আপন
Write : Sabbir Ahmed
~~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~
কলেজের মাঠে আড্ডা দিচ্ছে শুভ ও তার কিছু বন্ধু...
-ও বেবি জান জান(শুভ)
-জান জান (বন্ধুরা)
-ও বেবি জান জান বলে আমার কোলে হিসু করেছে
-হা হা হা হা হা (সবাই মিলে)
-দোস্ত মাল টা দেখ (একটা বন্ধু)
-ধুরর বাল কি বলিস ওটা তো একটা মগ (শুভ)
-তোর মগ মনে হয়??(বন্ধুটি)
-হ্যা দেখ যে চেহারা সাজ দিয়েছি কি! আর দেখ লুঙ্গি পড়ে আসছে
-হা হা হা হা
-এখানে শুভ কে???(হঠাৎ একটা কালো বোরখা পড়া মেয়ে এসে প্রশ্ন টা করলো)
-আমি শুভ। কেন কি হইছে???(শুভ)
-আপনাকে খালু ডাকছে
-হে হে আমাকে আপনার খালু চিনে কিভাবে??
-আমার খালু মানে আপনার বাবা। এই কলেজের প্রিন্সিপাল
-ওহহহ
-আপনাকে তাড়াতাড়ি যেতে বলছে
-ওই তোরা থাক আমি আসছি
তো শুভর পরিচয় টা দিয়ে নেই। শুভ ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছে। তার বাবা এই কলেজেরই প্রিন্সিপ্যাল। আপাদত এই টুকুই থাক...
-আচ্ছা আপনার নাম কি??(শুভ মেয়েটিকে বলল)
-রিমি (মেয়েটি)
-ওহহ। আপনি আমার কত নম্বর খালার মেয়ে??
-আমার মা ৭ নাম্বার
-ওহহ তার মানে একদম ছোট খালার মেয়ে।
-হুমমম
-নেত্রকোনা থেকে আসছেন??
-হুমমম
-খালা কেমন আছে??
-ভালো
-তা আপনি কি জন্য আসছেন এখানে??
(কথাটা শুনে রিমি দাড়িয়ে গেলো সাথে সাথে শুভও)
-দাড়ালেন কেনো??(শুভ)
-কারন ছাড়া কি আমি আসতে পারি না?? খালা কে দেখতে আসতে পারি না??
-না মানে আপনাদের কথা শুধু শুনতাম কখনো দেখি নি। তা হঠাৎ করে।আপনি আসলেন তাই জিজ্ঞাস করলাম
-ভর্তি হতে আসছি
-হুমম ঠিক ধরেছি
-কিহ??
-কিছু না
-ওহহ
-তা কোথায় ভর্তি হবেন??
-এখানেই অনার্স প্রথম বর্ষে
-তার মানে আপনি আমার থেকে এক ইয়ার এর বড়
-কেনো আপনি কি ইন্টার ২য় বর্ষে??
-হুমমম
-ভালো
কথা বলতে বলতে প্রিন্সিপ্যাল এর রুমে চলে আসলো তারা দুজন...
-আব্বা সরি স্যার আসতে পারি???(শুভ)
শুভর বাবা শুভর দিকে তাকালো।
-হুমমম ভেতরে আসো(বাবা)
-আমাকে ডেকেছেন কেনো??
-এটা তোর ছোট খালার..
-মেয়ে সেটা আমি জানি। এখন কি করতে হবে বলেন
-ওর ভর্তির ব্যাপারে কিছু কাজ আছে। তুই সবসময় সাথে থাকবি আর কাজ শেষ হলে ওকে নিয়ে বাড়ি যাবি ঠিক আছে
-আচ্ছা ঠিক আছে। আসি স্যার
-রিমি তুমি ওর সাথে যাও
-ঠিক খা...সরি স্যার
-হুমম ঠিক আছে..
রিমি আর শুভ রুম থেকে বের হয়ে আসলো...
-ওই এখন কি করবেন??(শুভ)
-আপনি আমার পিছু পিছু আসেন
-হুমমম। একটা কথা বলি
-জ্বি বলেন
-আপনি তো আমার বড় আমাকে তুমি করে বলেন
-নাহ ছোটদের আমি তুই /আপনি এই দুইটা বলি
-ওহহ
-তা আপনাকে কি বলব??
-আপনার ইচ্ছা
-ওকে একটু তারাতারি হাট। অনেক গরম কাজ টা শেষ করে বাসায় যাবো
-কি মেয়েরে বাবা (আস্তেই বলল কথাটা)
-কিছু বললি??
-না আপ্পি কিচ্ছু বলি নাই
ভর্তি শেষ হওয়ার পর...
-আপু আপনি বাসায় যান। আমার এখানে কাজ আছে??(শুভ)
-তোর আবার কি কাজ??(রিমি)
-আছে বলা যাবে না
-খালু তো তোকে কোনো কাজে দেয় নি। আমাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলছে
-প্লিজ আপনি একাই যান
-আমি জানি তুই কি করবি
-কি করবো??
-মেয়ে দেখবি
-নায়ুযুবিল্লাহ। আমি তো ভালো।
-এহহহ। আসছে, তোকে যখন ডাকলাম তখন তো মেয়ে দেখছিলি
-না কি যে বলেন
-আমার সাথে বাসায় যাবি?? নাকি খালু কে ফোন দিবো??
-ফোন দিতে কে বলছে। বাসায় চলেন
-হুমম চল
বাসায় এসে...
-মা মা মা মা মা মা মা (শুভ ডাকলো)
শুভর এই অদ্ভুত ডাক দেখে রিমি হা হয়ে তাকিয়ে আছে)
-এই তাকিয়ে আছেন কেনো??(শুভ)
-এইভাবে কেউ ডাকে??(রিমি)
-জানি না। তবে আমি ডাকি
-কিরে এসেই শুরু করে দিয়েছিস??(মা)
-ও মা খালামণি কোথায়??? কোনোদিন দেখি নি তাকে। নানার শেষ নক্ষত্র টাকে দেখতে চাই(শুভ(
-এই যে তোর ছোট খালা
-খালামণি কেমন আছেন??
-ভাল তুমি কেমন আছো??
-ভাল। তা একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-আপনার বাবা মানে আমার নানা কয়টা বিয়ে করেছিলো???
-........(সবাই অবাক)
-বলেন
-একটা
-তাহলে একটা থেকে যদি ৭ টা মেয়ে আর ৫ টা ছেলে হয়!! ভাবা যায়!! আমার তো সন্দেহ হয়
-ওই তোর শয়তানি খুব বাড়ছে তাই না?? গেলি এখান থেকে??
-ধুর মা ভাবতে দাও সংখ্যা কিন্তু ১২!!
-দাড়া দেখাচ্ছি (শুভ দৌরে তার রুমে চলে গেলো)
-ওর কথা কিছু মনে করিস না। ও একটু এইরকমই। বাসায় কেউ নেই। কিন্তু ও থাকলে মনে হয় অনেকই আছে। মাতিয়ে রাখে বাড়িটা(শুভর মা)
-না বুঝছি তো (খালা)
-ওই তুই ফ্রেস হয়ে খেতে আয় (শুভর মা রিমি কে বলল)
-হুমমম
দুপুরের পর। শুভ তার রুমে বিছানা শুয়ে ফেসবুক ইউজ করছিলো এমন সময় রিমি শুভর রুমের দরজায় এসে বলে...
-আসতে পারি???(রিমি)
শুভ ফোনটা মুখের সামনে থেকে সরিয়ে দেখে আর কিছু বলতে পারে না। হা হয়ে আছে...
-ভেতরে যাওয়া যাবে না (রিমি)
-আপনি কে??(শুভ)
-আমাকে চিনতে পারছিস না?? আমি রিমি তোর আপু।
-না মানে এত সুন্দর কেনো??
-কে সুন্দর
-তুমি
-কিহহহহ???
-না মানে আপনি
-বাইরেই কি দার করিয়ে রাখবি??
-নাহ ভেতরে আসেন
ভেতরে আসা দেখে শুভ উঠে বসলো। রিমি এসে তার থেকে একটু দূরে বসলো...
-তা আমাকে চিনতে পারলি না কেন??(রিমি)
-মুখ বাধা ছিলো তো আপনার তাই (শুভ)
-ওহহ। তা কি করছিস??
-এই তো এফ বি তে আছি
-এফ বি তে কি করিস??
-কিছু না
-প্রেম টেম করিস নাকি??
-নাহ পড়ার সময় পাই না আবার প্রেম
-তুই পড়তে বসিস?? আমার তো বিশ্বাস হয় না
-না পড়লাম গেম তো খেলি। আর একটু ধাপ্পাবাজি না করলে জীবন চলবে না
-হুমমম।
-আপু একটা কথা বলি আপনাকে
-হ্যা বল
-আপনি প্রেম করেন?? বা কউকে ভালবাসেন??
-প্রেম করি না। তবে একজন কে খুব পছন্দ করি
-ওহহ।
-তা তুই কাউকে পছন্দ করিস??
-হ্যা আমি তো প্রতিদিনই অনেককে পছ...না মানে সেইরকম ভাবে কাউকে পছন্দ করি নি। তবে আজকে একজন কে হয়েছে
-তাই??
-হুমম
-তাহলে খালা কে বলি
-খালা কে বলে কি করবেন??
-বিয়ে দিয়ে দিবে
-আমি তো এখনো ছোট
-এখনো ছোট!!
-হুমম
-ফিডার দেই
-.........
-কিরে মুখ চোক্কা করলি কেন??
-এমনি
-তোর ফোনটা দে তো
-কি করবেন??
-দেখি কার কার সাথে কথা বলিস
-আপনি কেনো দেখবেন??
-তোর আপু হই আমি তাই
-দে ফোন
-না
-দে বলছি
-নাহহ
রিমির সাথে শুভর একদফা মারামারি হয়। যিতে যায় রিমি.. ফোন হাতে নিয়ে বলে...
-এন্জেল মর্জিনা কে??(রিমি)
-চিনি না (শুভ)
-তাহলে কথা বলিস কেনো??
-এমনি। আর ওটা মর্জিনা না ওটা মারজানা
-হুমম সব গুলো মেয়েকে বল্ক করে দিয়েছি
-কেনো??
-ধুররর কে না কে?? ওদের সাথে কথা বলে কি লাভ??
-ওরা আমার ভাল ফ্রেন্ড। আর বেষ্ট ফ্রেন্ড
-আমি তো এখন থেকে এখানেই থাকবো। আমি তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড..(রিমি হাত টা বাড়িয়ে দিয়েছে)
-কিন্তু আপনি তো আপু
-তো কি হইছে?? এখন থেকে ফ্রেন্ড
-আচ্ছা...
-হাতটা তো ধর
-হুমমম (শুভ হাতটা ধরছে আর মনে মনে বলল কি নরম)
-কি বললি??
-কই কিছু না
-কিছু তো বলছিস
-বললাম যে হাতটা কখনো ছাড়বো না
-হুমমম ঠিক আছে
-একটা কথা বলি
-হুমম বল
-তুমি দেখতে পরীর মতো
-তুই আমকে তুমি বলছিস!!! আর আমি দেখতে পরীর মতো তোকে কে বলছে??
-সরি। আসলে অনেক সুন্দর তো তাই বললাম
-হুমম আর সরি বলতে হবে না। তুই করেই বলবি
-আচ্ছা
-আর শোন
-হুমম বলো
-আজ থেকে ফেসবুক অফ, আর টেক্সট বুক অন ঠিক আছে??
-হুমম ঠিক আছে
-বিকেলে তোর সময় হবে??
-কেনে কোথাও যাবে??
-নতুন একটা মোবাইল কিনতে হবে
-হুমম তুমি যখন বলেছো অবশ্যই যাবো
-ওকে থাক যাই এখন
-নাহ এখানেই থাকো
-এখানে থেকে কি করবো??
-গল্প করি
-না বেশিক্ষণ থাকলে সবাই অন্যকিছু মনে করবে
-আমি তো সেটাই চাই
-কি বললি!!!!!!!!!!!
।।
আপন
Write: Sabbir Ahmed
Part: 2
~~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~
-এখানে থেকে কি করবো??(রিমি)
-গল্প করি(শুভ)
-না বেশিক্ষণ থাকলে সবাই অন্যকিছু মনে করবে
-আমি তো সেটাই চাই
-কি বললি!!!!!!!!!!!
-কই কিছু না
-হুমম থাক বায় এখন
-ওকে
রিমি শুভর রুম থেকে চলে গেলো...
-ধুররর কি আজব মেয়ে, সব গুলারে বল্ক মাড়ছে। কি করি এখন! ধ্যাত (মোবাইল টা বিছানায় রেখে শুভ বাইরে চলে যায়)
সেদিন বিকেলে মোবাইল কিনে আনার পর আর তেমন কথা হয়নি তাদের।
পরদিন সকাল বেলা...
শুভ কলেজে যায়। কলেজের গেটের ভেতর এক পা রাখে। অার অন্য পা রাখার আগেই...শুভকে পেছন থেকে টান দিয়ে বাইরে নিয়ে আসে। আর শুভ ঘুরতেই..
