করছে ভাবা যায়।
।
ইতি- আমার যে কি ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। রাফসানকে ফোন দিলাম। ওনার জ্ঞান ফিরেছে। রাফসান আমার জন্য খুশি হলো। আমার খুশির সীমা থাকছে না রোদকে পেয়ে। ওনাকে নিজে খাইয়ে দিলাম। ওনারর উঠে বসতেও কষ্ট হচ্ছে। আরো ৪দিন আমরা হাসপাতালে ছিলাম। ওনি এখন অকেনটাই Better তাই আজ রিলিস দিয়েছে ডাক্তার। ওনাকে নিয়ে বাসায় আসলাম। ওনার নিজে নিজে হাটতেও কষ্ট হচ্ছে। তাই ওনাকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিলাম। মাথার নিচে হাত দিয়ে আমি ওনার অনেকটাই কাছে গিয়ে ওনাকে ধীরে ধীরে শুইয়ে দিলাম। ওনি শুধু আমাকে ওপলক দেখছেন। এই চার দিকে কেবল হ্যা না ঠিক আছে ভালো লাগছে আচ্ছা এ জাতীয় কথা ছাড়া কোন বাড়তি কথা বলেননি ওনি।
।
রোদ- মেয়েটাকে যত দেখছি অবাক হচ্ছি এই কি সেই মেয়েটা নাকি এ অন্য কেউ। ওকে দেখলে মনে হয় ওর পৃথিবীটা কেবল রোদকে নিয়ে। মেয়েটা এতো বদলে গেলো কেনো??
।
ইতি- আপনি বিশ্রাম নিন আমি আপনার জন্য কিছু রান্না করে আনি।
।
রোদ- মাথা ঝুলিয়ে সায় দিলাম।
।
ইতি- রান্না শেষ করে রুমে এসে দেখি ঘুমিয়ে আছেন। ওনার পাশে গিয়ে বসে তাকিয়ে রইলাম। ওনার কপালে একটা চুমু খেতে মন চাইছে। নিজের ওজানতেই ওনার মুখের কাছে ঠোঁট কিছুটা নিতেই ওনি চোখ মেলে তাকালেন।
।
রোদ- পাগলীটা পাশে এসে বসেছে বুঝতে পেরেছিলাম। কি বলে তাই শুনার জন্য চোখ খুলিনি। অনুভব করলাম পাগলীটা কাছে আসছে। সাসপেন্স ধরে রাখতে পারছিলাম না তাই চোখ খুলে ফেলাম।
।
ইতি- লজ্জায় আমি দৌড়ে পালিয়ে এলাম। কি লজ্জা কি লজ্জা।
।
রোদ- ইস...পাগলীটা লজ্জা পেয়েছে। আদরটা না করেই চলে গেলো। আটকাতেও পারলাম না।
।
।
আজ রাফসান এসেছে রোদকে দেখতে।
।
রাফসান- এখন কেমন আছেন স্যার??
।
রোদ- এখন Much Better।
।
এর মধ্যে ইতি রুমে ডুকলো রাফসানের জন্য কফি নিয়ে।
।
ইতি- এই নাও
।
রাফসান- Thanks ma'am বলেই হালকা হাসি দিলো। After all MD Sir er Wife Ma'am তো বলাই লাগে। এটা অবশ্য ইতি বুঝেছে তাই রাফসানকে মুখে বলতে হয়নি। কারণ একা মাত্র রাফসানই জানে ইতি তার রোদকে কতটা ভালোবাসে।
।
রোদ- রোদ রাফসানের থেকে অফিসের খবরা-খবর সব নিচ্ছে। ওই সময় কিছু ডিল বাকি ছিলো। আচ্ছা MM Company এর সাথে ডিলটার কি হলো??
।
রাফসান- ইতি মেম থাকতে আমরা কি কোন ডিল হারিয়েছি স্যার এবারো তাই হয়েছে ডিলটা আমরা পেয়েছি। আর কাজও প্রায় শেষ। কিন্তু আজ আমি একটা বিশেষ প্রয়োজনে এসেছি।
।
রোদ- কি??
।
রাফসান- স্যার আপনার যা অবস্থা আপনার আরো রেস্ট দরকার। কিন্তু Jahan Company এর সাথে ডিলটা এখনো ফাইনাল হয়নি।
।
ইতি- Whatttttt???? কেনো???
।
রাফসান- ওই ডিলটা স্যার পরসনালি হ্যান্ডেল করেছেন। তাই মিটিং পোসপন করা লেগেছে। আমি সব পেপার সাথে করে এনেছি। ওনারা বলেছেন আজ যদি মিটিং না করা হয় তাহলে ওনাদের নতুন করে ভাবতে হবে ওনারা ডিলটা করবে কি না।
।
ইতি- Impossible ডিলটা আমার চাই ই চাই। পেপারগুলো দাও। রাফসান চলে গেলো। অফিসের সাময়িক দায়িত্ব রাফসানকে দেয়া হয়েছে। ইতি পেপার নিয়ে বসে পরলো। সব দেখবে।
।
রোদ- মেয়েটা সব পেপার খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। সব বুঝে নিচ্ছে। অনেক্ষণ সময় দিলো পেপারে।
।
ইতি- ওনার ল্যাপটপ নিয়ে বসে পরলাম। ওনাদের মেইল করতে হবে। মিটিং আজই হবে।
।
রোদ- কিন্তু ল্যাপটপে কি করছে দেখতে পারছি না। করছে কি??? একি মিররের সামনে গিয়ে চুল ঠিকঠাক করে হালকা ফ্রেস হয়ে বসে পরলো আবার ল্যাপটপের সামনে। হঠ্যাৎ চমকে গেলাম ওর কাজ দেখে।
।
ইতি- Skype এ মিটিং করতে চেয়ে মেইল পাঠায় ইতি ওনারাও আপত্তি করেন নি।
Hello gentle man's at first I am very sorry for the inconvenience . And thank you for waiting and your cooperation's.
Our MD is out of town for some very important issue. now I will handle the deal and I hope you will definitely be fine with the deal. সব বলে মিটিং শুরু করলাম।
।
রোদ- চমকে গিয়ে হা করে বসে রইলাম বউ টা আমার এতো বুদ্ধিমান। কি সুন্দর ভাবে সব কিছু সামলে নিলো। ডিলটাও কনফার্ম হয়ে গেলো।
।
ইতি- Skype শেষ করে ওনার দিকে তাকিয়ে হালকা একটা হাসি দিলাম। Congratulations
জানামাল ওনাকে।


।
রোদ- Thank you.



।
।
ইতি- ওনাকে ফ্রেস করতে হবে। গোসল তো করানো যাবে না তাই ভালাম রুমেই হাত মুখ দুয়ে দিই। ওনার কাছে গেলাম। মাথার নিচে হাত দিয়ে ধরে উঠিয়ে বসালাম। হাত কাঁপছে ওনার শার্টের বোদাম গুলো খুলতে লাগলাম।
।
রোদ- মেয়েটা কি ভয়ে কাঁপছে এভাবে। ওকে এতো কাছে পেয়ে ভালোই লাগছে।
।
ইতি- স্পন্জ দিয়ে ওনার বুক পিঠ ধুয়ে দিচ্ছি। সামনে থেকে পিছনে ধুতে গিয়ে ওনাকে নিজের বুকের সাথে আটকে ধরলাম। এক হাত দিয়ে ওনার ঘারের উপরের চুল গুলোতে আঙ্গুল দিয়ে ধরেছি। ওনাকে বুকের সাথে আটকে রেখেছি। মন চাইছে এভাবেই ধরে রাখি সারাজীবন।
।
রোদ- পাগলীটা বুকের সাথে আটকে রেখেছে। যেনো কখনই ছাড়বে না। আমি হালকা নড়ে উঠলাম।
।
ইতি- ইসস....ওনাকে ছেড়ে দিয়ে লজ্জায় উঠে যেতে নিলাম।
।
রোদ- চলে যেতে নিলো পিছন থেকে হাতটা ধরে টান দিয়ে নিজের বুকে নিয়ে নিলাম।
।
ইতি- ওনি টান দিতেই হুমড়ি খেয়ে ওনার বুকে গিয়ে পড়লাম।
।
রোদ- ওর প্রতিটা নিঃস্বাশ আমার বুকে এসে লাগছে। আমার ভিতরটা তোলপাড় করে দিচ্ছে। ওর মুখটা দু হাত দিয়ে তুলে ধরলাম। আসতে আসতে ওর মুখটা নিজের কাছে আনছিলাম। ওর ঠোঁটটা আমার ঠোঁটের শুধু এক ইন্ঞি ধুরে। ওর প্রতিটা নিঃস্বাশ অনুভব করতে পারছি।
।
ইতি- আমার নিঃস্বাশ ভারি হয়ে যাচ্ছে। ওনি আমাকে নিজের আরো কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম।
।
।
রোদদদদদদদদদদদদদদদ.......
।
।
রোদ- কারো ডাকে ইতিকে ছেড়ে দিলাম।
।
ইতি- সরে বসলাম।
।
রোদ- আরে লিজা তুই???
।
লিজা- হ্যা আমি। তোমার accident কথা শুনে মা যে সে কি কান্না কি বলবো।
।
রোদ- ছোট মা এসেছে???
।
ছোটমা- এইতো আমি বাবা??? কেমন আছিস তুই??? একি হাল হয়েছে আমার সোনা মাণিকের??
।
ইতি- ওনাদের দেখে পাশে সরে গেলাম। আমি ওনাদের চিনি না।
।
রোদ- আরে কাঁদছো কেনো??? আমি তো ঠিক আছি। দেখো।
।
ইতি- ওনি উঠতে নিলে ওনার ছোটমা বাধা দেয়। এতোক্ষণে ওনার ছোটমা আমাকে লক্ষ করলেন হাত দিয়ে ইশারা করলেন ওনার কাছে যেতে। আমি গুটি পায়ে ওনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। ওনি লিজা ওনার মেয়ে কে সরিয়ে দিয়ে ওনার পাশে আমার হাত ধরে বসিয়ে দিলেন। আমার হাত দুটো পরম মমতায় ধরে রাখলেন। ওনার দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলেন।
।
ছোটমা- একি আমার ঘরের লক্ষী???
।
রোদ- হাসি মুখে জবাব দিলাম। জ্বি।
।
ইতি- আমার বুকটা কেপে উঠলো আমি ওনার ঘরের লক্ষি। কোপালে এতো সুখ ছিলো আমার ওনি আমাকে ওনার ঘরের লক্ষি বললেন।
।
ছোটমা- নাম কি মা??
।
ইতি- জ্বি ইতি
।
ছোটমা- আলহামদুল্লিলাহ এবার আমার পাগলটার জীবনের সব কষ্টের ইতি হয়ে যাবে। শুরু হবে নতুন সুখের গল্প।
।
ইতি- কথাটা বলেই ওনি আমার থুতুনিতে হাত দিয়ে হাতে চুমু খেলেন। আমাকে ওনার অনেক পছন্দ হয়েছে। আমি উঠে ওনাকে সালাম করলাম। কিছুক্ষণ পর লিজার বাবাও এলেন। এতোক্ষণে জানতে পারলাম। ছোটমা আর ছোটবাবা হচ্ছে ওনার চাচা-চাচী। বাবা-মার পরে যদি কেউ ওনাকে ভালোবেসে থাকে তা ওনার ছোটমা আর ছোটবাবা। আমি ওনাদের রুম গুছিয়ে দিলাম। ফ্রেস হতে বললাম। ওনাদের জন্য রান্না করলাম। সবই ঠিক আছে শুধু লিজা একটু কেমন যেনো। হয়ত আমার সাথে ফ্রি হতে পারছে না তাই এমন লাগছে। ছোটমা-বাবাকে খাইয়ে এলাম ওনাকে খাওয়াবো। কিন্তু রুমে ডুকেই দেখি লিজা ওনার সাথে গল্প করছেন। কি ব্যাপার আপনাকে না বললাম ঘুমাতে??? লিজা কেমন ভাবে তাকালো আমার দিকে।
।
রোদ- লিজার সাথে গল্প করছিলাম তাই ঘুম আসে নি।
।
ইতি- আমি একদম ওনিয়ম মানবো না বলে দিচ্ছি। আসলে রাগে কথাটা বললাম
কারণ গল্পতে আমার আপত্তি নেই কিন্তু লিজা বেস অনেকটা শরীর ঘেষেই বসে ছিলো যা আমার একদম পছন্দ হয় নি। ওনি হাসছেন আমাকে দেখে তাই আরো বিরক্ত লাগছে। এখন খেতে হবে। কোন কথা শুনব না।
।
লিজা- আমাকে দাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
।
ইতি- লিজা আমার হাত থেকে স্যুপের বাটিটা নিয়ে গেলো। আমার রাগ উঠে গেলো। আমিও ওর হাত থেকে বাটি নিয়ে নিলাম। তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। আমি রান্না করেছি আমিই খাইয়ে দিতে পারবো। তুমি যাও বিশ্রাম নাও। অনেকটা যার্নি করে এসেছো। আমার কথা শুসে লিজা চলে গেলো উঠে। আমি ওনাকে খাইয়ে দিচ্ছি ওনি মিট মিট করে হাসছে।
।
রোদ- পাগলীটা রেগে গেছে। আমার ভাগ কাউকে দিবে না। মনে মনে ভাবছি।
।
ইতি- চুপ একদম হাসবেন না। রাগে আমি গজ গজ করছি। আর ওনি মিটমিট করে হাসছেন।
।
বিপত্তি হলো পরের দিন।
।
ইতি- সবাই মিলে গল্প করছিলাম। আমি যাই ওনার স্যুপটা রান্না করে নিয়ে আসি।
।
লিজা- আজ আমি রান্না করবো।
।
ছোটমা- না লিজা তোর রান্না করা লাগবে না। তুই অনেক ঝাল দেস রোদ খেতে পারবে না।
।
লিজা- না আমি রান্না করবোই।
।
ইতি- লিজা ছোটমার কথা শুনলো না। জেদ করে রান্না করলোই। ঝালের কথা শুনেই আমি চিন্তায় পড়ে
গিয়ে ছিলাম ওনার জন্য। ওনার তো ঝালে সমস্যা হয় তাই আমি পায়েস রান্না করলাম। আমি গিয়ে ওনার পাশে বসলাম। লিজা ওনার জন্য স্যুপ নিয়ে আসলো।

।
ইতি- দাও আমাকে দাও
।
লিজা- নাহ,,,,আমি রান্না করেছি আমিই খাওয়াবো।
।
ইতি- কথাটা শুনে আমার রাগ উঠে গেলো। মেয়ে বলে কি। জামাই আমার আর সোহাগ দেখাবে সে। হুহ......ঢং দেখে গা জ্বালা শুরু হয়ে গেলো। ওনি বুঝতে পারলেন আমি রেগে যাচ্ছি।
।
রোদ- থাক কাউকে কষ্ট করতে হবে না আমি নিজেই খেতে পারবো। লিজার হাত থেকে স্যুপের বাটিটা নিয়ে নিলাম। স্যুপ খাচ্ছি আর পাগলীটা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। এরে বাবা এতে ঝাল দিয়ে একাকার অবস্থা। এতো ঝাল কেনো???
।
ইতি- স্যুপ ঝাল হয়েছে???
।
রোদ- পানি খাবো। পাগলীটা আমার হাত থেকে স্যুপের বাটিটা নিয়ে নিলো রহিমাকে ডেকে দিয়ে দিলো।
।
ইতি- রহিমাআআআ
।
রহিমা- জি ভাবী??
।
ইতি- এটা নিয়ে ফেলে দাও। আমার কথা শুনে লিজা রাগে ফুলতে লাগলো। লিজা তুমি একটু যাও। আমি ওনার কাপড় চেন্জ করবো। আমার কথা শুনে রাগে উঠে চলে গেলো।
।
রোদ- আমি চেয়ে চেয়ে ওর পাগলামী দেখছি।
।
ইতি- আপনার কি বেশি ঝাল লাগছে??? আমি অস্থির হয়ে পড়লাম। কারণ আগের বারের কথা আমার মনে আছে।
।
রোদ- আমি চুপ করে রইলাম। পাগলীটা আমাকে নিয়ে ব্যস্থ হয়ে পড়লো। যেনো ঝাল খেয়েছি আমি আর কষ্ট হচ্ছে ওর।
।
ইতি- চুপ করে আছেন কেনো??? বলেন না প্লিজ খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে??
।
রোদ- অনেক ঝাল।
।
ইতি- ওনার ঝাল লাগছে শুনে মনের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো। ওনি খাটে বসা ছিলেন। আমি উঠে গিয়ে নিচু হয়ে হাত দিয়ে ওনার ঘাড়ের নিচ থেকে চুলেরর ভিতর হাত দিয়ে ওনার মুখটা হালকা উপরে তুলে ওনার ঠোঁটে আমার ঠোঁট বসিয়ে দিয়ে ওনাকে চুমু খেতে লাগলাম। শুধু চুমু তেই শেষ হলো না ওনার ঠোঁট দুটো চুষতে লাগলাম। চুষে ওনার সব ঝাল নিয়ে নিচ্ছি। আমি দাড়িয়েই ছিলাম ওনি ওনার হাত দুটো চমার কোমড়ে রাখলে। জোরে চেপে ধরলেন আমাকে। আমার সাথে তাল দিয়ে চুমু খেতে লাগলেন আমাকে।
।
রোদ- ঝাল শব্দটা শেষ করতেই পারিনি আচমকা পাগলীটা উঠে এসে আমাকে চুমু খেতে লাগলো। ঘাড়ের নিচ দিয়ে ওর আঙ্গুল গুলো আমার চুলে দিলে টানতে লাগলো। আমিও ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগলাম। পাগলীটা পরম আদরে চুুষতে লাগলো যেনো সব ঝাল নিয়ে যাচ্ছে।
।
ইতি- অনেক্ষণ এভাবে ছিলাম। থেমে গেলাম ওনার কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে দাড়িয়ে রইলাম। জোরে জোরে নিঃস্বাশ নিচ্ছিলাম। ওনি এখনও আমার কোমড়টা জোরেই চেপে ধরে রেখেছে। আমি আর ওনার দিকে তাকাতে পারলাম না লজ্জায় পালিয়ে এলাম ওনার কাছ থেকে।
।
রোদ- আহ.... ধরতে পারলাম না পাগলীটা পালিয়ে গেলো লজ্জা পেয়েছে।
।
।
।
চলবে........#বস_বর
Part-11
Writer : Eti Chowdhury
ইতি- দৌড়ে পালিয়ে এলাম। ইসস......এতো লজ্জা। এখনো
বুক ধুরপুর ধুরপুর করছে। মনে হচ্ছিলো বুকটা ফেটেই যাবে আরেকটু হলে।
।
রোদ- বসে বসে হাসছি। পাগলীটা আমার। ভালোবেসে ফেলেছি পাগলীটাকে। ভাবছি আর হাসছি।
।
ইতি- এখনতো ওনার সামনে যেতেও লজ্জা করছে। কিভাবে যাই ওনার সামনে।
।
প্রায় ১ সপ্তাহ বিশ্রাম নেয়ার পর রোদ সুস্থ হলো। পরের দিন সকালে।
।
ইতি- ঘুম ভাংতেই দেখি ওনি পাশে নেই। গেলো কোথায়। ফ্রেস হতে যাবো দেখি ওনি রেডি হয়ে বের হলেন। হা করে চেয়ে রইলাম। একজন পুরুষমানুষ এতো সুন্দর হয় কিভাবে। চোখ সরাতে পারছি না ওনার থেকে। আমার মুখটাও হা হয়ে আছে। Navy Blue কালারের সুট কি যে মানিয়েছে ওনাকে। ওনার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি।
।
রোদ- পাগলীটা আমাকে হা করে দেখছে। মনে হয় গিলে খাবে। এক আঙ্গুল থুতুনিতে দিয়ে মুখটা বন্ধ করে দিলাম। বললাম মশা যাবে।
।
ইতি- ইসস.....ওনার সামনেই কেনো যে এতো বিব্রতকর অবস্থায় পরি আল্লাহ জানে। আপনি রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছেন???
।
রোদ- কোথায় আবার অফিসে।
।
ইতি- কিন্তু...
।
রোদ- আর কোন কিন্তু নেই। আমি বিশ্রাম নিতে নিতে ক্লান্ত। তুমি বাধা দিলেও আর শুনছি না।
।
ইতি- আচ্ছা বাবা আমিও যাবো।
।
রোদ- আমি তোমার বাবা বলেই দুষ্টুমির হাসি দিলাম।
।
ইতি- ইসস.... আবার দূর লজ্জা পেয়ে চলে গেলাম রেডি হতে।
।
।
অফিসে-
।
সবাই স্যারকে দেখে অনেক খুশি। ওয়েলকাম যানাচ্ছে। খোজ খবর নিচ্ছে।
।
ভালো ভাবেই দিনটা গেলো। ওনিও অনেকটা সুস্থ। মাঝে কিছু দিন ভালোই কাটলো। লজ্জা আর টুকরো টুকরো ভালেবাসার জন্ম নিতে থাকলো ইতি আর রোদের মাঝে।
।
এখন অফিসে কাজের অনেক চাপ সবাই অনেক ব্যস্ত।
।
।
ইতি- অনেক্ষণ হলো রাফসানের কেবিনে বসে কাজ করছিলাম। ওনাকে দেখি না অনেক্ষন হলো।
।
রাফসান- কি ভাবছো???
।
ইতি- নাহ কিছু না
।
রাফসান- ওনার কথা ভাবা হচ্ছে তাই না।
।
ইতি- জ্বি না আমার কি কাজ নেই যে শুধু ওনার কথা ভাববো। হুহ.....
।
রাফসান- আচ্ছা তাই??? মুচকি হাসি দিলাম
।
ইতি- জ্বি তাই....উঠে হাটা ধরলাম ভাবছি ওনাকে দেখে আসি।
।
রাফসান- ওই কোই যাও???
।
ইতি- কলিজাটা শুকিয়ে গেছে পানি দিয়ে আসি। বলেই বেরিয়ে গেলাম।
।
রাফসান- হাসতে লাগলাম.....
।
ইতি- নিজের কেবিনে চলে এলাম। কিন্তু মাঝের কর্টেনগুলো লাগানো তাই ওনাকে দেখতে পারছি না কলিজায় পানি দিবো কিভাবে এখন হুহ......ওনি না।
উফফফ....এমনি তো সব সময় খুলে রাখে আজ কি হলো। এমনি সময় হাজার বার ডাকেন আমাকে। আজ একবারও ডাকলেনও না। নাহ আর পারলাম না। নিজেই উঠে গেলাম। ওনার কেবিনে ডুকতেই পাথর হয়ে গেলাম। এটা আমি কি দেখছি। আমার সমস্ত শরীর শক্ত হয়ে গেলো। না পারছি দাড়িয়ে থাকতে না পারছি চলে যেতে। পা গুলো মনে হচ্ছে অবস হয়ে গেছে। ওনি একটা মেয়ের সাথে তাও প্রাইভেট মমেন্টে।
।
রোদ- এখন ঠিক লাগছে???
।
লিজা- হ্যা। আরে ভাবী যে।
।
রোদ- পিছনে ঘুড়ে দাড়ালাম। ইতি,,,,,,তুমি কখন এলে??? ওর চোখগুলো লাল হয়ে গেছে। ওকি কিছু ভুল বুঝলো। এমন লাগছে কেনো। ওর কাছে যেতে নিলাম। ও দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।
।
ইতি- দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম। ওনি আমার নাম ধরে ডাকতেই চোখের পানি আটকে রাখতে পারলাম না। দৌড়াতে লাগলাম।
।
রাফসান- ইতি.....মেয়েটা এভাবে দৌড়াচ্ছে কেনো??? হলো কি??? ইতি দাড়াও। ইতি প্লিজ দাড়াও। স্যারের রুম থেকে এভাবে বেরিয়ে এলো কেনো??? কি হলো আবার। ছাদে কেনো যাচ্ছে???
।
রিমি হা করে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে। কিছুই বুঝতে পারছে না।
।
রোদ- যা ভেবেছিলাম তাই মেয়েটা ভুল বুঝলো।
।
।একটু আগের ঘটনা। রোদ কেবিনে ছিলো। আআজ অনেক কাজ। একটু নিঃশ্বাস নেয়ারও সময় পাচ্ছে না রোদ। ইতিকেও দেখেনি অনেক্ষণ হলো। তখনি কে যেনো এলো।
।
Knock Knock.
।
রোদ- Come in. আরে লিজা তুই।
।
লিজা- হ্যা তোমাকে Miss করছিলাম তাই চলে এলাম।
।
রোদ- ওর কথা শুনে বিরক্ত লাগলো। দেখ আমি কাজে Disturbed একদম পছন্দ করি না। বোস। লিজার সাথে কথা বলতে বলতে হঠ্যাৎ
।
লিজা- আহ....বলেই লিজা চোখে হাত দেয়।
।
রোদ- কি হলো??
।
লিজা- তাকাতে পারছি না চোখে কি যেনো গেলো।
।
রোদ- উঠে গিয়ে লিজার সামনে ওর দিকে নিচু হয়ে ওর চোখ পরিষ্কার করছিলাম এমন সময়। এখন ঠিক আছে??
।
লিজা- হ্যা....আরে ভাবী যে।
।
রোদ- পিছনে ফিরেই দেখি ইতি। পিছন থেকে দেখে ভুল বুঝলো মেয়েটা।
।
।
রোদ- নাহ... মেয়েটা কোই গেলো। বের হবো লিজা হাত ধরলো। কি ব্যাপর লিজা???
।
লিজা- তুমি আমাকে রেখে কোই যাচ্ছো। ও গেছে ভালো হইছে। ঝামেলা একটা।
।
রোদ- ঠাসসসসসসসস.....তোর সাহস হলো কিভাবে আমার বউকে ঝামেলা বলার। তোকে কিছু বলি না বলে এর মানে এই না যে আমি বুঝি না কিছু। Further যেনো তোকে আমার আশেপাশে না দেখি even আমার ইতির আশেপাশেও থাকবি না। বের হয়ে যা। পিছনে ঘুরেই দেখি রিমি। সব দেখেছে হয়ত।
।
রিমি- হা করে রয়েছি। হচ্ছে কি। মেম ওভাবে গেলেন। এখানে স্যার মনে মনে ভাবছে রিমি।
।
রোদ- ইতি কোথায় রিমি???
।
রিমি- ছাদের দিকে যেতে দেখলাম।
।
রোদ- আমিও দৌড় লাগালাম। পাগলীটা এতোক্ষণে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।
।
ইতি- 


আআআআআআআ মাটিতে বসে পরলাম। কেনো??? কেনো????? কেনো ওনি আমার সাথে অভিনয় করলেন। কেনো এলেন আমার কাছে??? 


আআআআআআ কেনো???








।
রাফসনা- সিড়ি দিয়ে দৌড়ে উঠে হাপিয়ে গেছি। হা হা.....ইতিইইইইইইই..... ওর সামনে বসে পরলাম। কি হয়েছে??? এভাবে কেনো এলে???? মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে রাফসানের বুকে মাথা রাখে। রাফসান এক হাত ইতির মাথা দিয়ে বলে। কি হয়েছে আমাকে বলো। প্লিজ। এমন করছো কেনো??? কি হয়েছে???
।
ইতি- 
আআআআ সব অভিনয় সব সব সব 

আআআআ





।
রাফসান- প্লিজ আগে শান্ত হোও। আমার কথা শুনো
।
ইতি- 

কিছুটা শান্ত হলাম



।
রাফসান- ওনি বলেছে কিছু??
।
ইতি- রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলাম
নিঃশব্দে চোখের পানি পরছে।বললাম সব বলা লাগে না। আর আমি তো নিজের চোখে দেখে এলাম। ওনি আমার সাথে এমনটা করবে আমি ভাবতে পারিনি

আআআ এভাবে ঠকাবেন বিশ্বাস করো রাফসান আমি বুঝতে পারি নি। 
আআআ







।
রাফসান- মনে মনে ভাবছি এখন হাজার কিছু বললেও লাভ হবে না আগে মেয়েটা শান্ত হোক পরে বুঝাবো। কাঁদো কেঁদে শান্ত হোও। ওকে আর বাধা দিলাম না। কাঁদুক ওর ভালো লাগবে। মেয়েটা আমার বুকে মাথা রেখে কাঁদছে।
।
ইতি- কিছুটা হালকা লাগছে। তাও চোখের পানি থামতেই চাইছে না মন শুধু রোদ রোদ করছে। কেনো করলো এমন আমার সাথে আমি তো শুধু ভালোই বেসে ছিলাম। মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না মনে মনে ভাবছি আর চোখের পানি
ফেলছি।
।
রোদ- রাগে লাল হয়ে গেছে রোদ। রাগে কটমট করছে। ইতিকে রাফসানের বুকে দেখে রোদ যেনো সহ্য করতে পারছে না। রোদ নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না। পিছনে ঘুড়ে দাড়ালো।
।
রাফসান- এখন ইতি অনেকটা শান্ত হয়েছে। চলো নিচে যাই।
।
ইতি আর রাফসান ছাদের গেটের সামনে এসেই থমকে গেলো।
।
রাফসান- স্যার আপনি??
।
রোদ- রাফসানের আওয়াজে ঘুড়ে দাড়ালাম। রাফসান আমি কি একটু ইতির সাথে কথা বলতে পারি??
।
রাফসান- জ্বি স্যার অবশ্যই। জিঙ্গেস করার কি আছে?
।
রোদ- একা
।
রাফসান- Excuse me Please বলেই ওখান থেকে রাফসান চলে গেলো।
।
ইতি- মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলাম।
।
রোদ- তালি দিলাম বাহ....
।
ইতি- ওনার তালি দেবায় শব্দ পেয়ে ওনার দিকে তাকালাম কপাল কুঁচকে
।
রোদ- বাহ....আমি কি ভাবছিলাম আর এখানে তো খুবব ভালোই চলছে। আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আর রাফসান Just colleague or friends but এখন তো দেখছি কাহিনি অন্য কিছু
।
ইতি- 
হা করে রইলাম ওনার কথা শুনে ওনি ভাবছেন আমার রাফসানের সাথে কোন সর্ম্পক আছে।





।
রোদ- ছিঃ আমি ভাবতেই পারিনি তুমি এতোটা Double Standard । পরিস্থিতিকে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় খুব ভালো করে জানো তুমি।
।
ইতি- ওনার প্রতিটা কথা এসে আমার বুকে ছড়ির আঘাতের মতো লাগছে।
।
রোদ- আজ না দেখলে তো বুঝতেই পারতাম না। আমি কি বোকা হয়ে গেলাম। আমি ভেবেছিলাম তুমি কতো ভালো একটা মেয়ে। কিন্তু তুমি?? হাহ.....নিজের চোখে না দেখলে কেউ বললেও হয়ত আমি বিশ্বাস করতাম না। তুমি....
।
ইতি- Enough is enough Mr. Rod Chowdhury. হ্যা আপনি যা ভাবছেন আমি তাই। Yes, I am double standard । হ্যা খেলেছি আমি আপনার সাথে। because আমি এমনি। ঠিকি দেখেছেন আপনি। রাফসানের সাথে আমার সর্ম্পক আছে। আপনিও তো আমাকে ভালেবেসে সংসার করতে বিয়ে করেন নি। ভুলে যাবেন না আপনি আপনার স্বার্থে আমাকে বিয়ে করেছেন। আর যেহেতু আমি বলেছি আপনাকে হেল্প করবো। কাজটা হয়ে গেলেই আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবো।
।
রোদ- ও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। মনে মনে ভাবছি।
।
ইতি- ভুলে যাবেন না এক বছর হতে আর মাত্র ৭ মাস বাকি। Only 7 Months । বলেই চলে এলাম।
।
রোদ- কথা গুলো বলে ইতি চলে গেলো। আমি দাড়িয়ে রইলাম। আমার পরিবারই আমার রইল না আর তুমি তো......অনেক কষ্ট লাগছে। মেয়েটা কতো সহজে বলে দিলো আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিভাবে থাকবো আমি ওকে ছাড়া। আমি যে ভালোবাসি আমার পাগলীটাকে। বসে পরলাম ওখানেই।
।
ইতি- অফিস থেকে বেড়িয়ে গেলাম। হাটতে লাগলাম। গন্তব্য জানা নেই। অন্য মনষ্ক হয়ে হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে একটা নির্জন জায়গায় চলে এলাম। ওনার বলা প্রতিটা কথা আমার কানে বাজছে। কান ধরে বসে পড়লাম। নাহ......বলে চিৎকার দিলাম।
।
।
।
চলবে.............
Part - 12
Writer : Eti Chowdhury
রোদ- বাসায় চলে এলাম। ভাংঙ্গ চুর শুরু করে দিলাম। নাহ...... কিভাবো থাকবো আমি তোমাকে ছাড়া। 


