গল্পঃ #অভিমানী_ভালোবাসা
.
.
.
.
.
আমি শিশির খান,,, কলেজের লাইফ শেষ করে ইউনিভার্সিটির লাইফে পা দিয়েছি। শুনেছি ইউনিভার্সিটির লাইফটা নাকি অনেক enjoy এর লাইফ,, প্রেম,, ভালোবাসা ইউনিভার্সিটিতেই বেশি হয়ে থাকে।
।
আজ আমার ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট দিন,,, আমি আর আমার তিন (জয়,আরিফ, আরমান) বন্ধু মিলে " ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে " এডমিশন নিয়েছি।
।
নতুন এক অনুভূতি নিয়ে ইউনিভার্সিটিতে প্রবেশ করলাম,,,, আমাদের "ঢাকা ইউনিভার্সিটির " পরিবেশটা সত্যি অনেক সুন্দর,, চারদিকে গাছপালা,,, ক্লাস রুমের পাশে ফুলের বাগান,,, লাইব্রেরী,, সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর।
।
মুভির মতো র্যাগ হয়না ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে তবে সিনিয়রদের সম্মান করতে হয়। সিনিয়রদের সম্মান করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।
।
বন্ধুদের সাথে কথা বলতে বলতে ক্লাসে যাবার সময় একটা মেয়ের সাথে খেলাম ধাক্কা,,,( ব্যাস প্রেম হয়ে গেলো সেটাই তো ভাবছেন)
।
মেয়েটিঃ কি আশ্চর্য চোখে দেখতে পান না নাকি,,, অসভ্য ইডিয়ট 

আমিঃ সরি,,, আমি না হয় চোখে দেখতে পাইনি,,, আপনি তাহলে ইচ্ছে করে আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন
।

।
মেয়েটিঃ আমি কেন আপনাকে ধাক্কা দিতে যাবো,,, কি আজে বাজে কথা বলছেন

আমিঃ আমি কেন তাহলে আপনাকে ধাক্কা দিতে যাবো 

।
মেয়েটিঃ আপনার মতো ছেলেদের আমি খুব ভালো করে চিনি,,, সুন্দরী মেয়ে দেখলে প্রথমে ধাক্কা দিয়ে সরি বলে,, কথা বলার সুযোগ খুঁজেন তার পর প্রেম ভালোবাসা করতে চান,,,এটা ছেলেদের সভাব হয়েগেসে। 

আমিঃ এই দেখুন অনেকক্ষন ধরে আপনি মুখে যা আসছে তাই বলে যাচ্ছেন,, আর কে সুন্দরী 
আপনি
,,, আপনি যদি সুন্দরী হন তাহলে সুন্দর কে অপমান করা হবে,,, আপনার সাথে প্রেম আমি কেন কোন ছেলেই করবে না,,, যেই বদমেজাজি আপনি
।




।
মেয়েটিঃ চুপ একদম চুপ,,, অন্যায় করে আবার বড় বড় কথা,,, অসভ্য,, ইডিয়ট,, এসব বলতে বলতে মেয়েটির বান্ধবীর ওকে ডেকে নিয়ে গেলো।
।
আমার বন্ধুরা দারিয়ে দারিয়ে মেয়েটির আর আমার ঝগড়া দেখলো,,, আর আমাকে বলো কিরে বন্ধু ইউনিভার্সিটিতে আসতে না আসতেই প্রেমে পড়ে গেলি নাকি,,,
আমি বললাম প্রেম আর এই মেয়ের সাথে,, কোন চান্স নেই
।( মেয়েটি দেখতে সত্যি অনেক সুন্দর,, রুপকথার রাজকন্যা দের মতো,,, কিন্তু একটু বদমেজাজি
)


।
সবাই চল ক্লাসের সময় হয়ে গেছে,,,
ক্লাসে ঢুকেই দেখি সেই বদমেজাজি মেয়েটাকে

মেয়েটি তাহলে আমাদের ক্লাসমেট
যেভাবে ভাষন দিচ্ছিলো মনে করে ছিলাম সিনিয়র হবে


।
ক্লাসের প্রথম দিন থাকায় স্যার সবার সাথে পরিচয় হওয়ার জন্য সবার নাম জানলেন,,, মেয়েটির নাম সাদিয়া আক্তার নীলা 