-ঠাসসস ঠাসসস ঠাসসস(একটা মেয়ে)
শুভ সেই লেভেল এর শকড খায়। একে তো কখনো দেখে নি সে। মারলো কেন?? আর পেছনে ছিলো আরও কয়েকটা মেয়ে।
-এই মারলেন কেনো???(শুভ)
-তুই ফেসবুকে বল্ক দিছিস কেনো??(মেয়েটি)
-কিহহহ??
-জ্বিইইইই
-আপনাকে তো চিনি না তাহলে বল্ক দিলাম কিভাবে??
-আমি মায়া পরী
-নাহহ আপনি তো মানুষ
-কুত্তা আমার ফেসবুক আইডির নাম মায়া পরী
-মায়া পরী!!!
-হুমম
-...এই কাজ সেরেছে রে। এতো আমার এফ বি তে বেষ্ট ফ্রেন্ড। এর বাসা তো কুমিল্লা এখানে আসলো কিভাবে??(শুভ মনে মনে বলল)
-ওই কি বলিস বিড় বিড় করে??
-না মানে...
-না শোন সব ক্লিয়ার করে দিচ্ছি। আমি ইরা, আমি তোকে বলছিলাম আমার নাম পরী। কিন্তু আমার নাম ইরা। আমি কুমিল্লাতে না আমি তোর এখানেই থাকি। তোর বাসা থেকে ১০ মিনিট উত্তর দিকে হাটলেই আমার বাসা। আর আমি তোর সাথে পড়ি না আমি দশম শ্রেণিতে পড়ি।
-হায় আল্লাহ বলে কিহহ
-ঘাবড়াবেন না।
-তাহলে আপনি প্রথমে সব মিথ্যা বলেছিলেন কেনো??
-তুই যদি আমার সাথে কথা না বলিস সেই ভয়ে সব মিথ্যা বলছি। আর তোকে আমি প্রথম দেখাতেই ভালবেসে ফেলছিলাম।
-আমাকে দেখলেন কবে??
-আমার ফুপাতো ভাই এর জন্মদিন এর পার্টিতে তোকে দেখছি
-নাম কি তার??
-হৃদয়
-হৃদয়! ওর কাছ থেকে তাহলে আমার ফেসবুক আইডি নিয়েছেন??
-হ্যা..
-কি জন্য??
-ওই যে বললাম তো ভালবাসি
-আর আপনার সাহস তো কম না আমাকে তুই করে বলতেছেন
-তোরে মারমু এখন। আগে বল বল্ক দিছিস কেন??(কলার ধরে বলল)
-না মানে অনেক জনের এমন হইছে। মনে হয় আমার আইডিতে প্রবলেম হইছে..
-ওহহহহ
-...(যাক বাঁচা গেলো। বিশ্বাস তো করলো)
-নাম্বার টা দেন আপনার(ইরা)
-নাহহ
-না মানে নাম্বার দে
-দিবো না
-কি করে নিতে হয় আমার যানা আছে। জড়িয়ে ধরে নিবো
-না না দিচ্ছি
-উঠান ০১৭
-থামেন
-কেনো??
-আমাকে কি পাগল মনে হয়?? যদি ভুল নাম্বার দেন আবার। ফোনটা দেন
ইরা ফোনটা নিয়ে তার নাম্বার সেভ করে দিলো। আর শুভ নাম্বার টা নিয়ে নিলো....
-কল দিলে ধরবেন, না হলে(ইরা)
-না হলে কি করবেন??(শুভ)
-আপনার বাসায় গিয়ে যা করার করবো
-...........
-এখন কোথায় যাওয়া হচ্ছে??
-ক্লাসে
-ওকে যান। আর হ্যা আমি ক্লাস টেন এ পড়ি বলেই ছোট মনে করবেন না বলে দিলাম
-আচ্ছা
-হুমম আর একটা কথা
-কি??
-ফেসবুকে তো শুধু বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলাম। আর এখন থেকে সম্পর্ক টা কিন্তু অন্য রকম
-হুমমম
-হুমম হুমম না করে ক্লাসে যান। ওই চল সবাই আমাদের আবার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে (ইরা তার দলবল নিয়ে চলে গেলো)
শুভ ক্লাসে যাচ্ছে আর চিন্তা করছে-(এখন কি হবে?? বল্ক যদি ছাড়াই। তাহলে তো আপু দেখলে খবর আছে। আর এদিকে না ছাড়ালে আমার আবার খবর করে দিবে মেয়েটা। আবার ফোন ও দিবে! কি যে হবে আমার। যাই হোক এখন তো ক্লাসে যাই....
ক্লাস শেষে শুভ বাসায় ফিরে আসে...বাসায় আসতেই...
-শুভ শুভ শুভ শুভ (রিমি)
-আমার ডাক নকল করছো কেনো(শুভ)
-ভাল লাগছে তাই
-ওহহ
-শোন তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে...
-কি???
-তোর রুমে চল ওখানে রেখে আসছি
-হুমম চলো
শুভ রুমে গিয়ে দেখে কিছুই নাই...
-কই তোমার সারপ্রাইজ??(শুভ)
-দেখ টেবিলের উপর কি??(রিমি)
শুভ দেখে একটা বাটি...
-ওটার মধ্যে কি আছে (শুভ)
-গিয়ে দেখ (রিমি)
শুভ গিয়ে ঠাকনা টা সড়িয়ে দেখে
-ওয়াওওওওও পায়েস!!!
-হুমম তোর জন্য রান্না করেছি
-খুব ভালো রান্না হইছে কিন্তু..
-কিন্তু কি??
-আমি পায়েস খাই না
-কিহহহ
-হ্যা আমি পায়েস খাই না
-তাহলে প্রথমে দেখে যে চিৎকার দিলি
-আরে ওটা তো আমার অভ্যাস
-.......(রিমির মন খারাপ হয়ে গেলো)
-এই যে নাও এগুলো তুমি খাও
-নাহ লাগবে না
-মন খারাপ করছো কেন??
-এমনি দে খেতে হবে নাহ
-হুমম নাও
রিমি চলে গিয়ে আবার একটু পড়েই আসলো
-এই কি করিস??(রিমি)
-এইতো শুয়ে ছিলাম (শুভ)
-বিকেলে তোর সময় হবে??
-কেনো?? কোথাও যাবা
-হুমমম। একটু ঘুরতে যাবো
-হ্যা ভালো কথা কিন্তু আমি পারবো না
-কেনো??
-প্রাইভেট আছে
-ওহহ
-হুমম
-একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-আমি তোর কাছ থেকে আমাকে দেওয়ার মতো অনেক সময় আশা করি। আর এখন থেকে আমাকে সময় দিবি
-কি জন্য??
-আমি চাই তাই
-তুমি চাইলেই দিতে হবে কেনো??
-কারন আমার বন্ধু শুধু তুই। আর তো কেউ নেই
-হুমম। কিন্তু আমার যে সময় হয় না
-তাও দিতে হবে
-আমি পারবো না গো
-না পাড়তে হবে
-কেনো??
-কারন আমি তোকে...
-কি??
-তোকে খুব ভাল বন্ধু ভাবি
-হ্যা আমিও তাই ভাবি। কিন্তু সময় হলে দিবো না হলে নাই
-তুই একটা গিরগিটি
-জন্মের থেকেই ফর্সা কালো আকার ধারন করি নাই কখনো। কিভাবে আমাকে গিরগিটি বললা
-জানি না (রিমি চলে গেলো)
-এর আবার কি হলো..??
সেদিন রাতে শুভ পড়ছিলো...রিমি এসে বললো...
-কি করো(রিমি)
শুভ পড়া বাদ দিয়ে হা করে রিমির দিকে তাকালো..
-কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??
-তুমি আমাকে তুমি করে বলছো কেনো??
-কেনো কোনো সমস্যা??
-না কিন্তু
-কোনো কিন্তু না। তুমি পড়ো
শুভ আবার পড়া শুরু করলো। আর রিমি একভাবে শুভর দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ মাঝে মাঝে সেটা আড় চোখে দেখছে...
-এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??(শুভ)
-তোমাকে দেখতে ভাল লাগছে তাই (রিমি)
-..........
-একটা কথা বলি
-হুমমম বলো
-উঠে দাড়াও বলছি
-উঠে দাড়াতে হবে??
-হ্যা
শুভ উঠে দাড়ালো
-হুমমম বলো(শুভ)
রিমি দেড়ি না করে জড়িয়ে ধরে বলল
-আমি তোমাকে ভালবাসি (রিমি)
-ইয়ার্কি হচ্ছে??
-নাহহ সত্যি
-দুই দিনে ভালবাসা হয়??
-এক পলক দেখলেই হয় দুই দিন লাগে না
-কার কাছে শুনছেন??
-জানি আমি
-কিভাবে??
-তোমাকে দেখেই ভালবেসে ফেলছি। তারপর থেকে বুঝি
-কিন্তু
-কোনো কিন্তু না (রিমি জোড়ে জড়িয়ে ধরলো)
-আগে শোনেন
-না কোনো কথা শুনবো না। আগে তুমি করে বলো আমাকে
-আচ্ছা শোনো
-হুমম বলো
-আমি তো তোমার ছোট। আর তুমি বড়। আর ভালবাসি বলে এভাবে কেউ পাগলামো করে???
-জানি না। তবে আমি তোমাকে ভালবাসি
হঠাৎ শুভর ফোনটা বেজে উঠলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখে ইরা ফোন দিয়েছে(নাম্বার টা ইরা সেভ করে দিয়েছিলো)
-আচ্ছা এখন ছাড়ো (শুভ)
-কে ফোন দিয়েছে??(রিমি)
-.........(শুভ কিছু বলল না। এদিকে ফোন বাজতে বাজতে কেটে গেলো। রিমি ফোনটা হাতে থেকে নিয়ে নিলো।
-ইরা কে??
-আমার ফ্রেন্ড..
টুং করে একটা ম্যাসেজ আসলো
"ফোন ধর না হলে তোর খবর আছে"
-এই মেয়ে তো তোমাকে হুমকি দিচ্ছে..
-না মনপ
আবার টুং করে একটা ম্যাসেজ আসলো..."আত্মাপাখি প্লিজ ফোনটা ধরো"
-আরে তোমার তো আত্মাপাখি এইটা। আমাকে না বললা তুমি কাউকে ভালবাসো না। সরি (রিমি দৌড়ে চলে গেলো কান্না করতে করতে)
শুভ ইরা কে ফোন দিলো। ইরা ফোন ধরেই বললো
-আত্মাপাখিটা তাহলে আমার কথা শুনছে তাই না (ইরা)
-হুমমমম(শুভ)
-কি করছেন??
-কিছু না। আপনার সাথে কিছু কথা আছে। কাল কে দেখা করতে পারবেন??
-হ্যা আপনি চাইলে এখনই পারবো
-না এখন না কাল
-আচ্ছা ঠিক আছে
-রাখি এখন
-কথা বলব না??
-না আমার পড়া আছে
-ওকে ভালভাবে পড়ে ঘুমিয়ে যান
-হুমম গুড নাইট...
-গুড নাইট..
ইরার সাথে কথা বলে শুভ বিছানায় শুয়ে ভাবছে- আচ্ছা বিপদে পড়লাম তো। আমি তো দুজনের কাউকেই সেভাবে ভালবাসি না। কি করবো এখন?? (এগুলো ভাবছিলো। তখনই একটা চিৎকার শুনতে পেলো শুভ)
-শুভওওওওওওও
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part: 3
~~~~~~~~~~~~~
ইরার সাথে কথা বলে শুভ বিছানায় শুয়ে ভাবছে- আচ্ছা বিপদে পড়লাম তো। আমি তো দুজনের কাউকেই সেভাবে ভালবাসি না। কি করবো এখন?? (এগুলো ভাবছিলো। তখনই একটা চিৎকার শুনতে পেলো শুভ)
-শুভওওওওওওও
দৌড়ে নিচে গিয়ে দেখে...তার মা আর খালা রিমি কে ধরে আছে...শুভ কাছে গিয়ে বলল..
-কি হয়েছে মা (শুভ)
-সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছে(মা)
-ওই কিভাবে পড়লা?(শুভ রিমিকে বলল)
-........(কিছুই বলল না রিমি)
-মা পানিতে পা টা ভিজিয়ে দাও...
-আচ্ছা তুই একটু পানি আন
-ওকে
শুভ পানি এনে দিলো বালতিতে। রিমি চেয়ারে বসে থেকে বালতিতে পা ভিজেয়ে রাখছে...আর শুভ পাশে একটা চেয়ারে বসে মোবাইল টিপছে...
-ভালবাসি(রিমি)
-এহহহহ(শুভ)
-ভালবাসি তোমাকে
-কিন্তু আমি যে তোমাকে ভালবাসি নাই
-তাহলে আমাকে সেদিন পরী বললা কেনো??
-পরীর মতো দেখতে তাই
-সত্যি আমি তোমায় ভালবাসি
-আচ্ছা তারপর কি হবে বলো??
-বিয়ে!
-বাবাকে আমার যে ভয় করে। বিয়ে তো দূরেই থাক
-আমি রাজি করাতে পারবো
-হুমম......এটার থেকে বাঁচার উপায় পেয়ে গেছি। ওকে ব্যাপার টা বাবা কে বলতে বলি। বাবা তো এখন রাজি হবে না। আমি জিতে যাবো।(বিড় বিড় করে বলল)
-ওই কি বলো
-আচ্ছা তোমাকে একটা সুপার অফার দেই
-হুমম বলো
-বাবাকে যদি একদিনের মধ্যে রাজি করাতে পারো তাহলে আমি রাজি??