বুক ফেটে চিৎকার আসছে রোদের। ইতিকে ছাড়া যে সে আর থাকতে পারবে না। রুমের সব কিছু ভাংগ চুর করতে লাগলো। নিজের হাতও যে কেটে রক্ত ঝরছে সে দিকে রোদের কোন খেয়ালই নেই। মাটিতে বসে পড়লো। কাটা হাত দিয়ে ফ্লোরে বাড়ি




দিতে লাগলো। কাটা জায়গাটা আরো ক্ষতবিক্ষ হয়ে যাচ্ছে। চোখের পানি যেনো আজ আর বাধ মানছে না।
।
ইতি- রাস্তায় বসে বসে অঝরে চোখের পানি পরছে। কিছু বলা তো দূরের কথা কিছু ভাবার সক্ষমতাটাও যেনো হারিয়ে ফেলেছে ইতি আজ। শুধু বুকটা জুরে রোদের জন্য খা খা করছে। অনেক ঝালা অনুভব করছে। অনেক দূরে চলে যাবো। চাইলেও আমাকে দেখতে পারবেন না। চলে যাবো। ভাবতে ভাবতেই উঠে দাড়ালো ইতি।
।
রোদ- তোমাকে মুক্ত করে দিবো কথা দিলাম। ভাবতে ভাবতেই চোখ মুছে নিলো রোদ।
।
।
প্রায় অনেকটা রাত করেই ইতি বাসায় ফিরলো। যদিও কোন ইচ্ছা ছিলো না রোদের সামনে আসতে। কিন্তু কি করবে মানুষটা যে শুধু কষ্ট ছাড়া কিছুই পায়নি তার পরিবারের থেকে তাই তাকে দেয়া শেষ কথাটা রাখবে ইতি। ওনাকে দেয়া কথাটা রেখে তারপর দূরে কোথাও চলে যাবে সে। ভাবতে ভাবতেই রুমে ডুকে হা হয়ে থাকে সারা রুম গ্লাস ভাংগা দিয়ে ছড়ানো। বেকায়দায় না দেখে পা রাখতেই ইতির পায়ে গ্লাসের টুকরো ডুকে যায়। আহ.....বলে চিৎকার দিতে গিয়েও নিজের মুখ নিজেই চেপে ধরে ইতি। শক্ত করে পা রাখে। চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করে বুকের ভিতর যে কষ্ট সেটা বেশি না পা কাটাটা বেশি কষ্টের। কিন্তু নাহ বুকের ভেতরের কষ্ট টার সামনে পায়ে গ্লাস ডুকাটা অতি সামান্য মনে হয় ইতির কাছে। এমন হাজারটা কাঁচের টুকরো যদি তাকে ক্ষত দেয় তাও তার বুকের ভিতেরর কষ্টটার সমান হওয়া তো দূরের কথা তার কাছেও যেতে পারবে না। এক ফোঁটা পানি পরে গেলো ইতি চোখ দিয়ে। পুরো রুম গ্লাস ভাংগা গিয়ে ভরা। এক পা দু পা করে ইতি ভিতরে গেলো। চারিদিকে চোখ দিতেই দেখে রোদ বিছানায় শুয়ে আছে উপুর হয়ে। গিয়ে তার পাশে বসলো ইতি। একবার তাকে ছুয়ে দিতে মন চাই। হাত বাড়াতেই চোখ পরলো বিছানায় অনেকটা অংশ লাল হয়ে আছে। ভালো ভাবে তাকাতেই দেখতে পায়। রোদের হাত কেটে রক্ত পরেছে অনেক। নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি সে। নিঃশব্দে কেঁদেই দিলো। নিজের ওড়না ছিড়ে নিলো। রোদের হাত বাধতে নিয়ে থেমে গেলো। ফাস্ট এড বক্স এনে রোদের হাত ব্যান্ডেজ করে দিলো। হয়ত রোদের উপর কোন অধিকার নেই বলেই নিজের ওড়না ছিড়া দিয়ে বাধলো না। ইতি গিয়ে বারান্দায় রকিং চেয়ারটায় হেলান দিয়ে গা এলিয়ে দিলো। শরীরটা যে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ক্লান্ত। ভালোবাসার মানুষটা তো বুঝলোই না কতটা ভালোবাসে তাকে। এখন যে শরীরটাও সংঙ্গ দিচ্ছে না। চোখ দুটো বন্ধ করতেই কলপনার রাজ্যে হারিয়ে গেলো ইতি। যেখানে কেলব তার রোদ আর তাদের সুখের গল্প ছাড়া কোন কষ্ট নেই।
।
।
রোদ- হঠ্যাৎ ঘুম ভেংগে যায় রোদের। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। উঠতে নিতেই নিজের হাতটা ভার অনুভব করে। তাকিয়ে দেখে হাতটা ব্যান্ডেজ করা। চারিদিকে দেখতে লাগলো। চোখদুটো মনে হয় কাউকে খুজছে। বারান্দায় চোখ পরতেই কারো উপস্থিতি অনুভব করতে পারে রোদ। না চাইতেও পা দুটো ওদিকে হাটা শুরু করলো। চোখ দুটো শুধু চাইছে এ যেনো তার ভালোবাসার মানুষটাই হয়। বারান্দা গিয়ে থমকে দাড়ালো রোদ ইতিকে দেখে। অনেক্ষণ চেয়ে রইলো মেয়েটার দিকে। মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে। রোদের কেবল মনে হচ্ছে তার বুকের কষ্ট গুলো যেনো ইতির চেহারায় ভেসে উঠেছে। কাছে গিয়ে ইতির সামনে বসে পরলো। মেয়েটার চেহারায় এতো মায়া কেনো??? এ মায়া কি শুধু রোদই দেখতে পায়??? অন্যরা পায় না??? এ মায়া কি কেবল রোদের জন্য??? হঠ্যাৎ হাটুর কাছে কিছুটা পিচ্ছিল অনুভব করে রোদ। হাত দিয়েই দেখতে পায় রক্ত জাতীয় কিছু। পাগলের মতো দেখতে লাগলো ইতির কিছু হয়নি তো। চোখ আটকে গেলো ইতির পায়ের দিকে। মেয়েটার পায়ে কতগুলো কাচের টুকরো আটকে আছে। একটা মলিন হাসি দিলো রোদ। রোদের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো কিন্তু নিজের যে লেগেছে সে দিকে কোন খেয়ালই নেই। ধীরে ধীরে পায়ের কাচ গুলো বের করতে লাগলো রোদ। হালকা নড়ে উঠলো ইতি ব্যাথায়। পরম আদরে ইতির পা ব্যান্ডেজ করে দিলো রোদ। ইতির গালে হাত দিয়ে ধরে বসে বসে দেখলো কিছুক্ষণ। তারপর ইতিকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে দিলো। শুইয়ে দিতেই রোদ ইতির অনেকটা কাছাকাছি চলে আসে। কাছ থেকে মেয়েটাকে আরো মায়াবি লাগে। মুখটা কপালের কাছে নিয়ে একটা চুমু দিয়ে উঠে আসে রোদ। ঘুমের ঘোরেই ইতি রোদের হাত খামচে দরে। সেই পাগল করা অনুভূতি পায় রোদ। সেই রাতের কথা মনে পরে যায়। সেই সুখের কথা মনে পরে যায়। হঠ্যাৎ ইতির বলা কথা মনে পরে গেলো। আমি চলে যাবো। কথাটা বার বার রোদের কানে বাজছে। হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে গেলো রোদ।
।
।
সকালে।
।
রোদ- সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখে। ইতি নেই। রাতে এতো ভাংগ চুর হলো। কিন্তু এখন কেউ দেখলে বলতেই পারবে না রাতে এতো কিছু হয়েছে। রোদ ফ্রেস হতে চলে গেলো। রেডি হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখে ডাইনিং টেবিলে খাবার দেয়া। বুঝতে বাকি রইল না সব ইতি করেছে। রোদ নাস্তা করে বেরিয়ে পরলো। ড্রাইভার অপেক্ষা করছে। রোদ মনে মনে ভাবছে। ইতি কি গাড়ি নিয়ে যায় নি। ড্রাইভার।
।
ড্রাইভার- জ্বি স্যার??
।
রোদ- মেডাম কে কি অফিসে দিয়ে এসেছো??
।
ড্রাইভার- বউমণি তো একাই গেলেন। আমি কত করে বললাম। আমি নিয়ে যাই শুনলই না। বলল। ওনার একলা পথ ওনি চলতে পারবে। তাকে একলাই চলতে হবে। সে যেতে পারবে। আপনাকে যেন একা না ছাড়ি।
।
রোদ- হুম......মনে মনে ইতির কথা ভাবতে বিভর হয়ে পরলো রোদ।
।
।
অফিসে।
।
রোদ অফিসে ডুকতেই দেখে ইতি রাফসানের সাথে হাসাহাসি করছে। কিছু না বলেই রোদ নিজের কেবিনের দিকে চলে গেলো। ইতিও হাসি থামিয়ে দিলো।
।
।
রাফসান- আমি তোমাকে কিছু জিঙ্গেস করছি আর তুমি ওহেতুক হাসছো কেনো??
।
ইতি- ওনাকে দেখাতে হবে যে ইতি রোদকে ছাড়া ভালো আছে তাই এই অহেতুক হাসি। মনে মনে ভাবছে ইতি।
।
রাফসান- কি হলো??? বলো?
।
ইতি- কি বলবো বলো??
।
রাফসান- কাল স্যার তোমায় কিছু বলে ছিলো??? ওভাবে না বলে চলে গেলে যে??
।
ইতি- কিছুই বলে নি। একটু কাজ ছিলো তাই বেরিয়ে গিয়ে ছিলাম।
।
রাফসান- সব ঠিক আছে তো??
।
ইতি- ইতি রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর বলল সব ঠিক আছে। ইতি আর রাফসানকে কোন ঝামেলায় ফেলতে চায় না তাই মিথ্যে বলল। ইতি খোরায় খোরায় হাটতে লাগলো। রাফসান হাত ধরে আটকালো।
।
রোদ- দূর থেকে রোদ রাফসানের ইতির হাত ধরাটা দেখেই চলে গেলো।
।
রাফসান- কেনো মিথ্যে বলছো আমায়??? তোমার পায়ে ব্যান্ডেজ স্যারের হাতে ব্যান্ডেজ। আমি কি কিছুই বুঝি না??
।
ইতি- একটা মলিন হাসি দিয়ে চলে গেলো ইতি।
।
রিমি- রিমি হা করে রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো। সব কিছুই দেখছিলো আর শুনছিলো।
।
রাফসান- হা করে কি দেখছো?? রাগি শুড়ে বলল রাফসান।
।
রিমি- না মানে.....
।
রাফসান- কি মানে মানে করছো। কোন কাজ আছে কিছু বলবা??
।
রিমি- নাহ বলেই মাথা নিচু করে ফেলল।
।
রাফসান- কাজ না থাকলে যাও গিয়ে নিজের কাজ করো। হা করে তাকায় থাকে মনে হয় গিলে খাবে কিছুই বুঝে না। বাচ্চা।
।
।
এখন প্রয়োজন ছাড়া ইতি আর রোদ একে অপরের সাথে তেমন একটা কথা বলে না।
।
কথা বলা তো দূরের কথা সামনেই যায় না।
।
রোদকে দেখলে ইতি ইচ্ছে করে রাফসানের সাথে বেশি বেশি হাসাহাসি করে। যেনো রোদ ভুল বুঝে।
।
।
একদিন অফিসে অনেক বেশি কাজ থাকায় অনেক দেরি হয়ে যায়। রোদ বেরিয়ে গিয়ে গাড়িতে অপেক্ষা করছে। ইতিকে দেখে একটা দরজা খুলে দিলো।
।
ইতি- রাফসান তুমি কি আমাকে একটু বাসায় পৌছে দিবে??
।
রাফসান- ধীরে ধীরে বলল রাফসান হচ্ছে কি স্যার অপেক্ষা করছে আর তুমি আমার সাথে যাবা??
।
ইতি- লিফ্ট দিলে দাও না দিলে আমি একাই যেতে পারবো।
।
রাফসান- আরে বাবা রাগ করছো কেনো?? আচ্ছা দিচ্ছি পৌছে। এসো।
।
ইতি রোদ কে দেখিয়ে রাফসানের বাইকের পিছনে গিয়ে বসলো।
।
বাসায়।
।
ইতি- ইতি বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে খাবার রেডি করা শুরু করে দিলো।
।
রোদ বাসা এসেই ফ্রেস হয়ে শুয়ে পরলো। খেলো না। ইতির মন চাইছিলো রোদকে একবার খাবারের জন্য ডাকবে। কিন্তু ডাকলো না।
।
পরেরদিন অফিসে।
।
ইতি- রিমি কোথায়???
।
স্টাফ- মেম রিমি তো আজ আসে নি।
।
ইতি- অকে। বাট পেপারগুলো তো সাইন করাতে হবে। এভাবেই ইতি রোদকে এভয়েড করে। কোন কাজ থাকলে রিমি কে পাঠায় নিজে যায় না। আজ কি করবে। রাফসানকে বলি যাই।
।
।
রাফসানের কেবিনে।
।
ইতি- একটা কাজ ছিলো।
।
রাফসান- কি???
।
ইতি- এই পেপারগুলোতে MD Sir এর সাইন লাগবে। একটু সাইন করায় আনবা।?
।
রাফসান- ভ্রু কুচকে তাকালাম ইতির দিকে।
।
ইতি- এভাবে তাকাচ্ছো কেনো??
।
রাফসান- অনেকদিন ধরে দেখছি। কিছু বলছি না তোমাদের প্রাইভেট ব্যাপার ভেবে। বাট এটা ঠিক হচ্ছে না। এভাবে এভয়েড করলেই সব সমাধান হয় না। You have to take a step ।
।
ইতি- উফফ.....রাফসান টাও না.....বিরক্ত।
।
বাধ্য হয়ে নিজেকেই যেতে হলো।
।
Knock Knock
।
রোদ- Come in। অনেকদিন পরে ইতি রোদের কেবিনে ডুকলো।
।
ইতি- স্যার এই পেপারগুলো সাইন করতে হবে।
।
রোদ- দেখি
।
রোদ পেপারগুলো দেখছে। ইতি সামনেই বসে আছে। অনেকদিন পর ইতি রোদকে এতটা কাছ থেকে দেখছে। রোদ সাইন করে দিলো। ইতি বেরিয়ে এলো।
।
কেবিনে এসে ইতি বার বার রোদের কথাই ভাবতে লাগলো।
।
।
রাতে রাফসান রিমিকে ফোন দেয়।
।
রাফসান- আজ এলেনা কেনো??
।
রিমি- হালকা জ্বর ছিলো।
।
রাফসান- ঔষুধ খাইছো?
।
রিমি- হুম
।
দুজন ই চুপ করে রইল।
।
রিমি- কিছু বলবেন??
।
রাফসান- হুম.....
।
রিমি- আপনি কি কিছু নিয়ে চিন্তিত স্যার??
।
রাফসান- ইতির জন্য চিন্তা হচ্ছে।
।
রিমি- মেয়েটা নিজের জীবনটা এতো বেশি বেশি Complicated করে নিয়েছে যে কি বলবো।
।
রিমি- আপনি চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে।
।
রাফসান- হুম.....hope so
।
রিমি- একটা কথা জিঙ্গেস করি??
।
রাফসান- বলো।
।
রিমি- মেম আর MD স্যারের মাঝে কি কিছু চলছে??? না মানে আমি না সবাই কি কি বলে আর....
।
রাফসান- তুমি এসব নিয়ে ভেবো না। যে যা ইচ্ছা বলুক। তোমাকে আমি সব পরে বলবো। রাখছি।
।
রিমি- জ্বি।
।
।
অফিসে।
।
রাফসান- এই তুমি উপরে কি করছো???
।
ইতি- কাজ করছি ফাইল নামাই দেখছো না??
।
রাফসান- তাই বলে তুমি কেনো?? অন্য কাউকে বলতে পারতে। পরে যাবে তো।
।
ইতি- আরে না পরবো আআআআআ....পরে গেলো।
।
রাফসান ধরে ফেলল। ইতি এসে রাফসানের কোলে পরলো।
।
রোদ পিছনেই দাড়িয়ে ছিলো।
।
রাফসান আর ইতি দুজনেই হেসে দিলো।
।
রাফসান- আমি না থাকলে কি হতো???
।
ইতি- হাহাহা...আমি তো জানি তুমি সবসময় আমার পাশে আছো। আমাকে ছেড়ে কোথায় যাবে তুমি।
।
ইতি দেখে ফেলেছে রোদ পিছনে দাড়িয়ে আছে। তাই ইচ্ছা করে কথাগুলো বলল।
।
আবার দুজন হাসতে লাগল।
।
রোদ চলে গেলো। কিছু বলল না।
।
।
রিমি- আসবো???
।
ইতি- এসো। বসো রিমি।
।
রিমি- মেম আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।
।
ইতি- হ্যা বলো
।
রিমি- না আসলে। আমি কিভাবে বলবো..
।
ইতি- কি হয়েছে রিমি??
।
রিমি- সে দিন আপনি স্যারে ভুল বুঝেছেন মেম।
।
ইতি- অবাক হয়ে তাকালম রিমি দিকে

।
রিমি- ওই দিন ওই মেয়েটার চোখে কি যেনো পরে ছিলো স্যার তাই দেখছিলেন। আর আপনি পিছন থেকে দেখে ভুল ভাবলেন। তাও স্যার যখন আপনাকে আটকাতে আপনার পিছনে যেতে নিলেন তখন ওই মেয়েটা স্যারকে আটকায় আপনার নামে যাতা বলায় স্যার মেয়েটাকে থাপ্পর দেয়। বলে তার সাহস হয় কি করে তার বউয়ের ব্যাপরে কথা বলার। তাকে আর আপনাদের আশেপাশে আসতেও নিষেধ করে দেয়। ওই মেয়েটাকে বের করে দেয়। আপনাকে খুজতে আপনার পিছনে যায়। মেম আমি জানি না আপনাদের সর্ম্পক কি?? বা কেনো কি হয়েছে। শুধু আমার মনে হয়েছে আপনি স্যারকে ভুল বুঝেছেন আর ওই ঘটনাটা আমার চোখের সামনেই ঘটে তাই অনেক চিন্তা করে আর উপায় না পেয়ে বলেই দিলাম। আপনাদের পারসোনাল ব্যাপারে কথা বলার জন্য I am Sorry ma'am। আসলে আপনি আর স্যার হচ্ছেন অফিসের জান যখন দেখলাম আপনারা এমন নিশ্চুপ হয়ে গেলেন সত্যি মেনে নিতে পারলাম না।
।
।
কথা গুলো বলেই রিমি বেরিয়ে গেলো। ইতি অবাক হয়ে বসে রইল। কি বলে গেলো মেয়েটা। আর আমি ওনাকে এতো কষ্ট দিলাম। বিস্ময় যেনো কাটছেই না। সারাদিনে আর কোন কাজ করতে পারলো না ইতি।
।
বাসায় এসে বারান্দায় রকিং চেয়ারটায় বসে আছে।
।
রোদ- মেয়েটাকে আজ এতো উদাস লাগছে কেনো?? কি হয়েছে ওর। নিশ্চই রাফসানের সাথে কিছু একটা হয়েছে। তাই হয়ত মন খারাপ।
।
ইতি- না যেনে ওনাকে এভাবে কষ্ট দিলাম। উফ কেনো জানলাম না। কেনো এভাবে বিয়েক্ট করলাম। কিছুই ভালো লাগছে না।
।
।
রোদ দু দিন ধরে লক্ষ করছে ইতি সারাক্ষণ শুধু আপসেট থাকে। উদাস হয়ে থাকে। কিছু বলতে চায় কিন্তু পারছে না।
।
Knock Knock
।
ইতি- May I Come in Sir??
।
রোদ- Yes, Come
।
ইতি- এই পেপারগুলো একটু দেখে সাইন করে দিন।
।
রোদ পেপারগুলো দেখে সাইন করে দিলো। কিন্তু ইতি দাড়িয়েই আছে। রোদ ইতির দিকে তাকিয়ে দেখে ইতিকে অন্য মনষ্ক লাহছে। না পেরে মুখ খুলল রোদ।
।
রোদ- কিছু বলবে??
।
ইতি- রোদের কথায় হুস ফিরলো ইতির। জ্বি।
।
রোদ- কিছু বলবে??
।
ইতি- কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল না কিছু না।
।
বলেই বেরিয়ে গেলো ইতি।
।
রাফসানও লক্ষ করলো ইতি বেস চুপচাপ। কিন্তু কেনো??
।
রোদ- একবার কি রাফসানের সাথে কথা বলবো?? কিন্তু কি বলবো।
।
বাহিরে হইচই শুনে রোদ বেরিয়ে এলো।
।
রোদ- কি হচ্ছে কি???
।
রাফসান- Sorry স্যার আমরা আসলে ইতির মন ভালো করার চেষ্টা করছিলাম।
।
রোদকে দেখে ইতি চলে যায়।
।
রোদ- তো পারসোনাল কাজ অফিসে কেনো??
।
রাফসান- পারসোনাল!!! খানিকটা অবাক হয় রাফসান।
।
রোদ- জ্বি। আপনার Girlfriend এর মন খারাপ তাকে বাহিরে নিয়ে যান। এটা আমার অফিস কোন রেস্টুরেন্ট অর কেফে না।
।
রাফসান- হা হয়ে রইলাম আমার Girlfriend????
।
রোদ রাফসানের দিকে তাকিয়ে রইলো।
।
রাফসান- কে আমার Girlfriend???
।
রোদ- হাহ,,,,,তাছ্যিলের হাসি দিলো রোদ। সেটা আমায় বলে দিতে হবে। প্রেম করছেন আপনারা। সর্ম্পক আপনাদের আর বলে দিবো আমি। its sounds really funny Mr. Rafsan। বলেই রোদ চলে যেতে নেয়।
।
রাফসান- Wait a minute Sir. আপনি কি বলতে চাইছে আমার আর ইতির মাঝে কিছু আছে??
।
রোদ- কেনো নেই??? অবশ্য আপনার বলার প্রয়োজন নেই। আপনাদের হাসাহাসি, মাখামাখি দেখলেই সব বুঝা যায়। আর সেদিন তো নিজের চোখেই দেখলাম সব। ছাদে যা হচ্ছিলো।
।
রাফসান- হাহাহা...... রাফসান হেসে দিলো।
।
রোদ- আমি নিশ্চই হাসার মতো কিছু বলিনি?
।
রাফসান- সরি স্যার না হেসে পারলাম না। সত্যি বলতে আপনার কথায় আমার একদম খারাপ লাগছে না বরং আপনার জন্য মায়া হচ্ছে। আপনি ওই দিনের ঘটনায় ভাবছেন আমাদের মাঝে কিছু আছে। আপনি একবারো জানার চেষ্টা করলেন না কি হয়ে ছিলো?? একবারো জানতে চান নি কেনো মেয়েটা আমার বুকে মাথা রেখে কাঁদলো। এই বিশ্বাস আপনার নিজের বউয়ের প্রতি? নাহ সরি ইতি তো আপনার বউ না। বউ হলে আপনি ওকে অবিশ্বাস করতে পারতেন না। একবার হলেও জানতে চাইতেন।
।
রোদ- রাফসান.....আপনি সীমা অতিক্রম করছেন
।
রাফসান- সরি স্যার জানলে আরো আগে করতাম। সর্ম্পকের কথা বলছে??? হ্যা সর্ম্পক আছে সেটা শুধুই ভালো বন্ধুর। সেদিন যখন আপনার কেবিন থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এলো। তখন বন্ধু হিসেবে আমার বুকে আশ্রয় নিয়ে ছিলো। কারণ কেলব আমি জানি ইতি আপনাকে......বলতে নিয়েই থেমে গেলো রাফসান বলল না।
।
রোদ- আমাকে কি??
।
রাফসান- যা বোঝার ক্ষমতা আপনার নেই তা অন্যের মুখে শুনে কি লাভ স্যার।
।
রোদ- তাহলে তোমাদের মাঝে....
।
রাফসান- জ্বি আমাদের মাঝে কোন প্রেমের সর্ম্পক নেই। জানতে চান আমি কাকে পছন্দ করি। রিমিইইই.....এই রিমিইইই....
।
রিমি দৌড়ে এলো।
।
রিমি- জ্বি স্যার
।
রাফসান- রিমির হাতটা ধরে সামনে দাড় করালো। এই মোটা চশমা তুমি কি কিছুই বুঝ না??
।
রিমি- স্যার লাগছে হাতে
।
রাফসান- লাগুক। এতো অবুঝ কেন তুমি??? আমাকে নিয়ে ইতির সাথে সবাই এতো মন্তব্য করে তুমি প্রতিবাদ কর না কেন??
।
রিমি- আমি কি বলবো??
।
রাফসান- তুমি বলবা রাফসান শুধু তোমার। এই মোটা চশমা তুমি বুঝনা আমি তোমাকে কতটা পছন্দ করি। তোনাকে কেউ মোটা চশমা বলে ডাকলেও আমার সহ্য হয় না তুমি জানো না।
।
রিমি- জানি তো কিন্তু....
।
রাফসান- কিন্তু কি??
।
রিমি- আমি তো ভাবতাম আমার মতো মোটা চশমা পরা বোকা মেয়েকে কি আপনার মতো হেন্ডসাম ছেলের চোখে লাগবে নাকি কখন তাই কিছু বলিনি।
।
রাফসান- পাগলী একটা। রাফসান- হাটু গেরে বসে পরলো। তুমি জানো আমি ফুসকা একদম পছন্দ করি না আর ১০টা ছেলের মতোই কিন্তু যে দিন প্রথম দেখলাম তুমি বাচ্চাদের মতো ফুসকা খাও সেদিন আমি ফুসকার প্রেমে পরে যাই। তোমার প্রেমে তো অনেক আগেই পরে যাই। তুমি কেনো বোঝ না। আমি হাজার বাহানায় তোমাকে কল দেই শুধু তোমার কন্ঠ শুনব বলে। তুমি কি বুঝ না মোটা চশমা I Love You ।
।
রিমি রিতি মতো ধাক্কা খেলো। যাকে মনে মনে এতোটা পছন্দ করে সেই কিনা তাকে ভালোবাসে।
।
রাফসান- Thank You Sir । আজ আপনি এভাবে না বললে হয়ত ওকে বলা হয়ে উঠতো না ভালোবাসার কথা। কিন্তু আপনি দেরি করে ফেললেন স্যার। বলেই রিমির হাত ধরে রাফসান চলে গেলো।
।
রোদ- এটা আমি কি করলাম। এত বড় ভুলটা বুঝলাম। মেয়েটার কোন দোষ ছিলো না ওকে যা তা বললাম আমি। রোদের অনেক অনুশুচনা হলো। কি করবে এখন সে।
।
।
রাফসান রিতি মতো রাগে কাঁপছে। ইতির উপর খুব রাগ হচ্ছে। এই সব ভুল ধারনা ইতি তৈরি করেছে ইচ্ছে করে। ইতিকে সামনে পেলে ইচ্ছা মতো বকে দিতো।
।
রিমি চলে যেতে নিলো।
।
রাফসান - কোই যাও??
।
রিমি- ওই কথা গুলো আপনি স্যারকে শুনানোর জন্য বলেছেন না???
।
রাফসান- তুমি আসলেই একটা মোটা চশমা। কিছুই বুঝে না। কেন যে বাচ্চা মেয়ের প্রেমে পরলাম। বলেই রাফসান চলে গেলো।
।
রিমি মন খারাপ করে ইতির কাছে গেলো।
।
ইতি- কি হয়েছে চোখে পানি কেনো???
।
রিমি ইতিকে জড়িয়ে ধরলো।





।
ইতি- কি হয়েছে রিমি???
।
রিমি- স্যার রাগ করেছেন।



।
ইতি- কোন স্যার???
।
রিমি- রাফসান স্যার।



।
ইতি- ওহ....কাজে ভুল হয়েছে বুঝি??
।
রিমি- নাহ



।
ইতি- তাহলে??
।
রিমি- আমি বুঝি না তাই



।
ইতি- কি বলেছে?? ইসস রাফসানটা মনে হয় অনেক বকেছে মনে মনে ভাবছে।
।
রিমি- আমি বাচ্চা তাই আমার প্রেমে পড়ে ওনি ভুল করেছেন

আআআআ



।
ইতি- ওহ.....এ্যা প্রেম??? মানে???? রিমির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায় ইতি। রিমির কান্না আরো বেড়ে যায়।
।
ইতি- আচ্ছা থামো আগে বলো কি হয়েছে।
।
রিমি সব খুলে বলল।
।
রিমি- মেম আপনিই বলেন আমি কিভাবে জানবো ওনি আমাকে ভালোবাসে কখনও বলে নি তো। আর আমি কি তাকে অপছন্দ করি নাকি। শুধু ভয় পাই বলে বুঝতে দেই নি। এখন কি করবো।



।
ইতি - এখন কান্না থামাও দেখছি কি করা যায়। ইসস....রাফসান রাগ হয়েছে আমার উপর। স্যার ও তো সব জেনে গেলেন এখন কি হবে। চিন্তায় পরে গেলো ইতি।
।
।
অফিস টাইম শেষ।
।
ইতি- তোমরা দুজন ফুসকা খেতে যাও। আর নিজের মাঝে সমজতা করে নাও।
।
রাফসান- তুমি আমার সাথে কথা বলবা না।
।
ইতি- আচ্ছা বলবো না তোমরা যাও। সব প্রবলেম ঠিক করে নাও।
।
রিমি- মেম আপনিও চলেন না প্লিজ।
।
ইতি- ওই মাইয়া তোমরা যাবা ডেটিং এ আমি গিয়ে কাবাবমে হাড্ডি হবো কেন। যাও। আসলেই বাচ্চা।
।
রিমি মন খারাপ করে নিলো।
।
রাফসান রিমি হাত ধরে বলল এই মোটা চশমা চলো। আর ইতি কে বলল তোমার নিজের সমজতা করা দরকার সেটা কি বুঝ তুমি। এখন সময় শেষ হয়ে যায়নি ইতি। একবার বলে দাও।
।
।
টুং করে মেসেজ টোন বেজে উঠলো। ইতি ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে রইলো।
।
।
Massage -
গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছি শুধু তোমার জন্য।
- তোমার বস_বর
।
।
ইতি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। নিচে নামতেই দেখে রোদ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে। ইতি কে দেখতেই গাড়ির দরজা খুলে দিলো। একটা হাত বাড়িয়ে দিলো ইতির দিকে। আর বলল After you my lady.
।
ইতি রোদের হাতটা ধরে গাড়িতে বসে পরলো। কেউ কোন কথা বলছে না। রোদ ড্রাইভ করছে। গাড়ি যাচ্ছে ওজানা গন্তব্যে।
।
।
।
চলবে................#বস_বর
Part - 13
Writer : Eti Chowdhury
টুং করে মেসেজ টোন বেজে উঠলো। ইতি ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে রইলো।
।
।
Massage -
গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছি শুধু তোমার জন্য।
- তোমার বস_বর
।
।
ইতি কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। নিচে নামতেই দেখে রোদ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে। ইতি কে দেখতেই গাড়ির দরজা খুলে দিলো। একটা হাত বাড়িয়ে দিলো ইতির দিকে। আর বলল After you my lady.
।
ইতি রোদের হাতটা ধরে গাড়িতে বসে পরলো। কেউ কোন কথা বলছে না। রোদ ড্রাইভ করছে। গাড়ি যাচ্ছে ওজানা গন্তব্যে।
।
।
অনেক্ষণ কেউ কারো সাথে কোন কথা বলছে না কি বলবে কেউ ভেবে পাচ্ছে। রোদ রেডিও ছেড়ে দিলো। রেডিওতে গান চলছিলো।
।
।
এ পথ যদি না শেষ হয়
তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয়
তবে কেমন হতো তুমি বলোতো ।।
।
কোন রাখালের ওই ঘর ছাড়া বাঁশীতে,
সবুজের ওই দোল দোল হাসিতে ।।
মন আমার মিশে গেলে বেশ হয়
যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয় ।।
তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
।
নীল আকাশের ওই দূর সীমা ছাড়িয়ে,
এই গান যেন যায় আজ হারিয়ে
প্রাণে যদি এ গানের রেশ হয়,
পৃথিবীটা যদি স্বপ্নের দেশ হয় ।।
তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
।
এ পথ যদি না শেষ হয়
তবে কেমন হতো তুমি বলোতো
।
।
গানটা যেনো ওদের জন্যই প্লে করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর গাড়ি একটা জায়গায় এসে থামলো।
।
গাড়ি থেকে নামতেই ইতির মন আরো ভালো হয়ে গেলো। এতো সুন্দর জায়গা। ঢাকার মাঝে এমন জায়গা আছে তা ইতি জানতই না। অবশ্য ঢাকা না ঢাকার পাশেই।
।
ইতি- Wowww