।
আমি ও আমার নাম বললাম স্যারকে নীলা আমার দিকে তাকালো,,, আমার নামটা মেয়েটি শুনলো।
।
ক্লাস শেষে সবার পরিচিত হলাম,,, কিছু ছেলে মেয়েদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ ও হলো।
কিন্তু নীলা কারো সাথে কথা না বলেই চলে গেলো,,, অনেক রাগী আর অহংকারী মেয়ে সেটা ভালোই বুঝতে পারলাম।
।
তারপর বাড়ি ফিরে আসলাম,, ফ্রেশ হয়ে দেখি মা দুপুরের খাবার দিয়েছে খেতে বসতে বলো,, খেতে খেতে ইউনিভার্সিটি প্রথম দিন কেমন গেলো সেটা বললাম,, মা আমার সব থেকে কাছের বেস্টফ্রেন্ড,, মার সাথে আমি সব কিছু শেয়ার করি 

।
নীলার কথাও মাকে বললাম,,, অনেক বদরাগী ও অহংকারী মেয়ে নীলা,,, বড়লোক বাপের দেমাগি মেয়ে।
দেখতে যেমন সুন্দর ব্যাবহার তেমন কুৎসিত।
।
মা বলো ইউনিভার্সিটিতে কোন ঝামেলা করবি না,,, মেয়েদের সাথে তো না-ই,,, কোন সমস্যা হলে তোমার বাবাকে বলবে সে গিয়ে সমাধান করে দিয়ে আসবে।
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললাম।
।
পরের দিন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে কথা বলছি দেখি নীলা গাড়ি নিয়ে আসেছে,,, ওর সাথে একটা বান্ধবী ও ছিলো,,,
গাড়ি থেকে ক্লাসে যাওয়ার সময় কিছু একটা পরে যায় কিন্তু নীলা খেয়াল করেনি,,,
।
ক্লাসে আজ একটা এসাইনমেন্ট জমা দেয়ার কথা ছিলো,,, সেটাই পরে গেছে নীলার,,,
স্যার এসে সবাই কে এসাইনমেন্ট জমা দিতে বলে,, কিন্তু নীলা তার এসাইনমেন্ট খুঁজে পাচ্ছে না,,
।
আমি মনে ভাবছি ওর এসাইনমেন্ট টা কি ওকে দিবো নাকি দিবো না,,, ওরতো অনেক অহংকার আজ একটু অহংকার ভাংচুর হোক

এসব ভাবতে ভাবতে নীলার দিকে তাকিয়ে দেখি নীলার মুখটা কেমন যেনো শুকিয়ে গেছে,, এসাইনমেন্ট না পেলে স্যারের কাছে বকাঝকা খেতে হবে তাই নীলার মুখটা এমন হয়ে গেছে।।।
।
নীলার মায়া ভরা মুখটা দেখে আমি ওর এসাইনমেন্ট টা ওর বান্ধবীর হাতে দিয়ে দেই,,আর বলি এটা নীলার ক্লাসে আসার সময় তার কাছ থেকে পড়ে গেছে মনে হয়।
।
এসাইনমেন্ট টা পেয়ে নীলার মুখে হাসি ফুটে আসে,, সত্যি নীলাকে হাসি মুখে একদম পরীর মতো লাগে,,,
।
ক্লাস শেষে নীলা এসে আমাকে ধন্যবাদ না দিয়ে বলে
নীলাঃ তুমি আমাকে ফলো করো তাই না,,, তাই তো আমার এসাইনমেন্ট টা তুমি পেয়েছো,, নাকি তুমি নিজেই এসাইনমেন্ট টা সরিয়ে আবার ফিরিয়ে দিলে,,, কথা বলার জন্য । তোমাদের মতো ছেলেদের আমি দু'চোখে সহ্য করতে পারি না 