-কিসের রাজি??
-বিয়ের জন্য??
-এখন??
-হুমম এখন হলে এখনই। না হলে নাই
-আচ্ছা তুমি যাও ঘুমাও...আমি দেখছি কি করা যায়
-হে হে টোপ গিলেছে
-কিছু বললে??
-কই কিছু নাহ তো
-হুমম যাও তুমি
-আচ্ছা
যাক একটা থেকে বাঁচা গেলো। কাল আর একটাকে সাইজ করতে হবে...শুভ চলে গেলো তার রুমে...
পরদিন সকাল বেলা....শুভ ঘুমাচ্ছিলো।
-শুভ ওই শুভ (শুভর মা)
-কি বলো
-তোর বাবা ডাকে
-আর একটু পর উঠি
-হারামী তোর বাবা ডাকে
-কিহহহ?
-হ্যা যা ডাকছে
-হ্যা যাচ্ছি...
শুভ বাইরে এসে দেখে তার খালা আর বাবা হাসাহাসি করছে...কাছে গিয়ে বলল
-বাবা ডেকেছেন??(শুভ)
-হ্যা আজ তোমার বিয়ে রেডি হয়ে নাও (বাবা)
-কার বিয়ে??
-এক কথা কথা কয়বার বলা লাগে?? তোমার বিয়ে??
-আরে আমি ছোট এখন বিয়ে করবো না
-কাল বললা বিয়ে করবা আজ বলছ না। ছেলে খেলা পেয়েছো??
-না মানে বাবা আমি তো
-কোনো কথা না। একটু পড়েই কাজি আসবে। তুমি ফ্রেস হয়ে নাও
-এখনই কেনো??
-আবার কথা বলে
শুভ কিছু না বলে তার রুমে চলে গেলো।
-কি ভাবলাম আর কি হলো এখন কি করি???(শুভ বসে বসে একটু জোড়েই বলছে কথা গুলো)
-গুড মর্নিং (রিমি)
-মর্নিং (শুভর মন ভাড়)
-কি মি. পেড়েছি তো??
-কিন্তু কিভাবে??
-সেটা বিয়েটা হয়ে যাক তারপর
-না প্লিজ বিয়ে টা বন্ধ করো
-আমাকে না তুমি কথা দিলা
-ওটা তো
-এমনি ছিলো তাই তো??
-হুমমম
-আমি না করলেও তোমার বাবা মানবে না
-কি জন্য??
-কাল তোমাকে একটা মেয়ের সাথে দেখেছে তোমার বাবা। মেয়েটা তোমার কলার ধরে ছিলো। এইটাই বড় কারন। আর তারপরই আমি যখন বললাম মাকে। মা গিয়ে বলার পর এক কথাতেই রাজি হয়ে গেছে...
-হয় আল্লাহ
-এখন ডেকে লাভ নেই। কাজি এলো বলে। যাই আমি রেডি হই (রিমি সেখান থেকে চলে গেলো)
-আমি কি পালাবো? নাকি বিয়ে করবো?? ধুররর ভাল্লাগে না
সক্কাল সক্কাল রিমি আর শুভর বিয়ে টা হয়ে যায়। শুভ আর মানা করতে পারে নি তাকে। এদিকে শুভর ফোন বেজেই চলছে। ইরা হয়তো ফোন দিয়েছে...আজকে ইরার সাথে দেখা করার কথা... কিন্তু সব তো উল্টো হয়ে গেলো......
বিয়ে পরানোর কাজ শেষ হওয়ার পর শুভ তার রুমে চলে যায়। ইরার ফোনটা রিসিভ করে..
-হ্যালো(ইরা)
-হ্যা বলেন(শুভ)
-কই আপনি
-আমি যেতে পারবো না
-কেনো??
-আপনি আর আমার পিছু লেগে থাইকেন না। আজ সকালে বিয়ে হইছে আমার
-কি আবল তাবল বলেন এগুলা??
-না সত্যি বলছি
-আমার বিশ্বাস হচ্ছে না
-তাহলে এফ বিতে আসেন। আমি পিক দিচ্ছি
-ওকে
শুভ রিমির রুমে গেলো...
-আসতে পারি??(শুভ)
-হুমম আসো(রিমি)
-আপনার সাথে কি একটা পিক উঠা যাবে??
-হ্যা অবশ্যই
একটা পিক উঠে ইরা কে সেন্ড করে। ইরা দেখা মাত্রই শুভকে বল্ক দেয়।
-হুহ যাক সহজেই তো বিশ্বাস করলো(শুভ)
-কি বিশ্বাস করলো??(রিমি)
-কই না কিছু না
-হুমম বসো
-না আপনি থাকেন
-রাগ করেছো আমার উপর??
-নাহহ কিসের রাগ কোনো রাগ নেই
-তাহলে আপনি করে বলছ কেনো??
-এমনি
-শোনো আমি ভালোর ভালো। মন্দের মন্দ।
-তো আমি কি করবো
-তুই কি করবি মানে?? সালা কাল ওফার দিয়ে গেলি আর আজ মন খারাপ। মনটা চাচ্ছে তোর ঠোঁট টা কামড় দিয়ে ছিড়ে ফেলি
-হুমমম
-কিসের হুমম??
-কিছুনা
-শোন এখন তো তুই আমার বর।তোর রুম মানে আমার রুম। আমাকে কোলে করে তোর রুমে নিয়ে যা
-পারবো না
-কি বললি??
-এখন নিয়ে যাবো কিভাবে??দেখে ফেলবে কেউ
-না বাবা বসায় নেই মা আর খালা রান্না করছে দেখবে না
-তাও পারব না
-কি জন্য পারবি না??
-আপনাকে আমার দেখতে ইচ্ছা করছে না। ধ্যাত(শুভ তার রুমে চলে গেলো)
শুভর মুখ থেকে এমন কথা শোনার পর রিমির চোখ টলমল করে উঠলো পানিতে। রিমির সবচেয়ে বেশি ভাল লাগছিলো যেদিন শুভ তাকে পরী বলে ডেকেছিলো। রিমি ভাবে তার ডাকার মধ্যে অন্যরকম একটা কন্ঠ ছিলো। মনে হয় আপন কেউ ডাকছে। আর এই কারনে রিমি শুভর উপর অনেক দূর্বল হয়ে পড়ে....
তো কিছুক্ষণ পর রিমি কে খাবার নিয়ে শুভর কাছে যেতে বলে। রিমি খাবার নিয়ে শুভর কাছে যায়। তবে তার মুখ ঢেকে....রিমি রুমে গিয়ে দেখে শুভ শুয়ে আছে কি যেনো ভাবছে...
-এই যে নাও তোমার খাবার (রিমি)
-খাবো না আ...আপনার মুখ ঢাকা কেনো??(শুভ)
-তুমি না বললে আমাকে দেখতে ইচ্ছা করছে না। তাই মুখ ঢেকে এলাম।
-...........
-খাবার টা খেয়ে নাও
-আপনি খাইছেন??
-না
-তাহলে হাত ধুয়ে আসেন। আমার সাথে খান
-......(রিমি অবাক হয়ে শুভর দিকে তাকিয়ে আছে)
-কি হলো খাবেনা না??
-হ্যা খাবো
-তাহলে তাকিয়ে আছেন কেনো?? হাত ধুয়ে আসেন
-হুমমম
খাওয়ার সময় রিমি বলে...
-আমাকে তো দেখতে পারো না। এখন তাহলে একসাথে খেতে বললে কেনো??(রিমি)
-আসলে আমার ইচ্ছা ছিলো বিয়ের আগে একটা প্রেম করবো। আর তাকেই বিয়ে করবো। এতদিন প্রেম করি নাই কারন এখন তো বিয়ে করবো না। কিন্তু আমার তো বিয়েই হয়ে গেলো
-কেনো বিয়ের পর প্রেম করা যায় না??
-জানি না আমি। তবে এখন কোনো ইচ্ছাই ছিলো না
-ওহহ
-হুমম
-তাহলে কি আমাকে ফেলে দিবা??
-না ফেলে দিবো কেন??
-হুমমম একটু ওয়েট আসছি
-কই যান
-ওয়েট করো একটু আসছি
-কি যে করবে আল্লাই যানে
একটু পর রিমি এলো
-কি জন্য গিয়েছিলেন??(শুভ)
-এই যে এইটা নাও(একটা কাগজ দিয়ে)
-কি আছে এতে??
-দেখো
-আরে লাল রং দিয়ে আমার নাম!!
-রং না রক্ত
-কিসের রক্ত
-এই যে দেখো(শুভ দেখে রিমির হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে)
-আরে আরে হাত কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখতে বলেছে কে??
-তুমি না বললে প্রেম করতে পারো নি। প্রেম করার ইচ্ছা। তাই এটা দিয়ে প্রেম শুরু করলাম.....
(শুভ হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিমির দিকে।)
।।
আপন
Write: Sabbir Ahmed
Part : 4
-এই যে দেখো(শুভ দেখে রিমির হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে)
-আরে আরে হাত কেটে রক্ত দিয়ে নাম লিখতে বলেছে কে??
-তুমি না বললে প্রেম করতে পারো নি। প্রেম করার ইচ্ছা। তাই এটা দিয়ে প্রেম শুরু করলাম.....
(শুভ হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিমির দিকে।)
-এই আপনার হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে। হাতটা এদিকে দেন
-নাহহ আমাকে তুমি করে বলতে হবে তারপর
-হাতটা এদিকে দাও
-হুমমম
শুভ হাতটা নিয়ে একটা কাপড় দিয়ে বাধতে থাকল...আর বলল
-এমন পাগলামো কেউ করে??(শুভ)
-তুমি তো বললা যে প্রেম করবা(রিমি)
-প্রেম তো এভাবে কেউ করে না
-তাহলে কি করতে হবে??
-কিছু না
-ডাক্তারি কই শিখছো??
-কোথাও না তো
-যেভাবে হাত বেধে দিলে মনে হচ্ছে এখনই ঠিক হয়ে যাবে
-ওহহ এই কথা??
-হুমমম
-এখন কেমন লাগছে
-এত ভাল লাগছে যে প্রকাশ করতে পারবো না
-বুঝছি
-কি বুঝছো??
-বলব না। আচ্ছা আমি বাইরে যাবো একটু
-কখন ফিরবা??
-২ ঘন্টার মধ্যে
-কই যাবা??
-কলেজে যাবো একটু কাজ আছে
-আচ্ছা যাও
-ওকে
-শোনো
-হুমম বলো
-কোনো মেয়ের দিকে তাকাবা না। আর কথাও বলবা না
-যদি কোনো দরকারে কথা বলতে হয়
-বলবা সমস্যা নেই
-হুমমম। একটা কথা বলি
-হ্যা বলো।
-আমার শার্ট টা এনে দিবে একটু
-......(রিমি কিছু না বলে মুচকি হাসলো। আর শার্ট টা এনে দিলো)
-থ্যাংকস
-দিতে হবে না। এটাই তো এখন থেকে আমার কাজ
-তাই!!
-হ্যা তুমি যানো না
-নাহহ
-ভালো যাও এখন
-ওকে বায়
শুভ রুম থেকে বাইরে চলে আসলো। এসেই তার বাবার সামনে পড়লো
-কই যাচ্ছো??(বাবা)
-জ্বি বাবা একটু কলেজ যাচ্ছি (শুভ)
-আজ যেতে হবে না
-না বাবা আমার একটু কা...
-বললাম না যেতে হবে না
-আচ্ছা...
বাবার কথা মতো শুভ আবার তার রুমে চলে যায়... গিয়ে দেখে রিমি শুয়ে আছে। শুভর আসা দেখে রিমি উঠলো..
-কি হলো ফিরে আসলে যে(রিমি)
-বাবা যেতে দিবে না (শুভ)
-কেনো??
-জানি না। তবে বলল আজ আর যাওয়া লাগবে
-যাক ভাল হইছে। আজ ভালভাবে গল্প করা যাবে
-নাহহ ভালো লাগছে না
-এদিকে আসো তো (রিমি শুভ কে হাত ধরে নিয়ে খাটে বসায়।)
-কি??
-আজ কি বলো তো
-আজ বৃহস্পতিবার
-নারে পাগল আজ আমাদের বিয়ে হইছে বাসর হবে না আ...
-থামো
-কেনো??
-এমনি
-আচ্ছা বাদ দাও। আমার দিকে একটু তাকাও
-কি জন্য??
-তাকাও বলছি
-হুমম তাকালাম
-দেখো আমার চোখে কত আগ্রহ তোমাকে পাওয়ার। আর তুমি আমাকে পাত্তাই দিচ্ছো না। এমন ব্যবহার করছো। মনে হয় যেনো...