।
রোদ- আমাদের ফার্ম হাউজ



।
ইতি- 
what??? এটা আপনার??? Its so beautiful





।
রোদ- মায়ের অনেক শখের একটা জায়গা। ছুটির দিনগুলো সে এখানেই কাটাতে পছন্দ করতেন। মা মারা যাওয়ার পর আর সেভাবে আসা হয়নি একা একা ভালো লাগতো না।
।
ইতি- অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা। ডুপলেক্স একটা বাড়ি। পাশে পুকুর। চারিদিকে জঙ্গলের মতো করে সাজানো। একপাশে একটা একটা বিশাল গাছ। ট্রি হাউজ বানানো। এতো শান্তি লাগছে। এতো সুন্দর যে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। পুকুরে ঘাটলা করা। উফ আমার মন চাইছে মন খুলে দৌড়া দৌড়ি করি। পুকুরে নেমে যাই।
।
রোদ- চলো ভিতরে গিয়ে আগে ফ্রেস হয়ে নেই।
।
ইতি- মাথা ঝুলিয়ে সম্মতি দিলাম।
।
ডুপলেক্স হাউজটাও খুব সুন্দর করে সাজানো। ইতি যত দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে। চারিদিকে সৌখিনতার ছাপ খুন সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। কেউ চোখ ফেরাতে পারবে না।।
।
দুজনেই ফ্রেস হয়ে নিলো। ইতি বের হয়ে দেখে রোদ নেই।
।
ইতির ফোনের টোং বেজে উঠে।
।
রোদ Message পাঠিয়েছে।
।
ট্রি হাউজে অপেক্ষা করছি।
।
।
ইতি ছুটে গেলো।
।
ট্রি হাউজে ডুকেই চোখে মুখে মুগ্ধতার ছাপ ফুটে উঠলো ইতি।
।
ছোট্ট একটা টেবিলে চারিদিকে মোম দিয়ে সাজানো। মাঝে ডিনার রাখা। রোদ একপাশে বসে আছে।
।
দুজনই একে অপরকে কিছু বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না। ইতি বুঝতে পেরে নিজেই মুখ খুলল।
।
।
ইতি- যা চলে গেছে তা না হয় পিছনেই থাক।
।
রোদ- হাত সামনে এগিয়ে দিয়ে বলল। তাহলে কি বন্ধুত্বের হাতটা ধরা যায় না।
।
ইতি- হাত বাড়িয়ে দিয়ে। অবশিষ্ট পথটুকু বন্ধু হয়ে থাকাই যায়।



।
রোদ- সারাজীবনের জন্য থাকা যায় না মনে মনে বলছে রোদ। মুখে বলল না। অনেক কষ্ট দিয়েছে সে ইতিকে আর কষ্ট দিতে চায় না। তাই ইতি চলে গেলে রোদের অনেক কষ্ট হবে হয়ত সে থাকতে পারবে না তাকে ছাড়াও তাও সে সহ্য করবে। আটকাবে না ইতিকে। কারণ সে আর কোন কষ্ট ইতিকে দিতে চায় না।
।
।
দুজনে ডিনার করে নিলো।
।
এই ট্রি হাউজটায় তাদের ছোট বেলার অনেক সৃতি জরিয়ে আছে রোদ সব দেখালো ইতিকে। ছোট বেলার অনেক মজার মজার গল্প শুনালো। ইতি হাসতে হাসতে পরে যাচ্ছে। রোদ মুগ্ধ হয়ে দেখছে ইতিকে। অনেক দিন পর তার পাগলীটা মন খুলে হাসছে। এই হাসিটাই তো দেখার জন্য পাগল হয়ে ছিলো রোদের মন। এই হাসির জন্য জানও দিতে পারে রোদ। সারারাত গল্প করতে করতে কখন যে রোদের ঘারে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছে মেয়েটা খেয়ালই করেনি। দুজনই ঘুমিয়ে পরেছে। ঘুমের মধ্যেও দুজনের মুখে প্রশান্তির হাসি। আজ অনেক দিন পর প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয় ছাড়াই ঘুমাচ্ছে। তাই এ প্রশান্তির হাসি।
।
।
সকালে।
।
ইতি রোদের বুকের আস্টে-পৃষ্টে লেগে আছে। কখন যে ঘুমের মাঝে এসে রোদকে জড়িয়ে ধরেছে সে নিজেও জানে না। আর রোদ ইতিকে পেয়ে নিজের বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখার মতো করে আগলে ধরে রেখেছে। যেনো আর কখনও ছাড়বে না। দুজনি কিছুটা নড়ে উঠায় দুজনের ঘুম ভেংগে গেলো। একে অপরকে এমন অবস্থায় আবিষ্কার করে লজ্জায় ইতির যায় যায় অবস্থা। ইতি মনে মনে বলছে আল্লাহ দড়ি ফালাও উঠে যাই। কি লজ্জা কি লজ্জা। রোদও মাথা নিচু করে বসে আছে। কিছু বলতে পারছে না।
।
।
রোদ- ফ্রেস হয়ে আসি অফিসে যাবো।
।
ইতি- আজ তো Friday অফিস বন্ধ।
।
রোদ- ওহ তাই তো। একদম মনে নেই। তাহলে বসায় যাই। বলেই সামনে যেতে নেয়।
।
ইতি- আজ এখানেই থাকি???
।
রোদ- থাকবে তুমি???
।
ইতি- হুম
।
রোদ ইতি মাথায় হাত দিয়ে চুল নেড়ে দিয়ে বলল ঠিক আছে
।


।
।
দুজনেই ডুপলেক্স হাউজে ডুকলো। ইতিকে চিন্তিতো দেখাচ্ছে।
।
রোদ- কি হলো?? কিছু ভাবছো?? কোন সমস্যা???
।
ইতি- না মানে ফ্রেস হয়ে পরবো কি???
।
রোদ- ওহ এই চিন্তা এসো। রোদ ইতির হাত ধরে টেনে অন্য একটা রুমে নিয়ে গেলো।
।
ইতি- হা করে দেখছে রুমটাকে। এতো সুন্দর করে সাজানো।
।
রোদ- আলমারি খুলে দিলো। এখান থেকে যেটা ভালো লাগে পড়ে নাও।
।
ইতি- এতো কিছু কার???? এতো এতো শাড়ি??
।
রোদ- সব মায়ের। মা হুট হাট চলে আসতেন তাই এখানেই সব রাখা যেনো কাপড় ছাড়া আসলে কোন সমস্যা না হয় তাই। তুমি মায়ের রুমের বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এখান থেকে যা ইচ্ছা হয় পরে নাও। আমিও ফ্রেস হয়ে আসি।
।
ইতি- হা করে রইলাম কোনটা রেখে কোনটা পরবো। তারপর চোখ আটকে গেলো একটা কালো তাঁতের শাড়িতে। ফ্রেস হয়ে শাড়ি পরছিলাম। কুচি ঠিক করতে গিয়ে আঁচলটা বুক থেকে পরে গেছে।
।
রোদ- আমি ভাবছি কি.......হা হয়ে রইলাম
।
ইতি- আআআআআ বলেই চিৎকার দিয়ে ঘুরে গেলাম।
।
রোদ- সরি সরি সরি বলেই ঘুরে দাড়ালাম। আমি কিছু দেখিনি।
।
ইতি- যে ভাবে হা করে তাকিয়ে ছিলো বলে কি না দেখেনি মনে মনে ভাবলাম। এভাবে কেউ রুমে আসে। আপনি জানেন না আমি চেন্জ করছি।
।
রোদ- আমি ভেবেছিলাম তুমি বাথরুমে আছো তাই চলে এসে ছিলাম।
।
ইতি - এখন যান দাড়িয়ে আছেন না। আমি না ডাকা পর্যন্ত আসবেন না।।
।
রোদ- ওকে সরি আমি বাইরে আছি। সরি
।
ইতি- ইসসসস,,,,,যখনই ওনি আমার আশে পাশে থাকে তখনিই এমন কিছু না কিছু ঘটে। শুধু লজ্জা আর লজ্জা। শাড়ি পড়া শেষ করে ওনাকে ডাকলাম এখন আসতে পারেন।
।
রোদ- ভিতরে ঘুকলাম যেই ইতি ঘুরে দাড়ালো হা করে তাকিয়ে রইলাম। কালো তাঁতের শাড়ি। মায়ের সবচাইতে পছন্দের শাড়ি মা যখন পরতেন আমি মায়ের দিক থেকেও চোখ সরাতে পারতাম না। মা বলতেন এই শাড়িটা ওনি আমার বউকে পরাবেন আমি দেখলে চোখ ফেরাতে পারবো না। মায়ের ইচ্ছেটা আজ পূরণ হলো আমি সত্যি আমার বউয়ের থেকে চোখ ফেরাতে পারছি না। কিন্তু....
।
ইতি- কি দেখছে ওমন করে???
।
রোদ- একটা কমতি আছে।
।
ইতি- কি???
।
রোদ- পেয়েছি।
।
।
রোদ ইতির একদম কাছাকাছি চলে এলো। একদম কাছে। যতটা কাছে গেলে নিঃশ্বাস ও শুনা যায়। রোদ কাছে এলেই ইতির নিঃশ্বাস ভাড়ি হয়ে যায়। এখনও ঠিক তাই হলো। রোদ একপাশে হাত দিলো কিছু একটা নেবার জন্য। একটা টিপের পাতা। ছোট্ট একটা কালো টিপ ইতিকে পড়িয়ে দিলো।
।
রোদ- ঠিক মা যেভাবে সাজতেন। হালকা কাজল, হালকা লিপস্টি আর ছোট্ট একটা টিপ। অপরুপ
।
ইতি- কিহ....
।
রোদ- নাহ কিছু না। অপরুপ লাগছে মনে মনে বলল।
।
ইতি- আমায় কেমন লাগছে???
।
রোদ- বলতেই হবে???
।
ইতি- হুম....
।
রোদ- সব সৌন্দয্যের প্রশংসা করা যায় না।। তবুও চোখ ফেরানো দায়।।
।
ইতি- রোদের কথায় লজ্জায় লালল হয়ে যাচ্ছিল।। আচ্ছা তখন কিছু বলতে চাইছিলেন।
।
রোদ- বলছিলাম বাইরে খাবার অর্ডার করে দেই। তুমি কি খাবে??
।
ইতি- বাইরে কেনো অর্ডার করবেন???।
।
রোদ- এখানের কাজের লোক ছুটিতে তাই রান্না করার কেউ নেই।
।
ইতি- কেনো এই আস্ত মানুষটা কি আপনার চোখে পরছে না???
।
রোদ- তুমি রান্না করবে???
।
ইতি- জ্বি......আমি রান্না করবো।
।
রোদ- তোমার কষ্ট করে....
।
ইতি- কোন কষ্ট হবে না। আপনাকে চা করে দিচ্ছি আপনি চা খান আমি রান্না সেরে নিবো।
।
।
রোদ এখন হাজার বারণ করলেও ইতি আর শুনবে না। তাই আর বারণ করলো না। উল্টো ভালোই হলো। বউয়ের হাতের রান্না খাওয়া যাবে।
।
রোদ চা খেতে খেতে অফিসের কিছু কাজ ও করে নিলো। মানুষটা পারেও এতো কাজ মানুষ কিভাবে করে।
।
রান্না শেষ করতে দেখে রোদ বসে বসে টিভি দেখছে। বাচ্চাদের মতো কার্টুন দেখছে। দেখে হাসি পেলো।
।
হঠ্যাৎ বাতাস শুরু হয়ে গেলো। আকাশটাও মেঘলা।
।
ইতি- আমরা একটু পুকুর পাড়ে গিয়ে বসি??
।
রোদ- এই ওয়েদারে??? বৃষ্টি হবে যে।
।
ইতি- প্লিজ....
।
মেয়েটার প্লিজ বলা শুনে রোদ আর না করতে পারে নি।
।
পুকুরের পাশি গিয়ে বসতেই।
।
।
ইতি- একটা আবদার করি??
।
রোদ- হুম
।
ইতি- একটা গান শুনাবেন??
।
।
রোদ- তুমি বসো আমি আসছি।
।
ইতির মন খারাপ হয়ে গেলো। হয়ত গান শুনতে চাওয়ায় চলে গেলো।
।
আচমকাই গিটারের আওয়াজে বিস্ময় চোখে ইতি ঘুরে তাকালো।
।
।
বাদলা দিনে মনে পড়ে ছেলেবেলার গান
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান
।
যদি ডেকে বলি, এসো হাত ধরো
চলো ভিজি আজ বৃষ্টিতে
এসো গান করি মেঘ মল্লারে
করুনাধারা দৃষ্টিতে
আসবে না তুমি; জানি আমি জানি
অকারনে তবু কেন কাছে ডাকি
কেন মরে যাই তৃষ্ণাতে
এইই এসো না চলো জলে ভিজি
শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতে
।
কত না প্রণয়, ভালোবাসাবাসি
অশ্রু সজল কত হাসাহাসি
চোখে চোখ রাখা জলছবি আঁকা
বকুল কোন ধাগাতে
কাছে থেকেও তুমি কত দূরে
আমি মরে যাই তৃষ্ণাতে
চলো ভিজি আজ বৃষ্টিতে
।
যদি ডেকে বলি, এসো হাত ধরো
চলো ভিজি আজ বৃষ্টিতে
এসো গান করি মেঘো মল্লারে
করুনাধারা দৃষ্টিতে
আসবে না তুমি; জানি আমি জানি
অকারনে তবু কেন কাছে ডাকি
কেন মরে যাই তৃষ্ণাতে
এইই এসো না চলো জলে ভিজি
শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতে
।
বাদলা দিনে মনে পড়ে ছেলেবেলার গান
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান
।
।
।
রোদেরর গান থামার সাথে সাথে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। যেনো বৃষ্টি গান থামার অপেক্ষায় ছিলো।
।
রোদ উঠে বারান্দায় চলে গেলো। পিছু ঘুড়ে দেখে ইতি নেই। পুকুর ঘাটে দাড়িয়ে ঘুরে ঘুরে বৃষ্টিতে ভিজছে। অপূর্ব লাগছে দেখতে। অনেক্ষণ এভাবে ভিজতে দেখলে ইতিকে।
।
।
রোদ- এই চলে এসো ঠান্ডা লাগবে।
।
ইতি- কিইইই.....শুনতে পাই না।
।
অগত্য রোদকেই বেরিয়ে আসতে হলো। ইতি হাত ধরে টানতে লাগলো।
।
ইতি- না আমি ভিজবো।
।
রোদ- না আর ভিজা লাগবে না। শেষে জ্বর চলে আসবে।।
।
ইতি- না যাবো না
।
রোদ- OK Fine।। বলেই রোদ ইতিকে কোলে তুলে নেয়।
।
ইতি- একিইইই,,,,,,পরে যাবো তো।
।
রোদ- পরলে পরো তাও ছাড়ছি না।
।
।
ইতি হাত পা ছটফটাতে লাগল। রোদ নামালই না। একেবারে রুমে নিয়ে নামিয়ে দাড়ালো।
।
রোদ নিজের ভেজা শার্টটা খুলে ফেলল।
।
।
ইতি ঘুরতেই ওর ভেজা চুল গিয়ে রোদের মুখে লাগে।
।
শার্ট ছাড়া রোদের দিক থেকে ইতি যেনো চোখ সরাতে পারছে না। লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রোদের দিকে।
।
সে এক অন্য রকম অনুভূতি। ভেজা কাপড়ে ইতির থেকে চোখই ফেরাতে পারছে না রোদ। পৃথিবীর সব সুখ যেনো ইতির মাঝেই আল্লাহ দিয়ে দিয়েছে রোদের জন্য।
।
এক পা দু পা করে ইতির দিকে এগোতে লাগলো। রোদের আগানো দেখে ইতি পিছাতে লাগলো। পিছাতে পিছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলো ইতি। আর যাওয়ার জায়গা নেই। রোদ যেনো থামছেই না। একেবারে ইতির কাছে চলে এলো। দু হাত দু পাশে দিয়ে দাড়ালো। ইতির নিঃশ্বাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। ইতির গরম নিঃশ্বাস গিয়ে রোদের বুকে লাগছে। বুকের ভেতর তোলপাড় চলছে। একটু একটু করে মুখটা কাছে নিতে লাগলো। ইতি চোখমুখ শক্ত করে দাড়িয়ে রইল। রোদের নিঃশ্বাসটা আরো কাছে অনুভব করতে পারছে।
।
।
।
চলবে.......\\\
রোদ ইতির একদম কাছে চলে এলো। ইতির নিঃশ্বাস ঘাঢ় হয়ে যাচ্ছে। বুকের ভিতর তোলপাড় করছে। মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি দিয়ে বুকের মাঝে দিপ দিপ করে বারি দিচ্ছে। ইতি মাথা নিচু করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে। রোদ তার হাত ইতির থুতুনিতে রেখে ইতির মুখ উপরে তুলল। এখনও ইতি চোখ বন্ধ করে আছে। রোদ ইতির কপালে হাত দিয়ে টিপটা ঠিক করে দিলো।
।
।
রোদ- এখন ঠিক আছে।
।
ইতি বিস্ময় নিয়ে চোখ খুলে তাকালো রোদের দিকে।
।
রোদ- তোমার টিপটা সরে গিয়েছিলো। এখন ঠিক আছে।
।
।
ইতির এতো লজ্জা লাগছিলো। মনে মনে কত কি ভেয়ে নিয়ে ছিলো আর হলো কি। লজ্জায় রোদের বুকে দুহাত দিয়ে ধাক্কা দিলো।
।
ইতি- লজ্জায় ওনাকে ধাক্কা দিয়ে বললাম ইসসস আপনি না। বলেই দৌড়ে চলে এলাম।
।
ফ্রেস হয়ে নিলো দুজনেই।
।
রোদ- খুব ক্ষুদা পেয়েছে।।
।
ইতি- আসেন খাবার দিচ্ছি।
।
।
খেতে বসে।
।
রোদ- তুমি কিভাবে বুঝলে আজ বৃষ্টি হবে।
।
ইতি- কেনো???
।
রোদ- এই যে খিচুড় রান্না করলে।
।
ইতি- না খিচুড়ি তো আপনা.....থেমে গেলাম বললাম না।
।
রোদ- কি হলো???
।
ইতি- কিছু না। এমনি খেতে ইচ্ছে হলো তাই রান্না করলাম। কেনো ভালো হয় নি??
।
রোদ- নাহ ভালো হয়েছে। একটা হাসি দিয়ে খেতে লাগলাম। মনে মনে ভাবছি শুধু কি খেতে মন চাইলো তাই রান্না করেছো নাকি আমি পছন্দ করি বলে।
।
ইতি- মনে মনে বলছি আপনি খিচুড়ি ভালোবাসেন বলেই রান্না করেছি।
।
আজ রোদ অনেক দিন পর তৃপ্তি করে খেলো। খাওয়া শেষ হতেই রোদের মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেলো।
।
রোদ- আহ....কি ঝাল।
।
ইতি- ঝাল লেগেছে বড় বড় চোখ করে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- হুম অনেক ঝাল একটু মিষ্টি হবে?? মুচকি হাসি দিলাম।
।
ইতি- ওনার মুচকি হাসি দেখে বুঝে গেলাম মজা করছেন। দূর আপনি। লজ্জা পেয়ে গেলাম। চলে যেতে নিলাম ওনি পিছন থেকে হাত ধরলেন।
।
রোদ- লজ্জা পেয়ে পালাচ্ছিলো হাত ধরে ফেললাম। একটানে কাছে নিয়ে এলাম। ওর পিঠটা আমার বুকে এসে ঠেকলো। কাধ থেকে ওর ভিজা চুল গুলো সরিয়ে দিলাম। মুখটা কাধের কাছে নিলাম।
।
ইতি- ওনার নিঃশ্বাস এসে আমার কাধে লাগছে। উফফ,,,,,সহ্য হচ্ছে না। আবার বুকের ভিতর দুরপুকানি শুরু হয়ে গেলো।
।
রোদ- মিষ্টি খাওয়াবে না।
।
ইতি- মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না তাও বললাম,,, হাত না ছাড়লে মিষ্টি আনবো কিভাবে।
।
রোদ- ওই মিষ্টি খাবো না।
।
ইতি- তাহলে???
।
রোদ- তোমার মিষ্টি খাবো।
।
ইতি- ইসসস,,,,,আপনি না বলেই নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে এলাম।
।
।
এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে ওরা একে অপরের সাথে।
।
সারাদিন ভালোই কাটলো। অনেক গল্প করলো। একে অপরকে অনেকটা জানো। ইতি ভাবছে মানুষটাকে যতটাও খারাপ ভেবেছে আসলে ওতো তাও খারাপ না। নারিকেলের মতো বাহিরটা শক্ত ডাবের মত ভিতরটা একদম নরম।
।
রোদ ভাবছে মেয়েটা কি নিঃষ্পাপ একদম বাচ্চাদের মতো। আরো বেশি প্রেমে পরে গেলো সে তার বউটার।
।
সারাদিন অনেক হইচই করে দুজনেই ক্লান্ত কাল অফিস যেতে হবে তাই সন্ধ্যার পর বাসার জন্য রওনা দিলাম। বাসায় আসতে আসতে রাত প্রায় ১০টা দুজন ফ্রেস হয়ে নিলো। ইতি রুম থেকে বের হতে নেয় রোদ আটকায়।
।
রোদ- কোথায় যাও???
।
ইতি- ডিনার করা লাগবে না??? রান্না করে আসি??
।
রোদ- নাহ,,,,,,এখন কষ্ট করে রান্না করা লাগবে না। আমি খাবো না।
।
ইতি- কেনো??? আমার কষ্ট হবে না।
।
রোদ- বললাম তো লাগবে না।
।
ইতি- আচ্ছা তাহলে কফি করে আনি।
।
রোদ- সেটা করতে পারো। আমি বারান্দায় বসছি।
।
ইতি কফি নিয়ে ডুকতেই গিটারের আওয়াজ পেলো। গিটারের সুরে ইতির ভালো মনটা আরও কয়েক হাজার গুন বেশি ভালো হয়ে গেলো। কফি নিয়ে বারান্দায় এসে দেখে রোদ ইতির জন্য রকিং চেয়ারটা রেখে সোফায় বসে আছে গিরার হাতে। ইতি কফি রেখে বসতে বসতেই রোদ গান ধরলো।
।
।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান, মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান, মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়, জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়,
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
হো, আমি তোমার ইচ্ছে ঘুড়ি যেমন উড়াও তেমন উড়ি, স্বপ্নগুলো মুঠোয় নিয়ে কেমন লুকোচুরি।
।
বন্দিকরে রাখব তোমায় ভালোবাসার জেলখানায় বন্দিকরে রাখব তোমায় ভালোবাসার জেলখানায় ।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়,
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান,
।
আমার প্রান ধরিয়া মারো টান মনটা করে আনচান ।
।
জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়, জোয়ার নদীর উতল বুকে প্রেমের নৌকা উজান বায়।
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়
।
বারে বারে বন্ধু তোমায় দেখিতে মন চায়।
।
।
।
গান শেষ করেই ইতির দিকে তাকায়। ইতি একটা প্রশান্তির হাসি দেয় দেখে রোদের মনটা জুরিয়ে যায়।
।
।
ঘুমানোর সময়।
।
ইতি- একটা কথা বলি???
।
রোদ- হুম,,,,বলো।।
।
ইতি- আমি না হয় অন্য রুমে ঘুমাই।
।
রোদ- অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম ইতির দিকে। হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম। একদম কাছে। ওর কপালে কপালে লাগিয়ে চোখে চোখ রেখে বললাম। থাকো না আমার পাশে।
।
ইতি- ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওনি আমার এতোটা কাছে। ওনার মাঝে এক অস্থিরতা দেখলাম। কিছু হারিয়ে ফেলার ভয় দেখলাম ওনার চোখে। বললাম থাকবো। ওনি আমার কপালে একটা চুমু খেয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলেন মাঝে অনেকটা দূরত্ব রেখে।
।
রোদ- ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে শুয়ে পরলাম। এর বেশি যে কিছুই চাইতে পারবো না। পাগলীটাকে কষ্ট দিতে চাই না যে।
।
ইতি- আমিও শুয়ে পরলাম। ঘুম আসছে না। ওনি কি ঘুয়েছেন। ছটফট লাগছে। মন চাইছে ওনার কাছে যাই। লজ্জাও করছে। কি ভাবেন। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম।
।
।
সকালে।
।
ইতি- আজ ওনার আগে আমি উঠেছি। ঘুমের মধ্যে কাছে এসে একটা হাত আমার পেটে উপর দিয়ে রেখেছেন। আলতো করে ওনার হাতটা সরিয়ে দিলাম। ওনি আরো শক্ত করে ধরলেন। ছাড়িয়ে নিলাম
উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিলাম, নাস্তাও রেডি করে ফেললাম। ওনাকে ডাকতে এসে দেখি ওনি ঘুম থেকে উঠে বসে বসে কি যেনো ভাবছেন আর মুচকি মুচকি হাসছে। আমাকে দেখে থেমে গেলেন। নাস্তা করে অফিসে চলে এলাম।
।
।
অফিসে।।
।
রাফসান- কি মেডাম আজ খুব হাসি খুশি লাগছে।
।
ইতি- কোই না তো??
।
রাফসান- হুম বুঝতে পেরেছি।
।
ইতি- কি??
।
রাফসান- কিছু তো হয়েছে।
।
ইতি- কিছুই হয় নি।
।
রাফসান- হ্যা আসলেই কিছু হয় নি তাই তো স্যার এ নিয়ে পাঁচ বার কেবিন থেকে বেরিয়ে এলেন তোমাকে দেখতে কিছু হলে তো.....
।
ইতি- অবাক হয়ে হা করে রাফসানের দিকে তাকালাম।
।
রাফসান- আমাকে না দেখে মাথাটা ঘুরি পিছনে তাকাও বেচারে কে একটু দর্শন দাও। এখন না দেখলে হয়ত পাগল টাগলই হয়ে যাবে।
।
ইতি- পিছনে ঘুরতেই দেখি স্যার দাড়িয়ে আছেন। সত্যি সত্যি আমাকে দেখছেন। ইসস.....ওনার চোখে চোখ পরতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম ওনি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলেন।
।
রাফসান- কবে বলছো???
।
ইতি- কি???
।
রাফসান- ওনাকে মনের কথা???
।
ইতি- উহু....বলে মাথা নাড়ালাম।
।
রাফসান- কেনো???
।
ইতি- ওনাকে বলতে হবে।
।
রাফসান- যদি না বলে???
।
ইতি- আরে বলবে বলবে না বলে যাবে কোই আমার কাছেই আসতে হবে।
।
রাফসান- ইতি Don't be funny Seriously বলছি যদি কোন কারণে ওনি না বলে তাহলে কি হবে??
।
ইতি- হারিয়ে যাবো।
।
রাফসান- মানে???
।
ইতি- ওনাকে কথা দিয়েছি কাজটা হলেই চলে যাব অনেক দূরে। তাই এর মধ্যে ওনি না বললে চলে যাবো। বলেই চলে এলাম রাফসানকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না।
।
রিমি- আপনার কি হলো??? আপনি এমন করছেন কেনো??
।
রাফসান- তো কি করবো??? রাগে বললাম। দুজন দুজন কে ভালোবাসা সাফ দেখা যাচ্ছে কিন্তু একে অপরের সুখের কথা ভেবে কেউ কাউকে কিছুই বলছে না।
।
রিমি- ব্যাভা চেকা খেয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
।
রাফসান- এই মেয়ে সবাই কি আমার মতো যে বলে দিবে মনের কথা।
।
রিমি- হাহ.....আপনিও কি কম নাকি??? স্যারের জন্য বলেছেন। নিজে থেকে বলেছেন নাকি হুহ.....ভেংচি দিয়ে চলে এলাম।
।
রাফসান- ওমা এখন দেখিও এ ও আমায় খেচি দিয়ে চলে গেলো।
।
রাফসান আর রিমি অনেক চিন্তা করল কি করবে। শেষে ভেবে বের করল আসলে স্যারের মনে কি চলছে তা জানা লাগবে। কিন্তু কে যাবে??? রাফসানের সাথে ইতির সর্ম্পক ভালো তা স্যার জানে। তাই সেভাবে কথা বলতে পারবে না। রাফসান মুচকি হাসি দিয়ে রিমিরর দিকে তাকিয়ে রইল।
।
রিমি- কি কি হ্যা কি দেখছেন???
।
রাফসান- হাসিটা আরেকটু বেড়ে গেলো।
।
রিমি- Impossible আমি পারব না। অসম্ভব। স্যারকে দেখলেই আমার হাত পা শক্ত হয়ে যায়।
।
রাফসান- আরে বেবি শুন তুমি পারবা। ভয়ের কি আছে??? আমি আছি তো।
।
রিমি- অসহায়ের মত ওনার দিকে তাকালাম। ওনি আমাকে ঠেলে ঠেলে স্যারের কেবিনে পাঠিয়ে দিলেন।
।
দোয়া দূরুত পরে ভিতরে চলে গেলাম।
।
রিমি- স্যার আসবো??
।
রোদ- এসো।
।
রিমি- স্যার ফাইল গুলো দেখে দিতে হবে।
।
রোদ- বসো দেখছি।
।
রিমি- মনে মনে ভাবছি অনেক গুলো ফাইল এনেছি যেনো সময় পাই।
।
রোদ- কিছু বলবে রিমি??? হয়ত কিছু বলতে চাও।
।
রিমি- না মানে আসলে স্যার.... ঢোক গিললাম।
।
রোদ- বলো কি বলতে চাও।
।
রিমি- স্যার আসলে আপনার পারসোনাল ব্যাপারে বলার রাইট আমার নেই। তাও না বলে পারছি না। আসলে। আবার ঢোক গিললাম। আসলে স্যার ইতি মেম কি সত্যি চলে যাবে??? বলেই অসহায়ের দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলাম স্যারের দিকে।
।
রোদ- একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে একগ্লাস পানি রিমিকে দিয়ে বললাম পানিটা খাও। মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে এক টানে পানিটা খেয়ে নিলো। জানো রিমি ইতি অনেক ভালো একটা মেয়ে। যার জীবনে যাবে সে অনেক সুখী হবে। কিন্তু কি জানো আমার কপালে হয়ত সে সুখটা নেই।
।
রিমি- জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে স্যারের দিকে তাকালাম।
।
রোদ- আমি জানি তুমি ইতিকে অনেক ভালোবাসো তাই সব ভয় ডর বাদ দিয়ে আমাকে প্রশ্নটা করছো। সত্যি কি জানো আমি মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি বললে হয়ত ও আমাকে ছেড়ে যাবে না জানি। কিন্তু আমি ওকে আর কষ্ট দিতে চাই না। অনেক কষ্ট দিয়েছি আর না। ওর সুখের কারণ হতে না পারি অন্তত আর ওর কষ্টের কারণ হবো না। তাই ওর সুখেই আমি সুখি।
।
রিমি- কিন্তু স্যার....
।
রোদ- ইটস ওকে রিমি আর স্বার্থপর হতে পারছি না।
।
রিমি- স্যার আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলেন না। মন চাইছিলো সব বলে দেই। বের হয়ে চলে এলাম। মুখ ভার করে রাফসানকে সব বললাম। রাফসানও মুখ ভার করে বসে রইল।
।
।
।
চলবে.......#বস_বর
Part - 15
Writer : Eti Chowdhury
রাফসান আর রিমি মুখ ভার করে বসে রইল।
।
রিমি- এখন কি হবে???
।
রাফসান- হুম কিছু একটা তো করতেই হবে।
।
।
দু দিন পর অফিসে নতুন লোক নেয়া হবে তাই ইন্টারভিউ চলছে।
।
ইতি আর রাফসান মিলে ইন্টারভিউ নিচ্ছে। রোদের বিশেষ কাজ থাকায় সে থাকতে পারেনি। তাছাড়া ইতি আর রাফসানের উপর তার বিশ্বাস আছে। তারা বেস্ট টাকেই বেছে নিবে।
।
সকাল থেকে অনেকগুলো ইন্টারভিউ নেয়া হলো। কিন্তু কোম্পানির জন্য যোগ্য কাউকেই তাদের পছন্দ হচ্ছে না।
।
আদি- May I come in???
।
ইতি- Yes, come in. Seat Down.
।
আদি- Thank You.
।
ইতি- Your CV is quiet impressive.
।
ওরা একে একে প্রশ্ন করল।
।
রাফসান- আপনি একটু বাহিরে অপেক্ষা করেন আমরা আপনাকে একটুপর ডাকছি।
।
ওরা দুজনই পজেটিভ।
।
ইতি- ওকে তাহলে এটাই ফাইনাল।
।
রাফসান- ওকে।
।
আদিকে আবার ভিতরে আসতে বলা হলো।
।
ইতি- Welcome to the Company.
।
আদি- Thank you Ma'am.
।
রাফসান- She is Eti Chowdhury. Member of Company Board From Now on You will assist her.
।
ইতি হেন্ডসেক করল হাসি দিয়ে।
।
আদি- Thank You Ma'am.
।
ইতি- আপনি কাল থেকে জয়েন করছেন।
।
আদি সট্রংলি ইতিকে এসিস্ট করা শুরু করল। কাজের প্রতি ভালোই ডেডিকেটেড ছেলেটা।
।
দুদিন পর Business Trip শেষ করে রোদ বাসায় না গিয়ে সোজা অফিসে চলে আসে।
।
ইতি মিটিংএ ব্যস্ত থাকায় এখনো জানে না যে রোদ এসেছে।
।
মিটিংএ শেষ করে বের হতেই রিমি এগিয়ে এলো।
।
রিমি- MD Sir এসেছেন।
।
ইতি- ইতি প্রশান্তির একটা হাসি দিয়ে চোখের পলক ফেলে ধন্যবাদ জানলো রিমিকে। ইতি সোজা ক্যান্টিনে চলে গেলো। নিজের হাতে কফি বানালো। এতো দিনে রোদের কফির টেস্টটা ভালোই রপ্ত করতে পেরেছে ইতি। আর ইদানিং ইতির হাতের কফি ছাড়া রোদও খায় না। ইতি কফি নিয়ে রোদের কেবিনের দিকে হাটা দিলো। কেবিনের কাছাকাছি আসতেই ইতি টের পেলো আদিও ওর পিছু পিছু আসছে। ইতি থেমে গিয়ে ঘুরে দাড়ালো।
।
ইতি- কিছু বলবে???
।
আদি- No Ma'am
।
ইতি- তাহলে??
।
আদি- No, Actually
।
ইতি- তুমি গিয়ে ফাইল গুলো Complete করো আমি আসছি।
।
আদি- ওকে।।
।
।
ইতি হাসি মুখে রোদের কেবিনে ডুকে গেলো। কতক্ষণে রোদকে দেখবে আর তর সইছিলো না ইতির তাই নক না করেই ভিতরে চলে গেলো।
।
ইতি- হালকা হাসি মুখে বলল কফি।
।
রোদ পিছনে ফিরে তাকালো। ইতিকে দেখে রোদের চোখ, মুখ উজ্জল হয়ে গেলো সেও হেসে দিলো। ইতি কফিটা টেবিলে রেখে দিলো। রোদ ইতির দিকে এগোতে লাগলো। রোদ এক পা এগোচ্ছে ইতি এক পা পিছাচ্ছে।
।
রোদ- Thank you
।
ইতি- How was the trip???
।
রোদ- Successful
।
ইতি- Congratulations
।
রোদ- Thank you
।
কথা বলতে বলতে এসে ইতির পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলো। রোদ ইতির একদম সামনে এসে দাড়িয়ে গেলো। একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ তার দু হাত ইতির দুপাশে দিয়ে ইতিকে আটকে দাড়িয়ে রইল। অপলক তাকিয়ে রয়েছে ইতির দিকে। রোদের গভীর চোখ দুটোতে ইতির হারিয়ে যেতে মন চাইছে। রোদ মন ভরে ইতিকে দেখছে। মুখটা ইতির আরো কাছে নিতেই ইতি চোখ বন্ধ করে নিলো। রোদ আলতো করে ইতির কপালে একটা চুমু দিয়ে দিলো। ইতি লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। এমন সময় রিমি দেখে ফেলল।
।
।
রিমি- Sorry আমি কিছু দেখি বলেই রিমি পিছনে ফিরে গেলো।
।
ইতি- ইসস,,,,লজ্জায় ইতি বের হয়ে গেলো।
।
রিমি গিয়ে Already রাফসানকে সব বলে দিয়েছে।
।
রাফসান- তাই বুঝি তলে তলে এতো কিছু চলছে???
।
ইতি রাগি রাগি চোখ করে রিমির দিকে তাকিয়ে রইল।
।
রাফসান- হুহ....আমাদের বলে কিছুই বলবে না আর নিজেরা নিজেরা ঠিকি
।
ইতি- wait wait wait.....তোমরা যা ভাবছো আসলে তেমন কিছুই না। না আমি ওনাকে বলেছি না ওনি আমাকে বলেছেন।
।
রাফসান- তাহলে.....
।
ইতি- এটা সত্যি যে আমি ওনার স্ত্রী আর আমার ওপর ওনার অধিকার আছেন। ওনাকে পাবো কি না জানি না তাই যেটুকু পাই তা হারাতে চাই না। আর পাগলটা যে আমাকে ভালোবাসে তা তো আমি জানিই শুধু তাকে দিয়ে বলানোর অপেক্ষায় আছি। বলতে তো হবেই By hook or by cook
।
রাফসান- তোমরা দুজনই পাগল যত্তসব
।
রাফসান রাগ করে চলে গেলো।
।
রোদ সারাদিনে খেয়াল করল। একটা ছেলে সারাক্ষণ ইতির পাশে পাশে থাকছে। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য কাউকে কিছু জিঙ্গেস করা হয় নি।
।
বাসায় এসেও রোদ কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ইতির সাথে সেভাবে কথা হয় নি।
।
পরের দিন অফিসে।
।
সকাল থেকে ইতির মনটা খারাপ। সুন্দর মুখটায় কালো মেঘের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। কিন্তু কেউ বুঝতেই পারছে না। সকাল থেকে এক কাপ কফি হাতে নিয়ে বসে আছে কিন্তু এক চুমুক কফিও সে খায়নি। ইতির মন খারাপ দেখে রোদ অস্থির হয়ে যাচ্ছে ঠিকি কিন্তু তাও কিছু বলছে না। কারণ ইতির উপর তো তার অধিকার নেই। কিন্তু রাফসান আর থাকতে না পেরে ইতিকে জিঙ্গেস করেই ফেলে।
।
রাফসান- সমস্যা কি???
।
ইতি ভাবনায় বিভর। রাফসানকে সে দেখেই নি। রাফসান টেবিলে একটা বারি দেয়।
।
রাফসান- ইতি বলে চিৎকার দেয়।
।
ইতি - কেঁপে উঠে। হ্যা কে কি??
।
রাফসান- সমস্যা কি তোমার??? কি হয়েছে???
।
ইতি- কিছু না রাফসান। আমি ঠিক আছি।
।
এমন সময় আদি চলে আসে। নক না করেই চলে আসে।
।
আদি- এই পেপারগুলো....
।
ইতি- কি ব্যাপার মেনার ভুলে গেছো নাকি??? I am your boss. নক না করে কেনো এলে??? আমি কি ডেকেছি তোমাকে??? অনেকটা চিৎকার করেই বলল ইতি কথা গুলো।
।
রাফসান- আদি প্লিজ Now go
।
আদি- I am Sorry মন খারাপ করে চলে যায় ছেলেটা।
।
রাফসান ইতির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। ইতি আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না। চোখ বেয়ে পানি পরতে থাকে মেয়েটার।
।
রাফনাস- কি হয়েছে???
।
ইতি চুপ করে রইল।
।
রাফসান- চোখের পানি মুছ। কি হয়েছে বলো।
।
ইতি তাও চুপ করে রইল।
।
রাফসান- দেখো এখন যদি তুমি আমাকে কিছু না বলো তাহলে কিন্তু আমি স্যারকে গিয়ে জিঙ্গেস করবো। রাফসান আর দাড়ালো না হাটা শুরু করলো।
।
ইতি- সময় শেষ হয়ে আসছে রাফসান
।