।



।
আমিঃ দেখো তুমি কিন্তু এবার একটু বেশি করে ফেলছো,,আমি তোমার উপকার করলাম আর তুমি আমার সাথে এমন খারাপ আচরণ করছো।
নীলাঃ তোমার মতো ছেলেদের সাথে এর থেকে বেশি ভালো আচরণ করতে পারি না।
এই বলে নীলা চলে গেলো,,,
।
তারপরের দিন নীলা কাজিন মামুনকে সাথে করে ক্যাম্পাসে আসে,,, মামুন নীলার চাচাতো ভাই,, এই ইউনিভার্সিটিতেই পড়ে,,আমাদের সিনিয়র।
।
নীলা ও মামুন ক্যানটিনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো,, আমি ও আমার বন্ধুরাও ছিলাম ক্যানটিনে,, হঠাৎ কতো গুলো ছেলে এসে মামুকে মারতে শুরু করলো,,, আমি মামুনকে বাঁচতে যাবো কিন্তু আমার বন্ধু জয় আমাকে ধরে ফেললো,, ঝামেলায় না জড়াতে বললো আমাকে,,,
।
ছেলে গুলোকে নীলা বাধা দেয়াতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নীলাকে,,, এটা দেখে আমি আর ঠিক থাকতে পারলাম না,,,,, আমি গিয়ে ছেলেদের মারতে শুরু করলাম,,আমি যাওয়াতে আমার ববন্ধুরাও আসলো আমার সাথে,,,
।
কিছুখন পর পুলিশ এসে ছেলে গুলোকে ধরে নিয়ে যায়,,,
ইউনিভার্সিটির থেকেই পুলিশ ডাকা হয়েছে,,, ছেলে গুলো যাবার সময় আমাকে বলে গেলো তুই কাজটা ভালো করলি না,,, নিজের বিপদ নিজেই ডেকে নিয়ে আসলে,,,,
।

।
স্যার এসে মামুনকে বলো কি হচ্ছে এসব ক্যাম্পাসে, ছেলে গুলোকারা,,,
তারপর জানতে পারলাম কিছুদিন আগে ছেলে গুলোর সাথে মামুনের ঝামেলা হয়েছিল এবং মেরেছিলো ছেলে গুলোকে,, তাই আজ মামুনকে একা পেয়ে এভাবে মারতে এসেছে।
গল্পঃ #অভিমানী ভালোবাসা
.
.
.
.
.তারপর মামুন এসে আমাকে ধন্যবাদ জানায়,, নীলা চুপ করে আছে,,, ধাক্কা খেয়ে পরে নীলার হাতটা কেটে গেছে,, আমি আমার রোমাল দিয়ে হাতটা বেধে দিলাম।
।
মামুন নীলাকে নিয়ে চলে গেলো,,,
পরের দিন নীলা ক্যাম্পাসে আসলো না,, নীলার বান্ধবী সুমিকে জিজ্ঞেস করলাম নীলা কেন ক্যাম্পাসে আসলো না,, সুমি বলে ওর অনেক জ্বর এসেছে তাই আসেনি,,
।
সেদিন নীলার জন্য মনটা সত্যি খুব খারাপ গেলেছিল,,
২দিন পর নীলা ক্যাম্পাসে আসলো,,,, আমি ক্লাসে ছিলাম নীলা এসে আমার পাশেই বসলো,, আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি নীলার দিকে,,,
।
নীলাঃ এভাবে তাকিয়ে কি দেখছো 

আমিঃ তুমি হঠাৎ আমার পাশে বসলে,,, ?
নীলাঃ কেন তোমার পাশে আমার বসা নিষেধ নাকি,,, নিষেধ হলে বলো আমি অন্য কোথাও বসি,,

আমিঃ না তা কেন হবে,,, তুমি তো আমাকে সহ্যই করতে পারোনা,,আর আমার পাশে তুমি বসবে সেটা কেমন জানি লাগছে
।

নীলাঃ আগের সব কিছুর জন্য আমি সরি
আর ধন্যবাদ আমাকে সেদিন save করার জন্য।

আমিঃ না সরি বলতে হবে না,,, It's ok
নীলাঃ আমরা কি বন্ধু হতে পারি 

আমিঃ হুম সিউর
।

।
তারপর নীলার হাতে আমি হাত রাখলাম,, কেমন যেনো একটা অনুভূতি হচ্ছে বলে বোঝানো যাবে না।
নীলা আর আমি একসাথে ক্লাস করি,, ক্যাম্পাসে আড্ডা দেই।।। মাঝে মাঝে ফোনে কথাও হয়,,।
।
কিছু দিন পর নীলার জন্মদিন,, আমি রাত ১১ঃ৫৯ মিনিটে নীলাকে কল দেই,,।
।
নীলাঃ হ্যালো শিশির বলো 