-কি
-জানি না(রিমি অন্য দিক মুখ ঘুরিয়ে বসলো)
-এখন রাগ করে লাভ নেই। কারও রাগ আমি ভাঙ্গাতে পারব না
-তা পারবা কেন?? কিচ্ছু করতে হবে না গেলাম আমি
রিমি শুভর রুম থেকে চলে গেলো। আর শুভ ভাবছে হঠাৎ করে যে বিয়ে হয়ে গেলো এটা কি হওয়ার ছিলো! বিয়ে টা যে হইছে তা সে বিশ্বাসই করতে পারছে না তাই রিমির সাথে ভালভাবে কথাও বলতে পারছে না। রিমি কে তার পছন্দ কারণ রিমি দেখতে অনেক সুন্দর প্রথম দেখাই শুঋ তাকে বলছিলো যে পরী। কিন্তু এখন এমন হওয়ার কারন হলো। হঠাৎ করে বিয়ে....তার বন্ধুরা জানলে কি ভাববে?? এসব চিন্তা হচ্ছিলো শুভর মধ্যে। আর এই সময়ই ব্যাগ নিয়ে হাজির হয় রিমি...
-ব্যাগ নিয়ে কই যাচ্ছো (শুভ)
-যাচ্ছি না গাধা চলে আসলাম (রিমি)
-চলে আসলে মানে??
-এখন থেকে এটা তো আমার রুম তাই না
-হুমম আচ্ছা তুমি সব কিছু জায়গা মতো রাখো আমি একটু হাত মুখ ধুয়ে আসি...
কথাটা শোনার পর রিমির বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো। মাঝে মাঝে এমন এমন কথা বলে রিমি শুনে অবাক হয়ে যায়।এখন অবাক হওয়ার কারন হলো। হঠাৎ করে রাজি হলো। কোনো প্রশ্ন করলো না...
-যাক ভাল হইছে গাধাটা সক্কাল সক্কাল উঠে যে ধাক্কা টা খাইছে। একটু এলো মেলো হয়ে গেছে...(রিমি এসব ভাবছিলো আর সব কিছু ঠিক ঠাক করছিলো। হাঠাৎ বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়। শুভ রিমির কাছে আসে....
-ওই একটু ছাদে চলো(শুভ)
-ছাদে কেনো?? আর এখন তো বৃষ্টি শুরু হইছে (রিমি)
-সেইজন্যই তো যেতে বলছি
-কিন্তু এই যে শাড়ি গয়না পড়ে আছি
-ওমনি। চলো তো
শুভ হাত ধরে রিমি কে ছাদে নিয়ে যায়। মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে...
-ওই এই অসময়ে ভিজতে হবে কেনো??(রিমি)
-ভিজতে আসি নি (শুভ)
-তাহলে???
-দাড়াও এখানে
শুভ দৌড়ে ছাদের এক কোণায় গেলো। সেখানে টবে অনেক গুলো ফুলের গাছ ছিলো। একটা গাছ থেকে ফুল ছিঁড়ে নিয়ে রিমির কাছে আসলো...ফুলটা রিমির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল
-আমি তোমাকে ভালবাসি(শুভ)
-হি হি হি পাগল এত সহজ ভাবে কেউ প্রপোজ করে??(রিমি)
-থাক আমার প্রপোজ আমাকে ফিড়িয়ে দাও। আমি অন্য কাউকে দিয়ে দিবো।
-এই না মেরে ফেলবো
-হুমম ফুলটা নাও
-হুমমম
-আমাকে কিছু দাও
-কি দিবো??
-লাভ ইউ টু বলো
-লাভ ইউ টু
-সব কিছু বলে দিতে হয় কেনো??
-আগে তো কখনো কেউ প্রপোজ করে নি তাই
-মুভি নাটক তো দেখেছো
-হুমম তা দেখেছি
-সেখান থেকে কিছু শেখোনি??
-হুমম শিখেছি তো
-কই??
রিমি শুভর কাছে গিয়ে শুভর ঠোঁটে একটা চুমু দিলো। শুভ কিছু বলল না। রিমি এবার একদম ঠোঁট আটকে দিলো। আর শুভকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রাখলো
-কি স্যার কেমন লাগল(রিমি)
-ভালো। কিন্তু এটা কেনো করলা??(শুভ)
-মুভি দেখে যা শিখছি তাই করলাম
-ভালো
-কেমন লাগলো বললে না তো??
-ভালো
-কেমন ভালো গো
-শুনবা কেমন ভালো??
-হুমমম
-কিন্তু আমি যে বলব না
-...........
-অনেক ভিজছি এখন চলো। না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে
-লাগুক
-চলো না
-যাবো না
শুভ রিমি কে কোলে করে নিয়ে তার রুমে চলে আসে...
-যাও তুমি আগে গোসল করো(শুভ)
-এভাবেই দাড়িয়ে থাকবো (রিমি)
-না যাও ঠান্ডা লাগবে
-যেতে পারি একটা শর্ত আছে
-কিইই??
-একসাথে গোসল করবো
-আরে না কি বলো
-না আমি কোনো কথাই শুনতে চাই না
-না এটা সম্ভব না
-তুমি আমার বর। সবকিছুই সম্ভব কে মানা করবে হ্যা?? চলো
-না মানে এটা কেমন দেখায় না
-কেমন দেখাবে মানে?? চলো বলছি
জোড় করে শুভকে ভেতরে নিয়ে গেলো...শুভ লজ্জায় মরে যাচ্ছে..রিমি সেটা বুঝতেই পাড়ছে..
-ওই গাধা লজ্জা পাচ্ছো কেনো?? আমি তো তোমার বউ তাই না??(রিমি)
-তাও আমার ভয় করছে
-ছি ছি কি বলো। আমার ভয় করছে না আর তোমার তাই না?? এদিকে তাকাও...
শুভ তাকিয়ে দেখলো রিমি তার চুল গুলো খুলে দিলো। শাড়িটা খুলতে যাবে এমন সময়...
-প্লিজ এভাবে না। এখন না (শুভ)
রিমি শুভর কাধে হাত রাখলো... আর গাল টা টেনে দিয়ে বলল
-কখন?? (রিমি)
-পরে (শুভ)
-তাহলে এখন একটা ইয়ে দিয়ে যাও
-ইয়ে মানে কি???
-ওই যে ছাদে যে তখন দিলাম ওইটা
-উম্মম্মাম্মা ম্মা হহহহহ(শুভ রিমির গালে একটা কিস দিয়ে বাইরে চলে আসলো)
আর এদিকে রিমি ভেতরে হাসতে হাসে শেষ। কারন শুভর লাজুক স্বভাব দেখে সে সত্যি অবাক।
গোসল শেষে রিমি বাইরে আসলো। শুভ লজ্জায় মাথা উপর দিক তুলছে না। রিমি কাছে গিয়ে দাড়ালো
-এই এদিকে তাকাও(রিমি)
-কেনো(শুভ)
-সবসময় প্রশ্ন তাই না?? তাকাতে বলছি তাকাও
শুভ রিমির দিকে তাকায়। সত্যি সত্যি মনে হচ্ছে একটা পরী দেখছে সে। কত্ত সুন্দর দেখতে মেয়েটাকে। চুল গুলো ভেজা। আর যে ড্রেস পড়েছে। তাতে সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে। শুভ এসব ভাবছিলো আর রিমি ধাক্কা দিয়ে বলল
-এই যে (রিমি)
-এহহহহহ(শুভ)
-কি দেখছিলে
-কিছু না
- হুহুমম এখন যাও তুমি
-আচ্ছা যাচ্ছি
-আমি সাথে যাবো
-..............
-না না যাবো না তুমি যাও হি হি হি হি
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part : 5
-এই যে (রিমি)
-এহহহহহ(শুভ)
-কি দেখছিলে
-কিছু না
- হুহুমম এখন যাও তুমি
-আচ্ছা যাচ্ছি
-আমি সাথে যাবো
-..............
-না না যাবো না তুমি যাও হি হি হি হি
গোসল শেষে...
-তা এতক্ষণ লাগে গোসল করতে??(রিমি)
-হ্যা আমার একটু বেশি সময় লাগে (শুভ)
-ওহহ আচ্ছা। আপনি থাকেন আমি যাই
-কই যাবা
-নিচে যাই। সেই কখন আসছি।
-আচ্ছা যাও
-মিস ইউ
-এহহহ সবসময় তো দেখছো তাহলে মিস ইউ বললে কেনো??
-ওখানে যে যেতে পারছি না
-ওখানে মানে কোথায়??
-কিছু না
-ওহহ
-মিস ইউ টুু বলো
-টু
-হুহ
রিমি নিচে গেলো...বিকেল এর দিকে শুভ বাইরে হাটতে বেড় হয়। রাস্তায় দেখা হয় ইরার সাথে...শুভ দেখে না দেখান ভান করছিলো কিন্তু ইরা একদম সামনে এসে দাড়ায়...
-বিয়ে কি সত্যি করেছেন??(ইরা)
-হুমমম(অন্য দিক মুখ ঘুরিয়ে)
-কবে??
-আজ সকালে
-এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সব ঘটল??
-আমি কিছু জানি না মা আর বাবা জানে
-আচ্ছা একটা কথা বলি
-জ্বি বলেন
-লাভ ইউ
-................
-জানি এখন বলে লাভ নাই। তবুও বললাম। আর কখনো দেখা নাও হতে পারে
-কই যাচ্ছেন??
-সেটাও বলব না
-আচ্ছা যেখানে থাকেন ভাল থাকবেন। আর আমার থেকে ভাল কাউকে বিয়ে করে নিয়েন
-সেটা না বললেও চলবে
-না বলতে হবে। আপনি তো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড
-হা হা হা
-হাসছেন কেনো??
-এমনি কিছুনা। ভালো থাকেন বায়
-হুমমম আপনিও ভালথাকেন
মাথা নিচের দিকে দিয়ে ইরা পাশ কাটিয়ে চলে গেলো.....শুভর সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সন্ধ্যায় শুভ বাসায় ফেরে।
-ওই ওই ওই খবর কি তোমার?? কই গেছিলা??(রিমি)
-এই একটু হাটতে গেছিলাম (শুভ)
-তো ফোন নিয়ে যাও নি কেনো কত বার ফোন দিলাম
-ওহহ মনে নেই নিতে
-আমি একটু হাটতে যেতাম
-অন্যদিন
-যাবো না। আমাকে না বলে যাও কি জন্য
-আমি তো সে...
-কেনো কারন শুনাতে হবে না
-আচ্ছা
-কিরে তোদের কি হয়েছে??(শুভর মা)
-কিছু না মা (শুভ)
-আয় খেয়ে নে একটু
-এখনই
-হ্যা আয়
খাওয়া শেষে শুভ রুমে গিয়ে তো পুরাই টাসকি....
-আরে এভাবে ঘর সাজালো কে??(শুভ)
-আমি (রিমি পেছন থেকে বলল)
-কি জন্য??
-ধুরর গাধা আজ আমাদের বাসর রাত না?? সেই জন্য
-...............
-কি হলো মিষ্টার
-কিছু না
-কেমন হইছে বললে না তো
-তোমার মতো সুন্দর হয়েছে...
-আমার মতো??
-হুমমম
-আমি এতোটা সুন্দর
-না
-তাহলে??
-এর থেকে বেশি সুন্দর।
-তুমিও
-কিন্তু তোমার থেকে বেশি না
-সুন্দর প্রশংসা বাদ
-তাহলে কি করবো??
-দাড়াও দরজা টা আটকে দিয়ে আসি
-কেনো
-ওয়েট করো দেখতে পারবে
রিমি দরজা আটকে দিয়ে এসে ধীরে ধীরে শুভর খুব কাছে চলে আসে। আর বলে...
-ভালবাসো কি???
-হুমমম
-কতটুকু??
-পরিমাপ করি নি
-কেনো??
-ভালবাসা টা যে পাই নি
-দিবো??
-হুমম
-কি হুমম
-দাও
-নাহ তুমি নাও
-উহুম
-আবার উহুম কেনো??
-এমনি
-একটা কিসি দাও না গো
-কি করবে??
-যত্ন করে রেখে দিবো
-কোথায়??
-আমার ঠোঁটে
-ওকে আর কি কি নে....(পুরো কথাটা বলার আগেই...)
-শুভওও শুভওও রিমিইইই রিমিইইই (রিমির মা ডাকতে ডাকতে শুভর রুমে এলো)
-কি খালা এভাবে ডাকছো কেন কি হইছে??
-তোর খালু অসুস্থ হয়ে হসপিটালে ভর্তি
-মা, বাবার কি হয়েছে??(রিমি)
-আচ্ছা তোমরা ব্যাকুল হয়ো না আমি বাবা কে বলে এখনই যাওয়ার ব্যবস্থা করছি
শুভ তার বাবার সাথে কথা বলে, আর রাতেই তারা রওনা দেয়.....
গাড়ির মধ্যে রিমি খুব কান্না করছে।
-এই কান্না করো না তো কিচ্ছু হবে না(শুভ)
-বাবা বেঁচে যাবে তো??
-হ্যা গো দেইখো কিচ্ছু হবে না।
-তাই যেনো হয়...
-হুমমম
গাড়ি একঘন্টা চলার পর হঠাৎ ই
-আআআআআআআ
গাড়ি একটা খাদে গিয়ে পড়ে।
যখন শুভর জ্ঞান ফেরে তখন একটা হাসপাতালে নিজেকে আবিষ্কার করে...
-ম ম ম মা কোথায়??(শুভ)
তার জ্ঞান ফেরা দেখে ডাক্তার খুশি হয়। কিন্তু পরে আবার বেজার হয়...
-এখন তোমার কেমন লাগছে??
-আর সবাই কোথায়??