।
রাফসান দাড়িয়ে গেলো।
।
ইতি- আমি মনে হয় ওনাকে হারিয়েই ফেলবো।



।
রাফসান- কেনো বলছো এই কথা???
।
ইতি- আর মাত্র দেড় মাস বাকি এর পরে আমায় ওনাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে রাফসান। আমি পারবো না ওনাকে ছাড়া থাকতে। আমি পারবো না।
অনেক্ষণ কান্না করলাম।


।
রাফসান- তুমি কেনো বলছো না ওনাকে??
।
ইতি- না রাফসান তা হয় না ওনার ওপর বোঝা হতে চাই না। আর আমার ভালোবাসা ওনার ওপর চাপিয়ে দিতে চাই না। তাই ওনার জন্য হলেও ওনাকে ছেড়ে চলে যাবো।
।
রাফসান- কিন্তু ইতি...
।
ইতি- প্লিজ রাফসান আর না আমি আমার ডিসিশন চেন্জ করবো না। বলেই চলে এলাম।
।
নিচে নামতেই আদিকে দেখতে পেলাম। ওহেতুক ছেলেটাকে বোকলাম। সরি বলা দরকার ভেবেই ইতি আদির কাছে যায়।
।
ইতি- সরি
।
আদি অবাক হয়ে পাশে তাকায় দেখে ইতি। ইতিকে দেখেই হাসি দিয়ে দিলো।
।
ইতি- আসলে তখন আমার ওভাবে বলা উচিত হয়নি। Actually.....
।
আদি- ইটস কে। আমি কিছু মনে করিনি। কিন্তু...
।
ইতি- কিন্তু কি??
।
আদি- আপনার মন খারাপ কেনো???
।
ইতি- তোমাকে না কত বার বলেছি আমাকে তুমি করে বলতে।
।
আদি- ওকে ওকে। বলছি আগে বলো তোমার মন খারাপ কেনো???
।
ইতি- কিছু না
।
আদি- কিছু তো অবশ্যই কিন্তু বলতে না চাইলে জোর করছি না।
।
ইতি অনেক্ষণ বসে আদির সাথে গল্প করল। ছেলেটা অনেক সুন্দর করে কথা বলে। এত মজার মজার কথা বলল যে ইতি খিল খিল করে হেসে দিলো। আদির কথা শুনে যেনো ইতির হাসিই থামছে না। রোদ দেখছে। কিছু বলছে না।
।
আদি- এভাবে হাসলেই আপনাকে সরি তোমাকে ভালো লাগে।
।
রোদ- রিমি আমার কেবিনে একটু আসতো।
।
রিমি- আসব স্যার???
।
রোদ- হুম....ওই ছেলেটাকে দুদিন ধরে দেখছি। কে???
।
রিমি- ও তো আদি। ইতি মেম কে এসিস্ট করছে। পরশু যে ইন্টারভিউ হলো ওকেই সিলেক্ট করেছে ইতি মেম আর রাফসান স্যার।
।
রোদ- ওহ.....ওকে তুমি যাও।
।
আদির সাথে কথা বলেই ইতির মনটা কিছুটা ভালো হয়ে গেলো। মন খারাপের কথা ভুলেই গিয়েছিলো।
।
রোদ। বেরিয়ে এলো।
।
রোদ- কি ব্যাপার কাজ রেখে হাসা হাসি হচ্ছে খুব।
।
রোদকে দেখেই ইতির হাসি থেমে গেলো।
।
ইতি- না স্যার Actually আমরা Just
।
রোদ- দেখেছি। নতুম ক্লাইন্টের ফাইল টা কি রেডি???
।
ইতি- ওই ফাইলটা আদি কে দেয়া হয়েছে।
।
আদি- Almost done.
।
রোদ- Almost বলতে কিছু নেই হয়ত হয়েছে নয়ত হয় নি। আর ইতি মিটিংটা কাল সো ২ টোর মধ্যে ফাইলটা রেডি হয়ে যাওয়া চাই। আর মিটিংএ তুমিও থাকছো।
।
ইতি- ওকে স্যার আমি দেখছি।
।
বলেই রোদ চলে গেলো।
।
আদি- এই রাক্ষসটা কে???
।
ইতি- ভ্রু কুচকে আদির দিকে তাকালো। কি বললে???
।
আদি- রাক্ষসই তো
।
ইতি- He is the MD. বলেই চলে এলাম। আদি হা করে তাকিয়ে রইল।
।
আদি ইতির পিছু পিছু গেলো।
।
আদি- Seriously!!!! ওনি আমাদের MD.
।
ইতি- হুম....
।
আদি- বাট বান্দা হ্যান্ডসাম আছে।
।
ইতি মনে মনে হাসলো। দেখতে হবে না জামাইটা কার।
।
হাজার কাজের মাঝেও রোদের মন ইতির উপরই রয়ে গেছে। আদিটা যে বড্ড বেশি ইতির পিছু ঘুরছে।
।
অনেক্ষণ হলো ইতিকে দেখছে না রোদ। কাচের গ্লাসের এপাশে ওপাশে ওদের কেবিন। বার বার চোখ যাচ্ছে। নাহ মেয়েটা আসছে না গেলো কোই। রোদ আর অপেক্ষা করতে পারলো না। বেরিয়ে গেলো।
।
রোদ- রিমি ইতি কোথায়???
।
রিমি- মেম তো স্টোরে গেছেন।
।
রোদ- ওকে বলে চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে এলো। ইতি কি একা গেছেন???
।
রিমি- না স্যার মেমের সাথে আদিও গেছেন।
।
মনে মনে এটাই ভাবছিলো রোদ। কারণ অনেক্ষণ ধরে ইতির সাথে সাথে আদিকেও দেখা যাচ্ছিলো না। রোদ আর অপেক্ষা না করে স্টোরে চলে গেলো। স্টোরে গিয়ে রোদের চোখ কপালে উঠে গেলো। ইতি সেল্ফের উপর উঠেছে ফাইল নামানোর জন্য। আর আদি নিচে দাড়িয়ে কথা বলছে শুধু কথা না ইতিকে হাসাচ্ছে। দেখে রাগ উঠে গেলো রোদের। বেখেয়ালে পরে যেতে পারে মেয়েটা। যা ভাবল তাই। ইতি পরে যেতে নিলো দেখেই রোদ দৌড়ে এলো। আদিও এগিয়ে যাচ্ছিলো। রোদ আদিকে হাত দিয়ে একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতেই আদি গিয়ে ছিটকে পরে। নিজেই ইতিকে ধরে ফেলল।
।
ইতি- আআআ বলে চিৎকার দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম। ভাবলাম এই বুঝি শেষ। কিন্তু না নিজেকে কারো কোলো অনুভব করলাম। চোখ খুলতেই দেখি আমি ওনার কোলো। রাগে ওনার চোখ লাল হয়ে এতো বড় বড় হয়ে গেছে।
।
রোদ- এই মেয়ে তুমি কি পাগল নাকি?? এতো উপরে কেনো উঠেছো??? মাথায় সমস্যা নাকি??? এখন যদি কিছু হয়ে যেতো। এখন আমি না থাকলে কি হতো???
।
ইতি- আমি মিট মিট করে হাসতে লাগলাম।
।
রোদ- আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে। 
আর এই ছেলে তুমি থাকতে ও কেনো উপরে উঠলো। আর এতো হাসা হাসির কি আছে??? এভাবে ডিসট্রেক করলে তো পরেই যাবে। যত্তসব Useless পিপল। বলেই রোদ বাহিরের দিকে হাটা শুরু করল।


।
ইতি- এ্যা কি করছেন???
।
রোদ- 
আবার কি হলো??


।
ইতি- কোথায় যাচ্ছেন???
।
রোদ- এখন কি কেবিনেও যেতে পারবো না???



।
ইতি- যান কিন্তু আমাকে তো নামান।
।
রোদ- ওহ....রোদ ভুলেই গিয়ে ছিলো যে ইতি ওর কোলে। ইতি হেসেই দিলো। রোদ রেগে বেরিয়ে গেলো। পিছনে ঘুরতেই দেখে আদি উঠে দাড়াচ্ছে।
।
ইতি- পরে গেলাম আমি আর উঠে দাড়াচ্ছো তুমি কেনো??
।
আদি- স্যার যে ধাক্কা দিলোরে বাবা।
।
ইতি- স্যার তোমাকে ধাক্কা দিয়েছে বাট কেনো???
।
আদি- কি জানি কোথা থেকে চলে এলো। তুমি পরে যাচ্ছো দেখে ধরতে নিলাম আর কোথা থেকে ওনি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেই দাড়িয়ে গেলেন। আসলেই রাক্ষস লোকটা।
।
ইতি- চোখ বড় করে তাকাল আদির দিকে কি বললা।
।
আদি- দিলাম দৌড় রাক্ষসকে রাক্ষস বলছি।
।
ইতি- পাগল একটা ছেলে হেসে দিলাম। ওনি আদিকে ধাক্কা দিয়ে আমায় ধরলেন। Wait wait তার মানে ওনি আগেই এসেছেন। সামনে আসেননি। আড়াল থেকে দেখছিলেন। আর যেই আমি পরে গেলাম আদি আমায় ধরবে ভেবে ওনি আদিকে ধাক্কা দিয়ে আমায় কোলে তুলে নিলেন। ইয়েস.....আমার #বস_বর আপনি ফেসে গেছেন। আপনাকে তো মনের কথা বলতেই হবে। তাও ব্যাপারটা আরেকটু সিওর হতে হচ্ছে। হুম ভাবতে হবে। পেয়েছি। বুদ্ধি ও হাজির এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই ইতি একটা হাসি দিলো।
।
সারাদিন রোদের রাগে রাগেই কাটলো। ইতি পরে যাওয়ার জন্য নয়। ওই আদির উপর। ছেলেটা এতো কেনো ইতির পিছে পিছে থাকে।
।
বিকেলে কাজ শেষ করেই ইতি রিমির কাছে হাজির।
।
রিমি- মেম এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো???
।
ইতি- ইতি আজব দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিমির দিকে। রিমি বুঝে গেছে রিমিকে দিয়ে কোন কাজ করাবে তাই এভাবে তাকিয়ে আছে। কারণ রাফসানও এটাই করে তাই রিমির বুঝতে অসুবিধা হলো না।
।
রিমি- অসহায়ের মতো ইতির দিকে তাকিয়ে রইল। কি করতে হবে মেম??
।
ইতি সব বলে দিলো কি করতে হবে। প্লেন অনুযায়ী সব ঠিক হলো।
।
রোদ করিডরে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলো। এমন সময় রিমি আর রাফসানের কথা শুনতে পেলো। সে দিকে কান দিলো না। কিন্তু রিমির কথা শুনে থমকে গেলো রোদ। কান থেকে ফোন নামিয়ে ফেলল।
।
রিমি- হিহিহিহিহি.....
।
রাফসান- হাসছো কেনো???
।
রিমি- আজ কিছু হতে যাচ্ছে।
।
রাফসান- কি???
।
রিমি- Guess করেন।
।
রাফসান- পারছিনা তুমি বলো আমার সহ্য হচ্ছে না।
।
রিমি- আজ আদি ইতি মেমের জন্য Special কিছু প্লেন করেছে।
।
রাফসান- Special মানে??? আদি আর ইতির মধ্যে কিছু চলছে নাকি???
।
রিমি- আদির সাইড থেকে তো ফুল ওন চলছে। এখন শুধু মেম কি ফিল করে তা জানার অপেক্ষা।
।
কথা গুলো শুনে রোদ যেনো আকাশ থেকে পরল। ইতির কেবিনের দিকে গেলো ইতি নেই। পিছনে ঘুরতেই দেখে ক্যান্টিন থেকে ইতি আর আদি হাসাহাসি করতে করতে আসছে। ভালো ভাবে খেয়াল করতেই দেখতে পেলো ইতি যে সাইড দিয়ে আসছে সামনে কিছু পরে আছে ইতি সেদিকে দেখছেই না। দেখবেই বা কিভাবে সে তো আদির কথা শুনে হাসায় ব্যস্ত। অসহ্য। যা ভাবা তাই আজ রোদ যা ভাবছে তাই হচ্ছে ইতির সাথে। ইতি আর দু কদম আগালেই পরে যাবে পা পিছলে পরে যাবে। কিন্তু না হয়ত পরবে না আদি ধরে ফেলবে। Impossible. রোদ আবার দৌড় লাগালো। ঠিকি দু কদম আগাতেই ইতির পা পিছলে গেলো। ইতি পরে যাওয়ার আগেই রোদ ওকে ধরে ফেলল। এক হাত ইতির কমড়ে আরেক হাত দিয়ে ইতির হাত ধরে ফেলে। ইতি হা করে রোদের দিকে তাকিয়ে রইল। রোদও তাকিয়ে রইল ইতির দিকে। দুজন দুজনকে দেখতে লাগলো। কেউ কারো দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছে না। ইতি মনে মনে মিট মিট করে হাসছে। পাগলটা তাই করল ইতি যা ভেবে ছিলো তাই হলো। কারণ রিমি আর রাফসান এর কথা গুলো ইতির সাজানো ছিলো। রোদ কি করে দেখার জন্য।
।
।
।
চলবে....
রোদ ওভাবেই অনেক্ষণ আগলে রাখে ইতিকে।
।
ইতি - আসতে করে বললাম সবাই দেখছে।
।
রোদ- কিছুটা বিব্রতবোধ করলাম। সোজা হয়ে দাড়ালাম ইতিকে ছেড়ে দিলাম না পরে যায়নি। সোজা করে দাড় করিয়ে দিলাম। ছোট করে একটা কাশি দিলাম।
।
ইতি- আপনি ঠিক আছেন তো।
।
রোদ- আমার কি হবে। সবার এখানে কি যে যার জায়গাও যাও। ইতির দিকে তাকালাম। এই মেয়ে এই চোখ কোথায় থাকে হ্যাঁ দেখে হাটতে পারো না?? আর সমস্যা কি এতো হাসাহাসি কেনো করো??? আমি কি সব সময় ফ্রি থাকি নাকি তোমাকে পাহাড়া দিতে যে কখন তোমার বিপদ হবে আমি বাঁচাবো। বলেই চলে এলাম।
।
ইতি- ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আর মুচকি মুচকি হাসলাম
।
আদি- এটা কি হলো????
।
ইতি- ঘুরে দাড়ালাম কোনটা???
।
আদি- ওনি সেদে এসে বাঁচালো আবার কথা শুনিয়ে চলে গেলো??? আর ওনি না আসলেই বা কি হতো আমি ছিলাম না বুঝি। মিনমিন করে বললাম বার বার আমাদের মাঝে আসতেছে।
।
ইতি- কি বললা???
।
আদি- আরে কোই কিছু না তো।
।
ইতি- হুম বেটার।
।
অফিস টাই শেষ হয়ে গেলো। একে একে সবাই বেরিয়ে যাচ্ছে। ইতিও রেডি হচ্ছে বেরবে বলে। রোদ দেখছে বসে বসে। মেয়েগুলো পারেও আসার আগে রেডি হয় যাওয়ার সময় রেডি হয় এরা পারেও বটে। বাসায়ই তো যাবে এতো রেডি হবার কি আছে। ইতি বেরলেই রোদ বেরবে। এমন সময়ই দেখে আদি ইতির রুমে হাজির একসাথে বেরবে বলে। রোদ আর দেড়ি না করে ফোন দেয়।
।
রোদ- একটু আমার কেবিনে এসো তো??
।
ইতি- আমি তো বের হবো।
।
রোদ- আমি কেবল একটা ফাইল দিবো নিয়ে যাও সাথে করে।
।
ইতি- ওকে আসছি।
।
আদি- আবার কি হলো???
।
ইতি- কিছু না তুমি যাও লবিতে একটু Wait করো আমি আসছি।
।
আদি- দেড়ি করো না।
।
ইতি- দেড়ি হলে তুমি চলে যেয়ো



।
আদি- জ্বি না আজ যাচ্ছি না আপনাকে ছাড়া।
।
ইতি- আসবো স্যার??
।
রোদ- এসো। আদি তোমার কেবিনে কি করছে এখন বাসায় যায় নি।
।
ইতি- হা করে অবাক হয়ে একবার পিছনে ফিরে দেখলাম না মাঝের কর্টান টা তো দেয়া তাহলে ওনি দেখলো কিভাবে যে আদি এসেছে।
।
রোদ- কি হলো??? বললে না।
।
ইতি- ও বায়না ধরলো আজ একটু ওর সাথে বের হতে তাই আর কি।
।
রোদ- বসা থেকে উঠে দাড়ালাম। ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকালাম।
।
ইতি- ওমা ওনি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?? মনে মনে বললাম।।
।
রোদ- এক ঝটকায় ওর হাত দরে ফেললাম যাওয়াচ্ছি। বলেই ওকে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। আদি লবিতে wait করছে তাই ইচ্ছে করেই করিডরের লিফট দিয়ে ইতিকে নিয়ে নিচে নেমে এলাম।
।
ইতি- এসব এর মানে কি???
।
রোদ- তুমি এখন বাসায় যাবে। অন্য কোথাও যাবে না তাই।
।
ইতি- আমি অন্তত ওকে বলে আসতাম।
।
রোদ- সেটা এখনও বলতে পারো। ফোন করে বলে দাও।
।
ইতি- ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে হাতে নিলাম কেবল আবার ওনি চিৎকার করে উঠলো।
।
রোদ- wait wait ফোন করা লাগবে না Text করে দাও।
।
ইতি- রাগি চোখে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- দেখে লাভ নেই যা বলছি তাই করো। Now we are friends তাই তুমি আমার কথা শুনতে বাধ্য



।
ইতি- উফফ....ওনাকে নিয়ে আর পারলাম না। তাই কথা না বাড়ি ওনি যা বলল তাই করলাম মিথ্যে মিটিং এর বাহানা দিয়ে দিলাম। এখন খুশি তো
।
রোদ- 
একটা হাসি দিলাম আর কিছুই বললাম না।


।
ইতি- আপনি খুশি হন আর না হন আজ আমি অনেক খুশি আমি জানি আদির মনে আমার জন্য ফিলিংস আছে শুনেই আপনি আমাকে ওর সাথে যেতে দেননি। আমি জানি আপনি অন্য কারো সাথে আমাকে সহ্য করতে পারবেন না। প্লিজ একবার বলে দেন না আমাকে ভালোবাসেন আমি প্রমিজ করছি আপনার বলতে হবে না আমি সারাজীবন আপনার পাশে থাকবো প্লিজ বলেন না একবার মনে মনে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে ভাবছিলাম কথাগুলো।
।
রোদ- হ্যালো কোথায় হারিয়ে গেলে???
।
ইতি- হ্যাঁ কি
।
রোদ- কোথায় হারিয়ে গেলে???
।
ইতি- না কিছু না
।
রোদ- বাসায় এসে গেছি নামবে না।
।
ইতি- হুম....ইসস আমিও না পাগল একটা মনটা যে কোই থাকে।
।
দুজনে ফ্রে হয়ে নিলাম। ওনি ওনার ডেইলি রুটিন অনুযায়ী ওনার প্রেমিকাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওনার প্রেমিকা কেবলি ওনার কাজ আর ওবার লেপটপ। আমারো আজ কিছু কাজ ছিলো শেষ করে নিলাম। ওনার কাজ শেষ হলেই ডিনার করবো। তাই বারান্দায় গিয়ে বসলাম। প্রত্যেকদিন খাওয়ার পর বসি আজ আগেই বসলাম। ওনি কাজ করছেন।
।
রোদ- ফোনটা বেজে উঠলো। দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকাতেই দেখি প্রায় ১১টা বাজে। এতো রাতে কে?? ফোনটা হাতে নিতেই দেখি লইয়ার আঙ্কেলের ফোন।
।
রোদ- আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল।
।
আঙ্কেল- ওয়ালাইকুম সালাম।
।
রোদ- হঠ্যাৎ এতো রাতে আঙ্কেল সব ঠিক আছে তো??
।
আঙ্কেল- হ্যাঁ সারাদিন তুমি ব্যস্ত থাকো ভেবেই এসময় ফোন দিলাম। ব্যস্ত ছিলে না তো???
।
রোদ- না আঙ্কেল বলেন কি বলবেন।
।
আঙ্কেল- আর মাত্র এক মাস আছে রোদ। এর পরেই কিন্তু সাইনিং
।
রোদ- আর মাত্র এক মাস আছে কথাটা শুনে রোদের বুকের মাঝে মোচড় দিয়ে উঠল। মনে হচ্ছে ওর বুকের মাঝে কেউ ছুড়ি দিয়ে আঘাত দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে। হ্যাঁ এক মাস তার মানে ইতিও আর মাত্র একমাস আছে ওর সাথে। সাইনিং হয়ে গেলেই ইতি চলে যাবে। ভাবতেই রোদের দমবন্ধ হয়ে আসছে। পায়ের নিচের মাটি টা সরে যাচ্ছে।
।
আঙ্গেল- রোদ তুমি আছো??
।
রোদ- হ্যাঁ, জ্বি আঙ্গেল বলেন।
।
আঙ্গেল- Any Problem???
।
রোদ- না আঙ্গেল বলেন আপনি।
।
আঙ্গেল- Get Ready for the Day. আর ইতিকেও বলে দিও।
।
রোদ- জ্বি। ফোনটা রেখে বারান্দার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ইতি চলে যাবে ভাবতেই পারছি না। একটা বছর এভাবে চলে গেলো। আমি কিভাবে থাকবো। ইতি থাকতে পারবে তো??? ওকি সত্যি চলে যাবে??? প্লিজ যেও না আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে আর জ্বালাবো না I promise. অনেক ভালোবাসা দিবো তোমাকে। প্লিজ আমায় একটু তোমাকে ভালোবাসার সুযোগ দাও প্লিজ
।
ইতি- কি ব্যাপার এভাবে বসে কি ভাবছে ওনি। হলো কি। এই যে.... ওনার কোন সাড়া নেই। এই যে বলেই চিৎকার দিলাম।
।
রোদ- নাহ....বলেই থতমত খেয়ে গেলাম
।
ইতি- কি না???
।
রোদ- নাহ কিছু না বলো কি।
।
ইতি- ১১টার উপরে বাজে ডিনার করবেন না???
।
রোদ- হ্যাঁ তুমি যাও আমি আসছি।
।
ইতি- কি জানি কি হলো। এমন লাগছে কেনো?? উফফফ...এতো যে কি ভাবে লোকটা অসহ্য বলেও না। ডিনার সার্ভ করে বসে রইলাম আসছেনা কেনো?? উঠতে নিলাম ওনি এলেন। মুখটা অনেক মলিন লাগছে। এমন দেখাচ্ছে কেনো আমার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল কিছু হলো না তো কেম যেনো লাগছে। মনটা বড্ড কু ডাকছে।
।
রোদ- খেতে পারছি না। আমার গলা দিয়ে খাবার নামছে না। প্লেটের খাবার নেড়েই যাচ্ছি।
।
ইতি- ওনি সেই কখন থেকে খাবার নেড়েই যাচ্ছে কিন্তু এক লোকমাও মুখে দিচ্ছেন না। নাহ আর পারছি না জিঙ্গেস করে বসলাম কি হয়েছে আপনার???
।
রোদ- মাথা তুলে ওর দিকে তাকালাম। আমার হয়ে গেছে বলেই উঠে গেলাম। বারান্দায় এসে সিগারেট ধরালাম।
।
ইতি- অবাক হয়ে রইলাম। না খেয়েই চলে গেলেন। কি হলো ওনার। আমি উঠে গেলাম। আমার গলা দিয়েও যে আর খাবার নামবে না। সব রেখে চলে গেলাম। ওনি বারান্দায়, গিয়ে ওনার পাশে দাড়ালাম। সেকি ওনি সিগারেট টানছেন। এক বছরের জীবনে ওনাকে কখনও সিগারেট ধরতেও দেখিনি আর আজ কিনা।
।
রোদ- শেষ টানটা দিয়ে ফেলে দিলাম। নাহ ইতি কে বলতেই হবে।
।
ইতি- হাতটা তুললাম ওনার কাঁদে রাখবো। ওনি কি ভাববে জানি না আমার মন বলছে এটা করা দরকার।
।
রোদ- একমাস পর সাইনিং
।
ইতি- হাতটা থমকে গেলো। অজানতেই পরে গেলো। আর মাত্র এক মাস।
।
রোদ- এক মাস পরেই সাইনিং তারপর তু... (গলায় কথা আটকে আসছিলো) তু্...তুমি মুক্ত হয়ে যাবে।
।
ইতি- নীরব হয়ে রইলাম।
।
রোদ- অনেক্ষণ নীরবতা পালন করলাম। আবার বললাম একটা কথা বলি??
।
ইতি- হুম,
।
রোদ- আদি ছেলেটা খারাপ না। আর তোমাকে পছন্দও করে তুমি ভেবে দেখতে পারো। ভালো থাকবে তুমি।
।
ইতি- 