আমিঃ তুমি তোমার বারান্দায় একটু আসবে প্লিজ 

নীলাঃ এতো রাতে তুমি এখানে কি করছো শিশির 

আমিঃ আসো না প্লিজ
নীলা বারান্দায় আসলো,,, আমি মমবাতি দিয়ে Happy Birthday To You লিখে জ্বালিয়ে wish করলাম।
।
নীলা অনেক খুশি হলো,,, তারপর নীলাকে একটা পুতুল গিফট করলাম,,,
নীলাঃ সত্যি আজ আমি অনেক খুশি,,, এমন একটা দিন আমার লাইফে আসবে আমি কখনো ভাবিনি,, ধন্যবাদ শিশির,, কিন্তু আজ আমার জন্মদিন তুমি কি করে জানলে

আমিঃ সুমির কাছ থেকে জেনেছি,,
।
পরের দিন নীলা তার জন্মদিন উপলক্ষে বাসায় পার্টি দেয়৷ সব বন্ধু-বান্ধবীরা আসে,, নীলার ওর মা-বাবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
।
পার্টি শেষ করে বাসায় যাবো নীলা আমাকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে যাচ্ছে বার বার,,,,
আমিঃ কিছু বলবে নীলা
নীলাঃ হ্যাঁ,, না,, সাবধানে বাসায় যেও,, বাসায় পৌছে আমাকে কল করো।
আমিঃ ওকে ঠিক আছে। বায়,গুড নাইট 

।
পরের দিন নীলা ফুসকা খাবে,,, আমাকে নিয়ে গেলো,,,,
ফুসকা খারার পর দেখে নীলা তার ব্যাগ গাড়িতে রেখে আসছে,,,
নীলাঃ এই শিশির আমাকে টাকা ধার দাওতো আমি ব্যাগ রেখে আসছি,,,
আমিঃ ধার কেন আমি বিল দেই।
নীলাঃ না,,, ধার দাও,,, তোমার টাকা আমি কেন নিবো,,আমি কে তোমার হুম 

( আমার কাছে এসে বলে)
আমিঃ তুমি আমার বন্ধু তাই
নীলাঃ শুধু বন্ধু আর কিছু না
আমিঃ আর কি হ্যাঁ
।

নীলাঃ শুধু বন্ধু তাহলে খাবো না তোমার টাকায় ফুসকা
।

কাল তোমার টাকা আমি দিয়ে দিবো।এই বলে নীলা চলে গেলো।
।
এভাবে আমাদের বন্ধুত্ব ভালোই যাচ্ছিলো,, আমাদের আর কিছু দিন পর ফাইনাল এক্সাম তার বিদায় নিবো সবাই ইউনিভার্সিটি থেকে।
।
পরের দিন নীলা ক্যাম্পাসে আসে দেখে আমি নেই,,, আমাকে না পেয়ে নীলা আমাকে কল দিলো,,,
।
নীলাঃ হ্যালো শিশির,, কোথায় তুমি,,, আজ কেন ক্যাম্পাসে আসলে না

আমিঃ আমি এয়ারপোর্টে এসেছি, আমার কাজিন লন্ডন থেকে এসেছে,,, ওকে নিতেই এসেছি
।

।
নীলাঃ ওকে ঠিক আছে,,, সাবধানে বাসায় যেও,, ভালো থাকো তুমি,, মিস ইউ,,বায়
আমিঃ ওকে,, মিস ইউ টু,,বায়
।
পরের দিন আমি এসে মন খারাপ করে ক্যানটিনে বসে আছি,, নীলা আসলো,,,
।
নীলাঃ কি খবর জনাব,মন খারাপ করে বসে আছেন কেন