-সবাই আছে
-তোমার কেমন লাগছে
-আমি সবাই কে দেখবো
-আসলে তুমি আর একজন বেঁচে আছো। আর সবাই মারা গেছে। আর তোমার জ্ঞান ফেরার অপেক্ষায় ছিলাম আমরা
-এ এ একজন বেঁচে আছে মানে!
-আরও যারা তোমার সাথে ছিলো তারা সবাই মারা গেছে..
-..........(শুভ কান্নাও করতে পারছে না)
-এখন ভেঙ্গে পরো না। আল্লাহ যে তোমাকে বাঁচিয়েছে সেটাই অনেক কিছু...
-যে বেঁচে আছে সে কোথায়??
-তোমার ওই পাশের ছিটে তাকাও দেখতে পাবে...
-শুভ পাশের ছিটে তাকিয়ে দেখে...
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part: 6
-এখন ভেঙ্গে পরো না। আল্লাহ যে তোমাকে বাঁচিয়েছে সেটাই অনেক কিছু...
-যে বেঁচে আছে সে কোথায়??
-তোমার ওই পাশের ছিটে তাকাও দেখতে পাবে...
-শুভ পাশের ছিটে তকিয়ে দেখেল আর চোখের পানি ফেলে। হারিয়ে ফেলেছে সে তার কিছু কাছের মানুষ কে...
প্রায় ১০ বছর পর....
শুভ এখন খুবই সাধারণ জীবনযাপন করে। একটা জব এর ইন্টারভিউ দিতে আসছে এখন। লাইনে দাড়িয়ে আছে। তার সামনে আছে তিন জন। তারপরই তার পালা। কিছুক্ষণ পর...
-আসতে পারি???(শুভ)
-জ্বি আসুন (একটা মেয়ে)
ভেতরে গিয়ে দাড়িয়ে আছে। তার বসটি মেয়ে। দেখতে খুবই কিউট আর চোখে গোল চশমা পড়া আর চুল গুলে কোকরানো। শুভর খুব ভয় করছে সে এই প্রথম আসছে ইন্টারভিউ নিতে। তাও আবার তার ইন্টারভিউ নিবে। ভয় জড়তা ভেঙ্গে বলল
-বসব ম্যাডাম (শুভ)
বস এর মাথা নিচের দিক ছিলো। উপরে তুলে বলল
-জ্বি বসু....(শুভ কে দেখে একটু বস একটু অবাকই হলো)
-ম্যাডাম বসব??
-এহহ হ্যা হ্যা বসেন
-থ্যাংক ইউ
-কেমন আছেন??
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন??
-জ্বি ভালো।
-কি খাবেন বলেন??
(বসের মুখের এমন একটা কথা শুনে অবাক হয়ে যায় শুভ। মনে মনে ভাবে এক্সাম দিতে আসছে নাকি কোনো হোটেলে আসছে)
-না ম্যাডাম কিছু খাবো না।
-কিছু তো খান
-পেট ভরা আছে
-আমি বলছি কিছু খেতেই হবে
-আচ্ছা
-কফি নাকি চা??
-আপনার যা ইচ্ছা
বসটি সিকিউরিটি কে ডেকে কফি আনতে বলল। আর বাকি যারা বাইরে দাড়িয়ে আছে তাদের চলে যাওয়ার জন্য বলল। শুভ ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে যায়। একটু পর কফি দিয়ে গেলো...
-খান(মেয়েটি)
-হুমম(শুভ)
-এর আগে কোথাও জব করেছেন??
-না এটাই প্রথম
-ওহহ তা আগে কি করতেন??
-কিছু করতাম না
-ওহহ ভালো। তা আমি যদি আপনাকে এই যব টা না দেই তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে??
-না ম্যাডাম সমস্যা হবে না
-ওহহ
-আচ্ছা আসি তাহলে আসসালামু আলাইকুম
-দাড়ান দাড়ান কই যান??
-বাসায় যাবো
-আমি কি আপনাকে যেতে বলছি??
-আপনি যেভাবে বলছেন তাতে জব টা আমার হবে না তাই চলে যাচ্ছি
-আমি কি বলেছি হবে না??
-না তা বলেননি
-তাহলে অগ্রিম বুঝেন কেনো??
-হুমমমম
-সেই আগের মতই আছেন। সেইরকমই ব্যবহার
-আগের মতো মানে!!!
-কিছু না। তো আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন করি
-জ্বি করেন
-এতদিন জব করেন নি কেনো?? আর এখন জব করতে আসছেন কেনো?? এতদিন বউ কিছু বলে নি
-আমার বউ আছে আপনাকে কি বলল??
-আপনি আমায় প্রশ্ন করছেন কেনো?? আপনি শুধু উত্তর দিবেন। প্রশ্ন আমি করব
-জ্বি
-জ্বি জ্বি না করে বলেন
-আসলে এতদিন বাবার টা একা বসে খেয়ে আসছি তাই মনে হলো একটা জব করলে ভাল হবে।
-আর
-আর কি??
-এতদিন জব না করার জন্য বউ কিছু বলে নি??
-বউ থাকলে তো বলবে
-বউ থাকলে মানে??
-নেই। আচ্ছা আমার বউ আছে জানলেন কিভাবে??
-আবার প্রশ্ন করে যা বলছি তাই বলেন
-......(এটা কই আসছি আমি! বিড় বিড় করে বলল)
-কি হলো বলেন
-বউ ছিলো মারা গেছে
-কি হয়েছিলো?? (বস খুব অবাক হয়ে)
-সে অনেক কথা
-হ্যা সেটা বলেন
-আসলে আমার যেদিন বিয়ে হয় সেদিন ই আমার বউ মারা যায়। সেদিন রাতে খালু অসুস্থ হয়। তো আমরা তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য যে গাড়িটা ঠিক করছিলাম সেটা একটা খাদে পরে যায় আর মা বাবা আর রিমি মানে আমার বউ এই তিনজনই মারা যায়। আমি আর আমার খালা শুধু বেঁচে ছিলাম...(কথা গুলো বলতে বলতে শুভর চোখে পানি এসে যায়)
-তার মানে আন্টি আংকেল নেই??
-নাহহ
(মেয়েটাও কান্না করে দেয়। শুভর কান্না দেখে)
-আরে ম্যাডাম আপনি কান্না করছেন কেনো??
-এমনি
-আর কিছু প্রশ্ন করবেন
-না
-তাহলে আমি একটা প্রশ্ন করি
-হ্যা করেন
-আপনি কি আমাকে চেনেন??
-হয়তোবা
-মানে??
-কিছু না কাল থেকে জয়েন আপনার
-আমার কাগজপত্র গুলো...
-লাগবে না..
-কেনো??
-জানি না এত কথা না বলে এখন আসুন
-জ্বি ম্যাডাম
-ওহ হ্যা আর একটা কথা
-হ্যা বলেন
-এখানে থাকেন কোথায়??
-এই অফিস থেকে ২ কি: মি: দূরে
-ওহহহহ ঠিক আছে।
-হুমম
-আপনার নাম্বার টা দেন তো
-হুমম নেন.....
শুভ ইন্টারভিউ শেষ করে বাসায় ফিরে আসে। তার জীবন তো আর আগের মতো নেই অনেক পরিবর্তন হয়েছে...বাসায় এসে সব ঠিকঠাক করে রান্না করে...খাওয়ার সময় ফোন আসে......শুভ ফোন ধরতেই
-কি করছেন??(মেয়েলি কন্ঠ)
-কে বলছেন??(শুভ)
-কি করছেন সেটা বলেন
-আপনাকে তো চিনলাম না।
-চিনতে হবে না বলেন কি করছেন??
-খাচ্ছি
-কি খাচ্ছেন??
-ভাত
-আর কি??
-ডাল
-ওহহহ
-এখন বলেন আপনি কে??
-আপনার বস
-বস মানে??
-বস মানে বস
-ওহহ ম্যাডাম সরি বুঝতে পারি নি
-কন্ঠটা শুনেও বুঝতে পারেন নি??
-জ্বি না ম্যাডাম সরি
-না ঠিক আছে
-জ্বি ম্যাডাম
-তা খাওয়া শেষে কি করবেন??
-তেমন কিছুই না শুয়ে থাকবো
-বিকেলে কোথাও বের হন না
-না ম্যাডাম
-কেনো??
-এমনি ইচ্ছে হয় না
-ওহহ। আচ্ছা বায় এখন রাতে কথা হবে
-রাতে ফোন দিবেন কি জন্য??
-আমার ইচ্ছা হইছে তাই। আপনি আমাকে প্রশ্ন করেন কি জন্য??
-সরি ম্যডাম
-হুমমম মিস ইউ..(কথাটি বলে মেয়েটি খুব তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে দিলো)
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part : 7
>>>>>>>>>>>>>>>>
-ওহহ। আচ্ছা বায় এখন রাতে কথা হবে(বস)
-রাতে ফোন দিবেন কি জন্য??(শুভ)
-আমার ইচ্ছা হইছে তাই। আপনি আমাকে প্রশ্ন করেন কি জন্য??
-সরি ম্যাডাম
-হুমমম মিস ইউ..(কথাটি বলে মেয়েটি খুব তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে দিলো)
শুভ ভালভাবে বুঝতে পাড়লো না শেষের কথাটি...
-ম্যাডাম আবার রাতে ফোন দিবে কি জন্য?? আমাকে তো সিলেক্ট করেই দিয়েছি। (মনে মনে ভাবলো)
একটু পর আবার ফোন...
-হ্যালো কে??(শুভ)
-কে মানে?? একটু আগেই তো কথা হলো
-ওহ হ্যা ম্যাডাম বলেন
-আমার নাম্বার সেভ করেন নি কেনো??
-আচ্ছা সেভ করবো
-এখন কি করেন?? এইতো খাওয়া শেষ হলো।
-হুমমম
-আপনি না বললেন রাতে ফোন দিবেন, আবার এখনই ফোন দিয়েছেন??
-হ্যা দিলে কি আপনার সমস্যা হয়??
-না
-তাহলে এত কথা বলেন কেনো??
-আচ্ছা বলব না
-একটা কথা বলি
-জ্বি বলেন
-আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে
-হ্যা বলেন
-এভাবে না
-তাহলে কিভাবে??
-বিকেলের দিকে(.......) এই জায়গায় আসতে পারবেন
-বিকেলে??
-হুমমম
-আচ্ছা দেখি
-না এখনই বলেন
-ওকে
-তাহলে বায় এখন
-আচ্ছা
-সময় মত আসবেন দেড়ি যেনো না হয়
-না দেড়ি হবে না
-হুমম দেখা হচ্ছে তাহলে
-হুমমমম
ম্যাডাম এর কথা মতো সেই জায়গায় দাড়িয়ে আছে শুভ। কিছুক্ষণ পর একটা রিক্সায় করে ম্যাডাম এসে শুভর কাছে দাড় করালো...
-এই যে স্যার রিক্সায় উঠেন(ম্যাডাম)
-নাহহ কি বলেন আমি রি...
-উঠতে বলছি উঠেন
-তাহলে আমি অন্য একটা রিক্সা নেই?
-অন্য একটা রিক্সা নিলে কথা বলব কিভাবে?? এটাতেই উঠতে হবে
-আচ্ছা একটু সরে বসেন
শুভ রিক্সায় উঠে বসল।
-আচ্ছা আমাকে কি আপনার পরিচিত পরিচিত মনে হয় না??(মেয়েটি)
-না ম্যাডাম আগে কখনো দেখি নি
-ওহজ আচ্ছা আমার নাম জিজ্ঞাস করেন
-কেনো??
-আবার বলে কেনো?? জিজ্ঞাস করেন বলছি
-বলছি বলছি আপনার নাম কি??
-ইরা
-ইরা!!!
-হুমমম এই নাম এর কাউকে চেনেনে
-হ্যা একজন কে চিনতাম
-ওই একজনই আমি
-কিহহ তুমি, সরি আপনি সেই ইরা??
-হ্যা কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আপনি আমাকে চিনতে পারেন নাই
-আসলে আপনি অনেক চেন্জ হয়ে গেছেন
-কেমন চেন্জ??
-এই যে আগে তো দেখতে গুন্ডি গুন্ডি লাগতো। এখন শাড়ি পরে আছেন খুব মায়াবী লাগছে আর খুবই ভালো লাগছে দেখতে
-....................
-আচ্ছা আপনি আমাকে জব দিলেন। কোম্পানি টা কার??
-আমার
-আপনার??
-হুমম আগে বাবার ছিলো এখন আমার
-ওহহহ
-তা আর কোনো চেন্জ নেই
-আছে
-কি??
-পুরোটাই চেন্জ
-হইছে পাম দিতে হবে না। আর আমি মায়াবতী হই নাই গুন্ডি আছি একবার কোনো কিছুতে না করলে নাকে ঘুসি মেরে ফাটিয়ে দিবো।
-তাহলে তো আপনার বর অনেক ভয় পায় আপনাকে তাই না??
-বর??
-হুমম
-বিয়ে তো হয়নি
-এখনও না!!
-নাহহ
-কি জন্য?? সময় তো ফুরিয়ে যাচ্ছে
-যাকে চাই তাকেই পাই না আবার বিয়ে
-কাকে চান বলেন আমি রাজি করাবো তাকে
-তোমার কিছুই মনে নেই তাই না (কান্না করে দিয়ে)
-কি মনে থাকবে??