ওনার কথা শুনে আকাশ থেকে পরলাম। ওনি আমাকে অন্য একজনের কথা বলছেন। কিভাবে পারছেন ওনি। তাহলে কি ওনি আমাকে ভালোইবাসেন না।



।
রোদ- আদির ব্যাপারটা তুমি একবার ভেবে দেখো প্লিজ। বলেই চলে এলাম। আমার চোখে যে পানি টলটল করছে যে কোন সময় পরে যাবে আর ও দেখে ফেলল সর্বনাশ হয়ে যাবে।
।
রোদ- কত সহজে কথাটা বলে চলে গেলেন। আমি মাটিতে বসে পরলাম। আমার সারা শরীর অসাড় হয়ে পরেছে। ভেতরটা ভেংঙ্গে চুরমাড় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বাহিরে একটা শব্দও কেউ শুনতে পেলো না। ওনি আমাকে অন্য একজনের কথা বলছেন ওনি আমি ভাবতেই পারছি না। রুমে এসে দেখি ওনি ঘুমিয়ে আছেন ওনার মাথার কাছে গিয়ে বসে পরলাম। ওনাকে দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টেরই পাইনি।
।
।
সকালে।।
।
রোদ- ঘুম ভাংঙ্গেই চেয়ে দেখি আমার মাথার কাছে মেয়েটা বসে রয়েছে। চোখ মুখ ফুলে একাকার অবস্থা। রাতে মনে হয় খুব কেঁদেছে। অপলক চেয়ে রইলাম ওর দিকে।
।
।
।
চলবে.........
.
.
Part - 17
Writer : Eti Chowdhury
রোদ- ঘুম ভাংঙ্গেই চেয়ে দেখি আমার মাথার কাছে মেয়েটা বসে রয়েছে। চোখ মুখ ফুলে একাকার অবস্থা। রাতে মনে হয় খুব কেঁদেছে। অপলক চেয়ে রইলাম ওর দিকে।
।
কতক্ষণ চেয়ে রইলাম জানি না। হঠ্যাৎ ও নড়ে উঠলো। আমি ঘুমানোর ভান করে শুয়ে রইলাম।
।
ইতি- চেয়ে দেখি ওনি এখনও ঘুমাচ্ছেন। একমাস পর এই মানুষটাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। ভাবতেই বুকটা ফেটে কান্না আসছে। ওনি কিভাবে পারলো আমাকে অন্য কারো কথা বলতে ওনার কি একবারো বুকটা কামড়ে উঠলো না। আমি কি ওনার জন্য কিছুই না। ওনার একটুও কষ্ট হচ্ছে না। ভাবতেই যেনো আমার চোখে রাজ্যের কান্না চলে এলো। দৌড়ে পালিয়ে এলাম। সে কষ্ট তাকে দেখাতে চাই না যে তা বুঝে না। ওনি তো আমাকেই বুঝল না। আমার মনটাকেই বুঝল না। ওনাকে আমার কষ্টের ভাগ দিবো না। যে আমার ভালোবাসার ভাগ নিলো না তাকে আমার কষ্টের ভাগ আমি কখনই দিবো না। আমার কষ্ট গুলো আমারই থাক। বাথরুমে এসে মিররের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছি। পাগলের মতো নিজের শরীরে কিছু খুজতে লাগলাম। ভালোবাসা হ্যা ভালোবাসা খুজতে লাগলাম। ওনার দেয়া ভালোবাসা, ভালোবাসার দাগ খুজতে লাগলাম। আচমকাই বুকের খানিকটা কাছে পেয়েও গেলাম ওনার দেয়া ভালোবাসার চিহ্ন আজও নীলচে দাগটা প্রগাঢ় হয়ে সটান হয়ে আমাকে বলছে তোর স্বামীর দেয়া ভালোবাসার চিহ্ন আমি। পাগলের মতো কাঁদতে লাগলাম। না পাওয়া ভালোবাসা আর পাবো না বলে। শেষ যে আশাটা ছিলো তাও ওনি শেষ করে দিলেন। আর কোন ভরসায় থাকবো আমি।
।
রোদ- উঠেই দেখি ইতি নেই। গেলো কোথায়। অনেক্ষণ অপেক্ষা করে শেষে বাথরুমে যাবো কিন্তু বাথরুমের দরজা লক করা। ওহ ইতি ভিতরে হয়ত। আমি বাহিরে পায়চারি করতে লাগলাম। অনেক সময় হয়ে গেলো কিন্তু বের হচ্ছে না। আমার ভয় করছে। এর আগেও মেয়েটা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলো। চোখ, মুখের যে অবস্থা দেখলাম এখন আমার ভয়ই করছে না জানি কিছু করে বসে। কিন্তু ও এমন করছে কেনো??? ও তো খুশি আমার থেকে মুক্তি পেয়ে তাহলে কেনো??? ও কি চায় না মুক্তি??? ও থাকবে আমার সাথে???? নাহ ভাবতেই কেমন আনন্দ লাগছে যদি সত্যি তা হয় আনন্দে আমি মরেই যাবো। দূর কি বলছি আমি মরলে আমার পাগলীটার পাশে কে থাকবে। কিন্তু কাল রাতে যে কথা বললাম তারপর কি ও থাকবে আমার সাথে??
।
ইতি- রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম। বাথরুমের দরজা খুলতেই ওনার মুখমুখি হলাম। একদম কাছে। ওনি নড়ছেন না। আর আমি তো ওনাকে দেখলে নড়তেই পারি না।
।
রোদ- উফফ....ভিজা চুলে যে কি লাগছে ওকে বলে বুঝাতে পারব না। আমায় পাগল করেই মারবে বুঝি। থমকে গেলো কেনো?? আসো না আরেকটু কাছে প্লিজ। আজ অধিকার থাকলে এখনি ওকে কোলে তুলে নিতাম। এরুপ যে মাটিতে পরতে দেয়া যাবে না। এরুপ, এ যৌবন সব যেনো আমার জন্য। নিজেকে দেওয়ানা দেওয়ানা লাগছে। মনে মনে ভাবছি।
।
ইতি- ওনার চোখে আর দেখতে পারছি না। ওনার চোখে তাকালেই কাল রাতের কথা মনে পরে যাচ্ছে। চোখ সরিয়ে নিলাম। পাশ কেটে সরে গেলাম।
।
রোদ- ও সরতেই খেয়াল করলাম আমিও বোকার মত ফেল ফেল করে চেয়েছিলাম। ফ্রেস হতে বাথরুমে ডুকে গেলাম। ইসসস.....একটু যদি ওকে ছুয়ে দিতে পারতাম। ফ্রেস হয়ে Breakfast করতে গেলাম। আশ্চর্য হয়ে গেলাম। ইতির দিকে তাকালাম বললাম সেকি আজ নাস্তা তৈরি করোনি যে?? তোমার কি শরীর খারাপ?? বলেই ওরদিকে কিছুটা আগালাম।
।
ইতি- ওনার আগানো দেখেই পিছিয়ে গেলাম। নাহ আমার কিছুই হয় নি আমি ঠিক আছি। মাথা কিছুটা নিচু করেই বললাম।
।
রোদ- আমি থমকে গেলাম। আজ ওর পিছিয়ে যাওয়াটা অন্য রকম ছিলো। যেনো পিছিয়ে যাচ্ছে না আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বললাম তাহলে আজ কেবল জ্যাম পারুটি যে। অবশ্য এতে আমার প্রবলেম নেই।
।
ইতি- হুম জানি, অভ্যাস করার জন্য।
।
রোদ- অভ্যাস???
।
ইতি- ওনার দিকে তাকালাম চোখে চোখ রেখে বললাম। এক মাস পর তো আর আমি থাকবো না। তখন কে আপনাকে এতো নাস্তা তৈরি করে খাওয়াবে তাই এই মাসটা না হয় বাজে অভ্যাসটা পরিবর্তন করে নেন।
।
রোদ- মনে মনে বললাম বাজে অভ্যাস। ওর চোখ গুলো লাল হয়ে আছে। আমি আর কিছুই বললাম না। বসে পরলাম নাস্তা করতে। জ্যাম আর পারুটি। ইতিরল হাতের এতো মজার মজার খাবার খেয়ে এসব আমার গোলা দিয়ে নামছে না। তাই পানি দিয়ে গিলে গিলে খাচ্ছি।
।
ইতি- এতোটুকু পাউরুটি খেতে ওনার কষ্ট হচ্ছে পানি দিয়ে গিলে খাচ্ছেন। আমি চলে গেলে কিভাবে থাকবেন ওনি??? বেস পারবেন যেমন পাউরুটি পানি দিয়ে গিলে খাচ্ছেন তখন না হয় আমার জায়গায় অন্য কাউকে নিয়ে আসবেন।
।
বেরিয়ে গেলাম।
।
রোদ- গাড়ির দরজা খুলে ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
।
ইতি- ওনি আমার জন্য গাড়ির দরজা খুলে অপেক্ষা করছেন। ওনার দিকে পা বাড়ালাম।
।
রোদ- ও আমার দিকে আসতেই আমি সরে দাড়ালাম। হালকা একটা হাসি দিলাম।
।
ইতি- গাড়ির দরজাটা লাগিয়ে দিলাম।।
।
রোদ- অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম।
।
ইতি- এই অভ্যাস টাও যে পরির্বতন করতে হবে। আজ থেকে আমি একাই যাবো। বলেই ঘুরে দাড়ালাম।
।
রোদ- ওর হাতটা ধরে ফেললাম। কথা তো ছিলো শেষ কটা দিন আমরা বন্ধু হয়ে থাকবো।
।
ইতি- ওনার দিকে ঘুড়লাম একটা হাসি নিয়ে। সাজানো হাসি। হ্যাঁ কথা ছিলো, কথা আছে। শুধু শেষ কটা দিন নয় বাকিটা জীবনই বন্ধু হয়ে থাকবো যত দিন বেঁচে থাকি।।
।
রোদ- অসহায়ের মত চেয়ে রইলাম।
।
ইতি- হাতটা ছাড়াতে ছাড়াতে বললাম তাই বলে তো এক বন্ধু আরেক বন্ধুর উপর ডিপেন্ডেড হয়ে যেতে পারে না তাই না। আমিও চাই না। আশা করি আপনি বুঝবেন। ওনাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না। বেরিয়ে গেলাম।
।
রোদ- ওর চলে যাওয়ার দিক তাকিয়ে রইলাম। যেনো আমার কাছ থেকে বহু দূরে চলে যাচ্ছে। গাড়িতে বসে রইলাম। কিছুই ভালো লাগছে না। এতো ভালোবাসি তাও কেনো পারছি না ওকে আটকাতে। কেনো পারছি না আমি ওকে জোর করে ধরে রাখতে। গাড়ি ঘুরালাম। বাস স্টেন্ডের কাছাকাছি আসতেই দেখি ও দাড়িয়ে আছে বাসের জন্য এই রোদের মধ্যে কি কষ্টটাই না হচ্ছে মেয়েটার। আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। কিছুই করতে পারছি না। অফিসের দিকে চলে গেলাম।
।।
।।
অফিসে।
।
রাফসান- আজ লেট হয়ে গেলো যে??
।
ইতি- বাস পেতে দেরি হয়ে গিয়ে ছিলো।
।
রাফসান- অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম বাস???
।
ইতি- হুম
।
রাফসান- তুমি...
।
ইতি- যাদের জীবনের রাস্তাটাই এক না তাদের এক সাথে অফিসে এসে লাব কি বলো। তাই সব পথ আলাদা হওয়াই ভালো। বলেই একটা হাসি দিলাম। প্লিজ তুমি আমায় আর কিছু বলো না সব শেষ আর কিছুই সম্ভব না।
।
রাফসান- কেনো???
।
ইতি- গতকাল রাতে ওনি আমায় আদি কথা বলেছেন।
।
রাফসান- আদি???
।
ইতি- হাসি মুখে বললাম হ্যাঁ আদি নাকি আমায় পছন্দ করে আর আমি যেনো ওর কথা ভেবে দেখি। ওনি আমায় সুখে দেখতে চান।
।
রাফসান- এইসব বানোয়াট হাসি আমার সামনে একদম দিবে না যত্তসব এগুলোর বলার সাহস নেই ভালোবাসতে আসে আজাইরা। এই তোমাদের মতো পাবলিকের জন্যই প্রেমে ব্যার্থতা আসে। না হলে সবাই সুখে থাকতো। যত্তসব আবার ন্যাকা হাসি দেয়।
।
ইতি- রাফসান অনেকটা রেগেই কথাগুলো বলে হন হন করে বেরিয়ে চলে গেলো।
।
রোদ- অফিসে আসার পর একটার পর একটা ফাইল দেখেই যাচ্ছি নিঃশ্বাসও নিতে পারছি না। অনেক কাজ সে জন্য নয় ইতির কথা যেন মনে না পরে তাই। ওর দিকে যেনো বার বার চোখ না যায় তাই ইচ্ছে করে এতো কাজ করছি।
।
রিমি- স্যারের সাথে কাজ করে হাপিয়ে যাচ্ছি। এতো কাজ ওনি করে কিভাবে।
।
রোদ- উফফ....সকাল থেকে কফিটাও দেয় নি। আমার কফি কোথায়???
।
রিমি- স্যার আমি এখুনি আনছি। চট জলদি গিয়ে স্যারের জন্য কফি নিয়ে এলাম।
।
রোদ- কফি মুখে দিতেই আবার বেরিয়ে এলো। এটা কি???
।
রিমি- থতমত খেয়ে গেলাম ক..কফি স্যার।
।
রোদ- এটা কে কফি বলে??? কে বানিয়েছে???
।
রিমি- ক্যান্টিনে স্যার।
।
রোদ- উঠে ইতির কেবিনে গেলাম কফির মগ হাতে নিয়ে। গিয়ে দেখি আদি ইতির সামনে বসে কাজ করছে। আমাকে ডুকতে দেখেই দাড়িয়ে গেলো।
।
আদি- স্যার আপনি
।
ইতি- আদির স্যার বলায় মাথা উঠিয়ে তাকালাম।
।
রোদ- কেনো আমার কি আসতে মানা নাকি???
।
আদি- না আসলে তা নয় মানে...
।
ইতি- আমি চুপ করেই রইলাম। রাগে ওনার চোখ দুটো লাল হয়ে রেয়েছে কিন্তু আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি এ রাগটা কেবল আমার উপর। কারণ ওনি যখন আমার উপর রাগ করেন তখন ওনার চোখ উজ্জল্য টকটকা লাল হয়ে যায়। আর অন্যদের উপর রাগ করলে কালচে লাল হয়। এটা সত্যি কি না জানি না। আমার মনে হয়। আমার উপর তো ওনার সব কিছুই ভিন্ন হয় রাগটাও ভিন্ন লাগে আমার কাছে।
।
রোদ- হয়েছে আদি তুমি তোমার ডেস্কে যাও Right Now
।
ইতি- আদি আর একটাও কথা না বলে বেরিয়ে গেলো। সরিও বলল না। না ওর কোন দোষ নেই Usually ও এটাই করে দোষ থাকুক বা না থাকুক সরি বলে চলে যায়। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম হলো।।
।
রোদ- ইতির কিছুটা কাছে গেলাম। তবে কিছুটা দূরত্ব রেখে।
।
ইতি- ওনাকে কাছে আসতে দেখে আমি শক্ত হয়ে গেলাম। কিন্তু ওনি থমকে গেলেন কেনো??



।
রোদ- এখন কি আমার কফিটাও বানানো যাবে না??
।
ইতি- মাথা তুলে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- ও এটাও তো বাজে অভ্যাস আর এই একমাসে সেটাও পরির্বতন করতে হবে তাই না বলেই চিৎকার দিলাম। কফি মাই ফুট। খেলাম না কফি। এর চাইতে হাজার গুন বেটার কফিই খাই না আর এটা তো রাগে গজ গজ করতে লাগলাম। বেরিয়ে আসছিলাম আবার ঘুরে এসে কফির মগটা আছাড় দিয়ে ফেলে দিয়ে চলে এলাম। রিমি তুমি যাও তো। রিমি বেরিয়ে গেলো আমার চিৎকারে।
।
ইতি- কফির মগটা ভেঙ্গে ফেললেন। এই মগটা ছাড়া ওনি কফিই খায়না আর আজ। বসে মগের ভাংঙ্গা টুকরো গুলো তুলতে লাগলাম। বেখেয়ালে লেগে হাত কিছুটা কেটে গেলো।
।
আদি- সে কি??? রক্ত পরছে যে।
।
ইতি- না তেমন লাগে নি।
।
আদি- বললেই হলো আমি দেখছি তো কি পরিমাণ রক্ত পরছে। দেখাও দেখি
।
ইতি- আসলেই অনেকটা কেটেছে। আহা লাগবে না বললাম তো।
।
আদি- ধমকের সুরে বললাম একদম চুপ কোন কথা বলবা না।
।
ইতি- আমিও চুপ করে রইলাম। কিছু বললাম না।
।
।
ইতি- ইদানিং আদিটা আমার বড্ড খেয়াল রাখছে। সব সময় পাশে পাশে থাকছে। সকালে না পারলেও অফিসের পর আমায় বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসছে। আদি এখনো জানে না আমি স্যারের বাসায় থাকি তাই গলির মোড়েই আমি নেমে যাই।কারণ ও এখনও জানে না আমি স্যারের বউ। স্যার সারাক্ষন কাজ করে শুধু কাজ কাজ আর কাজ। একটা মানুষ কত কাজ করতে পারে। ওনার কাজ করা হয়ত রোবট কেও হার মানাবে। গত দশ দিনে ওনি তিনটে বড় বড় প্রোজেক্ট লঞ্চ করেছেন। ওনি চাইছেন কি?? আমাকে ইগনোর করার জন্য এতো কাজ করছেন। ঠিক মতো খায়ও না। শুধু সকালে আমার হাত দিয়ে এগিয়ে দেয়া পাউরুটি আর জ্যামটাই সময় মতো খেতে দেখি তাও পানি দিয়ে গিলে খায়। মুখটা অনেক মলিন হয়ে গেছে। আর যে মাত্র ২০ দিন বাকি।
।
।
কাজ রেখে অফিসে বসে বসে এসব ভাবছি। হঠ্যাৎ তখনি আদির আগমন। এসে সোজা আমার সামনে দাড়ালো।
।
ইতি- কি হলো এভাবে দাড়ালে যে? কিছু বলবে???
।
আদি- দেখো আমি এতো ভনিতা করতে পারবো না।
।
ইতি- কি???
।
আদি- আমি সোজা মানুষ তাই সোজাসুজি বলছি।
।
ইতি- কি বলবে???
।
আদি- আমি তোমাকে পছন্দ করি।
।
ইতি- একটুও অবাক হইনি আমি। ওনি তো আগেই বলেছেন আমায় ওর মনে কথা। আমি তো জানতামই। কিন্তু....
।
আদি- প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না।
।
ইতি- আমি চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম। কিছুই বললাম না
।
আদি- আমি জানি তুমি কি ভাবছো। তোমার আর স্যারের বিয়ের কথা।
।
ইতি- 
চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকালাম।


।
আদি- হ্যা আমি সব জানি আর সব জেনেই বলছি আমি তোমাকে পছন্দ করি। সব জেনেই আমি তোমাকে ভালোবাসি। কি ভাবছো আমি কিভাবে জানি। একটা হাসি দিয়ে বললাম স্যার আমাকে সব বলেছেন।
।
ইতি- স্যার!!!!!
।
আদি- হ্যা, স্যার বলেছেন। কোন পরিস্থিতিতে, কিভাবে আর কেনো তোমাদের বিয়েটা হয়ে ছিলো। আর কিছু দিন পরেই তোমরা আলাদা হয়ে যাবা। সব বলেছেন ওনি আমাকে।
।
ইতি- সব
।
আদি- হ্যা সব কিছুই বাদ রাখেন নি। ওনি আমাকে এটাও বলেছেন আর ১০ স্বামী-স্ত্রীর মতো তোমাদের মাঝে কোন সর্ম্পক নেই। আর ওনি এটাও বলেছেন ওনার বিশ্বাস আমি তোমাকে সুখে রাখতে পারবো। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে.....
।
ইতি- আমার কোন আপত্তি নেই।
।
আদি- সত্যি???? আমার যে কি খুশি লাগছে তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না। খুশিতে তোমাকে জড়িয়ে ধরতে মন চাইছে।
।
ইতি- এটা অফিস
।
আদি- সেটাই তো Problem. আর শুনো আমরা বেশি দেড়ি করবো না তোমরা আলাদা হয়ে গেলেই কিছু দিনের মধ্যে বিয়ে করে ফেলবো। বাসায় অলরেডি বিয়ের কথা বলছে। তোমার আপত্তি নেই তো???
।
ইতি- না আমার কোন আপত্তি নেই। তুমি যা ভালো মনে করো তাই করো।
।
আদি- ওকে Sweetheart
।
ইতি- এখন কাজ গুলো শেষ করি আমার মিটিং আছে।
।
আদি- ওকে বাবা সরি। তুমি কাজ করো একসাথে লাঞ্চ করছি কেমন??
।
ইতি- ওকে
।
ইতির কেবিনে যা যা হচ্ছি হলো সব দেখছে রোদ বসে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। শুধু নিঃশ্বাসটা বন্ধ হয়ে আসছে রোদের। যেনো কেউ ওর গোলাটা চেপে ধরেছে।
।
ইতি- চেয়ারে বসে পরলাম। একটানে এক গ্লাস পানি খেয়ে ফেললাম। মনে হচ্ছে বুকের ভিতর কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
।
।
।
চলবে.......
ইতির কেবিনে যা যা হচ্ছি হলো সব দেখছে রোদ বসে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। শুধু নিঃশ্বাসটা বন্ধ হয়ে আসছে রোদের। যেনো কেউ ওর গোলাটা চেপে ধরেছে।
।
ইতি- চেয়ারে বসে পরলাম। একটানে এক গ্লাস পানি খেয়ে ফেললাম। মনে হচ্ছে বুকের ভিতর কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
।
রোদ- টেবিলে রাখা ল্যাপটপ টা ফেলে দিলাম।
।
ইতি- ওনি আদিকে পাঠিয়েছেন আমার কাছে ওনি
। How could he??? How?? 
চাই না ওনার ভালোবাসা তাই বলে আমার জীবনের Decision নেয়ার অধিকার ওনাকে কে দিয়েছেন। এখন ওনার নাম টাও কেরে নিতে চায় আমার থেকে 
চোখের পানি মুছে নিলাম। নাহ আমার জীবনের Decision আমি কাউকে নিতে দিবো না ওনাকেও না।