আমিঃ তোমাকে বললাম না। আমার কাজিন নাবিলা লন্ডন থেকে এসেছে কাল,,,
নীলাঃ হ্যাঁ তো কি হয়েছে??
আমিঃ নাবিলা হলো আমার ফুপা-ফুপির একমাত্র মেয়ে,,, ও যেনো তাদের ছেড়ে আর লন্ডনে যেতে না পারে তাই ওর নিয়ে ঠিক করেছে।
।
নীলাঃ বাহ এটাতো খুবই খুশির সংবাদ,,, এতে মন খারাপ করার কি আছে,,, ( বিয়ে কি তোমার সাথে হবে নাকি,, দুষ্টামি করে বললো)
আমিঃ তোমার দুষ্টামি টাই সত্য হয়েছে,,, আমার সাথেই নাবিলার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
।
আমার বিয়ের কথা শুনে নীলার মুখ কেমন যেনো মলিন হয়ে গেলো।
আমিঃ কিরে নীলা তোর আবার কি হলো,,
নীলাঃ না কিছু না,,, congratulations
আমি কিছু বলার আগেই নীলার কাজ আছে বলে চলে গেলো।
।
আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না নীলার আবার কি হলো।
আজ ৭দিন হয়ে যায় নীলা ক্যাম্পাসে আসে না।।।মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে।
নীলার বান্ধবী সুমিকে জিজ্ঞেস করলাম নীলার কি হয়েছে
ক্যাম্পাসে কেন আসে না,,
।
সুমির কথা শুনেতো আমি সত্যি অবাক হয়ে গেলাম,
সুমিঃ নীলা তোমাকে অনেক পছন্দ করে,, পছন্দ বললে ভুল হবে তোমাকে অনেক ভালোবাসে নীলা।
তোমার বিয়ের কথা শুনে নীলা অনেক কষ্ট পেয়েছে,,,
শিশির তুমি নীলাকে একটু বুঝতে পারলে না।।
।
(আমি ও তো নীলাকে ভালোবাসি,, নীলাও আমাকে ভালোবাসে,, আমি তো ওকে কিছু বলতে পারিনি যদি আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায় তার ভয়ে মনে মনে ভাবছি)
তারপর নীলার বাসায় আসলাম,, বাসায় আসে নীলার আম্মুকে সালাম দিয়ে বললাম আন্টি নীলা কোথায়,, রুমে আছে বলে আমাকে উপরে যেতে বললো।
।
রুমে গিয়ে দেখি নীলা মন খারাপ করে শুয়ে আছে,
কি ব্যাপার নীলা তুমি ক্যাম্পাসে আসো না কেন,,ফোনটা পযন্ত ওফ কেন,, কি হয়েছে বলো
।
নীলা কি না বলে আমার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।।
কি আমার সাথে কথা বলবি না তো,, আমি চলে যাচ্ছি থাক তুই।
নীলা আমার হাতটা টেনে ধরলো,,
।
নীলাঃ কেমন আছো তুমি শিশির??
আমিঃ ভালো আর থাকি কি করে বল,,
নীলাঃ কেন কি হয়েছে তোমার আবার,, তোমার তো বিয়ে,, তোমার তো ভালোই থাকার কথা।
আমিঃ ঘরে বসে কথা বলতে ভালো লাগছে না,, চল বাহিরে কোথাও থেকে হেটে আসি,,
নীলাঃ না,, আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না,,
আমিঃ না বললে হবে না৷৷ যাবো মানে যাবো,,
।
আমি জোর করে নীলাকে নিয়ে হাতিরঝিলে আসলাম,,
আমিঃ নীলা সত্যি করে বলতো তুই কি কাউকে ভালোবাসিস???
নীলাঃ আমি আবার কাকে ভালোবাসতে যাবো,, আমাকেই বা কে ভালোবাসবে,, আমার মতো এমন বদরাগী মেয়েকে কেউ ভালোবাসে নাকি,,
।
আমিঃ কিযে বলিস না,, তোর মতো এতো সুন্দরী মেয়েকে কে না ভালোবাসবে বল,,
নীলাঃ জানি না,, শিশির তুই কি আমাকে ভালোবাসিস???
আমিঃ হুম ভালোবাসি তো বন্ধুর মতো বউয়ের মতো না।
।
নীলাঃ দেখলি তো এবার তুই আমাকে ভালোবাসিস না তাহলে অন্য কেউ কি করে আমাকে ভালোবাসবে বল।
গল্পঃ #অভিমানী ভালোবাসা
#পর্ব____________৩য় (অন্তিম)

.
.
.
.নীলাকে বাসায় দিয়ে আসলাম,,, বাসায় এসে দেখি নাবিলা মন খারাপ করে বসে আছে,,,
।
আমিঃ কিরে নাবিলা মন খারাপ কেন,, কি হয়েছে আমাকে বল?
নাবিলাঃ আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না,,,
(মেঘ
না চাইতে জল
আমি ও তো চাই বিয়েটা না হোক,,আমি নীলাকে ভালোবাসি অকেই বিয়ে করতে চাই