-লাস্ট যখন তোমাকে বলে এসেছিলাম তোমাকে ভালবাসি। এখনও তোমাকপ ভালবাসি সেই আগেরই মতো
-................
-বিশ্বাস হচ্ছে না তাই না??
-অনেক বছর হলো এফ বি তে যাও না। এফ বিতে গিয়ে দেখো কত হাজার ম্যাসেজ দিয়েছি তোমাকে
-..............
-কিছু বলছ না কেনো??
-আসলে ম্যাডাম কি বলব আমি??
-আমি কি দেখতে খারাপ??
-নাহহ
-তাহলে আমাকে ভালবাসো না কেন??
-ম্যাডাম এখন আমি একটা পাথর এর মত। আমার আর কোনো ফিলিংস নেই সব হারিয়ে গেছে
-আমি তৈরি করবো
-কি যে বলেন না আপনি। আপনি শুধু সময় নষ্ট করবেন। তার থেকে আমি একটা বুদ্ধি দেই আপনাকে। আপনি ভাল কাউকে দেখে বিয়ে করে নেন।
-না
-কেনো??
-একবার তুমি সময় পেলে এফ বিতে লগইন করে লাস্ট ম্যাসেজ টা পড়ে দেখো কি লেখা আছে
-............
-কি দেখবা তো??
-আচ্ছা ঠিক আছে
-হুমম কিছু খাবে??
-না, আপনি খাবেন??
-হুমমম
-হ্যা বলেন কি খাবেন??
-ঝালমুড়ি
-সত্যি??
-হ্যা ওইটা আমার প্রিয়
-আর এইটা আমার প্রিয় স্কয়ার
-তাহলে রিক্সা থেকে নেমে হাটতে হাটতে মুড়িওয়ালা কে খুঁজি
-ওকে
-মামা নামিয়ে দেন
রিক্সা থেকে নামার পর....
-এখানে তো নামলেন ঝালমুড়ি ওয়ালা কই আছে সেটা জানব কিভাবে??(শুভ)
-আরে এতো টেনশন এর কিছু নেই। ঝালমুড়ি ওয়ালা মামা কই থাকে সেটা আমার জানা আছে
-কোথায় আছে
-আরে ওই যে দেখো পার্কের গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে
-হুমমম দেখছি
-খুশিখুশি লাগছে মনে হয়
-হুমমম
-মামা ২০ করে দুই জায়গায় বানাও (ইরা)
-এত খেলে তো পেট খারাপ হবে (শুভ)
-ঔষধ আছে তো
-মামা ঝাল বেশি দিয়ো তো
-ঝাল খেয়ে আবার চিৎকার করবেন না তো
-নাহহ আমার অভ্যাস আছে
ঝালমুড়ি ওয়ালা ইরা কে ডেকে বলল
-মামা এত ভয় পায় কেন??
-আরে মামা বুঝো না। ভালবাসে আমাকে অনেক। ভালবাসার একটা টান আছে না??
-হ ঠিকি কইছো
ঝালমুড়ি খাওয়ার পর ইরা লাফাতে থাকে
-পানি খাবো পানি
-মামা পানি তো নেই
-আপনাকে বললাম যে অত ঝাল খাওয়া যাবে না
-মিষ্টি খাবো মিষ্টি
-একবার পানি একবার মিষ্টি কেনো
-মিষ্টিই দরকার
-কই পাই এখন
ইরা তার হাত দিয়ে একটু খোঁচা মেরে বলল
-তোমার কাছেই তো আছে (ইরা)
-আমি তো মিষ্টি আনি নাই(শুভ)
-আনেন নাই তবে আগে থেকেই আছে
-নাহহ কি বলেন সত্যি নেই
ইরা এবার রেগে গিয়ে শুভর কান টেনে কানের কাছে মুখ নিয়ে দাত কিড়মিড় করে বলে....
-তোর ঠোঁটে মিষ্টি নেই তাই না(ইরা)
-না কি বলছেন এসব(শুভ)
-কিছু না হি হি ঝাল শেষ
-এত তাড়াতাড়ি??
-হুমমম
-কিভাবে??
-তোমার ঠোঁট এর কাছাকাছি গিয়েছিলাম তাই শেষ হয়ে গেছে
-ওহহহ
-ওখানে যাওয়ার তো পারমিশন নেই
-কোথায়??
-কোথায়ও না ন্যাকা আসছে। হাটেন এখন...
হাটতে হাটতে.......ইরা আগে হাটছে আর শুভ পেছনে...
-এই আপনি পেছনে কেনো??
-আপনি বস তাই
-তো বসের কথাই শোনেন তাহলে, পাশাপাশি হাটেন
-আচ্ছা
-আর কি খাবেন
-কিছু না
-আমি মিষ্টি খাবো
-কিহহহ
-জ্বি
-আমি দিতে পারবো না
-আপনার টা কে নিতে চাইছে। আমি তো দোকানের টা খাবো...হি হি হি
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part : 8
>>>>>>>>>>>>>>>
-আর কি খাবেন(ইরা)
-কিছু না(শুভ)
-আমি মিষ্টি খাবো
-কিহহহ
-জ্বি
-আমি দিতে পারবো না
-আপনার টা কে নিতে চাইছে। আমি তো দোকানের টা খাবো...হি হি হি
-তো চলেন
-হুমম
সেদিন দুজনের ঘুরাঘুরি শেষে...
-তো স্যার কাল অফিসে আসবেন সময় মতো(ইরা)
-নাহ আমি জব টা করব না (শুভ)
-আবার কি হলো?? আমি কিছু করেছি??
-জানি না জব করব না
-প্লিজ না কইরেন না।
-একটা শর্ত আছে তাহলে জব করতে পারি
-কি শর্ত??
-অফিসে কাজ ছাড়া আমার সাথে অন্য কোনো কথা বলবেন না। অফিস শেষে এভাবে ফোন দিবেন না।
-...............
-কি পারবেন না??
-জানি না। অফিসে আইসেন কাল বায়
-ওকে
(ইরা রাগ করেই চলে গেলো।)
পরদিন সকালে শুভ রেডি হয়ে সময় মতো অফিসে যায়। ইরা একবার শুভ কে ডেকে তার কাজ বুঝিয়ে দেয়। তাছাড়া একটা বাড়তি কথা বলে নি। শুভ ও তার মতো কাজ করছিলো।
এভাবে চলে যায় ২ মাস....। এই দুই মাস শুধু ইরা শুভ কে আড়াল থেকেই দেখে গেছে। সামনে যাওয়ার সাহস পায় নাই। তো হঠাৎ করে একদিন শুভ অফিসে আসে নাই....ইরা কয়েকজন কে ডেকে খোঁজ নিলো যে তার আগের দিন অনেক অসুস্থ ছিলো। হয়তো আজকে বেশি অসুস্থ হয়ে গেছে।
ইরা শুভর ফোনে ফোন ও দিতে পারছে না যদি রাগ করে। আবার চিন্তাও পড়েছে। একা মানুষ কি খাবে কি করবে???
অনেক চিন্তা ভাবনার পর সিদ্ধান্ত নেয় যে সে শুভর বাসায় যাবে। ইরা তাই করে। সে ঠিকানা নিয়ে শুভর বাসার সামনে দাড়িয়ে এখন। কলিং বেল টা চাপতে ভয় করছে তার....অনেক কষ্টে চাপলো। শুভ এসে দরজা খুলে দিলো...খুলেই দেখে তার ইরা ম্যাডাম.
-ম্যাডাম আপনি এখানে??(শুভ)
-বাইরে দাড়িয়ে উত্তর দিতে হবে??(ইরা)
-না মানে ম্যাডাম বাইরে থাকেন একটু ভেতরে সব কিছু অগছালো
-সমস্যা নেই
-আচ্ছা আসেন
ইরা ভেতরে ঠুকে দেখে। রুমপ যাচ্ছে তাই অবস্থা....
-আসলে ম্যাডাম কাল অফিস থেকে এসে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম কিছুই গোছানো হয় নি। আর সকালে মাত্রই উঠলাম...
-দিন দিন গরু হয়ে যাচ্ছেন
-হুমমমম
-ঠিক হবেন কবে??
-ঠিকই তো আছি
-চুপপ করেন
-ম্যাডাম বসেন
-হুমম রান্না করবেন কখন??
-জানি না। ম্যাডাম আমার একটু শুতে হবে। দাড়িয়ে থাকতে পারছি না। মাথা প্রচুর ভার হয়ে গেছে।(এটা বলে শুভ মাথা ধরে বসে পরে)
ইরা তারাতারি উঠে শুভ কে ধরে নিয়ে শুইয়ে দেয়। আর শুভর শরীরে হাত দিয়ে বোঝে অনেক জ্বর উঠছে।
-হুহ এ তো কিছুই করতে পারবে না সব আমাকেই করতে হবে। মানুষ যে এমন হয় জানা ছিলো না। সব কষ্ট একাই সহ্য করবে। (ইরা এসব বলছিলো আর শুভকে জলপট্টি করে দিলো)
তারপর ঘর গুছিয়ে রান্না করে। তখনও শুভর জ্ঞান ফেরে নাই। ইরা তার পরিচিত ডাক্তার কে ফোন করে আসতে বলে। ডাক্তার এসে দেখে যায় আর ঔষধ দিয়ে যায়।
দুপুরের দিকে শুভর জ্ঞান ফেরে। শুভ তাকিয়ে দেখে ইরা টুকি টাকি কাজ করছে। আর তার মাথায় ভেজা কাপড়।
শুভ বুঝতে পারে তার জ্বর উঠার পর ইরা তাকে জলপট্টি করে দিয়েছিলো। ইরা কাজ করতে করতে হঠাৎ করে শুভর দিকে তাকায়... দেখে জেগে উঠছে....ইরা এগিয়ে গিয়ে বলে..
-এই কেমন লাগছে??(ইরা)
-ভাল না (শুভ)
-ভাল লাগবে এখন কিছু খেয়ে নেন। আর ডাক্তার এসেছিলো ঔষধ দিয়ে গেছে। খেয়ে ঔষধ গুলো খাবেন। আমি খাবার আনছি একটু ওয়েট করেন....
ইরা খাবার নিয়ে শুভর কাছে আসে..
শুভ হাত ধুয়ে একবার খাবার মুখে দিবে। কিন্তু আর দিলো না
-আপনি খেয়েছেন??(শুভ)
-না (ইরা)
-আর একটা প্লেট নিয়ে আসেন আপনিও খান
-না আপনি খান আগে
-না খেতে হবে আপনাকে
ইরাও খেতে বসলো..শুভ বলল খেতে খেতে বলল
-এগুলো করা কি অনেক দরকার ছিলো??(শুভ)
-হ্যা সেই জন্যই তো আসছি (ইরা)
-আমি তো কেউ হই না আপনার
-না হন তো
-আপনি যা ভাবেন সেটা তো সম্ভব না
-...........(ইরার মন খারাপ হয়ে গেলো)
-যাই হোক রান্না টা সেই হইছে। কে রান্না শিখাইছে আপনাকে??
-ইউ টিউব থেকে শিখছি
-(শুভ ইরার দিকে বড় বড় চোখে তাকালো)
-কি দেখছেন এভাবে
-নাহহ কিছু না
-ওহহ
খাওয়া শেষ...
-আপনি যাবেন কখন(শুভ)
-আজ রাত এখানেই থাকবো তো (ইরা)
-মজা সবসময় ভালো লাগে না
-মজা তো করছি না
-এখনই যান আপনি
-যাবো না। কি করবেন আপনি??
-দেখেন আন্টি আংকেল জানতে পাড়লে আপনাকে খারাপ ভাববে। আর এইরকম পাগলামো করা লাগে না। আর রাতে থাকা ঠিক না আমরা তো বর বউ না
-আমি তো আপনাকে বর হিসেবে মানি
-নাহহ কি শুরু করছেন এগুলা হ্যা (শুভ ধমক দিয়ে বলল)
-ওই তুই কি পাইছিস হ্যা?? বেশি ভালবাসি তো ভাললাগে না তোর তাই না??? শালা এমন মাইর দিবো জীবনেও ভুলতে পারবি না
-আমি কিন্তু পুলিশ ডাকবো
-ডাক, পুলিশ ডাক...তোর শ্বশুর এখন মন্ত্রি। বিশ ত্রিশ টা পুলিশ আমি পকেটে নিয়ে ঘুরি
-................
-কি রে এখন মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না??
-...............
-চুপচাপ শুয়ে থাক। হাতে কিছু কাজ আছে করে নেই
-একটা কথা বলব
-হ্যা বলেন
-আন্টি আংকেল জানলে খারাপ বলবে
-উনারা আপনাকে চেনে। আর আপনার ফটো তাদের দেখিয়েছি আমি। উনারা আপনাকে দেখে পছন্দ করছেন
-...........(সমস্যা মনে মনে বলল)
-আমি পাড়লে আপনাকে এখনই বিয়ে করতে পারি। কিন্তু করবো না।
-কি জন্য??
-আপনি না সেদিন বললেন আপনার ফিলিংস সব হারিয়ে গেছে। ভালবাসা শেষ হয়ে গেছে
-হুমমম
-হ্যা সে জন্য ভালবাসা তৈরি করে তারপর বিয়ে
-যদি না পাড়েন
-জোর করে করবো। চুপচাপ শুয়ে থাকেন এখন...