।
রোদ- মিটিং এ এক মুহূর্তের জন্য ওর দিকে তাকাই নি। আর তাকাবো না। আমি জানি আমি নিজেকে Control না করলে ইতি হয়ত দূর্বল হয়ে পড়বে। তাই ওর জন্য হলেও আমায় নিজেকে Control করতে হবে। Emotions দিয়ে তো আর জীবন চলে না।
।
ইতি- মিটিং শেষ করে বের হতেই দেখি আদি এসে আমার হাত ধরে ওনার সামনে দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। হচ্ছে কি????
।
আদি- Just come with me.
।
ইতি- ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে দাড়িয়ে সবার Attention নিলো।।
।
আদি- Attention Everyone আজ আমার জীবনের সব চাইতে Best দিন। Because today I got the person who I love the most. বলেই ইতির দিকে তাকিয়ে হাত বাড়ালাম।
।
ইতি- ইচ্ছা না থাকা সত্বেও আদির হাতটা ধরলাম।
।
আদি- আর আর আর আমরা খুব জলদি বিয়ে করতে যাচ্ছি।
।
ইতি- আমি ভাবতেও পারিনি আদি এভাবে বিয়ের Announcement করে দিবে। রাফসান রাগে লাল হয়ে কিছু না বলেই চলে গেলো। রিমিও ওর ভয়ে ওর পিছু পিছু চলে গেলো। সবাই Congratulate করছে। হঠ্যাৎ থমকে গেলাম।
।
রোদ- ইতির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম বললাম Congratulations for your beautiful future.
।
ইতি- আমি হাত বাড়িয়ে ওনার হাতটা ধরে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওনার মাঝে কোন ভাবান্তর নেই। আমি যে ওনার বউ তা কেউ বলতেই পারবে না। আমার স্বামী আমাকে অন্য কারো সাথে বিয়ের জন্য Congratulate করছে। আমিও তা গ্রহণ করছি।
।।
।।
ইতি- রাফসানটা ইদানিং তেমন একটা কথা বলে না। আর ওনি? ওনি তো অনেক দূরে সরে গেছেন। তেমন একটা কথা হয় না। কেবল মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠে ওনার মাথার পাশে বসে বসে ওনাকে মন ভরে দেখি। যেনো বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারি। ওনি ভালো না বেসেও যদি বলতো ইতি তুমি যেও না সত্যি আমি থেকে যেতাম। কিন্তু ওনি আমাকে তাড়ানোর জন্য আমার আগেই অন্য একজনকে খুজে বের করে ফেললেন।
।
রোদ- ইতিটা আর আগের মতো কথা বলে না হাসে না চুল ও বাধে না। চুল গুলো এলো মেলো হয়ে থাকে। মেয়েটা কেনো বুঝে না ওর এলো চুল গুলো যে আমায় আরো পাগল করে। ওই এলো চুলে যে আমি উন্মাদ হয়ে যাই। কেনো বুঝে না মেয়েটা। ওর চুলে যে আমার নাক ডুবাতে মন চায় তা কি বুঝে??? রাত ভর জেগে জেগে ওকে দেখি।
।
ইতি- আদিটাও পাগল হয়ে গেছে বিয়ের শপিং শুরু করে দিয়েছে এক সপ্তাহ পর সাইনিং তার পরের সপ্তাহেই আমাদের বিয়ে। আদি আর অপেক্ষা করতে চায় না।
।
রোদ সবাইকে হল রুমে ডাকে কিছু বলার জন্য। সবাই খুব উৎসুক ভাবে তাকিয়ে আছে জানার জন্য।
।
রোদ- Well Thank You All for coming. আপনারা সবাই জানেন এ মাসে খুব অল্প সময়ে আমরা সব চাইতে বড় বড় তিনটে প্রোজেক্ট লঞ্চ করেছি আর সব চেয়ে বেশি প্রফিট করেছি। আর তাই কাল একটা পার্টি থ্রো করা হয়েছে। You All are Invited. কাল অফিসে আসতে হবে না। ডাইরেক্ট সন্ধ্যায় পার্টিতে দেখা হবে।
।
সবাই খুশিতে হাতে তালি দিলো।
।
রোদ- আরেকটা কথা কাল কোড করে ড্রেস পরতে হবে। কালার কোড। একি কালারের ড্রেস পার্টনাররা পরবে।
।
অফিসের পর বাসায়। আদি ফোন দেয় ইতিকে।
।
ইতি- হ্যালো
।
আদি- কাল আমার জানপাখিটা কি পরবে???
।
ইতি- আদি আমি হয়ত কাল যাবো না।
।
আদি- কেনো???
।
ইতি- এমনি ভালো লাগছে না।
।
আদি- শরীর খারাপ?? আমি আসছি
।
ইতি- Wait কথায় কথায় এতো আসি আসি করো কেনো??? তুমি ভুলে যাও কেনো আমি আমার বাসায় থাকি না। স্যারের বাসায় থাকি। ওনি কি ভাববেন।
।
আদি- কিছুই ভাববেন না। তুমি....
।
ইতি- আচ্ছা আমি রাখছি মাথাটা Pain করছে। আদিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিলাম। ওনি তো এখনও এলেন না। প্রায় ৯টা বাজে। খুট করে দরজা খুলার শব্দ পেয়ে ঘুরে দাড়ালাম। হাতে একটা বক্স নিয়ে ঘরে ডুকলেন।
।
রোদ- সব দিধা বাদ দিয়ে ওর কাছে এগিয়ে গেলাম।
।
ইতি- ওনার আমার কাছে আসা দেখে আমি আবার শক্ত হয়ে গেলাম। চাইলেও ওনার কাছ থেকে দূরে সরে থাকতে পারি না। ফেল ফেল করে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওনার চোখ ছলছল করছে।
।
রোদ- ওর কাছে যেতে যেতে কখন যে ওর একদম কাছে চলে এসেছি খেয়ালই করিনি। ওর চুল গুলো উড়ে আমার মুখে পরছে।
।
ইতি- চুল গুলো উড়ে ওনার মুখে যাচ্ছে তাই হাত দিয়ে সরাতে নিলাম। ওনি আমার হাত ধরে ফেললেন।
।
রোদ- ওর হাতটা ধরে ফেললাম। উড়তে দাও না ভালো লাগছে।
।
ইতি- ওনার কথা শুনে চেয়ে রইলাম আমার চুল উড়া ওনার পছন্দ আর আমি। কোন কথা বলছি না কেউ।
।
রোদ- হাত দিয়ে ওর কপালের চুল গুলো সরিয়ে দিলাম। বক্সটা এগিয়ে ধরলাম।
।
ইতি- জিঙ্গাসু চোখে চাইলাম ওনার দিকে। এটা কি???
।
রোদ- কাল এই ড্রেসটা পরো পার্টিতে। বলেই ফ্রেস হওয়ার জন্য পা বারালাম।
।
ইতি- আমি হয়ত কাল পার্টি এটেন করতে পারবো না।
।
রোদ- তুমি কাল যাচ্ছো and its final
।
ইতি- এমন ভাবে কথাটা বলে গেলেন যেনো আমি ওনার বউ আর ওনি ওনার অধিকার ফলাচ্ছেন। আসলেই তো আমি ওনার বউ। তাহলে কি সত্যি ওনি অধিকার ফলালেন। আমি বক্সটা তুলে রাখলাম। খুললাম না।
।
পরের দিন।
।
ইতি- সেই সকালবেলা ওনি বেরিয়ে গেলো এখনও আসার নাম নেই। সারা দিন একা একা বসে রইলাম। ফোনটা টিং করে বেজে উঠলো। হাতে নিয়ে দেখি আদির ম্যাসেজ।
।
ম্যাসেজ-
।
আদি- আমার পার্টিতে আসতে দেড়ি হয়ে যাবে। একটু কাজে বাহিরে যাচ্ছি। আর যেহেতু আমার দেড়ি হবে তাই তোমাকে জোর করছি না। তুমি না চাইলে যেও না। আর গেলে সাবধানে যেও জানপাখি।
।
ইতি- উফফফ......আদির আমাকে এই জানপাখি বলাটা আমার একদম সহ্য হয় না।
।
প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ওনিও আসছে না ওনি হয়ত পার্টিতে চলে যাবে। যাক ভালোই হলো ওনি আবার বললে আমি না করতে পারতাম না।
।
কিছুক্ষণ পর ফোনটা বেজে উঠলো হাতে নিয়ে দেখি স্যার ফোন করেছেন।
।
ইতি- হ্যালো
।
রোদ- বক্সটা তো খুলে দেখো নি। আমি নিচে অপেক্ষা করছি বক্স খুলে দেখো। রেডি হয়ে আসো। অপেক্ষা করছি।
।
ইতি- ওনি ওনার কথা বলেই ফোন রেখে দিলেন। কিন্তু ওনি কিভাবে জানলেন আমি বক্সটা খুলিনি। আলমারি থেকে বক্সটা বের করলাম। বক্সটা খুলতেই যেনো আমার মনটা ভালো হয়ে গেলো। এতো সুন্দর একটা গাউন ফুল ব্লেক বুকের মাঝে লাল স্টোন দেয়া। সাথে একটা জুয়েলারী বক্স রাখা। বক্সটা খুলে যেনো আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। ডায়মন্ডের কিছু জিনিস। এক জোড়া কানের টপ, ছোট্ট একটা নোস পিন, এক জোড়া চিকন চুড়ি তাও ডায়মন্ডের, আর রিং। চোখ ফেরাতে পারছি না এতো সুন্দর। তাহলে ওনি কাল এটা আনতে গিয়েই এতো লেট করে বাসায় ফিরেছেন। আচ্ছা আমি তো নোস পিন পরি না ওনি কিভাবে জানলো আমার নাক ফোড়ানো আছে তাহলে কি ওনি আমাকে এতোটা কাছ থেকে দেখেছেন। গাউন টা দেখে আর না পরে থাকতে পারলাম না। হালকা সাজলাম। কিন্তু গয়না গুলো পরলাম না। নিচে নেমে গেলাম।
।
রোদ- পাশে ফিরতেই দেখতে পেলাম ইতি বের হচ্ছে। Wow..... এতো সুন্দর লাগছে যে আমি চোখ ফেরাতে পারছি না। আজ সৌন্দর্য্যও যে ওর কাছে হার মানবে। ওর সৌন্দর্য্য দেখে লজ্জা পেয়ে যাবে। আমি গাড়ি থেকে বেড়িয়ে ওর কাছে গেলাম।
।
ইতি- ওনাকে দেখে হা করে তাকিয়ে রইলাম। ওনিও ফুল ব্লেক পরেছেন সাথে রেড টাই। একদম Matching । ওনার হা করে তাকিয়ে থাকা দেখে আমি লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম।
।
রোদ- ওর আরেকটু কাছে যেতেই রাগ উঠে গেলো না মনে মনে বললাম Cool রোদ আজ তোর বউকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। গহনা পরনি কেনো???
।
ইতি- আসলে ওতো দামি জিনিস.....
।
রোদ- তুমি একটু দাড়াও আমি আসছি।
।
ইতি- আমাকে আর কথা বলতে না দিয়ে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পরে সেই জুয়েলারী বক্সটা হাতে নিয়ে নেমে এলেন।
।
রোদ- দেখি এদিকে ঘুড়ো। ওর কানে হাত দিলাম। এই প্রথম ওকে এতোটা কাছে থেকে স্পর্শ করছি অনুভুতিটা বলে বুঝাতে পারবো না।
।
ইতি- ওনি আমার কানে হাত দিতেই আমার ভিতরে এক শিহরণ অনুভব করলাম। আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
।
রোদ- এক কান থেকে অন্য কানে চলে গেলাম। ওকে ছুয়ে দিতে যে কি ভালো লাগছে। আমার প্রতিটা স্পর্শে ও কেপে উঠছে। নোস পিনটাও পরিয়ে দিলাম। ওর হাত ধরলাম হাতে চুড়ি পরিয়ে দিলাম। এর পরে ওর বাম হাতটা আমার হাতে নিলাম। ওর ওনামিকা আঙ্গুলে রিংটা পরিয়ে দিলাম। এক এক করে সব পরিয়ে এক পা পিছিয়ে গেলাম তারপর ওর পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলাম। Woww..... just wow লাগছে দেখতে। আবার ওর কাছে এক পা এগিয়ে গেলাম। অপূর্ব লাগছে। এখন লাগছে Mrs Rod Chowdhury....
।
ইতি- ওনার কথা শুনে অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- চলো যাওয়া যাক। ড্রাইভ করছি বার বার ওর দিকে চোখ যাচ্ছে। নিজেকে সামলাতে কষ্ট হচ্ছে।
।
ইতি- ওনি বার বার আমাকে দেখছে। আমার মনের মাঝে তুফান চলছে।
।
রোদ- পৌছে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে ওর দরজা খুলে দিলাম। আমার পরীটা বেরিয়ে এলো। কোট টা ঠিক করে হাত ফোল্ড করে দিলাম ওর ধরার জন্য যে ভাবে পার্টনাররা ধরে।
।
ইতি- ওনার হাত ধরার জন্য হাত ফোল্ড করা দেখে আমার যে কি আনন্দ লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। ওনি আমার সাথে আর দশটা স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর মতে আচরণ করছে দেখে আমার যে কি ভালো লাগছে। তাই আর বাধা দিলাম না ওনার হাতটা খোপ করে ধরে ফেললাম।
।
রোদ- ও এমনভাবে হাতটা ধরল যেনো এই সুযোগের অপেক্ষাই ছিলো। ভিতরে চলে গেলাম। সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় সবাই হা করে তাকিয়ে রইল। না না কেউ আমাকে দেখছে না আজ সবাই আমার পরীটাকে দেখছে। সত্যি ওকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
।
রিমি- এই এই
।
রাফসান- কি???
।
রিমি- পিছনে দেখো।
।
রাফসান- পিছনে ঘুরেই দেখি ইতি স্যারের সাথে এসেছে। দুজনকে যা লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না ছবি তুললাম কয়টা। আজ অনেক দিনপর ইতির মুখে সত্যি হাসি দেখলাম। ভালো লাগছে।
।
রিমি- দুজনকে মানিয়েছে না???
।
রাফসান- হুম.....একদম Perfect Couple
।
সারাটা সময় রোদ ইতি এক সাথেই ছিলো। রাফসান মিউজিক ওন করে দিলো। কাপল ডান্সের জন্য। সবাই ডান্স করছে।
।
রোদ- ইতির হাতটা ছেড়ে ওর সামনে এসে দাড়ালাম। হাত এগিয়ে দিলাম ডান্সের জন্য বললাম May I????
।
ইতি- একটা হাসি দিয়ে ওনার হাতটা ধরলাম। সোফ্ট মিউজিক চলছে সাথে ডান্স করতে লাগলাম।
।
রোদ- ইতিকে ঘুড়িয়ে নিলাম। আমি ওর পিছনে ওকে আলতো ভাবে জড়িয়ে ধরে ডান্স করছি। আবার ঘুড়িয়ে নিলাম। ওকে অনেকটা জড়িয়ে ধরে রাখলাম।
।
ইতি- লাইটা না থাকায় আমিও আমার মাথাটা ওনার বুকে রাখলাম। ওনি আমাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরেছেন। ডান্স করছি দুজন।
।
পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো Excuse me.
।
ইতি- দুজনেই একটু সরে দাড়ালাম তাকিয়ে দেখি আদি।
।
আদি- Can I have my Partner Please.
।
রোদ- Sure
।
ইতি- ওনি আমার হাতটা আদির হাতে দিয়ে চলে গেলেন।
।
আদি-Shall we dance??
।
ইতি- আদি আমার ভালে লাগছে না পরে
।
আদি- No, এখনি ভালো লাগবে দেখো।
।
ইতি- ডান্স করতে লাগলাম।
।
আদি- আচ্ছা থিমতো ছিলো পার্টনাররা কারাল কোড করে পরবে। তুমি আর স্যার দেখছি একি কালার পরেছো।
।
ইতি- অবাক চোখে আদির দিকে তাকালাম। না আসলে আমি এমনি ব্লেক পরেছি ওনার সাথে মিলিয়ে পরি নি।
।
আদি- তাই বলে এতো সেম যে ওনার ব্লেকের মাঝে লাল টাই আর তোমার ব্লেকের মাঝে লাল স্টোন হুম বলেই ইতির দিকে তাকালাম।
।
ইতি- নাহ....আসলে
।
আদি- হা হা হা.... সেকি তুমি এতে সিরিয়েস হয়ে গেলে কেনো আমি তো মজা করছিলাম। পাগলী একটা। I was just Kidding....



।
ইতি- আমি ওর থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখলাম। আমি একটু পর পর ওনার দিকে তাকাচ্ছি। ওনি বারে বসে কি যে খাচ্ছে। আমি আজ পর্যন্ত কখনও ওনাক ড্রিংস করতে দেখি না।
।
আদি - কি হলো?? কেথায় হারিয়ে গেলে??
।
ইতি- Excuse me please. বলেই সরে এলাম এসে ওনার পাশে বসলাম। ওনি কিছু বলছেন না। রাগ হচ্ছে ওয়েটার একটা গ্লাস দিলো সামনে কি আছে না দেখেই খেয়ে নিলাম। ইয়াক এটা কি????
।
রোদ- এটা কি করলে??? কেনো খেলে??
।
ইতি- আপনি যে খাচ্ছেন??
।
রোদ- আমি তো কোকোনাট জুস খাচ্ছি তাও Without Alcohol ।
।
ইতি- তাহলে এটা কি ছিলো???
।
রোদ- তোমার টায় Alcohol ছিলো।
।
ইতি- ও....আপনি দুলছেন কেনো??? সোজা হয়ে বসেন।
।
রোদ- Shit Man । তোমার নেশা হয়ে যাবে। চলো বাসায় চলো। ইতিকে নিয়ে বাসায় চলে এলাম। বাসায় এসে দেখি ইতি মুখ ফুলিয়ে বসে রইল। গিয়ে ওর পাশে বসলাম। কি হয়েছে রাগ করেছো???
।
ইতি- হুম....
।
রোদ- কেনো???
।
ইতি- তখন আপনি আমার সাথে ডান্স করলেন না কেনো??? আদির সাথে ডান্স করতে ভালো লাগে না।
।
রোদ- তাই। আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পর তোমার নেশা হয়ে যাচ্ছে যে।
।
ইতি- নাহ....
।
রোদ- কেনো???
।
ইতি- আমি ডান্স করবো।
।
রোদ- হা হা হা..... ওর হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম। পাগলীটা আমার। ওকে কাছে টানতেই ও আমার বুকের সাথে এসে জড়িয়ে রইল। অনপক্ষণ ওভাবে ডান্স করলাম। ও আমার বকেই ঘুমিয়ে পড়লো। ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলাম। ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে দিলাম।
।
।
।
চলবে........
,
,
ইতি- আমি ডান্স করবো।
।
রোদ- হা হা হা..... ওর হাত ধরে কাছে টেনে নিলাম। পাগলীটা আমার। ওকে কাছে টানতেই ও আমার বুকের সাথে এসে জড়িয়ে রইল। অনেক্ষণ ওভাবে ডান্স করলাম। ও আমার বুকেই ঘুমিয়ে পড়লো। ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলাম। ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে দিলাম। পাগলীটা আমায় জরিয়ে ধরল। ঘুমের মাঝেই আবোল তাবোল বলতে লাগলো। কিন্তু কিছু বুঝা যাচ্ছে না খুব ধীরে ধীরে বলছে। তাই কানটা ওর মুখের কাছে নিলাম।
।
ইতি- আদি পচা শুধু আমাকে জানপাখি জানপাখি বলে উফফ.. অসহ্য ও কেনো আমাকে জানপাখি ডাকবে।
।
রোদ- তাহলে কে ডাকবে??
।
ইতি- আপনি ডাকবেন। আপনি আমাকে সব ডাকবেন।
।
রোদ- কি কি ডাকবো???
।
ইতি- জানপাখি, ময়নাপাখি, সোনামণি, কলিজা, বাবু, বাচ্চা, বেবি,ডার্লিং, সুইটহার্ট সব সব সব
।
রোদ- কেন গো আমি তোমার কে???
।
ইতি- ইসস...আমার লজ্জা লাগে তো
।
রোদ- কেনো গো বলো না। ইতি ফিস ফিস করে বলল
।
ইতি- আপনি আমার স্বামী, আপনি আমার সব।
।
রোদ- বলেই পাগলীটা আমার কানে একটা চুমু খেলো। তারপর আমার বুকে এসে মুখ লুকালো। আমিও পাগলীটাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরলাম। অনেক দিন পর শান্তি লাগছে। মনে হচ্ছে না আমার কোন দুঃখ আছে। ও আমার বুকে থাকলে আমি কেবল শান্তিতেই থাকি।
।
ইতি- সকালে ঘুম ভাংঙ্গতেই নিজেকে ওনার বুকে আবিষ্কার করলাম। ইসস.... ওনি দেখে ফেললে কি সর্বনাশ টাই না হয়ে যাবে। উঠে যাচ্ছিলাম ওনি আমার হাত ধরে আটকে ফেললেন একটানে আমাকে নিজের বুকে নিয়ে নিলেন। আর বললেন
।
রোদ- যাও কোই আমাকে রেখে। কোথাও যাওয়া হচ্ছে না আপনার।
।
ইতি- ওনি আমাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে রাখলেন। আমিও আর বাধা দিলাম না। পরে কি হবে জানি না কিন্তু এই কয়টা দিন ওনাকে আর নিজের থেকে দূরে রাখবো না। আমিও ওনার বুকে মাথা রাখলাম। ওনার বুকে কান পেতে ওনার হৃদ স্পন্দন শুনতে লাগলাম। মনে হচ্ছে ওনার সবটা জুড়ে শুধু আমি। ওনি ঘুমিয়ে পরলেন আমাকে হালকা ছেড়ে দিলেন আমি উঠে পরলাম। কিন্তু উঠে বসতেই মাথাটা ঝিমাতে লাগলো। মাথা ভাড় হয়ে আছে। উফফ... মনে পরে গেলো গত রাতের কথা উল্টা পাল্টা খেয়ে এই অবস্থা। ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে খেলাম আরেকটা ধাক্কা। ওনি আমার জন্য লেবুর সরবত নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
।
রোদ- ও বেড়িয়ে আসতেই লেবুর সরবত টা এগিয়ে দিলাম। নাও এটা খাও মাথা ব্যথা কমে যাবে।
।
ইতি- আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম।
।
রোদ- রাগে তো মাথা ঠিক থাকে না এখন আবার লজ্জায় লাল হওয়া হচ্ছে।
।
ইতি- নিজের গাল নিজেই হাত দিয়ে ধরে ডেকে রাখলাম। ওনি কিভাবে বুঝলো।
।
রোদ- ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এলাম। ওমা এ মেয়ে কি করেছে। এতো কিছু কেনো?????
।
ইতি- আপনার জন্য আপনি খাবেন তাই বলেই একটা বাচ্চাদের মতো হাসি দিলাম।
।
রোদ- আমি??? এতো কিছু??? বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকালাম না রাগে না বিস্ময় নিয়ে। কারণ এতো খাবার আমার পক্ষে খাওয়া অসম্ভব
।
ইতি- মুখটা ছোট করে নিলাম। আপনি খাবেন না???
।
রোদ- আহারে কষ্ট পাচ্ছে আমার পাগলীটা তাই মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো কে বলেছে খাবো না। আমি সব খাবো। বলেই বসে পরলাম খেতে। সত্যি আমার বউ টা মাশাল্লাহ অনেজ মজা করে রান্না করে তাই অনেকটা খেয়ে নিলাম। এতো মজা যে কি বলবো। কত দিন ধরে বউয়ের রান্না খাইনা।
।
ইতি- আমি অপলক ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। ওনি বাচ্চাদের মতো করে হালুম হালুম করে খাচ্ছেন। নিজের উপর অনেক রাগ হচ্ছে মনে মনে এই মানুষটাকে আমি কত গুলো দিন শুধু জ্যাম আর পারুটি দিয়েছি। নিজেই বকছি।
।
রোদ- নিজেকে বকতে হবে না।
।
ইতি- হা করে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম ওনি কিভাবে আমার মনের কথা বুঝল। আপনি.....
।
রোদ- এতো জোরে জোরে মনে চিন্তা করলে তো শুনাই যাবে। আমার কি দোষ। বলেই আবার খাওয়ায় মনযোগ দিলাম। ওর দিকে খাবার ধরলাম।
।
ইতি- ওনি আমার মুখের সামনে খাবার ধরলেন। আমার যে কি খুশি লাগছে। আমার দু হাত দিয়ে ওনার হাতটা ধরে তৃপ্তির সাথে খাবারটা মুখে নিলাম। আজ ওনি আমাকে খাইয়ে দিলেন। যতবার ওনি আমার মুখে খাবার দিয়েছেন ততবার আমি ওনার হাতটা ধরেছি।
।
রোদ- আজ যেনো আমার খুশির সীমা থাকছে না। কিন্তু কোন ভুল করছি না তো। ভুল হলে হবে। পরে দেখা যাবে আর একটুও কষ্ট দিবো না ওকে। গেলে যাবে এখন তো আমার কাছে আছে তাই এখন আমার মতো করে রাখব ওকে অনেক ভালো রাখব অনেক অনেক ভালো।
।
দুজন খেয়েই রেডি হয়ে নিলাম অফিসের জন্য।
।
ইতি- ওনি আমার আগেই যাচ্ছেন আর আমি পিছনে। দরজা দিয়ে বের হতে নিয়েও আবার পিছনে ফিরে এলেন।
।
রোদ- একটা Important কাজ বাকি। ফিরে গেলাম। ওর মুখটা দু হাত দিয়ে ধরে ওর কপালে একটা চুমু খেলাম। তারপর বেরিয়ে গেলাম। এখন থেকে প্রত্যেক দিন এটাই করবো ও আপত্তি করলেও করব।
।
ইতি- ওনি আচমকাই ফিরে এসে কপালে চুমু খেলেন। ইসস....এতো সুখ। আমি মনে হচ্ছে কোন স্বপ্নে আছি। একটু পরেই ঘুম ভেংগে যাবে। নাহ আমি এ ঘুম থেকে উঠতে চাই না। এতো সুখের স্বপ্ন আমি শেষ করতে চাই না। এই স্বপ্ন অনন্তকাল চলতে থাকুক। ওনি নিচে চলে গেছেন আমিও নামলাম ওনি গাড়ির পাশে দাড়িয়ে আছেন আজ আর গাড়ীর দরজা খুলে দাড়াননি। আমি একটা হাসি দিয়ে গাড়ীর দরজা খুলে বসে পরলাম।
।
রোদ- ইয়েস
।
ইতি- ওনি খুশির চটে ইয়েসটা একটু বেশি জোরেই বলে ফেললেন। পাগল একটা।
।
অফিসে যাচ্ছিলাম।
।
ইতি- গাড়ী থামান গাড়ী থামান।
।
রোদ- ইতির চিৎকারে গাড়ী কোন রকমে ব্রেক করলাম। কি হয়েছে???
।
ইতি- আপনি বসেন আমি আসছি। একটা শপে ডুকলাম। ৫মিনিটেই বেরিয়ে এলাম কিছু একটা নিয়ে।
।
রোদ- কি হলো এমনভাবে বললে আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। কিছু কিনবে বললেই হতো আগে।
।
ইতি- সরি বলেই একটা হাসি দিলাম। জানি আমার হাসি দেখলেই ওনি গলে যাবে।
।
রোদ- বেস হাসি দিয়ে দিয়েছে আর চাইলেও রাগ করতে পারব না।
।।
।।
অফিসে চলে এলাম।
।
আদি- কি ব্যাপার এসে আমার সাথে দেখা করলে না যে??
।
ইতি- হঠ্যাৎ আদিকে দেখে আমি চমকে গেলাম। এতক্ষণ আমি আদির কথা ভুলেই গিয়ে ছিলাম। আমার ঘুমটা মনে হয় ভেংগে গেলো সাথে স্বপ্নটাও।
।
এমন সময়ই ইন্টারকমে ফোন এলো।
।
ইতি- হ্যালো
।
রোদ- ক্রিসেন্টের ফাইল নিয়ে আমার কেবিনে আসো Now
।
ইতি- আসছি। পরে কথা বলছি বলেই ফাইলটা নিয়ে স্যারের কেবিনে চলে এলাম।
।
রোদ- বসো।
।
ইতি- ওনার সামনে বসে রইলাম। অনেক্ষণ হয়ে গেলো ওনি কিছু বলছেন না। তাই আমিই বললাম। আমি কি চলে যাবো???
।
রোদ- আমি যেতে বলেছি???
।
ইতি- নাহ বাট আপনি বিজি আর...
।
রোদ- আর টারের দরকার নেই চুপচাপ বসে থাকো। তবে একটা কাজ করতে পারো।
।
ইতি - কি???
।
রোদ- আমার জন্য এক কাপ কফি করতে পারো তাও এখানে বাইরে যাওয়া চলবে না। ওখানে সব রাখা আছে।
।
ইতি- আমি উঠে বাইরের দিকে যেতে নিলাম।
।
রোদ- বললাম না সব এখানে আছে।
।
ইতি- এখানে আসল জিনিসটাই নেই ওটা নিয়ে এখুনি আসছি। ১ মিনিটের মাঝেই আবার ফিরে এলাম। কফি রেডি করে ওনার সামনে দিলাম এই নিন
।
রোদ- আমার চোখ দুটো খুশিতে ছলছল করতে লাগলো। মুখ তুলে ইতির দিকে তাকালাম। মেয়েটা মুচকি মুচকি হাসছে। আমার ওকে জড়িয়ে ধরতে মন চাইচে। মেয়েটা কিভাবে পারে এসব। আমার প্রিয় মগটা যেটা ওর উপর রাগ করে ভেংগে ফেলেছিলাম। সেই মগটা। এটা কোথায় পেলে???
।
ইতি- অফিসে আসার সময় ওই শপটায় চোখ পরতেই দেখি আপার মগটার মতো হুবহু তাই ওখান থেকে নিয়ে নেই। এটা যে পাবো ভাবতেই পারিনি।
।
রোদ- কফিটা নিয়ে মুখে দিতেই আহ কি শান্তি। আমার কফিটা এখন ও ছাড়া আর কেউ বানাতে পারে না। মনে হয় এখন আমিও ভুলে গেছি।
।
ইতি- আমি আবার বসে পরলাম। ওনার কফির মগটা নিয়ে একটা চুমুক দিলাম ওনি আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। ওনার দিকে বাড়িয়ে দিলাম কফির মগ টা।
।
রোদ- ও এক চুমুক খেয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো মগটা। আমি মগটা ওর হাত থেকে নিয়ে ও যেখান দিয়ে খেয়েছে ওর লিপস্টিক লেগে ছিলো ওখান দিয়েই মুখ দিলাম।
।
ইতি- আমার ভিতরে কামড় দিয়ে উঠল। মনে হলো ওনি আমার মুখ লাগানো জায়গায় মুখ দেন নি। আমার ঠোঁটটা কামড়ে ধরলেন। ওনি আবার কাজ করতে লাগলেন। আমি ওহেতুক বসে রইলাম। লাঞ্চের সময় মিটিং ছিলো শেষ করে আমার কেবিনে গেলাম। আমি কেবিনে আসতেই আমার পিছনে পিছনে আদিও চলে এলো।
।
আদি- খুন বিজি আজ????
।
ইতি- হুম....
।
আদি- লাঞ্চ করেছো??? না খেলে চলো ক্যান্টিনে যাই??
।
ইতি- না আসলে আমি খেয়েছি মিটিংএ।
।
আদি- ওহ.... I was missing you
।
ইতি- ওর দিকে তাকালাম কি বলবো ভাবছি। কিন্তু কিছুই ভাবতে পারছি না শুধু স্যারের কথা মনে পরছে। আবার ইন্টারকমে ফোন হ্যালো
।
রোদ- রেসলির ফাইলটা নিয়ে আসো Now
।
ইতি- জি। ফোন রাখতেই আদি বলল
।
আদি- আবার ডাকছে ফাইল নিয়ে তাই না???
।
ইতি- হুম....
।
আদি- আচ্ছা যাও
।
ইতি- আমিও ফাইল নিয়ে ওনার কেবিনে চলে গেলাম। আবার গিয়ে ওনার সামনে বসে পরলাম। ওনি কাজ করছেন আর আমি ওনাকে দেখছি বসে বসে। হঠ্যাৎই একটা কথা খেয়াল করলাম। আচ্ছা আপনি ইচ্ছে করে আমায় এখানে আটকে রেখেছেন যেনো আদি আমার সাথে কথা না বলতে পারে তাই না???
।
রোদ- অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম। মনে মনে ভাবলাম ও বুঝলো কিভাবে। কি সব বলছো??
।
ইতি- আমি ঠিকি বলছি।
।
রোদ- No
।
ইতি- Yes
।
রোদ- I said No
।
ইতি- Ok fine তাহলে আমি যাই অনেক্ষণ হয়ে গেলো গিয়ে আদির সাথে কথা বলি একটু বেচারা অপেক্ষা করছে। বলেই উঠে হাটা শুরু করলাম।
।
রোদ- দৌড়ে গিয়ে ওকে ধরলাম। টান দিয়ে চেয়ারে বসালাম। কোই যাবা তুমি????
।
ইতি- আপনাকে কেনো বলবো???
।
রোদ- জি না কোথায়ও যাওয়া হচ্ছে না। চুপচাপ এখানে বসে থাকো। একদম নড়বে না। নড়লে পা ভেংঙ্গে দিবো।
।
ইতি- সেকি পা ভেংঙ্গে দিলে আমি হাটবো কিভাবে।
।
রোদ- হাটতে হবে না আমি তোমাকে কোলে তুলে ঘুরবো।
।
ইতি- সত্যি বলেই ওনার মুখের খানিকটা কাছে গেলাম। ওনার চোখে চোখ রাখলাম।
।
রোদ- ওর চোখে চোখ রেখে দাড়িয়ে রইলাম। মেয়েটার চোখে জাদু আছে। আমি শুধু হারিয়ে যাই।
।
এমন সময় রাফসান চলে আসে।
।
রাফাসান- সরি স্যার আসবো আমি???
।
রোদ- সরে দাড়ালাম। হ্যা রাফসান এসো। বলো কি বলবে???
।
ইতি- রাফসান স্যারকে কিছু ফাইল দেখিয়ে চলে গেলো। একবার আমার দিকে কিভাবে যেনো তাকালো তাকানোটা কেমন যেনো ছিলো। বুঝলাম না।
।
অফিস টাই শেষ কিন্তু ওনি কাজ করে যাচ্ছে বাসায় যাওয়ার নামই নেই।
।
রোদ- পুরো অফিস খালি হয়ে যাওয়ার পর ওকে নিয়ে বের হলাম। বাসায় চলে গেলাম।
।।
।।
বাসায়।
।
ইতি- ডিনার রেডি করে বসে রইলাম ওনার জন্য। ওনি আসতেই খাবার বেরে দিলাম। ওনি খাওয়াও শুরু করে দিয়েছেন। আমি শুরু করবো এমন সময় ফোন বেজে উঠলো। আপনি খান আমি আসছি বলেই উঠে বারান্দায় চলে গেলাম। রাফসানের ফোন। হ্যালো।
।
রাফসান- তুমি কি স্যারকে সব বলেছো???
।
ইতি- আমি আসলে....
।
রাফসান- কি করছো কি ইতি তুমি এসব???
।
ইতি- চুপকরে রইলাম। অনেক রেগেই কথা বলছে রাফসান।
।
রাফসান- কেনো করছো??? তুমি বুঝতে পারছো কিছু??? আজ সারা দিন আমি দেখেছি আদিকে ছটফট করতে। একটু পর পর যাচ্ছিল দেখতে তুমি বেরিয়েছো কি না। শুধু তোমাকে একটু দেখবে একটু কথা বলবে বলে।
।
ইতি- আমি আর কথা বলতে পারছি না।
।
রাফসান- তুমি তিন তিনটে জীবন নষ্ট করছো। স্যারকে বলছো না নিজের মনের কথা। আরে স্যার তো তোমার কাছে এমনিতেই ঋণি তুমি ওনার এতো বড় উপকার করছো বলে। তাহলে কি তুমি পারতে না বলতে যাবে না তুমি ওনার সাথেই থাকবে। কেনো বলছো না। আর ওই দিকে আদি ছেলেটা কত এক্সাইটেড তোমাদের বিয়ে নিয়ে। একবার ভেবেছো তুমি। এই তো গেলো ওদের দুজনের কথা সবচাইতে বড় অন্যায়টা তো তুমি নিজের সাথে করছো। আদিকে যদি বিয়ে কর তাহলে পারবে তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষকে রেখে অন্য জনের সাথে ভালো থাকতে। চুপ করে আছো কেনো??? কথা বলো???এখন এটাও বলতে পারছি না সময় আছে বলে দাও কারণ Already তুমি অনেক দেড়ি করে ফেলেছো ইতি। অনেক দেড়ি হয়ে গেছে। আর জীবনটা ছেলে খেলা নয়।
।
ইতি- কথাগুলো বলেই রাফসান ফোন রেখে দিলো। আসলেই তো জীবনটা তো ছেলে খেলা নয়। এখন আমি কি করবো। ওভাবেই দাড়িয়ে রইলাম। আমি কিছু ভাবার মতো চিন্তা শক্তি টুকুও হারিয়ে ফেলেছি। হঠ্যাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম। পিছনে ফিরে দেখি ওনি।
।
রোদ- কি হলো এখামে দাড়িয়ে আছো যে?? খেতে এলে না যে।
।
ইতি- আমার খুদা নেই।
।
রোদ- তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো??? কিছু কি হয়েছে??
।
ইতি- নাহ আমি ঠিক আছি। বলেই ওখান থেকে সরে গেলাম। শুয়ে পরলাম। আর কোন কথা বললাম না।
।
রোদ- মেয়েটার হলো কি?? এমন দেখাচ্ছে কেনো?? কিছু কি হয়েছে। চিন্তা হতে লাগলো। ভাবতে ভাবতে আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।
।
ইতি- সারারাত দু চোখের পাতা এক করে রেখেছিলাম কিন্তু এক ফোটাও ঘুমাতে পারিনি। সারারাত ছটফট করলাম। আমি কিছু ভাবতে পারছি না।
।।
।।
সকালে।
।
রোদ- ঘুম থেকে উঠে দেখি ও বিছানায় নেই। গেলো কোই মেয়েটা। পাশে ফিরতেই দেখি বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। উঠে গিয়ে পিছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। Good Morning.
।
ইতি- ওনি এভাবে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরাতে আমার নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি ঘুড়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
রোদ- পাগলীটা
।
ইতি- ওভাবেই অনেক্ষণ ওনাকে জড়িয়ে ধরে রাখলাম।
।
রোদ- হয়েছে তো এখন ছাড়ো অফিসে যেতে হবে যে।
।
ইতি- ওনাকে ছেড়ে দিলাম। ওনি ফ্রেস হয়ে আসতেই ওনাকে নাস্তা দিলাম।
।
রোদ- সেকি তুমি রেডি হবে না??
।
ইতি- আআ...আমি
।
রোদ- কিছু বলবে বলো।
।
ইতি- আমি অফিসে যাবো না।
।
রোদ- কেনো শরীর খারাপ?? ওর কপালে হাত দিলাম। জ্বর তো নেই।
।
ইতি- না না শরীর ঠিক আছে। এমনি যেতে মন চাইছে না। ভালো লাগছে না।
।
রোদ- আচ্ছা ভালো না লাগলে যেতে হবে না। তুমি কিছুদিন রেস্ট নাও কেমন। আমি আসি। ওর কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেলাম।
।
ইতি- আমি বসে রইলাম। কি করবো আমি।
।।
।।
অফিসে।
।
আদি- সকাল থেকে ইতিকে দেখছি না। স্যার সামনে এসে পরলো। স্যার ইতি আসে নি???
।
রোদ- ইতির ভালো লাগছিলো না তাই আসে নি।
।
আদি- কি হয়েছে?? আমি যাই ওকে দেখে আসি।
।
রোদ- না আদি তার প্রয়োজন নেই। ও ঠিক আছে। তোমার যেতে হবে না
ওর একটু রেস্ট দরকার। বলেই চলে এলাম।
।
আদি- একটা ফোন দেই। রিং হচ্ছে কিন্তু ধরছে না। অনেকগুলো ফোন দিলাম ধরছে না। নাহ এটাই লাস্ট এখন না ধরলে চলে যাবো।
।
ইতি- ফোনটার দিকে তাকিয়ে আছি আদি সেই কখন থেকে ফোন দিয়েই যাচ্ছে। এবার বাধ্য হয়ে ফোনটা ধরলাম। হ্যালো।
।
রোদ- এখন ফোনটা না ধরলে আমি চলেই আসতাম।
।
ইতি- না আসতে হবে না। বলো কি বলবে।
।
আদি- কি হয়েছে তোমার??
।
ইতি- কিছু না আমি ঠিক আছি। শুধু একটু রেস্ট নিতে চাচ্ছি।
।
আদি- আচ্ছা রেস্ট নাও। কিছু লাগলে আমাকে জানিও। কেমন?
।
ইতি- ঠিক আছে রাখছি। বলেই ফোন রেখে দিলাম।
।
আজ তিন দিন ধরে অফিস যাই না। অনেক কিছু ভাবলাম। কোন ভাবেই কিছু করতে পারছি না। শেষমেষ একটা ডিসিশন নিতেই হলো। হ্যা তাই করবো আমি। তিনদিন পর আজ অফিসে এলাম। কাল সাইনিং।
।
।
।
চলবে.......
আজ তিন দিন ধরে অফিস যাই না। অনেক কিছু ভাবলাম। কোন ভাবেই কিছু করতে পারছি না। শেষমেষ একটা ডিসিশন নিতেই হলো। হ্যা তাই করবো আমি। তিনদিন পর আজ অফিসে এলাম। কাল সাইনিং।
।
কালকের পর হয়ত সব বদলে যাবে।
।
অফিসে।
।
আদি- এখন কেমন আছো???
।
ইতি- ভালো।
।
আদি- তুমি কি কোন কারণে Upset???
।
ইতি- নাহ চিন্তা করো না আমি ঠিক আছি।
আদি চলে গেলো। আমি কিছু জরুরী কাজ সেরে নিলাম। সব পেনডিং কাজ গুলোর কিছু কিছু কাজ শেষ করে ফেললাম। কিছু কাজ হাফডান করা ওগুলো সব রেডি করে নিলাম। সব ফাইল, পেপার নিয়ে রাফসানের কেবিনে গেলাম।
-আসবো??
।
রাফসান- তাকিয়ে দেখি ইতি।
-তুমি আবার কবে থেকে আমার পারমিশন নিতে শুরু করলে??
।
ইতি- একটা হাসি দিলাম। ফাইলগুলো এগিয়ে দিলাম।
।
রাফসান- এগুলো কি???
।
ইতি- কিছু কাজ পেনডিং আছে এগুলো এখনি শেষ করা যাবে না তাই তোমাকে দিচ্ছি। এগুলো এখন থেকে তোমার Responsibility
।
রাফসান- অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
-এমন ভাবে বলছো যেনো তুমি কোথায়ও চলে যাচ্ছো।
।
ইতি- Who knows what happens next.
বলেই ফাইলগুলো ওর টেবিলে রেখে দিলাম। বেরিয়ে যাবো আবার ফিরে এলাম
।
রাফসান- কি হলো???
।
ইতি- ফ্রেন্ডরা যেভাবে হাগ করে রাফসানকে হাগ করলাম। আমার স্কুল, কলেজ এমনকি ভার্সিটি লাইফেও তেমন কোন ভালো বন্ধু ছিলো না কিন্তু রাফসান অনেক অনেক Special ছিলো। শুধু বন্ধ নয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবারের মতো আমার পাশে থেকেছে। সব সময় আমার ভালোটাই চেয়েছে।
।
রাফসান- তোমার কি কিছু হয়েছে???
।
ইতি- নাহ।
বলেই বেরিয়ে এলাম। ও যে বিশ্বাস করবে না তাও জানি। কেবিনে বসে আছি। রিমি আসলো।
।
রিমি- মেম আসি???
।
ইতি- এসো রিমি।
উঠে গিয়েই ওকে জড়িয়ে ধরলাম। চোখ দিয়ে পানি চলে এলো।
।
রিমি- মেম কি হয়েছে আপনার???
।
ইতি- কিছুনা। সব সময় রাফসানের পাশে থাকবে। ও তোমাকে অনেক ভালোবাসে।
।
রিমি- জি আচ্ছা। বলেই চলে এলাম কিছু একটা তো হয়েছে।
।
ইতি- সব কাজ শেষ এখন সবচাইতে জরুরী কাজ দুটো করবো। তখনি ফোন আসলো স্যারের ফোন।
-হ্যালো
।
রোদ- আমি একটু বাইরে যাচ্ছি আমার দেড়ি হয়ে যাবে । গাড়ী আছে তুমি বাসায় চলে যেও কেমন??
।
ইতি- আচ্ছা।
ওনি ফোন রেখে দিলো। আমি খামটা হাত থেকে টেবিলে রেখে দিলাম। অনেক্ষণ খামটার দিকে চেয়ে রইলাম। খামটা ব্যাগে রেখে দিলাম। যাই শেষ কাজটা করি। একটা ছোট্ট বক্স নিয়ে উঠে গেলাম।
।
আদি- তুমি হঠ্যাৎ
।
ইতি- বক্সটা এগিয়ে দিলাম। এটা তোমার জন্য।
আদি খুলতে নেয় আমি বাধা দিলাম।
-আজ দেখো না প্লিজ
।
আদি- কেনো??
।
ইতি- প্লিজ কাল দেখো
।
আদি- কেনো???
।
ইতি- প্লিজ
।
আদি- আচ্ছা বাবা বলেই ইতির কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলাম।
।
ইতি- আমি আদির গালে আলতো করে হাত দিয়ে বললাম ভালো থেকো।
বলেই ঘুরতে যাবো আদি আমার হাতটা ধরে ফেলল।
।
আদি- ওর হাতটা ধরে ফেললাম বললাম
-এমন ভাবে বললে যেনো আর কখনও দেখা হবে না। এভাবে বললে কেনো??
।
ইতি- এমনি কখনও তো তোমাকে ভালো থাকার কথা বলা হয় নি তাই বললাম।
।
আদি- কি হয়েছে তোমার??
।
ইতি- কিছু হয় নি।
বলেই চলে এলাম। নিজের কেবিনে চলে এলাম। সব কিছু দেখলাম মন ভরে। হ্যা এ দেখা শেষ দেখা। আর দেখা হবে না। আর বসা হবে না। সব হারিয়ে যাবে। সব মোহ-মায়া ত্যাগ করে চলে যেতে হবে। উঠে পরলাম। অফিস শেষ হতে সময় আছে তাও আমি বেরিয়ে গেলাম। আমার যে আরো একটা জরুরী কাজ রয়ে গেছে তা যে শেষ করতে হবে।
।।
।।
বাসায়
।
ইতি- বাসায় এসেই শাওয়ারের নিচে অনেক্ষণ দাড়িয়ে রইলাম। অনেক ভিজলাম। শুধু ভিজলামই না চোখের পানিও যে শাওয়ারের পানির সাথে পাল্লা দিয়ে পরতে লাগল।
।
রোদ- মিটিং টায় যে এতো লেট হয়ে যাবে জানতামই না। ইতিও বাসায় একা ফোনটাও ধরল না টেক্স দিলো বাসায় আছে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। ফোনটা ধরলে কি হতো। এখন যে কতক্ষণে বাসায় যাবো তরসইছে না। প্রায় ১ ঘন্টা লেগে গেলো বাসায় পৌছাতে। ৯ টার বেশি বেজে গেছে পাগলীটা খেপেছে কিনা কে জানে। তাই আর কনিংবেল দেবার সাহস হলো না নিজের চাবিটা দিয়েই গেইটটা খুললাম। বাসাটা ঠান্ডা লাগছে। ধীরে ধীরে রুমের দিকে পা বাড়ালাম যেনো ও বুঝতে না পারে। রুমের দরজা টাচ করতেই খুলে গেলো। রুমে হিমেল শীতল বাতাস বইছে। লাইট ওফ করা। তাও বারান্দায় যে হালকা আলো আছে সে আলোতে ইতিকে বেস দেখা যাচ্ছে মিররের সামনে দাড়িয়ে আছে কিন্তু ওকে অন্য রকম লাগছে। আমি ওর কাছে এগিয়ে গেলাম। রুমের চারিদিকে নানারকম মোমবাতি ঝলছে। একদম রোমেন্টিক একটা মুড তৈরি হয়ে রয়েছে রুমে। ইতি এই ইতি নাহ মেয়েটা কোন সাড়া দিচ্ছে না। আমার কেমন যেনো ভয় ভয় লাগছে। আমার সহ্য হচ্ছে না। আমি রুমের লাইট ওন করে দিলাম। লাইট ওন করে পিছনে ফিরে তাকাতেই আমার চোখ থমকে গেলো, আমার পা থমকে গেলো, আমার নিঃশ্বাস থমকে গেলো, আমার যেনো এখনি দমবন্ধ হয়ে যাবে। এ আমি কি দেখছি। আমার বউ আজ সত্যি সত্যি বউ সেজেছে। লাল একটা শাড়ি পরেছে। সাথে হালকা সাজ। মনে পরেছে এই শাড়িটা অনেক আগে আমি ওর জন্য এনেছিলাম। কিন্তু দেয়া হয় নি কারণ পরিস্থিতি ভিন্ন ছিলো। আমি থমকে গিয়ে দাড়িয়ে রইলাম। অপলক ওকে দেখছি। শাড়িটায় ওকে যা মানিয়েছে বলে ভুজানো সম্ভব নয়। শাড়িটা কিছুটা পাতলা হওয়ায় ওর শরীরের অংশ বুঝা যাচ্ছে। ওর পেটটা বেস দেখতে পাচ্ছি। উফফ.... মেয়েটা মনে হয় আমায় উন্মাদ করেই তবে থামবে। এখন কিভাবে থাকি আমি ওর থেকে দূরে। ও আমার কাছে আসছে।
।
ইতি- ওনার কাছে যেতে থাকলাম। এক পা করে আগাচ্ছি। ওনি ঠায় দাড়িয়ে আছেন।
।
রোদ- আজ মনে হচ্ছে আমি জমে গেছি। ও আমার কাছাকাছি এসেই মুখ খুলল।
।
ইতি- একটা জিনিস চাইব দিবেন???
।
রোদ- কি চাই বলো??? মনে মনে বললাম আমি নিজেই তো তোমার।
।
ইতি- সব লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলেই ফেললাম। আজকের রাতটা আমায় দিবেন প্লিজ
।
রোদ- 
অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম।