আমি মনে মনে বলছি)
আমিঃ কে কি হয়েছে,, তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?
।
নাবিলাঃ হ্যাঁ,, আমি সোহানকে ভালোবাসি,, লন্ডনে আমরা একসাথে লেখাপড়া করতাম,, আমাদের ৩ বছরের রিলেশন,, প্লিজ তুমি একটু মা-বাবা কে বুঝাও না প্লিজ,,
শিশির ভাইয়া তুমি বুঝালে সবাই বুঝবে।
।
আমিঃ ওকে ঠিক আছে,, কিন্তু সোহান কি তোকে বিয়ে করতে রাজি আছে???
নাবিলাঃ হুম,,, সোহানের সাথে আমার কথা হয়েছে,,, মা-বাবা রাজি হলে সোহান তার মা বাবাকে আমাদের বাসায় পাঠাবে,,,
।
আমিঃ ওকে,,, কিন্তু তুই এসব কথা আগে কেন বলিসনি,, ফুপা-ফুপিকে তোর রিলেশন এর কথা বললেই পারতি।
নাবিলাঃ আমি কিছু বলার আগেই সব ঠিক করে ফেলেছে তার উপর আবার শরীরটা ও ভালো নেই,, তাই কিছু বলতে পারিনি,, তাই তো বাধ্য হয়ে তোমাকে জানালাম,,কিকিছু একটা করো প্লিজ।
।
আমি সোহানের সম্পর্কে সব কিছু জেনে নিলাম নাবিলার কাছ থেকে,, তারপর ফুপা-ফুপুর কাছে গেলাম,,,
আমিঃ তোমার কিছু কথা বলার ছিলো,,,!
ফুপুঃ হুম বলো বাবা কি বলবে?
আমিঃ তুমি চাওনা তোমাদের মেয়ে সুখে থাকুক।
ফুপাঃ হুম।।আবশ্যই চাই তাইতো তোমার সাথে নাবিলার বিয়ে ঠিক করেছি।
আমিঃ তোমরা একবারও কি নাবিলার মতামত জানতে চেয়েছো,, ওর কি কাউকে পছন্দ আছে কিনা,,।
ফুপুঃ আমার জানা মতে নাবিলা কাউকে পছন্দ করে না,, থাকলে আমাকে আগে বলেনি কেন,,
আমিঃ কি করে বলবে,, এখনো কি নাবিলার লেখাপড়া শেষ হয়েছে যে কিছু বলবে,,আর মেয়েরা এমনি তাদের মনের কথা গুলো সব সময় বলতে পারেনা ,,, নাবিলা সোহান নামের একটি ছেলেকে পছন্দ করে,,, সোহান ছেলেটা অনেক ভালো,, বাবার ব্যবসা আছে,, ছেলে শিক্ষিত,, সব থেকে বড় কথা হচ্ছে দু'জন দুজনকে ভালোবাসে,,,বোঝে,,, তোমাদের মেয়ের সুখের কথা ভেবে আমার কথা গুলো একটু মন দিয়ে বোঝ প্লিজ।।
।
ফুপা-ফুপুঃ নাবিলা ডেকে নিয়ে এসলো,,, তুমি সোহানকে পছন্দ করো সেটা আমাদের বলতে পারতে,,, আমরা চাই তুমি সব সময় সুখে থাকু,, তুমি আমাদের একমাত্র মেয়ে,,তোমার সুখেই আমাদের সুখ।
নাবিলাঃ আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম বিয়ের কথা শুনে,, আর বাবার শরীরটা ও ভালো না।।তাই কিছু বলতে পারিনি মা।
ফুপাঃ শিশির আমাদের সব কিছু বলছে,,, সোহানকে আসতে বলো বাসায় কথা বলার জন্য। তোমার পছন্দকে আমরা মেনে নিলাম,
তারপর নাবিলা তার মা-বাবাকে জরিয়ে ধরে,,, আমাকে ধন্যবাদ জানান নাবিলা,,, শিশির ভাইয়া তুমি না থাকলে হয়তো আমি মা-বাবাকে মানাতে পারতাম না।
।
সোহান তার মা-বাবাকে নিয়ে এসে নাবিলার সাথে সোহানের বিয়ের কথা পাকা করে যায়,,, আমার সাথে যেই তারিখ বিয়ে হবার কথা ছিলো সেই তারিখেই ওদের বিয়ে।
।
আমাদের ফাইল এক্সাম গেলো,,, কাল সোহান ও নাবিলার বিয়ে,,, আমি নীলাকে কিছু বলিনি এসব বিষয়ে।
।
নাবিলার বিয়ে দিয়ে,,, রাত ১টা বাজে,,, আমি নীলার বাসায় যাই।।। গিয়ে দেখি নীলা ছাদের বসে কান্না করছে