সেদিন সন্ধ্যা বেলা....শুভ অনেক বার বলল ইরাকে বাসায় যেতে। কিন্তু ইরা যাবে না। এখানেই থাকবে। শুভ এখন শুয়ে আছে আর ইরা শুভর পাশে বসে ল্যাপটপ এ কিছু কাজ করছে....শুভ বলল
-এই যে শুনছেন(শুভ)
-হ্যা শুনতেছি বলেন(ইরা)
-সত্যি বাসায় যাবেন না??
-এক কথা কয়বার বলব
-না মানে
-বেশি কথা বললে মাইর খাবেন। আর চুপ করে আমার কাজ করা দেখেন। সমানে এগুলো আপনাকে করতে হবে
-......(শুভ শুয়েই আছে)
-কি হলো এদিকে আসেন
-জ্বি আসছি
-উঠতে হবে না শুয়ে থেকে দেখেন
রাতে কাজ আর খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার পর...
-ম্যাডাম আপনি উপরে থাকেন (শুভ)
-আর আপনি নিচে থাকবেন তাই তো(ইরা)
-হুমমম
-সেটা যে কখনই হবে না
-দুজন একসাথে থাকলে সমস্যা হবে
-যা হবার হবে
-এটা কিন্তু
-ঠিক না আমি জানি। কিন্তু আপনাকে ঠিক করতে হবে
-যেমন আছেন তেমন টাই শুয়ে থাকেন। আমি আপনার পাশেই ঘুমাবো
ইরা শুভর পাশে শুয়ে পড়লো।
-আজ আমরা অনেক গল্প করব ঠিক আছে?? (ইরা)
-আচ্ছা
-তো শুরু করেন
-আপনি শুরু করেন
-ওকে করছি (ইরা তার এক পা শুভর পায়ের উপর দিলো)
-এটা কি করছেন??
-আপনি না শুরু করতে বললেন তাই শুরু করছি
-আমি গল্প শুরু করতে বলছি
-এটাও তো গল্প গো
-........
ইরা আর একটা পা শুভর উপর দিলো
-এটা কি করছেন??
-দেখছেন না কি করছি
-সড়ান বলছি
ইরা এবার শুভ কে জড়িয়ে ধরে আর শুভর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
-বেশি তেড়িবেড়ি করবি তো আজ তোর খবর আছে....
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
Part : 9
>>>>>>>>>>>>>>>>
ইরা আর একটা পা শুভর উপর দিলো
-এটা কি করছেন??(শুভ)
-দেখছেন না কি করছি(ইরা)
-সড়ান বলছি
ইরা এবার শুভ কে জড়িয়ে ধরে আর শুভর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
-বেশি তেড়িবেড়ি করবি তো আজ তোর খবর আছে....
-এগুলো কি...
-চুপপ এভাবেই শুয়ে থাকবো। কয়েকটা প্রশ্ন করব উত্তর দিবা ঠিক আছে??
-হুমমমম
-আমি যে তোমায় ম্যাসেজ গুলো করছি সব গুলো দেখছো??
-হ্যা দেখছি
-লাস্ট ম্যাসেজ টা কি ছিলো??
-...........
-বলো
-বলছেন বাসে যদি সিট ফাকা থাকে তাহলে সেই সিটে উঠবেন
-হুমম এই যে উঠেছি
-আমি বাস??
-হ্যা। আর আমার অনেকক গুলো স্বপ্নের মধ্যে একটা পূরন হইছে
-কি??
-স্বপ্ন টা ছিলো যে আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে এভাবে ঘুমাবো।
-ভালো
-যানো আমার যে এখন কি ভাললাগছে
-হুমম এখন আমাকে ছেড়ে একটু দূরে গিয়ে ঘুমিয়ে যান
-না (শুভর ঘারে একটা কিস দিলো ইরা)
-আমি কিন্তু উঠে যাবো
-না না আমাল বাবুতা উঠে না। আর দুষ্টামি করব না
-ওকে এবার আমি কিছু বলি আপনি শোনেন
-হ্যা বলো
-আপনি যা চান সেটা কখনো হবে না
-তাই??
-হ্যা আমি আপনাকে ভালবাসতে পারব না। আপনার জন্য আমার কোনো অনুভূতি নেই।
-কিন্তু আমি যে তোমাকে ভালবাসি
-আমি কি করব তাই??
-ওহহ তাই তো... আচ্ছা ভালবাসতে হবে না
ইরা শুভ কে ছেড়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো। শুভও ঘুমিয়ে গেলো...
পরদিন সকালে...
শুভ ঘুম থেকে উঠে দেখে পাশে ইরা নেই। বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে যায়। সেখানে গিয়ে যা দেখলো তা বলার মতো না.....বাথরুমের দেয়ালে লেখা ছিলো..
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হওয়ার জন্য এখানে আসছেন তাই না?? আসছেন ভাল কথা আমি রান্না করে রেখে আসছি খেয়ে অফিসে আসুন...যদি আপনার মন চায়
শুভ তাই করলো খেয়ে সোজা অফিসে। অফিসে গিয়ে সোজা ইরার রুমে...
-ম্যাডাম আসতে পারি (শুভ)
-জ্বি আসুন (ইরা)
-.........
-কিছু বলবেন??
-হুমম
-তো দাড়িয়ে আছেন কেনো বলেন
-আপনি কি সকালে বাসায় গিয়েছিলেন??
-না কেনো??
-তাহলে তো সকালে তো কিছু খান নাই তাই না??
-হুমম খাই নাই তাই কি হইছে??
-আপনার জন্য খাবার এনেছি
-তো আমি কি করব??
-খাবেন
-আপনাকে কি এই জন্য জব টা দেওয়া হইছে?? যেটা কাজ দেওয়া হইছে সেটা করেন(শুভ কথাটা শুনে অবাক ই হয়ে যায়)
-জ্বি ম্যাডাম সরি
-হুমম ওকে
শুভ তার মতো তার কাজ করল। ইরা আর তেমন শুভর খোঁজ খবর নেয় না। ভুলেও তাকায় না তার দিকে। তো একদিন....
-ম্যাডাম আসতে পারি??(শুভ)
-নাহ যা বলার বাইরে থেকে বলেন(ইরা)
-ম্যাডাম এই ফাইলে একটা ভুল আছল সেটা...
(শুভকে ইরা থামিয়ে দিয়ে বলল)
-যেটা ভুল আছে ঠিক করে নেন এত কথা বলার কি আছে?? যান কাজ করেন
-জ্বি ম্যাডাম
এভাবেই চলতে থাকে। হঠাৎ একদিন অফিসে শোনা যায় ইরা ম্যাডাম এর বিয়ে। অফিসে সব কর্মচারীর দাওয়াত। সেই সুবাদে শুভ একটা কার্ড পায়.....শুভ কার্ড নিয়ে বাসায় আসে....এসে খুলে দেখে শুধু পাত্রির নাম দেওয়া পাত্রর নাম কই???
শুভ ইরাকে ফোন দেয়.....
ইরা শুভর ফোন আসা দেখে খুব তারাতারি রিসিভ করে..
-হ্যালো ম্যাডাম
-জ্বি কে বলছেন??
-আমি শুভ
-হ্যা বলেন
-ম্যাডাম কার্ডে পাত্রর নাম কই??
-অফিসের কোনো কাজের কথা থাকলে বলেন। কার নাম দেওয়া নেই সেটা আপনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে না
-জ্বি ম্যাডাম সরি
-নেক্সট টাইম এমন ভুল করবেন না
-আচ্ছা...
শুভ একটু এফ বিতে ঠুকে...ঠুকে দেখে ৫ জন এক্টিভ। তার মধ্যে ইরাও আছে...তো ইরার কনভারসেশন এ গিয়ে ম্যাসেজ গুলো পড়তে লাগল...শুভ সেদিন শুধু ইরার লাস্ট ম্যাসেজ টাই পড়ছিলো পুরো টা নয়...
পুরো ম্যাসেজ টা পড়ে শুভ কান্না করে দিলো। তার হার্টবিট অনেক বেড়ে গেলো। আর সে বুঝতে এমন একজন আছে যে তাকে অনেক বেশি ভালবাসে। কিন্তু সেই মানুষ টাকে কাল সে না করে দিয়েছে..
শুভ চোখের পানি মুছে ইরা কে কল দিলে...তখন প্রায় রাত ২ টা বাজে..
ইরা ফোন ধরেই বলল..
-এত রাতে এফবিতে কি করো?? কার সাথে কথা বলো??(ইরা কান্না করে বলল)
-আমি আপনার দেওয়া সব ম্যাসেজ গুলো পড়ছিলাম
-পড়ে কি বুঝলে??
-আপনি আমাকে অনেক ভালবাসেন
-বাসতাম। এখন বাসি না
-তা না হয় নাই বাসলেন। এমন করলেন কেনো??
-কি করেছি??
-আমার জন্য এত কিছু প্রত্যেকটা বছরের বার্থডে তারপর প্রতিদিন কি করেছেন সেই কথা। কত বার সেজেছেন সেই ছবি দিয়েছেন। আবার হাত ও কেটেছেন কেনো??
-ভালবাসি যে অনেক তাই
-এত ভালবাসতে কে বলেছে??
-জানি না
-আর এত রাতে জেগে কি করছেন??
-তোমাকে দেখছি
-আমাকে দেখছেন মানে??
-মানে আমার আত্মাপাখি টাকে দেখছি। আমি প্রতিদিন রাত জেগেই দেখি
শুভ হাল্কা একটু কান্নার আওয়াজ করল....ইরা বুঝতে পেরে বলল
-এই কি হয়েছে (ইরা)
-নয় ম্যাডাম কিছু না
-কান্না করছো নাকি??
-কই না তো
-গলা টা তো একটু আগে ভালো ছিলো...এখন তো আলাদা শোনা যাচ্ছে
-না ম্যাডাম এমনি
ইরা ফোনটা কেটে দিলো...শুভ ফোন রেখে কান্না করছে তার একটা আপন মানুষ কে হারাতে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। তার ভালবাসা শুভ বুঝতে পারে নি। শুভ ভাবে...
-এখন যদি ইরা কে বলি যে আমি তোমাকে ভালবাসি হয়তো সে বকা দিবে।কিন্ত আমাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হবে। নাহ ও দূরেই থাকুক আমার তো এখন কিছু নেই।..
এসব ভাবছিলো হঠাৎ কলিং বেল টা বেজে উঠলো....
-এত রাতে আবার কে এলো??(শুভ)
শুভ গিয়ে দরজা খুলতেই। হন হন করে ঘরের মধ্যে ঠুকলো ইরা..শুভ দরজটা টা আটকে দিলো...
-আপনি এত রাতে এখানে কেনো??(শুভ)
-তুমি কান্না করছিলে কেনো??
-নাহহ কান্না করছিলাম না তো
ইরা এগিয়ে এসে তার দুহাত ধরে শুভর গাল ধরে বলল
-বল তুমি কান্না করছিলে??
শুভর গাল ধরার সাথে সাথে কান্না করে দিলো। শুভর চোখে পানি দেখে ইরা পাগলের মতো হয়ে গেলো...
-এই এই কেউ তোমাকে কিছু বলছে??
-নাহহ
-তাহলে কান্না করছো কেনো?? কেউ যদি কিছু বলে থাকে আমাকে বলো। ওরে শেষ করে দিবো
-না কেউ কিছু বলে নি
-তাহলে কান্না করেছো কেনো??
-আগে বলেন বকা দিবেন না তো
-নাহহ বলো
-আমি আপনাকে ভালবেসে ফেলছি
কথা টা শুনে ইরার চোখে পানি টলমল করে উঠে...ইরা শুভর গাল দুটো ধরেই ছিলো দেড়ি না করে শুভর ঠোঁটে কিস করলো। শুভ ছাড়ানোর চেষ্টা করলো কিন্তু পাড়ল না।
এমন ভাবে শুভর ঠোঁটে কিস করছে মনে হয় কত দিনের আশা ছিলো এটা পাওয়ার কত আগ্রহই না ছিলো। প্রায় ১০ মিনির পর....
-তাহলে শেষ হলো??
-হুমম
-হুমমম-এখন আর ভালবাসার কথা বলে কি করবে?? আমার তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে
-তাহলে কিস করাটা টা ঠিক হলে না
-কুত্তা আমার ইচ্ছা হইছে করছি
-ওহহহ
-তো আসি এখন
-না
-কেনো??
-এত রাতে যেতে হবে না। সকালে যাইয়েন
-এতক্ষণ কি করবো??
-গল্প করি
-না
-তাহলে কি করবেন
-তোমার ঠোঁট খাবো
-নাহহহ আর না
-হ্যা
-তাহলে এখনই যান
-হাইরে মানুষ
-আমি এমনই
-জানি আমি
-আচ্ছা বর এর কোনো পিক আছে??
-না বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখতে পারবেন...
এসব গল্প করতে করতে সকাল হয়ে গেলো...
-এখন তাহলে আসি (ইরা)
-হুমম ঠিক আছে(শুভ)
-আপনি সকাল সকাল অফিস যাবেন। আর আমাদের ম্যানেজার এর সাথে দেখা করবেন...