।
ইতি- প্লিজ দিন না আজকের রাতের জন্য আমার স্বামীকে আমায়। আমার স্ত্রীর অধিকার তুকু দিন না শুধু আজকের রাতের জন্য।
।
রোদ- এটা তুমি কি বলছো??? এটা হয় না বলেই পিছনে ফিরে গেলাম।
।
ইতি- কেনো হয় না??? আমি চাই আপনাকে আজ প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না। প্লিজ বলতে বলতে ওনার পায়ের কাছে বসে পরলাম। হাত দিয়ে ওনার পা ধরলাম। দিন না প্লিজ কেবল আজকের রাতটার জন্য আমায় আপন করে নিন আপনার মাঝে নিন না প্লিজ আর কিছুই চাই না দিন না আজ আপনাকে আমায়।
।
রোদ- তুমি বুঝতে পারতেছো না কথাটা শেষ করতে পারিনি
।
ইতি- ওনার কথা শেষ করতে দিলাম না উঠে গিয়ে ওনার সামনে দাড়ালাম। ওনার শার্টের কলার চেপে ধরলাম। কেনো হয় না। আপনি আমার স্বামী কেন হয় না
।
রোদ- তুমি বুঝার চেষ্টা কর। তোমার মাথা এখন ঠিক নেই।
।
ইতি- বাস.... ঠিক আছে আপনি দিবেন না তো ওনার সামনে দিয়ে বাথরুমে ডুকে শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে গেলাম। যতক্ষণ না আপনি আমায় আপন করে নিচ্ছেন ততক্ষণ আমি ভিজতে থাকবো। সরব না একটুও। এতে যদি আমি মরেও যাই আমার কোন আফাসোস নেই।
।
রোদ- কি পাগলামী করছো প্লিজ সরে যাও। ওর কাছে যেতে নিলাম
।
ইতি- একদম আমার কাছে আসবেন না। হয়ত আপনি আজ রাত আমায় আপন করে নিবেন না হয় আমি এভাবেই দাড়িয়ে থাকবো
।
রোদ- কোন ভাবেই ওকে কথা বুঝাতে পারছি না। আমি এভাবে কিভাবে ওর সাথে না এটা হয় না। আমিও তো ওকে চাই তবে এক রাতের জন্য নয় সারাজীবনের জন্য।
-প্লিজ পাগলামী বন্ধ করো। প্লিজ
।
ইতি- হাত দিয়ে ইশারা দিলাম নন..না আ..আস..আসবেন ননা ঠান্ডায় আমি কথা বলতে পারছি না। অনেক কষ্ট হচ্ছে আমার। আসতে আসতে চোখেও গোলা দেখছি। দাড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে। ঝুমতে লাগলাম।
।
রোদ- উফফফ,,,আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। মেয়েটার কষ্ট হচ্ছে দেখে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে কিই বা এমন চাইছে আমাকেই তো আর আমি পারছি না। ঝটকরে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। পাগলের মতো ওর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলাম। ও আমাকে পেয়ে ঝাপটে ধরলো। আমার সাথে তালে তাল দিয়ে চুমু খেতে লাগল। যেনো বহু বছরের পিপাসা মিটাচ্ছে। ওভাবেই অনেক্ষণ দুজন দুজনকে আদর করলাম। ওকে আলতো করে ছেড়ে দিয়ে ওর কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে ওর গাল দুটো দুহাতে ধরে দাড়িয়ে রইলাম। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছি। দুজনেই ভিজে গেছি। ও আমার শার্টের বাটন গুলো খুলতে লাগলো। শার্টটা খুলে ফেলে দিলো। আমি ওকে ছেড়ে দিলাম ও আমার দিকে চেয়ে রইল। আমি ওকে কোলে তুলে নিলাম।
।
ইতি- ওনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন। ওনার চোখে চোখ রেখে চেয়ে রইলাম। ওনার গলাটা জড়িয়ে ধরলাম।
।
রোদ- ও আমার গলাটা জড়িয়ে ধরল। ওর চোখ থেকে চোখ ফেরাতেই পারছি না। ওকে নিয়ে বিছানায় গেলাম। ওকে শুইয়ে দিলাম। দুজনে ভিজে চুপ চুপ হয়ে গেছি। আমি উঠে ফিরে দাড়ালাম।
-আমি পারবো না। এমন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে কিভাবে তোমার কাছে যাই।
।
ইতি- আজ ওনার কোন বাধাই আমি মানবো না। উঠে ওনাকে টান দিয়ে নিয়ে শুয়ে পরলাম। ওনি আমার উপরে অপলক চেয়ে আছেন আমার চোখে।
।
রোদ- ও আমাকে আচমকা টান দিতেই গিয়ে ওর উপর পরলাম। ও আমার ঠোঁটটা নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। আমিও আর নিজে ধরে রাখতে পারলাম না। ওর মাঝে ডুব দিলাম। আসতে আসতে আমার হাত দু দিয়ে ওর হাত শক্ত করে ধরলাম। আজ যেনো দুজনেই উন্মাদ হয়ে গেছি। ওর আঁচলটা সরিয়ে দিলাম। ও লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলল। ওর দু চোখের পাতায় চুমু খেলাম। পাগলের মতো ওকে চুমু খেতে লাগলাম। ও কেবল শিউরে উঠছিলো। কেপে কেপে উঠছে। আমি যেনো থামছি না। চোখ থেকে গাল, গাল থেকে ঠোঁট, ঠোঁট থেকে গলা, গলা থেকে কাধে নামলাম পাগলের মতো ওকে চুমু দিতে লাগলাম।
।
ইতি- কোন শব্দ করতে পারছি না। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। ওনাকে খামচে ধরলাম। ওনার চুল ছিড়তে লাগলাম। ওনার পিঠের চামড়া ছিড়ে ফেলছিলাম।
।
রোদ- ও আমাকে খামচে ধরল। কিন্তু একটুও ব্যথা পেলাম না। ওর খামচিগুলো যেনো আমায় বলছে আরো আদর কর। উন্মাদের মতো আদর করতে লাগলাম ওকে। অনেক সুখ দিতে লাগলাম আমার জানপাখিটাকে। ওকে নিয়ে সুখের মহাসমুদ্রে ডুব দিলাম। আজ রাত শুধু দুটো শরীরেরই নয় দুটো আত্মার মিলনের রাত। আজ আমাদের পূর্ণমিলনের রাত।
।
।
সকালবেলা।
।
রোদ- সূর্যের আলো এসে চোখে পরতেই ঘুম কিছুটা ভেংগে গেলো। চোখ মেলতেই পাগলীটাকে নিজের বুকের উপর দেখে সুখ আর তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো মুখে। ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে উঠে গেলাম। পাগলীটার জন্য আজ অনেক Special একটা দিন। ওকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গেলাম কিছু কাজ সারতে।
।
ইতি- ঘুমের মাঝেই পাশে হাত দিতেই অনুভব করলাম ওনি নেই। চোখ মেলে দেখলাম আসলেই ওনি নেই। লজ্জায় আমি লাল হয়ে যাচ্ছি রাতের কথা ভেবে। এতো সাহস যে তখন আমি কোথায় পেলাম আল্লাহই জানে। কিন্তু তখন ওইটুকু সাহস না করলে যে ওনাকে নিজের করে পাওয়া হত না। যা পেয়েছি তাতেই আমি খুশি। ফ্রেস হয়ে নিলাম। কিন্তু ওনি কোথায় গেলেন। ওনাকে ফোন দিবো কিনা ভাবছি এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠল। মনে হয় ওনি এসেছে। দরজা খুললাম আপনি কে???
।
আগুন্তক- আমি এডভোকেট মিজানুর রহমানের অফিস থেকে এসেছি।
।
ইতি- আমার মনের মধ্যে ধুক করে উঠল। Uncle এর অফিস থেকে।
।
আগুন্তক- এই পারসেলটা দিয়ে যেতে বলল রোদ চৌধুরীকে।
।
ইতি- একটা খাম এগিয়ে দিলো। আমার হাত পা কাপতে লাগলো। গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। তাও কাপা কাপা গলায় কাপা হাতটা এগিয়ে বললাম আমি ওনার স্ত্রী আমাকে দিন।
।
আগুন্তক- এই নিন।
।
ইতি- দরজা লাগিয়ে রুমে চলে এলাম খামটা নিয়ে। আমার গলা শুকিয়ে আসছে। খামটার দিকে অনেক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। এখনও আমি কাপছি। তাও খামটা খুললাম। কিছু পেপার হ্যা আমি জানি এগুলো কিসের কাগজ। কিন্তু এখানে দুটো পেপার। একটি সম্পত্তির পেপার আআর অন্যটি আমাদের ডির্ভোস পেপার। হ্যা আমার আর রোদের ডির্ভোস পেপার। আমার চোখ দুটো গোলা হয়ে গেলো অনেক পানি টলটল করছে এই বুঝি পরে যাবে। সামনে তাকালাম টেবিলেই কলমটা রাখা। শুধু দু কদমের ব্যাপার। আজ দুটো কদমও আমার কাছে অনেক বেশি মনে হচ্ছে পা যেনো এগোতেই চাচ্ছে না। কলমটা হাতে নিলাম।
।।
।।
রোদ- উফ ১২টা বেজে গেলো। ভেবে ছিলাম পাগলীটার সাথে নাস্তা করব কিন্তু তা আর হলো না। পাগলীটা খেয়েছে কিনা কে জানে। এখন যত যলদি পারি পাগলীটার কাছে ছুটে যেতে মন চাইছে। মন চাইছে উড়ে চলে যাই। রাস্তায় এতো জ্যাম দূর আর থাকবোই না বাংলাদেশে। আমার পাগলীটাকে নিয়ে অন্য কোথাও পারি জমাবো। পাগলীটার কথা ভাবতে ভাবতেই বাসায় পৌছে গেলাম। বেল দিলাম তরসইছে না তাই বেল দিতেই থাকলাম কিন্তু ইতি দরজা খুলছে না। দরজায় বারি দিলাম সাথে সাথে দরজা খুলে গেলো। আমার বুকটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠল। দরজা খোলা ইতির কোন বিপদ হয়নি তো??? তাড়াতাড়ি ভিতরে গেলাম।
-ইতি ইতি এই ইতি কোথায় তুমি???
ইতিকে ডাকছি কিন্তু কোন সাড়া দিচ্ছে না। রুমে চলে গেলাম না দেখছি না। বারান্দায় দেখলাম নেই। কিচেনে গেলাম কিন্তু নাহ নেই। সারা বাসায় খুজলাম কিন্তু নেই। গেলো কোই মেয়েটা। এসে খাটের উপর বসে পরলাম। আচ্ছা অফিসে যায়নি তো ভেবেই উঠে দাড়ালাম তখনি চোখ পরল সামনের টি টেবিলে রাখা পেপার গুলো উপর। সামনে এগিয়ে পেপারগুলো দেখাল। Property পেপার আর আমাদের ডির্ভোস পেপার সিট আমি ভুলেই গিয়েছিলাম আংঙ্কেলকে বলতে এই পেপারের আর দরকার নেই। আমার চোখ আটকে গেলো পাশে রাখা ভাজ করা একটা খাম আর কাগজে। মনের ভিতর অজানা একটা ভয় কাজ করতে লাগল। সামন্য একটা কাগজ তাও খুলতে আমার ভয় লাগছে। কাগজটা খুলতেই একটা শব্দে আমার চোখ আটকে গেলো।
।
চিঠি-
।
অনেক ভালোবাসি আপনাকে তাই চলে যাচ্ছি বহুদূরে চিরতরে.....
।
।
।
চলবে.........#বস_বর
Part - 21
Writer : Eti Chowdhury
কাগজটা খুলতেই একটা শব্দে আমার চোখ আটকে গেলো।
।
চিঠি-
।
অনেক ভালোবাসি আপনাকে তাই চলে যাচ্ছি বহুদূরে চিরতরে.....
।
আমি কি দেখছি আমার নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না। চিঠিটা পড়া শুরু করলাম।
।
চিঠি-
।
স্যার,
স্যার ছাড়া আপনাকে অন্য কিছু বলে সম্ভোধন করতে পারলাম না। কি বলে সম্ভোধন করবো বলে দিতে পারেন আমায়?? কে আপনি আমার??? আমি বলবো??? আপনি আমার সব। হ্যা আপনি আমার সব। এক বছর আগে যখন বললাম আপনার হেল্প করব বিশ্বাস করেন আমি ভাবতেও পারিনি আপনাকে ছেড়ে যেতে আমার এতো কষ্ট হবে। কেনো হয় এতো কষ্ট বলতে পারেন???? কেনো আমার বুকটা ঝালা করে। আপনাকে ছেড়ে যেতে হবে ভাবলেই আমার বুকটা ভিষন ঝালা করে জানেন। জানেন আপনি কেন এমন হয়??? ভালোবাসি, হ্যা বড্ড ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি আপনাকে তাই চলে যাচ্ছি বহুদূরে চিরতরে। আর আপনাকে কষ্ট দিবো না। পাশের ওই খামটায় আমার রিজায়েন লেটার রাখা আছে। আপনার কাছে আরেকটা জিনিস চাইবো দিবেন প্লিজ। আমার জন্য একটু দোয়া করবেন আল্লাহ যেনো আমার মনে ইচ্ছা পূরণ করে। আমার কোল জুড়ে যেনো একটা ছোট্ট রোদ আসে। আপনাকে পাবার মতো সৌভাগ্য তো আমার নেই তাই যেনো আপনার অংশ আমার জীবনে আসে। ভাববেন না কখনও ওকে নিয়ে আপনার কাছে এসে কোন অধিকার দাবি করব না। আমি পারবো না আপনার নামটা নিজের থেকে মুছে ফেলতে তাই ডির্ভোস পেপারটা সাইন করতে পারি নি। এটুকু থাক আমার কাছে। অনেক কথা বলে ফেললাম ভালো থাকবেন। আজ আপনার জীবনের অনেক বড় একটি দিন। ওগো ভালোবাসি।
।
ইতি-
আপনার না আমার #বস_বর এর বউ
।
।।
রোদ- চিঠিটা নিয়ে মাটিতে বসে পরলাম। এগুলো কি হলো। সব আমার দোষ কেনো আমি বললাম না কেনো কেনো কেনো। আমার জন্য ও এতো কষ্ট পেলো। আমিও যে তোমায় বড্ড ভালোবাসি। কেনো বলার সুযোগটা দিলে না আমায়?? একটু অপেক্ষা করতে আমার জন্য। আমি যে মরে যাবো তোমাকে ছাড়া। প্লিজ জান একবার ফিরে আসো প্লিজ। ডির্ভোস পেপার টায় চোখ গেলো সত্যি ইতি সাইন করেনি। পেপারটা টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেললাম। নাহ ওকে আমি খুজে বের করবোই। বেরিয়ে পরলাম ওকে খুজার জন্য।
।
।
অফিসে-
।
রাফসান- কি ব্যাপার আজ স্যার এলেন না ইতিকেও দেখছি না।
।
আদি- হুম....বুঝতে পারছি না।
।
রোদ- ইতিকে ফোন দিচ্ছি কিন্তু ওর ফোন বন্ধ।
।
রাফসান- ইতি কিছু বলেনি???
।
আদি- নাহ তো আচ্ছা আমি একটু আসছি। মনে পরে গেলো। ইতি গতকাল একটা বক্স দিয়ে ছিলো। ওটা দেখা হয় নি। কেবিনে গিয়ে ওটাই খুললাম। বক্সে একটা রিং এটা আমি ইতিকে দিয়ে ছিলাম ও বলেছিলো বিয়ের পর পরবে। সাথে একটা চিঠি।
।
চিঠি-
।
আদি,
জানি আমার কথায় তুমি কষ্ট পাবে কিন্তু আমার কিছুই করার ছিলো না। তুমি আমায় ভালোবাসো আমি জানি। কিন্তু আমি যে তোমায় কোন দিনও ভালোবাসতে পারবো না। তুমি হয়ত বলতে সময় সব ঠিক করে দেয় কিন্তু তা সম্ভব নয় আমি যে আমার স্বামীকে বড্ড ভালোবাসি। হ্যা তোমাকে বিয়ে করলে তোমার সাথে অন্য হত। রাফসান না থাকলে জোকের ঘোরে হয়ত ভুলটা হয়েই যেতো। কিন্তু সময় থাকতে যেহেতু ভুলটা বুঝতে পেরেছি তাই এবার ভুলটা সুধরে নেবার পালা। তাই আমি চলে যাচ্ছি। এভাবে ওনার সামনে প্রতিনিয়ত ওনাকে না পেয়ে ওনার সামনে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি এতোটাও শক্ত নই। তাই চলে যাচ্ছি অনেক দূরে যেনো আর কখন তোমাদের কারো সাথে দেখা না হয়। একটা উপরকার করবে প্লিজ। তোমার আমার #বস_বর টাকে একটু দেখে রেখো প্লিজ। অনেক ভালোবাসি তাকে।
।
ইতি।
।
।
আদি- সিট মেয়েটা কি করলো। দৌড়ে ক্যান্টিনে গেলাম। রাফসান আর রিমি কথা বলছে। হুমরি খেয়ে পরলাম টেবিলে।
।
রাফসান- সাবধান পরেই তো যাতি।
।
আদি- ইতি চলে গেছে।
।
রাফসান- মানে??
।
আদি- সব ছেড়ে চলে গেছে।
।
রাফসান & রিমি- What!!!!!!!!!
।
আদি- হুম ডোস বেশি হয়ে গেছিলো মনে হয়। মেয়েটা মনের কথা স্যারকে না বলে উল্টা সব ছেড়ে চলে গেলো।
।
রাফসান- সিট মেয়েটা এতো বোকা কেন।
।
রিমি- অবাক হয়ে আদির দিকে তাকালাম। তুমি জানতে মেম স্যারকে ভালোবাসে???
।
রাফসান- আদি আমার ছোটবেলার বন্ধু
।
রিমি- মানে???
।
আদি- ওসব পরে হবে এখন ইতিকে খুজে বের করতে হবে।
।
রাফসান- আমি স্যারকে ফোন দেই।
।
স্যারকে ফোন দিচ্ছি কিন্তু ফোন বিজি। এতো কার সাথে কথা বলে। এবার লাগলো লাইন।
।
রোদ- রাফসানের ফোন। রিসিভ করেই বললাম ইতি কি অফিসে এসেছে???
।
রাফসান- না স্যার। আমরাও বের হচ্ছি ওকে খুজতে।
।
রোদ- তোমরা কিভাবে জানলে???
।
রাফসান- সেটা ফেক্ট না স্যার এখন ইতিকে আগে খুজতে হবে।
।
রোদ- হুম.... ওর ফেন বন্ধ। রিমিকে বলো আমদের ইন্টালিজেন্স ডির্পাটমেন্টে ইতির নম্বরটা দিতে যেনো খোলার সাথে সাথেই ট্রেক করে ও কোথায় আছে।
।
রাফসান- ওকে স্যার। স্যার ওকে পাবো তো।
।
রোদ- ওকে আমার পেতেই হবে। ফোন রেখে দিয়ে পাগলের মতে ড্রাইভ করতে লাগলাম।
।
রাফসান- আমি আর আদিও বেরিয়ে গেলাম। রিমি তুমি ট্রেকিংটা খেয়াল রেখো। কিছু জানতে পারলে সাথে সাথে আমাদের জানাবে। সবাই মিলে খুজতে লাগলাম কোথাও পাচ্ছি না।
।
।
ইতি- অনেক্ষণ হাটলাম। বাবার বাসার সামনে এসে দাড়িয়ে রইলাম। ভিতরে যাওয়ার মতো সাহস আমার নেই।
বাবা-মাকে কি বলবো। ওনারা যদি জানতে পারেন হয়ত মরেই যাবে। নাহ সম্ভব না। আমি পারব না ওনাদের এই কষ্ট দিতে। বাবা-মার সেদিনের কথা মনে পরে গেলো। মা বলেছিলো স্বামী যেমনই হয় বিয়ের পর সেই সব। আর রোদ তো সে হিসেবে অনেক ভালো ছেলে। বাবা বলেছিলেন একটা মেয়েই প্রতিটা ঘরকে পূর্ণ করে। সংসারের সুখের কারণ হয়। আর আমি কিনা সে ঘর সংসার ছেড়ে চলে এলাম। এ কথা আমি কিভাবে বলবো তাদের। নাহ তাদের কাছে যাওয়া যাবে না তাই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দিকে পা বাড়ালাম। কোথায় যাচ্ছি জানি না। শুধু হেটেই যাচ্ছি। হেটেই যাচ্ছি।
।
।
রোদ- বেলা ফুরিয়ে এলো কিন্তু কোথাও পেলামনা ইতিকে। আমার বুকের ভিতরটা কেমন যেনো করছে। ওকে ছাড়া ওই বাসায় আমি কিভাবে থাকবো। হঠ্যাৎ পথেই রাফসান আর আদির সাথে দেখা।
।
রাফসান- Any News স্যার???
।
রোদ- নাহ
।
আদি- আপনি চিন্তা করবেন না স্যার আমরা ঠিক ওকে পেয়ে যাবো।
।
রোদ- আদি তুমি..
।
আদি- ওসব কথা পরে হবে স্যার এখন ইতি বেশি Important
।
রাফসান- হ্যা স্যার। এখন তো দেরি হয়ে গেছে আপনি বাসায় চলে যান। কাল সকালে না হয় আগে থানায় একটা জিডি করবো। আর এমনও তো হতে পারে ও বাসায় ফিরে আসতেও পারে।
।
আদি- হ্যা স্যার রাফসান ঠিক বলছে।
।
রোদ- হুম,,,,,কিন্তু আমার মনটা মানছে না। আরো একটু খুজলাম। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। বাসায় ফিরলাম। নিজের মধ্যে কোন শক্তি পাচ্ছি না। বাড়ির গেটের সামনেই গাড়িটা থামিয়ে দিলাম আর গাড়ি চালানোর শক্তি পাচ্ছি না। গাড়ি থেকে নামতেই। পাশে চোখ পরলো। কেউ একজন বাসায় সমানের আইলেনে মাথা নিচু করে বসে আছে। হালকা আলো তাও বুঝা যাচ্ছে। কিছুক্ষণ ওভাবেই দাড়িয়ে দেখলাম। পা গুলো আগাচ্ছে না। তাও ধীরে ধীরে তার সামনে গিয়ে হাটু গেরে রাস্তায় বসে পরলাম। সে এখনো হাত দিয়ে মাথা নিচু করে রেখেছে যেভাবে আমরা টেবিলে মাথা রাখি সেভাবে। বসে পরলাম তার সামনে চোখ দিয়ে কেবল পানি পরছে। গলাটা শুকিয়ে গেছে। কথা বের হচ্ছে না। তাও বললাম
-ব...বউ