।




।
আমিঃ কিরে কাদুনি পাগলী কান্না করছিস কেন,,কি হয়েছে,, বয়ফ্রেন্ড ছেকা দিয়েছে নাকি

নীলাঃ তুমি এখানে কেন,,আজ না তোমার বিয়ে,,
আমিঃ এই দেখ আমি পাঞ্জাবি পরে আছি,,
নীলাঃ সত্যি তুই বিয়ে করে নিলি।। আমার ভালোবাসা কি সত্যিই বুঝতে পারোনি।
আমিঃ তুমি কি আমাকে ভালোবাসিস সেটা বলেছিস
নীলাঃ বলতে হবে কেন,, বুঝিস না।
আমিঃ না বুঝি না,, সত্যি আমাকে তুমি ভালোবাসো,,
নীলাঃ হুম অনেক ভালোবাসি নিজের থেকেও অনেক বেশি,, কিন্তু কোনদিন বলতে পারিনি,,, আর যখন বললাম তুমি অন্য কারো হয়ে গেছো।
।
আমিঃ না আমি অন্য কারো না৷।। শুধু তোমার আমি আর তুমি শুধু আমার
।

নীলাঃ মানে???????
আমিঃ নাবিলার সাথে আমার বিয়ে হয়নি,,, সবকিছু খুলে বললাম নীলাকে,, সব কিছু শুনে নীলা আমাকে জরিয়ে ধরলো,,,
নীলাঃ তুমি আমাকে এসব আগে কেন বলনি,, কতটা কষ্ট পেয়েছি এই কয়দিন আমি সেটা তুমি জানো,,
আমিঃ তোমার মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শুনার জন্যই আগে কিছু বলিনি।
নীলাঃ আমাকে কষ্ট দেয়া,, তোমাকে আমি পরে বুঝাবো,,,
।
তারপর আমাদের রেজাল্ট আসলো দুজনেই ভালো রেজাল্ট নিয়ে পাশ করেছি।
।
আমি নীলাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলাম,,। মাকে বললাম ওই সেই নীলা,, মা নীলাকে দেখে পছন্দ করলো,,
পরের দিন মা-বাবা নীলাদের বাসায় গেলো আমাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে,,,
।
নীলার বাবা ছিলো আমার বাবার ছোট বেলার বন্ধু,,, সেটা আমি আগে জানতাম না,,
নীলার বাবা আমাদের বিয়ের কথাতে রাজি হয়,,
,,,
আজ আমার ও নীলার বিয়ে,,,, অনেক ধুমধামে আমাদের বিয়ে হয়,,,
।
বাসর রাতে রুমে ঢুকে দেখি নীলা বউ সেজে বসে আছে,, আমি গিয়ে ঘুমটা সরিয়ে নীলার মিষ্টি মুখটা দেখলাম,,
মিষ্টি নাকি ছাই,,, নীলা রেখে আছে,,,
।
নীলাঃ তুমি আমাকে ধরবে না,,
আমিঃ কেন আবার কি হলো,, আমি না তোমার স্বামী,,
নীলাঃ তুমি এখনো পযন্ত আমাকে ভালোবাসি বলেছো

আমিঃ একটা গোলাপ ফুল নিয়ে হাটু নিচু করে বসে নীলাকে প্রপোজ করলাম,,
I love you Nila..
আমি তোমাকে সেই প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসি

আর সারাজীবন ভালোবাসবো।
নীলাঃ I love you too..
বলে আমাকে জরিয়ে ধরে বলো আমাকে ছেড়ে কোনদিন যাবে নাতো,, এইভাবে সব সময় ধরে রাখবে শক্ত করে বলো।।।
।
আমিঃ হুম,, তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না,,, যতো দিন বাচঁবো তোমার হয়ে বাচঁবো।
,
নীলাকে কালে নিয়ে ঘাটে শুয়ে দিলাম,, কপালে চুমু খেলাম,,,,,,,,,, বাকিটা ইতিহাস 


।




।
।
।
।
[ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন প্লিজ ]
সব ভালোবাসা গুলো এভাবেই ভালো থাকুক সেই প্রত্যাশা নিয়ে বিদায়,, ভালো থাকবেন সবাই।