-কেনো??
-সেটা গেলেই বুঝতে পারবেন। আর তিন দিন পর তো আমার বিয়ে। আমি এ কয়েকদিন অফিস যাবো না। আমাদের দেখা হবে না। একেবারে বিয়ের সময় দেখা হবে।
-হুমম ঠিক আছে
-আর কান্না কাটি করবেন না স্বাভাবিক থাকবেন।
-আচ্ছা
-আর বিয়েতে অবশ্যই যাবেন। না গেলে কিন্তু বিয়ে হবে না
-মানে??
-আপনি না গেলে আমি কবুল ই বলব না
-আচ্ছা যাবো
-হুমমম বাই তাহলে
-আচ্ছা
-ফোন দিলে ধরবেন আর ফোন সবসময় অন রাখবেন
-ওকে
-ওকে বায়..
।।
।।
আপন
Write : Sabbir Ahmed
END PART
>>>>>>>>>>>>>>>
-আপনি না গেলে আমি কবুল ই বলব না(ইরা)
-আচ্ছা যাবো তো(শুভ)
-হুমমম বাই তাহলে
-আচ্ছা
-ফোন দিলে ধরবেন আর ফোন সবসময় অন রাখবেন
-ওকে
-ওকে বায়..(ইরা চলে গেলো)
শুভ বসে ভাবছে... (ওকে কি বলব যে আমাকে বিয়ে করতে??? নাকি বলব না?? ধুররর কেনো যে ওর জন্য ভাললাগা কাজ করতে শুরু করলো?? নাহহ মাথা থেকে এসব ঝেড়ে ফেলে অফিসে যাই...
শুভ অফিসে যায়। আর ইরার কথা মতো ম্যানেজার এর সাথে দেখা করে। ম্যানেজার তাকে ৬০০০০ টাকা দেয়..
-এটা কিসের টাকা??
-জানি না ম্যাডাম আপনাকে দিতে বলেছে
-আমি এ টাকা দিয়ে কি করবো??
-ম্যাডামকে ফোন দিয়ে জেনে নেন
শুভ তখনই ইরা কে ফোন দিলো..
-হ্যালো ম্যাডাম
-জ্বি শুভ সাহেব বলেন
-টাকা দিয়ে কি করতে হবে??
-ওহহ টাকা দিয়েছে তাহলে
-হ্যা
-৬০০০০ দিয়েছে তাই না??
-হুমমম
-এখন একটা ভালোলো শপিং মলে যাবেন আর সেখান থেকে সবচেয়ে দামী আর সুন্দর একটা পাঞ্জাবী কিনবেন সাথে পায়জামা জুতা যা যা লাগে কিনবেন
-আমার সব আছে তো
-আমি তো সেটা শুনতে চাই নাই। কিনতে বলছি কিনবেন
-আচ্ছা কিনবো কিন্তু আপনার টাকায় কেনো?? আমার টাকা আছে
-এখন রাগাবি না কিন্তু যা বলছি তাই কর। মনে কর এটা তোকে গিফ্ট দিয়েছি।
-আচ্ছা ঠিক আছে
-আমি ব্যাস্ত আছি এখন দুপুরের মধ্যে কেনাকাটা শেষ করে আমাকে ফোন করবেন
-আচ্ছা
(ইরা ফোনটা কেটে দিলো)
শুভ গেলো পাঞ্জাবী কিনতে। কি আর করা ম্যাডাম যে তাকে অর্ডার করেছে...
শুভ ইরাকে ফোন দিলো
-হ্যালো হ্যা কেনা কাটা শেষ(শুভ)
-হুমম ভালো করছেন।
-এখন কি করবো??
-অফিসে গিয়ে আপনার কাজ করে বাসায় যাবেন ঠিক আছে??
-আচ্ছা
-ওহ হ্যা আর একটা কথা
-হ্যা বলেন
-বাসায় গিয়ে ফোন দিবেন। আমি আপনার বাসায় যাবো
-আবার কি জন্য??
-দরকার আছে তাই
-হুমম ঠিক আছে
শুভ কাজ শেষ করে বাসায় যায়...ইরা কে ফোন দিয়ে বলে "আমি বাসায় আসছি" ইরাও কিছুক্ষণ এর মধ্যে এসে যায়...
-আচ্ছা এখানে আপনার কি কাজ??(শুভ)
-তোমাকে দেখতে আসছি (ইরা)
-আচ্ছা একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-কখন তুমি বলেন কখন আপনি বলেন কখন তুই বলেন কিছুই তো বুঝি না
-ওটা তুমি বুঝবে না গো। আমি একটা কথা বলি
-হুমম বলেন
-আমাকে যে এখন ভালবাসো। কিন্তু আমাকে যে পাবে না এজন্য তোমার খারাপ লাগবে না??
-তা তো লাগবেই তবে সামলিয়ে নিতে পারব
-ওহহহ
-হুমম তা কি জন্য আসছেন বললেন না তো
-কাল দিন পর তো বিয়ে।
-হুমম তো
-কথা টা শেষ করতে দেন
-হ্যা বলেন
-কাল আমি কোনো যোগাযোগ করতে পারব না। ফোন অফ থাকবে। আর আপনি কিভাবে বিয়ে বাড়িতে যাবেন সেটা বলতে আসছি
-আরে বলতে হবে না অনেক দাওয়াত খেয়েছি বিয়ে বাড়িতে
-এটা আলাদা অনেক বড় বড় লোকজন আসবে এখানে
-হুমম বলেন
-পাঞ্জাবী টা দেখান
শুভ পাঞ্জাবী বের করে দেখালো। জুতা দেখালো আর যা কিনছিলো সব।
-হুমমম খুব ভালো হইছে (ইরা)
-ম্যাডাম কিছু টাকা বেঁচে গেছে
-রাখেন আপনার কাছেই
-আমি রেখে কি করবো??
-রাখতে বলছি না আমি
-হুমম ঠিক আছে
-বিয়ের দিন একা যাবেন না অফিস এর কলিগদের সাথে যাবেন আর আপনার চুল দাড়িয়ে কামিয়ে যাবেন ঠিক আছে??
-হুমমমম
-তো ব্যর্থ প্রেমিক আসি তাহলে
-আচ্ছা যান
-একবার আই লাভ ইউ বলো
-বলে লাভ নেই যান
-তাও একটু বলো
-নাহহ
-খুব শুনতে ইচ্ছা করছে
-বলব
-হুমমম
-লাভ ইউ(ইরা শুনেই চলে গেলো)
শুভর বুকের মধ্যে কেমন যেনো করে উঠলো। মনে হচ্ছে কিছু একটা ভেতর থেকে কেউ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে...শুভ ভেতরে এসে ইরার আগের পাগলামো গুলো মনে করতে লাগল।
-নাহহ এখন ভেবে লাভ নেই। ও তো অন্যকারও। কাল দিন পর তো বিয়ে ওকে কি দিবো। শাড়ি গয়না দেওয়া যাবে না। আমি যা দিবো তার থেকে দামী তা ওর অনেক আছে। তাহলে কি দিবো??? ওহ পেয়েছি শুভ একটা ডায়রি নিয়ে কি যেনো লিখতে বসলো....
পরদিন শুভ আর অফিসে যায়। অফিা থেকে একজন ফোন দিয়েছিলো শুভ না করে দিয়েছে..
সারাদিন এলোমেলো ভাবে কাটছে শুভর.....
পরদিন সকাল বেলা.....ইরার কথা মতো সেজে শুভ অফিসে যায়। গিয়ে দেখে বাইরে সবাই গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছে....শুভ কে দেখে একজন বলল
-আরে পুরো জামাই জামাই লাগছে। শুধু মাথায় টোপর টা নেই
-আপনাকেও কম খারাপ লাগছে না (শুভ)
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো...
কিছুক্ষণ পর গাড়িতে করে রওনা দেয়। ইরাদের বাসা বেশি দূরে না। তবে শুভর যাওয়া হয় নি আজই প্রথম...গাড়ি গিয়ে বিয়ে বাড়ির গেটে থামলো।
গাড়ি থামার সাথে সাথে অনেক লোক জন ভিড় করলো গাড়ির পাশে। আর বলতে লাগল বর এসেছে বর। শুভ গাড়ির মধ্যে খুঁজে কিন্তু বর পায় না
হঠাৎ করে সেই ম্যানেজার টি শুভর মাথায় একটা টোপর পড়িয়ে দেয় আর বলে...
-কোনো কথা না বলে গাড়ি থেকে নামো
শুভ কিছুই বুঝতে পারছে না। কি হচ্ছে তার সাথে। গাড়ি থেকে নামার পর সবাই দেখতে আসে শুভকে। শুভ গাড়ি থেকে নেমে ইরার বাসার দিকে (তাকায় কত্ত বড় বাসা রে বাবা)।
শুভকে নিয়ে সোজা বাসার ভেতর ঠুকে যায় সেই ম্যানেজার। ইরার বাবা মা আর সবাই এসে শুভর সাথে দেখা করে....
শুভ বুঝতে পারে এসব ওই পাগলিটার কাজ...কি না করেছে আমার জন্য আর আমি হতভাগা ওকে কিছুই দিতে পারি না।
দুপুরের দিকে বিয়ে পড়ানোর কাজ শেষ হয়...
বিয়ে টা শেষ হয়ে যাওয়ার পর...ইরার ছোট বোন আসে শুভর কাছে..
-দুলাভাই ছবি তে যেমন এখানেও তেমন। বোবা কিছুই বলতে পারে না
সাথে কয়েকজন ছিলো একটু উচ্চ স্বরে হাসলো। শুভ লজ্জা ভেঙে বলল
-তোমার বোন কোথায়
-না না না দুলাভাই আপুর সাথে এখন দেখা করা যাবে না
-কেনো??
-বারণ আছে। এখন তো বাজে সন্ধ্যা ৭ টা রাতের খাবার খেয়ে তারপর আমি আপনাকে আপুর কাছে রেখে আসবো
-............
-রাগ করে লাভ নাই
-রাগ করি নি তো
-আমি দেখছি রাগ করছে
-........(এটাও পুরো পাগলিটার মতই কথা বলে)
-এই কিছু বললেন নাকি??
-কই না তো
-মনে মনে কথা বলা কিন্তু ভাললাগে না আমার
-আমারও না
রাতের খাওয়া শেষে তখন ১১ টা বাজে ইরার বোন শুভ কে নিয়ে একটা রুমের কাছে যায়...
-যান। আপু এ ঘরেই আছে
-আচ্ছা ঠিক আছে
-যান যান ঠেলা বুঝবেন হি হি হি
শুভ রুমে প্রবেশ করতেই। দরজা বাইরে থেকে লক করে দিলো...শুভ রুমের ভেতর দেখে রুমটা এত সুন্দর করে সাজাইছে যা বলার মতো না। মনে হয় তিন চার দিন লাগছে সাজাই তে।
শুভ এখ উসপিস করছে ইরার সাথে কথা বলার জন্য। কারন সারাদিন এ শুভর সাথে যা ঘটল তা একদম অবাক করা বিষয়
শুভ ইরাকে সেই দরজার সামনে দাড়িয়ে থেকে ডাকলো
-ম্যাডাম একটু এদিকে আসেন(শুভ
-(ইরা আসলো)
-এগুলো কি??
-যা দেখছেন তাই। বাড়তি প্রশ্ন করবেন না
-আচ্ছা
-আমার জন্য কি এনেছেন
-কিছু না তো
-বিয়ের দাওয়াত এ এসে আমার জন্য কিছু আনিস নি কুত্তা(ইরা শুভর কলার ধরে খাটে নিয়ে গিয়ে বসালো
-এ এ একটা জিনিস এনেছি
-কি দেখি
(শুভ সেই ডায়রি টা বের করে দেয়)
-এটা কি আনছিস?? নিশ্চয় দুঃখের কথা লেখা আছে?? আজ আমার সব থেকে খুশির দিনে আমি এগুলো পড়বো?? (ইরা ডায়রি টা ফেলে দিলো)
-তাহলে কি...
-আমি জানি না কিচ্ছু। আমাকে তোর কিছু দিতে হবে
শুভ পড়ল মহা বিপদে। একটু ভেবে বলল
-আমি কি তোমার জন্য বড় গিফট নই??
-তোমার বুদ্ধি তাহলে হয়েছে একটু
-হুহ বাঁচা গেলো
-এই শুনো
-হ্যা বলেন
-তুমি করে বল কুত্তা
-হ্যা বলো
-সেই ক্লাস টেন থেকে এখন পর্যন্ত তোমার জন্য অপেক্ষা করে আসছি তোমার জন্য। কত কষ্ট পেয়েছি কত কান্না করেছি
-হুমমম তোমার ভালবাসার কাছে আমার ভালবাসা কিছুই না
-হুমম কিন্তু আজ তোমার খবর আছে এত দিনের শোধ একবারে তুলব
-কি করবা??
-তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ করবো
-এহহহ
-হ্যা তুমি আজকে শেষ
-কি করবা??
ইরা শাড়ি খুলতে লাগল
-এই এই শাড়ি খুলছো কেনো??
-আরে এটা পড়ে থাকলে আমি হেরে যাবো
তারপর ইরা শুভর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শুভর শেষ খবর পেতে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন....
..
..
..
..
..................END....................
..
No comments:
Post a Comment