।
ইতি- বউ শব্দটা কানে যেতেই স্তম্ভতি ফিরে পেলাম। মাথা উচু করে দেখলাম ওনি হাটু গেরে বসে আছেন আমার সামনে। ওনাকে পাগল পাগল লাগছে দেখতে। কেঁদেই যাচ্ছেন। ওনাকে দেখে যে আমারও চোখের পানি আর আমার কথা শুনছে না। চোখের বাধ ভেংগে গেলো।
।
রোদ- বউ
।
ইতি- আবার বউ ডাকটা শুনে ওনাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলাম। হাউমাউ করে দুজন কাঁদতে লাগলাম।
।
রোদ- ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ওর বুকে মাথা রেখে হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলাম। কেউ কোন কথা বলছি না। শুধু কান্না করছি। অনেক্ষণ বসে এভাবেই কান্না করলাম। ওর বুকটা ভেসে যাচ্ছে আমার চোখের পানিতে।
।
ইতি- হাত দিয়ে ধরে ওনার মুখটা তুলে ধরলাম।
।
রোদ- ওর চোখের পানি মুছে দিলাম। উঠে দাড়িয়ে গেলাম। হাতটা বাড়িয়ে দিলাম। ওর উঠতে কষ্ট হচ্ছে তাও আমার হাতটা ওর দু হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে উঠল। দাড়াতেও কষ্ট হচ্ছে ওর। অনেক ক্লান্ত দেখাচ্ছে ওকে। কোলে তুলে নিলাম। কোলে নিয়ে উপরে চলে এলাম। লিফ্টেও ওকে নামাই নি। কোলে নিয়েই দাড়িয়ে ছিলাম। বাসায় ডুকে ওকে রুমে নিয়ে খাটে বসিয়ে দিলাম। ওকে বসিয়ে দিয়ে আমি উঠে যাচ্ছিলাম।
।
ইতি- ওনি চলে যাচ্ছিলো দেখে খোপ করে ওনার হাতটা ধরে ফেললাম।
।
রোদ- ও হাতটা ধরলায় দাড়িয়ে গেলাম।
।
ইতি- পারলাম না। I am Sorry. কোথায় যাবো বুঝতেই পারছিলাম না। আমার যে যাওয়ার কোন....
।
রোদ- বাস চিৎকার করে উঠলাম। ভাবো কি নিজেকে তুমি????? তুমি চলে যাবে আর আমি পাগলের মতো খুজব তোমায়??? হ্যা পাগলের মতোই খুজেছি তোমায় সারাদিন। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি। পাগলের মতো খুজেছি তোমায়। কে তুমি??? এই মেয়ে কে তুমি যে তোমাকে আমি পাগলের মত খুজব। আবার সরি বলা হচ্ছে ঝটকরে ওকে কাছে টেনে নিলাম। ও কাঁদছে। ওকে আরো কাছে টেনে নিলাম। ঠোঁট দিয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিলাম। মূহুর্তের মধ্যেই ও লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। এই বলো না তুমি আমার কে????
।
ইতি- আমি লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম।
।
রোদ- আমাকে এতো কষ্ট দিয়ে এখন লজ্জা পাওয়া হচ্ছে। ওর মাথা তুলে বললাম। ও তাও নিচে তাকিয়ে আছে। ওর থুতুনিতে হাত দিয়ে মুখটা উপরে তুললাম। তাকাও আমার দিকে।
।
ইতি- ওনার চোখের দিকে তাকালাম। আমি লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।
।
রোদ- ও বউ বল না তুমি আমার কে????
।
ইতি- ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম। আমি আপনার বউ।
।
রোদ- ভালোবাসি বউ অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি বউ
।
ইতি- আবার হাউমাউ করে কান্না করে দিলাম। অনেক ভালোবাসি
।
রোদ- আজ তোমাকে না পেলে মরেই যেতাম আমি
।
ইতি- খোপ করে ওনার মুখ ধরে ফেললাম। একদম বাজে কথা বলবেন না। খুন করে ফেলবো। আপনি মরতে পারবেন না।
।
রোদ- ওর হাতে একটা চুমু দিয়ে হাতটা ধরে ফেললাম। তাহলে কেনো গেলে আমায় ছেড়ে???? আর যাবে না বলো।
।
ইতি- যাবো তো
।
রোদ- তাহলে আমি মরেই যাবো।
।
ইতি- এবার রাগি চোখে তাকালাম। বারে আমি বাবার বাসায় যাবোই
।
রোদ- না তুমি যাবা না বা....এ্যা বাবার বাসায়??
।
ইতি- তো কতদিন বাবার বাসায় যাই না। আমি যাবোই আর অনেক দিন থাকবোও
।
রোদ- সেটা তো আমিও যাবো বলেই একটা হাসি দিলাম।
।
ইতি- জি না আপনাকে নিচ্ছি না। আপনি গেলে আমি শান্তুিতে থাকতে পারবো না।
।
রোদ- হুহ বললেই হলো তাহলে তোমাকেও যেতে দিবো না।
।
ইতি- হুহ....ওনাকে ধাক্কা দিয়ে চলে আসছিলাম ওনি আমার হাত ধরে ফেললেন।
।
রোদ- ওকে টেনে কাছে নিয়ে এলাম। ওর পিছনে আমি। মুখটা ওর কাছে নিয়ে গেলাম। কি যেনো বলছিলে। কি দোয়া করব??? আমার অংশ আমার সন্তান তোমার কোল আর কি কি যেনো বলছিলে
।
ইতি- এমা.... কি লজ্জা কি লজ্জা দু হাত দিয়ে মুখ ডেকে নিলাম।
।
রোদ- ওর কাধে একটা চুমু দিলাম। ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম এতো কম আদরে চলবে। জুনিয়র চৌধুরীর জন্য যে আপনাকে আর অনেক অনেক আদর করা লাগবে। আমার অংশে যে, এতো সহজে ধরা দিবে সে???
।
ইতি- ইসস.... আপনি না।
।
রোদ- এখন লজ্জা পাওয়া হচ্ছে। চাই না জুনিয়র চৌধুরী??
।
ইতি- ঘুরে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম। চাই চাই চাই
।
রোদ- সো ফাস্ট তিনটা চাই??
।
ইতি- হা
ওনার বুকে কিল ঘুষি দিতে লাগলাম। আপনার মুখে কিছু আটকায় না। বেহায়া


।
রোদ- হ্যা বেহায়া আমি তোমার প্রেমে বেহায়া।
।
ইতি- এখন ছাড়ুন ফ্রেস হয়ে আসি। মুখের কি অবস্থা করেছেন। সারাদিন তো কিছু খাননি।
।
রোদ- আসলেই অনেক খুদা লেগেছে। কিন্তু তোমাকে যে যেতে দিতে মন চাইছে না।
।
ইতি- পা উচু করে ওনার কপালে একটা চুমু দিলাম। আর কোথাও যাচ্ছি না। বলেই ফ্রেস হতে চলে গেলাম।
।
রোদ- অনেক শান্তি লাগছে। মনের ভিতরের তুফানটাও তার কিনারা ফিরে পেয়েছে। ওহ রাফসান আর আদিকেও তো বলা দরকার। ওদের কনফারেন্স কল করলাম।
।
রাফসান- হ্যালো
।
আদি- হ্যালো
।
রোদ- ইতি কে পেয়েছি।
।
রাফসান- Really স্যার। পাগলটা কোথায়??
।
রোদ- ফ্রেস হচ্ছে সারাদিন বাইরে ছিলো ক্লান্ত এখন।
।
আদি- যাক ফাইনালি পাওয়া তো গেলো।
।
রাফসান- বাট কোথায় পেলেন স্যার??
।
রোদ- বাসার সামনেই বসে ছিলো। কিন্তু আদির ব্যাপারটা আমি ক্লিয়ার না।
।
আদি- কাল সরাসরি না হয় সব বলব।
।
রোদ- ওকে তাহলে কাল দেখা হচ্ছে।
।
রাফসান & আদি- ওকে স্যার টেক কেয়ার ইউ বোথ।
।
।
কিছুক্ষণ বারান্দায় দাড়িয়ে রইলাম।
।
ইতি- পিছন থেকে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
রোদ- আমার বউটা ফ্রেস হয়ে গেছে??
।
ইতি- জি এখন আপনি যাবেন।
।
রোদ- আমার যে যেতে মন চাইছে না।
।
ইতি- এ্যা বললেই হলো। আসুন ওনার হাত ধরে টেনে বাথরুমে ডুকিয়ে দিলাম আমি কিচেন চলে এলাম ওনার জন্য খাবার রেডি করতে। ওনি ফ্রেস হয়ে সোজা টেবিলে চলে এলেন।
।
রোদ- তুমি এখানে কি করো? আমি তোমাকে খুজছি।
।
ইতি- কেনো??
।
রোদ- তোমাকে দেখবো তাই
।
ইতি- তাই, তো খাবে কে??? খেতে বসলাম।
।
রোদ- একটা প্লেট যে??? তুমি খাবে না???
।
ইতি- খাবো তো। আজ আমি আপনাকে খাইয়ে দিবো। নিন হা করেন।
।
রোদ- পাগলীটা আমায় এতো ভালবাসে। আর আমি ওকে কি কষ্ট টাই না দিলাম।
।
ইতি- ওসব কথা ভাবতে হবে না যা হয় ভালোর জন্যই হয়। এখন ওসব ভেবে মন খারাপ করা লাগবে না।
।
রোদ- ভ্রু কুচকে তাকালাম ওর দিকে।
।
ইতি- বারে আপনি আমার মনের কথা শুনতে পারলে আমি পারবো না কেনো আপনার মনের কথা বুঝতে।
।
রোদ- দুজনেই হাসতে লাগলাম। ও পরম আদরে আমায় খাইয়ে দিলো। খাওয়া শেষ করেই দুষ্টু বুদ্ধি এলো। ওকে কাতুকুতু দিলাম।
।
ইতি- এ্যা কি করছেন। খবরদার আমার সহ্য হয় না।
।
রোদ- তাই বলেই ওর দিকে আগাতে লাগলাম কাতুকুতু দিবো বলে।
।
ইতি- নাআআআ.....দিলাম দৌড়
।
রোদ- আমিও ওর পিছু পিছু দৌড়াতে লাগলাম। সারা বাসায় দৌড়ালাম। ও হেসেই যাচ্ছে। আর ওর এই হাসি দেখার জন্যই ওর সাথে এতো পাগলামী করছি। এই হাসিটার জন্য যে আমি সব করতে পারি সব সব। একপর্যায় ওকে নিয়ে বিছানায় পরে গেলাম। দুজনই খিলখিল করে হেসে দিলাম। ও আমার বুকে মাথা রাখল। ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে আমি উঠে বসলাম। হাতটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম এসো
।
ইতি- ওনার হাতটা ধরে উঠে বসলাম।
।
রোদ- ওকে নি মিররের সামনে দাড়ালাম। তুমি দাড়াও আমি আসছি। একটা পেকেট এনে ওকে পিছন থেকে আবার জড়িয়ে ধরলাম। পেকেটটা সামনে দিয়ে বললাম যাও রেডি হয়ে আসো। আর আমি না ডাকা পর্যন্ত প্লিজ বের হবে না। আমি তোমাকে টেক্সট দিবো।
।
ইতি- কিন্তু কেনো???
।
রোদ- প্লিজ কোন প্রশ্ন কর না। আমি যা বলছি কর।
।
ইতি- আচ্ছা। পেকেটটা ওনার হাত থেকে নিয়ে আমি বাথরুমে চলে গেলাম।
।
রোদ- আমি এদিকে সব রেডি করে নিলাম। বেস সব রেডি। লুকিং নাইস। নিজেকে একবার মিররে দেখে এরেকটু পারফিউম দিয়ে নিলাম।
।
ইতি- ইসস....ওনি এটা কি করেছেন। পাগল একটা। লজ্জায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি তাও ওনার মনের ইচ্ছা আমি পূরণ করবোই।
।
রোদ- ওকে টেক্সট পাঠিয়ে দিলাম। চলে এসো।
।
ইতি- ওনার টেক্সটও এসে পরেছে। আমার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে কিভাবে যাবো আমি ওনার সামনে। বেরিয়ে গেলাম।
।
রোদ- দরজা খুলার শব্দে পিছনে ফিরে তাকালাম। হা করে রইলাম। মাশাহ আল্লাহ জোরেই বলে ফেললাম। এ আমি কি দেখছি। সুবহান আল্লাহ। আমার বউকে যা লাগছে।
।
ইতি- ওর চাহনি দেখে আমি লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিলাম। লজ্জায় নিচে তাকিয়ে আছি চোখই তুলতে পারছি না।
।
রোদ- ও সামনে আসতেই ওর চারিদিকে একটা চক্কর দিলাম। ওকে আপাদমস্ত দেখছি।
।
ইতি- আমি লজ্জায় মাথাই তুলতে পারছি না। ওনি আমার চারিদিক ঘুরে আমার সামনে আসতেই লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম। আমার যে কি লজ্জা করছে।
।
রোদ- তোমার এই লজ্জাটাই তো আমাকে আরো পাগল করে তোলে তোমার জন্য। আজ সকালে অনেক খুজে ওর জন্য এই নাইটি টা কিনেছি। আমার বউটাকে মানায় এমন কিছু।
।
ইতি- আমি কখনও এমন কিছু পরিনি। আজ প্রথম ওনার জন্য পরলাম তাও ওনার দেয়া। কি যে লজ্জা লাগছে।
।
রোদ- ওর কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম Happy Anniversary my dear wife.
।
ইতি- 
এতো কিছুর মাঝে আমার তো খেয়ালই ছিলো না আজ আমাদের বিবাহবার্ষিকী। একবছর হয়ে গেছে। পিছনে ফিরেই ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম। ওনি আমাকে ঘুরিয়ে দাড় করালেন। কেক এনেছেন। আমি তো লজ্জায় মাথায়ই উঠাতে পারিনি কিভাবে দেখবো। ওনি রুমটা হালকা ডেকরেট করেছেন।


।
রোদ- এসো। ওকে নিয়ে কেকটা কাটলাম।
।
ইতি- ওনাকে কেক খাইয়ে দিয়ে কানে কানে বললাম Happy Anniversary আমার #বস_বর বলেই ওনার গালে একটা চুমু একে দিলাম।
।
রোদ- ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় নিয়ে গেলাম। আজ আমার বউটাকে বিনা সংকচে আদর করব। আর কোন বাধা নেই আর আসতেও দিবো না। আমার বউটা যে ছোট্ট একটা রোদ চেয়েছে তার আবদার কি না রেখে পারি। ওর সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠলাম।
।
ভোরে।
।
রোদ- ভোরের হালকা আলো এসে ওর চেহারায় পরছে কি মায়াবী লাগছে দেখতে অপলক চেয়ে রইলাম।
।
।
।
চলবে......
ভোরে।
।
রোদ- ভোরের হালকা আলো এসে ওর চেহারায় পরছে কি মায়াবী লাগছে দেখতে অপলক চেয়ে রইলাম। ও ঘুমাচ্ছে আর আমি ওকে দেখছি।
।
ইতি- হঠ্যাৎ ঘুম ভাংঙ্গতেই দেখি ওনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ওনার তাকানো দেখে আমার যে কি লজ্জা লাগে। মনে হয় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। ওনি যেনো ওনার দৃষ্টি দিয়েই আমাকে আদর করছেন।
।
রোদ- ওর কপালে একটা চুমু একে দিলাম। ও লজ্জায় আমায় বুকে মুখ লুকালো। কেমন কাটল আমার বউয়ের রাতটা???
।
ইতি- ইসস.....আপনার মুখে কিছুই আটকায় না
।
রোদ- হাহাহাহা.......কেন গো???
।
ইতি- আমার লজ্জা করে আপনি বুঝেন না????
।
রোদ- তাই....আর আদরের সময় বলেই ওকে বিছানায় ফেলে ওর উপরে উঠে গেলাম।
।
ইতি- এই কি হচ্ছে একদম না ঠিক হচ্ছে না কিন্তু....
।
রোদ- তাই...... বলেই ওর হাত দুটো খাটের উপর চেপে ধরলাম। ওর ঘারে মুখ দিলাম। চুমু দিতে শুরু করলাম।
।
ইতি- একদম ঠিক হচ্ছে না কিন্তু এই এ..এ....ই আমি আর কথা বলতে পারছি না। আমার নিঃশ্বাস ভারি হয়ে আসছে আমি মাতাল হয়ে যাচ্ছে।
।
রোদ- ওর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। ও আর আমাকে বাধা দিচ্ছে না। আমাকে উন্মাদ করতে ব্যস্ত হয়ে গেছে। আমিও উন্মাদের মতো ওকে নিয়ে আবার সুখের সমুদ্রে পারি জমালাম।
।
প্রায় ৯ টা বাজে দুজন দুজনকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছি। আমার বউয়ের চোখ ভরা লজ্জা। ওকে টান দিয়ে বুকে নিয়ে নিলাম।
।
ইতি- অফিসে যেতে হবে না???
।
রোদ- নাহ আজ যাবো না।
।
ইতি- কেনো???
।
রোদ- আজকের দিন শুধু তোমার আমার???
।
ইতি- আর অফিসের কাজ??? আপনি না গেলে অফিস যে গোল্লায় যাবে।
।
রোদ- উফফ..... আমার বউটা যে কেনো এতো Unromantic...





।
ইতি- ওনার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালাম। কি বললেন???
।
রোদ- মুখ ভার
করে বললাম ঠিকি তো বলেছি আমি তোমার সাথে থাকতে চাই আর তুমি আমাকে জোর করে অফিসে পাঠাচ্ছো।

।
ইতি- আমিও তো যাবো
।
রোদ- ওহ তাও তো ঠিক
। তুমি তো আমার সামনেই থাকবে রোমেনন্স করা যাবে বলেই একটা চোখ মারলাম।

।
ইতি- ইসসসস..... এখন উঠুন।
।
অফিসে।
।
রোদ- গাড়ি অফিসের সামনে থামালাম। নেমে ইতির দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দিলাম।
।
ইতি- হাসি দিয়ে আজ অধিকারের সাথে ওনার হাতটা ধরলাম।
।
রোদ- আজ ওর হাত ধরাটা অন্য রকম লাগছে। ওর হাত ধরে উপরে গেলাম। অফিসের লবিতে গিয়ে দুজনেই চমকে গেলাম। রাফসান, রিমি, আদি আর বাকি সবাই ফুল হাতে দাড়িয়ে আছে আমাদের ওয়েলকাম করার জন্য। আমরা অনেকটাই অবাক হলাম।
।
।
সবাই ফুল দিয়ে ওয়েলকাম করল। তারপর যার যার জায়গায় চলে গেলো।
।
রোদ- রাফসান, রিমি, আদি তোমরা থাকো। আমাদের অনেক কথা বাকি।
।
সাবই ক্যান্টিকে বসলো। রোদ নিজে ইতির চেয়ার টেনে দিলো। এটা দেখে ওরা তিনজন উউউ বলে খুশি প্রকাশ করল আর উৎসাহ দিলো । রোদ নিজের চেয়ারটা ইতির একদম কাছে নিয়ে গিয়ে গা ঘেষে বসল।
।
রোদ- এখন বলো কাহিনি কি???
।
রাফসান- আমি শুরু করি।
।
আদি- হা তুই শুরু কর। যেহেতু নাটের গুরু তুই
।
ইতি- মানে???
।
রাফসান- well আদি আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড।
।
ওরা তিনজনই অবাক।
।
ইতি- Whatt????
।
রোদ- মানে???
।
রিমি- কিভাবে????
।
রাফসান- Its true...
।
ইতি- আমি আর তুমি মিলেই তো ওর ইন্টারভিউ নিলাম তুমি তো কিছু বললা না আর এতো দিনেও তো...
।
রাফসান- সব বলছি। আদি আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড আমরা একসাথে পড়ালেখা করেছি। তোমাদের ব্যাপারটা আমি ওর সাথে সেয়ার করে ছিলাম তখন ও ই আমাকে বুদ্ধি দেয় তোমাদের মাঝে কোন তৃতীয় ব্যাক্তি আসলেই হয়ত বা তোমরা নিজেকে হারানোর ভয়ে একে অপরকে নিজের মনের কথা বলবা। আর কখনই অফিসে লোক নেয়া হবে। জানতে পেরেই আমি ওকে বলি ইন্টারভিউটা এটেন্ট করতে। আর আমাদেরই প্লেন ছিলো আমরা কাউকে বলব না আদি আমার ফ্রেন্ড। তাহলে তুমি ইজিলি ওর সাথে ফ্রি হতে পারবে আর তাই হলো।
।
ইতি- ও যদি ইন্টারভিউ তে সিলেক্ট না হত তাহলে??
।
রাফসান- একটা হাসি দিয়ে বললাম আদি লেখাপড়ায় আমার থেকেও ভালোছিলো। সো সিলেক্ট হবে সেটা আমি সিওর ছিলাম। আর বেস শুরু হয়ে যায় তোমাদের মিলানো কাজ। আদির কথা মতোই আমি তোমাকে সেদিন রাতে ফোন দিয়ে ছিলাম। সবগুলো কথা আদির দেয়া ছিলো শুধু ভয়েস আমার ছিলো।
।
আদি- আর ওই ডোস টাই বেশি হয়ে যায়। তুমি স্যারকে মনের কথা না বলে উল্টো বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে।
।
রাফসান- এই তো আর বাকিটা সবার জানা Now You Both are together.
।
রোদ- আসলে তোমাদের Thanks দিলেও কম হবে।
।
ইতি- আচ্ছা বিয়ের জন্য এতো শপিং হলো যে....
।
রাফসান আর আদি হেসে দিলো।
।
ইতি- হাসছো কেনো???
।
আদি- ওগুলো রাফসান আর রিমির জন্য।
।
ইতি- Really
।
রাফসান- হুম ভাবছি এবার আমিও বিয়েটা করে ফেলি।
।
সবাই হাসাহাসি করছে।
।
রিমি- ও সিট আজ তো MM কোম্পানির সাথে মিটিং
।
রিমির কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে দিলো।
।
রাফসান রিমিকে কাছে টেনে বলল আমি ছাড়া এই মোটা চশমাটার যে কি হবে আল্লাহই জানে।
।
মিটিং রুমে ডুকার আগে রোদ ইতির কিছুটা কাছে গিয়ে বলল Now you are Mrs Rod Chowdhury Mrs MD of the Company sweetheart. বলেই রোদ মিটিং রুমে ডুকে গেলো। ইতি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ভিতরে গেলো।
।
ইতি- Hello Gentles man's.
I am e..Mrs Eti Rod Chowdhury the Mrs MD of the Company welcome you all today. Lets start the meeting.
।
।
অনেক্ষণ মিটিং চলল। সব সময়ের মতো এবারো ডিলটা ওরা পেয়ে গেলো। মিটিং শেষ করে সবাই ওদের অবাক করে দিয়ে ওদের বিয়ের জন্য Congratulate করলো। এর আগের মিটিং এ একজন জিঙ্গেস করেছিলো ও রোদ র বউ কি না আজ ওনিও হাসি মুখে ওদের অধিন্দন জানালো।
।
।
ইতি বসে কাজ করছিলো হঠ্যাৎ রোদের আগমন। রোদ গিয়ে ইতির চেয়ারের পিছনে দাড়ালো। গালের কাছে মুখ নিলো
।
রোদ- পিছন থেকে ওকে একটা খাম দিলাম।
।
ইতি- এটা কি???
।
রোদ- Surprise for you dear wife
।
ইতি- খুলব???
।
রোদ- হুম....
।
ইতি- খুলে অবাক হয়ে গেলাম Really???? উঠে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
রোদ- ওর মাজায় হাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
ইতি- আমি মাথা তুলে ওনার দিকে তাকালাম।
।
রোদ- খুশি?????
।
ইতি- অনেক অনেক অনেক.....
।
রোদ- So Mrs Rod Chowdhury Ready for your Honeymoon???
।
ইতি- ইসসস...... বলেই মাথা নিচু করে নিলাম।
।
রোদ- জুনিয়র চৌধুরীকে নিয়েই কিন্তু ফিরব???
।
ইতি- আমি লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছি।
।
রোদ- ওর মুখের কাছে মুখটা নিলাম।
।
ইতি- ওনি কাছে আসাতে আমি ঠান্ডায় শক্ত হয়ে গেলাম।
।
রোদ- ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁটটা রাখলাম আর....
।
রিমি- এ্যা সরিইইই.....আমি কিছু দেখি নি বলেই রিমি দিলো দৌড়
।
রোদ- রিমিকে দেখে ওকে ছেড়ে দিলাম। যলদি রেডি হয়ে নাও আজ রাতের ফ্লাইট বলেই বেরিয়ে এলাম।
।
আমি গিয়ে রাফসান আর আদিকে কিছু কাজ বুঝিয়ে দিলাম ১৫ দিন থাকবো না। ওকে নিয়ে Bangkok যাচ্ছি হানিমুনে।
।
রাত ১০টায় আমাদের ফ্লাইট টেক-অফ করল।
।
ইতি- ওনি আমাকে নিয়ে যে কি পাগলানী শুরু করল। পাগল একটা। কিন্তু কিছুতেই বাধা দিলাম না অনেক ভালোবাসি যে তাকে।
।
রোদ- Bangkok পৌছেই সোজা হোটেলে চলে এলাম। আগেই সব বুক করে রেখেছিলাম আমি।
।
দুজন ফ্রে হয়ে নিলাম।
।
ইতি- আমি ফ্রেস হয়ে মিররের সামনে দাড়ালাম। ওনি পিছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরলেন।
।
রোদ- ওর পেটে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। ওর ঘারে একটা চুমু দিতেই ও কেঁপে উঠলো। ওকে কোলে তুলে নিলাম। কোলে নিয়ে বিছানার দিকে গেলাম। ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম আমার কিন্তু খুব যলদি জুনিয়র চৌধুরী চাই।
।
ইতি- আমি লজ্জায় ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
রোদ- আবার আমরা আমাদের সুখের মিলনে লিপ্ত হলাম।
।
।
।
৫ বছর পর.....
।
ড্রাইভার - মানণি সাবধানে পরে যাবে যে।
।
কিন্তু কে শুনে কার কথা। গুটি গুটি পায়ে আগাতে লাগলো যেনো কোম্পানীর চেয়ারম্যান। সমানে এগোতেই দুম করে ধাক্কা লাগলো। রিমি পিছনে ফিরে দেখেই বলে আরে মানণি যে।
।
বুসরা- না মানণি না দুদমননিন বনো(Good Morning বলো) (তোতলা তোতলা কন্ঠে বলল বুশরা)
।
রিমি- ওহ সরি সরি Good Morning Ma'am.
।
সামনের কটা দাঁত বের কের হাসলো বুশরা। আবার সামনে এগোল সবাই Good Morning Ma'am বলতে লাগলো আর বুশরা তার তোতলা কন্ঠে সবাইকে দুদমননিন (Good morning) বলে সামনে যাচ্ছিল। সামনে গিয়েই পাপাআআআআআ বলে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে গেলো।
।
রোদ হাসি মুখে কোলে তুলে নিলো বুশরাকে । আমার মাম্মাম যে।
।
বুশরা রোদের গালে চুমু দিয়ে বলল আনাবিউ(I love you)
।
রোদ- I love you lot my princes. বলেই মেয়ের কপালে চুমু দিলাম।
।
ইতি- একি বাপ-মেয়ে মিলে আমাকে ভুলে গেলে???
।
রোদ আর বুশরা একে অপরকে দেখে হাসি দিয়ে আবার ইতির দিকে তাকিয়ে বলল লাভিউ মাম্মাম।
।
এতোক্ষণে ড্রাইভারও পিছু পিছু চলে এলো। সরি স্যার মামণি স্কুল থেকে বায়বা করল এখানে আসবে তাই মিয়ে এলাম।
।
ইতি- ঠিক আছে।
।
বুশরা- আততা তাতা দাও তাতা বলে বুশরা ড্রাইভারকে বিদায় দিলো। ড্রাইভার থাকলে যদি ওকে বাসায় পাঠিয়ে দেই তাই ড্রাইভারকেই পাঠিয়ে দিলো কত বুদ্ধি বুড়িটার।
।
হ্যা বুশরা রোদ আর ইতির ভালোবাসার অংশ। ওদের ভালোবাসার চিহ্ন বুশরা চৌধুরী। ওদের ভালোবাসার প্রতীক। বুশরাকে নিয়েই সারা অফিস মেতে থাকে। সবাই ওকে কোলে নিতে চায় কিন্তু ওর ফেভারিট রাফসান, রিমি আর সবচাইতে ফেভারিট আদি। তাই আদিকে পেলে বুশরা আর কিছুই চায় না। বুশরাকে নিয়ে ওরা সবাই টানাটানি করে বুশরা গিয়ে আদির কোলে বসে থাকে। বুড়িটা পাকা পাকা কথা বলে। কেবিনের সামনে দাড়িয়ে রোদ আর ইতি দেখছে ওরাও যেনো বুশরাকে চোখে হারায়। অনেক বেশি ভালোবাসে যে নিজের সন্তানকে।
।
রোদ- পিছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
।
ইতি- এই কি হচ্ছে???? সবাই দেখবে যে।
।
রোদ- দেখুক আমার কি। আমি আমার বউকে ছাড়ছি না।
।
ইতি- পাগল একটা....
।
রোদ- এই শুনো না।
।
ইতি- কি গো???
।
রোদ- এখন তো সময় হয়ে গেছে
।
ইতি- কিসের???
।
রোদ- বুশরার খেলার সাথীকে আনার ডাবল জুনিয়র চৌধুরীকে আনার।
।
ইতি- ইসস.... বলেই লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম।
।
রোদ- এক সন্তানের মা হওয়ার পরও মেয়েটার লজ্জা এক ফোটাও কমে নি। আজও প্রতিটা রাত সেই প্রথম রাতের মতোই লজ্জা পায় পাগলীটা আমার মনে হয় এখন লজ্জাটা আরো বেড়েছে। ওর এই লজ্জাটাইতো আমায় ওর জন্য আরো অনেক বেশি পাগল করে তোলে। অনেক ভালোবাসি ওকে।
।
বুশরা- তোমলা লোমান্স কলো??? বলেই বুশরা মাজায় হাত দিয়ে বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে রইল
।
অবাক হয়ে দুজন বুশরার দিকে তাকালো। বুড়িটা কখন এলো। এতো কাপা হয়েছে যে কি বলবে। একদম বাবার মতো হয়েছে।
।
রোদ- ওরে আমার বুড়ি টা বলেই রোদ বুশরাকে কোলে তুলে নিলো। বুশরা বাবা-মায়ের কপালে চুমু দিয়ে দিলো।
।
।
।
হয়ত আরো ২ বছর পর আরো একজন জুনিয়র চৌধুরী চলে আসবে। আর সাথে ওদের ভালোবাসাও বেড়ে যাবে এ ভালোবাসা কখনও কমার নয়। এ ভালোবাসা কেবল বাড়তেই থাকে। ভালো থাকুক ভালোবাসাগুলো ভালো থাকুক ভালোবাসার মানুষ গুলো। প্রতিটা রোদ আর ইতির জীবনে ভালোবাসা হয়ে জন্ম নিক বুশরারা।
The End.... nhhh